ইসলামে স্বাধীন ইচ্ছা এবং নিয়তি
ভূমিকা
ইসলাম অনুযায়ী, মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা বলে কি কিছু আছে? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি কি হবে সেটা বুঝতে হলে আমাদের আগে জানতে হবে ইসলামিক বিশ্বাস অনুযায়ী আল্লাহ চরিত্রটি কেমন।
বিশ্লেষণ
নিচে উল্লেখিত বর্ণনা সমূহ আল্লাহ্ এবং তার চরিত্র বিষয়ক কিছু ইসলামিক বিশ্বাস:
- আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ
- আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত কিছু ঘটে না
- আল্লাহর নিজেরও স্বাধীন ইচ্ছা আছে
- আল্লাহ্ কোনো ভুল করতে পারেন না
যেহেতু আল্লাহ্ সর্বজ্ঞানী বা তিনি সবকিছুই জানেন বা কোনোকিছুই তার জ্ঞানের বাইরে নেই, সেহেতু কখন কার জীবনে কি ঘটবে, কে কেমন কাজ করবে, কার পরিণতি কি হবে, সেসব তিনি তাদের জন্মের আগে থেকেই জানেন।
যেহেতু আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত কিছুই ঘটে না বা সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছাতেই হয় সেহেতু কে কখন কি করবে, কার সাথে কখন কি হবে তার সবটাই আল্লাহর ইচ্ছাতেই হয়। যিনি খারাপ কাজ করেন তিনি আল্লাহর ইচ্ছার কারণেই খারাপ কাজ করেন, যিনি ভালো কাজ করেন তিনি আল্লাহর ইচ্ছার কারণেই ভালো কাজ করেন।
যেহেতু আল্লাহর স্বাধীন ইচ্ছা আছে, সেহেতু তার স্বাধীন ইচ্ছা আছে কাউকে সৃষ্টি করার বা না করার।
তাই মানুষ সৃষ্টি করার সময়ে আল্লাহ্ কিছু মানুষ জান্নাতে যাবে জেনেই তাদেরকে সৃষ্টি করছেন, আবার কিছু মানুষ জাহান্নামে যাবে জেনেই তাদেরকে সৃষ্টি করছেন।
তাই যেহেতু কোনো মানুষকে সৃষ্টি করার আগে থেকেই আল্লাহ্ তার জীবনে কখন কি ঘটবে, কখন কেমন কাজ করবে এবং জান্নাতে না জাহান্নামে যাবে তা জানেন, সেহেতু দাসত্বের পরীক্ষা নেওয়ার জন্য তাকে সৃষ্টি করে পৃথিবীতে পাঠানো অর্থহীন।
আল্লাহ্ কোনো মানুষের জন্মের আগেই যা তার ভাগ্যে নির্ধারণ করে রেখেছিলেন তা পরিবর্তন করার সক্ষমতা যদি তার থাকতো, তাহলে আল্লাহ্ একটি ভুল করতেন।
যেহেতু আল্লাহ্ কোনো ভুল করতে পারেন না, সেহেতু একজন মানুষ তার আল্লাহ্ কর্তৃক নির্ধারিত ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য কিছুই করতে পারেন না।
কিছু সহিহ হাদিস থেকেও আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি যে ইসলাম অনুযায়ী একজন মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা বলে কিছু থাকতে পারে না।
গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৫৯/ সৃষ্টির সূচনা (كتاب بدء الخلق)
হাদিস নম্বরঃ ৩২০৮
৫৯/৬. ফেরেশতাদের বর্ণনা।
৩২০৮. যায়দ ইবনু ওয়াহব (রহ.) হতে বর্ণিত। ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, সত্যবাদী হিসেবে গৃহীত আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, নিশ্চয় তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টির উপাদান নিজ নিজ মায়ের পেটে চল্লিশ দিন পর্যন্ত বীর্যরূপে অবস্থান করে, অতঃপর তা জমাট বাঁধা রক্তে পরিণত হয়। ঐভাবে চল্লিশ দিন অবস্থান করে। অতঃপর তা গোশতপিন্ডে পরিণত হয়ে (আগের মত চল্লিশ দিন) থাকে। অতঃপর আল্লাহ একজন ফেরেশতা প্রেরণ করেন। আর তাঁকে চারটি বিষয়ে আদেশ দেয়া হয়। তাঁকে লিপিবদ্ধ করতে বলা হয়, তার ‘আমল, তার রিযক, তার আয়ু এবং সে কি পাপী হবে না নেককার হবে। অতঃপর তার মধ্যে আত্মা ফুঁকে দেয়া হয়। কাজেই তোমাদের কোন ব্যক্তি ‘আমল করতে করতে এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, তার এবং জান্নাতের মাঝে মাত্র এক হাত পার্থক্য থাকে। এমন সময় তার ‘আমলনামা তার উপর জয়ী হয়। তখন সে জাহান্নামবাসীর মত আমল করে। আর একজন ‘আমাল করতে করতে এমন স্তরে পৌঁছে যে, তার এবং জাহান্নামের মাঝে মাত্র এক হাত তফাৎ থাকে, এমন সময় তার ‘আমলনামা তার উপর জয়ী হয়। ফলে সে জান্নাতবাসীর মত ‘আমল করে। (৩৩৩২, ৬৫৯৪, ৭৪৫৪) (মুসলিম ৪৭/১ হাঃ ৩৬৪৩, আহমাদ ৩৬২৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৯৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৯৭৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
উপরের হাদিস পরিষ্কারভাবেই প্রকাশ করে যে, কোনো মানুষ পৃথিবীতে কতদিন বাঁচবে এবং সে পাপী হবে নাকি নেককার বান্দা হবে সেসব আল্লাহ্ সেই মানুষের জন্মের আগেই নির্ধারণ করে রেখেছেন। আল্লাহ্ যেহেতু আগেই নির্ধারণ করে রেখেছেন যে কে পাপী হবে এবং কে নেককার হবে, সেহেতু আল্লাহ্ আগেই নির্ধারণ করে রেখেছেন যে কে জান্নাতবাসী হবে এবং কে জাহান্নামে যাবে। সুতরাং, ইসলামের দুনিয়ার জীবনের দাসত্বের পরীক্ষা ইসলাম অনুযায়ীই অর্থহীন।
কুরআন থেকেও আমরা এই ইংগিত পাই যে ইসলাম অনুযায়ী একজন মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা থাকতে পারে না। কুরআনের বেশকিছু আয়াত থেকে আমরা জানতে পারি যে, মানুষ জান্নাতে যাবে নাকি জাহান্নামে যাবে সেটা মানুষের হাতে নেই, আল্লাহ্ই নির্ধারণ করেন।
10:99 وَ لَوۡ شَآءَ رَبُّکَ لَاٰمَنَ مَنۡ فِی الۡاَرۡضِ کُلُّہُمۡ جَمِیۡعًا ؕ اَفَاَنۡتَ تُکۡرِہُ النَّاسَ حَتّٰی یَکُوۡنُوۡا مُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۹۹﴾ English – Sahih International And had your Lord willed, those on earth would have believed – all of them entirely. Then, (O Muhammad), would you compel the people in order that they become believers? Bengali – Bayaan Foundation আর যদি তোমার রব চাইতেন, তবে যমীনের সকলেই ঈমান আনত। তবে কি তুমি মানুষকে বাধ্য করবে, যাতে তারা মুমিন হয়?
10:100 وَ مَا کَانَ لِنَفۡسٍ اَنۡ تُؤۡمِنَ اِلَّا بِاِذۡنِ اللّٰہِ ؕ وَ یَجۡعَلُ الرِّجۡسَ عَلَی الَّذِیۡنَ لَا یَعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۰۰﴾ English – Sahih International And it is not for a soul to believe except by permission of Allah, and He will place defilement upon those who will not use reason. Bengali – Bayaan Foundation আর কারও পক্ষে সম্ভব নয় যে, আললাহর অনুমতি ছাড়া ঈমান আনবে এবং যারা বুঝে না তিনি আযাব চাপিয়ে দেবেন তাদের উপর।
76:29 اِنَّ ہٰذِہٖ تَذۡکِرَۃٌ ۚ فَمَنۡ شَآءَ اتَّخَذَ اِلٰی رَبِّہٖ سَبِیۡلًا ﴿۲۹﴾ English – Sahih International Indeed, this is a reminder, so he who wills may take to his Lord a way. Bengali – Bayaan Foundation নিশ্চয় এটি উপদেশ; অতএব যে চায় সে যেন তার রবের দিকে একটি পথ গ্রহণ করে।
76:30 وَ مَا تَشَآءُوۡنَ اِلَّاۤ اَنۡ یَّشَآءَ اللّٰہُ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَلِیۡمًا حَکِیۡمًا ﴿٭ۖ۳۰﴾ English – Sahih International And you do not will except that Allah wills. Indeed, Allah is ever Knowing and Wise. Bengali – Bayaan Foundation আর আল্লাহ ইচ্ছা না করলে তোমরা ইচ্ছা করবে না; নিশ্চয় আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রাজ্ঞ।
কুরআনে আরও আয়াত আছে যা প্রমাণ করে যে ইসলাম অনুযায়ী একজন মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা বলে কিছু নেই। কুরআনের ৩৭ নং সূরার ৯৬ নং আয়াতে পরিষ্কারভাবেই প্রকাশ করা হয়েছে যে, আমরা যা করি তা আসলে আমরা নিজে থেকে করি না, আমরা যা করি তা আল্লাহ’র পূর্ব নির্ধারিত।
37:96 وَ اللّٰہُ خَلَقَکُمۡ وَ مَا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۹۶﴾ English – Sahih International While Allah created you and that which you do?” Bengali – Bayaan Foundation ‘অথচ আল্লাহই তোমাদেরকে এবং তোমরা যা কর তা সৃষ্টি করেছেন’?
কুরআনের ১৭ নং সূরার ১৩ নং আয়াত এই ধারণার প্রমাণ বহন করে যে একজন মানুষের যেসব কাজের জন্য বিচার দিবসে তার বিচার করা হবে সেসব কাজ আল্লাহ্ আগেই নির্ধারণ করে তার ভাগ্যে রেখে দিয়েছেন।
17:13 وَ کُلَّ اِنۡسَانٍ اَلۡزَمۡنٰہُ طٰٓئِرَہٗ فِیۡ عُنُقِہٖ ؕ وَ نُخۡرِجُ لَہٗ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ کِتٰبًا یَّلۡقٰىہُ مَنۡشُوۡرًا ﴿۱۳﴾ English - Sahih International And (for) every person We have imposed his fate upon his neck, and We will produce for him on the Day of Resurrection a record which he will encounter spread open. Bengali - Bayaan Foundation আর আমি প্রত্যেক মানুষের কর্মকে তার ঘাড়ে সংযুক্ত করে দিয়েছি এবং কিয়ামতের দিন তার জন্য আমি বের করব একটি কিতাব, যা সে পাবে উন্মুক্ত।
অতএব, কুরআন হাদিসও এই ধারণাটির পক্ষে প্রমাণ বহন করে যে, ইসলাম অনুযায়ী, একজন মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা বলে কিছু থাকতে পারে না। কে কখন কোথায় কিভাবে জন্মগ্রহণ করবেন কিংবা মৃত্যুবরণ করবেন, কে কখন ভালো কাজ করবেন কিংবা খারাপ কাজ করবেন সেসব আল্লাহর পূর্ব নির্ধারিত।
অতএব আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি যে, ইসলামিক বিশ্বাস অনুযায়ী:
১) পৃথিবীতে মানুষের জীবন কোনো দাসত্বের পরীক্ষা নয়। কেননা পরীক্ষার ফলাফল যদি পূর্বেই জানা থাকে কিংবা নির্ধারিত থাকে এবং সেই ফলাফল পরিবর্তন করার জন্য আমরা কিছুই করতে না পারি, তাহলে পরীক্ষা নেওয়ার কিছু থাকে না।
২) কিয়ামত বা ইসলামিক বিচার দিবস একটি হাস্যকর ধারণা। কেননা বিচার দিবসে আমাদের স্বাধীন ইচ্ছায় করা কর্মের ওপর আমাদের বিচার করা হবে না, বিচার করা হবে আল্লাহর পূর্ববর্তী সিদ্ধান্তের ওপর।
৩) যেহেতু পৃথিবীতে জন্মানো অধিকাংশ মানুষই অমুসলিম, সেহেতু আল্লাহ্ অধিকাংশ মানুষকে চিরকাল জাহান্নামে দগ্ধ করার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন।
ইসলামিস্টদের ব্যাখ্যা
এবিষয়ে একজন শিক্ষক এবং তার শিক্ষার্থীদের একটি উপমা ব্যবহার করে ইসলামিস্টরা নিজেদেরকে এবং সাধারণ মুসলিমদেরকে বুঝ দেন। উপমাটি এমন: একজন শিক্ষক জানেন যে তার ক্লাসের কোন ছাত্র বা ছাত্রীটি পড়াশোনায় কেমন এবং সেজন্য তিনি বলে দিতে পারেন কোন ছাত্র বা ছাত্রীটি পরীক্ষায় কেমন ফলাফল করবে। ঠিক তেমনি, আল্লাহ্ও জানেন যে তার কোন বান্দা কেমন এবং সেজন্য তিনি বলে দিতে পারেন যে তার কোন বান্দা জান্নাতে যাবে এবং কোন বান্দা জাহান্নামে যাবে।
ইসলামিস্টদের এই উপমাটি সত্যিই খুব হাস্যকর এবং অর্থহীন। তারা জানা আর অনুমান করাকে এক করে ফেলেন, দুইটা এক বিষয় না। “আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ” কথাটি দ্বারা স্বাভাবিকভাবেই বোঝায় আল্লাহ্ সবকিছুই জানেন, কাল কি হবে না হবে সেটা তিনি আগে থেকেই জানেন, কে জান্নাতে যাবে আর কে জাহান্নামে যাবে সেটা তিনি আগে থেকেই জানেন। কথাটি দ্বারা এমনকিছু বোঝায় না যে আল্লাহ্ সবকিছু অনুমান করে রেখেছেন, কাল কি হবে না হবে সেটা নিয়ে একটা অনুমান রেখেছেন, কে জান্নাতে যাবে আর কে জাহান্নামে যাবে সেটা নিয়ে একটা অনুমান রেখেছেন। কারণ কোনোকিছু জানা আর কোনোকিছু অনুমান করা এক নয়। আমি জানি যে দুই আর দুই যোগ করলে চার হয়, আমি অনুমান করি না যে দুই আর দুই যোগ করলে চার হয়। ধরুন, আপনাদের পাশের বাড়িতে কাউকে কেউ খুন করেছে, খুনিকে আপনি খুন করতে দেখে ফেলেছেন, খুনিকে আপনি চিনে ফেলেছেন, তিনি আপনাদের পাড়ারই একজন লোক এবং তিনিই যে খুন করেছেন সেব্যাপারে আপনি নিশ্চিত হয়েছেন। এখন আপনি যখন মানুষকে এই কথাটি বলবেন যে “আমি খুনিকে চিনি”, আপনি কি কথাটি অনুমান করে? না, আপনি অবশ্যই জেনে বলবেন। কারণ জেনে বলা আর অনুমান করে বলা এক নয়।
একজন শিক্ষককে যদি জিজ্ঞেস করা হয় যে তার ক্লাসের কে কে পাস করবে আর কে কে ফেইল করবে, তাহলে তিনি তার অনুমান থেকে বলতে পারেন, জেনে বা নিশ্চিত হয়ে বলতে পারেন না, এবং তার অনুমান ভুলও প্রমাণিত হতে পারে। অপরদিকে, প্রচলিত ইসলামিক বিশ্বাস মতে, কে জান্নাতে যাবে আর কে জাহান্নামে যাবে সেটা আল্লাহ্ আগে থেকেই জানেন, সেটা আল্লাহর অনুমান নয়। কে জান্নাতে যাবে আর কে জাহান্নামে যাবে সেটা যদি আল্লাহ্ অনুমান করে রাখেন তাহলে বলতে হয় কে জান্নাতে যাবে আর কে জাহান্নামে যাবে সেটা আল্লাহ্ জানেন না। কেননা যা আমরা জানি তা আমাদের অনুমান করার প্রয়োজন নেই, অনুমান করা যায় না। না জানলেই অনুমান করার প্রয়োজন হয়। অর্থ্যাৎ, কে জান্নাতে যাবে আর কে জাহান্নামে যাবে সেটা যদি আল্লাহ্ অনুমান করে রাখেন তাহলে “আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ” কথাটি মিথ্যা। যেহেতু, ইসলামিক বিশ্বাস অনুযায়ী, “আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ”, সেহেতু, কে জান্নাতে যাবে আর কে জাহান্নামে যাবে সেটা আল্লাহ্ অনুমান করে রাখেন নি, সেটা আল্লাহ্ নিশ্চিতভাবেই জানেন।
কুরআন হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি, কে পাপী হবে আর কে নেককার হবে সেটা আল্লাহ্ কর্তৃক পূর্বেই নির্ধারিত। কে কখন ভালো কাজ করবে আর কে কখন খারাপ কাজ করবে সেটা আল্লাহ্ কর্তৃক পূর্বেই নির্ধারিত। এরকম ধারণার সাথে একজন শিক্ষক আর তার শিক্ষার্থীদের উপমাটি মিলে? নূন্যতম বোধ আছে এমন কোনো মানুষকে ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
..কে জান্নাতে যাবে কে জাহান্নামে যাবে সেটা আপনি ও জানেন না আমিও জানি না একারনে আমাকে আপনাকে জাহান্নাম নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।যেনো আমরা জাহান্নামে না যাই ।এজন্য আমল করতে হবে।আল্লাহর কিতাব পড়তে হবে এবং বুঝতে হবে।
উদা:ধরেন আপনি আসিফ আমি রাকিব এবং আমদের রব হলেন আল্লাহ।আল্লাহ আমার আপনার জান্নাত ও জাহান্ন্ম ফয়সালা করছে কিন্তু আপনিও জানেন না আমিও জানি না ।আমাকে আপনাকে দুনিয়াতে আল্লাহ পাঠাইছে এবং আল্লাহ বলছে খারাপ লোকদের জন্য জাহান্নাম অথবা এই ব্যক্তি একটা গুনাহ করলে সে জাহান্নামী সে যদি ও হাজার ভালো কাজ ও করে থাকে । আবার এক ব্যক্তি সারা জীবনে অনেক গুনাহ করেছে কিন্তু আল্লাহ তাকে একটি ভালো কাজের বিনিময়ে জান্নাত ফয়সালা করছে আল্লাহ।তাই বলা যায় যে কে জান্নাতে যাবে কে জাহান্নামে যাবে সেটি আল্লাহ পূর্বে থেকে ফয়সালা করলেও সেটি তো আপনি আমি জানি না যে আমি জান্নাতি না জাহান্নামি।এজন্য আমরা যে সম্পর্কে অবগত নই সে সম্পর্কে আমাদরে সতর্ক থাকা একান্ত জরুরি।এজন্য আমাদের আমল করতে হবে তারপর কি ফয়সালা হয় সেটি আল্লাহ পাক ভালো জানে ।আরেকটি উদাহরন দেওয়া যায় তাহলো দুটি গাড়ি একটি গাড়ির নতুন ড্রাইভার আরেকটি গাড়ির পুরাতুন ড্রাইভার ।আপনার আমার ধারনা যে পুরাতন ড্রাইভার এর গাড়িতে চড়তে হবে কারন তার গাড়ি চালানো সম্পর্কে ভালো ভাবে জানা আছে।এজন্য আপনি সতর্কতার জন্য অবশ্যই পুরাতন ড্রাইভার এর গাড়িতে চরবেন।কিন্তু অনেক সময় কি হয় পুরাতন ড্রাইভার ভালো হওয়া শর্তেও দূর্ঘটনায় লিপ্ত হয়।তাই বলা যায় যে আপনি অনেক সময় সতর্কতার কারনেও ভালো থাকতে পারেন আবার বেশী সতর্কতার কারনেও ক্ষতিতে পতিত হতে পারেন ।কিন্তু তা শর্ত ও আপনি ভালো জিনিস ভালো বিষয়টিকে সতর্কতার উচ্চ মাধ্যম হিসাবে নিচ্ছেন।প্রত্যকেটা মানুষ সতর্ক অবলম্বন করবে এটাই বাস্তব কিন্তু তারপর কি হবে না হবে এটি আল্লাহ পাক ভালো জানে।এজন্য আমদের জাহান্নাম এর সতর্কতার জন্য অবশ্যই আল্লাহর পথ অনুসরন করতে হবে।জাযাকাল্লাহ
সুরা বালাদ এবং সুরা শামস এর ৮-১০ আয়াত ভালো করে পড়ে দেখবেন।
ধন্যবাদ।