বাল্যবিবাহ, পেডোফিলিয়া এবং ইসলাম – আয়িশা কি ৯ বছর বয়সে বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছেছিলেন?
সূচিপত্র
- 1 ভূমিকা
- 2 প্রাপ্তবয়ষ্ক কাকে বলে?
- 3 বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭
- 4 মধ্যযুগে মেয়েরা আগে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছাতো?
- 5 প্রাচীন রোম ও গ্রীসে বিবাহের বয়স
- 6 শিশুর সাথে যৌন আচরণ ‘ধর্ষণ’
- 7 বাল্যবিবাহ মেয়েদের জন্য ‘মৃত্যুদণ্ড’
- 8 সুন্নতী বাল্যবিবাহের পক্ষে আন্দোলন
- 9 বিবাহ ও সহবাসের সময় আয়িশার বয়স
- 10 আয়িশার জন্ম কত সালে?
- 11 আরবে বছরের হিসেব কীভাবে হতো?
- 12 খাজিদার মৃত্যু ও আয়িশাকে বিবাহ
- 13 আয়িশাই একমাত্র নন
- 14 বিয়ের প্রস্তাবে বিব্রত আবু বকর
- 15 জাতে মাতাল তালে ঠিক
- 16 নবী আয়িশার জন্য অপেক্ষা করেছিলেন?
- 17 শিশু আয়িশাকে স্বপ্নে দেখতেন মুহাম্মদ
- 18 অল্পবয়সী মেয়ে বিয়ের পরামর্শ
- 19 কুমারী মেয়েদের প্রতি আসক্তি
- 20 কুমারীদের যোনীপথ উষ্ণ
- 21 আয়িশা কী বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছেছিলেন?
- 22 অল্পবয়ষ্ক এবং হালকা গড়নের আয়িশা
- 23 আয়িশার হায়েজের বিবরণ
- 24 নবীর কাজ অন্যে অবৈধ করতে পারে?
- 25 বাল্যবিবাহকে ক্ষতিকর বলা ইসলামে বৈধ?
- 26 কোরআনে শিশু বিবাহের বৈধতা
- 26.1 সহবাসের পূর্বে তালাক ও ইদ্দত
- 26.2 বোখারী শরীফ
- 26.3 তাফসীরে ইবনে কাসীর
- 26.4 তাফসীরে জালালাইন
- 26.5 তাফসীরে মাযহারী
- 26.6 মা’আরেফুল কোরআন
- 26.7 তাফহীমুল কুরআন
- 26.8 তাওযীহুল কুর’আন
- 26.9 আহকামুল কুরআন
- 26.10 ফিকাহ শাস্ত্র আল হিদায়া গ্রন্থ
- 26.11 ফিকাহ শাস্ত্র আশরাফুল হিদায়া
- 26.12 বোখারীর ব্যাখ্যা
- 26.13 ফিকাহুস সুন্নাহ
- 26.14 ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী
- 26.15 বাল্যবিবাহ বিষয়ে আলেমদের ইজমা
- 26.16 ইসলাম ওয়েব এর ফতোয়া
- 26.17 সৌদি আরবের সরকারী ফতোয়া
- 26.18 অল্পবয়সে বিয়ে ও মিথ্যা বলা
- 27 নাবালিকা দাসীর সাথে সহবাস
- 28 স্ত্রীর লজ্জাস্থানের মালিকানা
- 29 প্রাপ্তবয়ষ্ক হওয়ার পরে সিদ্ধান্ত
- 30 খলিফা উমরের বাল্যবিবাহ
- 31 সাহাবীদের বাল্যবিবাহ ও ইজমা
- 32 আয়িশা কেন প্রতিবাদ করেনি?
- 33 নিসা শব্দটির ব্যবহার
- 34 নয়বছরে মেয়েরা মহিলা হয়
- 35 এপোলজিস্টদের পক্ষে দুইটি হাদিস
- 36 পেডোফিলিয়া বা শিশুকাম বিকৃতি
- 37 উপসংহার
- 38 তথ্যসূত্র
ভূমিকা
ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্র হচ্ছেন নবীপত্নী হযরত আয়িশা। আয়িশার বাল্যবিবাহ এবং সংসারের শুরু কত বছর বয়সে হয়েছিল সেই বিষয়ে আলোচনার সময়ে ইদানিংকালে এক ধরণের বিব্রত চেহারার মুসলিমদের দেখতে পাওয়া যায়, যারা নানান কৌশলে ইসলাম ধর্মে শিশুবিবাহের বিষয়টিকে ধামাচাপা, নয়তো তা সম্পর্কে মনগড়া কথা বলার চেষ্টা করেন। তারা প্রায়শই বলবার চেষ্টা করেন যে, ইসলামে শিশুবিবাহ থাকলেও যৌনকর্মের জন্য নারী শিশুটির প্রাপ্তবয়ষ্ক বা সাবালিকা হওয়া জরুরি! এই বিষয়টিকে তুলে ধরার জন্য তারা বলেন, হযরত আয়িশা ৯ বছর বয়সেই বয়ঃসন্ধিকালে পৌছে গিয়েছিলেন, কারণ সেই সময়ে নাকি অল্পবয়সেই মেয়েরা বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছে যেতো। যা একেবারেই ভিত্তিহীন কথা। ইসলামে শিশু মেয়েদের বিবাহের নির্দিষ্ট কোন বয়সসীমা নেই, এবং মেয়েটির সাথে অপ্রাপ্তবয়ষ্ক অবস্থায় এমনকি বয়ঃসন্ধিকালে না পৌঁছালেও যৌনকর্মে কোন বাধা নেই। সেই বিষয়টি নিয়েই এই লেখাটিতে আলোচনা করবো।
প্রাপ্তবয়ষ্ক কাকে বলে?
এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয় যে, বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছানো এবং প্রাপ্তবয়ষ্ক হওয়া ভিন্ন বিষয়। বয়ঃসন্ধি হচ্ছে প্রাপ্তবয়ষ্ক হওয়ার একটি ধাপ, যা আসলে প্রাপ্তবয়ষ্ক হওয়া বোঝায় না। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছানো মানেই ধরে নেয়া হয় সাবালিকা বা প্রাপ্তবয়ষ্ক হয়ে যাওয়া। যদিও আধুনিক বৈজ্ঞানিক ধ্যান ধারণা অনুসারে কথাটি সত্য নয়। বয়ঃসন্ধি হচ্ছে প্রাপ্তবয়ষ্ক হওয়ার লক্ষণের সুচনা। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হচ্ছেন একজন মানুষ যার তুলনামূলকভাবে পরিণত বয়স হয়েছে যা যৌন পরিপক্কতা ও পুনরূপাৎদনের ক্ষমতা অর্জনের সাথে জড়িত। একজন নারী বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছালেই সে সন্তান জন্ম দেয়ার পরিপক্কতা অর্জন করে না। বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছাবার পরে তার শরীর সন্তান জন্মদানের উপযুক্ত হতে সবে শুরু করে। এই প্রক্রিয়া কারো কারো ক্ষেত্রে ৩ আবার কারো কারো ক্ষেত্রে ৫ বছরে পূর্ণতা পায়। কিন্তু ইসলামে মেয়েদের সাথে যৌনকাজের জন্য বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছানোও জরুরি কিছু নয়। সেই বিষয়েই এই লেখাটি।
বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭
বাঙলাদেশের আইনে বাল্যবিবাহ একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। এই আইনের সংজ্ঞা এবং বাল্যবিবাহ দেয়ার শাস্তির বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে। [1] [2] [3]
সংজ্ঞা
(১) “অপ্রাপ্ত বয়স্ক” অর্থ বিবাহের ক্ষেত্রে ২১ (একুশ) বৎসর পূর্ণ করেন নাই এমন কোনো পুরুষ এবং ১৮ (আঠারো) বৎসর পূর্ণ করেন নাই এমন কোনো নারী;
(২) “অভিভাবক” অর্থ Guardians and Wards Act, 1890 (Act No. VIII of 1890) এর অধীন নিয়োগপ্রাপ্ত বা ঘোষিত অভিভাবক এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির ভরণ-পোষণ বহনকারী ব্যক্তিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(৩) “প্রাপ্ত বয়স্ক” অর্থ বিবাহের ক্ষেত্রে ২১ (একুশ) বৎসর পূর্ণ করিয়াছেন এমন কোনো পুরুষ এবং ১৮ (আঠারো) বৎসর পূর্ণ করিয়াছেন এমন কোনো নারী;
(৪) “বাল্যবিবাহ” অর্থ এইরূপ বিবাহ যাহার কোন এক পক্ষ বা উভয় পক্ষ অপ্রাপ্ত বয়স্ক;
বাল্যবিবাহ করিবার শাস্তি
৭। (১) প্রাপ্ত বয়স্ক কোন নারী বা পুরুষ বাল্যবিবাহ করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং অর্থদণ্ড অনাদায়ে অনধিক ৩ (তিন) মাস কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
(২) অপ্রাপ্ত বয়স্ক কোন নারী বা পুরুষ বাল্যবিবাহ করিলে তিনি অনধিক ১ (এক) মাসের আটকাদেশ বা অনধিক ৫০,০০০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় ধরনের শাস্তিযোগ্য হইবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, ধারা ৮ এর অধীন কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের বা দণ্ড প্রদান করা হইলে উক্তরূপ অপ্রাপ্ত বয়স্ক নারী বা পুরুষকে শাস্তি প্রদান করা যাইবে না।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন বিচার ও শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে শিশু আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ২৪ নং আইন) এর বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।
বাল্যবিবাহ সংশ্লিষ্ট পিতা-মাতাসহ অন্যান্য ব্যক্তির শাস্তি
৮। পিতা-মাতা, অভিভাবক অথবা অন্য কোন ব্যক্তি, আইনগতভাবে বা আইনবহির্ভূতভাবে কোন অপ্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির উপর কর্তৃত্ব সম্পন্ন হইয়া বাল্যবিবাহ সম্পন্ন করিবার ক্ষেত্রে কোন কাজ করিলে অথবা করিবার অনুমতি বা নির্দেশ প্রদান করিলে অথবা স্বীয় অবহেলার কারণে বিবাহটি বন্ধ করিতে ব্যর্থ হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর ও অন্যূন ৬ (ছয়) মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং অর্থদণ্ড অনাদায়ে অনধিক ৩ (তিন) মাস কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
মধ্যযুগে মেয়েরা আগে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছাতো?
অনেক ইসলামিক স্কলারই দাবী করেন যে, প্রাচীনকালে বা মধ্যযুগে মেয়েরা আগে আগে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছে যেতো! প্রমাণ হিসেবে উনারা বলেন, উনাদের দাদী নানীরা অল্পবয়সে মা হতেন, রবীন্দ্রনাথ বা বঙ্কিমচন্দ্রের অল্পবয়সে বিয়ে হয়েছিল, সেইসব নারীদের অনেকেই মা হয়েছিলেন; এগুলোই নাকি প্রমাণ করে যে, আগের দিনে মেয়েদের বয়ঃসন্ধি আগে আগে হতো। মানে, তারা ৭/৮ বছর বয়সেই নিয়মিত যৌনকর্ম এবং সন্তান জন্মদানে পরিপক্ক হয়ে যেতো। এর মানে তারা বলতে চান, মেয়েরা আগে আগেই প্রাপ্তবয়ষ্ক হয়ে যেতো। যদিও বয়ঃসন্ধি হওয়া মানেই প্রাপ্তবয়ষ্ক হওয়া নয়। কারণ বয়ঃসন্ধি হচ্ছে কয়েকবছর ব্যাপী একটি শরীরবৃত্তিয় প্রক্রিয়া। এই বয়সটিতে ছেলেমেয়েরা অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ থাকে, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না এবং প্রায়শই ভুল সিদ্ধান্ত নেয়।
এর মানে হচ্ছে, উনারা দাবী করেন, এখন যদি কোন অঞ্চলে মেয়েরা ১২ বছরে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছায়, আগের কালে ৭/৮ বছরেই পোঁছে যেতেন। অথচ, বর্তমান সময়ের বিভিন্ন রিসার্চ পেপারে দেখা যায় সম্পূর্ণ উল্টো কথা। আধুনিক গবেষণাতে এটি প্রমাণিত যে, আগেরকালে মেয়েদের শরীরে খাদ্যাভাব এবং অপুষ্টিজনিত কারণে পিরিয়ড আরো দেরীতে হতো। বর্তমান সময়ে সুষমখাদ্য, পুষ্টিগুণ যাচাই, নানা ধরণের ভিটামিন এবং অন্যান্য ঔষধের কারণে মেয়েদের শরীরে পুষ্টির মান বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনি খুব সহজেই এর প্রমাণ পাবেন, যদি গত ৫০ বছরের মাতৃমৃত্যুর হার যাচাই করে দেখেন। মাতৃমৃত্যুর হার বাঙলাদেশে এখন আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। এর কারণ হচ্ছে, আগের চেয়ে এখন মেডিকেল ফ্যাসিলিটি, পুষ্টিকর খাবার, ভিটামিন এবং অন্যান্য বিষয় সহজলভ্য হয়েছে। এসব কারণে, বর্তমান সময়েই বরঞ্চ পিরিয়ড হচ্ছে দ্রুত। যেসব দেশের মেয়েরা পর্যাপ্ত পুষ্টি, খাদ্য, ঔষধ পাচ্ছে, সেসব দেশে মেয়েরা আরো আগে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছাচ্ছে। নিচের গবেষণাগুলো এই বিষয়টি বেশ ভালভাবেই প্রমাণিত হয়েছে। বেশ কিছু রিসার্চ পেপার যুক্ত করা হলো, আগ্রহী পাঠকগণ সময় পেলে পড়ে দেখবেন। [4] [5] [6] [7] [8] [9] [10] [11] [12]
একইসাথে, বেশ কিছু ইসলামিক স্কলারগণের আরেকটি দাবী হচ্ছে, গরমের দেশে আম কাঁঠাল যেমন আগে আগে পেকে যায়, মেয়েরাও নাকি আগে আগে পেকে যেতো। এই কথাটিও মিথ্যা। গরমের সাথে বয়ঃসন্ধির কোন সম্পর্ক আছে, বা গরম তাপমাত্রা বয়ঃসন্ধি আগে হওয়ার ক্ষেত্রে কোন প্রভাব বিস্তার করে, সেটি কোন গবেষণাতেই পাওয়া যায়নি। বরঞ্চ, উষ্ণতার সাথে বয়ঃসন্ধির যে কোন সম্পর্ক নেই, এরকম অসংখ্য তথ্য তারা পেয়েছেন। পাঠকদের কাছে উপরের রিসার্চ পেপারগুলো যাচাই করে দেখার অনুরোধ রইলো।
প্রাচীন রোম ও গ্রীসে বিবাহের বয়স
অনেক ইসলামিক বক্তা এবং আলেমই দাবী করে থাকেন যে, সেই চোদ্দশত বছর আগে সারা পৃথিবীর সকল সমাজেই বাল্যবিবাহ প্রচলিত ছিল! এসব কথা কিছু ক্ষেত্রে সত্য যে, প্রাচীন অনেক অসভ্য বা অর্ধ সভ্য সমাজেই বাল্যবিবাহ প্রচলিত ছিল, তবে তা একটি ছেলে শিশু এবং একটি মেয়ে শিশুর মধ্যে বিবাহ। সত্য হচ্ছে, একটি মেয়ে শিশু এবং বয়স্ক পুরুষের বিবাহ উন্নত প্রাচীন সভ্যতাগুলোতেও খারাপ চোখেই দেখা হতো। আসুন প্রাচীন রোমান আইন দেখে নিই, মুহাম্মদের জন্মের বহু বছর আগেই সেই প্রাচীন রোমে শিশু মেয়েদের নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে ১২ বছরের কম বয়সে মেয়েদের বিবাহ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। একইসাথে, বিবাহের সময় উভয় পক্ষের সম্মতি নেয়ার বিধানও করা হয়েছিল [13]। প্রাচীন স্পার্টায় তো আরও কঠিন বিধান ছিল। সেখানে মেয়েদের বিবাহ হতো ১৮ বছর হওয়ার পরে। অসভ্য সৌদি আরবের যেহেতু কোন উন্নত সভ্যতা গড়ে ওঠেনি, তাই সেই সব অঞ্চলে আদিম বর্বর প্রথাগুলোই প্রচলিত ছিল। ইসলাম সেই বর্বর আরবের সেই প্রথাগুলোকেই আইনে পরিণত করে কেয়ামত পর্যন্ত বৈধতা দিয়ে গেছে।
শিশুর সাথে যৌন আচরণ ‘ধর্ষণ’
ধর্ষণের সংজ্ঞা থেকে আমরা জানি যে,
সাধারণত একজন ব্যক্তির অনুমতি ব্যতিরেকে তার সঙ্গে যৌনসঙ্গম বা অন্য কোনো ধরনের যৌন অনুপ্রবেশ ঘটানোকে ধর্ষণ বলা হয়। ধর্ষণ শারীরিক বলপ্রয়োগ, অন্যভাবে চাপ প্রদান কিংবা কর্তৃত্বের অপব্যবহারের মাধ্যমে সংঘটিত হতে পারে। অনুমতি প্রদানে অক্ষম (যেমন- কোনো অজ্ঞান, বিকলাঙ্গ, মানসিক প্রতিবন্ধী কিংবা অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি) এরকম কোনো ব্যক্তির সঙ্গে যৌনমিলনে লিপ্ত হওয়াও ধর্ষণের আওতাভুক্ত [14] [15] [16]। দুইটি পক্ষের মধ্যে সংঘাত বা যুদ্ধের সময়ও ধর্ষণ কিংবা যুদ্ধবন্দীদের যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহারের মত ঘটনাকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই ধরণের ধর্ষণ গণহত্যার একটি উপাদান হিসেবেও স্বীকৃত।
একটি শিশুর সম্মতি দানের বোধবুদ্ধি কিংবা জ্ঞান থাকে না বিধায় পুরো সভ্য বিশ্বে শিশুদের সম্মতি দেয়ার একটি বয়স নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এই বয়সটিকে বলা হয় এইজ অফ কনসেন্ট বা সম্মতিদানের বয়স[17] । এই বয়সে আসার আগে সে কোন যৌন কর্মে হ্যাঁ বলুক কিংবা না বলুক, উভয় ক্ষেত্রেই বিষয়টিকে না ধরতে হবে। কারণ শিশুটি তখনও এই কাজটি সম্পর্কে জেনে বুঝে কোন সিদ্ধান্তে আসতে সক্ষম নয়। সম্মতি তখনই সে দিতে পারবে, যখন সে প্রাপ্তবয়ষ্ক, তখন যদি স্বেচ্ছায় সজ্ঞানে সে সিদ্ধান্ত নেয়, তখনই সেটিকে সম্মতি ধরতে হবে। এর আগে সে হ্যাঁ বলুক কিংবা না, তাতে কিছুই যায় আসে না। একজন প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষের পক্ষে একটি শিশুকে বোকা বানানো সহজ। একটি শিশুর যেহেতু পরিপক্ক চেতনা নেই, সবদিক বিবেচনা করার সামর্থ্য নেই, যৌনকর্ম করার বা যৌন সঙ্গী বাছাই করার বা পছন্দ করার ক্ষেত্রে সে তাই কোন মতামত দিতে পারে না। তাই পুরো সভ্য বিশ্বে কোন শিশুর সাথে যৌনকর্ম সরাসরি ধর্ষণ হিসেবে চিহ্নিত হয়।
ধরা যাক, একটি শিশু মেয়েকে চকলেটের লোভ দেখিয়ে একজন প্রাপ্তবয়ষ্ক পুরুষ মেয়েটির শরীরের বিভিন্ন জায়গাতে হাত দিলো। কিংবা স্কুলের শিক্ষক পরীক্ষায় ভাল নম্বরের লোভ দেখিয়ে তাকে নিজের রুমে ডেকে নিলো। শিশু মেয়েটি ভয়ে কিংবা চকলেটের লোভে অথবা অন্য কোন কারণে কাউকে এই বিষয়ে কিছুই বললো না। বরঞ্চ সে আপাত দৃষ্টিতে স্বেচ্ছায় কাজটি করলো বলে মনে হতে পারে। এরকম অবস্থাতেও ধরে নিতে হবে, এই মেয়েটির এই কাজে সম্মতি ছিল না। কারণ মেয়েটি এখনো শিশু, তাই সে সম্মতি দেয়ার মত বোধবুদ্ধি সম্পন্ন নয়। এরকম ঘটনায় সেই প্রাপ্তবয়ষ্ক পুরুষকে ধর্ষক হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে এবং শাস্তি দিতে হবে। কারণ শিশু মেয়েটি না বুঝলেও, সে তো প্রাপ্তবয়ষ্ক, তাই তার বুঝতে হবে।
বাল্যবিবাহ মেয়েদের জন্য ‘মৃত্যুদণ্ড’
ইউনিসেফ শিশু বিবাহকে মেয়েদের জন্য এক প্রকারের মৃত্যুদণ্ড বলে ঘোষণা দিয়েছে [18] । কেন এরকম ঘোষণা তারা দিলেন? এর কারণ বিশ্লেষণের জন্য কয়েকটি বিষয় ভালভাবে বুঝে নেয়া দরকার।
আমাদের অনেকের মধ্যে অনেক বদ্ধমূল ভুল ধারণা রয়েছে যে, গরম দেশে মেয়েরা দ্রুত বয়ঃসন্ধিতে অবতীর্ণ হয়! অনেক মোল্লাকেও দেখবেন ওয়াজ মাহফিলে বলতে, গরম দেশে যেমন আম কাঠাল তাড়াতাড়ি পাঁকে, মেয়েরাও গরম দেশে অল্প বয়সে পেঁকে যায়। কিন্তু, বিষয়টি পুরোই ভুল ধারণা। প্রথমত, মেয়েরা আম কাঁঠাল নয়। দ্বিতীয়ত, গ্রীষ্ম প্রধান দেশে মেয়েরা আগে আগে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছায়, শীতপ্রধান দেশে ধীরে ধীরে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছায়, এরকম কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায় নি। মেয়েদের মধ্যে বয়ঃসন্ধি কারো কারো খানিকটা আগেই চলে আসতে পারে, যার পেছনে কয়েকটি গুরুত্বপুর্ণ ফ্যাক্টর কাজ করে। সেগুলো দেশের উষ্ণতার ওপর নির্ভর করে, এমন কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
প্রথমেই আমাদের যা জানা প্রয়োজন, তা হচ্ছে মেয়েদের বয়ঃসন্ধি কিভাবে হয়। বয়ঃসন্ধি বা পিউবার্টি কী তা আমরা সকলেই কমবেশী জানি এবং বুঝি। আমরা অনেকে এটিও জানি যে, পিউবার্টির সময়ে নানাবিধ হরমোনাল পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে একজন মানুষ যায় এবং এই সব হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে তার শরীরে এবং মনে নানা ধরণের পরিবর্তন লক্ষ্যণীয় হয়ে ওঠে। মনে রাখা দরকার, পিউবার্টি কোন আকস্মিক ঘটনা নয়, এটি একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে কয়েকটি ধাপ রয়েছে, যেই ধাপগুলো পূর্ণ করা প্রয়োজন।
একটি মেয়ে ৮-১০ বছর বয়সে তার মস্তিস্কের হিপোথেলামাস অংশটি গোনাড্রোপিন নামের একটি হরমোন নিঃসরণ শুরু করে। এই হরমোনটির কারণে তাদের রক্তে লুটেইনাইজিং হরমোন এবং ফলিকল-স্টিমুলেটিং হরমোন নিঃসরণ শুরু হয়। এই হরমোনগুলো তার ডিম্বাশয়ে পৌঁছালে ডিম্বাশয় এস্ট্রোজেন উৎপাদন করার জন্য সক্রিয় হয়।
এই সময়ে শুরু হয় তাদের শরীরকে গর্ভধারণের জন্য উপযুক্ত করে তোলার প্রক্রিয়া। এর সাথে সাথে আরো কিছু হরমোন নিঃসরণ হতে থাকে, যা মেয়েদের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন ঘটায়। অনেক সময় এই প্রক্রিয়াটি বয়সের চাইতে আগেও হয়ে যেতে পারে। তখন তাকে বলে প্রিকোশিয়াস পিউবার্টি। তবে তা হয়ে থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া জরুরি। কারণ এরকম হওয়ার প্রধানতম কারণগুলো হচ্ছে নানা ধরণের অসুখ বিসুখ, ইনফেকশন, রেডিয়েশন। সেই সাথে, আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে, যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া। অথবা, তাকে বিয়ে দিয়ে দেয়া।[19]
একটি শিশু মেয়ে যদি অতি অল্প বয়সেই যৌন নির্যাতনের শিকার হয়, প্রায়শই দেয়া যায় তারা তাদের মামা চাচাদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, বা তাকে বিয়ে দিয়ে দেয়া হচ্ছে। সেই সময়ে তাদের মস্তিষ্কে কিছু ভুল মেসেজ যায়। মানুষের মস্তিষ্ক জানে না, এটি যৌন নির্যাতন নাকি স্বেচ্ছায় যৌনতা। মস্তিষ্ক তখন এই বিষয়ে একটিভ হয়ে ওঠে, এবং শরীরকে দ্রুত যৌনতার জন্য উপযুক্ত করে তোলার জন্য জরুরি হরমোনগুলো নিঃসরণ করতে শুরু করে দেয়। যা মেয়েটির ভবিষ্যত জীবন ধ্বংস করে ফেলতে পারে।
একটি মেয়ে যখন বড় হতে থাকে, বড় হওয়ার সাথে সাথে তার শরীরের হাড়গুলো গঠিত হতে থাকে। একটি শিশুর শরীরে ৩০০ এর বেশি হাড় থাকে, কিন্তু একজন মানুষ যখন পূর্ণ বয়ষ্ক হন তখন তার হাড় থাকে ২০৬ টি। এই হাড়গুলো প্রাপ্তবয়ষ্ক হওয়া পর্যন্ত গঠিত হয়। মানে, একদিন হঠাৎ করে গঠিত হয়ে যায় না। বা পিরিয়ড হলেই হাড়গুলো সুগঠিত হয়ে যায় না। বয়ঃসন্ধির এই সময়টিতে ধীরে ধীরে গঠিত হতে থাকে। একটি মেয়ের ক্ষেত্রে, পেলভিক ফ্লোর এই সময়ে গঠিত হয়। যা বাচ্চা জন্ম দেয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বিষয়টি এমন নয় যে, একদিন একটি মেয়ের পিরিয়ড হওয়া শুরু হলো, আর সাথে সাথে মেয়েটি সেক্স এবং বাচ্চা জন্ম দেয়ার জন্য উপযুক্ত হয়ে গেল। পুরো বিষয়টি ধীর গতির একটি প্রক্রিয়া, এবং এর এক একটি ধাপ রয়েছে। একটি ধাপ পরের ধাপের সাথে সম্পর্কিত। কিন্তু একটি মেয়েকে খুব ছোট বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেয়া হলে, বা নিয়মিত যৌন নির্যাতন করা হলে, বা বিয়ে দিয়ে স্বামীর যৌন চাহিদা মেটাতে হলে তার মস্তিষ্ক খুব দ্রুত তার শরীরকে যৌনতার জন্য প্রস্তুত করতে শুরু করে। কিন্তু এই সময়ে যেই সমস্যাটি দেখা দেয়, তা হচ্ছে, মেয়েটির শারীরিক বৃদ্ধির জন্য যেই হরমোন নিঃসরণ প্রয়োজন, তা প্রায়শই শরীর বন্ধ করে দেয়। মানুষের মস্তিষ্ক এই সময়ে মনে করে, মেয়েটি যথেষ্ট বড় হয়েছে, সন্তান ধারণের উপযুক্ত হয়েছে, এখন আর শারীরিক বৃদ্ধির হরমোনের প্রয়োজন নেই।
ভারতের অনেকগুলো পতিতালয়ে দেখা গেছে, অল্প বয়সী মেয়েদের নানা ঔষধ খাইয়ে, ইঞ্জেকশন দিয়ে তাদের শরীরে দ্রুত পিউবার্টি আনার চেষ্টা করা হয়। সেই সমস্ত মেয়েদের স্তন এবং শরীরের অন্য অংশ অতি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে, কিন্তু তাদের শরীরের হাড় বৃদ্ধি পাওয়া বন্ধ করে দেয়। এই কারণে এই ধরণের মেয়েরা প্রায়শই খর্বাকার হয়। আমাদের গ্রামাঞ্চলে এই কথাটি আপনি নানী দাদীদের মুখে প্রায়ই শুনে থাকবেন যে, যে সকল মেয়ের আগে আগেই পিউবার্টি চলে আসে, তারা আর বেশী লম্বা হয় না।
আরো বড় সমস্যা অপেক্ষা করে এদের জন্য, বয়স হওয়া শুরু হলে, বা সন্তান জন্মদানের সময়। পেলভিক ফ্লোর ঠিকমত গঠিত হওয়ার আগেই শরীর বৃদ্ধির হরমোন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এদের বাচ্চা জন্ম দেয়া একটি বিভীষিকাময় ঘটনা হয়ে ওঠে। অসংখ্য জটিলতা এবং ভয়াবহ পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে এই ধরণের মেয়েদের সন্তান জন্ম দেয়ার সময়। যা একজন পুরুষ কখনো কল্পনাও করতে পারবে না, এরকম ব্যথা হওয়া খুবই স্বাভাবিক। এমনকি, মেয়েটি প্রাপ্তবয়ষ্ক হয়ে সন্তান জন্ম দিতে গেলেও ঠিক একই ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ তার শরীর বৃদ্ধি পাওয়ার আগেই বয়ঃসন্ধি চলে এসেছে, বয়ঃসন্ধি মেয়েটি অতিক্রম করেছে অতি দ্রুত, এবং শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেছে।
এই ধরণের মেয়েদের খুব স্বাভাবিকভাবেই মেরুদণ্ডে দীর্ঘমেয়াদী ব্যথা, হাঁটুতে ব্যথা, হাঁটুর জয়েন্ট ক্ষয় হয়ে যাওয়ার মত সমস্যায় পরেন। এদের সন্তানরা হাবাগোবা বা নানারকম প্রতিবন্ধী হতে পারে। কারণ এদের শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে নি, তাই সন্তানকে পেটে থাকা অবস্থায় এই ধরণের মেয়েরা স্বাভাবিক পুষ্টির যোগানও দিতে পারেন না। এদের সন্তানগণের রোগব্যধির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ইমিউন সিস্টেমও অনেক দুর্বল হতে পারে। [20]
তাই, বাল্যবিবাহ এবং শিশু বয়সেই নিয়মিত যৌন সম্পর্ক একটি শিশু মেয়ের পরবর্তী জীবনকে শুধু ধ্বংসই করে না, একটি পুরো প্রজন্মকেও ধ্বংস করে। একটি ৫-৬ বছরের মেয়ের জীবন হবে সুন্দর, রঙিন। সে হাসবে, খেলবে, পড়ালেখা করবে। সে মাঠে ময়দানে দৌঁড়াবে, সাঁতার কাটবে, লাফাবে ঝাঁপাবে। ধীরে ধীরে তার শরীর গঠিত হতে থাকবে। সে পুষ্টিকর খাবার খাবে, তার শরীরের হাড়গুলো ধীরে ধীরে শক্ত হতে থাকবে। ৯-১০ বছর বয়সেই তার শরীরে নানা ধরণের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে। এবং এই পরিবর্তন ঘটবে ধীরে ধীরে। একটা সময়ে সে খুব দ্রুত লম্বা হতে থাকবে। এরপরে একটা সময় মস্তিষ্ক বুঝতে পারবে, শরীরের হাড়গুলো ঠিকমত গঠিত হয়ে গেছে। এরপরে তার লম্বা হওয়ার হার কমতে থাকবে, এবং তার চেহারায় নারীসূলভ অভিব্যক্তি প্রকাশিত হতে থাকবে। এই পুরো প্রক্রিয়া চলতে থাকবে ১৮-১৯ বছর পর্যন্ত। যতদিন সে লম্বা হতেই থাকবে। সেই সময়ে তার শরীর নতুন হরমোনগুলোর সাথে ধীরে ধীরে এডোপ্ট করবে, এবং তার কিছুটা আগেই সে যৌনতার জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে, এই বয়সেই যেন সে সন্তান ধারণ না করে। গর্ভধারণের জন্য উপযুক্ত সময়ও এটি নয়। তা আরো পরে।[21]
সুন্নতী বাল্যবিবাহের পক্ষে আন্দোলন
বহুবছর ধরেই বাঙলাদেশের ইসলামিস্টগণ বাল্যবিবাহের পক্ষে আন্দোলন করে যাচ্ছে। এই আন্দোলনের স্লোগানে তারা দাবী করছে, যেহেতু এটি নবীর সুন্নত, তাই একে নিষিদ্ধ করা যাবে না। মুমিন ভাইদের নাকি অধিকার রয়েছে, বাল্যবিবাহ করার এবং তাদের মেয়ে বাচ্চাদের বিয়ে দেয়ার। আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ওলামা লীগ এই নিয়ে অনেকদিন ধরেই মাঠ গরম করছে। তাদের দাবী হচ্ছে, সুন্নতী বাল্যবিবাহকে আইনগত বৈধতা দিতে হবে, যেন তারা অবাধে পেডোফিলিয়ার চর্চা চালিয়ে যেতে পারে! [22]
সেইসাথে আরো বিব্রতকর খবর হচ্ছে, সৌদি আরবে বাচ্চা মেয়েদেরও বোরখা পড়তে সৌদি ইসলামিক স্কলারগণ নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ হিসেবে তারা বলেছেন, বাচ্চা মেয়েদের দেখলেও তাদের নাকি যৌন উত্তেজনা হয়! [23] [24]
বাল্যবিবাহ, অধিক সন্তান জন্মদান ইত্যাদি বিষয়ে জনসমর্থনের জন্য প্রতিদিন ওয়াজও চলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আসুন এই বিষয়ে একটি ওয়াজও শুনে নিই,
এবারে আসুন আরো একটি ওয়াজ শুনি,
বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে কথা বলায় ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের ধানবিলা গ্রামের মৃত ফয়েজ উদ্দিন সরকারের ছেলে সমাজকর্মী আবু সালেহ মো. আব্দুল মাজেদকে হুমকি দিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছিল আনসারুল্লাহ বাংলা টিম। ভীত আব্দুল মাজেদ এই নিয়ে একটি জিডিও করেছিলেন। আসুন দেখি, উগ্রপন্থী ইসলামিস্টরা কেন সেই মানুষটিকে হুমকি দিয়েছিল, [25]
এবারে আসুন আবদুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের একটি বক্তব্য শুনে নিই,
বিবাহ ও সহবাসের সময় আয়িশার বয়স
বিভিন্ন সহীহ হাদীসের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে মুহাম্মাদের সাথে আয়িশার বিবাহের সময় আয়িশার বয়স ছিল ছয় বছর এবং যখন আয়িশার বয়স নয় বছর। নয় বছর বয়সেই তিনি মুহাম্মাদের সাথে যৌনসঙ্গম করেন [26] –
হিশাম এর পিতা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মদিনার দিকে বের হওয়ার তিন বছর আগে খাদীজাহ (রাঃ)-এর মৃত্যু হয়। তারপর দু’বছর অথবা এর কাছাকাছি সময় অতিবাহিত করে তিনি ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে বিবাহ করেন। যখন তিনি ছিলেন ছয় বছরের বালিকা। তারপর নয় বছর বয়সে বাসর উৎযাপন করেন।
Narrated Hisham’s father: Khadija died three years before the Prophet (ﷺ) departed to Medina. He stayed there for two years or so and then he married `Aisha when she was a girl of six years of age, and he consumed that marriage when she was nine years old.
সহীহ বুখারী (তাওহীদ) ৩৮৯৬
সুনান আবু দাউদ শরীফে আরো পরিষ্কারভাবেই বলা আছে যে, মদিনায় আসার পরেই নবীর সাথে তার সহবাস হয়।[27] [28]
সূনান আবু দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৩৬/ আদব
পরিচ্ছেদঃ ৬১. দোলনায় চড়া সম্পর্কে।
৪৮৫১. মূসা ইবন ইসমাঈল (রহঃ) …. আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা যখন মদীনায় আসি, তখন আমার কাছে কয়েকজন মহিলা আসে, আর সে সময় আমি দোলনায় দোল খাচ্ছিলাম। এ সময় আমার মাথার চুল ছোট ছিল। তারা আমাকে নিয়ে গিয়ে সুন্দররূপে সুসজ্জিত করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে নিয়ে আসে। এ সময় তিনি আমার সাথে সহবাস করেন, আর তখন আমার বয়স ছিল নয় বছর।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
সূনান নাসাঈ শরীফে বলা হয়েছে, [29]
সূনান নাসাঈ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
২৬/ নিকাহ (বিবাহ)
পরিচ্ছেদঃ ৭৮. নয় বছর বয়সে স্বামীসঙ্গ
৩৩৮১. মুহাম্মদ ইবন আদম (রহঃ) … আয়েশা (রাঃ) থেকে বৰ্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ছয় বৎসর বয়সে বিবাহ করেন এবং আমার সঙ্গলাভ করেন নয় বৎসর বয়সে, তখন আমি মেয়েদের সাথে খেলাধূলা করতাম।
তাহক্বীকঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
উল্লেখ্য, বাসর উদযাপন বলতে যৌনকর্মের মাধ্যমে বিবাহকে কনজ্যুমেট করা বোঝানো হয়েছে [30] [31]-
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ১৭। বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ১০. পিতা অপ্রাপ্ত বয়স্কা কুমারী কন্যার বিবাহ দিতে পারে
৩৩৭০-(৬৯/১৪২২) আবূ কুরায়ব মুহাম্মাদ ইবনু ‘আলা ও আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বাহু (রহিমাছমাল্লাহ) … আয়িশাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বিয়ে করেছেন, আমার বয়স তখন ছয় বছর। তিনি আমাকে নিয়ে বাসর ঘরে যান, তখন আমার বয়স নয় বছর। আয়িশাহ (রাযিঃ) বলেন, আমরা হিজরাত করে মাদীনায় পৌছার পর আমি একমাস যাবৎ জ্বরে আক্রান্ত ছিলাম এবং আমার মাথার চুল পড়ে গিয়ে কানের কাছে (কিছু) থাকে। (আমার মা) উম্মু রূমান আমার নিকট এলেন, আমি তখন একটি দোলনার উপরে ছিলাম এবং আমার কাছে আমার খেলার সাখীরাও ছিল। তিনি আমাকে উচ্চৈঃস্বরে ডাকলেন, আমি তার নিকট গেলাম।
আমি বুঝতে পারিনি যে, তিনি আমাকে নিয়ে কী করবেন। তিনি আমার হাত ধরে আমাকে দরজায় নিয়ে দাঁড় করালেন। আমি তখন বলছিলাম, আহ, আহ। অবশেষে আমার উদ্বেগ দূরীভূত হল। তিনি আমাকে একটি ঘরে নিয়ে গেলেন। সেখানে আনসার মহিলাগণ উপস্থিত ছিলেন। তারা সকলে আমার কল্যাণ ও রহমাতের জন্য দুআ করলেন এবং আমার সৌভাগ্য কামনা করলেন। তিনি (মা) আমাকে তাদের নিকট সমর্পণ করলেন। তারা আমার মাথা ধুয়ে দিলেন এবং আমাকে সুসজ্জিত করলেন। আমি কোন কিছুতে ভীত শংকিত হইনি। চাশতের সময় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন এবং তারা আমাকে তার নিকট সমর্পণ করলেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৩৪৪, ইসলামীক সেন্টার ৩৩৪৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
উপরের হাদিসটি আরো কয়েকজন বর্ণনাকারীর কাছ থেকে জেনে নিই, [32] [33] [34]
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
১৭। বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ১০. পিতা অপ্রাপ্ত বয়স্কা কুমারী কন্যার বিবাহ দিতে পারে
৩৩৭১-(৭০/…) ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, ইবনু নুমায়র (রহিমাহুমাল্লাহ) ….. আয়িশাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার ছয় বছর বয়সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বিবাহ করেন এবং আমার নয় বছর বয়সে তিনি আমার সঙ্গে বাসর যাপন করেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৩৪৫, ইসলামীক সেন্টার ৩৩৪৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
১৭। বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ১০. পিতা অপ্রাপ্ত বয়স্কা কুমারী কন্যার বিবাহ দিতে পারে
৩৩৭২-(৭১/…) আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ….. আয়িশাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তার সাত বছর বয়সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বিবাহ করেন। তাকে নয় বছর* বয়সে তার ঘরে বধুবেশে নেয়া হয় এবং তার সঙ্গে তার খেলার পুতুলগুলোও ছিল। তাঁর আঠারো বছর বয়সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তিকাল করেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৩৪৬, ইসলামীক সেন্টার ৩৩৪৫)
* তিনি বলেন যে, তার ছয় বছর বয়সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বিবাহ করেন। লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কোন হাদীসে ‘আয়িশাহ্ (রাযিঃ)-এর বিবাহ হওয়ার ছয় বছর আবার কোন হাদীসে সাত বছর বর্ণিত হয়েছে। হাদীসের ব্যাখ্যাকারদের মতে, ঐ সময় আয়িশাহ (রাযিঃ)-এর বয়স ছয় পার হয়ে সাত বছর চলছিল। ফলে কোন হাদীসে ছয় বছরের উপর অতিরিক্ত সময় বাদ দিয়ে ছয় বছর গণনা করা হয়েছে, আবার কোন হাদীসে অতিরিক্ত সময়কে পূর্ণ বছর ধরে সাত বছর গণনা করা হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
১৭। বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ১০. পিতা অপ্রাপ্ত বয়স্কা কুমারী কন্যার বিবাহ দিতে পারে
৩৩৭৩-(৭২/…) ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বাহ ও আবূ কুরায়ব (রহিমাহুমুল্লাহ) … আয়িশাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, তার ছয় বছর বয়সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বিবাহ করেন, তার নয় বছর বয়সে তিনি তাকে নিয়ে বাসর যাপন করেন এবং আঠারো বছর বয়সে তিনি ইন্তিকাল করেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৩৪৭, ইসলামীক সেন্টার ৩৩৪৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
বর্তমানে কিছু মুসলিম বলার চেষ্টা করে যে নয় বছর বয়সে আয়িশা বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছানোর পর মুহাম্মাদ তাঁর সাথে যৌনসঙ্গম করে এবং ইসলামে বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছানোর আগে যৌনসঙ্গম করা নিষিদ্ধ। কিন্তু, কোরআন, হাদীস অথবা প্রাচীন আলেমদের বক্তব্যে এমন কোনো নিষেধাজ্ঞার কথা পাওয়া যায়না। বরং দেখা যায় যে অপ্রাপ্তবয়স্ক যৌনদাসীদের সাথে সঙ্গম করা সাহাবীদের কাছে সাধারণ ঘটনা ছিল [35]। আসুন আয়িশার বিবাহ সম্পর্কে আবদুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের বক্তব্য শুনে নিই,
আয়িশার জন্ম কত সালে?
সহিহ হাদিস থেকে জানা যায়, নবী মুহাম্মদের মৃত্যুর সময় আয়িশার বয়স ছিল ১৮ বছর। [34] নবী মুহাম্মদের মৃত্যু হয়েছিল ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে। সেই হিসেবে আয়িশার জন্ম হয়েছিল ৬১৩ বা ৬১৪ খ্রিষ্টাব্দে।
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
১৭। বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ১০. পিতা অপ্রাপ্ত বয়স্কা কুমারী কন্যার বিবাহ দিতে পারে
৩৩৭৩-(৭২/…) ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বাহ ও আবূ কুরায়ব (রহিমাহুমুল্লাহ) … আয়িশাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, তার ছয় বছর বয়সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বিবাহ করেন, তার নয় বছর বয়সে তিনি তাকে নিয়ে বাসর যাপন করেন এবং আঠারো বছর বয়সে তিনি ইন্তিকাল করেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৩৪৭, ইসলামীক সেন্টার ৩৩৪৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
আসহাবে রাসূলের জীবনকথা গ্রন্থে আরো স্পষ্টভাবে আয়িশার জন্মসাল উল্লেখ করা হয়েছে বেশ কিছু দলিল সহকারে [36] –
আসুন পুরো বিষয়টি চিত্রের সাহায্যে দেখে নিই,
ঘটনা | সময়কাল |
আয়িশার জন্ম | ৬১৩ – ৬১৪ খ্রিস্টাব্দ |
মুহাম্মদের সাথে বিবাহ | ৬২০ খ্রিস্টাব্দ |
মুহাম্মদের হিজরত | ৬২২ খ্রিস্টাব্দ |
মুহাম্মদের সাথে সহবাস | ৬২৩ খ্রিস্টাব্দ |
মুহাম্মদের মৃত্যু | ৬৩২ খ্রিস্টাব্দ |
আয়িশার মৃত্যু | ৬৭৮ খ্রিস্টাব্দ |
আরবে বছরের হিসেব কীভাবে হতো?
প্রাচীন আরবে মানুষের বছর গণনা ছিল চন্দ্রবছরের হিসেব ধরে। চন্দ্রবছরকে ইংরেজিতে বলা হয় Lunar Years, আর আমরা বর্তমান সময়ে যেভাবে বছর গণনা করি সেটিকে বলা হয় সৌর বছর বা Solar Years। নবী মুহাম্মদের সময় মানুষের বয়স গণনা করা হতো চন্দ্রবছরের হিসেবে। সমস্যা হচ্ছে, চন্দ্র বছরের হিসেবে বছরে হচ্ছে ৩৫৪ দিন, আর বর্তমানে সৌর বছরে সর্বমোট দিন হচ্ছে প্রায় ৩৬৫ দিন ৫ ঘন্টা ৪৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড। কিন্তু প্রচলিত গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি মতে বছর হিসাব করা হয় ৩৬৫ দিনে।
A lunar year has approximately 354 days. A solar year has 365 days. [37]
- তাহলে, হাদিস অনুসারে আয়িশার বয়স ৬ বছর মানে হচ্ছে, আয়িশার বয়স আসলে ছিল ৬ X ৩৫৪= ২১২৪ দিন।
- সেই হিসেবে, বর্তমান সৌরবছরের হিসেবে আয়িশার বয়স সেই সময়ে ছিল ২১২৪ ÷ ৩৬৫ = ৫ বছর ১০ মাস
- আবার, হাদিস অনুসারে আয়িশার বয়স ৯ বছর মানে হচ্ছে, আয়িশার বয়স আসলে ছিল ৯ X ৩৫৪= ৩১৮৬ দিন।
- সেই হিসেবে, বর্তমান সৌরবছরের হিসেবে আয়িশার বয়স সেই সময়ে ছিল ৩১৮৬ ÷ ৩৬৫ = ৮ বছর ৮ মাস ২৬ দিন।
খাজিদার মৃত্যু ও আয়িশাকে বিবাহ
এখানে একটি প্রশ্ন আমাদের মনে জাগতেই পারে যে, যেই খাদিজা সর্বদা নবীর সমর্থক ছিলেন, যেই নবী খাদিজাকে এত ভালবাসতেন, তিনি খাদিজার মৃত্যুর কতদিন পরে আয়িশাকে বিবাহ করেছিলেন? সাধারণত আমাদের প্রেমময় স্বামী বা স্ত্রী মারা গেলে, আমরা অনেকেই বহুবছর শোকের মধ্যে থাকি। সেই সময়ে অন্য কোন বিবাহের কথা আমাদের মাথাতেই আসে না। অনেক বছর কেটে গেলে সময়ের সাথে সাথে শোক কমতে থাকলে হয়তো আমাদের মধ্যে অনেকে আবারো বিয়ের কথা ভাবে। এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থাকে পরিবারে কোন বাচ্চা থাকলে। বাচ্চাকাচ্চা থাকলে অনেকেই হয়তো খুব দ্রুতই বিয়ে করে ফেলতে পারে। কারণ নতুন স্ত্রী এসে সেই বাচ্চাদের মায়ের আদর দিতে পারবে। কিন্তু আয়িশার ক্ষেত্রে তো সেটিও সম্ভব নয়। কারণ আয়িশা নিজেই ছিলেন শিশু। অন্য শিশুকে দেখভাল বা মায়ের আদর দেয়া তার পক্ষে তো সম্ভব নয়। তাহলে আসুন দেখে নিই, ইসলামের ওপর গবেষকদের মত অনুসারে খাদিজার মৃত্যুর কতদিন পরে মুহাম্মদ আয়িশাকে বিয়ে করেছিল [38] –
অধিকাংশ গবেষকের সিদ্ধান্ত এবং নির্ভরযোগ্য বর্ণনাসমূহের গরিষ্ঠ অংশ যা সমর্থন করে তা হলো, খাদীজা (রা) নুবুওয়াতের দশম বছরে হিজরাতের তিন বছর পূর্বে রমজান মাসে ইনতিকাল করেন এবং তার একমাস পরে শাওয়াল মাসে রাসূলুল্লাহ (সা) আয়িশাকে (রা) বিয়ে করেন। তখন আয়িশার (রা) বয়স ছয় বছর। এই হিসাবে হিজরাত-পূর্ব তিন সনের শাওয়াল, মুতাবিক ৬২০ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে আয়িশার (রা) বিয়ে হয়। আল-ইসতী’য়াব গ্রন্থকার ইবন আবদিল বার এই মত সমর্থন করেছেন। মূলত বিয়ে হয়েছিল খাদীজার (রা) ওফাতের বছরেই এবং স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয় তিন বছর পরে যখন নয় বছর বয়সে তাঁকে ঘরে তুলে নেন।
আয়িশাই একমাত্র নন
মুহাম্মদ যে শুধু অপ্রাপ্তবয়ষ্ক আয়িশার প্রতিই আকর্ষিত ছিলেন, তা কিন্তু নয়। এমনকি, হামাগুড়ি দেয়া কচি শিশু দেখেও তিনি তাকে বিবাহ করতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। মানে, হামাগুড়ি দেয়া শিশু দেখলেও উনার মনে বিবাহের ইচ্ছা জাগতো। যার রেফারেন্স পাওয়া যায় ইবনে ইসহাকের গ্রন্থে। [39] ।
একই বিষয় পাবেন Guillaume এর সিরাত গ্রন্থ থেকে [40]
মুসনাদে আহমাদ হচ্ছে হাম্বলি মাযহাব এর প্রধান ইমাম প্রখ্যাত ইসলামী স্কলার আহমদ ইবনে হাম্বল দ্বারা সংগৃহীত হাদীসের এক বিশাল সংগ্রহ। উনার গ্রন্থে বলা আছে, [41]
حدثنا يعقوب قال حدثنا أبي عن ابن إسحاق قال وحدثني حسين بن عبد الله بن عباس عن عكرمة مولى عبد الله بن عباس عن عبد الله بن عباس عن أم الفضل بنت الحارث أن رسول الله صلى الله عليه وسلم رأى أم حبيبة بنت عباس وهي فوق الفطيم قالت فقال لئن بلغت بنية العباس هذه وأنا حي لأتزوجنها
এই হাদিসটির অনুবাদ দেয়া হলোঃ [42]
Muhammad saw Um Habiba, the daughter of Abbas while she was fatim (age of nursing) and he said, “If she grows up while I am still alive, I will marry her.
Musnad Ahmad, Number 25636
বাঙলা অনুবাদ,
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস উম্মে ফজল বিনতে হারেস থেকে বর্ণনা করেন : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্বাসের ‘দুগ্ধপোষ্য শিশু’ বয়সে দেখে বলেন, যদি আব্বাসের মেয়ে বালেগা (প্রাপ্তবয়স্ক) হয় আর আমি ততদিন বেঁচে থাকি তাহলে অবশ্যই আমি তাকে বিয়ে করব।
এবারে সরাসরি বুখারী হাদিস থেকেই একটি হাদিস দিচ্ছি, পাঠকগণ হাদিসটি মন দিয়ে পড়ুন। হাদিসে বর্ণিত হচ্ছে, নবী একজন রাজকন্যাকে হুকুম করেন, নবীর কাছে নিজেকে সমর্পন করতে। রাজকন্যা বললেন, কোন বাজারি লোকের কাছে সে নিজেকে সমর্পন করতে পারবে না। এরপরে নবী তার গায়ে হাত দিলেন। তখন সেই রাজকন্যা আল্লাহর দোহাই দিয়ে নবীর থেকে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করলেন। আল্লাহর দোহাই দেয়ার পরে নবী তাকে ছেড়ে দিলেন। হাদিসটি বর্তমান সময়ে হলে, নবী মুহাম্মদ নির্ঘাত মামলায় ফেসে যেতেন, একজন নারীকে যৌনতার জন্য জোরাজুরি করার অভিযোগে। কিন্তু উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, সেই মেয়েটি ছিল খুবই অল্পবয়সী। তার Wet Nurse অর্থাৎ যে ধাত্রী শিশুকে মায়ের বদলে স্তন্য দেয়, সেই ধাত্রীও তার সাথে ছিল। প্রাপ্তবয়ষ্ক রাজকুমারির সাথে নইলে Wet Nurse থাকবে কেন? [43]
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
৬৮/ ত্বলাক
পরিচ্ছেদঃ ৬৮/৩. ত্বলাক্ব দেয়ার সময় স্বামী কি তার স্ত্রীর সম্মুখে ত্বলাক্ব দেবে?
৫২৫৫. আবূ উসায়দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে বের হয়ে শাওত নামক বাগানের নিকট দিয়ে চলতে চলতে দু’টি বাগান পর্যন্ত পৌছলাম এবং এ দু’টির মাঝে বসলাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা এখানে বসে থাক। তিনি ভিতরে প্রবেশ করলেন। তখন নু’মান ইব্ন শারাহীলের কন্যা উমাইমার খেজুর বাগানস্থিত ঘরে জাওনিয়াকে আনা হয়। আর তাঁর খিদমতের জন্য ধাত্রীও ছিল। নাবী যখন তার কাছে গিয়ে বললেন, তুমি নিজেকে আমার কাছে সমর্পণ কর। তখন সে বললঃ কোন রাজকুমারী কি কোন বাজারিয়া ব্যক্তির কাছে নিজেকে সমর্পণ করে? রাবী বলেনঃ এরপর তিনি তাঁর হাত প্রসারিত করলেন তার শরীরে রাখার জন্য, যাতে সে শান্ত হয়। সে বললঃ আমি আপনার থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাই। তিনি বললেনঃ তুমি উপযুক্ত সত্তারই আশ্রয় নিয়েছ। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের নিকট বেরিয়ে আসলেন এবং বললেনঃ হে আবূ উসায়দ! তাকেদু’খানা কাতান কাপড় পরিয়ে দাও এবং তাকে তার পরিবারের নিকট পৌঁছিয়ে দাও।(৫২৫৭) আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ উসাইদ (রাঃ)
ইংরেজি অনুবাদটি দেখুনঃ
Narrated Abu Usaid:
We went out with the Prophet (ﷺ) to a garden called Ash-Shaut till we reached two walls between which we sat down. The Prophet (ﷺ) said, “Sit here,” and went in (the garden). The Jauniyya (a lady from Bani Jaun) had been brought and lodged in a house in a date-palm garden in the home of Umaima bint An- Nu`man bin Sharahil, and her wet nurse was with her. When the Prophet (ﷺ) entered upon her, he said to her, “Give me yourself (in marriage) as a gift.” She said, “Can a princess give herself in marriage to an ordinary man?” The Prophet (ﷺ) raised his hand to pat her so that she might become tranquil. She said, “I seek refuge with Allah from you.” He said, “You have sought refuge with One Who gives refuge. Then the Prophet (ﷺ) came out to us and said, “O Abu Usaid! Give her two white linen dresses to wear and let her go back to her family.”
এই হাদিসটির আরো কয়েকটি বর্ণনা রয়েছে। আসুন সেই হাদিসগুলোও পড়ে দেখি। সেগুলো পড়ার আগে মনে রাখতে হবে যে, ইসলামে প্রাপ্তবয়ষ্ক মেয়ের বিবাহের সময় মেয়ের অনুমতির প্রয়োজন হয়। অপ্রাপ্তবয়ষ্ক মেয়ের বিয়ে পিতা বা অভিভাবক চাইলেই দিতে পারেন, কন্যার তাতে সম্মতি থাকুক কিংবা না থাকুক। এই বিষয়ক দলিল প্রমাণ এই লেখাতেই পরে দেয়া হবে। সেটি মনে রেখে এই হাদিসগুলো পড়তে হবে এই কারণে যে, হাদিসগুলো পড়লেই বোঝা যায় মেয়েটির সাথে নবীর বিবাহ মেয়েটির অমতেই হয়েছিল। মেয়ের অমতে বিবাহ হতে পারে শুধুমাত্র মেয়েটি অপ্রাপ্তবয়ষ্ক হলে, তখনই। প্রাপ্তবয়ষ্ক মেয়ের বিয়েতে ইসলামী শরীয়ত অনুসারে মেয়ের সম্মতি প্রয়োজন হয়। সুতরাং এই হাদিস থেকে এটাই বোঝা যায় যে, নবী আরো একজন শিশুকেও বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু এই শিশুটি কিছুতেই নবীর কাছে নিজেকে সমর্পন করেনি। বরঞ্চ নবীকে বাজারি নিচু লোক বলে গালাগালি করে আল্লাহর কাছে পানাহ চান। যেই কারণে নবী বাধ্য হয়ে তাকে তালাক দিয়ে সঙ্গম না করেই ফেরত পাঠয়ে দেন [44] [45] –
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫৫/ তালাক
পরিচ্ছেদঃ ২০৪২. তালাক দেওয়ার সময় স্বামী কি তার স্ত্রীর সামনাসামনি হয়ে তালাক দেবে ?
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৪৮৭৭, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৫২৫৪
৪৮৭৭। হুমাইদী (রহঃ) … আওযাঈ (রহঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমি যুহরী (রহঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন সহধর্মিনা তার থেকে পরিত্রাণ চেয়েছিল? উত্তরে তিনি বললেনঃ উরওয়া আয়িশা (রাঃ) থেকে আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, জাওনের কন্যাকে যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট (একটি ঘরে) পাঠানো হল আর তিনি তার নিকটবর্তী হলেন, তখন সে বলল! আমি তোমার থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাচ্ছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তুমি তো এক মহান সত্তার কাছে পানাহ চেয়েছ তুমি তোমার পরিবারের কাছে চলে যাও।
আবূ আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (রহঃ) বলেন হাদীসটি হাজ্জাজ ইবনু আবূ মানী-ও বর্ণনা করেছেন, তার পিতামহ থেকে তিনি যুহরী থেকে, তিনি উরওয়া থেকে এবং তিনি আয়িশা (রাঃ) থেকে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আওযায়ী (রহঃ)
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫৫/ তালাক
পরিচ্ছেদঃ ২০৪২. তালাক দেওয়ার সময় স্বামী কি তার স্ত্রীর সামনাসামনি হয়ে তালাক দেবে ?
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৪৮৭৮, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৫২৫৫ – ৫২৫৭
৪৮৭৮। আবূ নুয়ায়ম (রহঃ) … আবূ উসায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে বের হয়ে শাওত নামক বাগানের নিকট দিয়ে চলতে চলতে দুটি বাগান পর্যন্ত পৌহুলাম এবং এ দুটির মাঝখানে বসে পড়লাম। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা এখানে বসে থাক। তিনি (ভিতবে) প্রবেশ করলেন। তখন নূমান ইবনু শারাহীলের কন্যা জুয়াইনাকে উমাইমার খেজুর বাগানস্থিত ঘরে পৌছান হয়। আর তার সাথে তার সেবার জনা ধাত্রীও ছিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তার কাছে গিয়ে বললেন, তুমি নিজেকে আমার কাছে সমর্পণ কর। তখন সে বললঃ কোন রাজকুমারী কি কোন বাজারী (নীচ) ব্যাক্তির কাছে নিজেকে সমর্পণ করে?
রাবী বলেনঃ এরপর তিনি তার হাত প্রসারিত করলেন তার শরীরে রাখার জন্যা যাতে সে শান্ত হয়। সে বলল আমি তোমার থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাই। তিনি বললেনঃ তুমি উপযুক্ত সত্তারই আশ্রয় নিয়েছ। এরপর তিনি আমাদের নিকট বেরিয়ে আসলেন এবং বললেনঃ হে আবূ উসায়দ! তাকে দুখানা কাতান কাপড় পরিয়ে দাও এবং তাকে তার পরিবারের নিকট পৌছিয়ে দাও।
হুসাইন ইবনু ওয়ালীদ নিশাপুরী (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ ও আবূ উসায়দ (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন। তারা বলেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমাইয়া বিনত শারাহীলকে বিবাহ করেন। পরে তাকে তার কাছে আনা হলে তিনি তার দিকে হাত বাড়ালেন। সে এটি অপছন্দ করল। এরপর তিনি আবূ উসায়দকে নির্দেশ দিলেন, তার জিনিস গুটিয়ে এবং দু-খানা কাতান বস্ত্র পরিয়ে তাকে তার পরিবারে পৌছে দিতে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih) বর্ণনাকারীঃ আবূ উসাইদ (রাঃ)
বিয়ের প্রস্তাবে বিব্রত আবু বকর
সহি হাদিস থেকেই জানা যায়, নবী মুহাম্মদ আবু বকরের কাছে আয়িশাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এই কথা শূনে প্রাথমিকভাবেই খুবই বিব্রত হয়ে যান আবু বকর, যা তার উক্তি থেকেই বোঝা যায়। সহি হাদিসটি পড়ে দেখুন, [46]
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/১১. বয়স্ক পুরুষের সঙ্গে অল্প বয়স্কা মেয়েদের বিয়ে।
৫০৮১. ‘উরওয়াহ (রহঃ) বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বাকর (রাঃ)-এর কাছে ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর বিয়ের পয়গাম দিলেন। আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, আমি আপনার ভাই। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি আমার আল্লাহর দ্বীনের এবং কিতাবের ভাই। কিন্তু সে আমার জন্য হালাল। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭০৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১০)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উরওয়াহ (রহঃ)
(11)Chapter: The marrying of young lady to an elderly man(11)
Narrated ‘Urwa:
The Prophet (ﷺ) asked Abu Bakr for `Aisha’s hand in marriage. Abu Bakr said “But I am your brother.” The Prophet (ﷺ) said, “You are my brother in Allah’s religion and His Book, but she (Aisha) is lawful for me to marry.”
Reference : Sahih al-Bukhari 5081
In-book reference : Book 67, Hadith 19
USC-MSA web (English) reference : Vol. 7, Book 62, Hadith 18
(deprecated numbering scheme)
এবারে আসুন আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থ থেকে এই বিবাহের প্রস্তাবনার বিষয়টি জেনে নিই [47] –
জাতে মাতাল তালে ঠিক
বাঙলায় একটি প্রবাদ প্রচলিত রয়েছে, জাতে মাতাল তালে ঠিক। নিজে আবু বকরের অল্পবয়সী মেয়ে বিয়ে করতে চাইলেও, মুহাম্মদের কন্যা ফাতিমাকে যখন আবু বকর এবং উমর বিবাহ করতে চায়, আবু বকর এবং উমর বেশি বয়ষ্ক হওয়ায় তাদের সাথে বিয়ে দেন নি মুহাম্মদ। বিয়ে দিয়েছিলেন অল্পবয়সী আলীর সাথে। মানে, নিজের মেয়ের বেলাতে তিনি ঠিকই বুঝেছিলেন, এত বেশি বয়সী লোকের সাথে তার মেয়েকে বিয়ে দেয়া ঠিক হবে না। চিন্তা করে দেখুন, নিজের বেলায় কিন্তু তিনি তালে ঠিক ছিলেন [48] [49]
অনেকেই দাবী করে থাকেন, ১৪শ বছর আগে কম বয়সেই মেয়েদের বিয়ে হওয়া স্বাভাবিক ছিল। সেটি অবশ্যই সত্য, তবে সেই সময়েও অল্পবয়সী মেয়েদের অল্পবয়সী ছেলেদের সাথে বিয়ে হওয়াটিই ছিল স্বাভাবিক। বেশি বয়সের পুরুষের সাথে অল্পবয়সী মেয়ের বিয়ে সচেতন পিতামাতা মেনে নিতেন না। এমনকি, নবী নিজেই সেটি মেনে নেন নি, যার প্রমাণ এই হাদিসটি। তবে নিজে বেশি বয়সী হয়েও বিয়ে করেছিলেন আয়িশাকে।
সূনান নাসাঈ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
২৬/ নিকাহ (বিবাহ)
পরিচ্ছেদঃ ৭. সম-বয়সীকে বিবাহ করা
৩২২৪. হুসায়ন ইবন হুরায়াছ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবন বুরায়দা (রহঃ) তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন, আবু বকর এবং উমর (রাঃ) ফাতিমা (রাঃ)-এর বিবাহের পয়গাম পাঠালে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সে তো অল্প বয়স্ক। এরপর আলী (রঃ) প্রস্তাব করলে তিনি তাঁর সাথে বিবাহ দিলেন।
তাহক্বীকঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবনু বুরয়দাহ্ (রহঃ)
আরো আছে। হযরত মুহাম্মদ নিজে অনেকগুলো বিবাহ করেছেন, দাসীদের সাথেও সহবত করেছেন। এবং প্রায়শই বিবি দাসী এদের নিয়ে রীতিমত ঝগড়াঝাঁটি হয়ে গেছে, যা সামাল দিতে আল্লাহপাকের হুমকিধামকি সহ আয়াত পর্যন্ত নাজিল করতে হয়েছে। নবী মুহাম্মদ অল্পবয়সী শিশু স্ত্রী আয়িশাকে বেশি ভালবাসতেন যেটি সর্বজনবিদিত। মজার কথা হচ্ছে, নিজে এতগুলো বিয়ে করলেও, নিজের মেয়ের জামাইকে কিন্তু তিনি আর কোন বিয়ে করতে দেন নি। সেখানে তিনি জাতে মাতাল তালে ঠিক। বাপ তো! কীভাবে মেয়ের জন্য সতীন আনার অনুমতি দেন! কিন্তু তিনি যাদের বিয়ে করেছেন, তারাও যে কারো না কারো কন্যা ছিল, এই কথাটি উনি ভুলেই গেছেন। তারাও যে সতীন ঘরে আসলে কষ্ট পেতো, সেটি তিনি ভাবেন নি [50] [51]।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫৪/ বিয়ে-শাদী
পরিচ্ছদঃ ২৫৩৩. কন্যার মধ্যে ঈর্ষা সৃষ্টি হওয়া থেকে বাধা প্রদান এবং ইনসাফমূলক কথা
৪৮৫০। কুতায়বা (রহঃ) … মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মিম্বরে বসে বলতে শুনেছি যে, বনি হিশাম ইবনু মুগীরা, আলী ইবনু আবূ তালিবের কাছে তাদের মেয়ে শাদী দেবার জন্য আমার কাছে অনুমতি চেয়েছে; কিন্তু আমি অনুমতি দেব না, আমি অনুমতি দেব না, আমি অনুমতি দেব না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আলী ইবনু আবূ তালিব আমার কন্যাকে তালাক দেয় এবং এর পরেই সে তাদের মেয়েকে শাদী করতে পারে। কেননা, ফাতেমা হচ্ছে আমার কলিজার টুকরা এবং সে যা ঘৃণা করে, আমিও তা ঘৃণা করি এবং তাকে যা কষ্ট দেয়, তা আমাকেও কষ্ট দেয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
কেউ কেউ দাবী করবেন, আলীকে মুহাম্মদ আরেকটি বিয়ে করতে নিষেধ করেছিলেন কারণ আলীর আলীর বিয়ের প্রস্তাবটি এসেছিল কাফেরদের পরিবার কাছ থেকে। এই তথ্যটিও সম্পূর্ণ মিথ্যা। কারণ আলী ফাতিমার মৃত্যু পর্যন্ত আর একটি বিয়েও করতে পারেননি, নবীর এই নিষেধাজ্ঞার জন্য। নবী তার প্রিয় কন্যার যেন সতীন না থাকে, সেইদিকে কড়া নজর রেখেছেন। [52]
নবী আয়িশার জন্য অপেক্ষা করেছিলেন?
অনেক ইসলামিস্টই আজকাল দাবী করেন, নবী মুহাম্মদ ছয় বছর বয়সে আয়িশাকে বিয়ে করে তারপরে তিন বছর অপেক্ষা করেছিলেন, আয়িশার প্রাপ্তবয়ষ্ক হওয়ার জন্য। কিন্তু কথাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। যার প্রমাণ আমরা পাই ইবনে সা’দের তাবাকাত গ্রন্থ থেকে [53]। সত্য হচ্ছে, সেই সময়ে নবীর কাছে দেনমোহর দেয়ার মত অর্থ ছিল না, তাই আবু বকরের কাছ থেকেই ঋণ নিয়ে তিনি আয়িশাকে তুলে এনেছিলেন।
হিজরতের পর আবু বকর(রাঃ), রাসূল এর নিকট আরজ করলেন, “হে আল্লাহর রাসূল! আপনার স্ত্রীকে ঘরে আনছেন না কেন? প্রিয়নবী বললেন, “এই মুহূর্তে মোহর পরিশোধ করার মতো অর্থ আমার কাছে নেই। আবু বকর(রাঃ) অনুরোধ করলেন- যদি আমার অর্থ কবুল করতেন। তখন রাসূল, আবু বকর(রা:) এর কাছ থেকে অর্থ ঋণ নিয়ে আয়িশা(রাঃ) এর নিকট পাঠিয়ে দিলেন।
বর্ণনাটি তাবারীর ইতিহাস গ্রন্থেও পাওয়া যায় [54]
A’ishah, daughter of Abu Bakr.
Her mother was Umm Ruman bt. ‘Umayr b. ‘Amr, of the Banu Duhman b. al-Harith b. Ghanm b. Malik b. Kinanah.
The Prophet married ‘A’ishah in Shawwal in the tenth year after the (beginning of his) prophethood, three years before Emigration. He consummated the marriage in Shawwal, eight months after Emigration. On the day he consummated the marriage with her she was nine years old.
According to Ibn ‘Umayr (al-Waqidi)- Musa b. Muhammad b. ‘Abd al-Rahman- Raytah- ‘Amrah (bt. ‘Abd al-Rahman b. Sa’d): ‘A’ishah was asked when the Prophet consummated his marriage with her, and she said:
The Prophet left us and his daughters behind when he emigrated to Medina. Having arrived at Medina, he sent Zayd b. Harithah and his client Abu Rafi’ for us. He gave them two camels and 500 dirhams he had taken from Abu Bakr to buy (other) beasts they needed. Abu Bakr sent with them ‘Abdallah b. Urayqit al-Dili, with two or three camels. He wrote to (his son) ‘Abdallah b. Abi Bakr to take his wife Umm Ruman, together with me and my sister Asma’, al-Zubayr’s wife, (and leave for Medina). They all left (Medina) together, and when they arrived at Qudayd Zayd b. Harithah bought three camels with those 500 dirhams. All of them then entered Mecca, where they met Talhah b. ‘Ubaydallah on his way to leave town, together with Abu Bakr’s family. So we all left: Zayd b. Harithah, Abu Rafi’, Fatimah, Umm Kulthum, and Sawdah bt. Zam‘ah. Ayd mounted Umm Ayman and (his son) Usamah b. Zayd on a riding beast; ‘Abdallah b. Abi Bakr took Umm Ruman and his two sisters, and Talhah b. ‘Ubaydallah came (too). We all went together, and when we reached Bayd in Tamanni my camel broke loose. I was sitting in the litter together with my mother, and she started exclaiming “Alas, my daughter, alas (you) bride”; then they caught up with our camel, after it had safely descended the Lift. We then arrived at Medina, and I stayed with Abu Bakr’s children, and (Abu Bakr) went to the Prophet. The latter was then busy building the mosque and our homes around it, where he (later) housed his wives. We stayed in Abu Bakr’s house for a few days; then Abu Bakr asked (the Prophet) “O Messenger of God, what prevents you from consummating the marriage with your wife?” The Prophet said “The bridal gift (sadaq).” Abu Bakr gave him the bridal gift, twelve and a half ounces (of gold), and the Prophet sent for us. He consummated our marriage in my house, the one where I live now and where he passed away.
শিশু আয়িশাকে স্বপ্নে দেখতেন মুহাম্মদ
নবী মুহাম্মদ শিশু আয়িশাকে বিয়ের আগে স্বপ্নে দেখতেন [55]। স্বপ্নগুলোও খুবই আগ্রহ উদ্দীপক। কারণ এরকম স্বপ্ন আমি কোন শিশু মেয়ে সম্পর্কে দেখলে(যদিও আমি সেরকম স্বপ্নও দেখবো না) ঘুণাক্ষরেও আমার মাথায় বিবাহের কথা আসতো না। হয়তো তখন আমি মেয়েটিকে নিজের আপন মেয়ের মতই ভাবতাম। কিন্তু নবী এই স্বপ্ন দেখে কীভাবে বুঝলেন যে, আল্লাহ তাকে ঐ শিশু কন্যাকে বিবাহ করতে হুকুম দিচ্ছেন, এটিও এক বিষ্ময়কর ব্যাপার!
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫৪/ বিয়ে-শাদী
পরিচ্ছেদঃ ২৪৩৪. কুমারী মেয়ের শাদী সম্পর্কে। ইবন আবী মুলায়কা (র) বলেন, ইবন আব্বাস (রা) আয়িশা (রা)-কে বললেন, আপনাকে ছাড়া নবী (সা) আর কোন কুমারী মেয়ে শাদী করেননি।
৪৭০৭। উবায়দুল্লাহ্ ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দু’বার করে আমাকে স্বপ্নযোগে তোমাকে দেখানো হয়েছে। এক ব্যাক্তি রেশমী কাপড়ে জড়িয়ে তোমাকে নিয়ে যাচ্ছিল, আমাকে দেখে বলল, এই হচ্ছে তোমার স্ত্রী। তখন আমি পর্দা খুলে দেখি, সে তুমিই। তখন আমি বললাম, এ স্বপ্ন যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, তবে তিনি বাস্তবে পরিণত করবেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
এবারে আসুন মিজানুর রহমান আজহারীর বক্তব্য শুনি। এই লেখাতেই জানবেন, খাদিজার মৃত্যুর একমাসের মধ্যে আয়িশাকে মুহাম্মদ বিয়ে করেছিল। মুহাম্মদের বয়স তখন ৫০+, আয়িশার বয়স ৬ এর কম। অর্থাৎ, খাদিজার মৃত্যুর সপ্তাহ খানেক পরেই মুহাম্মদ আয়িশাকে স্বপ্নে দেখতে শুরু করেছে, এবং এই শিশু মেয়েকে দেখেই সে বিয়ে করার আগ্রহ তৈরি হয়েছে। একটি শিশু মেয়েকে দেখে বিয়ে বা প্রেমের চিন্তা এত বয়ষ্ক একজন মানুষের মাথায় আসে কীভাবে!
অল্পবয়সী মেয়ে বিয়ের পরামর্শ
নবী মুহাম্মদ তার সাহাবীদের অল্পবয়সী কুমারী মেয়ে বিয়ে করতে অনুপ্রাণিত করতেন। এই বিষয়ে বেশ কিছু হাদিস রয়েছে। [56] [57]
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
৬৭/ বিয়ে
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/১০. ত্বলাক্বপ্রাপ্তা অথবা বিধবামেয়েকে বিয়ে করা।
৫০৮০. জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বিয়ে করলে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কেমন মেয়ে বিয়ে করেছ? আমি বললাম, পূর্ব বিবাহিতা মেয়েকে বিয়ে করেছি। তিনি বললেন, কুমারী মেয়ে এবং তাদের কৌতুক তুমি চাও না? (রাবী মুহাজির বলেন) আমি এ ঘটনা ‘আমর ইবনু দ্বীনার (রাঃ)-কে জানালে তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেন, তুমি কেন কুমারী মেয়েকে বিয়ে করলে না, যার সাথে তুমি খেলা-কৌতুক করতে এবং সে তোমার সাথে খেলা-কৌতুক করত? (৪৪৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৭০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ)
সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
৯/ বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ১৩. কুমারী মেয়েকে বিয়ে করা
১১০০। জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, এক মহিলাকে বিয়ে করে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটে গেলাম। তিনি বললেনঃ হে জাবির! তুমি কি বিয়ে করেছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ কুমারী মেয়ে না বিধবা মেয়ে?
আমি বললাম, না, বরং বিধবা। তিনি বললেনঃ কুমারী মেয়েকে বিয়ে করলে না কেন? তাহলে তার সাথে তুমিও আনন্দ করতে পারতে এবং তোমার সাথে সেও আমোদ-প্রমোদ করতে পারত। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! মৃত্যুর সময় আবদুল্লাহ (আমার পিতা) সাতটি অথবা নয়টি মেয়ে রেখে গেছেন। এজন্য এমন মহিলাকে এনেছি যেন সে তাদের দেখাশোনা করতে পারে। আমার জন্য তখন তিনি দু’আ করলেন।
— সহীহ, ইরওয়া (১৭৮), বুখারী, মুসলিম
উবাই ইবনু কাব ও কাব ইবনু উজরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। জাবির (রাঃ)-এর হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ)
সরাসরি ইবনে মাজাহ গ্রন্থ থেকেও হাদিসগুলো দেখি [58]
কুমারী মেয়েদের প্রতি আসক্তি
নবী মুহাম্মদের কুমারী মেয়েদের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি ছিল। যেই কারণে তিনি অকুমারী স্ত্রীদের সাথে তিনরাত থাকলে কুমারী স্ত্রীর সাথে থাকতেন সাতরাত। [59]
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
৬৭/ বিয়ে
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/১০১. যখন কেউ সাইয়্যেবা স্ত্রী থাকা অবস্থায় কুমারী মেয়ে বিয়ে করে।
৬৭/১০০. অধ্যায়ঃ আপন স্ত্রীদের মধ্যে ইনসাফ করা।
আল্লাহ্ বলেন, ‘‘তোমরা কক্ষনো স্ত্রীদের মধ্যে সমতা রক্ষা করতে পারবে না যদিও প্রবল ইচ্ছে কর….আল্লাহ প্রশস্ততার অধিকারী, মহাকুশলী।’’ (সূরাহ আন্-নিসা ৪/১২৯-১৩০)
৫২১৩. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নত এই যে, যদি কেউ কুমারী মেয়ে বিয়ে করে, তবে তার সঙ্গে সাত দিন-রাত্রি যাপন করতে হবে আর যদি কেউ কোন বিধবা মহিলাকে বিয়ে করে, তাহলে তার সঙ্গে তিন দিন যাপন করতে হবে। (৫২১৪; মুসলিম ১৭/১২, হাঃ ১৪৬১, আহমাদ ১২৯৭০) (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
কুমারীদের যোনীপথ উষ্ণ
নবী মুহাম্মদ বলেছেন, কুমারী মেয়েদের যোনীপথ অপেক্ষাকৃত উষ্ণ হয়। তাই তিনি কুমারী বিয়ে করার পরামর্শ দিয়েছেন। কতটা ভয়ঙ্কর মন মানসিকতার হলে কেউ এরকম কথা বলতে পারে, ভেবে অবাক লাগে! [60] [61]
হাদীস সম্ভার
অধ্যায়ঃ ২৪/ বিবাহ ও দাম্পত্য
পরিচ্ছেদঃ স্ত্রী নির্বাচন
(২৫৫৮) একাধিক সাহাবী কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা কুমারী বিবাহ কর। কারণ কুমারীদের মুখ অধিক মিষ্টি, তাদের গর্ভাশয় অধিক সন্তানধারী, তাদের যোনীপথ অধিক উষ্ণ, তারা ছলনায় কম হয় এবং স্বল্পে অধিক সমত্মুষ্ট থাকে।
(ইবনে মাজাহ ১৮৬১, ইবনুস সুন্নী, ত্বাবারানী, সিঃ সহীহাহ ৬২৩, সহীহুল জামে’ হা/ ৪০৫৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সুনান ইবনু মাজাহ
৯/ বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ৯/৭. কুমারী মহিলা বিবাহ করা।
২/১৮৬১। উতবা ইবনু ‘উআয়ম ইবনু সাঈদা আল-আনসারী (রহ.) থেকে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ বলেছেনঃ তোমাদের কুমারী মেয়ে বিবাহ করা উচিত। কেননা তারা মিষ্টিমুখী, নির্মল জরায়ুধারী এবং অল্পতেই তুষ্ট হয়। হাসান,
হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। সহীহাহ ৬২৩।
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
আয়িশা কী বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছেছিলেন?
সুনানে আবু দাউদ হাদিস গ্রন্থ এবং এর শরহে বা ব্যাখ্যা গ্রন্থে বলা হয়েছে, নয় বছর বয়সে আয়িশার সাথে নবীর সহবাস হয় [62]-
আয়িশা দ্বারা বর্ণিত সহীহ মুসলিমের একটি হাদীসে পাওয়া যায়, আয়িশা নয় বছর বয়সে মুহাম্মাদের ঘরে গমন করেন এবং সেই সময় তাঁর সঙ্গে তাঁর খেলার পুতুলগুলিও ছিল [63] [64] [65]। সহীহ বুখারীতেও অনুরূপ হাদিস পাওয়া যায় [66]
নিচের হাদিসগুলো লক্ষ্য করুন। আয়িশা মুহাম্মদের ঘরে যাওয়ার পরেও আয়িশা পুতুল দিয়ে খেলা করতো। কারণ আয়িশার তখন পর্যন্ত ঋতুস্রাব শুরু হয় নি। সেই কারণে কাপড়ের তৈরি পুতুল তার জন্য হালাল ছিল।
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
অধ্যায়ঃ ৬৫/ আচার ব্যবহার
পরিচ্ছেদঃ ২৫১৪. মানুষের সাথে হাসিমুখে মেলামেশা করা। ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) বলেন, মানুষের সাথে এমনভাবে মেলামেশা করবে, যেন তাতে তোমার দ্বীনে আঘাত না লাগে। আর পরিবারের সঙ্গে হাসি তামাশা করা।
৫৭০০। মুহাম্মাদ (রহঃ) … আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনেই আমি পুতুল বানিয়ে খেলতাম। আমার বান্ধবীরাও আমার সঙ্গে খেলতো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে প্রবেশ করলে তারা দৌড়ে পালাত। তখন তিনি তাদের ডেকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিতেন এবং তারা আমার সঙ্গে খেলা করত।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
Narrated `Aisha:
I used to play with the dolls in the presence of the Prophet, and my girl friends also used to play with me. When Allah’s Messenger (ﷺ) used to enter (my dwelling place) they used to hide themselves, but the Prophet would call them to join and play with me. (The playing with the dolls and similar images is forbidden, but it was allowed for `Aisha at that time, as she was a little girl, not yet reached the age of puberty.)
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
১৭। বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ১০. পিতা অপ্রাপ্ত বয়স্কা কুমারী কন্যার বিবাহ দিতে পারে
হাদিস একাডেমি নাম্বারঃ ৩৩৭২, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৪২২
৩৩৭২-(৭১/…) আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ….. আয়িশাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তার সাত বছর বয়সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বিবাহ করেন। তাকে নয় বছর* বয়সে তার ঘরে বধুবেশে নেয়া হয় এবং তার সঙ্গে তার খেলার পুতুলগুলোও ছিল। তাঁর আঠারো বছর বয়সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তিকাল করেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৩৪৬, ইসলামীক সেন্টার ৩৩৪৫)
* তিনি বলেন যে, তার ছয় বছর বয়সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বিবাহ করেন। লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কোন হাদীসে ‘আয়িশাহ্ (রাযিঃ)-এর বিবাহ হওয়ার ছয় বছর আবার কোন হাদীসে সাত বছর বর্ণিত হয়েছে। হাদীসের ব্যাখ্যাকারদের মতে, ঐ সময় আয়িশাহ (রাযিঃ)-এর বয়স ছয় পার হয়ে সাত বছর চলছিল। ফলে কোন হাদীসে ছয় বছরের উপর অতিরিক্ত সময় বাদ দিয়ে ছয় বছর গণনা করা হয়েছে, আবার কোন হাদীসে অতিরিক্ত সময়কে পূর্ণ বছর ধরে সাত বছর গণনা করা হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৭৮/ আচার-ব্যবহার
পরিচ্ছেদঃ ৭৮/৮১. মানুষের সাথে হাসিমুখে মেলামেশা করা।
৬১৩০. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনেই আমি পুতুল বানিয়ে খেলতাম। আমার বান্ধবীরাও আমার সাথে খেলা করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে প্রবেশ করলে তারা দৌড়ে পালাত। তখন তিনি তাদের ডেকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিতেন এবং তারা আমার সঙ্গে খেলত। [মুসলিম৪৪/১৩, হাঃ ২৪৪০, আহমাদ ২৬০২০] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৬৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৮৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
সূনান আবু দাউদ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩৬/ আদব
পরিচ্ছদঃ ৬০. কাপড়ের স্ত্রী পুতুল নিয়ে খেলা করা সম্পর্কে।
৪৮৪৯. মুসাদ্দাদ (রহঃ) ………. আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি কাপড়ের তৈরী স্ত্রী পুতুল নিয়ে খেলা করতাম। অধিকাংশ সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে এমন সময় আসতেন, যখন অন্যান্য বালিকারা আমার কাছে উপস্থিত থাকতো। আর তিনি যখন ঘরে প্রবেশ করতেন, তখন তারা চলে যেত এবং যখন তিনি বাইরে যেতেন, তখন তারা আবার আসতো।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
এখন আরেকটি রেফারেন্স দেখি, [67]
এই হাদীসের ব্যাখ্যায় সহীহ বুখারীর ব্যাখ্যা গ্রন্থ নাসরুল বারীতে লেখা আছে – “সেই সময় হযরত আয়িশা নাবালিকা ছিলেন। তাই তিনি (মুহাম্মাদ) তাঁকে (আয়িশাকে) খেলার অনুমতি দিয়েছেন। কিন্তু সাবালিকা নারীদের জন্য এটা মাকরূহ।” [68]
আরো একটি হাদিস পড়ি [69] –
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
৩৬/ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ ৬২. পুতুল দ্বারা খেলা করা
৪৯৩২। আয়িশাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবূক অথবা খায়বারের যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবর্তন করলেন। ঘরের তাকের উপর পর্দা ঝুলানো ছিলো। বায়ু প্রবাহের ফলে তার এক পাশ সরে যায় যাতে তার খেলার পুতুলগুলো দৃশ্যমান হয়ে পড়ে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পুতুলগুলো দেখে বললেন, হে আয়িশাহ! এগুলো কি? উত্তরে তিনি বললেন, এগুলো অমার মেয়ে। আর তিনি এগুলোর মধ্যে কাপড়ের তৈরী দু’ ডানাবিশিষ্ট একটি ঘোড়াও দেখতে পেলেন।
তিনি প্রশ্ন করলেনঃ এগুলোর মধ্যে ওটা কি দেখতে পাচ্ছি? তিনি বললেন, ঘোড়া। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তার উপর আবার ওটা কি? তিনি বললেন, দু’টো পাখা। তিনি বললেন, এ আবার কেমন ঘোড়া, যার পাখা আছে! আমি বললাম, আপনি কি শুনেননি যে, সুলাইমান (আঃ)-এর ঘোড়ার কয়েকটি পাখা ছিলো! আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, একথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে দিলেন, যাতে আমি তাঁর সামনের সারির দাঁত দেখতে পেলাম।(1)
সহীহ।
(1). বায়হাক্বী।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
সুতরাং, দেখা যাচ্ছে যে নয় বছর বয়সে আয়িশা নাবালিকা ছিলেন, যখন মুহাম্মাদ তাঁর সাথে যৌনসঙ্গম করেন। একই কথা ‘দারুসসালাম’ প্রকাশনীর সহীহ বুখারীর অনুবাদেও বলা হয়েছে –
“The playing with the dolls and similar images is forbidden, but it was allowed for `Aisha at that time, as she was a little girl, not yet reached the age of puberty.” [70]
আসুন দারুস সালাম প্রকাশনী থেকে ছাপা হওয়া বুখারী শরীফের এই পাতাটি দেখে নিই [71] –
এই হাদীসটি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইবনু হাজার আসকালানী বলেন –
“আবু দাউদ [72] এবং আন নাসাই [73] আয়িশা থেকে বর্ণনা করেন, “রাসূলুল্লাহ তাবূক অথবা খায়বারের যুদ্ধ হতে প্রত্যাবর্তন করলেন। ঘরের তাকের উপর পর্দা ঝুলানো ছিল। বায়ু প্রবাহের ফলে তার এক পাশ সরে যায় যাতে তার খেলার পুতুলগুলো দৃশ্যমান হয়ে পড়ে। তিনি পুতুলগুলো দেখে বললেন, হে আয়িশা! এগুলো কি? উত্তরে তিনি বললেন, এগুলো আমার মেয়ে। আর তিনি এগুলোর মধ্যে কাপড়ের তৈরী দুই ডানাবিশিষ্ট একটি ঘোড়াও দেখতে পেলেন। তিনি প্রশ্ন করলেনঃ এগুলোর মধ্যে ওটা কি দেখতে পাচ্ছি? তিনি বললেন, ঘোড়া। তিনি বললেন, তার উপর আবার ওটা কি? তিনি বললেন, দু’টো পাখা। তিনি বললেন, এ আবার কেমন ঘোড়া, যার পাখা আছে! আমি বললাম, আপনি কি শুনেননি যে, সুলাইমানের ঘোড়ার কয়েকটি পাখা ছিল! আয়িশা বলেন, একথা শুনে রাসূলুল্লাহ হেসে দিলেন, যাতে আমি তাঁর সামনের সারির দাঁত দেখতে পেলাম।” আল খাত্তাবি বলেন, “আয়িশাকে পুতুল নিয়ে খেলতে দেওয়ার একমাত্র কারণ তিনি তখনও বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছাননি।” আমি (ইবনু হাজার) বলি, “ঘটনা এটিই ছিল কিনা সেই বিষয়টি প্রশ্নাতীত নয়, তবে এমনটা ঘটে থাকতে পারে, কারণ খাইবারের যুদ্ধের সময় আয়িশার বয়স ছিল চোদ্দ বছর…” [74]
Islamweb নামক ওয়েবসাইটে এই ব্যাখ্যাটির ইংরেজি অনুবাদও করা হয়েছে [75]
সুতরাং, এই আলোচনার মাধ্যমে বোঝা যায় যে এমন কোনো হাদিস নেই যা প্রমাণ করে নয় বছর বয়সে আয়িশা বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছেছিলেন। বরং সহীহ হাদীস দ্বারা দেখা যাচ্ছে যে খাইবারের যুদ্ধের সময়ও আয়িশা পুতুল নিয়ে খেলতেন, অথচ ইসলামে বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছানোর পর পুতুল নিয়ে খেলা নিষিদ্ধ। এর দ্বারা বোঝা যায় চৌদ্দ বছর বয়সেও তিনি ইসলামের সাবালিকা হওয়ার বিধান অনুসারে নাবালিকা ছিলেন। সুতরাং, বর্তমান কিছু মুসলিমদের নয় বছর বয়সে আয়িশার বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছানো বা সাবালিকা হওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এমন কোনো হাদিস থাকলে ইবনু হাজার আসকালানী সেটি উল্লেখ করে ইবনু খাত্তাবির মতকে ভুল প্রমাণিত করতে পারতেন, কিন্তু তিনি তা না করে চৌদ্দ বছরে অয়িশার বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছানোর ঘটনাটিকে সম্ভাব্য বলে স্বীকার করেছেন।
এছাড়াও, মনে রাখতে হবে, প্রাপ্তবয়ষ্ক কিংবা অপ্রাপ্তবয়ষ্ক, সকল নারীর জন্য স্বামীর যৌনচাহিদা পূরণ স্ত্রীর জন্য অবশ্য কর্তব্য। অপ্রাপ্তবয়ষ্ক নাবালিকা মেয়েকে বিয়ে দেয়ার বৈধতা ইসলামে রয়েছে। যা উপরের হাদিস থেকে প্রমাণিত। [76] [77] [78]
সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ১৭। বিবাহ
পরিচ্ছদঃ ২০. স্বামীর বিছানা পরিহার করা স্ত্রীর জন্য নিষিদ্ধ
৩৪৩৩-(১২২/…) আবূ বাকর ইবনু শায়বাহ, আবূ কুরায়ব, আবূ সাঈদ আল আশাজ্জ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহিমাহুমুল্লাহ) ….. আবূ হুরায়রাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ স্বামী যখন স্ত্রীকে বিছানায় আহবান করে এবং সে না আসায় তার স্বামী তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে রাত্রি যাপন করে, সে স্ত্রীর প্রতি ফেরেশতাগণ ভোর হওয়া পর্যন্ত লা’নাত করতে থাকে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৪০৬, ইসলামীক সেন্টার ৩৪০৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সুনানে ইবনে মাজাহ
পাবলিশারঃ তাওহীদ পাবলিকেশন
অধ্যায়ঃ ৯/ বিবাহ
২/১৮৫৩। ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুআয (রাঃ) সিরিয়া থেকে ফিরে এসে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে সাজদাহ করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ হে মু‘আয! এ কী? তিনি বলেন, আমি সিরিয়ায় গিয়ে দেখতে পাই যে, তথাকার লোকেরা তাদের ধর্মীয় নেতা ও শাসকদেরকে সাজদাহ করে। তাই আমি মনে মনে আশা পোষণ করলাম যে, আমি আপনার সামনে তাই করবো। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমরা তা করো না। কেননা আমি যদি কোন ব্যক্তিকে আল্লাহ্ ছাড়া অপর কাউকে সাজদাহ করার নির্দেশ দিতাম, তাহলে স্ত্রীকে নির্দেশ দিতাম তার স্বামীকে সাজদাহ করতে। সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! স্ত্রী তার স্বামীর প্রাপ্য অধিকার আদায় না করা পর্যন্ত তার প্রভুর প্রাপ্য অধিকার আদায় করতে সক্ষম হবে না। স্ত্রী শিবিকার মধ্যে থাকা অবস্থায় স্বামী তার সাথে জৈবিক চাহিদা পূরণ করতে চাইলে স্ত্রীর তা প্রত্যাখ্যান করা অনুচিত।
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
It was narrated that: Abdullah bin Abu Awfa said “When Muadh bin Jabal came from Sham, he prostrated to the Prophet who said: ‘What is this, O Muadh?’ He said: ‘I went to Sham and saw them prostrating to their bishops and patricians and I wanted to do that for you.’ The messenger of Allah said: ‘Do not do that. If I were to command anyone to prostrate to anyone other than Allah, I would have commanded women to prostrate to their husbands. By the One in Whose Hand is the soul of Muhammad! No woman can fulfill her duty towards Allah until she fulfills her duty towards her husband. If he asks her (for intimacy) even if she is on her camel saddle, she should not refuse.’ ”
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
অধ্যায়ঃ পর্ব-১৩ঃ বিবাহ
পাবলিশারঃ হাদিস একাডেমি
পরিচ্ছদঃ ১০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ – স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহার এবং তাদের প্রত্যেকের (স্বামী-স্ত্রীর) পারস্পরিক হক ও অধিকার সংক্রান্ত
৩২৫৫-(১৮) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি যদি কোনো মানবকে সিজদা করার নির্দেশ দিতাম, তবে স্ত্রীকে তার স্বামীর জন্য সিজদা করার নির্দেশ দিতাম। (তিরমিযী)(1)
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
অল্পবয়ষ্ক এবং হালকা গড়নের আয়িশা
এইবারে আরো কয়েকটি হাদিস পড়বো, যেখানে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে, আয়িশা সেই সময়ে নবীর ঘরেই ছিলেন, এবং আয়িশার নিজের বক্তব্য অনুসারে তিনি তখন ছিলেন সবেমাত্র বালিকা। তিনি এই হাদিসগুলোতে অল্পবয়ষ্ক বালিকাদের ইচ্ছা বা শখের মূল্যায়ন করতেও পরামর্শ দিয়েছে। [79] [80]
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
৯। দু’ ঈদের সালাত
পরিচ্ছেদঃ ৪. ঈদের দিনগুলোতে আল্লাহর নাফরমানী হয় না এমন ক্রীড়া-কৌতুক করার অবকাশ প্রদান
১৯৪৮-(১৭/…) হারূন ইবনু সাঈদ আল আয়লী (রহঃ) ….. আয়িশাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। আবূ বাকর (রাযিঃ) আইয়্যামে তাশরীকের দিনে আয়িশাহ (রাযিঃ) এর নিকট গিয়ে দেখেন যে, তার কাছে দুটি বালিকা গান করছে এবং দফ বাজাচ্ছে। আর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাদর দিয়ে মাথা ঢাকা অবস্থায় ছিলেন। আবূ বকর (রাযিঃ) এটা দেখে বালিকাদ্বয়কে খুব শাসলেন বা ধমক দিলেন। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চেহারা থেকে কাপড় সরিয়ে বলেন, হে আবূ বকর! এদেরকে ছেড়ে দাও। এ দিনগুলো হ’ল ঈদের দিন। আয়িশাহ (রাযিঃ) আরও বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখেছি তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে তার চাদর দ্বারা ঢেকে দিচ্ছেন, যখন আমি আবিসিনিয়ার যুবকদের (কৃষ্ণাঙ্গ) খেলার দৃশ্য অবলোকন করছিলাম। তখন আমি সবেমাত্র বালিকা। অতএব তোমরা অল্পবয়স্কা বালিকাদের সখের মূল্যায়ন কর। অল্পবয়স্ক বালিকারা অনেকক্ষণ আমোদ-ফুর্তিতে মেতে থাকে। (ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৯৩৩, ইসলামীক সেন্টার ১৯৪০)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
৯। দু’ ঈদের সালাত
পরিচ্ছেদঃ ৪. ঈদের দিনগুলোতে আল্লাহর নাফরমানী হয় না এমন ক্রীড়া-কৌতুক করার অবকাশ প্রদান
১৯৪৯-(১৮/…) আবূত তহির (রহঃ) ….. আয়িশাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখলাম, তিনি আমার হুজরার দরজায় দাঁড়িয়ে আছেন আর কৃষ্ণাঙ্গ যুবকেরা তাদের অস্ত্র দ্বারা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মসজিদে নবাবীতে তাদের যুদ্ধের কলাকৌশল দেখাচ্ছে। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তার চাদর দ্বারা আড়াল করে দিচ্ছেন যাতে আমি তাদের খেলা দেখতে পারি। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার জন্য দাঁড়িয়ে থাকলেন, যতক্ষণ আমি নিজে ফিরে না আসি। অতএব অল্পবয়স্কা বালিকাদের খেল-তামাশার প্রতি যে লোভ রয়েছে তার মূল্যায়ন কর (তার সখ পূর্ণ কর)। (ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৯৩৪, ইসলামীক সেন্টার ১৯৪১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
৯। দু’ ঈদের সালাত
পরিচ্ছেদঃ ৪. ঈদের দিনগুলোতে আল্লাহর নাফরমানী হয় না এমন ক্রীড়া-কৌতুক করার অবকাশ প্রদান
১৯৫০-(১৯/…) হারূন ইবনু সাঈদ আল আয়লী ও ইউনুস ইবনু আবদুল আ’লা (রহঃ) (শব্দগুলো হারূনের) …… আয়িশাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে প্রবেশ করে দেখেন, আমার কাছে দুটি বালিকা জাহিলিয়্যাত যুগে সংঘটিত বু’আস যুদ্ধের গান গাইছে। তিনি বিছানায় কাত হয়ে শুয়ে চেহারা অন্যদিকে ফিরিয়ে দিলেন। এমন সময় আবূ বকর (রাযিঃ) প্রবেশ করলেন। তিনি (এ দৃশ্য দেখে) আমাকে ধমক দিয়ে বললেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে শাইতনের বাদ্য চলছে? (এ কথা শুনে) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে ফিরে বললেন, হে আবূ বাকর! এদেরকে ছেড়ে দাও। এরপর তিনি যখন অন্যমনস্ক হলেন, আমি বালিকাদ্বয়কে আস্তে খোচা দিলাম। তারা বের হয়ে চলে গেল। এটা ঈদের ঘটনা। কৃষ্ণাঙ্গ যুবকেরা ঢাল-বল্লম দ্বারা রণকৌশল ও খেল-তামাশা করছিল। তখন হয়ত আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আবেদন করেছি না হয় তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন তুমি কি তা দেখতে আগ্রহী? আমি বললাম- জি হ্যাঁ। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে তার পিছনে এমনভাবে দাঁড় করিয়ে দিলেন যে, আমার গণ্ডদেশ তার গণ্ডদেশের উপর সংলগ্ন হ’ল। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন, হে বানী আরফিদাহ! তোমরা তোমাদের খেলা চালিয়ে যাও। অনেকক্ষণ পর আমি যখন একটু বিরক্তবোধ করলাম, তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, হয়েছে তো? আমি বললাম, জি হ্যাঁ! তিনি বললেন, তাহলে এবার যাও। (ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৯৩৫, ইসলামীক সেন্টার ১৯৪২)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
এবারে আরো কিছু হাদিস পড়ি, যেখানে নবীর সাথে বিয়ের অনেক পরের ঘটনা দেখা যাচ্ছে। এই ঘটনাটি ইসলামে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আয়িশা সম্পর্কে একটি পরকীয়া প্রেমের অভিযোগ উঠেছিল। এই সম্পর্কে আল্লাহর ওহী নাজিল হয়েছিল পরবর্তী সময়ে। দেখুন, আয়িশা নিজের সম্পর্কে কী বলছেন, যে আয়িশা ছিল হ্যাংলা পাতলা এবং অল্পবয়সী। ( বিশাল হাদিস হওয়ায় কিছু অংশ বাদ দেয়া হলো, আগ্রহী পাঠক লিঙ্কে গিয়ে পড়ুন ) [81] [82]
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪৪/ শাহাদাত
পরিচ্ছেদঃ ১৬৫৬. এক মহিলা অপর মহিলার সততা সম্পর্কে সাক্ষ্য দান
২৪৮৫। আবূ রাবী সুলাইমান ইবনু দাউদ (রহঃ) … নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, মিথ্যা অপবাদকারীরা যখন তার সম্পর্কে অপবাদ রটনা করল এবং আল্লাহ তা থেকে তার পবিত্রতা ঘোষনা করলেন। রাবীগণ বলেন, আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরে বের হওয়ার ইচ্ছা করলে স্বীয় সহধর্মিণীদের মধ্যে কুর’আ ঢালার মাধ্যমে সফর সংগিণী নির্বাচন করতেন…
আমাকে হাওদার ভিতরে সাওয়ারীতে উঠানো হতো, আবার হাওদার ভিতরে (থাকা অবস্থায়) নামানো হতো। এভাবেই আমরা সফর করতে থাকলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ যুদ্ধ শেষ করে যখন প্রত্যাবর্তন করলেন এবং আমরা মদিনার কাছে পৌছে গেলাম তখন এক রাতে তিনি (কাফেলাকে) মনযিল ত্যাগ করার ঘোষণা দিলেন। উক্ত ঘোষনা দেওয়ার সময় আমি উঠে সেনাদলকে অতিক্রম করে গেলাম এবং নিজের প্রয়োজন সেরে হাওদায় ফিরে এলাম। তখন বুকে হাত দিয়ে দেখি আযফার দেশীয় সাদাকালো পাথরের তৈরি আমার একটা মালা ছিড়ে পড়ে গেছে। তখন আমি আমার মালার সন্ধানে ফিরে গেলাম, এবং সন্ধান কার্য আমাকে দেরী করিয়ে দিলো। ওদিকে যারা আমার হাওদা উঠিয়ে দিতো তারা তা উঠিয়ে যে উটে আমি সওয়ার হতাম, তার পিঠে রেখে দিলো। তাদের ধারনা ছিলো যে, আমি হাওদাতেই আছি। তখনকার মেয়েরা হালকা পাতলা হতো, মোটা সোটা হতো না। কেননা খুব সামান্য খাবার তারা থেতে পেতো। তাই হাওদায় উঠতে গিয়ে ভার তাদের কাছে অস্বাভাবিক বলে মনে হল না।
তদুপরি সে সময় আমি অল্প বয়স্ক কিশোরী ছিলাম এবং তখন তারা হাওদা উঠিয়ে উট হাকিয়ে রওনা হয়ে গেলো। এদিকে সেনাদল চলে যাওয়ার পর আমি আমার মালা পেয়ে গেলাম। কিন্তু তাদের জায়গায় ফিরে এসে দেখি, সেখানে কেউ নেই। তখন আমি আমার জায়গায় এসে বসে থাকাই মনন্থ করলাম…
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন (বাঁদী) বারীরাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন। হে বারীরা! তুমি কি তার মধ্যে সন্দেহজনক কিছু দেখতে পেয়েছ? বারীরা বলল, আপনাকে যিনি সত্যসহ পাঠিয়েছেন, তার কসম করে বলছি, না তেমন কিছু দেখিনি এই একটি অবস্থায়ই দেখেছি যে তিনি অল্পবয়স্কা কিশোরী। আর তাই আটা-খামীর গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সেই ফাকে বকরী এসে তা খেয়ে ফেলে। সে দিনই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মসজিদে) ভাষণ দিতে দাঁড়িয়ে আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালুলের ষড়যন্ত্র থেকে বাঁচার উপায় জিজ্ঞাসা করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার পরিবারকে কেন্দ্র করে যে লোক আমাকে জ্বালাতন করেছে, তার মুকাবিলায় কে প্রতিকার করবে? আল্লাহর কসম, আমি তো আমার স্ত্রী সম্পর্কে ভালো ছাড়া অন্য কিছু জানিনা। আর এমন ব্যাক্তিকে জড়িয়ে তারা কথা তুলেছে, যার সম্পর্কে ভালো ছাড়া অন্য কিছু আমি জানিনা আর সে তো আমার সাথে ছাড়া আমার ঘরে কখনও প্রবেশ করত না…
আমি তখন অল্প বয়স্কা কিশোরী! কুরআনও খুব বেশী পড়িনি। তবুও আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমার জানতে বাকী নেই যে, লোকেরা যা রটাচ্ছে, তা আপনারা শুনতে পেয়েছেন এবং আপনাদের মনে তা বসে গেছে, ফলে আপনারা তা বিশ্বাস করে নিয়েছেন। এখন যদি আমি আপনাদের বলি যে, আমি নিষ্পাপ আর আল্লাহ জানেন, আমি অবশ্যই নিষ্পাপ, তবু আপনারা আমার সে কথা বিশ্বাস করবেন না। আর যদি আপনাদের কাছে কোন বিষয় আমি স্বীকার করি, অথচ আল্লাহ জানেন আমি নিষ্পাপ তাহলে অবশ্যই আপনারা আমাকে বিশ্বাস করে নিবেন। আল্লাহর কসম, ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এর পিতার ঘটনা ছাড়া আমি আপনাদের জন্য কোন দৃষ্টান্ত খুজে পাচ্ছি না। যখন তিনি বলেছিলেন, পূর্ণ ধৈর্যধারনই আমার জন্য শ্রেয়। আর তোমরা যা বলছো সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহই আমার সাহায্যকারী।
আবূ রাবী (রহঃ) … আয়িশা ও আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। ফুলাইহ্ (রহঃ) … কাসিম ইবনু মুহাম্মদ ইবনু আবূ বকর (রাঃ) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪৪/ শাহাদাত
পরিচ্ছেদঃ ১৬৪৩. কেউ যদি কারো সততা প্রমানের উদ্দেশ্যে বলে, একে তো ভাল বলেই জানি অথবা বলে যে, এর সম্পর্কে তো ভালো ছাড়া কিছু জানি না।
১৪৬২. পরিচ্ছেদঃ বাঁদিকেই প্রমান পেশ করতে হবে।
মহান আল্লাহ্র বাণীঃ হে মু’মিনগন! তোমরা যখন একে অন্যের সাথে নির্ধারিত সময়ের জন্য ঋনের কারবার কর তখন তা লিখে রাখবে … (২ঃ ২৮২)
এবং মহান আল্লাহ্র বাণীঃ হে মু’মিনগন! তোমরা ন্যায় বিচারে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত থাকবে আল্লাহ্র সাক্ষীস্বরূপ যদিও তা তোমাদের নিজেদের অথবা পিতামাতা এবং আত্মীয় স্বজনের বিরুদ্ধে হয় … আল্লাহ্ তার সম্যক খবর রাখেন (৪ঃ ১৩৫)
২৪৬১। হাজ্জাজ (রহঃ) … ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার নিকট আয়িশা (রাঃ) এর ঘটনা সম্পর্কে উরওয়া, ইবনু মূসায়্যাব, আলকামা, ইবনু ওয়াক্কাস এবং উবায়দুল্লাহ (রহঃ) বর্ণনা করেছেন, তাদের বর্ণিত হাদীসের এক অংশ অন্য অংশের সত্যতা প্রমাণ করে, যা অপবাদকারীরা আয়িশা (রাঃ) সম্পর্কে রটনা করেছিল। এদিকে ওয়াহী অবতরণ বিলম্বিত হল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী ও উসামা (রাঃ) কে স্বীয় সহধর্মিনীকে পৃথক রাখার ব্যাপারে পরামর্শের জন্য ডেকে পাঠালেন। উসামা (রাঃ) তখন বললেন আপনার স্ত্রী সম্পর্কে ভালো ছাড়া কিছুই আমরা জানি না। আর বারীরা (রাঃ) বললেন, তার সম্পর্কে একটি মাত্র কথাই আমি জানি, তা এই যে, অল্প বয়স হওয়ার কারণে পরিবারের লোকদের জন্য আটা খামির করার সময় তিনি ঘুমিয়ে পড়েন আর এই ফাঁকে বকরী এসে তা খেয়ে ফেলে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেন, সেই ব্যাক্তির বিরুদ্ধে কে আমাকে সাহায্য করবে; যার জ্বালাতন আমার পারিবারিক ব্যাপারে আমাকে আঘাত হেনেছে? আল্লাহর কসম আমার সহধর্মিনী সম্পর্কে আমি ভাল ছাড়া অন্য কিছু জানি না। আর এমন এক ব্যাক্তির কথা তারা বলে, যার সম্পর্কে আমি ভাল ছাড়া অন্য কিছু জানি না।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ ইবনু শিহাব আয-যুহরী (রহঃ)
আয়িশার হায়েজের বিবরণ
আপনারা ইসলামের ইতিহাস যারা পড়েছেন, তারা নিশ্চয়ই জানেন, মদিনায় হিজরতের পরে নবী প্রথমবার হজ্জ করতে এসেছিলেন ৬২৯ সালে, অর্থাৎ হিজরতের ৭ম বছরে। আয়িশার জন্ম হয়েছিল ৬১৩ বা ৬১৪ সালে। অর্থাৎ এই সময়ে তার বয়স ছিল ১৫ বছরের কাছাকাছি। এই হাদিস থেকে নিশ্চিতভাবে বোঝা যায়, এই বছরের কাছাকাছি সময়ই আয়িশার প্রথম হায়েজ হয়েছিল। কারণ, মেয়েরা সাধারণত পিরিয়ড হওয়ার শুরুর দিকেই বেশি ব্যাথা পায় এবং কান্নাকাটি করে। উল্লেখ্য, এর আগে আয়িশার হায়েজ হয়েছিল, এরকম কোন তথ্য পাওয়া যায় না। [83]। পাঠকগণ, খেয়াল করে হাদিসটির পরিচ্ছদের নামটি পড়বেন। পরিচ্ছদের নামটি আরবিতে হচ্ছে, باب كَيْفَ كَانَ بَدْءُ الْحَيْضِ। যার বাঙলা অর্থ হচ্ছে, হায়েজের সুচনা যেভাবে হলো! কার হায়েজ বা পিরিয়ডের কথা এখানে বলা হচ্ছে, বলুন তো?
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৬/ হায়য
পরিচ্ছেদঃ ২০৩। হায়যের ইতিকথা।
আর আল্লাহ্র বাণীঃ “লোকেরা তোমাকে হায়য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বল, তা অপবিত্রতা। সুতরাং হায়য অবস্থায় স্ত্রীদের থেকে দূরে থাক। আর তারা পাক-পবিত্র হওয়ার পূর্বে তাদের সাথে মিলিত হয়ো না। তারা পাক-পবিত্র হলে আল্লাহ্র নির্দেশ মুতাবিক তাদের কাছে যাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তওবাকারীদের ভালবাসেন; তিনি পবিত্রতা রক্ষাকারীদেরও ভালবাসেন।” (২ : ২২২)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এটি এমন একটি বিষয় যা আল্লাহ্ তা’আলা আদম-কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। কারো কারো মতে সর্বপ্রথম হায়য শুরু হয় বনী ইসরাঈলী মহিলাদের। আবূ আবদুল্লাহ্ বুখারী (রহঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীসই গ্রহণযোগ্য।
২৯০। আলী ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) …. আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমরা হজ্জের উদ্দেশ্যেই (মদিনা থেকে) বের হলাম। ‘সারিফ’ নামক স্থানে পৌঁছার পর আমার হায়য আসলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে আমাকে কাঁদতে দেখলেন; এবং বললেনঃ কি হল তোমার? তোমার হায়য এসেছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এ তো আল্লাহ্ তা’আলাই আদম-কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সুতরাং তুমি বায়তুল্লাহর তাওয়াফ ছাড়া হজ্জের বাকী সব কাজ করে যাও। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীগণের পক্ষ থেকে গাভী কুরবানী করলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
একইসাথে আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে, খায়বারের যুদ্ধ সংঘটিত হয় ৬২৮ খ্রিস্টাব্দের মে জুন মাসে। তাবুকের যুদ্ধ হয় আরো পরে। সেই সময়ও আয়িশা যে পুতুল খেলতেন, অর্থাৎ তার তখনো হায়েজ হয় নি, সেটিও জানা যায় হাদিস থেকেই [69]। এর অর্থ হচ্ছে, ৬২৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ১৪ বছর বয়সী আয়িশার কোন হায়েজ হয় নি। আগের বর্ণনায় দেয়া প্রথম হজ্বের সময় ৬২৯ খ্রিষ্টাব্দেই ১৫ বছরের কাছাকাছি বয়সে তার প্রথম হায়েজ হয়, এটি তাই নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
৩৬/ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ ৬২. পুতুল দ্বারা খেলা করা
৪৯৩২। আয়িশাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবূক অথবা খায়বারের যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবর্তন করলেন। ঘরের তাকের উপর পর্দা ঝুলানো ছিলো। বায়ু প্রবাহের ফলে তার এক পাশ সরে যায় যাতে তার খেলার পুতুলগুলো দৃশ্যমান হয়ে পড়ে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পুতুলগুলো দেখে বললেন, হে আয়িশাহ! এগুলো কি? উত্তরে তিনি বললেন, এগুলো অমার মেয়ে। আর তিনি এগুলোর মধ্যে কাপড়ের তৈরী দু’ ডানাবিশিষ্ট একটি ঘোড়াও দেখতে পেলেন।
তিনি প্রশ্ন করলেনঃ এগুলোর মধ্যে ওটা কি দেখতে পাচ্ছি? তিনি বললেন, ঘোড়া। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তার উপর আবার ওটা কি? তিনি বললেন, দু’টো পাখা। তিনি বললেন, এ আবার কেমন ঘোড়া, যার পাখা আছে! আমি বললাম, আপনি কি শুনেননি যে, সুলাইমান (আঃ)-এর ঘোড়ার কয়েকটি পাখা ছিলো! আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, একথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে দিলেন, যাতে আমি তাঁর সামনের সারির দাঁত দেখতে পেলাম।(1)
সহীহ।
(1). বায়হাক্বী।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
নবীর কাজ অন্যে অবৈধ করতে পারে?
ইসলামের পরিষ্কার বিধান হচ্ছে, নবী যেই ফয়সালা দেন তা বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ না করে পূর্ণরূপে সেই ফয়সালায় নিজেকে সমর্পন করার নামই ইমান। [84]
কিন্তু না, তোমার প্রতিপালকের শপথ! তারা মু’মিন হবে না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের বিবাদ-বিসম্বাদের মীমাংসার ভার তোমার উপর ন্যস্ত না করে, অতঃপর তোমার ফয়সালার ব্যাপারে তাদের মনে কিছু মাত্র কুণ্ঠাবোধ না থাকে, আর তারা তার সামনে নিজেদেরকে পূর্ণরূপে সমর্পণ করে।
— Taisirul Quran
অতএব তোমার রবের শপথ! তারা কখনই বিশ্বাস স্থাপনকারী হতে পারবেনা, যে পর্যন্ত তোমাকে তাদের সৃষ্ট বিরোধের বিচারক না করে, অতঃপর তুমি যে বিচার করবে তা দ্বিধাহীন অন্তরে গ্রহণ না করে এবং ওটা সন্তষ্ট চিত্তে কবূল না করে।
— Sheikh Mujibur Rahman
অতএব তোমার রবের কসম, তারা মুমিন হবে না যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে বিচারক নির্ধারণ করে, তারপর তুমি যে ফয়সালা দেবে সে ব্যাপারে নিজদের অন্তরে কোন দ্বিধা অনুভব না করে এবং পূর্ণ সম্মতিতে মেনে নেয়।
— Rawai Al-bayan
কিন্তু না, আপনার রবের শপথ! তারা মুমিন হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা নিজেদের বিবাদ-বিসম্বাদের [১] বিচার ভার আপনার উপর অর্পণ না করে; অতঃপর আপনার মীমাংসা সম্পর্কে তাদের মনে কোনো দ্বিধা না থাকে [২] এবং সর্বান্তকরণে তা মেনে নেয় [৩]।
— Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
একইসাথে, নবী যেই কাজকে নিষিদ্ধ করে নি, তা আর কোন মুসলমান নিষিদ্ধ করতে পারে না। এই বিষয়ে বুখারী শরীফের একটি হাদিস দেখে নিই [85] [86]
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৮৫/ কুরআন ও সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে ধারন
পরিচ্ছেদঃ ৩০৯৭. কোন বিষয় নবী (সাঃ) কর্তৃক অস্বীকৃতি জ্ঞাপন না করাই তা বৈধ হওয়ার প্রমাণ। অন্য কারো অস্বীকৃতি বৈধতার প্রমান নয়
৬৮৫৩। হাম্মাদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) … মুহাম্মদ ইবনু মুনকাদির (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) কে আল্লাহর কসম খেয়ে বলতে শুনেছি যে, ইবনু সায়িদ অবশ্যই (একটা) দাজ্জাল। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, আল্লাহর কসম খেয়ে বলছেন? তিনি উত্তরে বললেনঃ আমি উমর (রাঃ) কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপস্থিতিতে কসম খেয়ে এ কথা বলতে শুনেছি। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা অস্বীকার করেননি।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ মুহাম্মাদ ইবনুল মুনকাদির (রহঃ)
এবারে আসুন এই হাদিসটির ব্যাখ্যা পড়ে নিই নাসরুন বারী থেকে [87]
এই হাদিসটি থেকে সুস্পষ্ট যে, নবী যা হালাল করেছেন, এমনকি যা তিনি অবৈধ করেন নি, অস্বীকৃতি জানান নি, তা পরবর্তী সময়ের যতবড় ইসলামের আলেমই হোক না কেন, সে তা অবৈধ বলার যোগ্যতা রাখে না।
বাল্যবিবাহকে ক্ষতিকর বলা ইসলামে বৈধ?
খুব গুরুত্বপুর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, নবী নিজে যে কাজটি করেছেন, সেই কাজটিকে অবৈধ বা ক্ষতিকর মনে করাটি ইসলামে বৈধ কিনা। এই প্রসঙ্গে একটি হাদিস উল্লেখ করতে হচ্ছে, যেখানে বলা হয়েছে, যেকোন নব আবিষ্কারই হচ্ছে বিদ‘আত [88] –
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
৩৫/ সুন্নাহ
পরিচ্ছেদঃ ৬. সুন্নাতের অনুসরণ আবশ্যক
৪৬০৭। আব্দুর রাহমান ইবনু আমর আস-সুলামী ও হুজর ইবনু হুজর (রাঃ) বলেন, একদা আমরা আল-ইরবাদ ইবনু সারিয়াহ (রাঃ)-এর নিকট আসলাম। যাদের সম্পর্কে এ আয়াত নাযিল হয়েছে তিনি তাদের অন্তর্ভুক্তঃ ‘‘তাদেরও কোনো অপরাধ নেই যারা তোমার নিকট বাহনের জন্য এলে তুমি বলেছিলেঃ আমি তোমাদের জন্য কোনো বাহনের ব্যবস্থা করতে পারছি না।’’ (সূরা আত-তওবাঃ ৯২)।
আমরা সালাম দিয়ে বললাম, আমরা আপনাকে দেখতে, আপনার অসুস্থতার খবর নিতে এবং আপনার কাছ থেকে কিছু অর্জন করতে এসেছি। আল-ইরবাদ (রাঃ) বললেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সঙ্গে নিয়ে সালাত আদায় করলেন, অতঃপর আমাদের দিকে ফিরে আমাদের উদ্দেশ্য জ্বালাময়ী ভাষণ দিলেন, তাতে চোখগুলো অশ্রুসিক্ত হলো এবং অন্তরগুলো বিগলিত হলো।
তখন এক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এ যেন কারো বিদায়ী ভাষণ! অতএব আপনি আমাদেরকে কি নির্দেশ দেন? তিনি বলেনঃ আমি তোমাদেরকে আল্লাহভীতির, শ্রবণ ও আনুগত্যের উপদেশ দিচ্ছি, যদিও সে (আমীর) একজন হাবশী গোলাম হয়। কারণ তোমাদের মধ্যে যারা আমার পরে জীবিত থাকবে তারা অচিরেই প্রচুর মতবিরোধ দেখবে। তখন তোমরা অবশ্যই আমার সুন্নাত এবং আমার হিদায়াতপ্রাপ্ত খলীফাহগণের সুন্নাত অনুসরণ করবে, তা দাঁত দিয়ে কামড়ে আঁকড়ে থাকবে। সাবধান! (ধর্মে) প্রতিটি নব আবিষ্কার সম্পর্কে! কারণ প্রতিটি নব আবিষ্কার হলো বিদ‘আত এবং প্রতিটি বিদ‘আত হলো ভ্রষ্টতা।[1]
সহীহ।
[1]. তিরমিযী, আহমাদ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
কোরআনে শিশু বিবাহের বৈধতা
সহবাসের পূর্বে তালাক ও ইদ্দত
কোরআনের বিধান অনুসারে, সহবাসের পূর্বে তালাক দিলে ইদ্দতের বিধান নেই। শুরুতেই এই সম্পর্কিত আয়াতটি দেখে নিই [89] –
হে মুমিনগণ, যখন তোমরা মুমিন নারীদেরকে বিবাহ করবে অতঃপর তাদের সাথে সহবাসের পূর্বেই তালাক দিয়ে দেবে তবে তোমাদের জন্য তাদের কোন ইদ্দত নেই যা তোমরা গণনা করবে। সুতরাং তাদেরকে কিছু উপহার সামগ্রী প্রদান কর এবং সুন্দরভাবে তাদেরকে বিদায় দাও।
এবারে সুরা তালাকের ৪ নম্বর আয়াতটি পড়ি, যেখানে বলা আছে, যেসব স্ত্রী এখনো ঋতুর বয়সে পৌঁছে নি, তাদের ইদ্দত হবে তিনমাস [90] –
যে সব তালাকপ্রাপ্তারা বয়সের কারণে মাসিক থেকে নিরাশ হয়েছে তাদের ইদ্দতের ব্যাপারে যদি তোমরা সন্দিহান হও তাহলে তাদের মেয়াদ তিন মাস বলে গণ্য হবে। তেমনিভাবে যারা ছোট থাকার ফলে মাসিকের বয়সে উপনীত হয় নি তাদের ইদ্দতও তিন মাস। আর গর্ভবতীদের তালাক কিংবা স্বামীর মরণোত্তর ইদ্দত হলো সন্তান প্রসব। বস্তুতঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে তাঁকে ভয় করে তিনি তার সকল বিষয় ও সমস্যা সহজ করে দেন।
— Bengali Mokhtasar
তোমাদের যে সব স্ত্রীগণ মাসিক ঋতু আসার বয়স অতিক্রম করেছে তাদের (‘ইদ্দাতের) ব্যাপারে যদি তোমাদের সন্দেহ সৃষ্টি হয়, সেক্ষেত্রে তাদের ‘ইদ্দাতকাল তিন মাস, আর যারা (অল্প বয়স্কা হওয়ার কারণে) এখনও ঋতুবতী হয়নি (এ নিয়ম) তাদের জন্যও। আর গর্ভবতী স্ত্রীদের ‘ইদ্দাতকাল তাদের সন্তান প্রসব পর্যন্ত। যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার কাজ সহজ করে দেন।
— Taisirul Quran
তোমাদের যে সব স্ত্রীর ঋতুমতী হওয়ার আশা নেই তাদের ইদ্দাত সম্পর্কে তোমরা সন্দেহ করলে তাদের ইদ্দাতকাল হবে তিন মাস এবং যাদের এখনও রজশ্বালা হয়নি তাদেরও। এবং গর্ভবতী নারীদের ইদ্দাতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। আল্লাহকে যে ভয় করে আল্লাহ তার সমস্যার সমাধান সহজ করে দিবেন।
— Sheikh Mujibur Rahman
তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যারা ঋতুবর্তী হওয়ার কাল অতিক্রম করে গেছে, তাদের ইদ্দত সম্পর্কে তোমরা যদি সংশয়ে থাক এবং যারা এখনও ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি তাদের ইদ্দতকালও হবে তিন মাস। আর গর্ভধারিনীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য তার কাজকে সহজ করে দেন।
— Rawai Al-bayan
তোমাদের যে সব স্ত্রী আর ঋতুবর্তী হওয়ার আশা নেই [১] তাদের ইদ্দত সম্পর্কে তোমরা সন্দেহ করলে তাদের ইদ্দতকাল হবে তিন মাস এবং যারা এখনো ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি তাদেরও; আর গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। আর যে আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ্ তার জন্য তার কাজকে সহজ করে দেন।
— Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
তাহলে স্পষ্টতই বোঝা যায়, যারা ঋতুর বয়সে পৌঁছে নি, তাদের যেহেতু ইদ্দতের কথা বলা আছে, তাই অবশ্যই সহবাসের অনুমতিও দেয়া আছে। নইলে ইদ্দতের নির্দেশই থাকতো না। কারণ সহবাস ছাড়া তো ইদ্দতের প্রয়োজনই নেই।
বোখারী শরীফ
ইমাম বুখারীর বুখারী শরীফ গ্রন্থে পরিষ্কারভাবেই সূরা তালাকের চার নম্বর আয়াতের অর্থ বলে দেয়া হয়েছে [91] [92]
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
৬৭/ বিয়ে
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৩৯. কার জন্য ছোট শিশুদের বিয়ে দেয়া বৈধ।
لِقَوْلِهِ تَعَالَى: وَاللاَّئِي لَمْ يَحِضْنَ) فَجَعَلَ عِدَّتَهَا ثَلاَثَةَ أَشْهُرٍ قَبْلَ الْبُلُوغِ
আল্লাহ্ তা‘আলার কালাম ‘‘এবং যারা ঋতুমতী হয়নি’’-(সূরাহ আত-ত্বলাক (তালাক): ৪) এই আয়াতকে দলীল হিসাবে ধরে নাবালেগার ইদ্দাত তিন মাস নির্ধারণ করা হয়েছে।
৫১৩৩. ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাঁকে বিয়ে করেন তখন তাঁর বয়স ছিল ৬ বছর এবং নয় বছর বয়সে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সঙ্গে বাসর ঘর করেন এবং তিনি তাঁর সান্নিধ্যে নয় বছরকাল ছিলেন। (৩৮৯৪)(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
তাফসীরে ইবনে কাসীর
তাফসীরে ইবনে কাসীরে বলা হয়েছে, অপ্রাপ্তবয়ষ্কা মেয়ের কথা [93] –
তাফসীরে জালালাইন
তাফসীরে জালালাইনেও বলা হয়েছে, অপ্রাপ্তবয়ষ্কতার কারণে যে সব মেয়ে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছায় নি, তাদের কথা [94] –
অর্থাৎ, যারা ঋতুর বয়সে পৌঁছে নি, বা অপ্রাপ্তবয়সী মেয়ে, তাদের ইদ্দতকাল তিনমাস।
তাফসীরে মাযহারী
কাজী মুহাম্মদ ছানাউল্লাহ পানিপথী একজন বিখ্যাত ইসলামিক পন্ডিত, যার লিখিত তাফসীর গ্রন্থের নাম তাফসীরে মাযহারী। তিনি ছিলেন তাঁর সময়ের একজন কাজী (বিচারপতি), মুহাদ্দিস, গবেষক ও বিশিষ্ট মুফাসসির তথা আল-কোরআনের ভাষ্যকার। এবারে সেই তাফসীরে মাযহারী [95] থেকে দেখে নিইঃ
মা’আরেফুল কোরআন
তৃতীয় খলিফা হযরত উসমানের বংশধর মুফতী মুহাম্মদ শফি উসমানী ছিলেন একজন প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন ও মনীষী । তিনি দারুল উলূম দেওবন্দ এবং দেশ বিভাগের পর পাকিস্তানের মুফতীয়ে আযম বা প্রধান মুফতী (গ্রান্ড মুফতী) ছিলেন। তার বিশ্বখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ “মা’আরিফুল কুরআন” বহু ভাষায় অনুবাদ হয়েছে। এবারে আসুন মা’আরেফুল কোরআনে দেখি [96] –
তাফহীমুল কুরআন
প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলার সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী ইসলামে অবদান রাখার জন্যে তাকে ১৯৭৯ সালে বাদশাহ ফয়সাল আন্তর্জাতিক পুরস্কার পান [97]। । শুধু তাই নয়, উনি হচ্ছেন আধুনিক সময়ের সবচাইতে প্রসিদ্ধ ইসলামিক স্কলার। একইসাথে, উনি ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যক্তি, যার গায়েবানা জানাজা পড়ানো হয়েছিল কাবা শরীফে [98]। এর অর্থ হচ্ছে, উনার লিখিত তাফসীর সারা পৃথিবীতেই প্রসিদ্ধ। সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদীর তাফহীমুল কুরআন গ্রন্থে সূরা তালাকের এই আয়াতের ব্যাখ্যাতে যা লেখা রয়েছে [99] –
তাওযীহুল কুর’আন
পাকিস্তানের প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলার আল্লামা মুহাম্মদ তাকী উসমানির কথা আশাকরি বাঙলাদেশ ভারত ও পাকিস্তানের অধিবাসী সকল মুসলিমই অবগত আছেন। বিচারপতি মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ তাকি উসমানি (জন্ম: ১৯৪৩) পাকিস্তানের একজন প্রখ্যাত ইসলামী ব্যক্তিত্ব। তিনি হাদীস, ইসলামী ফিকহ, তাসাউফ ও অর্থনীতিতে বিশেষজ্ঞ। তিনি বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী মুসলিম ব্যক্তি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন [100]। উনার লিখিত কোরআনের তাফসীর তাওযীহুল কুরআনে এই আয়াতের কী ব্যাখ্যা দেয়া আছে, সেটি দেখে নিই [101] –
আহকামুল কুরআন
হানাফী মাজহাবের প্রখ্যাত ইমাম আহমাদ ইবনে আলী আবূ বকর আর-রায়ী আল-যাস্সাস রচিত আহকামুল কুরআন গ্রন্থেও একই বিষয় দেখতে পাওয়া যায় [102] –
আরো পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে একই গ্রন্থের তৃতীয় খণ্ডে যে, এই বিষয়ে পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সকল আলেমের ঐক্যমত্য রয়েছে যে, সমস্ত অভিভাবকের জন্য অপ্রাপ্তবয়ষ্ক মেয়েকে বিবাহ দেয়া ইসলামে সম্পূর্ণ জায়েজ। এই বিষয়ে পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী আলেমদের ঐক্যমত্য বা ইজমা রয়েছে [103] –
আলোচ্য আয়াতে এ কথারও প্রমাণ রয়েছে যে, পিতার জন্যে তার ছোট বয়সের কন্যাকে বিয়ে দেয়ার অধিকার আছে এ হিসেবে যে, সমস্ত অভিভাবকের জন্যেই তা জায়েয। আর পিতা তাদের সকলের তুলনায় অতি নিকটবর্তী অভিভাবক। আর বিভিন্ন দেশের আগের ও পরবর্তীকালের ফিকাহবিদদের মধ্যে তার জায়েয হওয়ার ব্যাপারে কোন মতপার্থক্য আছে বলে আমরা জানি না। তবে বশর ইবনুল অলীদ শিবরামাতা থেকে বর্ণনা প্রচার করেছেন যে, ছোট বয়সের ছেলেমেয়েকে বিয়ে দেয়া পিতার জন্যেও জায়েয নয়। এটা আল – আস্সাম – এর মাযহাব। এ মাযহাব যে বাতিল, তা আমরা ইতিপূর্বেই বলেছি। তাছাড়া এ আয়াতটিও এ মাযহাবের বাতুলতা প্রমাণ করে।
ফিকাহ শাস্ত্র আল হিদায়া গ্রন্থ
ইমাম আবু হানিফার মাজহাবের প্রখ্যাত ফিকাহ গ্রন্থ আল হিদায়াতে এই বিষয়ে যা বলা আছে সেটিও দেখে নিই [104] –
ফিকাহ শাস্ত্র আশরাফুল হিদায়া
হানাফি ফিকাহশাস্ত্রে আশরাফুল হিদায়া একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ। মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক ফরিদী কর্তৃক নির্দেশিত এবং বেশ কয়েকজন প্রখ্যাত আলেমের অনুদিত আশরাফুল হিদায়া গ্রন্থে এই বিষয়ে কী বলা আছে সেটি দেখে নিই [105] –
বোখারীর ব্যাখ্যা
এর আরো প্রমাণ পাওয়া যায় বোখারী শরীফের ব্যাখ্যায় [106] থেকে-
ফিকাহুস সুন্নাহ
আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত আলেম এবং শরীয়া আইনের ওপর বিশেষজ্ঞ সাইয়েদ সাবেক রচিত ফিকাহুস সুন্নাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি আইন গ্রন্থ। এই গ্রন্থে বেশ পরিষ্কারভাবেই বলা হয়েছে, অপ্রাপ্তবয়ষ্ক বালিকার ইদ্দত কতদিনের। আর আমরা জানি যে, ইসলামে ইদ্দত শুধুমাত্র তখনই সম্ভব, যখন যৌন সঙ্গম ঘটে [107] –
এই একই গ্রন্থে অপ্রাপ্তবয়ষ্ক মেয়েদের সাথে সঙ্গমকালে যোনীপথ ফেটে গেলে স্বামীর জরিমানা হওয়ার কথা বলা আছে। তবে এখানে শর্ত হচ্ছে, যোনীপথ এবং পায়ুপথ একাকার হয়ে গেলেই শুধুমাত্র এই জরিমানা প্রযোজ্য হবে। মাঝে কোন আড়াল থাকলে কোন জরিমানা হবে না। যদিও এগুলো মুহাম্মদের অনেক পরে ইমামগণের সংযুক্তি, তারপরেও ইসলাম যে খুব পরিষ্কারভাবে শিশুকামকে বৈধতা দিয়েছে, তার প্রমাণ বহন করে। অর্থাৎ মুমিনদের খেয়াল রাখতে হবে যে, অপ্রাপ্তবয়ষ্ক বাচ্চাটির যোনীপথ এবং পায়ুপথ যেন ফেটে একাকার না হয়ে যায়। এইটুকু না করলেই হলো। আর সেটি হয়ে গেলে সামান্য জরিমানা দিয়ে দিলেই তো হলো! [108] –
ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী
উপমহাদেশের প্রখ্যাত ইসলামিক গ্রন্থ ফতওয়ায়ে আলমগীরী গ্রন্থেও নাবালিকা স্ত্রীর সাথে সহবাস এবং তালাকের বিষয়টি বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে [109] –
বাল্যবিবাহ বিষয়ে আলেমদের ইজমা
শিশু বাচ্চাদের বিবাহ সম্পর্কে ইসলামের আলেমদের ঐক্যমত্য বা ইজমা রয়েছে। সেটি নিচে উল্লেখ করা হলো।
ইমাম ইবনে আব্দিল বার রহ. (মৃ: ৪২৩ হি:) লিখেছেন- أجمع العلماء على أن للأب أن يزوج ابنته الصغيرة ولا يشاورها ، لتزويج رسول الله صلى الله عليه وسلم عائشة وهي بنت ست سنين …انتهى – এব্যাপারে আলেমগণের ইজমা রয়েছে যে, পিতা তার নাবালেগ বাচ্চার সাথে পরামর্শ না করেও তাকে বিয়ে দিয়ে দিতে পারেন। কারণ, রাসুলুল্লাহ হযরত আয়েশাকে বিয়ে করেছিলেন যখন তার বয়স ছিল ছয় বছর। (আত-তামহীদ, ইবনু আব্দিল বার- ১৯/৯৪)
ইমাম মালেক রহ. (মৃ: ১৭৯ হি:) বলেছেন- وإنكاح الأب جائز على الصغار من ولده ، ذكراً كان أو أنثى– পিতার জন্য তার কোনো নাবালেগ বাচ্চার বিয়ে দিয়ে দেয়া জায়েয -চাই বাচ্চাটি ছেলে হোক বা মেয়ে। (আত-তামহীদ, ইবনু আব্দিল বার- ১৯/৯৮)
ইমাম ইসমাঈল বিন ইসহাক রহ. বলেছেন- والأب له أن يزوج الصغيرة بإجماع من المسلمين– এব্যাপারে মুসলীম উম্মাহ’র ইজমা রয়েছে যে, পিতার জন্য তার নাবালেগ বাচ্চার বিয়ে দিয়ে দেয়া জায়েয। (আত-তামহীদ, ইবনু আব্দিল বার- ১৯/৮৪)
ইমাম ইবনুল মুনযীর নিশাপুরী রহ. (মৃ: ৩১৮ হি:) বলেছেন- أجمع كل من نحفظ عنه من أهل العلم أن نكاح الأب ابنته الصغيرة جائز إذا زوجها من كفء– এব্যাপারে আহলে হক্ব আলেমগণের ইজমা রয়েছে যে, পিতার জন্য তার নাবালেগ বাচ্চার বিয়ে দিয়ে দেয়া জায়েয – যদি তিনি কুফু’র সাথে তার বিয়ে দেন। (আত-তামহীদ, ইবনুল বার- ১৯/৮৪; আল-মুগনী, ইবনে কুদামা- ৯/৩৯৮)
ইমাম হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রহ. (মৃ: ৮৫২ হি:) ইবনুল বাত্তাল রহ.-এর মত উল্লেখ করেছেন- يجوز تزويج الصغيرة بالكبير إجماعاً ، ولو كانت في المهد– (আহলে হক্ব আলেমগণের) সকলের মতে বালেগ ছেলের সাথে নাবালেগা মেয়ের বিয়ে দেয়া জায়েয – এমনকি যদিও সেই মেয়ে অতীব ছোটই হোক না কেনো। (ফাতহুল বারী, ইবনে হাজার- ৯/১২৩)
ইমাম ইবনে হাযাম রহ. (মৃ: ৪৫৬ হি:) লিখেছেন- الحجة في إجازة إنكاح الأب ابنته الصغيرة البكر ، إنكاح أبي بكر رضي الله عنه النبي صلى الله عليه وسلم من عائشة رضي الله عنها وهي بنت ست سنين– পিতার জন্য তার নারালেগা মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেয়া জায়েয হওয়ার দলিল হল, হযরত আবু বকর রা. (তাঁর নাবালেগা মেয়ে) হযরত আয়েশাকে রাসুলুল্লাহ সা.-এর সাথে বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন যখন হযরত আয়েশা ছিলেন ছয় বয়সের এক মেয়ে। (আল-মুহাল্লা, ইবনে হাযাম- ৯/৪৫৮)
ইসলাম ওয়েব এর ফতোয়া
ইসলাম ওয়েব ডট নেট ইসলাম বিষয়ক ফতোয়ার একটি সমৃদ্ধ ভাণ্ডার। এই ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে একটি ফতোয়া দেখে নিই, ফতোয়াটি আরবিতে, ইংরেজিও নিচে দেয়া হচ্ছে (ইংরেজি অনুবাদটি গুগল ট্রান্সলেটর থেকে নেয়া) [110] –
الدليل على جواز تزويج الأب البنت الصغيرة دون إذنها أو رضاها
رقم الفتوى: 230518
السؤال
هل يوجد دليل في النصوص الشرعية يقول بجواز إجبار البكر الصغيرة على الزواج؟.
الإجابــة
الحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله وعلى آله وصحبه، أما بعد:
فقد حكى بعض العلماء الإجماع على أن للأب تزويج ابنته البكر الصغيرة بغير رضاها، ولا يشترط إذنها، ونعني بالصغيرة من ليست بالغة، جاء في المغني لابن قدامة: أما البكر الصغيرة: فلا خلاف فيها، قال ابن المنذر: أجمع كل من نحفظ عنه من أهل العلم أن نكاح الأب ابنته البكر الصغيرة جائز, إذا زوجها من كفء. اهـ.
ومستند هذا الإجماع أن أبا بكر زوج عائشة ـ رضي الله عنها ـ من رسول الله صلى الله عليه وسلم ولم يشاورها، قال ابن عبد البر: أجمع العلماء على أن للأب أن يزوج ابنته الصغيرة ولا يشاورها، لتزويج رسول الله صلى الله عليه وسلم عائشة وهي بنت ست سنين…. اهـ.
ولمزيد الفائدة نرجو مراجعة الفتويين رقم: 223414، ورقم: 172491
والله أعلم.
Evidence that a father may marry off a young girl without her permission or consent
Fatwa Number: 230518
Publication date: Thursday 2 Safar 1435 AH – 5 December 2013
Evaluation:
3481 0 154
The question
Is there evidence in the Sharia texts that it is permissible to force a virgin to marry?
The answer
Praise be to God, and may blessings and peace be upon the Messenger of God and his family and companions. Some scholars have narrated that there is consensus that the father can marry off his young virgin daughter without her consent, and her permission is not required, and we mean by little one who is not an adult. Knowing that the father’s marriage to his young virgin daughter is permissible, if her husband is competent. Ah.
This consensus is based on the fact that Abu Bakr, the husband of Aisha, may God be pleased with her, is from the Messenger of God, may God bless him and grant him peace, and he did not consult her. Ibn Abd al-Barr said: The scholars are unanimously agreed that a father has the right to marry his young daughter and not consult her, in order to marry the Messenger of God, may God bless him and grant him peace, Aisha, who is a daughter Six years ….
For more benefit, please refer to Fatwas No. 223414 and No. 172491 .
God know best
সৌদি আরবের সরকারী ফতোয়া
সৌদি আরব থেকে প্রকাশিত সরাসরি সরকারী ওয়েবসাইটে এই ফতোয়া পরিষ্কারভাবে দেয়া হয়েছে যে, বাল্যবিবাহ সম্পূর্ণ হালাল, সহবাসও হালাল এবং তা শুধু নবীর জন্যেই নয়, সকলের জন্যেই হালাল। এই ফতোয়াটি সৌদি সর্বোচ্চ স্কলারবৃন্দ যেমন সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি আবদুল আজিজ ইবনে বাজ এবং বর্তমান সময়ের গ্র্যান্ড মুফতি শায়েখ আবদুল আজিজ আল শেইখ সহ সর্বোচ্চ ইসলামিক স্কলারদের অন্যতম শায়েখ সালিহ আল ফাউজান এবং ইফতা কমিটি দ্বারা সত্যায়িত। আসুন সেটিও দেখে নিই- [111]
The first question of Fatwa no. 18734
Q 1: Is it true that the Prophet’s marriage to `A’ishah while still young was one of his particularities or was it a legislation for the whole Ummah?
Is it permissible to consummate marriage with immature girl? If not, how then should she observe three months as `Iddah (waiting period)?
A: The Prophet (peace be upon him) betrothed `Aishah (may Allah be pleased with her) while she was six years old. He consummated the marriage in Al-Madinah when she was nine years old. Actually, this is not a particularity just for him. Thus, it is permissible to contract the marriage of an immature girl and consummate it.
(Part No. 18; Page No. 125)
even before maturity if she is able to. As for the `Iddah of an immature girl, Allah (Glorified and Exalted be He) defined the `Iddah of those who have passed the age of monthly courses and those who are still immature to be three months. Allah (Exalted be He) said, And those of your women as have passed the age of monthly courses, for them the ‘Iddah (prescribed period), if you have doubt (about their periods), is three months; and for those who have no courses (i.e. they are still immature) In fact, immature girls are included under the category: …and for those who have no courses (i.e. they are still immature) their ‘Iddah (prescribed period) is three months likewise, except in case of death). May Allah grant us success. May peace and blessings be upon our Prophet Muhammad, his family, and Companions.
The Permanent Committee for Scholarly Research and Ifta’
Member: Bakr Abu Zayd Member: Salih Al-Fawzan Deputy Chairman: `Abdul-`Aziz Al Al-Shaykh Chairman:`Abdul-`Aziz ibn `Abdullah ibn Baz
এবারে আসুন সৌদি সরকার কর্তৃক প্রকাশিত ড. সালেহ আল ফাওযান এর একটি গ্রন্থ থেকে দেখে নিই, ইসলাম হাউজ থেকে যেই বইটির বাঙলা অনুবাদ পাওয়া যায়। যার অনুবাদ করেছেন ড আবু বকর মুহাম্মদ যাকারিয়া [112]
অল্পবয়সে বিয়ে ও মিথ্যা বলা
উপরের তথ্যসূত্রগুলো থেকে এটি খুবই পরিষ্কার যে, ইসলাম অল্পবয়সী মেয়েদের বিয়ে দেয়া উৎসাহিত করে। ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত নামক ফিকাহ গ্রন্থে এটিও বলা আছে যে, ইসলাম শুধুমাত্র অল্পবয়সে বয়সে বিয়েই জায়েজ নয়, এর জন্য বাঙলাদেশের আইন লঙ্ঘন করে মিথ্যা বলাও জায়েজ আছে [113] –
নাবালিকা দাসীর সাথে সহবাস
ইসলাম যে শুধু নাবালিকা মেয়েদের সাথে বিবাহ এবং যৌন সম্পর্কের বিধান রেখেছে তাই নয়, ইসলামে আরো মারাত্মক এবং বিশ্রী বিধান রয়েছে। যার মধ্যে একটি হচ্ছে, নাবালিকা দাসী বা যুদ্ধবন্দী নারীর সাথে সহবাসের বিধান। খুবই ভয়াবহ এবং যেকোন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের মাথা খারাপ করে দেয়ার মত এই ইসলামিক বিধানটি হচ্ছে, যুদ্ধবন্দী হিসেবে প্রাপ্ত কিংবা বাজার থেকে মুসলিমগণ ছোট ছোট বালিকা কিনে এনে তাদের সাথে হালাল উপায়েই যৌনকর্ম করতে পারে। এর মত নির্লজ্জ নির্মমতা এবং অসুস্থ বিধান আর কী হতে পারে আমি জানি না! এই বিধানটি পেডোফাইল বা শিশুকামীদের জন্য এক সূবর্ণ সুযোগ। তারা ইচ্ছেমত এই বিধান মেনে তাদের শিশুকাম চরিতার্থ করতে পারে। খুব কষ্ট লাগে সেই সব নাবালিকা মেয়ের কথা ভেবে, যারা ইসলামের এই অমানবিক বিধানের শিকার হয়ে দিনের পর দিন ধর্ষিত হয়েছে। আসুন এই বিধানটি পর্যালোচনার পূর্বে কয়েকটি হাদিস পড়ি। উল্লেখ্য, এই হাদিস তিনটি পরস্পর সম্পর্কিত। তাই একসাথে দেয়া হচ্ছে [114] [115] [116] –
সুনান আদ-দারেমী (হাদিসবিডি)
১. পবিত্রতা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ১২০. দাসীর ইসতিবরা’আ’
১২১২. আওযাঈ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি যুহরী রাহি. কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, একটি লোক একটি দাসী ক্রয় করলো যে এখনো হায়েযে উপনীত হয়নি আর গর্ভধারণের মতো (বয়সও তার) হয়নি। এমতাবস্থায় সেই লোকটি কতদিন তার থেকে সম্পর্কহীন থাকবে? তিনি বললেনঃ তিন মাস।[1]
[1] তাহকিকঃ এর সনদ সহীহ।
তাখরীজঃ এটি ৯৫৬ (অনূবাদে ৯৫১) নং এ গত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আওযায়ী (রহঃ)
সুনান আদ-দারেমী (হাদিসবিডি)
১. পবিত্রতা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ১২০. দাসীর ইসতিবরা’আ’
১২১৩. এবং ইয়াহইয়া ইবনু আবী কাছীর বলেন, পঁয়তাল্লিশ দিন।[1]
[1] তাহকিকঃ এর সনদ সহীহ।
তাখরীজঃ এটি ৯৫৭ (অনূবাদে ৯৫২) নং এ গত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ ইয়াহইয়া ইবনু আবী কাসীর (রহঃ)
সুনান আদ-দারেমী (হাদিসবিডি)
১. পবিত্রতা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ১২০. দাসীর ইসতিবরা’আ’
১২১৪. ইয়াহইয়া ইবনু বাশার হতে বর্ণিত, ইকরিমাহ বলেন, এক মাস।[1]আব্দুল্লাহ কে জিজ্ঞেস করা হলো: এতদুভয়ের মধ্যে আপনার মত কোনটি? তিনি বললেন: তিনমাসই অধিকতর শক্তিশালী মত। আর একমাস যথেষ্ট।
[1] তাহকিক: রাবীগণ নির্ভরযোগ্য।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
হযরত মুহাম্মদের মেয়ের জামাই এবং একই সাথে আপন চাচাতো ভাই আলীও ছিল একজন রঙ্গিন চরিত্রের মানুষ। নবী মুহাম্মদ নিজে অসংখ্য বিবি, দাসী ভোগের সাথে সাথে নিজের জামাইদেরকেও যুদ্ধবন্দিনীদের ভাগ দিতে একটুও কার্পণ্য করেন নি। হযরত আলীকে তিনি উদারভাবে মালে গনিমত থেকে প্রাপ্ত খুমুসের অংশ বন্টন করেছেন। উল্লেখ্য, গনিমতের মাল থেকে এক পঞ্চমাংশ ভাগ নিতেন নবী স্বয়ং। এই এক পঞ্চমাংশকে বলা হয় খুমুস। গনিমতের মালের মধ্যে নারী শিশুও অন্তর্ভূক্ত থাকতো [117]। হযরত ফাতেমার স্বামী নবী জামাতা শেরে খোদা হযরত আলী এক অপ্রাপ্তবয়ষ্ক বালিকা বন্দিনীর সাথে সেক্স করছিলেন, যে বন্দিনীকে তিনি শ্বশুরের কাছ থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন। এই বিষয়ে বিস্তারিত পড়ার জন্য এই লেখাটি দেখতে পারেন [118]।
যুদ্ধবন্দিনী বা দাসী নাবালিকা হলে সেই নাবালিকা শিশু সাথে সহবাস যে সম্পূর্ণ বৈধ, এই সম্পর্কে ফিকহী মাসআলাও পাওয়া যায় ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী থেকে। কেউ কেউ মত দিয়েছেন যে, নাবালিকা যুদ্ধবন্দীর সাথে ভাগবাটোয়ারা এবং ইদ্দত পালন ছাড়াই ( জরায়ু মুক্ত করার জন্য নির্ধারিত সময় ) সহবাস করা যায়, যেমনটি হযরত আলী করেছেন। আবার অন্য আলেমগণ বলেছেন দেড় মাস অপেক্ষার পরে নাবালিকা শিশুর সাথে যৌনকর্ম বৈধ হবে। আসুন ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী থেকে পড়ি [119] –
( গায়াতুল বয়ান ) কোন নাবালিগ দাসীকে যদি সহবাসের পর তালাক দেওয়া হয় , তবে তার ইদ্দত দেড় মাস হবে।
অপ্রাপ্তবয়ষ্ক সহবাসে অক্ষম নাবালিকা দাসীর সাথে ইসতিবরার পরে, অর্থাৎ জরায়ু মুক্ত করার পরে সহবাস করার বৈধতার প্রমাণ আরো পাওয়া যায় আশরাফুল হিদায়া গ্রন্থেও [120] –
ইসতিবরা করা ক্রেতার উপর ওয়াজিব, বিক্রেতার উপর নয়। কেননা এর মূল কারণ হলো দাসীর সাথে সহবাসের ইচ্ছা করা। আর তা ক্রেতাই করে থাকে, বিক্রেতা করে না। অতএব, ক্রেতার উপরই ইসতিবরা তথা জরায়ু পবিত্র করা ওয়াজিব। তবে সহবাসের ইচ্ছা একটি গোপন বিষয়, তাই ইসতিবরা এর হুকুম আবর্তিত হবে এর দলিলের উপর। আর সে দলিল হলো সহবাস করার বৈধ কর্তৃত্ব। এ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় মালিকানা ও দখলের দ্বারা। আর তাই কর্তৃত্বকেই কারণ বা সবব সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং বিষয়টিকে সহজ করার জন্য হুকুম উক্ত কর্তৃত্বের সাথেই আবর্তিত হবে। সুতরাং ইসতিবরা করার সবব হলো দাসীর সত্তার মালিকানা যা দখলের মাধ্যমে মজবুত হয়েছে। এ হুকুম মালিকানার অন্যান্য সববের দিকে সম্প্রসারিত হবে। [ মালিকানার অন্যান্য সবব ] যেমন- ক্রয়, দান, অসিয়ত, মিরাস, খুলা ও কিতাবাত ইত্যাদি। অনুরূপভাবে ক্রেতার উপর ইসতিবরা ওয়াজিব হবে যদি সে দাসীকে কোনো শিশুর মাল থেকে অথবা কোনো মহিলার মাল থেকে, অথবা [ ব্যবসায়ে অনুমতিপ্রাপ্ত ] কোনো দাস থেকে কিংবা এমন ব্যক্তি থেকে ক্রয় করে যার জন্য সেই দাসীর সাথে সহবাস করা হালাল নয়। অনুরূপভাবে যদি ক্রয়কৃত দাসীটি সহবাসে অযোগ্য কুমারী হয় তবুও [ ইসতিবরা করা ওয়াজিব হবে ]; সবব পাওয়া যাওয়ার কারণে। আর হুকুমসমূহ সববসমূহের সাথেই আবর্তিত হয়, হিকমত বা রহস্যসমূহের সাথে নয়। কেননা হিকমত গোপন থাকে। সুতরাং জরায়ুতে বীর্য থাকার ক্ষীণ সম্ভাবনা থাকলেও সবব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে ধর্তব্য হবে।
মুসান্নিফ (র .) বলেন, যেসব দাসী মাস গণনার মাধ্যমে ইদ্দত পালন করতে হয় অর্থাৎ বয়সের স্বল্পতার কারণে এখনো যাদের হায়েয শুরু হয়নি কিংবা অধিক বয়সের কারণে হায়েয বন্ধ হয়ে গেছে এমন দাসী যদি কারো অধিকারে আসে তাহলে সে দাসীর গর্ভাশয় পবিত্র বলে সাব্যস্ত হবে এক মাস অতিক্রান্ত হওয়ার দ্বারা। কেননা এসব মহিলার ক্ষেত্রে একমাসকে এক হায়েযের স্থলবর্তী এবং তিন মাসকে তিন হায়েযের স্থলবর্তী সাব্যস্ত করা হয়েছে ।
স্ত্রীর লজ্জাস্থানের মালিকানা
ইসলামি শরীয়তে বৈবাহিক চুক্তিকে বলা হয় নিকাহ চুক্তি, যার শাব্দিক অর্থ হচ্ছে যৌনচুক্তি। বিবাহ করার সাথে সাথেই একজন স্বামী তার স্ত্রীর যৌনাঙ্গের মালিকানা লাভ করে। বস্তুতপক্ষে কোন ধরণের শারীরিক অসুস্থতা না থাকলে বা ঋতুবর্তী না হলে স্বামী তার স্ত্রীর সাথে যেকোন অবস্থায় সঙ্গম করার অধিকারপ্রাপ্ত। স্ত্রীর নাবালিকা হওয়া কোরআন হাদিসের কোন দলিলেই কোন ওজর বা অজুহাত হিসেবে গণ্য করা হয়নি। স্বামীকে দেনমোহর দিতে হয় স্ত্রীর যোনীভোগ করার মূল্য হিসেবে, এই বিষয়টি ইসলামের অসংখ্য গ্রন্থে পরিষ্কারভাবে বর্ণিত আছে। এর অর্থ হচ্ছে, নিকাহ চুক্তি ও দেনমোহর প্রদানের সাথেই একজন স্বামী তার স্ত্রীর যৌনাঙ্গ ভোগের অধিকারী হয়ে যায়, অর্থাৎ তিনি সাথে সাথেই সেই যৌনাঙ্গ ভোগ করতে পারেন। এই বিষয়টির আগে দেনমোহর কাকে বলে জেনে নিই শরহে আবূ দাউদ গ্রন্থ থেকেঃ [121] –
আহকামুল কুরআন গ্রন্থে আরো পরিষ্কারভাবেই বর্ণিত আছে, স্বামী তার স্ত্রীর যৌন অঙ্গের মালিক পর্যায়ের [122] –
নিচের হাদিসগুলো পড়ুন [123] [124] –
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ – বিয়ের ওয়ালী (অভিভাবক) এবং নারীর অনুমতি গ্রহণ প্রসঙ্গে
৩১৩১-(৬) ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কোনো নারী তার ওয়ালীর (অভিভাবকের) অনুমতি ছাড়া বিয়ে করবে; তার বিয়ে বাত্বিল (না-মঞ্জুর, পরিত্যক্ত), তার বিয়ে বাত্বিল, তার বিয়ে বাত্বিল। যদি এরূপ বিয়েতে স্বামীর সাথে সহবাস হয়ে থাকে, তবে স্ত্রীর মোহর দিতে হবে তার (লজ্জাস্থান) উপভোগ (হালাল) করার জন্যে। আর যদি তাদের (ওয়ালীগণের) মধ্যে আপোসে মতবিরোধ দেখা দেয়, তবে যার ওয়ালী নেই শাসক (প্রশাসন) তার ওয়ালী (বলে বিবেচিত) হবে।
(আহমাদ, তিরমিযী, আবূ দাঊদ, ইবনু মাজাহ ও দারিমী)(1)
(1) সহীহ : আবূ দাঊদ ৩০৮৩, তিরমিযী ১১০২, ইবনু মাজাহ ১৮৭৯, আহমাদ ২৪২০৫, দারিমী ২২৩০, ইরওয়া ১৮৪০, সহীহ আল জামি‘ ২৭০৯।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ২০/ লি’আন
পরিচ্ছদঃ পরিচ্ছেদ নাই
৩৬১০। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ বকর ইবনু শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ লি’আনকারীদ্বয়ের (লি’আন বাক্য পাঠের ব্যাপারে) হিসাব আল্লাহর দায়িত্ব। তোমাদের দু’জনের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী তার (তোমার স্ত্রীর) উপর তোমার কোন অধিকার নেই। লোকটি বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার মালের (প্রদত্ত মাহর) কি হবে? তিনি বললেন, তুমি তোমার মাল পাবে না। যদি তুমি তার ব্যাপারে সত্যবাদী হও তাহলে তোমার দেওয়া সস্পদ ঐ বস্তুর বিনিময়ে বলে গণ্য হবে যা দ্বারা তুমি তার লজ্জাস্থান হালাল করেছ। আর যদি তুমি তার উপর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে থাক তাহলে তার থেকে মাল ফেরত পাওয়া তো আরো দুরের কথা।
যুহায়র (রহঃ) তার বর্ণনায় বলেছেন যে, সুফিয়ান (রহঃ) সাঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) এর সুত্রে ইবনু উমর (রাঃ) কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বলতে শুনেছেন।
Ibn Umar (Allah be pleased with them) reported Allah’s Messenger (ﷺ) saying to the invokers of curse: Your account is with Allah. One of you must be a liar. You have now no right over this woman. He said: Messenger of Allah, what about my wealth (dower that I paid her at the time of marriage)? He said: You have no claim to wealth. If you tell the truth, it (dower) is the recompense for your having had the right to intercourse with her, and if you tell a lie against her, it is still more remote from you than she is. Zuhair said in his narration: Sufyan reported to us on the authority of ‘Amr that he had heard Sa’id b Jubair saying: I heard Ibn Umar (Allah be pleased with them) saying that Allah’s Messenger (ﷺ) had said it.
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
এই বিষয়ে সহিহ বুখারী থেকেও পড়ি [125] –
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫৫/ তালাক
পরিচ্ছদঃ ২০৭২. লি‘আনকারীদ্বয়কে ইমামের একথা বলা যে, নিশ্চয় তোমাদের কোন একজন মিথ্যাবাদী, তাই তোমদের কেউ তাওলা করতে প্রস্তুত আছ কি ?
৪৯২৯। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সাঈদ ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি লিআনকারীদ্বয় সম্পর্কে ইবনু উমরকে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লিআনকায়ীদ্বয়কে লক্ষ্য করে বলেছিলেনঃ তোমাদের হিসাব গ্রহনের দায়িত্ব আল্লাহরই। তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। তার (স্ত্রীর) উপর তোমার কোন অধিকার নেই। লোকটি বললঃ তবে আমার মাল (মোহর হিসেবে প্রদত্ত)? তিনি বললেনঃ তুমি কোন মাল পাবে না। যদি তুমি সত্যবাদী হও তাহলে এর বিনিময়ে তুমি তার লজ্জাস্থানকে হালাল করে নিয়েছিলে। আর যদি তার উপর মিথ্যারোপ করে থাক তবে তো মাল চাওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না।
সুফিয়ান বলেনঃ আমি এ হাদীস আমর (রাঃ) এর কাছ থেকে মুখস্থ করেছি। আইয়্যুব বলেনঃ আমি সাঈদ ইবনু জুবায়র-এর কাছে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি ইবনু উমর (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলামঃ এক ব্যাক্তি তার স্ত্রীর সাথে লিআন করল (এখন তাদের বিধান কি?) তিনি তার দু’আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ সুফিয়ান তার তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল ফাঁক করলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনূ আজলানের এক দম্পত্তির বৈবাহিক সম্পর্ক এভাবে ছিন্ন করে দেন এবং বলেনঃ আল্লাহ তাআলা অবহিত আছেন যে, তোমাদের একজন অবশাই মিথ্যাবাদী। সুতরাং কেউ তাওবা করতে সম্মত আছ কি? এভাবে তিনি তিনবার বললেন। সুফিয়ান বলেনঃ আমি তোমাকে যেভাবে হাদীসটি শোনাচ্ছি এভাবেই আমি আমর ও আইয়্যুব (রাঃ) থেকে মুখস্থ করেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
এবারে আরো একটি পড়ি [126] –
সূনান নাসাঈ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ২৬/ নিকাহ (বিবাহ)
পরিচ্ছদঃ ৪২. বিবাহের শর্ত
৩২৮৪. ঈসা ইবন হাম্মদ (রহঃ) … উকবা ইবন আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সৰ্বাধিক প্রয়োজনীয় শর্ত হলো তোমরা যা দ্বারা মহিলার লজ্জাস্থান হালাল করবে, তা আদায় করা অর্থাৎ মোহর আদায় করা।
It was narrated from ‘Utbah bin ‘Amir that the Messenger of Allah said: “The conditions that are most deserving of fulfillment, are those by means of which the private parts become allowed to you.”
তাহক্বীকঃ সহীহ। ইবন মাজাহ ১৯৫৪, মুখতাসার মুসলিম ৮০৪, সহীহ জামে’ আস-সগীর ১৫৪৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
প্রাপ্তবয়ষ্ক হওয়ার পরে সিদ্ধান্ত
প্রশ্ন হচ্ছে, একটি নাবালিকা মেয়েকে তার পিতা বিবাহ দিলে সে প্রাপ্তবয়ষ্ক হওয়ার পরে সেই বিবাহ বাতিল করার অধিকার পায় কিনা। এই বিষয়ে আহকামুল কুরআন গ্রন্থে যা বলা হয়েছে, সেটি দেখা নেয়া জরুরি [103] –
খলিফা উমরের বাল্যবিবাহ
ইসলামের ইতিহাসে শুধুমাত্র যে নবী মুহাম্মদেরই এই রকম অপ্রাপ্তবয়ষ্ক নারীর প্রতি লোভ ছিল, তাই নয়। বহু সাহাবীরই একই চরিত্র ছিল। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা উমরের সম্পর্কেও একই তথ্য জানা যায় যে, তিনিও একজন অপ্রাপ্তবয়ষ্ক মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন, যার তখনো পিরিয়ড শুরু হয় নি। সেই মেয়েটির পিতা ছিল হয়রত আলী। উমর রীতিমত জোরাজুরি করেই আলীর অপ্রাপ্তবয়ষ্ক মেয়ে উম্মে কুলসুমকে বিবাহ করেন বলে ইবনে সাদের তাবাকাত আল কাবীর গ্রন্থ থেকে জানা যায় [127]।
শুধু যে বিবাহের মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ ছিল তা নয়। হয়রত উমর সেই অপ্রাপ্তবয়ষ্ক মেয়ে উম্মে কুলসুমের সাথে ( জন্ম ৬২৭ খ্রিস্টাব্দ ) ৬৩৮ সালের নভেম্বর ডিসেম্বর মাসে যৌনসঙ্গমও করেন [128] –
আসুন এই বর্ণনাটি আমরা হায়াতুস সাহাবাহ গ্রন্থ থেকে দেখে নিই [129] –
সাহাবীদের বাল্যবিবাহ ও ইজমা
শুধু মুহাম্মদই নন, মুহাম্মদের অনেক সাহাবীই শিশু কন্যা বিবাহ করেছেন। একইসাথে, আলেমদের মধ্যে এই বিষয়ে ইজমা বা ঐক্যমত্য রয়েছে যে, শিশু কন্যা বিবাহ ইসলামে সম্পূর্ণ বৈধ [130] –
আয়িশা কেন প্রতিবাদ করেনি?
এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমতাবান একজন পুরুষের স্ত্রী বা স্ত্রীগণ তার স্বামীর বিরুদ্ধে কোন নির্যাতন নিপীড়নের অভিযোগ করবে, এরকম সম্ভাবনা সকল সমাজে অত্যন্ত কম, রক্ষণশীল সমাজে আরও কম। এইরকম রক্ষণশীল সমাজে একজন নারী নানাভাবে প্রভাবিত হয়। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই তার অভিযোগ করার সুযোগ কম থাকে। সেই স্বামীটি যদি ধর্মীয়ভাবেই ক্ষমতাবান হন, তাহলে সেই সম্ভাবনা আসলে শূন্যের কাছাকাছিই চলে যায়। এর পেছনে যেসকল বিষয় ভূমিকা রাখে, সেগুলো হচ্ছে,
- অদৃশ্য ক্ষমতার উপস্থিতি ও প্রভাবঃ সামাজিকভাবে একজন ক্ষমতাশালী পুরুষের একটি নির্দিষ্ট সমাজে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব থাকে, এবং তার মৃত্যুর পরেও তার প্রভাব রয়ে যায়। একটি সম্পর্কের ভিতরে তা একটি অদৃশ্য ক্ষমতার প্রভাব তৈরি করে, যা সেই মানুষটির স্ত্রীকে মানসিকভাবে দুর্বল করে রাখে। পরিণতির ভীতি, সামাজিক সম্মান ও মর্যাদা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা, আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে যাওয়ার ভয় সেইসব নারীকে কার্যত সেরকম বিপ্লবী হওয়া থেকে বিরত রাখে।
- সামাজিক চাপ এবং Stigma বা কলঙ্কঃ বিশেষ ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের সাথে জড়িত মানুষদের ক্ষমতার কারণে তৈরি হওয়া এক ধরণের সামাজিক চাপ এই সকল নারীর ওপর বজায় থাকে। ক্ষমতাবান স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আরোপ করা সামাজিক দৃষ্টিতে নেতিবাচক ব্যাপার হিসেবে দেখা হয়, যা নানা ধরণের কটু মন্তব্য থেকে শুরু হয় তবে সেগুলো শুধু কটু মন্তব্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। এটি তাকে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আরোপ করতে পরোক্ষভাবে বিরত রাখে কারণ সেই নারী তার আত্মমর্যাদার উপরই যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী আর রাখতে পারে না।
- আর্থিক নির্ভরতাঃ অনেক ক্ষেত্রে, একটি রক্ষণশীল সমাজে একজন নারী আত্মনির্ভরশীল থাকে না, নিজস্ব পড়ালেখা বা ব্যবসাবাণিজ্যের কোন সুযোগ তার হয় না। এই কারণে তার আর্থিকভাবে নির্ভর করতে হয় তার ক্ষমতাবান স্বামীর উপর, অথবা ক্ষমতাবান স্বামীর রেখে যাওয়া অর্থের ওপর, অনেক সময় শুধুমাত্র তার স্বামীর প্রভাবের ওপর। স্বামী মারা গেলেও সেই স্বামীর ক্ষমতার প্রভাব যদি সমাজে অক্ষুণ্ণ থাকে, তাহলে তার বিদ্রোহ তার অর্থনৈতিক স্থায়িত্য ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। অধিকাংশ নারীই এই ঝুঁকি নিতে চান না।
- সমর্থনের অভাবঃ একজন ক্ষমতাবান স্বামীর সাধারণভাবেই প্রচুর সংখ্যক সমর্থক, মিত্র থাকে এবং আইনি সংস্থাগুলিও সেই ক্ষমতাবান স্বামীর সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখতে বদ্ধপরিকর থাকে। সেই ক্ষমতাবান স্বামীর একটি বিস্তৃত নেটওয়ার্ক তৈরি হয়, যেখানে ক্ষমতার চক্র তৈরি হয়। এর ফলে একজন স্ত্রী কোন সমর্থক খুঁজে পান না, যে তাকে বিদ্রোহ করার ক্ষেত্রে তার পাশে থাকবে। এটি সেই স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছিন্নতাবোধ তৈরি করতে পারে, সে সমর্থকের অভাব বোধ করতে পারে। এটি তাকে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া থেকে আরও নিরুৎসাহিত করতে পারে।
- মানসিক দুর্বলতাঃ প্রতিটি মানবীয় সম্পর্কই অত্যন্ত জটিল, এবং আবেগ এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অসংখ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে দেখা যায়, একজন নির্যাতক স্বামী তার স্ত্রীকে প্রচুর নির্যাতন করার পরেও সেই স্ত্রী তার স্বামীর প্রতি এক ধরণের আবেগ অনুভব করে। বিশেষ করে আমাদের দেশের খেটে খাওয়া মানুষদের মধ্যে এরকম উদাহরণ খুবই বেশি। স্বামী প্রতিদিনই মারধোর করে, কিন্তু সেই স্ত্রীর তারপরেও তার স্বামীর প্রতি মানসিক আবেগ বোধ করে। এটি হতে পারে ভালবাসার জন্য, হতে পারে আনুগত্যের জন্য। এটি সেই নারীর পক্ষে তার স্বামীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন করে তোলে।
ইসলামে এই বর্বর শিশুকামকে জায়েজ করতে অনেক মুসলিমই দাবী করেন যে, আয়িশা তো এই সম্পর্কে নবীর বিরুদ্ধে কখনো ধর্ষণের বা অন্য কোন অভিযোগ করেননি। তাহলে নাস্তিকরা কেন অভিযোগ করছে? কিন্তু এই ধরণের বক্তব্য একদমই নিম্নমানের প্রতারণা ভিন্ন কিছু নয়। পৃথিবীতে অনেক অপরাধ ঘটে, যেখানে ভিক্টিমের কোন অভিযোগ পাওয়া যায় না। ভিক্টিমের অভিযোগ পাওয়া না গেলেই অপরাধটি ঘটেনি, এরকম বলা শুধু হাস্যকরই নয়, প্রতারণাও বটে। আমাদের দেশের নানীদাদীদের অনেকেই সারাজীবন স্বামীর দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছে। স্বামীর মৃত্যুর পরে তারা কেউই স্বামীর নামে অভিযোগ করেননি। পরিবারের সম্মান, বংশের মর্যাদা, নিজের সম্মান, এইসব কিছু বিবেচনা করে বেশিরভাগ নির্যাতিত নারীই কখনো নির্যাতক স্বামীর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেন না। এর দ্বারা এটি প্রমাণিত হয় না যে, তাদের স্বামীরা খুব ভাল মানুষ ছিলেন বা তাদের ওপর কখনোই নির্যাতন হয়নি। আমাদের দেশের অনেক মাদ্রাসার ছাত্রও শিক্ষকদের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হন। কিন্তু মুখ ফুটে সেগুলো তারা বেশিরভাগই বলতে পারেন না। একেই ভবিতব্য বলে জীবন কাটিয়ে দেন। এর মানে তো এই নয় যে, তাদের সাথে কিছু ঘটেনি!
একটি শিশুর যেহেতু সম্মতি দেয়ার বয়সই হয়নি, তাই তার সাথে যেকোন যৌন আচরণই ধর্ষণের অন্তর্ভূক্ত। সেটি সেই বাচ্চাটি অভিযোগ করুক কিংবা না করুক। আমরা যদি এটি প্রমাণ করতে পারি যে, তার সাথে এরকম আচরণ ঘটেছিল, তাহলে তার অভিযোগ করা না করা মূল্যহীন। তার ওপর তার স্বামী যদি খুবই প্রভাবশালী ব্যক্তি হয়, তার সম্পর্কে তার স্ত্রী অভিযোগ করবে, এটি ভাবাই যায় না। আমাদের নিজেদের এলাকাতেই এক মস্তবড় রাজনৈতিক নেতা এক মেয়েকে বাসা থেকে তুলে এনে জোর করে বিয়ে করেছিল। বিয়ের প্রথম কয়েকমাস মেয়েটি দুঃখে ছিল। ধীরে ধীরে সে সব মেনে নিতে শুরু করে এবং কয়েকবছর পরে সে তার স্বামীকে ভালবাসতেও শুরু করে। কিন্তু তার মানে তো এই নয়, তাকে জোর করে তুলে এনে বিয়ে করার কাজটি নৈতিক কাজে পরিণত হলো!
পৃথিবীতে এমন অনেক পিতামাতাই আছেন, যারা সামান্য টাকার লোভে কিংবা কোন সুবিধা আদায়ের জন্য নিজের সন্তানকে বিক্রি করে দিতে কার্পণ্য বোধ করেন না। এলাকার ক্ষমতাবান লোকের কাছে মেয়ে বিয়ে দেয়া গ্রামাঞ্চলে এখনো খুব প্রচলিত বিষয়। প্রায় প্রতিদিনই এরকম অসংখ্য খবর আমরা সংবাদপত্রে পড়ি। অনেক পীরের ভক্তকেও দেখা যায়, পীর সাহেবের সাথে নিজের মেয়ের বিয়ে দেন। জান্নাতের লোভে, কিংবা পৃথিবীতে কোন কোন লাভের জন্য। তাই ভবিষ্যতে খলিফা হওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে আবু বকর যদি আয়িশার সাথে নবীর বিয়ে দিয়ে থাকেন, তাতে খুব অবাক হওয়ার কিছু নেই। আয়িশার সাথে মুহাম্মদের এই বিবাহ দেয়ার ঘটনায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে আয়িশা এবং আবু বকরের সম্পর্ক। আমাদের সেগুলোও বিবেচনা করে দেখতে হবে। আসুন মিজানুর রহমান আজহারীর একটি ওয়াজ শুনে নেয়া যাক, যেই ওয়াজ থেকে আবুবকরের সাথে আয়িশার সম্পর্কের বিষয়ে ধারণা পাওয়া যায়,
মুমিনদের কাছ থেকে প্রশ্ন আসতে পারে, আয়িশা বড় হওয়ার পরে তাহলে কেন মুহাম্মদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলো না! এটিও একটি নিম্নমানের প্রতারণা। কারণ ইসলামের শরিয়তের বিধান অনুসারে, নবী মুহাম্মদের যেকোন সমালোচনাকারী শাতিমে রাসুল [131] হিসেবে গণ্য এবং সে মৃত্যুদণ্ডের উপযুক্ত ব্যক্তি। আয়িশা যদি সাহস করে নবীর সম্পর্কে অভিযোগ করতোও, তাহলে তাকে কী আর জীবিত থাকতে দেয়া হতো? আয়িশা কী এটি জানতেন না যে, নবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে তার ফলাফল কী হতে পারে? সেই সময়ে খলিফা কারা ছিলেন? তার পিতা আবু বকর, উমর, উসমান আলী, এরা। এরা সকলেই ছিল নবীর খুবই ঘনিষ্ঠ এবং নবীর নামেই তাদের সাম্রাজ্য বিস্তার এবং খিলাফতের প্রধান হওয়ার সুযোগ হয়েছে। তারা কী এরকম কথা সহ্য করতো? যার নামে তাদের খিলাফত, রাজত্ব এবং ক্ষমতা, তার সম্পর্কে কী স্বাধীনভাবে কেউ অভিযোগ করতে পারতো? আসুন দেখি, আবু বকরের আমলে আবু বকরের বক্তব্য অনুসারে নবীকে মন্দ বলার শাস্তি কী! [132] [133]
সূনান নাসাঈ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৩৮/ হত্যা অবৈধ হওয়া
পরিচ্ছেদঃ ১৬. রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে মন্দ বলার শাস্তি
৪০৭২. আমর ইবন আলী (রহঃ) … আবু বারযা আসালামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ)-কে মন্দ বললে, আমি বললামঃ আমি কি তাকে হত্যা করবো? তিনি আমাকে ধমক দিয়ে বললেনঃ এই মর্যাদা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যতীত আর কারো নেই।
তাহক্বীকঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ বারযাহ (রাঃ)
হযরত আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেন-
“ যে ব্যক্তি আমাকে গালি দেয়, তাকে হত্যা কর। আর যে আমার সাহাবীকে গালি দেয়, তাকে প্রহার কর।”(জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-২২৩৬৬, জামেউল জাওয়ামে, হাদীস নং-৫০৯৭, দায়লামী, ৩/৫৪১, হাদীস নং-৫৬৮৮, আস সারেমুল মাসলূল-৯২)
এই হাদিসটি আপনি পাবেন প্রখ্যাত ইসলামের ফতোয়া বিষয়ক ওয়েবসাইট ইসলাম ওয়েব ডট নেট ওয়েবসাইটে [134]
ما روي عن علي بن أبي طالب رضي الله عنه قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ” من سب نبيا قتل ، ومن سب أصحابه جلد ” .
একইসাথে উল্লেখ্য, আবু বকর এবং উমর দুইজনই নবীর সাথে সামান্যতম বেয়াদবির জন্য আয়িশা এবং হাফসাকে রীতিমত মারধোর করতেন বলেও সহিহ হাদিস থেকে জানা যায়। নবী মুহাম্মদ যখন আয়িশা এবং হাফসাকে তালাক দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সেই সময়েও আবু বকর এবং ওমর নবীর পক্ষেই উকালতি করেছেন। নিজের মেয়েদের পাশে দাঁড়াননি। সেই সময়ে আয়িশা এবং হাফসা নবীর কাছে খোরপোষ দাবী করেছিল। এই দাবীর কারণে খোদ নবীর সামনেই আবু বকর এবং উমর আয়িশা এবং হাফসাকে কিলঘুষি মারেন। যেই মেয়েদের নিজের পিতা তাদের মারধোর করতো এই কারণে যে, তারা তাদের স্বামী নবী মুহাম্মদের সাথে সামান্যতম দ্বিমত করেছে, ন্যায্য দাবী করেছে, সেই মেয়েরা কীভাবে তাদের পিতার শাসনামলে তাদের মৃত স্বামী সম্পর্কে অভিযোগ করবে? এটি কী কখনো সম্ভব? আসুন হাদিসগুলো পড়ি [135] –
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৯/ তালাক
পরিচ্ছেদঃ ৪. ইখতিয়ার প্রদান করলে তালাকের নিয়্যাত ছাড়া তালাক হবে না
৩৫৫৭। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ বকর (রাঃ) এসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে উপস্থিতির অনুমতি প্রার্থনা করলেন। তিনি তার দরজায় অনেক লোককে উপবিষ্ট দেখতে পেলেন। তবে তাদের কাউকে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় নি। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, এরপর তিনি আবূ বকর (রাঃ) কে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হলে তিনি প্রবেশ করলেন। এরপর উমর (রাঃ) এলেন এবং তিনি অনুমতি প্রার্থনা করলেন। তখন তাকেও প্রবেশের অনুমতি প্রদান করা হল। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে চিন্তিত ও নীরব বসে থাকতে দেখলেন আর তখন তার চতুষ্পার্শ্বে তাঁর সহধর্মিনীগণ উপবিষ্টা ছিলেন।
তিনি (বর্ণানাকারী জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ)) বলেন, উমর (রাঃ) বললেনঃ নিশ্চয়ই আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে এমন কথা বলব যা তাঁকে হাসাবে। এপর তিনি বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি যদি দেখতেন খারিজার কন্যা (উমর (রাঃ) এর স্ত্রী) আমার কাছে খোরপোষ তলব করছিল। আমি তার দিকে উঠে গেলাম এবং তার ঘাড়ে ঘুষি মারলাম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে উঠলেন এবং বললেন, আমার চতুষ্পার্শ্বে তোমরা যাদের দেখতে পাচ্ছ তারা আমার কাছে খোরপোষ দাবী করছে।
অমনি আবূ বকর (রাঃ) আয়িশা (রাঃ) এর দিকে ছুটলেন এবং তাঁর গর্দানে ঘুষি মারলেন। উমর (রাঃ)ও দাঁড়িয়ে গেলেন এবং হাফসা (রাঃ) এর দিকে অগ্রসর হয়ে তাঁর ঘাড়ে ঘুষি মারলেন। তাঁরা উভয়ে বললেন, তোমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এমন জিনিস দাবী করছে যা তাঁর কাছে নেই। তখন তাঁরা (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনীগণ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমরা আর কখনো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এমন জিনিস চাইব না যা তাঁর কাছে নেই।
এরপর তিনি তাঁদের (তাঁর সহধর্মিনীগণের) থেকে একমাস কিংবা ঊনত্রিশ দিন পৃথক রইলেন। এপর তাঁর প্রতি এই আয়াত নাযিল হলঃ (অর্থ) “হে নবী! আপনি আপনার সহধর্মিনীদের বলে দিন, তোমরা যদি পার্থিব জীবনের ভোগ ও এর বিলাসিতা কামনা কর, তাহলে এসো আমি তোমাদের ভোগ-বিলাসে ব্যবস্থা করে দেই এবং সৌজন্যের সাথে তোমাদের বিদায় করে দেই। আর যদি তোমরা আল্লাহ, তাঁর রাসুল ও পরকালকে কামনা কর তাহলে তোমাদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ন আল্লাহ তাদের জন্য মহা প্রতিদান প্রস্তুত করে রেখেছেন।” (আহযাবঃ ২৮ ২৯)
তিনি [জাবির (রা)] বলেন, তিনি (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আয়িশা (রাঃ) কে দিয়ে (আয়াতের নির্দেশ তামীল করতে) শুরু করলেন। তখন তিনি বললেন, হে আয়িশা! আমি তোমার কাছে একটি (গুরত্বপূর্ণ) বিষয়ে আলাপ করতে চাই। তবে সে বিষয়ে তোমার পিতা-মাতার সঙ্গে পরামর্শ না করে তোমার ত্বরিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করাই আমি পছন্দ করি।
তিনি বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সে বিষয়টা কি (আমি জানতে পারি)? তখন তিনি তার কাছে এই আয়াত তিলাওয়াত করলেন। তিনি বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনার ব্যাপারে আমি কি আমার পিতা-মাতার কাছে পরামর্শ নিতে যাব? (এর কোন প্রয়োজন নেই)। না, বরং আমি আল্লাহ, তাঁর রাসুল ও আখিরাতকেই বেছে নিয়েছি। তবে আপনার সকাশে আমার একান্ত নিবেদন, আমি যা বলেছি সে সম্পর্কে আপনি আপনার অন্যান্য সহধর্মিনীগণের কারো কাছে ব্যক্ত করবেন না। তিনি বললেন, তাদের যে কেউ সে বিষয় আমাকে জিজ্ঞাসা করলে আমি অবশ্যই তাঁকে তা বলে দিব। কারণ আল্লাহ আমাকে কঠোরতা আরোপকারী ও হঠকারীরূপে নয় বরং সহজ পন্থায় (শিক্ষাদানকারী) হিসাবে প্রেরণ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ)
শুধু তাই নয়, একবার নবী মুহাম্মদ ও তার অনুসারীদের জন্য পানির ব্যবস্থা করতে দেরী হওয়ায়, আবু বকর আয়িশার কোমরে আঘাত করলেন, সেরকম ঘটনাও হাদিসে বর্ণিত আছে [136] –
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৮৬/ দন্ডবিধি
পরিচ্ছেদঃ ৮৬/৪০. শাসক ব্যতীত অন্য কেউ যদি নিজ পরিবার কিংবা অন্য কাউকে শাসন করে।
وَقَالَ أَبُو سَعِيدٍ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا صَلَّى فَأَرَادَ أَحَدٌ أَنْ يَمُرَّ بَيْنَ يَدَيْهِ فَلْيَدْفَعْهُ فَإِنْ أَبَى فَلْيُقَاتِلْهُ وَفَعَلَهُ أَبُو سَعِيدٍ
আবূ সা’ঈদ (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, কেউ সালাত আদায় করে আর কোন ব্যক্তি তার সম্মুখ দিয়ে অতিক্রম করার ইচ্ছে করে, তাহলে সে যেন তাকে বাধা দেয়। সে যদি বাধা না মানে তাহলে যেন তার সঙ্গে লড়াই করে। আবূ সা’ঈদ (রাঃ) এমন করেছেন।
৬৮৪৪. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আবূ বকর (রাঃ) এলেন। এ সময় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় মাথা আমার ঊরুর ওপর রেখে আছেন। তখন তিনি বললেন, তুমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও লোকদেরকে আটকে রেখেছ, এদিকে তাদের পানির কোন ব্যবস্থা নেই। তিনি আমাকে তিরস্কার করলেন ও নিজ হাত দ্বারা আমার কোমরে আঘাত করতে লাগলেন। আর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অবস্থানই আমাকে নড়াচড়া হতে বিরত রেখেছিল। তখন আল্লাহ্ তায়াম্মুমের আয়াত অবতীর্ণ করলেন।[1] [৩৩৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮০)
[1] আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মাদ (সাঃ)’র উম্মাতের উপর যে সমস্ত রাহমাত বর্ষণ করেছেন তার একটি হল এই তায়াম্মুমের বিধান। তায়াম্মুমের বিধান আল্লাহ না দিলে ইবাদাত বন্দেগী অনেক সময় দুঃসাধ্য হয়ে পড়ত।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
এমনকি, একটি গলার হার হারিয়ে ফেলায় নবীর বিরক্তি উৎপাদন করার জন্যেই আবু বকর আয়িশাকে প্রচণ্ড জোরে থাপ্পড় দিয়েছিলেন বলে জানা যায়। নবীর এরকম অনুগত একজন মানুষ যার পিতা, সেই মেয়েটি তার বাবার খিলাফত আমলে বাবার কাছে নবী সম্পর্কে অভিযোগ করবে, এরকম কল্পনা করাও হাস্যকর [137] [138] –
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫২/ তাফসীর
পরিচ্ছেদঃ ২৩৫৫. আল্লাহর বাণীঃ এবং যদি পানি না পাও তবে পবিত্র মাটির দ্বারা তায়াম্মুম করবে (৫ঃ ৬)
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৪২৫৩, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৪৬০৮
৪২৫৩। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, মদিনায় প্রবেশের পথে বায়দা নামক স্থানে আমার গলার হারটি পড়ে গেল। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে উট বসিয়ে অবস্থান করলেন। তিনি আমার কোলে মাথা রেখে শুয়েছিলেন। আবূ বকর (রাঃ) এসে আমাকে কঠোরভাবে থাপ্পড় লাগালেন এবং বললেন একটি হার হারিয়ে তুমি সকল লোককে আটকে রেখেছ। এদিকে তিনি আমাকে ব্যথা দিয়েছেন, অপর দিকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অবস্থায় আছেন, এতে আমি মৃত্যু যাতনা ভোগ করছিলাম। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাগ্রত হলেন, ফজর সালাত (নামায/নামাজ)-এর সময় হল এবং পানি খোঁজ করে পাওয়া গেল না, তখন নাযিল হলঃيَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلاَةِ الآيَةَ হে মু’মিনগণ, যখন তোমরা সালাতের জন্য প্রস্তুত হবে তখন তোমরা তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত কণুই পর্যন্ত ধৌত করবে। (৫ঃ ৬)
এরপর উসায়দ ইবনু হুযায়র বললেন, হে আবূ বকরের বংশধর! আল্লাহ তা’আলা তোমাদের কারণে মানুষের জন্য বরকত নাযিল করেছেন। তোমাদের আপাদ মস্তক তাদের জন্য বরকতই বরকত।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৬৫/ কুরআন মাজীদের তাফসীর
পরিচ্ছেদঃ ৬৫/৫/৩. আল্লাহর বাণীঃ পানি না পাও, তবে তোমরা পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবে। (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৬)
৪৬০৮. ’আয়িশাহ (রাঃ) বলেছেন, মদিনা্য় প্রবেশের পথে বাইদা নামক স্থানে আমার গলার হারটি পড়ে গেল। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে উট বসিয়ে অবস্থান করলেন। তিনি আমার কোলে মাথা রেখে শুয়েছিলেন। আবূ বকর (রাঃ) এসে আমাকে জোরে থাপ্পড় লাগালেন এবং বললেন একটি হার হারিয়ে তুমি সকল লোককে আটকে রেখেছো। এদিকে তিনি আমাকে ব্যথা দিয়েছেন, অপরদিকে রাসূল সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অবস্থায় আছেন, এতে আমি মৃত্যু যাতনা ভোগ করছিলাম। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাগ্রত হলেন, ফজর সালাতের সময় হল এবং পানি খোঁজ করে পাওয়া গেল না, তখন অবতীর্ণ হলঃيٓٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْآ إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ فَاغسْلُوْا وَجُوْهكُم …..ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন ধৌত করে নিবে নিজেদের মুখমন্ডল এবং হাত কনুই পর্যন্ত। (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৬)
এরপর উসায়দ ইবনু হুযায়র বললেন, হে আবূ বকরের বংশধর! আল্লাহ তা’আলা তোমাদের কারণে মানুষের জন্যে বারাকাত অবতীর্ণ করেছেন। মানুষের জন্য তোমরা হলে কল্যাণ আর কল্যাণ। [৩৩৪] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪২৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪২৫০)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
আরেকটি হাদিসে রয়েছে, নবী হার হারিয়ে ফেলার জন্য আয়িশাকে ঘুষিও মেরেছিলেন আবু বকর [139]। প্রশ্ন হচ্ছে, এরকম একজন নবী অনুগত নবীর ওপর অন্ধবিশ্বাস করা লোককের কাছে নবীর বিরুদ্ধে বিচার দেবেন আয়িশা? –
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৮৬/ দন্ডবিধি
পরিচ্ছেদঃ ৮৬/৪০. শাসক ব্যতীত অন্য কেউ যদি নিজ পরিবার কিংবা অন্য কাউকে শাসন করে।
৬৮৪৫. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আবূ বকর (রাঃ) এলেন ও আমাকে খুব জোরে ঘুষি মারলেন আর বললেন, তুমি লোকজনকে একটি হারের জন্য আটকে রেখেছ। আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অবস্থানের দরুন মরার মত ছিলাম। অথচ তা আমাকে খুবই কষ্ট দিয়েছে। সামনে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। لَكَزَ- وَوَكَزَএকই অর্থের। [৪৪৩] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
নিসা শব্দটির ব্যবহার
অনেক ইসলামিক এপোলোজিস্ট ইসলামের এই শিশুবিবাহ এবং শিশুকামের বৈধতাকে লজ্জার কারণে অস্বীকার করার জন্য দাবী করে থাকেন যে, কোরআনে নিসা শব্দটি দ্বারা শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়ষ্ক নারীদের বোঝানো হয়, সেই সূত্রে সূরা তালাকের ৪ নম্বর আয়াতটিতে শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়ষ্ক নারীদের ইদ্দতের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কথাটি সর্বৈব মিথ্যা। প্রথমত, সমস্ত তাফসীরেই দেখা যাচ্ছে এই আয়াতটি নাজিলের কারণগুলোর মধ্যে একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে অপ্রাপ্তবয়ষ্ক মেয়েদের ইদ্দত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা। দ্বিতীয়ত, সূরা নিসার ১২৭ নম্বর আয়াতে ইয়াতামা আন নিসাই ( فِى يَتَـٰمَى ٱلنِّسَآءِ ) শব্দটির উল্লেখ রয়েছে, যার অর্থ নারীদের মধ্যে যারা ইয়াতীম। এর অর্থ হচ্ছে, নিসা শব্দটি সামগ্রিকভাবে সকল নারীদের ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত একটি শব্দ, যার মধ্যে মেয়ে শিশুও অন্তর্ভূক্ত। নইলে নারীদের মধ্যে যার ইয়াতীম, এই কথাটি বলা থাকতো না। আর ইসলামের বিধান অনুসারে আমরা জানি যে, ইয়াতীম হয় শুধুমাত্র অপ্রাপ্তবয়ষ্ক নারীগণ। প্রাপ্তবয়ষ্ক নারী কখনো ইয়াতীম হয় না। যার প্রমাণ নিচে দেয়া হচ্ছে। আগে সূরা নিসার ১২৭ নম্বর আয়াতটি দেখে নিই,
وَيَسْتَفْتُونَكَ فِى ٱلنِّسَآءِ ۖ قُلِ ٱللَّهُ يُفْتِيكُمْ فِيهِنَّ وَمَا يُتْلَىٰ عَلَيْكُمْ فِى ٱلْكِتَـٰبِ فِى يَتَـٰمَى ٱلنِّسَآءِ ٱلَّـٰتِى لَا تُؤْتُونَهُنَّ مَا كُتِبَ لَهُنَّ وَتَرْغَبُونَ أَن تَنكِحُوهُنَّ وَٱلْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ ٱلْوِلْدَٰنِ وَأَن تَقُومُوا۟ لِلْيَتَـٰمَىٰ بِٱلْقِسْطِ ۚ وَمَا تَفْعَلُوا۟ مِنْ خَيْرٍۢ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِهِۦ عَلِيمًۭا ١٢٧
লিসানুল আরব অভিধানে ইয়াতীমের সংজ্ঞায় বর্ণিত আছে,
اليتيم: الذي يموت أبوه حتى يبلغ الحلم، فإذا بلغ زال عنه اسم اليتيم، واليتيمة ما لم تتزوج، فإذا تزوجت زال عنها اسم اليتيمة
অর্থঃ ইয়াতীম এমন সন্তানকে বলা হয়, যার পিতা মারা গিয়েছে, বালেগ হওয়া অবধি সে ইয়াতীম হিসাবে গণ্য হবে, বালেগ হবার পর ইয়াতীম নামটি তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। আর মেয়ে সন্তান বিয়ের পূর্ব পর্যন্ত ইয়াতীম বলে গণ্য হবে বিয়ের পর তাকে আর ইয়াতীম বলা হবে না। [140]
একইসাথে, এই বিষয়ে অনেকগুলো সহিহ হাদিস রয়েছে, যেখানে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, বালেগ হওয়ার পর কেউ আর ইয়াতীম থাকে না। অর্থাৎ ইয়াতীম শব্দটি নাবালেগের ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র ব্যবহৃত হয়।
বালেগ হওয়ার পর ইয়াতীম থাকে না। [141]
এবারে আসুন বই থেকে একটি গুরুত্বপুর্ণ হাদিস দেখে নিই [142] [143] –
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ১২/ ওসিয়াত প্রসঙ্গে
পাবলিশারঃ আল্লামা আলবানী একাডেমী
পরিচ্ছদঃ ৯. ইয়াতীমের মেয়াদকাল কখন শেষ হয়
২৮৭৩। ‘আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাছ থেকে শুনে মুখস্থ করে নিয়েছিঃ ‘‘যৌবনপ্রাপ্ত হলে কেউ ইয়াতীম থাকে না এবং সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নীরব থাকা জায়িয নয়।’’(1)
(1). সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
নয়বছরে মেয়েরা মহিলা হয়
ইসলামের এই বমি উদ্রেককারী বিধান শুনে আধুনিক সময়ের অনেক মুসলিমই লজ্জিত চেহারায় বলার চেষ্টা করেন যে, সেই সময়ে আরব দেশে মেয়েরা নয়বছর বয়সেই প্রাপ্তবয়ষ্ক হয়ে যেতো! অথচ এরকম কোন প্রমাণ কোথাও পাওয়া যায় না যে, কোন এক বিশেষ অঞ্চলে মেয়েরা কোন নির্দিষ্ট বয়সে প্রাপ্তবয়ষ্ক হয়ে যেতো। বরঞ্চ বিভিন্ন সংস্কৃতিতে সেই সময়ের মানুষ তাদের কৃষ্টি কালচার অনুসারে মেয়েদের বালেগ হওয়ার কিছু বয়স নির্ধারণ করেছিল, সম্পত্তিতে তাদের অধিকার কখন প্রতিষ্ঠিত হবে, তার প্রয়োজনে। কিন্তু সেরকম কোন বয়স সামাজিক বা আইনগতভাবে নির্ধারিত হওয়ার মানে এই নয় যে, সেই বয়সে পৌঁছালে মেয়েরা আসলেই যৌনকর্মের জন্য উপযুক্ত হয়ে যেতো! এই সম্পর্কে মুমিনরা একটি হাদিসের কিয়দাংশ উল্লেখ করে বলার চেষ্টা করেন যে, একটি হাদিসের শেষাংশে বলা আছে, আয়িশা নাকি বলেছিলেন কোন মেয়ে নয় বছর বয়সে পৌঁছালে সে মহিলা। এই হাদিস দিয়ে তারা শিশু বিবাহের এই কুৎসিত প্রথা জায়েজ করার চেষ্টা করেন। তাই এই হাদিসটি কতটুকু সহিহ, সেটি যাচাই করে দেখা প্রয়োজন। তবে এই হাদিস সহিহ হলেও এটি মেনে নেয়া যায় না যে, নয় বছরে মেয়েরা যৌনকাজের উপযুক্ত হয়! কারণ এটি নিতান্তই অজ্ঞতাপ্রসূত একটি বাজে কথা। কেউ যদি এমন কথা বলেও থাকে, সেটি সে জ্ঞানের অভাবের কারণে ভুল বলেছে। তারপরেও, শুধুমাত্র তর্কের খাতিরে আসুন সেই হাদিসটির সনদ যাচাই করে দেখা যাক। Islamqa.info ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে একটি প্রবন্ধ রয়েছে, আসুন প্রবন্ধটি এবং তার অনুবাদ একসাথে পড়ে দেখি [144] [145] –
خبر عائشة: إذا بلغت الجارية تسع سنين، فهي امرأة.
324575
تاريخ النشر : 11-02-2020
المشاهدات : 11432
السؤال
عن عائشة أنها قالت: “إذا بلغت الجارية تسع سنين فهي امرأة” ورد في سنن الترمذي، فهل هذا القول صحيح؟
ملخص الجواب
هذا الخبر، سواء ثبت عن عائشة، أو لم يثبت : ليسا عاما ، بظاهره ، لجميع من بلغت التاسعة؛ وإنما معناه : أن من بلغتها ، وحاضت، كما قد يحصل في بلاد العرب : فإنها تكون امرأة ، يحكم لها بحكم البالغات .
الجواب
الحمد لله.
هذا الأثر رغم كثرة تداول الفقهاء له؛ إلا أنه ورد في المصنفات الحديثية معلقا من غير إسناد.
حيث قال الترمذي رحمه الله تعالى:
” وَقَدْ قَالَتْ عَائِشَةُ: إِذَا بَلَغَتِ الجَارِيَةُ تِسْعَ سِنِينَ فَهِيَ امْرَأَةٌ ” انتهى من “السنن” (3 / 409).
وقال البيهقي رحمه الله تعالى:
” ورُوِّينا عن عائشةَ أنَّها قالَت: إذا بَلَغَتِ الجاريَةُ تِسعَ سِنينَ فهِىَ امرأَةٌ ” انتهى من “السنن الكبرى” (2 / 433).
وقد تتبعه كثير من الباحثين فلم يقفوا له على إسناد.
قال الشيخ الألباني رحمه الله تعالى:
” رواه الترمذي، والبيهقي تعليقا بدون إسناد…
قلت: وقد روي مرفوعا من حديث ابن عمر كما سيأتي في “النكاح” وبلفظه: ( إذا أتى على الجارية تسع سنين فهي امرأة ).
أخرجه أبو نعيم في “أخبار أصبهان” وعنه الديلمي في “المسند” عن عبيد بن شريك، حدثني سليمان بن شرحبيل، حدثنا عبد الملك بن مهران، حدثنا سهل بن أسلم العدوى، عن معاوية بن قرة قال: سمعت ابن عمر به.
قلت: وهذا سند ضعيف، عبد الملك بن مهران قال ابن عدى: “مجهول”.
وقال العقيلي: ” صاحب مناكير، غلب عليه الوهم، لا يقيم شيئا من الحديث “.
قلت: ومن دونه لم أعرفهم … ” انتهى من “إرواء الغليل” (1 / 199).
فالحاصل؛ أن هذا الخبر لا يعلم له إسناد صحيح.
لكن مع عدم وجود إسناد صحيح له؛ إلا أن معناه له وجه من الصواب؛ وهو أن الجارية في بلاد العرب ربما حاضت في سن التاسعة.
وأشار إلى هذا المعنى البيهقي رحمه الله تعالى؛ حيث قال عقب الخبر المنسوب لعائشة رضي الله عنها:
” تعني والله أعلم: [إذا بلغت تسع سنين] ، فحاضَت : فهِي امرأَةٌ ” انتهى من”السنن الكبرى” (2 / 433).
وأشار إليه أيضا البغوي رحمه الله تعالى؛ حيث قال:
” وذهب أحمد، إلى أن اليتيمة إذا بلغت تسع سنين، جاز لغير الأب والجد تزويجها برضاها، ولا خيار لها.
ولعله قال ذلك، لما عُلم أن كثيرا من نساء العرب يدركن إذا بلغن هذا السن، قالت عائشة: ( وإذا بلغت الجارية تسع سنين، فهي امرأة ) ” انتهى من “شرح السنة” (9 / 37).
والحيض علامة على البلوغ ، وتنتقل به البنت من الطفولة فتصبح امرأة.
قال ابن القطان رحمه الله تعالى:
” واتفق أهل العلم إلا من شذ، ممن لا يعد خلافه: على أن الاحتلام ، والحيض : بلوغ.
وأجمع أهل العلم على أن المرأة إذا حاضت ، وجبت عليها الفرائض ” انتهى من “الإقناع” (1 / 125).
والحاصل:
أن هذا الخبر، سواء ثبت عن عائشة، أو لم يثبت : ليسا عاما ، بظاهره ، لجميع من بلغت التاسعة؛ وإنما معناه : أن من بلغتها ، وحاضت، كما قد يحصل في بلاد العرب : فإنها تكون امرأة ، يحكم لها بحكم البالغات .
والله أعلم.
هل انتفعت بهذه الإجابة؟
আয়িশার বর্ণনাঃ যখন দাসী/বাদী ৯ বছর বয়সে পৌঁছায় তখন সে মহিলা/প্রাপ্তবয়স্ক নারী।
প্রশ্নঃ আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যা সুনানে তিরমিজীতে উল্লেখ আছে যে- তিনি বলেছেনঃ “যখন একজন দাসী/বাদী ৯ বছর বয়সে পৌঁছায় তখন সে মহিলা/প্রাপ্তবয়স্ক নারী।” এই বর্ণনাটি কি সঠিক?
সারসংক্ষেপ উত্তরঃ এই বর্ণনা যে আয়িশার থেকে তা প্রমাণিত হোক বা না হোক এই কথাটি “আম” বা প্রকাশ্য অর্থে সর্বজনবিদিত নয়; অর্থাৎ সমস্ত ৯ বছর বয়সী বাঁদীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। বরং এই বর্ণনার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো সেই মেয়ে যে প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছে, যার মাসিক হয়েছে যেমনটা আরব দেশগুলোতে হয়ে থাকে। তখন তাকে প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা ধরা হবে এবং তার উপর প্রাপ্তবয়স্ক নারীর যে হুকুম তা বর্তাবে।
(বিস্তারিত) উত্তরঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ পাকের জন্য। ফিকহবিদগণ প্রমাণসহ এটা উপস্থাপন করার পরও এই বিষয়টির ওপর বিপুল সংখ্যক মানুষের একটি বিরূপ প্রভাব রয়ে গেছে। এছাড়া নতুন লেখকগণ এটি সনদ উল্লেখ ছাড়াই বর্ণনা করেছেন। যখন তা তিরমিজী (রহ:) থেকেও বর্ণিত।
“যখন দাসী/বাদী ৯ বছর বয়সে পৌঁছায় তখন সে প্রাপ্তবয়স্ক নারী।” (আস-সুনান (৩/৪০৯) এর শেষাংশ থেকে উল্লেখিত)
ইমাম বায়হাকী (রহ:)ও বলেছেনঃ
“আয়িশা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ যখন দাসী/বাঁদী ৯ বছর বয়সে পৌঁছায় তখন সে প্রাপ্তবয়স্ক নারী।” (আস-সুনান আল-কুবরা(2/433)এর শেষাংশ থেকে উল্লেখিত)
অনেক গবেষক ইমাম বায়হাকীকে অনুসরন করেছেন কিন্তু সনদের ব্যাপারে তারা একমত হননি।
শায়েখ আলবানী (রহঃ) বলেছেনঃ “ইমাম তিরমিজী এবং ইমাম বায়হাকী এই হাদিসটি কোন সনদ যুক্ত না করেই বর্ণনা করেছেন।”
(উত্তরদাতা) আমি বলি, হ্যাঁ, ঠিক আছে। এটা মারফু হাদিস হিসেবে ইবনে উমর থেকে বর্ণিত আর “বিবাহ” অধ্যায়ে হুবহু এই শব্দেই বর্ণিত আছে যেঃ “যখন দাসী/বাঁদী ৯ বছর বয়সে পৌঁছায় তখন সে প্রাপ্তবয়স্ক নারী”
প্রাপ্ত সনদঃ
——–
আবু নাঈম থেকে “আখবারে ইস্ফাহানে” বর্ণিত এবং দায়লামী তার “মুসনাদ” গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন উবায়দুল্লাহ ইবনে শারীক থেকে। তিনি বলেছেন আমার কাছে সুলাইমান ইবনে সুরাহবিল এভাবে বর্ণনা করেছেন যে, আমাদেরকে আব্দুল মালিক ইবনে মিহরান বর্ণনা করেছেন। আমাদেরকে সাহল ইবনে আসলাম আদী বর্ণনা করেছে মুয়াবিয়া ইবনে কুররাহ থেকে যিনি বলেছেন যে আমি এটি ইবনে ওমর থেকে শুনেছি।
(উত্তরদাতা) আমি বলিঃ এটি একটি দুর্বল সনদ। কারন, আব্দুল মালিক ইবনে মিহরান ইবনে আদী থেকে বর্ণনা করেছে বিষয়টি “অজানা”।
উকাইলী বলেনঃ যে কারো নিন্দা করেছে বা বিভ্রান্তিতে পড়েছে তার থেকে বর্ণিত জিনিস হাদিসের অন্তর্ভুক্ত নয়।
(উত্তরদাতা) আমি বলি “উকাইলীর মন্তব্য ছাড়াও তারা কোন পরিচিত ব্যক্তি নয়। (কাজেই তাদের থেকে উল্লেখিত সনদ সহিহ নয়।)
মোটকথা, এই হাদিসটির সহিহ সনদ জানা যায়না।”
কিন্তু এটার সহিহ সনদ না থাকলেও কথাটির সঠিক ব্যাখ্যা আছে। আর তা হলোঃ এই হাদিসে বাদীকে আরব অঞ্চলের বাদী হিসাবে বলা হয়েছে যে যাদের ৯ বছর বয়সেই মাসিক (পিরিয়ড) হয়। আর ইমাম বায়হাকী আয়েশার বর্ণনা বলে এই ব্যাখ্যার দিকেই ইশারা করেছেন।
“এই বর্ণনা নিয়ে এটি আমার ব্যাখ্যা। সঠিক ব্যাখ্যা আল্লাহই ভালো জানেন।
অধ্যায়সমূহঃ “যদি বাদীর নয় বছর বয়স হয় এবং তার মাসিক হয়” আল-সুনান আল-কুবরা (2/433)
উপরোক্ত ব্যাখ্যার দিকে আল বাগাওয়ি ও ইঙ্গিত করেছেন। যেমন তিনি বলেছেনঃ
“ইমাম আহমদ ও এই বর্ণনা করেছেন যে, যখন এতিম মেয়ে নয় বছর বয়সে পৌঁছায় তখন তার বাবা, দাদার অনুমতি ছাড়া তার সন্তুস্টিতে বিয়ে দেয়া জায়েজ। “আর এই এই মেয়ের কোন সম্মতি বলে কিছু নেই”
সম্ভবত তিনি এটাও বলেছেন যে, যখন আরবের বেশিরভাগ নারী তাদের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার বয়স বুঝতে পারলো তখন আয়েশা (রাঃ) “নয় বছর বয়সে পোঁছালে সে প্রাপ্তবয়স্কা নারী”একথা বলেছেন। (সরহুস-সুন্নাহ (৯/৩৭) এর শেষাংশে উল্লেখিত)
মাসিক (পিরিয়ড) প্রাপ্তবয়স্কা হওয়ার আলামত। আর শিশু থেকে মাসিকের মাধ্যমেই প্রাপ্তবয়স্ক হয়।
ইবনে কাতরান (রহঃ) বলেছেন-
বিভ্রান্ত আলেমগন ছাড়া বাকী সবাই একমত যে- স্বপ্নদোষ এবং মাসিক হওয়াই প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া।
আর জমহুর আলেমগণ একমত যে যখন কোন মেয়ের মাসিক (পিরিয়ড) হয় তখন তার ওপর শরীয়াহর হুকুমসমূহ ফরজ হয়ে যায়।
মোটকথাঃ এই বর্ণনা যে আয়েশার থেকে তা প্রমাণিত হোক বা না হোক এই কথাটি “আম” বা প্রকাশ্য অর্থে সর্বজনবিদিত নয়; অর্থাৎ সমস্ত ৯ বছর বয়সী বাদীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। বরং এই বর্ণনার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো সেই মেয়ে যে প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছে, যার মাসিক হয়েছে যেমনটা আরবদেশগুলোতে হয়ে থাকে। তখন তাকে প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা ধরা হবে এবং তার উপর প্রাপ্তবয়স্ক নারীর যে হুকুম তা বর্তাবে।
এপোলজিস্টদের পক্ষে দুইটি হাদিস
আয়িশার বয়স নিয়ে আলোচনার সময় ইসলামের পক্ষের মানুষেরা দুইটি হাদিস নিয়ে প্রমাণের চেষ্টা করেন, আয়িশা সেই সময়ে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছেছিলেন। এর একটি সহিহ বুখারীর, আরেকটি সুনান আবু দাউদের। আসুন, হাদিস দুইটি পর্যালোচনা করে দেখি, আসলেই হাদিস দুইটির সত্যতা কতটুকু। প্রথমে প্রখ্যাত ওয়েবসাইট সুন্নাহ ডট কম থেকে হাদিসটির ইংরেজি অনুবাদ দেখে নিইঃ
(86)Chapter: (If) a mosque (is built) on a road, it should not be a cause of harm for the people
Narrated `Aisha:
(the wife of the Prophet) I had seen my parents following Islam since I attained the age of puberty. Not a day passed but the Prophet (ﷺ) visited us, both in the mornings and evenings. My father Abu Bakr thought of building a mosque in the courtyard of his house and he did so. He used to pray and recite the Qur’an in it. The pagan women and their children used to stand by him and look at him with surprise. Abu Bakr was a Softhearted person and could not help weeping while reciting the Qur’an. The chiefs of the Quraish pagans became afraid of that (i.e. that their children and women might be affected by the recitation of Qur’an).
Reference : Sahih al-Bukhari 476
In-book reference : Book 8, Hadith 124
USC-MSA web (English) reference : Vol. 1, Book 8, Hadith 465
(deprecated numbering scheme)
পাঠক, লক্ষ্য করুন, এই হাদিসটিতে হাদিসের অনুবাদক মুহসিন খান খুব কৌশলের সাথে أَعْقِلْ শব্দটির অনুবাদ করেছেন Age of Puberty; অথচ, এই শব্দটির সঠিক অর্থ হচ্ছে Age of Reason বা জ্ঞানমতে বা জ্ঞান হওয়ার বয়স থেকে। এই হাদিসটি বাঙলায় অনুবাদের সময় বাঙলা অনুবাদক আবার সঠিক অনুবাদটিই করেছেন। আসুন দেখি হাদিসটির বাঙলা অনুবাদঃ
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৮/ সলাত
পরিচ্ছেদঃ ৮/৮৬. লোকের অসুবিধা না হলে রাস্তায় মাসজিদ বানানো বৈধ।
হাসান বাসরী, আইয়ূব এবং মালিক (রহ.) এরূপ বলেছেন।
৪৭৬. ‘উরওয়াহ বিন যুবাইর সংবাদ দিয়েছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আমার জ্ঞানমতে আমি আমার মাতা-পিতাকে সব সময় দ্বীনের অনুসরণ করতে দেখেছি। আর আমাদের এমন কোন দিন যায়নি যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে দিনের উভয় প্রান্তে সকাল-সন্ধ্যায় আমাদের নিকট আসেননি। অতঃপর আবূ বাকর (রাযি.)-এর মাসজিদ নির্মাণের প্রয়োজন দেখা দিল। তিনি তাঁর ঘরের আঙ্গিণায় একটি মাসজিদ তৈরি করলেন। তিনি এতে সালাত আদায় করতেন ও কুরআন তিলাওয়াত করতেন। মুশরিকদের মহিলা ও ছেলেমেয়েরা সেখানে দাঁড়াতো এবং এতে তারা বিস্মিত হয়ে তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকতো। আবূ বাকর (রাযি.) ছিলেন একজন অধিক ক্রন্দনকারী ব্যক্তি। তিনি কুরআন পড়া শুরু করলে অশ্রু সংবরণ করতে পারতেন না। তাঁর এ অবস্থা নেতৃস্থানীয় মুশরিক কুরাইশদের নেতৃবৃন্দকে শঙ্কিত করে তুলল। (২১৩৮, ২২৬৩, ২২৬৪, ২২৯৭, ৩৯০৫, ৪০৯৩, ৫৮০৭, ৬০৭৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৬২)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উরওয়াহ বিন যুবাইর (রহঃ)
Narrated `Aisha:
(the wife of the Prophet) I had seen my parents following Islam since I attained the age of puberty. Not a day passed but the Prophet (ﷺ) visited us, both in the mornings and evenings. My father Abu Bakr thought of building a mosque in the courtyard of his house and he did so. He used to pray and recite the Qur’an in it. The pagan women and their children used to stand by him and look at him with surprise. Abu Bakr was a Softhearted person and could not help weeping while reciting the Qur’an. The chiefs of the Quraish pagans became afraid of that (i.e. that their children and women might be affected by the recitation of Qur’an).
লক্ষ্য করুন, ইংরেজি অনুবাদে কী পরিমাণ জ্বালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন হাদিসের অনুবাদক। কেন এই জ্বালিয়াতি, নবী মুহাম্মদের চরিত্র পরিচ্ছন্ন করার জন্য? আরেকটি হাদিস পাওয়া যায় সুনান আবু দাউদ শরীফ থেকেঃ
General Behavior (Kitab Al-Adab)
(63)Chapter: About swings
Narrated Aisha, Ummul Mu’minin:
The Messenger of Allah (ﷺ) married me when I was seven or six. When we came to Medina, some women came. according to Bishr’s version: Umm Ruman came to me when I was swinging. They took me, made me prepared and decorated me. I was then brought to the Messenger of Allah (ﷺ), and he took up cohabitation with me when I was nine. She halted me at the door, and I burst into laughter.
Abu Dawud said: That is to say: I menstruated, and I was brought in a house, and there were some women of the Ansari in it. They said: With good luck and blessing. The tradition of one of them has been included in the other.
Grade : Sahih (Al-Albani)
Reference : Sunan Abi Dawud 4933
In-book reference : Book 43, Hadith 161
English translation : Book 42, Hadith 4915
এবারে বাঙলায় পড়িঃ
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، ح وَحَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، قَالاَ حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تَزَوَّجَنِي وَأَنَا بِنْتُ سَبْعِ سِنِينَ فَلَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ أَتَيْنَ نِسْوَةٌ – وَقَالَ بِشْرٌ فَأَتَتْنِي أُمُّ رُومَانَ – وَأَنَا عَلَى أُرْجُوحَةٍ فَذَهَبْنَ بِي وَهَيَّأْنَنِي وَصَنَعْنَنِي فَأُتِيَ بِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَبَنَى بِي وَأَنَا ابْنَةُ تِسْعٍ فَوَقَفَتْ بِي عَلَى الْبَابِ فَقُلْتُ هِيهْ هِيهْ – قَالَ أَبُو دَاوُدَ أَىْ تَنَفَّسَتْ – فَأُدْخِلْتُ بَيْتًا فَإِذَا فِيهِ نِسْوَةٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَقُلْنَ عَلَى الْخَيْرِ وَالْبَرَكَةِ . دَخَلَ حَدِيثُ أَحَدِهِمَا فِي الآخَرِ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, আমার ছয় বা সাত বছর বয়সে (রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)) আমাকে বিয়ে করেন। আমরা মদিনায় আগমন করলে একদল মহিলা আসলেন। বর্ণনাকারী বিশরের বর্ণনায় রয়েছেঃ আমার নিকট (আমার মা) উম্মু রূমান (রাঃ) আসলেন, তখন আমি দোলনায় দোল খাচ্ছিলাম। তিনি আমাকে নিয়ে গেলেন, আমাকে প্রস্তুত করলেন এবং পোশাক পরিয়ে সাজালেন। অতঃপর আমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পেশ করা হলো। তিনি আমার সঙ্গে বাসর যাপন করলেন, তখন আমার বয়স নয় বছর। মা আমাকে ঘরের দরজায় দাড় করালেন এবং আমি উচ্চহাসি দিলাম। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, অর্থাৎ আমার মাসিক ঋতু হয়েছে। আমাকে একটি ঘরে প্রবেশ করানো হলো। তাতে আনসার গোত্রের একদল মহিলা উপস্থিত ছিলেন। তারা আমার জন্য কল্যাণ ও বরকত কামনা করলেন।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৯৩৩
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
পাঠক, লক্ষ্য করুন, আয়িশার যে ঋতুস্রাব হয়েছিল, তা আবু দাউদের মতামত মাত্র। উনি আয়িশা অথবা আয়িশার কাছ থেকে সরাসরি শুনেছেন এমন কারো কাছ থেকেও এই কথা শোনেন নি। শুধুমাত্র আবু দাউদের মতামত তো গ্রহণযোগ্য নয়।
এবারে আসুন এই বিষয়ে বর্তমান সময়ের সবচাইতে বিখ্যাত ইসলামি পণ্ডিতদের একজন শায়েখ সালিহ আল মুনাজ্জিদের পরিষ্কার বক্তব্য পড়ি ইসলামকিউএ নামক বিখ্যাত ওয়েবসাইট থেকে। মূল লেখাটির লিঙ্ক দেয়া হচ্ছে [146], সাথে অনুবাদ। অনুবাদটি করে দিয়েছেন সংশয় পরিবারের আবুল ফজল ভাই।
প্রশ্নঃ
ইন্টারনেটে একটি চ্যাটরুমে অন্যদের সাথে আলাপচারিতার সময় একটি আশ্চর্য বিষয় আমার গোচরীভূত হয়। আমি চাই, রাসুল মুহাম্মাদের সিরাত বা জীবনী সম্পর্কে যার সম্যক জ্ঞান আছে, তেমন কেউ যেন আমাকে এই বিষয়টি ব্যাখ্যা করে দেন। সহিহ বুখারিতে বর্ণিত যে ব্যাপারটি আছে, অর্থাৎ রাসুল মুহাম্মাদ আয়িশার ছয় বছর বয়সের সময় বিয়ের চুক্তি করেছিলেন, আর নয় বছর বয়সের সময় সহবাস করে বিয়ের পূর্ণতা দান করেছিলেন, এই ব্যাপারটি নিয়ে গবেষণা করে একজন সাংবাদিক বুখারির এই হাদিসটির সত্যতা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। উক্ত গবেষক হাদিসের বর্ণনাটি সংখ্যা ও তারিখের ভিত্তিতে বিচার তো করেছেনই, সেই সঙ্গে বুখারি ও মুসলিমে উল্লেখিত হাদিসটি ইসনাদের ভিত্তিটি পুনর্বিবেচনা করেছেন। দুই ক্ষেত্রেই তিনি তার সন্দেহকে দক্ষতার সাথে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন।
উত্তরঃ
প্রথমত,
রাসুল মুহাম্মাদ যখন আয়িশার সঙ্গে বিয়ের চুক্তি সম্পাদন করলেন, তখন আয়িশার বয়স কত ছিল, আর যখন আয়িশার সঙ্গে বিছানায় যৌনকর্ম সম্পাদনের মাধ্যমে বিবাহকে পূর্ণতা দিলেন, তখনই বা আয়িশার বয়স কত ছিল, এই পুরো ব্যাপারটি ইসলামি শাস্ত্র বিশেষজ্ঞদের ব্যক্তিগত মতের উপর একেবারেই নির্ভর করে না, যাতে কিনা কেউ তর্ক করতে পারে যে বিষয়টি ঠিক ছিল নাকি ভুল ছিল। বরং এই ব্যাপারটি তথ্য প্রমাণের মাধ্যমে দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রমাণিত হওয়া একটি ইতিহাসভিত্তিক বিবরণ, যা কিনা মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। এর অনেকগুলো কারণ রয়েছে-
১.
বয়সের উল্লেখ আয়িশা নিজমুখে করেছিলেন। এমন কিন্তু নয় যে,অন্য কেউ তাঁর ব্যাপারে বলেছিল, বা কোন ইতিহাসবিদ বা হাদিস বিশারদের বর্ণনা থেকে আমরা বয়সের ব্যাপারটি জানতে পেরেছি। বরং বয়সের ব্যাপারটি এমন একটি প্রেক্ষাপট থেকেই আমরা জানতে পারছি যখন কিনা আয়িশা নিজমুখে নিজের সম্বন্ধে বলছিলেন। তিনি যা বলেছিলেন, সেটি বুখারি শরিফের ৩৮৯৪ ও মুসলিম শরিফের ১৪২২ নম্বর হাদিসের বর্ণনায় সরাসরি এসেছে –
‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আমাকে বিবাহ করেন, তখন আমার বয়স ছিল ছয় বছর। তারপর আমরা মদিনায় এলাম এবং বনু হারিস গোত্রে অবস্থান করলাম। সেখানে আমি জ্বরে আক্রান্ত হলাম। এতে আমার চুল পড়ে গেল। পরে যখন আমার মাথার সামনের চুল জমে উঠল। সে সময় আমি একদিন আমার বান্ধবীদের সাথে দোলনায় খেলা করছিলাম। তখন আমার মাতা উম্মে রূমান আমাকে উচ্চস্বরে ডাকলেন। আমি তাঁর কাছে এলাম। আমি বুঝতে পারিনি, তার উদ্দেশ্য কী? তিনি আমার হাত দরে ঘরের দরজায় এসে আমাকে দাঁড় করালেন। আর আমি হাঁফাচ্ছিলাম। শেষে আমার শ্বাস-প্রশ্বাস কিছুটা প্রশমিত হল। এরপর তিনি কিছু পানি নিলেন এবং তা দিয়ে আমার মুখমন্ডল ও মাথা মাসেহ করে দিলেন। তারপর আমাকে ঘরের ভিতর প্রবেশ করালেন। সেখানে কয়েকজন আনসারী মহিলা ছিলেন। তাঁরা বললেন, কল্যাণময়, বরকতময় এবং সৌভাগ্যমন্ডিত হোক। আমাকে তাদের কাছে দিয়ে দিলেন। তাঁরা আমার অবস্থান ঠিক করে দিলেন, তখন ছিল দ্বিপ্রহরের পূর্ব মুহূর্ত। হঠাৎ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখে আমি হকচকিয়ে গেলাম। তাঁরা আমাকে তাঁর কাছে তুলে দিল। সে সময় আমি নয় বছরের বালিকা।
২.
আয়িশার এই বর্ণনাটি এসেছে এমন দুটি গ্রন্থে, যে দুটিকে কোরানের পরেই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ মনে করা হয় – সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম শরিফ।
৩.
কিছু অজ্ঞ মানুষ যদিও দাবী করে যে এই হাদিসটির একটিই মাত্র ইসনাদ বা বর্ণনাসূত্র আছে, কিন্তু আসলে এই হাদিসটির একাধিক ইসনাদ রয়েছে।
সবচেয়ে প্রচলিত যে বর্ণনাসূত্র, সেটি হচ্ছে হিশাম ইবনে উরওয়াহ ইবনে আজজুবায়ের এর থেকে, তিনি শুনেছিলেন তার পিতা উরওয়াহ ইবনে আজজুবায়ের এর থেকে, এবং উরওয়াহ ইবনে আজজুবায়ের শুনেছিলেন স্বয়ং আয়িশার কাছ থেকে। এই বর্ণনাটি সবচেয়ে নির্ভুল বর্ণনাগুলোর একটি, কারণ এই উরওয়াহ ইবনে আজজুবায়ের পারিবারিকভাবে আয়িশার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মানুষদের একজন ছিলেন, সম্পর্কে আয়িশা উরওয়াহ ইবনে আজজুবায়েরের খালা হতেন।
মুসলিম শরীফের ১৪২২ নম্বর হাদিসের বর্ণনাটির সূত্র আবার আরেকটি, সেটি হচ্ছে আজজুহরি, তিনি শুনেছিলেন উরওয়াহ ইবনে আজজুবায়ের এর কাছ থেকে, আর উরওয়াহ ইবনে আজজুবায়ের শুনেছিলেন স্বয়ং আয়িশার কাছ থেকে।
এটির আরো একটি বর্ণনাসূত্র হচ্ছে আল আমাশ, তিনি শুনেছিলেন ইবরাহিমের কাছ থেকে, ইবরাহিম শুনেছিলেন আল আসওয়াদের কাছ থেকে, আল আসওয়াদ শুনেছিলেন স্বয়ং আয়িশার কাছ থেকে। যা শুনেছিলেন, সেটি মুসলিম শরীফের ১৪২২ নম্বর হাদিসের বর্ণনায় এভাবে এসেছে – আয়িশাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, তার ছয় বছর বয়সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বিবাহ করেন, তার নয় বছর বয়সে তিনি তাকে নিয়ে বাসর যাপন করেন এবং আঠারো বছর বয়সে তিনি ইন্তিকাল করেন।
এছাড়াও, বয়সের কথাটি আরেকটি ইসনাদে আছে, সেটি হছে মুহাম্মদ ইবনে আমর এর থেকে, মুহাম্মদ ইবনে আমর শুনেছিলেন ইয়াহিয়া ইবনে আবদুর রহমান ইবনে হাতিব এর থেকে, ইয়াহিয়া ইবনে আবদুর রহমান ইবনে হাতিব শুনেছিলেন স্বয়ং আয়িশার কাছ থেকে, যেটি কিনা উল্লেখিত আছে আবু দাউদ শরিফের ৪৯৩৭ নম্বর হাদিসে।
শেখ আবু ইসহাক আল হুওয়াইনি একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন। যেসব মানুষ উরওয়াহ ইবনে আজজুবায়ের এর কাছ থেকে শুনে এই হাদিসটি বর্ণনা করেছিলেন, তাদের একটি তালিকা প্রস্তুত করেছিলেন শেখ আবু ইসহাক আল হুওয়াইনি। তালিকাটি এরূপ – আল আসওয়াদ ইবনে ইয়াজিদ, আল কাশেম ইবনে আবদুর রহমান, আল কাশেম ইবনে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর, আমরাহ বিনতে আবদুর রহমান এবং ইয়াহিয়া ইবনে আবদুর রহমান ইবনে হাতিব।
এছাড়াও তিনি সেসব ব্যক্তিদের নামের তালিকাও তৈরি করেছিলেন, যারা হিশাম ইবনে উরওয়াহ এর কাছ থেকে শুনে এই হাদিসটি বর্ণনা করেছেন। তারা হলেন, ইবনে শিহাব আজ জুহরি এবং উরওয়াহ এর মুক্তকৃত দাস আবু হামজা মাইমুন।
এছাড়া শেখ আবু ইসহাক আল হুওয়াইনি যেটা করলেন, সেটা হচ্ছে মদিনার ইসলামি শাস্ত্রজ্ঞদের মধ্যে যারা এই হাদিস বর্ণনায় হিশাম ইবনে উরওয়াহকে অনুসরণ করেছেন, তাদের একটি তালিকা তৈরি করলেন। তারা হলেন আবু জিন্নাদ আবদুল্লাহ ইবনে যাকওয়ান, তার পুত্র আবদুর রহমান ইবনে আবি জিন্নাদ এবং আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে ইয়াহিয়া ইবনে উরওয়াহ। পাঠকদের স্মরণে থাকা ভাল যে হিশাম মদিনায় যেসব হাদিস বর্ণনা করেছিলেন, তাদের মধ্যে এই হাদিসটি অন্যতম।
মক্কানিবাসী ইসলামি শাস্ত্রজ্ঞদের মধ্যে সুফিয়ান ইবনে উ-ইয়াইনাহ এই হাদিসটি বর্ণনা করেছন। এছাড়াও আর রাই নিবাসী ইসলামি বিশেষজ্ঞ জারির ইবনে আবদুল হামিদ আদ দুব্বি এই হাদিসটি বর্ণনাকারীদের অন্যতম।
বসরানিবাসী ইসলামি পন্ডিতদের মধ্যে থেকে এই হাদিস বর্ণনাকারীদের তালিকায় আছেন হাম্মাদ উবনে সালামাহ, হাম্মাদ ইবনে জায়েদ, উহাইব ইবনে খালিদ প্রমুখ।
আরবী ভাষা যারা জানেন, তারা নিচে দেওয়া লিংকদুটিতে ক্লিক করে শেখ আবু ইসহাক আল হুওয়াইনির আরবী বক্তব্যটি শুনে দেখতে পারেন ( ১ ) ( ২ )
All of these lists are mentioned in order to ward off the specious argument of some ignorant people who say that Hishaam ibn ‘Urwah was the only one who narrated it. Even if we accept [?} that Hishaam became confused at the end of his life, the correct view is that this accusation was made only by Abu’l-Hasan ibn al-Qattaan in Bayaan al-Wahm wa’l-Eehaam, and he was mistaken in doing so.
যেসব অজ্ঞ লোক না জেনেই মন্তব্য করে বসে যে, হিশাম ইবনে উরওয়াহ ছিলেন এই হাদিসটির একমাত্র বর্ণনাকারী,তাদের যুক্তিখণ্ডনের জন্যই এই তালিকাগুলো তৈরি করা হয়েছে। তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নিই যে বৃদ্ধবয়সে হিশাম ইবনে উরওয়াহ এর স্মৃতিভ্রম হচ্ছিল, এই মিথ্যে অভিযোগটি কেবলমাত্র উত্তর আফ্রিকার আলমোহাদ নামক মুসলিম সাম্রাজ্যের একজন ইসলামি গবেষক আবুল হাসান ইবনে আল কাত্তান একাই করেছেন তার বয়ান আল ওয়াহম ওয়া আল ইহাম আল ওয়াকি-ইন ফি কিতাব আল আহকাম নামক বইটিতেই এসেছে।
পরবর্তীতে বিখ্যাত সিরিয়ান-তুর্কেমেনিস্তানি ইসলামি শাস্ত্রজ্ঞ শামসুদ্দিন আজ জাহাবি তার লেখা বিখ্যাত বই মিজান উল ইতিদাল এ ৪/৩০১-৩০২ অংশে লিখেছিলেন
“হিশাম ইবনে উরওয়াহ ছিলেন ইসলামের পন্ডিতদের মধ্যে অগ্রগণ্য একজন ব্যক্তি। বুড়ো বয়সে তার স্মৃতি কখনো কখনো ঝাপসা হয়ে গেলেও তিনি একেবারে খেই হারিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়তেন না। তাই আবুল হাসান ইবনে আল কাত্তানের অভিযোগ, যে হিশাম ইবনে উরওয়াহ এবং সোহেল ইবনে আবি সালেহ বুড়ো হয়ে যাওয়ার দরুণ সম্পূর্ণ সন্দিহান হয়ে পড়তেন, এর মধ্যে আমি যৌক্তিক কিছু খুঁজে পাচ্ছি না। হ্যাঁ, বুড়ো হবার দরুণ উনি হয়ত কিছুটা বদলে গিয়েছিলেন, এবং তাঁর স্মৃতিশক্তি হয়ত একটু দুর্বল হয়ে পড়েছিল, এবং তিনি কিছু কিছু বিষয় ভুলে যেতেন, কিন্তু তাতে কী? তিনি তো আর ভুলের উর্ধ্বে নন। যখন তিনি জীবনের শেষ প্রান্তে উপনীত অবস্থায় ইরাকে এসেছিলেন, তখনও তিনি শিক্ষার্থীদের মাঝে অনেক জ্ঞান বিতরণ করে গিয়েছিলেন,এর মধ্যে এমন কিছু হাদিসও ছিল যেগুলো তিনি ঠিকমত স্মরণ রাখতে পারতেন না। মালিক, শুবাহ, ওয়াকি প্রমুখ বিশ্বস্ত হাদিস বর্ণনাকারীদের অনেকেরই বৃদ্ধ বয়সে এই সমস্যাটি হয়েছিল। নির্ভরযোগ্য ইসলামি সুপন্ডিতদের দুর্বল বর্ণনাকারী বা বার্ধক্যের কারণে স্মৃতিভ্রষ্ট বর্ণনাকারীদের সাথে গুলিয়ে ফেলে আবুল হাসান ইবনে আল কাত্তান যে আলোচনাটি করছিলেন, সেই হাস্যকর দাবীটিকে আর পাত্তা না দেওয়াই উচিত বলে মনে করি। হিশাম ইবনে উরওয়াহ ছিলেন রীতিমত শায়খুল ইসলাম, তার বিরুদ্ধে ইবনে আল কাত্তান যা বলেছিলেন, তার প্রভাব থেকে আল্লাহ আমাদের মুক্তি দান করুন, এবং আবদুর রহমান ইবনে খারাশ যা বলেছিলেন, সেটা থেকেও – মালিক তাকে পছন্দ করতেন না, কারণ ইরাকে গিয়ে হাদিস বর্ণনা করার কারণে তিনি তার উপর রেগে ছিলেন”।
৪.
এমন কিন্তু নয় যে আয়িশা একাই বলেছেন যে রাসুল মুহাম্মদের সাথে বিয়ের সময় তার বয়স নয় ছিল। আয়িশার সমসাময়িক অনেকেই এই হাদিসটি বর্ণনা করেছেন, যারা আয়িশাকে অন্যদের চেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠভাবে চিনতেন। এমন একটি বর্ণনা নিম্নরূপঃ
ইমাম আহমেদ ইবনে হাম্বল তার মুসনাদে আহমাদ গ্রন্থের ৬/১১২ তে মুহাম্মদ ইবনে বশিরের সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, মুহাম্মদ ইবনে বশির বলেন, মুহাম্মদ ইবনে আমর আমাদের বলেছিলেন, আবু সালামাহ ও ইয়াহিয়া বলেছিলেন, যখন খাদিজা মারা গেলেন, তখন ওসমান ইবনে মাজুন এর স্ত্রী খাওলা বিনতে হাকিম রাসুলের কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি পুনরায় বিয়ে করছেন না কেন? রাসুল পালটা প্রশ্ন করলেন, কাকে? খাওলা বিনতে হাকিম বললেন, আপনি চাইলে কুমারীকে, বা বিধবাকে। রাসুল জানতে চাইলেন, কে সেই কুমারী? উত্তরে খাওলা বিনতে হাকিম বললেন, আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে যিনি আপনার নিকট সবচেয়ে প্রিয়, আপনার বন্ধু সেই আবু বকরের কন্যা আয়িশা বিনতে আবু বকর… এবং এরপরে মুসনাদে আহমাদে এই বর্ণনাটি বিস্তারিত রয়েছে, যেখানে এটি উল্লেখ করা আছে যে আয়িশার ছয় বছর বয়সের সময় বিয়ের চুক্তিপত্র হয়েছিল, আর নয় বছর বয়সের সময় বিবাহ যৌনসম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ হয়েছিল।
৫.
এই বর্ণনাটি আয়িশার নিজের করা বর্ণনার সাথে মিলে তো যাচ্ছেই, এবং অন্যান্য বর্ণনাকারীরাও বর্ণনাটি আয়িশার থেকেই পেয়েছেন এবং আয়িশার জীবনকাল নিয়ে যতগুলো ঐতিহাসিক সূত্র পাওয়া যায়, সবগুলো সূত্রতেই একই বর্ণনা পাওয়া যায়। বর্ণনাগুলোতে কোন পরষ্পরবিরোধীতা বা বৈপরীত্য নেই। এবং বিষয়টি ইজতেহাদ বা কোন বিশেষজ্ঞের ব্যক্তিগত মতের উপরও নির্ভরশীল নয়। একজন মানুষ যখন নিজের ব্যাপারে বক্তব্য দেন, তখন অন্য সে বক্তব্যকে অস্বীকার করার অধিকার স্বভাবতই অন্য কারো থাকে না।
৬.
মুসলিম হিসেবেই আয়িশার জন্ম হয়েছিল বলে ঐতিহাসিক সূত্রগুলো থেকে ঐক্যমত পাওয়া যায়, অর্থাৎ রাসুল মুহাম্মদের ইসলাম প্রচার শুরুর চার বা পাঁচ বছর পরে আয়িশা জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
এই যে হাদিসটি “আমার বাবা-মাকে কেবল ইসলাম ধর্ম অনুসরণ করতে দেখার কথা আমার স্মরণ আছে”, এর ব্যাপারে ইমাম বায়হাকি তার সুনানুল কুবরা হাদিস গ্রন্থের ৬/২০৩ এ লিখেছেনঃ
আয়িশা মুসলিম হিসেবেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন, কারণ রাসুলের ইসলাম প্রচার কার্যক্রম শুরুর একেবারে প্রথম দিকে আয়িশার বাবা মুসলিম হয়েছিলেন। আল আসওয়াদের সূত্রে প্রাপ্ত হাদিসটি, যেটি আল আসওয়াদ আয়িশা থেকে সরাসরি বর্ণনা করেছেন, সেই হাদিসটি থেকে প্রমাণিত হয় যে রাসুল মুহাম্মদ আয়িশাকে বিয়ে করেছিলেন তার ছয় বছর বয়সে, আর যৌনসম্পর্ক স্থাপন করে বিবাহকে পূর্ণতা দিয়েছিলেন আয়িশার নয় বছর বয়সে, আর যখন রাসুল মারা গিয়েছিলেন, তখন আয়িশার বয়স ছিল আঠার বছর। কিন্তু আসমা বিনতে আবু বকর জন্মেছিলেন জাহেলিয়ার যুগে আর মুসলিম হয়েছিলেন তার বাবা মুসলমান হবার পর। এ ব্যাপারে আবু আবদুল্লাহ ইবনে মান্দাহ একটি সূত্র ইবনে আবি জিন্নাদ এর থেকে প্রাপ্ত হয়ে বর্ণনা করেছেন। সেটি অনুযায়ী আসমা বিনতে আবু বকর আয়িশার চেয়ে দশ বছরের বড় ছিলেন, এবং আসমার মা পরে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। আসমা বলেছিলেন, মা আমার কাছে এসেছিলেন এবং তখনও তিনি মুশরিকদের ধর্মের অনুসারীই ছিলেন। আসমার বর্ণিত একটি হাদিস থেকে জানা যায় যে আসমার মায়ের নাম ছিল ক্বাতিলাহ, তিনি বনু মালিক ইবনে হাসাল গোত্রের ছিলেন। তিনি আয়িশার মা ছিলেন না। আসমা তার বাবার সাথেই মুসলমান হয়েছিলেন, কিন্তু তার মা সেসময় মুসলমান হন নি। আবদুর রহমান ইবনে আবু বকর এর ব্যাপারে যা জানা যায়, তা থেকে মনে করা হয় যে তিনি তার বাবা-মায়ের ইসলাম গ্রহণের সময় যুবক ছিলেন, কিন্তু তিনিও বাবা-মায়ের অনুসরণ করে মুসলমান হন নি, তিনি অনেক পরে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। আবদুর রহমান ইবনে আবু বকর ছিলেন আবু বকরের জ্যেষ্ঠতম সন্তান।
শামসুদ্দিন আজ জাহাবি তার সিয়ার আলাম আন নুবালা গ্রন্থের ২/১৩৯ এ বলেছেনঃ
যারা বাবা-মায়ের সূত্রে মুসলমান হিসাবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, আয়িশা ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। তিনি ফাতেমার চেয়ে আট বছরের ছোট ছিলেন। তিনি বলতেন, “আমার বাবা-মাকে কেবল ইসলাম ধর্ম অনুসরণ করতে দেখার কথা আমার স্মরণ আছে”।
আল হাফিজ ইবনে হাজর তার আল ইসাবাহ গ্রন্থের ৮/১৬ তে বলেছেনঃ
তিনি, অর্থাৎ আয়িশা জন্মেছিলেন রাসুলের ইসলাম প্রচার শুরুর চার বা পাঁচ বছর পরে।
এ থেকে প্রতীয়মান হয় হিজরতের সময় আয়িশার বয়স ছিল আট বা নয় বছর। এ তথ্যটি স্বয়ং আয়িশা কর্তৃক বর্নিত উপরোল্লিখিত হাদিসের সাথে সংগতিপূর্ণ।
৭.
ইতিহাসের সূত্রগুলো এ বিষয়ে একমত যে রাসুল মুহাম্মদের মৃত্যুর সময় আয়িশার বয়স ছিল আঠার বছর। সুতরাং, হিজরতের সময় আয়িশার বয়স ছিল আট বা নয়।
৮.
জীবনী ও ইতিহাস গ্রন্থসমূহ থেকে পাওয়া যায় যে ৬৩ বছর বয়সে আয়িশা যখন মারা গিয়েছিলেন, তখন ছিল ৫৭ হিজরি। তাই বোঝা যায়, হিজরতের আগে আয়িশার বয়স ছিল ছয় বছর। তাই আপনি যদি তৎকালীন আরবের রীতি অনুযায়ী বয়স তথা সালের আসন্নায়ন করেন, তাহলে দেখতে পাবেন হিজরতের সময়ে আয়িশার বয়স ছিল আট বছর, এবং হিজরতের আট মাস পর যখন রাসুল মুহাম্মদ আয়িশাকে ঘরে তুলে নিয়েছিলেন, তখন আয়িশার বয়স ছিল নয় বছর।
৯.
আসমা বিনতে আবু বকর ও আয়িশার বয়সের পার্থক্য বিষয়ে ইসলামি বিশেষজ্ঞদের মতের সাথে উপরের বর্ণনাটি সামঞ্জস্যপূর্ণ। শামসুদ্দিন আজ জাহাবি বলেছেন, আসমা বিনতে আবু বকর আয়িশার চেয়ে দশ বা ততোধিক বছরের বড় ছিলেন। এ বিষয়ে তাঁর লিখিত সিয়ার আলাম আন নুবালা গ্রন্থের ২/১৮৮ তে বর্ণিত আছে – রাসুলের ইসলাম প্রচার শুরুর চার কিংবা পাঁচ বছর পর আয়িশা জন্মেছিলেন। আবু নাইম তাঁর মুজাম আস সাহাবা গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে আসমা বিনতে আবু বকরের জন্ম হয়েছিল রাসুলের ইসলাম প্রচার শুরুর দশ বছর পরে। সুতরাং, আসমা বিনতে আবু বকর ও আয়িশার বয়সের পার্থক্য ছিল চৌদ্দ থেকে পনের বছর। এটি শামসুদ্দিন আজ জাহাবির মত। তাঁর সরাসরি বর্ণনা থেকে আমরা যেটি পাই, সেটি আগেই উল্লেখ করা হয়েছে – তিনি অর্থাৎ আসমা বিনতে আবু বকর ছিলেন আয়িশার চেয়ে দশ বা ততোধিক বছরের বড়।
১০.
Although we quote these numbers that are mentioned in the books of biography and history, what we mostly rely on is what is narrated with saheeh isnaads, not what we find in books quoted without any isnaad. But all of the reports are in accordance with the hadeeths with undoubtedly saheeh isnaads that we quoted at the beginning of this answer. Hence we quoted reports from the history books that support what we quoted above.
যদিও জীবনীগ্রন্থ ও ইতিহাসের বইগুলোতে থেকে পাওয়া বয়স এই লেখায় উল্লেখ করছি, আমরা কিন্তু প্রধানত নির্ভর করি সেসব হাদিসের উপর যা সহিহ ইসনাদ অনুযায়ী বর্ণিত হয়েছে। কোনরকম ইসনাদ ছাড়া যে বর্ণনাগুলো রয়েছে, সেগুলো কিন্তু আমরা উল্লেখ করছি না। কিন্তু, বর্ণনাগুলো থেকে পাওয়া বয়স সহিহ ইসনাদসমৃদ্ধ হাদিসগুলোর সাথে মিলে যাচ্ছে, যেটার উল্লেখ আমরা এই উত্তরের শুরুতেই করেছি। সেজন্যেই আমরা ইতিহাস গ্রন্থগুলো থেকে পাওয়া বিবরণ উল্লেখ করছি যেটা আমাদের বর্ণনাকেও সমর্থন করে।
দ্বিতীয়তঃ
বৈরী ঐ প্রবন্ধের লেখক, যিনি কিছু সূত্রে পাওয়া তথ্য উল্লেখ করে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন যে আসমা ও আয়িশার বয়সের পার্থক্য দশ বছর, তার প্রত্যুত্তরে আমরা বলতে চাইঃ
ইসনাদ বা বর্ণনাসূত্রের যথার্থতার নিরিখে এই দশ বছরের বয়স-পার্থক্য প্রমাণিত হয় না। এর ইসনাদ যদি প্রমাণিত হয়, তবে এটি এমনভাবে বোঝা যাবে যা আমাদের প্রদত্ত উপরোল্লেখিত চূড়ান্ত প্রমাণাদির সাথে মিলে যাবে।
ইসনাদ বিবেচনায় দেখা যায়, এটি বর্ণিত হয়েছিল আবদুর রহমান ইবনে আবি জিন্নাদ এর থেকে যিনি বলেছিলেন, আসমা বিনতে আবু বকর আয়িশার চেয়ে দশ বছরের বড় ছিলেন। আবদুর রহমান ইবনে আবি জিন্নাদ এই বর্ণনাটি দুটি ইসনাদের সূত্র ধরে আল আসমা’ই এর নিকট থেকে প্রাপ্ত হয়েছিলেন।
প্রথম ইসনাদটি ছিল এরকম – ইবনে আসাকির তার তারিখ দিমাশক (৬৯/১০) এ উল্লেখ করেছেন যে, তিনি বলেন, আবুল হাসান আলি ইবনে আহমেদ আল মালিকি আমাদের বলেছেন, আহমেদ ইবনে আবদুল ওয়াহিদ আস সুলামি আমাদের বলেছেন যে, আমার দাদা আবু বকর আমাদের বলেছেন যে, আবু মুহাম্মদ ইবনে জাবির বলেছেন, আহমেদ ইবনে সাদ ইবনে ইব্রাহিম আজ জুহরি বলেছেন, মুহাম্মদ ইবনে আবি সাফওয়ান বলেছেন, আল আসমা’ই আমাদের বলেছিলেন যে, ইবনে আবি জিন্নাদ বলেছেন… এবং এরপর তিনি বর্ণনাটি করেন।
দ্বিতীয় ইসনাদটি ছিল এরকম – ইবনে আবদুল বা’র তার আল ইসতিয়াব ফি মারেফাত আল আসহাব গ্রন্থে (২/৬১৬) বর্ণনা করেছেন: আহমেদ ইবনে কাশেম বলেছেন, মুহাম্মদ ইবনে মুয়াবিয়া বলেছেন, ইব্রাহিম ইবনে মুসা ইবনে জামিল বলেছেন, ইসমাইল ইবনে ইসহাক আল কাদি বলেছেন, নাসির ইবনে আলি বলেছেন, আল আসমা’ই আমাদের বলেছেন, ইবনে আবি জিন্নাদ বলেছেন, আসমা বিনতে আবু বকর, যিনি আয়িশার চেয়ে দশ এর কাছাকাছি বছরের বড় ছিলেন, বলেছেন… একজন নিরপেক্ষ গবেষক যদি এই বর্ণনাটি নিয়ে চিন্তা করেন, তবে তার কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে যে বর্ণনাটির বিপক্ষে উপস্থাপিত সকল সুপ্রমাণিত তথ্যাদি অগ্রাহ্য করে যদি কেবল এই বর্ণনাটির আপাত অর্থ মেনে নেয়া হয়, তবে নিম্নল্লিখিত কারণে সেটি হবে জ্ঞান ও বিদ্যাবত্তার প্রতি অবমাননাস্বরূপ:
১।
আবদুর রহমান ইবনে আবি জিন্নাদ (১০০-১৭৪ হিজরি) হচ্ছেন একমাত্র ব্যক্তি যিনি বলেছিলেন যে আসমা আর আয়িশার বয়সের পার্থক্য ছিল দশ বছর। অপরপক্ষে, এর বিপরীতে যেসব সুস্পষ্ট প্রমাণ উপরে উল্লেখিত হয়েছে তা যথেষ্ট এবং, সেসব বর্ণনাগুলো এসেছে একাধিক তাবেইনের কাছ থেকে। এটা তো স্বতসিদ্ধ যে গ্রহণযোগ্যতার ক্ষেত্রে অধিক সংখ্যকবার বর্ণিত একটি বর্ণনা অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যকবার বর্ণিত বর্ণনার চেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পায়।
২।
বেশিরভাগ ইসলামি পন্ডিত আবদুর রহমান ইবনে আবি জিন্নাদ এর বর্ণনা জইফ বা দুর্বল বলে মনে করেন। ইমাম আহমেদ ইবনে হাম্বল তার রচিত জীবনীগ্রন্থ তাহজিব আত তাহজিব এর ৬/১৭২ এ আবদুর রহমান ইবনে জিন্নাদ সম্পর্কে লিখেছেন, উনি হচ্ছেন মুদতারাব-এ-হাদিস, অর্থাৎ তার বর্ণিত হাদিসগুলো ত্রুটিপূর্ণ। ইবনে মঈন যা আবদুর রহমান ইবনে আবি জিন্নাদ সম্পর্কে বলেছিলেন, সেটি ছিল, হাদিস বিশেষজ্ঞরা তার থেকে প্রাপ্ত বর্ণনাকে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করেন না। আলি ইবনে আল মাদিনি বলেছেন, উনি (আবদুর রহমান ইবনে আবি জিন্নাদ) মদিনায় থাকতে যা বলতেন, সেগুলো সহিহ, কিন্তু বাগদাদে আসার পর তিনি যা বলেছেন, সেগুলো বাগদাদের মানুষ বিকৃত করে ফেলেছে। আমি আবদুর রহমানকে – অর্থাৎ ইবনে মাহাদি – দেখেছি আবদুর রহমান ইবনে আবি জিন্নাদ এর বর্ণিত হাদিসের মধ্যে কেটে দেবার মত করে দাগ টানতে। আবু হাতেম বলেন, তার হাদিসগুলো লিখে রাখা যেতে পারে, কিন্তু প্রমাণ হিসেবে পেশ করা চলবে না। আন নাসাই বলেছেন, তার হাদিসগুলো প্রমাণ হিসাবে উপস্থাপন করা যায় না।
যদিও হাদিস নং ১৭৫৫ এর সূত্র অনুসারে ইমাম তিরমিজি আবদুর রহমান ইবনে আবি জিন্নাদকে বিশ্বাসযোগ্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন, কিন্তু এটি পূর্ববর্তী আলোচকদের সমালোচনার পরিপন্থী। আর নিশ্চয়ই সমালোচনা প্রশংসার উপর অগ্রাধিকার পায়, বিশেষত সেইসব বর্ণনার ক্ষেত্রে যা শুধু আবদুর রহমান ইবনে আবি জিন্নাদ বর্ণনা করেছেন, বিশেষত যখন তিনি এমন কিছু বলেন যা সুন্নাহ ও ইতিহাসের প্রসিদ্ধ বইয়ের বর্ণনার সাথে সাংঘর্ষিক।
৩।
ইবনে আবদুল বা’রের বর্ণনা অনুযায়ী, “আসমা আয়িশার চেয়ে দশ এর কাছাকাছি বছরের বড় ছিলেন”। এই বর্ণনাটি ইবনে আসাকির এর বর্ণনার চেয়ে শুদ্ধতর, কারণ যিনি এটি ইবনে আবদুল বা’রের ইসনাদে আল আসমা’ই এর কাছ থেকে বর্ণনা করেছিলেন, সেই নাসির ইবনে আলীকে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল তাঁর তাহজিব আত তাহজিব গ্রন্থে (১০/৪৩১) বিশ্বাসযোগ্য (সিকাহ) হিসেবে মান্যতা দিয়েছেন। কিন্তু বর্ণনাকারী মুহাম্মদ ইবনে আবি সাফওয়ান, যিনি ইবনে আসাকিরের ইসনাদে হাদিসটি আল আসমা’ই থেকে বর্ণনা করেছন, তাকে কেউ বিশ্বাসযোগ্য বলে অভিহিত করে নি।
The words in the report of Ibn ‘Abd al-Barr, “or so”, indicate that he was not certain about (the difference in age) being ten years. This makes his report weak and it is not permissible for the fair-minded researcher to reject the evidence quoted above for the sake of this uncertainty.
ইবনে আবদুল বা’র এর বর্ণনায় যে শব্দবন্ধটি আছে, “এর কাছাকাছি” এটি থেকে বোঝা যায় যে তিনি আদৌ নিশ্চিত ছিলেন না যে বয়সের পার্থক্য দশ বছর কিনা। এ থেকে তার বর্ণনা দুর্বল হিসেবে প্রতীয়মান হয় এবং একজন নিরপেক্ষ গবেষকের পক্ষে উপরে উল্লেখিত সুস্পষ্ট প্রমাণাদি অগ্রাহ্য করে এই অনিশ্চিত বর্ণনাটি গ্রহণ করা সম্পূর্ণ অনুচিত।
৪।
তার উপর, এই বর্ণনার সাথে অন্য বর্ণনাগুলো মিলানো সম্ভব এটা বলে যে আসমা রাসুল মুহাম্মদের ধর্মপ্রচার কার্যক্রম শুরুর ছয় কিংবা পাঁচ বছর আগে জন্মেছিলেন, আর আয়িশা জন্মেছিলেন চার কিংবা পাঁচ বছর পরে। আসমা যখন ৭৩ হিজরিতে মারা গেলেন, তার বয়স হয়েছিল ৯১ বা ৯২ বছর, যেটা কিনা বর্ণিত আছে শামসুদ্দিন আজ জাহাবি কর্তৃক লিখিত সিয়ার আ লাম আন নুবালাতে (৩/৩৮০) – ইবনে আবি জিন্নাদ বলেছেন, তিনি আয়িশার চেয়ে দশ বছরের বড় ছিলেন। আমি (শামসুদ্দিন আজ জাহাবি) মনে করি, এর ভিত্তিতে মৃত্যুকালে তার (আসমার) বয়স হবার কথা ৯১ বছর। অন্যদিকে হিশাম ইবনে উরওয়াহ এর মতে, মৃত্যুকালে তার (আসমার) বয়স হয়েছিল ১০১ বছর, কিন্তু তারপরো তার কোন দাঁত বার্ধক্যজনিত কারণে পড়ে যায় নি।
৫।
এটাও যোগ করা প্রয়োজন যে আসমার জন্ম হয়েছিল রাসুল মুহাম্মদের ধর্মপ্রচার কার্যক্রম শুরুর ১৪ বছর আগে – যেটা কিনা ঐ লেখক তার আগের প্রবন্ধে নিজেই নিশ্চিত করেছেন – এবং হিজরতের বছর আসমার বয়স ছিল ২৭ বছর, এবং ৭৩ হিজরিতে মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ১০০ বছর, যাতে করে আসমার সম্পর্কে যেসব বিষয় নিয়ে ঐতিহাসিক সূত্রগুলোর মধ্যে ঐক্যমত রয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখা যায় – অর্থাৎ আসমা এবং যুদ্ধে নিহত তার পুত্র আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের উভয়েই ৭৩ হিজরি সালে মারা গিয়েছিলেন এবং মৃত্যুকালে আসমার বয়স ছিল ১০০ বছর। হিশাম ইবনে উরওয়াহ তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন – আসমা ১০০ বছর আয়ুপ্রাপ্ত হয়েছিলেন এবং সেই বয়সেও তার একটি দাঁতও পড়ে যায় নি, এবং তিনি সারাজীবন সজ্ঞানেই ছিলেন।
যেসব উৎস থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে, তার একটি তালিকা নিম্নে দেওয়া হলঃ
হিলইয়াত আল আউলিয়া ২/৫৬
মুজাম আস সাহাবা, লেখক আবি নাইম আল আসবাহানি
আল ইসতিয়াব, লেখক ইবনে আবদুল বার, ৪/১৭৮৩
তারিখ দিমাশক, লেখক ইবনে আসাকির, ৬৯/৮
আসাদ আল গাবাহ, লেখক ইবনে আল আসির, ৭/১২
আল ইসাবাহ, লেখক ইবনে হাজার, ৭/৪৮৭
তাহজিব আল কামাল, ৩৫/১২৫
রাসুল মুহাম্মদের ধর্মপ্রচার কার্যক্রম শুরুর হবার দশ বছর আগে আসমার জন্ম হওয়ার এই ব্যাপারটি আবু নাইম আল আসবাহানিও উল্লেখ করে গেছেন। তিনি লিখেছেন,
তিনি, অর্থাৎ আসমা, পিতৃসূত্রে আয়িশার বড় বোন ছিলেন। তিনি আয়িশার চেয়ে বয়সে বড় ছিলেন; হিজরতের সাতাশ বছর অর্থাৎ রাসুলের ধর্মপ্রচার কার্যক্রম শুরুর দশ বছর আগে আসমার জন্ম হয়েছিল। আসমার জন্মের সময় তার পিতা আবু বকর ছিলেন ২১ বছর বয়সী। আসমা ৭৩ হিজরি সালে মক্কায় মারা গিয়েছিলেন, তার নিজ পুত্র আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়েরের মৃত্যুর কিছুদিন পরেই। মৃত্যুকালে আসমার বয়স হয়েছিল ১০০ বছর, এবং তিনি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন।
ব্যাপারটি এমন যেন আবু নাইম বোঝাতে চেয়েছেন যে রাসুল মুহাম্মদের মাক্কী জীবন ছিল ১৭ বছর দীর্ঘ, যেটি কিনা স্বল্পসংখ্যক সিরাত লেখকেরও মত। যদিও এটি একটি জইফ তথা দুর্বল মত, কিন্তু আবু নাইমের মতামত বোঝার জন্য ব্যাপারটি উল্লেখ করা প্রয়োজন ছিল।
পরিশেষে, রাসুল ও শিশুবয়স্কা আয়িশার মধ্যেকার বিবাহের নেপথ্যের হেকমত বিষয়ে জানতে ৪৪৯৯০ নং প্রশ্নের উত্তর দেখুন।
নিশ্চয়ই আল্লাহ সবার চেয়ে ভাল জানেন।
পেডোফিলিয়া বা শিশুকাম বিকৃতি
পেডোফিলিয়া শব্দটির অর্থ হচ্ছে শিশুকাম। এটি একটি ভয়াবহ মানসিক বিকৃতি। যখন বয়স্ক ব্যক্তিরা কোনো বাচ্চার প্রতি যৌনাকাঙ্ক্ষা অনুভব করে, তখন বুঝতে হবে তিনি পেডোফিলিক। Diagnostic and Statistical Manual of Mental Disorders, Fourth Edition এ এর সংজ্ঞা হিসেবে যা বলা হয়েছে, তা এবং সেটির অনুবাদ এখানে দেয়া হচ্ছে [147]। অনুবাদে সহযোগিতা করেছেন সংশয় পরিবারের আবুল ফজল এবং সত্যের সন্ধানী ভাই।
302.2 Pedophilia
Topics Discussed: pedophilia.
Excerpt: “The paraphilic focus of Pedophilia involves sexual activity with a prepubescent child (generally age 13 years or younger). The individual with Pedophilia must be age 16 years or older and at least 5 years older than the child. For individuals in late adolescence with Pedophilia, no precise age difference is specified, and clinical judgment must be used; both the sexual maturity of the child and the age difference must be taken into account. Individuals with Pedophilia generally report an attraction to children of a particular age range. Some individuals prefer males, others females, and some are aroused by both males and females. Those attracted to females usually prefer 8- to 10-year-olds, whereas those attracted to males usually prefer slightly older children. Pedophilia involving female victims is reported more often than Pedophilia involving male victims. Some individuals with Pedophilia are sexually attracted only to children (Exclusive Type), whereas others are sometimes attracted to adults (Nonexclusive Type). Individuals with Pedophilia who act on their urges with children may limit their activity to undressing the child and looking, exposing themselves, masturbating in the presence of the child, or gentle touching and fondling of the child. Others, however, perform fellatio or cunnilingus on the child or penetrate the child’s vagina, mouth, or anus with their fingers, foreign objects, or penis and use varying degrees of force to do so. These activities are commonly explained with excuses or rationalizations that they have “educational value” for the child, that the child derives “sexual pleasure” from them, or that the child was “sexually provocative”—themes that are also common in pedophilic pornography. Because of the ego-syntonic nature of Pedophilia, many individuals with pedophilic fantasies, urges, or behaviors do not experience significant distress. It is important to understand that experiencing distress about having the fantasies, urges, or behaviors is not necessary for a diagnosis of Pedophilia. Individuals who have a pedophilic arousal pattern and act on these fantasies or urges with a child qualify for the diagnosis of Pedophilia. Individuals may limit their activities to their own children, stepchildren, or relatives or may victimize children outside their families. Some individuals with Pedophilia threaten the child to prevent disclosure. Others, particularly those who frequently victimize children, develop complicated techniques for obtaining access to children, which may include winning the trust of a child’s mother, marrying a woman with an attractive child, trading children with other individuals with Pedophilia, or, in rare instances, taking in foster children from nonindustrialized countries or abducting children from strangers. Except in cases in which the disorder is associated with Sexual Sadism, the person may be attentive to the child’s needs in order to gain the child’s affection, interest, and loyalty and to prevent the child from reporting the sexual activity. The disorder usually begins in adolescence, although some individuals with Pedophilia report that they did not become aroused by children until middle age. The frequency of pedophilic behavior often fluctuates with psychosocial stress. The course is usually chronic, especially in those attracted to males. The recidivism rate for individuals with Pedophilia involving a preference for males is roughly twice that for those who prefer females….”
DOI: 10.1176/appi.books.9780890423349.10311
শিশুকামিতা নামক বিকৃতির (পেডোফেলিয়া) এর যৌন উত্তেজনার কেন্দ্রে রয়েছে একটি অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুর সাথে (সাধারণত বয়স ১৩ বছর বা তার কম) কোন সাথে যৌনক্রিয়া। ১৬ বছর বা ততোধিক বয়সী কোন ব্যক্তি যদি এমন কোন শিশুর প্রতি যৌন আকর্ষণ বোধ করে, যার সাথে তার বয়সের পার্থক্য অন্তত পাঁচ বছর, তবেই সেই ব্যক্তিকে শিশুকামী হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে। কৈশোর পেরিয়ে সদ্য যৌবনে পদার্পণ করা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বয়সের পার্থক্যটি সুনির্দিষ্টভাবে ধার্য করা নেই, এবং এক্ষেত্রে চিকিৎসাশাস্ত্রীয় বিবেচনা ব্যবহার করা উচিত; কমবয়সীর যৌন পরিপক্কতা এবং দুজনের বয়সের পার্থক্য উভয়ই গ্রাহ্য করতে হবে। শিশুকামী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাধারণত একটি সুনির্দিষ্ট বয়সসীমার শিশুদের প্রতি যৌন আকর্ষণ বোধ করে বলে রিপোর্ট পাওয়া যায় । কেউ হয়ত ছেলেশিশুদের প্রতি আকৃষ্ট হয়, কেউ আবার মেয়ে শিশুদের প্রতি আকৃষ্ট হয়, আবার এমনও অনেকে আছে, যারা ছেলে-মেয়ে উভয়ের প্রতিই যৌন আকর্ষণ বোধ করে । যেসব শিশুকামী মেয়ে শিশুদের প্রতি আকৃষ্ট, তারা সাধারণত ৮ থেকে ১০ বছর বয়সীদের প্রতি আকৃষ্ট হয়, অন্যদিকে ছেলে শিশুদের প্রতি আকৃষ্ট শিশুকামীরা এর চেয়ে আরেকটু বেশি বয়সী ছেলে শিশুদের দিকে আকৃষ্ট হয়ে থাকে। দায়ের করা অভিযোগকে ভিত্তি ধরলে দেখা যায় যে কন্যা শিশুরা ছেলে শিশুদের চাইতে অধিক পরিমাণে শিশুকামিতার শিকারে পরিণত হয়ে থাকে। কোন কোন শিশুকামী শুধুই শিশুদের প্রতি যৌন আকর্ষণ বোধ করে থাকে (যাদের একচেটিয়া শিশুকামিতা আছে), আবার কোন কোন শিশুকামী এমনও আছে যারা শিশুদের পাশাপাশি প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিও কখনো কখনো আকর্ষণ বোধ করে থাকে (বহুগামি শিশুকামিতার ক্ষেত্রে)। শিশুকামিতা চরিতার্থ করার সুযোগ পেলে শিশুকামীরা যে ধরণের ক্রিয়াকর্ম করে থাকে, সেটার মধ্যেও বিভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। শিশুটির কাপড় খুলে নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকা, সেইসাথে নিজের কাপড় খুলে শিশুটির দিকে তাকিয়ে হস্তমৈথুন করা, অথবা শিশুটির শরীরের নানান স্থানে কামভাব নিয়ে স্পর্শ করা – এ সবের মধ্যেই কেউ কেউ যৌনকার্য সীমাবদ্ধ রাখে। অন্যদিকে, এমন অনেক শিশুকামীও আছে, যারা সুযোগ পেলে শিশুটির সাথে মুখমেহন, যোনিলেহনের মত যৌনক্রিয়ায় লিপ্ত হয়, অথবা শিশুটির যোনিদ্বারে, মুখে বা পায়ুপথে নিজের আঙুল বা পুরুষাঙ্গ বা কোন ধরণের কঠিন বস্তু বাইরে থেকে ঢুকিয়ে যৌনক্রিয়ায় লিপ্ত হয়, এবং এটা করতে গিয়ে বিভিন্ন মাত্রায় শারীরিক শক্তি প্রয়োগ করে থাকে। এ ধরণের বিকৃত যৌনক্রিয়াগুলোকে বৈধতাদানের জন্য যে অজুহাতগুলো ব্যবহার করা হয় – যেসব বিকৃত ধারণাগুলো শিশু পর্নোগ্রাফিতেও লক্ষণীয় – তা হল যে এতে নাকি শিশুদের জন্য শিক্ষণীয় ব্যাপার রয়েছে, এ থেকে শিশুটিও নাকি যৌন আনন্দ পাচ্ছে, অথবা শিশুটিই যৌন প্ররোচনা দিয়েছিল ইত্যাদি। শিশুকামিতার ইগো-সিনটনিক চরিত্রের কারণে যেটা হয়, সেটা হল শিশুকামিতার মত যৌন বিকৃতিতে আক্রান্ত লোকেরা তেমন উল্লেখযোগ্য কোন মর্মপীড়া বা মানসিক যন্ত্রণায় ভোগেন না। এটা বোঝা খুবই জরুরী যে কাউকে শিশুকামী বলে চিহ্নিত করার কাজটির সাথে সেই ব্যক্তিটির শিশুকাম সংক্রান্ত কল্পনা, যৌনচাহিদা, কামাচরণ নিয়ে মর্মপীড়ায় ভোগা সম্পর্কিত নয়। যারা শিশুদের সঙ্গে যৌনক্রিয়ার কথা ভেবে কামোত্তেজিত হয় এবং সে কামোত্তেজনাকে একজন শিশুর সাথে শারীরিকভাবে চরিতার্থ করে, তারা শিশুকামী হিসেবে চিকিৎসাশাস্ত্রের দৃষ্টিতে চিহ্নিত হবে। শিশুকামীরা তাদের কর্মকাণ্ড নিজের সন্তান বা সৎ সন্তান বা আত্মীয়দের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে পারে, আবার পরিবারের বাইরের কোন শিশুকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। কোন কোন শিশুকামী ক্ষতিগ্রস্ত শিশুটিকে হুমকি দিয়ে ঘটনা ফাঁস হওয়া ঠেকাতে চেষ্টা করে। অন্যরা, বিশেষ করে যারা নিয়মিত শিশুদের যৌন নির্যাতন করে থাকে, নানান রকম জটিল পন্থা অবলম্বন করে শিশুদের নাগাল পাওয়ার চেষ্টা করে থাকে। তারা কখনো বাচ্চাটির মায়ের আস্থা অর্জন করে, কখনো আবার এমন কোন মহিলাকে বিয়ে করে যার একটি আকর্ষণীয় শিশুসন্তান রয়েছে, কখনোবা অন্য শিশুকামীদের কাছ থেকে নির্যাতনের উপযোগী শিশুর সন্ধান জোগাড় করে। কিছু বিরল ক্ষেত্রে এমনও দেখা গেছে, শিশুকামীরা অনুন্নত দেশগুলো থেকে বাচ্চা দত্তক হিসেবে এনে, অথবা অন্যের শিশুসন্তানকে অপহরণ করে সেই শিশুদের সাথে যৌনক্রিয়ায় লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা করে। শিশুকামিতার সঙ্গে জুড়ি হিসেবে যদি ধর্ষকাম না থাকে, তাহলে দেখা যায় যে শিশুকামী ব্যক্তিটি অনেক ক্ষেত্রেই শিশুটির বিভিন্ন প্রয়োজন পূরণে সচেষ্ট হয়, যাতে করে বাচ্চাটির অনুরাগ, আগ্রহ ও আনুগত্য অর্জন করা তার জন্য সহজ হয়, এবং যাতে বাচ্চাটি ঘটনাটি কাউকে জানানো থেকে বিরত থাকে। এই বিকৃতি সাধারণত কৈশোরে শুরু হলেও অনেক শিশুকামী জানিয়েছেন যে তারা মধ্যবয়সে পৌঁছোনোর আগে কখনো শিশুদের দেখলে কামোত্তেজিত হন নি। মানসিক ধকলের ওপর অনেক সময়ই শিশুকামিতার সংঘটনের হার ওঠানামা করে। শিশুকামিতা সেইসব ব্যক্তিদের মধ্যে সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে, যারা বিশেষ করে ছেলে শিশুদের প্রতি আকৃষ্ট। শিশুকামীদের মধ্যে যারা ছেলে শিশুদের প্রতি আকৃষ্ট, তাদের পুনরায় অপকর্ম করার হার মেয়ে শিশুদের প্রতি আগ্রহীদের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ।
উপরের আর্টিকেল থেকে যে বিষয়গুলো পরিষ্কার তা হচ্ছে,
- ১৩ বছর বয়সের চেয়ে ছোট কোন শিশুর প্রতি বয়ষ্ক একজন মানুষের যৌন আকর্ষণ বা যৌনকর্ম করাকে শিশুকামিতা নামক মানসিক বিকৃতি হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে বয়সের পার্থক্য ৫ বছরের কম হলে সেটি শিশুকামিতা হবে না।
- কোন কোন শিশুকামী শুধুই শিশুদের প্রতি যৌন আকর্ষণ বোধ করে থাকে, আবার কোন কোন শিশুকামি এমনও আছে যারা শিশুদের পাশাপাশি প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিও আকর্ষণ বোধ করে থাকে।
- নির্যাতনের উপযোগী শিশুর সন্ধানের জন্য অনেক সময় শিশুকামিরা শিশুদের পিতামাতার সাথে অনেক সময় পারিবারিক বন্ধুত্ব তৈরি করতে পারে, আত্মীয়তা বা বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের শিশুকাম চরিতার্থ করতে পারে।
- শিশুকামী ব্যক্তিটি অনেক ক্ষেত্রেই শিশুটির বিভিন্ন প্রয়োজন পূরণে সচেষ্ট হয়, যাতে করে বাচ্চাটির অনুরাগ, আগ্রহ ও আনুগত্য অর্জন করা তার জন্য সহজ হয়, এবং যাতে বাচ্চাটি ঘটনাটি কাউকে জানানো থেকে বিরত থাকে।
- অনেক ক্ষেত্রেই মধ্যবয়সে পৌঁছোনোর পরে অনেক শিশুকামির মধ্যে শিশুকামের প্রবণতা তৈরি হয়।
ইসলামিক এপোলোজিস্টদের একাংশ পেডোফিলিয়ার একটি গবেষণার উল্লেখ করে দাবী করেন যে, নবী মুহাম্মদ পেডোফাইল চরিত্রের ছিলেন না। রিসার্চটির একাংশে গবেষকগণ পরামর্শ দেন যে, শিশুদের প্রতি এই কামনা প্রাইমারি অথবা একচেটিয়া হতে হবে। নবীর ক্ষেত্রে এই যৌন আগ্রহ প্রাইমারি হওয়ার প্রমাণ মেলে [148] [149]
Researchers recommend that these imprecise uses be avoided, because although some people who commit child sexual abuse are pedophiles, child sexual abuse offenders are not pedophiles unless they have a primary or exclusive sexual interest in prepubescent children.
গবেষকরা সুপারিশ করেন যে, পেডফিলিয়া বা এরকম শব্দাবলীর যত্রতত্র ব্যবহার এড়ানো উচিত, কারণ যদিও কিছু লোক যারা শিশু যৌন নির্যাতন করে তারা পেডোফাইল, কিন্তু শিশু যৌন নির্যাতনের অপরাধীরা পেডোফাইল নয় যদি না তাদের নাবালক শিশুদের প্রতি প্রাথমিক বা একচেটিয়া যৌন আগ্রহ থাকে।
এবারে আসুন, ননএক্সক্লুসিভ পেডোফাইল(Nonexclusive pedophile), যেই শব্দটির আসলে সঠিক বাঙলা নেই, বলা যেতে পারে সেই সব শিশুকামী যারা একইসাথে প্রাপ্তবয়ষ্কদের প্রতিও আকর্ষণ বোধ করে, এরকম বহুগামী শিশুকামীদের একটি গবেষণা দেখে নিই। এই গবেষণাতে দেখা যাচ্ছে, ২৪২৯ জন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ সেক্স অফেন্ডার বা যৌনঅপরাধীর উপর একটি মার্কিন সমীক্ষা চালানো হয়েছিল, যেখানে দেখা গেছে যে যাদেরকে “পেডোফাইল” হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের মধ্যে শুধুমাত্র ৭% নিজেদেরকে একচেটিয়া শিশুকামী হিসাবে চিহ্নিত করেছে। অর্থাৎ তারা শুধু এবং কেবলমাত্র শিশুদের প্রতিই যৌন আকর্ষণ বোধ করে। বাদবাকি অংশ অর্থাৎ ৯৩ শতাংশ শিশুকামীই মাঝে মাঝে শিশুদের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে, অন্য সময়ে তারা প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষের সাথেও সম্পর্ক করে। এমনকি, এসব শিশুকামীর অনেকের পরিবারও আছে। [150]
এই বিষয়টি আপনারা নিজেরাও লক্ষ্য করবেন। অনেক মাদ্রাসাতেই শিশু ছেলেদের ওপর যৌন নির্যাতন হয়। যেসকল হুজুর এসব কাজ করে, সে সব হুজুরের বাসায় কিন্তু তাদের স্ত্রী আছে। অনেকে একাধিক বিবাহ পর্যন্ত করে। তাদের স্ত্রীদের মধ্যে বয়ষ্ক, কমবয়ষ্ক সব ধরণের নারীই থাকে। এদের বেশিরভাগই পারিবারিকভাবে একজন সুখী স্বামী, যিনি তার স্ত্রীকে তৃপ্তিও দেন। এর অর্থ তো এই নয় যে, এরা শিশুকামী নয়! অর্থাৎ একজন নন এক্সক্লুসিভ পেডোফাইল অন্যান্য প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষের সাথেও যৌন সম্পর্ক রাখতে পারে। অন্য প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষের সাথে যৌন সম্পর্ক থাকলে এটি প্রমাণ হয় না যে, তারা শিশুকামী নয়।
তারপরেও, এই প্রসঙ্গে হাদিসসমূহ থেকে জানা যায়, নবী মুহাম্মদের সবচাইতে বেশি আগ্রহ ছিল শিশু আয়িশার প্রতিই। এই প্রসঙ্গে হাদিসগুলো আরো একবার উল্লেখ করা হচ্ছে। প্রাসঙ্গিকভাবে জেনে রাখা ভাল, আয়িশার জন্য নবী মুহাম্মদের নির্ধারিত রাত্রিযাপনের পালা ছিল অন্য স্ত্রীদের চেয়ে বেশি [151] –
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৬৭/ বিয়ে
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৯৯. যে স্ত্রী স্বামীকে নিজের পালার দিন সতীনকে দিয়ে দেয় এবং এটা কীভাবে ভাগ করতে হবে?
৫২১২. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সওদা বিনতে যাম’আহ (রাঃ) তাঁর পালার রাত ’আয়িশাহ (রাঃ)-কে দান করেছিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’আয়িশাহ (রাঃ)-এর জন্য দু’দিন বরাদ্দ করেন- ’আয়িশাহ (রাঃ)-’র দিন এবং সওদা (রাঃ)-’র দিন। [২৫৯৩] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩২)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পরবর্তীতে, আয়িশার জন্য বরাদ্দ আরো বৃদ্ধি পায়। নবী বলেছেন, কুমারী স্ত্রীদের জন্য বরাদ্দ থাকবে সাতদিন, বাদবাকী স্ত্রীর জন্য নির্ধারিত ছিল তিনদিন রাত্রিযাপন [152]
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
৬৭/ বিয়ে
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/১০১. যখন কেউ সাইয়্যেবা স্ত্রী থাকা অবস্থায় কুমারী মেয়ে বিয়ে করে।
৬৭/১০০. অধ্যায়ঃ আপন স্ত্রীদের মধ্যে ইনসাফ করা।
আল্লাহ্ বলেন, ‘‘তোমরা কক্ষনো স্ত্রীদের মধ্যে সমতা রক্ষা করতে পারবে না যদিও প্রবল ইচ্ছে কর….আল্লাহ প্রশস্ততার অধিকারী, মহাকুশলী।’’ (সূরাহ আন্-নিসা ৪/১২৯-১৩০)
৫২১৩. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নত এই যে, যদি কেউ কুমারী মেয়ে বিয়ে করে, তবে তার সঙ্গে সাত দিন-রাত্রি যাপন করতে হবে আর যদি কেউ কোন বিধবা মহিলাকে বিয়ে করে, তাহলে তার সঙ্গে তিন দিন যাপন করতে হবে। (৫২১৪; মুসলিম ১৭/১২, হাঃ ১৪৬১, আহমাদ ১২৯৭০) (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
আরো অনেক বর্ণনা থেকেই জানা যায়, আয়িশাই ছিলেন নবীর সবচাইতে প্রিয় স্ত্রী [153]
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫১/ মাগাযী (যুদ্ধাভিযান)
পরিচ্ছেদঃ ২২২৭. যাতুস সালাসিল যুদ্ধ। ইসমাইল ইবন আবু খালিদ (রহঃ) এর মতে একটি লাখম ও জুযাম গোত্রের বিরুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধ। ইবন ইসহাক (রহঃ) ইয়াযীদ (রহঃ) এর মাধ্যমে উরওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, যাতুস সালাসিল হল বালী, উযরা এবং বনিল কায়ন গোত্রসমুহের স্থাপিত শহর
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৪০১৯, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৪৩৫৮
৪০১৯। ইসহাক (রহঃ) … আবূ উসমান (রহঃ) থেকে বর্নিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমর ইবনুল আস (রাঃ) কে (সেনাপতি নিযুক্ত করে) যাতুস সালাসিল বাহিনীর বিরুদ্ধে পাঠিয়েছেন। আমর ইবনুল আস বলেনঃ (যুদ্ধ শেষ করে) আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে এসে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনার কাছে কোন লোকটি অধিকতর প্রিয়? তিনি উত্তর দিলেন, আয়িশা (রাঃ)। আমি বললাম, পুরুষদের মধ্যে কে? তিনি বললেন, তাঁর (আয়িশার) পিতা। আমি বললাম, তারপর কে? তিনি বললেন, উমর (রাঃ), এভাবে তিনি (আমার প্রশ্নের জবাবে) একের পর এক আরো কয়েকজনের নাম বললেন। আমি চুপ হয়ে গেলাম এই আশংকায় যে, আমাকে না তিনি সকলের শেষে স্থাপন করে বসেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ ‘উসমান (রহঃ)
অনেকে দাবী করতে পারেন, পেডোফিলিয়া সম্পর্কিত এইসব গবেষণা অনুসারে তাহলে তো রবীন্দ্রনাথ, বঙ্কিম বা শেখ মুজিব সহ অনেককেই পেডোফাইল বলা যেতে পারে! কিন্তু এই যুক্তিটি অত্যন্ত অসৎ এবং নিম্নমানের। কারণ রবীন্দ্রনাথ বঙ্কিম বা শেখ মুজিবুর রহমান, এরা কেউই নিজে পছন্দ করে জোরাজুরি করে পিতাকে রীতিমত চাপ প্রয়োগ করে কোন শিশুকে বিয়ে করেন নি। বিয়ের সময়ে তারা নিজেরাও ছিলেন অনেক কম বয়সী, এবং পারিবারিকভাবেই তাদের বাবা মা তাদের বিয়ে দিয়েছিল। সেসব ক্ষেত্রে তাদের যৌনসঙ্গি পছন্দের ব্যাপারে খুব বেশি স্বাধীনতাও ছিল না। কিন্তু নবী মুহাম্মদ তো নিজেই রীতিমত আবু বকরকে বুঝিয়ে শুনিয়ে বিয়েতে রাজী করিয়েছিল। তাহলে তুলনাটি কীভাবে ঠিক হয়?
নবী মুহাম্মদ, উমর এবং হযরত আলী, ইসলামের এই তিন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র পেডোফাইল ছিলেন কিনা, ইসলামে পেডোফিলিয়ার মত যৌন বিকৃতিকে আইনগত বৈধতা দেয়া হয়েছে কিনা, সেটি পাঠকের হাতেই ছেড়ে দিলাম। উপরের আলোচনা পড়ে আপনারাই আপনাদের বিবেচনাবোধ ব্যবহার করবেন।
উপসংহার
উপরের আলোচনা থেকে কয়েকটি বিষয় সম্পূর্ণ পরিষ্কার যে, সুরা তালাকের ৪ নম্বর আয়াত অনুসারে অপ্রাপ্তবয়ষ্ক মেয়ের ইদ্দত তিনমাস। সুরা আহজাবের ৪৯ আয়াত অনুসারে বিবাহ এবং যৌন সম্পর্ক না হলে ইদ্দতের প্রশ্নই আসে না। তাই অপ্রাপ্তবয়ষ্ক মেয়ের সাথে বিবাহ এবং যৌনতা দুই-ই জায়েজ। আবার, আয়িশা ৯ বছর বয়সে নবীর সাথে যৌন সম্পর্কের সময় ঋতুর বয়সেও পৌঁছান নাই। কারণ ঋতুর বয়সে পৌঁছে গেলে সেই নারী ইসলামের দৃষ্টিতে বালেগা হিসেবে গণ্য এবং পুতুল খেলা তার জন্য মাকরুহ। আয়িশা নিশ্চয়ই এরকম মাকরুহ কাজ করেন নি। এবং নবীর ঘরেও তিনি পুতুল খেলতেন। তাই বুঝতে অসুবিধা হয় না, ঋতুর বয়সে পৌঁছাবার আগেই নবী মুহাম্মদ তার সাথে যৌন সঙ্গম করেছিলেন। প্রাপ্তবয়ষ্ক হওয়া তো অনেক দুরের ব্যাপার!
ইসলামে যেহেতু নবীর সকল কাজকেই নৈতিকতা এবং আইনের একমাত্র উৎস হিসেবে ধরা হয়, অপরিবর্তনীয় এবং কেয়ামত পর্যন্ত প্রযোজ্য নীতি বলে ধরা হয়, তাই নবীর এই শিশু বিবাহের মত মারাত্মক এবং ভয়াবহ কর্মটিও ইসলামী শরীয়া আইনের একটি অংশ হয়ে যায়, সেই সাথে মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে কাজটি বৈধতা অর্জন করে। যেহেতু নবী নিজেই কাজটি করেছেন, তাই মুসলিমগণ কাজটিকে অনৈতিক বা বর্জনীয় কাজ বলে মনে করতে পারেন না। যা খুবই ভয়াবহ চিন্তা। এই চিন্তার অবসান ঘটুক, পৃথিবীতে আর কোন শিশু বাল্যবিবাহের নির্মম শিকার না হোক, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।
তথ্যসূত্র
- সংজ্ঞা [↑]
- বাল্যবিবাহ করিবার শাস্তি [↑]
- বাল্যবিবাহ সংশ্লিষ্ট পিতা-মাতাসহ অন্যান্য ব্যক্তির শাস্তি [↑]
- Girls beginning puberty almost a year earlier than in 1970s [↑]
- Menstruation in Girls and Adolescents: Using the Menstrual Cycle as a Vital Sign [↑]
- International Variability of Ages at Menarche and Menopause: Patterns and Main Determinants [↑]
- Recent Decline in Age at Menarche: The Fels Longitudinal Study [↑]
- Commentary: The decreasing age of puberty— as much a psychosocial as biological problem? [↑]
- AGE AT MENARCHE AMONG IN-SCHOOLADOLESCENTS IN SAWLA TOWN, SOUTH ETHIOPIA [↑]
- Secular trends in age at menarche among women born between 1955 and 1985 in Southeastern China [↑]
- Declining age at menarche in Indonesia: a systematic review and meta-analysis [↑]
- Decline in menarcheal age among Saudi girls [↑]
- The Family in ancient Rome : new perspectives, Beryl Rawson, পৃষ্ঠা ২১ [↑]
- “Sexual violence chapter 6” (PDF)। World Health Organization। ২০০২। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৫ [↑]
- “Rape”। dictionary.reference.com। এপ্রিল ১৫, ২০১১ [↑]
- “Rape”। legal-dictionary.thefreedictionary.com। এপ্রিল ১৫, ২০১১ [↑]
- Age of consent [↑]
- Child Marriage is a Death Sentence for Many Young Girls [↑]
- Precocious puberty [↑]
- Health Consequences of Child Marriage in Africa [↑]
- ইউনিসেফ থেকে প্রকাশিত একটি পিডিএফ বই [↑]
- ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ নামক কুফরি আইন প্রত্যাহার করে…এসব এনজিও নিষিদ্ধ করতে হবে’ [↑]
- Saudi Arabian cleric declares babies should wear burkas [↑]
- ‘Even BABIES must wear the burka’: Saudi cleric says newborn girls should have their faces veiled to help ward off sex attacks [↑]
- পাবনায় এক ব্যক্তিকে ‘শিরশ্ছেদের হুমকি আনসারুল্লাহর’ [↑]
- সহীহ বুখারী (তাওহীদ), হাদিস নম্বরঃ ৩৮৯৬ [↑]
- সুনান আবু দাউদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৪৮৫১ [↑]
- আবু দাউদ শরীফ, পঞ্চম খণ্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, পৃষ্ঠা ৫২১, ৫২২ [↑]
- সূনান নাসাঈ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩৩৮১ [↑]
- সহীহ মুসলিম, হাদীস একাডেমী, হাদিস নম্বরঃ ৩৩৭০ [↑]
- সহীহ মুসলিম, পঞ্চম খণ্ড, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, পৃষ্ঠা ৩৭ [↑]
- সহীহ মুসলিম, হাদীস একাডেমী, হাদিস নম্বরঃ ৩৩৭১ [↑]
- সহীহ মুসলিম, হাদীস একাডেমী, হাদিস নম্বরঃ ৩৩৭২ [↑]
- সহীহ মুসলিম, হাদীস একাডেমী, হাদিস নম্বরঃ ৩৩৭৩ [↑][↑]
- ফাতহুল বারী ৮/৬৭ [↑]
- আসহাবে রাসূলের জীবনকথা [উম্মাহাতুল মু’মিনীন], মুহাম্মদ আবদুল মামুদ, পঞ্চম খণ্ড, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, পৃষ্ঠা ৫৫ [↑]
- The Difference Between Solar & Lunar Years [↑]
- আসহাবে রাসুলের জীবনকথা, উম্মাহাতুল মু’মিনীন, মুহাম্মদ আবদুল মাবুদ, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, পঞ্চম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৯ [↑]
- সিরাতে রাসুলাল্লাহ (সাঃ), অনুবাদ, শহীদ আখন্দ, প্রথমা প্রকাশনী, পৃষ্ঠা ৩৫৩ [↑]
- The Life Of Mohammed, ৩১১ পৃষ্ঠায় [↑]
- حديث أم الفضل بن عباس وهي أخت ميمونة رضي الله عنهم [↑]
- Musnad Ahmad, Number 25636 [↑]
- সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৫ [↑]
- সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), হাদিস নম্বরঃ ৪৮৭৭ [↑]
- সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), হাদিস নম্বরঃ ৪৮৭৮ [↑]
- সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স। হাদিস নম্বরঃ ৫০৮১ [↑]
- আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ইবনে কাসীর, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ২৪৮-২৪৯ [↑]
- সূনান নাসাঈ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩২২৪ [↑]
- সূনান নাসাঈ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৪১, হাদিস নম্বরঃ ৩২২৪ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৪৮৫০ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, অষ্টম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪৯০, ৪৯১ [↑]
- সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, পঞ্চম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৭ [↑]
- তাবাকাত, ইবনে সা‘দ, পৃষ্ঠাঃ ৪৩ [↑]
- Al-Tabari, Vol. 39, pp. 171-173, Download link [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন। হাদিস নম্বরঃ ৪৭০৭ [↑]
- সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স। হাদিস নম্বরঃ ৫০৮০ [↑]
- সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত), হাদিস নম্বরঃ ১১০০ [↑]
- সুনানে ইবনু মাজাহ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৬৭, ১৬৮ [↑]
- সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স। হাদিস নম্বরঃ ৫২১৩ [↑]
- হাদিস সম্ভার, হাদিস নম্বরঃ ২৫৫৮ [↑]
- সুনান ইবনু মাজাহ, হাদিস নম্বরঃ ১৮৬১ [↑]
- আল-আওনুল মাহমুদ ফি-হল্লি সুনানে আবী দাউদ, আল মাহমুদ প্রকাশনী, পৃষ্ঠা ৪০৯ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৫৭০০ [↑]
- সহীহ মুসলিম (হাদিস একাডেমি) , হাদিস নম্বরঃ ৩৩৭২ [↑]
- সূনান আবু দাউদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৪৮৪৯ [↑]
- সহীহ বুখারী (তাওহীদ), হাদিস নম্বরঃ ৬১৩০ [↑]
- সহজ নসরুল বারী শরহে বুখারী, ১১তম খণ্ড, আল কাউসার প্রকাশনী, পৃষ্ঠা ২৪১ [↑]
- নাসরুল বারী শরহে সহীহ বুখারী ১১/২৪১ [↑]
- সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত), হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩২ [↑][↑]
- সহীহ বুখারী (দারুসসালাম) ৮/৮৮ [↑]
- Sahih Al-Bukhari, vol. 8, Page: 88, 89, Dr. Muhammad Muhsin Khan, DARUSSALAM Publishers and Distributors, Riyadh, Saudi Arabia [↑]
- সুনানে আবু দাউদ ৪৯৩২ [↑]
- সুনানুল কুবরা ৮৯০১ #page-12393 [↑]
- ফাতহুল বারী ১০/৫২৭ [↑]
- Meaning of hadeeth about Aa’ishah’s playing with dolls [↑]
- সহীহ মুসলিম, হাদিস একাডেমি, হাদিস নম্বরঃ ৩৪৩৩ [↑]
- সুনানে ইবনে মাজাহ, তাওহীদ পাবলিকেশন, হাদিস নম্বরঃ ১৮৫৩ [↑]
- মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত), হাদিস একাডেমি, হাদিস নম্বরঃ ৩২৫৫ [↑]
- সহীহ মুসলিম, হাদীস একাডেমী, হাদিস নম্বরঃ ১৯৪৮, ১৯৪৯, ১৯৫০ [↑]
- সহীহ মুসলিম, হাদীস একাডেমী, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩১২, ৩১৩ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ২৪৮৫ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ১৪৬২ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ২৯০ [↑]
- সূরা নিসা, আয়াত ৬৫ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৬৮৫৩ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, দশম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫১৯, ৫২০, হাদিস নম্বরঃ ৬৮৫৩ [↑]
- সহজ নসরুল বারী শরহে বুখারী, খণ্ড ১৩, পৃষ্ঠা ১৮৫ [↑]
- সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত), হাদিস নম্বরঃ ৪৬০৭ [↑]
- সুরা ৩৩:৪৯ [↑]
- সুরা ৬৫:৪ [↑]
- সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৩ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৪৭৫৭ [↑]
- তাফসীরে ইবনে কাসীর, একাদশ খণ্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, পৃষ্ঠা ১৬৩ [↑]
- তাফসীরে জালালাইন, ষষ্ঠ খণ্ড, ইসলামিয়া কুতুবখানা, পৃষ্ঠা ৫৮৮ [↑]
- তাফসীরে মাযহারী, খণ্ড ১১, পৃষ্ঠা ৫৬২, ৫৬৩ [↑]
- মা’আরেফুল কোরআন, খণ্ড ৮ এর ৪৮১, ৪৮৩ নম্বর পৃষ্ঠা [↑]
- “King Faisal Prize” (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-০৫[↑]
- Adams, Charles J. (1983). “Maududi and the Islamic State”. In Esposito, John L. (ed.). Voices of Resurgent Islam. Oxford University Press. ISBN 9780195033403 [↑]
- তাফহীমুল কুরআন, সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী [↑]
- “Muhammad Taqi Usmani”। The Muslim 500 (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-২৪। [↑]
- তাফসীরে তাওযীহুল কুরআনে, মুফতি মুহাম্মদ তাকী উসমানি, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫৬৭ [↑]
- আহকামুল কুরআন, ইমাম আহমাদ ইবনে আলী আবূ বকর আর-রায়ী আল-যাস্সাস, অনুবাদঃ মাওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহীম, খায়রুন প্রকাশনী, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৩৫ [↑]
- আহকামুল কুরআন, ইমাম আহমাদ ইবনে আলী আবূ বকর আর-রায়ী আল-যাস্সাস, অনুবাদঃ মাওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহীম, খায়রুন প্রকাশনী, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৩১ [↑][↑]
- আল হিদায়া, দ্বিতীয় খণ্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, পৃষ্ঠা ২০১ [↑]
- আশরাফুল হিদায়া, তৃতীয় খণ্ড, মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক ফরিদী, ইসলামিয়া কুতুবখানা প্রকাশনী, পৃষ্ঠা ৫৭৬ [↑]
- বোখারী শরীফ (বাংলা তরজমা ও ব্যাখ্যা), খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ১৯৬-১৯৭ [↑]
- ফিকাহুস সুন্নাহ, ২য় খণ্ড, সাইয়েদ সাবেক, শতাব্দী প্রকাশনী, পৃষ্ঠা ২৬৬ [↑]
- ফিকাহুস সুন্নাহ, ২য় খণ্ড, সাইয়েদ সাবেক, শতাব্দী প্রকাশনী, পৃষ্ঠা ৪৬৩ [↑]
- ফতওয়ায়ে আলমগীরী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৬৩৯ [↑]
- الدليل على جواز تزويج الأب البنت الصغيرة دون إذنها أو رضاها رقم الفتوى: 230518 [↑]
- It is permissible to contract the marriage of an immature girl and consummate it [↑]
- মুমিন নারীদের বিশেষ বিধান, ড. সালেহ ইবনে ফাওযান আল ফাওযান, ইসলাম হাউজ, অনুবাদকঃ সানাউল্লাহ নজির আহমেদ, সম্পাদকঃ ড. আবু বকর মুহাম্মদ যাকারিয়া, পৃষ্ঠা ৯৫, ৯৬ [↑]
- ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত, ষষ্ঠ খণ্ড, ফকীহুল মিল্লাত ফাউন্ডেশন, ফকীহুল মিল্লাত মুফতি আবদুর রহমান, পৃষ্ঠা ৪২ [↑]
- সুনান আদ-দারেমী (হাদিসবিডি), হাদিস নম্বরঃ ১২১২ [↑]
- সুনান আদ-দারেমী (হাদিসবিডি), হাদিস নম্বরঃ ১২১৩ [↑]
- সুনান আদ-দারেমী (হাদিসবিডি), হাদিস নম্বরঃ ১২১৪ [↑]
- ইসলাম, গনিমতের মাল এবং আমাদের মানবতা [↑]
- ইসলামে দাসীদের সাথে আচরণ প্রসঙ্গে [↑]
- ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৬৩৯ [↑]
- আশরাফুল হিদায়া, ইসলামিয়া কুতুবখানা, নবম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৬১৫, ৬৩৮ [↑]
- শরহে আবূ দাউদ [↑]
- আহকামুল কুরআন, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪২ [↑]
- মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত), হাদিস নম্বরঃ ৩১৩১ [↑]
- সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), হাদিস নম্বরঃ ৩৬১০ [↑]
- সহীহ বুখারী (ইফাঃ), হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৯ [↑]
- সূনান নাসাঈ (ইফাঃ), হাদিস নম্বরঃ ৩২৮৪ [↑]
- Muhammad ibn Saad. Kitab al-Tabaqat al-Kabir Volume 8. Translated by Bewley, A. (1995). The Women of Madina. London: Ta-Ha Publishers. Page: 299, 300 [↑]
- Muhammad ibn Jarir al-Tabari. Tarikh al-Rusul wa’l-Muluk. Translated by Juynboll, G. H. A. (1989). Volume 13: The Conquest of Iraq, Southwestern Persia, and Egypt, pp. 109-110. Albany: State University of New York Press. [↑]
- হায়াতুস সাহাবাহ, মুহাম্মদ ইউসুফ ছাহেব কান্ধলভী, দারুল কিতাব, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ২০৫-২০৬ [↑]
- বাল্যবিবাহ খাছ সুন্নত হওয়ার প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে শর’য়ী ফয়ছালা ও ফতওয়া, মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ [↑]
- শাতিমে রাসুল সম্পর্কিত শরিয়তের বিধান [↑]
- সূনান নাসাঈ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৪০৭২ [↑]
- জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-২২৩৬৬, জামেউল জাওয়ামে, হাদীস নং-৫০৯৭, দায়লামী, ৩/৫৪১, হাদীস নং-৫৬৮৮, আস সারেমুল মাসলূল-৯২ [↑]
- فصل سب النبي أو الأصحاب [↑]
- সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩৫৫৭ [↑]
- সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন, হাদিস নম্বরঃ ৬৮৪৪ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৪২৫৩[↑]
- সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, হাদিস নম্বরঃ ৪৬০৮[↑]
- সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন, হাদিস নম্বরঃ ৬৮৪৫ [↑]
- লিসানুল আরব ১২/৬৪৫ [↑]
- আবু দাউদ শরীফ ২৮৭৫, সুনানে কুবরা বায়হাক্বী ৬/৫৭ হাদীছ ১১৬৪২, মুজামুল কবীর তাবরানী ৩৪২২, সুনানে ছগীর লি বায়হাকী ২০৪৯, শরহুস সুন্নহ ৯/২০০, ফতহুল বারী ২/৩৪৬, উমদাতুল ক্বারী ২১/১০৭, কানযুল উম্মল ৬০৪৬ [↑]
- সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত), আল্লামা আলবানী একাডেমী, হাদিস নম্বরঃ ২৮৭৩ [↑]
- সুনান আবূ দাঊদ, তাহক্বীকঃ আল্লামা আলবানী, হুসাইন আল-মাদানী প্রকাশনী , চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৭৩, হাদিস নম্বরঃ ২৮৭৩ [↑]
- خبر عائشة: إذا بلغت الجارية تسع سنين، فهي امرأة. [↑]
- خبر عائشة: إذا بلغت الجارية تسع سنين، فهي امرأة. ওয়েব আর্কাইভ লিঙ্ক [↑]
- Age of the Mother of the Believers ‘Aa’ishah (may Allah be pleased with her) when the Prophet (blessings and peace of Allah be upon him) married her [↑]
- Diagnostic and Statistical Manual of Mental Disorders, Fourth Edition [↑]
- Fagan PJ, Wise TN, Schmidt CW, Berlin FS (November 2002). “Pedophilia”. JAMA. 288 (19): 2458–65. doi:10.1001/jama.288.19.2458. PMID 12435259. Retrieved 2008-09-05 [↑]
- Hall RC, Hall RC (2007). “A profile of pedophilia: definition, characteristics of offenders, recidivism, treatment outcomes, and forensic issues”. Mayo Clin. Proc. 82 (4): 457–71. doi:10.4065/82.4.457. PMID 17418075 [↑]
- Hall RC, Hall RC (2007). “A profile of pedophilia: definition, characteristics of offenders, recidivism, treatment outcomes, and forensic issues”. Mayo Clin. Proc. 82 (4): 457–71. doi:10.4065/82.4.457. PMID 17418075 [↑]
- সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন, হাদিস নম্বরঃ ৫২১২ [↑]
- সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, হাদিস নম্বরঃ ৫২১৩ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৪০১৯ [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"
তেতো সত্যগুলো তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ। এরপরেও কিছু অন্ধ কাঠমোল্লা কল্লা কাটার জন্য উঠেপড়ে লাগবে!????
জবাব ১:
https://icraa.org/prophet-muhammad-marriage-with-nine-year-old-aisha-a-review-of-contentions/
জবাব ২:
http://response-to-anti-islam.com/show/%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%82%E0%A6%B2-%EF%B7%BA-%E0%A6%93-%E0%A6%86%E0%A7%9F%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%BE-(%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%83)-%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%AF%E0%A6%A4%E0%A7%8B-%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%A5%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%B0-/109
হিন্দুদের ইতিহাস পড়লে এমন অনেক বিয়ে আর হত্যার খবর পাওয়া যায়।মুহাম্মদ(সাঃ) ২৫ বছর বয়সে বিয়ে করেন ৪০ বছর বয়স্ক নারি।৫২ বছর বয়স পর্যন্ত(খাদিজার মৃত্যু পর্যন্ত ) তার সাথে সংসার করেন।খাদিজা মারা যাওয়ার পর ২ বছর নবীজিবিয়ে করেন নি।এর পর তিনি যে বিয়েগুলো করেন সেগুলো রাজনৈতি, সামাজিক কারনে।এ-ই নিয়ে জলঘোলা করার কারন নেই।
আগামি ৫০ বছরেরমধ্যে মুসলিম রা দুনিয়ায় সংখাগ্রিষ্ঠ হবে।১০০ বছরের মধ্যে কোন অমুসলিম থাকবে না
সবচেয়ে বেশি আলোচনা করা হয় যে তিনি ছয় বছরের শিশু আয়েশাকে বিয়ে করেছিলেন যা একেবারেই ডাহা মিথ্যা কথা, আয়েশার বয়স যখন ছয় তখন তার পিতা-মাতা নবীজীকে তাদের কন্যা সাথে বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, নবীজি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন এরপর যখন বয়স নয় তখন আবারও তারা প্রস্তাব দিয়েছিলেন নবীজীকে তখনো তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন, একবার দুবার নয় বহুবার তিনি বিবি আয়েশাকে বিয়ে করার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, এরপর যখন তিনি রাজি হলেন তখন আয়েশার বয়স ছিল 19 যখন সে তার পিতার সম্পত্তি দেখাশোনা করত এবং আয়েশা নিজে সম্মতি এবং আগ্রহ দেখিয়েছে তাছাড়া আয়েশার পিতা নবীজির সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন, এই পুরো ব্যাপারটা ইহুদি নাস্তিকরা রস বানিয়ে তাকে কামুক বানানোর চেষ্টার কোন কমতি করে নাই কিন্তু মূলত ব্যাপারটা মোটেও সেরকম নয়. Reality: “মিথ্যা রটনায় নাস্তিকদের আগে কে যায়?”
পৃথীবীর সবচেয়ে গাদা জাতি হচ্ছে নাস্তিক জাতি।।।
জাতিগুলোর নাই পরিপূন জ্ঞান।।।
তুই যে কতো বড় গাধা সেটা তোর বানানের অবস্থা দেখলেই বোঝা যায়। শালা “গাধা” বানানটাও ঠিকঠাক পারছনা আসছে তর্ক করতে!! ???? Get some primary education man then debate.
আপনি তো ‘কত’ বানানটিও জানেন না। সর্বনামের ব্যবহারও জানেন না; ক্রিয়াবিশেষণ এর ব্যবহারও জানেন না। তাহলে আপনি কি তার চেয়ে বড়ো গাধা?
অনুগ্রহ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে বাংলা শিখুন।
Hi, i dont see my comment up there, jt was there the day i posted it
What happened where did it go, so can please find it so everyone can see
Thank you&
Aslmth to all my muslim bro & sis above,
And Hi to the writer
first of all, my apology /forgive me for not writing in bangla & for any typos too.
SubhanAllah, due to my physical health condition it is very hard to read, write or type, basically doing anything ( exactly why, i aviod getting engage with comments etc.
And another big apology again for
such a long comment, didn’t intend to, tried to make it short but a ipmortant subject like this, needs hours of discussions. However, InshaAllah, please read it to the end.
Now,
no offence to my muslim bros & sis, just a reminder from a muslim (as per islamic duty)- i read some of the comments above, of which some are not nice, nasty…
I know u got angry..but using nasty words or calling names, humiliating people, is not the right way to explain islam.
First, u guys need to understand he worked hard to establish his believe, his point of his view.
of course, he is wrong, so
our job is to deal anything in islamic way- by providing him with the accurate informations based on The Quran & sahih hadith ( the good thing is he did research them too, so our job is half done, even though, sadly all his infos are not right..
All we need to do is refer him and his buddies to a sheikh ( e.i. Sheikh motiurRahman madani ) or so who could explain him where he was and is being misguided. So please remember to be nice & wise, cuz thats what islam teaches us, our Nabi (sw) never used any nasty languages or so, besides,
if u want them to know the truth, embrace real islam, u have to have a decent discussion, debate etc with patient,
by calling someone names .. u r actully even pushing him further away from islam.
Alhmdulillah, with ASWTHs help, InshaAllah,we can always solve any problem without being nasty..
Jazkhnqr
Now to the writer,
You gathered lots of knowledge to come to your decission ( sadly u r mistaken, miguided. However,we are all human being, no one is immune to mistake, anyway, i do appreciate ur hard work, whatever u believe in u worked hard for it.
now,I have a quesion for you, since u studied a lot about Nabis(sw) marriage,geussing, u know about his
( sw)1rst wife too, she was 40 when he married her and he was only 20
( already read a comment mentioning this too) so why didnt u pick on that – in todays ‘modern’ world even in western culture they find it hard to accept marrying a older woman, moms age, u know that, right?
Or, why dontyou take The Ayat from The Quran( just google it, you will find the ayah- mentioing about the ocean where its divided into 2 different type of water, salty and not salty,
and they dont get mixed..
Why dont u think about it – there was no “science”back then, how on earth then this information got in the Quran, you are too smart to think its someones magic, right.
So if really wanna critisize Quran or Islam pick subjects like that and think deeply, which u do already, its just your focus is coming from the wrong derection
BESIDES, YOU NEED TO THINK, WHERE DID SCIENCE CAME FROM- WHATEVER WE HUMAN R DISCOVERING, IT IS BASED ON WHATEVER WE HAVE IN THIS UNIVERSE, WHICH IS GIVEN TO US BY THE CREATOR, ALLAH SUBHANAHU WA TA’ALA.
Anyway, if u really belive u r right, then,
Please, my request is, before u jump into another topic to prove islam is wrong.. , please take a pause,
For your own good and you family, loved ones good
Gather all your logic and etc, then, present it all to a sheikh or a scholar, (Alhamdulillah, i recommend,
shyeikh motiurRahman madani or for the begining u can even pick Zakir Nayek) hit them with whatever you got, then go from there. Alhamdulillah, u are smart, so whatever logic, question or challenge, take to him- discuss, debate whatever is needed to come to the right conclusion. InshaAllah, i believe,u will find the truth without much difficulty, Alhamdulillah, u r given a good brain and lots of resources – all u need to do is, use it in the right way, for the right reason, InshaAllah,u might find yourself end up going to Islamic school to become a sheyikh youself one day,
just a freindly reminder, by using d resouces ASWTH gave u already,to learn about Sahih Islam, u actually can become a sheikh or even better than that, so please do so, please dont waste ur precious time anymore, cuz,u know, u believe it or not, we only have one limited life time, and it could end in any given moment, right.
We already have a good example of FIRA’OON,BY THE TIME HE REALIZED, HE ASKED FOR ANOTHER CHANCE, BUT, SADLY, IT WAS TOO LATE.
InshAllah, u and we all will live a long islamic life.
If possible please update me with the result, InshaAllah, hopefully, i will be alive to get the update w fruitfull result.
Thank u
sorry again for the long comment and the typos.
Allah Hafiz
P.S – what happened to my first comment, who deleted it and why, find out please
Another odd thing is, all these comments above, are not in serial based on dates, which happens automacally
So why all the comments here,messed up, not in serial?
You are absolutely right, my brother
ঠিক !
কিন্তু নাস্তিক/ইসলাম বিদ্ধেষীরা আমার কিছু প্রশ্নের জবাব আজও দিতে পারে নাই।
হযরত মুহম্মদ সাল্লেল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৬ বছরের আয়েশা(রাঃ) কে বিয়ে করে কেন ৯ বছরে (মতো বিরোধ আছে) সহবাস করলেন, কেন????????কেন তিনি তিন বছর অপেক্ষা করলেন?
যেখানে তিনি ইচ্ছা করলে ১৩বিবিই ৯/১০বছরের হতে পারতো।কেন সেখানে, একজন ব্যতীত সবাই বিধবা,তালাকপ্রাপ্তা ছিল?????
একজন পঞ্চাষোর্ধ পৌঢ় ব্যাক্তি যদি নারীর দেহের জন্য বিয়ে করতেন তাহলে কখনোই তিন বছর অপেক্ষা করে সময় নষ্ট করতেন না।
!!!আপনাদের যুক্তিবাদী বিবেক কি বলে???
প্রাকৃতিক নিয়মে কতো বছর বয়সে মেয়েরা সেক্স করার উপযুক্ত হয়???
Because he didn’t have enough money to pay “দেনমোহর” and enjoy her vagina! So he waited 3 year to collect money!
That’s totally nothing but a falsehood. I’m not as foolish as atheists are. We also know incidents behind these Hadiths.
Because he did not have enough money to pay দেনমোহর to enjoy her vagina! So he waited 3 years to earn money and collected দেনমোহর .
22 bochor
হযরত আয়েশা রা. কখনো মুহাম্মদ সা. এর প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলেন না, তিনি উঁনার বিরুদ্ধে কখনো অভিযোগ করেন নি, আর তিনি কম বয়সে বিয়ে হয়েছে এই কারণে কখনো তিনি অভিযোগ করেন নি, বরং তিনি সবসময় নবীর সাথে সুখেই ছিলেন, আর সে সময় কেন এরও আগে থেকে বয়স্ক লোকের সাথে বালিকা মেয়ের বিয়ে প্রচলন ছিল, আর আয়েশা রা. কোনো সাধারণ মহিলা ছিলেন না।
নাস্তিক ও ইসলাম বিদ্বেষীরা এগুলো নিয়ে শুধু শুধু সময় নষ্ট করে, অথচ নিজেদের পূর্বপুরুষদের খোঁজখবর করে না যারা অল্পবয়সি মেয়েদের বিয়ে করতো।
আর আবূ বকর রা. ও ওমর রা. ফাতেমা রা. কে বিয়ে করতে চাইলে মুহাম্মদ সা. বিয়ে দেননি কারণ উঁনারা ২ জন মুহাম্মদ সা. এর শশুর ছিলেন. আর ওমর রা. হতে বয়সে বড় উসমান রা. এর সাথে তিনি উঁনার মেয়ের বিয়ে দেন. কেন? কারণ সে যুগে বিয়ের সময় বয়সকে তেমন কিছু মনে করা হতো না অর্থাৎ অল্প বয়সী মেয়ের সাথে বয়স্ক লোকের বিয়েকে নিয়ে ঠাট্টা করা হতো না. মক্কার কাফের মুশরিকরা মুহাম্মদ সা. ও আয়েশা রা. এর বিয়ের বয়স নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে নি. সে সময় প্রচলন ছিল বন্ধুর মেয়েকে বিয়ে করা যায় না আর এই কুসংস্কার দূর করতে মুহাম্মদ সা. আয়েশা রা. কে বিয়ে করেন.
গোঁজামিলে ভরপুর লেখা as usual. হাইলাইট করা অংশটুকু না পড়ে ঐ পুরো হাদিসের টেক্সট পড়লেই উত্তর পাওয়া যায়। এখন যদি নাস্তিকেরা রিডিং পড়তে না পারে তাহলে তাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়াশোনার উদ্দেশ্যে যাওয়া উচিত।
তথ্য সমৃদ্ধ লেখা পড়ে খুব ভালো লাগলো
প্রশ্নঃ মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) কি শিশু ধর্ষক বা শিশু কামী ছিলেন ?
উত্তরঃ
মূল বক্তব্যঃ
রাসূল (সা.) এর ইন্তেকালের সময় সাহাবীর সংখ্যা ছিল প্রায় এক লাখ চৌদ্দ হাজার। তাদের সব সময় রাসূল (সা.) এর কাছে থেকে তাঁর সকল কথা শুনা বা সকল কাজ দেখা সম্ভব ছিল না। তাই অধিকাংশ সাহাবীর জানা থাকা হাদীসের মধ্যে কিছু ছিল রাসূল (সা.) এর নিকট থেকে সরাসরি শুনা বা দেখা আর কিছু ছিল অন্য সাহাবীর নিকট থেকে শুনা বা দেখা। খুলাফায়ে রাশেদীনের সময় পর্যন্ত হাদীস সংরক্ষণ, সংকলন ও প্রচার পদ্ধতি
রাসূল (সা.) যতদিন জীবিত ছিলেন ততোদিন কারো পক্ষে তাঁর নামে মিথ্যা কথা প্রচার করা, রাসূলের কথাকে তাঁর কথা নয় বলে উড়িয়ে দেয়া এবং রাসূল (সা.) এর কোন কথার অপব্যাখ্যা করে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার সুযোগ ছিল না। কারণ, তেমন কিছু ঘটলেই সাহাবায়ে কিরামগণ রাসূল (সা.) এর নিকট জিজ্ঞাসা করে সহজেই তার সমাধান করে নিতে পারতেন। রাসূল (সা.) এর ইন্তেকালের পর এই সুযোগটি আর থাকে না। কিছু মুনাফিকও রাসূল (সা.) এর নামে মিথ্যা হাদীস রচনা করারও চেষ্টা করে।প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর (রা.) ঐ মুনাফিক মুরতাদদের কঠোর হস্তে দমন করেন। তিনি নিজে ৫০০ (পাঁচশত) হাদীসের এক সংকলন তৈরি করেছিলেন। কিন্তু জীবনের শেষ ভাগে তিনি নিজেই তা নষ্ট করে দেন। এর কারণ হিসেবে মুহাদ্দিস ও ঐতিহাসিকগণ দু’টি বিষয় উল্লেখ করেছেন-
১. তিনি বিশেষভাবে চিন্তিত হয়ে পড়েন যে, তাঁর সংকলিত হাদীসে একটি শব্দও যদি রাসূল (সা.) এর মূল বাণীর বিন্দুমাত্র বিপরীত বা পরিবর্তন হয়ে পড়ে তবে রাসূল (সা.) এর সতর্কবাণী অনুযায়ী তাঁকে জাহান্নামে যেতে হবে।
২. তাঁর মনে এ ভয়ও জাগ্রত হয় যে, তাঁর সংকলিত হাদীস গ্রন্থকে মুসলিম জনগণ, যদি কুরআনের সমতুল্য মর্যাদা দিয়ে বসে , তা হলে ইসলামের বিশেষ ক্ষতি হবে।
দ্বিতীয় খলীফা ওমর ফারুক (রা.) এর দৃষ্টিতেও ইসলামের ভিত্তি হিসেবে কুরআনের পরই ছিল সুন্নাহ তথা রাসূল (সা.) এর হাদীসের স্থান। তিনিও আবু বকর (রা.) এর ন্যায় হাদীস বর্ণনা ও গ্রহণের ব্যাপারে কঠোরতা অবলম্বন করেন। দিন যত যেতে থাকে মুসলিম সমাজে তত নিত্য নতুন পরিস্থিতি ও সমস্যার উদ্ভব হতে থাকে। মুসলিম জনসাধারণের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে রাসূল (সা.) এর কথা জানা জরুরি হয়ে পড়ে। ফলে জীবিত সাহাবীগণ তাদের জানা থাকা হাদীস বর্ণনা করতে বাধ্য হন। অপরদিকে সংগ্রহ, বাছাই-ছাঁটাই ও সংকলনের পর সহীহ হাদীসের সমন্বয়ে উন্নত ধরনের গ্রন্থ প্রণয়নের কাজও বিশেষ গুরুত্ব, মর্যাদা, ব্যাপকতা ও গভীরতা সহকারে সুসম্পন্ন হয়। এ বিরাট ও দুরূহ কাজের জন্যে যারা আবির্ভূত হন-
১. ইমাম বুখারী (রহ). (১৯৪-২৫৬ হিঃ)
২. ইমাম মুসলিম (রহ.) (২০৪-২৬১ হিঃ)
৩. ইমাম নাসায়ী (রহ.) (২১৫-৩০৩ হিঃ)
৪. ইমাম আবু দাউদ (রহ.) (২০২-২৭৫ হিঃ)
৫. ইমাম তিরমিযী (রহ.) (২০৯-২৭৯ হিঃ)
৬. ইমাম ইবনে মাজাহ (রহ.) (২০৯-২৭৩ হিঃ)
এই ছয়জন মহৎ ব্যক্তি যে হাদীস গ্রন্থ সংকলন করেন সেগুলোই হচ্ছে সর্বাধিক সহীহ হাদীস গ্রন্থ। এ গ্রন্থসমূহ ব্যাপকভাবে প্রচারিত ও পঠিত। বর্তমান মুসলিম বিশ্বে এমন কোন স্থান পাওয়া যাবে না যেখানে বুখারী শরীফ পাওয়া যাবে না।
এবার মূল কথায় যাই – –
পবিত্র কুরআন আল্লাহর বাণী অবশ্যই এর মধ্যে কোন ভুল নাই এবং এটিতে রয়েছে অসংখ্য সাইন বা সংকেত যা ব্যাখ্যা করার জন্য হাদীসের প্রয়োজন। কিন্তু হাদীসের কোন ব্যাখ্যা যদি পবিত্র কুরআনের বিরুদ্ধে যায় তাহলে ঐ হাদীস বর্জন করতে হবে।
N.B: বুখারী শরীফের সংকলনকালে তিনি সর্বদা রোজা রাখতেন এবং প্রতিটি হাদীস গ্রন্থ সন্নিবেশিত করার আগে গোসল করে দু’ রাকাত নফল নামাজ আদায় করে মুরাকাবা ও ধ্যানের মাধ্যমে হাদীসের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতেন। তিনি ৬ লাখ হাদিস হতে যাচাই বাছাই করে সর্বসাকুলে ১৬ বছর নিরলস সাধনা করে এ প্রসিদ্ধ গ্রন্থখানি প্রণয়ন করেন এবং ইমাম মুসলিম (রহ.) দীর্ঘ পনের বছরের সাধনায় তিন লাখ হাদিস থেকে যাচাই-বাছাই করে ‘সহিহ্ মুসলিম’ শরিফ সংকলন করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি এ গ্রন্থখানা আবু জুরআ আর-রাজির কাছে পেশ করেছি। তিনি যে যে হাদিসের সনদে দোষ আছে বলে ইঙ্গিত করেছেন, আমি তা পরিত্যাগ করেছি, আর যে যে হাদিস সম্পর্কে মত দিয়েছেন যে এগুলো সহিহ, আমি সেগুলো গ্রন্থে সন্নিবেশিত করেছি।’
অতএব, বুঝা যায় যে, সহিহ হাদীস সংকলন যাতে বিশুদ্ধ হয় তার জন্য ইমাম বুখারী (রহ), ইমাম মুসলিম (রহ.) ও অন্য চার মহৎ ব্যক্তি যে পরিশ্রম করেছেন তার জন্য আল্লাহ্ যেন তাদেরকে জান্নাত বাসী করেন। কিন্তু এত পরিশ্রমের পরেও এই সহিহ হাদীসের সব হাদীস বিশুদ্ধ নাও হতে পারে কারণ মানুষ হিসাবে ভুল হতেই পারে। কেন এই কথা বললাম নিচে উদাহরণ দিচ্ছি – –
সহিহ হাদীস শরীফে দুই রকম তথ্য পাওয়া গেছেঃ
হাদীস ক).
এক জায়গায় পাওয়া গেছে , রাসূল (সাঃ) এর সাথে হযরত আয়শা (রাঃ) র দাম্পত্য জীবন শুরু হয় মাত্র ৯ বছর বয়সে।
হাদীস খ).
আর এক জায়গা থেকে তথ্য পাওয়া গেছে, রাসূল (সাঃ) এর সাথে হযরত আয়শা (রাঃ) র দাম্পত্য জীবন শুরু হয় ১৯ বছর বয়সে।
এখানে একই সময়ে, একজন মানুষের ক্ষেত্রে 🕛
হাদীস ক). ও
হাদীস খ).
একসাথে সত্যি হতে পারে না(probability theory)। অর্থাৎ একই দিনে একজনের দাম্পত্য জীবন শুরুর বয়স ৯ বছর ও ১৯ বছর হতে পারে না।
একজনের ক্ষেত্রে যে কোন একটি বয়স হতে হবে। হয় ৯ বছর না হয় ১৯ বছর।
এইক্ষেএে আমাদের দেখতে হবে পবিত্র কুরআনে কি বলে ৯ বছর না ১৯ বছর।
রেফারেন্স সহ বিস্তারিত exploration method ১ এ আলোচনা করা হয়েছে।
একটি কথা। আপনাদের ভাল অঙ্কের মাষ্টার হতে হবে না যারা টুকটাক অঙ্ক করতে পারেন সহজ এই অঙ্কগুলো তারাও বুঝতে পারবেন কিন্তু দরকার হবে কেবল একটা জিনিস সেটা হচ্ছে ধৈর্য্য। তাহলে exploration method গুলো শুরু করা যাক এই প্রশ্নটি টার্ন করার মাধ্যমে – –
প্রশ্নঃ মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) কি শিশু ধর্ষক বা শিশু কামী ছিলেন ?
exploration method ১ঃ
সহিহ বুখারী শরীফে দুই রকম তথ্য পাওয়া গেছেঃ
⏩⏩হাদীস ক). ⏩⏩
এক জায়গায় পাওয়া গেছে , রাসূল (সাঃ) এর সাথে হযরত আয়শা (রাঃ) র দাম্পত্য জীবন শুরু হয় মাত্র ৯ বছর বয়সে।
উৎস সহীহ বুখারীঃ
📝 হাদীস নংঃ ৫১৩৩. ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাঁকে বিয়ে করেন তখন তাঁর বয়স ছিল ৬ বছর এবং নয় বছর বয়সে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামতাঁর সঙ্গে বাসর ঘর করেন এবং তিনি তাঁর সান্নিধ্যে নয় বছরকাল ছিলেন। [৩৮৯৪](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ) পুনঃনিরীক্ষণঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ) ৬৭/ বিয়ে (كتاب النكاح)
📝 হাদীস নংঃ ৫১৩৪. ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, যখন তাঁর ছয় বছর বয়স তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বিয়ে করেন। তিনি তাঁর সঙ্গে বাসর করেন নয় বছর বয়সে। হিশাম (রহ.) বলেন, আমি জেনেছি যে, ‘আয়িশাহ (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে নয় বছর ছিলেন। [৩৮৯৪](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ) ৬৭/ বিয়ে (كتاب النكاح)
উৎস সহীহ মুসলিমঃ
📝 হাদীস নংঃ ৩৩৭০-(৬৯/১৪২২) আবূ কুরায়ব মুহাম্মাদ ইবনু ‘আলা ও আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বাহু (রহিমাছমাল্লাহ) … আয়িশাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বিয়ে করেছেন, আমার বয়স তখন ছয় বছর। তিনি আমাকে নিয়ে বাসর ঘরে যান, তখন আমার বয়স নয় বছর। আয়িশাহ (রাযিঃ) বলেন, আমরা হিজরাত করে মাদীনায় পৌছার পর আমি একমাস যাবৎ জ্বরে আক্রান্ত ছিলাম এবং আমার মাথার চুল পড়ে গিয়ে কানের কাছে (কিছু) থাকে। (আমার মা) উম্মু রূমান আমার নিকট এলেন, আমি তখন একটি দোলনার উপরে ছিলাম এবং আমার কাছে আমার খেলার সাখীরাও ছিল। তিনি আমাকে উচ্চৈঃস্বরে ডাকলেন, আমি তার নিকট গেলাম।আমি বুঝতে পারিনি যে, তিনি আমাকে নিয়ে কী করবেন। তিনি আমার হাত ধরে আমাকে দরজায় নিয়ে দাঁড় করালেন। আমি তখন বলছিলাম, আহ, আহ। অবশেষে আমার উদ্বেগ দূরীভূত হল। তিনি আমাকে একটি ঘরে নিয়ে গেলেন। সেখানে আনসার মহিলাগণ উপস্থিত ছিলেন। তারা সকলে আমার কল্যাণ ও রহমাতের জন্য দুআ করলেন এবং আমার সৌভাগ্য কামনা করলেন। তিনি (মা) আমাকে তাদের নিকট সমর্পণ করলেন। তারা আমার মাথা ধুয়ে দিলেন এবং আমাকে সুসজ্জিত করলেন। আমি কোন কিছুতে ভীত শংকিত হইনি। চাশতের সময় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন এবং তারা আমাকে তার নিকট সমর্পণ করলেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৩৪৪, ইসলামীক সেন্টার ৩৩৪৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ) পুনঃনিরীক্ষণঃ সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ১৭। বিবাহ (كتاب النكاح)
📝 হাদীস নংঃ ৩৩৭১-(৭০/…) ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, ইবনু নুমায়র (রহিমাহুমাল্লাহ) ….. আয়িশাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার ছয় বছর বয়সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বিবাহ করেন এবং আমার নয় বছর বয়সে তিনি আমার সঙ্গে বাসর যাপন করেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৩৪৫, ইসলামীক সেন্টার ৩৩৪৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ) পুনঃনিরীক্ষণঃ সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ১৭। বিবাহ (كتاب النكاح)
📝 হাদীস নংঃ ৩৩৭২-(৭১/…) আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ….. আয়িশাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তার সাত বছর বয়সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বিবাহ করেন। তাকে নয় বছর* বয়সে তার ঘরে বধুবেশে নেয়া হয় এবং তার সঙ্গে তার খেলার পুতুলগুলোও ছিল। তাঁর আঠারো বছর বয়সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তিকাল করেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৩৪৬, ইসলামীক সেন্টার ৩৩৪৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ) পুনঃনিরীক্ষণঃ সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ১৭। বিবাহ (كتاب النكاح)
📝 হাদীস নংঃ ৩৩৭৩-(৭২/…) ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বাহ ও আবূ কুরায়ব (রহিমাহুমুল্লাহ) … আয়িশাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, তার ছয় বছর বয়সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বিবাহ করেন, তার নয় বছর বয়সে তিনি তাকে নিয়ে বাসর যাপন করেন এবং আঠারো বছর বয়সে তিনি ইন্তিকাল করেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৩৪৭, ইসলামীক সেন্টার ৩৩৪৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ) পুনঃনিরীক্ষণঃ সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ১৭। বিবাহ (كتاب النكاح)
📝 হাদীস নংঃ ৩৮৯৬. হিশাম এর পিতা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মদিনার দিকে বের হওয়ার তিন বছর আগে খাদীজাহ (রাঃ)-এর মৃত্যু হয়। তারপর দু’বছর অথবা এর কাছাকাছি সময় অতিবাহিত করে তিনি ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে বিবাহ করেন। যখন তিনি ছিলেন ছয় বছরের বালিকা। তারপর নয় বছর বয়সে বাসর উৎযাপন করেন। (৩৮৯৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৬১৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উরওয়াহ (রহঃ) পুনঃনিরীক্ষণঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ) ৬৩/ আনসারগণ [রাযিয়াল্লাহু ‘আনহুম]-এর মর্যাদা (كتاب مناقب الأنصار)
উৎস সহীহ আবূ দাউদঃ
📝 হাদীস নংঃ ২১২১। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার সাত বছর বয়সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বিয়ে করেন। সুলাইমানের বর্ণনায় রয়েছে ছয় বছর। আর তিনি আমার সাথে বাসর যাপন করেন আমার নয় বছর বয়সে। বুখারী, মুসলিম।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৬/ বিবাহ (كتاب النكاح)
⏩⏩হাদীস খ). ⏩⏩
আর এক জায়গা থেকে তথ্য পাওয়া গেছে, রাসূল (সাঃ) এর সাথে হযরত আয়শা (রাঃ) র দাম্পত্য জীবন শুরু হয় ১৯ বছর বয়সে।
উৎস সহীহ বুখারীঃ
📁 অধ্যায়/পরিচ্ছেদঃ ৬৫/৫৪/৯. ‘‘অধিকন্তু ক্বিয়ামাতে তাদের শাস্তির প্রতিশ্রুতিকাল এবং ক্বিয়ামাত বড়ই কঠোর ও তিক্ততর।’’ (সূরাহ আল-কামার ৫৪/৪৬)
📝 হাদীস নংঃ৪৮৭৬. ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, بَلِ السَّاعَةُ مَوْعِدُهُمْ وَالسَّاعَةُ أَدْهٰى وَأَمَرُّ আয়াতটি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি মক্কা্য় অবতীর্ণ হয়েছে। আমি তখন কিশোরী ছিলাম, খেলাধূলা করতাম। [৪৯৯৩] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৫০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৫১২)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ) পুনঃনিরীক্ষণঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ) ৬৫/ কুরআন মাজীদের তাফসীর (كتاب التفسير)
এই হাদীস খ.) থেকে বুঝা যায়, হাদীসে বর্ণিত ৪৬নং আয়াতটি, ৫৪নং সূরা আল-কামার এর, যা হিজরীপূর্ব ৫ সালে মক্কায় অবতীর্ন হয়।
source:
নাজিল হওয়ার পরিপ্রেক্ষিত
google search: সূরা আল-কামার-wikipedia
হযরত আয়শা (রাঃ) র সাথে নবীর বিয়ে হয় ১ম হিজরীতে এবং সূরা ৫৪ নাযিলের সময় আয়েশা (রাঃ) কিশোরী ছিলেন (মানে তখন কমপক্ষে ১০ বছর বয়স ছিল )।
source:
১. WHO অনুসারে কিশোরীর বয়স ১০ থেকে ১৮ বছর
২. google search: adolescence-wikipedia
note: (হাদীসটিতে আয়েশা (রাঃ) ঐ সময় “জারিয়া” ছিলেন মর্মে উল্লেখ আছে। “জারিয়া অর্থ কিশোরী”)
অঙ্কঃ
তাহলে বিয়ের সময় হযরত আয়শা (রাঃ) র বয়সঃ
💨সূরা ৫৪ নাযিলের সময় আয়েশা (রাঃ) কিশোরী ছিলেন= wikipedia ও WHO অনুসারে কমপক্ষে ধরি ১০ বছর বয়স (হিজরীপূর্ব ৫ সালে- ৬১৭ খৃঃ)
💨আয়েশার সাথে নবীর বিয়ে হয় ১ম হিজরীতে
সুতরাং হযরত আয়শা (রাঃ) র বিয়ের বয়স =
১০ বছর (কিশোর)+৫ বছর(হিজরীপূর্ব ৫ সালে)+১ বছর(১ম হিজরীতে বিয়ে)
=১০+৫+১
=১৬ বছর
দাম্পত্য জীবন শুরু হয় আরো ৩ বছর পরে (বুখারী ও মুসলিম শরীফের হাদীস অনুসারে)
= ১৬ বছর+৩ বছর=১৯ বছর।
এখানে একই সময়ে এক জনের ক্ষেত্রে 🕛
হাদীস ক). ও
হাদীস খ).
একসাথে সত্যি হতে পারে না(probability theory)। অর্থাৎ একই দিনে একজনের দাম্পত্য জীবন শুরুর বয়স ৯ বছর ও ১৯ বছর হতে পারে না।
একজনের ক্ষেত্রে যে কোন একটি বয়স হতে হবে। হয় ৯ বছর না হয় ১৯ বছর।
বিশ্লেষণ, হাদীস ক).ও খ). থেকে কোনটি গ্রহণযোগ্যঃ
পবিত্র কুরআনে যেটা বলা হবে সেটাই আমরা সত্য ধরে নিব। কারণ সহিহ হাদীসের কোন বিষয় বা রাসুল (সাঃ) এর জীনযাপন পদ্ধতি কোনভাবেই আল কুরআনের বক্তব্যের বিপরীত হতে পারেনা।
পবিত্র কুরআনে আছে,
📂 ” আর এতীমদের প্রতি বিশেষভাবে নজর রাখবে, যে পর্যন্ত না তারা বিয়ের বয়সে পৌঁছে। যদি তাদের মধ্যে বুদ্ধি-বিবেচনার উন্মেষ আঁচ করতে পার, তবে তাদের সম্পদ তাদের হাতে অর্পন করতে পার। এতীমের মাল প্রয়োজনাতিরিক্ত খরচ করো না বা তারা বড় হয়ে যাবে মনে করে তাড়াতাড়ি খেয়ে ফেলো না। যারা স্বচ্ছল তারা অবশ্যই এতীমের মাল খরচ করা থেকে বিরত থাকবে। আর যে অভাবগ্রস্ত সে সঙ্গত পরিমাণ খেতে পারে। যখন তাদের হাতে তাদের সম্পদ প্রত্যার্পণ কর, তখন সাক্ষী রাখবে। অবশ্য আল্লাহই হিসাব নেয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট। [সুরা নিসা: ৬]
📂 তোমরা কিরূপে তা গ্রহণ করতে পার, অথচ তোমাদের একজন অন্য জনের কাছে গমন কর এবং নারীরা তোমাদের কাছে থেকে সুদৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছে। [সুরা নিসা: ২১]
💨 উপরে উল্লিখিত দুটি আয়াত অনুসারে, নারীদের বিয়ে করার যোগ্য হতে হলে তাদের সর্বনিম্ন বয়স পৌঁছাতে হবে যেখানে
1.তিনি বোধ সম্পন্ন হবেন (উভয় শারীরিক এবং মানসিক) (4: 6)
2.তিনি নিজের আর্থিক, ব্যবসায়, সম্পত্তি ইত্যাদি বজায় রাখতে সক্ষম। (4: 6)
3.চুক্তি স্বাক্ষর করার ক্ষমতা (4:21)
তাই, বিবাহ যোগ্য নারীদের অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট বয়স পৌঁছতে হবে যেখানে সে নিজের সম্পত্তির যত্ন নিতে, সম্মতি দিতে এবং চুক্তি সাইন করতে সক্ষম পর্যায়ে পরিণত হয়।
এই বিষয়গুলি ৬ কেন ১২ বছরের মেয়ে দের দিয়েও সম্ভব নয় এবং এই ক্ষেত্রে
⏩হাদীস ক. ⏩
-প্রাধান্য পাওয়ার মত না।
⏩হাদীস খ. ⏩
– প্রাধান্য পেয়েছে ।
বুখারী শরীফের আরেকটি হাদীসে আছে,
📁 অধ্যায়/পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৩. বিয়ে করার যার সামর্থ্য নেই, সে সওম পালন করবে।
📝 হাদীস নংঃ৫০৬৬. ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) বলেন,নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে আমরা কতক যুবক ছিলাম; আর আমাদের কোন কিছুছিল না। এই হালতে আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হে যুব সম্প্রদায় ! তোমাদের মধ্যে যারা বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে, তারা যেন বিয়ে করে। কেননা, বিয়ে তার দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থান হিফাযত করে এবং যার বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, সে যেন সওম পালন করে। কেননা, সওম তার যৌনতাকে দমন করবে। [১৯০৫](আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৯৬)
এই হাদীসে কেবলমাত্র যুবক-যুবতীদের দ্রুত বিয়ে করতে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উৎসাহ দিলেন ।
সবকিছুর বিবেচনায় – –
হাদীস খ. ( আয়েশা রাঃ র দাম্পত্য জীবন শুরু হয় ১৯ বছর বয়সে।)
– – গ্রহনযোগ্য হবে।
হাদীস ক.
– – গ্রহনযোগ্যতা না পাবার কারণে ইমাম বুখারী (রহ) ও ইমাম মুসলিম (রহ.) কে দোষ দেয়া যাবে না কারণ তারা শতভাগ সহিহ হাদীস সংকলনের জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন, উপরের লেখায় আপনারা তার কিছুটা পড়েছেন। মহান আল্লাহ্ তাদেরকে এই অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য জান্নাতবাসী করুণ। আমিন।
💭 💭 💭 পরিশেষে আমরা সহজেই exploration method ১ থেকে বুঝতে পারলাম, সে সময় হযরত আয়শা (রাঃ) র দাম্পত্য জীবন শুরু ৯ বছর বয়সে, মর্মে তথ্যটি মস্তবড় এক ঐতিহাসিক ভ্রান্তি। পবিত্র কুরআন ও তাকে সাপোর্ট করা হাদীস খ. অনুসারে বলা যায়, আয়েশা রাঃ র দাম্পত্য জীবন শুরু হয় কমপক্ষে ১৯ বছর বয়সে ।
exploration method ২ঃ
📁নাফি’রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনু উমার রা. উহুদ যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য রাসূল সা. এর কাছে অনুমতি চাইলে রাসূল সা. তাঁকে অনুমতি দেননি। তখন তাঁর বয়স ছিল চৌদ্দ বছর। পরের বছর খন্দকের যুদ্ধে অংশ গ্রহণের জন্য অনুমতি চাইলে তাঁকে যুদ্ধে যাবার অনুমতি দেওয়া হয়। তখন তাঁর বয়স ছিল পনেরো বছর। রাবী নাফি রা. বলেন, এ ঘটনা শুনে খালীফা উমার ইবনু আবদিল আযীয রা. বললেন, এটাই হলো শিশু ও বয়স্কদের বয়সসীমা। (ইমাম, আস-সাহীহ, অধ্যায়- আল-ইমারাহ্, অনুচ্ছেদ : বায়ানু সিন্নিল বুলুগ, হা. নং : ৪৯৪৪)
নিচের হাদীসে দেখা যায়, উম্মু সুলাইম (রাঃ) ও হযরত আয়শা (রাঃ) এক সাথে উহুদের যুদ্ধে ছিলেন।
📁 অধ্যায়/পরিচ্ছেদঃ ৫৬/৬৫. নারীদের যুদ্ধে গমন এবং পুরুষদের সঙ্গে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ
📝 হাদীস নংঃ২৮৮০. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, উহুদের যুদ্ধে সহাবীগণ নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেন। আমি দেখলাম, ‘আয়িশাহ বিন্তে আবূ বাকর ও উম্মু সুলাইম (রাঃ) তাঁদের অাঁচল এতটুকু উঠিয়ে নিয়েছেন যে, আমি তাঁদের উভয় পায়ের গহনা দেখছিলাম। তাঁরা উভয়েই মশক পিঠে বয়ে সহাবীগণের মুখে পানি ঢেলে দিচ্ছিলেন। আবার ফিরে গিয়ে মশ্ক ভর্তি করে নিয়ে এসে সহাবীগণের মুখে পানি ঢেলে দিচ্ছিলেন। (২৯০২, ৩৮১১, ৪০৬৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৬৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৬৭৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih) বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) পুনঃনিরীক্ষণঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ) ৫৬/ জিহাদ ও যুদ্ধকালীন আচার ব্যবহার (كتاب الجهاد والسير)
📁 অধ্যায়/পরিচ্ছেদঃ ২২. মহিলাদের যুদ্ধে অংশগ্রহণ
📝 হাদীস নংঃ১৫৭৫। আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, উম্মু সুলাইম (রাঃ) ও তার সাথের আনসার মহিলাদের নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতেন। যুদ্ধক্ষেত্রে তারা পানি পান করাতেন এবং আহতদের জখমে ঔষধ লাগিয়ে দিতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) পুনঃনিরীক্ষণঃ সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ১৯/ যুদ্ধাভিযান (كتاب السير عن رسول الله ﷺ)
সুতরাং উপরের তথ্য থেকে পাওয়া যায় হযরত আয়শা (রাঃ) ওহুদের যুদ্ধে নবীর সফরসঙ্গী ছিলেন। ওহুদের যুদ্ধে (৬২৫খ্রি) ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে ১৫ বছরের নিচে কাউকে যুদ্ধে নেয়া হয় নি। এর অর্থ দাড়ায় হযরত আয়শা (রাঃ) র বয়স ওহুদের যুদ্ধে (৬২৫খ্রি) ১৫ বছরের বেশি ছিল অর্থাৎ ১৬ বছর (কমপক্ষে)
আর ১ম হিজরীতে বা ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে আয়শা (রাঃ) র বিয়ে হয়। (১ম হিজরী = ৬২২ খ্রিষ্টাব্দ)
সুতরাং
৬২৫ খ্রিষ্টাব্দে=১৬ বছর(কমপক্ষে) হলে,
৬২২ খ্রিষ্টাব্দে=১৩ বছর(কমপক্ষে) হয়।
এই হিসাবে আয়শা (রাঃ) র বিয়ের সময় বয়স হয়
=১৩ বছর(কমপক্ষে)
দাম্পত্য জীবন আরো ৩ বছর পরে শুরু হলে বয়স হয়
= ১৩ বছর+৩ বছর
= ১৬ বছর(কমপক্ষে)
💭 💭 💭 পরিশেষে এই exploration method ২ থেকে এটাই বুঝা যায় , সে সময় যে হযরত আয়শা (রাঃ) র দাম্পত্য জীবন শুরু ৯ বছর বয়সে ছিল না, তা বলাই বাহুল্য।
exploration method ৩ঃ
আসমা বিনতে আবি বকর ছিলেন প্রথম খলিফা আবু বকরের কন্যা। আয়শা (রাঃ) তার সৎ বোন ছিলেন। আসমা বিনতে আবি বকর, আয়শা রাঃ থেকে ১০ বছরের বড় ছিলেন। আসমা বিনতে আবি বকর ৫৯৫ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
যাচাইঃ (For Asma being 10 years older than Ayesha, see A`la’ma’l-nubala’, Al-Zahabi, Vol 2, Pg 289, Arabic, Mu’assasatu’l-risalah, Beirut, 1992. Ibn Kathir confirms this fact, [Asma] was elder to her sister [Ayesha] by ten years” (Al-Bidayah wa’l-nihayah, Ibn Kathir, Vol 8, Pg 371, Arabic, Dar al-fikr al-`arabi, Al-jizah, 1933)
check in wikipedia to family
source:
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Asm%C4%81%27_bint_Abi_Bakr
যেহেতু আসমা বিনতে আবি বকর, আয়শা রাঃ থেকে ১০ বছরের বড় ছিলেন ও আসমা বিনতে আবি বকর ৫৯৫ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন সেহেতু তথ্য মতে আয়শা রাঃ র জন্মগ্রহণ (৫৯৫+১০)=৬০৫ খ্রিষ্টাব্দে হওয়ার কথা। (বাংলা উইকিপিডিয়াতে নির্দিষ্ট করে জন্ম সাল বলা নেই এবং আনুমানিক কথাটি উল্লেখ করা হয়েছে , বলা হয়েছে আনুমানিক ৬১৩/৬১৪ খ্রিষ্টাব্দে আয়শা রাঃ জন্মগ্রহণ করেন।)
আর ১ম হিজরীতে বা ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে আয়শা (রাঃ) র বিয়ে হয়। (১ হিজরী = ৬২২ খ্রিষ্টাব্দ)
সুতরাং হযরত আয়শা (রাঃ) র বিয়ের বয়স
= ৬২২ খ্রিষ্টাব্দ – ৬০৫ খ্রিষ্টাব্দ
=১৭ বছর।
দাম্পত্য জীবন আরো ৩ বছর পরে শুরু হলে বয়স হয় (বুখারী ও মুসলিম শরীফের হাদীস অনুসারে)
= ১৭ বছর+৩ বছর
= ২০ বছর
💭 💭 💭 তাই আমরা সহজেই exploration method ৩ থেকে বুঝতে পারলাম, আয়শা (রাঃ) র দাম্পত্য জীবন শুরু হয় ২০ বছর বয়সের কাছাকাছি কোন এক বয়সে।
🌿🌿 পরিশেষে বলা যায় যে, বিয়ের সময় হযরত মা আয়েশা (রা)-এর দাম্পত্য জীবন শুরু ৯ বছর বয়সে, তথ্যটি মস্তবড় এক ঐতিহাসিক ভ্রান্তি এবং কখনোই মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) শিশু ধর্ষক বা শিশু কামী ছিলেন না।
প্রশ্নঃ রবীন্দ্রনাথ ও বাল্য বিবাহ করেছেন তাহলে কি আমরা রবীন্দ্রনাথ কেও মহাম্মদ (সা:) এর মতো ধর্ষক বলবো এবং আমদাের পূর্বপুরুষদেরো কি বলবো?
উত্তরঃ জ্বি বাল্যবিবাহের আইননুযায়ী রবীন্দ্রনাথ এবং আমাদের পূর্বপুরুষ যারা বাল্য বিবাহ করেছেন তিনারা সবাই ধর্ষকের সংগাতেই পরবেন
প্রশ্নঃ তাহলে আপনরা রবীন্দ্রনাথ কে ধর্ষক বলেন না কিন্তু নবী মহাম্মদকে শুধু কেনো বলেন?
উত্তরঃ নবী মহাম্মদকে ধর্ষক বলার অনেক কারণ উনি রেখে গেছেন কিন্তু বাল্য বিবাহ তাকে নাকি স্রষ্টা করতে বলেছেন তার এই দাবির কারণে তাকে আমরা ১মে ভন্ড বলি তারপর ধর্ষক বলি।
ব্যাখ্যাঃ পৃথিবীর কোনো ডাক্তার কি বাল্য বিবাহের পক্ষে কথা বলবেন?
উত্তরঃ না৷ কিন্তু মহাম্মদের দাবিনুযায়ী পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ডাক্তার আল্লা নাকি তাকে এবং মণুষ্যজাতিকে বাল্য বিবাহ করতে বলেছেন! এটা সম্ভব? উত্তর: না, এই দাবিটাই ভন্ডামি দাবি৷ তাই মহাম্মদো ভন্ড প্রমানিত হয়।
এবার আসি রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গে: আমার ১ম প্রশ্ন রবীবদ্রনাথ কি দাবি করেছিলেন তাকে সবশ্রেষ্ঠ ডাক্তার বাল্য বিবাহ করতে বলেছে?
আমার ২য় প্রশ্নঃ রবীন্দ্রনাথের সময় চিকিৎসা বিজ্ঞান কি এতো উন্নত ছিলো যেখানে বাল্য বিবাহের কুফল নিয়ে কাজ হয়েছে?
উত্তরঃ না। রবীনদ্রনাথ এবং আমাদের পূর্বপু রুষরা জাস্ট অজ্ঞাতবশত ভুল করেছেন এবং আমার বিশ্বাস যদি রবীন্দ্রনাথ বাল্য বিবাহের কুফল জানতেন তবে তিনি নিজে বাল্য বিবাহ করতেন না এবং কাউকে করার উৎসাহ দিয়ে যেতেন না এই কারণে আমরা রবীন্দ্রনাথকে এবং আমাদের পূবপুরুষকে ভন্ড বলি না কিন্তু মহাম্মদের ধূর্ততার জন্য মহাম্মদকে ভন্ড বলি।
প্রশ্নঃ আয়শা কি তার বিবাহিত জীবন নিয়ে অভিযোগ করে গেছেন? তবে আপনারা এতো লাফান কেনো?
উত্তরঃ একজন মাদ্রাসার বাচ্চা যদি তার হুজুর কর্তীক ধর্ষিত হবার পর ভয়ে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মুখ খুলতে না পারে তবে কি সেই ধর্ষণ নৈতিক হয়ে যায়? উত্তরঃ আয়শা অভিযোগ করেন নি তার অর্থ এটাতো নয় বাল্য বিবাহ নৈতিক হয়ে যায়৷ আমাদের বাল্য বিবাহের কুফল দেখতে হবে কোনো ভডের ভন্ডামি নয়।
*আয়শাকেতো এই লাইফেই অভ্যস্ত হতে বাধ্য করা হয়েছে তাকে তো বেটার লাইফ দেওয়াই হয় নি । তখোনকার সেই সামাজিক সেস্টেমটাইতো খারাপ ছিলো তাই এই প্রশ্ন করাই অনর্থক।
*আয়শা যদি মহাম্মদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেও চাইতেন তবেও কি এটা তার জন্য সহজ ছিলো? উত্তরঃ না। মহাম্মদ কি তার সমালোচনাকারীদের গুপ্ত ঘাতক পাঠিয়ে হত্যা করতো না? উত্তর করতো৷
নিচের এই ব্লকটি পরলে, আশা করি ইসলামে বাল্যবিবাহ সম্পর্কে কি বলা হয়েছে তা সবাই বুঝতে পারবেন.
✅️ N.B: তথ্যসূত্র অনুসারে মা আয়েশার বাল্যকালে বিবাহ হয় নাই.
Source:
https://antinastik.blogspot.com/2020/06/blog-post.html?m=1
lol all i see is an atheist going “wa wa wa”