মহাভারতের একলব্য, যার প্রতিভাকে খুন করেছিল বর্ণবাদীরা

Print Friendly, PDF & Email

“একজন মূর্খ পুরোহিত যে সংস্কৃত মন্ত্রের অর্থ না জেনেই শ্রাদ্ধ বা বিবাহের মন্ত্র পড়ায়, তার সামাজিক সম্মান তাঁতি বা মুচীর চাইতে বেশি কেন হবে? তাঁতী বা মুচী পরিশ্রম দ্বারা সমাজের একটা বিশেষ কাজ করে, কিন্তু মূর্খ পুরোহিতকে প্রতারক ছাড়া আর কি বলা যেতে পারে ? কসাইর ছেলের যদি প্রতিভা থাকে, তাহলে ইউরোপে সে শেক্সপিয়ার হতে পারত, কিন্তু এদেশে প্রাচীন প্রথা অনুসারে সে ‘রবীন্দ্রনাথ’ বা ‘কালিদাস’ হতে পারত না, হবার চেষ্টা করলে ভগবানের অবতার রামচন্দ্র স্বয়ং এসে তার মাথা কেটে বর্ণাশ্রমধর্ম রক্ষা করতেন।” [1]

এই মন্তব্যটি করেছিলেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা। কথা প্রসঙ্গে মেঘনাদ রামচন্দ্রের শূদ্র শম্বুক হত্যার ঘটনার উল্লেখ করেন। রামায়ণে রামচন্দ্রকে এই নিকৃষ্ট কাজে লিপ্ত হতে দেখা যায়। কেবলমাত্র তপস্যা করার অপরাধেই রাম এক শূদ্রের মস্তকচ্ছেদন করেন। 

রামায়ণে শূদ্রের মাথা কেটে বর্ণাশ্রমধর্ম রক্ষার করার প্রচেষ্টা আমাদের চোখে যেমন পড়ে, তেমনি মহাভারতে আমরা দেখতে পাই নিচু জাতির হওয়ার কারণে একলব্য দ্রোণাচার্যের কাছে জাতিবৈষম্যের শিকার হন। এরপরও যখন একলব্যের অগ্রগতিকে রোধ করা গেল না, তখন দ্রোণাচার্য আর অর্জুন ষড়যন্ত্র করে একলব্যের আঙ্গুল কাটিয়ে দেন। নিম্ন বর্ণের প্রতি এই যে অবিচার, তার উদাহরণ হিন্দু শাস্ত্রে এবং সমাজে অহরহ।

মহাভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হলেন দ্রোণাচার্য। দ্রোণ কৌরব ও পাণ্ডবদের অস্ত্রগুরু ছিলেন ।কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সময় দ্রোণ কৌরবদের পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন। মহাভারতের প্রধান আরেকটি চরিত্র হলেন অর্জুন। অর্জুন পঞ্চপাণ্ডবদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। অর্জুন কুন্তীর তৃতীয় পুত্র ছিলেন। মহাভারতের যে যুদ্ধকে ধর্মযুদ্ধ বলা হয়ে থাকে, তাতে বিজয়ী হয়েছিলেন পাণ্ডবেরা এবং তাদেরই সর্বদা ধার্মিক হিসাবে দেখানোর প্রচেষ্টা চলেছে। এই তথাকথিত ধার্মিকেরাও কিন্তু অনেকসময় অধার্মিকের ( অন্যায়কারীর)  মতো আচরণ করেছিলেন। একলব্যের সাথে যে অন্যায় হয়েছিল, সেই অন্যায়ের সাথে কৌরব ও পাণ্ডবদের অস্ত্রগুরু দ্রোণ এবং অর্জুন এই দুজনের নাম জড়িয়ে আছে। 


কৌরব ও পাণ্ডবরা দ্রোণের কাছ থেকে অস্ত্রবিদ্যা শিখতেন। দ্রোণাচার্য একবার অর্জুনের প্রতি খুশি হয়ে অর্জুনকে এই বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন- 

“বৎস! আমি সত্যি বলছি, এই পৃথিবীতে তোমার তুল্য দ্বিতীয় ধনুর্ধর যাতে প্রখ্যাত না হয়, এমন ব্যবস্থা করবো।“

এরপর দ্রোণের যুদ্ধে পারদর্শীতার কথা যখন চারপাশে ছড়িয়ে পরে, তখন হাজার হাজার রাজা ও রাজকুমার তার কাছে ধনুর্বেদ শেখার জন্য চারদিক থেকে আসতে থাকেন। একদিন ‘নিষাদরাজ হিরণ্যধনু’-র পুত্র একলব্য দ্রোণের কাছে উপস্থিত হন। কিন্তু হায়!  দ্রোণাচার্য কেবলই একলব্যের জাত দেখে তাকে অস্ত্রশিক্ষা দিতে অস্বীকার করেন। মহাভারত হতে এই অংশটির উদ্ধৃতি দেওয়া যাকঃ 

“একদা নিষাদরাজ হিরণ্যধনুর পুত্র একলব্য দ্রোণের কাছে এলেন।কিন্তু সে অস্পৃশ্য , ম্লেচ্ছ জাতি, সাধারণের সতীর্থ ও সমতুল্য হয়, এটা  নিতান্ত অনভিপ্রেত, একথা বিবেচনা করে দ্রোণ তাকে ধনুর্বেদে দিক্ষিত করলেন না।“

দ্রোণ কেমন শিক্ষক ছিলেন? মানুষ হিসাবেই বা তিনি কেমন ছিলেন? এই প্রশ্নগুলি এই অংশটি পড়ার পর মনে উদিত হয়। মহাভারতের সময়কালেও জাতপাত কিভাবে বিদ্যমান ছিল এই অংশেই তার প্রমাণ মেলে। দ্রোণ একজন নিষাদকে, একজন অস্পৃশ্য, ম্লেচ্ছকে কোনোদিনো সাধারণদের সমান হতে দিতে চাননি। এই বর্ণবাদীরা সবসময় উচ্চনীচ ভেদাভেদ তৈরি করে, নিচু জাতির লোকেদের পায়ের তলায় পিষে মারতে চেয়েছে। তারা কখনো তথাকথিত নিম্নবর্ণের মানুষদের তাদের কাধের সাথে কাধ মিলিয়ে চলতে দেয়নি। একজন শিক্ষকের এমন মানসিকতা যে হতে পারে তা আজ আমরা কল্পনাও করতে পারিনা। 


একলব্য দ্রোণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হলেও থেমে থাকার পাত্র  ছিলেন না। একলব্য বনের মধ্যে দ্রোণের একটি মাটির প্রতিমা নির্মাণ করেন। এই মাটির প্রতিমাকেই গুরু বলে  স্বীকার করে নিজে নিজেই অস্ত্রবিদ্যা  শিখতে শুরু করেন তিনি। কিছুসময়ের মধ্যেই তিনি ধনুর্বিদ্যায় অত্যন্ত পারদর্শী হয়ে ওঠেন। 

একদিন কৌরব-পাণ্ডব ভাইয়েরা শিকার করার জন্য বনে গমন করেন। মৃগয়ার জন্য একটি কুকুরও সাথে নিয়েছিলেন তারা। সেই কুকুরটি একটি হরিণকে অনুসরণ করতে করতে নিষাদপুত্র একলব্যের কাছে গিয়ে উপস্থিত হয় এবং একলব্যকে দেখে সে জোরে জোরে  চিৎকার করতে থাকে। তখন একলব্য একসাথে সাতটি তীর সেই কুকুরটির মুখের ভেতর নিক্ষেপ করেন। কুকুরটি সেই অবস্থায় পাণ্ডবদের কাছে গিয়ে উপস্থিত হয়। পাণ্ডবেরা কুকুটির মুখে প্রবেশ করা সেই সাতটি তীর দেখে ভীষণ অবাক হয়ে যান। সেই ধনুর্ধর অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সেই কুকুরটির মুখে শব্দভেদী তীর নিক্ষেপ করেছিলেন। সেই ধনুর্ধরের দক্ষতা বিচার করে পাণ্ডবেরা নিজেদের  অপেক্ষাকৃত নিকৃষ্ট বুঝতে পেরে ভীষণ লজ্জিত হলেন। এরপর পাণ্ডবেরা বনের ভেতর সেই তীরন্দাজকে খুঁজতে থাকেন।   খুঁজতে খুঁজতে অবশেষে এক বনবাসীকে অনবরত তীর বর্ষণ করতে দেখতে পান তারা। পাণ্ডবেরা ‘ঐ বিকৃত দর্শন পুরুষকে’ (১) চিনতে না পারায়, তাকে তার পরিচয় দিতে বলেন। পাণ্ডবদের একলব্য বলেন,

“আমি নিষাদপতি হিরন্যধনুর পুত্র, দ্রোণের শিষ্য, এই আশ্রমে একাই ধনুর্বেদ অনুশীলন করছি!”

পাণ্ডবেরা ঐ বিস্ময়কর ধনুর্ধরের পরিচয় জানতে পেরে গুরু দ্রোণের কাছে গিয়ে উপস্থিত হন এবং দ্রোণকে সবকিছু বিস্তারিত বলেন। অর্জুন দ্রোণকে বলেন,

“গুরু! আপনি প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলেন যে, তোমার থেকে আমার অন্য কোনো শিষ্যই উৎকৃষ্ট হবে না, কিন্তু এখন তো এর বিপরীত জিনিস দেখা যাচ্ছে। নিষাদপতির পুত্র মহাবল একলব্য আপনার এক শিষ্য, সে ধনুর্বেদে আমার থেকেও  অনেক বেশি শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছে!“

অর্জুনের কথা শুনে, অর্জুনকে সাথে নিয়ে দ্রোণ সেই বনে গিয়ে উপস্থিত হন। দ্রোণ সেখানে দেখতে পান নিষাদপুত্র একলব্য  বারবার তীর নিক্ষেপ করে অভ্যাস করছেন। দ্রোণকে দেখতে পেয়ে একলব্য দ্রোণের ‘পাদবন্দন’ করে নিজেকে তার শিষ্য বলে পরিচয় দেন এবং বিধি অনুযায়ী তার পূজা করেন।

দ্রোণের ‘পাদবন্দন’ এবং পূজা শেষ হলে দ্রোণ একলব্যকে বলেন, “ হে বীর! যদি তুমি আসলেই আমার শিষ্য হয়ে থাক, তবে এখন গুরুদক্ষিণা প্রদান কর।“

দ্রোণের কথা শুনে একলব্য অত্যন্ত সন্তুষ্ট হয়ে বললেন,

“ভগবন! গুরুকে অদেয় কিছুই নেই। এখন আপনাকে কেমন দক্ষিণা দেব, আপনি আজ্ঞা করুন।“  

একলব্যের এই কথা শুনে দ্রোণ তাকে বললেন,

“হে বীর! যদি সম্মত হয়ে থাক, তবে ডান হাতের একটি আঙ্গুল কেটে দক্ষিণা হিসেবে আমাকে তা সম্প্রদান কর।

দ্রোণের এই নির্মম কথা শুনেও একলব্য বিচলিত হলেন না। তিনি অত্যন্ত খুশিমনে তার ডানহাতের একটি আঙ্গুল কেটে দ্রোণকে গুরুদক্ষিণা প্রদান করলেন। গুরুদক্ষিণার নামে দ্রোণের ছলের কাছে খুন হল একলব্যের প্রতিভা, তার ভবিষ্যৎ। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একলব্যের আঙ্গুল যদি সেদিন না কাটানো হত, তবে কে হত শ্রেষ্ঠ ধনুর্ধর?


এরপর একটি আঙ্গুল ছাড়াই একলব্য তার অন্য সব আঙ্গুল দিয়ে তীর নিক্ষেপ করে দেখলেন  কিন্তু তার তীরের গতিবেগ আর আগের মত রইলো না।

একলব্যকে তার আঙ্গুল কাটতে দেখে তথাকথিত ধার্মিক পাণ্ডবদের অন্যতম অর্জুন ভীষণ খুশি হলেন। তাকে এখন  ধনুর্বিদ্যায় আর কে পরাজিত করবে? আর কে তার চাইতে শ্রেষ্ঠ হবে? মহাভারত অর্জুনের মনোভাবকে ঠিক এইভাবে ব্যক্ত করেছে-

“অর্জুন এমন অদ্ভুত ব্যপার দেখে অতিশয় প্রীত ও প্রসন্ন হলেন। তখন তার  অপকর্ষ বিষয়ক আশঙ্কা দূর হল। এই পৃথিবীতে অর্জুনকে কেউই পরাজিত করতে পারবে না, দ্রোণাচার্যের এই প্রতিজ্ঞারও রক্ষা হল।“ [2] [3]

প্রথমেই অস্পৃশ্য বলে দ্রোণাচার্যের কাছে জাতিবৈষম্যের শিকার হন একলব্য । সে নিষাদজাতির বলে, ম্লেচ্ছ বলে, অস্পৃশ্য বলে দ্রোণ তাকে শিক্ষা হতে বঞ্চিত করেন। যখন তিনি একাই ধনুর্বিদ্যায় সিদ্ধহস্ত হয়ে ওঠেন তখন কূটচালের মাধ্যমে তার আঙ্গুল কাটিয়ে দেন অর্জুন, দ্রোণাচার্য। এই হল মহাভারতের এক নায়ক অর্জুনের চরিত্র! নিজ যোগ্যতায় একলব্যের চাইতে বেশি পারদর্শী হওয়ার ক্ষমতা তার ছিল না! একলব্যের ন্যায় অধ্যাবসায় ও সৎসাহস অর্জুনের মধ্যে ছিল  না বলেই এমন কূট ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে প্রতিযোগীকেই সরিয়ে দেন কুন্তিনন্দন অর্জুন! এই বীরের বীরত্বের স্বরূপ? এই ধর্মযুদ্ধের নায়কের চরিত্র? ধিক সেই ধর্মকে! ধিক সেই ধর্মযুদ্ধকে!  


টিকা-
১/খুব সম্ভবত নিষাদেরা আর্য সমাজ বহির্ভূত কোনো জাতি ছিল। এদের শারীরিক বৈশিষ্ট্যও আর্যদের থেকে আলাদা ছিল। নিষাদপুত্র একলব্যকে এখানে বিকৃত দর্শন পুরুষ বলা হয়েছে

স্ক্রিনশটঃ

একলব্য 2
কালিপ্রসন্ন সিংহের বাংলা অনুবাদ ১
একলব্য 4
কালিপ্রসন্ন সিংহের বাংলা অনুবাদ ২


একলব্য 6
কিশোরী মোহন গাঙগুলির ইংরেজি অনুবাদ ১
একলব্য 8
কিশোরী মোহন গাঙগুলির ইংরেজি অনুবাদ ২

তথ্যসূত্র

  1. আধুনিক বিজ্ঞান ও হিন্দু ধর্ম; ভারতবর্ষ পত্রিকায় প্রকাশিত মেঘনাদ সাহার প্রবন্ধ []
  2. কালিপ্রসন্ন সিংহ কর্তৃক অনূদিত মহাভারত/ আদিপর্ব/ ১৩২ অধ্যায়[]
  3. কিশোরী মোহন গাঙগুলির মহাভারতের ইংরেজি অনুবাদ/ আদি পর্ব/ ১৩৪ অধ্যায় []
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন

অজিত কেশকম্বলী II

"মানুষ ছাড়া ক্ষ্যাপারে তুই মূল হারাবি, মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি।"

13 thoughts on “মহাভারতের একলব্য, যার প্রতিভাকে খুন করেছিল বর্ণবাদীরা

  • June 11, 2020 at 5:01 AM
    Permalink

    কথা ঠিক, এগুলা ফলো না করে এখন অবতার বুদ্ধ কে ফলো করার সময় এসেছে। হিন্দুদের বলছি, এ গুরু সে গুরু কে ফলো না করে গৌতম বুদ্ধ কে ফলো করুন এখন , এটাই নতুন পথ। অনেক পথ আছে খোলা আপনাদের জন্যে। অন্যদের মত বদ্ধ নয় জ্ঞ্যান আমাদের।

    Reply
    • July 16, 2020 at 8:03 PM
      Permalink

      আপনি ভুল করছেন, হিন্দু ধর্মে কথাটা আছে এবং এটি মহাভারত মহাকাব্যের আছে। পৃথিবীতে এমন কোন ঘটনা নেই যেটা মহাভারতে নেই। সেজন্য এই ঘটনাটা বলা আছে। যাইহোক, হিন্দুধর্ম এটাই শিখিয়েছে যে অন্যায় করলে প্রতিদান তোমাকে পেতেই হবে। অর্থাৎ এই ঘটনা থেকে এটা শিক্ষণীয়: যে অর্জুন এর জন্য দ্রোণাচার্য একলব্যকে আঙ্গুল কাটতে বলেছিলো, সেই পাপের কারণে দ্রোণাচার্যের মৃত্যু অর্জুন এর তরবারির আঘাতে হয়েছিলো।এটাই শিক্ষা।এটাই ধর্ম।

      Reply
      • July 20, 2020 at 1:44 AM
        Permalink

        দ্রোণাচার্যকে অর্জুন হত্যা করেননি, করেছে ধৃষ্টদ্যুম্ন।

        যদি আপনার কথাকে সত্য ধরেও নিতাম তাহলে অর্জুনকে কেউ হত্যা করলো না কেন তার অপকর্মের ফল হিসাবে? অর্জুন দ্রোণকে এক অপকর্ম করতে দেখে কেন চুপ ছিল? একলব্যের আঙ্গুল কাটানোয় কেন খুশি হল অর্জুন? এটা কি কোনো ভালো মানুষের মানসিকতা?

        মহাভারতে বর্ণিত এই কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধকে ধর্মযুদ্ধও বলা হয়। যে ধর্মযুদ্ধের নায়কদের এমন চরিত্র সেই ধর্মযুদ্ধের ‘ধর্ম’ ই কি প্রশ্নবিদ্ধ নয়?

        Reply
  • June 11, 2020 at 9:09 AM
    Permalink

    It was not a religion at that time. No where it says that we have to follow whatever is written in ramayan mahabharat. U guys r missing the whole point. It seems u guys r in a religion the way things r being presented.????????????

    Reply
  • June 11, 2020 at 11:32 AM
    Permalink

    @Randy, এই লেখায় কোথায় বলা হয়েছে এসব কথা। কোথাও বলা হয়নি। অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য করছেন। সত্যি কথা শুনে জ্বলন হলে তো হবে না! শান্ত হোন।

    ওম শান্তি! শান্তি! শান্তি!

    Reply
    • July 16, 2020 at 8:01 PM
      Permalink

      আপনি ভুল করছেন, হিন্দু ধর্মে কথাটা আছে এবং এটি মহাভারত মহাকাব্যের আছে। পৃথিবীতে এমন কোন ঘটনা নেই যেটা মহাভারতে নেই। সেজন্য এই ঘটনাটা বলা আছে। যাইহোক, হিন্দুধর্ম এটাই শিখিয়েছে যে অন্যায় করলে প্রতিদান তোমাকে পেতেই হবে। অর্থাৎ এই ঘটনা থেকে এটা শিক্ষণীয়: যে অর্জুন এর জন্য দ্রোণাচার্য একলব্যকে আঙ্গুল কাটতে বলেছিলো, সেই পাপের কারণে দ্রোণাচার্যের মৃত্যু অর্জুন এর তরবারির আঘাতে হয়েছিলো।এটাই শিক্ষা।এটাই ধর্ম।

      Reply
      • November 17, 2022 at 9:28 PM
        Permalink

        দ্রোণাচার্যের মৃত্যু ধৃষ্টদ্যুম্নের হাতে হয়েছিল।কিন্তু একলব্যকে নিয়ে তিনি যেসব বলেছেন তা হয়তো ওনার হিন্দুধর্মের প্রতি ভুল ধারণা এবং বিরক্তির বহিঃপ্রকাশ মাত্র।প্রথমত,দ্রোণাচার্য হিন্দুদের কোনো আদর্শ নন বরং,কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে তাকে ভিলেন হিসেবেই দেখা যাচ্ছে।তিনি ছিলেন একজন উচ্চাভিলাষী,যিনি এমন প্রতাপশালী রাজপুত্র খুজতেছিলেন যারা তাকে পাঞ্চালরাজ্য জয় করে দেবে দ্রুপদকে পরাজিত করে।তাই স্বাভাবিকভাবেই তার কাছে প্রতিভার কোনো মূল্য ছিল না মূল্য ছিল ব্যক্তি স্বার্থের,তাই একলব্যকে প্রত্যাখ্যান করা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা যা মহাভারতে নিন্দিত হয়েছে।ভারত বা বাংলাদেশে এমন অনেক কিছুই ঘটছে যা সেখানে অনুমোদিত নয় তাই বলে কি ধরে নেব ঐ কাজগুলোকে এসব দেশ সমর্থন করে??
        মহাভারতও তেমন একটি ঐতিহাসিক গ্রন্থ যেখানে অনেকেই অনেক কিছু বলেছেন বা করেছেন যা কখনোই হিন্দুধর্মের ভাবমূর্তিকে প্রকাশ করে না।ভুল ধরার জন্য কোনো গ্রন্থ পাঠ করা আর নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ করা আলাদা

        Reply
  • June 21, 2020 at 5:07 PM
    Permalink

    হিন্দু ধর্মে জাতি ভেদ বর্ণ ভেদ অবশ্যই আছে । এটা কোন ভাবেই ভাল না । বর্তমান সমাজ বেবস্তাপনায় তা আমরা বুঝতে পারি । মহাভারত এ কথা তা উল্লেখ করা হয়েছে, কিভাবে গুরু দ্রোণাচার্য একলব্যের সাথে অবিচার করেছে । গুরু দ্রোন যেই কাজটা করেছেন তা অবশ্যই নিন্দনীয় কিন্তু কোথাও কি উল্লেখ করা হয়েছে অর্জুন দ্রোনকে বলেছিল একলব্যের এমন কোন অবস্থা করে দিতে!! যা কিছু করেছে তা দ্রোন করেছে, তাহলে অর্জুন কেমন করে ষড়যন্ত্র করল!!
    উদাহরণ সরূপ যদি বলাচলে, আপনি আমাকে এক নাম্বার গায়ক বানাবেন বলেছেন এবং এই পৃথিবীতে আমার মত গায়ক আর কেও হবে না এটাও আপনি আমাকে কথা দিলেন, যখন আমি দেখব আমার চাইতে একজন ভাল গায়ক আছেন, এবং তিনি দাবী করতেছেন যে, আপনিই তাকে গান শিক্ষাদান করছেন, তাহলে কি আমি তার বেপারে আপনার কাছে জানতে চাইতে পারি না!! আপনাকে জানানো অথবা আপনার কাছ থেকে জানতে চাওয়াটা কেমন করে ষড়যন্ত্র হয়ে যায় তা বোধগম্য নয় ।
    ধর্ম আছে সমালোচনা করা যাবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু সেটা হতে হবে বস্তুনিষ্ঠ । মহাভারতে অর্জুন আমার প্রিয় চরিত্র তা নয় । কিন্তু আমার মনে হয় এইখানে যেই কাজটি করা হয়েছে তার জন্য একমাত্র দায়ী গুরু দ্রোন, তিনি তার কথা রখার জন্য এই কাজটি করেছেন। আপনি আরো একটি বিষয় উল্লেখ করেছেন অর্জুন এর আধ্যাবসায় নিয়ে, আপনিতো মহাভারত পড়েছেন আশা করি আপনি জানেন অর্জুন আধ্যাবসায় করত কি না এবং মহাভারতের যুদ্ধে সে বীরের পরিচয় দিয়েছিল কিনা। মুক্ত চিন্তা করা খুবই ভাল বিষয়, কিন্তু কোন কিছুকে ছোট করা বা একটা বিষয়কে ভুল প্রমান করতেই হবে এই মন মানসিকটা থাকাটা আমার মনে হয় ভাল না। আপনার লেখাটা পড়ে, আমার কেমন জানি আক্রমনাত্তক মনে হল, আপনি হিন্দু ধর্মকে অপছন্দ করতেই পারেন, তার মানে এটা মোটেই নয়, তাকে যেকোনো ভাবে ছোট করে দেখাতে হবে।

    [ বিঃদ্রঃ আমার লেখার বানানে অনেক ভূল আছে, আশা করি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আর আমার কোণ বাক্যে অথবা শব্দের মাধ্যমে যদি আপনার মনে দুঃখ দিয়ে থাকি তাহলে ক্ষমা প্রাথী ]

    Reply
  • July 11, 2020 at 2:17 AM
    Permalink

    @বণিক

    প্রথমত, মানুষ তার দক্ষতা এবং পরিশ্রম দ্বারাই সফল হন, শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেন। কেউ কাউকে কিছু বানাতে পারে না, শিক্ষক শিক্ষা দান করেন কিন্তু শিক্ষার্থী তার পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের বলেই শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেন।

    দ্রোণ যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন অর্জুনকে তা এই কারণেই বিফল হয়েছিল। ছাত্রকে এই ধরণের প্রতিজ্ঞা করা কান্ডজ্ঞানহীনতার লক্ষণ এবং এই প্রতিজ্ঞা পালনের জন্য অসদুপায় অবলম্বন করা একমাত্র মহাধূর্তের পক্ষেই সম্ভব।

    কান্ডজ্ঞানহীনতার ফলাফল স্বরূপ নিজের প্রতিজ্ঞা বড়, নাকি একটি নিষ্পাপ অধ্যবসায়ী বালকের একটি অঙ্গ এবং তার ভবিষ্যৎ বড়? একটি কান্ডজ্ঞানহীন প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ হলে কিই বা হত দ্রোণের! দ্রোণ যা করেছেন তা আজকের যুগে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

    এবার অর্জুনের বিষয়ে আসা যাক। দ্রোণ যেমন কান্ডজ্ঞানহীন প্রতিজ্ঞা করেছে, অর্জুনও সেই কান্ডজ্ঞানহীন প্রতিশ্রুতিকে দিল্লির লাড্ডু ভেবে গিলে খেয়েছে। যাইহোক, প্রথমদিকের ব্যাপারটি ছেড়ে দিলেও, যখন একলব্যের আঙ্গুল কাটানো হল, তখন অর্জুন সেখানে ছিল। একটি অন্যায় সংঘটিত হতে সে দেখলো, কিন্তু কিছুই বললো না। বরং একলব্যের আঙ্গুল কর্তিত হওয়াতে সে এই ভেবে খুশি হল যে, এবার তার চেয়ে আর কেউ শ্রেষ্ঠ ধনুর্ধর হতে পারবে না। কতটা অমানুষ হলে মানুষ এমন হতে পারে! মহাভারতে যখন অর্জুনের এই মনোভাব বর্ণিত হল, তখন খুব স্বাভাবিক ভাবেই মনে হয়, অর্জুন দ্রোণকে তার প্রতিজ্ঞা স্মরণ করানোর মাধ্যমে প্ররোচনা দেন। এর আগেই একলব্যের প্রতিভা দেখে পান্ডবেরা লজ্জিত হয়েছিল। তাই অসৎ মনোভাবাপন্ন হয়ে অর্জুন এমনটা করে থাকতে পারে।

    এবার অধ্যবসায়ের কথায় আসা যাক। আমি বলেছি ‘একলব্যের মত অধ্যবসায় ছিল না বলে’। আর আপনি কি বলেছেন? একেই বলে মিসকোট করা।

    যাইহোক, প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রতি অন্যায় হওয়াতে যে অর্জুন খুশি হল এই ভেবে, তার চাইতে কেউ আর শ্রেষ্ঠ হতে পারবে না, তাকে অধ্যবসায়ী বলে আপনার মনে হচ্ছে কি এখানে!

    যাইহোক, দ্রোণের অন্যায় আব্দার একমাত্র মহাভারতের একলব্যই মেনে নিয়েছিল।আজকের যুগে হলে এমন বদমাইশের হাজতবাস হত। হিন্দু শাস্ত্রে অনেকস্থানে বলা আছে গুরু অপকর্ম করলেও কিছু না করতে। এটা একেবারেই বাজে কথা বলে আমার মনে হয়। যাইহোক, হিন্দুশাস্ত্রের অনেক স্থানে অপকর্মকারী গুরুর শাস্তির কথাও বলা আছে। দ্রোণের শাস্তি হওয়া উচিত ছিল।

    আর আপনার আমার লেখা আক্রমণাত্মক বা আদুরে মনে হয়েছে,তাতে আমার কিছু করার নেই। মানুষের যখন মন আছে, তখন একটা না একটা কিছু মনে হবেই। এতে আমার কিছু করার নেই। আর প্রতিযোগীর আঙ্গুল চোখের সাথে কাটাতে দেখে যে চুপ থাকে, শুধু চুপ থাকে না, সাথে বেশ খুশিও হয়, তাকে তুলতুলে মোলায়েমভাবে দেখা আমার পক্ষে সম্ভব হল না, দুঃখিত।

    অন্যকে দুঃখ দিয়েছেন কিনা সেটা আপনি যে ভাবছেন তার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। তবে, আমি এতটা নাদুসনুদুসও নই যে সামান্য সমালোচনায় দুঃখ পেতে হবে। সমালোচনাকে আমি ভালো দৃষ্টিতে দেখি। সমালোচনাই কোনো কিছুকে সংশোধন করে।

    ধন্যবাদ।

    Reply
  • July 14, 2020 at 12:07 AM
    Permalink

    নমস্কার। আমার কাছে রামায়ণ মহাভারত হল ইতিহাস। এখান থেকে ভাল খারাপ শিক্ষা নেয়া উচিত। আমরা বুঝতে পারছি যে গুরু দ্রোণ, অর্জুন আমাদের দৃষ্টিতে অপরাধী, এটাই হল শিক্ষা। এই অপরাধের ফল তারা পরবর্তিতে পেয়েছিল, কেউই এড়াতে পারেনি। আমরা যদি ভাল খারাপ বিবেচনা করতে পারি এই ইতিহাস থেকে তাই আমাদের ধর্ম।

    Reply
    • July 20, 2020 at 1:30 AM
      Permalink

      ধন্যবাদ।

      ভালোকে ভালো এবং মন্দকে মন্দ বলার জন্য সৎসাহস দরকার। সবাই তা স্বীকার করার সৎসাহস রাখে না।

      Reply
  • February 28, 2021 at 8:44 AM
    Permalink

    একটা ছোট প্রশ্ন আছে। কখনো কোনো তীরন্দাজকে লক্ষ্য করেছেন? সে কি তার বুড়ো আঙ্গুলটা ব্যাবহার করে?

    ধনুক ধরবার সময় বাঁ হাতে ধনুক ধরা হয় প্রথম চারটি আঙ্গুলে মুঠো করে, বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ খাড়া থাকে। আর তীর ধরা হয় তর্জনী ও মধ্যমার ফাঁকে। এখানেও বুড়ো আঙ্গুল সোজা দাঁড়িয়ে থাকে।

    তাহলে দ্রোণাচার্য তর্জনী না চেয়ে বুড়ো আঙ্গুলটা চাইলেন কেন?

    Reply
  • May 19, 2023 at 12:18 AM
    Permalink

    কারণ মানুষের বুড়ো আঙুল অন্য ৪টি আঙুলের শক্তির বেস হিসেবে কাজ করে। মানুষ তার বুড়ো আঙুলের স্বাধীন শক্তিশালী ব্যবহার করার ক্ষমতার জন্য(এপোজিবল গ্রিপ) অন্যান্য প্রাইমেট থেকে আলাদা ও শ্রেষ্ঠ হয়েছে বিবর্তনের ধারাবাহিকতায়। বুড়ো আঙুল ছাড়াও তীর নিক্ষেপ করা যায় কিন্তু সেই তীর গতিবেগ ও লক্ষ্যভেদের ক্ষমতা হারায়।

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *