শাতিমে রাসুল সম্পর্কিত শারিয়ার বিধান

Print Friendly, PDF & Email

ভূমিকা

শুরুতেই বলে নেয়া জরুরি যে, মুক্তচিন্তায় মুরতাদ কতলের নিয়ম নেই। আমাদের দৃষ্টিতে বিশ্বাস অবিশ্বাস নিতান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। নাস্তিক্যবাদ বা সংশয়বাদ ত্যাগ করে কেউ যদি ইসলামে ফেরত যেতে চান, তার দরজা সবসময় খোলা। শুধু তাই নয়, যেন এখন থেকে তারা নাস্তিক ও নাস্তিক্যবাদের কঠোর সমালোচনা করতে পারেন, তার পক্ষেও আমরা থাকবো। আমাদের নিয়ে কটূক্তি বা সমালোচনা যাই করুক, উনারা যেন নির্ভয়ে তা করতে পারেন, তাদের বাক স্বাধীনতা আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। উনারা যেন প্রাণভয়ে ভীত হতে না হয়। কারণ উনার বাক স্বাধীনতা সবকিছুর উর্ধ্বে। মানুষের বাক স্বাধীনতা এবং অধিকার সমূহ ব্যক্তি নিরপেক্ষ, তাই সে যেই হোক, সকলের জন্য বাক স্বাধীনতা একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরি মানবাধিকার।

মুফাসসিল ইসলাম হোক আর যেই হোক, উনারা যেন কোন ভয়ভীতি গালাগালি হুমকিধামকি ছাড়াই মনের সুখে এখন ব্যক্তিগত পরিসরে ইসলাম পালন করতে পারেন (অন্যের ক্ষতি না করে), আমরা তার পক্ষে প্রয়োজনে লড়াই করবো৷ উনাদের জন্য আমাদের সকলের শুভকামনা রইবে। আল্লাহ পাক যেন উনাদের জান্নাত দান করেন, আমরা সেটাই কামনা করি।

কিন্তু সত্যিকার অর্থে, শাতিমে রাসুলের শাস্তি ইসলামে কী? সেই নিয়েই এই আলোচনাটি। এই লেখাটিতে আমি পরিষ্কারভাবে প্রমাণ করবো, শাতিমে রাসুলকে -এমনকি, সে অন্তর থেকে তওবা করার ফলে আল্লাহ পাকও যদি মাফ করেন, তারপরেও ইসলামী শরীয়ার হুকুম এটিই যে, তাকে কতল করতে হবে। এছাড়া ভিন্ন কোন পথ নেই। কারণ এটিকে বলা হয় উম্মাহর অধিকার। উম্মাহর অধিকার হরণের অধিকার কাউকেই দেয়া হয় নি।

মানসিক বিকার নাকি চারিত্রিক স্বভাব?

মুফাসসিল ইসলাম নবী মুহাম্মদকে শুধুমাত্র জারজ বা ধর্ষকই নয়, অজস্র গালাগালি এবং বাজেভাবে আক্রমণের পরে, মদ খেয়ে নামাজ পরা বা কোরআন ছিড়ে কমোডে ফ্ল্যাশ করা ছাড়াও নানাভাবে ইসলামকে গালাগালি করে বর্তমানে আবারো ইসলামে ফেরত গেছেন। সেটি উনি করতেই পারেন, আমাদের নাস্তিকদের দৃষ্টিতে উনার যেকোন কিছু করার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে। তবে ইসলামে ফেরত গিয়েই তিনি বরাবরের মতই অনেক ইসলাম জানেন বলে দাবী করে বেড়াচ্ছেন। অনেক জায়গাতে আবার নিজেকে ইসলামিক স্কলার বলেও দাবী করছেন, যা থেকে প্রমাণ হয় ইসলামিক স্কলার শব্দটির মানেই উনি বোঝেন না। দাইয়ী কাকে বলে আর আলেম কাকে বলে, স্কলার কাকে বলে, এই দুইয়ের পার্থক্য কী, সেটাই উনি জানেন না। আমি মোটামুটি শতভাগ নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, উনার ইসলামি ফিকাহ সম্পর্কে একদম সাধারণ জ্ঞানটুকুও নেই। কারণ সেই জ্ঞান থেকে থাকলে, শারীয়া এবং উম্মাহের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন পূর্বক, উনার নিজেকেই নিজের মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ইসলামের মর্যাদা সমুন্নত রাখা উচিত।

উনি যে এইবারই প্রথম ইসলাম ত্যাগ করেছেন, তা কিন্তু নয়। ২০১১ সালেও একবার উনি ইসলাম ত্যাগ করে আবার মুসলিম হয়েছিলেন। সেইবার একবার নাস্তিক, তারপরে আবার মুসলিম হওয়ার পরে উনি কী যুক্তি দিয়েছিলেন দেখে নিনঃ

এরপরে উনি আবারো ২০১৩ সালে পুনরায় ইসলাম ত্যাগ করেন। সেই সময়ে উনি যেসব ভিডিও প্রকাশ করেন, সেগুলো সবই মুছে ফেলা হয়েছে, তবে দুই একটি রয়ে গেছে। দেখুনঃ

এরপরে আবার ইসলামে ফেরেন, এবং ২০১৬ সালে আবারো কাফের কিং হিসেবে নিজেই নিজেকে পরিচিত করতে শুরু করেন। উনি সেই সময়ে উনি নবী মুহাম্মদ সম্পর্কে কী কী বলতেন সেগুলো অনলাইনে সকলেই জানেন। এখানে সবচাইতে ভদ্র এবং সভ্য ভিডিওগুলো দেয়া হয়েছে। এই ভিডিও ছাড়াও অসংখ্য ভিডিওতে উনি নবী মুহাম্মদকে খাস বাংলায় গালাগালি করেছেন। এমন কোন গালি নেই যে উনি মুহাম্মদকে দেন নি। অত্যন্ত বাজে ভাষা এবং নোংরা শব্দ হওয়ার কারণে আমরা তা প্রকাশ করছি না। কারণ আমরা গালাগালি নয়, যৌক্তিক এবং তথ্যভিত্তিক সমালোচনা করতে আগ্রহী। মুফাসসিলের ঐসব গালাগালি উনার পুরনো ভিডিও খুঁজলেই আপনারা সব পেয়ে যাবেন। এছাড়াও কোরআন ছিড়ে কমোডে ফ্ল্যাশ করা, নবী পত্নীদের নিয়ে অশালীন কথা বলা, মদ হাতে নিয়ে নামাজ পড়া, মুহাম্মদের বাবা মা তুলে গালাগালি করা ছাড়াও উনার অনেক কীর্তি রয়েছে।

এরকম আরো হাজার হাজার ভিডিও আছে, যেগুলো কুৎসিত এবং নোংরা। সেগুলো এখানে দিলে এই লেখাটিই নোংরা হবে। তাই সেগুলো বাদই রাখলাম।

কোরআনের আয়াত

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ইসলাম অনুসারে, আল্লাহ পাক কী মুফাসসিলকে ক্ষমা করে দেবেন? সেই প্রশ্নের উত্তর আমরা জানি না। কারণ আল্লাহর কোন প্রমাণই এখন পর্যন্ত পাওয়া যায় নি। তবে মুফাসসিল যা করেছেন, বারবার ইসলাম গ্রহণ এবং ত্যাগ, এই সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোরআনের আয়াতই রয়েছে। পড়ুন সুরা নিসার ১৩৭ নম্বর আয়াতটিঃ

MUHIUDDIN KHAN এর অনুবাদঃ [1]

যারা একবার মুসলমান হয়ে পরে পুনরায় কাফের হয়ে গেছে, আবার মুসলমান হয়েছে এবং আবারো কাফের হয়েছে এবং কুফরীতেই উন্নতি লাভ করেছে, আল্লাহ তাদেরকে না কখনও ক্ষমা করবেন, না পথ দেখাবেন।
( কোরআন ৪/১৩৭ )

ইসলাম ত্যাগের শাস্তি

ইসলাম ধর্মে ধর্ম ত্যাগের শাস্তি কী? এই বিষয়ে শরীয়তের বিধান কী? আসুন নিচের হাদিসগুলো থেকে জেনে নিই। উল্লেখ্য, ইসলাম ত্যাগের শাস্তি ইসলামি শরিয়তে মৃত্যুদণ্ড। তবে মুরতাদ হওয়ার পরে তওবা করলে তার জন্য কোন শাস্তির বিধান নেই। কিন্তু শাতিমে রাসুলকে সর্বাবস্থায় হত্যা করতে হবে। সেটির কোন অবস্থাতেই কোন মাফ নেই। সেই বিষয়ে পরে আলোচনা করছি। শুরুতে মুরতাদের শাস্তির বিধান সম্পর্কে জেনে নিই [2] [3]

পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
গ্রন্থঃ সূনান আবু দাউদ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩৩/ শাস্তির বিধান
হাদিস নাম্বার: 4300 ‏
৪৩০০. আহমদ ইব্‌ন মুহাম্মদ (রহঃ) — ইকরাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আলী (রাঃ) ঐ সব লোকদের আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন, যারা মুরতাদ হয়েছিল। এ সংবাদ ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট পৌছলে, তিনি বলেনঃ যদি আমি তখন সেখানে উপস্থিত থাকতাম, তবে আমি তাদের আগুনে জ্বালাতে দিতাম না। কেননা, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোময়া আল্লাহ্‌ প্রদত্ত শাস্তির (বস্তু) দ্বারা কাউকে শাস্তি দেবে না। অবশ্য আমি তাদেরকে আল্লাহ্‌র রাসূলের নির্দেশ মত হত্যা করতাম। কেননা, তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কেউ দীন পরিত্যাগ করে মুরতাদ হয়ে যায়, তবে তোমরা তাকে হত্যা করবে। আলী (রাঃ) ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ)-এর এ নির্দেশ শুনে বলেনঃ ওয়াহ্‌! ওয়াহ্‌! ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) সত্য বলেহছেন। আর ইহাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নির্দেশ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
গ্রন্থঃ সূনান আবু দাউদ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩৩/ শাস্তির বিধান (كتاب الحدود)
হাদিস নাম্বার: 4301‏
৪৩০১. আমর ইব্‌ন আওন (রহঃ) —- আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঐ মুসলমানের রক্ত হালাল নয়, যে এরূপ সাক্ষ্য দেয় যে, “আল্লাহ্‌ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহ্‌র রাসূল”। তবে তিনটি কারণের কোন মুসলমানের রক্ত প্রবাহিত করা হালালঃ (১) যদি কোন বিবাহিত ব্যক্তি যিনা করে; (২) যদি কেউ কাউকে হত্যা করে, তবে এর বিনিময়ে হত্যা এবং (৩) যে ব্যক্তি দীন ত্যাগ করে মুরতাদ হয়ে মুসলমানের জামায়াত থেকে বেরিয়ে যায়।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

আসুন, সহি বুখারী গ্রন্থ থেকে সরাসরি হাদিসগুলো যাচাই করে নিই [4] [5]

শাতিমে রাসুল 2

শাতিমে রাসুল 4

এবারে আসুন দেখি, প্রখ্যাত হাদিস প্রনেতা ইমাম মালিকের মুয়াত্তা ইমাম মালিক গ্রন্থ থেকে মুরতাদের শাস্তি কী হতে পারে তা জেনে নিই। ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশ হওয়া মুয়াত্তা ইমাম মালিক দ্বিতীয় খণ্ডের ৪০৬, ৪০৭ নম্বর পৃষ্ঠায় হাদিসটি পাবেন। ডাউনলোড লিঙ্ক [6]

শাতিমে রাসুল 6
শাতিমে রাসুল 8

সেইসাথে, আরো অমানবিক ব্যাপার হলো, মুরতাদকে কেউ হত্যা করলে তার জন্য হত্যাকারীর ওপর মৃত্যুদণ্ড প্রয়োগ হবে না। বিষয়টি সন্নিবেশিত আছে বিধিবদ্ধ ইসলামিক আইন খণ্ড ১ এ [7]

শাতিমে রাসুল 10

একই সাথে, মুরতাদের বিষয় সম্পত্তিও জবরদখল করা হবে, তেমনটিই বলা আছে ইসলামিক আইনে [8]

শাতিমে রাসুল 12

শাতিমে রাসুলের শাস্তি

শুধুমাত্র নবী মুহাম্মদই নয়, যেকোন নবী কিংবা রাসুল সম্পর্কে গালি দেয়া, নোংরা কথা বলা, কটূক্তি করা মানুষ সে কাফির হোক কিংবা মুসলিম, সে তওবা করুক কিংবা না করুক, ইসলামী শরীয়া এবং চার মাজহাবের চার প্রধান ইমাম তথা ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালিক, ইমাম শাফী এবং ইমাম হাম্বলির সম্মিলিত মতামত এটিই যে, তাকে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবেএই বিষয়ে সকল আলিমের সম্মিলিত ঐক্যমত্য রয়েছে। পৃথিবীর কোন আলেম এই বিষয়ে ভিন্ন মতামত দিতে পারবেন বলে আমি মনে করি না।

ইসলামী শরীয়া অনুসারে, কিছু অপরাধে শরিয়া আইনে তওবার পরেও মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। যেমন- বিবাহিত ব্যক্তির জেনা, শাতেমে রাসুল, হত্যা (যতক্ষণ না পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থের পরিবার ক্ষমা করে)। ইসলামী শরীয়ায় এই বিধান সুস্পষ্ট এবং এখানে অহেতুক কোন বিতর্কেরও সুযোগ নেই। এমনকি, সে যদি অন্তর থেকে তওবা করে, সেই তওবা যদি মুসলিমরা মেনেও নেয়, তারপরেও তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। অর্থাৎ, সেই তওবা যদি অন্তর থেকেও হয়, আল্লাহ হয়তো তাকে ক্ষমা করতেও পারেন, কিন্তু পৃথিবীর বিচারে অবশ্যই তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। এটাই ইসলামী শরীয়ার বিধান।

তবে শাতেমে রাসুলকে হত্যা বিষয়ে ছোট একটি ফাঁক রয়েছে। যদি কোন কাফের বা মুসলিম ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতাবশত নবীকে গালাগালি করে, কটুক্তি করে, তার যদি শাতিমে রাসুলের শাস্তি সম্পর্কে ধারণা না থাকে, অথবা সে যদি পাগল হয়ে থাকে, তাহলে সে দাবী করতে পারে যে, সে বিষয়টি সম্পর্কে অজ্ঞতাবশত বা পাগল অবস্থায় এই ভুল করেছে। সেই ক্ষেত্রে তার তওবা এবং ক্ষমা প্রার্থণা দুইই মেনে নেয়ার সুযোগ আছে। তবে যাচাই করে দেখতে হবে, আসলেই সে অজ্ঞতাবশত বা পাগল অবস্থায় এরকম কাজ করেছে কিনা। এমনকি, কেউ যদি বলে আমি মদের নেশায়, বা অন্য কোন নেশায় এই কাজ করেছি, তার এই অজুহাতও গ্রহণ করা হবে না। অন্য কোন অজুহাত বা শয়তানের ধোঁকা, এগুলোও গ্রহণ করা হবে না। শুধুমাত্র অজ্ঞতাবশত বা পাগল অবস্থায় কেউ করলে তার ওপর মৃত্যুদণ্ড জারি করা যাবে না। এটিই চার মাজহাবের সকল আলেমদের ঐক্যমত। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মুফাসসিল কী অজ্ঞতাবশত মুহাম্মদকে গালি দিতো, নাকি সে তখন পাগল ছিল? নাকি এখনো পাগলই আছেন? সেটি আমাদের প্রশ্ন হতেই পারে।

এই সম্পর্কে শরীয়ায় বিধান

হাদিসের পরিষ্কার বিবরণ

সূনান নাসাঈ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৩৮/ হত্যা অবৈধ হওয়া
পরিচ্ছেদঃ ১৬. রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে মন্দ বলার শাস্তি
৪০৭২. আমর ইবন আলী (রহঃ) … আবু বারযা আসালামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ)-কে মন্দ বললে, আমি বললামঃ আমি কি তাকে হত্যা করবো? তিনি আমাকে ধমক দিয়ে বললেনঃ এই মর্যাদা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যতীত আর কারো নেই।
তাহক্বীকঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ বারযাহ (রাঃ)

হযরত আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেন-
“ যে ব্যক্তি আমাকে গালি দেয়, তাকে হত্যা কর। আর যে আমার সাহাবীকে গালি দেয়, তাকে প্রহার কর।”(জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-২২৩৬৬, জামেউল জাওয়ামে, হাদীস নং-৫০৯৭, দায়লামী, ৩/৫৪১, হাদীস নং-৫৬৮৮, আস সারেমুল মাসলূল-৯২)

এই হাদিসটি আপনি পাবেন প্রখ্যাত ইসলামের ফতোয়া বিষয়ক ওয়েবসাইট ইসলাম ওয়েব ডট নেট ওয়েবসাইটে [9]

ما روي عن علي بن أبي طالب رضي الله عنه قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ” من سب نبيا قتل ، ومن سب أصحابه جلد ” .

চার মাজহাবের সম্মিলিত ঐক্যমত

ইমাম আবু হানিফা (রহিঃ) এর মাযহাব:

আল্লামা খাইরুদ্দীন রামালী (রহিঃ) ফতোয়ায়ে বাযযাযিয়ায় লিখেছেন:

“রাসূলের কটূক্তিকারীদের সর্বাবস্থায় হত্যা করা জরুরী। তার তওবা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। চাই সে গ্রেফতারের পরে তওবা করুক বা নিজ থেকেই তওবা করুক। কারণ এমন ব্যক্তির তওবার কোনো পরোয়াই করা যায় না এবং এই মাস’আলায় কোনো মুসলমানের মতভেদ কল্পনাও করা যায় না। এটিই ইমামে আযম আবু হানিফা (রহিঃ), আহলে কুফী ও ইমাম মালেক (রহিঃ) এর মাযহাব।” (তাম্বিহুল উলাতি ওয়াল হুক্কাম, পৃষ্ঠা ৩২৮)

আল্লামা শামী (রহিঃ) তাঁর ফতোয়ায়ে শামীতে উল্লেখ করেন:

“সকল উলামায়ে কেরাম এ বিষয়ে একমত যে, রাসূলের কটূক্তিকারীকে হত্যা করা ওয়াজিব। ইমাম মালেক (রহিঃ), ইমাম আবুল লাইস (রহিঃ), ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল (রহিঃ), ইমাম ইসহাক (রহিঃ), ইমাম শাফেঈ (রহিঃ), এমনকি হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রহিঃ) সহ সকলের মতেই রাসূলের কটূক্তিকারীর তওবা কবুল করা হবে না।”

ফিকহে হানাফির অন্যতম বড় ফকীহ ইমাম ইবনে হুমাম (রহিঃ) বলেন:

“রাসূল (ﷺ) এর প্রতি বিদ্বেষপোষণকারী ব্যক্তি মুরতাদ হয়ে যায়। সুতরাং যে কটূক্তিকারী, সে তো আরো আগেই মুরতাদ হয়ে যাবে। আমাদের মতে, এমন ব্যক্তিকে হদ হিসেবে হত্যা করা জরুরী। তওবা গ্রহণ করে তার হত্যা মাফ করা যাবে না।” (ফাতহুল কাদীর, চতুর্থ খন্ড, পৃষ্ঠা ৪০৭)

ইমাম মালেক (রহিঃ) এর মাযহাব:

ইমাম মালেক (রহিঃ) একাধিকবার বলেছেন:

“রাসূলের কটূক্তিকারীর শুধু গর্দানই উড়িয়ে দেওয়া নয়, তার লাশও যেন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ইবনে কাসেম (রহিঃ), ইমাম মালেক (রহিঃ) থেকে বর্ণনা করেন, যে রাসূল (ﷺ) কে গালি দিবে, বদনাম করবে, দোষ-ত্রুটি বের করবে। তাকে হত্যা করা হবে, চাই সে কাফের হোক বা মুসলমান, তার কাছে তওবা তলব করা হবে না।” (আস সারিমুল মাসলুল ‘আলা শাতিমির রাসূল)

ইবনে কাসেম (রহিঃ) বলেন যে:

ইমাম মালেক বলেছেন: শাতিমির রাসূল তথা রাসূল (ﷺ)-এর কটূক্তিকারীর গর্দান উড়িয়ে দিতে হবে। ইবনে কাসেম (রহিঃ) ইমাম মালেক (রহিঃ) কে জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনার অনুমতি চাই যাতে মৃত্যুর পর তার লাশও জ্বালিয়ে দিতে হবে। এই কথা শুনে তিনি বললেন, অবশ্যই রাসূলের কটূক্তিকারী এই শাস্তিরই উপযুক্ত।’ (কিতাব আশ শিফা বিত-তারিফি হুকুকুল মুস্তাফা, খন্ড-২)

ইমাম শাফেঈ (রহিঃ) এর মাযহাব:

ইমাম খাত্তাবী (রহিঃ) বলেন:

“আমার জানা মতে, কোনো একজন মুসলমানও রাসূলের কটূক্তিকারীদের হত্যা ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে দ্বিমত করেননি।” (ফাতহুল কাদীর, আস সারিমুল মাসলুল, ফাতহুল বারী)

ইসহাক ইবনে রাহবিয়াহ (রহিঃ) বলেন:

“এ বিষয়ের উপর মুসলমানদের ইজমা সংঘটিত হয়েছে যে, যে ব্যক্তি আল্লাহ্ অথবা রাসূল (ﷺ) কে গালি দিবে কিংবা আল্লাহর নাযিলকৃত কোনো হুকুমকে প্রত্যাখ্যান করবে সে কাফের হয়ে যাবে। যদিও সে আল্লাহর সকল বিধি-বিধান মানুক না কেন।” (আস সারিমুল মাসলুল)

ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহিঃ) এর মাযহাব:

শাইখুল ইসলাম ইমাম আহমদ (রহিঃ) বলেন,

“আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের প্রতি গালির ইঙ্গিত করাও ইরতেদাদের শামিল, যা হত্যাকে অবধারিত করে। ” তিনি আরো বলেন, “চাই সে কাফের হোক বা মুসলিম, রাসূলের কটূক্তিকারীদের হত্যা করতে হবে। আমার মতে তাদের হত্যা করতে হবে এবং তার তওবা কবুল হবে না।” (আস সারিমুল মাসলুল ‘আলা শাতিমির রাসূল)

শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ (রহিঃ) এর মত:

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ (রহিঃ) বলেন,

“কোনো মুসলিম যদি নবীকে গালি দেয়, তাহলে সে কাফের ও মুরতাদ হয়ে যায়। এই বিষয়ে সবাই একমত যে, কোনো নবীকে গালি দিলেই সে কাফের এবং তাকে হত্যা করা জায়েয হয়ে যায়।” (আস সারিমুল মাসলুল ‘আলা শাতিমির রাসূল)

তিনি আরো বলেন:

“যদি কোনো জিম্মি বা জিযিয়া প্রদানকারী কাফির ও রাসূলকে অবমাননা করে তাহলে ও তাকে হত্যা করা হবে। কারণ তখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে অবমাননা করার কারণে তার সাথে কৃত অঙ্গীকার নামা বাতিল হয়ে যাবে। (আস সারিমুল মাসলুল ‘আলা শাতিমির রাসূল)

শায়েখ মুহাম্মাদ সালিহ আল মুনাজ্জিদ

বর্তমান সময়ে ইসলামী শারীয়া সম্পর্কে সবচাইতে বড় পণ্ডিতদের মধ্যে একজন মুহাম্মাদ সালিহ আল মুনাজ্জিদ সৌদি আরবের একজন সালাফি স্কলার, যিনি ইসলামকিউএ.ইনফো ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠার জন্য পরিচিত, যা সালাফি মানহাযের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর প্রদান করে। আল জাজিরা এবং সৌদি সরকার সহ অসংখ্য জায়গাতেই তার ব্যাখ্যা রেফারেন্স হিসেবে গ্রহণ করা হয়। তার দ্বারা পরিচালিত ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে কী বলা, তা আগে জেনে নিই। যারা ইংরেজি ভালভাবে পড়তে পারেন না, তাদের জন্য সংক্ষিপ্তভাবে ভাবার্থ বলছিঃ

নবী মুহাম্মদকে কেউ অবনাননা, কটূক্তি বা গালাগালি করলে সকল আলিমই এই বিষয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছেন যে, তাকে হত্যা করতে হবে। সে ইসলামে ফেরত আসলে, তওবা করলে, তারপরেও তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করতে পারেন, নাও করতে পারেন। কিন্তু সেই ব্যক্তি উম্মতের হক নষ্ট করেছে বিধায়, উম্মতের অধিকার হচ্ছে তাকে কতল করা।

এবারে তার লেখা থেকেই রেফারেন্স [10] দিচ্ছিঃ


Hence the scholars are unanimously agreed that the one who impugns the Prophet (blessings and peace of Allah be upon him) is a kaafir and apostate who has gone beyond the pale of Islam.
Shaykh al-Islam Ibn Taymiyah (may Allah have mercy on him) said:
Impugning Allah or impugning His Messenger is kufr both inwardly and outwardly, regardless of whether the one who does that believes that it is haraam or he thinks that it is permissible for him, or he was not thinking of the ruling when he did that. This is the view of the fuqaha’ and all of Ahl as-Sunnah who say that faith is comprised of both words and deeds.
As-Saarim al-Maslool, 1/513
It says in al-Mawsoo‘ah al-Fiqhiyyah (40/61):
The Holy Qur’an tells us that it is a grave sin to disparage the Prophet (blessings and peace of Allah be upon him) or belittle him, and the one who does that is cursed. That is in the verses in which Allah, may He be exalted, says (interpretation of the meaning):
“Verily, those who annoy Allah and His Messenger (SAW) Allah has cursed them in this world, and in the Hereafter, and has prepared for them a humiliating torment”
(al-Ahzaab 33:57)
“If you ask them (about this), they declare: We were only talking idly and joking. Say: Was it at Allah and His Ayat (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.) and His Messenger (SAW) that you were mocking?
Make no excuse; you have disbelieved after you had believed. If We pardon some of you, We will punish others amongst you because they were Mujrimoon (disbelievers, polytheists, sinners, criminals, etc.)”
(at-Tawbah 9:65-66).
The fuqaha’ are of the view that the one who does any of these things is to be regarded as a kaafir. End quote.
It also says (22/184):
The ruling on the one who impugns him (blessings and peace of Allah be upon him) is that he is an apostate, and there is no difference of scholarly opinion concerning that. End quote.
If the one who impugns the Prophet (blessings and peace of Allah be upon him) is an apostate, then the punishment prescribed for him in sharee‘ah is execution; there is no difference of scholarly opinion concerning that.
Ibn al-Mundhir (may Allah have mercy on him) said:
The majority of scholars are agreed that the one who impugns the Prophet (blessings and peace of Allah be upon him) is to be executed. End quote.
See: Tafseer al-Qurtubi, 8/82
Al-Khattaabi (may Allah have mercy on him) said:
I do not know of any of the Muslims who differed concerning the obligation of executing him. End quote.
Ma‘aalim as-Sunan, 3/295

তিনি আরো বলেন, শাতিমে রাসুলকে অবশ্যই মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। তবে তার কবর মুসলিমদের অনুসরণ করে ইসলামী জানাজা পরিয়ে মুসলিমদের কবরস্থানে হবে, নাকি তার লাশ দূরে কোথায় ফেলে দেয়া হবে, এই বিষয়ে দুই ধরণের মতামত আছে। একপক্ষ বলেন, সে অন্তর থেকে তওবা করলেও কতল করতেই হবে, তবে মুসলিমদের কবরস্থানে তাকে দাফন করা যাবে। আরেকদল মনে করেন, তার লাশের জানাজাও হবে না। লাশটিকে দূরে কোথাও ফেলে দিতে হবে।

If the one who impugned the Prophet (blessings and peace of Allah be upon him) repents and regrets what he did, and he comes back to Islam, that repentance will benefit him in his relationship with Allah. So before Allah he will be a believing Muslim. But with regard to his execution, the obligation of executing him will not be waived. So he will be killed as a Muslim, and he should be washed, the funeral prayer should be offered for him, he may be inherited from and he should be buried in the Muslim graveyard. As for the apostate who did not come back to Islam, he is to be executed as a kaafir.

The first opinion is that repentance will not be accepted from the one who impugned Allah or His Messenger (blessings and peace of Allah be upon him). This is the well-known view of the Hanbalis. Rather he is to be executed as a kaafir, and the funeral prayer is not to be offered for him and supplication is not to be offered for mercy for him, and he is to be buried in a place far away from the Muslim graves.

The second opinion is that the repentance of one who had reviled Allah or His Messenger (blessings and peace of Allah be upon him) will be accepted if it is known that he has sincerely repented to Allah, and he admits that he made a mistake and speaks of Allah, may He be exalted, in a way that reflects the veneration He deserves. This is because of the general meaning of the evidence that indicates that repentance is accepted, such as the verse in which Allah, may He be exalted, says (interpretation of the meaning): “Say: O ‘Ibaadi (My slaves) who have transgressed against themselves (by committing evil deeds and sins)! Despair not of the Mercy of Allaah, verily, Allaah forgives all sins” (al-Zumar 39:53). There are some of the kuffaar who impugn Allah, yet despite that their repentance is accepted. This is the correct view. The repentance of one who impugned the Messenger (blessings and peace of Allah be upon him) is accepted, but he must be executed. This is unlike the one who impugns Allah; his repentance is accepted but he is not to be executed, because Allah has told us that He forgives transgressions against His rights if the person repents, and that He forgives all sins.

ইযাহুল মুসলিম

এবারে আসুন, সহিহ মুসলিম গ্রন্থের শরাহ গ্রন্থ ইযাহুল মুসলিম থেকে [11] পড়ি,

শাতিমে রাসুল 14
শাতিমে রাসুল

শাতিমে রাসুলের শাস্তির দলীলাদি

এখন আসুন, প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলার মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মান্নানের লেখা থেকে এই সম্পর্কিত রেফারেন্সসমূহ দেখে নিই। এখানে উল্লেখ হওয়া শেফা শরীফ, ফাতহুল বারী, ফাতহুল ক্বাদীর ইত্যাদি বইয়ের রেফারেন্স সমূহ চাইলে দেয়া যাবে [12]

শাতিমে রাসুল 17
শাতিমে রাসুল 19
শাতিমে রাসুল 21
শাতিমে রাসুল 23
শাতিমে রাসুল 25
শাতিমে রাসুল 27
শাতিমে রাসুল 29
শাতিমে রাসুল 31
শাতিমে রাসুল 33
শাতিমে রাসুল 35
শাতিমে রাসুল 37
শাতিমে রাসুল 39
শাতিমে রাসুল 41
শাতিমে রাসুল 43
শাতিমে রাসুল 45
শাতিমে রাসুল 47
শাতিমে রাসুল 49
শাতিমে রাসুল 51

উপসংহার

আমরা নাস্তিকরা, সংশয়বাদীরা কোন অবস্থাতেই চাই না, কারো ধর্মের কারণের কোনদিন কাউকে সামান্য আঘাতও করা হোক। ধর্ম ব্যক্তিগত বিষয়, এটি যার যেভাবে ইচ্ছা পালন করবে। কিন্তু, কেউ যদি নিজেকে সত্যিকারের সুন্নী মুসলমান দাবী করে, তাহলে তার অবশ্যই উচিত ইসলামের ইমান আকিদা, শারীয়ার হুকুম আহকাম কোন রকম ধানাই পানাই ছাড়া, কোন রকম হাস্যকর আজগুবি অজুহাত ছাড়া সেগুলো নিষ্ঠার সাথে পালন করা। নিজের কল্লা রক্ষা করতে ইসলামের হুকুমতকে নানান অজুহাতে যারা অবজ্ঞা করবে, তারা আসলে ইসলামকে নয়, নিজের জীবনকেই বেশি ভালবাসে। মুফাসসিল ইসলাম যদি সত্যিই আল্লাহ, তার নবী এবং ইসলামকে মন দিয়ে ভালবেসে থাকে, তাহলে তার অবশ্যই উচিত ইসলামী শারীয়ার এই অলঙ্ঘণীয় বিধানকে মাথা পেতে নিয়ে, ইসলামের আদর্শ সমুন্নত থাকতে কোন শারীয়া ভিত্তিক রাষ্ট্রে প্রবেশ করে নিজের অপরাধের বিবরণ পেশ করা, এবং তাদেরকে অনুরোধ জানানো যে, তার ওপর যেন মৃত্যুদণ্ড আরোপ করা হয়।

মুফাসসিল যদি এমন দাবী করেন যে, উনি চার মাজহাবের চারজন প্রধান ইমাম সম্পর্কেও বেশি ইসলাম জানেন, ইসলাম বোঝেন, প্রখ্যাত ক্ল্যাসিক্যাল যুগের স্কলারগণ কেউই আসলে ইসলাম বুঝতে পারে নি, পৃথিবীর কোন ইসলামিক স্কলারই আসলে ইসলাম বোঝে না, উনিই সবচাইতে বেশি জানেন এবং বোঝেন, তাহলে ভিন্ন কথা। এরকম দাবী উনি অবশ্য মাঝে মাঝেই করেন, সেগুলো শুনলে উনার মানসিক ভারসাম্য সম্পর্কে আমরা শুধু নিশ্চিত হতে পারি। আর তেমন কিছু উনাকে বলার নেই।

উনি যদি আসলেই সুস্থ মস্তিষ্কে আবারো ইসলামে ফিরে এসে থাকেন, তাহলে উনার উচিত হবে এই শাস্তি নিজের ওপর প্রয়োগ করা। কোন শারীয়া ভিত্তিক রাষ্ট্রে প্রবেশ করে নিজের অপরাধের বিবরণ তাদের কাছে স্বীকার করে আত্মসমর্পন করা। এরপরে শারীয়া কাউন্সিল আইন অনুসারে তার ব্যবস্থা নেবে। উনি যদি সেই শারীয়া কাউন্সিলকে বোঝাতে সক্ষম হন, তাহলে তো ভাল কথা। উনি বুক ফুলিয়ে ফিরে আসবেন। ইসলামের প্রতি অসীম ভালবাসা থাকলে এইটুকু তো তিনি করতেই পারেন। দেখা যাক, উনি আসলেই ইসলামকে ভালবাসেন নাকি উনি আগের মতই ধানাই পানাই করে গোঁজামিল দিয়ে ইতরামি করে চাপাবাজি করে নিজের কল্লা রক্ষা করেন। সহিহ মুসলিম হয়েছেন, নাকি ধাপ্পাবাজই রয়ে গেছেন। যদিও আমি নিশ্চিত, ইসলাম, শারীয়া এবং নবীর সম্মান সমুন্নত রাখতে উনি নিশ্চয়ই নিজের কল্লা খোয়াতে চাইবেন না।

কারণ উনি জাতে মাতাল হলেও, তালে ঠিক।


তথ্যসূত্র

  1. সুরা নিসা- ১৩৭ []
  2. সূনান আবু দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) হাদিস নম্বরঃ ৪৩০০ []
  3. সূনান আবু দাউদ ( ইসলামিক ফাউন্ডেশন), হাদিস নম্বরঃ ৪৩০১ []
  4. সহিহ বুখারী খণ্ড ৫ পৃষ্ঠা ২৩৬ []
  5. সহিহ বুখারী খণ্ড ১০ পৃষ্ঠা ২৬১ []
  6. মুয়াত্তা ইমাম মালিক, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪০৬, ৪০৭ []
  7. বিধিবদ্ধ ইসলামিক আইন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৫৭ []
  8. বিধিবদ্ধ ইসলামিক আইন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৪৬ []
  9.  فصل سب النبي أو الأصحاب []
  10. islamqa.info থেকে []
  11. ইযাহুল মুসলিম, মাওলানা আবু বকর সিরাজী, পৃষ্ঠা ৪০৮, ডাউনলোড লিঙ্ক []
  12. নবীর মানহানির শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মান্নান, বইটির ডাউনলোড লিঙ্ক []
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন

আসিফ মহিউদ্দীন

আসিফ মহিউদ্দীন সম্পাদক সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন [email protected]

4 thoughts on “শাতিমে রাসুল সম্পর্কিত শারিয়ার বিধান

  • December 20, 2019 at 4:23 PM
    Permalink

    Please download this book and go to Page 408, http://www.islamijindegi.com/wp-content/uploads/2016/06/izahul_muslim.pdf

    সুরা আল ইমরান ৯০:

    যারা ঈমান আনার পর অস্বীকার করেছে এবং অস্বীকৃতিতে বৃদ্ধি ঘটেছে, কস্মিণকালেও তাদের তওবা কবুল করা হবে না। আর তারা হলো গোমরাহ।

    https://fbwat.ch/1BiwQbaOpQhovt5y

    http://askislambd.weebly.com/gqa138.html

    http://www.dailysangram.com/post/155030-মহানবীকে-সা-নিয়ে-কটাক্ষ-ও-বিদ্রুপ-নাস্তিকদের-কাজ

    Reply
  • January 6, 2020 at 5:22 AM
    Permalink

    Hi, i really like your videos. I need one information. There was a famous early convert to islam who became muslim because islam allows one to fight non muslim and he wanted to fight. Can you please tell me his name or provide me link/ reference.

    Reply
  • May 6, 2020 at 11:55 PM
    Permalink

    এটা প্রায় স্পষ্ট যে মুফাস্মিল স্যার পিওর মুমিন নয় কিংবা উনি জান্নাতি হুরি আশা করেন না।
    ওনার ভিডিও গুলো আমি প্রায় দেখি এবং ওনার সাইকোলজি আর কথাবার্তা মূলত ব্যবসামুখী। তবে উনি যে অন্তত ইসলাম রিফর্মের চেস্টা করছেন তা সত্যিই প্রসংশনীয়।
    আমার মতামতঃ মুফাস্মিল হয় সংশয়বাদী অথবা নাস্তিক। নাস্তিকতার মূল রিয়েলাইজেশনে যাওয়ার পর কেউ কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের প্রতি বিশ্বাস আনতে পারে না। মুফাস্মিল সেই লেভেলেরই মানুষ।
    নিকৃষ্ট নাস্তিক বস্তুবাদী প্রতারকের উদাহরণ মুফাস্মিল। ভন্ডামী, কপটতা, মিথ্যাচার, অহংকার এসব করে তিনি কিরকম শান্তি পান আমি জানিনা তবে উনি সুখী মানুষ মোটেও নন।

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *