ইসলাম এবং আমার অবিশ্বাস (পর্ব এক)

Print Friendly, PDF & Email
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়
বরং বিক্ষিপ্ত হও প্রশ্নের পাথরে।
বরং বুদ্ধির নখে শান দাও, প্রতিবাদ করো।
অন্তত আর যাই করো, সমস্ত কথায়
অনায়াসে সম্মতি দিও না।
কেননা সমস্ত কথা যারা অনায়াসে মেনে নেয়
তারা আর কিছুই করে না,
তারা আত্মবিনাশের পথ
পরিষ্কার করে।

--- নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী

অবিশ্বাস নামক শব্দে একরকম নিষিদ্ধ নিষিদ্ধ গন্ধ পাওয়া যায়। পাওয়া টাই স্বাভাবিক, ছোটবেলা থেকে স্বাভাবিক ভাবেই আমরা বিশ্বাস করতে শিখি, অভিভাবক যা শিখায় তা মেনে নিতে শিখি, সেই অবুঝ বয়স থেকেই ধরে নিতে শিখি জীবনের সবচেয়ে প্রিয় মানুষগুলো যা বলে সেটা ভুল হতে পারে নাহ, তারা যে কাহিনী যে বইকে পরম সত্য বলে তা মিথ্যে হতে পারে নাহ। সেই অবুঝ বয়সে বাবা মা পরিবার ও শিক্ষকদের কাছ থেকে পাওয়া বিশ্বাসে বিশ্বাসী হওয়াকেই ভালো বলে জানি। মা বাবা শিক্ষক নিজেরা ভুল বিশ্বাসে বিশ্বাসী হবেন তা ভাবা যায় না, তারা আমাদের মধ্যে ভুল বিশ্বাসকে লালন করতে শেখাবেন তা হতেই পারে না। যে বিশ্বাস আমাদের সত্য ও সঠিক পথ দেখাবে, যে বিশ্বাস আমাদের মুক্তি এনে দেবে, যে বিশ্বাস আমাদের প্রকৃত শান্তির বার্তা দিবে সেই বিশ্বাসকেই যেন আঁকড়ে ধরে থাকি এবং সেই পথ অনুসরণ করে চলি তাই প্রিয় মানুষগুলো চান। তারা আমাদের ভালো করতে চান, ভালো দেখতে চান, ভালো রাখতে চান বলেই তারা চান আমরা যেন সত্যের পথ ধরে চলি। তাই আমরা বিশ্বাস করি তাদের থেকে পাওয়া বিশ্বাসটা সঠিক, সেই বিশ্বাসের পথ অনুসরণেই মিলবে শান্তি। শিশুবয়স থেকেই মানুষ যেখানে তার বিশ্বাসকে সত্য ও সৎ ভেবে আসে সেখানে অবিশ্বাস শব্দে ভয় ও ঘৃনা জমে থাকে। সে যত পারে তত অবিশ্বাস থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে, অবিশ্বাসকে যত দূরে রাখা যায় ততই তার জন্য মঙ্গলকর মনে করে। ছোটবেলা থেকে পেয়ে আসা বিশ্বাসই যদি সত্যি হয়ে যায় তাহলে তাকে অনেক কষ্ট পেতে হবে যে কষ্টের কথা শুনেই হাত পা কাপতে থাকে। আর সেই ভয়েই অবিশ্বাসের জগত থেকে মানুষ দূরে থাকার চেষ্টা করে। অবিশ্বাসের প্রতি মনে ভয় ও ঘৃনা জমে থাকলেও কোটি কোটি মানুষ বিভক্ত হয়ে আছে হাজার হাজার পারিবারিক ভাবে পেয়ে আসা প্রচলিত বিশ্বাসের বেড়াজালে আর এতো এতো বিশ্বাসের মাঝে হারিয়ে গেছে প্রকৃতির প্রকৃত সত্য। সেই প্রকৃত সত্য এতো এতো প্রচলিত বিশ্বাসের মাঝে থাকতেও পারে আবার নাও পারে। তবে এতো এতো বিশ্বাসের মাঝে সেই সত্যের নাগাল পেতে প্রয়োজন অনুসন্ধিৎসু মন, প্রয়োজন অবিশ্বাস যা কোনো প্রচলিত বিশ্বাসে অন্ধ হয়ে থেকে বা অবিশ্বাস থেকে দূরে থেকে সম্ভব নয়।

আমরা এমন কিছুতেই বিশ্বাস করি যা থাকতেও পারে আবার নাও পারে। বিশ্বাসের বাস্তবতা এটাই। আমরা এমন কিছু সত্য মনে করি কিন্তু জানি নাহ আসলেই সত্যি কিনা যা সত্যও হতে পারে আবার মিথ্যাও হতে পারে তাই বিশ্বাস। আমি বিশ্বাস করি না বিড়াল নামে একটি প্রাণী আছে, আমি বিশ্বাস করি না আম গাছে আম ধরে, আমি বিশ্বাস করি না ইলিশ নামে কোনো মাছ আছে, আমি বিশ্বাস করি না নারীর গর্ভ থেকে তার সন্তান আসে। কারণ আমি জানি এসব সবই সত্য আর এটা আমার জানা, আমার বিশ্বাস নয়। আমি বিশ্বাস করি সুমনা সুমনকে ভালবাসে যার অর্থ আমি মনে করি সুমনা সুমনকে ভালবাসে যা সত্যও হতে পারে আবার মিথ্যাও হতে পারে। আমি বিশ্বাস করি ফেরেশতা বলে কিছু আছে যার অর্থ আমি মনে করি ফেরেশতা বলে কিছু আছে যা সত্যও হতে পারে আবার মিথ্যাও হতে পারে। আমি ততক্ষণ বিশ্বাস করি যতক্ষণ আমি মনে করি এবং জানি নাহ। যখন আমি সত্য বলে জেনে যাব যেখানে মনে করার প্রয়োজন নেই তখন তা আর বিশ্বাস হয়ে থাকবে না। আমরা যত নাহ জানি আমরা ততই বিশ্বাস করে থাকি। তাই আমরা যা সত্য বলে বিশ্বাস করি তা যে আসলেই সত্য তা গলার জোরে সত্য বললেই সত্য হয়ে যাবে নাহ যদি তা মিথ্যা হয়।

মানুষ স্বাভাবিক ভাবেই চায় পারিবারিক ভাবে পেয়ে আসা বিশ্বাসের পথ অনুসরণ করে পৃথিবীর জীবন সুন্দর ভাবে গড়তে এবং ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে পরকালে অসীম সুখশান্তি উপভোগ করতে। একেবারে নিম্নপর্যায়ের বোকা না হলে মানুষ স্বর্গের অসীম সুখের কথা ভুলে এমনকি লাখ লাখ বছর নরকে জ্বলে পুড়ার ভয় নাহ পেয়ে শুধু দুনিয়ার জীবন উপভোগ করতে পারে। আর সেজন্যই মুসলিম পরিবারে জন্ম নেওয়া আমি অবুঝ শিশুবয়স থেকে বিশ্বাস করে এসেছিলাম পৃথিবী, সৌরজগত, মহাবিশ্বসহ সকল কিছুই একজন ঈশ্বর সৃষ্টি করেছিলেন যে ঈশ্বরের নাম আল্লাহ্‌। তিনি সর্বশক্তিমান, তিনি সব জানেন। তিনি সব দেখতে পারেন, কেউ তার চোখ ফাঁকি দিতে পারেন না। তিনি যুগে যুগে মানবসভ্যতায় তার বানী ও তার বিধান প্রচারের জন্য এবং সঠিক পথে মানুষকে নিয়ে আসার জন্য অনেক নবী ও রসূল পাঠিয়েছেন। হযরত মোহাম্মদ হলো তার পাঠানো শেষ নবী ও রসূল। পরকালে অসীম সুখ অসীম যৌনতা ও মদের নদী দুধের সাগর নিয়ে চিরস্থায়ী ভাবে থাকতে হলে তার দেখানো পথে চলতে হবে। নয়তো দুনিয়ার চেয়ে সত্তর গুন বেশি গরম আগুনে জ্বলতে হবে। বিশ্বাস করেছিলাম মোহাম্মদ সশরীরে বোরাকের চড়ে সাত আসমান পাড়ি দিয়ে আল্লাহ্‌র সাথে দেখা করে এসেছে। আমাকে বিশ্বাস করতে হয়েছিলো ইসলামই একমাত্র সত্য ধর্ম বাকি সব ধর্মই মিথ্যে ধর্ম, ভুলে ভরা এবং বিকৃত ধর্ম। আমি মনে করতাম ইসলাম মানেই শান্তির ধর্ম, ইসলাম মানেই শ্রেষ্ঠ ধর্ম।

আমার মতোই হিন্দু পরিবারে জন্ম নেওয়া একজন মানুষ বিশ্বাস করে আমাদের চারপাশ আকাশ বাতাস বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সবই একজন ঈশ্বরের সৃষ্টি আর সেই ঈশ্বরের নাম ভগবান। সেই ঈশ্বরের উপাসনা তার নিয়মনীতি মেনে চললে দুনিয়া ও মৃত্যু পরবর্তী জীবনে শান্তি মিলবে নয়তো নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে। আমি যেমন বিশ্বাস করতাম মোহাম্মদ বোরাকের পিঠে চড়ে সাত আসমান পাড়ি দিয়েছেন তেমনি একজন হিন্দু পরিবারে জন্ম নেওয়া মানুষও বিশ্বাস করে হনুমান পাহাড় মাথায় নিয়ে ভারত থেকে শ্রীলংকা চলে গিয়েছিল! সনাতন পরিবারে জন্ম নেওয়া একজন মানুষও পারিবারিক ভাবে পাওয়া বিশ্বাসের বাইরে কিছুই ভাবতে পারে না। তার কাছে তার সনাতন ধর্মই একমাত্র সত্য ধর্ম এবং বাকি সব ধর্মই মানবসৃষ্ট। সে বিশ্বাস করে তার ধর্মই সবচেয়ে শান্তির এবং শ্রেষ্ঠ ধর্ম। শিশুবয়স থেকে এসবই ঢোকানো হয়েছে তার মস্তিষ্কে।

ইহুদী ও খ্রিষ্টান পরিবারে জন্ম নেওয়া একজন মানুষও একইভাবে শুধুমাত্র তার ধর্ম ও ধর্মের ঈশ্বরকেই সত্য ভাবতে শিখে। তার ধর্ম ও ধর্মের ঈশ্বর বাদে সবই মানবসৃষ্ট ধর্ম, মিথ্যে তাদের ঈশ্বর এবং তারা পাপী শাস্তিযোগ্য। মানবসভ্যতায় প্রচলিত ৪২০০ ধর্মই শুধু নিজেকে সত্য বলে দাবি করে এবং বাকি সব ধর্মকে অস্বীকার করে। টিভিতে আমরা মাঝেমধ্যে বিভিন্ন ফেইসওয়াশের বিজ্ঞাপন দেখি। যেখানে বলা হয় শুধুমাত্র তাদের ফেইসওয়াশ ব্যাবহারেই চলে যাবে আপনার মুখের সকল কালচে দাগ এবং ব্রণ যা অন্যান্য সাধারণ ফেইসওয়াশ করতে পারবে না। বিজ্ঞাপনে সবাই নিজেদের পণ্যকে সেরা বলে গণ্য করে এবং বাকি সব পণ্যকে সাধারণ বলে উড়িয়ে দিতে চায়। ব্যবহারকারীই একমাত্র বুঝতে পারে কোন পণ্য আসলে সেরা বা যেভাবে বিজ্ঞাপনে প্রচার করা হয় তার বাস্তবতাও সেরকম কিনা। ধর্মগুলোও টিভিতে চলা সেসব পণ্যের বিজ্ঞাপনের মতোই আচরণ করে। কেননা সকল ধর্মই নিজেকে সত্য এবং সেরা বলে দাবি করে আবার, একইসাথে অন্য সকল ধর্মকে অস্বীকার করে। পণ্যের বিজ্ঞাপন তাও বিশ্বাসের দাবি নিয়ে আসে না, ব্যবহার করে ফল বুঝে নিতে বলে। অথচ ধর্ম বলে আমাকে সত্য বলে মেনে নাও, আমার অনুগত হও! সত্য মিথ্যার প্রমাণ থাকুক আর না থাকুক!

যাইহোক, মানবসভ্যতায় জন্ম নেওয়া হাজার হাজার ধর্মের অনুসারী জীবনের শেষ অব্ধি নিজ ধর্মকেই সত্য সেরা এবং শ্রেষ্ঠ দাবি করলেও তাদের মধ্যেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে এমন কিছু মানুষ যারা প্রচলিত বিশ্বাসে ভরসা করে না, ভরসা করে অবিশ্বাসে। কারণ তারা জানে বিশ্বাস শব্দে লুকিয়ে থাকে অনিশ্চয়তা আর অনিশ্চয়তায় ভরসা করে সত্যের নাগাল পাওয়া যায় নাহ। তারা জানে, মানুষ এমনকিছুই বিশ্বাস করে যার প্রমাণ পাওয়া যায় না আবার, এমনকিছুই অবিশ্বাস করে যার প্রমাণ পাওয়া যায় না। যেখানে প্রমাণ নেই সেখানেই বিশ্বাস, সেখানেই অনিশ্চয়তা আর তাই যেখানে প্রমাণ নেই সেখানে অবিশ্বাস স্বাভাবিক, সেখানে অনিশ্চয়তা নেই। প্রমাণ থাকলে অবশ্য বিশ্বাস অবিশ্বাস কোনোটারই প্রয়োজন পড়ে না। হাজার হাজার প্রচলিত ধর্মীয় বিশ্বাস ও মতবাদে বিভক্ত মানবসভ্যতায় সত্য একটাই যা সবসময় সত্যই থেকে যাবে। প্রাণীজগৎ এর সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রানী হয়ে আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া বিশ্বাসে আবদ্ধ হয়ে থাকবো অথচ বিশ্বাস নামক অনিশ্চয়তা থেকে বেরিয়ে সত্যের সন্ধান করবো না সেটা আমাদের সাথে আসলে মানায় নাহ। আমরা যেখানে অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে অনেক বেশি বুঝি, অনেক বেশি জানি, পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় দেখি, নিয়ন্ত্রণ করি সেখানে আমাদের উচিৎ ততটুকু গ্রহণ করা যতটুকু প্রমাণিত এবং প্রচলিত ভুল বিশ্বাস থেকে সভ্যতাকে মুক্ত করার চেষ্টা করা। প্রচলিত বিশ্বাস যুগে যুগে মানুষকে দূরে রেখেছিলো সত্যের অনুসন্ধান থেকে, বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলো সত্যানুসন্ধানকারী মানুষদের জীবনে, আজও হয়ে আছে। অথচ মানুষের কৌতুহল ও প্রকৃতির প্রতি আগ্রহই মানবসভ্যতাকে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছে। ধর্মবিশ্বাস প্রকৃতিকে যেভাবে ব্যাখ্যা করে ধ্রুব সত্য মেনে সত্যের সন্ধান থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখলে মানবসভ্যতাকে আজও অন্ধকারাবৃত হয়েই থাকতে হতো।

অন্যান্য বিশ্বাসকে মানুষ যত গুরুত্ব দেয় তার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয় ধর্মবিশ্বাসকে। মৃত্যু ও মৃত্যুর পরে কি হবে, পরকালের কঠোর শাস্তি এসব ভয়ই ধর্মবিশ্বাসে জোরালো ভাবে আটকে রাখে। মৃত্যু ও মৃত্যু পরবর্তী ভয়ের কারনেই মানুষ মৃত্যুকে নিয়ে নিজস্ব কোনো চিন্তা তৈরি হয়, মনে প্রশ্ন আনতে ভয় পায় ধর্মগ্রন্থে মৃত্যুকে যেভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে মৃত্যু কি আদৌ সেরকম? পোশাক ত্যাগ করার মতো দেহ ত্যাগের ধর্মীয় মৃত্যুর দাবিই কি সত্য নাকি মৃত্যু মানে মৃত্যুই? জন্মের আগে যেরকম আমরা নাই হয়ে ছিলাম সেরকম অস্তিত্বহীন হয়ে যাওয়া? ধর্মগ্রন্থের প্রতি অন্ধবিশ্বাস সংশয়ের জগত থেকে সবাইকে দূরে রাখতে পারে না, আমাকেও পারে নি। যে ধর্ম আমাকে মৃত্যুর পর সত্তর গুন বেশি গরম আগুনে জ্বালানোর ভয় দেখায় সেই ভয়ে অন্ধ হয়ে আমি সেই ধর্মের সবকথা মেনে নেই না। বরং কেনো আমি এসব কথা বিশ্বাস করবো, কেনো আমি ভয় পাবো তা নিখুঁতভাবে যাচাই করা শ্রেয় মনে করি। ছোটবেলা থেকে মা বাবা পরিবারের কাছে শুনেছি বলে, কোনো বিশেষ কিতাবে পড়েছি বলে, যে সমাজে থাকি সে সমাজের সবাই বিশ্বাস করে বলে, যে দেশে থাকি সেই দেশের সবাই মানে বলেই সারাজীবন সত্যি মেনে আসবো তা জরুরী নয়, আমি বরং সত্য মিথ্যা যাচাই করে সিদ্ধান্ত নিবো। কেউ শাঁকচুন্নিতে বিশ্বাস করলেই যে শাঁকচুন্নি সত্যি হয়ে যায় তা তো নয়। বিশেষ কিতাবে লেখা আছে বলেই সেই কিতাবের বানী সত্য হয়ে যায় তা তো নয়। সবাই বিশ্বাস করলেই যে সত্যি হয়ে যায় তা তো নয়। যাচাই করে যদি দেখি যে উৎস থেকে বেহেশত ও দোজখের কথা এসেছে তা আসলেই সত্য তাহলে নাহয় মেনে নিবো। আর যদি দেখি প্রকৃতির বাস্তবতা অন্যকিছু তাহলে তো এক ওয়াক্ত নামাজ নাহ পড়ার কারনে কল্পনাতীত যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে বছরের পর বছর এমন নিষ্ঠুর বিচারের গল্প বিশ্বাসের কোনো প্রয়োজন নেই।

ঠিক এখানে এসে কিছু লোক প্রশ্ন করবে, আপনার বাবা যে আপনারই বাবা তার কোনো প্রমাণ আছে? আপনি যে আপনার বাবা মায়ের মিলনেরই ফল তা কি কখনো যাচাই করে দেখেছেন? এমনও তো হতে পারে যাকে আপনি বাবা বলে জানেন সে আপনার বাবা নয় বরং আপনার বাবা অন্য কেউ। আপনার মায়ের সাথে হয়তো অন্যকোন পুরুষের সম্পর্ক ছিলো যার ফসলই হচ্ছেন আপনি। খুবই কঠিন এক প্রশ্ন যে যাকে বাবা বলে জানি সে আসলেই বাবা কিনা! নিজের বাবাকে বাবা বলে মানতে যদি অবিশ্বাসের পথ অনুসরণ করতে না হয় তাহলে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ধর্মের বেলায় কেনো অবিশ্বাসের পথ অনুসরণ করতে হবে? প্রথমত, যার বাবা আছে সে ছোটবেলা থেকে একজনকেই বাবা বলে জানে। কোনো ব্যক্তি নিজেকে তার বাবা বলে দাবি করে না। বলে না একমাত্র আমিই তোমার বাবা বাকি সব মিথ্যে। তাই ছোটবেলা থেকে একজনকে বাবা বলে জেনে আসায় অবিশ্বাসের প্রশ্নও সেখানে আসে না। ধরুন, আপনি কাউকে ছোট থেকে বাবা বলে জেনে এসেছেন এবং একদিন অন্যকোন লোক এসে নিজেকে আপনার বাবা দাবি করলো তখন আপনি কি করবেন? আপনি অবশ্যই তাকে বাবা বলে মেনে নিবেন না বরং অবিশ্বাসের পথ অনুসরণ করবেন, যাচাই করবেন তার দাবি সঠিক কিনা। দুনিয়ার প্রত্যেক বাবা নিজেকে আপনার বাবা বলে দাবি করছে না বিধায় এবং আপনার বাবা আপনার সামনে আছে বিধায় সেখানে বিশ্বাস অবিশ্বাসের প্রশ্নই আসছে না। অপরদিকে, দুনিয়ার সকল ধর্ম এবং ধর্মের ঈশ্বর নিজেকে সত্য ও বাকি সব মিথ্যে দাবি করে বিধায় প্রকৃত সত্য কি তা যাচাইয়ের প্রয়োজন হয়। সুতরাং ‘আপনার বাবা আসলেই আপনার বাবা কিনা’ এমন প্রশ্ন করে যারা বোঝাতে চান যে বাবা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে নাহ পারলে ধর্ম নিয়ে তোলা ঠিক নয় তাদেরকে বলতে চাই, যদি একাধিক লোক নিজেকে আপনার বাবা বলে দাবি করে আর আপনি যদি তখন কারো ওপর অন্ধবিশ্বাস না করে সত্য যাচাই করার প্রয়োজন অনুভব করেন তাহলে, ধর্মের বেলায় কেনো নয়? দ্বিতীয়ত, বাবা ছাড়া নারীর গর্ভে সন্তান আসে না, বাবা ছাড়া কেউ জন্মাতে পারে না যা প্রমাণিত সত্য। কিন্তু ঈশ্বর বলে কেউ আছেন তা কোনো প্রমাণিত সত্য নয়। মেনে নিলাম ঈশ্বর আছেন, ঈশ্বর থাকলেও তিনি মানবজাতির জন্য কোনো ধর্ম পাঠিয়েছেন তার কোনো প্রমাণ নেই। প্রচলিত সকল ধর্মই বিশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। যে বিশ্বাস করে সে সত্য মনে করে এবং তা প্রমাণিত সত্য নয় বলেই বিশ্বাস করে। বাবা যেখানে ধ্রুব সত্য ধর্ম সেখানে বিশ্বাস মাত্র। আর একটা ধ্রুব সত্যের সাথে বিশ্বাসের তুলনা চলে না। বাবার সাথে ধর্মবিশ্বাসের তুলনা দিয়ে “আপনার বাবা যে আপনার বাবা তার প্রমাণ কি” এ ধরনের প্রশ্ন করার মানে ধরে নেওয়া যে বাবা যেমন সত্য হয় তেমনি প্রচলিত কোনো ধর্মও সত্য। অপ্রমাণিত কোনোকিছু এরকমভাবে “ধরে নেওয়া” যুক্তিবিদ্যা সমর্থন করে নাহ। পরিষ্কারভাবে এটা একটা হেত্বাভাস অর্থাৎ Logical fallacy. যুক্তিবিদ্যার অ আ জানা না থাকলেই মানুষ এ ধরনের কথাবার্তা বলে থাকে।

বহুল প্রচলিত অভিযোগ হলো “ধর্মের সত্যতা যাচাই করতে ধর্ম আর বিজ্ঞান এক করে ফেলা হয় কেন? ধর্ম ও বিজ্ঞান দুটো সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়, তাই বিজ্ঞান দিয়ে ধর্মের সত্যতা নির্নয় করা খুব একটা গ্রহণযোগ্য কাজ নয়। ধর্ম হলো মানুষের জীবনবিধান যাকে বিজ্ঞানের সাথে তুলনা করা ঠিক নয়”। সত্যিকথা বলতে এই সত্য কেউ অস্বীকার করে নাহ যে ধর্ম আর বিজ্ঞান দুটো এক বিষয় নয়। অবশ্যই ধর্ম ও বিজ্ঞান আলাদা দুটো বিষয় এবং তারা এক কথা বলে না। তবে ধর্ম ও বিজ্ঞানকে দুটো আলাদা কক্ষে বসিয়ে সুবিধামতো উভয় কক্ষে বিচরণ করার আগে মনে রাখতে হবে, বিজ্ঞান হলো সত্য জানার মাধ্যম, প্রকৃতির বাস্তবতা খুঁজা ও তা ব্যাখ্যা করার মাধ্যম। যা আমাদের চারপাশের সত্যকে আমাদের সামনে তুলে ধরে, অজানাকে জানতে সাহায্য করে। প্রাকৃতিক ঘটনাবলীর পেছনে যে কারণ ও যুক্তি লুকিয়ে আছে তা জানতে আমাদের বিজ্ঞানের দ্বারস্থই হতে হয়। প্রধান প্রধান প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের ধর্মগ্রন্থও প্রকৃতিকে ব্যাখ্যা করতে চায়, প্রকৃতির নানা ঘটনা সম্পর্কে আমাদের জানাতে চায় এবং তা বিশ্বাস করতে বলে। বিজ্ঞান আমাদের প্রকৃতি সম্পর্কে পরীক্ষালব্ধ প্রমাণিত ও সঠিক তথ্য দেয় বলেই ধর্ম প্রকৃতি সম্পর্কে যা বিশ্বাস করতে বলে তা সত্য নাকি মিথ্যা তা বিজ্ঞান ছাড়া জানা সম্ভব নয়। আমরা শুধু ধর্মের সত্যতা জানার বেলায় বিজ্ঞানের দ্বারস্থ হই কেনো? বাংলাদেশের সংবিধান কি দোষ করলো? আমরা কেনো বাংলাদেশের সংবিধান বিজ্ঞান দিয়ে বিচার করে দেখি না? কারণ, বাংলাদেশের সংবিধান মহাবিশ্ব প্রকৃতি প্রাকৃতিক ঘটনাবলী ইত্যাদি ব্যাখ্যা করতে চায় নাহ। আমাদের দেশের সংবিধান কোনো অতি প্রাকৃতিক সত্ত্বা বিশ্বাস করতে বলে না যার সত্যতা পরীক্ষানিরীক্ষা করে যাচাই করা যায়। আমাদের সংবিধান বলে না সেটা ঈশ্বরপ্রেরিত সংবিধান যেখানে ভুল থাকতে পারে না। আর সেজন্যই বাংলাদেশের সংবিধান সত্য নাকি মিথ্যা সেই প্রশ্নও আসে নাহ। ধর্ম যদি কোনো অতি প্রাকৃতিক শক্তি কোনো অলৌকিকতায় বিশ্বাস করতে নাহ বলতো বা ধর্ম যদি আকাশ সম্পর্কে, পৃথিবীর গোল নাকি সমতল, পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘুরে নাকি সূর্য পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরে এভাবে বিশ্বজগতকে ব্যাখ্যা না করতো তাহলে কেউ বিজ্ঞান দিয়ে ধর্মের সত্যতা নির্নয় করতো নাহ। এসব কথা সেই ধর্মপ্রান মানুষরাও জানেন যারা ধর্ম আর বিজ্ঞানের তুলনা সহ্য করতে পারেন না। মূলত তাদের অবচেতন মন ভয় পায় সেই বিজ্ঞানকে, ভয় পান সত্যসন্ধানী হতে মুক্তচিন্তা করতে! তারচেয়ে অন্ধভাবে বিশ্বাস করাকেই তারা নিরাপদ মনে করেন। যদিও ধর্মপ্রান মানুষরা জানেন আজকের বিজ্ঞানের যুগে বিজ্ঞান ছাড়া মানবসভ্যতায় ধর্ম টিকে থাকতে পারবে নাহ! তাইতো যুগ বদলায় আর আয়াতের নতুন অর্থ নতুন ব্যাখ্যা বের হয়। আয়াত বাঁচিয়ে রাখতে হলে যে বিজ্ঞানের সাথে মিল করাতেই হবে!!

আরও একটি বহুল প্রচলিত দাবি হলো, বিজ্ঞান পরিবর্তনশীল, ধর্ম অপরিবর্তনশীল। বিজ্ঞান আজকে একথা বলে তো কালকে সেকথা বলে। সুতরাং বিজ্ঞানের ওপর ভরসা করে চলা উচিৎ নয় আর পরিবর্তনশীল বিজ্ঞান দিয়ে ধর্মকে বিচার করা হাস্যকর। হ্যা আমরাও এব্যাপারে সহমত যে যা প্রমাণিত নয় শুধু ধারনা মাত্র যা একসময় বদলে যেতে পারে তা দিয়ে ধর্মকে বিচার করা যায় নাহ। তবে বিজ্ঞানকে পরিবর্তনশীল দাবি করার আগে ধর্মভীরু মানুষদের বুঝা উচিৎ যে, বিজ্ঞান কারো ধারনা নিয়ে কাজ করে না। বিজ্ঞান কাজ করে সত্য খুঁজে বের করার জন্য এবং সেটা পরীক্ষানিরীক্ষা করে তথ্য উপাত্তনির্ভর পদ্ধতিতে। বিজ্ঞানে তখনই একটা বিষয় সত্য দাবি করা হয় যখন সে বিষয়ের ওপর পরীক্ষালব্ধ প্রমাণ পাওয়া যায়। যা সরাসরি ইন্দ্রিয় দ্বারা পর্যবেক্ষন করা যায় বা সরাসরি পরীক্ষা করে দেখা যায় তাই হলো ফ্যাক্ট আর ফ্যাক্ট সময়ের সাথে বদলে যায় নাহ। একশো বছর আগে ইন্দ্রিয় দ্বারা পর্যবেক্ষণ করে যা ফলাফল পাওয়া গেছে আজও তাই পাওয়া যাবে। কোনো ঘটনা বিশ্লেষণ করতে যখন অনেক ফ্যাক্ট একত্রিত করে যে এক বা একাধিক অনুমান করা হয় তাই হলো হাইপোথিসিস। যা কোনো প্রমাণিত সত্য বলে বিবেচ্য হয় না। বিজ্ঞান একসময় জানতো না যে পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘুরে নাকি সূর্য পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরে। পৃথিবী যে সূর্য কে ঘিরে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরে আজ তা প্রমাণিত এবং এই সত্য সময়ের সাথে বদলে যাচ্ছে না। একশো বছর পৃথিবী সূর্যকে ঘিরে নির্দিষ্ট কক্ষপথ অতিক্রম করতো, এখনো তাই করে। বিজ্ঞানের কাজ হলো প্রকৃতির এসব সত্য খুঁজে প্রমাণ করা। বিজ্ঞানের প্রমাণিত সত্য কি সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে? যাচ্ছে না। পানির অনু হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত। বিজ্ঞান পানির সত্য একসময় জানতো না এবং একসময় সে পরীক্ষানিরীক্ষা করে তা প্রমাণ করেছে। সময়ের সাথে কি এই সত্য কি বদলে যাচ্ছে? যাচ্ছেনা, একশো বছর আগেও তা সত্য ছিলো এবং এখনো তাই আছে। তাহলে “বিজ্ঞান পরিবর্তনশীল তাই বিজ্ঞানে ভরসা করা যাবেনা” এমন উদ্ভট দাবি কারা করছে? কেনো করছে? সেটা সহজেই অনুমেয়, কারণ বিজ্ঞান নিরপেক্ষ ভাবে সত্যের পথে হাটে যে সত্য এড়িয়ে চলতে চায় ধর্মভীরু মানুষরা! উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া বিশ্বাসের প্রতি অগাধ ভালবাসা থেকেই হোক বা মৃত্যুর পরে কি হবে সেই ভয় থেকেই হোক বিজ্ঞান ও ধর্মকে দুটো আলাদা কক্ষে বসিয়ে প্রচলিত বিশ্বাসে অন্ধ থাকাই নিরাপদ মনে করেন তারা! তবে সুন্দর এই পৃথিবীর ভাগ্য শুধু প্রচলিত বিশ্বাসে আটকে থাকে নি। দশজন অন্ধবিশ্বাসী জন্ম নিলে দুজন এমন মানুষও জন্ম নিয়েছেন যারা প্রচলিত বিশ্বাসের গভীরে প্রবেশ করে তা যুক্তিযুক্ত কিনা গ্রহণযোগ্য কিনা তা বিচার করতে ভালোবাসেন।

বাস্তবতার আসমান

ধর্মবিশ্বাসীদের দাবি হচ্ছে তাদের ধর্ম ঈশ্বরপ্রেরিত এবং ঈশ্বর থাকেন আসমানে। ইসলাম ধর্মও ব্যতিক্রম দাবি করে না। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী আল্লাহ্‌ যিনি সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা তিনি সাত আসমানের উপরে থাকেন। কোরআনও আসমানি কিতাব যা আসমান থেকে আল্লাহ্‌ ফেরেশতা দিয়ে মানুষের হেদায়েতের জন্য পাঠিয়েছেন। যেহেতু অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের মতো ইসলামও দাবি করে কোরআন আসমানি কিতাব তাই আসমান সম্পর্কে কোরআন কেমন তথ্য দেয় বা কোরআন আসমানকে কিভাবে ব্যাখ্যা করে সেটা যাচাই করা প্রয়োজন। ইসলাম যদি আসলেই ঈশ্বরপ্রেরিত ধর্ম হয় এবং কোরআন যদি আসলেই আসমানি কিতাব হয় তাহলে কোরআন অবশ্যই আসমান সম্পর্কে ভুল তথ্য দেবে না! আর যদি কোরআন এমন তথ্য দেয় যা বাস্তবতার সাথে মিলে না তাহলে কি প্রমাণিত হতে পারে তা আমরা সহজেই বুঝতে পারি।

আকাশ হলো ভূপৃষ্ঠ থেকে বাইরের দিকে অবস্থিত অংশবিশেষ। বায়ুমণ্ডল এবং মহাশূন্যও এর অংশ বলা হয়। জ্যোতির্বিদ্যায় আকাশ কে খ-গোলকও বলা হয়। ভূপৃষ্ঠ থেকে এটিকে একটি কাল্পনিক গোলক কল্পনা করা হয় যেখানে সূর্য, তারা,চাঁদ এবং গ্রহসমূহকে পরিভ্রমণ করতে দেখা যায়। আবহাওয়ার ক্ষেত্রে আকাশ বলতে কেবলমাত্র বায়ুমণ্ডলের নিচের দিকের অধিক ঘন অংশ কে বোঝায়।

আলোর বিক্ষেপণের কারণে আকাশ নীল দেখায়। কোন কণিকার ওপর আলো পড়লে সেই কণিকা আলোকে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে দেয়, যাকে আলোর বিক্ষেপণ বলে। যে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত কম, সেই আলোর বিক্ষেপণ তত বেশি হয়। নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম, তাই আকাশে এই আলোর বিক্ষেপণ বেশি হয় এবং আকাশ নীল দেখায়। মেঘের অণু বেশ বড় হয় এবং তাই তা নীল ছাড়া অন্য আলোকেও বিক্ষেপিত করে। যার ফলে মেঘের বর্ণ অনেকটা সাদাটে হয়। আর রাতের বেলায় আকাশকে তারায় পরিপূর্ণ একটি কালো গালিচার মত মনে হয়। দিনের বেলায় মেঘ না থাকলে আকাশে সূর্য দেখা যায়। আর রাতের আকাশে (কখনও কখনও দিনেও) চাঁদ, গ্রহসমূহ এবং তারা দৃশ্যমান থাকে। মেঘ, রংধনু, অরোরা বা মেরুপ্রভা, বজ্রপাত প্রভৃতি প্রাকৃতিক ঘটনা আকাশে পরিলক্ষিত হয়। একারণেই সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তকালীন সময় আকাশ লাল দেখায়। এসময় সূর্য দিগন্তরেখার কাছে অবস্থান করে। তাই সূর্যরশ্মি পৃথিবীতে আসতে পুরু বায়ুমণ্ডল ভেদ করে। তখন নীল আলো বিক্ষেপিত হয়ে বিভিন্ন দিকে চলে যায় কিন্তু লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি হওয়ায় তা কম বিক্ষেপিত হয় এবং পৃথিবীতে আসে। তাই তখন আকাশ লাল দেখায়।

আল্লাহ্‌র সাত আসমান

আদিম কালের মানুষের ধারনা ছিলো এমন যে আকাশ হলো বিশাল পৃথিবীর ওপর বিশাল ছাদ বা সলিড পদার্থ যা ঈশ্বর বড় বড় পিলারের ওপর নামিয়ে রেখেছেন বা কোনোরূপ পিলার ছাড়াই সৃষ্টিকর্তা আকাশকে পৃথিবীর ওপর অটুট রেখেছেন যা ঈশ্বরের এক অপরূপ নিদর্শন। বিজ্ঞানের জ্ঞানের অভাবে মানুষ এরকম ধারনা পোষণ করতো এবং আকাশ সম্পর্কে তারা নানা কল্পকাহিনী বিশ্বাস করতো। বিশ্বাস করতো পৃথিবী থেকে উপরের দিকে তাকালে যা দেখা যায় তা পৃথিবীর ছাদ, এরকম সাত আকাশ ঈশ্বর বানিয়েছেন এবং সেই সাত আকাশের ওপর ঈশ্বর বসে আছেন। সময়ের পরিবর্তনে বিজ্ঞান আমাদের জানিয়েছে আকাশ কোনো কঠিন পদার্থ নয় কোনো ছাদ নয়। কোরআন আকাশ সম্পর্কে যে ব্যাখ্যা আমাদের দেয় তা থেকে সেই আদিম মানুষ যাদের আকাশ মহাকাশ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান ছিলো না তাদের ধারনা প্রতিফলিত হয়।

কোরআন যে সাত আসমানের কথা বলে সেই সাত আকাশ বাস্তবে নেই। বাস্তবের আকাশকে নির্দিষ্ট সাত স্তরে বিভক্তও করা যায় না।

সূরা নূহ আয়াত ১৫

أَلَمْ تَرَوْا۟ كَيْفَ خَلَقَ ٱللَّهُ سَبْعَ سَمَٰوَٰتٍ طِبَاقًا

আলাম তারাও কাইফা খালাকাল্লা-হু ছাব‘আ ছামা-ওয়া-তিন তিবা-কা-।

তোমরা কি লক্ষ্য কর না যে, আল্লাহ কিভাবে সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন।

আজকাল কিছু ধর্মভীরু লোক দাবি করে থাকেন সাত আসমান বলতে মূলত বায়ুমণ্ডলের স্তরকে বোঝানো হয়েছে যা খুবই হাস্যকর। কেননা বায়ুমণ্ডলের সাত স্তরে নয় বরং পাঁচ স্তরে বিভক্ত।

এক্সোস্ফিয়ারঃ >৭০০ কিলোমিটার
থার্মোস্ফিয়ারঃ ৮০ থেকে ৭০০ কিলোমিটার
মেসোস্ফিয়ারঃ ৫০ থেকে ৮০ কিলোমিটার
স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারঃ ১২ থেকে ৫০ কিলোমিটার
ট্রপোস্ফিয়ারঃ ০ থেকে ১২ কিলোমিটার

বায়ুমণ্ডল যদি সাত স্তরে বিভক্ত হয় তবুও তাদের দাবি ভুল। কেননা আমরা বায়ুমন্ডলের সবচেয়ে নিচের স্তরে বাস করি। ইসলামের আসমান যদি বায়ুমণ্ডল হয় তাহলে কি আমরা সবাই আসমানে বসবাস করি? অথচ কোরআন হাদিস খুব স্পষ্ট করেই বলে আমরা আমাদের চারপাশে যা কিছুই দেখতে পাই সবই আসমান ও পৃথিবীর মধ্যে অবস্থিত এবং আসমান ও পৃথিবীর মধ্যে একটা দূরত্ব আছে। সুতরাং কোরআনের সাত আসমান ও বায়ুমন্ডলের স্তর এক নয়।

সূরা আস-সাফফাত আয়াত ৫

رَّبُّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَرَبُّ ٱلْمَشَٰرِقِ

রাব্বুছ ছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদিওয়ামা-বাইনাহুমা-ওয়া রাব্বুল মাশা-রিক।

তিনি আসমান সমূহ, যমীনও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর পালনকর্তা এবং পালনকর্তা উদয়াচলসমূহের।

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের প্রতি যে ঈমান আনল, সালাত আদায় করল ও রমাযানের সিয়াম পালন করল সে আল্লাহর পথে জিহাদ করুক কিংবা স্বীয় জন্মভূমিতে বসে থাকুক, তাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেয়া আল্লাহর দায়িত্ব হয়ে যায়। সহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি লোকদের এ সুসংবাদ পৌঁছে দিব না? তিনি বলেন, আল্লাহর পথে জিহাদকারীদের জন্য আল্লাহ্ তা‘আলা জান্নাতে একশ’টি মর্যাদার স্তর প্রস্তুত রেখেছেন। দু’টি স্তরের ব্যবধান ও যমীনের দূরত্বের মত। তোমরা আল্লাহর নিকট চাইলে ফেরদাউস চাইবে। কেননা এটাই হলো সবচেয়ে উত্তম ও সর্বোচ্চ জান্নাত। আমার মনে হয়, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এও বলেছেন, এর উপরে রয়েছে আরশে রহমান। আর সেখান থেকে জান্নাতের নহরসমূহ প্রবাহিত হচ্ছে। মুহাম্মদ ইবনু ফুলাইহ্ (রহ.) তাঁর পিতার সূত্রে (নিঃসন্দেহে) বলেন, এর উপর রয়েছে আরশে রহমান। ( সহীহ বুখারী (তাওহীদ) : হাদিস নংঃ ২৭৯০ )

আগের দিনের মানুষ যাদের মস্তিষ্ক বিজ্ঞান সম্পর্কে অপরিচিত ছিলো, জানতো না কিভাবে সত্য খুঁজে বের করতে হয়, যাদের জ্ঞান ছিল কিছু প্রচলিত ধারনায় সীমাবদ্ধ তাদের মতো কোরআনের বক্তাও আসমানকে পৃথিবীর ছাদ মনে করতো। বায়ুমণ্ডল বা মহাশূন্য যে ছাদ স্বরূপ হয় না সেটা আমরা সবাই বুঝতে পারি। “ছাদ” শব্দের মধ্যে কঠিন পদার্থ চলে আসে, বায়বীয় পদার্থ বা শূন্যতা আসে না। কোরআন অনুযায়ী আসমান হলো সুরক্ষিত ছাদ যা প্রমাণ করে ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা মনে করতো আসমান কঠিন পদার্থ দ্বারা নির্মিত!

সূরা আল-আম্বিয়া আয়াত ৩২

وَجَعَلْنَا ٱلسَّمَآءَ سَقْفًا مَّحْفُوظًا وَهُمْ عَنْ ءَايَٰتِهَا مُعْرِضُونَ

ওয়া জা‘আলনাছছামাআ ছাকফাম মাহফূজাওঁ ওয়া হুম ‘আন আ-য়া-তিহা মু‘রিদূ ন।

আমি আকাশকে সুরক্ষিত ছাদ করেছি; অথচ তারা আমার আকাশস্থ নিদর্শনাবলী থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে।

সূরা আল-বাকারা আয়াত ২২

ٱلَّذِى جَعَلَ لَكُمُ ٱلْأَرْضَ فِرَٰشًا وَٱلسَّمَآءَ بِنَآءً وَأَنزَلَ مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءً فَأَخْرَجَ بِهِۦ مِنَ ٱلثَّمَرَٰتِ رِزْقًا لَّكُمْ فَلَا تَجْعَلُوا۟ لِلَّهِ أَندَادًا وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ

আল্লাযী জা‘আলা লাকুমুল আরদা ফিরা-শাওঁ ওয়াছছামাআ বিনাআওঁ ওয়া আনঝালা মিনাছছামাই মাআন ফাআখরাজা বিহী মিনাছছামারা-তি রিঝকাল্লাকুম ফালা-তাজ‘আলূলিল্লা-হি আনদা-দাওঁ ওয়া আনতুম তা‘লামূন।

যে পবিত্রসত্তা তোমাদের জন্য ভূমিকে বিছানা এবং আকাশকে ছাদ স্বরূপ স্থাপন করে দিয়েছেন, আর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তোমাদের জন্য ফল-ফসল উৎপাদন করেছেন তোমাদের খাদ্য হিসাবে। অতএব, আল্লাহর সাথে তোমরা অন্য কাকেও সমকক্ষ করো না। বস্তুতঃ এসব তোমরা জান।

ইসলামিক স্কলার সাহেবরা দাবি করে থাকেন, কোরআনে আসমানকে পৃথিবীর ছাদ বলতে বায়ুমণ্ডলের ওজোনস্তরকে বোঝানো হয়েছে। কেননা বায়ুমণ্ডলের ওজোনস্তরের কারনে পৃথিবী সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা পায় যেভাবে আমরা বাসার ছাদের কারণে ঝড় বৃষ্টি রোদ থেকে রক্ষা পাই। তাছাড়াও ওজোনস্তর সূর্য থেকে আসা তাপ ধরে রেখে গ্রীন হাউজ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে পৃথিবীকে বসবাসযোগ্য করে তোলে। তাই বলে কি আসলেই কোরআনের আসমানকে বাস্তব আসমানের সাথে তুলনা দেওয়া যায়?

উত্তর হলো না। কারন কোরআন অনুযায়ী আসমান হলো কঠিন পদার্থ দ্বারা নির্মিত সুরক্ষিত ছাদ যেখানে কোনো ফাটল নেই। কোরআনে আল্লাহ্‌ দৃষ্টি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আসমানে কোনো ফাটল খুঁজে পাওয়া যায় কিনা তা দেখতে বলেছেন। আল্লাহ্‌ কোরআনে বলতে চেয়েছেন তিনি এতো সুন্দর ও নিখুঁত ভাবে আসমান নির্মান করেছেন যে সেখানে কোনো ফাটল খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমরা নিশ্চয় তরল পদার্থে ফাটল খুঁজি না, আমরা নিশ্চয় বায়বীয় পদার্থে ফাটল খুঁজি না। আমরা ফাটল খুঁজি কঠিন পদার্থে। ফাটল থাকা বা না থাকার প্রশ্নও আসে কঠিন পদার্থের জন্য। আল্লাহ্‌ কি তাহলে বায়ুমণ্ডলের ওজোনস্তরে ফাটল খুঁজতে বলেছেন? আল্লাহ্‌ কি তাহলে মহাশূন্যে ফাটল খুঁজতে বলেছেন? না কেউ কখনো বায়বীয় অবস্থায় বা শূন্যতায় ফাটল খুঁজতে বলবেন তা হাস্যকর। বাস্তবতা হচ্ছে কোরআন যার বাণী সে মনে করতো আসমান কঠিন পদার্থ দ্বারা নির্মিত।

সূরা আল-মুলক আয়াত ৩

ٱلَّذِى خَلَقَ سَبْعَ سَمَٰوَٰتٍ طِبَاقًا مَّا تَرَىٰ فِى خَلْقِ ٱلرَّحْمَٰنِ مِن تَفَٰوُتٍ فَٱرْجِعِ ٱلْبَصَرَ هَلْ تَرَىٰ مِن فُطُورٍ

আল্লাযী খালাকা ছাব‘আ ছামা-ওয়া-তিন তিবা-কান মা- তারা- ফী খালকির রাহমা-নি মিন তাফা-উত ফারজি‘ইল বাসারা হাল তারা- মিন ফুতূর।

তিনি সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। তুমি করুণাময় আল্লাহ তা’আলার সৃষ্টিতে কোন তফাত দেখতে পাবে না। আবার দৃষ্টিফেরাও, কোন ফাটল দেখতে পাও কি?

আচ্ছা বায়বীয় পদার্থ কি কাগজপত্রের মতো গুটিয়ে নেওয়া যায়? শূন্য অবস্থা কি কাগজপত্রের মতো গুটিয়ে নেওয়া যায়? অবশ্যই যায় না। কারণ কাগজপত্র কঠিন পদার্থ এবং কাগজপত্রের মতো কঠিন পদার্থ হলেই তা গুটিয়ে নেওয়ার প্রশ্ন আসে। অথচ আল্লাহ্‌ কোরআনে বলেছেন তিনি আকাশকে গুটিয়ে নেবেন তাও আবার কাগজপত্রের মতন। যারা কোরআনের আকাশ আর বাস্তবের আকাশ মিল করাতে চান তারা খুব কৌশলে কোরআনের এসব বাণী এড়িয়ে যান। যখন কেউ ধরিয়ে দেয় তখন তারা নয় কে ছয় বানানোর চেষ্টা করেন!

সূরা আল-আম্বিয়া আয়াত ১০৪

يَوْمَ نَطْوِى ٱلسَّمَآءَ كَطَىِّ ٱلسِّجِلِّ لِلْكُتُبِ كَمَا بَدَأْنَآ أَوَّلَ خَلْقٍ نُّعِيدُهُۥ وَعْدًا عَلَيْنَآ إِنَّا كُنَّا فَٰعِلِينَ

ইয়াওমা নাতবিছছামাআ কাতাইয়িছছিজিলিল লিলকুতুবি কামা-বাদা’নাআওয়ালা খালকিন নু‘ঈদুহূ ওয়া‘দান ‘আলাইনা- ইন্না-কুন্না-ফা-‘ইলীন ।

সেদিন আমি আকাশকে গুটিয়ে নেব, যেমন গুটানো হয় লিখিত কাগজপত্র। যেভাবে আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম, সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব। আমার ওয়াদা নিশ্চিত, আমাকে তা পূর্ণ করতেই হবে।

যখন আল্লাহ্‌কে যথার্থ রূপে বুঝতাম না তখন আর যাই করতাম ঈমান খুব সবল ছিল। যখন যথার্থ রূপে বুঝতে ইচ্ছা আসলো মনে এবং যথার্থ রূপে বুঝা শুরু করলাম তখন আর ঈমান খুঁজে পেলাম না নিজের মধ্যে। বায়বীয় বস্তু ভাজ করা যায় বা শূন্য অবস্থা ভাজ করা যায় এমন উদ্ভট কথা তো কখনো শুনি নি। জীবনে যা যা ভাজ করেছি সব কঠিন পদার্থের ছিলো। কখনো পানি ভাজ করিনি, কখনো বাতাসও ভাজ করিনি। অথচ কোরআনের বক্তা বলেছেন কেয়ামতের দিন আসমান ভাজ করা অবস্থায় আল্লাহ্‌র ডান হাতে থাকবে। যা আরও একবার প্রমাণ করে ইসলাম ধর্ম মতে, আসমান সলিড!

সূরা আয-যুমার আয়াত ৬৭

وَمَا قَدَرُوا۟ ٱللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِۦ وَٱلْأَرْضُ جَمِيعًا قَبْضَتُهُۥ يَوْمَ ٱلْقِيَٰمَةِ وَٱلسَّمَٰوَٰتُ مَطْوِيَّٰتٌۢ بِيَمِينِهِۦ سُبْحَٰنَهُۥ وَتَعَٰلَىٰ عَمَّا يُشْرِكُونَ

ওয়ামা-কাদারুল্লা-হা হাক্কা কাদরিহী ওয়াল আরদুজামী‘আন কাবদাতুহূ ইয়াওমাল কিয়া-মাতি ওয়াছ ছামা-ওয়া-তুমাতবিইয়া-তুম বিয়ামীনিহী ছুবহা-নাহূ ওয়া তা‘আ-লা-‘আম্মা-ইউশরিকূন।

তারা আল্লাহকে যথার্থরূপে বোঝেনি। কেয়ামতের দিন গোটা পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুঠোতে এবং আসমান সমূহ ভাঁজ করা অবস্থায় থাকবে তাঁর ডান হাতে। তিনি পবিত্র। আর এরা যাকে শরীক করে, তা থেকে তিনি অনেক উর্ধ্বে।

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ্ তা‘আলা যমীনকে নিজ মুষ্ঠিতে নিবেন এবং আকাশমন্ডলীকে ভাঁজ করে তাঁর ডান হাতে নিবেন, তারপর বলবেন, আমিই মালিক, দুনিয়ার বাদশারা কোথায়? ( সহীহ বুখারী (তাওহীদ) : হাদিস নংঃ ৪৮১২ )

কোরআনে আল্লাহ্‌ বলেছেন, তিনি নিকটবর্তী আকাশকে নক্ষত্র দ্বারা সাজিয়েছেন। তাহলে কোরআনের আসমান ও বাস্তব আসমানকে একরকম বুঝিয়ে যারা নয় কে ছয় বানানোর ব্যর্থ চেষ্টা করেন তারা কি বুঝাতে চান পৃথিবীর চেয়ে লাখ লাখ গুন বড় নক্ষত্রগুলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে সাজানো আছে?

সূরা আস-সাফফাত আয়াত ৬

إِنَّا زَيَّنَّا ٱلسَّمَآءَ ٱلدُّنْيَا بِزِينَةٍ ٱلْكَوَاكِبِ

ইন্না-ঝাইয়ান্নাছছামাআদ্দুনইয়া-বিঝীনাতিনিল কাওয়া-কিব।

নিশ্চয় আমি নিকটবর্তী আকাশকে তারকারাজির দ্বারা সুশোভিত করেছি।

ঠিক এখানে এসে কেউ দাবি করে বসতে পারে যে, “ইসলামে আসমান বলতে মহাবিশ্বের শেষ সীমানা বোঝানো হয়েছে। আমাদের মহাবিশ্ব প্রথম আসমানের নিচে আছে বা মহাবিশ্বের উপরে আছে সাত আসমান।” সত্যি কথা বলতে আকাশ সম্পর্কে আমারও এমন ধারনা ছিল ছোটবেলায়। তবে দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে এরকম দাবি করার কোনো সুযোগ কোরআন রাখে নি। কোরআন বার বার আসমানের দিকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আসমান কত সুন্দর তা উপলব্ধি করতে বলেছে। আসমান মহাবিশ্বের শেষপ্রান্ত হলে তা পৃথিবীর বুকে দাঁড়িয়ে দেখা আমাদের জন্য সম্ভব হতো না। পৃথিবীর বুকে দাঁড়িয়ে আমরা আমাদের চোখের দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত দেখতে পাই মাত্র। দেখতে পারি শুধু আকাশগঙ্গা ছায়াপথের নক্ষত্রগুলো! আর আকাশগঙ্গা ছায়াপথ পুরো মহাবিশ্বের বিশালতার তুলনায় তুচ্ছ কণা মাত্র।

সূরা লুকমান আয়াত ১০

خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا وَأَلْقَىٰ فِى ٱلْأَرْضِ رَوَٰسِىَ أَن تَمِيدَ بِكُمْ وَبَثَّ فِيهَا مِن كُلِّ دَآبَّةٍ وَأَنزَلْنَا مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءً فَأَنۢبَتْنَا فِيهَا مِن كُلِّ زَوْجٍ كَرِيمٍ

খালাকাছছামা-ওয়া-তি বিগাইরি ‘আমাদিন তারাওনাহা-ওয়া আলাকা-ফিল আরদিরাওয়াছিয়া আন তামীদা বিকুম ওয়া বাছছা ফীহা-মিন কুল্লি দাব্বাতিওঁ ওয়া আনঝালনামিনাছছামাই মাআন ফাআমবাতনা-ফীহা-মিন কুল্লি ঝাওজিন কারীম।

তিনি খুঁটি ব্যতীত আকাশমন্ডলী সৃষ্টি করেছেন, তোমরা তা দেখছ। তিনি পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন পর্বতমালা, যাতে পৃথিবী তোমাদেরকে নিয়ে ঢলে না পড়ে এবং এতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সর্বপ্রকার জন্তু। আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছি, অতঃপর তাতে উদগত করেছি সর্বপ্রকার কল্যাণকর উদ্ভিদরাজি।

আকাশ নিয়ে মানবসভ্যতায় জড়িয়ে আছে নানা কল্পকাহিনী, সুখ দুঃখের নানা গল্প। আকাশ দেখেই জন্ম নেয় কোনো মনে কৌতুহল এবং সেই কৌতুহলের পিছু নিয়েই সে জানতে শিখে, ভাবতে শিখে, ভালবেসে ফেলে সুবিশাল এই আকাশের প্রতি নক্ষত্রকে। প্রচলিত বিশ্বাস যখন সেই ভালবাসার আকাশের রূপ বদলে দিতে চায় তখনই “অবিশ্বাস” বন্ধু হয়ে পাশে দাঁড়ায়!!

( কিবোর্ড চলবে…)

Marufur Rahman Khan

Marufur Rahman Khan is an Atheist Blogger from Bangladesh.

8 thoughts on “ইসলাম এবং আমার অবিশ্বাস (পর্ব এক)

  • March 13, 2018 at 8:14 AM
    Permalink

    আবালের যুক্তি যদিও পড়ার ইচ্ছা ছিল না, তবুও পড়লাম কিছু কথা বলার জন্য। এই মারুফুর রাহমান যে কি পরিমান বোকা সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। মারুফ সাহেব হার্ড ডিস্ক চিনেন? আচ্ছা বাদ দেন পেন ড্রাইভ চেনেন তো? ধরে নিলাম আপনার পেন ড্রাইভ ১ টিবি। এখানে অনেক গুলো ড্রাইভ করা আছে যেমন A, B, C …., ড্রাইভে অনেক ফোল্ডার আছে, ফোল্ডারে অনেক ফাইল আছে. এর মধ্যে একটা ফাইল আছে যেটা মারুফ দিয়ে সেভ করা আর সেখানে টাইপ করা আছে “১”। ধরে নেন “১” টা আপনি। এখন আপনার পক্ষে এত ফাইল, ফোল্ডার ডিঙিয়ে অন্য এক ড্রাইভ C তে কি রাখা আছে সেটা বুঝা বা অন্য ড্রাইভে কি হচ্ছে সেটা দেখা কি সম্ভব? উত্তর না। এই পুরো পেন ড্রাইভ কে ধরতে পারেন মহাবিশ্ব। কতটা ক্ষুদ্র আপনি একটু ভেবে দেখুন। এবার আসি আপনার আসল কথায়, আপনার ১ টিবি পেনড্রাইভে হাজার হাজার ডাটা আছে। ডাটা কি পদার্থ একটু জানাবেন? নিশ্চয়ই কঠিন পদার্থ না, তবুও আপনি পুরো ডাটা পেন ড্রাইভে করে নিয়ে আপনার ছোট্ট দুইটা আঙ্গুলে ধরে রাখতে পারেন, রাখতে পারেন আপনার পকেটে। আপনি একটা মানুষ হয়ে যদি এটা করতে পারেন , তাহলে যিনি আপনাকে বানিয়েছেন, আপনার বাবাকে বানিয়েছেন, বানিয়েছেন সব কিছু তাঁর সেটাকে হাতে ভাঁজ করে রাখতে আপত্তি কোথায়? একটু জানাবেন কেমন।

    Reply
    • March 14, 2018 at 3:51 AM
      Permalink

      আসমান ভাজ করা থেকে মহাবিশ্ব বা পেন ড্রাইভ ভাজ করার কথা আনা টা অপ্রাসঙ্গিক ব্যাপার! আমি আপনার মতো বংশ পরিচয় দিবো নাহ তবে আপনাকে বলবো কোরআন ভালোভাবে পড়ুন তারপর আমার লেখা টা আবার পড়ুন!

      আপনি বলবেন ড্রাইভ C তে বা অন্য ড্রাইভে কি রাখা আছে তা আমার পক্ষে দেখা সম্ভব নাহ। আচ্ছা মানলাম সম্ভব নাহ। কিন্তু আল্লাহ্‌ কি এমন কিছু কি ভাজ করার কথা বলেছেন যা আমরা দেখতে পাই নাহ? উত্তর হচ্ছে নাহ। আল্লাহ্‌ কোরআনে আসমান ভাঁজ করার কথা বলছেন আবার বলেছেন আসমান আমরা দেখতে পাই!

      তিনি খুঁটি ব্যতীত আকাশমন্ডলী সৃষ্টি করেছেন; তোমরা তা দেখছ।(সুরা লোকমান আয়াত ১০)

      আমরা আসমান দেখতে পারি এবং বুঝতে পারি আসমান কোনো ভাজ করার মতো পদার্থ নয়। সুতরাং আসমানের সাথে মহাবিশ্ব বা সবকিছুর তুলনা দেওয়া খুব হাস্যকর ব্যাপার। কাঁঠাল পাতা বেশি খাওয়ার দরুন মানুষ এসব কুযুক্তি সামনে আনে। Better luck next time.

      Reply
    • January 17, 2023 at 5:39 PM
      Permalink

      বলদের মতো উপমা ! এনালজি ব্যবহার করতে হলে দুটি জিনিস বা বাস্তবতার মধ্যে ন্যুণতম কিছু সামঞ্জস্য( Compatibility) থাকতে হয় সেটা কি আপনি বোঝেন নাকি বোঝেন না ? অনেক তো কম্পিউটারের জ্ঞান নিয়ে দাম্ভিকতা বা পাকনামি দেখালেন ! তা Compatibility যে কম্পিউটারের একটা বেসিক ধারনা–সেটা কি জিনিস জানেন তো ? কোথায় মহাকাশ আর কোথায় হার্ড ডিস্কের ফোল্ডারের মধ্যে রাখা ডাটা ! পাগলে কিনা বলে ………! আপনার যুক্তি হলো– মিলিয়ন মিলিয়ন বাইট ডাটাকে গুটিয়ে রাখা যায় ! ভালো কথা ! তার সঙ্গে আকাশ গোটানোর কি সম্পর্ক ? কি সাদৃশ্য ? ডাটা কি আপনি জানেন ? এক ধরনের শক্তি প্যাকেট বা প্যাটার্ন ! বিশেষ ধরনের ও মাপের তরঙ্গ-ডিজিটাল তরঙ্গ যার মধ্যে তথ্য superimposed করা থাকে । তাহলে দেখা যাচ্ছে, এখানে প্রধান ব্যাপার হচ্ছে, ড্রাইভের মোটরের ভেতরের স্লটগুলিতে যে শুন্য ও ১ এর বিন্যাস পাওয়া যায় অফ এবং অনের মাধ্যমে, সেটি । অফ আর অন হচ্ছে পাওয়ারের উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতি–যার মোদ্দা কথা হচ্ছে বস্তুবাদ, যেখানে আত্মা বা আধ্যাত্মিকতার স্থান নেই, শক্তির সঙ্গে আকাশকে মেলানোর চেষ্টা ছাগলামিও নয়, পাগলামি ।

      Reply
  • June 18, 2020 at 9:28 AM
    Permalink

    এইটাই তো সমস্যা,, আপনাদের মত নাস্তিকদের,, একমুহুর্তের জন্য আপনার কথা মেনে নি,,তাহলে যখন বিজ্ঞান ২০০ বা ৩০০ বছরে কিছুটা উন্নত হয়েছে তখন দিন দিন কুরআনের সকল আয়াত বিজ্ঞানের দ্বারা প্রমাণিত,,,এবং যুক্তিদিয়েও প্রমাণিত হয়েছে সবসময়।।
    তাহলে ১৪০০ বছর কে এগুলো যানতো যখন সে সময ছিল অন্ধকার যুগ,,,আর মুহাম্মদ(সাঃ) নিজে থেকে কিভাবে এত বৈজ্ঞানিক তথ্য দিতে পারে যা বর্তমানে অধিকাংশ প্রমাণ হয়েছে,, আর তিনি ছিলেন একজন নিরক্ষর।। এখন কথা হলো পৃথিবীর সকল ধর্মে বলা আছে ডাইরেক্ট কিংবা ইনডাইরেক্ট যে আল্লাহ একজন তার কোন অংশীদার নেই,,নির্দিষ্ট কোন আকার নেই,,এবং অন্ধকার যুগে একজন মানব আসবে যার কথা সকল ধর্মে বলা আছে,,তার পরও মানুষ নিজের নির্বুদ্ধিতার জন্য ইসলাম কে মানতে চায় না,,ইসলামি সে ধর্ম যেখানে বলা হয় আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়,, মুহাম্মদ সাঃ তঁার রাসুল,,আপনি আগে ইসলাম নিয়ে ও অনন্য ধর্ম রিসার্চ করুন খোলা মন নিয়ে,,ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর উপাধি পেয়েও যদি বলে মহা সমুদ্রের এক ফোটা পানির জ্ঞান তার নেই,,তবে আপনি তো তার চাইতেও অধম,,মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের নবি মুসা ও উযায়ির আঃ কে নিয়ে আয়াত নাজিল করেছেন যেখানে ছোট্ট চড়ুই পাখি ঠোটে যে পানি তাও আমাদের নেই,,, কুরআনে আয়াত আছে,, পড়তে পারেন,,অনলাইনে ভিডিও দেখতে পারেন,, ইসলাম সত্য ধর্ম,, ইসলাম ছাড়া সকল ধর্ম বিকরিত,,ভুলে ভরা,, কুরআনের প্রায় ৮০% বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে বাকি ২০% এখনো বিজ্ঞান প্রমাণ করতে পারে নি কারণ বিজ্ঞান এতবেশি উন্নত হয়নি,,

    Reply
    • January 17, 2023 at 4:48 PM
      Permalink

      এটা আপনার গায়ের জোরের মনগড়া ব্যক্তিগত দাবি । আপনি জানেনই না কোন্‌টা দাবি আর কোন্‌টা প্রমান-দুইয়ের মধ্যে পার্থক্যই আপনারা মু মিনরা বুঝেন না । কোরানে একটিও আয়াত নেই বিজ্ঞান দিয়ে প্রমানিত হয়েছে- আমি আগেও চ্যালেঞ্জ দিয়েছি পৃথিবীর সমস্তু মুমিনদেরকে এবং আলেমদেরকে ঃ কোরানে যদি বিজ্ঞান থেকেই থাকে তবে কোরান গবেষনা করে অন্তত একটি যন্ত্র বের করে দেখান ! যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে অন্তত একটি বৈজ্ঞানিক ফর্মুলা কিংবা থিউরী বের করে দেখান–যেই থিউরী বৈজ্ঞানিক থিউরির শর্ত অনুসারে এক বা একাধিক নির্ভুল ভবিষ্যদ্‌বানী করে দেবে । কিন্তু বিজ্ঞানীরা কোন কিছু আবিষ্কার করার পর সেটির সঙ্গে কোরানের আয়াতকে নানা ভাবে নানা কৌশলে অপব্যাখ্যা দিয়ে, বিজ্ঞান যা বলেনি সেটা বলে, বিজ্ঞানকে বিকৃত করে, কোরানের আয়াত ও তাফসিরকে সুবিধামতো পরিবর্তন করে, বিজ্ঞানের সঙ্গে গোঁজামিল দেওয়া–এসব চলবে না । পারলে কোরান থেকে বিজ্ঞানিরা আবিষ্কার করার আগে, থিউরি বা ফর্মুলা বের করে দেখান , আমি কেন, সমস্ত নাস্তিক বিশ্‌বাস করবে যে আল্লা থাকুক বা না থাকুক, কিছু একটা সচেতন সত্তা আছে ।

      Reply
    • January 17, 2023 at 5:13 PM
      Permalink

      বিজ্ঞান মোটেও ২০০-৩০০ বছর আগে উন্নত হয়নি । আপনি মূর্খ, তাই জানেন না । মুহম্মদের জন্মের প্রায় দুই তিন হাজার বছর আগে থেকে গ্রীসে পরমাণুবাদী দার্শনিকগণ বিজ্ঞানের চর্চা করতেন । আপনি তো একটাও কোরান থেকে আয়াত দেখাতে পারলেন না যা বিজ্ঞান পরে জেনেছে, । নবি মুহম্মদের আগে, আসিরীয় কিংবা গ্রীকরা কিংবা মিশরীয়রা ……ইত্যাদি জানতে পারেনি–এমন একটি আয়াত দেখান, যার মধ্যে বিজ্ঞান আছে ! মুহম্মদ বৈজ্ঞানিক তথ্য দিতে পারবে না কেন ? আমাদের খানদানি গ্রামের বাড়ীর নিরক্ষর কাজের মুনি যদি কোন স্কুলে না গিয়ে মুখে মুখে জটিল মানুষ অংকের সমাধান করতে পারে, যদি একজন কবিরাজ হয়ে উঠতে পারে, অন্ধ কবি হোমার যদি মহাকাব্য লিখতে পারে, তাহলে জ্ঞানী গুনী পন্ডিতদের কাছ থেকে কানে শুনে শুনে বা শ্রুতির মাধ্যমে, মুহম্মদ কেন কোরান রচনা করতে পারবে না ? কোরানের অনেক কিছু গ্রীকদের কাছ থেকে তৃতীয় ব্যাক্তির মাধ্যমে মুহম্মদের কাছে এসেছে–তিনি যখন সিরিয়াতে বানিজ্য করতে গিয়েছিলেন ।

      Reply
  • June 18, 2020 at 10:05 AM
    Permalink

    নাস্তিক ভাই আপনি নিজেকে দেখেন যদি নুননতম জ্ঞান থাকে তাহলে আপনি আমার সাথে একমত হবেন,,আপনি যে শার্ট পড়ে আছেন,,ঘড়ি,,জুতা,,ল্যাপটপ বা মোবাইল এগুলো কি এমনে তেই আপনার হাতে এসেছে,, এগুলোর তো একজন নির্মাতা বা কারিগর অবশ্যই আছে,,যদি থাকে তাহলে সারা বিশ্ব কে এত সুন্দর নিখুত করে সৃষ্টি করলো,,যদি ধরি শার্ট তবে আগে গাছ রোপণ,,তার পরিচর্যা করা গাচ থেকে সুতা তৈরি,,তার পর সুতা থেকে কাপড়,,কাপড় মাপা,,কাটা,,সেলাই করা,, পুরোপুরি তৈরি করা তারপর আপনার হাতে আসে,,কোন কারিগর ছাড়াই,,আপনারা শুধু সেই কথা বারবার বলেন যা কুরআনে অস্পষ্ট,, যার অর্থ কেবল আল্লাহ জানেন বা যেসব আয়াত বিজ্ঞান এখনো প্রমাণ করতে পারে নি,,কিন্তু যেগুলো সুস্পষ্ট তা বলেন না বা একটি আয়াত বলে মানুষ কে বিভান্ত করেন অতচ পরের আয়াতে কি আছে তা বলেন না,,এর জন্য আপনাদের পাকড়াও করা হবে কেয়ামতের দিন,,ডা. জাকির নায়েক যে সকল রেফারেন্স দেন তার আয়াতগুলো পড়েন কিন্তু তার তরজমা বা ব্যাখ্যা পড়েন না,,তাই এমন মন্তব্য করেন,, কুরান,,হাদিস,,ইজমা,কিয়াস ইসলামি শরিয়তের চারটি স্তম্ভ,, কুরানের কিছু অংশ পড়ে তার ব্যাখ্যা না পড়ে অন্ধকারে পড়ে থাকেন,,আল্লাহ আপনাদের হেদায়াত দান করুক,,সুরা মুহাম্মদ আয়াত ২৪,,আল্লাহ বলেন,,তারা কি কুরআন নিয়ে চিন্তা করে না,, নাকি তাদের অন্তর তালাবদ্দ,,,আপনি চান কুরআনের ভুল বের করতে তাই আল্লাহ আপনাদের অন্ধকারে রেখেছেন,,যদি মন থেকে বুঝার জন্য পড়েন আল্লাহ আপনাকে হেদায়াত দিবেন যাতে আপনাদের বুঝতে সহজ হয়,,,আপনারা পারবেন লুকিয়ে থেকে কিছু মনগড়া লিখে মানুষদের খতি করতে,,যদি সাহস থাকে সামনে আসুন,,আপনাদের সকল সাথীদের ডাকুন জাতীয় বা আন্তর্জাতিক ভাবে সকল ধর্মরন শেষ্ট আলেম,,পণ্ডিত,,সেরা নাস্তিকরাও আসুন বসুন তখন প্রমাণ ও। যুক্তি দেখান,,পার্বেন করতে,, এটা আল্লাহর ওপেন চ্যালেঞ্জ,, জানি কখনোই পারবেন না মিথ্যার কথা ছড়ানো ছাড়া,,, ইসলামের ইতিহাস পড়ুন বা মানব ইতিহাস আপনাদের মত বহু নাস্তিক ও বিধর্মী কুরআনের ও ইসলামের ভুল বের করতে গিয়ে হয় ইসলাম গ্রহণ করেছে না হয় অপমানিত হয়েছে

    Reply
  • January 10, 2022 at 8:04 PM
    Permalink

    Marufur ভাই,
    “আরও একটি বহুল প্রচলিত দাবি হলো, বিজ্ঞান পরিবর্তনশীল, ধর্ম অপরিবর্তনশীল। বিজ্ঞান আজকে একথা বলে তো কালকে সেকথা বলে।” – এই কথার সাথে আমি আংশিক একমত।
    ধর্মও পরিবর্তনশীল। যারা বলবে না ধর্ম পরিবর্তনশীল তাদের আসলে কুরআন নিয়ে স্বল্প জ্ঞান রয়েছে। আল্লাহ পাক একটি আয়াত অন্য একটি আয়াত দিয়ে রহিত করে দিয়েছেন, এরকম অনেক আয়াত রয়েছে। যদি নিয়ম পরিবর্তন হয় এবং সেই নিয়ম পরিবর্তনের উপর ভিত্তি করেই তারা যদি বলতে পারে বিজ্ঞান পরিবর্তনশীল, তাহলে ধর্মও পরিবর্তনশীল বলা যায়।

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *