আন্ডারস্ট্যান্ডিং মুহাম্মদ – আলি সিনা
বিষয়সার
১১ ই সেপ্টেম্বর ২০০১ এর পরে বিশ্বব্যাপী মোটামুটি ১২০০০ হাজারের মত সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটে। হাজার হাজার সাধারণ মানুষ হতাহত হয়। এসবের পরিচালক সন্ত্রাসীরা কোন দেও দানব না বরং নিজেদের বিশ্বাস অনুসারে জীবন চালানো মুসলিমই ছিলো। এমন আরো লাখ লাখ আছে যারা সুযোগ পেলেই এই ধরণের কাজ করতে পুরোপুরি প্রস্তুত।
কেউ যদি মনে করে ইসলামি সন্ত্রাস নতুন কোন ঘটনা তাহলে আবার ভালো করে ভাবার দরকার আছে তার। ইসলামের সাফল্যই মূলত সন্ত্রাসের অবদান। মুহাম্মদ যেদিন মদিনায় প্রথম পা দেয়, সেদিন থেকেই তার সন্ত্রাস অভিযানের শুরু। সেই থেকে তার অনুসারীরাও একই কাজ করে আসছে।
মুসলিম জাতি অসহিষ্ণু, নাক-উঁচু, অত্যাচারী এবং হিংস্র। বিরোধীতার মুখে বা অন্যের চাইতে আলাদা সুযোগ এবং সম্মান না দিতে চাইলে তাদের ভিতরের এইসব গুন বিস্ফোরিত হওয়া শুরু করে। অথচ একই সাথে অন্য ধর্মের অনুসারীদের উপর অত্যাচার করা বা তাদের অধিকার কেড়ে নেয়াতে তাদের জুড়ি নেই।
মুসলিমদের বুঝতে হলে সবার আগে তাদের নবীকে বোঝা দরকার। স্বীকার করতে না চাইলেও মুসলিমরা মূলত মুহাম্মদ কেই পূজা করে এবং অন্য যেকোন কিছুর চাইতে বেশি মূল্য দেয়। ইসলাম মূলত মুহাম্মদ বাদ (পূঁজিবাদ, সমাজবাদ এর মত)। মুহাম্মদ কে বুঝার মাধ্যমেই বুঝা সম্ভব, কি জিনিস মুসলিমদের আচরণকে ট্রিগার করে।
“আন্ডারস্ট্যান্ডিং মুহাম্মদ ” , আল্লাহর নবীর মানসিক জীবনবৃত্তান্ত। এই লোকের রহস্য ভেদ করার চেষ্টাই এই বইয়ের উদ্দেশ্য। ইতিহাস থেকে জানা যায় মুহাম্মদ দিনের পর দিন গুহার মধ্যে একাকি ধ্যানে ডুবে থাকতো। ঘন্টাধ্বনি শোনা এবং ভৌতিক স্বপ্ন দেখার কথাও শোনা যায়। তার ধারণা ছিলো তার উপর প্রেত ভর করেছে। খাদিজা তাকে আশ্বস্ত করে যে সে আসলে নব্যুয়ত পেয়েছে। নব্যুয়তের এই নিশ্চিত বিশ্বাস পেয়ে, সে অবিশ্বাসীদের উপর ভয়ংকর ক্রোধান্বিত হয়, সমালোচকদের হত্যা করে, আর লুটপাট এবং গণহত্যা চালায় অনেক গোত্রের উপর। হাজার হাজার লোকের দাসত্ব, ধর্ষণের জন্য দায়ী এই লোক, তার অনুসারীদের অনুমতি দেয় নারী যুদ্ধবন্দীদের ধর্ষণের। এই সমস্তই সে স্থিরচিত্তে এবং নিজের অধিকার মনে করেই করেছিলো।
যারা তাকে বিশ্বাস করতো তাদের প্রতি সে দয়ালু এবং উদার থাকলেও অবিশ্বাসীদের প্রতি ছিলো কঠোর এবং দ্বেষান্বিত। তার বিশ্বাস ছিলো সে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মানব এবং মহাবিশ্বের সৃষ্টির পিছনের একমাত্র কারণ। মুহাম্মদ কোন সাধারণ মানুষ ছিলো না। সে ছিলো অসুস্থ রকমের আত্নপ্রেমী।
“আন্ডারস্ট্যান্ডিং মুহাম্মদ” এইসব সাধারণ ঘটনার আরো গভীরে যাওয়ার একটি চেষ্টা। এই বইয়ের লক্ষ্য ‘কি ঘটেছিলো’ বর্ণনা করা নয়, বরং ‘কেন ঘটেছিলো’ তা বর্ণনা করা। এই উদ্দেশ্যে বইটি পৃথিবীর ইতিহাসের বিশাল এবং প্রভাবশালী এই ব্যক্তির রহস্য খুলার প্রচেষ্টা করবে।
মুহাম্মদ নিজের সত্যতার উপর প্রবল বিশ্বাসী ছিলো। তার হ্যালুসিনেশনগুলাতে সে এতটাই প্রবলভাবে বিশ্বাস করতো যে সে চাইতে অন্যরাও কোন প্রকার প্রশ্ন ছাড়াই সেগুলো বিশ্বাস করুক। প্রবলভাবে রুষ্ট আল্লাহর মুখ থেকে সে ওহী নিয়ে আসে, “ কি ? তোমরা কি তাহলে মুহাম্মদ কি দেখেছে এই নিয়ে সন্দেহ কর ?” এটা মনোরোগের ব্যাপার। সে কি দেখলো না দেখলো তাতে কার কি এসে যায় ? তারইতো দায়িত্ব সে কি দেখলো সেটা প্রমাণ করা। অসুস্থ রকমের আত্নপ্রেমীই কেবলমাত্র প্রমাণ ব্যাতিরেকে বিশ্বাস দাবী করতে পারে।
মুহাম্মদ ছিলো এতিম। শিশুকালেই মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এক বেদুঈন দম্পতির ঘরে বড় হয় সে, স্নেহবঞ্চিত শৈশব পার করে। পরে দাদা এবং তার পরে চাচার কাছে বড় হয়। দাদা চাচার দয়ার্দ্র আদরে নষ্ট হয়। যখন নির্বাধ ভালোবাসার দরকার ছিলো তখন সেটা না পেয়ে, যখন নিয়ম এবং দায়িত্ব শেখার কথা ছিলো তখন কোন শাসন না পেয়ে, সে আত্নপ্রেম নামের মনোরোগে আক্রান্ত হয়। এই রোগ তাকে পরিণত করে বিবেকহীন মেগালোম্যানিয়াকে (মেগালোম্যানিয়া =যুক্তিবুদ্ধিহীন বড় চিন্তা করা রোগ)। সীমাহীন ক্ষমতার দিবাস্বপ্নে, সে অন্যের কাছ থেকে ভালোবাসা এবং প্রশ্নহীন আনুগত্য চাইতো। বিশ্বাস করতো সে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেউ এবং চাইতো অন্যরা তার কথামত চলুক। অন্যদের ব্যবহার করেও ঈর্ষা এবং সন্দেহে ভুগতো ক্রমাগত, ভাবতো অন্যরা বুঝি তার মাথায় কাঠাল ভেঙে খাচ্ছে, প্রত্যাখ্যাত হলে কষ্ট পেতো মারাত্নক এমনকি যারা ত্যাগ করে যেতো তাকে তাদের খুন পর্যন্ত করতেও দ্বিধা ছিলো না তার। নিজের অধিকার মনে করে প্রতারণা এবং মিথ্যা বলার উদাহরণও পাওয়া যাবে তার জীবনে। এই সবই আত্নপ্রেম নামক মনোরোগের লক্ষণ।
এর সাথে মুফতে যোগ হওয়া মৃগীরোগের কারণে দ্বীনের নবী দীর্ঘ, বিস্তারিত হ্যালুসিনেশনে ভুগতো। অবশ্য তার কাছে এগুলো ছিলো রহস্যময় স্বর্গীয় দর্শণ। তার স্বর্গীয় বাণী শোনা বা ফেরেশতা দেখার দাবী এক অর্থে মিথ্যা ছিলো না। সে মূলত বাস্তব এবং দিবাস্বপ্নের পার্থক্য করতে পারতো না।
মুহাম্মদের সম্ভবত আরেকটি মানসিক রোগ ছিলো বলে ধারণা করা যায়। মনোবিজ্ঞান এবং অপরাধবিজ্ঞানে একে বলা হয় Obsessive Compulsive Disorder. এর লক্ষণ হিসাবেই বিভিন্ন ম্যাজিক সংখ্যা নিয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি (৩ কুলি, ৭ পাক, ২৭ রমজান), উদ্ভট সব প্রথা (বিভিন্ন কাজের শুরুর দোয়া), এবং কঠোর নিয়মনীতি এইসব দেখা যাবে তার জীবনে। তার কঠোর জীবনযাপন এবং ইসলামের শত শত হাবিজাবি নিয়মকানুনের ব্যাখ্যাও এভাবে দেয়া যায়।
জীবনের শেষ দিকে মুহাম্মদের সম্ভবত আরেকটি রোগ হয় যার নাম Acromegaly. দেহবর্ধক হরমোনের অস্বাভাবিক উৎপাদনে এই রোগ হয় যার ফলস্বরুপ হাড় বড় হয়ে যাওয়া, ঠান্ডা এবং মাংশল হাত পা, বড় নাক ঠোঁট এইসব লক্ষণ দেখা যায়। সাধারণত Acromegaly রোগ শুরু হয় চল্লিশোর্ধ বয়সে এবং প্রথম ষাটের দিকে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ হয় এই রোগ। এই রোগ একদিকে ইরেকটাইল ডিসফাংশন (সময় মত লিঙ্গ উত্থিত না হওয়া ) তৈরী করে অন্যদিকে Temporal lobe (মস্থিষ্কের একটি অংশ) এর অতিরিক্ত কার্যকারীতার ফলে যৌনতাড়না বাড়ে। বৃদ্ধ বয়সে মুহাম্মদের খেয়ালি যৌনজীবনের ব্যাখা দেয়া যায় এভাবে এবং ধারণা করা যায় কেন জীবনের শেষ দিনগুলোতে তার ব্যাপক যৌন ইচ্ছা ছিলো। ইতিহাসে পাওয়া যায় মুহাম্মদ একরাতেই তার নয় বিবির ঘরে যেত। ধারণা করা যায় তৃপ্তি ছাড়াই। শেষ জীবনের যৌন-অক্ষমতা দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়, কেন মুহাম্মদ তার যুবতি বিবিদের নিয়ে ঈর্ষা, ভয় এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতো। অন্যরা যাতে তার বিবিদের উপর কাম-নজর দিতে না পারে সেজন্য সে তাদের পর্দার ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করে। আজকের দুনিয়ার কোটি কোটি নারীর বোরকা পড়ার পিছনের রহস্য লুকানো আছে মুহাম্মদের শেষ বয়সের যৌন-অক্ষমতার মধ্যে। ইসলামের অনেক উদ্ভট আচরণের ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে মুহাম্মদের অসুস্থতা বিশ্লেষণ করে।
উপরের এইসব মনোরোগ এবং অস্বাভাবিক বাহ্যিক চেহারা এই দুই মিলিয়ে মুহাম্মদ আর দশটা সাধারণ মানুষের চাইতে একেবারেই আলাদা। অবশ্য তার অশিক্ষিত মুরিদদের কাছে এই ভিন্নতা আসলে তার নবীত্বের প্রকাশ। আরসব পীরভক্ত মুরিদদের মতই তারা মুহাম্মদ এর অনুকরণে নিজেদের সর্বোচ্চ সাধনা করে। মৃত্যুকে পরোয়া না করে এবং প্রতিপক্ষকে কচুকাটা করে এখন তারা ইসলামকে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মে পরিণত করেছে। আর এটাই এখন পৃথিবীর সার্বিক শান্তি এবং মানব জাতির অস্ত্বিতের উপর সবচে বড় হুমকিতে পরিণত।
মুহাম্মদ কে জানা কেনো জরুরি ? কারণ এক বিলিয়নেরও বেশি লোক তার মত হতে চায় এবং সে যা করতো তা-ই করতে চায়। এক জনের পাগলামি এভাবে কোটি কোটি লোকের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লো। সুতরাং মুহাম্মদ কে বুঝার মাধ্যমেই সম্ভব এই কোটি কোটি লোকের আচরণ সম্পর্কে অনুমান করা ; ভবিষ্যতে কি নিয়ে তারা আবার উত্তাল হয়ে উঠবে সেই সম্পর্কে ধারণা কার।
সময় আসলে খুবই খারাপ এখন। খারাপ এবং বিপদজনক। মানবজাতির ২০% লোক যদি একটা মনোরোগীর পূজা করে, আত্নঘাতী বোমা হামলাকে মনে করে প্রশংশনীয় আর খুনাখুনিকে মনে করে ধার্মিকতার চূড়ান্ত অবস্থা তাহলে দুনিয়া খারাপ এবং বিপদসংকুল হতে বাধ্য। এরা যদি কোনদিন আণবিক বোমা হাতে পায় এই গ্রহ পরিণত হবে একটি ধূলোর কুন্ডলীতে।
ইসলাম মূলত পির ব্যবসা (cult)। এখনি সবার বুঝা উচিৎ যে এই ব্যবসা মানবজাতির জন্য বিরাট হুমকি এবং এই মুরিদদের সাধে মানবতার সহাবস্থান কোনভাবেই সম্ভব নয়। মুসলিমরা যতদিন মুহাম্মদ কে প্রশ্নহীনভাবে বিশ্বাস করে যাবে ততদিন তারা অন্যদের জন্য এমনকি তাদের নিজেদের জন্যও হুমকি হয়েই থাকবে। মুসলিমদের হয় তাদের ঘৃণার সংস্কৃতি ত্যাগ করে অবশিষ্ট মানবের সাথে মিশে যেতে হবে অথবা অন্যদের উচিত হবে মুসলিমদের আলাদা করে দেয়া, যাতে তারা অন্তত অন্যের ক্ষতি করতে না পারে। অমুসলিম দেশগুলোর উচিৎ ইসলামকে নিষিদ্ধ করা, মুসলিম অভিবাসীদের জায়গা না দেয়া এবং যারা তাদের সংস্কৃতিতে একাত্ন হতে অস্বীকার করে বা গণতন্ত্র ও সার্বজনীন বাক-স্বাধীনতার মত বিষয়গুলোকে অস্বীকার করে তাদের ধরে ধরে নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়া।
গণতন্ত্র আর ইসলামের বণিবনা সম্ভব নয়। এটা একটা যুদ্ধবাজ আদর্শ, গণতান্ত্রিক সুবিধা ব্যবহার করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার সিস্টেম , যার পরম উদ্দেশ্য হলো গোটা পৃথিবীতে ইসলামের একাধিপত্য কায়েম করা। এই বর্বর সিস্টেম এবং সভ্যতার সংঘর্য এড়িয়ে ধ্বংসের হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচানোর একমাত্র উপায় ইসলামের রহস্য মোচন করে এর কুরুপকথাগুলোকে প্রকাশ করে দেয়া। মানবজাতির শান্তিতে বসবাসের জন্য ইসলাম থেকে মুসলিমদের আলাদা হওয়াটা ভয়াবহভাবে জরুরী।
সে অর্থে মুহাম্মদকে বুঝা মুসলিম এবং অমুসলিম দুই পক্ষের জন্যই দরকারী। এই বইয়ের উদ্দেশ্য সেই বুঝাকে সহজ করে দেয়া।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার
এই বই লিখতে গিয়ে অনেকের সাহায্য নিতে হয়েছে যাদের সবার কাছে আমি ঋণী। আমার ইংরেজির সংশোধন এবং মূল্যবার সমালোচনার মাধ্যমে সাহায্য করেছেন তারা। দুর্ভাগ্যের বিষয় তাদের নাম উল্লেখ করা সম্ভব নয়। কারণ নামোল্লেখ তাদের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলবে। আবার বেশিরভাগের নাম আমি জানিও না। এইসব নাম না জানা সহযোদ্ধাদের কাছে আমি ব্যাপকভাবে ঋণী।
বইটি লেখার সময় বের করতে পেরেছি কিছু চমৎকার বন্ধুদের কারণে, যারা ফেইথফ্রিডম ডট অর্গের পরিচালনা, সম্পাদনা এবং ফোরামগুলোর মডারেশনের দায়িত্ব নিয়ে আমাকে ভারমুক্ত থাকতে দিয়েছিলেন। তাদের সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
ইসলামি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালিত হচ্ছে নাম না জানা, প্রশংসা না পাওয়া বীরদের দ্বারাই। এরা তাদের সময় এবং মেধা ক্রমাগত ব্যায় করে যাচ্ছেন ইসলামের বিপদ সম্পর্কে পৃথিবীকে অবহিত করার জন্য। পরিণামের আকাঙ্খা বা সুনাম এর কোনটাই তারা চান না।
আলি সিনা
এপ্রিল ২০০৮
ইবনে ওয়ারাক কর্তৃক মুখবন্ধ
ডক্টর আলি সিনার জন্ম ইরানে। তার কিছু আত্নীয় আছেন যারা আয়াতুল্লাহ হিসাবে পরিচিত। গড়পড়তা শিক্ষিত ইরানির মতই আলি বিশ্বাস করতেন ইসলাম একটি মানবতাবাদী ধর্ম। কিন্তু তার সৌভাগ্য যে এই বিশ্বাসের সাথে সাথে তার ছিলো একটি কৌতুহলী প্রশ্নশীল মানস। যৌক্তিক চেতনার অধিকারী এই ব্যক্তি নিরলসভাবে প্রশ্ন করে গেছেন নিরীক্ষা করে গেছেন প্রমাণের জন্য। ধীরে ধীরে ইসলামের আসল রুপ নিয়ে যে উপলব্ধিতে তিনি পৌঁছুলেন তা কেবল তাকে নৈতিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে জর্জরিতই করেনি, বরং ১১ই সেপ্টেম্বর ২০০১ এর আরো অনেক আগেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন কেউ যদি ইসলামের এই আসল রুপ নিয়ে এখনি সবাইকে সতর্ক করার দায়িত্ব না নেয় তাহলে ভবিতব্যের ভয়াবহতা ঠেকানো অসম্ভব। যে ধর্মের মধ্যে তার জন্ম যে বিশ্বাস এবং চিন্তা কাঠামোর মধ্যে তার বেড়ে উঠা তা কেবল পাশ্চাত্য মূল্যবোধের সাথেই সাংঘর্ষিক নয় বরং গোটা সভ্যতার জন্যই হুমকি। জীবন বদলে দেয়া এই সত্য, তার জন্মধর্মের বর্বরতা উপলব্ধির পর থেকে আলি তার গোটা জীবন উৎসর্গ করেছেন ইসলামের আলোচনা-সমালোচনা এবং এর কদর্য সত্যগুলোকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার জন্য। এ সবই চলে তার বিখ্যাত ওয়েবসাইট ফেইথ ফ্রিডম ইন্টারন্যাশনাল এর মাধ্যমে।
পশ্চিমা বিশ্ব ইসলাম ত্যাগী এইসব বিপ্লবীদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারে , সমাজতন্ত্র ত্যাগী বিপ্লবীদের কাজে লাগানো হয়েছিলো যেভাবে।
আমার নিজের বই “Leaving Islam” এ যেমন বলেছি, সমাজতান্ত্র এবং ইসলামের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সাদৃশ্য দেখা যায়। Maxim Rodinson এবং Bertrand Russell এরকম কিছু সাদৃশ্যের কথা বলেছিলেন বিংশ শতাব্দীর ত্রিশের দশকের সমাজতান্ত্রীক এবং আশির দশক ও একবিংশ শতকের প্রথম দিককার ইসলামপন্থীদের ব্যাপারে। রাসেল বলেন, “ধর্মগুলোর মধ্যে বলশেভিজম কে দেখতে হবে মুহাম্মদ িজমের সাথে মিলিয়ে , খ্রিস্টীয় বা বৌদ্ধ ধর্মের সাথে নয়। খ্রিস্টান এবং বৌদ্ধ ধর্ম মূলত ব্যক্তিগত দর্শণ। এদের বৈশিষ্ট্য রহস্যময় আচার এবং কল্পণাবিলাস। মুহাম্মদ িজম হলো ব্যবহারিক, সামাজিক এবং আধ্যাত্নিকতাহীন , যার চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হলো দুনিয়া জয়। ” বর্তমান দুনিয়ার অবস্থা এবং ত্রিশের সমাজতান্ত্রিক সাম্রাজ্যবাদের সাথে তার ভয়জাগানিয়া সাদৃশ্য এজন্যই গুরুত্বপূর্ণ। Kolster যেমন বলেছিলেন “ তোমরা আমাদের স্বজাতি বিরোধীতাকে ঘৃণা কর , বন্ধু হিসাবে স্বীকার করতে লজ্জা কর অথচ সবার সব কথা শুনার পরেও, কেবল আমরা প্রাক্তন সমাজতন্ত্রীরাই জানি আসল ঘটনা ” Crossman তার ভূমিকায় যেমন বলেছিলেন “Silone (এক প্রাক্তন-সমাজতন্ত্রী) আসলে কেবল মজা করছিলো যখন সে Togliatti কে বলছিলো যে আসল যুদ্ধ হবে সমাজতন্ত্র আর গণতন্ত্রের মধ্যে নয় বরং সমাজতন্ত্রপন্থী এবং প্রাক্তন সমাজতন্ত্রপন্থীদের মধ্যে। কিন্তু সমাজতন্ত্রের সাথে দার্শনিক এবং রাজনৈতিক বিরোধীতা যারা কখনো করেনি তারা কোনদিনই পশ্চিম-উদ্ভুত গণতন্ত্রের মর্যাদা বুঝবে না। শয়তান এক সময় স্বর্গেই থাকতো, যারা কোনদিন শয়তানকে দেখে নাই তারা ফেরেশতা দেখলে আলাদা করতে পারবে না ”
অন্তত সাময়িক হলেও, সমাজতন্ত্র এখন পরাজিত, কিন্তু ইসলামিজম না , এবং সম্ভবত অন্তিম যুদ্ধ হবে ইসলামিজম এবং পাশ্চাত্য গণতন্ত্রের মধ্যে। Kolster এর কথার সাথে মিলিয়ে বলতে হয়, এই প্রাক্তন-মুসলিমরাই কেবল জানে আসল ঘটনা কি, আর আমাদের সবারই উচিৎ এইসব স্বজাতিত্যাগীদের পুরো কাহিনী মনোযোগ দিয়ে শোনা। ভালো ছাড়া খারাপ কিছু হবে না এতে। আমরা যারা স্বাধীনভাবে পাশ্চাত্যে বাস করি আর বৈজ্ঞানিকি নিরীক্ষা , বাক-স্বাধীনতার সুবিধা ভোগ করি তাদের উচিৎ ইসলামের যৌক্তিক বিশ্লেষণ এবং কুরআন-সমালোচনাকে উৎসাহিত করা। কুরআনেরই সমালোচনার মাধ্যমেই মুসলিমরা পারবে তাদের পবিত্র কিতাবকে যৌক্তিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে। এর দ্বারাই সম্ভব কুরআনের মধ্যকার জংগি আয়াতগুলোর কুপ্রভাবে তরুণ মুসলিমদের জংগীবাদে উদ্বুদ্ধ হওয়াকে ঠেকানো। পশ্চিমের সকল বাসিন্দার নাগরিক দায়িত্ব ইসলামকে যৌক্তিকভাবে বুঝা। কিন্তু এই কাজে যদি কেবল বড় বড় লাইব্রেরিগুলাতে পাওয়া বই ব্যবহার করা হয় তাহলে পাওয়া যাবে কেবল মোচনবাদী প্রতারকদের(Apologist) কথাবার্তা। ডক্টর সিনা এবং তার বন্ধুদের করা চমৎকার তথ্যপূর্ণ এবং নিরলসভাবে যুক্তি-পাল্টাযুক্তির ঘাত-প্রতিঘাতে সিদ্ধ ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া যাবে ইসলামের ন্যায্য এবং সত্য রুপ। ইসলাম শান্তির ধর্ম এইজাতীয় ভাঙা রেকর্ডের বাজনায় যারা এখনো নিজের যুক্তিবুদ্ধি হারান নি, তাদের সকলকে আমি অনুরোধ করবো এই বইটি গুরুত্বের সাথে পড়ার জন্য। আলির এইসব কাজের ফলে এখন আর ইসলামের ব্যাপারে অন্ধকারে থাকার কোন অজুহাত খাটবে না , যাকিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং জীবনের বিনিময়েও রক্ষা করতে প্রস্তুত আমরা সেইসব মূল্যবোধের ধ্বংসের বীজ লুকায়িত যার মধ্যে।
লেখক পরিচিতি
আলি সিনার একজন ইরানি বংশোদ্ভুত কানাডিয়ান। আলি তার শান্তিময় ইসলামের শিক্ষা পান ইরানে , ইসলামি বিপ্লবের আগে যখন ইরান ছিলো ধর্মনিরপেক্ষ। যদিও ইসলামের পুনুরুত্থানের সম্ভাবনা ভিতরে ভিতরে পোক্ত হচ্ছিলো কিন্তু তখনো উঠে আসে নি। সেই সময় খুব অল্প লোকই ইসলামের আসল চেহারা চিনতো। ইরানের ইসলামি বিপ্লবের আগে নিজের মধ্য কৈশোরে আলি উচ্চশিক্ষার্থে ইউরোপে পাড়ি জমান। সেখানে শিক্ষা পান বাক-স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক দর্শণ সম্পর্কে। মুসলিম মানসে গণন্ত্র একটি অজ্ঞাত ধারণা, এতটাই অজ্ঞাত যে আরবী এবং মুসলিমদের ব্যবহৃত আরো অনেক ভাষাতেই Democracy শব্দটির কোন যুৎসই প্রতিশব্দ নেই। শব্দই যেহেতু নেই ধারণা করা যায় এটা সম্পর্কে তারা বুঝেও না ভালোভাবে। মুসলিম মানসে সকল ক্ষমতার মালিক আল্লাহ। জনগণকে ক্ষমতার উৎস বলা শিরকের শামিল।
পশ্চিমা দর্শণ পাঠে এবং এই দর্শণ কিভাবে ইউরোপের Enlightenment যুগের সূচনা করেছিলো তা বুঝার পরে আলি উপলব্ধি করেন মুসলিম সমাজের দুর্দশার মূলে রয়েছে তাদের চিন্তার পরাধীনতা। তবে শেষ পর্যন্ত কুরআনের আদ্যোপান্ত পাঠে তিনি বুঝতে পারেন মুসলিম দুর্দশার গভীরতর কারণ হচ্ছে ইসলাম নিজেই।
আলি বলেন, কুরআন পড়ে আমি পুরাই হতভম্ব হয়ে যাই। দেখি যে, কুরআন ভরা নৃশংসতা, ঘৃণা, ভুল, বৈজ্ঞানিক অসামঞ্জস্য, গাণিতিক ভুল, কুযুক্তি, ব্যাকরণগত অনিয়ম আর সন্দেহজনক নৈতিকতায়। অস্বীকার, পাপবোধ, স্বিদ্ধান্তহীনতা, ঘোর কেটে যাওয়া, রাগ এবং হতাশা এইসব পর্যায় পেরিয়ে আমি শেষপর্যন্ত নিজের পাওয়া স্বিদ্ধান্ত মেনে নিই যে কুরআন কোন ঐশ্বরিক বাণী নয়। এর অলৌকিকত্ব কেবল গুজবের বেশি কিছু নয় এবং কোন অসুস্থ মস্তিষ্কের কল্পণা এই বইটি। এ ছিলো গভীর ব্যঞ্জনার কোন অনুভূতি থেকে জেগে উঠে দেখা যে সবই ছিলো স্বপ্ন, এইরকম। আরো পড়াশোনার পরে তিনি স্থিরস্বিদ্ধান্তে পৌঁছান যে মুসলিম বিশ্বের খারাপির মূলে আছে ইসলাম এবং এই ধর্ম মানবতার জন্য একিটি বড় হুমকি। তখনি তিনি জিহাদের বিপরীতে তার পাল্টা-জিহাদ চালানোর স্বিদ্ধান্ত নেন। তার বিশ্বাস ইসলামে সংস্কার সম্ভব নয়, কাঁচের মত একে নোয়ানো সম্ভব নয় তবে ভেঙে ফেলা সম্ভব। তিনি বলেন, “ইসলাম হচ্ছে তাসের ঘরের মত, এই ঘর ভাঙার জন্য শুধু যেইসব মিথ্যার উপর ভিত্তি করে ঘরটা দাঁড়িয়ে আছে সেগুলোকে মোকাবেলা করলেই চলবে। চোরাবালির উপর দাঁড়ানো বিশাল বিল্ডিং এর মতই, ভিত প্রকাশ করে দিলে নিজের ভারেই এটা ধ্বংস হয়ে যাবে।” ইসলামের ভবিষ্যত কি ? এই প্রশ্নের জবাবে সিনা বলেন, এটা তার জায়গায় ফিরে যাবে, ইতিহাসের আস্তাকুঁড়।
আলি মনে করেন আর মাত্র কয়েক দশকের মধ্যেই ইসলাম একটা সামান্য দুঃস্বপ্নের মতই ফিকে হয়ে আসবে আমাদের স্মৃতিতে এবং আমাদের জীবদ্দশাতেই ঘটবে এই ঘটনা। আলি বলেন, “স্বীকার করতে আপত্তি নেই, এই ভবিষ্যতবাণী নিয়ে আমি অনেক দ্বিধায় ভুগেছি, কারণ ভালো করেই জানি অনেকেই এটাকে অবাস্তব এমনকি অতিকল্পণা বলে হেসে উড়িয়ে দেবে। কিন্তু যতি ভাবি ততই আমার মনে হচ্ছে এটাই ঠিক। আজকাল আরো অনেকেই ইসলামের অবশ্যাম্ভাবী মৃত্যু দেখতে পায় সামনে। ইসলামের যেসব সমালোচনা আগে লুকিয়ে চুরিয়ে করতে হতো তা এখন দুনিয়ার সবাই শুনতে পাচ্ছে। আর এইসব সমালোচনা কেবল অমুসলিমদের মধ্যে থেকেই নয় বরং জন্মসূত্রে মুসলিমদের ভিতর থেকেও আসছে। দিন দিন এটাও পরিষ্কার যে মুসলিমরা বা কে কিভাবে ইসলামের ব্যাখ্যা দিলো সেসব কোন সমস্যা নয়, বরং ইসলাম জিনিসটাই সমস্যার গোড়া। ”
আলির বিশ্বাস ইসলামের প্রথম ভুক্তভোগী মুসলিমরা নিজেরাই। “ আমার উদ্দেশ্য শুধু ইসলামের বিপদ সম্পর্কে সবাইকে জানানো নয় বরং মুসলিমদের এথেকে উদ্ধার করাও। আমি তাদের রক্ষা করতে নিজেকে ও দুনিয়াকে ধ্বংস করার পথ থেকে। উদ্ধার করতে চাই ইসলাম নামের মিথ্যার জাল থেকে। তাদের বুঝাতে চাই গোটা মানবজাতি একটা পরিবারের মত, চাই তারা বোধ-বুদ্ধির পথে , মানবতার পথে আসুক, শান্তি এবং উন্নতির জীবনে আসুক। আমি মানবজাতির একাত্ব চাই, নতুন কোন মতবাদ দিয়ে নয় , বরং মানুষের মাঝে ঘৃণার বিষ ছড়ানো প্রধান মতবাদটিকে নগ্ন করে দিয়ে, ধ্বংস করে দিয়ে।”
কোটি কোটি মানুষ ফেইথফ্রিডম ডট অর্গের লেখাগুলোর পাঠক। ইসলাম নিয়ে বিপদটা কি এবং কেন কিছু মুসলিম এত বেশি ঘৃণা এবং বর্বরতা পোষণ করে নিজেদের ভিতর এইসব নিয়ে যারা ভাবে তাদের মিলনস্থলে পরিণত হয়েছে এই ওয়েবসাইট। ফেইথ ফ্রিডম ইন্টারন্যাশনাল পরিণত হয়েছে প্রাক্তন-মুসলিমদের তৃণমূল আন্দোলনে। এর উদ্দেশ্য ইসলামের মুখোশ খুলে দিয়ে দেখানো যে নাযিবাদের মতই ইসলাম মূলত ধর্মের খোলসে লুকানো একটি সাম্রাজ্যবাদী মতবাদ এবং মুসলিমদের ইসলাম ত্যাগে সাহায্য করা যাতে তারা তাদের “আমরা” ও “অন্যরা” এই দুইয়ের মধ্যে বিভাজন আর ঘৃণার মূল্যবোধ ত্যাগ করে পুরো মানবজাতির সাথে সৌহার্দের সাথে যোগ দিতে পারে। এ এক নিরব বিশ্বব্যাপী বিপ্লব। প্রতিদিন অনেক নতুন ইসলাম-ত্যাগী বের হয়ে আসছে যারা আবার একই সাথে এই আন্দোলনের সহযোদ্ধাতে পরিণত হচ্ছে। এদের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। সামান্য জলধারা এখন বিশাল স্রোতে পরিণত। আলির ভাষায়, “এ এক চমৎকার যুদ্ধ, যেখানে পরাজয়ের পর শত্রু হয়ে উঠে বন্ধু এবং প্রধান মিত্র।”
আলি সিনা একজন ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদী এবং একক ফেডারেল বিশ্ব ব্যবস্থার সমর্থক।
সূচনা
৯/১১ আক্রমণের পর এক পাগলপ্রায় আমেরিকার মা আমাকে তার দুঃখের কাহিনী বলছিলেন, যে তার ২৩ বছর বয়সী ছেলে ১৪ বছর বয়সের সময় ইসলামে দীক্ষা নিয়েছে। বিয়ে করেছে এক অদেখা মুসলিম মেয়েকে , তার ঈমামের আয়োজনে। এখন এই এক বাচ্চার বাবা বলছে আফগানিস্থানে গিয়ে তালেবানদের পক্ষে যুদ্ধ করে শহিদ হতে চায়। বছর কয়েক আগে সে বলেছিলো ইসলামি হুকুমত কায়েম হয়ে গেলে যদি সব কাফেরদের হত্যার নির্দেশ আসে তাহলে সে নিজের মা’কে খুন করতেও বিন্দুমাত্র দ্বিধা করবে না
***
শিক্ষিত বুদ্ধিদীপ্ত ২৫ বছর বয়েসি, পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত সাইমা নাযির ছুরিকাঘাতে খুন হন নিজ পরিবারের লোকদের দ্বারা। পিত্রালয়ে নিজের ৩০ বছর বয়েসি ভাই আর ১৭ বছর বয়েসি কাজিন তার গলায় ছুরি চালায়। অনেকের বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে নিজের পছন্দমত এক নিচু বংশের আফগানকে ভালোবেসে পরিবারের সম্মানে কালিমা দেয়া ছিলো তার অপরাধ(!)। ২০০৫ এর এপ্রিলে বাড়িতে(পাকিস্তানে) ডেকে নিয়ে পরিবারের সদস্যরা মিলেই এই কাজ ঘটায়। এক প্রতিবেশি তাকে পালানোর চেষ্টা করতে দেখেন, কিন্তু চুলের মুঠি ধরে ঘরে টেনে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয় তার নিজ পিতা। “তুমি আর আমার মা নও” এই চিৎকার শুনে সেই প্রতিবেশি ধারণা করেন যে এই কুকর্মে মেয়েটির মা’ও জড়িত ছিলো। তার ২ এবং ৪ বছর বয়েসি ভাতিজিদেরও এই ঘটনা দেখতে বাধ্য করা হয়। বাচ্চাদের শরীরে রক্তের পরিমাণ দেখে ধারণা করা যায় তাদের মাত্র কয়েকফুট দূরত্বের মধেই ঘটে এই বর্বর হত্যাকান্ড। এই পরিবার ছিলো স্বচ্ছল এবং উচ্চশিক্ষিত।
***
মুহাম্মদ আলি আল আয়াদ নামে ২৩ বছর বয়স্ক এক ছৌদি কোটিপতির আমেরিকা নিবাসী ছেলে ২০০৩ এর অগাস্টের এক সন্ধ্যায় তার মরক্কান ইহুদি বন্ধু সেলুক কে দেখা করার জন্য ডেকে আনে। দুজনে বারে মদ খেয়ে মধ্যরাতে আলি আল আয়াদের এপার্টমেন্টে ফিরে আসে। সেখানে আলি আয়াদ ছুরি নিয়ে আক্রমণ করে তার ইহুদি বন্ধুকে এবং ধড় থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলে তার মাথা। পুলিশের কাছে জবানবন্দিতে আলি আয়াদের রুমমেট বর্ণনা করে হত্যার আগে দুজনের মধ্যে কোন তর্ক বিতর্ক হয়নি। আয়াদের আইনজীবি এই ঠান্ডা মাথার খুনের কারণ হিসাবে বলেন, “ধর্মীয় মতপার্থক্য”
***
ইউনিভার্সিটি অফ নর্থ ক্যারোলাইনা থেকে পাশ করা ২৫ বছর বয়েসি মুহাম্মদ তাহেরি আযার। ২০০৬ এর মার্চে এক দিনে সে একটি এস ইউ ভি ভাড়া করে ধীরে ধীরে ক্যাম্পাসে ঢুকে। তারপর আচমকা গতি বাড়িয়ে গাড়িটিকে নিয়ে যায় ছাত্র-ছাত্রীদের ভিড়ের মধ্যে। উদ্দেশ্য যত বেশি পারা যায় খুন করা। থামার আগে সে নয়জনকে আঘাত করে যার মধ্যে ছয়জন আহত হয়।
***
করাচি নিবাসী হিন্দু দম্পতি সানাও মেনঘোয়ার এবং তার স্ত্রী একদিন সন্ধ্যায় কাজ থেকে ফিরে দেখেন তার তিন মেয়ে বাড়িতে নেই। ২০০৫ এর নভেম্বরের ঘটনা। দুইদিন পাগলের মত খোঁজার পরে তারা জানতে পারেন তাদের তিন কন্যাকে অপহরণের পর জোরপূর্বক ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। পুলিশ তিন মুসলিম তরুণকে অপরাধের সাথে যুক্ত থাকার সন্দেহে গ্রেপ্তার করে, কিন্তু অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার কারণে তারা জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়। মেনঘোয়ার দম্পতির মেয়েরা এখনো নিখোজ।
করাচির এক হিন্দু বাসিন্দা লালজি বলেন, “ হিন্দু মেয়েদের এই ধরণের অপহরণ এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপহরণের পর তারা ইসলামে দীক্ষা নিয়েছে এই মর্মে স্ট্যাম্প কাগজে জোরপূর্বক সই নেয়া হয় তাদের কাছ থেকে। ” তিনি আরো বলেন হিন্দুরা এমনকি তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করতেও ভয় পায়, নির্যাতনের ভয়।
পাকিস্তানের অনেক হিন্দু মেয়ের ভাগ্যেই এইসব জোটে। অপহরণের পর জোরপূর্বক ইসলামে ধর্মান্তর এবং তার পর কোন মুসলিম পুরুষের সাথে বিয়ে দেয়া হয় এদের। বাবা মায়ের সাথে দেখা করতে দেয়া হয় না আর। “ মুসলিম আওরাত কেন কাফিরদের সাথে থাকবে বা যোগাযোগ রাখবে ?” প্রশ্ন মৌলভি আযিযের। এই ধরণের আরেকটি ঘটনায় আদালতে অপহরণকারীর পক্ষে বলতে গিয়ে এই প্রশ্ন রাখেন মৌলভি।
কোন হিন্দু মেয়ের ধর্মান্তরের খবরে শত শত লোক ধর্মীয় শ্লোগান দিতে রাস্তায় নেমে আসে। কতৃপক্ষের বধির কানে বাবা মায়ের কান্নার শব্দ যায় না। এইসব অভাগীদের এরপর হুমকির উপর রাখা হয় যে ইসলাম ত্যাগ করলে তাদের মুরতাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড ভোগ করতে হবে। প্রায়ি আইনজীবিরা মৌলবাদীদের হামলার ভয়ে এই ধরণের মামলা লড়তে চান না।
***
২০০৫ এর অক্টোবরে তিন খ্রিস্টান মেয়ে কোকোয়া ক্ষেতের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ইসলামি মৌলবাদীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়। এরা ছিলো একটি খ্রিস্টান প্রাইভেট স্কুলের ছাত্রী। মুসলিমদের এক দল এদের আক্রমণ এবং শিরোচ্ছেদ করে। পুলিশ তাদের ধড় এবং মাথা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় খুঁজে পায়। একটি মাথা রেখে আসা হয়েছিলো চার্চের আঙিনায়। মুসলিম মৌলবাদীদের লক্ষ্য সুলাওয়াসি প্রদেশ। তাদের ধারণা সেখান থেকে শুরু করেই তারা পুরো ইন্দোনেশিয়াব্যাপী ইসলামি হুকুমত কায়েম করতে পারবে। ২০০১ এবং ২০০২ সালে এ প্রদেশে মুসলিম মৌলবাদীরা একযোগে খ্রিস্টানদের উপর হামলা চালায়। গোটা ইন্দোনেশিয়া থেকে মুসলিমরা জড়ো হয় এই উদ্দেশ্য। দুবছরে তারা হত্যা করে প্রায় ১০০০ খ্রিস্টানকে।
***
Muriel Degauque ৩৮ বছর বয়েসি বেলজিয়ান নারী। ছোটকাল থেকে তাকে চিনতেন এমন এক প্রতিবেশির বর্ণনায় খুব সাধারণ মেয়ে। শীতে তুষার পড়া শুরু হলে স্লেজ চড়তে যেতো। এই নারী এক মুসলিমকে বিয়ে করে ইসলাম ধর্মে দীক্ষা নেয়। পরবর্তীতে সে তার স্বামীর সাথে সিরিয়া হয়ে ইরাকে চলে যায়। সেখানে গায়ে বোমা বেঁধে ইরাকি পুলিশের প্যাট্রোল বহরের উপর আত্নঘাতী হামলা চালায় সে। হামলায় ৫ জন পুলিশ তৎক্ষণাৎ নিহত হন। গুরুতর আহত হন আরো একজন পুলিশ অফিসার এবং চারজন সাধারণ পথচারী।
*****
এই হামলাগুলো সবই অস্বাভাবিক পাগলামি। কিন্তু যারা ঘটিয়েছে এইসব তাদের কেউই পাগল ছিলো না। এরা সবাই “পুরোপুরি স্বাভাবিক” মানুষই ছিলো। এইসব ঘৃনিত কাজে কিসে তাদের উদ্বুদ্ধ করেছিলো ? উত্তর হলো ইসলাম। ইসলামি বিশ্বে এইসব নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। মুসলিমরা সর্বত্রই কে কি বিশ্বাস করলো এই নিয়ে খুন খারাবিতে ব্যস্ত।
কেন ? কেন সুস্থ্য স্বাভাবিক মানূষ এমন পৈশাচিক কাজ করে ? কেন জাতি হিসাবে মুসলিমরা অন্যদের উপর এতই চ্যাতা আর গোটা দুনিয়ার সাথে এতই শত্রুমনস্কতা পোষণ করে যে খুব সহজেই এরা সহিংসতার পথ বেছে নেয় ? মুহাম্মদ কে নিয়ে সামান্য কোন কথা বললেই দুনিয়ার মুসলিমরা সর্বত্র দাঙা হাঙামা আর সাধারণ মানুষের উপর হত্যাযজ্ঞে নেমে যায়। এইসব কোন সুস্থ্য স্বাভাবিক মানুষের কাজ হতে পারে না। কিন্তু এই কাজগুলো যারা করছে তারা সবাই সুস্থ্য স্বাভাবিক মানুষ। এই রহস্যের সমাধান কি ?
এ রহস্য বুঝতে হলে আমাদের আগে বুঝতে হবে যে মুসলিমরা মুহাম্মদের মত হতে এবং তার মত চিন্তা করতে চায়। যার ফলে তাদের অভিব্যক্তি, বিশ্বাস , চিন্তা এবং কার্যকলাপে মূলত মুহাম্মদের ব্যাক্তিত্ব এবং মানসিকতার প্রতিফলন ঘটে। ইসলামে যেহেতু মুহাম্মদ ই হচ্ছে ন্যায়নীতির মাপকাঠি, এটাই স্বাভাবিক যে তার অনুসারীরা ন্যায়নীতিবান হবার জন্য তাকে সরাসরি অনুকরণ করবে। ফলাফল, মুসলিম জাতি মুহাম্মদের খোলসে নিজেকে সাজাতে গিয়ে নিজেদের ভুলে যায়। মানবজাতির অন্যদের থেকে দূরে সরে যায় এবং নিজেদের স্বকীয়তার বিশাল অংশই হারিয়ে ফেলে। মুহাম্মদের আত্নপ্রেমী ফানুসের জগতে বাস করতে করতে , তার অনুকরণ করতে করতে একেকজন হয়ে উঠে মুহাম্মদেরই একেকটি বর্ধিতাংশ। ইসলাম নামের গাছের কুঁড়ি হলো মুসলিমরা যার মূল হলো মুহাম্মদ । তাদের চরিত্র, অভিব্যক্তি, চিন্তাধারা সবই মুহাম্মদের মত। বলতে গেলে সব মূসলিম আসলে মুহাম্মদের একটি ক্ষুদ্র রুপের মত। তাদের কাছে সে হচ্ছে সৃষ্টির সেরা, নিখুঁত মানব আর সর্বোচ্চ অনুকরণীয় আদর্শ। তাদের বিশ্বাস মুহাম্মদ যদি কিছু করে থাকে, সেটা যতই শোচনীয় হোক না কেন, তা-ই সঠিক। কোন প্রশ্ন নাই এবং কোনপ্রকার বাছবিচার চলবে না এইক্ষেত্রে।
আলোচনার বিষয় হিসাবে মুহাম্মদ কে এড়িয়ে চলতে চায় বেশিরভাগ মানুষ। নবীর সামান্য অসম্মানে মুসলিমরা ক্ষুব্দ হয়ে উঠে। যেকোন মন্তব্য সেটা যতই তুচ্ছ হোক না কেন ডেকে আনতে পারে ভয়াবহ বিক্ষোভ। যদিও মুহাম্মদের অনুসারীদের সমালোচনায় মুসলিমরা তেমন কিছু মনে করে না, কিন্তু মুহাম্মদের নিজের কোন সমালোচনা তারা সহ্য করে না। এমনকি আল্লাহর সমালোচনা করেও পার পেয়ে যাওয়া সম্ভব কিন্তু মুহাম্মদের সমালোচনা করে সম্ভব নয়।
মৃত্যুর শত শত বছর পরে কারো মানসিক অবস্থার পুরোপুরি বিস্তারিত বর্ণনা তৈরী করা অসম্ভব। তবে আমার উদ্দেশ্য এখানে প্রেসক্রিপশন দেয়া নয়, বরং দ্বীনের নবিকে গভীরভাবে বুঝা। মুহাম্মদের জীবন ও বাণী নিয়ে বিস্তারিতভাবে সংকলিত প্রচুর পরিমাণ তথ্য আছে। এইসব বর্ণনার বেশিরভাগই ফুলানো ফাঁপানো এবং অতিরঞ্জিত। বিশ্বাসীরা তাদের নবীকে নিয়ে অতিরঞ্জিত গালগল্প ছড়াবে, মোজেজার কাহিনী বানাবে, তাকে সাধু সন্তের পর্যায়ে নিয়ে যাবে এই-ই স্বাভাবিক। তবে, মুহাম্মদের জীবনে আমরা এমন কিছু বর্ণনা পাই যেগুলো থেকে তার পবিত্র ছবির বদলে বরং হিংস্র, বেপরোয়া, ধূর্ত এমনকি যৌনবিকৃত একজনের ছবিই ভেসে আসে। নিজেদের নবীর নামে মিথ্যা অপবাদ দেয়ার কোন কারণ নেই বিশ্বাসীদের। যারা তার সাথী ছিলো যারা তাকে পছন্দ করতো তাদের কাছ থেকেই যেহেতু এই ধরণের তথ্য আছে বিপুল পরিমাণে, অতএব এই ধরণের বর্ণনাগুলো সত্য হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি।
যেসব হাদিস বিভিন্ন জনের জবানীতে বার বার এসেছে সেগুলোকে বলা হয় “মুতাওয়াত্তির”। এই হাদিসগুলো নানান জবানীতে অনেকগুলো সূত্র থেকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এসেছে। বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন অঞ্চল এবং মানসিকতার এতগুলো লোক একত্র হয়ে কিছু মিথ্যা বানিয়ে নবীর নামে ছড়াবে একথা অনেকটাই অসম্ভব।
এই গল্পগুলো যেগুলোকে হাদিস বলা হয় এবং মুসলিমদের বিশ্বাস অনুযায়ী আল্লাহর পরম বাণী কুরআনের সাহায্যে আমরা চেষ্টা করবো মুহাম্মদের মনের ভিতরে ঊঁকি দেয়ার জন্য আর বুঝার চেষ্টা করবে সে যা করেছিলো তা কেনো করেছিলো। বেশ কিছু মনোবিজ্ঞানী এবং মনোচিকিৎসকের মতামত ও তত্ব উপস্থাপন করে আমি সেগুলোর সাথে মুহাম্মদ যা যা করেছিলো তার যোগসূত্র মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করবো। যেসব বিশেষজ্ঞের কথা আমি ব্যাবহার করতে যাচ্ছি এরা সবাই দক্ষ এবং পেশাদার মনোসমীক্ষক। তাদের বর্ণনার বেশিরভাগ অংশই এখন সাধারণ জ্ঞান বলে বিবেচিত এবং এই পেশার বেশীরভাগ বিশেষজ্ঞই এসব তত্ব ও মতামতের সাথে সম্মত।
এই বই যতটা না ১৪০০ বছর আগের একজন মানূষের মনোসমীক্ষণের চেষ্টা , তার চাইতে বেশি হলো তার রহস্য উম্মোচনের চেষ্টা। যারা মুহাম্মদের গালগল্পে বিশ্বাস করে সেগুলোকে যৌক্তিকভাবে যাচাই করতে চায় না তাদের কাছে মুহাম্মদ এক বিশাল হেঁয়ালির নাম। তার কাজকারবার খুবেকটা সুবিধার ছিলো না কিন্তু যতটুকু বুঝা যায় তা থেকে মনে হয় সে নিজে তার যৌক্তিকতায় সৎভাবেই বিশ্বাস করতো। এত বিদ্বেষপূর্ণ, বেপরোয়া আর এবং বিবেকবর্জিত একজন মানুষ কিভাবে শুধু তার সঙীসাথীরা নয় বরং শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে কোটি কোটি মানুষকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখতে পারে।
মিখায়েল হার্ট তার “পৃথিবীর ইতিহাসে সবচে প্রভাবশালী ১০০ জন” বইয়ে মুহাম্মদ কে রেখেছেন সবার প্রথমে। তার পরে ছিলেন আইজাক নিউটন, জেসাস, গৌতম বুদ্ধ, কনফুসিয়াস, সেইন্ট পল প্রমুখ। হার্টের বইয়ে অবশ্য এই প্রভাবশালীদের প্রভাব কি সুপ্রভাব না কুপ্রভাব এই বিষয়ে কোন বাছবিছার নেই। কারণ তার তালিকায় অনেক অত্যাচারীর নাম ও আছে, যেমন, এডলফ হিটলার, জোসেফ স্তালিন, মাও সে তুং। এই তালিকায় এমনকি নিকোলো ম্যাকিয়াভ্যালির নামও আছে। কিভাবে মুহাম্মদের মত এমন মানবতা-বিবর্জিত একজন পৃথিবীর ইতিহাসের সবচে প্রভাবশালী ব্যক্তি হয় ? এই বইয়ে আমরা দেখবো কিভাবে এই প্রশ্নের উত্তর মূলত মুহাম্মদ কি ছিলো তার চাইতে মানব মনের কার্যপ্রণালী কেমন তার উপর বেশি নির্ভর করে।
ইসলামের মত আর কোন মতবাদ নিয়ে এত বেশি রক্তপাত হয় নি। কিছু কিছু ঐতিহাসিকের মতে ইসলামের তরবারী দিয়ে কেবল ভারতবর্ষেই গণহত্যার স্বীকার হন ৮ কোটি মানুষ। এছাড়াও পারস্য , মিশর এবং আরো যেসব দেশে লুটতরাজ মুসলিমরা হামলা চালিয়েছিলো সেখানেও হত্যার স্বীকার হন কোটি কোটি মানুষ। ইসলাম যখন ঐসব দেশে প্রথম প্রবেশ করে তখনও এবং তার শত শত বছর পরেও। এই রক্তপাত এখনো থামেনি।
মুসলিমরা মাঝে মাঝে গাল বড় করে বলে , “তোমরা জীবনকে যতটা ভালোবাসো, আমরা মৃত্যুকে ভালোবাসি তার চাইতেও বেশি।” সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হাজার হাজার সন্ত্রাসী হামলা করে তারা এই কথা প্রমাণ করে চলেছে। একজন লোক কিভাবে এতগুলোর লোকের উপর এমন প্রভাব ফেলতে পারে যে তারা তার জন্য হাসতে হাসতে মৃত্যুবরণ করে এমনকি নিজেদের সন্তান সন্ততিকেও তার জন্য উৎসর্গ করতে দ্বীধা করে না। কেন বর্তমান দুনিয়ার নব্বই সংঘাতের সাথে কোন না কোনভাবে মুসলিমরা জড়িত , অথচ গোটা দুনিয়া জনসংখ্যার মাত্র শতকরা ২০ ভাগ মুসলিম। পরিসংখ্যানের হিসাব নিকাশ অনুযায়ী এর অর্থ দাঁড়ায় জাতি হিসেবে অন্য যেকোন ধর্মের লোকদের চাইতে দ্বন্দ নিরসনে সহিংসতায় জড়ানোর সম্ভাবনা ৩৬ গুন বেশি মুসলিমদের। এ এক বিশাল পার্থক্য যেখানে মুসলিমদের ধারে কাছেও কেউ নেই। কিভাবে সম্ভব এটা ?
এই রহস্য সমাধানে এই বইয়ে দুইটি তত্ত্ব পাওয়া যাবে। প্রথমটি হচ্ছে মুহাম্মদ অসুস্থ আত্নপ্রেম রোগে ভুগতো , আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে টেমপোরাল লোবের ঝামেলার কারণে সৃষ্ট মৃগীরোগে ভুগতো সে। আরো অনেক ধরণের মানসিক অসুস্থতার কথা অনুমান করা যায় বিভিন্ন হাদিসের বর্ণনা থেকে। তবে এই দুটি রোগের মাধ্যমেই মুহাম্মদের পুরো জীবনির ব্যাখ্যা দেওয়া যায়। প্রচুর পরিমাণের তথ্যপ্রমাণ দিয়ে এই বইয়ে প্রমাণ করা হবে যে মুহাম্মদ ছিলো মানসিক রোগী। যদিও সে তার নিজের সত্যতায় বিশ্বাস করতো এবং নিজের দাবীর প্রতি নিজে সৎ ছিলো, কিন্তু সে মূলত সত্য ও কল্পণার মধ্যে পার্থক্য করতে পারতো না। তার সমসাময়িক অনেকে যারা তাকে ভালোভাবে চিনতো তারা তাকে বলতো ‘মজনুন’ , অর্থাৎ পাগল, অপ্রকৃতিস্থ বা জ্বীনে ধরা। দুর্ভাগ্যক্রমে মুহাম্মদের বিপুল দাপটের মুখে তারা হার মানতে বাধ্য হন এবং তাদের স্থিতধী কথাবার্তাকে থামিয়ে দেয়া হয়। মানব মস্তিষ্ক নিয়ে নতুন নতুন আবিষ্কার সেইসব লোকেদের কথাকে নবজীবন দিয়েছে। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে অসুস্থ আত্নপ্রেমী রোগী খুব ভালোভাবেই জানে সে মিথ্যা বলছে, কিন্তু তবু সে নিজেই প্রথম তার নিজের মিথ্যা কথা বিশ্বাস করে।
বাজারে মুহাম্মদের সমালোচনা করা অনেক বই আছে যেগুলোতে তার হিংস্রতা এবং বিকৃত চরিত্রের বর্ণনা পাওয়া যাবে, কিন্তু খুব কম বই-ই আছে যেগুলোতে তার মনের ভিতর কি হচ্ছিলো সে কথা জানা যাবে। এই বই ঠিক সে জিনিসই বর্ণনা করতে চায়।
যদিও এই বইতে মুসলিমদের কোন আহ্বান করা হয়নি, তবুও আমি মূলত তাদের উদ্দেশ্যে বইটি লিখেছি। পারসিয়ান সেই প্রবাদের মত, দুয়ারকে বলে গেলাম যাতে দেয়াল শুনতে পায়। মুহাম্মদের লুটতরাজ, গণহত্যা, ডাকাতি, শিশুকাম, গুপ্তহত্যা, নারীখাদক লালসা এইসব নিয়ে যথেষ্ঠ বলা হয়ে গেছে। মুসলিমরা এর সবই শুনে কিন্তু কোনপ্রকার দ্বিধা ছাড়া মুহাম্মদের উপর বিশ্বাস অটল রাখে। উদ্ভটভাবে কেউ কেউ আবার দাবী করে ইন্টারনেটে আমার প্রবন্ধ পড়ে তাদের ইসলামে বিশ্বাস নাকি আরো মজবুত হয়েছে। তারা মুহাম্মদ কে অতিমানব হিসাবে মেনে নিয়েছে এবং বিশ্বাস করে মুহাম্মদ হচ্চে রাহমাতুল্লিল আলামিন, দুনিয়ার উপর আল্লাহর রহমত। মানুষের নৈতিকতার মানদন্ড ও বিবেক দিয়ে তারা মুহাম্মদ কে বিচার করে না, বরং বিশ্বাস করে সে নিজেই নৈতিকতা মানদন্ড। সত্য-মিথ্যা, ভালো-খারাপের বিচারে তারা গোল্ডেন রুল ব্যবহার করে না। আসলে গোল্ডেন রুলের ধারণাই তাদের চেতনার সাথে যায় না। তারা বরং হালাল-হারামের সংজ্ঞা দিয়ে ভালো-খারাপের পার্থক্য করতে চায়, যা মূলত কিছু উদ্ভট খামখেয়ালিপূর্ণ নিয়ম; নীতি নৈতিকতা, যুক্তির জগতের সাথে যার কোন সম্পর্ক নাই। মুসলিমরা সত্যিকারভাবেই ইসলাম নিয়ে প্রশ্ন করতে অক্ষম। যেকোন সন্দেহ তার কোনপ্রকার চিন্তা ছাড়াই উড়িয়ে দেয় আর যেসব জিনিস তাদের মানতে কষ্ট হয় সেগুলোকে ধরে আল্লাহর পক্ষ থেকে ঈমানের পরীক্ষা হিসাবে। এই পরীক্ষায় পাশ করতে হলে যত আজগুবি আর অর্থহীন জিনিস আছে সবকিছুকে প্রশ্নহীনভাবে মেনে নিতে হবে।
বিষয়সারটি যিনি লিখেছেন, ভাই, Acromegaly তে ED হয় না। কোন ডাক্তারির বইতে এমন রেফারেন্স পেয়েছেন জানলে বাধিত হব। 2015 এ প্রকাশিত একটি পেপার ছাড়া আর কোন গবেষণা নেই এ নিয়ে, আর ডাক্তারির বইতেও এই তথ্য নেই।
Temporal lobe এর কার্যকারিতা বাড়লে যৌনতাড়না বাড়ে ,এও আগে শুনিনি। পারলে এরও রেফারেন্স দেবেন।
জ্ঞানঃ গালি দেবার আগে গালিটা ঠিক না ভুল, যাচাই করে নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ।
আপনি মুহাম্মদের পক্ষ নিয়ে পৃথিবীর ক্ষতি করছেন।