কিভাবে ফ্লার্ট করবেন?

Print Friendly, PDF & Email

বহুদিন আগে অভি ভাই এর একটা ফেইসবুক স্টেইটাস দেখেছিলাম “লুচ্চামি” নিয়ে। সেটায় বলা হয়েছিল, সব লুচ্চামি খারাপ না। লুচ্চামি আসলে দুই প্রকার, একটা হল ভাল লুচ্চামি, আরেকটা হল উত্যক্ত করা… আজকে ফ্লার্ট করা নিয়ে লিখতেও সেই বিষয়টাই প্রথমে মনে আসল। ফ্লার্ট করার বাংলা আসলেই লুচ্চামি করা হয়তো না, কিন্তু তিনি যখন ভাল লুচ্চামি আর উত্যক্ত করা- লুচ্চামির এই শ্রেণীবিভাগ করেছিলেন তখন এটা নিশ্চিত যে তিনি লুচ্চামি বলতে ফ্লার্ট করাকেই বুঝিয়েছিলেন। ফ্লার্ট করা আসলেই দুই প্রকার, একটাকে বলে ক্রিপি ফ্লার্ট, আরেকটি হল নন ক্রিপি ফ্লার্ট। ক্রিপি ফ্লার্টটা হচ্ছে সেটা যেটাকে অভি ভাই উত্যক্ত করা বলেছিলেন, আর নন ক্রিপি ফ্লার্ট সেটা যেটাকে তিনি ভাল লুচ্ছামি বা এরকম কিছু বুঝিয়েছিলেন।

ফ্লার্ট এর বাংলা আসলেই লুচ্চামি কিনা এটা নিয়ে একটা আলোচনা হতে পারে। ইংরেজিতে ক্রিপি ফ্লার্টকে খারাপ হিসেবে দেখা হয়, আর নন ক্রিপি ফ্লার্টকে স্বাগত জানানো হয়, সুতরাং ইংরেজিতে ফ্লার্ট হচ্ছে ভাল খারাপ মিশিয়ে একটা নিরপেক্ষ শব্দ। কিন্তু বাংলায় একে লুচ্চামি বলা যায় কি? লুচ্চামি শব্দটির স্ট্রাকচার আসলে নিরপেক্ষ নয়, এটা এখন নেতিবাচক দিকে চলে গেছে যা আসলে ইংরেজি ক্রিপি ফ্লার্ট এর মত, তাই লুচ্চামি করা আর উত্যক্ত করা এই দুটো শব্দ প্রায় কাছাকাছি নেগেটিভ বলা যায়। অনেকে “টাংকি মারা” শব্দটি ব্যবহার করেন, এই শব্দটা শুনে অনেকটা স্ল্যাং এর মত, এটা নিরপেক্ষ নাকি নেতিবাচক সেটা নিয়ে আমার অবশ্য বিভ্রান্তি আছে। কিন্তু মূল কথা এটাই যে আমি এখন পর্যন্ত ফ্লার্ট করা শব্দটির ভাল বাংলা খুঁজে পাই নি যার দ্বারা এরকম নিরপেক্ষ কিছু বোঝাবে।

অনেকেই একমত হবেন কিনা জানি না, আমার মনে হয়েছে প্রেম, ভালবাসা, যৌনতা, ডেটিং, ফ্লার্ট এই সংক্রান্ত শব্দের ক্ষেত্রে বাংলা ভাষায় একটি দৈন্যতা কাজ করে। প্রেম, ভালবাসা এসব খুব ভালভাবে বাংলায় প্রকাশিত হয়; কিন্তু ফ্লার্ট করা, ডেইট করা এরকম শব্দের ক্ষেত্রে বাংলা ভাষায় ভাল কোন শব্দ পাই না। যেগুলো আসে সেগুলোও অনেকটা স্ল্যাং এর মত, যা নেতিবাচক শব্দ হয়। সস্যুরে, লাঁকার স্ট্রাকচারালিজম অনুসারে প্রতিটি শব্দের সাথে একটি স্ট্রাকচার যুক্ত থাকে যা সমাজে সেই শব্দটি সম্পর্কে ধারণার প্রতিনিধিত্ব করে। সেপির হোর্ফ হাইপোথিসিজ অনুসারে ভাষার সাথে সেই ভাষার মানুষের সংস্কৃতি, অভিজ্ঞতার সম্পর্ক থাকে যেগুলো ভাষার সীমাবদ্ধতাকে ঠিক করে দেয়। এই হাইপোথিসিজ অনুসারে যদি চিন্তা করতে যাই, ডেট করা, ফ্লার্ট করার যথোপযুক্ত বাংলা শব্দ কেন নেই তাহলে তার উত্তর আসে, বাংলার সংস্কৃতিতে এই শব্দগুলোর কোন ইতিবাচক বা নিরপেক্ষ ধারণা ছিল না। খুব বেশিদিন হয় নি, যখন আমাদের সমাজে বিবাহের পূর্বে ভালবাসা, সম্পর্ক, একে অপরের সাথে দেখা করতে যাওয়া ট্যাবু ছিল। নারীদের বাল্যবিবাহ হত। এসব কারণে যদি এই ফ্লার্ট করা, ডেইট করার মত যাবতীয় শব্দের বাংলা ছিল তুচ্ছার্থে বা নেতিবাচক অর্থেই। সংস্কৃতিতেই যেহেতু বিষয়গুলো ছিল না তাই ভাষাতেও যে বিষয়গুলো আসবে না তা তো বোঝাই যায়। তো এসব কারণেই ফ্লার্টকে ফ্লার্ট, ক্রিপি ফ্লার্টকে ক্রিপি ফ্লার্ট, আর নন ক্রিপি ফ্লার্টকে নন ক্রিপি ফ্লার্ট হিসেবে লিখেই এই লেখাটা শুরু করছি, কারণ এখানে ফ্লার্ট শব্দটি নেগেটিভ হিসেবে নয় বরং নিরপেক্ষ হিসেবেই বোঝানো হচ্ছে। ভাল কথা, ক্রিপি (creepy) শব্দের বাংলা হিসেবে ভয় মেশানো বা উত্যক্তকারী – এরকম ধরে নিতে পারেন।

ফেইসবুকে একবার কিছু কবির আচরণ, ফ্লার্টিং এসব নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছিল। কেউ কেউ দেখেছি এদের নরমালাইজড ভেল্যু বা স্বাভাবিকীকৃত মূল্যবোধ দিয়ে এদের অনেক ফ্লার্টিভ আচরণকে ন্যায়সঙ্গত করার চেষ্টা করছিলেন। আমার কথা ছিল যা নরমাল বা স্বাভাবিক তাকে সবসময় মোরাল বা নৈতিক হিসেবে ধরে নেয়া যায় না। এই ধরণের যুক্তি একটি যৌক্তিক হেত্বাভাস বা কুযুক্তির শ্রেণীতে পড়ে যাকে নেচারালিস্টিক ফ্যালাসি বা ইজ-অট প্রবলেম বলা হয়। যা is বা হয় তাকে যে সবসময় ought বা আবশ্যক হতেই হবে এমন কোন কথা নেই। তাই নরমালাইজড ভেল্যু বা স্বাভাবিকীকৃত মূল্যবোধের দোহাই দিয়ে কখনই সব ধরণের ফ্লার্টিভ আচরণকে ন্যায়সঙ্গত ধরে নেয়া যায় না। কারণ ফ্লার্ট যদি ক্রিপি হয় তাহলে তা কখনই নৈতিক হতে পারে না।

আবার আরেক রকমের প্রবণতা লক্ষ্য করেছিলাম কিছু মানুষের মধ্যে। অনেক মুক্তমনা ও ফ্রিসেক্সে বিশ্বাস করা নারীকেই যৌনতার জন্য এভেইলেবল ভেবে অনেককেই বাজে প্রস্তাব দিতে দেখা যায়, তাদের মনে হয় যেহেতু সেই নারী ফ্রিসেক্সে বিশ্বাস করে, তাই তাদের সাথে এরকম আচরণ করা যায়। আর এরকম প্রেম প্রস্তাব দিতে গিয়ে তাদের ফ্লার্টিং অনেক সময় ক্রিপি হয়ে যায়, যা সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট বা যৌন উত্যক্তকরণের সামিল। তাই নন-ক্রিপি ফ্লার্ট করা ও ক্রিপি ফ্লার্ট করার মধ্যে সীমারেখা সম্পর্কে খুব ভাল ধারণা রাখা দরকার। তো এধরণের কথা দেখে আমার মনে হয়েছিল কি করলে ফ্লার্ট ক্রিপি হয়ে যায় এবিষয়ক গাইডলাইন টাইপের কিছু লেখালেখি দরকার।

পাশ্চাত্য সমাজের অনেক নারীবাদীই এসব নিয়ে লেখালেখি করেছেন। অনেকদিন আগে নাইজেরিয়ান আমেরিকান ফেমিনিস্ট Jarune Uwujaren এর এই বিষয়ে একটা লেখা দেখেছিলাম। The Feminist Guide To Non-Creepy Flirting শিরোনামে তিনি লেখাটা লিখেছিলেন। ভাবলাম সেটাই নিজের মত করে অনুবাদ করে, সাথে আমারও কিছু কথা লাগিয়ে পোস্ট করি। উল্লেখ্য, এই পোস্টের শিরোনাম “কিভাবে ফ্লার্ট করবেন?” হলেও আসলে এই লেখাটি মূলত “কিভাবে ফ্লার্ট করবেন না?”- এই বিষয়েই নির্দেশনা দেয়।

“ফ্লার্ট” শব্দটির সংজ্ঞা নিয়ে আরও কিছু কথা বলা দরকার। অনেকেই ফ্লার্ট শব্দটির দ্বারা “ছিনালি করা”, “মিথ্যা প্রেমের অভিনয় করা” এরকম মনে করে থাকেন। এক্ষেত্রে আমি বলব ইংরেজি ভাষায় শব্দটির ব্যবহার এরকম নয়, অতীতে কোন একসময় এরকম অর্থ যদি থেকেও থাকে তাহলেও বর্তমানে শব্দটির অর্থ এরকম আর নয়। এই শব্দের দ্বারা মূলত কারও প্রতি আকর্ষণ বোধ করার পর তার সাথে আলাপ করতে আসা, তার মন জয় করার চেষ্টা করা এরকম অর্থই বোঝানো হয়। এখানে মিথ্যা প্রেমের কিছু নেই, আর প্রেমের কথাই যদি বলা হয়, তাহলে এরকম ধরে নেবারও কিছু নেই যে একবার দেখার পরেই সাথে সাথে প্রেম হয়ে গেল, একবার দেখলেই প্রেম হয়ে যায়, এই সম্ভাবনাটা খুবই কম, প্রথমে ভাল লাগা কাজ করে, তারপর ফ্লার্ট এর মাধ্যমে মন জয় করার চেষ্টা, ডেইটিং আর এরপর আস্তে আস্তে ভালোবাসার দিকে আগানো। আমাদের সংস্কৃতি ভালোবাসার এই প্রক্রিয়ার সাথে অভ্যস্ত নয় বলেই হয়তো প্রথম ভালোলাগার পর আলাপ করতে আসা বা মন জয় করার চেষ্টা করাকে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে গ্রহণ করে একে “মিথ্যা প্রেমের অভিনয় করা” অর্থ দান করেছে, আর এভাবেই আমাদের সংস্কৃতিতে এর সেমান্টিক চেইঞ্জ বা অর্থগত পরিবর্তন ঘটেছে।

নন-ক্রিপি ফ্লার্টিং সম্পর্কে নারীবাদী সহায়িকা

কেউই “ক্রিপি” হতে চান না, বিশেষ করে আপনি যে আকর্ষণীয় ব্যক্তির সাথে কথা বলতে চাচ্ছেন তার কাছেতো আপনি একেবারেই ক্রিপি হতে চাইবেন না। ফ্লার্ট করা সমস্যা না, কিন্তু আপনার ফ্লার্ট করা কখনও কখনও যার সাথে ফ্লার্ট করছেন তার কাছে “ক্রিপি” হয়ে যেতে পারে। আর এক্ষেত্রে আপনার ফ্লার্ট যে ক্রিপি হয়ে যাচ্ছে তা বোঝার জন্য তার কাছ থেকে “ক্রিপি” বা এজাতীয় কিছু শোনার অপেক্ষা করতে হবে না। তার কোল্ড শোল্ডার, কুইক স্টেপ বা এধরণের প্রত্যাখ্যান-মূলক আচরণ বা অঙ্গভঙ্গি দেখেই বুঝে নিতে হবে যে আপনাকে ইতিমধ্যেই “ক্রিপ” বলে ধরে নেয়া হয়েছে।

তাহলে ক্রিপ বলতে আসলে কি বোঝায়। একজন ক্রিপকে সবসময় কোন “এগ্রেসিভ নারসিসিস্টিক জার্ক” হতে হবে না যিনি নারীদের যথেষ্ট পরিমাণে অসম্মান করেন। একজন ক্রিপি ব্যক্তি যেকোন লিঙ্গের, যেকোন সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশন বা যৌন অভিমুখিতার হতে পারেন যার জেনে বা না জেনে করা কোন আচরণ অন্য কোন ব্যক্তির জন্য অনিরাপদ এবং অস্বস্তিকর অনুভূতির সৃষ্টি করতে পারে। ক্রিপ ব্যক্তি মাত্রই কি খারাপ? না, এমনটা বলা যাবে না, কারণ হয়তো তার কোন কগনিটিভ সমস্যা আছে, বা যার সাথে তিনি ফ্লার্ট করতে চাচ্ছেন কোন কারণে তিনি তার বডি লেঙ্গুয়েজ বোঝার অবস্থায় নেই। হয়তো তাকে বুঝিয়ে বললে তিনি বিষয়টা বুঝতে পারবেন, কিন্তু যার সাথে ক্রিপি আচরণ করা হচ্ছে তাকে কেন এত কিছু চিন্তা বা কেয়ার করতে হবে? তাই তার কাছে, এবং সবার কাছেই এরকম আচরণ করা ব্যক্তি মাত্রই ক্রিপ।

যাই হোক, ক্রিপ আচরণ করা ব্যক্তি নিশ্চই খুব খারাপ, কিন্তু ফ্লার্ট করা একটি ইতিবাচক সামাজিক প্রক্রিয়া, বিশেষ করে আমরা যদি সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে চয়েস থাকবে এরকম সমাজ আশা করি, তাহলে ভালবাসা তৈরি হবার জন্য ফ্লার্ট করা অবশ্যই একটি ইতিবাচক ফ্যাক্টর। কিন্তু সেটা যাতে ক্রিপি না হয় সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। যাই হোক, সমাজ কর্তৃক সামাজিকীকরণ বা সোশ্যালাইজেশন এবং বিবর্তনগত মানসিক বৈশিষ্ট্যের কারণে পুরুষকেই নারীদের প্রতি বেশি ক্রিপি আচরণ করতে দেখা যায়।

যারা না জেনে ক্রিপি আচরণ করেন বা করে ফেলেন বলে মনে করেন, এবং ক্রিপি হতে চান না, কিন্তু ফ্লার্ট করতে চান তাদের অন্তত কিছু সীমারেখার কথা মনে রাখা উচিৎ। এই সীমারেখাগুলো সামাজিক আচরণে একধরণের অদৃশ্য দরজা হিসেবে কাজ করে। আমরাই সামাজিক আচরণ করার সময় এসব বাঁধার কথা মনে রাখি, কিন্তু ফ্লার্ট করার সময় দেখা যায় অনেকেই এধরণের দরজার কথা খেয়াল রাখতে পারেন না। সেটা সোশিওবায়োলজিকাল বা সমাজ-জীববিজ্ঞানগত কারণে হতে পারে, সমাজে দুই লিঙ্গের মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্কের একটা বড় অভাবের কারণে হতে পারে, আবার ফ্লার্ট শব্দটার সাথে যে নেতিবাচক কাঠামোটা জড়িয়ে আছে তার কারণে অনেকেই হয়তো ক্রিপি ফ্লার্টের সাথে নন-ক্রিপি ফ্লার্টের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারেন না, সেটাও হতে পারে।
যাই হোক, যারা বিভিন্ন কারণে ফ্লার্ট করার ক্ষেত্রে এইসব অদৃশ্য দরজা ঠাহর করতে পারেন না, এবং ক্রিপি ফ্লার্ট আর নন-ক্রিপি ফ্লার্টের মধ্যে তফাৎ বুঝতে পারেন না, তাদের জন্য এই গাইডলাইনটি দেয়া হচ্ছে।

১। তার বডি লেঙ্গুয়েজ পড়ুন

ধরুন ট্রেইনে একজন নারী হেডফোন কানে দিয়ে একটা বই পড়ছেন। এটাই একটা পরিষ্কার সিগনাল দিচ্ছে যে তিনি একা থাকতে চান। কিন্তু আপনি তার সাথে ফ্রেন্ডলি হবার জন্য, তার দিকে এপ্রোচ করলেন এবং একটা কনভারসেশন শুরু করতে চাইলেন। তিনি যেহেতু একটা কিছুতে ব্যস্ত তাই তাকে আপনি কেবল বলতে পারেন, “আমি আপনার সাথে কিছু কথা বলতে চাই, কিন্তু বিরক্ত করতে চাই না। আমরা কি একটু আলাপ করতে পারি?” এটা বললে আপনি ক্রিপি টেরিটরিতে প্রবেশ করবেন না, কারণ আপনি কেবল তাকে জিজ্ঞেস করেছেন এবং বাড়তি কিছু ধরে নেন নি। কিন্তু যদি দেখেন তিনি বারবার কথোপকথন থেকে বের হয়ে আসতে চাচ্ছেন, এবং আই কনটাক্ট বা চোখে চোখ রাখা থেকে বিরত থাকছেন তাহলে বুঝতে হবে তিনি একা থাকতে চাইছেন। এক্ষেত্রে আপনার সেই আলাপ চালিয়ে যাবার চেষ্টা করাটা ক্রিপি হয়ে যাবে।

নারীরা বেশিরভাগ সময়ই তাদের সর্বোত্তমটা দিয়ে পরিষ্কার করার চেষ্টা করে যে তারা কথা বলতে আগ্রহী নন, এবং বিরক্তবোধ করছেন। তিনি গোমড়া মুখ করে আপনার সাথে কথা বলতে পারেন, কাজ করতে পারেন। পরিচিত কেউ তাকে হাসতে বলতে পারেন, কিন্তু অপরিচিত কেউ এরকম বললে এর অর্থ এই হয় যে তিনি তার বহিরঙ্গ বা চেহারাকে তিনি কি অনুভব করেন তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভাবছেন। এসবও ক্রিপি টেরিটরিতে চলে যায়। আবার একজন নারী কেবল নম্রভাবে আচরণ করার জন্য কিংবা নারভাসনেস বা ভয় থেকেও হাসতে পারে। তাই আবার হাসিকেও আগ্রহের চিহ্ন হিসেবে নেয়া ঠিক নয়। আর তাই হাসি বা অন্য কিছু নয়, বডি ল্যাংগুয়েজ নিজের সীমারেখাটা ঠিক করা উচিৎ।

এখন আপনি বলতে পারেন, এত কিছু না করে সেই নারী তো সরাসরি মুখের উপর “কথা বলতে আগ্রহী নই” বলে দিলেই পারে। হ্যাঁ, অনেকেই তা করে, কিন্তু সমস্যা হল এভাবে মুখের উপর না বলে দিলে, অনেকেই বলা শুরু করে যে, ‘মেয়েটা বেশি ভাব নেয়’, ‘মেয়েটার বেশি দেমাগ’, আবার অনেকেই এভাবে মুখের উপর না বলাকেও পছন্দ করেন না, আবার অনেকে দেখা যায় হতভম্ব হয়ে বা কিছু বুঝতে না পেরে বা প্রথমে আগ্রহ বোধ করায় আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়, কিন্তু পরে খারাপ লাগলে আর না বলতে পারেন না। এছাড়া অন্যান্য অনেক কারণও থাকতে পারে। তাই যিনি আলাপ শুরু করছেন তারই বডি ল্যাংগুয়েজ বুঝে নিজের সীমারেখা বুঝে নিতে হয়।

২। তিনি কি বলছেন তা ভাল করে শুনুন

আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাওয়া যাক। ট্রেইনের সেই নারী তার বই পড়ছেন এবং আপনি তার সাথে কথা বলার জন্য এগোলেন। তিনি একটু হাসলেন, তার হেডফোন খুললেন এবং আপনাদের মাঝে একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু ভাল আলাপ হল। আপনি তার ফোন নাম্বার জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বিনীতভাবে তা প্রত্যাখ্যান করলেন।

আপনি যদি নন ক্রিপি ব্যক্তি হন এই প্রত্যাখ্যানকে স্বীকার করবেন এবং চলে যাবেন। কিন্তু যদি আপনি একজন ক্রিপি ব্যক্তি হন, তাহলে এই সিগনালকে আপনি ভুলভাবে নেবেন। আপনি ধরে নেবেন মেয়েটি যেহেতু আপনার প্রতি খুব ভাল বডি ল্যাংগুয়েজ দেখিয়েছেন এবং আপনার সাথে খুব ভাল আলাপ-আলোচনা করেছেন তাই তিনি আপনার প্রতি আগ্রহী। এই অবস্থায় যদি আপনি তার প্রত্যাখ্যান শোনার পরেও তার ইতিবাচক উত্তরের আশায় বারবার তার ফোন নাম্বার চাইতে থাকেন বা মনে করেন তার ইতিবাচক বডি ল্যাংগুয়েজ এবং কথা বলার সুযোগ নেয়া যায়, তাহলে আপনি ক্রিপি টেরিটরিতে ঢুকে যাবেন।

ফোন নাম্বার চাওয়াটা একটা উদাহরণ ছিল মাত্র, মেয়েটি আপনার চাওয়া অনেক কিছুই নাও দিতে পারেন। যদি আপনি ক্রিপি না হতে চান, তাহলে এটা করবেন না। “না মানে না” (“No means no”) এই কথাটা অনেক জায়গাতেই প্রযোজ্য, এর মধ্যে এটাও একটি। যদি কেউ তার কোন কথার দ্বারা একটা পরিষ্কার সীমারেখা তৈরি করে দেয় তাহলে এটাকে সম্মান করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটি পরিষ্কার প্রত্যাখ্যানের অর্থ হচ্ছে একটি সীমারেখা, যা বলেদেয় “এর বেশি আর এগোনো যাবে না”, এটা এমনকি তার বেলাতেও সত্য যিনি আপনাকে আসলেই পছন্দ করেছেন কিন্তু আপনার সাথে কোন কারণে সম্পর্ক তৈরি করতে ইচ্ছুক নয় বলে ফোন নাম্বার বা অন্য কোন তথ্য দিতে চাচ্ছেন না। এমন কি এটা মনে করারও কোন কারণ নেই যে তিনি আপনাকে ঝুলিয়ে রাখছেন। আপনাদের মাঝে কেবল একটা ভাল আলাপ-আলোচনা হয়েছে বলে এটা মনে করার কোন কারণ নেই যে, তিনি আপনার সাথে ডেইট করতে চান, বা আপনার কাছে তার ফোন নাম্বার বা অন্য কোন তথ্য পাওনা হয়ে গেছে, বা আপনি এগুলো দাবী বা আশা করতে পারেন।

৩। তার দিকে তাকিয়ে থাকবেন না বা তাকে ফলো করবেন না, এটা ভীতিকর

ধরুন ট্রেইনের সেই নারী বই পড়ছেন এবং আপনি ভাবছেন যে তার দিকে এগোবেন। আপনি এটা করার জন্য সাহস সঞ্চয় করছেন, কিন্তু এটা করার সময় দেখলেন আপনি মনের অজান্তেই তার দিকে তাকিয়ে আছেন। বিষয়টি তিনি লক্ষ্য করলেন। বলার অপেক্ষা রাখে না যে আপনার এই দৃষ্টি কিরকম অস্বস্তি তৈরি করতে পারে।

এটাকে আপনার খুব সরল একটা ভুল বলে মনে হতে পারে, কিন্তু মনে হয় না, যদি আসলেই তিনি আপনার এই দৃষ্টিতে অস্বস্তিবোধ করেন (যার সম্ভাবনাই সব থেকে বেশি), তাহলে তিনি আর আপনার সাথে কথা বলতে আগ্রহী হবেন। আপনি বরং এক্ষেত্রে দৃষ্টি সরিয়ে অন্যদিকে মনোযোগ দিন। কিন্তু এই যাত্রায় আর না হলেও পরের বার থেকে নিশ্চই কোন অপরিচিতের দিকে এগোনোর পূর্বে নিজের দৃষ্টির ব্যাপারে সচেতন থাকবেন।

অনেকক্ষণ ধরে অন্যের দৃষ্টিতে থাকা সকলের জন্যই দুশ্চিন্তার এবং অনিরাপত্তার, কারণ আমরা কেউই মাইন্ড রিড করতে বা মন পড়ে ফেলতে পারি না। আর এও জানি না যে, আমার দিকে তাকিয়ে থাকা ওই লোকটি আমাকে ফলো করা বা অন্য কিছু করার কথা ভাবছেন কিনা। বলতে পারেন, যার মাথায় এত প্ল্যান থাকবে সে নিশ্চই এভাবে বোকার মত তাকিয়ে থাকবে না, তাই দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু মেয়েটিকে এত গভীরে গিয়েই বা চিন্তা করতে হবে কেন?

একই কারণে কাউকে ফলো করাটাও ক্রিপি। ওই ট্রেইনে বই পড়া নারীর উদাহরণ দিয়েই বলা যাক। আপনি এবারে বরং তার থেকে যথেষ্ট দূরে রয়েছেন। আর এরপর আপনি সন্দেহজনকভাবে তার কাছাকাছি এসে বসলেন। যদি মেয়েটি আশপাশ সম্পর্কে একটু নজর রাখে, তাহলে আপনার এই আচরণটি তার মনে যথেষ্ট সন্দেহ এবং ভয়ের উদ্রেক করতে পারে, আর এক্ষেত্রে তার প্রতি এপ্রোচ করার পর প্রত্যাখ্যাত হবার সম্ভাবনাই বেশি হয়ে যাবে।

একই জিনিস কোন রাস্তায়, পার্টিতে, ক্লাবে বা যেকোন জায়গায় থাকা নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যদি আপনি অনেক দূরে থাকা কোন নারীর প্রতি এপ্রোচ করেন, তাহলে আগে তার মনোযোগ আদায় করুন, এবং নিজের উদ্দেশ্যকে পরিষ্কার করুন। আপনি সন্দেহজনকভাবে তাকে ফলো করছেন- তার উপর এরকম অনুভূতি চাপানোর কোন প্রয়োজন নেই।

৪। এটা ধরে নেবার কোন কারণ নেই যে আপনি তার প্রতি সম্মান দিচ্ছেন বলে তাকে আপনাকে পছন্দ করতে হবে

আপনি যদি আচরণের ক্ষেত্রে পূর্বের তিনটি নিয়মই পালন করেন, সেই নারীর প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল হন; তার সীমারেখাগুলোকে শ্রদ্ধা করেন; তাকিয়ে থাকা, ক্যাটকলিং এসব এড়িয়ে যান – তাহলে আপনি ঠিক পথেই আছেন। কিন্তু এরকম আশা করার কোন কারণ নেই যে আপনি কোন নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়েছেন বলেই তাকেও আপনার ডাকে সাড়া দিতে হবে, আপনার প্রতি তাকে ইমপ্রেসড হতে হবে।

শ্রদ্ধা আশা করা একটি মৌলিক মানবাধিকারের মত। আমরা সবাই আশা করি যে আমাদেরকে অন্যেরা যথেষ্ট শ্রদ্ধার চোখেই দেখবে, এটা আমাদের সকলের পাওনারই মত (এখানে প্রসংশা বা অন্য কিছু চাওয়া হচ্ছে না, পূর্বে যেগুলো বলা হয়েছে সেগুলো মানলে, নারীর সীমারেখাগুলো নিয়ে সচেতন থাকলেই বলা যাবে যে আপনি শ্রদ্ধাশীল, এটাই সবাই আশা করে)। আর তাই আপনি যদি সেই প্রাপ্য বস্তুটিই নারীকে দেন, তাহলে এর জন্য যে নারীকে বিমোহিত হয়ে আপনাকে সঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করতে হবে এমন কোন কথা নেই। শ্রদ্ধাশীল ব্যক্তি হবার পরও আপনি প্রত্যাখ্যাত হতে পারেন।

এর অর্থ কি এই যে, যারা নারীকে সম্মান দেয় তাদেরকে নারীরা ঘৃণা করে? না, এর অর্থ শুধু এই যে, যারা নারীকে একজন মানুষ হিসেবে মূল্যায়িত করেন তাদের সবার প্রতি একজন নারীর প্রেমগত আকর্ষণ তৈরি হয় না। তাই শ্রদ্ধাশীল হওয়াকে, সম্মান দেয়াকে নারীকে সিডিউস করার বা প্ররোচিত করার বা বিমোহিত করার একটি নতুন উপায় হিসেবে ভাবার কিছু নেই, এটা একটি সাধারণ ভদ্রতা।

৫। এটা ধরে নেবেন না যে জনসম্মুখে তাকে আকর্ষণীয় লাগছে বলে তিনি আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাচ্ছেন

এমন কোন কথা নেই যে, যেসব নারী ভারি মেকাপ, হিল জুতা, এবং অন্যান্য “সেক্সুয়ালাইজড” পোশাক পরেন তারা আশেপাশের সব পুরুষের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চান। আর যদি তিনি তা চানও, এর মানে এই নয় যে তার সাথে কম শ্রদ্ধার সঙ্গে বা কম সম্মান দিয়ে আচরণ করতে হবে।

এটা খুব সাধারণ ভুল ধারণা যে, নারীরা কেবল মাত্র পুরুষদেরকে আকর্ষণ করতেই সাজগোজ করেন। ব্যাপারটা কখনই এত সরল হয় না। গবেষণায় দেখা গেছে নারীর সাজগোজের ক্ষেত্রে পুরুষকে আকর্ষণ করার চাইতেও নিজেদের সামাজিক মর্যাদা বা সোশ্যাল স্ট্যাটাস প্রকাশ করা, অন্যান্য নারীকে দেখানো, আত্মবিশ্বাস অর্জন করা- এগুলোর প্রভাবই বেশি থাকে। এছাড়া একজন নারী এজন্যও সাজতে পারেন কারণ এই সাজগোজের কারণে তিনি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন, আবার এমনও হতে পারে তিনি কেবল একজন বিশেষ মানুষকে আকৃষ্ট করতেই এই সাজগোজ করেছেন যিনি আপনি নন, আবার এও হতে পারে যে তিনি সাজগোজ করেন কারণ এতে তাকে সুন্দর দেখায়। মোট কথা হল আপনি কখনই জানতে পারবেন না যে একজন নারী যে পোশাক পরেছেন তা কেন পরেছেন বা যেভাবে সেজেছেন সেটার কারণ কী। যাই হোক, কোন ব্যক্তির উদ্দেশ্য কী সেটা নিয়ে কখনই কোন এজাম্পশন তৈরি করতে যাবেন না বা আগ বাড়িয়ে কিছু ধরে নেবেন না, কারণ আপনি আসলেই তা জানেন না।

৬। যদি আপনি তার দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হন তাহলে তা ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না

আপনি যদি কোন নারীর দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হন বা তিনি যদি আপনার প্রতি আগ্রহ না দেখান, তাহলে এর কারণ হতে পারে তিনি ব্যক্তিগতভাবে আপনার প্রতি আকৃষ্ট হন নি। আবার এও হতে পারে আপনাকে প্রত্যাখ্যান করার পেছনে এমন কোন কারণ কাজ করেছে যার সাথে আপনার কোন সম্পর্কই নেই।

অনেক পুরুষই আছে যারা একজন নারীর দেয়া সময়, মনোযোগ এবং তার শরীরের কারণে তার উপর আকর্ষণ বোধ করেন কিন্তু সেই নারীর অনুভূতি সম্পর্কে তাদের কোন মাথাব্যাথাই থাকে না। কোন নারীকে যদি প্রতিদিন এরকম লোকজনের সাথেই ডিল করতে হয়, বা এরকম লোকজনের মধ্যেই থাকতে হয় তাহলে এর প্রভাবে কিছু নারী যেকোন ধরণের হয়রানি এড়িয়ে চলতে সবসময়ই নিরুৎসাহিত মুখভঙ্গি ও মনোভাব ধারণ করতে পারেন এবং আপনি যদি তার সাথে কথা বলতেও যান তখন কিছু না ভেবেই মুখ ফিরিয়েও নিতে পারেন।

সেই ট্রেইনের মেয়েটির কথাই ধরুন। প্রতিদিন সেই মেয়েটিকে ট্রেইনে করে কোন কাজের উদ্দেশ্যে যেতে হয়। যাত্রাপথে তাকে অচেনা ব্যক্তিদের কাছ থেকে তার পোশাক, চালচলন নিয়ে তাকে বিভিন্ন ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য শুনতে হয়। আর এগুলোকে এড়িয়ে চলার জন্য তিনি প্রতিদিনই ট্রেইনে উঠে কানে হেডফোন দিয়ে রাখেন বা বসে বসে কোন বই পড়েন। তো এরকমই একটি সময়ে মেয়েটি যখন কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছিল বা কোন বই পড়ছিল তখন যদি আপনি তার সাথে কথা বলতে যান, তার পক্ষে আপনার দিকে না তাকিয়েই দূরে সরে যাওয়াটা বা আপনাকে একেবারেই পাত্তা না দেয়াটা অস্বাভাবিক হবে না।

একথা প্রথমে মাথায় আসতেই পারে যে, মেয়েটি আপনার উপর অন্যায় করছে বা অবজ্ঞা করছে। কিন্তু এটার সম্ভাবনাই এখানে বেশি যে এই হেডফোন বা বই বা এরকম আচরণের কারণেই তার পক্ষে শান্তিতে ট্রেইন ভ্রমণ করা সম্ভব হয়। এমন নয় যে তিনি আপনাকে কোন ভয়ঙ্কর ব্যক্তি বা সাম্ভাব্য ধর্ষক বলে ভাবছেন- এর অর্থ এটাও হতে পারে যে আপনি তার সাথে এমন স্থানে বা এমন পরিস্থিতিতে কথা বলতে চাইছেন যেখানে তিনি নিরাপদ বোধ করেন না।

সুতরাং আপনার উদ্দেশ্য যদি মন্দ নাও হয়, যদি আপনি যদি শ্রদ্ধাশীলও হন তবুও এরকম প্রত্যাখ্যান বা কোল্ড শোল্ডারকে ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না। আপনি এরকম হন বা না হন, দুনিয়াতে অনেক ক্রিপ ব্যক্তি আছেন যাদের থেকে মেয়েটিকে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হয়।
…………………………….

এই ছিল আমার করা অনুবাদ। এখানে একটা কথা বলা প্রয়োজন, তাহল এখানে অনলাইন ফ্লার্টিং বা সাইবার হ্যারাসমেন্ট নিয়ে কোন কথা লেখা নেই। তবে এটা পড়লে অনলাইনে কিভাবে নারীদের সাথে আচরণ করা উচিৎ সেই বিষয়েও একটা ধারণা আসার কথা।

লেখাটা এত বড় হবে জানতাম না। বিশাল বড় হয়েছে বলে এখন ক্ষমা চাচ্ছি। আর এর প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে একটা কাওয়ালি গানের ভিডিও শেয়ার করছি। সেই ভিডিওটাও আসলে ক্রিপি বিহ্যাভিয়র নিয়েই করা। কয়েক বছর আগে এআইবি “ক্রিপ কাওয়ালি” নাম দিয়ে এই ভিডিওটি ছাড়ে। কাওয়ালিটা শুরু হয় উভয়পক্ষের অনলাইন ক্রিপি ফ্লার্টিং আচরণের সম্মুখীন হবার অভিজ্ঞতা নিয়ে। হিন্দী ভাষা জানলে দেখতে পারেন। 

ভিডিওটির লিংক: https://www.youtube.com/watch?v=gEC0pKHJKNM

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *