সূচিপত্র
ভূমিকা
ইসলামী শরিয়াতে একজন মুমিন পুরুষের ক্ষেত্রে বিবাহ-ব্যতিরেকেই অগণিত নারীভোগের সুযোগ আছে। শুনতে খুব অবাক লাগছে? মনে হচ্ছে যে কীভাবে এটা সম্ভব!!! আপনার মনে হতে পারে যে ইসলামী শরিয়াতেতো বিবাহবহির্ভূত সকল সম্পর্ক হারাম। বিবাহের বাইরে দুইজন মানুষ যদি পারস্পরিক সম্মতিতে যৌনসম্পর্ক রাখে তাহলে তাদেরকে শত বেত্রাঘাত অথবা পাথরছুড়ে নৃশংসভাবে হত্যার বিধান রয়েছে [1]।
৪৩১০-(১৫/১৬৯১) আবূ তাহির ও হারমালাহ্ ইবনু ইয়াহইয়াহ্ (রহঃ) ….. ‘আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, “উমর ইবনু খাত্তাব (রাযিঃ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিম্বারের উপর বসা অবস্থায় বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সত্য দীনসহ পাঠিয়েছেন এবং তার উপর কিতাব (কুরআন) অবতীর্ণ করেছেন। আল্লাহর নাযিলকৃত বিষয়ের মধ্যে آيَةُ الرَّجْمِ (ব্যভিচারের জন্য পাথর নিক্ষেপের আয়াত) রয়েছে। তা আমরা পাঠ করেছি, স্মরণ রেখেছি এবং হৃদয়ঙ্গম করেছি। সুতরাং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যভিচারের জন্য রজম করার হুকুম বাস্তবায়ন করেছেন। তার পরবর্তী সময়ে আমরাও (ব্যভিচারের জন্য) রজমের হুকুম বাস্তবায়িত করেছি। আমি ভয় করছি যে, দীর্ঘদিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর কেউ এ কথা হয়তো বলবে যে, আমরা আল্লাহর কিতাবে (ব্যভিচারের শাস্তি) রজমের নির্দেশ পাই না। তখন আল্লাহ কর্তৃক নাযিলকৃত এ ফরয কাজটি পরিত্যাগ করে তারা মানুষদেরকে পথভ্রষ্ট করে ফেলবে। নিশ্চয়ই আল্লাহর কিতাবে বিবাহিত নর-নারীর ব্যভিচারের শাস্তি رجم (পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা) এর হুকুম সাব্যস্ত। যখন সাক্ষ্য দ্বারা তা প্রমাণিত হয়, কিংবা গর্ভবতী হয়, অথবা সে নিজে স্বীকার করে।* (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪২৭১, ইসলামিক সেন্টার ৪২৭১)
* এ আয়াতটি তিলাওয়াত মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে কিন্তু আয়াতটির হুকুম এখনো বহাল রয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih) বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) পুনঃনিরীক্ষণঃ সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৩০। অপরাধের (নির্ধারিত) শাস্তি (كتاب الحدود)
তদুপরি মুমিন পুরুষ যাতে পরনারী দেখে গুনাহে পতিত না হয়ে পরে সেজন্য প্রতিটি মুসলিম স্বাধীন নারীকে কঠোর পর্দার মাঝে বন্দী করে রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ইসলামে। পড়ে ফেলুন ইসলামে নারীর পর্দার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা [2]। এ থেকে ধারনা হয় যে ইসলাম একটি কঠোর যৌন অবদমনের ধর্ম। মনে হয় যেন ইসলামে একজন মানুষের জীবনে যৌনতা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু এগুলো কেবল ধোঁকা বা আইওয়াশ মাত্র। ইসলামে একজন নারীর যৌনজীবন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হলেও একজন মুমিন পুরুষের রয়েছে অবাধ যৌনস্বাধীনতা। ইসলামী আইন অনুসারে একসাথে সর্বোচ্চ চারটি পর্যন্ত স্ত্রী রাখতে পারে একজন মুমিন পুরুষ। চারটির মাঝে একটিকে তালাক দিয়ে আরেকটি স্ত্রী ঘরে আনার স্বাধীনতা আছে একজন মুমিনের। এটি করতে কখনোই তাকে কারো কাছে জবাবদিহি করতে হবেনা। এমনকি একজন মুমিন পুরুষ অন্যান্য স্ত্রীকে না জানিয়ে গোপনেও আরেকজন নারীকে শর্তসাপেক্ষে বিয়ে করতে পারে। এধরনের বিবাহকে মিস’আর বিবাহ বলে। হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মামুনুল হকও এভাবেই প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে গোপনে দুটি চুক্তিভিত্তিক বিবাহ করেছিলেন। তবে এধরনের যৌনস্বাধীনতাকে খুব লঘু মনে হবে যদি ইসলামের দাসী ব্যবস্থাটিকে বিবেচনায় নেয়া হয়। এই দাসী ব্যবস্থার মাধ্যমে একজন মুমিন প্রকৃত অবাধ যৌনস্বাধীনতা লাভ করে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে একজন মু’মিন প্রায়ই নিত্যনতুন নারী ভোগ করতে পারে। চলুন দেখা যাক কীভাবে এই যৌনস্বাধীনতা সে লাভ করতে পারে।
মুমিন পুরুষ যেভাবে নতুন নতুন নারীভোগের সুযোগ পেতে পারে
চলুন একটি গল্প দাঁড় করাই। গল্প হলেও একটি ইসলামী রাস্ট্রব্যবস্থায় ইসলামী শরিয়াহর সকল আইন মেনেই এমন ঘটনা খুবই সম্ভব।
ধরুন পৃথিবীতে একটি ইসলামী রাষ্ট্র আছে। এই রাষ্ট্র পুরোপুরি কঠোর ইসলামী শরিয়াহ মেনে চলে। এই শরিয়াহর নীতি সাধারণ মানুষের রান্নাঘর থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী বা সুলতানের বেডরুম সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এই রাষ্ট্র সামরিকভাবে খুব শক্তিশালী। এই ইসলামী রাষ্ট্র বিভিন্ন কুফফার অঞ্চল যেমন- ইউরোপ ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবিরাম আক্রমণাত্মক জিহাদ পরিচালনা করে থাকে। ফলস্বরুপ এসব অঞ্চল থেকে হাজারে হাজারে ইহুদী-খৃষ্টান নারীকে বন্দী হিসেবে এই ইসলামী রাষ্ট্রে নিয়ে আসা হয়। তাদের অনেককে ইসলামের সৈনিকদের মাঝে বিতরণ করে দেয়া হয়। আবার অনেককে শহরের দাস বাজারগুলোতে বিক্রয় করে দেয়া হয় চড়া দামে। ইসলামের দৃষ্টিতে দাসপ্রথা যেহেতু সম্পূর্ণ জায়েজ সেহেতু কেউ কোন প্রতিবাদ করে না।
এই দেশে দবির ও কবির নামে দুই বন্ধু থাকে। তারা খুবই দ্বীনদার। তারা দুজনেই সব ধরনের হারাম কাজ এড়িয়ে চলে। দবির ও কবির দুজনেরই স্ত্রী আছে। দবিরের একমাত্র স্ত্রীর নাম উম ফাতেমা ও কবিরের এক স্ত্রীর নাম উম মমতাজ অপর স্ত্রীর নাম উম হানিফা। দবির ও কবির দুজনেরই আবার একজন করে দাসী আছে। দবিরের দাসীর নাম মারিয়া ও কবিরের দাসীর নাম রিয়ানা। মারিয়াকে বন্দী করা হয়েছে রাশিয়া থেকে ও রিয়ানাকে স্পেইন থেকে। স্ত্রী থাকলেও দবির ও কবির দুজনেই তাদের দাসীদের সাথে মিলিত হতে বেশী পছন্দ করে। এতে কোন দোষ নেই কারণ অনেক সাহাবী ও তাবেই স্ত্রীদের থেকে দাসীদের উপভোগ করতে বেশী পছন্দ করতেন [3]।
রেওয়ায়ত ৯৯. হাজ্জাজ ইবন আমর ইবন গাযিয়্যা[1] (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি যায়দ ইবন সাবিত (রাঃ)-এর নিকট বসা ছিলেন। (ইতিমধ্যে) ইয়ামানের বাসিন্দা ইবন ফাহদ (জনৈক ব্যক্তি) তাহার নিকট আসিল এবং বলিল, হে আবূ সাঈদ, আমার নিকট কয়েকটি বাদী এমন রহিয়াছে যে, আমার স্ত্রীগণ উহাদের তুলনায় আমার নিকট বেশি পছন্দনীয় নহে। আমার দ্বারা উহাদের প্রত্যেকে অন্তঃসত্ত্বা হউক ইহা আমি পছন্দ করি না। তবে আমি আযল করিতে পারি কি? যায়দ বলিলেন, হে হাজ্জাজ; তুমি ফতোয়া দাও; আমি বলিলাম, আল্লাহ আপনাকে মাফ করুন, আমরা আপনার নিকট ইলম শিক্ষার জন্য বসি। তিনি বলিলেনঃ হে হাজ্জাজ। ফতোয়া বলিয়া দাও। হাজ্জাজ বলিলেনঃ তারপর আমি বলিলাম-উহা তোমার ক্ষেত্রে তোমার ইচ্ছা, তুমি উহাতে পানি সিঞ্চন কর অথবা উহাকে পিপাসিত ও শুষ্ক করিয়া রাখ। তিনি বলেন, আমি ইহা যায়দ হইতে শুনিয়াছি। অতঃপর যায়দ বলিলেন, (হাজ্জাজ) সত্য বলিয়াছে।
মুয়াত্তা মালিক ২৯. তালাক অধ্যায় (كتاب الطلاق) 29/ Divorce
তবে দবির ও কবির দুজনেই দাসীদের ভোগ করার সময় কনডম ব্যবহার করে থাকে। তারা ধার্মিক, তাই তারা জানে যে অনেক সাহাবীই দাসীর গর্ভে বীর্যপাত করতেন না [4]। ফলে কনডম ব্যবহারে কোন অসুবিধা নেই। কনডম ব্যবহারের একটি সুবিধা হল যে দবির ও কবিরের দাসীরা গর্ভবতী হয়ে পরে না, ফলে তাদেরকে অবিরাম ভোগ করা যায়।
২০৮৮. আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একদা তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বসা ছিলেন, তখন তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা বন্দী দাসীর সাথে সংগত হই। কিন্তু আমরা তাদের (বিক্রয় করে) মূল্য হাসিল করতে চাই। এমতাবস্থায় আযল (নিরুদ্ধ সঙ্গম) সম্পর্কে আপনি কি বলেন? তিনি বললেন, তোমরা কি এরূপ করে থাক? তোমরা যদি তা (আযল) না কর, তাতে তোমাদের কোন ক্ষতি নেই। কারন মহান আল্লাহ্ তা’আলা যে সন্তান জন্ম হওয়ার ফায়সালা করে রেখেছেন, তা অবশ্যই জন্মগ্রহন করবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih) বর্ণনাকারীঃ আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) পুনঃনিরীক্ষণঃ সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
দবির ও কবিরের জীবন খুব সুখেই চলছিলো। তবে বছরখানেকের মাঝে কবিরের জীবনে একঘেয়েমি চলে আসে। কবির এই একঘেয়েমির কথা দবিরের কাছে প্রকাশ করে। খুব ভালো বন্ধু হওয়ায় দবির কবিরকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। দবির ইদানীং লক্ষ করেছে যে কবির প্রায়ই তার বাসায় এসে অপেক্ষা করে কখন মারিয়া তার জন্য চা নিয়ে আসবে। মারিয়ার মুখের দিকে তাকালেই কবিরের চেহারার রঙ পালটে যায়। এই যে কবির মারিয়াকে দেখছে এতে দোষের কিছু নেই কারণ শরিয়তে দাসীর জন্য পর্দা করা জরুরী নয় [5]। দবির ও কবির জানে যে অনেক বড় বড় আলেম ফতোয়া দিয়েছেন যে দাসীর পর্দার প্রয়োজন নেই। দবির বুঝতে পারে যে কবির মারিয়ার সংগ কামনা করে। কবিরের কষ্ট দূর করার জন্য দবির মারিয়াকে কবিরের কাছে বিক্রয় করে দেয়। মারিয়া যেহেতু গর্ভবতী ছিল না সেহেতু এতে কোন সমস্যাই হয়না [6]। ইসলামী সব আইন মেনেই মারিয়াকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে কবির। কবিরের স্ত্রী উম হানিফার বেডরুমে মারিয়াকে থাকতে দেয়া হয়। উম হানিফা কোন আপত্তি করে না কারণ ইসলামে এটি নাজায়েজ কিছু নয়। কবিরের জীবন থেকে একঘেয়েমি চলে যায়।
এদিকে মারিয়াকে বিক্রয় করে দেয়ার ফলে দবিরের জীবনে একঘেয়েমি চলে আসে। স্ত্রী উম ফাতিমা দবিরের সেই একঘেয়েমি দূর করতে পারে না। দবিরের এহেন অবস্থা দেখে তার প্রাণের বন্ধু কবির এবার এগিয়ে আসে। কবির রিয়ানাকে দবিরের কাছে স্বল্পমূল্যে বিক্রয় করে দেয়। দবিরের জীবনেও সুখ ফিরে আসে। মারিয়াকে বিক্রয় করে দেবার আগে যতখানি সুখি ছিল, এখন তার চাইতেও বেশী সুখি হয়ে ওঠে দবির। এ এক নতুন নারীসঙ্গ। নতুন জীবনীশক্তি লাভ করে দবির।
বছরখানেকের মাঝে সুখবর আসে যে ইসলামী রাষ্ট্র ফ্রান্সের বিশাল অংশ দখলে নিয়েছে। লাখে লাখে ফ্রেঞ্চ দাসীতে ইসলামী রাষ্ট্রের বাজারগুলো ভরে ওঠে। দবির ও কবির আলহামদুলিল্লাহ বলে বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। দুজনেই নিয়ত করেছে যে তারা বেশ কয়েকটি করে ফ্রেঞ্চ দাসী খরিদ করবে, যেহেতু একজন মুসলিমের দাসীর সংখ্যা লিমিট করে দেয়া হয়নি। [7]। এই বিষয়ে আলিমদের ফতোয়া দেখুন এখানে। রাস্তায় দবির কবিরকে বলে- “কোন মানবসৃষ্ট আইনে এভাবে দুদিন পরপর নতুন নতুন মেয়ে উপভোগের সুযোগ ছিল? ছিল না। মানবসৃষ্ট আইনে নতুন নারীসংগ পেতে হলে বিয়ে করতে হত, অথবা অন্ততপক্ষে নারীর সম্মতি নিতে হত। অথচ এই ইসলামী শরিয়ায় আল্লাহ আমাদের অবাধ যৌনতা উপভোগের সুযোগ দিয়েছেন। আমরা এখন ইচ্ছা করলেই নতুন নতুন নারী খরিদ করতে পারি, বেশীদিন ভালো না লাগলে বিক্রয় করে আরো নতুন স্টক কিনতে পারি। আল্লাহ দুনিয়াতেই মুমিনদের জন্য কি সুন্দর সুখের নিয়ামতের ব্যবস্থা করেছেন, আখিরাতেতো মুমিন আরো পাবে।”
এই গল্পে দবির ও কবির কি শরিয়াহর দৃষ্টিতে কোন অপরাধ করছে? করছে না। সুতরাং, ইসলামে মুমিন পুরুষের জন্য অবাধ যৌনাচারের রাস্তা খোলা থেকেই যাচ্ছে, এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। বাংলার ইসলামী ব্লগ জগতে দাসী সহবাস বিষয়কে নিয়ে দুইজন খানিকটা আলোচনা ও লেখালেখি করেছেন। একজন মুশফিকুর রহমান মিনার ও অন্যজন ডাঃ শামসুল আরেফিন শক্তি। আশা করা হচ্ছে এই দুইজনের মাঝে একজন অন্তত প্রমাণ করে দেখাবেন যে এই দাসপ্রথার দ্বারা মুমিন পুরুষের অবাধ যৌনতার দরজা খোলা থাকছে না।
দাসী প্রথা নিয়ে আলোচনা কেন এখনো গুরুত্বপূর্ণ?
প্রশ্ন উঠতে পারে যে, দাসপ্রথা এই যুগে আন্তর্জাতিকভাবে অবৈধ। কোন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশেও আজ এই প্রথা চালু নেই। তাহলে কেন এখনো এই নিয়ে এত আলোচনা জরুরী। উত্তর সহজ, দাসপ্রথা সভ্য সমাজে অবৈধ হলেও ইসলামে এখনো এই প্রথা সম্পূর্ণ বৈধ [8]। ইসলাম যেখানে দাসপ্রথাকে বৈধতা দিয়েছে, কোন আন্তর্জাতিক আইনই এই প্রথাকে অবৈধ করতে পারে না। বর্তমানে সারা দুনিয়ায় নানা ইসলামপন্থী গোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। দুনিয়ার তাবৎ এই ইসলামী গোষ্ঠীগুলোর চূড়ান্ত লক্ষ একে একে সব দেশের ক্ষমতা দখল করে আল্লাহর আইন তথা শরিয়া আইন পুনর্প্রবর্তন করা। যখন শরিয়া প্রতিষ্ঠিত হবে তখন দাসপ্রথাও শরিয়ার অনুষঙ্গ হিসেবেই পুনরায় প্রতিষ্ঠা পাবে।
খুবই সম্প্রতি সিরিয়ায় একটি ইসলামী খিলাফত করা হয়েছিল। সারা বিশ্ব থেকে অগণিত ধার্মিক মুসলিম নারী-পুরুষ শরিয়া আইনের অধীনে বসবাস করার জন্য এই খিলাফতে যোগ দেয়। খিলাফত প্রতিষ্ঠার শুরুতেই খিলাফতের এলাকায় দাসপ্রথা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়। শরিয়ার প্রতিটি হুকুম-আহকাম মেনেই এই দাসপ্রথা চালু করা হয়। এই খিলাফত মুমিন মুসলমান তাদের দাস-দাসীদের সাথে কেমন আচরণ করবে তার নীতিমালা প্রকাশ করে [9]। শরিয়ার অনুমোদনেই চালু হয় দাস বাজার। ইয়াজিদি মেয়েদের এই দাস বাজারে কেনাবেচা শুরু হয়। দাসবাজারে মুমিন মুজাহিদদের উল্লাস দেখুন নিচের ভিডিওতে (৮:১০ থেকে ৯:১৫ মিনিটে)।
এই খেলাফতে হাজারে হাজারে ইয়াজিদি নারীকে মাসের পর মাস ধর্ষণ করে চলে খেলাফতের মুজাহিদেরা। পশুর মতন চলে তাদের বেচা-বিক্রি। নিচের ডয়েচে ভেলের ডকুমেন্টারিতে (৫০ থেকে ৫৩ মিনিট) দেখুন এখানে এক জার্মান কনভার্টেড মুসলিম এক ইয়াজিদি নারীকে কিনেছে যাতে তাকে মোটাতাজা করে বেশী দামে বেঁচে দেয়া যায়।
এই খিলাফতের অন্যতম হলমার্ক ছিলো দাসপ্রথা পূনঃপ্রচলন। এই খিলাফত যদিও ধ্বংস হয়ে গেছে, তারপরেও আশংকা করা যায় তারা ফিরে আসবে। সারা বিশ্বের সব ইসলামিস্টই এখন খিলাফত পূনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য জোর চেষ্টা করছে। যখন এই ইসলামিস্টরা এই খিলাফত প্রতিষ্ঠা করে ফেলবে তখনই তারা দাসপ্রথার পূনঃপ্রচলন করবে।
কেবল সিরিয়ার খেলাফতই নয়, নাইজেরিয়ার ইসলামী গোষ্ঠী বোকো হারাম ২০১৪ সালে ২৭৬ জন খৃষ্টান মেয়েকে একটি স্কুল থেকে বন্দী করে। এই বন্দী মেয়েদের দুটি অপশন দেয়া হয়েছিলঃ ইসলাম গ্রহণ ও জিহাদিদের বিয়ে করা অথবা দাসত্ব বরন। অনেক মেয়েই দাসত্ব বরন করে নেয়। পরে উদ্ধার পাওয়া অনেক মেয়েকেই গর্ভবতী অবস্থায় পাওয়া যায়। বিস্তারিত পাওয়া যাবে ন্যাশনাল জিওগ্রাফির এই প্রতিবেদনে Six Years Ago Boko Haram Kidnapped 276 Schoolgirls. Where Are They Now? [10].
উপসংহার
আমাদের বাংলাদেশেও খেলাফত কায়েমের স্বপ্ন দেখা মানুষের সংখ্যা কম নয়। বর্তমান সরকারের মদিনা সনদে দেশ চালানো আর প্রধানমন্ত্রী থেকে সরকারের সকল মন্ত্রী-এমপিদের বিরামহীন ইসলাম তোষণের নজির দেখে সহজেই বোঝা যায় দেশ ধীরে ধীরে খেলাফতের দিকেই এগোচ্ছে। যদি বাংলাদেশে খেলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়, আপনার এলাকার বাজারই হয়তো ভরে উঠবে হাজার হাজার বন্দিনী দাসীতে। তখন আল্লামা মামুনুল হকদের মতন বন্ধুর স্ত্রীকে বিয়ে করে ঝামেলায় পরতে হবে না। বাংলার পুরুষেরা দাসী কেনাবেচা করেই কিছুদিন পরপর নতুন নতুন নারী ভোগ করতে সক্ষম হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের নারীদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা তাদের আল্লাহওয়ালা নামাজী মু’মিন স্বামীদের এহেন অবাধ যৌনাচার সহ্য করবেন কিনা।
তথ্যসূত্র
- সহীহ মুসলিম (হাদিস একাডেমি), হাদিস নং- ১৬৯১; বাংলা হাদিসটি পাওয়া যাবে এখানে। [↑]
- ইসলামে নারীর পর্দার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা, www.imam.gov.bd. প্রবন্ধটি পাওয়া যাবে এখানে। [↑]
- মালিকের মুয়াত্তা, বই ২৯, হাদিস নম্বর ২৯. ৩৪. ৯৯: হাদিসটির বাংলা ও ইংরেজী ভার্শন পাওয়া যাবে এখানে। [↑]
- সহীহ বুখারি (ইসলামি ফাউন্ডেশন), হাদিস নং ২২২৯। হাদিসটি বাংলায় পাওয়া যাবে এখানে। [↑]
- মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বাহ, ভল্যুম ২, পৃষ্ঠা ৪১, হাদিস নং ৬২৩৬; দাসীর পর্দা লাগেনা, মুফতি কাজী ইব্রাহীম এর ভিডিও [↑]
- সহীহ বুখারি (ইসলামি ফাউন্ডেশন), হাদিস নং ২২২৯। হাদিসটি বাংলায় পাওয়া যাবে এখানে। [↑]
- There is no difference of opinion that one may keep whatever number they wish of slaves- Tafsir al Jassas [↑]
- দাসী সম্পর্কে ইসলাম। বর্তমান সময়ে দাস দাসী রাখা যাবে কিনা? ইসলাম কি বলে?। Mizanur Rahaman Azhari [↑]
- ISIS Publish Pamphlet On How to Treat Female Slaves, NEWSWEEK, article link. [↑]
- Six Years Ago Boko Haram Kidnapped 276 Schoolgirls. Where Are They Now?, www.nationalgeographic.com [↑]
Leave a Comment