নবীর বাল্যবিবাহ নিয়ে মুসলিমদের দাবিসমূহের জবাব

Print Friendly, PDF & Email

সূচিপত্র

ভূমিকা

ইসলাম এবং মুসলিমদের বিশ্বাস অনুসারে, ইসলামের শেষ নবী ও রাসূল, নবী মুহাম্মদ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, সর্বসময়ের জন্য অনুসরণীয় সর্বোত্তম আদর্শ। আমি মুসলিমদের এ বিশ্বাসের সাথে সহমত পোষণ করি না। আমি মনে করি না, তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। আমি মনে করি না, তিনি সর্বসময়ের জন্য অনুসরণীয় সর্বোত্তম আদর্শ। আমি তাকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব মনে করি না, সর্বসময়ের জন্য অনুসরণীয় সর্বোত্তম আদর্শ মনে করি না অনেক কারণেই। তার মধ্যে একটি কারণ হচ্ছে, যখন তিনি ৫১ বছর বয়সী তখন তিনি ৬ বছর বয়সী একটি বাচ্চা মেয়েকে বিয়ে করেন। শুধু তাই নয়, যখন তার ৫৪ বছর বয়স এবং বাচ্চা মেয়েটির ৯ বছর বয়স তখন তিনি সেই বাচ্চা মেয়েটির সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করেন। যে বয়সে অনেকের ৬ বছর বয়সের নাতনি থাকে সেই বয়সে সত্যিই তার ৬ বছর বয়সের একটা বাচ্চা মেয়েকে বিয়ে করতে ইচ্ছে হয়েছিলো। যে বয়সে অনেকের ৯ বছর বয়সের নাতনি থাকে সেই বয়সে সত্যিই তার ৯ বছর বয়সের একটা বাচ্চা মেয়ের সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করতে ইচ্ছে হয়েছিলো। আমরা এমন একজন মানুষকেই সর্বসময়ের জন্য অনুসরণীয় সর্বোত্তম আদর্শ বলতে পারি যিনি তার পুরো জীবদ্দশায় এমন কোনো কাজ করেননি যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, কোনোভাবেই ঠিক নয়, কোনোভাবেই উচিত নয়। পেডোফিলিয়া (শিশুকামিতা) কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, কোনোভাবেই ঠিক নয়, কোনোভাবেই উচিত নয়। একজন পেডোফাইল (শিশুকামী) কোনোভাবেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হতে পারেন না, কোনোভাবেই সর্বসময়ের জন্য অনুসরণীয় সর্বোত্তম আদর্শ হতে পারেন না। যার ৫৪ বছর বয়সে ৯ বছর বয়সী একটা বাচ্চা মেয়ের সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করতে ইচ্ছে করে, তাকে যদি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব বলে দাবি করা যায়, সর্বসময়ের জন্য অনুসরণীয় সর্বোত্তম আদর্শ বলে দাবি করা যায়, তাহলে পৃথিবীর যেকোনো মানুষকেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব বলে দাবি করা যায়, সর্বসময়ের জন্য অনুসরণীয় সর্বোত্তম আদর্শ বলে দাবি করা যায়। তাকে সর্বসময়ের জন্য অনুসরণীয় সর্বোত্তম আদর্শ দাবি করার অর্থ পেডোফিলিয়াকে সর্বসময়ের জন্য গ্রহণযোগ্য এবং অনুসরণীয় দাবি করা।

সমালোচনার হাত থেকে নবীর মান বাঁচাতে নবীর সমর্থনে মুসলিমরা অনেক দাবি উপস্থাপন করেন, যে দাবিসমূহ নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে বিচার করলে কেবল অযৌক্তিকতাই পাওয়া যায়। আজকের এই প্রবন্ধের মূল উদ্দেশ্য, মুসলিমদের সেই দাবিসমূহ একে একে তুলে ধরে দাবিসমূহের অসারতা তুলে ধরা।

নবীর বাল্যবিবাহ বিষয়ক হাদিসসমূহ

প্রথমেই সেই সহিহ হাদিসসমূহ তুলে ধরছি যে সহিহ হাদিসসমূহ থেকে আমরা জানতে পারি যে, নবী আয়েশার ছয় বছর বয়সে তাকে বিয়ে করেন এবং নয় বছর বয়সে তার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করেন।

গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৬৭/ বিয়ে (كتاب النكاح)
হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৪
৬৭/৪০. আপন পিতা কর্তৃক নিজ কন্যাকে কোন ইমামের সঙ্গে বিয়ে দেয়া।
وَقَالَ عُمَرُ خَطَبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَيَّ حَفْصَةَ فَأَنْكَحْتُهُ.
‘উমার (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কন্যা-হাফসাহর সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব দিলে আমি তাকে তাঁর সঙ্গে বিয়ে দেই।
৫১৩৪. ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, যখন তাঁর ছয় বছর বয়স তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বিয়ে করেন। তিনি তাঁর সঙ্গে বাসর করেন নয় বছর বয়সে হিশাম (রহ.) বলেন, আমি জেনেছি যে, ‘আয়িশাহ (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে নয় বছর ছিলেন। (৩৮৯৪)(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৬৭/ বিয়ে (كتاب النكاح)
হাদিস নম্বরঃ ৫১৫৮
৬৭/৬০. যে ব্যক্তি নয় বছরের মেয়ের সঙ্গে বাসর করে।
৫১৫৮. ‘উরওয়াহ (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে বিয়ে করেন তখন তাঁর বয়স ছিল ছয় বছর এবং যখন বাসর করেন তখন তাঁর বয়স ছিল নয় বছর এবং নয় বছর তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে জীবন কাটান। (৩৮৯৪)(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৮১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫৪/ বিয়ে-শাদী (كتاب النكاح)
হাদিস নম্বরঃ ৪৭৫৮
২৪৬৫. আপন পিতা কর্তৃক কন্যাকে কোন ইমামের সঙ্গে শাদী দেয়া। উমর (রা) বলেন, নবী (সা) আমার কন্যা-হাফসার সাথে শাদীর প্রস্তাব দিলে আমি তাকে তাঁর সাথে শাদী দেই
৪৭৫৮। মু’আল্লা ইবনু আসাদ (রাঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, যখন তাঁর ছয় বছর বয়স তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে শাদী করেন। তিনি তাঁর সাথে বাসর ঘর করেন নয় বছর বয়সে। হিশাম বলেন, আমি জেনেছি যে, আয়িশা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নয় বছর ছিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫৪/ বিয়ে-শাদী (كتاب النكاح)
হাদিস নম্বরঃ ৪৭৮১
২৪৮৪. যে ব্যক্তি নয় বছরের মেয়ের সাথে বাস রাত্রি অতিবাহিত করে
৪৭৮১। কাবিসা ইবনু উকবা (রহঃ) … উরওয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়িশা (রাঃ) কে শাদী করেন তখন তাঁর বয়স ছিল ছয় বছর এবং যখন বাসর করেন তখন তাঁর বয়স ছিল নয় বছর এবং (মোট) নয় বছর তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে জীবন যাপন করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ১৭/ বিবাহ (كتاب النكاح)
হাদিস নম্বরঃ ৩৩৪৯
৯. পূর্ব বিবাহিতার মৌখিক সম্মতি গ্রহন এবং কুমারীর নীরবতা সম্মতি হিসেবে বিবেচিত হবে
৩৩৪৯। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার ছয় বছর বয়সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বিবাহ করেন এবং আমার নয় বছর বয়সে তিনি আমার সঙ্গে বাসর যাপন করেন
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

গ্রন্থঃ সূনান আবু দাউদ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৬/ বিবাহ (كتاب النكاح)
হাদিস নম্বরঃ ২১১৮
১২৮. অপ্রাপ্ত বয়স্কা মেয়েদের বিবাহ প্রদান।
২১১৮. সুলায়মান ইবন হারব ….. আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (আমার পিতা) আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে যখন বিবাহ দেন, তখন আমি মাত্র সাত বছর বয়সের কন্যা ছিলাম। রাবী সুলায়মান বলেন, অথবা ছয় বছর বয়সের কন্যা ছিলাম। আর তিনি আমার সাথে বাসর করেন, আমার নয় বছর বয়সের সময়ে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

মুসলিমদের দাবি এবং অজুহাতসমূহ

■ কোরআনের কোথাও বলা হয়নি, যখন নবী আয়েশাকে বিয়ে করেন তখন তার বয়স ছিলো ৬ বছর আর যখন তার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করেন তখন তার বয়স ছিলো ৯ বছর

মুসলিমদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যারা এটা মানতে চান না যে, নবী ছয় বছর বয়সী আয়েশাকে বিয়ে করেছেন এবং নয় বছর বয়সী আয়েশার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করেছেন। তাদের বক্তব্য, কোরআনে এমনকিছু বলা হয়নি। কোরআনে নেই বলে তারা নবীর ছয় বছর বয়সী আয়েশাকে বিয়ে করার বিষয়টি অস্বীকার করেন। অনেক মুসলিমকেই আমরা দেখেছি যারা কোরআনের ওপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখেন তবে অনেক হাদিস আছে যা তারা মানতে চান না। যেসব হাদিস ইসলামকে খুব নিখুঁতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে সেইসব হাদিস তারা প্রত্যাখ্যান করেন। তবে, মজার বিষয় হচ্ছে, যেসব হাদিস ইসলামকে প্রশ্নবিদ্ধ করেনা, ইবাদতের জন্য প্রয়োজনীয় সেইসব হাদিস আবার তারা অনায়াসে মেনে নেন।

হ্যাঁ, আমরা যারা কোরআন পড়েছি, তারা এটা সবাই জানি যে, কোরআনের কোথাও এটা বলা হয়নি যে, নবী ছয় বছর বয়সী আয়েশাকে বিয়ে করেছেন এবং নয় বছর বয়সী আয়েশার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করেছেন। আমরা কেউই এটা অস্বীকার করছি না।

কিন্তু, একজন মুসলিমের জন্য কেবল কোরআনে নয়, সহিহ হাদিসসমূহে বিশ্বাস রাখাও জরুরি। কোরআন নবীর জীবনীগ্রন্থ নয়, নবীর জীবন বর্ণনা করা কোরআনের উদ্দেশ্য নয়, পুরো কোরআনে নবীর নামটাই এসেছে মাত্র চারবার। [1] তাই নবী কয়টি বিয়ে করেছেন, কোন স্ত্রীর নাম কি, কত বছর বয়সে কোন স্ত্রীকে বিয়ে করেছেন, বিয়ের সময় কোন স্ত্রীর বয়স কতো ছিলো ইত্যাদি নবীর জীবন সম্পর্কিত খুঁটিনাটি তথ্য কোরআনে থাকবার কথাও নয়।

শুধু কোরআনে ইসলাম পূর্ণতা পায় না, কুরআনের পাশাপাশি হাদিস এবং সিরাতগ্রন্থও জরুরি। হাদিস এবং সিরাতগ্রন্থ ব্যতীত ইসলামের পাঁচ স্তম্ভ কোনোভাবেই সম্ভব নয়। হাদিস এবং সিরাতগ্রন্থ ব্যতীত আমরা যে ইসলামের কথা জানি সে ইসলামের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। সুতরাং, হাদিস প্রত্যাখ্যান করার অর্থ ইসলামকেই প্রত্যাখ্যান করা। হাদিস প্রত্যাখ্যান করে নিজেকে মুসলিম দাবি করার আসলে কোনো অর্থ নেই।

কোরআনে নেই বলে যদি এটা অস্বীকার করা যায় যে, নবী ৫১ বছর বয়সে ৬ বছর বয়সের আয়েশাকে বিয়ে করেছিলেন এবং ৫৪ বছর বয়সে ৯ বছর বয়সের আয়েশার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন, তাহলে নামাজ পড়ার নিয়মও অস্বীকার করা যাবে, হজ্জ করার নিয়মও অস্বীকার করা যাবে। কোরআনে নেই বলে যারা তাদের নবীর কীর্তি মানতে চান না তারা কোন নিয়মে নামাজ পড়বেন? কোন নিয়মেই বা হজ্জ করবেন?

এছাড়াও, কোরআনে নবীর বাল্যবিবাহের বিষয়টি না আসলেও কোরআন কিন্তু ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি এমন বাচ্চা মেয়ের সাথে বিয়ে করে যৌনসংগম করাকে হালাল করেছে

■ নবী আল্লাহর ইচ্ছায় আয়েশাকে বিয়ে করেছিলেন, যৌনতার উদ্দেশ্যে নয়

মুসলিমদের দাবি অনুসারে, নবী আল্লাহর ইচ্ছায় আয়েশাকে বিয়ে করেছিলেন, যৌনতার উদ্দেশ্যে নয়। তারা একটি হাদিস ব্যবহার করে দাবিটি করেন, যে হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি যে, নবী আয়েশাকে বিয়ে করার আগে দুইবার তাকে স্বপ্নে দেখেছিলেন।

গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫৪/ বিয়ে-শাদী (كتاب النكاح)
হাদিস নম্বরঃ ৪৭০৭
২৪৩৪. কুমারী মেয়ের শাদী সম্পর্কে। ইবন আবী মুলায়কা (র) বলেন, ইবন আব্বাস (রা) আয়েশা (রা)-কে বললেন, আপনাকে ছাড়া নবী (সা) আর কোন কুমারী মেয়ে শাদী করেননি।
৪৭০৭। উবায়দুল্লাহ্ ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দু’বার করে আমাকে স্বপ্নযোগে তোমাকে দেখানো হয়েছে। এক ব্যাক্তি রেশমী কাপড়ে জড়িয়ে তোমাকে নিয়ে যাচ্ছিল, আমাকে দেখে বলল, এই হচ্ছে তোমার স্ত্রী। তখন আমি পর্দা খুলে দেখি, সে তুমিই। তখন আমি বললাম, এ স্বপ্ন যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, তবে তিনি বাস্তবে পরিণত করবেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

মুসলিমরা এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়েছেন যে, আল্লাহ নবীকে আয়েশাকে বিয়ে করতে বলেছেন। কিন্তু, আমরা মুসলিমদের এ ব্যাখ্যা সঠিক বলে মেনে নিবো কেন? আমরা যারা আল্লাহর অস্তিত্বেই বিশ্বাস করি না তারা কেনো বিশ্বাস করতে যাবো, আল্লাহই নবীকে এ স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন? আজ রাতে যদি আমি জেনিফার লরেন্সকে স্বপ্নে দেখি এবং তারপর স্বপ্নের ব্যাখ্যা হিসেবে দাবি করি আল্লাহ চান আমি জেনিফার লরেন্সকে বিয়ে করি, তাহলে কি মুসলিমরা আমার দাবিটি মেনে নেবেন?

নবী কি তার ৫৪ বছর বয়সে ৯ বছর বয়সী আয়েশার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপনও আল্লাহর ইচ্ছায় করেছিলেন? না, তিনি করতে চেয়েছিলেন বলেই করেছিলেন।

আল্লাহর উদ্দেশ্য যাইহোক না কেন, তিনি যদি একজন সুবিচারক ঈশ্বর হয়ে থাকেন, তাহলে তিনি কোনোভাবেই কাউকেই একটা বাচ্চা মেয়ের সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করার বৈধতা দেবেন না। ঠিক যেমন তিনি কোনোভাবেই একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করার বৈধতা দেবেন না।

ছয় বছর বয়সের আয়েশাকে নবী বিয়ে না করলে, নয় বছর বয়সের আয়েশার সাথে নবী যৌনসম্পর্ক স্থাপন না করলে আল্লাহ তার কোন পরিকল্পনাটির বাস্তবায়ন করতে পারতেন না? আল্লাহ না অসীম ক্ষমতার অধিকারী, আল্লাহ না তার যা ইচ্ছে তাই করার ক্ষমতা রাখেন? তাহলে তো নবী ছয় বছর বয়সের আয়েশাকে বিয়ে না করলেও আল্লাহ তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারার কথা? আল্লাহর ইচ্ছায় বিয়ে করেছেন বলে নবীর একটি বাচ্চাকে বিয়ে করা এবং তার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করাকে গ্রহনযোগ্য প্রমাণ করা যায় না, বরং আল্লাহকেই আরও প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়। আল্লাহর ইচ্ছায় নবী কোনো নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করলে কি হত্যাটি গ্রহণযোগ্য হয়ে যাবে? না, বরং আল্লাহই প্রশ্নবিদ্ধ হবেন।

■ আবু বকর ছিলেন ইসলামের প্রথম খলিফা। তার সাথে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তুলতেই নবী আয়েশাকে বিয়ে করেছিলেন

আয়েশাকে বিয়ে করে আবু বকরের সাথে নবীর দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলার কোনো প্রয়োজন ছিলো না। তার সাথে নবীর আগে থেকেই দৃঢ় সম্পর্ক ছিলো। আয়েশাকে বিয়ে করার আগে থেকেই তিনি নবীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

এছাড়াও, নবীর আবু বকরের মেয়েকে বিয়ে করে তার সাথে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলার থাকলে তিনি আবু বকরের আরেক মেয়ে আসমা বিনতে আবু বকরকে বিয়ে করতে পারতেন, যিনি তার বোন আয়েশার চেয়ে বয়সে অনেক বড়ই ছিলেন এবং সেসময় বিবাহিত ছিলেন না।

■ একটি হাদিস থেকে জানা যায় আয়েশা কখনোই নবীজির লজ্জাস্থান দেখেননি

আয়েশার সাথে নবী কখনো যৌনসম্পর্ক স্থাপন করেনি প্রমাণ করতে অনেক মুসলিম সুনানে ইবনে মাজাহ গ্রন্থের একটি হাদিসের কথা তুলে ধরেন যে হাদিস থেকে জানা যায়, যে আয়েশা কখনো নবীর লজ্জাস্থানের দিকে তাকায়নি। হাদিসটি তুলে ধরছিঃ

গ্রন্থঃ সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায়ঃ ১/ পবিত্রতা ও তার সুন্নাতসমূহ (كتاب الطهارة وسننها)
হাদিস নম্বরঃ ৬৬২
১/১৩৭. অপরের লজ্জাস্থানের দিকে তাকানো নিষেধ।
২/৬৬২। আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কখনো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর লজ্জাস্থানের দিকে তাকাইনি বা দেখিনি।
তাখরীজ কুতুবুত সিত্তাহ: আহমাদ ২৩৮২৩, ইবনু মাজাহ ১৯২২। তাহক্বীক্ব আলবানী: যঈফ। হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai’f)

হাদিসটি থেকে কোনোভাবেই এটা প্রমানিত হয় না যে, আয়েশার সাথে নবীর কোনো যৌনসম্পর্ক হয়নি। হাদিসটি কেবল এতটুকুই বলছে যে, আয়েশা কখনো নবীর লজ্জাস্থানের দিকে তাকায়নি। হতেই পারে যৌনসংগমের সময় আয়েশা লজ্জায় চোখ বুজে থাকতো বা অন্যদিকে তাকিয়ে থাকতো। হতেই পারে তারা সবসময় রাতেরবেলা অন্ধকারে যৌনসংগম করতো, তাই তাকিয়ে দেখার কিছু ছিলো না।

তাছাড়াও হাদিসটি একটি যঈফ হাদিস, অর্থ্যাৎ দূর্বল হাদিস। আর ইসলামে যঈফ হাদিসের কোনো মূল্য নেই। যেসব হাদিস নিশ্চিত করে যে নবী আয়েশার সাথে সহবাস করেছিলেন সেসব হচ্ছে মুতওয়াতির হাদিস, অর্থ্যাৎ বৃহৎ সংখ্যক রাবীর বর্ণিত হাদিস। বৃহৎ সংখ্যক রাবীর বর্ণিত হাদিসের সত্যতা বা বিশ্বাসযোগ্যতা কমসংখ্যক রাবীর বর্ণিত হাদিসের তুলনায় বেশি।

এছাড়াও, সহিহ বুখারীর দুটি হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি যে, নবী একই রাতে তার সকল স্ত্রীর সাথে যৌনসংগম করতেন। সকল স্ত্রীর সাথে যৌনসংগম করলে নিশ্চয় আয়েশার সাথেও যৌনসংগম করতেন।

গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৬৭/ বিয়ে (كتاب النكاح)
হাদিস নম্বরঃ ৫২১৫
৬৭/১০৩. যে ব্যক্তি একই গোসলে একাধিক স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয়।
৫২১৫. ক্বাতাদাহ (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই রাত্রে সকল স্ত্রীর নিকট গমন করেছেন। ঐ সময় তাঁর ন’জন স্ত্রী ছিল। (২৬৮)(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৫/ গোসল (كتاب الغسل)
হাদিস নম্বরঃ ২৬৮
৫/১২. একাধিকবার বা একাধিক স্ত্রীর সাথে সঙ্গত হবার পর একবার গোসল করা।
২৬৮. আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীগণের নিকট দিনের বা রাতের কোন এক সময়ে পর্যায়ক্রমে মিলিত হতেন। তাঁরা ছিলেন এগারজনবর্ণনাকারী বলেন, আমি আনাস (রাযি.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কি এত শক্তি রাখতেন? তিনি বললেন, আমরা পরস্পর বলাবলি করতাম যে, তাঁকে ত্রিশজনের শক্তি দেয়া হয়েছে। সা‘ঈদ (রহ.) ক্বাতাদাহ (রহ.) হতে বর্ণনা করেন, আনাস (রাযি.) তাঁদের নিকট হাদীস বর্ণনা প্রসঙ্গে (এগারজনের স্থলে) নয়জন স্ত্রীর কথা বলেছেন। (২৮৪, ৫০৬৮, ৫২১৫ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৬৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

■ আয়েশার বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছানোর জন্য নবী তিন বছর অপেক্ষা করেছিলেন

নবী ছয় বছর বয়সী আয়েশাকে বিয়ে করলেও বিয়ের পরপরই আয়েশার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করেননি। বিয়ের তিন বছর পরেই নবী আয়েশার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। নবী কেনো আয়েশার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপনের পূর্বে তিন বছর অপেক্ষা করেছিলেন? মুসলিমরা বলেন, নবী আয়েশার বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছানোর জন্যই তিন বছর অপেক্ষা করেছিলেন। দুঃখজনকভাবে, মুসলিমদের দাবিটি সত্য নয়।

আমরা প্রায় সবাই জানি যে, ইসলামে মূর্তি, পুতুল, প্রাণীর ছবি ইত্যাদি হারাম। মূর্তি, পুতুল, প্রাণীর ছবি ইত্যাদি যেমন বানানো হারাম তেমনি ঘরেও রাখাও হারাম। বেশ কিছু সহিহ হাদিস থেকে আমরা এবিষয়ে নিশ্চিত হতে পারি।

গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ৩৮। পোশাক ও সাজসজ্জা (كتاب اللباس والزينة)
হাদিস নম্বরঃ ৫৪১২
২৬. প্রাণীর ছবি হারাম, বিছানা ইত্যাদিতে অপদস্ত করা ছাড়া প্রাণীর ছবিযুক্ত জিনিস ব্যবহার করা হারাম; যে বাড়িতে কুকুর ও ছবি থাকে সেখানে ফেরেশতারা প্রবেশ করেন না
৫৪১২-(৮৭/…) ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ….. আবূ তালহাহ্ আনসারী (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, ফেরেশতারা সে গৃহে প্রবেশ করেন না, যে গৃহে কোন কুকুর অথবা কোন মূর্তি থাকে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৩৪১, ইসলামিক সেন্টার ৫৩৫৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

গ্রন্থঃ সূনান তিরমিজী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৪৬/ কিতাবুল আদব (كتاب الأدب عن رسول الله ﷺ)
হাদিস নম্বরঃ ২৮০৫
যে ঘরে ছবি বা কুকুর আছে সে ঘরে ফিরিশতা প্রবেশ করেন না।
২৮০৫. আহমদ ইবন মানী’ (রহঃ) ….. রাফি’ ইবন ইসহাক (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি এবং আবদুল্লাহ্ ইবন আবূ তালহা আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু-কে তাঁর অসুস্থতার সময় দেখতে গেলাম। আবূ সাঈদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেনঃ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ঘরে মূর্তি বা ছবি আছে সে ঘরে ফিরিশতা প্রবেশ করেন না
সহীহ, গায়াতুল মারাম ১১৮, মুসলিম, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ২৮০৫ (আল মাদানী প্রকাশনী)
(আবু ঈসা বলেন) এ হাদীসটি হাসান-সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

গ্রন্থঃ সূনান আবু দাউদ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩৬/ আদব (كتاب الأدب)
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪০
৯৩. স্বপ্ন সম্পর্কে।
৪৯৪০. মুসাদ্দাদ (রহঃ) ….. ইবন আব্বাস (রাঃ) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি কোন মূর্তি তৈরী করবে, এর জন্য আল্লাহ্‌ তাকে কিয়ামতের দিন শাস্তি দেবেন, যতক্ষণ না সে তাতে প্রাণের সঞ্চার করতে সক্ষম হবে না
আর যে ব্যক্তি মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনা করে, কিয়ামতের দিন তাকে নির্দেশ দেয়া হবে দু’টি চুলের মধ্যে গিরা দেয়ার জন্য, (যা অসম্ভব)। আর যে ব্যক্তি কান পেতে অন্যের কথা শোনে, যা তারা তাকে শোনতে চায় না, কিয়ামতের দিন তার কানে শিশা গলিয়ে ঢেলে দেয়া হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

গ্রন্থঃ রিয়াযুস স্বা-লিহীন
অধ্যায়ঃ ১৮/ নিষিদ্ধ বিষয়াবলী (كتاب الأمور المنهي عنها)
হাদিস নম্বরঃ ১৬৮৭
৩০৫ : পাথর, দেওয়াল, ছাদ, মুদ্রা ইত্যাদিতে প্রাণীর মূর্তি খোদাই করা হারাম। অনুরূপভাবে দেওয়াল, ছাদ, বিছানা, বালিশ, পর্দা, পাগড়ী, কাপড় ইত্যাদিতে প্রাণীর চিত্র অঙ্কন করা হারাম এবং মূর্তি ছবি নষ্ট করার নির্দেশ
১/১৬৮৭। ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যারা এ জাতীয় (প্রাণীর) মূর্তি বা ছবি তৈরি করে, কিয়ামতের দিন তাদেরকে শাস্তি দেওয়া হবে। তাদেরকে বলা হবে, তোমার যা বানিয়েছিলে তাতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা কর।’’ (বুখারী) (1)
(1) সহীহুল বুখারী ৫৯৫১, ৭৫৫৮, মুসলিম ২১০৮, নাসায়ী ৫৩৬১, আহমাদ ৪৪৬১, ৪৬৯৩, ৪৭৭৭, ৫১৪৬, ৫৭৩৩, ৬০৪৮, ৬২০৫, ৬২২৬, ৬২৯০ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

কিন্তু, সহিহ মুসলিমের ৩৩৭২ নং হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি, নয় বছর বয়সে যখন আয়েশাকে নবীর ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় তখন আয়েশার সাথে তার খেলার পুতুলগুলোও ছিলো।

গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ১৭। বিবাহ (كتاب النكاح)
হাদিস নম্বরঃ ৩৩৭২
১০. পিতা অপ্রাপ্ত বয়স্কা কুমারী কন্যার বিবাহ দিতে পারে
৩৩৭২-(৭১/…) আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ….. আয়িশাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তার সাত বছর বয়সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বিবাহ করেন। তাকে নয় বছর* বয়সে তার ঘরে বধুবেশে নেয়া হয় এবং তার সঙ্গে তার খেলার পুতুলগুলোও ছিল। তাঁর আঠারো বছর বয়সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তিকাল করেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৩৪৬, ইসলামীক সেন্টার ৩৩৪৫)
*তিনি বলেন যে, তার ছয় বছর বয়সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বিবাহ করেন। লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কোন হাদীসে ‘আয়িশাহ্ (রাযিঃ)-এর বিবাহ হওয়ার ছয় বছর আবার কোন হাদীসে সাত বছর বর্ণিত হয়েছে। হাদীসের ব্যাখ্যাকারদের মতে, ঐ সময় আয়িশাহ (রাযিঃ)-এর বয়স ছয় পার হয়ে সাত বছর চলছিল। ফলে কোন হাদীসে ছয় বছরের উপর অতিরিক্ত সময় বাদ দিয়ে ছয় বছর গণনা করা হয়েছে, আবার কোন হাদীসে অতিরিক্ত সময়কে পূর্ণ বছর ধরে সাত বছর গণনা করা হয়েছে। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

বেশকিছু সহিহ হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি, আয়েশা যখন নবীর কাছে ছিলেন তখনও তিনি পুতুল নিয়ে খেলা করতেন এবং নবী তার পুতুল খেলা নিয়ে কোনো আপত্তি করতেন না।

গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৭৮/ আচার-ব্যবহার (كتاب الأدب)
হাদিস নম্বরঃ ৬১৩০
৭৮/৮১. মানুষের সাথে হাসিমুখে মেলামেশা করা।
৬১৩০. ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনেই আমি পুতুল বানিয়ে খেলতাম। আমার বান্ধবীরাও আমার সাথে খেলা করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে প্রবেশ করলে তারা দৌড়ে পালাত। তখন তিনি তাদের ডেকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিতেন এবং তারা আমার সঙ্গে খেলত। (মুসলিম৪৪/১৩, হাঃ ২৪৪০, আহমাদ ২৬০২০) (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৬৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৮৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৬৫/ আচার ব্যবহার (كتاب الأدب)
হাদিস নম্বরঃ ৫৭০০
২৫১৪. মানুষের সাথে হাসিমুখে মেলামেশা করা। ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) বলেন, মানুষের সাথে এমনভাবে মেলামেশা করবে, যেন তাতে তোমার দ্বীনে আঘাত না লাগে। আর পরিবারের সঙ্গে হাসি তামাশা করা।
৫৭০০। মুহাম্মাদ (রহঃ) … আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনেই আমি পুতুল বানিয়ে খেলতাম। আমার বান্ধবীরাও আমার সঙ্গে খেলতো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে প্রবেশ করলে তারা দৌড়ে পালাত। তখন তিনি তাদের ডেকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিতেন এবং তারা আমার সঙ্গে খেলা করত।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ৪৫। সহাবা (রাযিঃ)-গণের ফাযীলাত (মর্যাদা) (كتاب فضائل الصحابة رضى الله تعالى عنهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬১৮১
১৬. উম্মুল মুমিনীন উম্মু সালামাহ্ (রাযিঃ) এর ফাযীলাত
৬১৮১-(৮১/…) ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ….. আয়িশাহ্ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত যে, তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পুতুল নিয়ে খেলা করতেন। তিনি বলেন, তখন আমার নিকট আমার সঙ্গীরা আসতো। তারা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখে আড়ালে যেতো। আর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে আমার নিকট পাঠিয়ে দিতেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬০৬৯, ইসলামিক সেন্টার ৬১০৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

গ্রন্থঃ সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ৩৬/ শিষ্টাচার (كتاب الأدب)
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩২
৬২. পুতুল দ্বারা খেলা করা
৪৯৩২। আয়িশাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবূক অথবা খায়বারের যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবর্তন করলেন। ঘরের তাকের উপর পর্দা ঝুলানো ছিলো। বায়ু প্রবাহের ফলে তার এক পাশ সরে যায় যাতে তার খেলার পুতুলগুলো দৃশ্যমান হয়ে পড়ে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পুতুলগুলো দেখে বললেন, হে আয়িশাহ! এগুলো কি? উত্তরে তিনি বললেন, এগুলো আমার মেয়ে। আর তিনি এগুলোর মধ্যে কাপড়ের তৈরী দু’ ডানাবিশিষ্ট একটি ঘোড়াও দেখতে পেলেন।
তিনি প্রশ্ন করলেনঃ এগুলোর মধ্যে ওটা কি দেখতে পাচ্ছি? তিনি বললেন, ঘোড়া। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তার উপর আবার ওটা কি? তিনি বললেন, দু’টো পাখা। তিনি বললেন, এ আবার কেমন ঘোড়া, যার পাখা আছে! আমি বললাম, আপনি কি শুনেননি যে, সুলাইমান (আঃ)-এর ঘোড়ার কয়েকটি পাখা ছিলো! আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, একথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে দিলেন, যাতে আমি তাঁর সামনের সারির দাঁত দেখতে পেলাম।
(1)
সহীহ।
(1). বায়হাক্বী। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

মূর্তি, পুতুল, প্রাণীর ছবি ইত্যাদি ইসলামে হারাম হলে আয়েশা কেনো পুতুল খেলা করতেন? নবী কেনো তার পুতুল খেলা নিয়ে কোনো আপত্তি করতেন না? নবী কেনো তার পুতুল খেলা সমর্থন করতেন?

সহিহ বুখারীর ৬১৩০ নং হাদিসের ব্যাখ্যায় প্রখ্যাত ইসলামী পণ্ডিত শায়েখ আল-ইসলাম ইমাম আল-হাফিজ ইবনু হাজার আল-আসাকালানী তার সুপ্রসিদ্ধ সহিহ বুখারী ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফাতহুল বারী-তে বলেছেন,

“The playing with the dolls and similar images is forbidden, but it was allowed for ‘Aisha at that time, as she was a little girl, not yet reached the age of puberty.” [2]

বাংলা অনুবাদ:

পুতুল খেলা এবং অনুরূপ কাজ হারাম, কিন্তু তখন আয়েশার জন্য হালাল ছিলো, কেননা তিনি একটি বাচ্চা মেয়ে ছিলেন, তখনও বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছাননি।

বিখ্যাত ইসলামিক ওয়েবসাইট ‘ইসলাম কুয়েশ্চনস অ্যান্ড অ্যানসারস’ একটি ফতোয়ায় আয়েশার পুতুলখেলার হাদিস এবং আয়েশার পুতুলখেলার হাদিস নিয়ে ইবনু হাজারের ব্যাখা উল্লেখ করে বলেছে, বাচ্চাদের জন্য হলে পুতুল হালাল। [3]

আমি মনে করি, ইবনু হাজারের ব্যাখ্যাটাই নয় বছর বয়সী আয়েশার পুতুলখেলার সবচেয়ে যৌক্তিক ব্যাখ্যা। কেননা, যেহেতু ইসলামে মূর্তি, পুতুল, প্রাণীর ছবি ইত্যাদি হারাম সেহেতু নবীর আয়েশার পুতুলখেলা নিয়ে আপত্তি করার কথা ছিলো। কিন্তু নবী আয়েশার পুতুলখেলা নিয়ে কোনো আপত্তি করেননি। এথেকে বোঝা যায়, আয়েশা তখন নাবালিকা ছিলেন, তাই হালাল-হারামের বিষয়টি তার জন্য প্রযোজ্য ছিলো না।

অতএব, উপরিউক্ত আলোচনা থেকে আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি যে,

  • নয় বছর বয়সে আয়েশা বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছাননি।
  • নবী আয়েশার বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছানোর জন্য অপেক্ষা করেননি।
  • নবী একটি বাচ্চা মেয়ের সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন।

তাহলে আয়েশা কতো বছর বয়সে বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছেছিলেন? তিনি ঠিক কতো বছর বয়সে বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছেছিলেন সেটা পরিষ্কারভাবে কোনো হাদিস থেকে জানা যায় না। তবে, সুনান আবূ দাউদের ৪৯৩২ নং হাদিসের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি যে, তিনি ১৪ অথবা ১৬ বছর বয়সের আগে বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছাননি। আবূ দাউদের ৪৯৩২ নং হাদিসে দেখা যায়, নবী তাবূক অথবা খায়বারের যুদ্ধ থেকে ফিরে ঘরে এসে আয়েশার পুতুলগুলো দেখতে পান, আয়েশাকে পুতুলগুলো সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে আয়েশা তার পুতুলগুলোকে তার ‘মেয়ে’ বলেন। খেয়াল করুন, হাদিসটি আমাদের বলছে, তাবূক অথবা খায়বারের যুদ্ধের পরেও আয়েশা পুতুল নিয়ে খেলা করতেন।

খায়বারের যুদ্ধ হয়েছিলো ৬২৮ খ্রিস্টাব্দে আর তাবূকের যুদ্ধ হয়েছিলো ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে। [4] [5] এদিকে, আয়েশার জন্ম হয়েছিলো ৬১৪ খ্রিস্টাব্দে। [6] তাহলে, খায়বারের যুদ্ধের সময় আয়েশার বয়স ছিলো (৬২৮ – ৬১৪) = ১৪ বছর আর তাবূকের যুদ্ধের সময় ছিলো (৬৩০ – ৬১৪) = ১৬ বছর। অর্থ্যাৎ, সুনান আবূ দাউদের ৪৯৩২ নং হাদিসটি আমাদের বলছে যে, আয়েশা ১৪ অথবা ১৬ বছর বয়সেও পুতুল নিয়ে খেলা করতেন। যার অর্থ, ১৪ অথবা ১৬ বছর বয়সের আগে আয়েশা বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছাননি।

তাহলে নবী কেনো আয়েশার জন্য তিন বছর অপেক্ষা করলেন? ইবনে সা’দের তাবাকাত গ্রন্থ থেকে আমরা জানতে পারি, নবীর কাছে সেসময় দেনমোহর পরিশোধ করার মতো অর্থ ছিলো না, তাই তিনি স্ত্রী আয়েশাকে নিজের ঘরে আনছিলেন না।

হিজরতের পর আবু বকর(রাঃ), রাসূল এর নিকট আরজ করলেন, “হে আল্লাহর রাসূল! আপনার স্ত্রীকে ঘরে আনছেন না কেন? প্রিয়নবী বললেন, “এই মুহূর্তে মোহর পরিশোধ করার মতো অর্থ আমার কাছে নেই। আবু বকর (রাঃ) অনুরোধ করলেন- যদি আমার অর্থ কবুল করতেন। তখন রাসূল, আবু বকর (রা:) এর কাছ থেকে অর্থ ঋণ নিয়ে আয়িশা (রাঃ) এর নিকট পাঠিয়ে দিলেন। [7]

এছাড়াও, সহিহ বুখারীর ৩৮৯৪ নং হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি, ছয় বছর বয়সে আয়েশার বিয়ে হওয়ার পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং এতে তার চুল পড়ে যায়। তারপর নয় বছর বয়স হলেই তার মাথায় আবার চুল জমে ওঠে এবং তারপরেই তাকে নবীর ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। এথেকে বোঝা যায়, নবী হয়তো আয়েশার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার জন্য তিন বছর অপেক্ষা করেছিলেন।

গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৬৩/ আনসারগণ (রাযিয়াল্লাহু ‘আনহুম)-এর মর্যাদা (كتاب مناقب الأنصار)
হাদিস নম্বরঃ ৩৮৯৪
৬৩/৪৪. ‘আয়িশাহ (রাঃ) এর সঙ্গে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিবাহ, তাঁর মাদীনাহ উপস্থিতি এবং ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর সঙ্গে তাঁর বাসর।
৩৮৯৪. ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আমাকে বিবাহ করেন, তখন আমার বয়স ছিল ছয় বছর। তারপর আমরা মদিনায় এলাম এবং বনু হারিস গোত্রে অবস্থান করলাম। সেখানে আমি জ্বরে আক্রান্ত হলাম। এতে আমার চুল পড়ে গেল। পরে যখন আমার মাথার সামনের চুল জমে উঠল। সে সময় আমি একদিন আমার বান্ধবীদের সাথে দোলনায় খেলা করছিলাম। তখন আমার মাতা উম্মে রূমান আমাকে উচ্চৈঃস্বরে ডাকলেন। আমি তাঁর কাছে এলাম। আমি বুঝতে পারিনি, তার উদ্দেশ্য কী? তিনি আমার হাত ধরে ঘরের দরজায় এসে আমাকে দাঁড় করালেন। আর আমি হাঁফাচ্ছিলাম। শেষে আমার শ্বাস-প্রশ্বাস কিছুটা প্রশমিত হল। এরপর তিনি কিছু পানি নিলেন এবং তা দিয়ে আমার মুখমন্ডল ও মাথা মাসেহ করে দিলেন। তারপর আমাকে ঘরের ভিতর প্রবেশ করালেন। সেখানে কয়েকজন আনসারী মহিলা ছিলেন। তাঁরা বললেন, কল্যাণময়, বরকতময় এবং সৌভাগ্যমন্ডিত হোক। আমাকে তাদের কাছে দিয়ে দিলেন। তাঁরা আমার অবস্থান ঠিক করে দিলেন, তখন ছিল দ্বিপ্রহরের পূর্ব মুহূর্ত। হঠাৎ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখে আমি হকচকিয়ে গেলাম। তাঁরা আমাকে তাঁর কাছে তুলে দিল। সে সময় আমি নয় বছরের বালিকা। (৩৮৯৬, ৫১৩৩, ৫১৩৪, ৫১৫৬, ৫১৫৮, ৫১৬০, মুসলিম ১৬/৯, হাঃ নং ১৪২২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৬১২)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

আমরা যদি ধরেও নিই যে, নবী সত্যিই আয়েশার বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছানোর জন্য অপেক্ষা করেছিলেন এবং নয় বছর বয়সে আয়েশা বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছেছিলেন, তাতে মুসলিমদের জন্য খুব একটা সুবিধা হয় না। কেননা, একটি মেয়ে বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছালো মানেই এটা নয় যে, মেয়েটি শারীরিক এবং মানসিকভাবে যৌনসম্পর্ক, গর্ভধারণ এবং সন্তান জন্মদানে সক্ষম হয়ে গেলো। বিষয়টি মোটেও এমন নয় যে, আজ একটি মেয়ে তার প্রথম ঋতুস্রাবের মাধ্যমে বয়ঃসন্ধিকালে পা রেখেছে আর তাই কালকেই মেয়েটির সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করা যাবে, তাতে কোনো সমস্যা নাই।

‘Puberty’ (বয়ঃসন্ধি) শব্দটি দ্বারা আসলে কি বোঝায় সেটা আগে বোঝা প্রয়োজন। ‘Puberty’ শব্দটির সংজ্ঞা হচ্ছে,

the period during which adolescents reach sexual maturity and become capable of reproduction. [8]

অর্থ্যাৎ, বয়ঃসন্ধিকাল জীবনের এমন একটি কাল যে কালে একটি ছেলে/মেয়ে যৌন পরিপক্বতা লাভ করে এবং সন্তান জন্মদানে সক্ষম হয়ে ওঠে।

বয়ঃসন্ধিকাল একটি দীর্ঘসময়, যে সময়ে ধীরে ধীরে একটি ছেলে/মেয়ে যৌনসম্পর্ক এবং সন্তান জন্মদানে সক্ষম হতে থাকে। আজ বয়ঃসন্ধিকালে পা দিয়ে কালকেই সক্ষম হয়ে যায়না।

■ একজন পেডোফাইল বাচ্চাদের প্রতি যৌন-আকর্ষণ অনুভব করে, অথচ আয়েশা ব্যতীত নবীর সকল স্ত্রীই পূর্ণবয়স্কা নারী ছিলেন

মুসলিমরা দাবি করেন, আয়েশা ব্যতীত নবীর সকল স্ত্রীই পূর্ণবয়স্কা নারী ছিলেন, তাই নবীকে পেডোফাইল বলা যায়না। কিন্তু, একজন পেডোফাইল যে কেবল বাচ্চাদের প্রতিই যৌন-আকর্ষণ অনুভব করবেন এমন কোনো কথা কোথাও লেখা নেই। অনেক পেডোফাইল আছে যারা কেবল বাচ্চাদের প্রতিই যৌন-আকর্ষণ অনুভব করে। আবার, অনেক পেডোফাইলই আছে যারা বাচ্চাদের প্রতিও যৌন-আকর্ষণ অনুভব করে, বড়দের প্রতিও যৌন-আকর্ষণ অনুভব করে। যেসব পেডোফাইল কেবল বাচ্চাদের প্রতিই যৌন-আকর্ষণ অনুভব করে তাদেরকে বলা হয় এক্সক্লুসিভ পেডোফাইল। আর যেসব পেডোফাইল বাচ্চাদের পাশাপাশি বড়দের প্রতিও যৌন-আকর্ষণ অনুভব করে তাদেরকে বলা হয় নন-এক্সক্লুসিভ পেডোফাইল।

পেডোফিলিয়ার সংজ্ঞায় উইকিপিডিয়া বলছে,

Pedophilia is a psychiatric disorder in which an adult or older adolescent experiences a primary or exclusive sexual attraction to prepubescent children. [9]

অর্থ্যাৎ, পেডোফিলিয়া একটি মানসিক রোগ, যে রোগে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি এখনো বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছায়নি এমন বাচ্চাদের প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করেন।

আয়েশার বয়স নয় বছর হলে নবী তার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করেন, কিন্তু নয় বছর বয়সে আয়েশা বয়ঃসন্ধিকালে ছিলেননা। যার অর্থ, নবী এখনো বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছায়নি এমন একটি বাচ্চা মেয়ের প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করেন। অতএব, পেডোফিলিয়ার সংজ্ঞা অনুযায়ী, নবী একজন পেডোফাইল ছিলেন বললে কোনো ভুল হয় না।

আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিক্যাল ম্যানুয়াল অফ মেন্টাল ডিসঅর্ডারস, পঞ্চম সংস্করণ (DSM-5) অনুযায়ী, তিনটি শর্তেই একজন ব্যক্তিকে পেডোফাইল হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। [10] আসুন জানি, কি কি সেই তিনটি শর্ত:

  • Recurrent, intense sexual fantasies, urges, or behaviors involving sexual activity with a prepubescent child (generally age 13 years or younger) for a period of at least 6 months.
  • These sexual urges have been acted on or have caused significant distress or impairment in social, occupational, or other important areas of functioning.
  • The person is at least 16 years old, and at least 5 years older than the child in the first category. However, this does not include an individual in late adolescence involved in an ongoing sexual relationship with a 12- or 13-year-old.

নবী কি প্রথম শর্তটি পূরণ করে? হ্যাঁ করে, কেননা ছয়মাসের অনেক বেশি সময় ধরেই বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছায়নি এমন একটি বাচ্চা মেয়ের সাথে নবীর যৌনসম্পর্ক ছিলো। যার অর্থ, ছয়মাসের অনেক বেশি সময় ধরেই নবী বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছায়নি এমন একটি বাচ্চা মেয়ের প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করেছেন।

নবী কি দ্বিতীয় শর্তটি পূরণ করে? হ্যাঁ করে, কেননা নবী বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছায়নি এমন একটি বাচ্চা মেয়ের সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন।

নবী কি তৃতীয় শর্তটি পূরণ করে? হ্যাঁ করে, কেননা তখন নবী ছিলেন ৫৪ বছর বয়সী আর আয়েশা ৯ বছর বয়সী।

অতএব, পরিষ্কারভাবেই, আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের DSM-5 অনুযায়ী, নবী একজন পেডোফাইল ছিলেন।

এছাড়াও, কেবল আয়েশাই নয়, একটা দুগ্ধপোষ্য বাচ্চা দেখেও নবী বাচ্চাটিকে বিয়ে করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। ইবনে ইসহাক রচিত সিরাতগ্রন্থ সীরাতে রসূলুল্লাহ থেকে আমরা এবিষয়ে জানতে পারি, [11]

বাল্যবিবাহ 2
সিরাতে রাসুলুল্লাহ (সা.), পৃষ্ঠা নং ৩৫৩

■ গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের মেয়েদের ঋতুস্রাব তাড়াতাড়ি শুরু হয়, সুতরাং তারা তাড়াতাড়ি প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যায়

অনেক মুসলিম দাবি করেন, গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের মেয়েদের ঋতুস্রাব তাড়াতাড়ি শুরু হয়, তাই নয় বছর কিংবা তার আগেই তারা পূর্ণবয়স্কা নারী হয়ে যায়। মুসলিমদের এ দাবিটির কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। কেননা, জলবায়ুর সাথে আদ্যঋতু বা বয়ঃসন্ধির কোনো সম্পর্ক আছে বলে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়না। অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবতা মুসলিমরা যা দাবি করে তার উল্টো কথা বলে। যেমন, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যের মতো দেশে আদ্যঋতুর (প্রথমবার ঋতুস্রাব হওয়া) গড় বয়স যথাক্রমে ১৩.০, ১৩.২ এবং ১৩.৩। আবার, সেনেগাল, তানজানিয়া এবং ইয়েমেনের মতো দেশে আদ্যঋতুর গড় বয়স যথাক্রমে ১৬.১, ১৫.২১ এবং ১৪.৪। [12]

■ তখনকার মানুষের আয়ু কম ছিলো। তখনকার একজন নয় বছর বয়সী নারী এখনকার একজন বিশ বছর বয়সী নারীর মতো ছিলেন

যারা এই দাবিটি করেন, তারা সম্ভবত আয়ু শব্দটির মানেই বোঝেন না। আয়ু শব্দটির ইংরেজি অর্থ হচ্ছে, Life-expectancy. আসুন জানি, Life-expectancy কাকে বলে,

the average period that a person may expect to live. [13]

অর্থ্যাৎ, আয়ু বলতে গড় জীবনকাল বোঝায়, জীবনকাল নয়। অর্থ্যাৎ, ‘তখনকার মানুষের আয়ু কম ছিলো’ কথাটির অর্থ এটা নয় যে তখনকার মানুষের জীবনচক্র দ্রুততর ছিলো। কথাটির অর্থ হচ্ছে, এখনকার তুলনায় তখন অনেক বেশি মানুষ অল্পবয়স্ক অবস্থায় মৃত্যুবরণ করতেন, যার ফলে তখন মানুষের গড় জীবনকাল এখনের তুলনায় কম ছিলো।

বিষয়টি একটি উদাহরণের সাহায্যে বোঝানোর চেষ্টা করি। ধরা যাক, কোনো সমাজে মানুষের আয়ু ছিলো ৩২ বছর বয়স। তার অর্থ এটা নয় যে, সেই সমাজে ৩২ বছর বয়সে একজন মানুষ বুড়ো হয়ে যেতেন। বরং, তার অর্থ এটা যে, সেই সমাজে প্রচুর সংখ্যক মানুষ জন্মের সময় কিংবা, অল্পবয়স্ক অবস্থায় মারা গেছেন, যার ফলে সেই সমাজে মানুষের গড় জীবনকাল কমে গেছে। সুতরাং, সপ্তম শতাব্দীর একটা নয় বছর বয়সের বাচ্চা মেয়ের সাথে বর্তমান সময়ের একজন বিশ বছর বয়সের পূর্ণবয়স্কা নারীর তুলনা ভিত্তিহীন এবং হাস্যকরও!

নবী জীবিত ছিলেন ৬৩ বছর বয়স পর্যন্ত, আয়েশা জীবিত ছিলেন ৬৬ বছর বয়স পর্যন্ত, আসমা বিনতে আবু বকর জীবিত ছিলেন ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত, আবু বকর জীবিত ছিলেন ৬১ বছর বয়স পর্যন্ত। বর্তমান যুগের তুলনায় কি এসব স্বল্পকালের জীবন?

■ আয়েশা বলেছেন, কোন বালিকা নয় বছরে পদার্পণ করলে সে মহিলা বলে গণ্য হবে

সুনান আত-তিরমিজীর একটি হাদিসের ফুটনোটে বলা হয়েছে যে, আয়েশা বলেছেন, কোন বালিকা নয় বছরে পদার্পণ করলে সে মহিলা বলে গণ্য হবে। [14] তার ভিত্তিতে মুসলিমরা দাবি করেন, নয় বছর বয়সেই আয়েশা পূর্ণবয়স্কা নারী হয়ে গিয়েছিলেন।

আমি অনেক খুঁজেও এমন কোনো সহিহ হাদিস কেনো, কোনো যঈফ হাদিসও খুঁজে পাইনি যেখানে আয়েশা বলেছেন, কোন বালিকা নয় বছরে পদার্পণ করলে সে মহিলা বলে গণ্য হবে। কথাটি কেবলই একটি হাদিসের ফুটনোটে পাওয়া যায়। তারপরও ধরে নিচ্ছি, সত্যিই আয়েশা কথাটি বলেছিলেন। কিন্তু, তাতে বিশেষ কিছুই প্রমাণিত হয় না।

আয়েশা যদি বলে থাকেন যে, নয় বছর বয়সেই মেয়েরা পূর্ণবয়স্কা নারী হয়ে যায়, তাহলে তিনি ভুল বলেছেন। তিনি বলেছেন বলেই বিষয়টা সত্য হয়ে যায় না। তিনি যে কথা বলেছেন সে কথাই সে কথাকে সত্য প্রমাণ করে না। তিনি মনে করতেন যে, নয় বছর বয়সেই মেয়েরা পূর্ণবয়স্কা নারী হয়ে যায়। তার মনে করাটা অবশ্যই ভুল ছিলো।

নয় বছর বয়সেই আয়েশাকে নিজের মা বাবাকে ছেড়ে নবীর ঘরে যেতে হয়েছিলো। নয় বছর বয়সেই আয়েশার সংসারজীবন শুরু হয়েছিলো। নয় বছর বয়সেই নবী আয়েশার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। তাই, আয়েশার জন্য ‘নয় বছর বয়সেই মেয়েরা পূর্ণবয়স্কা নারী হয়ে যায়’ মনে করাটা অস্বাভাবিক ছিলো না।

■ আয়েশা বিয়েতে রাজি ছিলেন

ইসলামের কোনো উৎসই বলে না, আয়েশা নিজের মুখে বিয়েতে রাজি বলে জানিয়েছেন।

সহিহ বুখারীর দুটি হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি, ইসলামে কুমারী মেয়েদের জন্য নীরব থাকাকেই বিয়েতে রাজি থাকা বলে গণ্য করা হয়। অর্থ্যাৎ, একটা মেয়ে বিয়ের প্রস্তাবে মন থেকে রাজি থাকুক আর না থাকুক, মেয়েটি যদি প্রস্তাবে নীরব থাকে তাহলেই ইসলামের দৃষ্টিতে মেয়েটি বিয়েতে রাজি। আয়েশাও হয়তো বিয়ের প্রস্তাবে নীরব ছিলেন আর ধরে নেওয়া হয়েছিলো তিনি রাজি। ছয় বছর বয়সী আয়েশা যে নিজের মা বাবাকে ছেড়ে নিজের চেয়ে বয়সে ৪৫ বছরের বড় একটা লোকের কাছে সারাজীবনের জন্য যেতে মন থেকে রাজি ছিলেন তার প্রমাণ কি?

গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৮৯/ বল প্রয়োগের মাধ্যমে বাধ্য করা (كتاب الإكراه)
হাদিস নম্বরঃ ৬৯৪৬
৮৯/৪. যার উপর বল প্রয়োগ করা হয়েছে এমন ব্যক্তির বিয়ে জায়েয হয় না।
৬৯৪৬. ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! মহিলাদের বিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে তাদের অনুমতি নিতে হবে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, কুমারীর কাছে অনুমতি চাইলে তো লজ্জাবোধ করে; ফলে সে নীরব। তিনি বললেনঃ তার নীরবতাই তার অনুমতি। (৫১৩৭; মুসলিম ১৬/৮, হাঃ ১৪২০, আহমাদ ২৪২৪০) (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৯০/ কূটচাল অবলম্বন (كتاب الحيل)
হাদিস নম্বরঃ ৬৯৭০
৯০/১১. বিয়ে
৬৯৭০. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিধবাকে তার মতামত ব্যতীত বিয়ে দেয়া যাবে না এবং কুমারীকে তার অনুমতি ব্যতীত বিয়ে দেয়া যাবে না। তারা বললেন, তার অনুমতি কেমন হবে? তিনি বললেনঃ তার চুপচাপ থাকা।
কেউ কেউ বলেন, যদি কোন লোক কোন বিধবা নারীর মতানুসারে বিয়ে হওয়ার ওপর দু’জন মিথ্যা সাক্ষীর মাধ্যমে কূটকৌশলের গ্রহণ করে আর বিচারকও তাদের এ বিয়েকে কার্যকর করে দেন অথচ স্বামী জানে যে, সে তাকে এর পূর্বে বিয়ে করেনি, তাহলে তার জন্য এ বিয়ে বৈধ ও কার্যকর হয়ে যাবে এবং তার জন্য উক্ত মহিলার সঙ্গে বিবাহিত জীবন যাপনে কোন বাধা নেই। (৫১৩৬) (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৮৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৯৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

তারপরও ধরে নিচ্ছি যে, আয়েশা মন থেকেই বিয়েতে রাজি ছিলেন, কিন্তু তাতে নবীর ছয় বছর বয়সী আয়েশাকে বিয়ে করা এবং নয় বছর বয়সী আয়েশার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করা গ্রহণযোগ্য হয়ে যায় না।

এছাড়াও, ছয় বছর বয়সী একটা বাচ্চা মেয়ে কি নিজের বিয়ে সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে? বিয়ে বিষয়টা তো চকলেট পছন্দ করার মতো নয়।

■ নবী যদি আয়েশাকে অ্যাবিউজ করতেন, তাহলে তিনি নবীর কাছে থাকতেন না

ধরা যাক, একজন পুরুষ প্রায়ই তার স্ত্রীকে ছোট ছোট বিষয় নিয়ে বেধড়ক মারধর করে এবং স্ত্রী তার ওপর হওয়া নির্যাতন সহ্য করে নেন। স্ত্রী মনে করেন, ভুল করলে স্বামী গায়ে হাত তুলতেই পারে, স্বামীর সে অধিকার আছে, মেয়েদের জীবন এমনই হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, একজন নারী তার ওপর হওয়া নির্যাতন মেনে নিলেই কি একজন নারীর ওপর নির্যাতন চালানো সমর্থনযোগ্য হয়ে যায়? অবশ্যই না। ঠিক একইভাবে, আয়েশার সাথে যা হয়েছে তা আয়েশা মেনে নিলেই যা হয়েছে তা সমর্থনযোগ্য হয়ে যায়না।

নয় বছর বয়সী একটা বাচ্চা মেয়ের যোনিতে চুয়ান্ন বছর বয়সী একটা লোক নিজের শিশ্ন প্রবেশ করালে কোনোভাবেই মেয়েটির ভালো লাগার কথা নয়। হয়তো আয়েশাকে বোঝানো হয়েছিলো, তাকে যা সহ্য করতে হয় তাই স্বাভাবিক, সব মেয়েকেই তা সহ্য করতেই হয়। হয়তো তাকে বোঝানো হয়েছিলো, স্বামীকে ‘না’ বলতে নেই, নাহলে আল্লাহ পাপ দেয় আর আল্লাহর ভয়েই তিনি সবটা সহ্য করে নিতেন।

■ তখন বাল্যবিবাহ স্বাভাবিক ছিলো

বর্তমান সময়ে আমরা এটা বুঝি যে, একজন মানুষকে বন্দী করে দাসী বানানো কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয় এবং একটি অপরাধ বলে গণ্য হওয়া উচিত। মধ্যযুগীয় মানুষেরা মনে করতেন না বা বুঝতে পারতেন না যে, একজন মানুষকে বন্দী করে দাসী বানানো কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয় এবং একটি অপরাধ বলে গণ্য হওয়া উচিত। তারা একজন মানুষকে বন্দী করে দাসী বানানো সমর্থনযোগ্য মনে করতেন মানেই এটা নয় যে প্রকৃতপক্ষেই একজন মানুষকে বন্দী করে দাসী বানানো সমর্থনযোগ্য ছিলো। যা অপরাধ বলে গণ্য হওয়া উচিত তা সবসময়ের জন্যই অপরাধ বলে গণ্য হওয়া উচিত। ‘দুইয়ের সাথে দুই যোগ করলে পাঁচ হয়’ কথাটা তখনকার মানুষদের জন্যও মিথ্যা, বর্তমান সময়ের মানুষদের জন্যও মিথ্যা। যদি তখনকার মানুষ ‘দুইয়ের সাথে দুই যোগ করলে পাঁচ হয়’ মনে করে থাকে, তাহলে তারা ভুল মনে করতেন। একইভাবে, তখনকার মানুষ বাল্যবিবাহ ঠিক মনে করতেন মানেই এটা নয় যে তখন সত্যিই বাল্যবিবাহ ঠিক ছিলো। বাল্যবিবাহ তখনও ঠিক ছিলো না আর এখনো ঠিক নয়। এখন যেসব বাল্যবিবাহের বিরোধিতা করা যায়, তখনো সেসব কারণেই বাল্যবিবাহের বিরোধিতা করা যেতো। বিষয়টি এমন নয় যে, তখন বাল্যবিবাহের বিরোধিতা করার কোনো যৌক্তিক কারণ ছিলো না, সময়ের সাথেসাথে যৌক্তিক কারণ তৈরি হয়েছে।

ধরুন, ৫০ বছর পর খ্রিস্টানপ্রধান সমাজে মুসলিমদের হত্যা করা একটি স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়ালো। খ্রিস্টানরা বিশ্বাস করতে লাগলেন, মুসলিমদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই হত্যা করতে হবে, তাদেরকে বেঁচে থাকতে দেওয়া যাবে না। ভাবুন তো, খ্রিস্টানদের কাছে নিরপরাধ মুসলিম হত্যা করা সমর্থনযোগ্য হলেই আপনি নিরপরাধ মুসলিম হত্যাকারীদের নিরপরাধ বলে গণ্য করবেন কিনা!

তখনকার আরবদের কাছে বাল্যবিবাহ সমর্থনযোগ্য হলেও, যিনি সর্বসময়ের জন্য অনুসরণীয় সর্বোত্তম আদর্শ তিনি কখনোই তা সমর্থনযোগ্য মনে করবেন না। তাহলে, ঐসময়ের সাধারণ মানুষ আর সর্বসময়ের জন্য অনুসরণীয় সর্বোত্তম আদর্শ ব্যক্তির মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না। তখনকার মানুষ কোনো ভুল করলে নবীর উচিত ছিলো তাদেরকে সেই ভুল থেকে বের করে আনার চেষ্টা করা। নবী নিজেই যদি সেই ভুল করে থাকেন, তাহলে তিনি আর তার সময়কার সাধারণ মানুষদের থেকে আলাদা হলেন কি করে? বর্তমান সময়ে, আমরা বুঝি যে বাল্যবিবাহ কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। নবী যদি সত্যিই সর্বসময়ের জন্য অনুসরণীয় সর্বোত্তম আদর্শ হয়ে থাকেন তাহলে তিনি তা ১৪০০ বছর আগেই বুঝতেন।

ইসলামপূর্ব যুগে আরবে মদ্যপান স্বাভাবিক ছিলো, নবী এসে মদ্যপান নিষিদ্ধ করেছেন। তিনি কি একইভাবে বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ করতে পারতেন না? অবশ্যই পারতেন। কিন্তু, তিনি তা করেনি, কেন করেনি? কারণ, তিনি বাল্যবিবাহে কোনো সমস্যা খুঁজে পাননি। কারণ, তিনি বাল্যবিবাহ সমর্থন করতেন।

■ নবী তার সময়কার মানুষ ছিলেন, বর্তমান সময়ের মানদণ্ড দ্বারা তাকে আমরা বিচার করতে পারি না

ইসলাম এবং মুসলিমদের বিশ্বাস অনুযায়ী, তিনি কেবল তার সময়কার মানুষদের জন্য পৃথিবীতে আসেননি, তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ, সকল সময়ের সকল স্থানের সকল মানুষের জন্য আদর্শ ব্যক্তি।

তিনি কি তার সময়কার নৈতিকতার মানদণ্ড যেমন ছিলো তেমনই রাখতে চেয়েছিলেন? না, তিনি তার সময়কার নৈতিকতার মানদণ্ডে পরিবর্তন এনেছিলেন। তাকে কেন তার সময়কার নৈতিকতার মানদণ্ড ব্যতীত বিচার করা যাবেনা?

ইসলামে সময়ের সাথেসাথে নৈতিকতার মানদণ্ড পরিবর্তিত হয় না। ইসলামে যা বৈধ তা কিয়ামত পর্যন্ত বৈধ, আর যা অবৈধ তা কিয়ামত পর্যন্ত অবৈধ।

তাছাড়াও, মূলধারার মুসলিমরা ‘বর্তমান সময়ের নৈতিকতার মানদণ্ড’ নয়, বরং তাদের নবীর নৈতিকতার মানদণ্ড অনুসরণ করে চলার চেষ্টা করে।

আয়েশার বাল্যবিবাহ ব্যবহার করে বাল্যবিবাহ ন্যায্য প্রমাণের চেষ্টা করার অনেক উদাহরণ আছে। আমাদের বাংলাদেশে অসংখ্য মুসলিম আছেন যারা বাল্যবিবাহে কোনো সমস্যা তো দেখেনই না, বরং বাল্যবিবাহকে একটি খাস সুন্নত মনে করেন। আর তাই তারা বাংলাদেশের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন মেনে নিতে পারেন না। তারা মনে করেন, নবীর সুন্নত বাল্যবিবাহ তাদের অধিকার, যে অধিকার তাদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের দাবি, তাদেরকে বাল্যবিবাহ করার এবং নিজের মেয়েকে বোনকে বাল্যবিবাহ দেয়ার অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। [15]

■ ইতিহাসের অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিই বাল্যবিবাহ করেছিলেন

অনেক মুসলিম আছেন যারা বুঝতেই পারেন না বা বুঝতে চান না যে, আমরা কেনো নবীর ছয় বছর বয়সের আয়েশাকে বিয়ে করার সমালোচনা করি। তাদের প্রশ্ন, ‘ইতিহাসের অনেক বিখ্যাত মানুষই তো বাল্যবিবাহ করেছিলেন, তাদেরকে নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই কেন?’

কিন্তু, ইতিহাসের অনেক বিখ্যাত মানুষ বাল্যবিবাহ করে থাকলেই কি নবীর বাল্যবিবাহ গ্রহণযোগ্য হয়ে যায়? না! মুসলিমদের এধরণের বক্তব্য টু ক্যুওক্যুই বা আপিল টু হিপোক্রেসি ফ্যালাসির উদাহরণ। ধরুন, আপনাদের পাড়ার এক ছেলে ফাহিম পাড়ার আরেক ছেলে জিসানকে বললো, ‘কিরে তুই আমার ছোটবোন নীলাকে উত্ত্যক্ত করেছিস কেন?’ উত্তরে জিসান আবার বললো, ‘কেন তুই আমার ছোটবোন নদীকে উত্ত্যক্ত করিস নি?’ কি ঘটলো? জিসান নিজের অন্যায়কে ফাহিমের অন্যায় দ্বারা ন্যায্য প্রমাণ করতে চাইলো। কিন্তু, অন্যের অপরাধের অজুহাতে নিজের অপরাধকে ন্যায্য প্রমাণ করা যায় না। ইংরেজিতে‘Two wrongs do not make a right’ বলে একটা কথা আছে। একটি অন্যায় আরেকটি অন্যায়কে বৈধতা প্রদান করেনা। আজ আমি কোনো মেয়েকে টিজ করলে সেটা অবশ্যই আমার অন্যায় হবে, একই কাজ কাল আপনি করলে অবশ্যই সেটা আপনার অন্যায় হবে। আমি করলেই আপনার করা গ্রহণযোগ্য হয়ে যাবে না। একইভাবে, ইতিহাসের অনেক মানুষই বাল্যবিবাহ করেছেন বলে নবীর বাল্যবিবাহ গ্রহণযোগ্য হয়ে যায়না। তারা ভুল করেছিলেন বলে নবীর ভুলটি ঠিক হয়ে যায় না।

নবী কেবলই ইতিহাসের একজন বিখ্যাত মানুষ ছিলেন না। তাকে কোটি কোটি মানুষ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব বলে দাবি করে, সর্বসময়ের জন্য অনুসরণীয় সর্বোত্তম আদর্শ বলে বিশ্বাস করে। ইতিহাসের অনেক বিখ্যাত মানুষই বাল্যবিবাহ করেছিলেন, তবে কাউকেই আমাদের সমাজে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব বলে দাবি করা হয় না, কাউকেই সর্বসময়ের জন্য অনুসরণীয় সর্বোত্তম আদর্শ বলে বিশ্বাস করা হয় না। ইসলামের সমালোচকগণ কেনো নবীর ছয় বছর বয়সী আয়েশাকে বিয়ে করার সমালোচনা করে? নবীকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব বলে দাবি করা হয় বলেই করে, সর্বসময়ের জন্য অনুসরণীয় সর্বোত্তম আদর্শ বলে দাবি করা হয় বলেই করে।

উপসংহার

১৪০০ বছর আগে নবীর একটি বাচ্চা মেয়েকে বিয়ে করা এবং তার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করা নিয়ে বর্তমান সময়ে কেউই আপত্তি করতেন না, যদি তাকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব বলে দাবি করা না হতো, যদি তাকে সর্বসময়ের জন্য অনুসরণীয় সর্বোত্তম আদর্শ বলে দাবি করা না হতো, যদি তাকে তার সময়কার আর দশটা সাধারণ মানুষের মতোই একজন সাধারণ মানুষ বলে মনে করা হতো। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, সর্বসময়ের জন্য অনুসরণীয় সর্বোত্তম আদর্শ ব্যক্তি কখনোই বাল্যবিবাহ করবেন না। তিনি বরং বাল্যবিবাহের বিরোধিতা করবেন, সমাজ থেকে বাল্যবিবাহ দূর করার চেষ্টা করবেন। নবীর মান রক্ষা করার উদ্দেশ্যে সমালোচকদের দাঁত ভাঙা জবাব দিতে গিয়ে মুসলিমরা যে দাবিসমূহ করে বসেন সেই দাবিসমূহের গ্রহণযোগ্যতা নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে বিচার-বিবেচনা করতে বসলে কেবল অযৌক্তিকতাই খুঁজে পাওয়া যায়।


তথ্যসূত্র

  1. How many times name of the holy prophet Muhammad mentioned in Quran? – Answers.com []
  2. Sahih Bukhari 8:73:151 []
  3. He is asking about dolls and three-dimensional toys, and whether that affects his fast
    Islam Q&A, Fatwa No. 49844 []
  4. Battle of Khaybar – Wikipedia []
  5. Expedition of Tabuk – Wikipedia []
  6. Aisha – Wikipedia []
  7. তাবাকাত, ইবনে সা‘দ, পৃষ্ঠাঃ ৪৩ []
  8. Google ‘Puberty’ []
  9. Pedophilia – Wikipedia []
  10. Pedophilia – Psychology Today []
  11. সিরাতে রাসুলাল্লাহ (সাঃ), অনুবাদ, শহীদ আখন্দ, প্রথমা প্রকাশনী, পৃষ্ঠা ৩৫৩ []
  12. International Variability of Ages at Menarche and Menopause: Patterns and Main Determinants []
  13. Google ‘Definition of life expectancy’ []
  14. সুনান আত-তিরমিজী, হাদিস নং ১১০৯ []
  15. ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ নামক কুফরি আইন প্রত্যাহার করে…এসব এনজিও নিষিদ্ধ করতে হবে’ []
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন

Marufur Rahman Khan

Marufur Rahman Khan is an Atheist Blogger from Bangladesh.

9 thoughts on “নবীর বাল্যবিবাহ নিয়ে মুসলিমদের দাবিসমূহের জবাব

  • May 3, 2021 at 11:37 AM
    Permalink

    Ustadh Faraz Malik
    Fellow

    Ustadh Faraz Malik graduated from The Ohio State University and continued his studies abroad in Amman, Jordan, where he taught Arabic at the Qasid Arabic Institute and obtained diplomas in traditional Islamic Studies. He obtained a master’s degree in Islamic Studies from Hartford Seminary and is currently finishing the ʿĀlimiyyah Program at the Qalam Seminary. He also runs Arabic Daily, an online platform dedicated to teaching Arabic.

    Reply
  • May 5, 2021 at 5:19 AM
    Permalink

    সহী হাদিশে বর্নিত উন্মুল মুমীনিন আয়েশার বয়স নিয়ে লজ্জিত, যে সমস্ত মুসলিম ভাইয়ের যত ধরনের সন্দেহ ও প্রশ্ন আছে তাদের সমস্ত উত্তর এই প্রশ্নোত্তর ফাইলে দেওয়া আছে।
    https://drive.google.com/file/d/1cLG2DJYnGvdEZ_FQeMk6bHo13iSwHMh8/view?usp=sharing

    Reply
  • July 3, 2021 at 2:42 AM
    Permalink

    আসীফ নজরোল,মুফতি মাসুদ,মাতাববর ১০০ বছব পরে জাতি আপনাদেবকে কৃতজ্ঞচিততে মনে করবে

    Reply
  • February 3, 2023 at 3:16 AM
    Permalink

    1.ইসলামি নিওম অনুজাই , ১ ) সেই নারিকে সরবচ্চ সম্মান দিতে হবে । ১ ) ওই নারির যদি কোন সামি না থাকে , তাহলে ৩ ) ওই নারির দাশত্ত কালে নারির যদি যউন চাহিদা হই এবং দুজনের সম্মতি থাকে । ৪ ) ওই নারি যেই লকের দাস সেই লকের স্ত্রি দের সম্মতি । ২ঃসেই যুদ্ধে জতি তুই মরতি তাহলে তর বউকে ধরশন করে মেরে ফেলত নাকি ? সেখানে এই যিনিস কে কমায়ে আন্সে ইসলাম । অই দাসি কে নিজের কাজের লক বানাএ রাকতে পারবি।আর যদি , যদি ।।। ওই নারি ইচ্ছা করে তবেই সেক্স করতে পারবে।সরবত্তম হল দাস মুক্ত করা । আর নবির এত গুলা বিয়ে করার কারন শান্তি আনা । নবির সব বউ ছিল বিধবা একজন ছাড়া।এতেই বঝা যাই নবি কত নায় পরায়ন ছিল । আর যয়নব ( রাযিঃ ) আনহুর বিয়েটা ছিল মুলত এইটা প্রথিস্তা করার জন্য যে পালক পত্র কখন = এখন আসি নবির ১১ টা বিয়ে নিয়ে । ১ঃততকালিন আরব সমাজে অধিক বিয়ে কোনো ব্যাপার ছিল না।তাই নবির বউদের দুঃখ হইনাই । ১ নম্বর বউঃ খাদিজা রাযিঃ এর সাথে নবির বিয়ে অতি সাধারন বিয়ে এবং তার ম্রিত্তু পর্যন্ত নবি কন স্ত্রি গ্রহন করেন নি । ২ নম্বর বউঃ তিনিও নবির সাথে সাভাবিক বিয়ে করেন । ৩ নম্বর বউঃ আয়েশা রাযিঃ অতি বুদ্ধিমতি ছিলেন এবং বেশির ভাগ হাদিস তিনি বরননা করেন।আর নবি তার সাথে ১০ বসর বয়সে শংশার করেন । বন্ধু আবু বকর এর সাথে পারিবারিক সম্পর্ক বৃদ্ধি । আগে এটা বুজতে হবে ততকালিন সমাজ আর বরতমান শমাজ এক করলে হবে না।বাল্ল বিবাহ অতি সাধারন বিষয়।সবচেয়ে বড় বিষয় হলো তার কনো প্রব্লেম হইনি এতে আমরা বলার কে ? ৪ নম্বর বউঃ উনার সাথে বিয়ে হয়ার কারন বন্ধু উমর রাযিঃ এর সাথে পারিবারিক সম্পরক স্থাপন । = ৫ নম্বর বউঃ এনার সাথে বিয়ে করার উদ্দেশ্য উত্তরের নাজদি অঞ্চলের সাথে সম্পর্ক স্থাপন । আর উনার সামি উহুদ যুদ্ধে মারা জাওয়ার আগে দুয়া করসিলেন জাতে তিনি উত্তম সামি পান । ৬ নম্বর বউঃ তার সামিও আল্লাহর কাছে দয়া করসিলেন উত্তম সামির জন্য যুদ্ধে ম্রিত্তুর আগে । ৭ নম্বর বউঃ ইনার কথা আমি আগেই বলসি।জয়নব রাযিঃ ৮ নম্বর বউঃ ইনার সাথে বিয়ের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বনু আল মুস্তালিক ( ইহুদি ) বংশের শাথে শম্পরক স্থাপন।খন্দকের যুদ্ধে তিনি গ্রেফতার হন পরে নবি তাকে মুক্তি দিয়ে বিবাহ করেন।পরে তিনি ( নবি ) শত শত যুদ্ধ বন্দিদের মুক্ত করেন । পরে এই বংশর সবাই ১০০ % ইসলাম গ্রহন করে । ৯ নম্বর বউঃ কুরাইশ বংশের শাথে সত্রু ভাব কমানর জন্য তিনি এই বিবাহ করেন।তাই বলে ভাবেন না কুরাইশ রা ইসলাম ধরম গ্রহন করসিল । ১০ নম্বর বউঃইনি ছিলেন বনু নাদিম গত্রের প্রধানের মেয়ে।তিনি যুদ্ধ বন্দি হিশেবে ধরা পরেন এবং নবি মেয়ে।তিনি যুদ্ধ বন্দি হিশেবে ধরা পরেন এবং নবি তাকে মুক্ত করে বিয়ে করেন । তিনি বাবার বিরুদ্ধে ইসলাম পছন্দ করতেন । ১১ নম্বর বউঃ নবি যখন উমরাহ করতে আসেন তখন চাচা আব্বাস এর অনুরধে তাকে বিয়ে করে কুরাইশদের সাথে বন্ধুত্তের সম্পর্কের জন্য তিনি বিয়ে করেন । আর যখন আয়াত নাযিল হল নায়বিচার সহ ৪ টি বিয়ে করতে হবে তখন নবি বললেন , ” তমরা যে যার মত চলে যাউ কিন্তু তারা যেতে চাইনি । তখন আল্লাহ বল্লেন , ” হে নবী ! নিশ্চয় আমি তোমার জন্য তোমার স্ত্রীগণকে বৈধ করেছি যাদেরকে তুমি মোহরানা প্রদান করেছ [ ১ ] এবং বৈধ করেছি তোমার অধিকারভুক্ত দাসিগণকে যাদেরকে আমি যুদ্ধবন্দিনীরূপে দান করেছি [ ২ ] এবং বিবাহের জন্য বৈধ করেছি তোমার চাচাতো ভগিনী , ফুফাতো ভগিনী , মামাতো ভগিনী ও খালাতো ভগিনীকে ; যারা তোমার সঙ্গে দেশ ত্যাগ করেছে [ ৩ ] এবং কোন বিশ্বাসীনী নবীর নিকট নিজেকে নিবেদন করলে এবং নবী তাকে বিবাহ করতে চাইলে ( সেও তোমার জন্য বৈধ । ) [ ৪ ] –এ ( বিধান ) বিশেষ করে তোমারই জন্য ; অন্য বিশ্বাসীদের জন্য নয় ; [ ৫ ] বিশ্বাসীদের স্ত্রী এবং তাদের দাসিগণ সম্বন্ধে যা নির্ধারিত করেছি তা আমি জানি । [ ৬ ] ( এ বিধান এ জন্য ) যাতে তোমার কোন অসুবিধা না হয় । [ ৭ ] আর আল্লাহ ক্ষমাশীল , পরম দয়ালু । ( সুরাহ আহযাব।আয়াত ৫০ ) আর মনে হয় কন দিধা নেই।মানুশ জত বুর হই তত তার সেক্স এর চাহিদা কমতে থাকে।এশব বিয়ে মুলত স্মপরক স্থাপন করতে করেসেন । এবার বুজলেন??

    Reply
  • August 17, 2023 at 11:33 PM
    Permalink

    কিছু ঐতিহাসিক ভ্রান্তির কারণে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর অনেকে ভুল ধারণা পোষণ করতে পারেন.

    আশা করি নিচের আর্টিকেলটি টি সময় নিয়ে চিন্তা করে পড়বেন…..
    (source)
    https://antinastik.blogspot.com/2020/06/blog-post.html?m=1

    Reply
  • September 26, 2023 at 9:53 AM
    Permalink

    আমি পুরো লেখাটি খুব মনযোগ দিয়ে পাঠ করেছি। চমৎকার। কিন্তু আমার একটা প্রশ্ন আছে, “খায়বারের যুদ্ধ হয়েছিলো ৬২৮ খ্রিস্টাব্দে আর তাবূকের যুদ্ধ হয়েছিলো ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে। [4] [5] এদিকে, আয়েশার জন্ম হয়েছিলো ৬১৪ খ্রিস্টাব্দে। [6] তাহলে, খায়বারের যুদ্ধের সময় আয়েশার বয়স ছিলো (৬২৮ – ৬১৪) = ১৪ বছর আর তাবূকের যুদ্ধের সময় ছিলো (৬৩০ – ৬১৪) = ১৬ বছর। অর্থ্যাৎ, সুনান আবূ দাউদের ৪৯৩২ নং হাদিসটি আমাদের বলছে যে, আয়েশা ১৪ অথবা ১৬ বছর বয়সেও পুতুল নিয়ে খেলা করতেন। যার অর্থ, ১৪ অথবা ১৬ বছর বয়সের আগে আয়েশা বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছাননি।“
    পুতুল খেলার সাথে বয়ঃসন্ধিকালের কি সম্পর্ক? ইসলামে কি কোথাও বলা আছে যে, বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছালে সে আর পুতুল খেলতে পারবে না? ধন্যবাদ।

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *