ইসলামে বৈবাহিক ধর্ষণের বৈধতা
ভূমিকা
বাঙলাদেশের অধিকাংশ নারী বা পুরুষের ‘ বৈবাহিক ধর্ষণ ‘ সম্পর্কে কোন ধারনা নেই। কিন্তু বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণকে জাতিসংঘ ভয়াবহ ধরনের পারিবারিক সহিংসতা বলে মনে করে। এটা এক ধরনের যৌন উৎপীড়নও বটে। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন সমাজে এটা ‘ধর্ষণ’ হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু এখনো অনেক দেশেই এটাকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনাই করা হয়না, অথবা হলেও ‘সহ্য করে নেয়ার’ প্রবনতা দেখা যায়।
বৈবাহিক ধর্ষণ কি?
সহজ কথায়, স্বামী বা স্ত্রীর অসম্মতিতে তার সাথে সঙ্গীর জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ক স্থাপনকেই বৈবাহিক ধর্ষণ বলে। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ নারী বৈবাহিক ধর্ষণের শিকার হলেও বেশিরভাগ নারীই জানেনা যে এটা একধরনের যৌন নির্যাতন। যা খুবই দু:খজনক। এমনকি ইসলামেও স্বামী কর্তৃক স্ত্রী ধর্ষণকে পরোক্ষভাবে সমর্থন দেওয়া হয়েছে।
ইসলামে বৈবাহিক ধর্ষণ
এ বিষয়ে কয়েকটি সহীহ হাদীস:
গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ১৭। বিবাহ (كتاب النكاح)
হাদিস নম্বরঃ ৩৪৩৩
২০. স্বামীর বিছানা পরিহার করা স্ত্রীর জন্য নিষিদ্ধ
৩৪৩৩-(১২২/…) আবূ বাকর ইবনু শায়বাহ, আবূ কুরায়ব, আবূ সাঈদ আল আশাজ্জ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহিমাহুমুল্লাহ) ….. আবূ হুরায়রাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ স্বামী যখন স্ত্রীকে বিছানায় আহবান করে এবং সে না আসায় তার স্বামী তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে রাত্রি যাপন করে, সে স্ত্রীর প্রতি ফেরেশতাগণ ভোর হওয়া পর্যন্ত লা’নাত করতে থাকে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৪০৬, ইসলামীক সেন্টার ৩৪০৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ১৭। বিবাহ (كتاب النكاح)
হাদিস নম্বরঃ ৩৪৩২
২০. স্বামীর বিছানা পরিহার করা স্ত্রীর জন্য নিষিদ্ধ
৩৪৩২-(১২১/…) ইবনু আবূ উমার (রহঃ) ….. আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কসম সে সত্তার যার হাতে আমার জীবন। কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে যখন বিছানায় আহ্বান করে, কিন্তু সে তা অস্বীকার করে, নিঃসন্দেহে যে পর্যন্ত সে তার স্ত্রীর প্রতি সন্তুষ্টি না হয়, ততক্ষণ আসমানবাসী তার প্রতি অসন্তুষ্ট থাকে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৪০৫, ইসলামীক সেন্টার ৩৪০৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
গ্রন্থঃ মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
অধ্যায়ঃ পর্ব-১৩ঃ বিবাহ (كتاب النكاح)
হাদিস নাম্বার: 3257
৩২৫৭-(২০) ত্বলক্ব ইবনু ‘আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো স্বামী নিজ প্রয়োজনে স্বীয় স্ত্রীকে ডাকলে, সে যেন তৎক্ষণাৎ তার ডাকে সাড়া দেয়, যদিও সে চুলার পাশে (গৃহকর্মীর কাজে) ব্যস্ত থাকে। (তিরমিযী)(1)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
হাদীসগুলো থেকে এটা পরিষ্কার যে কোন অবস্থাতেই স্ত্রী তার স্বামীর বিছানা পরিহার করতে পারবেনা। বিছানা পরিহার করলে সে সারা রাত ফেরেশতাদের দ্বারা অভিশপ্ত হতে থাকবে। দৈব অভিশাপের ভয় দেখিয়ে স্ত্রীকে তার স্বামীর শয্যা গ্রহন করতে বাধ্য করা হয়। আবার কোরানে অবাধ্য স্ত্রীকে প্রহারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
4:34
الرِّجَالُ قَوّٰمُونَ عَلَى النِّسَآءِ بِمَا فَضَّلَ اللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلٰى بَعْضٍ وَبِمَآ أَنفَقُوا مِنْ أَمْوٰلِهِمْ ۚ فَالصّٰلِحٰتُ قٰنِتٰتٌ حٰفِظٰتٌ لِّلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللَّهُ ۚ وَالّٰتِى تَخَافُونَ نُشُوزَهُنَّ فَعِظُوهُنَّ وَاهْجُرُوهُنَّ فِى الْمَضَاجِعِ وَاضْرِبُوهُنَّ ۖ فَإِنْ أَطَعْنَكُمْ فَلَا تَبْغُوا عَلَيْهِنَّ سَبِيلًا ۗ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيًّا كَبِيرًا
Bengali – Mujibur Rahman
পুরুষেরা নারীদের উপর তত্ত্বাবধানকারী ও ভরণপোষণকারী, যেহেতু আল্লাহ তাদের মধ্যে একের উপর অপরকে বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এই হেতু যে, তারা স্বীয় ধন সম্পদ হতে তাদের জন্য ব্যয় করে থাকে; সুতরাং যে সমস্ত নারী পুণ্যবতী তারা আনুগত্য করে, আল্লাহর সংরক্ষিত প্রচ্ছন্ন বিষয় সংরক্ষণ করে; যদি নারীদের অবাধ্যতার আশংকা হয় তাহলে তাদেরকে সদুপদেশ প্রদান কর, তাদেরকে শয্যা হতে পৃথক কর এবং তাদেরকে প্রহার কর; অনন্তর যদি তারা তোমাদের অনুগত হয় তাহলে তাদের জন্য অন্য পন্থা অবলম্বন করনা; নিশ্চয়ই আল্লাহ সমুন্নত, মহা মহীয়ান।
হযরত আয়শা হতে বর্ণিত, তিনি (মুহাম্মদ) আমাকে বুকের ওপর আঘাত করলেন যা আমাকে ব্যথা দিল। (সহি মুসলিম, বই -৪, হাদিস -২১২৭)
স্ত্রীকে কেন প্রহার করা হলো সে বিষয়ে শেষ বিচারের দিন তাকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করা হবে না। (আবু দাউদ , বই নং- ১১, হাদিস -২১৪২)
গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫৪/ বিয়ে-শাদী (كتاب النكاح)
হাদিস নম্বরঃ ৪৮২৫
২৫১৭. স্ত্রীদের প্রহার করা নিন্দনীয় কাজ এবং আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ (প্রয়োজনে) তাদেরকে মৃদু প্রহার কর
৪৮২৫। মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু যাম’আ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা কেউ নিজ স্ত্রীদেরকে গোলামের মতো প্রহার করো না। কেননা, দিনের শেষে তার সাথে তো মিলিত হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
উপরের আয়াত এবং হাদিস সমূহ থেকে এটা স্পষ্ট হয় যে, স্ত্রী কোনভাবেই স্বামীর শয্যা ত্যাগ করতে পারবেনা। অর্থাৎ, স্ত্রীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে হলেও স্বামীকে সন্তুষ্ট করতে হবে। স্ত্রীর সম্মতির কোন প্রয়োজনই নেই। এছাড়াও যদি কোন কারণে স্ত্রী অবাধ্য হয় তাহলে তাকে প্রহারের অনুমতিও আছে। এবং রাতে যৌনক্রিয়া সম্পন্ন করতে যেন সমস্যা না হয় এ জন্য স্ত্রীকে মৃদু প্রহারের কথা বলা হয়েছে। যা স্পষ্টতই বৈবাহিক ধর্ষণ এবং নারী নির্যাতনের মত গুরুতর অপরাধকে সমর্থন বোঝায়।
গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ১৭। বিবাহ (كتاب النكاح)
হাদিস নম্বরঃ ৩৩০০
২. কোন মহিলাকে দেখে কোন পুরুষের মনে যৌন কামনা জাগ্রত হলে সে যেন তার স্ত্রীর সাথে অথবা ক্রীতদাসীর সাথে গিয়ে মিলিত হয়
৩৩০০-(১০/…) সালামাহ্ ইবনু শাবীব (রহঃ) ….. জাবির (রাযিঃ) বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ তোমাদের কারো যদি কোন স্ত্রীলোক দেখে মনে কিছু উদয় হয় তখন সে যেন তার স্ত্রীর নিকট আসে এবং তার সাথে মিলিত করে। এতে তার মনে যা আছে তা দূর করে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩২৭৫, ইসলামীক সেন্টার ৩২৭৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ১৭। বিবাহ (كتاب النكاح)
হাদিস নম্বরঃ ৩২৯৮
২. কোন মহিলাকে দেখে কোন পুরুষের মনে যৌন কামনা জাগ্রত হলে সে যেন তার স্ত্রীর সাথে অথবা ক্রীতদাসীর সাথে গিয়ে মিলিত হয়
৩২৯৮-(৯/১৪০৩) আমর ইবনু আলী (রহঃ) ….. জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মহিলাকে দেখলেন। তখন তিনি তার স্ত্রী যায়নাব এর নিকট আসলেন। তিনি তখন তার একটি চামড়া পাকা করায় ব্যস্ত ছিলেন এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের প্রয়োজন পূরণ করলেন। অতঃপর বের হয়ে সাহাবীগণের নিকট এসে তিনি বললেনঃ স্ত্রীলোক সামনে আসে শয়ত্বানের বেশে এবং ফিরে যায় শায়ত্বানের বেশে। অতএব তোমাদের কেউ কোন স্ত্রীলোক দেখতে পেলে সে যেন তার স্ত্রীর নিকট আসে। কারণ তা তার মনের ভেতর যা রয়েছে তা দূর করে দেয়।* (ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ৩২৭৩, ইসলামীক সেন্টার ৩২৭১)
* স্ত্রীলোকের শয়তানের আকৃতিতে আসার অর্থ হল, কৃপ্রবৃত্তিকে উস্কে দেয় ও যিনার প্রতি উৎসাহিত করে এবং যিনা তথা স্ত্রী সহবাস করার আস্বাদকে স্মরণ করে দেয় যা শায়ত্বানী প্রভাব। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
ইসলামের ইতিহাসে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মুসলিম দার্শনিক ইমাম আবু হামেদ মুহাম্মদ ইবনে মুহাম্মদ আল-গাযযালী রচিত ‘এহইয়াউ উলুমিদ্দীন’ বিগত আট শতাধিক বছর ধরে সমগ্র মুসলিম জাহানে সর্বাধিক পঠিত একটি মহাগ্রন্থ। এই গ্রন্থের ‘স্ত্রীর উপর স্বামীর হক’ অংশটি থেকে স্পষ্ট হয় স্ত্রী কোন অবস্থায় সহবাস করতে অস্বীকৃতি জানাতে পারবেনা। এখানে নির্বাচিত অংশ দেয়া হল। এই অধ্যায় পুরোটা পড়ুন এখানে।
এগুলো থেকেই প্রমানিত হয়, ইসলামে যৌনসম্পর্ক স্থাপনের জন্য স্ত্রীর অনুমতির কোন প্রয়োজন নেই। স্বামীর ইচ্ছাই চূড়ান্ত। স্ত্রীর ইচ্ছা বা অনিচ্ছার কোন মূল্যই নেই। যা সুস্পষ্ট ভাবেই বৈবাহিক ধর্ষণের বৈধতা দেয়। স্ত্রী যেই অবস্থায়ই থাকুক না কেন স্বামীর ইচ্ছা পূরন করতে সে বাধ্য।
বাঙলাদেশে বৈবাহিক ধর্ষণ
বাঙলাদেশের আইনেও বৈবাহিক সম্পর্কের ভেতর ধর্ষণ বিষয়টি কোন অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত নয়। একটি জরিপে দেখা গেছে বেশিরভাগ বিবাহিত নারীরাই ব্যাপারটি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা রাখেনা অথবা এ ব্যাপারে কথা বলতে আগ্রহী নয়। অনেক নারী মনে করে যৌনমিলনের সময় স্ত্রীর মতামতের কোন প্রয়োজন নেই। জীবনে এক বা একাধিকবার বৈবাহিক ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এমন নারীর সংখ্যা ৯০ ভাগের বেশি। তবে এর চেয়েও বড় কথা বৈবাহিক ধর্ষণ সম্পর্কে অধিকাংশ নারীর ধারণা নেই।
আবার একই সাথে বাল্যবিবাহের প্রকোপও বাংলাদেশে বেশি। সরকারি হিসাবেই ৪৭% মেয়ের ১৮ বছরের নিচে বিয়ে হয়। এরা এমনিতেই প্রবল স্বাস্থ্যঝুকিতে থাকে। বৈবাহিক ধর্ষণ তাতে নতুন মাত্রা যোগ করে। বাংলাদেশে নারী অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন যাবত বিষয়টিকে পারিবারিক সহিংসতা হিসেবে স্বীকৃতির জন্যে আন্দোলন করেছে। সোর্স: বিবিসি.কম।
এছাড়াও বেশিরভাগ পুরুষের ধারনা স্ত্রীর সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপনের জন্য তার অনুমতির প্রয়োজন নেই। বিভিন্ন ওয়াজে, মাদ্রাসায় নারীদের প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানোর কারনে দেশের অশিক্ষিত পুরুষ সমাজের কাছে ‘স্ত্রীর সম্মতি’ বিষয়টা গুরুত্বহীনই থেকে গেছে।
ধর্ষণের প্রচুর খবর প্রতিদিন আমাদের সামনে আসে। কিন্তু প্রতিরাতে স্বামীর কাছে ধর্ষিত হওয়ার খবরগুলো চাপাই থেকে যায়। ধর্ষণের শিকার মেয়েটি কোন উপায় না পেয়ে একসময় হয়ত বেছে নিতে পারে আত্মহত্যার পথ। তাই সরকারের উচিত অবিলম্বে নতুন আইন প্রণয়ন করা এবং নারী-পুরুষ সকলকেই আইনটি সম্পর্কে সচেতন করা। ধন্যবাদ।
ধর্ষণ শুধু পুরুষেরা করে ? সঙ্গমের সুখের অনুভূতি শুধু পুরুষের, পুরুষরা শুধু নারীর আহবানে সাড়া দিলে দোষমুক্ত। প্রকৃতির খাদ্যশৃঙ্খল দিকে তাকিয়ে দেখুন হরিণ কে হত্যা করে বাঘ বেঁচে থাকে এখন আপনার মনে হরির প্রতি সহনশীলতা প্রকাশ ফেলে বাঘের প্রতি তা অবিচার. বৈবাহিক জীবনে ধর্ষণ থাকবে অবৈবাহিক জীবনের সাথে পার্থক্য কি ? উভয় পক্ষের সন্তুষ্টি আপনি কোন ক্ষেত্রে পাবেন না হোক সেটা চাকরি কি ব্যবসা। বিবাহ একটা কমিটমেন্ট তার ভিতরে সেক্রিফাইস থাকতে হবে. এছাড়া আপনি সমতা কিভাবে করেন?
স্ত্রী কখন হরিণ না স্বামী কখনও বাঘ না। বিয়ে কোনো ব্যবসা না। ইসলাম এমন একটি ধর্ম যেখানে স্বামীর প্রয়োজন মিটাতে স্ত্রী বাধ্য সে স্ত্রীর মনে চাক বা না চাক। কিন্তু যদি এমন হয় যে স্ত্রীর প্রয়োজনে স্ত্রী স্বামীকে ডেকেছে তাহলে স্বামী স্ত্রীর চাহিদা মিটাবে কিনা তা সম্পূর্ণ স্বামী ইচ্ছা। এখানে স্বামী যদি স্ত্রীর চাহিদা না মিটায় তাহলে তার কোনো পাপ হবে না। কিন্তু স্ত্রী যদি স্বামীর চাহিদা নি মিটায় তাহলে সে ইসলাম ধর্ম মতে পাপী বলে গণ্য এবং আল্লাহর কাছে তাকে জবাব দিহি করতে হবে। তাহলে ব্যাপারটা দাড়ালো স্বামী যখন ইচ্ছা তখনই স্ত্রীর মাধ্যমে নিজের চাহিদা পূরণ করতে পারবে, কিন্তু স্ত্রী যখন ইচ্ছা তখন নিজের চাহিদা পূরণ করতে পারবে না। এ কেমন অবিচার
হাদিসের বক্তব্য সব ডাহা মিথ্যা। অসার, অশ্লীল, অপ্রয়োজনীয় কথায় ভরপুর। ওগুলো ওহি (কুরআন) নাযিলের সময়কালে রাসুল ও ওহির বিরুদ্ধাচারনকারীদের উত্তরসূরীদের হাতে রচিত। প্রধান রচয়িতা কথিত ইমাম বুখারী মক্কা হতে ৪২৪৯ কিলো মিটার দূরে জবেকিস্তানের বুখারা নগরীতে জন্ম গ্রহন করেন ৮১০ খ্রিষ্টাব্দে রাসুল মুহাম্মদ ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে মারা যান। রাসুলের মৃত্যুর,১৭৪ বছর পরে জন্ম নিয়ে বুখারী ও আরো অনেক পরে জন্ম নিয়ে মোসলেম, দাউদ তিরমিযি, নাসায়ী, মাজাহরা এই সব রচনা করে কুরআনকে প্রকারান্তরে আঁড়াল ও অকার্যকর করেছে। কথায় কথায় বস্তা বস্তা সওয়াব, নেকীর লোভে মানুষ পরোপকারী না হয়ে হয়েছে স্বার্থপর। সমাজ হয়েছে বিবর্ণ।।
Kazi shameem সাহেব
¤ ইমাম বুখারির জন্ম মহানবীর মৃত্যুর ১৭৪ বছর পর। আর আপনার জন্ম নবীর মৃত্যুর ১৪০০ বছর পর। এবার আপনি বলুন আমি আপনার মতো আহাম্মকের বলা গাজাখুরি কথা শুনব নাকি সেই প্রচীন আমলের ইসলাম বিষয়ক পড়ালেখা করা ( রীতিমত সাধনা করা) আলেমদের কথা শুনবো?
¤আবার যদি ধরে নেই এই সব প্রচীণ আমলের আলেমরা ভুল তাহলে কোরানের সত্যতা নিয়ে বড় প্রশ্ন থেকে যায়। কারণ সম্পূর্ণ কোরান আমরা পেয়েছি এই সব আলেমদের দ্বারা তাহলে আপনার কথা অনুযায়ী কোরানকেই ছুড়ে ফেলে দিতে হয়।
¤আর হ্যা আরো একটা কথা। সময় পেলে shongshoy.com এর “হাদীস না মেনে শুধু কোরান মানা” নামক লেখাটি পড়বেন।
কুর”আন এবং হাদিসের কোথাও এটা নেই যে স্ত্রীকে জোর পূর্বক সহবাসে বাধ্য করা যাবে। শালা ইহুদিদের দালাল ইসলামে নারীর অধিকার পুরুষের চেয়েও বেশি। খানকির পোলা, তুই যেইসব প্রমাণ দিয়েছিস এগুলা কাটছাঁট করে দিয়েছিস। কোন স্বামী স্ত্রীকে বাধ্য করতে পারবে না সহবাসের জন্য যদি স্ত্রীর সহবাস না করার যুক্তি সঙ্গত কারণ থাকে। না জেনে চিল্লাইস না। তোরে পাইলে তো কোপাইতাম শালা বেজন্মা…!
Mynuddin joy
https://www.shongshoy.com/archives/13370 (কোন স্ত্রী যদি স্বামীর সাথে sex করতে না চায় তাহলে স্বামী অবশ্যই স্ত্রীকে মারধর করতে পারবে, এটা কি জোর জবরদস্তি হলো না?)
https://www.shongshoy.com/archives/13850 ( যেখানে দাসির সাথে sex করতে বাধা দিলে স্বামী মারার অধিকার রাখে)
এই হাদিস গুলা যে মানবে সে নিশ্চয় ঈমানী ব্যাক্তি তাই না? ইমানের জোড়েই তো সে এগুলা বলবে হাহা, তাই না? আচ্ছা এবার এই হাদিসটা দেখিঃ
“”
আব্দুল্লাহ বিন আম্র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে উত্তম লোক তারাই, যারা তাদের স্ত্রীদের কাছে উত্তম।
[সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং: ১৯৭৮]
“”
কোন স্বামী যদি তার স্ত্রীর উপর অন্যায় ভাবে কিছু করে থাকে তাহলে তো সে ইমানী ব্যাক্তিই না ইন দ্যা ফার্স্ট প্লেস। তো লিগাল ডমিনেশনের লেভেল টা কেমন? আচ্ছা খুব ভাল দ্বীনদার কোন স্ত্রী কখনই এমন কিছুই করে না বা করার নেই ই, যেটা তার দ্বিনী স্বামীর কাছে অবাধ্যতা মনে হতে পারে। দ্বীনি ব্যাক্তি হয়ে সম্ভব না দ্বীনি আরেকজন মানুষের (সে মহিলা হোক বা পুরুষ) উপর অযৌক্তিক কিছু চাপায়ে দিতে, দিলে তো সে ভাল মুসলিমই না ইন দ্যা ফার্স্ট প্লেস। স্ত্রীদের অবাধ্যতা বলতে-
১. ইসলামে যেটা নর্মালি মুসলিমদের (নারী পুরুষ সবার) উপর আদেশ নিষেধ দেয়া আছে সেটা যদি সে পালন না করে, যেমন নামাজ না পড়া, গিবত করা, সুদ খাওয়া, ইভেন অন্য কোন মেয়ের প্রতি হিংসা করা ইত্যাদি,
অথবা,
২. নারীদের জন্য স্পেসিফিক নির্দেশ গুলা না মানা যেমন স্বামীর সকল আদেশ নিষেধ মানা (যদি স্বামী দ্বীনি হয়), পর্দা করা ইত্যাদি।
একটু বিস্তারিত বলিঃ
১. নং পয়েন্টে, দেখেন স্বামীর নিজেকেই কত কষ্ট করে নিজেকে সামলাতে হচ্ছে (সবকিছু মেনে চলা কিন্তু এতটাও সহজ না তবুও কিন্তু মেনে চলতেই হয়, পাশ দিয়ে একটা মেয়ে গেলে তাকাতে মন চাইলেও মনকে তা না দেয়া এতটা সহজ না(স্পেশালি যখন সে গত দীর্ঘ বছরে অন্য কারো দিকে তাকায় নাই, সেই একই কারণে যেটার জন্য আজও তাকালো না)। এই নিজেকে ঠিক রাখা কেন? আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। এত কিছু করেও সে জাহান্নামে যেতে পারে। কেন? তার স্ত্রীর জন্য। কারণ ইসলামিক ভাবে স্ত্রীর খারাপ কর্মের ফল স্বামীকেও শাস্তি পেতে হবে। এই যে একটা গুরুদায়িত্ব এটা কতটা কঠিন তা বুঝতে পারছেন? নিজেকে চাইলেই নিজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায় কিন্তু আরেকজনকে? আচ্ছা বাদ দেন..
২. মাইর দেয়ার অধিকার পাওয়াটা কি পুরুষের জন্য পজিটিভ? কিভাবে ভাই? আরেকজন কে শাসন করতে কার ভাল্লাগে? এটলিস্ট একজন প্রকৃত মুসলিমের ভাল লাগাবে না, যে কিনা সারাজীবন মানুষের সাথে সবচেয়ে ভাল ব্যাবহারটা কিভাবে করতে হয় সেটাই শিখে এসেছে, মানব জাতির কল্যাণ কিভাবে করা সম্ভব সেটাই ভেবে এসেছে, সবচেয়ে বেশি সেবা তার মাকে দিতে শিখেছে, হয়ত তার মা খুশি হয়ে আরো ভাল মানুষ হওয়ার জন্য দোয়া করে দিয়েছে, তার বোনদের বা অন্য যে কোন মেয়ের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ পরিবার থেকে পেয়ে এসেছে। এগুলা সবই ইসলামের কোর মূল্যবোধ।
আল্লাহ যদি সুযোগ দিত যে তোমার স্ত্রীর কৃতকর্মের জন্য তোমাকে ধরা হবে না কিন্তু তুমি শাসন করতে পারবা না। প্রকৃত মুমিন সবাই (হয়ত) এটাই নিত। পর্দা না করলে স্বামীর কি? স্বামী জান্নাত চায় জাস্ট আর কিচ্ছু না। কিন্তু এজন্য তাকে তার স্ত্রীর হিসাবও করতে হবে এখানে স্বামীর ইচ্ছা অনিচ্ছার কোন দাম নাই, শাসন করে হলেও করতে হবে।
আপনাদের লিখা নিচের এটা নিছক মিথ্যা এরকম হাদিস নাইঃ-
“স্ত্রীকে কেন প্রহার করা হলো সে বিষয়ে শেষ বিচারের দিন তাকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করা হবে না। [আবু দাউদ , বই নং- ১১, হাদিস -২১৪২]”
এটার লিংক দেন নাই কেন?