কুরআন জানিয়েছে, চাঁদের নিজস্ব আলো নেই?
ভূমিকা
আধুনিক ইসলামিস্টদের অনেকেই দাবি করেছিলেন যে, ‘বিজ্ঞানের কল্যাণে বর্তমানে আমরা জানি যে চাঁদের নিজস্ব কোনো আলো নেই এবং চাঁদ সূর্যের আলোকে প্রতিফলিত করে, অথচ কুরআন ১৪০০ বছর আগেই আমাদের সেই তথ্য দিয়েছে, অতএব কুরআন কোনোভাবেই মানুষের লেখা গ্রন্থ হতে পারে না’। ইসলামিস্টরা যেসকল তথাকথিত ‘কুরআনের বৈজ্ঞানিক মিরাকল’ প্রচার করে দিনের পর দিন ঘাম ঝরিয়েছেন এবং আজও ঝরিয়ে যাচ্ছেন কেবল নিজেদের নির্বুদ্ধিতা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে তার মধ্যে এটি বহুল প্রচলিত।
কুরআনের আয়াত
প্রথমে যে আয়াত সমূহকে ঘিরে ইসলামিস্টরা হাস্যকর দাবিটি তোলেন সেই আয়াত সমূহ তুলে ধরছি:
25:61 تَبَارَكَ الَّذِى جَعَلَ فِى السَّمَآءِ بُرُوجًا وَجَعَلَ فِيهَا سِرٰجًا وَقَمَرًا مُّنِيرًا Bengali - Bayaan Foundation বরকতময় সে সত্তা যিনি আসমানে সৃষ্টি করেছেন বিশালকায় গ্রহসমূহ। আর তাতে প্রদীপ ও আলো বিকিরণকারী চাঁদ সৃষ্টি করেছেন।
10:5 هُوَ الَّذِى جَعَلَ الشَّمْسَ ضِيَآءً وَالْقَمَرَ نُورًا وَقَدَّرَهُۥ مَنَازِلَ لِتَعْلَمُوا عَدَدَ السِّنِينَ وَالْحِسَابَ ۚ مَا خَلَقَ اللَّهُ ذٰلِكَ إِلَّا بِالْحَقِّ ۚ يُفَصِّلُ الْءَايٰتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ Bengali - Bayaan Foundation তিনিই সূর্যকে করেছেন দীপ্তিময় এবং চাঁদকে আলোময় আর তার জন্য নির্ধারণ করেছেন বিভিন্ন মনযিল, যাতে তোমরা জানতে পার বছরের গণনা এবং (সময়ের) হিসাব। আল্লাহ এগুলো অবশ্যই যথার্থভাবে সৃষ্টি করেছেন। জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য তিনি আয়াতসমূহ বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেন।
71:16 وَجَعَلَ الْقَمَرَ فِيهِنَّ نُورًا وَجَعَلَ الشَّمْسَ سِرَاجًا Bengali - Bayaan Foundation আর এগুলোর মধ্যে চাঁদকে সৃষ্টি করেছেন আলো আর সূর্যকে সৃষ্টি করেছেন প্রদীপরূপে’।
জবাব
কুরআন অনুযায়ী, আসলেই কি চাঁদের নিজস্ব আলো নেই ও সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে নাকি চাঁদ কেবলই একটি আলোর উৎস? আধুনিক ইসলামিস্টরা কুরআনকে নির্ভুল প্রমাণ করার উদ্দেশ্যে কুরআনের আয়াতে ব্যবহৃত শব্দ সমূহের অর্থ বিকৃত করেন না তো? এখানে এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়াটা খুব প্রয়োজনীয় না। এইসব প্রশ্নের উত্তর না দিলেও ইসলামিস্টদের তথাকথিত বৈজ্ঞানিক মিরাকলের দাবিটি কেন ভুল বা মিথ্যা তা প্রমাণ করা যাবে।
আমরা ধরে নিলাম, কুরআন অনুযায়ী, চাঁদের নিজস্ব কোনো আলো নেই এবং চাঁদ সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে। কুরআন যদি আসলেই বুঝায় যে চাঁদের নিজস্ব কোনো আলো নেই এবং চাঁদের আলো প্রতিফলিত আলো, তাহলে কি ইসলামিস্টদের এই দাবিটি সত্য হয়ে যায় যে, কুরআনই সর্বপ্রথম তা মানবসভ্যতাকে জানিয়েছে? তাহলে কি প্রমাণিত হয়ে যায় যে কুরআন ঐশ্বরিক কিতাব?
না, একদমই না। বাস্তবতা আমাদের বলে, চাঁদের আলো যে সূর্যের প্রতিফলিত আলো, এই ধারণাটি ইসলামের সূচনার হাজার বছর পূর্বেও প্রচলিত ছিলো।
কিছু উদাহরণ তুলে ধরছি:
Thales (585 BC): The moon is lighted from the sun. 29; 360. Thales et al. agree with the mathematicians that the monthly phases of the moon show that it travels along with the sun and is lighted by it, and eclipses show that it comes into the shadow of the earth, the earth coming between the two heavenly bodies and blocking the light of the moon (Doxographi on Thales, Aet. ii. 1 ; Dox. 327) (6).
Anaxagoras (500-428 BC) considered the moon be to a false-shining star (255). The Doxographist elaborate further on this: The moon is below the sun and nearer us. The sun is larger than the Peloponnesos. The moon does not have its own light, but light from the sun (The Doxographists on Anaxagoras, Hipp. Phil. 8 ; Dox. 561) (260-1).
Empedocles (490-430): As sunlight striking the broad circle of the moon. 154. A borrowed light, circular in form, it revolves about the earth, as if following the track of a chariot (Empedocles, translations of the fragments I) (177).
Lucretius (100-50 BC): How then, if the sun is so small, can it give of such a flood of light (p.189)? The moon, too, whether it sheds a borrowed light upon the landscape in its progress or emits a native radiance from its own body. What then of the moon? It may be that it shines only when the sun’s rays fall upon it. Then day by day, as it moves away from the sun’s orb, it turns more its illuminated surface towards our view till in its rising it gazes down face to face up the setting of the sun and beams with lustre at the full. Thereafter, it is bound to hide its light bit by bit behind it as it glides around heaven towards the solar fire from the opposite point of the zodiac (192-193) (Lucretius, The Nature of the Universe).
উপসংহার
নিঃসন্দেহেই ইসলামিস্টদের বহুল প্রচলিত দাবিটি মিথ্যা। কেননা ‘চাঁদের আলো তার নিজস্ব আলো নয় বরং প্রতিফলিত আলো’ এই ধারণাটির অস্তিত্ব ইসলামের হাজার বছর পূর্বেও ছিলো।
আরও পড়ুন
তার মানে আপনি বলতে চাইছেন যে কোরান একটি দৈব বই? বাহ্ খুব চমত্কার উদাহরণ। আপনি মুমিনদের ভালো একটা হাতিয়ার দিলেন! ধন্যবাদ আপনাকে দেয়া উচিত অবশ্যই
মন্তব্য করার আগে লেখা পড়ে দেখবেন!
আরবদের তৎকালীন ধারণা কী ছিল সেটা আগে জানা দরকার।
গ্রীকদের হাইপোথিসিসের খোঁজখবর আরবরা কি আদৌ রাখতো?
এগুলো জানার পরই বলা যাবে এই আয়াতগুলো মিরাকল না।
এইসব আজেবাজে কথা কোথা থেকে নিয়ে আসেন আপনারা? রেফারেন্স বিহীন কথা! আ্যারিস্টোটল, প্লেটো, থেলিসদের মতবাদ আরাবিক এবং সিরিয়াক ভাষায় অনুবাদ হয় মধ্যযুগে!
তারা বলতে গেলে এক প্রকার উত্তরাধিকারদের মতই গ্রিক থিওলজি গুলো আয়ত্ত করে, তবে সেটা ছিল মধ্যযুগে এবং সেই সময় ছিল যখন আরবরা ইজিপ্ট (মিশর) বা লেভান্তে এর উপর রাজত্ব লাভ করে।
আর গ্রিক থেকে আরাবিক এ অনুবাদ বা ব্যাখ্যা শুরু হয় প্রায় উমাইয়াদ খিলাফতের সময় যা মুহাম্মাদ সাঃ এর মারা যাবার শত শত বছর পর!
Arabs took control of previously Hellenized areas such as Egypt and the Levant in the 7th century.[18] At this point they first began to encounter Greek ideas, though from the beginning, many Arabs were hostile to classical learning.[19] Because of this hostility, the religious Caliphs could not support scientific translations. Translators had to seek out wealthy business patrons rather than religious ones.[19] Until Abbasid rule in the 8th century, however, there was little work in translation. Most knowledge of Greek during Umayyad rule was gained from those scholars of Greek who remained from the Byzantine period, rather than through widespread translation and dissemination of texts. A few scholars argue that translation was more widespread than is thought during this period, but theirs remains the minority view.[19]
সূত্রঃ https://en.m.wikipedia.org/wiki/Transmission_of_the_Greek_Classics
প্রতিটা কথার রেফারেন্স সাথেই আছে! আপনি রেফারেন্স চেক করতে না জানলে বা রেফারেন্স চেক করতে অনিহা থাকলে কিছু করার নেই। “রেফারেন্স বিহীন কথা” এসব বলে লাভ নাই! বলুন আপনার জ্ঞানে ঘাটতি আছে!
আমার কথার মানে বুঝেছেন তো? আমি তো কোথাও বলিনি যে, থেলিস বা অন্য কেউ কোথাও বলেন নি যে চাদের নিজের আলো আ।। তবে আপনার পোস্টের মূল দাবি হল যে চাদের আলো নেই এটা গ্রিকরা জানতো। সেখান থেকে মুহাম্মাদ সাঃ কপি করেছে আর আমি সেই পরিপ্রেক্ষিতে আপনাকে রেফারেন্স দিলাম যে উনাইয়া শাসনের আগে কোন গ্রিক দার্শনিকের কথা অনুবাদ হয়নি আর আরবদের মুখে তা প্রচলিত থাকা ছিল সূদুর স্বপ্নের ব্যাপার। আমি আপনার কাছে সেই রেফারেন্সটাই চেয়েছি।
আরে ভাই, প্রায় দেড় হাজার বছর পূর্বে আরবের বুকে নাজিল হওয়া কিতাবে একের পর এক বিজ্ঞান সম্মত কথা পাওয়া যাচ্ছে, এমনকি এতে আজ পর্যন্ত একটা মাত্র ভুল পাওয়া না যাওয়ার পরও আপনি কিভাবে একে আল্লাহর কিতাব বলে অস্বীকার করেন ??
আপনাকে আমি অনুরোধ করবো কুরআনকে ব্যাখা সহ বুঝে পূর্ণাঙ্গ ভাবে অধ্যায়ন করুন, ড. জাকির নায়েক এর আলোচনা গুলো শুনুন, বিস্তর লেখাপড়া করুন, তারপর এসব বিষয়ে মন্তব্য করতে আসবেন !!
আপনি কি বলেছেন তা আমি বুঝেছি, তবে আমি যা বলেছি তা আপনি ধরতে পারেন নি। আমি বলতে চাচ্ছি গ্রীক দার্শনিকরা আসলে আল্লাহর প্রেরিত নবী ও রাসূল, কারণ তারা অনেক অলৌকিক অলৌকিক তথ্য দিয়েছেন!
চাঁদের আলো বিষয়ক লেখাটি একটি চমৎকার উপস্থাপন যেখানে কুরআনের রেফারেন্স ব্যবহৃত হয়েছে। কুরআন যা বলেছে তা একবিংশ শতাব্দীতে তা ভুল প্রমানিত। চাঁদে মানুষের পদটিহ্ন আছে। উপগ্রহটির কোন নিজস্ব আলো নেই। লেখককে ধন্যবাদ। কৃতজ্ঞ।
একই ভাবে নিউটন, আইনস্টাইনকে নবী বলা যাবে কারণ তারাও অনেক কিছু বলছে যা আগে কেউ বলেনি।
আসিফ সাহেব, এই ধারনা যদি আগেও মানুষের জানা থাকে তাহলে ও কোরআন মিথ্যা হয়ে যায় না ।
পোস্টকারি হয়ত পোস্ট করার পূর্বে মেয়াদোত্তীর্ন কোনো বস্তু ভক্ষণ করেছিল! আপনার এ পোস্টের মূর্খামি তো লিখে শেষ করার মত নয়।
যাহোক সংক্ষিপ্ত করে কিছু কথা বলে যাইঃ
প্রথম কথা হলো গ্রিকরা ভাবত বা মনে করত যে চাঁদের আলো তার নিজস্ব আলো নয়। তাই নবী মোহাম্মদ (স) তাদের কথা নকল করেছে। আপনি হয়ত অল্প জেনেই ইতিহাস লিখতে গিয়েছেন। গ্রীকদের মতবাদ আরবদের কাছে প্রচলিত তো অনেক দূরের কথা সে সময় আরবি ভাষায় তো অনুবাদই ছিল না।
আচ্ছা সে যাহোক পবিত্র কুরআন আল্লাহ তায়ালার বাণী তাই আপনার মতো মানুষ একমত হয়ে আলোচনা করুক অথবা দ্বিমত হয়ে আপনি কুরআন কে কিছুতেই ভুল প্রমাণ করতে পারবেন না!
তাই, আপনাকে সুযোগ দিতে আমার কোনো অসুবিধা নেই। ধরেই নিলাম হয়ত কোনো আগন্তুক সে সময় এসে মুহাম্মাদ (স) কে গ্রীকদের সমস্ত মতবাদ অনুবাদ করে দিয়ে গেছে! যদিও এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। তবুও, মেনে নিলাম।
আপনি কি জানেন গ্রীকরা মনে করত, পৃথিবী গোলাকার নয় পৃথিবী সমতল।
এমনকি তারা এটাও মনে করত সূর্য স্থির।
তাহলে মুহাম্মদ (স) কেন তাদের ঠিক মতবাদগুলোই নিলেন? তিনি কি আধুনিক যুগের আধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে সেখানে গবেষণা করেছেন? তিনি ছিলেন উম্মি অর্থাৎ, নিরক্ষর।
এমনকি সেসময়ে সবচেয়ে উন্নত ছিল গ্রীকরা তারা যেখানে এমন ভুল মতবাদ এ বিশ্বাস করত সেখানে মুহাম্মাদ (স), এর এসব নির্ভুল কথা লেখার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। তিনি কেন গ্রীকদের সঠিক মতবাদ গুলোই বেছে নিলেন? এটা ঠিক ও আচ্ছা এটা নকল করি। এটা ভুল ও তাহলে এটা নকল করব না। এটা ঠিক তাহলে এটা নকল করি! হাহ্ আপনার যুক্তি অনুযায়ী তিনি এমনভাবেই কুরআন রচনা করেছেন। হাস্যকর।
আগে নিজের জ্ঞানকে সঠিকভাবে যাচাই করুন তারপর প্রবন্ধ লিখুন। অযথা নিজের ও অন্যের সময় নষ্ট করবেন না।
এই পোস্টের কোথাও এমনটা মেনে নেওয়া হয়নি যে, কুরআন অনুযায়ী, চাঁদের নিজস্ব আলো নেই। এইটা একটা ভূয়া কথা যে, কুরআনে ১৪০০ বছর আগেই বলা হয়েছে যে, চাঁদের নিজস্ব আলো নেই। কুরআনের কোথায় “চাঁদের নিজস্ব নেই” বলা হয়েছে সেটা আগে দেখান, তারপর মিরাকলের দাবি নিয়ে আসবেন।
এই পোস্টের উদ্দেশ্য, “কুরআন সর্বপ্রথম জানিয়েছে, চাঁদের নিজস্ব আলো নেই” এই দাবি খণ্ডন। আরেকটা উদ্দেশ্য, এটা দেখানো যে, যদি কুরআন আসলেই বলে, “চাঁদের নিজস্ব আলো নেই”, তাতে কি কুরআন অলৌকিক প্রমাণিত হয়?
না, এখানে দাবি করা হয় নাই যে, আপনার নবীজি কোনো কপি করেছিলো। এখানে কেবল এই প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে যে, যে কথা আপনারা কুরআনই সর্বপ্রথম বলেছে বলে প্রচার করেছেন সেই কথার অস্তিত্ব আসলে কুরআনের হাজার বছর পূর্বেও ছিলো। আর এই প্রমাণ থেকে আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি যে, কুরআন “চাঁদের নিজস্ব আলো নেই” বললেও তা কোনো মিরাকল হবে না। বরং আমাদের এই ইংগিতই দিবে যে, কোনো না কোনোভাবে আপনার নবীজি “চাঁদের নিজস্ব আলো নেই” ধারণাটি পেয়েছিলো।
আর হ্যাঁ, অবশ্যই মনে রাখবেন, কুরআন থেকে না জানা যায় “চাঁদের নিজস্ব আলো নেই” না জানা যায় “পৃথিবী গোল”।
আপনি আপনাদের থিউরি অনুযায়ী কি বোঝাতে চাচ্ছেন? আলোর পূর্ণ প্রতিফলন না আংশিক প্রতিফলন?