বিবর্তনবিজ্ঞান

গ্রিসের ক্রিট দ্বীপের ট্রাকিলোস সৈকতে পাওয়া ৬০ লক্ষ বছরের মানবসদৃশ হোমিনিন প্রাণীর পদচিহ্ন : ট্রাকিলোস পদচিহ্ন নিয়ে বিতর্ক কেন?

প্রাক কথন

ক্রিট দ্বীপে ট্রাকিলোস সমুদ্র সৈকতে যে হোমিনিন পদচিহ্ন পাওয়া যায়, তা আধুনিক মানুষের বিবর্তনের ধারা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উস্কে দেয় বিজ্ঞানী মহলে। সেই বিতর্ক কি নিয়ে আমরা জানবো এই প্রবন্ধে।

বিবর্তন তত্ত্ব বেশ কিছু সুপ্রতিষ্ঠিত প্রমাণের উপর ভিত্তি করে সকল পার্থিব জীবের একটি সাধারণ পূর্বপুরুষের দিকে ইঙ্গিত করে। সেই প্রমাণগুলির বিস্তারিত ব্যাখ্যা অন্য কোথাও দেওয়া যাবে। কিন্তু এই প্রবন্ধের জন্য সংক্ষেপে এক দুই পংক্তির মধ্যে উল্লেখ করছি। যেমন প্রথম উদাহরণ হিসেবে, সকল জীবদেহে যে DNA, RNA ও অন্যান্য প্রোটিন পাওয়া যায় তাদের সকলেই একই কাইরালিটি বিশিষ্ট। যদিও অন্য chirality যুক্ত অনু একই রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে। যেমন RNA অনুর সম্ভাব্য 16টি স্টিরিওআইসোমার থাকা সত্ত্বেও কেবল মাত্র একটি স্টিরিওআইসোমার সকল জীবের মধ্যে পাওয়া যায়।

আবার খুব সামান্য কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া সকল জীব একই জেনেটিক কোড ব্যবহার করে। আর যে ব্যাতিক্রম পাওয়া যায় তারাও যে সম্পূর্ণ ভিন্ন সে রকমও কিছু নয়। তারা এই প্রচলিত জেনেটিক কোড থেকেই উদ্ভূত।[1][2]

শুধু তাই না, এই সকল জেনেটিক কোড নতুন করে প্রোগ্রামও করা যায়। [3] অর্থাৎ জেনেটিক কোডগুলিকে যে এরকমই হতে হবে তার কোন মানে নেই। অন্যরকম হতে পারতো। কিন্তু যেহেতু প্রতিটা জীবের উৎপত্তি যেহেতু একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে তাই তারা এই বৈশিষ্ট্য বংশানুক্রমে পূর্ববর্তী প্রজন্ম থেকে লাভ করেছে।

এইরকম আরও অনেক পর্যবেক্ষণ আছে, যা এক সাধারণ পূর্বপুরুষের দিকে ইঙ্গিত করে। এই পর্যবেক্ষণগুলি থেকে বিভিন্ন ব্যাখ্যা ও প্রকল্প দাঁড় করানো গেলেও, বিবর্তন তত্ত্বই কেবল এই পর্যবেক্ষণের সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে সক্ষম। কারণ এই তত্ত্ব কেবল ব্যাখ্যাই দেয় না সাথে এই তত্ত্ব falsifiable evidence তথা মিথ্যা সাব্যস্ত যোগ্য প্রমাণও দিতে সক্ষম।

হোমিনিন কাকে বলে?

আর তাই এই সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে উদ্ভূত সমস্ত পার্থিব জীবকুলকে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন গোষ্ঠীতে বিভক্ত করা হয়। এই বিভাজন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন পদ বা ধাপ থাকে। যেমন ডোমেইন, কিংডম, ফাইলাম, ক্লাস, অর্ডার, ফ্যামিলি, জেনাস বা গণ, স্পিসিস বা প্রজাতি। অনেক ক্ষেত্রে, যেমন মানুষের ক্ষেত্রে, এই বিভাজন করার সময়ে ফ্যামিলির পরে এবং গণের আগে আরেকটি ধাপ থাকে, যার নাম ট্রাইব এবং ট্রাইবের অন্তর্ভুক্ত আরেকটি ধাপ ‘সাব ট্রাইব’।

প্রাইমেট অর্ডার ও এবং হোমিনিডাই (Hominidae) পরিবারের অন্তর্ভুক্ত হোমিনিনি ‘ট্রাইব’-এর সমস্ত সদস্যদের হোমিনিন বা Hominin বলা হয়। আর এই সদস্যদের কেবল মাত্র একটি প্রজাতিই এখন বেঁচে আছে, যাদের নাম Homo sapiens বা মানুষ। অর্থাৎ এই হোমিনিন বলতে অধুনা বিলুপ্ত সেই সমস্ত প্রজাতিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয় যারা মানুষের সাথে বংশপরম্পরায় সম্পর্কযুক্ত। উদাহরণস্বরূপ H. neanderthalensis (নিয়েন্ডারথাল), H. erectus, H. habilis এবং Australopithecus গণের বিভিন্ন প্রজাতি।

হোমিনিড শ্রেণীবিন্যাসের পরিবর্তন

2000 সালের আগে যখন ডিএনএ অ্যানালিসিস তেমন উন্নত হয়নি, তখন বিভিন্ন প্রজাতির সদস্যদের শ্রেণীবিন্যাস করা হতো মূলত তাদের বাহ্যিক গঠন দেখে এবং অন্যান্য প্রজাতির সাথে তাদের সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য তুলনা করে। তখন হোমিনিডাই পরিবারের অন্তর্ভুক্ত মানুষসহ অন্যান্য সদস্যদের শ্রেণীবিন্যাস করা হতো এইভাবে: ফ্যামিলি হোমিনিডাই (মানুষ ও তাদের পূর্বপুরুষ), ফ্যামিলি পনজিডাই (গরিলা, শিম্পাঞ্জি, ওরাংওটাং) আর ফ্যামিলি হোলিবাটিডাই (গিবন আর অন্যান্ন নিম্নবর্গের বানর প্রজাতি)।

পরবর্তীকালে যখন ডিএনএর ক্রমবিন্যাস নির্ধারণ করা গেল এবং তা বিশ্লেষণ করা গেল, তখন এই প্রাইমেটদের চিরাচরিত শ্রেণীবিন্যাস খানিক পরিবর্তন করা হল। এই পরিবর্তন করা হল জিনগত সম্বন্ধের উপর ভিত্তি করে।

ক্রমোচ্চ শ্রেণীবিভাগের ধারায় সাবফ্যামিলি ও গণের মাঝে দুটি নতুন ধাপ গঠন করা হলো, তাদের নাম ট্রাইব আর সাবট্রাইব। এই নতুন শ্রেণীবিন্যাস এর মূল কারণ হলো মানুষ, শিম্পাঞ্জি (Pan troglodytes) ও গরিলা(Gorilla)-এদের মধ্যে যে নিকট জেনেটিক সাদৃশ্য তা প্রদর্শন করা।

হোমিনিডাই বা Hominidae কে দুটি subfamily বা সাবফ্যামিলিতে ভাগ করা হয়, যথা: Homininae বা হোমিনিনাই এবং Ponginae বা পণজিনাই। পনজিনাই ভাগে পড়লো ওরাংওটাং ও তাদের পূর্বপুরুষ। আর হোমিনিনাই ভাগে পড়ল দুটি ট্রাইব, যথা: ট্রাইব গোরিলিনি আর হোমিনিনি। গরিলা ও তাদের পূর্বপুরুষ এই গোরিলিনি ট্রাইবের অন্তর্ভুক্ত।

অন্যদিকে হোমিনিনি ট্রাইবে দুটি সাবট্রাইব আছে। একটি হোমিনিনা বা Hominina, এই ভাগে মানুষ ও তাদের পূর্বপুরুষ, যেমন Homo, Australopithecus আর Ardipithecus অন্তর্ভুক্ত। আর একটি সাবট্রাইব Panina বা প্যানিনা। এই ভাগে পড়লো শিম্পাঞ্জী, বোনোবো ও তাদের পূর্বপুরুষ।

মিওসিন (Miocene) যুগে মনুষ্য প্রজাতির বিবর্তন

মিওসিন যুগ হলো একটি ভূতাত্ত্বিক যুগ, এই যুগের বিস্তার 23.03 থেকে 5.333 মিলিয়ন বছর আগে পর্যন্ত।

কোন প্রজাতির বিবর্তন সম্পর্কে ধারণা পেতে গেলে আমাদের প্রথমেই তার সেই প্রাচীন পূর্বপুরুষকে শনাক্ত করতে হবে, যেখান থেকে এই প্রজাতি বিবর্তিত হয়েছে। মানব প্রজাতির বিবর্তনের ইতিহাস জানার জন্য সেই একই কাজ করা হয়। আমরা সেই শেষ সাধারণ পূর্বপুরুষকে সনাক্ত করতে চেষ্টা করি, যে পূর্ব পুরুষ মানুষ এবং শিম্পাঞ্জির মধ্যে সংযোগ রক্ষা করে।

এই মানুষ ও শিম্পাঞ্জির মধ্যে যে শেষ সাধারণ পূর্বপুরুষ, সেখান থেকেই হোমিনিন বংশধারা উদ্ভূত। আর সেখান থেকেই শিম্পাঞ্জি ও বোনোবোদের বংশধারা আলাদা হয়ে গেছে। হোমিনয়েড বংশধারায় শিম্পাঞ্জি ও বোনোবো বংশধারা যেখান থেকে আলাদা হয়ে গেল, মানুষের দিকে হোমিনিন বংশধারা সেখান থেকেই শুরু। আর এই হোমিনিন বংশধারায় মানুষ এবং তাদের অধুনালুপ্ত সকল পূর্বপুরুষকে সদস্য ভুক্ত করা হয়।

মাওসিন যুগে এই ‘এপ’ প্রজাতির মধ্যে এক বিশাল বৈচিত্র্য পরিলক্ষিত হয়। এই প্রজাতির বহু ফসিল পাওয়া গেছে আফ্রিকা, ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশ। এই প্রজাতির মধ্যে দৈহিক গঠনগত, পরিবেশগত ও বাসস্থান গত এত বৈচিত্র্য লক্ষিত হয় যে, এখনো পর্যন্ত যতগুলি প্রজাতির ফসিল পাওয়া গেছে, তাদের মধ্যে কোনটিকেই মানুষ ও শিম্পাঞ্জির মধ্যে সেই সাধারণ শেষ পূর্বপুরুষ বলে নির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করা যায় না। [4][5]

আর এই ঘটনা অপ্রত্যাশিত নয়। বিবর্তন তত্ত্ব অনুযায়ী এক প্রজাতি থেকে যখন আরেকটি প্রজাতির উৎপত্তি ঘটে তখন তাদের মধ্যে ক্রমবিকাশের ধারা পরিলক্ষিত হয়। যার ফলে একটি প্রজাতিকে নির্দিষ্টভাবে শেষ সাধারণ পূর্বপুরুষ বলে শনাক্ত করা সম্ভব না। তবে আমরা জীবাশ্ম পর্যবেক্ষণ করে এবং বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ বিবেচনা করে এটুকু বুঝতে পারি যে, এই শেষ সাধারণ পূর্বপুরুষের সাথে মানুষের থেকে অন্যান্য জীবিত এপ প্রজাতির সদস্যদের সাথেই বরং সাদৃশ্য বেশি ছিল।

প্রাচীন হোমিনিন

মিউসিন যুগের শেষের দিক থেকেই আফ্রিকা থেকে যে সমস্ত ফসল গুলি পাওয়া যায় তাদের দৈহিক গঠনের মধ্যে অন্যান্য ‘এপ’ প্রজাতির সদস্যদের থেকে অনেক বৈসাদৃশ্য বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হতে শুরু করে। এই সময় থেকে বেশকিছু হোমিনিড প্রজাতির ফসিল পাওয়া যায়, যার মধ্যে এমন কিছু দৈহিক বৈশিষ্ট্য দেখতে পাওয়া যায় যা খালি মানুষের মধ্যেই দেখা যায়, অন্য কোন এপ প্রজাতির মধ্যে দেখা যায় না।

তাই আমরা এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে এই ফসিলগুলি মনুষ্য বিবর্তন ধারার একদম শুরুর দিকের পূর্বপুরুষদেরকেই নির্দেশ করে। যে সমস্ত মনুষ্যসদৃশ্য বৈশিষ্ট্যগুলি এই জীবাশ্ম গুলির মধ্যে চোখে পড়ে তা হল দুই পায়ে হাঁটা এবং অনেক ছোট এবং ভোঁতা শ্বদন্ত।

Sahelanthropus tchadensis: Ten Years After the Disocvery | Science |  Smithsonian Magazine
Sahelanthropus tchadensis

সবথেকে প্রাচীন হোমিনিন জীবাশ্ম কোন পর্যন্ত পাওয়া গেছে সেটা হল চ্যাড থেকে পাওয়া Sahelanthropus tchadensis [6] এবং কেনিয়া থেকে পাওয়া Orrorin tugenensis [7] জীবাশ্ম।

Sahelanthropus প্রায় ছয় থেকে সাত মিলিয়ন বছর পুরনো এই এই জীবাশ্মে একটি বৃহৎ মাথার খুলির সম্পূর্ণ অংশ এবং অন্যান্য হাড়ের টুকরো পাওয়া গেছে। মস্তিষ্কের আয়তন প্রায় তিনশো ষাট সিসি, যা প্রায় শিম্পাঞ্জিদের মতনই। আবার ভ্রু অংশ অনেক বৃহৎ, অনেকটা ঠিক গরিলাদের মত। কিন্তু ফোরামেন ম্যাগনাম গঠন এবং মুখ দেখে মনে হয় Sahelanthropus সোজা হয়ে দাঁড়াতে এবং দুই পায়ে হাঁটতে পারত।[8]

Bipedalism in Orrorin tugenensis revealed by its femora - ScienceDirect
Orrorin tugenensis

অন্যদিকে Orrorin যে ফিমার হাড় পাওয়া গেছে সেখান থেকে বোঝা যায় Orrorin দুই পায়ে হাঁটতে পারত। এইচডি বাসের মধ্যে কোনরকম মাথার খুলি পাওয়া যায়নি তাই তাদের মস্তিষ্কের আয়তন কত ছিল তা জানা যায় না।[9]

এখনো পর্যন্ত প্রাচীন হোমিনিন প্রজাতির সব থেকে ভাল যে জীবাশ্ম পাওয়া গেছে সেটি হল ইথিওপিয়া থেকে পাওয়া Ardipithecus ramidus, যা প্রায় 4.4 মিলিয়ন বছরের পুরনো। এই জীবাশ্মে পাওয়া কঙ্কালটি প্রায় সম্পন্ন সম্পূর্ণ, সাথে দাঁত ও অন্যান্য আরো কিছু অস্থির জীবাশ্ম পাওয়া গেছে।[10] এই Ardipithecus জীবাশ্ম থেকে বুঝা যায় তারা দুই পায়ে হাঁটত এবং ফোরামেন ম্যাগনামের অভিমুখ থেকে বোঝা যায় তারা সোজা হয়ে দাঁড়াতেও পারত।

আধুনিক মানব বিবর্তনের শুরু: Australopithecus

প্রায় 4 মিলিয়ন বছর আগে Australopithecus প্রজাতির জীবাশ্ম পাওয়া যায়, যারা মাটিতে দুপায়ে হাঁটতে পারত কিন্তু অধিকাংশ সময়ে গাছেই কাটাতো। অস্ট্রালোপিথেকাস এর প্রথম নমুনা পাওয়া যায় সাউথ আফ্রিকায় 1924 সালে।[11]

পরবর্তীকালে পূর্ব ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে আরো অনেক জীবাশ্ম পাওয়া যায় যারা হোমিনিন গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত। অস্ট্রালোপিথেকাস গণের সদস্যরা প্রায় তিন মিলিয়ন বছর এই পৃথিবীতে দাপিয়ে বেড়ায়।

সবথেকে জনপ্রিয় অস্ট্রালোপিথেকাস প্রজাতির জীবাশ্মগুলির মধ্যে পূর্ব আফ্রিকা থেকে পাওয়া যায় A. afarensis (3.6–2.9 mya), এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পাওয়া A. africanus (3.2–2.0mya) জীবাশ্মগুলি অন্যতম। পেলভিস হাড়ের নমুনা দেখে এবং পশ্চাত্পদের নমুনা দেখে বোঝা যায় যে তারা সম্পূর্ণ দ্বিপদী ছিল। কিন্তু এদের মস্তিষ্কের আয়তন ছিল 390 থেকে 515cc, যা শিম্পাঞ্জি ও গরিলাদের সমতুল্য। [12]

হোমো গণের বিবর্তন

আমাদের নিজেদের গোত্রের অর্থাৎ হোমো (Homo) গণের প্রথম নিদর্শন পাওয়া যায় তা পাওয়া যায় পূর্ব আফ্রিকা থেকে প্রায় 2.3 মিলিয়ন বছর আগের।[13] এদের মস্তিষ্কের আয়তন প্রায় অস্ট্রালোপিথেকাস এর সমতুল্যই ছিল।

কিন্তু তাদের মোলার বা নিষ্পেষক দাঁতের মধ্যে কিছু পরিবর্তন দেখা যায় অর্থাৎ এই সময় থেকে তাদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন হয়েছে। প্রায় 1.8 মিলিয়ন বছর আগে থেকে আমাদের গোত্রের প্রাচীন সদস্যরা পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করতে শিখেছিল এবং তারা সেই হাতিয়ার ব্যবহার করত শিকার করতে এবং শিকার করা প্রাণীর দেহাবশেষ ছেদন করতে। অর্থাৎ তাদের খাবারে গাছপালা, ফলমূলের সাথে শক্তি সমৃদ্ধ মাংস যুক্ত হয়।

প্রায় সাত লক্ষ বছরের আগে হোমো ইরেকটাস থেকে হোমো হাইডেলবার্জেনসিস (H. heidelbergensis) প্রজাতির জন্ম, এই প্রজাতি দৈহিক গঠন, দাঁতের গঠন এবং বুদ্ধিবৃত্তিতে বর্তমান মনুষ্য প্রজাতির খুব কাছাকাছি বলেই মনে হয়।[14]

এই H. heidelbergensis, যাদের অনেক সময়ে “প্রাচীন মানব” বলে অভিহিত করা হয়। তারা Levallois পদ্ধতিতে তৈরি করা পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করতে জানতো, আর প্রায় 4 লক্ষ বছর আগে তারা আগুনের ব্যবহার শিখেছিল।

থেকে প্রায় আড়াই লক্ষ বছর আগে এই H. heidelbergensis থেকে ইউরোপে নিয়ান্ডার্থল বা H. neanderthalensis প্রজাতির জন্ম, তাদের দৈহিক গঠন, জটিল সামাজিক ব্যবহার এবং মস্তিষ্কের আয়তন প্রায় আধুনিক মানুষের মতনই ছিল। [15][16]

আধুনিক মানব বা হোমো সেপিয়েন্স

আধুনিক মানব বা হোমোসেপিয়েন্স বিবর্তন শুরু আফ্রিকায় প্রায় 2 লক্ষ বছর আগে জীবাশ্ম এবং ডিএনএ বিশ্লেষণ থেকে মনে হয় তারা H. heidelbergensis থেকে উদ্ভূত। [17] [18] উন্নত অস্ত্রের ব্যবহার, বৃহত্তর মস্তিষ্ক, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এই প্রজাতিকে আফ্রিকার জঙ্গলে টিকে থাকতে এবং বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করেছিল।

প্রায় 1 লক্ষ বছর আগে এই প্রজাতি প্রথমে ইউরোপ এবং এশিয়াতে ছড়িয়ে পড়ে, এবং তারপর ধীরে ধীরে অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকা মহাদেশের ছড়িয়ে পড়ে। এইভাবে ছড়িয়ে পড়ার সময় নিয়ান্ডার্থল সহ ইউরোপ ও এশিয়ার অন্যান্য যে সমস্ত প্রজাতিরা ছিল তাদেরকে নির্মূল করে। কিছু কিছু ডিএনএ থেকে বিশ্লেষণ করে মনে হয় যে, তাদের সাথে নিয়ান্ডার্থল প্রজাতির সংমিশ্রণও ঘটে। [19]

বিতর্ক

টিকটালিক বিতর্ক

রিচার্ড ডকিন্স তার বই “The Greatest Show on Earth”-তে এটি খুব সুন্দর উদাহরণ দিয়েছেন। প্যান্ডেরিকথাস বা Pandericthys, যা একটি উভচর সদৃশ্য মাছ, এবং একান্থোস্টাগা বা Acanthostega, যা একটি মৎস্য সদৃশ্য উভচর, হৃদয়ের মাঝে সংযোগকারী একটি প্রজাতির সেরকম কোনো বিবরণ বা জীবাশ্ম পাওয়া যায়নি পেনসিলভেনিয়া ইউনিভার্সিটি নীল সুবিন এবং এডওয়ার্ড এই জীবাশ্ম নিদর্শন খুঁজে বের করতে মনস্থ করলেন। আর তারা আর তারা বিভিন্ন প্রমাণের উপর ভিত্তি করে কানাডার উত্তরে ডেভোনিয়ান যুগের শেষের দিকে পাথরে তল্লাশি চালাতে শুরু করেন। আর এই অনুসন্ধান কার্যে যে জীবাশ্ম তারা খুঁজে পান তাঁর নাম টিকটালিক।

কিন্তু বিবর্তন বিরোধীরা বিতর্ক শুরু করেন যখন টিকটালিকের থেকে প্রাচীন একটি জীবাশ্ম পাওয়া যায়, যেখানে উভচরের পদচিহ্ন অঙ্কিত ছিল। তারা বলে, তার মানে এই জীবাশ্ম প্রমাণ করে টিকটালিক জলজ ও উভচর প্রাণীর মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী জীবাশ্ম হতে পারে না, কারণ এই পদচিহ্ন টিকটালিকের জীবাশ্মের থেকে পুরনো।

কিন্তু চতুষ্পদী জীবের বিচরন শুরু হয় প্রায় 397 মিলিয়ন বছর আগে এবং তার প্রমাণ পাওয়া যায় পোল্যান্ডের কাছে। আর সেখান থেকে বোঝা যায় যে চতুষ্পদী প্রাণী পৃথিবীতে এই টিকটালিক জীবাশ্ম পাওয়ার অনেক আগে থেকেই এ পৃথিবীতে ছিল। আর এই জীবাশ্মের আবিষ্কার প্রমাণ করলো যে আমাদের জলজ প্রাণী থেকে ভূচর নিয়ে এসেছে প্রায় 380 মিলিয়ন বছর বা তার কিছু আগে।

Icthyostega এবং Acanthostega থেকে ভুচর স্থলজ চতুষ্পদী যা প্রমাণ পাওয়া যেত তা 374 থেকে 359 মিলিয়ন বছর আগের। কিন্তু পোল্যান্ডে পাওয়া চতুষ্পদী প্রাণের পদচিহ্নের জীবাশ্ম প্রমাণ করে যে জলজ প্রাণী থেকে ভূচর প্রাণীর বিবর্তন 397 মিলিয়ন বছর আগে।আর এই ভাবেই বিভিন্ন প্রমাণের উপর ভিত্তি করে আমরা বিভিন্ন জীবাশ্মের বয়স নির্ধারণ করে থাকি। যদি নতুন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় তখন সে প্রমাণের উপর ভিত্তি করে নতুন তথ্য নির্ধারণ করা হয়।

গ্রিসের ক্রিট দ্বীপে ট্রাকিলোস সমুদ্র সৈকতে পাওয়া প্রজাতির পদচিহ্ন

নতুন গবেষণা জানাচ্ছে, সবথেকে প্রাচীন যে মনুষ্য সদৃশ্য প্রাণীর পদচিহ্ন পাওয়া গেছিল তা হয়তো আমাদের বর্তমান ধারণা থেকে অনেক পুরনো। 2002 সালে Gerard D. Gierliński গ্রিসের ক্রিট দ্বীপের ট্রাকিলোস সমুদ্র সৈকতে এই পদচিহ্ন প্রথম আবিষ্কার করেন।

Oldest Footক্রিট দ্বীপে পাওয়া হোমিনিন প্রজাতির পদচিহ্নprints
ক্রিট দ্বীপে ট্রাকিলোস সমুদ্র সৈকতে পাওয়া হোমিনিন প্রজাতির পদচিহ্ন

2007 সালে প্রথম এই পদচিহ্নের বয়স আনুমানিক কিভাবে নির্ণয় করা হয়। সেখানে নিওসিন যুগের শেষের দিকের এক “চতুষ্পদী পদচিহ্ন” (tetrapod footprint)-এর বিবরণ দেয়া হয় যা ট্রাকিলোস বা Trachilos অঞ্চলে পাওয়া যায়। এই পদচিহ্ন কতকগুলি মনুষ্য সদৃশ্য বৈশিষ্ট্য বহন করে। তখন এদের বয়স নির্ধারণ করা হয় 5.7 মিলিয়ন বছর।

এই পদচিহ্ন থেকে বিশিষ্ট গুলির সামনে আসে তাদের মধ্যে একটি হলো, এই পদচিহ্ন অন্যান্য প্রাণীর থাবার মতন কোন বৈশিষ্ট্য ছিল না। তারা পায়ের তলায় ভর দিয়ে চলত (plantigrade) এবং পাচ আঙ্গুল বিশিষ্ট ছিল. অর্থাৎ পদচিহ্ন অন্যান্য হোমিনিন প্রজাতির সদস্যদের পদচিহ্নের সাথে অনেকটাই সাদৃশ্যপূর্ণ।

কিন্তু বর্তমান গবেষণা জানাচ্ছে এই বিতর্কিত পদচিহ্ন প্রায় সাড়ে ছয় মিলিয়ন বছর পুরনো, অর্থাৎ আরও তিন লক্ষ বছর পুরানো।[20] নতুন ধারণা দাঁড় করানো হয়েছে এক সামুদ্রিক অণুজীব ফোরামিনিফেরা জীবাশ্ম থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করে।

ট্রাকিলোস পদচিহ্ন বিতর্ক

বিভিন্ন সময়ে পাওয়া বিভিন্ন জীবাশ্ম এবং অন্যান্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করে এই ধরনেরই পাওয়া যেত যে হোমিনিন প্রজাতির উৎপত্তি আফ্রিকা থেকে। কিন্তু ট্রাকিলোস সমুদ্র সৈকতে পাওয়া এই পদচিহ্ন সেই বহুল প্রচলিত ধারণার বিরুদ্ধাচরণ করে। কারণ এই পদচিহ্ন থেকে মনে হয় আদি হোমিনিন গোষ্ঠীর মধ্যে কেবলমাত্র আফ্রিকায় নয় আফ্রিকার বাইরেও সম্পূর্ণ স্বতন্ত্রভাবে কিছু মানব সদস্য সদৃশ্য বৈশিষ্ট্যের বিবর্তন ঘটে ছিল।

Our controversial footprint discovery suggests human-like creatures may  have roamed Crete nearly 6m years ago
পদচিহ্ন বিশ্লেষণ

বিজ্ঞানীরা এতদিন মনে করতেন আধুনিক মানব অর্থাৎ হোমোসেপিয়েন্স-এর উদ্ভব 3 লক্ষ বছর আগে। এই প্রজাতির মধ্যে নিয়ান্ডার্থল জিন বর্তমান, যারা প্রায় 4 লক্ষ 30 হাজার বছর আগে উদ্ভূত হয়েছিল। 1974 সালে তানজানিয়া থেকে প্রাপ্ত বিখ্যাত জীবাশ্ম Australopithecus afarensis, তার বয়স প্রায় 3.2 মিলিয়ন বছর। কিন্তু এই ফসিল ছাড়াও আরো অন্যান্য প্রাচীন হোমিনিন গোষ্ঠীর জীবাশ্ম আফ্রিকান অঞ্চলে পাওয়া গেছে।

Uwe Kirscher- এর মতে এই নতুন ট্রাকোলিস পদচিহ্ন যদি সত্যিই হোমিনিন প্রজাতির হয়ে থাকে তাহলে মানুষের বিবর্তনের চিরাচরিত ধারণা এবং চিত্রকে খানিকটা পরিবর্তন করে, আধুনিক মানুষের উৎপত্তি স্থল আফ্রিকা থেকে ভূমধ্য ইউরোপে নিয়ে চলে আসে।[20] নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এই প্রবন্ধ অনুযায়ী এই পদচিহ্ন সম্ভবত কোনো প্রাচীন দ্বিপদী হোমিনিন গোষ্ঠীর সদস্য তারাই সৃষ্টি তারা চলার সময় তাদের পায়ের আঙ্গুল এবং মেটাটার্সাল ভুমি স্পর্শ করতো।

এই বৈশিষ্ট্যকে বলা হয় plantigrade বা প্ল্যান্টিগ্রেড। কিন্তু প্ল্যান্টিগ্রেড হলেই যে তারা হোমিনিন গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হবে তা নয়, বেবুন, সজারু, ভাল্লুক, ইঁদুর তারাও প্ল্যান্টিগ্রেড। কিন্তু ক্রিট দ্বীপে ট্রাকিলোস সমুদ্র সৈকতে পাওয়া এই পদচিহ্নে পাঁচটি আঙ্গুলের ছাপ পাওয়া যায়।

কিন্তু এই দ্বীপ ভূমধ্যসাগর থেকে বহু লক্ষ বছর ধরে আলাদা এবং সেখান হোমিনিন প্রজাতির অন্য কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না তাই অন্য একটি ব্যাখ্যা হল অন্য কোন প্রজাতির মধ্যে অভিসারী অভিযোজন এর মাধ্যমে মনুষ্য সদৃশ্য পায়ের বৈশিষ্ট্য বিবর্তিত হয়। কিন্তু এই ব্যাখ্যা খুব বেশি গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয় না।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধ জানাচ্ছে এই প্রশ্ন Graecopithecus freyberg প্রজাতির হতে পারে। এই প্রজাতি প্রথম সনাক্ত করা হয় 1944 সালে, যাকে El Graeco নামে ডাকা হতো। এই প্রজাতির খুব সামান্য জীবাশ্ম আবিষ্কার করা গেছে। প্রায় সাত লক্ষ বছর আগে মানুষ এবং শিম্পাঞ্জির বংশধারা যখন পৃথক হয়ে যায় তখনি এই প্রজাতির উৎপত্তি।

এই প্রজাতিকে সনাক্ত করা হয় চোয়াল এবং দাঁতের টুকরোর বিভিন্ন অবশেষ থেকে। দাঁতের অংশবিশেষ থেকে মনে হয় তারা হোমিনিন গোত্রের অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং তারাই হয়তো শিম্পাঞ্জি পরবর্তী প্রজন্ম যাদের থেকে হোমিনিন বংশের প্রথম সদস্য। কেউ কেউ মনে করেন El Graeco এর উদ্ভব ইউরোপে এবং গ্রিসে, কিন্তু পরবর্তীকালে ধারা আফ্রিকায় পরিযাণ করে।

ক্রিপ্ট দ্বীপ থেকে প্রাপ্ত পদচিহ্নের জীবাশ্ম কতকগুলি বিশেষ বৈশিষ্ট্য বহন করে যেমন, পায়ের একটি বৃহৎ বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ এবং অন্যান্য আঙুলগুলি ক্রমশ খর্বাকৃতি। কিন্তু গোড়ালি স্ফীত নয়। আর সেই কারণে নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধ জানাচ্ছে এই পদচিহ্ন এমন কোন প্রাণীর যারা Laetoli, Tanzania তে পাওয়া 3.7 মিলিয়ন বছর আগের পদচিহ্ন রেখে যাওয়া প্রজাতির পূর্বপুরুষ। Laetoli যে পদচিহ্ন পাওয়া গেছিল তা australopithecines প্রজাতির বলে মনে করা হয়।

কোন কোন বিজ্ঞানী মনে করেন ক্রিট দ্বীপে ট্রাকিলোস সমুদ্র সৈকতে প্রাপ্ত এই হোমিনিন পদচিহ্ন প্রমাণ করে যে শিম্পাঞ্জি এবং মানুষের বংশধারা আফ্রিকায় নয় বরং ভূমধ্য অঞ্চলে আলাদা হয়ে যায়। কিন্তু এই ব্যাখ্যার স্বপক্ষে অন্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না।

প্রাইমেট প্রজাতি প্রায় 10 লক্ষ বছর আগে ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে বিচরণ করতো, কিন্তু পরবর্তীকালে আবহাওয়া প্রতিকূল হওয়ায় তারা ইউরোপ অপেক্ষা আফ্রিকা অঞ্চলে অনেক বেশি বেড়ে ওঠে। এখানে একটি বিষয় লক্ষ্য করার মত যে চ্যাড (Chad, Central Africa) অঞ্চলে প্রাপ্ত Sahelanthropus tchadensis প্রায় 6 থেকে 7 মিলিয়ন বছর পুরানো।

উপসংহার

ক্রিট দ্বীপে ট্রাকিলোস সমুদ্র সৈকতে প্রাপ্ত এই পদচিহ্ন হোমিনিন প্রজাতির হলেও আফ্রিকাই যে আধুনিক মানুষের বিবর্তনের আঁতুড়ঘর সেই ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে না। বরং এই জীবাশ্ম ইউরোপ থেকে আফ্রিকার দিকে হোমিনিড প্রজাতির পরিযান নির্দেশ করে। এই জীবাশ্ম বরং Desert Swing-এর ধারণার স্বপক্ষে একটি প্রমাণ প্রদর্শন করে।

এই প্রকল্প অনুযায়ী মনে করা হয় মেসোপটেমিয়া এবং সাহারা অঞ্চলের আবহাওয়া যখন অত্যন্ত শুষ্ক হয়ে যায়, তখন অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের সাথে আমাদের হোমিনিন পূর্বপুরুষরাও ইউরোপ ও এশিয়া থেকে আফ্রিকার দিকে চলে যায় প্রায় 6 থেকে 7 মিলিয়ন বছর আগে।

শেষ কথা, এই আবিষ্কার নুতন প্রশ্ন বা বিতর্ক উস্কে দিলেও, মানুষ, শিম্পাঞ্জী ইত্যাদি প্রাইমেটদের যে এক সাধারণ পূর্বপুরুষ ছিল, সেই সত্যের বিরুদ্ধাচরণ কোন ভাবেই করে না।

তথ্যসূত্র

  1. Koonin, Eugene V, and Artem S Novozhilov. “Origin and evolution of the genetic code: the universal enigma.” IUBMB life vol. 61,2 (2009): 99-111. doi:10.1002/iub.146[]
  2. Santos MA, Moura G, Massey SE, Tuite MF. Driving change: the evolution of alternative genetic codes. Trends Genet. 2004 Feb;20(2):95-102. doi: 10.1016/j.tig.2003.12.009. PMID: 14746991.[]
  3. Chin, J. Expanding and reprogramming the genetic code. Nature 550, 53–60 (2017). https://doi.org/10.1038/nature24031[]
  4. Kunimatsu, Y. et al. A new Late Miocene great ape from Kenya and its implications for the origins of African great apes and humans. PNAS USA 104, 19661-19662, 2007[]
  5. Young, N. M. et al. The phylogenetic position of Morotopithecus. Journal of Human Evolution 46, 163-184, 2004[]
  6. Brunet, M. et al. New material of the earliest hominid from the Upper Miocene of Chad. Nature 434, 752-755, 2005[]
  7. Senut, B. et al. First hominid from the Miocene (Lukeino Formation, Kenya). C. R. Acad. Sci. Paris, Sciences de la Terre et des planètes / Earth and Planetary Sciences 332, 137-144, 2001[]
  8. Zollikofer, C. P. et al. Virtual cranial reconstruction of Sahelanthropus tchadensis. Nature 434, 755-759, 2005[]
  9. Pickford, M. et al. Bipedalism in Orrorin tugenensis revealed by its femora. Comptes Rendus Palevol 1, 1-13, 2002[]
  10. White, T. D. et al. Ardipithecus ramidus and the paleobiology of early hominids. Science 326, 75-86, 2009[]
  11. Dart, R.A. Australopithecus africanus: the southern ape-man of Africa. Nature 115, 195-199, 1925[]
  12. Falk, D. et al. Early hominid brain evolution: a new look at old endocasts. Journal of Human Evolution 38, 695-717, 2000[]
  13. Kimbel, W. H. et al. Systematic assessment of a maxilla of Homo from Hadar, Ethiopia. American Journal of Physical Anthropology 103, 235-262 , 1997[]
  14. Rightmire, G. P. Out of Africa: modern human origins special feature: middle and later Pleistocene hominins in Africa and Southwest Asia. PNAS USA 106, 16046-16050, 2009[]
  15. Rightmire, G.P. Homo in the Middle Pleistocene: Hypodigms, variation, and species recognition. Evolutionary Anthropology 17, 8-21, 2008 []
  16. Hublin, J.J. The origin of Neanderthals. PNAS 45, 169-177, 2009[]
  17. Relethford, J. H. Genetic evidence and the modern human origins debate. Heredity 100, 555-563, 2008 []
  18. Rightmire, G. P. Out of Africa: modern human origins special feature: middle and later Pleistocene hominins in Africa and Southwest Asia. PNAS USA 106, 16046-16050, 2009 []
  19. Green RE, Krause J, Briggs AW, Maricic T, Stenzel U, Kircher M. A draft sequence of the Neandertal genome. Science. 2010 May 7;328(5979):710-722. doi: 10.1126/science.1188021. PMID: 20448178; PMCID: PMC5100745.[]
  20. Kirscher, U., El Atfy, H., Gärtner, A. et al. Age constraints for the Trachilos footprints from Crete. Sci Rep 11, 19427 (2021). [][]


সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"

One thought on “গ্রিসের ক্রিট দ্বীপের ট্রাকিলোস সৈকতে পাওয়া ৬০ লক্ষ বছরের মানবসদৃশ হোমিনিন প্রাণীর পদচিহ্ন : ট্রাকিলোস পদচিহ্ন নিয়ে বিতর্ক কেন?

  • Sujan

    বেশ ভাল লিখেছেন

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *