ইসলামে মুতা বিবাহ বা হালাল যৌনচুক্তি প্রসঙ্গে

Print Friendly, PDF & Email

ভূমিকা

মুতা হল এক ধরণের সাময়িক বা অস্থায়ী বিবাহ, অথবা বলা ভাল বিশেষ উদ্দেশ্যে করা একটি যৌনচুক্তি, যা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কিছু অর্থের বিনিময়ে হয়ে থাকে। নির্দিষ্ট সময় সীমা অতিক্রম হওয়ার সাথে সাথে আপনা হতে এ বিবাহ চুক্তি ভঙ্গ হয়ে যায়। এর জন্য আলাদাভাবে তালাকের দরকার হয় না। মুতা বিবাহ (Arabic: نكاح المتعة‎, nikāḥ al-mutʿah, আক্ষরিক অর্থে ভোগের বিবাহ বা pleasure marriage) নামক এই প্রথাটিকে আরব অঞ্চলে মুহাম্মদের যুগে প্রচলিত হালাল যৌনচুক্তি বা পতিতাবৃত্তি বললেও ভুল হবে না। কারণ, পতিতাবৃত্তির সংজ্ঞাও একই। পতিতাবৃত্তি হচ্ছে এমন একটি পেশা, যেই পেশায় নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দুইজন মানুষের মধ্যে যৌন সম্পর্কের একটি চুক্তি হয়, সেই সময়টি এবং কাজটি শেষ হলে তাদের চুক্তিটি বাতিল বলে গণ্য হয়। দুইজনার প্রতি দুইজনার আর কোন দায়দায়িত্ব থাকে না। এক্ষেত্রে স্বামী মারা গেলে স্ত্রী কোন উত্তরাধিকার লাভ করে না, স্ত্রী মারা গেলেও স্বামী কোন সম্পত্তি পায় না। শুধুমাত্র যৌনকাজের জন্য একপক্ষ অর্থ দেয়, আরেক পক্ষ অর্থ গ্রহণ করে। মুহাম্মদের সাহাবীগণও কিছু অর্থের বিনিময়ে একরাত বা এক সপ্তাহের জন্য নারীদের যৌনকর্মের জন্য ভাড়া নিতো, যাকে সত্যিকার অর্থে পতিতাবৃত্তিই বলতে হয়।

সুন্নী ইসলামের একটি বড় অংশ মনে করে, সেই সাথে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত এর আকীদা হচ্ছে, ইসলাম একে প্রাথমিক সময়ে হালাল ঘোষণা করলেও, পরবর্তী সময়ে হারাম ঘোষণা করে। তবে, বেশিরভাগ অংশ একে নিষিদ্ধ মনে করলেও কিছু কিছু মুসলিম স্কলার মুতা বিবাহকে বৈধ মনে করেছেন। তাফসীর আল কাবীরের লেখক ফখর আদ-দীন আর-রাযী বা ফখরুদ্দীন আল রাযি তার তাফসীর গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, বেশিরভাগ সুন্নী আলেমই মুতা বিবাহকে অবৈধ মনে করলেও কিছু সুন্নী আলেম মুতাকে এখনো বৈধ মনে করেন। সেই সাথে, সুন্নী আলেমগণ মিসইয়ার নিকাহ এবং উর্ফি নিকাহকেও অনেক সময় বৈধতা দিয়েছেন, যেগুলো আসলে মুতা বিবাহের মতই। অনেকটা পশ্চিমা বিশ্বে প্রচলিত লিভিং টুগেদারের মত এক ধরণের যৌনচুক্তি। সেই নিয়ে ভিন্ন সময়ে আলোচনা করা যাবে [1] [2]

শিয়া মুসলিমদের মধ্যে বড় অংশ মনে করে, এটি সর্বসময়ের জন্য হালাল, যেহেতু খোদ নবী নিজেই এবং সাহাবীগণও কাজটি করেছেন। পরবর্তীতে হযরত উমর ফতোয়ার মাধ্যমে মুতা বিবাহ হারাম ঘোষণা করেন, যা ইসনা আশারিয়া বা বারো ইমামের অনুসারী শিয়ারা মানে না। ইরান পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে ইসনা আশারিয়া শিয়া ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে স্বীকৃত। তবে, শিয়া মুসলিমদের মধ্যে একাংশও আবার মুতা বিবাহকে নিষিদ্ধ বলে মনে করেন। জায়েদি হল শিয়া ইসলামের একটি শাখা যা ধর্মতাত্ত্বিক দিক দিয়ে ইবাদি ও মুতাজিলা চিন্তাধারার এবং ফিকহশাস্ত্রীয় ক্ষেত্রে হানাফি মাজহাবের নিকটবর্তী। অষ্টম শতাব্দীতে শিয়া চিন্তাধারা থেকে জায়েদি মতবাদ উৎপত্তি লাভ করে। তৃতীয় ইমাম হোসাইন ইবনে আলীর দৌহিত্র এবং চতুর্থ ইমাম আলী ইবনে হোসাইনের পুত্র জায়েদ ইবনে আলীর নামানুসারে জায়েদিদের নামকরণ করা হয়। জায়েদি মাজহাবের অনুসারীদের জায়েদি শিয়া নামে অবিহিত করা হয়। জায়েদিরা ইয়েমেনের মোট মুসলিম জনসংখ্যার ৫০% যা দেশটির বৃহত্তম শিয়া মুসলমান সম্প্রদায়৷ জায়েদি শিয়ারা বেশিরভাগ সুন্নীর মতই মুতা বিবাহকে অবৈধ মনে করেন। অর্থাৎ সুন্নী মুসলিমদের মধ্যে বৃহৎ অংশ মুতাকে হারাম মনে করে, শিয়া মুসলিমদের মধ্যে একটি ছোট অংশও সেটিকে হারাম মানে। অন্যদিকে সুন্নীদের মধ্যে ছোট একটি অংশ একে হালাল মনে করে, আর শিয়াদের মধ্যে বড় একটি অংশ একে হালাল মনে করে।

আমাদের আজকের আলোচনা হচ্ছে, নবী মুহাম্মদ নিজে, তার সাহাবীগণ, কখন এবং কোন সময়ে এই সাময়িক বিবাহ বা হালাল বেশ্যাবৃত্তির বা ইসলামিক পরিভাষায় মুতা বিবাহ করেছিলেন কিনা, করাকে বৈধ কাজ মনে করতেন কিনা, তা যাচাই করে দেখা। আবারো উল্লেখ করছি, সুন্নী ইসলামের বিভিন্ন মাযহাবে মুতা বিবাহ হারাম করা হয়েছে, এই বিষয়ে অসংখ্য ফাতোয়া রয়েছে। আমাদের আলোচ্য বিষয় মোটেও সেটি নয়। আমাদের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে, নবী মুহাম্মদ খোদ এই কাজটির অনুমোদন দিয়েছিলেন কিনা, নিজে করেছেন কিনা, এই কাজটি সুন্নতের অন্তর্ভূক্ত কিনা, নবীর সময়ে এই কাজটি ব্যাপকভাবে চর্চা করা হতো কিনা, এবং এটি নিষিদ্ধ কীভাবে করা হলো, সেটি বিশ্লেষণ করে দেখা।

ইসলাম- নৈতিকতা নাকি নির্দেশনা

ধর্মগুলোর একটি প্রধানতম দাবী হচ্ছে, ধর্ম নাকি মানুষকে নৈতিকতার শিক্ষা দান করে! খুব গর্ব করে ধর্মের রক্ষকগণ বলে থাকেন যে, তাদের ধর্মীয় নৈতিকতা হচ্ছে অবজেকটিভ, অর্থাৎ স্থান কাল পাত্রের ওপর নির্ভরশীল নয়। অন্যদিকে সাবজেক্টিভ মোরালিটি হচ্ছে স্থান কাল পাত্রের ওপর নির্ভরশীল এবং স্থান কাল পাত্রের সাপেক্ষে পরিবর্তন পরিমার্জন সংশোধন যোগ্য। দাবী অনুসারে, অবজেক্টিভ মোরালিটি উচ্চতর কোন ঐশ্বরিক সত্ত্বা থেকে আসে এবং এর কোন পরিবর্তন পরিমার্জন সংশোধন সম্ভব নয়। কিন্তু অবজেক্টিভ মোরালিটির দাবীদার সেই ধর্মগুলোর মধ্যেই খুব হাস্যকর ভাবেই দেখা যায়, উনাদের ধর্মের প্রবর্তকগণ কখনো কখনো আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক ভাই বোনের যৌন সম্পর্ককে বৈধতা দিয়েছিলেন (আদম হাওয়ার ছেলেমেয়েরা ভাইবোন বিবাহ করেছিল), কখনো মুতা বিবাহকে বৈধতা দিয়েছিলেন, নবীর বেলায় যত খুশী বিবাহের অনুমতি দিয়েছিলেন, ইত্যাদি; এরকম আসলে অসংখ্য উদাহরণ। তাহলে এই নৈতিকতা বা মোরালিটি তো স্থান কাল পাত্রের ওপরই নির্ভরশীল হলো, তাই না? অবজেক্টিভ হলো কোথায়?

আবার নবী একসময় মুতা বিবাহকে হারামও করে দিলেন। হারাম করে দেয়া অর্থই এটি যে, এই নৈতিকতা বা মোরালিটি পরিবর্তনযোগ্য, সংশোধন করা সম্ভব। যে কোন সাপেক্ষে যে কোন স্থান কাল পাত্রের কারণে নৈতিকতার মান যদি পরিবর্তিত হয়ে যায়, তাহলে সেটি তো আর অবজেকটিভ থাকে না। সাবজেক্টিভ হয়ে যায়। তাহলে ধার্মিকদের অবজেক্টিভ মোরালিটির দাবী যে একেবারেই মিথ্যা দাবী, সেটি পরিষ্কার হয়ে যায়।

নৈতিকতা হলো একটি মানদণ্ড যা দ্বারা আমার এবং অন্যের জন্য কোনটি ভাল আর কোনটি মন্দ, তার পার্থক্য নির্ধারণ করা যায়। একে “সঠিকতা” বা “ন্যায্যতা”-ও বলা যায়।ইসলামে নৈতিকতা বা মোরালিটি বলতে তাহলে আসলে কী বোঝায়? কোনটি ভাল কোনটি মন্দ, সেটি; নাকি আল্লাহর নির্দেশে কোনটি হালাল আর কোনটি হারাম সেটি? ইসলামে যদি নৈতিকতা বা মোরালিটি অর্থ এটি হয় যে, কোনটি ভাল আর কোনটি খারাপ, এবং সেটি যদি অবজেক্টিভলি ভাল বা খারাপ হয়, তাহলে নবী ও তার সাহাবীগণ মুতা বিবাহ করে খারাপ কাজ করেছিলেন। আর ইসলামে নৈতিকতা বা মোরালিটি অর্থ যদি এটি হয় যে, আল্লাহ যা নির্দেশ দিয়েছেন সেটি; আল্লাহ যা বলেছে সেটি ভাল কি মন্দ না দেখে সেটিই মানতে হবে; তাহলে তো সেটি আর নৈতিকতা বা মোরালিটি থাকে না। সেটি হয়ে যায় নির্দেশ পালন। নৈতিকতা বা মোরালিটি এবং নির্দেশ পালন তো ভিন্ন বিষয়।

অর্থাৎ ধর্ম আমাদের নৈতিকতা শেখায়, এটি একেবারেই ভুল কথা। ধর্ম আমাদের শেখায় কিতাব অনুসারে নির্দেশের অনুসরণ করাকে। যুক্তি তথ্য প্রমাণ বিচার বিবেচনা ছাড়াই দ্বিধাহীনভাবে ধর্মের দাবীগুলো মেনে নেয়া এবং সেই অনুসারে জীবন যাপনই ধর্ম পালন। অন্যদিকে নৈতিকতা বা মোরালিটি অর্থই হচ্ছে, প্রতিটি ঘটনা বা কাজকে যুক্তি তথ্য প্রমাণ দিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করে দেখা যে, কাজটি বা ঘটনাটি আমার জন্য এবং অন্য মানুষের জন্য ভাল নাকি মন্দ। এটিই আসলে নৈতিকতার মানদণ্ড। ধর্ম তাই আমাদের নির্দেশনা পালন শেখায়, আর নৈতিকতার ধারণা আমরা লাভ করি আমাদের যুক্তিবোধ এবং জ্ঞান থেকে।

কোরআনে মুতা বিবাহের বৈধতা

সূরা নিসার ২৪ নম্বর আয়াতের তাফসীর যারা করেছেন, মুহাম্মদের সাহাবী- তাবে তাবেইনদের মধ্যে যারা এই আয়াতের অর্থ বুঝেছেন, তারা অনেকেই এই আয়াতের সাথে মুতা বা মুত‘আ বিবাহের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেছেন। শুরুতেই আমরা সেই আয়াতটি পড়ে নিই। সূরা নিসার ২৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে [3]

নারীদের মধ্যে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ নারীগণও তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ, কিন্তু তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীদের বাদে, আল্লাহ এসব ব্যবস্থা তোমাদের উপর ফরয করে দিয়েছেন। তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ নারীদের ছাড়া অন্যান্য সকল নারীদেরকে মোহরের অর্থের বদলে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করতে চাওয়া তোমাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে, অবৈধ যৌন সম্পর্কের জন্য নয়। অতঃপর তাদের মধ্যে যাদের তোমরা সম্ভোগ করেছ, তাদেরকে তাদের ধার্যকৃত মোহর প্রদান কর। তোমাদের প্রতি কোনও গুনাহ নেই মোহর ধার্যের পরও তোমরা উভয়ের সম্মতির ভিত্তিতে মোহরের পরিমাণে হেরফের করলে, নিশ্চয় আল্লাহ সবিশেষ পরিজ্ঞাত ও পরম কুশলী।
Taisirul Quran
এবং নারীদের মধ্যে বিবাহিতগণ তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে; কিন্তু তোমাদের ডান হাত যাদের অধিকারী – আল্লাহ তোমাদের জন্য তাদেরকে বিধিবদ্ধ করেছেন, এতদ্ব্যতীত তোমাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে অন্যান্য নারীদের; তোমরা স্বীয় ধনের দ্বারা ব্যভিচারের উদ্দেশ্য ব্যতীত বিবাহ করার জন্য তাদের অনুসন্ধান কর; অনন্তর তাদের দ্বারা যে ফল ভোগ করবে তজ্জন্য তাদেরকে তাদের নির্ধারিত দেয় প্রদান কর এবং কোন অপরাধ হবেনা যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পর সম্মত হও, নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী, বিজ্ঞানময়।
Sheikh Mujibur Rahman
আর (হারাম করা হয়েছে) নারীদের মধ্য থেকে সধবাদেরকে। তবে তোমাদের ডান হাত যাদের মালিক হয়েছে (দাসীগণ) তারা ছাড়া। এটি তোমাদের উপর আল্লাহর বিধান এবং এরা ছাড়া সকল নারীকে তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে যে, তোমরা তোমাদের অর্থের বিনিময়ে তাদেরকে চাইবে বিবাহ করে, অবৈধ যৌনাচারে লিপ্ত হয়ে নয়। সুতরাং তাদের মধ্যে তোমরা যাদেরকে ভোগ করেছ তাদেরকে তাদের নির্ধারিত মোহর দিয়ে দাও। আর নির্ধারণের পর যে ব্যাপারে তোমরা পরস্পর সম্মত হবে তাতে তোমাদের উপর কোন অপরাধ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।
Rawai Al-bayan
আর নারীদের মধ্যে তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসী (১) ছাড়া সব সধবা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ, তোমাদের জন্য এগুলো আল্লাহর বিধান। উল্লেখিত নারীগণ ছাড়া অন্য নারীকে অর্থব্যয়ে বিয়ে করতে চাওয়া তোমাদের জন্য বৈধ করা হল, অবৈধ যৌন সম্পর্কের জন্য নয়। তাদের মধ্যে যাদেরকে তোমরা সম্ভোগ করেছ তাদের নির্ধারিত মাহ্‌র অর্পণ করবে (২)। মাহ্‌র নির্ধারণের পর কোনো বিষয়ে পরস্পর রাযী হলে তাতে তোমাদের কোনো দোষ নেই (৩)। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria

এই আয়াতটির আরবিও একইসাথে দেখে নিই,

وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ النِّسَاءِ إِلَّا مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ ۖ كِتَابَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ ۚ وَأُحِلَّ لَكُمْ مَا وَرَاءَ ذَٰلِكُمْ أَنْ تَبْتَغُوا بِأَمْوَالِكُمْ مُحْصِنِينَ غَيْرَ مُسَافِحِينَ ۚ فَمَا اسْتَمْتَعْتُمْ بِهِ مِنْهُنَّ فَآتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ فَرِيضَةً ۚ وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا تَرَاضَيْتُمْ بِهِ مِنْ بَعْدِ الْفَرِيضَةِ ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا

উপরের আয়াতে যেই ইস্তামতাতুম (اسْتَمْتَعْتُمْ) শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে, মুহাম্মদের প্রখ্যাত সাহাবী মুজাহিদের মতে, এই শব্দটি দ্বারা মুতা বোঝানো হয়েছে, এবং এই আয়াতটি মুতার আয়াত। যা শিয়া মুসলমানদের একাংশও বলেন।। কারণ, এই শব্দটি মুত’আ (متعة) এর ভার্বাল ফর্ম। ভাল করে আয়াতটা পড়লে বোঝা যায়, এখানে কিছু একটি বিষয়ের কথা বলা হচ্ছে। খেয়াল করে পড়ুন, বলা হচ্ছে-

সুতরাং তাদের মধ্যে তোমরা যাদেরকে ভোগ করেছ তাদেরকে তাদের নির্ধারিত মোহর দিয়ে দাও। আর নির্ধারণের পর যে ব্যাপারে তোমরা পরস্পর সম্মত হবে তাতে তোমাদের উপর কোন অপরাধ নেই

নির্ধারণের পরে কোন বিষয়ে তারা সম্মত হচ্ছে? এই বিষয়টি ধীরে ধীরে এই লেখাটি যত এগুলোবে, আশা করি পাঠকের কাছে পরিষ্কার হবে।

তাফসীরে ইবনে কাসীর

আসুন এবারে তাফসীরে ইবনে কাসীর থেকে খানিকটা পড়ে নিই, যেখানে বলা হচ্ছে, ইসলামের প্রাথমিক যুগে মুতা বিবাহ বৈধ ছিল। পরবর্তীতে তা নিষিদ্ধ করা হয় [4]

মুতা 2

মুতা 4

এবারে আসুন নবীর প্রখ্যাত সাহাবী ইবনে আব্বাসের তাফসীর গ্রন্থ থেকে এই আয়াতটির তাফসীর দেখে নিই [5]

মুতা 6

মুতা বিবাহ হালাল হওয়া

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, মুতা বিবাহ কি ইসলামে কখনো হালাল ছিল? এই বিষয়ে সহিহ হাদিস থেকে জানা যায়, মুতা বিবাহকে নবী মুহাম্মদ হালাল করেছিলেন। পরবর্তীতে একাধিকবার হারাম করেছিলেন, আবারো হালাল করেছিলেন। কিন্তু এটিও সত্য যে, এটি ইসলামে একসময়ে হালাল ছিল [6] [7] [8] [9]

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৭/ বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ৩. মুত’আ বিবাহ তা বৈধ ছিল, পরে তা বাতিল করা হয়, তারপর বৈধ করা হয়, আবার বাতিল করা হয় এবং এখন কিয়ামত পর্যন্ত তার অবৈধতা বলবৎ থাকবে
৩২৮৩। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) ও সালামা ইবনুল আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা উভয়ে বলেন, আমাদের সামনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ঘোষক বেরিয়ে এসে বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের মুত’আ বিবাহ করার অনুমতি দিয়েছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ)

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৭/ বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ৩. মুত’আ বিবাহ তা বৈধ ছিল, পরে তা বাতিল করা হয়, তারপর বৈধ করা হয়, আবার বাতিল করা হয় এবং এখন কিয়ামত পর্যন্ত তার অবৈধতা বলবৎ থাকবে
৩২৮৪। উমায়্যা ইবনু বিসতাম আল আয়শী (রহঃ) … সালামা ইবনুল আকওয়া (রাঃ) ও জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট এলেন এবং আমাদের মুত’আর (সাময়িক বিবাহের) অনুমতি দিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সালামাহ ইবনু আক্ওয়া‘ (রাঃ)

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৭/ বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ৩. মুত’আ বিবাহ তা বৈধ ছিল, পরে তা বাতিল করা হয়, তারপর বৈধ করা হয়, আবার বাতিল করা হয় এবং এখন কিয়ামত পর্যন্ত তার অবৈধতা বলবৎ থাকবে
৩২৮৮। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়্যাশ ইবনু সালামা (রহঃ) থেকে তার পিতার সুত্রে বর্ণিত। তিনি (পিতা) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আওতাস যুদ্ধের বছর
তিন দিনের জন্য মুতআ বিবাহের অনুমতি দিয়েছিলেন। তারপর তিনি তা নিষিদ্ধ করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৬৭/ বিয়ে
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৩২. অবশেষে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুত‘আহ বিয়ে নিষেধ করেছেন।
৫১১৭-৫১১৮. জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ এবং সালাম আকওয়া’ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, আমরা কোন এক সেনাবাহিনীতে ছিলাম এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট এসে বললেন, তোমাদেরকে মুত‘আহ বিয়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা মুত‘আহ করতে পার। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ)

এমনকি, মক্কা বিজয়ের বছর মক্কায় প্রবেশকালেও মুতা বিবাহ বৈধ ছিল বলেই হাদিস থেকে জানা যায় [10] [11]

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৭/ বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ৩. মুত’আ বিবাহ তা বৈধ ছিল, পরে তা বাতিল করা হয়, তারপর বৈধ করা হয়, আবার বাতিল করা হয় এবং এখন কিয়ামত পর্যন্ত তার অবৈধতা বলবৎ থাকবে
৩২৯৪। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবদুল মালিক ইবনু রাবী ইবনু সাবরা জুহানী (রহঃ) থেকে পর্যায়ক্রমে তাঁর পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিনি (দাদা) বলেন, মক্কা বিজয়ের বছর আমাদের মক্কায় প্রবেশকালে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মুত’আ বিবাহের অনুমতি দান করেন। তিনি আমাদের তা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত (নারী সঙ্গ ত্যাগ করে) বের হয়ে আসি নি।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ রবী’ ইবন সাবরা জুহানী (রহঃ)

সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৬৭/ বিয়ে
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৩২. অবশেষে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুত‘আহ বিয়ে নিষেধ করেছেন।
৫১১৯. ইবনু আবূ যিব বলেন, আয়াস ইবনু সালামাহ ইবনু আকওয়া‘ তার পিতা সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, যে কোন পুরুষ এবং মহিলা উভয়ে (মুত‘আহ করতে) একমত হলে তাদের পরস্পরের এ সম্পর্ক তিন রাতের জন্য গণ্য হবে। এরপর তারা ইচ্ছে করলে এর চেয়ে অধিক সময় স্থায়ী করতে পারে অথবা বিচ্ছিন্ন হতে চাইলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। (বর্ণনাকারী বলেন) আমরা জানি না এ ব্যবস্থা শুধু আমাদের জন্য নির্দিষ্ট ছিল, না সকল মানুষের জন্য ছিল।
আবূ ‘আবদুল্লাহ্ (ইমাম বুখারী) বলেন, ‘আলী (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এটা পরিষ্কার করে ব’লে দিয়েছেন, মুতা‘আ বিবাহ প্রথা রহিত হয়ে গেছে। (মুসলিম ১৬/২, হাঃ ১৪০৫) (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

মুতা বিবাহ হালাল হওয়ার কারণ

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, পতিতাবৃত্তির মত এরকম একটি প্রথা ইসলামে হালাল কেন করা হয়েছিল? কী এমন ঘটনা ঘটেছিল, যার কারণে এরকম একটি বিষয়কে নবী হালাল করেছিলেন? আসুন পড়ে দেখি [12]

সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৬৭/ বিয়ে
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৩২. অবশেষে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুত‘আহ বিয়ে নিষেধ করেছেন।
৫১১৬. আবূ জামরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, আমি মহিলাদের মুত‘আহ বিয়ে সম্পর্কে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে প্রশ্ন করতে শুনেছি, তখন তিনি তার অনুমতি দেন। তাঁর আযাদকৃত গোলাম তাঁকে বললেন যে, এরূপ হুকুম নিতান্ত প্রয়োজন ও মহিলাদের স্বল্পতা ইত্যাদির কারণেই ছিল? ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, হাঁ। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ জামরা (রহঃ)

উপরের হাদিসটি থেকে জানা যায়, নবী মুহাম্মদ মুতা বিবাহ হালাল করেছিলেন নারী স্বল্পতার কারণে। ইসলামের প্রাথমিক যুগে যখন গনিমতের মাল হিসেবে যুদ্ধবন্দী নারীরা মুহাম্মদের সৈন্যদের হস্তগত হয় নি, তাদের সাথে সহবত করা যায় নি, সেই সময়ে নবী মুতা বিবাহ হালাল করে দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে যখন মুহাম্মদের সেনাবাহিনী প্রচুর সংখ্যক যুদ্ধবন্দী নারী গনিমতের মাল হিসেবে বন্দী করে ধরে আনে, তখন তাদের ধর্ষণ করার জন্য যথেষ্ট নারী ছিল। তাই মুতা বিবাহ পরিবর্তীতে হারাম করা হয়। কারণ এর আর প্রয়োজনই ছিল না। বিনা পয়সায় যুদ্ধবন্দী নারীদের ধর্ষণ করা গেলে পয়সা দিয়ে আর মুতা বিবাহের প্রয়োজনই বা কী!

আসুন আরো কিছু হাদিস পড়ি [13] [14]

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৭/ বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ৩. মুত’আ বিবাহ তা বৈধ ছিল, পরে তা বাতিল করা হয়, তারপর বৈধ করা হয়, আবার বাতিল করা হয় এবং এখন কিয়ামত পর্যন্ত তার অবৈধতা বলবৎ থাকবে
৩২৮০। মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র আল হামদানী (রহঃ) … কায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে জিহাদে অংশ গ্রহণ করতাম এবং আমাদের সঙ্গে আমাদের স্ত্রীগণ থাকত না। আমরা বললাম, আমরা কি খাসী হব না? তিনি আমাদের তা থেকে নিষেধ করলেন। তারপর তিনি পরিধেয় বস্ত্র দানের বিনিময়ে আমাদের নির্দিষ্ট কালের জন্য নারীদের বিবাহ করার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর আবদুল্লাহ (রাঃ) পাঠ করলেনঃ “হে মুমিনগণ! আল্লাহ তোমাদের জন্য উৎকৃষ্ট যেসব বস্তু হালাল করেছেন, সেই সমুদয়কে তোমরা হারাম করো না এবং সীমালংঘন করো না আল্লাহ সীমালংঘনকারীদের পছন্দ করেন না।” (সূরা মায়িদাঃ ৮৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ ক্বায়স বিন আবু হাযিম (রহ.)

সুনান ইবনু মাজাহ
৯/ বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ৯/৪৪. মুত‘আ বিবাহ নিষিদ্ধ।
২/১৯৬২। সাবরাহ্ (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে বিদায় হাজ্জে রওয়ানা হলাম। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! স্ত্রীহীন অবস্থায় থাকা আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন : তাহলে তোমরা এসব মহিলার সাথে মুত‘আ করো (সাময়িকভাবে উপকৃত হও)। অতএব আমরা তাদের সান্নিধ্যে পৌঁছলাম, কিন্তু তারা আমাদের এবং তাদের মাঝে নির্দিষ্ট মেয়াদ নির্ধারণ ব্যতীত আমাদের সঙ্গে বিবাহ বসতে অস্বীকার করলো। সাহাবীগণ বিষয়টি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উল্লেখ করলে তিনি বলেন, তাহলে তোমাদের ও তাদের মাঝে মেয়াদ নির্দিষ্ট করে নাও।
অতএব আমি ও আমার এক চাচাত ভাই (এই উদ্দেশে) বের হলাম। তার সাথে ছিল একটি চাদর এবং আমার সাথেও ছিল একটি চাদর। তার চাদরটি ছিল আমার চাদর থেকে বেশি সুন্দর। আর আমি ছিলাম তার চাইতে অধিক যুবক। আমরা দু’জন এক নারীর নিকট আসলাম। সে বললো, চাদর দু’টি তো একই মানের। অতঃপর আমি তাকে বিবাহ করলাম এবং তার কাছেই ঐ রাত কাটালাম। ভোরে আমি ফিরে এলাম, তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কা‘বা ঘরের দরজা ও রুকনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে বলছিলেন : হে লোকসকল! আমি তোমাদের মুত‘আ বিবাহের অনুমতি দিয়েছিলাম। এখন তোমরা শুনে নাও যে, আল্লাহ্ ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) পর্যন্ত এই প্রকার বিবাহ হারাম করেছেন। অতএব তোমাদের কারো কাছে এ ধরণের কোন নারী থাকলে সে যেন তাকে ছেড়ে দেয় এবং তোমরা তাদেরকে যা কিছু দিয়েছো তা থেকে কিছুই ফেরত নিও না।
মুসলিম ১৪০৬, নাসায়ী ৩৩৬৮, আবূ দাউদ ২০৭২, ২০৭৩, আহমাদ ১৪৯১৩, ১৪৯২১, দারেমী ২১৯৫, ২১৯৬, ইরওয়াহ ১৯০১, ১৯০২, সহীহাহ ৩৮১, সহীহ আবী দাউদ ১৮০৮।
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ, কিন্তু বিদায় হাজ্জের কথাটি শায, মাক্কাহ বিজয়ে কথাটি সংরক্ষিত। উক্ত হাদিসের রাবী আবদুল আযিয বিন উমার সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায়। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু হাফস উমার বিন শাহীন ও আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু মুসহির আল গাসসানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস ভুল সন্দেহ করেন। ইমাম যাহাবী তাকে সিকাহ বলেছেন। আবুল আলা বিন মুসহির বলেন, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪৬৪, ১৮/১৭৩ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ রবী ইবনু সাবীহ (রহঃ)

নবীর সাহাবীগণ মুতা বিবাহ করতেন

অসংখ্য হাদিস এবং অসংখ্য তথ্যসূত্র থেকে জানা যায়, নবী মুহাম্মদের অনেক সাহাবীই মুতা বিবাহ চর্চা করতেন, এমনকি নবীর নির্দেশেই তারা মুতা বিবাহ করতেন। আসুন কয়েকটি হাদিস দেখে নিই [15] [16] [17]

সূনান নাসাঈ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
২৬/ নিকাহ (বিবাহ)
পরিচ্ছেদঃ ৭১. মুত’আ হারাম হওয়া সম্পর্কে
৩৩৭১. কুতায়বা (রহঃ) … রবী’ ইবন সাবরা জুহানী (রহঃ) তার পিতার মাধ্যমে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুত’আর অনুমতি দিলে আমি আর এক ব্যক্তি বনূ আমরের এক মহিলার নিকট গেলাম এবং তার নিকট আমাদের নিজেদের উপস্থাপন করলাম। সে বললোঃ আমাকে কি দেবে? আমি বললামঃ আমার চাদর। আমার সাথীও বললেন, আমার চাদর দিব। আর আমার সাথীর চাদরখানা ছিল আমার চাদর হতে উত্তম। আর আমি ছিলাম আমার সাথী হতে অধিক যুবক। যখন সে আমার সাথীর চাদরের প্রতি লক্ষ্য করলো, তখন ঐ চাদর তার নিকট ভাল লাগল। আর যখন আমার দিকে লক্ষ্য করলো, তখন আমি তার চোখে ভালবোধ হলাম। এরপর সে বললঃ তুমি এবং তোমার চাদরই আমার জন্য যথেষ্ট। আমি তার সঙ্গে তিন রাত অবস্থান করলাম, পরবর্তী সময়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যার নিকট এ মুত’আর নারী আছে, সে যেন তার পথ ছেড়ে দেয় (মুক্ত করে দেয়)।
তাহক্বীকঃ সহীহ। ইবন মাজাহ ১৯৬২, ইরওয়া ১৯০১, ১৯০২, সহীহাহ ৩৮১।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ রবী’ ইবন সাবরা জুহানী (রহঃ)

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৭/ বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ৩. মুত’আ বিবাহ তা বৈধ ছিল, পরে তা বাতিল করা হয়, তারপর বৈধ করা হয়, আবার বাতিল করা হয় এবং এখন কিয়ামত পর্যন্ত তার অবৈধতা বলবৎ থাকবে
৩২৯৫। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … সাবরা ইবনু মা’বাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের বছর তাঁর সাহাবীগণকে স্ত্রীলোকদের সাথে মুতআর অনুমতি দেন। সাবরা (রাঃ) বলেন, তখন আমি এবং সুলায়ম গোত্রের আমার এক সাথী বের হয়ে পড়লাম এবং শেষ পর্যন্ত আমির গোত্রের এক যুবতীকে পেয়ে গেলাম। সে জোয়ান উষ্ট্রীর ন্যায়। আমরা তার নিকট মুত’আ বিবাহের প্রস্তাব দিলাম এবং আমাদের চাঁদর তার সামনে পেশ করলাম। তখন সে তাকিয়ে দেখল এবং আমাকে আমার সঙ্গীর তুলনায় সুন্দর দেখতে পেল, অপরদিকে আমার চাঁদরের তুলনায় আমার সঙ্গীর চাঁদর উৎকৃষ্টতর দেখল। সে মনে মনে কিছুক্ষণ চিন্তা করল তারপর আমার সঙ্গীর চাইতে আমাকে অগ্রাধিকার দিল। তারা আমাদের সাথে তিন থাকল। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের পরিত্যাগ করতে আমাদের নির্দেশ দিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সাবরাহ বিন মা’বাদ আল জুহনী (রাঃ)

সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
১৭। বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ৩. মুত্’আহ বিবাহ বৈধ ছিল, পরে তা বাতিল করা হয়, অতঃপর বৈধ করা হয়, আবার বাতিল করা হয় এবং তা কিয়ামাত পর্যন্ত স্থির থাকবে
৩৩১১-(২০/…) আবূ কামিল ফুযায়ল ইবনু হুসায়ন (রহঃ) ….. রাবী’ ইবনু সাবরাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তার পিতা মাক্কাহ্ (মক্কা) বিজয়াভিযানে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বলেন, আমরা তথায় ১৫ দিন অর্থাৎ পূর্ণ ১৩ দিন এবং এক দিন ও এক রাত অবস্থান করি। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মুত্’আর অনুমতি দিলেন। তখন আমি ও আমার গোত্রের এক ব্যক্তি বেরিয়ে পড়লাম। আমি তার তুলনায় আকর্ষণীয় চেহারার অধিকারী ছিলাম এবং সে ছিল প্রায় কুৎসিত। আমাদের উভয়ের সাথে একটি করে চাঁদর ছিল। আমার চাঁদরটি ছিল পুরাতন এবং আমার চাচাতো ভাইয়ের চাঁদরটি ছিল সম্পূর্ণ নতুন। অবশেষে আমরা মাক্কার (মক্কার) নিম্নভূমিতে অথবা উচ্চভূমিতে পৌছে একটি যুবতী মেয়ের সাক্ষাৎ পেলাম, যাকে দেখতে অনেকটা উঠতি বয়সের চালাক এবং লম্বাঘাড় বিশিষ্ট উষ্ট্রীর মত।
আমরা প্রস্তাব দিলাম, আমাদের দু’জনের কারো সাথে তোমার মুত্র’আহ বিবাহ কি সম্ভব? সে বলল, তোমরা কী বিনিময় দিবে? তাদের প্রত্যেকে নিজ নিজ চাঁদর মেলে ধরল। সে তাদের উভয়ের দিকে তাকাতে লাগল। আমার সঙ্গীও তার দিকে তাকাল। যখন স্ত্রীলোকটির দিকে তাকিয়ে বলল, তার এ চাঁদর পুরাতন এবং আমার চাঁদর একেবারে নতুন। স্ত্রীলোকটি তিনবার কি দু’বার বলল, তার চাঁদরটি গ্রহণে কোন ক্ষতি নেই।
অতঃপর আমি তাকে মুত’আহ বিবাহ করলাম এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা হারাম ঘোষণা না করা পর্যন্ত ফিরে আসিনি।। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩২৮৬, ইসলামীক সেন্টার ৩২৮৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ রবী’ ইবন সাবরা জুহানী (রহঃ)

নবী নিজে মুতা বিবাহ করেছিলেন?

প্রশ্ন হচ্ছে, নবী মুহাম্মদ নিজে কী মুতা বিবাহ করেছিলেন? ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের সংকলিত হাদিস গ্রন্থ থেকে সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, নবী মুহাম্মদ নিজেও মুতা বিবাহ করেছিলেন। এমনকি, এটি রীতিমত নবীর সুন্নত [18] [19]

মুসনাদে আহমাদ
মুসনাদে উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) (উমারের বর্ণিত হাদীস)
পরিচ্ছেদঃ
৩৫১। আবু মূসার ছেলে ইবরাহীম বর্ণনা করেন, আবু মূসা (রাঃ) মুত’আ (অস্থায়ী) বিয়ের পক্ষে ফতোয়া দিতেন। এক ব্যক্তি আবু মূসাকে বললেন, আপনার কিছু কিছু ফতোয়া নিয়ে একটু ধীরে চলুন। কারণ আপনার পরে আমীরুল মু’মিনীন হজ্জের ব্যাপারে কী নতুন ধারা প্রবর্তন করেছেন তা আপনি জানেন না। অবশেষে আবু মূসা উমার (রাঃ) এর সাথে দেখা করে জিজ্ঞাসা করলেন। উমার (রাঃ) তাকে বললেনঃ আমি অবহিত হয়েছি যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবীগণ এটা করেছেন। তবে আমার কাছে এটা অপছন্দনীয় যে, লোকেরা তাদের (মুত’আ বিয়ের) স্ত্রীদের সাথে বাসর করতে থাকবে, আর হজ্জে যাবে এমন অবস্থায় যে, তখনো তাদের মাথার চুল গড়িয়ে ফোটা ফোটা পানি টপকাচ্ছে।
(মুসলিম-১২২২)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

মুসনাদে আহমাদ
মুসনাদে উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) (উমারের বর্ণিত হাদীস)
পরিচ্ছেদঃ
৩৪২। আবু মূসা (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, উমার (রাঃ) বলেছেনঃ ওটা অর্থাৎ মুত’আ (অস্থায়ী বিয়ে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত। তবে আমার আশঙ্কা হয় যে, লোকেরা এই সব স্ত্রীকে নিয়ে বাবলা গাছের নিছে বাসর করবে, তারপর তাদেরকে নিয়ে হজ্জে যাবে।
(হাদীস নং ৩৫১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

আসুন সরাসরি মুসনাদে আহমাদ গ্রন্থ থেকেও সরাসরি হাদিস দুইটি দেখে নিই, কারণ অনেকেই এই হাদিসগুলো মুছে ফেলার চেষ্টা করছেন [20]

মুতা
মুতা বিবাহ
মুতা 10

উপরের হাদিস দুইটি থেকে জানা যায়, মুতা বিবাহ ছিল স্বয়ং নবী মুহাম্মদের সুন্নত। নবী নিজেই সেই কাজটি করেছেন।

মুহাম্মদ ও আবু বকরের যুগে মুতা

আরো জরুরি প্রশ্ন হচ্ছে, মুহাম্মদের পরে ইসলামি সাম্রাজ্যের খলিফা ছিলেন হযরত আবু বকর। মুহাম্মদ যদি মুতা বিবাহ নিষিদ্ধ করে গিয়ে থাকেন, আবু বকরের আমলে মুতা বিবাহ কীভাবে চালু থাকে? মদ নিষিদ্ধের আয়াত নাজিল হওয়া এবং মদিনার ঘরে ঘরে বড় বড় পাত্রে জমিয়ে রাখা মদ ঢেলে ফেলে দেয়ার কথা আমরা জানি। মুতা বিবাহ মুহাম্মদ নিষিদ্ধ করে থাকলে, আবু বকরের আমলে কেউ কীভাবে মুতা বিবাহ করতো? হযরত উমরের কেন মুতা বিবাহ নিষিদ্ধ করতে হলো? [21] [22] [23] [24] [25]

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৭/ বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ৩. মুত’আ বিবাহ তা বৈধ ছিল, পরে তা বাতিল করা হয়, তারপর বৈধ করা হয়, আবার বাতিল করা হয় এবং এখন কিয়ামত পর্যন্ত তার অবৈধতা বলবৎ থাকবে
৩২৮৫। হাসান হুলওয়ানী (রহঃ) … আতা (রহঃ) বলেন, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) উমরা পালন করতে এলেন। তখন আমরা তাঁর আবাসে তাঁর নিকট গেলাম। লোকেরা তাঁর নিকট বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞেসা করল। অতঃপর তারা মুত’আর উল্লেখ করলে তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে এবং আবূ বকর (রাঃ) ও উমর (রাঃ) এর যুগে মুতআ (বিবাহ) করেছি
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আতা ইবনু আবী রাবাহ (রহঃ)

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৭/ বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ৩. মুত’আ বিবাহ তা বৈধ ছিল, পরে তা বাতিল করা হয়, তারপর বৈধ করা হয়, আবার বাতিল করা হয় এবং এখন কিয়ামত পর্যন্ত তার অবৈধতা বলবৎ থাকবে
৩২৮৬। মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... আবূ যুবায়র (রহঃ) বলেন, আমি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) কে বলতে শুনেছিঃ আমরা এক মুঠো খেজুর অথবা ময়দার বিনিময়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে এবং আবূ বকর (রাঃ) এর যুগে মুতআ বিবাহ করতাম। শেষ পর্যন্ত উমর (রাঃ) আমর ইবন্‌ হুরায়সের বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তা নিষিদ্ধ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবুয্ যুবায়র (রহঃ)

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৭/ বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ৩. মুত’আ বিবাহ তা বৈধ ছিল, পরে তা বাতিল করা হয়, তারপর বৈধ করা হয়, আবার বাতিল করা হয় এবং এখন কিয়ামত পর্যন্ত তার অবৈধতা বলবৎ থাকবে
৩২৮৭। হামিদ ইবনু উমর বাকরাবী (রহঃ) … আবূ নাদরাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। এক ব্যক্তি তার নিকট এসে বলল, ইবনু আব্বাস (রাঃ) ও ইবনু যুবায়র (রাঃ) দুই প্রকারের মুতআ (তামাত্তু হজ্জ ও মুতআ বিবাহ) নিয়ে পরস্পর মতবিরোধ করেছেন। তখন জাবির (রাঃ) বললেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপস্থিতে দুই প্রকারের মুত’আই করেছি। অতঃপর উমর (রাঃ) আমাদের এই উভয়টই করতে নিষেধ করলেন। অতএব আমরা তা আর করি নি।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
১৭। বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ৩. মুত্’আহ বিবাহ বৈধ ছিল, পরে তা বাতিল করা হয়, অতঃপর বৈধ করা হয়, আবার বাতিল করা হয় এবং তা কিয়ামাত পর্যন্ত স্থির থাকবে
৩৩০৭-(১৬/…) মুহাম্মাদ ইবনু রাফি’ (রহঃ) ….. আবূ যুবায়র (রহঃ) বলেন, আমি জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাযিঃ) কে বলতে শুনেছি, আমরা এক মুঠো খেজুর অথবা ময়দার বিনিময়ে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে এবং আবূ বাকর (রাযিঃ) এর যুগে মুত’আহ বিবাহ করতাম। শেষ পর্যন্ত উমর (রাযিঃ) আমর ইবনু হুরায়স এর বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তা নিষিদ্ধ করেন।*। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩২৮২, ইসলামীক সেন্টার ৩২৮০)
* ‘আমর ইবন হুরায়স কুফায় তার মুক্তদাসীকে মুত’আহ বিবাহ করেন। এর ফলে সে গর্ভবতী হলে তাকে নিয়ে আমর ইবন হুরায়স উমার ফারুক (রাযিঃ) এর কাছে উপস্থিত হন, এ সময় তিনি মুত’আহ বিবাহকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবুয্ যুবায়র (রহঃ)

সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
১৭। বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ৩. মুত্’আহ বিবাহ বৈধ ছিল, পরে তা বাতিল করা হয়, অতঃপর বৈধ করা হয়, আবার বাতিল করা হয় এবং তা কিয়ামাত পর্যন্ত স্থির থাকবে
৩৩০৬-(১৫/…) হাসান আল হুলওয়ানী (রহঃ) ….. আত্বা (রহঃ) বলেন, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাযিঃ) উমরাহ পালন করতে এলেন। তখন আমরা তার আবাসে তার নিকট গেলাম। লোকেরা তার নিকট বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞেস করল। অতঃপর তারা মুত‘আহ সম্পর্কে উল্লেখ করলে তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে এবং আবূ বাকর (রাযিঃ) ও উমার (রাযিঃ) এর যুগে মুত’আহ (বিবাহ) করেছি।*। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩২৮১, ইসলামীক সেন্টার ৩২৭৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আতা ইবনু আবী রাবাহ (রহঃ)

মুতা বিবাহ কে হারাম করেন?

মুয়াত্তা মালিকের হাদিস অসংখ্য প্রখ্যাত আলেমের মতেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হাদিস। সেই হাদিস থেকে জানা যায়, হযরত উমর মুতা বিবাহকারীকে ব্যাভিচারের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেন নি। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, যেহেতু তিনি এই বিষয়ে পুর্ব ঘোষণা দেন নি, সেই কারণে সেই মুতা বিবাহকারীকে তিনি হত্যা করেন নি। কিন্তু মুতা বিবাহ নিষিদ্ধের নির্দেশ আল্লাহর নবী মুহাম্মদই যদি দিয়ে গিয়ে থাকেন, সেইখানে তো তার ঘোষণা দেয়া না দেয়া কোন গুরুত্ব বহন করে না। মুহাম্মদ সেটি নিষিদ্ধ করে থাকলে, তার কেন আবারো ঘোষণার প্রয়োজন? [26]

মুয়াত্তা মালিক
২৮. বিবাহ সম্পর্কিত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ১৮. মুত‘আ বিবাহ প্রসঙ্গ
রেওয়ায়ত ৪২. খাওলা বিনত হাকিম (রাঃ) উমর ইবন খাত্তাব (রাঃ)-এর খিদমতে উপস্থিত হইয়া বলিলেনঃ রবি’আ ইবন উমাইয়া (রাঃ) এক মুওয়াল্লাদা(1) নারীকে মুত’আ বিবাহ করেন এবং সে নারী গর্ভবতী হয়। উমর ইবন খাত্তাব (রাঃ) ইহা শুনিয়া ঘাবড়াইয়া গেলেন এবং আপন চাদর টানিতে টানিতে বাহির হইলেন। অতঃপর তিনি বলিলেনঃ মুত’আ নিষিদ্ধ। লোকদের মধ্যে যদি এ বিষয়ে আমি পূর্বে ঘোষণা করিতাম তবে এই (মুত’আর কারণে) ব্যভিচারীর প্রতি রজম (প্রস্তর নিক্ষেপ) করিতাম।
(1) মুওয়াল্লাদা : যে মহিলা আরব নহে কিন্তু তাহার জন্ম হইয়াছে আরবে এবং আরবীয় রীতিনীতি আদব-কায়দা মুতাবিক তাহাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হইয়াছে।
হাদিসের মানঃ তাহকীক অপেক্ষমাণ

এবারে আসুন আল্লামা সাইয়েদ আবু আলা মওদুদির তাফহীমুল কুরআন থেকে মুতা বিবাহ সম্পর্কিত একটি আলোচনা পড়ে নিই, [27] যেখানে বলা হচ্ছে, মুতাহ বিবাহ কোরআনের আয়াতের মাধ্যমে নয়, হাদিসের মাধ্যমে নিষিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু আল্লাহর প্রদত্ত মুতাহের বিধান নবী নিষিদ্ধ করেন কীভাবে? সূরা নিসার ২৪ নম্বর আয়াতটি রহিত হওয়ার আয়াত কোথায়?

চার : কোন কোন মুফাসির মুতা বিবাহ হারাম হবার বিষয়টিও এ আয়াত থেকে প্রমাণ করেছেন। তাঁদের যুক্তি হচ্ছে, যে মেয়েকে মুতা বিয়ে করা হয় সে না স্ত্রীর পর্যায়ভুক্ত, না বাঁদীর। বাঁদী তো সে নয় একথা সুস্পষ্ট, আবার স্ত্রীও নয়। কারণ স্ত্রীর মর্যাদা লাভ করার জন্য যতগুলো আইনগত বিধান আছে তার কোনটাই তার ওপর আরোপিত হয় না। সে পুরুষের উত্তরাধিকারী হয় না, পুরুষও তার উত্তরাধিকারী হয় না। তার জন্য ইদ্দত নেই, তালাকও নেই, খোরপোশ নেই এবং ঈলা, যিহার ও লি’আন ইত্যাদি কোনটিই নেই। বরং সে চার স্ত্রীর নির্ধারিত সীমানার বাইরে অবস্থান করছে।
কাজেই সে যখন “স্ত্রী” ও “বাঁদী” কোনটার সংজ্ঞায় পড়ে না তখন নিশ্চয়ই সে ‘এর বাইরে আরো কিছু’র মধ্যে গণ্য হবে। আর এ আরো কিছু যারা চায় তাদেরকে কুরআন সীমালংঘনকারী গণ্য করেছে। এ যুক্তিটি অনেক শক্তিশালী। তবে এর মধ্যে একটি দুর্বলতার দিকও আছে। আর এ দুর্বলতার কারণে এ আয়াতটির বলেই -যে, মুতা’ হারাম হয়েছে সে কথা বলা কঠিন। এ দুর্বলতাটি হচ্ছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুতা’ হারাম হবার শেষ ও চূড়ান্ত ঘোষণা দেন মক্কা বিজয়ের বছরে। এর পূর্বে অনুমতির প্রমাণ সহী হাদীসগুলোতে পাওয়া যায়।
যদি একথা মেনে নেয়া হয় যে, মুতা হারাম হবার হুকুম কুরআনের এ আয়াতের মধ্যেই এসে গিয়েছিল আর এ আয়াতটির মক্কী হবার ব্যাপারে সবাই একমত এবং এটি হিজরতের কয়েক বছর আগে নাযিল হয়েছিল, তাহলে কেমন করে ধারণা করা যেতে পারে যে, নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা বিজয় পর্যন্ত একে জায়েয রেখেছিলেন? কাজেই একথা বলাই বেশী নির্ভুল যে, মুতা’ বিয়ে কুরআন মজীদের কোন সুস্পষ্ট ঘোষণার মাধ্যমে নয় বরং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাতের মাধ্যমেই হারাম হয়েছে। সুন্নাতের মধ্যে যদি এ বিষয়টির সুস্পষ্ট ফায়সালা না থাকতো তাহলে নিছক এ আয়াতের ভিত্তিতে এর হারাম হওয়ার ফায়সালা দেয়া কঠিন ছিল। মুতা’র আলোচনা যখন এসে গেছে তখন আরো দু’টি কথা স্পষ্ট করে দেয়া সংগত বলে মনে হয়। এক, এর হারাম হওয়ার বিষয়টি স্বয়ং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকেই প্রমাণিত। কাজেই হযরত উমর (রা) একে হারাম করেছেন, একথা বলা ঠিক নয়। হযরত উমর (রা) এ বিধিটির প্রবর্তক বা রচয়িতা ছিলেন না বরং তিনি ছিলেন কেবলমাত্র এর প্রচারক ও প্রয়োগকারী। যেহেতু এ হুকুমটি রসূলুল্লাহ (সা) তাঁর আমলের শেষের দিকে দিয়েছিলেন এবং সাধারণ লোকদের কাছে এটি পৌছেনি তাই হযরত উমর (রা) এটিকে সাধারণ্যে প্রচার ও আইনের সাহায্যে কার্যকরী করেছিলেন। দুই, শীয়াগণ মুতা’কে সর্বতোভাবে ও শর্তহীনভাবে মুবাহ সাব্যস্ত করার যে নীতি অবলম্বন করেছেন কুরআন ও সুন্নাতের কোথাও তার কোন অবকাশই নেই। প্রথম যুগের সাহাবা, তাবেঈ ও ফকীহদের মধ্যে কয়েকজন যাঁরা এর বৈধতার সমর্থক ছিলেন তাঁরা শুধুমাত্র অনন্যোপায় অবস্থায় অনিবার্য পরিস্থিতিতে এবং চরম প্রয়োজনের সময় একে বৈধ গণ্য করেছিলেন। তাদের একজনও একে বিবাহের মতো শর্তহীন মুবাহ এবং সাধারণ অবস্থায় অবলম্বনযোগ্য বলেননি। বৈধতার প্রথক্তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী উল্লেখযোগ্য হিসেবে পেশ করা হয় হযরত ইবনে আব্বাসের (রা) নাম। তিনি নিজের মত এভাবে ব্যক্ত করেছেন : (এ হচ্ছে মৃতের মতো, যে ব্যক্তি অনিবার্য ও অনন্যোপায় অবস্থার শিকার হয়েছে তার ছাড়া আর কারোর জন্য বৈধ নয়।) আবার তিনি যখন দেখলেন তাঁর এ বৈধতার অবকাশ- দানমূলক ফতোয়া থেকে লোকেরা অবৈধ স্বার্থ উদ্ধার করে যথেচ্ছভাবে মুতা’ করতে শুরু করেছে এবং তাকে প্রয়োজনের সময় পর্যন্ত মুলতবী করছে না তখন তিনি নিজের ফতওয়া প্রত্যাহার করে নিলেন। ইবনে আব্বাস ও তাঁর সমমনা মুষ্টিমেয় কয়েকজন তাঁদের এ মত প্রত্যাহার করেছিলেন কিনা এ প্রশ্নটি যদি বাদ দেয়াও যায় তাহলে তাদের মত গ্রহণকারীরা বড় জোর “ইতিরার” তথা অনিবার্য ও অনন্যোপায় অবস্থায় একে বৈধ বলতে পারেন। অবাধ ও শর্তহীন মুবাহ এবং প্রয়োজন ছাড়াই মুতা বিবাহ করা এমন কি বিবাহিত স্ত্রীদের উপস্থিতিতেও মুতা-বিবাহিত স্ত্রীদের সাথে যৌন সম্ভোগ করা এমন একটি সেচ্ছাচার যাকে সুস্থ ও ভারসাম্যপূর্ণ রুচিবোধও কোনদিন বরদাশত করে না। ইসলামী শরীয়াত ও রসূল বংশোদ্ভূত ইমামদেরকে এর সাথে জড়িত মনে করার তো কোন প্রশ্নই ওঠে না। আমি মনে করি, শীয়াদের মধ্য থেকে কোন ভদ্র ও রুচিবান ব্যক্তিও তার মেয়ের জন্য কেউ বিবাহের পরিবর্তে মুতা’র প্রস্তাব দেবে এটা বরদাশত করতে পারেন না। এর অর্থ এ দাঁড়ায় যে, মুতা’র বৈধতার জন্য সমাজে বারবনিতাদের মতো মেয়েদের এমন একটি নিকৃষ্ট শ্রেণী থাকতে হবে যাদের সাথে মুতা’ করার অবাধ সুযোগ থাকে। অথবা মুতা’ হবে শুধুমাত্র গরীবদের কন্যা ও ভগিনীদের জন্য এবং তা থেকে ফায়দা হাসিল করার অধিকারী হবে সমাজের ধনিক ও সমৃদ্ধিশালী শ্রেণীর পুরুষেরা। আল্লাহ ও রসূলের শরীয়াত থেকে কি এ ধরনের বৈষম্যপূর্ণ ও ইনসাফবিহীন আইনের আশা করা যেতে পারে? আবার আল্লাহ ও তাঁর রসূল থেকে কি এটাও আশা করা যেতে পারে যে, তিনি এমন কোন কাজকে মুবাহ করে দেবেন যাকে যে কোন সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে নিজের জন্য অমর্যাদাকর এবং বেহায়াপনা মনে করে?

মুতা 12
মুতা 14

এবারে তাফসীরে জালালাইন থেকে এই বিষয়ের কিছু বক্তব্য পড়ি, [28]

মুতা 16

এবারে আসুন তাহাবী শরীফ থেকে কয়েকটি হাদিস দেখে নেয়া যাক, [29]

মুতা 18

মুতা বিবাহ হারাম করা হয়েছে

অসংখ্য সহিহ হাদিস থেকে জানা যায়, নবী মুহাম্মদ মুতা বিবাহ নিষিদ্ধ করে গেছেন। সেই হাদিসগুলো যে রয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, এই হাদিসগুলো আসলেই কী নবীর বক্তব্য, নাকি মুহাম্মদের পরবর্তীতে ইবনে আব্বাস এবং কয়েকজন প্রখ্যাত সাহাবী বাদে বাদবাকী উমর, আলী এবং অন্যান্যদের সম্মিলিত মতামত। কিন্তু এই বিষয়ে কিছু আলোচনার প্রয়োজন। আসুন আগে হাদিসগুলো দেখি [30]

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫৪/ বিয়ে-শাদী
পরিচ্ছেদঃ ২৪৫৭. অবশেষে রাসূল (সা) মুতা’আ বিবাহ নিষেধ করেছেন
৪৭৪৪। আলী (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ এবং সালামা আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আমরা কোন এক সেনাবাহিনীতে ছিলাম। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রেরিত এক ব্যাক্তি আমাদের নিকট এসে বললেন, তোমাদেরকে মুতা’আ বিবাহের অনুমতি দেয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা মুতা’আ করতে পার। ইবনু আবূ যিব বলেন, আয়াস ইবনু সালামা ইবনু আকওয়া তার পিতা সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, যে কোন পুরুষ এবং মহিলা উভয়ে (মুতা’আ করতে) একমত হলে তাদের পরস্পরের এই সম্পর্ক তিন রাতের জন্য গণ্য হবে। এরপর তারা ইচ্ছা করলে এর চেয়ে বেশি সময় স্থায়ী করতে পারে অথবা বিচ্ছিন্ন হতে চাইলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। (বর্ণনাকারী বলেন) আমরা জানিনা এ ব্যবস্থা শুধু আমাদের জন্য নির্দিষ্ট ছিল, না সকলের জন্য উন্মুক্ত ছিল। আবূ আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) বলেন, আলী (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এটা পরিস্কার করে বলে দিয়েছেন, মুতা’আ বিবাহ প্রথা রহিত হয়ে গেছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ)

এবারে আসুন আলীর সূত্র থেকে পাওয়া হাদিসগুলো দেখি [30] [31] [32] [33]

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫৪/ বিয়ে-শাদী
পরিচ্ছেদঃ ২৪৫৭. অবশেষে রাসূল (সা) মুতা’আ বিবাহ নিষেধ করেছেন
৪৭৪২। মালিক ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … হাসান ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আলী ও তাঁর ভাই আবদুল্লাহ তাঁদের পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, আলী (রাঃ) ইবনু আব্বাস বলেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বর যুদ্ধে মুতা’আ বিবাহ এবং গৃহপালিত গাধার গোশত খাওয়া নিষেধ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

সূনান নাসাঈ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
২৬/ নিকাহ (বিবাহ)
পরিচ্ছেদঃ ৭১. মুত’আ হারাম হওয়া সম্পর্কে
৩৩৭০. আমর ইবন আলী, মুহাম্মাদ ইবন বাশশার এবং মুহাম্মাদ ইবন মুসান্না (রহঃ) … মালিক ইবন আনাস অবহিত করেছেন যে, ইবন শিহাব (রহঃ) তাকে অবহিত করেছেন, মুহাম্মাদ ইবনু আলীর দুই ছেলে আবদুল্লাহ এবং হাসান তাকে অবহিত করেছেন যে, তাদের পিতা মুহাম্মাদ ইবন আলী তাদের অবহিত করেছেন। আলী ইবন আবূ তালিব (রাঃ) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারের দিন মেয়েদের সাথে মুত’আ করা হতে নিষেধ করেছেন। ইবন মুসান্না (রহঃ) বলেছেনঃ হুনায়নের দিন। তিনি বলেন, আবদুল ওয়াহহাব তার কিতাব থেকে আমাদের নিকট এমনই বর্ণনা করেছেন।
তাহক্বীকঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ মালিক ইবনু আনাস (রহঃ)

সূনান নাসাঈ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪৩/ শিকার ও যবেহকৃত জন্তু
পরিচ্ছেদঃ ৩১. পালিত গাধার গোশত খাওয়া হারাম
৪৩৩৫. মুহাম্মাদ ইবন মানসূর ও হারিস ইবন মিসকীন (রহঃ) … মুহাম্মাদ (রহঃ) বলেন, আলী (রাঃ) ইবন আব্বাস (রাঃ)-কে বললেনঃ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বরের দিন মুত’আ বিবাহ এবং গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেন।
তাহক্বীকঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

সূনান তিরমিজী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
২৮/ খাদ্য সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ গৃহপালিত গাধার গোশত।
১৮০১। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার ও ইবনু আবূ উমার (রহঃ) … আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, খায়বার যুদ্ধের সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে মুত’আ বিবাহ এবং গৃহপালিত গাধার গোশত আহার থেকে নিষেধ করেছেন। সহীহ, ইবনু মাজাহ ১৯৬১, নাসাঈ, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১৭৯৪ (আল মাদানী প্রকাশনী)
সাঈদ ইবনু আবদুর রহমান মাখযূমী (রহঃ) … মুহাম্মদ ইবনু আলীর দুই পুত্র আবদুল্লাহ ও হাসান (রহঃ) থেকে বর্ণিত যুহরী (রহঃ) বলেন, এই দুই জনের মধ্যে হাসান ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ)-ই হলেন, অধিক সন্তোষজনক। সাঈদ ইবনু আবদুর রহমান ব্যতীত অন্যরা ইবনু উয়ায়না (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, এদের মধ্যে আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) হলেন অধিক সন্তোষজনক। ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেন, এই হাদীসটি হাসান-সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আলী ইবনু আবী তালিব (রাঃ)

উপরের হাদিসে হযরত আলী থেকে যেই বর্ণনা পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে স্পষ্ট যে, হযরত আলী মুতাহ বিবাহকে হারাম বলছেন খায়বারের যুদ্ধের সময়কালের কথা। খায়বারের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল মে/জুন ৬২৮ খ্রিস্টাব্দে। এরপরে মক্কা বিজয়ের সময় আবারো মুহাম্মদ মুতা বিবাহের অনুমতি দেন, যেটি হয়েছিল ১১ জানুয়ারী, ৬৩০ খ্রিস্টাব্দ ২০ রমজান, ৮ম হিজরি। যেটি সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বর ৩২৯৫ তে পাওয়া যায়। হাদিসটি উপরে বর্ণিত হয়েছে। এর আরো পরে আবার হুনায়নের যুদ্ধের পরে ঘটা আওতাসের যুদ্ধের সময় আবারো মুতাহ বিবাহের অনুমতি দেন। আমরা জানি হুনায়নের যুদ্ধ হয়েছিল ৬৩০ সালে, মক্কা বিজয়ের পরে। এরও পরে আওতাসের যুদ্ধ হয়েছিল, তার রেফারেন্স পাবেন ইবনে কাসীরের আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ৫৮৪ তে, [34]। তখন আবারো মুতাহ বিবাহের অনুমতি দেয়া হয়েছিল।

ইমাম বুখারী মুহাম্মাদ ইবন আলা আবু মুসা (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, হুনায়ন যুদ্ধ শেষ করার পর রাসুলুল্লাহ্ (সা) আবু আমির (রা)-এর নেতৃত্বে একটি সৈন্যদল আওতাস গোত্রের দিকে পাঠান ৷

আরো একটি হাদিস পড়ি [8]

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৭/ বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ৩. মুত’আ বিবাহ তা বৈধ ছিল, পরে তা বাতিল করা হয়, তারপর বৈধ করা হয়, আবার বাতিল করা হয় এবং এখন কিয়ামত পর্যন্ত তার অবৈধতা বলবৎ থাকবে
৩২৮৮। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়্যাশ ইবনু সালামা (রহঃ) থেকে তার পিতার সুত্রে বর্ণিত। তিনি (পিতা) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আওতাস যুদ্ধের বছর তিন দিনের জন্য মুতআ বিবাহের অনুমতি দিয়েছিলেন। তারপর তিনি তা নিষিদ্ধ করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

ইবনে আব্বাসের বিরুদ্ধ মত

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস ছিলেন নবী মুহাম্মাদের একজন বিখ্যাত সাহাবী এবং মুহাম্মাদের চাচা আব্বাসের জ্যেষ্ঠ ছেলে। ইবনে আব্বাস ছিলেন একজন বিশিষ্ট সুবিজ্ঞ ফকিহ ও আল-কুরআনের তাফসীরের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় মুফাস্‌সির। মুসলিম বিশ্বে তাকে রইসুল মুফাস্‌সিরিন বা সাইয়্যিদুল মুফাস্‌সিরিন বলা হয়। ইবনে আব্বাস মুহাম্মদের বিখ্যাত সাহাবী, যার জ্ঞানের প্রশংসা খোদ মুহাম্মদ করতেন। আল্লাহর কাছে তিনি ইবনে আব্বাসের জ্ঞান বৃদ্ধি করার প্রার্থনাও করতেন। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব হযরত ইবনে আব্বাস সম্পর্কে বলেন, “ইবনে আব্বাস তোমাদের সকলের অপেক্ষা বড় বিদ্বান। ” উমর তার সম্পর্কে আরও বলতেন যে, “সে বয়সে তরুণ, জ্ঞানে প্রবীণ !” ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী তার সম্পর্কে বলেন, “কুরআন কারিমের তাফসীর বর্ণনার সময় মনে হয় যেন তিনি (ইবনে আব্বাস) একটি স্বচ্ছ পর্দার অন্তরাল হতে অদৃশ্য বস্তুসমূহ প্রত্যক্ষ করছেন ” প্রখ্যাত সাহাবী ইবনে মাসউদ বলতেন, “ইনি কুরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষ্যকার।” ইবনে উমর বলতেন, “মুহাম্মাদের উপর যা কিছু অবতীর্ণ হয়েছে তৎসম্পর্কে ইবনে আব্বাস এই উম্মাতের মধ্যে সর্বাপেক্ষা জ্ঞানী।”

সেই ইবনে আব্বাস কিন্তু মুতা বিবাহের পক্ষে বলেছিলেন এবং উমরের ফতোয়াকে মেনে নেন নি। ইবনে আব্বাসকে সেই কারণে হত্যা করার হুমকিও দেয়া হয়েছিল। অনেকগুলো তথ্যসূত্র থেকে জানা যায়, ইবনে আব্বাস নাকি শেষ জীবনে মুতা বিবাহকে হারাম করার উমরের ফতোয়া মেনে নিয়েছিলেন, কিন্তু এই তথ্যটি সঠিক কিনা তা নিয়ে প্রচুর সন্দেহ আছে। কারণ ইবনে আব্বাস খুব দৃঢ়ভাবেই মুতা বিবাহের পক্ষে কথা বলতেন। উনার পক্ষে এরকম করাটি খুবই অস্বাভাবিক বিষয়। নিচের হাদিসটি দেখুন [35]

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৭/ বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ৩. মুত’আ বিবাহ তা বৈধ ছিল, পরে তা বাতিল করা হয়, তারপর বৈধ করা হয়, আবার বাতিল করা হয় এবং এখন কিয়ামত পর্যন্ত তার অবৈধতা বলবৎ থাকবে
৩২৯৯। হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … উরওয়া ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) মক্কায় (ভাষণ দিতে) দাঁড়িয়ে বললেন, কিছু লোক এমন আছে আল্লাহ যেমন তাদের চোখ অন্ধ করে দিয়েছেন তেমনি অন্তরকেও অন্ধ করে দিয়েছেন। তারা মুতআর পক্ষে ফাতওয়া দেয়। একথা বলে তিনি এক ব্যক্তির প্রতি ইঙ্গিত করলেন। সে ব্যক্তি ইবনু আব্বাস (রাঃ)। তিনি তাঁকে ডাক দিয়ে বললেন, তুমি একটি অসভ্য ও রুঢ় ব্যক্তি। আমার জীবনের শপথ! ইমামুল মুত্তাকীন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে মুত’আ প্রচলিত ছিল। ইবনু যুবায়র (রাঃ) তাকে বললেন, আপনি নিজে একবার করে দেখুন। আল্লাহর শপথ! আপনি যদি তা (মুতআ) করেন তাহলে আপনার জন্য নির্ধারিত পাথর দিয়েই আপনাকে রজম (পাথর নিক্ষেপে হত্যা) করব।
ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, খালিদ ইবনুল মুহাজির ইবনু সায়ফুল্লাহ (রহঃ) আমাকে জানিয়েছেন যে, তিনি এক ব্যক্তির নিকট বসাছিলেন। এই সময় এক ব্যক্তি এসে তাকে মুত’আ সম্পর্কে ফাতওয়া জিজ্ঞেস করে। তিনি তাকে মুতআর অনুমতি দিলেন। ইবনু আবূ উমরা আনসারী (রাঃ) তাকে বললেন, থামুন। সে বলল, কেন? আল্লাহর শপথ! ইমামুল মুত্তাকীন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে তা করা হত। ইবনু আবূ উমরা (রাঃ) বললেন, ইসলামের প্রাথমিক যুগে নিরুপায় অবস্থায় তার অনুমতি ছিল (যেমন নিরুপায় অবস্থায়) মৃত জীব, রক্ত ও শুকরের (গোশত ভক্ষণের) ন্যায়। অতঃপর আল্লাহ তার দ্বীনকে শক্তিশালী এবং সুদৃড় করলেন এবং তা নিষিদ্ধ করলেন।
ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, রাবী ইবনু সাবরা জুহানী আমাকে জানিয়েছেন যে, তাঁর পিতা বলেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে আমি দুটি লাল চাঁদরের বিনিময়ে আমির গোত্রের একটি স্ত্রীলোকের সাথে মুত’আ করেছিলাম। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মুত’আ করতে নিষেধ করেন। ইবনু শিহাব (রহঃ) আরও বলেন, আমি রাবী ইবনু সাবরাকে উমর ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) এর নিকট তা বর্ণনা করতে শুনেছি, আমি তখন (সেখানে) বসা ছিলাম।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উরওয়াহ বিন যুবাইর (রা.)

ইমাম মালিক এবং আহমদ বিন হাম্বল

এবারে আশরাফুল হিদায়া থেকেও মুতাহ বিবাহ সম্পর্কে পড়ি, [36] যেখানে দেখা যাচ্ছে, ইমাম মালিক এই সম্পর্কে ভিন্নমত দিয়েছেন। সেই সাথে এটিও বলা হয়েছে, মুতা বিবাহ নিষিদ্ধ করা হয়েছে সম্মিলিত ইজমার মাধ্যমে। সেটি নবীর নির্দেশ হয়ে থাকলে ইজমার প্রয়োজন কেন হলো, সেটিও একটি প্রশ্ন!

মুতা 20

ইসলামের চার মাজহাবের অন্যতম ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলও মুতাহকে হারাম মনে করেন নি, প্রয়োজন সাপেক্ষে জায়েজ মনে করেছেন [37]

মুতা 22

উপসংহার

উপরের দীর্ঘ আলোচনা থেকে এটি খুবই পরিষ্কার যে, যখন মুহাম্মদের সাহাবীদের বিভিন্ন যুদ্ধে যাওয়ার প্রয়োজন হতো, যুদ্ধের সময় সাহাবী জিহাদীদের রাতের বেলা নারী ভোগের প্রয়োজন হতো। সেই সময়ে নারীর সংখ্যা কম হওয়ায় তারা বিরক্তও ছিল। নারী সঙ্গ ছাড়া তাদের জিহাদ ঠিকভাবে হতো না হয়তো। মুহাম্মদ তখন তাদেরকে মুতা বিবাহের মত সাময়িক বিবাহ বা যৌনচুক্তি করার অনুমতি দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে যুদ্ধবন্দী গনিমতের মাল হিসেবে অসংখ্য দাসী পাওয়ায় মুহাম্মদের সাহাবীগণ সেইসব দাসীদেরই ধর্ষণ করতে পারতো। তখন আর পয়সা দিয়ে মুতা বিবাহের দরকার হতো না। তাই পরিবর্তী সময়ে মুতা বিবাহ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এরপরে আবারো মুতা বৈধ হয়, এভাবে কয়েকবারই বৈধ এবং অবৈধ হয়। মুহাম্মদ এবং আল্লাহ নিশ্চয়ই বিষয়টি নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন না, তাই একবার অনুমতি দেন, আবার নিষেধ করেন, আবার অনুমতি দেন আবার নিষেধ করেন। এভাবে বারবার চলতেই থাকে। শেষ পর্যন্ত বৈধ ছিল না অবৈধ তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। তারপরেও, মুহাম্মদের আমলে, এরপরে আবু বকরের খেলাফতেও সাহাবীগণ মুতা বিবাহ করেছেন। কিন্তু উমরের আমলে বিভিন্ন রাজ্য জয় এবং অসংখ্য গনিমতের মাল পাওয়ায়, মুতা বিবাহের আর দরকার হতো না। হযরত উমর কঠোরভাবেই তখন মুতা বিবাহ নিষিদ্ধ করেন। তবে এটি কোন মুসলিমই অস্বীকার করতে পারবে না যে, স্বয়ং নবী মুহাম্মদই এই কাজ করেছিলেন। আজকে যদি তারা মুতা বিবাহকে অনৈতিক এবং অসভ্য কাজ বলে মনে করেন, তারা কী মুহাম্মদের করা মুতা বিবাহটিকেও অসভ্য এবং অনৈতিক কাজ মনে করেন? পাঠকদের কাছে এই প্রশ্নটি রেখেই লেখাটি শেষ করছি।

তথ্যসূত্র

  1. Misyar Marriage — a Marvel or Misery? []
  2. Misyar now ‘a widespread reality’ []
  3. সূরা নিসা, আয়াত ২৪ []
  4. তাফসীরে ইবনে কাসীর, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৫, ২৬ []
  5. তাফসীরে ইবনে আব্বাস, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, পৃষ্ঠা ২২৮ []
  6. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩২৮৩ []
  7. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩২৮৪ []
  8. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩২৮৮ [][]
  9. সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন, হাদিস নম্বরঃ ৫১১৭ []
  10. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩২৯৪ []
  11. সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন, হাদিস নম্বরঃ ৫১১৯ []
  12. সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন, হাদিস নম্বরঃ ৫১১৬ []
  13. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩২৮০ []
  14. সুনান ইবনু মাজাহ, হাদিস নম্বরঃ ১৯৬২ []
  15. সূনান নাসাঈ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩৩৭১ []
  16. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩২৯৫ []
  17. সহীহ মুসলিম, হাদীস একাডেমী, হাদিস নম্বরঃ ৩৩১১ []
  18. মুসনাদে আহমাদ, মুসনাদে উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) (উমারের বর্ণিত হাদীস), হাদিস নম্বরঃ ৩৫১ []
  19. মুসনাদে আহমাদ, মুসনাদে উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) (উমারের বর্ণিত হাদীস), হাদিস নম্বরঃ ৩৪২ []
  20. মুসনাদে আহমদ, ইসলামিক সেন্টার, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৩২, ২৩৫, ২৩৬ []
  21. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩২৮৫ []
  22. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩২৮৬ []
  23. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩২৮৭ []
  24. সহীহ মুসলিম, হাদীস একাডেমী, হাদিস নম্বরঃ ৩৩০৭ []
  25. সহীহ মুসলিম, হাদীস একাডেমী, হাদিস নম্বরঃ ৩৩০৬ []
  26. মুয়াত্তা মালিক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ১১৪১ []
  27. তাফহীমুল কুরআন, সাইয়েদ আবু আলা মওদুদি, ৯ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১১, ১২ []
  28. তাফসীরে জালালাইন, ইসলামিয়া কুতুবখানা, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৮০০ []
  29. তাহাবী শরীফ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪৮ []
  30. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৪৭৪৪ [][]
  31. সূনান নাসাঈ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩৩৭০ []
  32. সূনান নাসাঈ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৪৩৩৫ []
  33. সূনান তিরমিজী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ১৮০১ []
  34. আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ইবনে কাসীর, খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ৫৮৪ []
  35. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩২৯৯ []
  36. আশরাফুল হিদায়া, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৪৭ []
  37. তাফসীরে ইবনে কাসীর, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৫ []
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন

আসিফ মহিউদ্দীন

আসিফ মহিউদ্দীন সম্পাদক সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন [email protected]

14 thoughts on “ইসলামে মুতা বিবাহ বা হালাল যৌনচুক্তি প্রসঙ্গে

  • March 29, 2021 at 10:41 AM
    Permalink

    হিন্দু দের বেদের পিডিএফ গুলো দেন ভাই

    Reply
  • March 29, 2021 at 7:14 PM
    Permalink

    মুতা বিবাহ যৌন চাহিদা মেটানোর খুব ভাল একটি উপায়। এটিকে হারাম করা উচিত হয়নি।

    Reply
  • March 30, 2021 at 6:50 PM
    Permalink

    If another Khalifa want to make ‘Muta’ halal again. Is it possible?

    Reply
  • August 17, 2021 at 7:42 AM
    Permalink

    Allah k korte hoy na vokti

    Allah k na manatei mukti,mukti,
    mukti

    illallah

    Reply
  • December 17, 2021 at 8:05 AM
    Permalink

    ইসলামে মুতা বিবাহ হারাম…

    Reply
  • December 17, 2021 at 10:22 PM
    Permalink

    আপনি ভুল ভাল হাদিস ব্যাখ্যা করেছেন। আমি হাদিসে খুঁজে সংখ্যা মিলিয়েছি। পাইনি আপনার হাদীস। এগুলো করে কোনো লাভ নেই।

    Reply
    • December 18, 2021 at 6:30 PM
      Permalink

      কোন হাদিসটি ভুল? এখানে হাদিসের কোন ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। হাদিস নম্বর এবং বই সহ উল্লেখ করা হয়েছে। আপনি প্রকাশনী এবং হাদিস নম্বর দিয়ে খুঁজে না পেলে সেটি হবে খুবই অদ্ভুত ব্যাপার। কারণ আমি সরাসরি বইয়ের ছবিও তুলে দিয়েছি। মিথ্যা বলে কী লাভ? এতে ধর্ম রক্ষা পাবে?

      Reply
  • November 15, 2022 at 4:40 PM
    Permalink

    Vai asif mohiuddin apnar sathe kotha bolte chai

    Reply
  • April 25, 2023 at 4:10 AM
    Permalink

    আসিফ মহিউদ্দীন সাহেব। নবীজি যে মুতাহ বিবাহ করেছিলেন – এ সংক্রান্ত আপনি যে দলিল দিলেন সেটি যাচাই করেছেন তো? যদি আমি প্রমাণ করতে পারি নবী (সা:) মুতাহ বিবাহ করেন নাই – আপনার দেওয়া দলিল থেকেই?

    Reply
  • July 24, 2023 at 3:59 PM
    Permalink

    খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেণ। ধন্যবাদ। আসলে কোরআন অনুযায়ী মুতা বিবাহ, পতিতা এগুলো জায়েজ। কিন্তু কাঠ মোল্লারা তা বুঝতে চাইনা।

    Reply
  • September 10, 2023 at 1:30 AM
    Permalink

    এই দলিল থেকে বোঝা যাচ্ছে যে প্রয়োজন হলে মুতা বিবাহ
    এখনো জায়েজ

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *