নবী মুহাম্মদের করুণ মৃত্যু

Print Friendly, PDF & Email

ভূমিকা

ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক নবী মুহাম্মদ মক্কা, মদিনা ও অন্যান্য অঞ্চলে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছেন। অসংখ্য মানুষকে তিনি বানিয়েছেন দাস দাসী, দখল করেছেন তাদের জায়গা সম্পত্তি, যুদ্ধবন্দীদের হত্যা এবং তাদের ক্রীতদাস দাসী বানানো ছাড়াও তার অপরাধের পরিমাণ বিপুল। এমনকি, কাফের নারীদের স্বামী ভাই পিতাদের হত্যা করে তাদের গনিমতের মাল নাম দিয়ে সেইসব ক্রীতদাসীদের সাথে যৌন সংগম করেছেন, সাহাবীদেরকেও করতে উৎসাহ দিয়েছেন। তার ভয়ংকর জিহাদের কবলে ঘরবাড়ি হারিয়েছে অনেক মানুষ, স্বজনকে লাশের পাহাড় আর অমুসলিমদের উপাসনালয়ের ধ্বংসস্তুপের মধ্যে ইসলামের নবী গড়ে তুলেছেন তার ইসলামী সাম্রাজ্য। এতকিছু করেও তার মৃত্যু কিন্তু খুব সুখকর হয় নি। তার মৃত্যু হয়েছিল অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং যন্ত্রণাকাতর। আজকের আলোচনা নবী মুহাম্মদের মৃত্যু। সেটি কেন, এবং কীভাবে হয়েছিল তার বিবরণ। আলোচনা শুরুর পূর্বে আসুন বাঙলাদেশের একজন প্রখ্যাত আলেমের মুখ থেকে জেনে নিই, ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে বেইমানের মৃত্যু কীভাবে হবে,

ইসলামের দৃষ্টিতে বেইমানের মৃত্যু by Asif Mohiuddin

মৃত্যু ভয়ে ভীত থাকতেন নবী

সহিহ হাদিস থেকে জানা যায়, নবী মুহাম্মদের আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস এবং আস্থা থাকবার পরেও, জিবরাইলের মত শক্তিমান ফেরেশতা এবং আরও হাজারো ফেরেশতা বাহিনী তার সাথে থাকবার পরেও, তিনি শত্রুদের ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারতেন না। উনার পাহারাদার লাগতো, কারণ তিনি ভয় পেতেন কেউ এসে তাকে খুন করে যেতে পারে। [1]

সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
৫৬/ জিহাদ ও যুদ্ধকালীন আচার ব্যবহার
পরিচ্ছেদঃ ৫৬/৭০. মহান আল্লাহর পথে যুদ্ধে প্রহরা দান।
২৮৮৫. ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (এক রাতে) আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জেগে কাটান। অতঃপর তিনি যখন মদিনা্য় এলেন এই আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করলেন যে, আমার সাহাবীদের মধ্যে কোন যোগ্য ব্যক্তি যদি রাতে আমার পাহারায় থাকত। এমন সময় আমরা অস্ত্রের শব্দ শুনতে পেলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ইনি কে? ব্যক্তিটি বলল, আমি সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস, আপনার পাহারার জন্য এসেছি। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘুমিয়ে গেলেন। (৭২৩১) (মুসলিম ৪৪/৫ হাঃ ২৪১০, আহমাদ ২৫১৪৭) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৬৭৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৬৮৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)

খায়বারে বিষযুক্ত ভেড়ার মাংশ

একের পর এক ইহুদী গোত্র ভিটেমাটি ছাড়া করা এবং কয়েকটি ইহুদী গোত্রের ওপর নৃশংস গণহত্যা চালাবার কারণে ইহুদী গোত্রসমূহ নবী মুহাম্মদের ওপর ভীষণ ক্ষিপ্ত ছিল। বিশেষ করে বনূ কুরাইযা গোত্রের ৬০০-৯০০ পুরুষকে একদিনে হত্যা করায় তারা ব্যাথিত ছিল, তারা প্রতিশোধ নিতে চাচ্ছিল। কিন্তু সংখ্যা এবং শক্তিতে কম হওয়ায় তারা কিছুই করতে পারছিল না। খায়বারে আক্রমণের সময় নবী মুহাম্মদ যয়নব বিনতে হারিস নামক এক ইহুদী নারীর বাসায় খাবার খেয়েছিলেন। সেখানে তাদেরকে বিষযুক্ত ভেড়ার মাংশ খেতে দেয়া হয়। মাংশের সামান্য অংশ নবী মুহাম্মদও মুখে দিয়ে ফেলেছিলেন (এর প্রমাণ পরে দেয়া হবে)। কিন্তু একজন সাহাবীর মৃত্যুতে তিনি মুখে থাকা খাবারের অংশ ফেলে দেন এবং ইহুদী নারীকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি খাবারে বিষ মিশিয়েছেন কিনা। ইহুদী নারীটি উত্তর দেয়, আপনি যদি সত্যি নবী হয়ে থাকেন তাহলে আমি যা করেছি তাতে এই বিষে আপনার ক্ষতি হবে না। আর যদি আপনি কেবল আক্রমণকারী হয়ে থাকেন তাহলে আমি আপনার থেকে মানুষকে শান্তি দিলাম।

এ বিষয়ক তথ্যসমূহ উল্লেখ করছি, তার আগে কোরআনের একটি আয়াত পড়ে নেয়া দরকার। মুসলিমদের ধর্মগ্রন্থ কোরআনে আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেন [2],

এটা (কোরআন) বিশ্বপালনকর্তার কাছ থেকে অবতীর্ণ।
সে (মুহাম্মদ) যদি আমার নামে কোন কথা রচনা করত,
তবে আমি তার দক্ষিণ হস্ত ধরে ফেলতাম,
অতঃপর কেটে দিতাম তার গ্রীবা/প্রধান ধমনী
তোমাদের কেউ তাকে রক্ষা করতে পারতে না।

এবারে আসুন, সেই হাদিসসমূহ দেখে নিই [3]-

সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ৩৪/ রক্তমূল্য
পরিচ্ছেদঃ ৬. কাউকে বিষ খাইয়ে হত্যা করলে কি তাকেও হত্যা করা হবে?
৪৫১৩। ইবনু কা‘ব ইবনু মালিক (রহঃ) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মৃত্যুরোগে আক্রান্ত ছিলেন তখন উম্মু মুবাশশির (রাঃ) তাঁকে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আপনার রোগ সম্পর্কে কি ভাবছেন? আর আমি আমার ছেলের রোগ সম্পর্কে উদ্বিগ্ন নই সেই বিষ মেশানো বকরীর গোশত ব্যতীত যা সে খায়বারে আপনার সঙ্গে খেয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমিও ঐ বিষ ছাড়া আমার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন নই। এ মুহূর্তে তা আমার প্রধান ধমনি কেটে দিচ্ছে।(1)
সনদ সহীহ।
(1). আবূ দাঊদ এটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ্ ইবনু কা‘ব ইবনু মালিক (রহঃ)

আরো কয়েকটি হাদিসে বর্ণিত রয়েছে, নবী মুহাম্মদ তার প্রধান ধমনী কেটে দেয়ার মত যন্ত্রণা অনুভব করতেন [4]

সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ৩৪/ রক্তমূল্য
পরিচ্ছেদঃ ৬. কাউকে বিষ খাইয়ে হত্যা করলে কি তাকেও হত্যা করা হবে?
৪৫১২। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিয়া গ্রহণ করতেন কিন্তু সাদাকাহ গ্রহণ করতেন না। বর্ণনাকারী বলেন, খায়বারের এক ইয়াহুদী মহিলা একটি ভুনা বকরীতে বিষ মিশিয়ে তাঁকে হাদিয়া দেয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা আহার করেন এবং লোকজনও আহার করে। তিনি বললেনঃ তোমরা তোমাদের হাত গুটিয়ে নাও। কারণ এটি আমাকে অবহিত করা হয়েছে যে, এটি বিষযুক্ত। (বিষক্রিয়ার ফলে) বিশর ইবনুল বারাআত ইবনু মা‘রূর আল-আনসারী (রাঃ) মারা যান। তিনি ইয়াহুদী মহিলাকে ডেকে এনে প্রশ্ন করেনঃ তুমি যা করলে তা করতে তোমাকে কিসে প্ররোচিত করেছে?
সে বললো, আপনি যদি সত্যি নবী হয়ে থাকেন তাহলে আমি যা করেছি তাতে আপনার ক্ষতি হবে না। আর যদি আপনি বাদশাহ হয়ে থাকেন তাহলে আমি আপনার থেকে মানুষকে শান্তি দিলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিলে পরে তাকে হত্যা করা হলো। অতঃপর তিনি যে ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন সেই সম্পর্কে বলেনঃ আমি সর্বদা সেই লোকমার ব্যথা অনুভব করছি যা আমি খায়বারে খেয়েছিলাম। এই সময়ে তা আমার প্রধান ধমনি কেটে দিয়েছে।(1)
হাসান সহীহ।
(1). বুখারী, আহমাদ।
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)

এবারে আসুন, ইবনে ইসহাকের প্রখ্যাত সীরাত গ্রন্থ থেকে এই বিষয়টি পড়ে নিই ( বই থেকে ছবি তুলে দেয়ায় ছবির কোয়ালিটি খারাপ হয়েছে বলে দুঃখিত)- [5]

নবী
মৃত্যু 3

তাবারি ৮ম খণ্ডের ১২৪ পৃষ্ঠাতেও [6] এই ঘটনা পাওয়া যায়।

History of al Tabari vol-8 p124

নবীর শরীরে বিষের লক্ষণ

ইহুদি মহিলার দেয়া বিষযুক্ত মাংস খেয়ে নবী মুহাম্মদের কোন ক্ষতি হয়েছিল কিনা, সেটি এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইহুদি মহিলা খুব পরিষ্কারভাবেই বলেছিলেন, মুহাম্মদ নবী হয়ে থাকলে সেই বিষ মুহাম্মদের কোন ক্ষতিই করতে পারবে না। সেটি এক অর্থে ছিল মুহাম্মদের নবুয়্যত্ব সম্পর্কে সেই ইহুদি মহিলার চ্যালেঞ্জও। হাদিস থেকেই জানা যায়, সেই বিষে মুহাম্মদের শারীরিক ক্ষতি হয়েছিল [7],

সুনান আদ-দারেমী (হাদিসবিডি)
ভূমিকা
পরিচ্ছেদঃ ১১. মৃত ব্যক্তির কথা বলার মাধ্যমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্মানিত করা হয়েছে প্রসঙ্গে
৬৮. আবু সালামাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিয়া (উপহার) খেতেন (গ্রহণ করতেন) কিন্তু সাদাকা গ্রহণ করতেন না। একবার খায়বারের এক ইহুদী মহিলা তাঁকে একটি ভূনা ছাগল হাদিয়া দিল। তারপর তিনি তা থেকে খেলেন এবং তা থেকে বিশর ইবনু বারা’ও খেলেন। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর হাত উঠিয়ে নিয়ে বললেন: ’এটি (এই বকরী) আমাকে সংবাদ দিচ্ছে যে, এটি বিষ মিশ্রিত।’ ফলে (তা খেয়ে) বিশর ইবনু বারা’ মৃত্যুবরণ করলেন। তখন তিনি ঐ মহিলার নিকট লোক পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করলেন: ’কিসে তোমাকে এ কাজ করতে প্ররোচিত করল? তখন সে বলল, যদি আপনি নবী হন, তবে এটি আপনার কোন ক্ষতি করতে পারবে না, আর যদি আপনি কোন বাদশাহ্ হন, তবে (আপনার মৃত্যু হবে ফলে) আপনার কবল থেকে লোকদেরকে আমি রেহাই দিলাম।
তাই তিনি তাঁর অসুস্থতার সময় বলতেন: ’খায়বারে যে খাদ্য আমি খেয়েছিলাম তা আজও আমাকে কষ্ট দিচ্ছে। এখন এটি আমার প্রাণ ধমনি (কলিজা) ছিঁড়ে ফেলছে।’[1]
[1] তাহক্বীক্ব: এর সনদ হাসান, তবে এটি মুরসাল।
তাখরীজ: আবু দাউদ ৪৫১১, ৪৫১২; বাইহাকী, দালাইল ৪/২৬২; ইবনু সা’দ, তাবাকাত ১/১১৩-১১৪।
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)

নবী মুহাম্মদ যে বিষ খানিকটা মুখে দিয়ে ফেলেছিলেন, সেটি যে তার শরীরে প্রবেশ করেছিল এবং তার শারীরিক ক্ষতি হয়েছিল, তার প্রমাণ পাওয়া যায় আরেকটি সহিহ হাদিসে। তার শরীরে পরিষ্কার বিষক্রিয়ার লক্ষণ দেখা দিয়েছিল। একজন প্রখ্যাত সাহাবীর সহিহ হাদিস অনুসারে, তিনি নবীর আলজিহবা এবং তালুতে এরপর থেকে বিষের ক্রিয়া প্রত্যক্ষ করতেন [8]

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
অধ্যায়ঃ ৪০/ সালাম
পরিচ্ছেদঃ ১৮. বিষ
৫৫১৭। ইয়াহইয়া ইবনু হাবীব হারিসী (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, এক ইয়াহুদী মহিলারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বিষ মেশানো বকরীর গোশত নিয়ে এল। তিনি তা থেকে (কিছু) খেলেন। পরে তাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে আসা হল। তিনি তাকে এ বিষয় জিজ্ঞেস করলে সে বলল, আমি আপনাকে মেরে ফেলার ইচ্ছা করেছিলাম। তিনি বললেন, আল্লাহ এ ব্যাপারে তোমাকে কিংবা তিনি বললেনঃ আমার উপরে ক্ষমতা দিবেন এমন নয়। তারা (সাহাবীগণ) বললেন, আমরা কি তাকে কতল করে ফেলব? তিনি বললেন, না। রাবী বলেন, এরপর থেকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আলজিভ ও তালুতে (তার ক্রিয়া) আমি প্রত্যক্ষ করতাম।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)

হাদিসটি পাবেন সহিহ মুসলিম গ্রন্থে [9]

নবীর জিহবায় বিষের প্রভাব

এই একই হাদিস আপনি পাবেন সুনান আবু দাউদ শরীফেও [10]

সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ৩৪/ রক্তমূল্য
পরিচ্ছেদঃ ৬. কাউকে বিষ খাইয়ে হত্যা করলে কি তাকেও হত্যা করা হবে?
৪৫০৮। আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। একদা জনৈকা ইয়াহুদী নারী বিষ মিশ্রিত একটি ভূনা ছাগী নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে উপস্থিত হলে তিনি তা থেকে খেলেন। অতঃপর তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত করা হলে তিনি তাকে এ জন্য প্রশ্ন করলেন। সে বললো, আমি আপনাকে হত্যা করার জন্যই এটা করেছি। তিনি বললেন, ‘‘এ ব্যাপারে আল্লাহ তোমাকে সফল হতে দেননি অথবা তিনি বলেছেন, আমার উপর তোমাকে সফল হতে দেননি। বর্ণনাকারী বলেন, তখন সাহাবীগণ বললেন, একে আমরা হত্যা করবই। তিনি বললেন, না। আনাস (রাঃ) বললেন, আমি সর্বদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আলাজিভে তা (বিষের ক্ষত চিহ্ন) দেখতে পেতাম।(1)
সহীহ।
(1). বুখারী, মুসলিম।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)

উল্লেখ্য, সেই ইহুদী নারী নবীকে রীতিমত চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলেন, যে সে আসলেই নবী হয়ে থাকলে তার কোন ক্ষতিই হবে না। এই কারণে নবী তাকে তাৎক্ষণিকভাবে হত্যা করতে পারেন নি, তবে পরে ঠিকই হত্যা করেছিলেন।

হাদিসটি পাবেন [11]

মৃত্যু 7

সুস্থ হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করেন নবী

নবী মুহাম্মদ এই বিশাল মহাবিশ্বের স্রষ্টা সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাকের প্রেরিত রাসুল এবং ফেরেশতা-জ্বীন-ইনসান সকলের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র বলে নিজেকে দাবী করার পরেও, তার আল্লাহ, ফেরেশতা বাহিনী, জ্বীন বাহিনী, কেউই তাকে খায়বারের সেই বিষযুক্ত ভেড়ার মাংশ বিষয়ে এতটুকু সাবধান করে নি। বিষয়টি খুবই সন্দেহজনক। এতবড় মহাবিশ্বের স্রষ্টার সবচাইতে কাছের বন্ধু নবী মুহাম্মদ, যার আঙ্গুলের ইশারায় চাঁদ ভেঙ্গে দুইভাগ হয়ে যায়, যার মোজেজার কোন সীমা নেই, যার ক্ষমতা ও মর্যাদা সব মানুষ, ফেরেশতা ও জ্বীনের চাইতেও বেশি, আল্লাহ বা ফেরেশতারা একটু আগে সাবধান করলেই তার আর বিষক্রিয়ায় যন্ত্রনা নিয়ে মরতে হতো না। পরবর্তীতে নবী মুহাম্মদ বেঁচে উঠার, সুস্থ হওয়ার অনেক চেষ্টাই করেছেন, কিন্তু সফল হন নি। বিষ তো আর আল্লাহ নবী রাসুল চেনে না, বিষ তার স্বাভাবিক কাজই করে। নিচের হাদিস তার প্রমাণ [12]

সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৭৬/ চিকিৎসা
পরিচ্ছেদঃ ৭৬/৩২. কুরআন পড়ে এবং সূরা নাস ও ফালাক অর্থাৎ (মু‘আব্বিযাত) পড়ে ফুঁক দেয়া।
৫৭৩৫. ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে রোগে ওফাত পান সেই রোগের সময়ে তিনি নিজ দেহে ‘মু‘আব্বিযাত’ পড়ে ফুঁক দিতেন। অতঃপর যখন রোগের তীব্রতা বেড়ে গেল, তখন আমি সেগুলো পড়ে ফুঁক দিতাম। আর আমি তাঁর নিজের হাত তাঁর দেহের উপর বুলিয়ে দিতাম। কেননা, তাঁর হাতে বারাকাত ছিল। রাবী বলেনঃ আমি যুহরীকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কীভাবে ফুঁক দিতেন? তিনি বললেনঃ তিনি তাঁর দু’ হাতের উপর ফুঁক দিতেন, অতঃপর সেই দু’ হাত দিয়ে আপন মুখমন্ডল বুলিয়ে নিতেন। (৪৪৩৯) (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৩১৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২১১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)

এবারে আসুন আনওয়ারুল মিশকাত শরহে মিশকাতুল মাসাবীহ গ্রন্থ থেকে একটি হাদিস ও তার ব্যাখ্যা পড়ে নিই, [13]

মৃত্যু 9

নবী মুহাম্মদের করুণ মৃত্যু

এবারে আসুন দেখি, মহাবিশ্বের স্রষ্টা সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাকের সর্বাপেক্ষা প্রিয় মানুষ, সর্বাপেক্ষা প্রিয় রাসুল নবী মুহাম্মদের মৃত্যু কীভাবে হয়েছিল [14]

সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫১/ মাগাযী (যুদ্ধাভিযান)
হাদিস নম্বরঃ (4094)
পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
পরিচ্ছদঃ ২২৪৭. নাবী (সাঃ) এর রোগ ও তাঁর ওফাত। মহান আল্লাহর বাণীঃ আপনিতো মরণশীল এবং তারাও মরণশীল। এরপর কিয়ামত দিবসে তোমরা পরস্পর তোমাদের প্রতিপালকের সম্মুখে বাক-বিতন্ডা করবে (৩৯ঃ ৩০,৩১) ইউনুস (রহঃ) যুহরী ও উরওয়া (রহঃ) সুত্রে বলেন, আয়শা (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাঃ) যে রোগে ইন্তিকাল করেন সে সময় তিনি বলতেন, হে আয়শা! আমি খায়বারে (বিষযুক্ত) যে খাদ্য ভক্ষণ করেছিলাম, আমি সর্বদা তার যন্ত্রণা অনুভব করছি। আর এখন সেই সময় আগত, যখন সে বিষক্রিয়ার আমার প্রাণবায়ু বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে

হাদিসটি পাবেন সহিহ বুখারীতে [15]

নবী মুহাম্মদের বিষে মৃত্যু
বিষক্রিয়ায় মুহাম্মদের মৃত্যু

নবীর কমবয়সী স্ত্রী আয়িশার কাছ থেকেও জানা যায়, ভয়ঙ্কর কষ্টকর মৃত্যু হয়েছে নবী মুহাম্মদের। [16]

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৬২/ রোগীদের বর্ণনা
পরিচ্ছেদঃ ২২৫১. রোগের তীব্রতা
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৫২৪৩, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৫৬৪৬
৫২৪৩। কাবীসা (রহঃ) ও বিশর ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চাইতে অধিক রোগ যাতনা ভোগকারী অন্য কাউকে দেখিনি।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)

নবী মুহাম্মদের কন্যা ফাতিমাও নবীর মৃত্যু যন্ত্রণায় কষ্ট দেখে কষ্ট পেতেন। কী প্রচণ্ড কষ্ট পেয়ে নবীর মৃত্যু হয়েছে, এই হাদিস থেকেই তা বোঝা যায় [17]-

সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায়ঃ ৬/ জানাযা
পাবলিশারঃ তাওহীদ পাবলিকেশন
পরিচ্ছদঃ ৬/৬৫. নাবী ﷺ -এর ইনতিকাল ও তাঁর কাফন-দাফন।
৩/১৬২৯। আনাস ইবনু মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মৃত্যু যন্ত্রণা তীব্রভাবে অনুভব করেন, তখন ফাতেমাহ (রাঃ) বলেন, হায় আমার আব্বার কত কষ্ট। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আজকের দিনের পরে তোমার আব্বার আর কোন কষ্ট থাকবে না। তোমার আব্বার নিকট এমন জিনিস উপস্থিত হয়েছে, যা কিয়ামাত পর্যন্ত কাউকে ছাড়বে না।
সহীহুল বুখারী ৪৪৬২, আহমাদ ১৬০২৬, সহীহাহ ১৬৩৮, মুখতাসার শামাযিল ৩৩৪, বুখারী শেষ বাক্য বাদ দিয়ে। তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

হাদিসটি পাবেন সুনানু ইবনে মাজাহ শরীফে [18]

ফাতিমা ও মৃত্যুশয্যায় মুহাম্মদ
ফাতিমা ও মৃত্যুশয্যায় মুহাম্মদ

নবীর প্রিয় স্ত্রী আয়েশাও বলেছেন, নবীর মৃত্যু যন্ত্রণা ছিল ভয়াবহ। এত কষ্টই নবী পেয়েছেন, যে আয়েশা এরপরে আর কারো মৃত্যু সহজ হতে দেখলে ইর্ষাকাতর হতেন না [19]

সূনান তিরমিজী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ১০/ কাফন-দাফন
পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
পরিচ্ছদঃ মৃত্যুর সময় কষ্ট হওয়া।
৯৮১. হাসান ইবনুুস সাববাহ আল-বাগদাদী (রহঃ) …… আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, মৃত্যুর সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যে কষ্ট হতে দেখেছি এরপর কারো মৃত্যুর সময় আসান হতে দেখতে আমার আর কোন ঈর্ষা হয় না। – মুখতাসার শামাইল মুহাম্মাদিয়া ৩২৫, বুখারি, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৯৭৯ (আল মাদানী প্রকাশনী)
রাবী বলেন, আমি এই হাদিস সম্পর্কে আবূ যুরআ (রহঃ) কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, বলেছিলাম, রাবী আব্দুর রাহমান ইবনুল আলা কে? তিনি বললেন, ইনি হলেন আলা ইবনুল লাজলাজ। তাঁকে এইরূপেই আমরা জানি।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

হাদিসটি পাবেন তিরমিযী শরীফে [20]

মুহাম্মদের মৃত্যু যন্ত্রণা

বলা বাহুল্য, হযরত মুহাম্মদের মৃত্যু যেকোন সাধারণ মানুষের মৃত্যুর চাইতে বহুগুণ যন্ত্রণাদায়ক হয়েছিল, তা এই হাদিসগুলো থেকেই পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। সূনান সানাঈ শরীফ থেকে আরেকটি হাদিস পড়ে নিই [21]-

সূনান নাসাঈ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
অধ্যায়ঃ ২১/ জানাজা
পরিচ্ছেদঃ ৬/ মৃত্যু যন্ত্রণা
১৮৩৩। আমর ইবনু মানসূর (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মৃত্যুকালীন সময়ে তার মাথা আমার থুতনি এবং গলদেশের মাঝখানে ছিল। তার মৃত্যু যন্ত্রণা দর্শনের পর আমি অন্য কারো মৃত্যু যন্ত্রণা খারাপ মনে করি না।
(সহীহ, মুখতাসার শামাইল ৩২৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)

বিষক্রিয়ার চারবছর পরে মৃত্যু?

একটি প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই জাগতে পারে যে, বিষ খাওয়ার চারবছর পরে মুহাম্মদের মৃত্যুকে কী বিষক্রিয়ায় মৃত্যু বলে গণ্য করা যায়? ইতিপূর্বে আমরা দেখিয়েছি যে, বিষক্রিয়ায় মুহাম্মদের আলজিবে বিষাক্ত ক্ষত হয়ে গিয়েছিল। এবারে আসুন বিবিসির একটি নিউজ দেখে নেয়া যাক, [22]

মৃত্যু 11

একটি যৌক্তিক সন্দেহ

নবী মুহাম্মদের মৃত্যুর সময়ের ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণ করলে, বেশ কয়েকটি যৌক্তিক প্রশ্ন জাগে। এর মধ্যে একটি প্রশ্ন হচ্ছে, হযরত আলীকে সেই সময়ে ইয়েমেন পাঠানো হয়েছিল কেন? আলীর প্রতি হযরত উমরের কী কোন হিংসা ছিল? আয়িশার ঘরেই বা মুহাম্মদকে কেন নেয়া হয়েছিল? যেখানে সেইদিন মুহাম্মদের আয়িশার ঘরে থাকবার কথা ছিল না। এই বিষয়গুলোর রেফারেন্স পরে দেয়া হচ্ছে। তার নবীর মৃত্যুর সময় মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে আয়িশার ঘরে ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনার দিকে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। নিচের হাদিসটি পড়ুন, যেখানে দেখা যাচ্ছে, আয়িশা মৃত্যুশয্যায় শায়িত মুহাম্মদের মুখে মুহাম্মদের প্রবল আপত্তি থাকার পরেও কোন একটি ঔষধ ঢেলে দিয়েছিল। কিন্তু ইসলামের আকীদা অনুসারে, অসুস্থ হোক কিংবা সুস্থ, সর্বাবস্থায় নবীর নির্দেশ পালন করা যেকোন মুসলিমের জন্য ফরজ। তারপরেও আয়িশা কেন মুহাম্মদের মুখে ঔষধ ঢেলে দিয়েছিল? সেটি কী ঔষধ ছিল? [23] [24] [25]

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪০/ সালাম
পরিচ্ছেদঃ ২৭. মুখে (জোর করে) ঔষধ ঢেলে দেয়া অপছন্দনীয়
৫৫৭৩। মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসুস্থতাকালে তাঁর মুখে ঔষুধ ঢেলে দিলাম; তিনি তখন ইশারা করলেন যে, আমার মুখে ওষুধ ঢেলো না। আমরা বললাম, এটা ওষুধের প্রতি রোগীর বিতৃষ্ণার প্রকাশ। পরে যখন তিনি চেতনা ফিরে ফেলেন, তখন বললেন, তোমাদের প্রত্যেকের মুখে ওষুধ ঢেলে দেওয়া হবে- তবে আব্বাস ব্যতীত; কারণ তিনি তোমাদের শরীক ছিলেন না।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)

সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৬৪/ মাগাযী [যুদ্ধ]
পরিচ্ছেদঃ ৬৪/৮৪. নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রোগ ও তাঁর ওফাত।
৪৪৫৮. ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রোগাক্রান্ত অবস্থায় তাঁর মুখে ঔষধ ঢেলে দিলাম। তিনি ইশারায় আমাদেরকে তাঁর মুখে ঔষধ ঢালতে নিষেধ করলেন। আমরা বললাম, এটা ঔষধের প্রতি রোগীদের স্বাভাবিক বিরক্তিবোধ। যখন তিনি সুস্থবোধ করলেন তখন তিনি বললেন, আমি কি তোমাদের ওষুধ সেবন করাতে নিষেধ করিনি? আমরা বললাম, আমরা মনে করেছিলাম এটা ঔষধের প্রতি রোগীর সাধারণ বিরক্তিভাব। তখন তিনি বললেন, ‘আব্বাস ব্যতীত বাড়ির প্রত্যেকের মুখে ঔষধ ঢাল তা আমি দেখি।[1] কেননা সে তোমাদের মাঝে উপস্থিত নেই। এ হাদীস ইবনু আবূ যিনাদ ……. ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে এবং তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। [৫৭১২, ৬৮৮৬, ৬৮৯৭; মুসলিম ৩৯/২৭, হাঃ ২২১৩, আহমাদ ২৪৩১৭] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪১০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪১০৪)
[1] প্রথমতঃ এখানে অতি সামান্য ব্যাপারেও কিয়াসের বৈধতা প্রমাণিত হয়। দ্বিতীয়তঃ নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুস্থ ও অসুস্থ সর্বাবস্থাতেই তার নির্দেশ পালনের অপরিহার্যতা সমভাবে প্রযোজ্য।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)

আল-লুলু ওয়াল মারজান
৩৯/ সালাম
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/২৭. লাদুদ (রুগীর অনিচ্ছায় তার মুখে একধারে ঔষধ দিয়ে তাকে জোর করে খাওয়ান) দ্বারা চিকিৎসা করা মাকরূহ।
১৪২৭. ’আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রোগাক্রান্ত অবস্থায় তাঁর মুখে ঔষধ ঢেলে দিলাম। তিনি ইশারায় আমাদেরকে তার মুখে ঔষধ ঢালতে নিষেধ করলেন। আমরা বললাম, এটা ঔষধের প্রতি রোগীদের স্বাভাবিক বিরক্তিবোধ যখন তিনি সুস্থবোধ করলেন তখন তিনি বললেন, আমি কি তোমাদের ওষুধ সেবন করাতে নিষেধ করিনি? আমরা বললাম, আমরা মনে করেছিলাম এটা ঔষধের প্রতি রোগীর সাধারণ বিরক্তিভাব। তখন তিনি বললেন, ’আব্বাস ব্যতীত বাড়ির প্রত্যেকের মুখে ঔষধ ঢাল তা আমি দেখি। কেননা সে আমাদের মাঝে উপস্থিত নেই।
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ৬৪ : মাগাযী, অধ্যায় ৮৪, হাঃ ৪৪৫৮; মুসলিম, পর্ব ৩৯ : সালাম, অধ্যায় ২৭, হাঃ ২২১৩
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)

আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, মৃত্যুর ঠিক আগে নবী মুহাম্মদ একটি কাগজ চেয়েছিলেন, কিছু জরুরি বিষয় লিখে দেয়ার জন্য। কিন্তু হযরত উমরের নির্দেশে সেই সময়ে নবী মুহাম্মদের কাছে কাগজ কলম দেয়া হয় নি। ইসলামের প্রতিষ্ঠিত আকীদা অনুসারে নবী মুহাম্মদের নির্দেশ সর্বাবস্থায় অবশ্য পালনীয় হয়ে থাকলে, উমরের এমন ধৃষ্টতার মানে কী? এই নিয়ে সাহাবীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষও ছিল। রীতিমত ঝগড়া এবং মারামারির উপক্রমও হয়ে যাচ্ছিল। মৃত্যুশয্যায় শুয়ে শেষবেলায় কী বলতে চেয়েছিল মুহাম্মদ? তা আর জানা যায় নি [26] [27]

সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩/ ইলম বা জ্ঞান
পরিচ্ছেদঃ ৮১। ইলম লিপিবদ্ধ করা
১১৫। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রোগ যখন বেড়ে গেল তখন তিনি বললেনঃ আমার কাছে কাগজ কলম নিয়ে এস, আমি তোমাদের এমন কিছু লিখে দিব যাতে পরবর্তীতে তোমরা ভ্রান্ত না হও। ‘উমর (রাঃ) বললেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রোগ যন্ত্রণা প্রবল হয়ে গেছে (এমতাবস্থায় কিছু বলতে বা লিখতে তাঁর কষ্ট হবে)। আর আমাদের কাছে তো আল্লাহর কিতাব রয়েছে, যা আমাদের জন্য যথেষ্ট। এতে সাহাবীগণের মধ্য মতবিরোধ দেখা দিল এবং শোরগোল বেড়ে গেল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা আমার কাছ থেকে উঠে যাও। আমার কাছে ঝগড়া-বিবাদ করা উচিত নয়। এ পর্যন্ত বর্ণনা করে ইবনু আব্বাস (রাঃ) (যেখানে বসে হাদীস বর্ণনা করছিলেন সেখান থেকে এ কথা বলতে বলতে বেরিয়ে গেলেন যে, ‘হায় বিপদ, সাংঘাতিক বিপদ! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর লেখনীর মধ্যে যা বাধ সেধেছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ)

নবীকে যুদ্ধের মাধ্যমে বিজয়ী করা হয়েছে
মৃত্যু 14

নবীকে আয়িশার ঘরে নেয়া

সহিহ হাদিস থেকে জানা যায়, অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় একদম নড়াচড়া করতে অসমর্থ থাকা নবী মুহাম্মদকে টেনে হিঁচড়ে আয়িশার ঘরে নেয়া হয়েছিল। এরকম অসুস্থ অবস্থায় সাধারণত রোগীদের নড়াচড়া করানো হয় না, কিন্তু আয়িশার পালা থাকায় উনাকে দুইজন সাহাবী প্রায় পা হিঁচড়ে আয়িশার ঘরে নিয়ে যান। হাদিসটি পড়লে সেই ঘটনাস্থালে আমরা দেখতে পাই, উমরের কন্যা হাফসাও সম্ভবত উপস্থিত ছিলেন [28]

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫১/ মাগাযী (যুদ্ধাভিযান)
পরিচ্ছেদঃ ২২৪৭. নাবী (সাঃ) এর রোগ ও তাঁর ওফাত। মহান আল্লাহর বাণীঃ আপনিতো মরণশীল এবং তারাও মরণশীল। এরপর কিয়ামত দিবসে তোমরা পরস্পর তোমাদের প্রতিপালকের সম্মুখে বাক-বিতন্ডা করবে (৩৯ঃ ৩০,৩১) ইউনুস (রহঃ) যুহরী ও উরওয়া (রহঃ) সুত্রে বলেন, আয়শা (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাঃ) যে রোগে ইন্তিকাল করেন সে সময় তিনি বলতেন, হে আয়শা! আমি খায়বারে (বিষযুক্ত) যে খাদ্য ভক্ষন করেছিলাম, আমি সর্বদা তার যন্ত্রনা অনুভব করছি। আর এখন সেই সময় আগত, যখন সে বিষক্রিয়ার আমার প্রাণবায়ু বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৪০৯৮, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৪৪৪২ – ৪৪৪৫
৪০৯৮। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … নবী সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রোগ প্রবল হল ও ব্যাথা তীব্র আকার ধারন করল, তখন তিনি আমার ঘরে সেবা-শুশ্রুষা করার ব্যাপারে তাঁর বিবিগনের নিকট অনুমতি চাইলেন। তখন তাঁরা তাঁকে অনুমতি দিলেন। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘর থেকে বের হয়ে ইবনু আব্বাস (রাঃ) ও অপর একজন সাহাবীর সাহায্যে জমীনের উপর পা হিঁচড়ে চলতে লাগলেন। উবায়দুল্লাহ্ (রহঃ) বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে আয়িশা সিদ্দীকা (রাঃ) কথিত ব্যাক্তি সম্পর্কে অবহিত করলাম, তখন তিনি আমাকে বললেন, তুমি কি সেই দ্বিতীয় ব্যাক্তি যার নাম আয়িশা সিদ্দীকা (রাঃ) উল্লেখ করেননি, তার নাম জানো? আমি বললাম, না। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, তিনি হলেন আলী (রাঃ)।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ) বর্ননা করেন যে, যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে প্রবেশ করলেন এবং তাঁর ব্যাথা বেড়ে গেল, তখন তিনি বললেন, তোমরা এমন সাত মশক যার মুখ এখনোও খোলা হয়নি, তা থেকে আমার শরীরে পানি ঢেলে দাও। যেন আমি (সুস্থ হয়ে) লোকদের উপদেশ দিতে পারি। এরপর আমরা তাঁকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী হাফসা (রাঃ) এর একটি বড় গামলায় বসালাম। তারপর আমরা উক্ত মশক হতে তাঁর উপর ততক্ষন পর্যন্ত পানি ঢালা অব্যাহত রাখলাম, যতক্ষন না তিনি তাঁর হাত দ্বারা আমাদের ইশারা করে জানালেন যে, তোমরা তোমাদের কাজ সম্পন্ন করেছ। আয়িশা (রাঃ) বলেন, তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের কাছে গিয়ে তাদের সাথে জামাতে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন এবং তাদের উদ্দেশ্যে খুতবা দিলেন।
উবায়দুল্লাহ্ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উতবা (রহঃ) আমাকে জানালেন যে, আয়িশা ও আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) উভয়ে বলেন, যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোগ-যাতনায় অস্থির হতেন তখন তিনি তাঁর কালো চাঁদর দিয়ে নিজ মুখমন্ডল ঢেকে রাখতেন। আবার যখন জ্বরের উষ্ণতা হ্রাস পেত তখন মুখমন্ডল থেকে চাঁদর সরিয়ে ফেলতেন। রাবী বলেন, এরূপ অবস্থায়ও তিনি বলতেন, ইহুদী ও নাসারাদের প্রতি আল্লাহর লানত, তারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদে পরিনত করেছে। তাদের কৃতকর্ম থেকে সতর্ক করা হয়েছে।
উবায়দুল্লাহ্ (রহঃ) বলেন যে, আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি আবূ বকর (রাঃ) এর ইমামতির ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বারবার আপত্তি করেছি। আর আমার তাঁর কাছে বারবার আপত্তি করার কারন ছিল এই, আমার অন্তরে একথা আসেনি যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরে তাঁর স্থলে কেউ দাঁড়ালে লোকেরা তাকে পছন্দ করবে। বরং আমি মনে করতাম যে, কেউ তাঁর স্থলে দাঁড়ালে লোকেরা তাঁর প্রতি খারাপ ধারনা পোষন করবে, তাই আমি ইচ্ছা করলাম যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দায়িত্ব আবূ বকর (রাঃ) এর পরিবর্তে অন্য কাউকে প্রদান করুন। আবূ আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন, এ হাদীস ইবনু উমর, আবূ মূসা ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ননা করেছেন।
হাদিস নংঃ ৪৪৪২, ৪৪৪৩, ৪৪৪৪ ও ৪৪৪৫
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)

আলী ও আয়িশার দ্বন্দ্ব

মুহাম্মদের মৃত্যুর পরে আয়িশা এবং আলীর একটি বিরাট যুদ্ধ হয়, যেটি উটের যুদ্ধ বা জঙ্গে জামাল নামে পরিচিত। সেই যুদ্ধ সম্পর্কে পরবর্তীতে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আপাতত এইটুকু জানা থাকলেই চলবে যে, আয়িশা এবং আলীর সম্পর্ক আদৌ খুব ভাল ছিল না। সেই বিষয়টির কারণ অনুসন্ধান করার জন্য আসুন আমরা কয়েকটি ঘটনা জেনে নিই। বিস্তারিত জানার জন্য এই লেখাটি পড়তে পারেন [29]। এখানে দীর্ঘ হাদিস সমূহ দেয়া হচ্ছে না, শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় অংশটুকু তুলে দেয়া হচ্ছে। আয়িশার সম্পর্কে একটি পরিকীয়া প্রেমের অভিযোগ ওঠায় হযরত আলী নবীকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, আয়িশাকে তালাক দিয়ে নতুন বিবি নিয়ে আসার [30]

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪৪/ শাহাদাত
পরিচ্ছেদঃ ১৬৫৬. এক মহিলা অপর মহিলার সততা সম্পর্কে সাক্ষ্য দান
২৪৮৫।
আমি বললাম, সুবহানাল্লাহ্। লোকেরা সত্যি তবে এসব কথা রটিয়েছে? তিনি (আয়িশা) বলেন, ভোর পর্যন্ত সে রাত আমার এমনভাবে কেটে গেলো যে, চোখের পানি আমার বন্ধ হল না এবং ঘুমের একটু পরশও পেলাম না। এভাবে ভোর হল। পরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়াহীর বিলম্ব দেখে আপন স্ত্রীকে বর্জনের ব্যাপারে ইবনু আবূ তালিব ও উসামা ইবন যায়দকে ডেকে পাঠালেন। যাই হোক; উসামা পরিবারের জন্য তার (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ভালোবাসার প্রতি লক্ষ্য করে পরামর্শ দিতে গিয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহর কসম (তার সম্পর্কে) ভালো ছাড়া অন্য কিছু আমরা জানিনা, আর আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কিছুতেই আল্লাহ্ আপনার পথ সংকীর্ণ করেননি। তাকে ছাড়া আরো অনেক মহিলা আছে। আপনি না হয় বাঁদীকে জিজ্ঞাসা করুন সে আপনাকে সত্য কথা বলবে।

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)

একইসাথে, ইবনে হিশামের সিরাতুন নবী থেকে জানা যায়, আলী আয়িশার একজন দাসীকে ধরে বেদম প্রহার করে আয়িশার পরিকীয়া প্রেমের সত্যতা বের করারও চেষ্টা করেন [31]

আলী প্রহার করলেন

এমনকি, আয়িশা হযরত আলীর ওপর একটাই ক্ষিপ্ত ছিলেন যে, পরবর্তী জীবনে তিনি আলীর নাম পর্যন্ত উচ্চারণ করতেন না। যেটি নিচের এই হাদিসটি থেকে বোঝা যায়। লক্ষ্য করে পড়ূন, আয়িশা বর্ণনা করছে, অসুস্থ মুহাম্মদকে দুইজন টেনে নিয়ে এসেছিল। তাদের একজন ইবনু আব্বাস, আরেকজন হচ্ছে আয়িশার ভাষ্যমতে অন্য এক সাহাবী। মানে তিনি ঐ সাহাবীর নাম উচ্চারণ করেন নি। পরবর্তীতে ইবনু আব্বাসের থেকে জানা গেল, ঐ সাহাবীর নাম হযরত আলী [32]

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১০/ আযান
পরিচ্ছেদঃ ৪৩১। কি পরিমাণ রোগ থাকা সত্ত্বেও জামা’আতে শামিল হওয়া উচিত।
৬৩২। ইব্রাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন একেবারে কাতর হয়ে গেলেন এবং তাঁর রোগ বেড়ে গেল, তখন তিনি আমার ঘরে সেবা-শুশ্রূষার জন্য তাঁর অন্যান্য স্ত্রীগণের কাছে সম্মতি চাইলেন। তাঁরা সম্মতি দিলেন। সে সময় দু’জন লোকের কাঁধে ভর দিয়ে (সালাতের জন্য) তিনি বের হলেন, তাঁর দু’পা মাটিতে হেঁচড়িয়ে যাচ্ছিলো। তিনি ছিলেন আব্বাস (রাঃ) ও অপর এক সাহাবীর মাঝখানে। (বর্ণনাকারী) উবায়দুল্লাহ (রহঃ) বলেন, আয়িশা (রাঃ) এর বর্ণিত এ ঘটনা ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর নিকট ব্যক্ত করি। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি জানো, তিনি কে ছিলেন, যার নাম আয়িশা (রাঃ) বলেন নি? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তিনি ছিলেন আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ)।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)

আলীর প্রতি উমরের হিংসা

এবারে আসুন, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থ থেকে এই বিষয়ে আরো পড়ি [33]। লক্ষ্য করুন, আলীর সম্পর্কে নবীর প্রশংসায় উমরের শুভেচ্ছা জানানোর ভঙ্গিটি। মনে রাখা জরুরি যে, পরবর্তীতে মুহাম্মদের মৃত্যুর সময় এই উমরই কিন্তু কাগজ নিয়ে আসতে বাধা দিয়েছিল। আরো লক্ষ্যনীয় যে, আলীর বিষয়ে বক্তব্যের পরেই ইসলামকে পরিপূর্ণ করে দেয়ার কোরআনের আয়াতটি নাজিল হয়।

ইবনে আবূ তালিব
মৃত্যু 18

নবীর প্রতি আয়িশার ক্ষোভ

সবচাইতে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, এইরকম কষ্টকর মৃত্যুশয্যাতেও নবী মুহাম্মদের ফুলের মত সুন্দর চরিত্র নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েন নি নবীর প্রিয় স্ত্রী আয়িশা। নবীর সিরাত গ্রন্থ থেকে জানা যায়, মৃত্যুশয্যাতেও আয়িশা নবীকে বলছেন, নবীর আগে যদি আয়িশার মৃত্যু হতো, তাহলে নবী আয়িশাকে দাফন করেই আরেক বিবি নিয়ে আয়িশার ঘরেই আরেক বিবি তুলতেন। অর্থাৎ, নবীর চরিত্র আয়িশা খুব ভালভাবেই জানতেন এবং বুঝতেন [34]

মৃত্যু 20

বিবরণটি সহিহ বুখারীতেও এসেছে আরও স্পষ্টভাবে [35]

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৬২/ রোগীদের বর্ণনা
পরিচ্ছেদঃ ২২৬৫. রোগীর উক্তি “আমি যাতনা গ্রস্থ” কিংবা আমার মাথা গেল, কিংবা আমার যন্ত্রণা প্রচন্ড আকার ধারণ করেছে এর বর্ণনা। আর আইয়ুব (আঃ) এর উক্তিঃ হে আমার রব। আমাকে কষ্ট-যাতনা স্পর্শ করেছে অথচ তুমি তো পরম দয়ালু
৫২৬৪। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আবূ যাকারিয়্যা (রহঃ) … কাসিম ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশা (রাঃ) বলেছিলেন হায় যন্ত্রনায় আমার মাথা গেল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি এমনটি হয় আর আমি জীবিত থাকি তাহলে আমি তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবো, তোমার জন্য দু’আ করবো। আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ হায় আফসুস, আল্লাহর কসম। আমার মনে হয় আপনি আমার মৃত্যুকে পছন্দ করেন। আর এমনটি হচ্ছে আপনি পরের দিনই আপনার অন্যান্য সহধর্মিনাদের সঙ্গে রাত যাপন করতে পারবেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ বরং আমি আমার মাথা গেল বলার বেশি যোগ্য। আমি তো ইচ্ছা করেছিলাম কিংবা বলেছেন, আমি ঠিক করেছিলাম আবূ বকর (রাঃ) ও তার ছেলের নিকট সংবাদ পাঠাবো এবং অসীয়ত করে যাবো, যেন লোকদের কিছু বলার অবকাশ না থাকে কিংবা আকাঙ্ক্ষাকারীদের কোন আকাঙ্ক্ষা করার অবকাশ না থাকে। তারপর শুনলাম আল্লাহ (আবূ বকর ব্যতীত অন্য কেউ খিলাফতের আকাঙ্ক্ষা করুক) তা অপছন্দ করবেন, মুমিনগণ তা পরিহার করবেন। কিংবা তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ তা পরিহার করবেন এবং মুমিনগণ তা অপছন্দ করবেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ কাসিম বিন মুহাম্মাদ (রহঃ)

হাফসা ও আয়িশার বিদ্রোহ

অনেকগুলো তথ্যসূত্র থেকেই জানা যায়, মারিয়া কিবতিয়া নামক যৌনদাসীর সাথে যৌনসম্পর্কের জের ধরে হাফসা, আয়িশা এবং নবী মুহাম্মদের পারিবারিক ঝামেলা এতটাই মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল যে, নবী সকল স্ত্রীকে একসাথে তালাক দিয়ে নতুন বিবি আনার পরিকল্পনা করেছিলেন। এই পুরো ঘটনাটি অনেক দীর্ঘ হওয়ার এই বিষয়টি আলাদা পোস্টে লেখা হচ্ছে [36]। আপাতত এইটুকুই আমরা জেনে রাখি যে, নবী, আয়িশা ও হাফসার সম্পর্ক খুব ভাল ছিল না। আয়িশা এবং হাফসা রীতিমত জিম্মি হয়েই ছিলেন, নবীর স্ত্রী হিসেবে। এই নিয়ে আয়িশা ও হাফসার কষ্ট ছিল। উপরে দেয়া লিঙ্কের লেখাটি মন দিয়ে পড়লেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

উপসংহার

এই বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই যে, নবী মুহাম্মদকে আয়িশা এবং হাফসা, উমর ও আবু বকরের পরিকল্পনা মোতাবেক ঔষধের নামে বিষ খাইয়ে হত্যা করেন কিনা। নবীর পরিবারের কাছ থেকে সকল গনিমতের মাল হস্তগত করা [37] এবং শাসন ক্ষমতা নিজেদের কাছে রাখার জন্য আবু বকর ও উমর এরকম পরিকল্পনা করে থাকলে অবাক হওয়ার মত কিছু থাকবে না। ইতিহাসে এরকম ঘটনা অসংখ্য। এরপরে একে একে আলী, হাসান হোসেনকেও হত্যা করা হয়। তাই নবীকে আয়িশা ও হাফসা মৃত্যুর সময়ে বিষ খাইয়েছিল কিনা, সেই বিষয়ে সন্দেহের কিছু অবকাশ থাকে। তবে এটি একেবারেই নিশ্চিত করে বলা যায় যে, নবী মুহাম্মদের মৃত্যু হয়েছিল বিষক্রিয়ায়, যা নবীর কথা থেকেই পরিষ্কার। একইসাথে, নবীর মৃত্যুও হয়েছিল অত্যন্ত নির্মমভাবে, প্রচণ্ড যন্ত্রনাভোগ এবং ধুঁকে ধুঁকে মরেছিল । একইসাথে, সেই ইহুদি নারী যে মুহাম্মদকে বিষ খাইয়েছিল, তার বিষ কাজ করেছিল বলেই পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়। এ থেকে কী প্রমাণ হয়, তা পাঠকদের উপরেই ছেড়ে দিচ্ছি।


তথ্যসূত্র

  1. সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, হাদিস নম্বর- ২৮৮৫ []
  2. আল কোরআন, সূরা হাক্কাহঃ ৪৩-৪৭ []
  3. সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত), হাদিস নম্বরঃ ৪৫১৩ []
  4. সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত), হাদিস নম্বরঃ ৪৫১২ []
  5. সিরাতে রাসুলাল্লাহ (সাঃ), অনুবাদ, শহীদ আখন্দ, প্রথমা প্রকাশনী, পৃষ্ঠা ৫৫৬, ৫৫৭ []
  6. The History of al-Tabari, Vol. 8, page: 124 []
  7. সুনান আদ-দারেমী (হাদিসবিডি), হাদিস নম্বরঃ ৬৮ []
  8. সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), হাদিস নম্বরঃ ৫৫১৭ []
  9. সহিহ মুসলিম, ইমাম মুসলিম ইবনে হাজ্জাজ ইবনে মুসলিম আল কুশাইরী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, পঞ্চম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২০০ []
  10. সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত), হাদিস নম্বরঃ ৪৫০৮ []
  11. সুনান আবু দাউদ, তাহক্বীক আল্লামা মোহাম্মদ নাসিরুদ্দীন আলবানী, প্রকাশক- মোঃ জিল্লুর রহমান জিলানী, ৫ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৬০ []
  12. সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩৫ []
  13. আনওয়ারুল মিশকাত শরহে মিশকাতুল মাসাবীহ, পঞ্চম খণ্ড, ইসলামিয়া কুতুবখানা প্রকাশনী, পৃষ্ঠা ৫১৩ []
  14. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৪০৯৪ []
  15. সহিহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, সপ্তম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৩৩-২৩৪, অনুচ্ছেদ ২২৪৭ []
  16. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৫২৪৩, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৫৬৪৬ []
  17. সুনানে ইবনে মাজাহ, তাওহীদ পাবলিকেশন, হাদিস নম্বরঃ ১৬২৯ []
  18. সুনানু ইবনে মাজাহ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৭৪-৭৫, হাদিস নম্বর ১৬২৯ []
  19. সূনান তিরমিজী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৯৮১ []
  20. সহিহ আত-তিরমিযী, হুসাইন আল মাদানী প্রকাশনী, তাহক্বীক আল্লামা মোহাম্মদ নাসিরুদ্দীন আলবানী, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩০৪, হাদিস নম্বর ৯৭৯ []
  21. সূনান নাসাঈ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ১৮৩৩ []
  22. Zhu Ling: Woman dies decades after unsolved China poisoning []
  23. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৫৫৭৩ []
  24. সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন, হাদিস নম্বরঃ ৪৪৫৮ []
  25. আল-লুলু ওয়াল মারজান, হাদিস নম্বরঃ ১৪২৭ []
  26. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ১১৫ []
  27. সহিহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৮০, ৮১, হাদিস নম্বর ১১৫ []
  28. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৪০৯৮ []
  29. ফাতিমার ঘরে উমর – শিয়া সুন্নী যুদ্ধের সুচনা []
  30. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ২৪৮৫ []
  31. সিরাতুন নবী (সাঃ), ইবনে হিশাম, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩০৯, ৩১০ []
  32. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৬৩২ []
  33. আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ইবনে কাসির, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ৭ম খণ্ড, পৃঃ ৬১৬, ৬১৭ []
  34. সীরাতুন নবী, ইবনে হিশাম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, সম্পাদনা পরিষদের তত্ত্বাবধানে অনুদিত, চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩১৩ []
  35. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বর- ৫২৬৪ []
  36. নবীর স্ত্রীদের তালাকের হুমকির নেপথ্যে []
  37. ফাতিমার ঘরে উমর – এক অনন্ত যুদ্ধের সুচনা []
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন

আসিফ মহিউদ্দীন

আসিফ মহিউদ্দীন সম্পাদক সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন [email protected]

35 thoughts on “নবী মুহাম্মদের করুণ মৃত্যু

  • June 16, 2020 at 9:39 PM
    Permalink

    Very rich content . I go through it regularly.
    Wish you good luck.
    But I am not an Atheist.
    I am a Deist.
    God Gave us Reason, Not Religion .

    Reply
    • August 11, 2020 at 1:09 AM
      Permalink

      This is an important script of Isla, everybody should take a read.

      Reply
  • June 19, 2020 at 1:23 PM
    Permalink

    আপনার ভিডিও গুলি informative

    Reply
  • June 21, 2020 at 7:13 PM
    Permalink

    সত্যের জয় আসবেই

    Reply
  • June 25, 2020 at 2:15 PM
    Permalink

    নবীদের কোন মৃত্য যন্ত্রনা হবে না এমন কথা কি কোথাও আছে? এধরনের যুক্তি প্রাচীনকালের মানুষ এরা দিত। নবী তো দেখি আমাদের মতোই খায় দায় বাজারে যায় ইত্যাদি।
    নবীরা সবাই মানুষ ছিলেন। আর পৃথিবীর দুঃখ কষ্ট বরং তাদেরকে অনেক বেশি স্পর্শ করেছিল।

    Reply
    • June 28, 2020 at 8:01 PM
      Permalink

      I’m totally shocked .I didn’t knew it b4 . All I knew about it was either from my text book at school or Fazaele Amal or from Maulana Tariq Jamils video.They described it very emotionally. But everybody escaped the controversial parts.

      Reply
      • July 23, 2020 at 5:27 PM
        Permalink

        আমি আপনার সাথে ফোনে কথা বলতে চাই।যদি সম্ভব হয় ০১৮৮৪৯২৭৪২২ নাম্বারে ফোন দিবেন।

        Reply
  • July 11, 2020 at 6:28 PM
    Permalink

    আমি আপনার সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করতে চাই

    Reply
  • July 13, 2020 at 11:40 PM
    Permalink

    “রাসুলুল্লাহ(ﷺ) এর মৃত্যু নিয়ে ইসলামবিরোধীদের অপপ্রচার এবং এর জবাব”
    http://response-to-anti-islam.com/show/%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B9(%EF%B7%BA)-%E0%A6%8F%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A7%81-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%A7%E0%A7%80%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%85%E0%A6%AA%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%8F%E0%A6%AC%E0%A6%82-%E0%A6%8F%E0%A6%B0-%E0%A6%9C%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%AC-/78

    Reply
    • August 11, 2020 at 1:01 AM
      Permalink

      কেমনে পারেন মিনার ভাই? গোজামিল এর ও তো একটা সীমা থাকা দরকার। নবীর করুন মৃত্যু হইসে এইটা স্বীকার করতে সমস্যা কি? আপনার লিখা পড়লাম এতো তেনা আপনার কাছে, ভাইরে ভাই৷ কমেন্ট দেখে ভাবলাম লিখবেন ফেরেশতা আইসে ফুলের সুবাস দিয়া উঠাইসে পেডোফাইলটাকে। কিন্তু সেইম কথাই তো লিখলেন। পারেনও ভাই আপনারা।

      Reply
      • August 31, 2020 at 9:05 AM
        Permalink

        মিনার সাহেবের লিঙ্ক পড়ে একথা প্রমানিত হয় না যে মুহাম্মদকে বিষ প্রয়োগে হত্যা বিষয়ক হাদিস ও এতত সংক্রান্ত ইসলামের ইতিহাস মিথ্যা।

        Reply
    • August 11, 2020 at 3:46 AM
      Permalink

      Islam vigorously discourages the kind of critical thinking and open dialogue that can lead people to question its precepts and reject it. The mildest questioning and criticism of Islam or Muhammad counts as ‘blasphemy’ and is punishable by extreme punishments, including death

      Islam dictates every aspect of the live of adherent (including which foot you should enter and leave a latrine with). This totalitarianism curtails the capacity of followers to think clearly, honestly or critically, and to decide about their religion, instilling in its place a mind-set focused on obedience

      Islam tends to create social and economic systems that fail, are overpopulated, backwards, tyrannical, war-torn, unjust and violent. The people living under these systems understandably want to leave for freer countries where the conditions of life are better.

      Unfortunately when they flee to the West they bring with them the very beliefs that ruined the country they are fleeing from, and often fail to integrate and indeed even strive to establish Islam in their new home. Which starts off the process of Islamisation and decline in their new home country.
      The Bubonic plague had a similar epidemiology – when (for example) London was at the height of the plague, people fled London for towns that were uninfected. And in doing so spread the plague to those towns.

      Julian Flynn

      Reply
    • November 28, 2022 at 6:56 PM
      Permalink

      মিনার ভাই আপনার কাছ থেকে এমন বস্তা পচা লজিক আশা করিনি।
      আপনি আমাকে এখন থেকে একজন মুরতাদ হিসেবে ধরে নিতেই পারেন।
      আসলেই আমরা মিথ্যের উপর দাড়িয়ে ছিলাম এতোদিন।

      Reply
      • August 20, 2023 at 11:56 PM
        Permalink

        ঠিক বলেছেন ভাই। একটা মিথ্যা ভিত্তি সবাইকে আবৃত করে রেখেছে। সবাই ভুল ভাই। মুহাম্মদ ইস্বর এর প্রতিনিধি নয়। আপনি ভালোথকবেন ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুন।

        Reply
  • August 13, 2020 at 8:31 PM
    Permalink

    নবী আবার কি???? ওইটা তো ছিলো ক্ষমতা ও নারী লোভী! নিকৃষ্ট!

    Reply
  • September 12, 2020 at 7:07 PM
    Permalink

    এই লেখার মধ্যে প্রমাণ থাকার পরও অনেক মুসলমানদের কলিজায় আঘাত এনেছে।

    Reply
  • September 17, 2020 at 8:50 AM
    Permalink

    কিছুদিন আগে আহাযারি হুজুরের একটি ওয়াজ দেখলাম । তাতে উনি তো এটা মেনে নিয়েছে

    Reply
  • January 9, 2021 at 12:51 PM
    Permalink

    আপনাদের জন্যও বড় আফসোস হয় কত হতভাগ্য আপনারা, কি অদ্ভুদ রকমের চিন্তার দৈন্য দশা!
    আপনার নিজের অস্তিত্ব জীবন মৃত্যু এবং আপনার চার পাশে প্রতি মুহূর্তে ঘটে যাওয়া ঘটনা আপনারা দেখেন কিন্তু এর ভেতর নিহিত সত্য অনুধাবন করতে পারেন না।

    অতি ক্ষুদ্র একটি মশার জীবন বৃত্ত আপনার চিন্তার জটিলতা দূর করতে সক্ষম এবং সৃষ্টি কর্তার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার জন্যও যথেষ্ট।
    মা মশা গুলো জলাশয়ে তাদের পেত থেকে একধরনের আঠা বের করে নৌকার মত বানিয়ে তার উপর ডিম পারে। এরপর মা মশা গুলো মারা যায়। কিছুদিন পড় ডিম গুলো ফুটে নতুন মশা বের হয়। এবং তারাও প্রজনন মৌসুম এলে একই ভাবে নৌকা বানায়, ডিম পারে তারপর মারা যায়।

    ডিম ফুটে যে মশাগুলো বের হল তাড়া তাদের মা মশাকে কখনো দেখেনি। তাহলে কে এই নতুন মশাগুলোকে শিখিয়ে দিল কিভাবে পেটের আঠা দিয়ে নৌকা বানিয়ে ডিম পারতে ??

    https://youtu.be/XJ27lIzu56I

    Reply
    • September 10, 2021 at 12:57 PM
      Permalink

      @Amin ভাই
      আপনি বলছেন মশাকে ডিম্ পাড়ার কৌশল আল্লা শিখাইছেন | সত্য কথা, ইটা ভেবে দেখি নাই | তার মানে মশার কামড়ে যে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু এইসব রোগ হয় এবং মানুষ মরে সেইডাও আল্লারই কীর্তি | আইচ্ছা তবে তো এটাও মানতে হয় যে করোনা ভাইরাস-কে কিভাবে মানুষ মারতে হয় সেইডাও আল্লাই শিখাইছেন | অথবা ক্যান্সার কোষের যে বিস্তার সেইডাও আল্লারই কেয়ামত | নাস্তিকদের যে মগজে কিছু নাই সেইডাও আল্লারই কৃপা | যেমন শয়তান আল্লার দোয়াতে বেঁচে আছে |
      নাকি খালি ভালোগুলা আল্লার দোয়া আর খারাপ গুলার দোষ আল্লার না ?

      Reply
  • January 25, 2021 at 10:57 AM
    Permalink

    Very informative site.

    Reply
  • January 27, 2021 at 9:16 PM
    Permalink

    এই জিনিস কোথাও পড়ি নাই বা কোথাও শুনি নাই। স্কুলে পড়ছিলাম নবী মাংশ খাওয়ার আগেই জেনে গেসিলো। sunnah.com এর রেফারেন্স গুলাও দিয়েন। দেখতে সুবিধা হয় আরকি

    Reply
  • August 4, 2021 at 4:46 PM
    Permalink

    মিনার ভাই.. What a disgusting logic 🤣🤣

    Reply
  • October 26, 2021 at 10:54 AM
    Permalink

    পৃথিবীর নিকৃষ্ট জীব মুহাম্মদ যার কুকাজের সীমা ছিলোনা

    Reply
  • October 28, 2021 at 2:05 PM
    Permalink

    Vhai, boi rupe prokash kora ki shombhob??

    Reply
  • November 13, 2021 at 5:21 PM
    Permalink

    ইহুদি মহিলা পরিক্ষা করতে চেয়েছে,হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্য নবি কি না।যদি সত্য নবি হয় তাহলে বিষক্রিয়ায়
    হযরত মুহাম্মদ সাল্লেল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যু ঘটবে না।
    হযরত মুহাম্মদ সাল্লেল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্য নবি সেটাই প্রমাণীত হয়েছে।বিষমিশ্রিত খাবার খাওয়ার পরও ওনার কোন ক্ষতি হয় নি।।।(যেখানে তাৎক্ষনিক একজন সাহাবি শাহাদাৎ বরন করেন)এবং এই ঘটনার ৪বছর পর হযরত মুহাম্মদ সাল্লেল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুয়ত এর দয়িত্ব সুন্দর ভাবে সুসম্পন্ন করে এই দুনিয়া থেকে বিদায় নেন।😥😢😥😢
    বুখারি ৭/৭১/৬৬৯
    বিঃদ্রঃ অনেক ইসলাম বিদ্বেষীরাই বলে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরিরে বিষ ধীরেধীরে কাজ করেছে।ওকে ফাইন, কিন্তু,ইহুদি মহিলাতো এই উদ্দেশ্য বিষ খাওয়ায় নাই যে চার বছর পর মারা যাবে।

    কথা হলো বিষ খাওয়ার পরও চার বছর কেন বেঁচে ছিলেন??

    Reply
    • July 26, 2023 at 12:48 PM
      Permalink

      আবূ বক্কর কে একজন চিকিৎসক বিষ খাইয়ে মেরেছিল। বিষ খাওয়ানোর পর তিনি বলেন যে আবুবকরের মৃত্যু 1 বছর পর হবে। হয়তো ওই বিষ টা এমন কোনো ধরনের বিষ ছিল যা 4 বছর পর মহম্মদের নরক যন্ত্রণার সাথে মৃত্যু দান করে……মোহাম্মদ যোদি সত্যি আল্লাহের দুত/নবী/সংবাদ-বাহক হয়ে থাকে তাহলে 4 কেনো 40 বছরেও তার মৃত্যু হতো না এই সামান্য বিষ এর কারণে 😂🤣🤣🤣. ভাই সব মিথ্যে আসল ধর্মে আসো সনাতন ধর্মে আসো, আমাদের এই ধর্মের নাম এর মনে হলো যা চিরন্তন বর্তমান। যার কোনো শেষ বা শুরু নেই। Jai shree Krishna 🚩🚩🚩

      Reply
  • March 8, 2023 at 2:53 AM
    Permalink

    A Muslim can’t say like you. You may be influenced by someone.

    Reply
  • March 25, 2023 at 5:53 PM
    Permalink

    ajibon ja korse tar fol vog koira morse MC ta ….kub valo hoise kuttar moto morse…jalim der mrittu amnei howa uchit…kuttar moto morse…eda abar nobi…bal er nobi

    Reply
  • April 14, 2023 at 12:30 PM
    Permalink

    কি গোঁজা মিল দিয়ে কি বুঝাইতে চান নিজেও বুঝি না ইহুদি মহিলা স্ট্যান্ডার্ড সেট করেছে তার ইচ্ছা মতো এখন সেইটাই নবী হওয়ার স্ট্যান্ডার্ড এইটা কোথায় পাইলেন সোজা কথা যেখানে আপনাদের মানুষ দের গোঁজা মিল দিতে সহজ হয় সেখান টুকু কাটা ছিরা করে গোঁজামিল সাজান আর আপনাদের এই আজে বাজে গাঁজা খুরি মতবাদ শুধু মাত্র সল্প জ্ঞান থাকা মানুষ গুলোই বিশ্বাস করবে কারণ এগুলারি তো প্রয়োজন দাজ্জাল এর এর দাজ্জাল কেউ বিশ্বাস করবে আর আপনি যদি ধর্ম হিন পৃথিবী কল্পনা করেন তাহলে আরো হাজার হাজার ধর্ম পৃথিবীতে আছে সেগুলা নিয়ে কথা বলেন না কেনো বাংলাদেশ এর সব নাস্তিক দেখি ইন্ডিয়াতে গিয়ে পরে লেখা লেখি করে পাবলিক মনে হয় বোঝেনা কার টাকার বান্ডিল আপনাদের মাথা খারাপ করেছে ….

    Reply
  • June 14, 2023 at 4:29 PM
    Permalink

    বাজে জগন্য মানুষ ছিল

    Reply
  • November 27, 2023 at 1:17 PM
    Permalink

    ইসলামিক ফাউন্ডেশন দ্বারা অনূদিত সিরাত ইবনে হিসামের ৩৫৬ নম্বর পেজে এটা উল্যেখ আছে যে “নবী মুহাম্মদ এর শহীদের মৃত্যু লাভ করেছেন, আল্লাহ্‌ তা’আলা তাঁকে যে গৌরব দান করেছেন, এটা তার বাড়তি সম্মান।”

    ইহুদীর দেয়া বিষ খেয়ে যে নবী মুহাম্মদ মারা গেছে এইটা কিন্তু আধুনিক মুমিন রা মানে না। অথচ ইবনে হিসাম এইটা তার লেখা সিরাতে উল্যেখ করে গেছে। আধুনিক মুমিনদের কে এইটা রেফারেন্স হিসেবে দেয়া দরকার।

    Reply
  • February 24, 2024 at 12:38 AM
    Permalink

    for the first time ever i found religious fairy tales interesting lmfao turns out it’s a mystery criminal thriller 🤣🤣

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *