ইয়াজুজ মাজুজ | ইসলামী রূপকথার রাক্ষস খোক্কস

Print Friendly, PDF & Email

ভূমিকা

ছোটবেলার ঠাকুরমার ঝুলি কিংবা রূপকথার বইতে আমরা যারা রাক্ষস খোক্কসের গল্প পড়েছি তারা জানি যে, এই গল্পগুলো পড়তে ছোটবেলা বেশ মজাই লাগতো। সত্য হোক কিংবা মিথ্যা, পড়তে ভালই লাগে। মাঝে মাঝে আমাদের মা কিংবা খালারা রাক্ষসের গল্প বলে আমাদের খাওয়াতো, গোছল করাতো। অর্থাৎ যা আমরা স্বেচ্ছায় করতে চাইতাম না, গল্পের এইসব চরিত্রের কথা বলে একটু ভয় দেখিয়ে আমাদের দিয়ে সেই সব কাজ করিয়ে নিতো। তখন আমরা ছোট ছিলাম, জ্ঞানবুদ্ধি কম ছিল। সেই সময়ে এখনকার মত যুক্তি প্রমাণ দিয়ে বিচার বিবেচনা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হতো না। তাই আমরা সেই সব কথাই নির্দ্বিধায় বিশ্বাস করে নিতাম। কিন্তু যতই বড় হতে লাগলাম, বুঝতে শুরু করলাম, ডাইনি বুড়ির গল্প, শাকচুন্নী কিংবা মামদো ভুত, অথবা রাক্ষস খোক্কস, এগুলো সবই ছেলে ভুলানো কথা। তবে, বড় হওয়ার পরেও অনেকে এইসব গল্প বিশ্বাস করতে পারে। তাদের জন্য আমরা মানসিক চিকিৎসকের সাহায্য নিতে পারি। কারণ বড় হওয়ার পরেও এইসব রূপকথায় বিশ্বাস করা মানে হচ্ছে, তার মানসিক বিকাশটি ঠিকভাবে হয় নি। এখনো সেই রূপকথার জগতেই সে বসবাস করে। এরকম মাঝে মাঝেই কিছু মানুষকে পাওয়া যায়। এদের মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন। অথবা বুঝতে হবে, তাদের শিক্ষাদীক্ষা এবং আধুনিক বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। কারণ তারা ছেলে ভুলানো রূপকথায় বিশ্বাস করে!

ইয়াজুজ মাজুজ কী বা কারা?

ছোটবেলায় নানীদাদীর মুখে শোনা ঠাকুরমার ঝুলি কিংবা রূপকথার রাক্ষস খোক্কসের ইসলামী ভার্শন হচ্ছে ইয়াজুজ মাজুজ। কোরআন এবং হাদিস অনুসারে, এটি মানুষের মতই একটি জীব, যারা সংখ্যায় মানুষের চাইতে হাজার গুণ বেশি, এবং যারা এই পৃথিবীতেই এখনো বসবাস করছে। একটি বিশাল প্রাচীর তৈরি করেছিলেন জুলকারনাইন, সেই প্রাচীরের ঐপাশে আজও তারা প্রাচীরটিতে ছিদ্র করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আল্লাহ যেদিন চাইবে, সেইদিন সেই প্রাচীর তারা ভাঙতে পারবে, এবং সেইদিন তারা মানুষদের ধরে ধরে হত্যা করবে।

ইয়াজুজ মাজুজ কোথায় থাকে?

ইসলামী বিশ্বাস মতে, তারা এই পৃথিবীতেই থাকে। এই গুগল আর্থের যুগে, স্যাটেলাইটের কল্যাণে পৃথিবীর প্রতিটি কোন পর্যবেক্ষণ সম্ভব হওয়ার পরেও, প্রতিটি জায়গার ছবি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আমাদের কাছে থাকবার পরেও, কিছু মানুষ এখনো বিশ্বাস করে যে, পৃথিবীতে এরকম বিশাল একটি জায়গা আছে, যেখানে মানুষের চাইতে সংখ্যায় হাজারগুণ কিছু প্রানী থাকে, একটি প্রাচীরের ঐ পাড়ে। অর্থাৎ ধরে নিই, পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা যদি হয় ৮ বিলিয়ন, ইয়াজুজ মাজুজের সংখ্যা হবে ৮০০০ বিলিয়ন। আর হাদিসে যদি শুধু মুসলিমদের কথা বলা হয়ে থাকে, তাহলে ১৮০ কোটি মুসলিম ধরলে, ইয়াজুজ মাজুজের মোট সংখ্যা হবে ১৮০০০০ কোটি। এই বিশাল সংখ্যার প্রানীরা পৃথিবীতেই আছে, যারা মানুষেরই মত, এটি হচ্ছে ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বাস! যা খুব বেশিই হাস্যকর।

ইয়াজুজ মাজুজের প্রাচীর

ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে, প্রাচীনকালে একজন ক্ষমতাবান রাজা ছিলেন, যার নাম ছিল জুলকারনাইন। বেশিরভাগ ঐতিহাসিক এবং ভাষাতত্ত্ববিদের মতে, উনি হচ্ছেন সম্রাট আলেকজান্ডার, যাকে বিভিন্ন সভ্যতা ও ভাষাতে বিভিন্ন নামে ডাকা হতো। আলেকজান্ডার ফার্সি ভাষায় “ইস্কান্দর”, মধ্য পশ্চিমা স্থানে “যুল-কারনাইন, আরবে “আল-ইস্কান্দার আল কাবের”, উর্দুতে “সিকান্দার-এ-আজম”, পাশতুন ভাষায় “স্কান্দর”, হিব্রুতে “আলেকজান্ডার মোকদন” , আরমেনিয়ান ভাষায় “ট্রে-কারনাইয়া” নামেও পরিচিত। উর্দু ও হিন্দিতে সিকান্দার যার অর্থ “পারদর্শি” বা “অত্যন্ত পারদর্শি”। অর্থাৎ, পারস্য সাম্রাজ্যে তাকেই ইস্কান্দর নামে, আমাদের অঞ্চলে এবং হিন্দি ও উর্দুতেও সিকান্দার বাদশাহ নামে, আবার অনেক দেশে ও ভাষায় আলেক্সান্ডার নামে ডাকা হতো। উনার নামে ইস্কান্দরনামা লেখা হয়েছিল, যাকে আবার সিকান্দারনামাও বলা হয়।ভারত আক্রমণকারী আলাউদ্দীন খিলজি নিজেকে সিকান্দার ই শান অর্থাৎ দ্বিতীয় আলেকজান্ডার নামেও পরিচয় দিতো। অর্থাৎ, প্রাচীনকালের অন্যতম বীর এবং যোদ্ধা হিসেবে তিনি সারা দুনিয়াতেই পরিচিত ছিলেন। ইসলামী বিশ্বাস মতে তিনি তার সময়ে পৃথিবীর পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত পুরোটা ভ্রমণ করেছিলেন, এবং শাসন করেছিলেন।

কুরআনের তাফসিরকারীদের কারো কারো মতে তিনি একজন নবী ছিলেন। অন্যপক্ষে, প্রাচীনকালে আরব উপদ্বীপে জুলকারনাইন নামটি পরিচিত ছিল অল্প বয়সী উচ্চ ক্ষমতাধর একজন শাসক হিসেবে। জুলকারনাইন শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হল “দুই শিং বিশিষ্ট”। জুলকারনাইন পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে বেড়াতেন এবং নির্যাতিত, বঞ্চিত, শাসকের হাতে শোসিত লোকদের মুক্তি দিতেন। কুরআনের বর্ণনা অনুযায়ী পৃথিবীর দুই প্রান্ত অর্থাৎ পূর্ব এবং পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত তিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, কুরআনের সুরা কাহফ অনুসারে, পৃথিবীর পূর্ব এবং পশ্চিম প্রান্ত রয়েছে, অর্থাৎ পৃথিবী একটি সমতল ভূমি যার পূর্ব এবং পশ্চিম প্রান্ত রয়েছে। পৃথিবীর পূর্ব প্রান্তে, অর্থাৎ অরুণাচলে, যেখান থেকে সূর্য উদিত হয়, সেখানে ইয়াজুজ মাজুজ নামক ভয়ঙ্কর মানুষের মত প্রাণীদের হাত থেকে জনগণকে রক্ষা করার জন্য দেয়াল তুলে দিয়েছিলেন জুলকারনাইন। আর সে স্থানটি পাহাড়ের প্রাচীরের মাঝখানে। সূরা কাহাফের ৯৩ হতে ৯৮ নম্বর আয়াতে জুলকারনাইনের এই প্রাচীর নির্মাণের উল্লেখ আছে। ধারণা করা হয়, এই জাতি ধাতুর ব্যবহার জানতো। তারা হাপর বা ফুঁক নল দ্বারা বায়ু প্রবাহ চালনা করে ধাতুকে উত্তপ্ত করে গলাতে পারতো এবং তারা লোহার পিন্ড ও গলিত তামাও তৈরি করতে পারতো। জুলকারনাইন তাদের প্রতিরোধ প্রাচীর তৈরি করার জন্য উপাদান ও শ্রম সরবরাহ করতে বললেন। তারা নিজেরাই জুলকারনাইনের আদেশ মত দুই পর্বতের মাঝে শক্ত লোহার প্রাচীর বা দ্বার তৈরি করলো।

উত্তরাঞ্চল থেকে আসা অসভ্য বর্বরদের হাত থেকে সাম্রাজ্য রক্ষা করতে আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেইট একটি প্রকাণ্ড প্রাচীর নির্মান করেছিলেন বলে জানা যায় [1] [2] । মধ্যযুগের সাহিত্য এবং শিল্পকলায় এই বিষয়টি খুবই জনপ্রিয় শ্রুতি ছিল, অসংখ্য মানুষ এই প্রাচীর নিয়ে নানা লোকগাথা এবং গান রচনা করেছিলেন। এই প্রাচীরটিকে বলা হয় ’কাসপিয়ান গেট’ (Caspian Gates) বা আলেকজান্ডারের গেট। সপ্তম শতকের রচিত প্রচুর লোককথায় এই প্রাচীরের কথা জানা যায়। কুরআনে বর্ণিত জুলকারনাইনের তৈরি এই প্রাচীরের বর্ণনার সাথে এটি অনেকটাই মিলে যায়। এটি স্পষ্টভাবে জানা যায় না, এই দেয়ালটির অবস্থান ঠিক কোথায়। প্রখ্যাত গ্রিক ঐতিহাসিক জোসেফাস এই কাস্পিয়ান গেট বর্ণনা করার সময় সঠিক অবস্থান চিহ্নিত করেন নি। ঐতিহাসিকদের ধারণা, সম্রাট আলেকজান্ডার একটি প্রাচীর তৈরি করতে লোহা ও তামা ব্যবহার করেছিলেন। সেখানে একটি তোরণ ছিল যা ‘কাসপিয়ান গেট’ বা ’আলেকজান্ডারের গেট’ নামে পরিচিত।

ইসলামের ইতিহাস থেকে জানা যায়, মুহাম্মদের সাহাবীদের কেউ কেউ এবং পরবর্তীতে খলিফা ওয়াসিক সেই প্রাচীর পর্যন্ত গিয়েছিলেন এবং সেই প্রাচীর দেখেছিলেন। সহিহ হাদিসে বর্ণিত আছে,

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫০/ আম্বিয়া কিরাম (আঃ)
পরিচ্ছেদঃ ২০০৬. ইয়াজুজ ও মাজুজের ঘটনা। মহান আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই ইয়াজুজ মাজুজ পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টিকারী (১৮ঃ ৯৪)
২০০৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ (হে নবী) তারা আপনাকে যুল কারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে।
আয়াতে سَبَبًا অর্থ চলাচলের পথ ও রাস্তা। তোমরা আমার কাছে লোহার টুকরা নিয়ে আস (১৮ঃ ৮৩-৯৬) এখানে زُبَر শব্দটি বহুবচন। একবচনে زُبْرَةٌ অর্থ টুকরা। অবশেষে মাঝের ফাঁকা জায়গা পূর্ণ হয়ে যখন লোহার স্তুপ দু’পর্বতের সমান হল। (১৮ঃ ৯৬) তখন তিনি লোকদের বললেন, এখন তাতে ফুঁক দিতে থাক। এ আয়াতে الصَّدَفَيْنِ শব্দের অর্থ ইবন আব্বাস (রাঃ) এর বর্ণনা অনুযায়ী দু’টি পর্বতকে বুঝানো হয়েছে। আর السُّدَّيْنِ এর অর্থ দু’টি পাহাড়। خَرْجًا অর্থ পারিশ্রমিক। যুল কারনাইন বললঃ তোমরা হাঁফরে ফুঁক দিতে থাক। যখন তা আগুনের ন্যায় উত্তপ্ত হল, তখ তিনি বললেন, তোমরা গলিত তামা নিয়ে আস। আমি তা এর উপর ঢেলে দেই। (১৮ঃ ৯৬) قِطْرا অর্থ সীসা। আবার লৌহ গলিত পদার্থকেও বলা হয়। এবং তামাকেও বলা হয়। আর ইবন আব্বাস (রাঃ) এর অর্থ তাম্রগলিত পদার্থ বলেছেন। (আল্লাহর বাণীঃ) এরপর তারা (ইয়াজুজ মাজুজ) এ প্রাচীর অতিক্রম করতে পারল না। (১৮ঃ ৯৭) অর্থাৎ তারা এর উপরে চড়তে সক্ষম হল না। اسْتَطَاعَ শব্দটি طعت له থেকে باب اسْتَفْعَل আনা হয়েছে। একে أسط ও يَسْطِيعُ যবরসহ পড়া হয়ে থাকে। আর কেহ কেহ একে أَسْطَاعَ يَسْطِيعُ রূপে পড়েন। (আল্লাহর বাণীঃ) তারা তা ছিদ্রও করতে পারল না। তিনি বললেন, এটা আমার রবের অনুগ্রহ। যখন আমার রবের প্রতিশ্রুতি পূরণ হবে তখন তিনি এটাকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দিবেন। (১৮ঃ ৯৮-৯৮) دكاء অর্থ মাটির সাথে মিশিয়ে দিবেন। نَاقَةٌ دَكَّاءُ বলে যে উটের কুঁজ নেই। الدَّكْدَاكُ مِنَ الأَرْضِ যমীনের সেই সমতল উপরিভাগকে বলা হয় যা শুকিয়ে যায় এবং উচু নিচু না থাকে। (আল্লাহর বাণীঃ) আর আমার রবের প্রতিশ্রুতি সত্য, সে দিন আমি তাদেরকে ছেড়ে দিব, এ অবস্থায় যে, একদল অপর দলের উপর তরঙ্গের ন্যায় পতিত হবে। (১৮ঃ৯৯) (আল্লাহর বাণীঃ) এমন কি যখন ইয়াজুজ মাজুজকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং তারা প্রতি উচ্চ ভুমি থেকে ছুটে আসবে (২১ঃ ৯৬) কাতাদা (রহঃ) বলেন, حَدَبٍ অর্থ টিলা। এক সাহাবী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, আমি প্রাচীরটিকে কারুকার্য খচিত চাদরের মত দেখেছি। নবী (সাঃ) বললেন, তুমি তা ঠিকই দেখেছ।

সেইসাথে তাফসীরে ইবনে কাসীরেও বিষয়টির উল্লেখ আছে [3]

মাজুজ

কোরআনে ইয়াজুজ মাজুজ

ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআনে ইয়াজুজ মাজুজ সম্পর্কে পরিষ্কারভাবেই বলা আছে, তাদের একদিন মুক্ত করা হবে, এবং তারা ছুটে আসবে উঁচু ভূমি থেকে [4]

‘‘যে পর্যন্ত না ইয়াজুজ ও মাজুজকে বন্ধন মুক্ত করে দেয়া হবে এবং তারা প্রত্যেক উচ্চভুমি থেকে দ্রুত ছুটে আসবে। আমোঘ প্রতিশ্রুত সময় নিকটবর্তী হলে কাফেরদের চক্ষু উচ্চে স্থির হয়ে যাবে; হায় আমাদের দূর্ভাগ্য, আমরা এ বিষয়ে বেখবর ছিলাম; বরং আমরা গোনাহগরই ছিলাম।’’ ( সূরা আম্বীয়া: ৯৬-৯৭ )

সেই সাথে, কোরআনে বর্ণনা করা আছে, জুলকারনাইন পৃথিবীর মানুষকে রক্ষা করতে একটি প্রকাণ্ড প্রাচীর তৈরি করেন, প্রাচীরের ঐপাশে ইয়াজুজ মাজুজের বসবাস [5]

“অবশেষে যখন তিনি দুই পর্বত প্রাচীরের মধ্যস্থলে পৌঁছলেন, তখন তিনি সেখানে এক জাতিকে পেলেন, যারা তাঁর কথা একেবারেই বুঝতে পারছিল না। তারা বলল, হে যুল-কারনাইন, ইয়াজুজ ও মাজুজ দেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে। আপনি বললে আমরা আপনার জন্য কিছু কর ধার্য করব এ শর্তে যে, আপনি আমাদের ও তাদের মধ্যে একটি প্রচীর নির্মাণ করে দিবেন। তিনি বললেন, আমার রব আমাকে যে সামর্থ্য দিয়েছেন, তাই যথেষ্ট। অতএব, তোমরা আমাকে শ্রম দিয়ে সাহায্য কর। আমি তোমাদের ও তাদের মাঝে একটি সুদৃঢ় প্রাচীর নির্মাণ করে দিব। তোমরা আমাকে লোহার পাত এনে দাও। অবশেষে যখন পাহাড়ের মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থান পূর্ণ হয়ে গেল, তখন তিনি বললেন, তোমরা হাঁপরে ফুঁক দিতে থাক। অবশেষে যখন তা আগুনে পরিণত হলো, তখন তিনি বললেন, তোমরা গলিত তামা নিয়ে আস। আমি তা এর উপর ঢেলে দেই। অতঃপর ইয়াজুজ ও মাজুজের দল তার উপরে আরোহণ করতে পারল না এবং তা ভেদ করতেও সক্ষম হলো না। -কারনাইন বললেন, এটা আমার রবের অনুগ্রহ। যখন আমার রবর প্রতিশ্রুত সময় আসবে, তখন তিনি একে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেবেন এবং আমার রবের প্রতিশ্রুতি সত্য।” ( সূরা কাহাফ, আয়াত: ৯৩-৯৮ )

তাফসীরে ইয়াজুজ মাজুজ

আসুন এবারে দেখি প্রখ্যাত তাফসিরকারক ইবনে কাসীরের তাফসীরে এই সম্পর্কে কী বলা রয়েছে [6]

ইয়াজুজ মাজুজ
মাজুজ 4
মাজুজ 6
মাজুজ 8
মাজুজ 10
মাজুজ 12
মাজুজ 14
মাজুজ 16

হাদিসে ইয়াজুজ মাজুজ

হাদিসে ইয়াজুজ মাজুজ সম্পর্কে বেশ কিছু কথা বলা রয়েছে। নবী মুহাম্মদ মাঝে মাঝে দুঃস্বপ্ন দেখে হুড়মুড় করে জেগে উঠতেন। উঠে সবাইকে বলতেন, ইয়াজুজ মাজুজ তাদের প্রাচীরে ছিদ্র করে ফেলেছে! এসব দুঃস্বপ্ন দেখে মুহাম্মদ এতটাই ভয় পেতেন যে, তার মুখ লাল হয়ে যেতো। আসুন, হাদিসগুলো পড়ি [7] [8] [9] [10] [11] [12] [13] [14]

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৮১/ ফিতনা
পরিচ্ছেদঃ ৩০০৪. ইয়াজূজ ও মা’জূজ
৬৬৫০। আবুল ইয়ামান ও ইসমাঈল (রহঃ) … যায়নাব বিনত জাহাশ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উদ্বিগ্ন অবস্থায় এরূপ বলতে বলতে আমার গৃহে প্রবেশ করলেন যে, আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নাই। আক্ষেপ আরবের জন্য মন্দ থেকে যা অতি নিকটবর্তী। বৃদ্ধাঙ্গুল ও তৎসংলগ্ন আঙ্গুল গোলাকৃতি করে তার দিকে ইঙ্গিত করে বললেনঃ আজ ইয়াজুজ ও মাজুজের প্রাচীর এ পরিমাণ উন্মোচিত হয়েছে। যায়নাব বিনত জাহাশ (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাদের মাঝে সৎ লোকেরা বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও কি আমরা ধ্বংস হয়ে যাব? উত্তরে তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। যদি পাপাচার বেড়ে যায়।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাঃ)

সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
৩১/ কলহ ও বিপর্যয়
পরিচ্ছেদঃ ২৩. ইয়াজুজ ও মাজুজের আত্মপ্রকাশ
২১৮৭। যাইনাব বিনতু জাহশ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, কোন একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম হতে জাগ্রত হলেন, তখন তার মুখমণ্ডল রক্তিমবর্ণ ধারণ করেছিল। তিনি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলতে লাগলেন। তা তিনবার বলার পর তিনি বললেনঃ ঘনিয়ে আসা দুর্যোগে আরবদের দুর্ভাগ্য। আজ ইয়াজুজ-মাজুজের প্রাচীর এতটুকু পরিমাণ ফাক হয়ে গেছে। এই বলে তিনি তর্জনী ও বৃদ্ধাঙ্গুলের সাহায্যে দশ সংখ্যার বৃত্ত করে ইঙ্গিত করেন। যাইনাব (রাঃ) বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। আমাদের মধ্যে সৎ লোক থাকাবস্থায়ও কি আমরা হবো? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, যখন পাপাচারের বিস্তার ঘটবে।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৯৫৩), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীসটিকে সুফিয়ান (রাহঃ) উত্তম বলে মন্তব্য করেছেন। হুমাইদী, আলী ইবনুল মাদীনী এবং আরোও অনেকে সুফইয়ান ইবনু উয়াইনাহ হতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। হুমাইদী বলেন, সুফিয়ান ইবনু উয়াইনা বলেছেন, আমি এ হাদীসের সনদে চারজন মহিলার নাম যুহরীর নিকট হতে মুখস্থ করেছি। যাইনাব বিনতু আবূ সালামা ও হাবীব দুজনই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পত্নীকন্যা (তাদের পূর্ব স্বামীর ঔরসজাত) ছিলেন। উম্মু হাবীবা ও যাইনাব বিনতি জাহশ (রাঃ) হতে বর্ণনা করা হয়েছে। তারা দুজন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রী ছিলেন।
এ হাদীসটি যুহরীর সূত্রে মামার আরোও অনেকে বর্ণনা করেছেন কিন্তু তারা সনদে হাবীবার কথা উল্লেখ করেননি। এই হাদীসটি ইবনু উয়াইনার কোন কোন শিষ্য ইবনু উয়াইনার সূত্রে বর্ণনা করেছেন কিন্তু তারা সনদে উম্মু হাবীবা (রাঃ)-এর নাম উল্লেখ করেননি।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাঃ)

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫৫/ ফিতনা সমূহ ও কিয়ামতের নিদর্শনাবলী
পরিচ্ছেদঃ ১. ফিতনা ও দুর্যোগসমূহ সন্নিকট হওয়া এবং ইয়াজুজ মাজুজের প্রাচীর খুলে দেয়া প্রসঙ্গে
৬৯৭১। আমর নাকিদ (রহঃ) … যায়নাব বিনত জাহাশ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ (একদিন) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম থেকে জাগ্রত হলেন। এ সময়ে তিনি বললেনঃ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ নিকট ভবিষ্যতে সংঘটিত দুর্যোগে আরবরা ধংস হয়ে যাবে। আজ ইয়াজুজ-মাজুজের প্রাচীর এতটুকু পরিমাণ খুলে দেয়া হয়েছে। এ সময় সুফিয়ান (রহঃ) এর হাত দ্বারা দশের চক্র বানালেন। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের মধ্যে পুণ্যবান লোক থাকা সত্ত্বেও কি আমরা ধবংস হয়ে যাব? জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ, যখন পাপাচার বেশী হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাঃ)

আল-লুলু ওয়াল মারজান
৫২/ ফিতনা এবং তার অশুভ আলামতসমূহ
পরিচ্ছেদঃ ৫২/১. ফিতনা নিকটবর্তী হওয়া এবং ইয়াজুজ মাজুজের (দেয়াল) খুলে যাওয়া।
১৮৩০. আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ইয়াজুজ ও মাজুজের প্রাচীরে আল্লাহ এ পরিমাণ ছিদ্র করে দিয়েছেন। এই বলে, তিনি তাঁর হাতে নব্বই সংখ্যার আকৃতির মত করে দেখালেন।
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ৬০: নাবীগণের (আঃ) হাদীসসমূহ, অধ্যায় ৭, হাঃ ৩৩৪৭; মুসলিম, পর্ব ৫২: ফিতনা এবং তার অশুভ আলামতসমূহ, অধ্যায় ১, হাঃ ২৮৮১
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫০/ আম্বিয়া কিরাম (আঃ)
পরিচ্ছেদঃ ২০০৬. ইয়াজুজ ও মাজুজের ঘটনা। মহান আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই ইয়াজুজ মাজুজ পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টিকারী (১৮ঃ ৯৪)
২০০৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ (হে নবী) তারা আপনাকে যুল কারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে।
আয়াতে سَبَبًا অর্থ চলাচলের পথ ও রাস্তা। তোমরা আমার কাছে লোহার টুকরা নিয়ে আস (১৮ঃ ৮৩-৯৬) এখানে زُبَر শব্দটি বহুবচন। একবচনে زُبْرَةٌ অর্থ টুকরা। অবশেষে মাঝের ফাঁকা জায়গা পূর্ণ হয়ে যখন লোহার স্তুপ দু’পর্বতের সমান হল। (১৮ঃ ৯৬) তখন তিনি লোকদের বললেন, এখন তাতে ফুঁক দিতে থাক। এ আয়াতে الصَّدَفَيْنِ শব্দের অর্থ ইবন আব্বাস (রাঃ) এর বর্ণনা অনুযায়ী দু’টি পর্বতকে বুঝানো হয়েছে। আর السُّدَّيْنِ এর অর্থ দু’টি পাহাড়। خَرْجًا অর্থ পারিশ্রমিক। যুল কারনাইন বললঃ তোমরা হাঁফরে ফুঁক দিতে থাক। যখন তা আগুনের ন্যায় উত্তপ্ত হল, তখ তিনি বললেন, তোমরা গলিত তামা নিয়ে আস। আমি তা এর উপর ঢেলে দেই। (১৮ঃ ৯৬) قِطْرا অর্থ সীসা। আবার লৌহ গলিত পদার্থকেও বলা হয়। এবং তামাকেও বলা হয়। আর ইবন আব্বাস (রাঃ) এর অর্থ তাম্রগলিত পদার্থ বলেছেন। (আল্লাহর বাণীঃ) এরপর তারা (ইয়াজুজ মাজুজ) এ প্রাচীর অতিক্রম করতে পারল না। (১৮ঃ ৯৭) অর্থাৎ তারা এর উপরে চড়তে সক্ষম হল না। اسْتَطَاعَ শব্দটি طعت له থেকে باب اسْتَفْعَل আনা হয়েছে। একে أسط ও يَسْطِيعُ যবরসহ পড়া হয়ে থাকে। আর কেহ কেহ একে أَسْطَاعَ يَسْطِيعُ রূপে পড়েন। (আল্লাহর বাণীঃ) তারা তা ছিদ্রও করতে পারল না। তিনি বললেন, এটা আমার রবের অনুগ্রহ। যখন আমার রবের প্রতিশ্রুতি পূরণ হবে তখন তিনি এটাকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দিবেন। (১৮ঃ ৯৮-৯৮) دكاء অর্থ মাটির সাথে মিশিয়ে দিবেন। نَاقَةٌ دَكَّاءُ বলে যে উটের কুঁজ নেই। الدَّكْدَاكُ مِنَ الأَرْضِ যমীনের সেই সমতল উপরিভাগকে বলা হয় যা শুকিয়ে যায় এবং উচু নিচু না থাকে। (আল্লাহর বাণীঃ) আর আমার রবের প্রতিশ্রুতি সত্য, সে দিন আমি তাদেরকে ছেড়ে দিব, এ অবস্থায় যে, একদল অপর দলের উপর তরঙ্গের ন্যায় পতিত হবে। (১৮ঃ৯৯) (আল্লাহর বাণীঃ) এমন কি যখন ইয়াজুজ মাজুজকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং তারা প্রতি উচ্চ ভুমি থেকে ছুটে আসবে (২১ঃ ৯৬) কাতাদা (রহঃ) বলেন, حَدَبٍ অর্থ টিলা। এক সাহাবী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, আমি প্রাচীরটিকে কারুকার্য খচিত চাদরের মত দেখেছি। নবী (সাঃ) বললেন, তুমি তা ঠিকই দেখেছ।
৩১০৯। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় তাঁর কাছে আসলেন এবং বলতে লাগলেন, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ। আরবের লোকদের জন্য সেই অনিষ্ঠের কারণে ধ্বংস অনিবার্য যা নিকটবর্তী হয়েছে। আজ ইয়াজুজ ও মাজুজের প্রাচীর এ পরিমাণ খুলে (ছিদ্র হয়ে) গেছে। এ কথার বলার সময় তিনি তাঁর বৃদ্ধাংগুলির অগ্রভাগকে তাঁর সাথের শাহাদাতের আংগুলির অগ্রভাগের সাথে মিলিয়ে গোলাকৃতি করে ছিদ্রের পরিমাণ দেখান। যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাঃ) বলেন, তখন আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের মধ্যে নেক ও পুণ্যবান লোকজন বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও কি আমরা ধ্বংস হয়ে যাব? তিনি বললেন, হাঁ যখন পাপাচার অধিক মাত্রায় বেড়ে যাবে। (তখন অল্প সংখ্যক নেক লোকের বিদ্যমানেই মানুষের ধ্বংস নেমে আসবে।)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাঃ)

সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
৬০/৭ আম্বিয়া কিরাম (‘আঃ)
পরিচ্ছেদঃ ৬০/৭. ইয়াজুজ ও মাজুজের ঘটনা
৩৩৪৮. আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মহান আল্লাহ ডাকবেন, হে আদাম (আঃ)! তখন তিনি জবাব দিবেন, আমি হাযির, আমি সৌভাগ্যবান এবং সকল কল্যাণ আপনার হতেই। তখন আল্লাহ বলবেন, জাহান্নামীদেরকে বের করে দাও। আদাম (আঃ) বলবেন, জাহান্নামী কারা? আল্লাহ বলবেন, প্রতি হাজারে নয়শত নিরানববই জন। এ সময় ছোটরা বুড়ো হয়ে যাবে। প্রত্যেক গর্ভবতী তার গর্ভপাত করে ফেলবে। মানুষকে দেখবে নেশাগ্রস্তের মত যদিও তারা নেশাগ্রস্ত নয়। বস্তুতঃ আল্লাহর শাস্তি কঠিন- (হাজ্জঃ ২)। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে সেই একজন কে? তিনি বললেন, তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর। কেননা তোমাদের মধ্য হতে একজন আর এক হাজারের অবশিষ্ট ইয়াজুজ-মাজুজ হবে। অতঃপর তিনি বললেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম। আমি আশা করি, তোমরা সমস্ত জান্নাতবাসীর এক তৃতীয়াংশ হবে। (আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) বলেন) আমরা এ সংবাদ শুনে আবার আল্লাহু আকবার বলে তাকবীর দিলাম। তিনি আবার বললেন, আমি আশা করি তোমরা সমস্ত জান্নাতীদের অর্ধেক হবে। এ কথা শুনে আমরা আবারও আল্লাহু আকবার বলে তাকবীর দিলাম। তিনি বললেন, তোমরা তো অন্যান্য মানুষের তুলনায় এমন, যেমন সাদা ষাঁড়ের দেহে কয়েকটি কাল পশম অথবা কালো ষাঁড়ের শরীরে কয়েকটি সাদা পশম। (৪৭৪১, ৬৫৩০, ৭৪৮৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩১০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩১০৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ)

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১/ কিতাবুল ঈমান
পরিচ্ছেদঃ ৮৮. জান্নাতিদের অর্ধেক হবে এই উম্মাত
৪২৫। উসমান ইবনু আবূ শায়বা-আবাসী (রহঃ) … আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মহামহিম আল্লাহ (কিয়ামত দিবসে) আহবান করবেন, হে আদম! তিনি উত্তরে বলবেন, আমি আপনার সামনে হাজির, আপনার কাছে শুভ কামনা করি এবং সকল মঙ্গল আপনারই হাতে। মহান আল্লাহ বলবেনঃ জাহান্নামী দলকে বের কর। আদম (আলাইহিস সালাম) জিজ্ঞেস করবেনঃ জাহান্নামী দল কতজনের? মহান আল্লাহ বলবেনঃ প্রতি হাজার থেকে নয়শ নিরানব্বই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এই-ই সেই মুহর্ত, যখন বালক হয়ে যাবে বৃদ্ধ, সকল গর্ভবতী তাদের গর্ভপাত করে ফেলবে আর মানুষকে দেখবে মাতাল সদৃশ, যদিও তারা নেশাগ্রস্ত নয়, বস্তুত আল্লাহর আযাব বড়ই কঠিন।
রাবী বলেন, কথাগুলো সাহাবাগণের কঠিন মনে হল। তাঁরা বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আম্যদের মধ্যে কে সেই ব্যাক্তি? বললেনঃ আনন্দিত হও। ইয়াজুজ ও মাজুজের সংখ্যা এক হাজার হলে তোমাদের সংখ্যা হবে একজন।” তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কসম সে সত্তার, যার হাতে আমার প্রাণ! অবশ্যই আমি আশা রাখি যে, তোমরা জান্নাতীদের এক চতুর্থাংশ হবে। সাহাবী বলেন, আমরা আল্লাহর প্রশংসা করলাম এবং ‘আল্লাহু আকবার’- ধ্বনি দিলাম।
তারপর আবার বললেন, শপথ সে সত্তার, যার হাতে আমার প্রান! অবশ্যই আমি আশা রাখি, জান্নাতীদের মধ্যে তোমরা তাদের এক তৃতীয়াংশ হবে। সাহাবী বলেন, আমরা বললাম, আলহামদু-লিল্লাহ- এবং আল্লাহু আকবার, ধ্বনি দিলাম। তারপর আবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কসম সে সত্তার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! আমি আশা রাখি যে, তোমরা জান্নাতীদের অর্ধেক হবে এবং তোমরা অন্যান্য উম্মাতের মধ্যে কালো ষাড়ের গায়ে একটি সাদা পশমের মত অথবা গাধার পায়ের চিহ্নের মত।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ)

সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
৩১/ কলহ ও বিপর্যয়
পরিচ্ছেদঃ ৫৯. দাজ্জালের অনাচার
২২৪০। আন-নাওয়াস ইবনু সামআন আল-কিলাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন এক সকালে দাজ্জাল প্রসঙ্গে আলোচনা করেন। তিনি এর ভয়াবহতা ও নিকৃষ্টতা তুলে ধরেন। এমনকি আমাদের ধারণা সৃষ্টি হলো যে, সে হয়তো খেজুর বাগানের ওপাশেই বিদ্যমান।
বর্ণনাকারী বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট হতে চলে গেলাম, তারপর আবার আমরা তার নিকট ফিরে এলাম। তিনি আমাদের মধ্যে দাজ্জালের ভীতির চিহ্ন দেখে প্রশ্ন করেনঃ তোমাদের কি হয়েছে? আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। আপনি সকালে দাজ্জাল প্রসঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং এর ভয়াবহতা ও নিকৃষ্টতা এমন ভাষায় উত্থাপন করেছেন যে, আমাদের ধারণা হচ্ছিল যে, হয়তো সে খেজুর বাগানের পাশেই উপস্থিত আছে।
তিনি বললেনঃ তোমাদের ক্ষেত্রে দাজ্জাল ছাড়াও আমার আরো কিছুর আশংকা রয়েছে। যদি সে আমার জীবদ্দশাতেই তোমাদের মাঝে আসে তাহলে আমিই তোমাদের পক্ষে তার প্রতিপক্ষ হবো। আর সে যদি আমার অবর্তমানে আবির্ভূত হয়, তাহলে তোমরাই তার প্রতিপক্ষ হবে। আর আল্লাহ্ তা’আলাই প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আমার পরিবর্তে সহায় হবেন।
সে (দাজ্জাল) হবে কুঞ্চিত (কোকড়া) চুলবিশিষ্ট, স্থির দৃষ্টিসম্পন্ন যুবক, সে হবে আবদুল উযযা ইবনু কাতানের অনুরূপ। তোমাদের মধ্যে কেউ যদি তার দেখা পায় তাহলে যেন সে সূরা কাহফ-এর প্রাথমিক আয়াতগুলো তিলাওয়াত করে। তিনি বললেনঃ সে সিরিয়া ও ইরাকের মধ্যবর্তী কোন এলাকা হতে আত্মপ্রকাশ করবে। তারপর সে ডানে-বামে ফিতনা ফ্যাসাদ ও বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়াবে। হে আল্লাহর বান্দাহগণ! তোমরা দৃঢ়তার সাথে অবস্থান করবে।
আমরা প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। সে কত দিন দুনিয়াতে থাকবে? তিনি বললেনঃ চল্লিশ দিন। এর একদিন হবে একবছরের সমান, একদিন হবে একমাসের সমান এবং একদিন হবে একসপ্তাহের সমান, আর অবশিষ্ট দিনগুলো হবে তোমাদের বর্তমান দিনের মতো।
বর্ণনাকারী বলেন, আমরা প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। আপনার কি ধারণা, যে দিনটি একবছরের সমান হবে, তাতে একদিনের নামায আদায় করলেই আমাদের জন্য যথেষ্ট হবে? তিনি বললেনঃ না, বরং তোমরা সেদিনের সঠিক অনুমান করে নেবে (এবং সে অনুযায়ী নামায আদায় করবে)।
আমরা আবার প্রশ্ন করলাম, দুনিয়াতে তার চলার গতি কত দ্রুত হবে? তিনি বললেনঃ তার চলার গতি হবে বায়ুচালিত মেঘের অনুরূপ; তারপর সে কোন জাতির নিকট গিয়ে তাদেরকে নিজের দলের দিকে আহবান জানাবে, কিন্তু তারা তাকে মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত করবে এবং তার দাবি প্রত্যাখ্যান করবে। সে তখন তাদের নিকট হতে ফিরে আসবে এবং তাদের ধন-সম্পদও তার পিছনে পিছনে চলে আসবে। তারা পরদিন সকালে নিজেদেরকে নিঃস্ব অবস্থায় পাবে।
তারপর সে অন্য জাতির নিকট গিয়ে আহবান করবে। তারা তার আহবানে সাড়া দিবে এবং তাকে সত্য বলে মেনে নিবে। সে তখন আকাশকে বৃষ্টি বর্ষনের জন্য আদেশ করবে এবং সে অনুযায়ী আকাশ বৃষ্টি বর্ষন করবে। তারপর সে যামীনকে ফসল উৎপাদনের জন্য নির্দেশ দিবে এবং সে মুতাবিক যামীন ফসল উৎপাদন করবে। তারপর বিকেলে তাদের পশুপালগুলো পূর্বের চেয়ে উচু কুঁজবিশিষ্ট, মাংসবহুল নিতম্ববিশিষ্ট ও দুগ্ধপুষ্ট স্তনবিশিষ্ট হবে। তারপর সে নির্জন পতিত ভূমিতে গিয়ে বলবে, তোর ভিতরের খনিজভাণ্ডার বের করে দে। তারপর সে সেখান হতে ফিরে আসবে এবং সেখানকার ধনভাণ্ডার তার অনুসরণ করবে যেভাবে মৌমাছিরা রাণী মৌমাছির অনুসরণ করে।
তারপর সে পূর্ণযৌবন এক তরুণ যুবককে তার দিকে আহবান করবে। সে তলোয়ারের আঘাতে তাকে দুই টুকরা করে ফেলবে। তারপর সে তাকে ডাক দিবে, অমনি সে হাস্যোজ্জ্বল চেহারা নিয়ে সামনে এসে দাড়াবে।
হলুদ রংয়ের দুটি কাপড় পরিহিত অবস্থায় দুজন ফিরিশতার ডানায় ভর করে ঈসা ইবনু মারইয়াম (আঃ) অবতরণ করবেন। তিনি তার মাথা নীচু করলে ফোটায় ফোটায় এবং উচু করলেও মনিমুক্তার ন্যায় (ঘাম) পড়তে থাকবে। তার নিঃশ্বাস যে ব্যক্তিকেই স্পর্শ করবে সে মারা যাবে; আর তার শ্বাসবায়ু দৃষ্টির শেষ সীমা পর্যন্ত পৌছবে। তারপর তিনি দাজ্জালকে খোঁজ করবেন এবং তাকে ‘লুদ্দ’-এর নগরদ্বারপ্রান্তে পেয়ে হত্যা করবেন।
তিনি বলেনঃ আল্লাহ তা’আলার ইচ্ছা মতো এভাবে তিনি অতিবাহিত করবেন। তারপর আল্লাহ তা’আলা তার নিকট ওয়াহী প্রেরণ করবেনঃ “আমার বান্দাহদেরকে তুর পাহাড়ে সরিয়ে নাও। কেননা, আমি এমন একদল বান্দাহ অবতীর্ণ করছি যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ক্ষমতা কারো নেই”।
তিনি বলেন, তারপর আল্লাহ ইয়াজুজ-মাজুজের দল পাঠাবেন। আল্লাহ তা’আলার বাণী অনুযায়ী তাদের অবস্থা হলো, “তারা প্রত্যেক উচ্চভূমি হতে ছুটে আসবে” (সূরাঃ আম্বিয়া-৯৬)। তিনি বলেন, তাদের প্রথম দলটি (সিরিয়ার) তাবারিয়া উপসাগর অতিক্রমকালে এর সমস্ত পানি পান করে শেষ করে ফেলবে। এদের শেষ দলটি এ স্থান দিয়ে অতিক্রমকালে বলবে, নিশ্চয়ই এই জলাশয়ে কোন সময় পানি ছিল। তারপর বাইতুল মাকদিসের পাহাড়ে পৌছার পর তাদের অভিযান সমাপ্ত হবে।
তারা পরস্পর বলবে, আমরা তো দুনিয়ায় বসবাসকারীদের ধ্বংস করেছি, এবার চল আকাশে বসবাসকারীদের ধ্বংস করি। তারা এই বলে আকাশের দিকে তাদের তীর নিক্ষেপ করবে। আল্লাহ তা’আলা তাদের তীরসমূহ রক্তে রঞ্জিত করে ফিরত দিবেন। তারপর ঈসা ইবনু মারইয়াম (আঃ) ও তার সাথীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়বেন। তারা (খাদ্যাভাবে) এমন এক কঠিন পরিস্থিতিতে পতিত হবেন যে, তখন তাদের জন্য একটা গরুর মাথা তোমাদের এ যুগের একশত দীনারের চাইতে বেশি উত্তম মনে হবে।
তিনি বলেন, তারপর ঈসা (আঃ) ও তার সাথীরা আল্লাহ্ তা’আলার দিকে রুজু হয়ে দু’আ করবেন। আল্লাহ তা’আলা তখন তাদের (ইয়াজুজ-মাজুজ বাহিনীর) ঘাড়ে মহামারীরূপে নাগাফ নামক কীটের উৎপত্তি করবেন। তারপর তারা এমনভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে যেন একটি প্রাণের মৃত্যু হয়েছে
তখন ঈসা (আঃ) তার সাথীদের নিয়ে (পাহাড় হতে) নেমে আসবেন। সেখানে তিনি এমন এক বিঘত পরিমাণ জায়গাও পাবেন না, যেখানে সেগুলোর পচা দুৰ্গন্ধময় রক্ত-মাংস ছড়িয়ে না থাকবে। তারপর তিনি সাথীদের নিয়ে আল্লাহ তা’আলার নিকট দু’আ করবেন। আল্লাহ তা’আলা তখন উটের ঘাড়ের ন্যায় লম্বা ঘাড়বিশিষ্ট এক প্রকার পাখি প্রেরণ করবেন। সেই পাখি ওদের লাশগুলো তুলে নিয়ে গভীর গর্তে নিক্ষেপ করবে। এদের পরিত্যক্ত তীর, ধনুক ও তূণীরগুলো মুসলমানগণ সাতবছর পর্যন্ত জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করবে।

তারপর আল্লাহ তা’আলা এমন বৃষ্টি বর্ষণ করবেন যা সমস্ত ঘর-বাড়ী, স্থলভাগ ও কঠিন মাটির স্তরে গিয়ে পৌছবে এবং সমস্ত পৃথিবী ধুয়েমুছে আয়নার মতো ঝকঝকে হয়ে উঠবে। তারপর যামীনকে বলা হবে, তোর ফল ও ফসলসমূহ বের করে দে এবং বারকাত ও কল্যাণ ফিরিয়ে দে। তখন এরূপ পরিস্থিতি হবে যে, একদল লোকের জন্য একটি ডালিম পর্যাপ্ত হবে এবং একদল লোক এর খোসার ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করতে পারবে।
দুধেও এরূপ বারকাত হবে যে, বিরাট একটি দলের জন্য একটি উটনীর দুধ, একটি গোত্রের জন্য একটি গাভীর দুধ এবং একটি ছোট দলের জন্য একটি ছাগলের দুধই যথেষ্ট হবে। এমতাবস্থায় কিছুদিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর হঠাৎ আল্লাহ তা’আলা এমন এক বাতাস প্রেরণ করবেন যা সকল ঈমানদারের আত্মা ছিনিয়ে নেবে এবং অবশিষ্ট থাকবে শুধুমাত্র দুশ্চরিত্রের লোক যারা গাধার মতো প্রকাশ্যে নারী সম্ভোগে লিপ্ত হবে। তারপর তাদের উপর কিয়ামত সংঘটিত হবে।
সহীহ, সহীহাহ (৪৮১), তাখরাজ ফাযায়েলুশশাম (২৫), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র আবদুর রাহমান ইবনু ইয়াযীদ ইবনু জাবিরের সূত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ নাও্ওয়াস ইবনু সাম্‘আন (রাঃ)

উপসংহার

প্রতিটি প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের খুব সাধারণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, সীমাহীন লোভ এবং ভীতি সৃষ্টি করে রাখা। মানুষকে লোভ এবং ভয়ের মধ্যে রাখতে পারলেই, তাদের দিয়ে যেকোন কাজ করিয়ে নেয়া সম্ভব। কারণ লোভ এবং ভয় মানুষের স্বাভাবিক যৌক্তিক চিন্তা করতে বাধা দেয়। হিন্দু ধর্মে যেমন অসুরদের কথা বলে ভয় দেখানো হয়েছে, ঠাকুরমার ঝুলিতে যেমন রাক্ষস খোক্কস ভুত পেত্নীর কথা বলে ভয় দেখানো হয়েছে, ইসলামও ঠিক একইভাবে ইয়াজুজ মাজুজের ভয় দেখানো হয়েছে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক জিয়িয়ে রাখতে। ইয়াজুজ মাজুজ বলে মানুষের মত কোন প্রাণী যদি থাকতো, তাহলে অবশ্যই তাদের তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যেতো। এই স্যাটেলাইট আর ড্রোনের যুগে এরকম দাবী কতটা অন্ধবিশ্বাস থেকে আসা তা বলাই বাহুল্য। আশাকরি, যুক্তিবাদী পাঠকগণ লেখাটি মন দিয়ে পড়বেন, এবং যুক্তি দিয়ে বিচার বিবেচনা করবেন। তাহলেই লেখাটির উদ্দেশ্য সফল হবে।

তথ্যসূত্র

  1. Gates of Alexander []
  2. Great Wall of Gorgan []
  3. তাফসীরে ইবনে কাসীর, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ষষ্ঠ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫০৩ []
  4. সূরা আম্বীয়া: ৯৬-৯৭ []
  5. সূরা কাহাফ, আয়াত: ৯৩-৯৮ []
  6. তাফসীরে ইবনে কাসীর, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ষষ্ঠ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫০১-৫০৮ []
  7. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বর- ৬৬৫০ []
  8. সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত), হাদিস নম্বর- ২১৮৭ []
  9. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বর- ৬৯৭১ []
  10. আল-লুলু ওয়াল মারজান, হাদিস নম্বর- ১৮৩০ []
  11. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বর- ৩১০৯ []
  12. সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, হাদিস নম্বর- ৩৩৪৮ []
  13. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বর- ৪২৫ []
  14. সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত), হাদিস নম্বর- ২২৪০ []
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন

আসিফ মহিউদ্দীন

আসিফ মহিউদ্দীন সম্পাদক সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন [email protected]

6 thoughts on “ইয়াজুজ মাজুজ | ইসলামী রূপকথার রাক্ষস খোক্কস

  • October 23, 2020 at 4:30 AM
    Permalink

    ইয়াজুজ মাজুজ
    বা গোগ -মাগোগ – এই টির ইসলামী ধ্যানধারনার আদ্যোপান্ত এবং সকল রেফারেন্স একসাথে তুলে ধরার জন্য আসিফকে বিশেষ ভাবে সাধুবাদ জানাচ্ছি।

    এক যুগের বেশি সময় আগের কথা যখন কেরআনে নানান অসংগতি মস্তিষ্ক তোলপাড় করে তুলছিলে সেই সময় শুরুর দিকে আমি এই ইয়াজ মাজুজ নিয়ে অনেক ঘাটাঘাটি করেছিলাম সংগত কারণেই এই লেখাটি আমাকে অতীত স্মরণ করিয়ে দিলো ।

    এরাবিয়ান নাইটসের গল্পে আমরা যেমন কল্পনার যত লাড্ডু বানানো যায় তা সব বানাতে দেখি, যা মনে চায় তাই গাঁজাখুড়ি তৈরী করতে দেখি তা থেকে বোধদয় হয় ঐ এলাকায় মানে প্রাচীন সুমেরীয়, পারসিয়ান , ইসরাইল এলাকায় রূপকথা তৈরীর বেশ ভালো মান ছিলো।
    ইয়াজ মাজুজ সেই সব রূরকথারই একটি খুব জনপ্রিয় বা লোক মুখে প্রচলিত কাহিনীই হয়ে থাকবে।
    এত পরিচিত কাহিনী হয়তো যে ওল্ড টেস্টামেন্ট এবং কোরআন কেউই এটাকে এড়াচে পারে নি, বরং চমকপ্রদ রংচং দিছে।
    আমার সবচেয়ে মজা লাগে দেয়াল ভাঙতে যখন একটু বাকী থাকে তারা পরের দিনের জন্য রেখে চলে যায়
    আর সরালে আবার দেয়ালের সীসা ভরে যায় — শিশুতোষ রাক্ষস ক্ষোক্কসের রূপকথা হিসেবে অতুলনীয় ।
    কিন্তু এই মাল মানুষ বাস্তব বলে বিশ্বাস করে কেনো খুব অবাক হই।

    ধন্যবাদ।

    Reply
  • October 23, 2020 at 7:25 AM
    Permalink

    প্রাচীরটির বর্ণনার সাথে গেম ওফ থ্রোন্সের দ্যা গ্র‍্যাট ওয়াল অফ নর্থ এর মিল আছে!

    Reply
  • October 23, 2020 at 9:28 PM
    Permalink

    Julker-nine was “Cyrus the Great” or “Alexander the Great”?

    The story of julker-nine was narrated in the Quran because 3 questions were asked to test Muhammad. It is the answer to one of those.

    Reply
    • October 23, 2020 at 11:10 PM
      Permalink

      বেশিরভাগ ঐতিহাসিক এবং ভাষাতত্ত্ববিদের মতে, উনি হচ্ছেন সম্রাট আলেকজান্ডার। তবে বর্তমানের কয়েকজন স্কলার Cyrus the Great বলেও দাবী করেছে। তথ্যগুলো মেলালে আলেকজান্ডারের সাথেই বেশি মিল পাওয়া যায়।

      Reply
  • October 24, 2020 at 7:00 AM
    Permalink

    Arabian and Israeli people or separately ask Muhammod (sallahu alyhe wa sallam) …..about 3 questions (2 questions in Sura khahaf and 1 in Sura boni Israel)….then we get 3 answers from Quran…..so yajoj majoj is not fun….specially when Israeli or Arab ask questions…thank you.

    Reply
  • November 9, 2022 at 11:28 PM
    Permalink

    ছোট্ট একটা বিষয় বুজলেই সব বুজবা, শ্রীলঙ্কায় যে বিশাল আকারের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে পাহাড়ের ওপর, ওই সাইজের মানুষ কি আজ ও পাওয়া গেছে কি? তোমার বিজ্ঞান কি স্যাটেলাইট দিয়ে প্রমাণ করতে পেরেছে ছাপ টা কোথা থেকে এলো? আর প্রমাণ করতে পেরেছে কি ওই পায়ের ছাপ কিসের?বুদ্ধিমানদের জন্য ইশারাই যথেষ্ঠ। ওই পায়ের ছাপ কি তোমার রূপকথার গল্পঃ থেকে এসেছে?

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *