নবী মুহাম্মদ কি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ ছিলেন?
সূচিপত্র
- 1 ভূমিকা
- 2 নবী নার্সিসিস্ট বা আত্মপ্রেমী ছিলেন
- 3 স্ববিরোধী কাজ করতেন নবী
- 4 ভুল ভবিষ্যতবাণী করেছিলেন নবী
- 5 মোজেজা দেখাতে বারবার ব্যর্থতা
- 6 কটুক্তি, গালাগালি, অভিশাপ এবং মিথ্যাচার
- 6.1 বাপদাদার ধর্ম নিয়ে অবমাননা ও কটূক্তি
- 6.2 গোটা সম্প্রদায়কে অভিশাপ দিতেন নবী
- 6.3 প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী মিথ্যুক নবী
- 6.4 মিথ্যা বলার অনুমতি প্রদান
- 6.5 ধর্ম প্রচারের কাজে ঘুষ দিতেন নবী
- 6.6 রেগে গেলে গালাগালি দিতেন নবী
- 6.7 বাপের লিঙ্গ কামড়াতে বলেছেন নবী
- 6.8 কাফেরদের গালি দিতেন নবী
- 6.9 আবু আল-হাকামের নাম বিকৃতি করা
- 7 গোত্রের নিন্দিত ব্যক্তি ছিলেন নবী
- 8 কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং অন্ধবিশ্বাসী
- 9 মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত নবী
- 9.1 মানসিক সমস্যা ছিল নবীর
- 9.2 সাহাবীদের প্রস্রাব খাওয়ায় উৎসাহ দিতেন নবী
- 9.3 দুঃস্বপ্ন দেখে ভয় পেতেন নবী
- 9.4 মুহাম্মদ আত্মহত্যাপ্রবণ ছিলেন
- 9.5 জ্ঞান হারানো সমস্যা ছিল নবীর
- 9.6 হ্যালুসিনেশন হতো নবীর
- 9.7 জিব্রাইলকে একাই দেখতেন নবী
- 9.8 অন্যের মুখে থুথু দিতেন নবী
- 9.9 সাহাবীরা নবীর থুথু গায়ে মাখতো
- 9.10 বাচ্চাদের নিজের থুথু খাওয়াতেন নবী
- 9.11 অন্যকে কুলি করা পানি খাওয়াতেন নবী
- 9.12 সংগীত অপছন্দ করতেন নবী
- 9.13 ছবি আঁকা এবং চিত্রশিল্পীদের প্রতি বিদ্বেষ
- 9.14 কৌতুক অপছন্দকারী, কান্নাকাটি পছন্দকারী
- 10 অপরিচ্ছন্ন স্বভাবের ছিলেন নবী
- 11 বাজে বিচারক ছিলেন নবী
- 12 নারীলোভী যৌনকাতর কামুক নবী
- 12.1 নারীর প্রতি নবীর কোন লোভ ছিল না?
- 12.2 বহুগামী ছিলেন নবী
- 12.3 ৯ স্ত্রী থাকার পরেও দাসী সহবত করতেন নবী
- 12.4 একই দিনে বা রাতে সেক্স ম্যারাথন
- 12.5 রাস্তাঘাটে নারী দেখলে কামাতুর হয়ে যেতেন নবী
- 12.6 ঋতুর সময়ও সহবাস করতেন নবী
- 12.7 হেরেমখানা বানিয়েছিলেন নবী
- 12.8 আয়িশা জানতেন নবীর লাম্পট্যের কথা
- 12.9 ইচ্ছেমত ভোগের আগে মারা যাননি নবী
- 12.10 মুত’আ বিবাহ করেছিলেন নবী
- 13 ধর্ষণকারী ছিলেন নবী
- 14 নারীবিদ্বেষী ছিলেন নবী
- 14.1 খুন হওয়া শিশুরা কোথায় যাবে?
- 14.2 নারীকে ভোগ্যপণ্য বলেছেন নবী
- 14.3 নারীই মানুষের সমস্ত দুর্দশার কারণ
- 14.4 নারীদের বাঁকা বলেছেন নবী
- 14.5 নারী অশুভ বা নারীতে অমঙ্গল রয়েছে
- 14.6 নারী হচ্ছে বিপর্যয়কর
- 14.7 নারী, গাধা এবং কালো কুকুর
- 14.8 পুরুষের থেকে নারীর বুদ্ধি কম হয়
- 14.9 নারীরা অধিক জাহান্নামী
- 14.10 তিনজন ছাড়া সকল নারী অপূর্ণাঙ্গ
- 14.11 নারীদের রাস্তার মাঝ দিয়ে চলা যাবে না
- 14.12 অসুস্থতার কারণে বিবি তালাক দিয়েছিলেন নবী
- 14.13 অপ্রাপ্তবয়ষ্ক মেয়ে বিয়ে এবং সহবাস
- 14.14 বন্ধ্যা নারীদের বিয়ে করা যাবে না
- 14.15 অল্পবয়সী কুমারী মেয়েদের বিয়ে করার পরামর্শ
- 14.16 কুমারী মেয়েদের প্রতি আসক্তি
- 14.17 কুমারীদের যোনীপথ উষ্ণ
- 14.18 স্বামী সিজদার উপযুক্ত
- 14.19 স্বামীর যৌন চাহিদা মেটাতে বাধ্য
- 14.20 স্বামীর চাহিবা মাত্র সহবত করতে হবে
- 14.21 স্ত্রী নির্যাতন করতেন নবী
- 14.22 পরপুরুষের সাথে স্ত্রীকে দেখলে কতল
- 14.23 তালাক দেয়ার অধিকার স্বামীর
- 14.24 তালাকপ্রাপ্তা নারী খোরপোষ পাবে না
- 14.25 ধর্ষণ করার পরে মোহরানা দিয়ে ফয়সালা করা
- 14.26 নারীর খৎনা করা
- 14.27 নারী নেতৃত্ব দিতে পারবে না
- 14.28 সুগন্ধী ব্যবহারকারীরা ব্যভিচারিণী
- 14.29 সাজসজ্জা/সৌন্দর্য্যবৃদ্ধি হারাম
- 15 হিজড়া/ট্রান্সজেন্ডারদের ঘৃণা করতেন নবী
- 16 হোমোফোবিক বা সমকামী বিদ্বেষী
- 17 প্রচণ্ড সাম্প্রদায়িক ছিলেন নবী
- 18 সন্ত্রাসী, বর্বর, লুটেরা ছিলেন নবী
- 18.1 যুদ্ধে ধোঁকাবাজী করতেন নবী
- 18.2 সন্ত্রাসের মাধ্যমে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতেন নবী
- 18.3 মুহাম্মদ হচ্ছেন ত্রাস ও ভীতি সৃষ্টিকারী
- 18.4 নবীর পেশা কি ছিল?
- 18.5 লুটপাটের মাধ্যমে ধনী হয়েছিলেন নবী
- 18.6 লুটের মালের ২০% ভাগ নিতেন নবী
- 18.7 জোরপূর্বক ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করতেন নবী
- 18.8 নিষ্ঠুর এবং শারীরিক নির্যাতনকারী
- 18.9 গালিদাতাকে নির্মমভাবে হত্যা
- 18.10 লাশের সাথেও বর্বরতা
- 19 দাস প্রথার সমর্থক ছিলেন নবী
- 20 মানুষ খুন করতেন নবী
- 21 শিশুদের সাথে অমানবিকতা
- 22 নিষ্পাপ প্রাণি হত্যাকারী ছিলেন নবী
- 23 গাছপালা ধ্বংস করতেন নবী
- 24 আল্লাহর হুকুম অমান্য করেছিলেন
- 25 উপসংহার
- 26 তথ্যসূত্র
ভূমিকা
ছোছোটবেলায় মায়ের মুখে খুব অসাধারণ একটি মানবিক গল্প শুনতাম। গল্পটি ছিল মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং একজন ইহুদি বৃদ্ধাকে নিয়ে। এক ইহুদি বৃদ্ধা প্রতিদিন মহানবীর নামাজে যাওয়ার পথে কাঁটা বিছিয়ে রাখতেন, মহানবী সিজদা করার সময় তাঁর পিঠে উটের নাড়িভুঁড়ি চাপিয়ে দিতেন, নানা ধরনের অত্যাচার করতেন এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করতেন। কিন্তু মানবদরদী, মহাবিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব আমাদের নবীজি সেই বৃদ্ধাকে কখনোই কিছু বলতেন না। মুখ বুজে সব অত্যাচার সহ্য করে আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন, যেন সেই ইহুদি বৃদ্ধাকে আল্লাহ সঠিক পথ দেখান এবং হিদায়াতের জ্ঞান দান করেন।
একদিন ঘটলো এক অবাক কাণ্ড। মহানবী দেখলেন, সেদিন তাঁর রাস্তায় কোনো কাঁটা নেই। কেউ তাঁকে গালি দিচ্ছে না, কেউ তাঁর পিঠে উট কিংবা ভেড়ার নাড়িভুড়ি চাপিয়ে দিচ্ছে না। তিনি তো অবাক হয়ে গেলেন! নামাজ বাদ দিয়েই দৌড়ে গেলেন সেই বৃদ্ধার বাসায়। গিয়ে দেখলেন, বৃদ্ধা অসুস্থ। এরপর মানবতাবাদী মহানবী নিজ হাতে বৃদ্ধার সেবা-শুশ্রূষা করলেন, প্রেম এবং ভালোবাসা দিয়ে তাঁকে সুস্থ করে তুললেন। মহানবীর এই মানবপ্রেম দেখে ইহুদি বৃদ্ধা নিজের ভুল বুঝতে পারলেন এবং লজ্জিত হলেন। পরবর্তীতে তিনি ইসলাম গ্রহণ করলেন এবং দ্বীনের সেবায় নিজের জীবন উৎসর্গ করলেন।
গল্পটি সত্যিই অসাধারণ। ছোটবেলায় যখন গল্পটি শুনতাম, তখন আবেগে চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে যেতো। আহা, আমাদের মহানবী কত ভালো মানুষই না ছিলেন। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে সমানভাবে ভালোবাসতেন। এমন মানুষই তো পৃথিবীর জন্য প্রয়োজন। ছোটবেলায় এই কারণেই মহানবীকে খুব ভালোবাসতাম। মা এরকম আরও অনেক গল্প বলতেন মহানবীকে নিয়ে। সেসব গল্প শুনে মুগ্ধ হয়ে ভাবতাম, আমিও মহানবীর মতো মানবদরদী হবো। আমাকেও কেউ গালাগালি করলে, কটাক্ষ করলে, এমনকি আঘাত করলেও, আমি তাকে ভালোবাসা দিয়ে জবাব দেবো। কখনো তাদের ক্ষতি করব না। এই ভাবনা মাথায় রেখে গুনগুন করে গাইতাম:
নবী মোর পরশ মনি, নবী মোর সোনার খনি, নবী নাম জপে যে জন, সেইতো দোজাহানের ধনী
একটু বড় হবার পরে এই গল্পটা আরো বিস্তারিতভাবে জানার জন্য কোরআন পড়তে শুরু করলাম। স্বাভাবিকভাবেই ধারণা ছিল কোরআন হাদিস এই ধরণের ঐতিহাসিক সত্য ইতিহাসে পরিপূর্ণ থাকবে। কিন্তু কোরআন হাদিসগুলো সব তন্ন তন্ন করে খুঁজলাম। কোথাও এরকম কিছু খুঁজে পেলাম না। আমি খুব খুশি হতাম যদি আসলেই ঘটনাগুলো এরকম হতো। মহানবী হযরত মুহাম্মদকে আমি ছোটবেলা যেরকম জানতাম, সেভাবে পেলেই নিজের কাছে খুব ভাল লাগতো। আসুন এই ওয়াজটি শুনি,
মহানবী নিজের বাপ-দাদার ধর্ম ত্যাগ করেছিলেন। তাতেই থেমে যাননি, তিনি নিয়মিত সেই ধর্মগুলোর সমালোচনাও করতেন। স্বাভাবিকভাবেই, কাফের পৌত্তলিকরা এতে ক্ষিপ্ত হয়েছিল। আজও যদি কোনো মুসলিম তার ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দু হয়ে যায়, কিংবা নাস্তিক হয়ে যায়, তবে মুসলিম সমাজে তার জীবনধারণ করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে যাবে। মহানবী মুহাম্মদের সাথেও নিশ্চয়ই তখন এমন আচরণই করা হয়েছিল। তবে, তিনি তার ধর্ম ত্যাগকারীদের সাথে কেমন আচরণ করেছিলেন? প্রেম ও ভালোবাসা দিয়ে তাদের জয় করেছিলেন, নাকি তাদের শাস্তি দিয়েছিলেন?
কোরআন, হাদিস এবং অন্যান্য ইসলামি ইতিহাসে মহানবী আসলে তার সমালোচকদের, তাঁকে কটাক্ষকারীদের সাথে কী ধরনের আচরণ করেছিলেন, তা খুঁজে দেখা আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, হাদিসের গ্রন্থগুলো ঘেঁটে আমি একেবারেই ভিন্ন এক মুহাম্মদকে আবিষ্কার করলাম! সেই ভিন্ন মুহাম্মদের কথাই এখানে তুলে ধরছি। লেখাটি বেশ বড় হবে। আশা করি পাঠকরা মনোযোগ দিয়ে পুরোটা পড়বেন।
বন্ধু নির্বাচনে আমি ভীষণ রকম সচেতন থাকি সবসময়। একজন মানুষের সাথে বন্ধুত্ব মানে তার সাথে কথা বলা, বিপদের দিনে পাশে দাঁড়ানো, সুখ দুঃখের বিষয়গুলো শেয়ার করা। তাই খুব সচেতনভাবে এমন বন্ধু আমি নির্বাচন করি না, যাদের সাথে আমার মন মানসিকতার মিল নেই। যখন আমি কোন মানুষের সাথে পরিচিত হই, তিনি কেমন মানুষ তা বিবেচনা করার জন্য আমি প্রথমেই তিনটি বিষয় বিবেচনায় রাখি-
- উনি ধর্মীয়ভাবে সাম্প্রদায়িক কিনা। ভিন্ন ধর্মের মানুষদের ঘৃণা করেন কিনা।
- নারী, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের প্রতি উনার দৃষ্টিভঙ্গি কেমন। উনি নারীদের পুরুষদের চাইতে নিচু স্তরের মানুষ মনে করেন কিনা।
- দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ যেমন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, আদিবাসী, অবাঙালিদের প্রতি উনার দৃষ্টিভঙ্গি কেমন।
এই তিনটি বিষয় বিবেচনার পরেই আমি সাধারণত সিদ্ধান্তে আসি যে, তিনি ভালো মানুষ নাকি খারাপ মানুষ। এমন মানুষের সাথে মেশা, বন্ধুত্ব করা বা আলাপ করা উচিত হবে কিনা, তা বেশিরভাগ সময়ই এই তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। তবে এখানেই বিষয়টি শেষ হয় না। এরপরেও আমি দেখি, তিনি দুর্নীতিবাজ কিনা, দুর্বলের ওপর অত্যাচার করেন কিনা, বিশেষ করে বাসার কাজের ছেলে-মেয়েদের সাথে তার আচরণ কেমন। এগুলোর যেকোনো একটি বিষয় যদি নেতিবাচক দেখি, তাহলে সেই মানুষের সাথে আমার বন্ধুত্ব আর টেকে না। আমি ধীরে ধীরে তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি এবং তাঁর সাথে সম্পর্ক রাখতে আর আগ্রহী থাকি না। তবে, শুধু এই কয়েকটি বিষয়ই যে বিবেচনা করি, তা নয়। আরও অনেকগুলো বিষয়ই আমি বিবেচনায় রাখি।
এই যে মানুষকে বিচার বিশ্লেষণ, এটা অত্যন্ত জরুরি বলেই আমার মনে হয়। এমনকি, আমার ভাই বোন আত্মীয়স্বজনদের মধ্যেও যদি এরকম স্বভাবের কাউকে আমি খুঁজে পাই, তার বা তাদের সাথে সম্পর্ক রাখতে, বা আড্ডা দিতে আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না। বন্ধু বা কাছের মানুষ কিংবা প্রয়োজন হিসেবে বিবেচনা করতে এই বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ্য রাখতেই হয়। নতুবা আমি নিজের কাছেই নিজে ছোট হয়ে যাবো। কিন্তু পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে কাউকে বিবেচনা করতে হলে নিশ্চয়ই আরো অনেকগুলো বিষয় মাথায় রাখতে হবে। আরো অনেক বিশ্লেষণের দরকার হবে। কারণ এর সাথে জড়িত আছে সাধারণ মানুষের অনুসরণ করার প্রবণতা। ভুল মানুষকে সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে স্থান দেয়া হলে সাধারণ মানুষ না বুঝেই তাকে অনুসরণ করতে চাইবে। যার কারণে তারাও সেই মানুষের বৈশিষ্ট্যগুলো ধারণ করবে।
নবী মুহাম্মদ নাকি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ ছিলেন। একজন ভাল মানুষের মধ্যে আমরা কী কী গুণাবলী প্রত্যাশা করি? তিনি কাউকে খুন করবেন না, কাউকে ধর্ষণ করবেন না, কারোর সম্পদ লুট করবেন না, কাউকে জোরজবরদস্তি করে কোন কাজে বাধ্য করবে না, সাম্প্রদায়িক চিন্তাভাবনা পোষণ করবে না, নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবেন এবং তাদের সমতা বিষয়ে সচেতন থাকবেন, সংখ্যালঘু বা অন্য ধর্মের মানুষকে সমমর্যাদার মানুষ হিসেবে গণ্য করবেন, এইসব। এইসব গুণাবলীর কথা বিচার বিবেচনা করলে, নবী মুহাম্মদকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ তো দুরের কথা, নিদেন পক্ষে একজন ভাল মানুষও কি বলা সম্ভব?
নবী নার্সিসিস্ট বা আত্মপ্রেমী ছিলেন
আত্মরতিমূলক ব্যক্তিত্ব ব্যাধি ( Narcissistic Personality Disorder নার্সিসিস্টিক পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার) [1] হলো এমন একটি ব্যাপক ও দীর্ঘকালস্থায়ী প্রবণতা যা মানুষের আচরণে বা চিন্তায় “অপরের প্রশংসা পাওয়ার অত্যন্ত প্রবল চাহিদা” দেখা যায়। এই ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রায় সবাই বিশ্বাস করে যে তারা তাদের চারপাশের মানুষদের চাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তাকে বিশেষভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে কিংবা তাকে সবচাইতে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। সেটি কেউ না করলে তারা বিরক্ত হয় এবং মাঝেমাঝে ক্ষিপ্ত আচরণও করে। ছোটবেলা যদি কারও এমন কাটে যে, তাকে কেউ পাত্তা দিচ্ছে না, তার কথা কেউ মন দিয়ে শুনছে না, এরকম শিশুদের মধ্যে অন্যের প্রশংসা বা গুরুত্ব পাওয়ার একটু বেশিই চেষ্টা থাকতে পারে। বেশিরভাগ বাচ্চাদের মধ্যেই দেখবেন, অন্যের দৃষ্টি আকর্ষনের একটি স্বাভাবিক প্রবণতা তাদের মধ্যে থাকে। এই আচরণ দীর্ঘস্থায়ী হয়ে যায় এই রোগে আক্রান্ত মানুষের মধ্যে। বড় হওয়ার পরে এই সমস্যা নার্সিসিজমের দিকে মোড় নিতে পারে। ‘আত্মরতিমূলক ব্যক্তিত্ব ব্যাধি’তে আক্রান্তরা প্রায়ই অপরের প্রতি উন্নাসিক ও তাচ্ছল্যপূর্ণ মনোভাব প্রদর্শন করে। তারা সাধারণত নানা ছলচাতুরী বা কপটতার মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু মানুষদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার চেষ্টায় রত থাকেন, তাদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় সর্বদা নিয়োজিত থাকেন এবং নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হলে তাদের প্রতি ক্ষিপ্ত হয় এবং অভিশাপ দিতে থাকেন।
এই রোগে আক্রান্তদেরকে “স্বকামী” (narcissist) বা “আত্মরতি”তে (narcissism ) আক্রান্ত হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে। এরা মাঝেমাঝে মেসিয়াহ কমপ্লেক্স ( ত্রাণকর্তা কমপ্লেক্স)[2] – এ আক্রান্ত হতে পারে। মেসিয়াহ কমপ্লেক্স হল মনের এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি বিশ্বাস করে যে সে আজ বা অদূর ভবিষ্যতে সকলের একজন ত্রাণকর্তা হয়ে উঠবে, এবং সাধারণ জনগণের উচিত এটি মেনে নিয়ে তাকে রাজা বা নেতা বা সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ হিসেবে গ্রহণ করা।
নবী নিজেকে ভালবাসতে নির্দেশ দিয়ে গেছেন
ইসলাম ধর্মের নবী মুহাম্মদ তার উম্মতদের নির্দেশ দিয়ে গেছেন, তাকে ভালবাসতে। একজন প্রকৃত মুমিনের কাছে তার পিতামাতার চাইতেও নবী বেশি প্রিয় হতেই হবে। নইলে সে মুমিনই নয়। নবীকে ভালবাসতে হবে, এই কথাটি যদি নবী নিজে ছাড়া অন্য কেউ বলতো, তাহলে আপত্তি ছিল না। কিন্তু খোদ নবী নিজেই তাকে ভালবাসতে নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন, বিষয়টি অত্যন্ত হাস্যকর। ঠিক যেমন সিনেমার জেনারেল আলাদিন, কিংবা কোন সামরিক শাসক তার অনুসারীদের তাকে ভালবাসতে ও শ্রদ্ধা করতে বাধ্য করতো। গলায় চাপাতি ধরে ভালবাসা আদায় রীতিমত। একটা বাঙলা সিনেমা ছিল, ভালবাসা দিবি কিনা বল! [3]
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ২/ ঈমান (বিশ্বাস)
পরিচ্ছেদঃ ২/৮. আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ভালোবাসা ঈমানের অন্তর্ভুক্ত।
১৪. আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সেই আল্লাহর শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তোমাদের কেউ প্রকৃত মু‘মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার নিকট তার পিতা ও সন্তানাদির চেয়ে অধিক ভালবাসার পাত্র হই। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
নিজের প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকতেন
নবী মুহাম্মদ-এর স্ব-প্রশংসা এবং সাহাবীদের সামনে নিজেকে শ্রেষ্ঠ হিসেবে উপস্থাপন করার প্রবণতা ছিল। একজন নেতা সাধারণত বিনয়ী, নম্র, এবং নিজের গুণাবলীর প্রচার থেকে বিরত থাকেন। অথচ, যদি কেউ নিজেই নিজের শ্রেষ্ঠত্বের দাবি করেন, তবে সেটি প্রশ্ন তুলতে পারে তার প্রকৃত শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে। ইসলামের মূল শিক্ষা অনুযায়ী, নবী মুহাম্মদ ছিলেন বিনম্র, ধৈর্যশীল এবং সবার জন্য আদর্শ। তবে, হাদিসের বিভিন্ন বর্ণনায় দেখা যায় যে, তিনি সাহাবীদের মাঝে নিজেকে শ্রেষ্ঠতম হিসেবে উপস্থাপন করতেন এবং তার প্রশংসায় খুশি হতেন। একজন আদর্শ নেতার মধ্যে এমন আচরণ চাটুকারবেষ্টিত থাকা এবং সমালোচনা গ্রহণ না করতে পারার স্বৈরাচারী মনোভাবের বিকাশ ঘটায় [4]
সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
অধ্যায়ঃ ৪৬/ রাসূলুল্লাহ ﷺ ও তার সাহাবীগণের মর্যাদা
পরিচ্ছেদঃ ৬৪. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণের মর্যাদা
৩৮৯৫। আয়িশাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মাঝে সে-ই ভাল যে তার পরিবারের নিকট ভাল। আর আমি আমার পরিবারের নিকট তোমাদের চাইতে উত্তম। আর তোমাদের কোন সঙ্গী মৃত্যুবরণ করলে তার সমালোচনা পরিত্যাগ করো।
সহীহঃ সহীহাহ (২৮৫)।
আবূ ঈসা বলেন, সাওরীর হাদীস হিসেবে এ হাদীসটি হাসান গারীব সহীহ। খুব কম সংখ্যক লোকই এটি সাওরী হতে বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসটি হিশাম ইবনু উরওয়াহ-তার পিতা হতে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে এই সনদে মুরসালরূপেও বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
Narrated ‘Aishah: that the Messenger of Allah (ﷺ) said: “The best of you is the best to his wives, and I am the best of you to my wives, and when your companion dies, leave him alone.”
উপরের হাদিসটির ইংরেজি অনুবাদটি পড়ুন। সত্য হচ্ছে, দাসী সহবত নিয়ে স্ত্রীদের সাথে তার ঝগড়ার ফলাফল স্বরূপ, তিনি আল্লাহর আয়াত নামিয়ে স্ত্রীদের হুমকি দিতেন তালাক দেয়ার [5], এই বিষয়ে বিস্তারিত পড়তে পারেন [6]
নবী যদি তোমাদের সবাইকে তালাক দিয়ে দেয় তবে সম্ভবতঃ তার প্রতিপালক তোমাদের পরিবর্তে তাকে দিবেন তোমাদের চেয়ে উত্তম স্ত্রী- যারা হবে আত্মসমপর্ণকারিণী মু’মিনা অনুগতা, তাওবাহকারিণী, ‘ইবাদাতকারিণী, রোযা পালনকারিণী, অকুমারী ও কুমারী।
— Taisirul Quran
যদি নাবী তোমাদের সকলকে পরিত্যাগ করে তাহলে তার রাব্ব সম্ভবতঃ তাকে দিবেন তোমাদের অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর স্ত্রী যারা হবে আত্মসমর্পনকারিণী, বিশ্বাসিনী, আনুগত্যকারিনী, তাওবাহকারিনী, ইবাদাতকারিনী, সিয়াম পালনকারিণী, অকুমারী এবং কুমারী।
— Sheikh Mujibur Rahman
সে যদি তোমাদেরকে তালাক দেয়, তবে আশা করা যায় তার রব তোমাদের পরিবর্তে তোমাদের চাইতে উত্তম স্ত্রী তাকে দিবেন, যারা মুসলিম, মুমিনা, অনুগত, তাওবাকারী, ‘ইবাদতকারী, সিয়াম পালনকারী, অকুমারী ও কুমারী।
— Rawai Al-bayan
যদি নবী তোমাদের সকলকে তালাক দেয় তবে তার রব সম্ভবত তোমাদের স্থলে তাকে দেবেন তোমাদের চেয়ে উৎকৃষ্টতর স্ত্রী [১]—যারা হবে মুসলিম, মুমিন [২], অনুগত, তাওবাকারী, ‘ইবাদাতকারী, সিয়াম পালনকারী, অকুমারী এবং কুমারী।
— Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
দরূদ না পড়লে অভিশাপ দিতেন নবী
নবী মুহাম্মদের প্রতি যে দরূদ পড়বে না, মুহাম্মদ তাদেরকে অভিশাপ দিয়েছেন এবং তাদের ক্ষতি কামনা করতেন [7]
রিয়াযুস স্বা-লিহীন
অধ্যায়ঃ ১৫/ রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উপর দরূদ ও সালাম প্রসঙ্গে
পরিচ্ছেদঃ ২৪৩: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি দরূদ ও সালাম পেশ করার আদেশ, তার মাহাত্ম্য ও শব্দাবলী
৪/১৪০৮। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই অভিশাপ দিলেন যে, “সেই ব্যক্তির নাক ধূলা-ধূসরিত হোক, যার কাছে আমার নাম উল্লেখ করা হল, অথচ সে (আমার নাম শুনেও) আমার প্রতি দরূদ পড়ল না।” (অর্থাৎ ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম’ বলল না।) (তিরমিযী হাসান) (1)
(1) তিরমিযী ৩৫৪৫, আহমাদ ৭৪০২
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
স্ববিরোধী কাজ করতেন নবী
আলীকে দ্বিতীয় বিয়েতে বাধা দিয়েছিলেন নবী
হযরত মুহাম্মদ নিজে অনেকগুলো বিবাহ করেছেন, দাসীদের সাথেও সহবত করেছেন। এবং প্রায়শই বিবি দাসী এদের নিয়ে রীতিমত ঝগড়াঝাঁটি হয়ে গেছে, যা সামাল দিতে আল্লাহপাকের হুমকিধামকি সহ আয়াত পর্যন্ত নাজিল করতে হয়েছে। একটি পরিবারে একাধিক স্ত্রীর উপস্থিতি প্রায়শই দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করে, এবং তা সামাল দিতে আল্লাহ মাঝেমাঝেই বিভিন্ন আয়াত নাজিল করে নবীর স্ত্রীদের ধমক দিতেন। নবী মুহাম্মদ অল্পবয়সী শিশু স্ত্রী আয়শাকে বেশি ভালবাসতেন যেটি সর্বজনবিদিত। মজার কথা হচ্ছে, নিজে এতগুলো বিয়ে করলেও, নিজের মেয়ের জামাইকে কিন্তু তিনি আর কোন বিয়ে করতে দেন নি। সেখানে তিনি জাতে মাতাল তালে ঠিক। বাপ তো! কীভাবে মেয়ের জন্য সতীন আনার অনুমতি দেন! কিন্তু তিনি যাদের বিয়ে করেছেন, তারাও যে কারো না কারো কন্যা ছিল, এই কথাটি উনি ভুলেই গেছেন। তারাও যে সতীন ঘরে আসলে কষ্ট পেতো, সেটি তিনি ভাবেন নি [8] [9] –
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫৪/ বিয়ে-শাদী
পরিচ্ছদঃ ২৫৩৩. কন্যার মধ্যে ঈর্ষা সৃষ্টি হওয়া থেকে বাধা প্রদান এবং ইনসাফমূলক কথা
৪৮৫০। কুতায়বা (রহঃ) … মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মিম্বরে বসে বলতে শুনেছি যে, বনি হিশাম ইবনু মুগীরা, আলী ইবনু আবূ তালিবের কাছে তাদের মেয়ে শাদী দেবার জন্য আমার কাছে অনুমতি চেয়েছে; কিন্তু আমি অনুমতি দেব না, আমি অনুমতি দেব না, আমি অনুমতি দেব না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আলী ইবনু আবূ তালিব আমার কন্যাকে তালাক দেয় এবং এর পরেই সে তাদের মেয়েকে শাদী করতে পারে। কেননা, ফাতেমা হচ্ছে আমার কলিজার টুকরা এবং সে যা ঘৃণা করে, আমিও তা ঘৃণা করি এবং তাকে যা কষ্ট দেয়, তা আমাকেও কষ্ট দেয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
এই বিবাহটি যে আলী নিজেই করতে চেয়েছিলেন, তার প্রমাণ পাওয়া যায় বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ থেকে [10] –
আরো একটি হাদিস গ্রন্থ থেকে দেখে নিই, এই বিয়ে আলী নিজেই করতে ইচ্ছুক ছিলেন কিনা [11] –
আল-লুলু ওয়াল মারজান
৪৪/ সাহাবাগণের মর্যাদা
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/১৫. ফাতিমা বিনতু নাবী (ﷺ)-এর মর্যাদা।
১৫৯২. মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবু জেহেলের কন্যাকে ‘আলী (রাঃ) বিবাহের প্রস্তাব দিয়ে পাঠালেন। ফাতিমাহ (রাঃ) এ খবর শুনতে পেয়ে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে এসে বললেন, আপনার গোত্রের লোকজন মনে করে যে, আপনি আপনার মেয়েদের সম্মানে রাগান্বিত হন না। ‘আলী (রাঃ) আবূ জেহেলের কন্যাকে বিবাহ করতে প্রস্তুত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা দিতে প্রস্তুত হলেন। (মিওয়ার বলেন) তিনি যখন হামদ ও সানা পাঠ করেন, তখন আমি তাকে বলতে শুনেছি যে, আমি আবূল আস ইবনু রাবির নিকট আমার মেয়েকে শাদী দিয়েছিলোম। সে আমার সঙ্গে যা বলেছে সত্যই বলেছে। আর ফাতিমাহ আমার টুকরা; তাঁর কোন কষ্ট হোক তা আমি কখনও পছন্দ করি না। আল্লাহর কসম, আল্লাহর রসূলের মেয়ে এবং আল্লাহর দুশমনের মেয়ে একই লোকের নিকট একত্রিত হতে পারে না। ‘আলী (রাঃ) তাঁর বিবাহের প্রস্তাব উঠিয়ে নিলেন।
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ৬২ : সাহাবাগণের মর্যাদা, অধ্যায় ১৬, হাঃ ৩৭২৯; মুসলিম, পর্ব ৪৪ : সাহাবাগণের মর্যাদা, অধ্যায়, ১৫, হাঃ ২৪৪৯
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ (রাঃ)
উপরের হাদিস পড়ে প্রশ্ন উঠতে পারে, মুহাম্মদ তো শুধুমাত্র আবু জেহেলের মেয়ের সাথে আলীর বিবাহতে বাধা দিয়েছিল। অন্য কোন সময় তো দেয় নি! তাহলে সমস্যা কোথায়? অনেক ইসলামিক এপোলোজিস্টই দাবী করে, এটি শুধুমাত্র আবু জেহেলের মেয়ে ছিল বলেই নবী এরকম নির্দেশনা দিয়েছিল। অন্য কারো ক্ষেত্রে এরকম বলা হয়নি। আসলেই কী এই তথ্যটি সত্য?
সত্য হচ্ছে, এই নির্দেশের পরে নবী ও ফাতিমার জীবদ্দশায় আলী আর দ্বিতীয় বিবাহ করতে পারেন নি। দাসী দিয়েই কাজ চালিয়েছেন। [12] [13]।
ফাতিমা মারা যাওয়ার পরে অবশ্য মনের খায়েস ইচ্ছামত মিটিছিলেন হযরত আলী। জানা যায়, মৃত্যুর সময় আলীর অনেক উম্মু ওয়ালাদ ছিল, যাদের পেটে আলী সন্তান জন্ম দিয়েছিল [14]
মোহর ছাড়াই সঙ্গম করেছিলেন নবী
নবী মুহাম্মদ বিবাহ ছাড়াই দাসীদের সাথে সঙ্গম করতেন এটি আমরা সকলেই জানি। কিন্তু শুধু তাই নয়, দাসী ছাড়াও অন্য নারীর সাথেও তিনি মোহর ছাড়া সঙ্গম করেছেন। যার প্রমাণ পাওয়া যায় ইবনে কাসীরের তাফসীরে, সূরা আহজাবের ৫০/৫১ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যায়। মুহাম্মদের এই বদভ্যাস নিয়ে মুহাম্মদের স্ত্রী আয়িশা রীতিমত বিরক্ত ছিলেন, তিনি এটিও বলে মুহাম্মদকে খোঁচা দিয়েছিলেন যে, মুহাম্মদের সুবিধামতই আয়াত নাজিল হয়! [15]
কিবলার দিকে মুখ করে প্রস্রাব করেছিলেন নবী
কিবলার দিকে মুখ করে প্রস্রাব করতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পরে, নবী নিজেই কিবলার দিকে মুখ করে প্রস্রাব করেছিলেন। [16]
সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
অধ্যায়ঃ ১/ পবিত্রতা রাসূলুল্লাহ ﷺ হতে
পরিচ্ছেদঃ ৭. উল্লিখিত ব্যাপারে অনুমতি সম্পর্কে
৯। জাবির ইবনু আবদিল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিবলাকে সামনে রেখে মলত্যাগ বা পেশাব করতে নিষেধ করেছেন। আমি তাঁর মৃত্যুর এক বছর আগে তাকে কিবলার দিকে মুখ করে মলত্যাগ বা পেশাব করতে দেখেছি। —সহীহ। ইবনু মাজাহ– (৩২৫)।
এ অনুচ্ছেদে আবু কাতাদা, আয়িশাহ ও আম্মার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। আবু ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে জাবিরের হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ)
নবী মুহাম্মদ দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করেছিলেন
একটি বিখ্যাত হাদিস থেকে জানা যায়, নবী মুহাম্মদ দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করেছিলেন, যেখানে উনি দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করাতে কঠিনভাবে নিষেধ করে গিয়েছিলেন। যদিও মুমিনগণ তার এই দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করার নানা রকম ব্যখ্যা হাজির করেন। [17]
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
অধ্যায়ঃ পর্ব-৩ঃ পাক-পবিত্রতা
পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ – পায়খানা-প্রস্রাবের আদাব
৩৬৪-(৩১) হুযায়ফাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন এক গোত্রের আবর্জনার স্থানে গেলেন এবং (সেখানে) দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করলেন। (বুখারী ও মুসলিম)(1) বলা হয়ে থাকে যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোন ওযরের কারণে এরূপ করেছেন।
(1) সহীহ : বুখারী ২২৪, মুসলিম ২৭৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
খাদ্য লোভী ছিলেন নবী
অনেক মুসলিমকেই আজকাল বলতে শোনা যায় যে, নবী নাকি খুবই অল্প খেতেন, এবং অল্প খেতে পরামর্শ দিতেন। এমনকি, অল্প আহার করা নাকি নবীর সুন্নতও। অথচ সহিহ হাদিস বলে ভিন্ন কথা। নবী খাবারের ব্যাপারে ভয়াবহ লোভীই ছিলেন বলে হাদিস থেকে বোঝা যায়। আসুন হাদিসগুলো পড়ি, যেখানে দেখা যায়, একটি বকরী বা ছাগলের দুই দুইটি সামনের রান খাবার পরেও নবী আরও রান চাইতেন। আপনি ভাবুন তো, মাঝারি সাইজের একটি বকরী বা ছাগলের সামনের রানে কওয় কেজি মাংস হয়? দুই দুইটি রান খাবার পরেও একজন কীভাবে আরও রান চাইতে পারে? [18] [19] –
সহীহ শামায়েলে তিরমিযী
২৬. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর তরকারীর বর্ণনা
১২৬. আবু উবায়দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য এক ডেগ গোশত রান্না করলাম। তিনি বকরীর সামনের উরুর গোশত অধিক পছন্দ করতেন। তাই আমি তাকে সামনের একটি পা দিলাম। তারপর তিনি বললেন, আমাকে সামনের আরেকটি পা দাও। তখন আমি তাকে সামনের আরেকটি পা দিলাম। তারপর তিনি পুনরায় বললেন, আমাকে সামনের আরেকটি পা দাও। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! বকরীর সামনের পা কয়টি থাকে? তিনি বললেন, সে মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার জীবন! যদি তুমি চুপ থাকতে তাহলে আমি যতক্ষণ সামনের পা চাইতাম, ততক্ষণ তুমি দিতে পারতে।[1]
[1] মুজামুল কাবীর, হা/১৮২৮৬; মুসনাদে বাযযার, হা/৮৩৪৫।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সুনান আদ-দারেমী (হাদিসবিডি)
ভূমিকা
পরিচ্ছেদঃ ৭. খাদ্যে বরকত প্রদানের মাধ্যমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে
৪৫. শাহর ইবনু হাওশাব, আবু উবাইদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণনা করেন, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য এক হাঁড়ি (গোশত) রান্না করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন: ’আমাকে সামনের একটি রান দাও।’ তিনি সামনের রানের গোশত পছন্দ করতেন। সে তাঁকে সামনের রান দিল। তিনি আবার বললেন: ’আমাকে সামনের রান দাও।’ তখন সে তাঁকে সামনের রান দিল। তিনি আবারও বললেন: ’আমাকে সামনের রান দাও।’ তখন আমি তাকে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! একটি ছাগলের সামনের রান কয়টি হয়? তিনি উত্তরে বললেন: ’যার হাতে আমার প্রাণ সেই মহান সত্তার কসম! তুমি যদি চুপ থাকতে তাহলে যতক্ষণ আমি চাইতাম ততক্ষণ তুমি আমাকে সামনের রান দিতেই থাকতে।’[1]
[1] তাহক্বীক্ব: সনদ হাসান, শাহর ইবনু হাওশাবের কারণে।
তাখরীজ: তাবারানী, কাবীর ২২/৩৩৫ নং ৮৪২; তিরমিযী, শামাইল ১৭০।
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থ থেকে জানা যায়, নবীর এই খাবার ব্যাপারে অতিরিক্ত লোভ লালসা এবং অতিরিক্ত নারী লোভ নিয়ে ইহুদীরা নবীকে কটাক্ষ করে বলতেন, এই লোকের আহারে পরিতৃপ্তি হয় না, এই লোক নারী ছাড়া আর কিছু বুঝে না [20] –
মৃত্যু ভয়ে ভীত থাকতেন নবী
সহিহ হাদিস থেকে জানা যায়, নবী মুহাম্মদের আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস এবং আস্থা থাকবার পরেও, জিবরাইলের মত শক্তিমান ফেরেশতা এবং আরও হাজারো ফেরেশতা বাহিনী তার সাথে থাকবার পরেও, তিনি শত্রুদের ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারতেন না। উনার পাহারাদার লাগতো, কারণ তিনি ভয় পেতেন কেউ এসে তাকে খুন করে যেতে পারে। [21]
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
৫৬/ জিহাদ ও যুদ্ধকালীন আচার ব্যবহার
পরিচ্ছেদঃ ৫৬/৭০. মহান আল্লাহর পথে যুদ্ধে প্রহরা দান।
২৮৮৫. ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (এক রাতে) আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জেগে কাটান। অতঃপর তিনি যখন মদিনা্য় এলেন এই আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করলেন যে, আমার সাহাবীদের মধ্যে কোন যোগ্য ব্যক্তি যদি রাতে আমার পাহারায় থাকত। এমন সময় আমরা অস্ত্রের শব্দ শুনতে পেলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ইনি কে? ব্যক্তিটি বলল, আমি সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস, আপনার পাহারার জন্য এসেছি। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘুমিয়ে গেলেন। (৭২৩১) (মুসলিম ৪৪/৫ হাঃ ২৪১০, আহমাদ ২৫১৪৭) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৬৭৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৬৮৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
যুদ্ধের ময়দানে ভীত হতেন নবী
মহাবিশ্বের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী মহান আল্লাহ পাকের সবচাইতে প্রিয় বন্ধু নবী মুহাম্মদ যুদ্ধের ময়দানে বিপদে পড়লে অন্যদের ডাকতেন সাহায্যের জন্য, এর জন্য লোভ দেখাতেন জান্নাতের। তার নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত ফেরেশতা বাহিনী তখন কী করতেন সেটি একটি প্রশ্ন! আমাদের এলাকায় এক ভণ্ডপীর ছিল, যার সাথে নাকি অনেক শাক্তিশালী জ্বীনেরা থাকতো। আমাদের সে সেইসব জ্বীনের ভয় দেখিয়ে টাকা চাইতো। সেই শক্তিশালী জ্বীনেরা নাকি যেকোন মানুষকে উড়িয়ে আরেক মহাদেশে নিয়ে যেতে পারে! অনেক বড় বড় কাজ করতে পারে। তো একদিন এলাকার ছেলেপেলেরা তার পেছনে কুকুর লেলিয়ে দিয়েছিল। সেইদিন সেই ভণ্ডপীর এমন দৌঁড় দিয়েছিল, অলিম্পিক হলে নির্ঘাত গোল্ড মেডেল নিয়ে আসতো। দৌঁড়ের চোটে তার লুঙ্গিটাও খুলে গিয়েছিল। সেইদিন তা পোষা সেই শক্তিশালী জ্বীনগুলো কী করছিল, তা কিন্তু জানা যায় নি! [22]
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৩৩/ জিহাদ ও এর নীতিমালা
পরিচ্ছেদঃ ৩৭. উহুদ যুদ্ধ
৪৪৯০। হাদ্দাব ইবনু খালিদ আযদী (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ওহুদ যুদ্ধের দিন কেবল সাতজন আনসার ও দুজন কোরায়শ (মুহাজির) সাথীসহ (শত্রুবাহিনী কর্তৃক) অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন এবং তারা তাকে বেষ্টন করে ফেলে তিনি বললেনঃ কে আমার পক্ষ থেকে শত্রুদের প্রতিহত করবে, তার জন্য রয়েছে জান্নাত। অথবা বললেনঃ সে জান্নাতে আমার সঙ্গী হবে। তখন আনসারদের মধ্যকার একব্যক্তি অগ্রসর হয়ে যুদ্ধ শুরু করল এবং পরিশেষে শহীদ হন। তারপর পুনরায় তারা তাঁকে বেষ্টন করে ফেললো এবং অনুরূপভাবে (লড়াই করতে করতে তাঁদের) সাতজনই শহীদ হলো। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সঙ্গীদ্বয়কে লক্ষ্য করে বললেনঃ আমরা সঙ্গীদের প্রতি সুবিচার করিনি। (আমরা বেঁচে রইলাম, অথচ তারা শহীদ হলেন।)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
ভুল ভবিষ্যতবাণী করেছিলেন নবী
নবী মুহাম্মদ বেশ কিছু ভুল ভবিষ্যতবাণী করেছিলেন। এমনকি খলিফাদের সময়েই মুহাম্মদের ভবিষ্যত বাণি ভুল প্রমাণিত হয়। পরবর্তী সময়ে ইসলামের আলেমগণ নানান জোরাতালি দিয়ে সেই সব হাদিসকে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করেছেন। তারা ইনিয়ে বিনিয়ে শব্দের অর্থ বদলে দিয়ে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেছেন বটে, কিন্তু যেকোন বুদ্ধিমান মানুষই হাদিসগুলো পড়লে বুঝবেন, ঘটনা আসলে কী! আসুন সেগুলোর কয়েকটি উদাহরণ দেখে নিই।
মদিনায় মহামারী প্রবেশ
নবী মুহাম্মদ ঘোষনা করেছিলেন, মদিনা শহরে কোনদিনই মহামারী বা প্লেগ প্রবেশ করবে না [23] [24] –
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৬৩/ চিকিৎসা
পরিচ্ছেদঃ ২৩০১. প্লেগ রোগের বর্ণনা
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৫৩২০, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৫৭৩১
৫৩২০। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসূফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মদিনা নগরীতে প্রবেশ করতে পারবে না মাসীহ দাজ্জাল, আর না মহামারী।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৮৬/ জাহ্মিয়াদের মতের খণ্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ
পরিচ্ছেদঃ ৩১৩৩. আল্লাহ্র ইচ্ছা ও চাওয়া। মহান আল্লাহ্র বাণীঃ তোমরা ইচ্ছা করবে না যদি না আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন (৭৬ঃ ৩০)। আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর (৩ঃ ২৬)। মহান আল্লাহ্র বাণীঃ কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলবে না, ‘আমি তা আগামী কাল করব, আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে,’ এ কথা না বলে (১৮ঃ ২৩-২৪)। মহান আল্লাহ্র বাণীঃ তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্ যাকে চান তাকে সৎপথে আনয়ন করেন। (২৮ঃ ৫৬)। সাঈদ ইব্নুল মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা মুসাইয়্যাব থেকে বলেন, উপরোক্ত আয়াত আবূ তালিব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ্র বাণীঃ আল্লাহ্ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না (২ঃ ১৮৫)
৬৯৬৫। ইসহাক ইবনু আবূ ঈসা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দাজ্জাল মদিনার উদ্দেশ্যে আসবে, তবে সে ফেরেশতাদেরকে মদিনা পাহারারত দেখতে পাবে। সুতরাং দাজ্জাল ও প্লেগ মদিনার কাছেও আসতে পারবে না ইনশা আল্লাহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
মজার বিষয় হচ্ছে, মদিনাতে অসংখ্যবারই প্লেগ মহামারী ছড়িয়ে পরে। এমনকি, করোনার সময়ও মদিনা শহর বন্ধ করে দেয়া হয়। সে যাই হোক, আসুন আমরা হাদিস থেকেই দেখি, সহিহ হাদিসেই বলা আছে, উমরের আমলেই মদিনায় ছড়িয়ে পরে। হাদিসটি পড়ার সময় লক্ষ্য করুন, উমরকে আমীরুল মুমিনীন সম্বোধন করা হয়েছে, যার অর্থ সময়টি উমরের খিলাফতে [25] –
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪৪/ শাহাদাত
পরিচ্ছেদঃ ১৬৪৭. কারো সততা প্রমাণের ক্ষেত্রে ক’জনের সাক্ষ্য প্রয়োজন
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ২৪৬৭, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৬৪৩
২৪৬৭। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূল আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমি মদিনায় আসলাম, সেখানে তখন মহামারী দেখা দিয়েছিল। এতে ব্যাপক হারে লোক মারা যাচ্ছিল। আমি উমর (রাঃ) এর কাছে বসাছিলাম। এমন সময় একটি জানাযা অতিক্রম করলো এবং তার সম্পর্কে ভালো ধরনের মন্তব্য করা হল। তা শুনে উমর (রাঃ) বললেন, ওয়াজিব হয়ে গেছে। এরপর আরেকটি জানাযা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল এবং তার সম্পর্কেও ভালো মন্তব্য করা হল। তা শুনে তিনি বললেন, ওয়াজিব হয়ে গেছে। এরপর তৃতীয় জানাযা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল এবং তার সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করা হল। এবারও তিনি বললেন, ওয়াজিব হয়ে গেছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কি ওয়াজিব হয়ে গেছে, হে আমীরুল মু’মিনীন? তিনি বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেমন বলেছিলেন, আমি তেমন বললাম। (তিনি বলেছিলেন) কোন মুসলিম সম্পর্কে চার জন লোক ভাল সাক্ষ্য দিলে আল্লাহ্ তাঁকে জান্নাতে দাখিল করবেন। তিনি বললেন, তিনজন সাক্ষ্য দিলেও। আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, দু’জন সাক্ষ্য দিলে? তিনি বললেন, দু’জন সাক্ষ্য দিলেও। এরপর আমরা একজনের সাক্ষ্য সম্পর্কে তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করিনি।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবুল আসওয়াদ (রহঃ)
কেয়ামত কবে হবে
বিভিন্ন হাদিস থেকে নবী মুহাম্মদের বক্তব্য থেকে জানা যায়, কিয়ামত খুবই সন্নিকটে। নবী মুহাম্মদ বলেছিলেন, কিয়ামত খুবই কাছে [26] এবং একজন বালককে দেখিয়ে বলেছিলেন, এই বালকের বৃদ্ধ হওয়ার পূর্বেই কিয়ামত হবে। কিন্তু সেই বালক মরে ভুত হয়ে গেল, এখনো কিয়ামত হলো না [27] –
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫৫/ ফিতনা সমূহ ও কিয়ামতের নিদর্শনাবলী
পরিচ্ছদঃ ২৩. কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়া
৭১৪০। আবূ গাসসান মিসমাঈ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমি এবং কিয়ামত প্রেরিত হয়েছি এ দুটির মত। রাবী বলেন (এ সময়) তিনি তার শাহাদাত ও মধ্যমা আঙ্গুলিকে একত্রিত করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫৫/ ফিতনা সমূহ ও কিয়ামতের নিদর্শনাবলী
পরিচ্ছেদঃ ২৩. কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়া
৭১৪২। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলেন, কিয়ামত কবে হবে? তখন তাঁর নিকট মুহাম্মাদ নামক এক আনসারী বালক উপিস্থিত ছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ বালক যদি বেঁচে থাকে তবে সে বৃদ্ধ হওয়ার পূর্বেই কিয়ামত সংগঠিত হয়ে যাবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
পর্যাপ্ত জ্ঞান ছাড়াই কথা বলা
নবী মুহাম্মদের একটি স্বভাব ছিল যে, তিনি যেই বিষয়ে জানেন না, সেই বিষয়েও বিজ্ঞ মতামত দেয়ার চেষ্টা করতেন। ফলাফল হিসেবে মাঝে মাঝে সাহাবীরা বুঝে ফেলত, নবী যা বলেছে সেটি সঠিক নয়। এরপরে নবী নানাভাবে আগের কথাটিকে ঘোরাবার চেষ্টা করতো। না জেনে কথা বলার উদাহরণ হিসেবে সূর্য রাতের বেলা কোথায় যায়, এই সম্পর্কিত হাদিসগুলো দেখা যায়। সেগুলো পরে বর্ণিত আছে বলে এখানে আর উল্লেখ করা হচ্ছে না। আসুন এখানে ভিন্ন কিছু হাদিস পড়ি, যেখান থেকে বোঝা যায় নবীর অপর্যাপ্ত জ্ঞান স্বত্ত্বেও পাকনামি স্বভাবের কিছু উদাহরণ দেখি। নিচের হাদিসগুলো পড়ুন, নবী কীভাবে সাহাবীদের কাছে হাতেনাতে ভুল প্রমাণ হয়ে নিজেকে রক্ষা করতে বললেন, তিনি শুধুই মানুষ মাত্র। ভুল হতেই পারে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এত অসীম জ্ঞানের অধিকারীর ভুল কীভাবে হয়? আর যে বিষয়টি নবী জানেন না, সে বিষয়ে বিজ্ঞ মতামত দেয়ারই বা প্রয়োজন কী? [28] [29] –
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪৫/ ফযীলত
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. শরী’আত হিসেবে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) যা আদেশ করেছেন তা পালন করা ওয়াজিব আর পার্থিব বিষয়ে তিনি যে অভিমত ব্যক্ত করেন, তা নয়
৫৯১৫। আবদুল্লাহ ইবনু রুমী ইয়ামামী, আব্বাস ইবনু আবদুল আযীম আনবারী ও আহমদ ইবনু জাফর মা’কিরী (রহঃ) … রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমন করলেন। লোকেরা খেজুর গাছ তাবীর করত। রাবী বলেন, অর্থাৎ নর ও নারী ফুলের রেণুতে মিশ্রণ ঘটিয়ে খেজুর গাছকে গর্ভদান করত। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা কি করছ? তারা বললো আমরা এরূপ করে আসছি। তিনি বললেনঃ তোমরা এমন না করলেই বোধ হয় ভাল হয়।
রাবী বললেন, সুতরাং তারা তা বর্জন করল। আর এতে খেজুর ঝরে পড়ল অথবা (রাবী বলেছেন,) তার উৎপাদন কমে গেল। রাবী বলেন, লোকেরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ ঘটনা বলল। তখন তিনি বললেন, আমি তো একজন মানুষ। দ্বীন সম্পর্কে যখন তোমাদের আমি কোন আদেশ দেই, তখন তোমরা তা পালন করবে, আর যখন কোন কথা আমি আমার মতানুসারে বলি, তখন তো আমি একজন মানুষ মাত্র। রাবী ইকরামা (রহঃ) বলেনঃ অথবা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ বলেছেন। আর মা’কিরী (রহঃ) সন্দেহ ব্যতিরেকে কেবল نَفَضَتْ (ঝরে পড়ল) বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ রাফি‘ ইবনু খাদীজ (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪৫/ ফযীলত
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. শরী’আত হিসেবে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) যা আদেশ করেছেন তা পালন করা ওয়াজিব আর পার্থিব বিষয়ে তিনি যে অভিমত ব্যক্ত করেন, তা নয়
৫৯১৬। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আমর আন-নাকিদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে এবং ভিন্ন সুত্রে আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাছে গর্ভদানরত কিছু লোকের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলেন। তিনি বললেন, যদি এটা না কর তাহলে ভাল হবে। লোকেরা তা করল না। এতে ’চিটা’ খেজুর উৎপন্ন হলো। পরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন, তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের খেজুর গাছের কি হলো? লোকেরা বললো, আপনি এমন এমন বলেছিলেন (তা করায় এরূপ হয়েছে)। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমাদের পার্থিব বিষয়ে তোমরাই অধিক অবগত।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
আরেকটি হাদিস থেকে জানা যায়, একবার নবী এক সাহাবীর ভাইয়ের পেটে অসুখ হয়েছে। নবী তাকে বারবার মধু খাওয়াতে বললেন। মধু খেয়েও পেটের অসুখ ঠিক না হওয়ায় নবী তাকে বলেছিলেন, তোমার পেট মিথ্যা বলছে! কী একটা হাস্যকর অবস্থা চিন্তা করুন! পেটের অসুখ তো মিথ্যা বলতে পারে না। যদিও শেষ পর্যন্ত পেটের অসুখ ঠিক হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু পেটের অসুখ সাধারণত কিছুদিন পরে এমনিতেই ঠিক হয়ে যায় বলে আমরা জানি [30] –
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৭৬/ চিকিৎসা
পরিচ্ছেদঃ ৭৬/৪. মধুর সাহায্যে চিকিৎসা। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘এর মধ্যে রয়েছে মানুষের জন্য নিরাময়।’’ সূরাহ আন-নাহলঃ ৬৯)
৫৬৮৪. আবূ সা’ঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললঃ আমার ভাইয়ের পেটে অসুখ হয়েছে। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাকে মধু পান করাও। এরপর লোকটি দ্বিতীয়বার আসলে তিনি বললেনঃ তাকে মধু পান করাও। অতঃপর তৃতীয়বার আসলে তিনি বললেন তাকে মধু পান করাও। এরপর লোকটি এসে বললঃ আমি অনুরূপই করেছি। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ সত্য বলেছেন, কিন্তু তোমার ভাইয়ের পেট মিথ্যা বলছে। তাকে মধু পান করাও। অতঃপর সে তাকে পান করাল। এবার সে রোগমুক্ত হল। [৫৭১৬; মুসলিম ৩৯/৩১, হাঃ ২২৬৭, আহমাদ ১১১৪৬] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫২৭৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৬৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ)
এবারে আসুন আরেকটি হাদিস পড়ি, যেখানে দেখা যাচ্ছে, নবী তার মুখ থেকে বের হওয়া সকল কথাকেই সত্য বলে দাবি করে গেছেন [31] –
সূনান আবু দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৯/ শিক্ষা-বিদ্যা, (জ্ঞান-বিজ্ঞান)
পরিচ্ছেদঃ ৪১৭. ইলম লিপিবদ্ধ করা সম্পর্কে।
৩৬০৭. মুসাদ্দাদ (রহঃ) ….. আবদুল্লাহ ইবন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি যা কিছু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট হতে শ্রবণ করতাম, তা লিখে রাখতাম। আমি ইচ্ছা করতাম যে, আমি এর সবই সংরক্ষণ করি। কিন্তু কুরাইশরা আমাকে এরূপ করতে নিষেধ করে এবং বলেঃ তুমি যা কিছু শোন তার সবই লিখে রাখ, অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন মানুষ, তিনি তো কোন সময় রাগান্বিত অবস্থায় কথাবার্তা বলেন এবং খুশীর অবস্থায়ও বলেন। একথা শুনে আমি লেখা বন্ধ করি এবং বিষয়টি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে অবহিত করি। তখন তিনি তার আংগুল দিয়ে নিজের মুখের প্রতি ইাশারা করে বলেনঃ তুমি লিখতে থাক, ঐ যাতের কসম, যাঁর হাতে আমার জীবন, যা কিছু এ মুখ হতে বের হয়, তা সবই সত্য।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রাঃ)
দাজ্জালের কোন চোখ কানা?
নবী মুহাম্মদের আরেক ভবিষ্যতবাণী যে, দাজ্জাল আসবে এবং তার একটি চোখ কানা হবে, এই বিষয়ে তিনি বিশাল এক গণ্ডগোল পাকিয়ে রেখে গেছেন। এক সাহাবীকে বলেছেন ডানচোখ কানা, আরেকজনকে বলেছেন বামচোখ কানা। বানিয়ে বানিয়ে বললে যা হয় আর কি। আগে ঠিক কী বলেছই তা পরিষ্কার মনে থাকে না। এই নিয়ে মুমিনরা কী গোঁজামিল দেবে সেটি আগে থেকেই বলে দিতে পারি। মুমিন বাহিনী বললে, একটি হাদিসকে পড়তে হবে দাজ্জালকে যে দেখছে তার সাপেক্ষে, আরেকটি হাদিস পড়তে হবে দাজ্জালের সাপেক্ষে। তাহলেই ডান বামের এই গণ্ডগোলকে গোঁজামিল দেয়া যাবে। কিন্তু এই গোঁজামিল কতটা হাস্যকর, সেটি আপনারা নিজেই বুঝুন। [32] [33] –
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
৫৪। বিভিন্ন ফিতনাহ ও কিয়ামতের লক্ষনসমূহ
পরিচ্ছেদঃ ২০. দাজ্জাল এর বর্ণনা, তার পরিচয় এবং তার সাথে যা থাকবে
হাদিস একাডেমি নাম্বারঃ ৭২৫১, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৬৯
৭২৫১-(১০০/১৬৯) আবূ বকর ইবনু আবূ শাইবাহ ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) ….. ইবনু উমার (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের মধ্যে দাজ্জালের আলাপ-আলোচনা করে বললেন, আল্লাহ তা’আলা অন্ধ নন। কিন্তু সতর্ক হও! দাজ্জালের ডান চোখ কানা হবে। আর তা আঙ্গুরের মতো ফোলা হবে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৭০৯৫, ইসলামিক সেন্টার ৭১৪৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ – কিয়ামতের পূর্বলক্ষণসমূহ এবং দাজ্জালের বর্ণনা
৫৪৭৪-[১১] উক্ত রাবী [হুযায়ফাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: দাজ্জালের বাম চোখ কানা, মাথার কেশ অত্যধিক। তার সঙ্গে থাকবে তার জান্নাত ও জাহান্নাম। বাস্তবে তার জাহান্নাম হবে জান্নাত এবং জান্নাত হবে জাহান্নাম। (মুসলিম)
সহীহ: মুসলিম ১০৪-(২৯৩৪), ইবনু মাজাহ ৪০৭১, সহীহুল জামি ৩৪০০, মুসনাদে আহমাদ ২৩২৯৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ হুযায়ফাহ ইবন আল-ইয়ামান (রাঃ)
মোজেজা দেখাতে বারবার ব্যর্থতা
তিনটি প্রশ্নের উত্তর দিতে ১৫ দিন
মুহাম্মদকে ইহুদিদের কাছ থেকে জেনে এসে তিনটি জটিল প্রশ্ন করেছিল কাফেররা, মুহাম্মদ আসলেই নবী কিনা সেটি পরীক্ষার জন্য। মুহাম্মদ উত্তরে তাদের বলেছিল, আগামীকাল তিনি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবেন। অথচ তার পনেরোদিন পর্যন্ত মুহাম্মদের উত্তরের কোন খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি। তার কাছে নাকি এই পনেরোদিন জিব্রাইল আসেনি। এরকম একটি জরুরি মূহুর্তে, যেখানে আল্লাহ এবং মুহাম্মদের মান সম্মান নিয়ে টানাটানি, ইসলামের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন এবং চ্যালেঞ্জ করেছে কাফেররা, সেখানে জিব্রাইল নাকি আসেনি। পরে মুহাম্মদ অজুহাত দেখিয়েছিল যে, সে নাকি সেইদিন ইনশাল্লাহ বলেনি দেখে আল্লাহ গোস্বা করে জিব্রাইলকে পাঠায়নি! এরকম ফালতু অজুহাত আমি জীবনে কোনদিন শুনিনি! এরকম একটি জরুরি মূহুর্ত, সেই সময়ে হঠাৎ আল্লাহ নাকি গোস্বা খেয়ে বসে আছেন! কী মুসিবত। এরপরে জিব্রাইল ব্যাটা আসলো, কিন্তু যেই উত্তর দিলো, সেগুলো কোনটিই আসলে সেই প্রশ্নগুলোর সঠিক কোন উত্তর নয়। সেগুলো নিয়ে পরে আসছি। আগে দেখে নিই, পনেরোদিন ওহী নাজিল বন্ধ ছিল কেন এবং কীভাবে, সেটি। এই পনেরোদিন নবী মুহাম্মদ কোথায় কোথায় প্রশ্নের উত্তরের জন্য ঘোরাঘুরি করেছে, কোন কোন ইহুদি আলেমের হাতেপায়ে ধরেছে, সেটি অবশ্য আমাদের জানা নেই! [34] –
জনৈক মিসরী শায়েখের বরাত দিয়ে ইকরামা সূত্রে ইসহাকের মাধ্যমে ইবনে জারীর বর্ণনা করেছেন, হজরত ইবনে আব্বাস বলেছেন, কুরায়েশ গোত্রাধিনায়কেরা একবার নজর বিন হারেছ এবং উকবা বিন আবী মুয়ীতকে মদীনার ইহুদী আলেমদের কাছে পাঠালো। তাদেরকে বলে দিলো, তোমরা ইহুদী পণ্ডিতদেরকে মোহাম্মদ ও তার কথাবার্তা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে দেখো। তারা গ্রন্থধারী। তাই তারা মোহাম্মদ সম্পর্কে সঠিক তথ্য বলতে পারবে। তারা যা বলে তা শুনে এসে তোমরা আমাদেরকে জানিয়ো। নজর ও উকবা পৌঁছে গেলো মদীনায়। রসুল স. সম্পর্কে সব কথা তারা খুলে বললো ইহুদী পণ্ডিতদের নিকট । পণ্ডিতেরা বললো, তোমরা তাকে এই তিনটি প্রশ্ন কোরো। প্রশ্ন তিনটির জবাব দিতে পারলে, মনে করবে তিনি সত্য নবী। আর জবাব দিতে না পারলে মনে করবে, সে ভণ্ড। প্রশ্ন তিনটি এই— ১. অতীত যুগের ওই সকল যুবক কারা, যারা পৃথিবীতে ঘটিয়েছিলো একটি অসাধারণ ঘটনা। ২. ওই ব্যক্তির পরিচয় কী, যে পরিভ্রমণ করেছিলো পৃথিবীর পূর্ব প্রান্ত থেকে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত। ৩. রূহ কী ? নজর ও উকবা ফিরে এলো মক্কায়। গোত্রাধিনায়কদের বললো, এবার তবে মোহাম্মদের সঙ্গে একটা চূড়ান্ত মীমাংসা হয়েই যাক। তোমরা তাঁকে এই তিনটি প্রশ্ন করে দেখো। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে উপস্থিত হলেন রসুল স. স্বয়ং। তারা তখন একে একে রসুল স.কে বর্ণিত প্রশ্ন তিনটি করলো। রসুল স. বললেন, তোমাদের প্রশ্নের উত্তর দিবো আমি আগামীকাল। কিন্তু একথার সঙ্গে তিনি স. ইনশা আল্লাহ্ (আল্লাহ্ যদি চান) কথাটি উচ্চারণ করলেন না। পরিণতি হলো এই যে, একাধারে পনেরো দিন পর্যন্ত হজরত জিবরাইল আবির্ভূত হলেন না । অবতীর্ণ হলো না কোনো প্রত্যাদেশও। রসুল স. বড়ই পেরেশান হয়ে পড়লেন । অংশীবাদিরা করতে লাগলো নানা রকম অপমন্তব্য। এমতাবস্থায় সুরা কাহ্ফ নিয়ে অবতীর্ণ হলেন হজরত জিবরাইল। এতে সন্নিবেশিত করা হলো অংশীবাদিদের প্রশ্নত্রয়ের উত্তর। সেই সঙ্গে তিরস্কার ও ভর্ৎসনা করা হলো অংশীবাদিদেরকে।
সাফা পাহাড়কে সোনার পাহাড়ে পরিণত করা
নবী মুহাম্মদকে মক্কার কাফেরগণ চ্যালেঞ্জ করে বলেছিল, সাফা পাহাড়কে তাদের চোখের সামনে সোনার পাহাড় করে দেখাতে পারলে মুহাম্মদের নব্যুয়ত্যে তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে। তারা মুসা নবীর মোজেজার মত একটি মোজেজা দেখাবার দাবী জানিয়েছিল। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, নবী মুহাম্মদ সেই কাজটি করে দেখাতে পারেননি। বরঞ্চ নির্লজ্জ চাপাবাজির মাধ্যমে নিজের পিঠ রক্ষা করেছিল। আসুন ঘটনাটি পড়ে দেখি, [35] –
বনূ নাদীরের চ্যালেঞ্জ থেকে পলায়ন
বনু নাদির গোত্রের প্রধানগণ নবী মুহাম্মদ ও তার সাহাবীদের নিমন্ত্রণ করেছিল আলোচনার উদ্দেশ্যে, চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল নবী মুহাম্মদের নবী হওয়ার প্রমাণ দেখাতে। ইহুদিদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, মুহাম্মদ যদি ইহুদি আলেমদের সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেন, তাহলে বনু নাদীর গোত্রের সবাই ইসলামের সত্যতা বুঝতে পারবে এবং ইসলামকে কবুল করে নিবে। একটি নির্দিষ্ট স্থানে মুহাম্মদ ৩০ জন সঙ্গী নিয়ে আসবে, অপরদিকে ইহুদিরাও ৩০ জনকে নিয়ে আসবে। নবী সেখানে গেলেন তার সাহাবীগণ সহ। কিন্তু বিতর্ক শুরুর আগেই হঠাৎ তিনি সেখান থেকে উঠে চলে আসলেন, অন্য সবাইকে ফেলে চুপিচুপি। অন্য সাহাবীগণ অনেকক্ষণ অপেক্ষা করলেন, কিন্তু নবীর আর কোন খোঁজ খবর নেই! তাকে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপরে আরেকজনার কাছ থেকে শুনলেন নবী মদিনা চলে গেছেন। তারা মদিনা ফিরে আসলেন। ফিরে আসার পরে জানতে পারলেন, নবীকে নাকি জিব্রাইল এসে চুপিচুপি বলেছে, তারা যেখানে বসে ছিল সেই ঘরের ছাদে কিছু লোক নবীকে হত্যা করার জন্য বসে ছিল। কিন্তু সেই লোকগুলো কেন নবীর সাহাবীদের হত্যা করলো না, কেন সাহাবীদের কেউই এরকম কাউকে দেখতে পেলেন না, নবীও বা কাউকে কিছু না বলে একা একা চলে আসলেন কেন, তার সম্পর্কে কিছুই জানা যায় না। অর্থাৎ এই ইহুদিদের এই গোপন ষড়যন্ত্রের কথা শুধুমাত্র নবী একাই জানেন, যার কোন বাস্তব প্রমাণ নেই। সেইদিন বন্ধু সঙ্গি সাথীদের বিপদের মুখে ফেলে নবীর চম্পট দেয়ার এই ঘটনাটি কতটা হাস্যকর এবং ইহুদিদের সাথে বিতর্ক এড়াবার কৌশল, তা বুদ্ধিমান মানুষ মাত্রই বুঝবেন। এর পরদিনই মুহাম্মদের নেতৃত্বে বনু নাদিরের ওপর আক্রমণ চালানো হয় [36] –
রাসূলুল্লাহ (সা) তখন তাদের একটি ঘরের দেয়ালের পাশে বসা ছিলেন। তারা বলল, কে আছে যে, ছাদে উঠে ওখান থেকে একটি পাথর ফেলে দিয়ে মুহাম্মাদকে হত্যা করে আমাদেরকে তাঁর হাত থেকে নিষ্কৃতি দেবে? আমর ইবন জাহহাশ এগিয়ে এসে বলল, আমি এ জন্যে প্রস্তুত আছ। সে মতে পাথর নিক্ষেপের উদ্দেশ্যে সে স্থানে উঠে । রাসূলুল্লাহ্ (সা) তখনও সেখানে একদল সাহাবীসহ বসা ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন হযরত আবু বকর (রা) উমর (রা) এবং আলী (রা)। ওদের দুরভিসন্ধি সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর নিকট আসমানী সংবাদ এসে যায়। তিনি কাউকে কিছু না বলে উঠে পড়েন এবং মদীনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। দীর্ঘক্ষণ ঘটনাস্থলে ফিরে না আসায় সাহাবীগণ তাঁর খোঁজে বের হন, মদীনার দিক থেকে আগত এক লোককে দেখে তাঁরা রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর কথা তাকে জিজ্ঞেস করে। সে ব্যক্তি বলেছিল যে, আমি তো তাঁকে মদীনায় প্রবেশ করতে দেখেছি। এ সংবাদ পেয়ে সাহাবীগণ সকলে মদীনায় ফিরে এলেন এবং রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর নিকট সমবেত হলেন। তিনি ইয়াহুদীদের বিশ্বাসঘাতকতার কথা তাঁদেরকে অবহিত করলেন।
উপরের দলিলে দেখতে পালেন যে, মুহাম্মদ হুট করে তার নবুয়্যতের প্রমাণ না দিয়ে সেখান থেকে চলে আসেন। এবারে আসুন দেখা যাক, এর আগে পরে কী ঘটেছিল [37]
সুনান আবূ দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৪/ কর, খাজনা, অনুদান ও প্রশাসনিক দায়িত্ব সম্পর্কে
পরিচ্ছেদঃ ১৬১. বনূ নযীরের ঘটনা সম্পর্কে।
২৯৯৪. মুহাম্মদ ইবন দাঊদ ইবন সুফইয়ান (রহঃ) ……. আবদুর রহমান ইবন কা’ব ইবন মালিক (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জনৈক সাহাবী হতে বর্ণনা করেছেন যে, কুরায়শ কাফিররা আবদুল্লাহ ইবন উবাই এবং তার মূর্তি-পূজক সাথীদের, যারা আওস ও খাযরাজ গোত্রের লোক, এ মর্মে পত্র লেখে, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বদর যুদ্ধের আগে মদীনায় অবস্থান করছিলেনঃ তোমরা আমাদের সাথী (মুহাম্মদ) কে জায়গা দিয়েছ। এ জন্য আমরা আল্লাহ্র নামে শপথ করে বলছি, হয়তো তাঁর সাথে যুদ্ধ কর, নয়তো তাঁকে বের করে দাও। অন্যথায় আমরা সম্মিলিতভাবে আক্রমণ করে তোমাদের যোদ্ধাদের হত্যা করব এবং তোমাদের স্ত্রীদের আমাদের দখলে আনব।
আবদুল্লাহ ইবন উবাই এবং তার মূর্তিপূজারী সাথীরা এ খবর পাওয়ার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সংগে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়। এ খবর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে পৌছবার পর তিনি তাদের সাথে সাক্ষাত করেন এবং বলেনঃ তোমরা কুরায়শদের নিকট হতে উত্তেজনা সৃষ্টিকারী চিঠি পেয়েছ, কিন্তু তা তোমাদের জন্য এত মারাত্মক নয়, যত না ক্ষতি তোমরা নিজেরা নিজেদের করবে। কেননা, তোমরা তো তোমাদের সন্তান-সন্ততি ও ভাইদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সংকল্প করছ।
তারা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে এরূপ কথা শুনলো, তখন তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লো। এ খবর কুরায়শ কাফিরদের কাছে পৌছলে তারা বদর যুদ্ধের পর ইয়াহুদীদের নিকট লিখলোঃ তোমরা ঘরবাড়ী ও দুর্গের অধিকারী। কাজেই তোমাদের উচিত আমাদের সাথী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে যুদ্ধ করা। অন্যথায় আমরা তোমাদের সাথে এরূপ করব, সেরূপ করব। আর আমাদের ও তোমাদের স্ত্রীদের মাঝে কোন পার্থক্য থাকবে না।
যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে তারা এরূপ চিঠি পেল, তখন বনূ নযীরের ইয়াহুদীরা বিদ্রোহ ঘোষণা করলো এবং তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ মর্মে অবহিত করে যে, আপনি আপনার সাথীদের থেকে ত্রিশজন নিয়ে আমাদের কাছে আসুন এবং আমাদের ত্রিশজন আলিম আপনার সংগে এক আলাদা স্থানে দেখা করবে। তারা আপনার কথা শুনবে, যদি তারা আপনার উপর ঈমান আনে এবং বিশ্বাস স্থাপন করে, তবে আমরা আপনার উপর ঈমান আনব।
পরদিন সকাল বেলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদল সেনাবাহিনী নিয়ে তাদের উপর হামলা করেন এবং তাদের অবরোধ করে বলেনঃ আল্লাহ্র শপথ! তোমরা যতক্ষণ অঙ্গীকার না করবে, ততক্ষণ আমি তোমাদের ব্যাপারে নিশ্চিত নই। তখন তারা (ইয়াহুদীরা) অঙ্গীকার করতে অস্বীকার করে। ফলে তিনি সেদিন তাদের সাথে দিনভর যুদ্ধে রত থাকেন। পরদিন তিনি বনূ নযীরকে বাদ দিয়ে বনূ কুরাইযার উপর আক্রমণ করেন এবং তাদের অঙ্গীকারবদ্ধ হতে বলেন। ফলে তারা তাঁর সংগে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়। তখন তিনি তাদের নিকট হতে প্রত্যাবর্তন করে পুনরায় বনূ নযীরকে অবরোধ করেন এবং তাদের সাথে ততক্ষণ যুদ্ধ করেন, যতক্ষণ না তারা দেশত্যাগে বাধ্য হয়।
বনূ নযীরের লোকেরা তাদের উটের পিঠে ঘরের দরজা, চৌকাঠ ইত্যাদি যে পরিমাণ মালামাল নেওয়া সম্ভব ছিল, তা নিয়ে যায়। এবার বনূ নযীরের খেজুরের বাগান রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অধিকারে আসে, যা আল্লাহ্ তা’আলা বিশেষভাবে প্রদান করেন। যেমন আল্লাহ্ বলেনঃ
وَمَا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ مِنْهُمْ فَمَا أَوْجَفْتُمْ عَلَيْهِ مِنْ خَيْلٍ وَلاَ رِكَابٍ
অর্থাৎ আল্লাহ্ কাফিরদের মাল হতে যে সস্পদ তাঁর রাসূলকে প্রদান করেন, তা হাসিলের জন্য তোমরা তোমাদের ঘোড়া অথবা উট হাঁকাও নি, অর্থাৎ ঐ সম্পদ বিনা যুদ্ধে হাসিল হয়।
অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ মালের অধিকাংশই মুহাজিরদের মাঝে বণ্টন করে দেন এবং অভাবগ্রস্ত দু’জন আনসারকে তা হতে অংশ প্রদান করেন। এ দু’জন ছাড়া অন্য আনসার সাহাবীদের মাঝে এ মাল বিতরণ করা হয়নি। অবশিষ্ট মাল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য সাদকা স্বরূপ ছিল, যা বনূ ফাতিমার নিয়ন্ত্রণে ছিল।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
কটুক্তি, গালাগালি, অভিশাপ এবং মিথ্যাচার
বাপদাদার ধর্ম নিয়ে অবমাননা ও কটূক্তি
ধর্মপ্রাণ ভাই বোনেরা প্রায়শই নাস্তিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে এই বলে যে, নাস্তিকরা নাকি তাদের ধর্মকে অবমাননা করে, কটূক্তি করে, সমালোচনা করে, বাপ দাদার এত বছরের প্রচলিত বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তোলে। আপনি জানেন কি, খোদ মুহাম্মদের ওপরেও একই অভিযোগ ছিল? খোদ মুহাম্মদই বাপ দাদার ধর্ম বিশ্বাসকে ত্যাগ করে ধর্ম অবমাননা করেছিল, যার কারণে সেই সময়ের পৌত্তলিক কুরাইশরা তার ওপর অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিল। যদিও আমি ধর্ম অবমাননাকে খারাপ কিছু বলে মনে করি না। প্রচলিত কুসংস্কার এবং কুপ্রথার বিরুদ্ধে সকল সচেতন মানুষেরই সোচ্চার হওয়া উচিৎ। কিন্তু মুমিনদের কাছে ধর্ম অবমাননা মস্তবড় অপরাধ, যার দায়ে তাদের নবী নিজেই অভিযুক্ত ছিলেন। প্রমাণ নিজেরাই দেখুন [38] –
আরেকটি রেফারেন্স দেখি [39] –
এবারে আসুন আসহাবে রাসুলের জীবনকথাতে বর্ণিত ইবনু হিসামের আল সীরাহ আন-নাবাবিয়্যাহ গ্রন্থের একটি দলিল পড়ে নিই। এখানে দেখুন, কিছু পৌত্তলিক এসে নবীকে জিজ্ঞেস করলো, আপনিই কি সেই ব্যক্তি, যিনি পৌত্তলিকদের বাপ দাদাদের গালাগালি করেন, তাদের উপাস্যকদের দোষের কথা বলেন, পৌত্তলিকদের বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান লোকেদের নির্বোধ ও বোকা মনে করেন? উত্তরে নবী বললো, হ্যাঁ, আমিই সেই ব্যক্তি। অর্থাৎ তিনিই এই সব কর্ম করে থাকেন [40] –
গোটা সম্প্রদায়কে অভিশাপ দিতেন নবী
দুর্ভিক্ষ একটি ভয়াহব ব্যাপার। একজন সভ্য মানুষ হিসেবে আমি আমার চরম শত্রুকেও দুর্ভিক্ষের অভিশাপ দিতে পারি না। কারণ কোন অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ হলে সেখানে দলে দলে শিশুরা মারা যায়, নারী এবং বৃদ্ধরা মারা যায়, প্রতিবন্ধীরা মারা যায়। এমনকি, কেউ চিহ্নিত অপরাধী হয়ে থাকলেও, দুর্ভিক্ষে না খেতে পেয়ে কেউ তিলে তিলে মারা যাক, এমনটাও আমি কখনো কামনা করি না। কিন্তু নবী দুর্ভিক্ষের অভিশাপ দিতেন, যেই দুর্ভিক্ষে শিশু নারী প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ সকলে মারা যেতে পারে! [41]
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ১৫/ বৃষ্টির জন্য দু’আ
পরিচ্ছেদঃ ৬৩৬. নবী (ﷺ) এর দু’আ ইউসুফ (আঃ) এর যমানার দুর্ভিক্ষের বছরগুলোর মত (এদের উপরেও) কয়েক বছর দুর্ভিক্ষ দিন।
৯৫২। কুতাইবা ইবনু সায়ীদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন শেষ রাকাআত থেকে মাথা উঠালেন, তখন বললেন, হে আল্লাহ! আইয়্যাশ ইবনু আবূ রাবী’আহকে মুক্তি দিন। হে আল্লাহ! সালামা ইবনু হিশামকে মুক্তি দিন। হে আল্লাহ! ওয়ালীদ ইবনু ওয়ালীদকে রক্ষা করুণ। হে আল্লাহ! দুর্বল মু’মিনদেরকে মুক্তি দিন। হে আল্লাহ! মুযার গোত্রের উপর আপনার শাস্তি কঠোর করে দিন। হে আল্লাহ! ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এর যমানার দুর্ভিক্ষের বছরগুলোর ন্যায় (এদের উপর) কয়েক বছর দুর্ভিক্ষ দিন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বললেন, গিফার গোত্র, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করুন। আর আসলাম গোত্র, আল্লাহ তাদেরকে নিরাপদে রাখুন। ইবনু আবূ যিনাদ (রহঃ) তাঁর পিতা থেকে বলেন, এ সমস্ত দু’আ ফজরের সালাতে ছিল।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী মিথ্যুক নবী
হযরত মুহাম্মদ ছিলেন প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী মিথ্যুক। কিন্তু খুব কৌশলে তিনি তার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের দায় আল্লাহর ওপর চাপিয়ে দিয়ে নিজের অপরাধকে আল্লাহর নির্দেশ বলে চালিয়ে দিয়েছিলেন। যার একদম সরাসরি প্রমাণ পাওয়া যায় সহি বুখারী হাদিসেই। নিচের হাদিসটি পড়ুন, এখানে বলা হচ্ছে, কোন বিষয়ে কেউ যদি প্রতিশ্রুতি দেয়, কিন্তু পরে যদি তার বিপরীতটি তার কাছে উত্তম মনে হয়, তাহলে প্রতিশ্রুতির কাফফারা দিয়ে বিপরীত কাজটিই করা যাবে। এতো সরাসরি মিথ্যাচার, এবং প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা। কাফফারা দিলেই কি সব মাফ হয়ে যায়? [42]
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
৯৩/ আহ্কাম
পরিচ্ছেদঃ ৯৩/৬. যে ব্যক্তি নেতৃত্ব চায়, তা তার উপরই ন্যস্ত করা হয়।
৭১৪৭. ‘আবদুর রহমান ইবনু সামুরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেনঃ হে ‘আবদুর রহমান ইবনু সামুরাহ! নেতৃত্ব চেয়ে নিও না। কেননা, যদি চাওয়ার পর তোমাকে তা দেয়া হয়, তাহলে তার সকল দায়িত্বভার তোমার উপরই অর্পিত হবে। আর যদি না চাওয়া সত্ত্বেও তোমাকে তা দেয়া হয়, তাহলে এ ক্ষেত্রে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) সহযোগিতা করা হবে। আর কোন বিষয়ে কসম করার পর তার বিপরীত দিকটিকে যদি উত্তম বলে মনে কর, তাহলে উত্তম কাজটিই করবে আর তোমার কসমের কাফ্ফারা আদায় করে দিবে। (৬৬২২) (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৬৪৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৬২)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আব্দুর রহমান ইবন সামুরা (রাঃ)
শুধু তাই নয়, নবী নিজেও এই কাজটি করতেন। কাউকে কোন প্রতিশ্রুতি দিলে, তিনি পরে যদি মনে করতেন প্রতিশ্রুতির বিপরীত কাজটিই উত্তম বা লাভজনক, তিনি কিছু কাফফারা দিয়ে বিপরীত কাজটি, অর্থাৎ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করতেন [43]
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫৯/ যবাহ করা, শিকার করা
পরিচ্ছেদঃ ২১৯২. মুরগীর গোশত
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৫১২১, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৫৫১৭ – ৫৫১৮
৫১২১। ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ মূসা আশ-আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মুরগীর গোশত খেতে দেখেছি।
আবূ মা’মার (রহঃ) … যাহদাম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) এর কাছে ছিলাম। জারমের এ গোত্র ও আমাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ছিল। আমাদের কাছে খাবার আনা ছিল। তাতে ছিল মোরগের গোশত। দলের মধ্যে লালচে রংয়ের এক ব্যাক্তি বসা ছিল। সে খাবারের দিকে অগ্রসর হল। আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) তখন বলেনঃ এগিয়ে এসো, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মোরগের গোশত খেতে দেখেছি। সে বললঃ আমি এটিকে এমন কিছু খেতে দেখেছি, যে কারণে তা খেতে আমি অপছন্দ করি। তখন আমি কসম করেছি যে, আমি তা খাব না। তিনি বললেনঃ এগিয়ে এসো, আমি তোমাকে জানাবো। কিংবা তিনি বলেছেন, আমি তোমাদের কাছে হাদীস বর্ননা করবো।
আমি আশআরীদের এক দল সহ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম। এরপর আমি তার সামনে এসে উপস্থিত হই যখন তিনি ছিলেন রাগান্বিত। তখন তিনি বণ্টন করছিলেন সাদাকার কিছু জানোয়ার। আমরা তার কাছে সাওয়ারী চাইলাম। তখন তিনি কসম করে বললেনঃ আমাদের কোন সাওসারী দিবেন না এবং বললেনঃ তোমাদের সাওয়ারীর জন্য দিতে পারি এমন কোন জন্তু আমার কাছে নেই। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গনীমতের কিছু উট আনা হল। তিনি বললেনঃ আশআরীগণ কোথায়? আশআরীগণ কোথায়?
আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) বলেনঃ এরপর তিনি আমাদের সাদাচুল বিশিষ্ট বলিষ্ট পাঁচটি উট দিলেন। আমরা কিছু দুরে গিয়ে অবস্থান করলাম। তখন আমি আমার সঙ্গীদের বললাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কসমের কথা ভুলে গিয়েছিলেন। আল্লাহর কসম যদি আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তার কসমের ব্যাপারে গাফিল রাখি, তাহলে আমরা কোনদিন সফলকাম হবো না। কাজেই আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ফিরে গিয়ে তাকে বলা হলঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা আপনার নিকট সাওয়ায়ী চেয়েছিলাম তখন আপনি আমাদের সাওসারী দেবেন না বলে কসম করেছিলেন। আমাদের মনে হয় আপনি আপনার কসমের কথা ভুলে গিয়েছেন।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ নিজেই তো আমাদের সাওয়ারীর জানোয়ার দিয়েছেন। আল্লাহর কসম, আমি যখন কোন ব্যাপারে কসম করি এরপর কসমের বিপরীত কাজ তার চাইতে মঙ্গলজনক মনে করি, তখন আমি মঙ্গলজনক কাজটিই করি এবং কাফফারা দিয়ে হালাল হয়ে যাই।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ মূসা আল- আশ’আরী (রাঃ)
মিথ্যা বলার অনুমতি প্রদান
নবী মুহাম্মদ একজন সাহাবীকে পাঠিয়েছিলেন শত্রুকে খুন করাবার উদ্দেশ্যে। সেই সাহাবী নবী মুহাম্মদের কাছে মিথ্যা বলে সুযোগ বুঝে সেই লোককে হত্যা করার অনুমতি চাইলে নবী সেই কাজের অনুমতি প্রদান করেন। মূল হাদিসগুলো অন্যত্র দেয়া হয়েছে, এখানে শুধু হাদিসগুলোর ব্যাখ্যা দেয়া হলো [44]
ধর্ম প্রচারের কাজে ঘুষ দিতেন নবী
নবী মুহাম্মদ ইসলাম ধর্মে আকৃষ্ট করার জন্য কাফেরদের অর্থ সম্পদ এবং গনিমতের মাল থেকে ঘুষ দিতেন। এটি উনি কোন রাখঢাক না রেখে সরাসরিই বলতেন যে, অর্থ সম্পদ পেলে অমুসলিমরা ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হবে, এই উদ্দেশ্যেই তিনি তাদের অর্থ দিতেন। বিষয়টি জানা যায় তাফসীরে ইবনে কাসীর থেকে [45] –
রেগে গেলে গালাগালি দিতেন নবী
একজন স্ত্রী যখন সন্তান জন্ম দিতে পারেন না, সমাজে তিনি নানাভাবে অপমানিত এবং অপদস্থ হন এই কারণে। সমাজে তাকে বন্ধ্যা নারী বলে টিটকারি দেয়া হয়, তাকে এই ধরণের শব্দাবলী ব্যবহার করে অপমানিত করা হয়। যেন সন্তান জন্ম দিতে না পারলেই একজন নারীর আর কোন মূল্য নেই! তার জন্য সবচাইতে অপমানজনক এবং অসম্মানজনক গালিই হচ্ছে বন্ধ্যা বলে ডাকা। একজন সন্তানহীন নারীকে কোন মানবিক মানুষই এই কথাটি মনে করিয়ে দেন না। অথচ, নবী নিজেই তার স্ত্রীকে এই নিয়ে খোটা দিতেন, গালি দিতেন! [46] [47] [48] –
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ১৬/ হাজ্জ
পরিচ্ছদঃ ৬৪. বিদায়ী তাওয়াফ বাধ্যতামুলক কিন্তু ঋতুমতী মহিলার ক্ষেত্রে তা পরিত্যাজ্য
৩০৯৮। মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না, ইবনু বাশশার ও উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয (রহঃ) … হাকাম ইবরাহীম থেকে, তিনি আসওয়াদ থেকে এবং তিনি আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রওনা হওয়ার ইচ্ছা করলেন, তখন সাফিয়্যাকে তাঁর তাঁবুর দরজায় চিন্তিতা ও অবসাদগ্রস্তা দেখতে পেলেন। তিনি বললেনঃ বন্ধ্যা, নেড়ি! তুমি আমাদের (এখানে) আটকে রাখবে? তিনি পুনরায় তাকে বললেনঃ তুমি কি কুরবানীর দিন (বায়তুল্লাহ) যিয়ারত করেছ? তিনি বললেন, হ্যাঁ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাহলে রওনা হও।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সুনানে ইবনে মাজাহ
তাওহীদ পাবলিকেশন
অধ্যায়ঃ ১৯/ হজ্জ
পরিচ্ছদঃ ১৯/৮৩. ঋতুবতী স্ত্রীলোক বিদায়ী তাওয়াফ না করে প্রস্থান করতে পারে
২/৩০৭৩। আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাফিয়্যা (রাঃ) সম্পর্কে জানতে চাইলে আমরা বললাম, সে ঋতুবতী হয়েছে। তিনি বলেনঃ বন্ধ্যা, ন্যাড়া, সে তো আমাদের আটকে ফেলেছে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি কোরবানীর দিন তাওয়াফ করেছেন। তিনি বলেনঃ তাহলে অসুবিধা নেই। তোমরা তাকে রওনা হতে বলো।
সহীহুল বুখারী ৩২৮, ১৫৬১, ১৭৩৩, ১৭৫৭, ১৭৬২, ১৭৭২, ৪৪০১, ৫৩২৯, ৬১৫৭, ৭২২৯, মুসলিম ১২১১, তিরমিযী ৯৪৩, নাসায়ী ৩৯১, আবূ দাউদ ২০০৩, আহমাদ ২৩৫৮১, ২৩৫৮৯, ২৪০০৪, ২৪০৩৭, ২৪১৫৩, ২৪৩৮৫, ২৪৭৮১, ২৪৮৯৭, ২৪৯১৪, ২৪৯৯১, ২৫০৭৫, ২৫১৩৪, ২৫১৯৩, ২৫২৪৯, ২৫৩৪৭,২৫৪১৩, ২৫৬২৮, মুয়াত্তা মালেক ৯৪৩, ৯৪৫, দারেমী ৯৪২, ১৯১৭, ইরওয়া ৪/২৬১। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বাপের লিঙ্গ কামড়াতে বলেছেন নবী
বংশ নিয়ে গর্ব করা আমরা যারা মুক্তচিন্তার কথা বলি তারাও সমর্থন করি না। কিন্তু যারা বংশ নিয়ে গর্ব করে, নবী মুহাম্মদ তাদের সম্পর্কে একটি অশালীন কথা বলেছেন। মজার বিষয় হচ্ছে, নবী নিজেই তার কুরাইশ বংশের গর্বে গর্বিত ছিলেন, এবং কুরাইশ বংশকে সর্বোচ্চ মর্যাদায় আসীন করে গেছেন। [49] –
হাদীস সম্ভার
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
পরিচ্ছেদঃ বংশগর্ব
(২০৩৭) উবাই বিন কা’ব (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যদি কোন লোককে দেখো যে, সে জাহেলিয়াতের বংশ-সম্পর্ক উত্থাপন করছে, তাহলে তোমরা তাকে তার বাপের লিঙ্গ কামড়াতে বলো এবং ইঙ্গিত করো না। (বরং স্পষ্ট বলো)।’
(আহমাদ ২১২৩৬, নাসায়ী কুবরা ১০৮১০, ত্বাবারানী ৫৩২, সহীহুল জামে হা/৫৬৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)
কাফেরদের গালি দিতেন নবী
বনূ কুরাইযা গোত্র আক্রমণের সময় তাদের বানরের জ্ঞাতিগোষ্ঠী বলে গালাগালি করেছিলেন নবী। কোন সম্প্রদায়কে তাদের ধর্ম বিশ্বাসের কারণে গালাগালি দেয়া, নারী শিশু বৃদ্ধ মানুষ, অপরাধী কিংবা নিরাপরাধ সবাইকে একসাথে, যা অত্যন্ত সাম্প্রদায়িক এবং নোংরা মন মানসিকতার [50]।
আবু আল-হাকামের নাম বিকৃতি করা
আমর ইবনে হিশাম বা আবু আল-হাকাম (অর্থ জ্ঞানীর পিতা) ছিলেন মক্কার একজন বহুঈশ্বরবাদী পৌত্তলিক বা মূর্তিপূজারী সম্ভ্রান্ত কুরাইশ নেতা। ইসলামের নবী মুহাম্মদ ও মক্কার মুসলমানদের সাথে তার তীব্র সংঘাত হয়। সেই কারণে নবী মুহাম্মদ তাকে আবু জেহেল বা মূর্খের পিতা বলে গালি দিতে শুরু করেন। সেই থেকে মুসলমানদের মধ্যে আবু আল-হাকামকে আবু জেহেল নামেই ডাকা হয়। [51] –
গোত্রের নিন্দিত ব্যক্তি ছিলেন নবী
পাগল বা উন্মাদ ডাকা হতো নবীকে
কোরআনের বহু জায়গাতেই নবী মুহাম্মদকে আল্লাহ স্বান্তনা দিয়ে জানাচ্ছেন যে, মুশরিকরা নবীকে পাগল বলে কিন্তু নবী আসলে পাগল বা উন্মাদ নন [52] [53]। আরো অনেক আয়াতেই বলা হয়েছে, নবীকে পাগল বলে হাসাহাসি করতো লোকজন।
হে রাসূল! আপনাকে আল্লাহ নবুওয়াতের যে নিয়ামত দান করেছেন সে বিষয়ে আপনি পাগল নন। বরং আপনি মুশরিকদের কর্তৃক আরোপিত পাগলামির অপবাদ থেকে মুক্ত।
— Bengali Mokhtasar
তোমার প্রতিপালকের অনুগ্রহে তুমি পাগল নও।
— Taisirul Quran
তোমার রবের অনুগ্রহে তুমি উম্মাদ নও।
— Sheikh Mujibur Rahman
তোমার রবের অনুগ্রহে তুমি পাগল নও।
— Rawai Al-bayan
আপনার রবের অনুগ্রহে আপনি উন্মাদ নন।
— Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
মক্কার কাফিররা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে বললো: হে কুর‘আন প্রাপ্তির দাবিদার নিশ্চয়ই তুমি এ দাবির মাধ্যমে পাগল হিসেবেই প্রমাণিত। তুমি এর মাধ্যমে পাগলদের মতোই আচরণ করছো।
— Bengali Mokhtasar
তারা বলে, ‘ওহে ঐ ব্যক্তি যার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে! তুমি তো অবশ্যই পাগল।
— Taisirul Quran
তারা বলেঃ ওহে, যার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে! তুমিতো নিশ্চয়ই উম্মাদ।
— Sheikh Mujibur Rahman
আর তারা বলল, ‘হে ঐ ব্যক্তি, যার উপর কুরআন নাযিল করা হয়েছে, তুমি তো নিশ্চিত পাগল’।
— Rawai Al-bayan
আর তারা বলে, ‘হে ঐ ব্যক্তি, যার প্রতি যিকর [১] নাযিল হয়েছে! তুমি তো নিশ্চয় উন্মাদ [২]।
— Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
মুজাম্মাম বলে ডাকা হতো নবীকে
অনেক মুসলিমই বলে থাকেন যে, নবীকে তার নিজের গোত্রের মানুষ আল আমীন বলে ডাকতো। কিন্তু তারা যা গোপন করে কিংবা প্রচার করে না, সেটি হচ্ছে, নবীকে কিন্তু অনেক বাজে নামেও ডাকা হতো। নবী মুহাম্মদকে কাফেররা মুজাম্মাম নামে ডাকতো বলে হাদিস ও সীরাত গ্রন্থ থেকে জানা যায়। মুজাম্মাম শব্দের অর্থ হচ্ছে নিন্দিত ব্যক্তি। অর্থাৎ নবীকে তারা একজন নিন্দিত মানুষ হিসেবেই গণ্য করতো [54]
এবারে আসুন হাদিস থেকে বিষয়টি দেখে নেয়া যাক [55] [56]
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ – নবী (সা.) -এর নামসমূহ ও গুণাবলি
৫৭৭৮-[৩] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) – (সাহাবীদেরকে) বললেন, এতেও কি তোমরা আশ্চর্যান্বিত হচ্ছ না যে, আল্লাহ তা’আলা কিভাবে কুরায়শদের গালমন্দ ও অভিসম্পাতকে আমার ওপর হতে সরিয়ে দিয়েছেন? তারা ’মুযাম্মাম’ (নিন্দিত) নামে গালাগালি করে এবং ’মুযাম্মাম’-কে অভিসম্পাত দেয়। অথচ আমি মুহাম্মাদ’ (প্রশংসিত) মুযাম্মাম নই। (বুখারী)
সহীহ: বুখারী ৩৫৩৩, নাসায়ী ৩৪৩৮, মুসনাদে ‘আবূদ ইবনু হুমায়দ ১১৩৬, আস সুনানুল কুবরা লিন্ নাসায়ী ৫৬, ১৭৬০৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
সুনান আন-নাসায়ী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
২৭/ তালাক
পরিচ্ছেদঃ ২৫. কোন কথা বলে, এর বাহ্যিক অর্থ না নেয়া
৩৪৪২. ইমরান ইবন বাককার (রহঃ) … আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দেখ, আল্লাহ তা’আলা কিরূপে আমার থেকে কুরাইশের গালি ও অভিসম্পাত দূর করেছেন। তারা তো গালি দিতেছে মুযাম্মাম বলে, এবং অভিসম্পাত দিতেছে মুযাম্মাম বলে, অথচ আমি হলাম মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
তাহক্বীকঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
মুহাম্মদ ইবনে আবূ কাবশা
বেশ কয়েকটি হাদিস থেকে জানা যায়, পৌত্তলিক কুরাইশরা নবী মুহাম্মদকে ইবনে আবূ কাবশা বলে ডাকতো। ইবনে আবূ কাবশা অর্থ হচ্ছে আবূ কাবশার ছেলে। কে ছিলেন এই আবূ কাবশা? তিনি ছিলেন মুহাম্মদের দুধমা হালিমার স্বামী। জানা যায়, তিনি মূর্তি পুজা করতেন না। এই কারণে কুরাইশরা মুহাম্মদকে আবূ কাবশার পুত্র বলে সম্বোধন করতো। আসুন সেই হাদিসগুলো দেখে নিই [57] [58] –
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৫৬/ জিহাদ ও যুদ্ধকালীন আচার ব্যবহার
পরিচ্ছেদঃ ৫৬/১২২. রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্তিঃ এক মাসের পথের দূরত্বে অবস্থিত শত্রুর মনেও আমার সম্পর্কে ভয়-ভীতি জাগরণের দ্বারা আমাকে সাহায্য করা হয়েছে।
২৯৭৮. ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তাঁকে আবূ সুফ্ইয়ান জানিয়েছেন, হিরাক্ল আমাকে ডেকে পাঠান। তখন তিনি ইলিয়া নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন। অতঃপর সম্রাট আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পত্রখানি আনতে আদেশ করেন যখন পত্র পাঠ সমাপ্ত হল, তখন বেশ হৈ চৈ ও শোরগোল পড়ে গেল। অতঃপর আমাদেরকে বাইরে নিয়ে আসা হল। যখন আমাদেরকে বের করে দেয়া হচ্ছিল তখন আমি আমার সঙ্গীদের উদ্দেশ্য করে বললাম, আবূ কাবশার পুত্রের[১] ব্যাপারটার গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেল। রোমের বাদশাহও তাঁকে ভয় করে। (৭) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৭৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৭৬৭)
[১] আবূ কাবশা আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দুধ মা হালীমাহ (রাঃ)-এর স্বামী ছিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ)
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪৮/ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ ১৮৬৩. রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর উক্তিঃ এক মাসের পথের দুরত্ব থেকে (শত্রুর মনে) ভীতি সঞ্চারের মাধ্যমে আমাকে সাহায্য করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ আমি কাফিরদের অন্তরে ভীতির সঞ্চার করব। যেহেতু তারা আল্লাহর শরীক করেছে। (৩ঃ ১৫১) (এ প্রসঙ্গে) জাবির (রাঃ) রাসুলুল্লাহ (সাঃ) থেকে হাদীস উদ্ধৃত করেছেন
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ২৭৭০, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৯৭৮
২৭৭০। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তাঁকে আবূ সুফিয়ান জানিয়েছেন, (রোম সম্রাট) হিরাকল (হিরাক্লিয়াস) আমাকে ডেকে পাঠান। তখন তিনি ইলিয়া (বর্তমান ফিলিস্তিন) নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন। তারপর সম্রাট রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পত্রখানি আনতে আদেশ করেন, যখন পত্র পাঠ সমাপ্ত হল, তখন বেশ হৈ চৈ ও শোরগোল পড়ে গেল। এরপর আমাদেরকে (দরবার হতে) বাইরে নিয়ে আসা হল। তখন আমি আমার সঙ্গীদের উদ্দেশ করে বললাম, যখন আমরা বহিষ্কৃত হচ্ছিলাম, আবূ কাবশার পুত্রের* বিষয়ের গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেল। রোমের বাদশাহও তাঁকে ভয় করে।
* আবূ কাবশা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দুধ মা হালীমা (রাঃ) এর স্বামী ছিলেন। আবূ সুফিয়ান (রাঃ) ইসলাম গ্রহণ করার পূর্বেকার ঘটনা হিসাবে তাচ্ছিল্য করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আবূ কাবশার পুত্র বলেছিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ)
কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং অন্ধবিশ্বাসী
ঝাড়ফুকে বিশ্বাসী ছিলেন নবী
নবী মুহাম্মদ ছিলেন প্রচণ্ড কুসংস্কারাচ্ছন্ন। তাই ইসলাম ধর্মের মধ্যেই চলে এসেছে অসংখ্য কুসংস্কার এবং হাস্যকর সব বিষয়। যদিও সেই সময়ের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে, নবী মুহাম্মদকে খুব বেশি দোষ দেয়া যায় না। কারণ একটি অসভ্য বর্বর সমাজে জন্ম নিয়ে ছোটবেলা থেকে মুহাম্মদ নিশ্চয়ই এসব কুসংস্কার শিখেই বড় হয়েছে। কিন্তু এসব কুসংস্কার এই সময়ে তো আর কোন সুস্থ স্বাভাবিক শিক্ষিত মানুষের পক্ষে মানা সম্ভব নয় [59] [60] [61] [62] [63] –
সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
পাবলিশারঃ হুসাইন আল-মাদানী
অধ্যায়ঃ ২৬/ চিকিৎসা
২০৫৬। আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, জ্বর, বদ-নজর ও ব্ৰণ-ফুসকুড়ি (ক্ষুদ্র ফোড়া) ইত্যাদি ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঝাড়ফুক দেয়ার সম্মতি প্রদান করেছেন।
সহীহ, মুসলিম।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ৪০। সালাম
পরিচ্ছদঃ ২১. চোখলাগা, পার্শ্বঘা, বিষাক্ত প্রাণীর বিষক্রিয়া ও দুরাবস্থা হতে (মুক্তির জন্য) ঝাড়ফুক করা মুস্তাহাব
৫৬১২-(৫৪/২১৯৪) আবূ বাকর ইবনু আবূ শাইবাহ্, যুহায়র ইবনু হারব ও ইবনু আবূ উমার (রহঃ) ….. আয়িশাহ্ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়ম করে ছিলেন যে, মানুষ তার (শরীরের) কোথাও অসুস্থতা অনুভব করলে অথবা তাতে কোন ফোঁড়া বা আঘাতপ্রাপ্ত (হয়ে) থাকলে- রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার আঙ্গুল দ্বারা এ রকম করতেন- (এ কথা বলে এভাবে করার ধরণ বুঝানোর জন্য)। বর্ণনাকার সুফইয়ান (রহঃ) তার বুড়ে আঙ্গুলটি জমিনে রাখলেন- অতঃপর তা তুলে নিলেন এবং সে সময় এ দু’আ পড়তেন بِاسْمِ اللَّهِ تُرْبَةُ أَرْضِنَا بِرِيقَةِ بَعْضِنَا لِيُشْفَى بِهِ سَقِيمُنَا بِإِذْنِ رَبِّنَا অর্থাৎ- আল্লাহর নামে- আমাদের জমিনের ধূলামাটি আমাদের কারো (মুখের) লালার সঙ্গে (মিলিয়ে)- আমাদের পালনকর্তর আদেশে তা দিয়ে আমাদের অসুস্থ ব্যক্তির আরোগ্য লাভের উদ্দেশে (মালিশ করছি)। তবে ইবনু আবূ শাইবাহ্ (রহঃ) (তার বর্ণনাতে) বলেছেন- يُشْفَى ‘শিফা দান করা হয়’। এবং যুহায়র (রহঃ) বলেছেন, لِيُشْفَى আমাদের রোগীর সুস্থতা লাভের উদ্দেশে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৫৩১, ইসলামিক সেন্টার ৫৫৫৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ৪০। সালাম
পরিচ্ছদঃ ২১. চোখলাগা, পার্শ্বঘা, বিষাক্ত প্রাণীর বিষক্রিয়া ও দুরাবস্থা হতে (মুক্তির জন্য) ঝাড়ফুক করা মুস্তাহাব
৫৬২০-(৬১/২১৯৯) মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ….. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বানু আমরকে সাপের ছোবলে আক্রান্ত রোগীর ঝাড়ফুঁকের অনুমতি দেন। আবূ যুবায়র (রহঃ) আরও বলেছেন- আমি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাযিঃ) কে আরও বলতে শুনেছি যে, একটি বিছা আমাদের এক লোককে ছোবল দিল। আমরা সেথায় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে বসা ছিলাম। তখন এক লোক বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি (তাকে) ঝেড়ে দেই? তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে কোন লোক যদি তার ভাইয়ের (কোনও) উপকার করতে পারে, সে যেন (তা) করে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৫৩৯, ইসলামিক সেন্টার ৫৫৬৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ২৩/ চিকিৎসা
১৮. ঝাড়ফুঁক সম্পর্কে
৩৮৮৭। আশ-শিফা বিনতু আব্দুল্লাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি হাফসাহ (রাঃ)-এর নিকট ছিলাম, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এসে বললেনঃ তুমি ওকে (হাফসাহকে) যেভাবে লেখা শিখিয়েছ, সেখাবে পিপড়া (পোকা) কামড়ের ঝাড়ফুঁক শিক্ষা দাও না কেন।(1)
সহীহ।
(1). আহমাদ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ২৩/ চিকিৎসা
১৭. তাবীজ ঝুলানো
৩৮৮৪। ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ কেবল বদনযর লাগা কিংবা বিষাক্ত প্রাণীর দংশনে চিকিৎসায় ঝাড়ফুঁক দেয়া যায়।(1)
সহীহ।
(1). বুখারী মাওকুফভাবে, তিরমিযী, আহমাদ, হুমাইদী।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
জাদুটোনায় বিশ্বাস করতেন নবী
হযরত মুহাম্মদ জাদুটোনায় বিশ্বাসী ছিলেন। অর্থাৎ, উনি সেই সময়ে অন্য সকলের মতই বিশ্বাস করতেন বান মারা, জাদু করা, এগুলো সত্যি। সেই সময়ের প্রেক্ষাপটে এটি অবশ্য স্বাভাবিক। আমাদের নানী দাদীরাও এইসব কুসংস্কারে বিশ্বাসী ছিলেন। কিন্তু আধুনিক শিক্ষিত মানুষ এসবকে পুরনো দিনের কুসংস্কার বা মানসিক রোগ বলেই মনে করেন [64]
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
৪০/ সালাম
পরিচ্ছেদঃ ১৭. যাদু-টোনা
৫৫১৫। আবূ কুরায়ব (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লাবীদ ইবনু আ’সাম নামে বনূ যুরায়ক গোত্রের এক ইয়াহুদী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যাদু করল। তিনি বলেন, এ যাদুর ক্রিয়ায় এমনও হতো যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেয়াল হতো যে কোন (পার্থিব) বিষয় তিনি করছেন, অথচ (বাস্তবে) তিনি তা করছিলেন না। অবশেষে একদিনে অথবা এক রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুআ করলেন; পূনরায় দু’আ করলেন এবং পূনরায় দুআ করলেন। এরপর বললেন, হে আয়িশা, তুমি কি বুঝতে পেরেছো যে, আল্লাহ আমাকে সে বিষয়ে সমাধান দিয়েছেন, যে বিষয়ে আমি তার কাছে সমাধান চেয়েছিলাম? (তা এভাবে যে) (দুজন ফিরিশতা) দু’ব্যক্তি (রূপে) আমার কাছে এল। তাদের একজন আমার মাথার কাছে এবং অন্য জন আমার পায়ের কাছে বসল। তারপর আমার মাথার কাছের ব্যক্তি পায়ের কাছের ব্যক্তিকে কিংবা আমার পায়ের কাছের লোকটি আমার মাথার কাছের লোকটিকে বলল, লোকটির রোগ কি?
অপরজন বলল, যাদু গ্রস্ত। (প্রথমজন) বলল, কে তাকে যাদু করেছে? (দ্বিতীয়জন) বলল, লাবীদ ইবনু আসলান। (প্রথমজন) বলল, কোন জিনিসে? (দ্বিতীয়জন) বলল (ভাঙ্গা) চিরুনী (আচড়ানোকালে চিরুণির সাথে) উঠা চুল, (আরও) বলল, নর খেজুরের ফুলের আবরণীতে। (প্রথমজন) বলল, তা কোথায়? (দ্বিতীয়জন) বলল- ‘যী-আরওয়ান কুপে’।
তিনি (আয়িশা (রাঃ)) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীগণের কয়েকজনকে সাথে নিয়ে সেখানে গেলেন। এরপর (ফিরে এসে) বললেন, হে আয়িশা, আল্লাহর কসম! সে (কুপের) পানি যেন মেহেদীপাতা ভিজানো, (পানি)। আর সেখানকার খেজুর গাছ যেন শয়তানের মাথা। তিনি বলেন, তখন আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তাহলে আপনি তা (জনসমক্ষে) পুড়ে ফেললেন না কেন? তিনি বললেন, না, (আমি তা সমীচিন মনে করিনি)। কারণ, আমাকে তো আল্লাহ আরোগ্য করেছেন আর মানুষকে কোন অকল্যাণে উত্তেজিত করা আমি অপছন্দ করি। আমি সে বিষয়ে হুকুম দিলে তা দাফন করে দেওয়া হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
জ্বীন ভুত ফেরেশতায় বিশ্বাস করতেন নবী
তৎকালীন আরব সমাজে যেসকল বিশ্বাস ছিল, যেমন জ্বীন পরী ফেরেশতা শয়তান, এইসব কিছুতেই মুহাম্মদ বিশ্বাস করতেন। এই বিশ্বাসগুলো অঞ্চল ভেদে বদলে যায়। নবী মুহাম্মদ যদি ভারতে জন্ম নিতেন, তাহলে হয়তো ভারতীয় ভুত পেত্নী বিশ্বাস করতেন। আরবে জন্ম নিয়েছেন বলে বিশ্বাস করতেন জ্বীন পরীতে [65] [66] মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত), হাদিস একাডেমি, হাদিস নম্বরঃ ১২২১ )) –
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৬৩/ আনসারগণ (রাযিয়াল্লাহু ‘আনহুম)-এর মর্যাদা
পরিচ্ছদঃ ৬৩/৩২. জ্বিনদের উল্লেখ।
৩৮৬০. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উযু ও ইস্তিন্জার ব্যবহারের জন্য পানি ভর্তি একটি পাত্র নিয়ে পিছনে পিছনে যাচ্ছিলেন, হঠাৎ তিনি তাকিয়ে বললেন, কে? আমি বললাম, আমি আবূ হুরাইরাহ। তিনি বললেন, আমাকে কয়েকটি পাথর তালাশ করে দাও। আমি তা দিয়ে ইস্তিন্জা করব। (১) তবে, হাড় এবং গোবর আনবে না। আমি আমার কাপড়ের কিনারায় কয়েকটি পাথর এনে তাঁর কাছে রেখে দিলাম এবং আমি সেখান থেকে কিছুটা দূরে গেলাম। তিনি যখন ইস্তিন্জা হতে বেরোলেন, তখন আমি এগিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, হাড় ও গোবর এর ব্যাপার কী? তিনি বললেন, এগুলো জ্বিনের খাবার। আমার কাছে নাসীবীন (২) নামের জায়গা হতে জ্বিনের একটি প্রতিনিধি দল এসেছিল। তারা ভাল জ্বিন ছিল। তারা আমার কাছে খাদ্যদ্রব্যের আবেদন জানাল। তখন আমি আল্লাহর নিকট দু‘আ করলাম যে, যখন কোন হাড্ডি বা গোবর তারা লাভ করে তখন তারা যেন তাতে খাদ্য পায়। (৩) (১৫৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৭৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৭৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ১৯/ তাহাজ্জুদ
পরিচ্ছদঃ ১৯/১৩. সলাত আদায় না করে ঘুমিয়ে পড়লে তার কানে শয়তান পেশাব করে দেয়।
১১৪৪. ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মাস‘ঊদ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে এক ব্যক্তির ব্যাপারে আলোচনা করা হল- সকাল বেলা পর্যন- সে ঘুমিয়েই কাটিয়েছে, সালাতের জন্য জাগ্রত হয়নি, তখন তিনি (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) ইরশাদ করলেনঃ শয়তান তার কানে পেশাব করে দিয়েছে। (৩২৭০; মুসলিম ৬/২৮, হাঃ ৭৭৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১০৭৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১০৭৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
হাদিস একাডেমি
অধ্যায়ঃ পর্ব-৪ঃ সলাত
পরিচ্ছদঃ ৩৩. প্রথম অনুচ্ছেদ – ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান
১২২১-(৩) ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মুখে এক লোক সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। তাঁকে বলা হলো, লোকটি সকাল পর্যন্ত একটানা ঘুমিয়ে থাকে, সলাতের জন্যে উঠে না। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেন, এ লোকের কানে অথবা তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তার দু’কানে শায়ত্বন (শয়তান) পেশাব করে দিয়েছে। (বুখারী, মুসলিম)
সহীহ : বুখারী ৩২৭০, মুসলিম ৭৭৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত নবী
মানসিক সমস্যা ছিল নবীর
কিছু হাদিস থেকে জানা যায়, নবী মুহাম্মদের একসময় কিছু সমস্যা হয়। যার ফলে তিনি মনে মনে ভাবতেন যে, তিনি তার স্ত্রীদের কাছে গমন করেছেন, অথচ তিনি আসলে যান নি। এমন কিছু কাজ করেছেন বলে উনার মনে হতো, আসলে উনি সেগুলো করেন নি। পরে তিনি এর জন্য যাদুকে দায়ী করেন [67] [68] –
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
৭৬/ চিকিৎসা
পরিচ্ছেদঃ ৭৬/৪৯. যাদুর চিকিৎসা করা যাবে কি না?
ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেন, আমি সা‘ঈদ ইবনু মুসায়্যিব (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করলামঃ জনৈক ব্যক্তিকে যাদু করা হয়েছে অথবা যাদু ক’রে) তার ও তার স্ত্রীর মধ্যে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে, এমন ব্যক্তিকে যাদু মুক্ত করা যায় কিনা অথবা তার থেকে যাদুর বন্ধন খুলে দেয়া বৈধ কিনা? সা‘ঈদ বললেনঃ এতে কোন ক্ষতি নেই। কেননা, তারা এর দ্বারা তাকে ভাল করতে চাইছে। আর যা কল্যাণকর তা নিষিদ্ধ নয়।
৫৭৬৫. ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর একবার যাদু করা হয়। এমন অবস্থা হয় যে, তাঁর মনে হতো তিনি বিবিগণের কাছে এসেছেন, অথচ তিনি আদৌ তাঁদের কাছে আসেননি। সুফ্ইয়ান বলেনঃ এ অবস্থা যাদুর চরম প্রতিক্রিয়া। বর্ণনাকারী বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম থেকে জেগে উঠেন এবং বলেনঃ হে ‘আয়িশাহ! তুমি জেনে নাও যে, আমি আল্লাহর কাছে যে বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম তিনি আমাকে তা বলে দিয়েছেন। স্বপ্নে দেখি) আমার নিকট দু’জন লোক এলেন। তাদের একজন আমার মাথার কাছে এবং আরেকজন আমার পায়ের নিকট বসলেন। আমার কাছের লোকটি অন্যজনকে জিজ্ঞেস করলেনঃ এ লোকটির কী অবস্থা? দ্বিতীয় লোকটি বললেনঃ একে যাদু করা হয়েছে। প্রথম জন বললেনঃ কে যাদু করেছে? দ্বিতীয় জন বললেনঃ লাবীদ ইবনু আ‘সাম। এ ইয়াহূদীদের মিত্র যুরায়ক্ব গোত্রের একজন, সে ছিল মুনাফিক।
প্রথম ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেনঃ কিসের মধ্যে যাদু করা হয়েছে? দ্বিতীয় ব্যক্তি উত্তর দিলেনঃ চিরুনী ও চিরুনী করার সময় উঠে যাওয়া চুলের মধ্যে। প্রথম ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেনঃ সেগুলো কোথায়? উত্তরে দ্বিতীয়জন বললেনঃ পুং খেজুর গাছের জুবের মধ্যে রেখে ‘যারওয়ান’ কূপের ভিতর পাথরের নীচে রাখা আছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত কূপের নিকট এসে সেগুলো বের করেন এবং বলেনঃ এইটিই সে কূপ, যা আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। এর পানি মেহদী মিশ্রিত পানির তলানীর মত, আর এ কূপের পার্শ্ববর্তী) খেজুর গাছের মাথাগুলো দেখতে) শয়তানের মাথার ন্যায়। বর্ণনাকারী বলেনঃ সেগুলো তিনি সেখান থেকে বের করেন। ‘আয়িশাহ বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলামঃ আপনি কি এ কথা প্রকাশ করে দিবেন না? তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম, তিনি আমাকে আরোগ্য দান করেছেন; আর আমি মানুষকে এমন বিষয়ে প্ররোচিত করতে পছন্দ করি না, যাতে অকল্যাণ রয়েছে। (৩১৭৫; মুসলিম ৩৯/১৭, হাঃ ২১৮৯, আহমাদ ২৪৩৫৪) (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৩৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৪০)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
আল-লুলু ওয়াল মারজান
৩৯/ সালাম
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/১৭. যাদু।
১৪১২. ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর একবার যাদু করা হয়। এমন অবস্থা হয় যে, তাঁর মনে হতে তিনি বিবিগণের কাছে এসেছেন, অথচ তিনি আদৌ তাদের কাছে আসেননি। সুফইয়ান বলেন, এ অবস্থা খুব যাদুর চরম প্রতিক্রিয়া। বৰ্ণনাকারী বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম থেকে জেগে উঠেন এবং বলেনঃ হে আয়িশা! তুমি অবগত হও যে, আমি আল্লাহর কাছে যে বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম তিনি আমাকে তা বাতলিয়ে দিয়েছেন। (স্বপ্নে দেখি) আমার নিকট দু’জন লোক এলেন। তাদের একজন আমার মাথার নিকট এবং অন্যজন আমার পায়ের নিকট বসলেন। আমার কাছের লোকটি অন্যজনকে জিজ্ঞেস করলেনঃ এ লোকটির কী অবস্থা? দ্বিতীয় লোকটি বললেনঃ একে যাদু করা হয়েছে। প্রথম জন বললেনঃ কে যাদু করেছে? দ্বিতীয় জন বললেনঃ লবীদ ইবনু আসাম। এ ইয়াহুদীদের মিত্র সুরাইক গোত্রের একজন; সে ছিল মুনাফিক।
প্রথম ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন। কিসের মধ্যে যাদু করা হয়েছে? দ্বিতীয় ব্যক্তি উত্তর দিলেন চিরুনী ও চিরুনী করার সময় উঠে যাওয়া চুলের মধ্যে। প্রথম ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেনঃ সেগুলো কোথায়? উত্তরে দ্বিতীয়জন বললেনঃ পুং খেজুর গাছের জুবের মধ্যে রেখে যারওয়ান নামক কূপের ভিতর পাথরের নীচে রাখা আছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত কূপের নিকট এসে সেগুলো বের করেন এবং বলেনঃ এইটিই সে কূপ, যা আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। এর পানি মেহদী মিশ্রিত পানির তলানীর ন্যায়, আর এ কূপের (পার্শবর্তী) খেজুর গাছের মাথাগুলো (দেখতে) শয়তানের মাথার ন্যায়। বর্ণনাকারী বলেনঃ সেগুলো তিনি সেখান থেকে বের করেন। আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি এ কথা প্রচার করে দিবেন না? তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম, তিনি আমাকে শিক্ষা দান করেছেন; আর আমি মানুষকে এমন ব্যাপারে প্ররোচিত করতে পছন্দ করি না, যাতে অকল্যাণ রয়েছে।
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ৭৬ : চিকিৎসা, অধ্যায় ৪৯, হাঃ ৫৭৬৫; মুসলিম, পর্ব ৩৯ : সালাম, অধ্যায় ১৭, হাঃ ২১৮৯
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
সাহাবীদের প্রস্রাব খাওয়ায় উৎসাহ দিতেন নবী
আল্লামা কাসতালানী এর ‘মাওয়াহিবে লাদুনিয়া’ কিতাবের ১ম খণ্ড ২৮৪/২৮৫ পৃষ্ঠায় এই হাদিস উল্লেখ করেন-
ﻋﻦ ﺍﻡ ﺍﻳﻤﻦ ﻗﺎﻟﺖ ﻗﺎﻡ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻴﻞ ﺍﻟﻰ ﻓﺨﺎﺭﺓ ﻓﻰ ﺟﺎﻧﺐ ﺍﻟﺒﻴﺖ
ﻓﺒﺎﻝ ﻓﻴﻬﺎ ﻓﻘﻤﺖ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻴﻞ ﻭﺍﻧﺎ ﻋﻄﺸﺎ ﻧﺔ ﻓﺸﺮﺑﺖ ﻣﺎ ﻓﻴﻬﺎ ﻭﺍﻧﺎﻻ ﺍﺷﻌﺮ ﻓﻠﻤﺎ ﺍﺻﺒﺢ ﺍﻟﻨﺒﻰ
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﻳﺎ ﺍﻡ ﺍﻳﻤﻦ ﻗﻮﻣﻰ ﻓﺎﻫﺮﻳﻘﻰ ﻣﺎ ﻓﻰ ﺗﻠﻚ ﺍﻟﻔﺨﺎﺭﺓ ﻓﻘﻠﺖ ﻗﺪ ﻭﺍﻟﻠﻪ
ﺷﺮﺑﺖ ﻣﺎ ﻓﻴﻬﺎ ﻗﺎﻟﺖ ﻓﻀﺤﻚ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺣﺘﻰ ﺑﺪﺕ ﻧﻮﺍﺟﺬﻩ ﺛﻢ ﻗﺎﻝ ﺃﻣﺎ
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﻻﻳﻴﺠﻌﻦ ﺑﻄﻨﻚ ﺍﺑﺪﺍ .
অর্থাৎ ‘হযরত উম্মে আয়মন থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক রাত্রিতে ঘুম মোবারক থেকে উঠে ঘরের পাশ্বে একটি মাটির পাত্রে পেশাব মোবারক করলেন। আমি রাত্রে ঘুম থেকে উঠে খুব তৃষ্ণার্তবোধ করলাম। অতঃপর মাটির পাত্রে যা ছিল তা পান করে নিলাম। পাত্রে কী ছিল আমি মোটেই অবগত নই। তার পর প্রত্যুষে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে সম্বোধন করে বললেন হে উম্মে আয়মন! ঘুম থেকে উঠো এবং মাটির পাত্রে যা আছে তা ফেলে দাও।অতঃপর আমি বললাম নিশ্চয় আল্লাহর কসম মাটির পাত্রে যা কিছু ছিল তা আমি পান করে ফেলেছি। তিনি (উম্মে আয়মন) বলেন তৎক্ষণাৎ আল্লাহর হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেঁসে দিলেন।এমনকি তাঁর প্রান্তসীমার দাঁত মোবারক প্রকাশিত হয়ে গিয়েছিল। অতঃপর আল্লাহর হাবীব বললেন,আল্লাহর কসম তোমার পেটে কখনো পীড়া হবে না।’
আল্লামা কাজী আয়াজ তার ‘আশ শিফা’ কিতাবের ১ম খণ্ডের ৬৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন-
ﻗﺪ ﺭﻭﻯ ﻧﺤﻮ ﻣﻦ ﻫﺬﺍ ﻋﻨﻪ ﻓﻰ ﺍﻣﺮﺃﺓ ﺷﺮﺑﺖ ﺑﻮﻟﻪ ﻓﻘﺎﻝ ﻟﻬﺎ ﻟﻦ ﺗﺸﺘﻜﻰ ﻭﺟﻊ ﺑﻄﻨﻚ ﺍﺑﺪﺍ ﻭﻟﻢ
ﻳﺎﻣﺮ ﻭﺍﺣﺪﺍ ﻣﻨﻬﻢ ﺑﻐﺴﻞ ﻓﻢ ﻭﻻﻧﻬﺎﻩ ﻋﻦ ﻋﻮﺩﺓ ﻭﺣﺪﻳﺚ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻤﺮﺃﺓ ﺍﻟﺘﻰ ﺷﺮﺑﺖ ﺑﻮﻟﻪ ﺻﺤﻴﺢ
ﺍﻟﺰﻡ ﺍﻟﺪﺍﺭ ﻗﻄﻨﻰ ﻣﺴﻠﻤﺎ ﻭﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻯ ﺍﺧﺮﺍﺟﻪ ﻓﻰ ﺍﻟﺼﺤﻴﺢ . ﻭﺍﺳﻢ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻤﺮﺃﺓ ﺑﺮﻛﺔ ﻭﺍﺧﺘﻠﻒ ﻓﻰ
ﻧﺴﺒﻬﺎ ﻭﻗﻴﻞ ﻫﻰ ﺍﻡ ﺍﻳﻤﻦ .
অর্থাৎ ‘নূরনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামার পেশাব মোবারক জনৈক মহিলা কর্তৃক পান করা সংক্রান্ত অনুরূপ আরো হাদিস বর্ণিত আছে। জনৈক মহিলা হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার পেশাব মোবারক পান করলে আল্লাহর হাবীব এ মহিলাকে বললেন, তোমার কষ্মিনকালেও কোন ব্যাধি হবে না।’ আল্লাহর হাবীব তাদের কাউকে (যারা রক্ত মোবারক ও পেশাব মোবারক পান করলো) মুখ ধৌত করারও নির্দেশ প্রদান করেননি এবং পূনরায় পান করতেও নিষেধ করেননি। (আল্লামা কাজী আয়াজ বলেন) মহিলা কর্তৃক নূরনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পেশাব মোবারক পান সংক্রান্ত হাদিস সহীহ বা বিশুদ্ধ। দারুল কুতনী ইমাম মুসলিমকে মৃদু অভিযুক্ত করেছেন আর ইমাম বোখারী (রা.) এর বর্ণনাকে সহীহর মধ্যে গণ্য করেছেন।সে মহিলার নাম ছিল বারাকা (যিনি উম্মুল মো’মিনিন হযরত উম্মে হাবিবার সাথে আবিসিনিয়া থেকে এসেছিলেন) আর কেউ কেউ বলেছেন,তার নাম ছিল উম্মে আয়মন।’
আসুন আশ-শিফা গ্রন্থ থেকে দেখে নেয়া যাক, [69] –
বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থেও [70]
দুঃস্বপ্ন দেখে ভয় পেতেন নবী
ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখে ভয় পেতেন মুহাম্মদ। সেই সময়ে এই উপকথা প্রচলিত ছিল যে, জুলকারনাইন এক প্রাচীর বানিয়ে রেখেছে, যার ঐপাশে মানুষের চাইতে হাজার গুণ অধিক সংখ্যক হিংস্র মানুষের মত কিছু প্রাণী আছে। সেই প্রাচীরের কারণে সেই প্রাণীগুলো আসতে পারছে না। প্রাচীর ভেঙ্গে গেলেই তারা পৃথিবীর মানুষদের আক্রমণ করবে। এই প্রাণীগুলোকে বলা হয় ইয়াজুজ মাজুজ। আধুনিক গুগল আর্থের যুগে এইসব শুনলে বাচ্চারা মজা পাবে বটে, কিন্তু এগুলো শিশুদের রূপকথা হিসেবেই ভাল [71] –
সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
পরিচ্ছেদঃ ২৩. ইয়াজুজ ও মাজুজের আত্মপ্রকাশ
২১৮৭। যাইনাব বিনতু জাহশ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, কোন একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম হতে জাগ্রত হলেন, তখন তার মুখমণ্ডল রক্তিমবর্ণ ধারণ করেছিল। তিনি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলতে লাগলেন। তা তিনবার বলার পর তিনি বললেনঃ ঘনিয়ে আসা দুর্যোগে আরবদের দুর্ভাগ্য। আজ ইয়াজুজ-মাজুজের প্রাচীর এতটুকু পরিমাণ ফাক হয়ে গেছে। এই বলে তিনি তর্জনী ও বৃদ্ধাঙ্গুলের সাহায্যে দশ সংখ্যার বৃত্ত করে ইঙ্গিত করেন। যাইনাব (রাঃ) বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। আমাদের মধ্যে সৎ লোক থাকাবস্থায়ও কি আমরা হবো? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, যখন পাপাচারের বিস্তার ঘটবে।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৯৫৩), বুখারী, মুসলিম।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাঃ)
মুহাম্মদ আত্মহত্যাপ্রবণ ছিলেন
সহিহ হাদিস থেকে জানা যায়, আল্লাহর ওহী আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি বেশ কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। অর্থাৎ তার সুইসাইডাল টেন্ডেন্সি ছিল। প্রচণ্ড মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হলে এরকম হওয়া খুবই স্বাভাবিক। আধুনিক সময়ে উনি জন্ম নিলে একজন ভাল মনোরোগ বিশারদ হয়তো উনাকে সুচিকিৎসা দিতে পারতেন।
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৯১/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা করা
তাওহীদ পাবলিকেশন
… এরপর কিছু দিনের মধ্যেই ওরাকার মৃত্যু হয়। আর কিছু দিনের জন্য ওয়াহীও বন্ধ থাকে। এমনকি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অবস্থার কারণে অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়লেন। এমনকি আমরা এ সম্পর্কে তার থেকে জানতে পেরেছি যে, তিনি পর্বতের চূড়া থেকে নিচে পড়ে যাবার জন্য একাধিকবার দ্রুত সেখানে চলে গেছেন। যখনই নিজেকে ফেলে দেয়ার জন্য পর্বতের চূড়ায় পৌঁছতেন, তখনই জিবরীল (আঃ) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে বলতেন, হে মুহাম্মাদ! নিঃসন্দেহে আপনি আল্লাহর রাসূল। এতে তাঁর অস্থিরতা দূর হত এবং নিজ মনে শান্তিবোধ করতেন। তাই সেখান থেকে ফিরে আসতেন। ওয়াহী বন্ধ অবস্থা যখন তাঁর উপর দীর্ঘ হত তখনই তিনি ঐরূপ উদ্দেশে দ্রুত চলে যেতেন। যখনই তিনি পর্বতের চূড়ায় পৌঁছতেন, তখনই জিবরীল (আঃ) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে আগের মত বলতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
জ্ঞান হারানো সমস্যা ছিল নবীর
মুহাম্মদ কখনো কখনো বিনা কারণেই অজ্ঞান হয়ে যেতেন, এরকম বিবরণ সহিহ হাদিস থেকেই জানা যায়। এটিও প্রবল মানসিক সমস্যার একটি লক্ষণ।
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৬৩/ আনসারগণ (রাযিয়াল্লাহু ‘আনহুম)-এর মর্যাদা
পরিচ্ছদঃ ৬৩/২৫. কা‘বা নির্মাণ।
৩৮২৯. জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন কা’বা গৃহ পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছিল তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও ‘আববাস (রাঃ) পাথর বয়ে আনছিলেন। ‘আববাস (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বললেন, তোমার লুঙ্গিটি কাঁধের উপর রাখ, পাথরের ঘর্ষণ হতে তোমাকে রক্ষা করবে। (লুঙ্গি খুলতেই) তিনি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে গেলেন। তাঁর চোখ দু’টি আকাশের দিকে নিবিষ্ট ছিল। তাঁর চেতনা ফিরে এল, তখন তিনি বলতে লাগলেন, আমার লুঙ্গি, আমার লুঙ্গি। তৎক্ষণাৎ তাঁর লুঙ্গি পরিয়ে দেয়া হল। (৩৬৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
হ্যালুসিনেশন হতো নবীর
নবী নিজেকে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ভাবতে চাইতেন যে, তার হ্যালুসিনেশন হতো- রাস্তার পাথরগুলো তাকে সালাম দিচ্ছে। এরকম মানসিক সমস্যা তখন হয়, যখন কেউ একজনকে তেমন পাত্তা দেয় না, বা গুরুত্ব দেয় না। নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবার প্রবল আকাঙ্খায় মানুষ তখন এরকম কাল্পনিক বিষয় দেখতে পারে। শিশুদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়। কোন শিশুকে যখন কেউ খেলায় নেয় না, বা বন্ধুত্ব করে না, তখন শিশুরা পাথর বা পুতুলের মধ্যে নিজের বন্ধু বা অনুসারী খুঁজে নেয়। আমাদের এলাকায় এক পাগল ছিল, তাকে নাকি রাস্তার গাছগুলো সালাম দিতো।
সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
৪৪। ফাযীলাত
পরিচ্ছেদঃ ১. নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বংশের ফাযীলাত এবং নুবুওয়াত প্রাপ্তির আগে (তাকে) পাথরের সালাম করা প্রসঙ্গ
৫৮৩৩-(২/২২৭৭) আবূ বাকর ইবনু আবূ শাইবাহ্ (রহঃ) ….. জাবির ইবনু সামুরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি মাক্কায় একটি পাথরকে জানি, যে আমার (নবীরূপে) প্রেরিত হওয়ার আগেও আমাকে সালাম করত; আমি এখনও তাকে সন্দেহাতীতভাবে চিনতে পারি। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৭৪০, ইসলামিক সেন্টার ৫৭৭১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জাবির ইবনু সামুরাহ (রাঃ)
জিব্রাইলকে একাই দেখতেন নবী
মজার বিষয় হচ্ছে, জিব্রাইলকে একাই দেখতেন নবী মুহাম্মদ। মাঝে মাঝে উনি আয়শাকে বলতেন, এই ঘরে জিব্রাইল এসেছে। তোমাকে সালাম দিয়েছেন। আয়িশা তো কিছুই দেখতে পেতো না। বিষয়টা খুবই হাস্যকর।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
৬৬/ অনুমতি চাওয়া
পরিচ্ছেদঃ ২৫৭৬. মহিলাকে পুরুষেদের এবং পুরুষকে মহিলাদের সালাম দেয়া
৫৮১৫। ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আয়শা! ইনি জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তোমাকে সালাম দিয়েছেন। তখন আমিও বললাম ওয়া আলাইকুমুসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে উদ্দেশ্য করে বললেনঃ আমরা যা দেখছিনা, তা আপনি দেখছেন। ইউনুস যুহরি সুত্রে বলেন এবং ‘বারাকাতুহু’ও বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
অন্যের মুখে থুথু দিতেন নবী
পাঁচ বছরের একজন বালকের মুখে কুলি করে দিয়েছিলেন মুহাম্মদ। এরকম নোংরা কাজ শুধুমাত্র নিম্নমানের ইতর লোকের পক্ষেই সম্ভব। একজন বাচ্চারও আত্মসম্মানবোধ থাকে। তার মুখে কুলি করে দেয়া, সেটি মজা করার জন্য হলেও, অত্যন্ত বাজে কাজ।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
৩/ ইলম বা জ্ঞান
পরিচ্ছেদঃ ৬০/ বালকদের কোন বয়সের শোনা কথা গ্রহণীয়।
৭৭। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … মাহমূদ ইবনুুর-রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার মনে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার বালতি থেকে পানি নিয়ে আমার মুখমন্ডলে কুলি করে দিয়েছিলেন, তখন আমি ছিলাম পাঁচ বছরের বালক।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ মাহমূদ ইবনুর-রাবী (রাঃ)
সাহাবীরা নবীর থুথু গায়ে মাখতো
নবী মুহাম্মদ এরকম কিছু অন্ধবিশ্বাসী এবং উন্মাদ সাহাবী রেখে গিয়েছিলেন, যারা নবীর থুথু নিয়ে গায়ে মাখতেন [72] [73] –
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৫৪/ শর্তাবলী
পরিচ্ছেদঃ ৫৪/১৫. যুদ্ধের প্রতিপক্ষীয়দের সাথে জিহাদ ও সমঝোতার ব্যাপারে শর্তারোপ এবং লোকদের সঙ্গে কৃত মৌখিক শর্ত লিপিবদ্ধ করা।
২৭৩১-২৭৩২
… সে বলল, আল্লাহর কসম! আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কখনো থুথু ফেললে তা সাহাবীদের হাতে পড়তো এবং তা তারা গায়ে মুখে মেখে ফেলতেন। …
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ (রাঃ)
বাচ্চাদের নিজের থুথু খাওয়াতেন নবী
বাচ্চাদের নিজের থুথু খাইয়ে এক ধরণের বিকৃত আনন্দ পেতেন মুহাম্মদ। আমাদের নানী দাদীদের মধ্যেও এই ধরণের আচরণ দেখতে পাওয়া যেতো। বিষয়টা অত্যন্ত ঘিনঘিনে এবং নোংরা।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫০/ আম্বিয়া কিরাম (আঃ)
পরিচ্ছদঃ ২১৫৪. নাবী (ﷺ) এবং তাঁর সহাবীদের মাদীনায় হিজরাত। নবী (ﷺ) এবং সাহাবীদের মাদীনা হিজরত। আবদুল্লাহ ইবনু যায়েদ ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন, যদি হিজরতের ফযীলত না হত তবে আমি আনসারদেরই একজন হতাম। আবূ মূসা (আঃ) নবী করীম (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আমি মক্কা থেকে মাদীনা হিজরত করছি এমনস্থানে যেখানে খেজুর বাগান রয়েছে। আমার ধারণা হল যে, তা হবে ইয়ামামা কিংবা হাজর। পরে প্রকাশ পেল যে, তা মাদীনা-ইয়াসরিব।
৩৬২৯। কুতায়বা (রহঃ) … আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (মদিনায় হিজরতের পর) মুসলিম পরিবারে সর্বপ্রথম আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়েরই জন্মগ্রহণ করেন। তাঁরা তাকে নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলেন। তিনি একটি খেজুর নিয়ে তা চিবিয়ে তার মুখে দিলেন। সুতরাং সর্বপ্রথম যে বস্তুটি তার পেটে প্রবেশ করল তা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর থুথু।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
অন্যকে কুলি করা পানি খাওয়াতেন নবী
অনুসারীদের নিজের কুলি করা পানি খাওয়াতে ভালবাসতেন মুহাম্মদ। শুধু খাওয়াতেনই না, সেটা দিয়ে মুখও ধোয়াতেন।
সহিহ মুসলিম (ইফাঃ)
৪৬/ সাহাবী (রাঃ) গণের ফযীলত
পরিচ্ছেদঃ ৩৮. আবু মুসা আশআরী ও আবু আমির আশআরী (রাঃ) এর ফযীলত
৬১৮০। আবূ আমির আশআরী ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে ছিলাম। সে সময় তিনি মক্কা ও মদিনার মধ্যবর্তী জিইররানা নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন। তাঁর সঙ্গে বিলাল (রাঃ)ও ছিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক আরব বেদুঈন এল। সে বলল, ইয়া মুহাম্মাদ! আপনি আমাকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা কি পুরন করবেন না? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ “তুমি সুসংবাদ গ্রহন কর”। তখন সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলল, আপনি তো অনেকবারই বলেছেনঃ “সুসংবাদ গ্রহন কর”। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে আবূ মূসা ও বিলাল (রাঃ) এর প্রতি লক্ষ্য করে বললেন, দেখ এই ব্যাক্তি সুসংবাদ প্রত্যাখ্যান করেছে। সুতরাং তোমরা দুইজন তা গ্রহন কর।
তখন তারা দুইজনে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা কবুল করলাম। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি পানি ভর্তি পেয়ালা আনালেন। তিনি তাঁর দুই হাত ও মুখমণ্ডল ধুইলেন এবং তাতে কুলি করলেন। এরপর তিনি বললেন, তোমরা দুইজনে এ থেকে পানি পান কর এবং তোমাদের মুখমণ্ডলে ও বক্ষদেশে ঢেলে দাও, আর তোমরা সুসংবাদ গ্রহন কর। তারা দুইজনে পেয়ালাটি গ্রহন করলেন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশ মোতাবেক কাজ করলেন। তখন উম্মুল মু’মিনীন উম্মু সালামা (রাঃ) পর্দার আড়াল থেকে তাদের ডেকে বললেন, তোমাদের মায়ের জন্য তোমাদের পাত্রে কিন্তু পানি রেখে দাও। তখন তারা তাঁর জন্য সামান্য পরিমান উদ্বৃত্ত রাখলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ মূসা আশ’আরী (রাঃ)
সংগীত অপছন্দ করতেন নবী
হাদীস সম্ভার
অধ্যায়ঃ ২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
পরিচ্ছেদঃ গান-বাজনা ও নাচ
(২৩০৯) আনাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অবশ্যই আমার উম্মতের মাঝে (কিছু লোককে) মাটি ধসিয়ে, পাথর বর্ষণ করে এবং আকার বিকৃত করে (ধ্বংস করা) হবে। আর এ শাস্তি তখন আসবে, যখন তারা মদ পান করবে, নর্তকী রাখবে এবং বাদ্যযন্ত্র বাজাবে।
(ইবনে আবিদ দুনয়া, সহীহুল জামে’ ৫৪৬৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
ছবি আঁকা এবং চিত্রশিল্পীদের প্রতি বিদ্বেষ
রিয়াযুস স্বা-লিহীন
তাওহীদ পাবলিকেশন
অধ্যায়ঃ ১৮/ নিষিদ্ধ বিষয়াবলী
পরিচ্ছদঃ ৩০৫ : পাথর, দেওয়াল, ছাদ, মুদ্রা ইত্যাদিতে প্রাণীর মূর্তি খোদাই করা হারাম। অনুরূপভাবে দেওয়াল, ছাদ, বিছানা, বালিশ, পর্দা, পাগড়ী, কাপড় ইত্যাদিতে প্রাণীর চিত্র অঙ্কন করা হারাম এবং মূর্তি ছবি নষ্ট করার নির্দেশ
৩/১৬৮৯। ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, ‘‘প্রত্যেক ছবি (বা মূর্তি) নির্মাতা জাহান্নামে যাবে, তার নির্মিত প্রতিটি ছবি বা মূর্তির পরিবর্তে একটি করে প্রাণ সৃষ্টি করা হবে, যা তাকে জাহান্নামে শাস্তি দিতে থাকবে।’’ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘যদি তুমি করতেই চাও, তাহলে গাছপালা ও নিষ্প্রাণ বস্তুর ছবি বা মূর্তি তৈরি করতে পার।’ (বুখারী ও মুসলিম) (1)
(1) সহীহুল বুখারী ২২২৫, ৫৯৬৩, ৭০৪২, মুসলিম ২১১০, তিরমিযী ১৭৫১, ২২৮৩, নাসায়ী ৫৩৫৮, ৫৩৫৯, আবূ দাউদ ৫০২৪, ইবনু মাজাহ ৩৯১৬, আহমাদ ১৮৬৯, ২১৬৩, ২২১৪, ২৮০৬, ৩২৬২, ৩৩৭৩, ৩৩৮৪
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
রিয়াযুস স্বা-লিহীন
তাওহীদ পাবলিকেশন
অধ্যায়ঃ ১৮/ নিষিদ্ধ বিষয়াবলী
পরিচ্ছদঃ ৩০৫ : পাথর, দেওয়াল, ছাদ, মুদ্রা ইত্যাদিতে প্রাণীর মূর্তি খোদাই করা হারাম। অনুরূপভাবে দেওয়াল, ছাদ, বিছানা, বালিশ, পর্দা, পাগড়ী, কাপড় ইত্যাদিতে প্রাণীর চিত্র অঙ্কন করা হারাম এবং মূর্তি ছবি নষ্ট করার নির্দেশ
১/১৬৮৭। ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যারা এ জাতীয় (প্রাণীর) মূর্তি বা ছবি তৈরি করে, কিয়ামতের দিন তাদেরকে শাস্তি দেওয়া হবে। তাদেরকে বলা হবে, তোমার যা বানিয়েছিলে তাতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা কর।’’ (বুখারী) (1)
(1) সহীহুল বুখারী ৫৯৫১, ৭৫৫৮, মুসলিম ২১০৮, নাসায়ী ৫৩৬১, আহমাদ ৪৪৬১, ৪৬৯৩, ৪৭৭৭, ৫১৪৬, ৫৭৩৩, ৬০৪৮, ৬২০৫, ৬২২৬, ৬২৯০
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৩৪/ ক্রয়-বিক্রয়
পরিচ্ছদঃ ৩৪/১০৪. প্রাণহীন জিনিসের ছবি বেচা-কেনা এবং এসব ছবির মধ্যে যেগুলো অপছন্দনীয় ও নিষিদ্ধ তার বর্ণনা।
২২২৫. সা‘ঈদ ইবনু আবুল হাসান (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু ‘আববাস (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম, এমন সময়ে তাঁর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আবূ আববস! আমি এমন ব্যক্তি যে, আমার জীবিকা হস্তশিল্পে। আমি এসব ছবি তৈরী করি। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) তাঁকে বলেন, (এ বিষয়ে) আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে আমি যা বলতে শুনেছি, তাই তোমাকে শোনাব। তাঁকে আমি বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি কোন ছবি তৈরী করে আল্লাহ তা‘আলা তাকে শাস্তি দিবেন, যতক্ষণ না সে তাতে প্রাণ সঞ্চার করে। আর সে তাতে কখনো প্রাণ সঞ্চার করতে পারবে না। (এ কথা শুনে) লোকটি ভীষণভাবে ভয় পেয়ে গেল এবং তার চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে গেল। এতে ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বললেন, আক্ষেপ তোমার জন্য, তুমি যদি এ কাজ না-ই ছাড়তে পার, তবে এ গাছপালা এবং যে সকল জিনিসে প্রাণ নেই, তা তৈরী করতে পার। আবূ ‘আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (রহ.) বলেন, সা‘ঈদ (রাঃ) বলেছেন, আমি নযর ইবনু আনাস (রাঃ) হতে শুনেছি তিনি বলেছেন, ইবনু ‘আববাস (রাঃ) হাদীস বর্ণনা করার সময় আমি তার কাছে ছিলাম। ইমাম বুখারী (রহ.) আরো বলেন, সা‘ঈদ ইবনু আবূ আরুবাহ (রহ.) একমাত্র এ হাদীসটি নযর ইবনু আনাস (রহ.) হতে শুনেছেন। (৫৯৬৩, ৭০৪২, মুসলিম ৩৭/২৬, হাঃ ২১১০, আহমাদ ২১৬২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২০৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২০৮৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
কৌতুক অপছন্দকারী, কান্নাকাটি পছন্দকারী
নবী মুহাম্মদ হাস্যরস, কৌতুক এবং আনন্দ করা অপছন্দ করতেন, এবং কান্নাকাটি, হা হুতাশ, দুঃখিত থাকাকে বেশী পছন্দ করতেন।
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৮৩/ শপথ ও মানত
পরিচ্ছেদঃ ৮৩/৩. নাবী (সাঃ)-এর শপথ কেমন ছিল?
৬৬৩১. ‘আয়িশাহ (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ হে উম্মাতে মুহাম্মাদী আল্লাহর শপথ! আমি যা জানি যদি তা তোমরা জানতে তবে অবশ্যই তোমরা হাসতে কম আর কাঁদতে বেশি।(1) (১০৪৪) (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৬৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৭৭)
(1) কবরের আযাব, হাশরের ময়দানের ভয়াবহতা, পুলসিরাতের দৃশ্য, পাপ-পুণ্য ওজন করার দৃশ্য, জাহান্নামের কঠিন কঠিন আযাবের দৃশ্য আল্লাহর রাসূল (সাঃ)-কে দেখানো হয়েছে, তিনি তা স্পষ্ট দেখেছেন। মানুষ এগুলো বিশ্বাস করেছে, কিন্তু চোখে দেখেনি। দেখলে তারা হাসত কম, কাঁদত বেশি।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
অপরিচ্ছন্ন স্বভাবের ছিলেন নবী
ঘরের মধ্যে প্রস্রাব করতেন নবী
নবী মুহাম্মদ ঘরের মধ্যেই প্রস্রাব করতেন। সারারাত সেই প্রস্রাব ঘরের মধ্যেই থাকতো, গন্ধ ছড়াতো। তার মধ্যেই ঘুমাতেন নবী, তার স্ত্রীর সাথে সহবতও করতেন সেই গন্ধ নিয়ে।
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
হাদিস একাডেমি
অধ্যায়ঃ পর্ব-৩ঃ পাক-পবিত্রতা
পরিচ্ছদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ – পায়খানা-প্রস্রাবের আদাব
৩৬২-(২৯) উমায়মাহ্ বিনতু রুক্বায়ক্বাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খাটের নিচে একটি কাঠের গামলা ছিল। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রাতে এতে প্রস্রাব করতেন। (আবূ দাঊদ ও নাসায়ী)(1)
(1) সহীহ : আবূ দাঊদ ২৪, নাসায়ী ৩২, সহীহুল জামি‘ ৪৮৩২।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
আল্লামা আলবানী একাডেমী
অধ্যায়ঃ ১/ পবিত্রতা অর্জন
পরিচ্ছদঃ ১৩. কোন ব্যক্তি রাতে পাত্রে পেশাব করে তা নিকটে রেখে দেয়া
২৪। হুকাইমাহ বিনতু উমাইমাহ বিনতু রুক্বাইক্বাহ তাঁর মা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একটি কাঠের পাত্র ছিল। সেটি তাঁর খাটের নিচে থাকত। রাতের বেলায় তিনি তাতে পেশাব করতেন।(1)
হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
এই বিষয়ে ইসলামিক এপোলোজিস্টগণ প্রায়ই বলতে চেষ্টা করেন, রাতের বেলা শত্রুর আক্রমণের ভয়ে নবী ঘরের ভেতরেই প্রস্রাব করতেন। কিন্তু, মহাবিশ্বের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহ নিজে যার বন্ধু, ফেরেশতা বাহিনী যার নিরাপত্তায় সদাসর্বদাই নিয়োজিত, সে ভয়ে রাতের বেলা ঘরের ভেতরে প্রস্রাব করতো, এ কেমন যুক্তি?
ঘরে পায়খানা করতেন নবী
শুধু ঘরে প্রশ্রাবই নয়, পায়খানাও করতেন নবী। আসুন হাদিস থেকে দেখে নিই,
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪/ উযূ
পরিচ্ছেদঃ ১০৯। ঘরে মলমূত্র ত্যাগ করা
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ১৫১, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৪৯
১৫১। ইয়াকূব ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) …. আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একদিন আমি আমাদের ঘরের উপর উঠলাম। আমি দেখলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’টি ইটের উপর বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বসেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ)
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪/ উযূ
পরিচ্ছেদঃ ১০৯। ঘরে মলমূত্র ত্যাগ করা
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ১৫০, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৪৮
১৫০। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) …. ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার বিশেষ এক প্রয়োজনে হাফসা (রাঃ) এর ঘরের ছাদে উঠলাম। তখন দেখলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিবলার দিকে পিঠ দিয়ে শাম-এর দিকে মুখ করে তাঁর প্রয়োজনে বসেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ)
মাথায় উকুন ছিল নবীর
হাদিস থেকে জানা যায়, মাথায় উকুন ছিল নবীর, এবং লোক দিয়ে উকুন বাছতেন নবী। উকুন হয় সাধারণত অপরিচ্ছন্ন স্বভাবের মানুষ, যারা মাথা অপরিষ্কার রাখেন।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান
পরিচ্ছেদঃ ২৯৪০. দিনের বেলায় স্বপ্ন দেখা। ইবন আউন (রহঃ) ইবন সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, দিনের স্বপ্ন রাতের সপ্নের মত।
৬৫৩০। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রায়ই উম্মে হারাম বিনত মিলহান (রাঃ) এর ঘরে যেতেন। আর সে ছিল উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) এর স্ত্রী। একদা তিনি তার কাছে এলেন। সে তাকে খানা খাওয়াল। তারপর তার মাথার উকুন বাছতে শুরু করল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমিয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর হেসে হেসে জেগে উঠলেন। উম্মে হারাম (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি কেন হাসলেন? তিনি বললেনঃ আমার উম্মাতের একদল লোককে আমার কাছে পেশ করা হয়েছে। যারা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধরত সাগরের মধ্যে জাহাজের ওপর আরোহণ করে বাদশাহর সিংহাসনে অথবা বাদশাহদের মত তারা সিংহাসনে উপবিষ্ট। ইসহাক রাবী সন্দেহ করেছেন। উম্মে হারাম (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল। আপনি আল্লাহর কাছে দোয়া করুন, তিনি যেন আমাকে তাদের দলভুক্ত করে দেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য দোয়া করলেন।
এরপর আবার তিনি মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর আবার হেসে হেসে জেগে উঠলেন। আমি বললাম, আপনি হাসলেন কেন হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেনঃ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদরত আমার একদল উম্মতকে আমার কাছে পেশ করা হয়েছে। পূর্বের ন্যায় এ দল সম্পর্কেও বললেন। উম্মে হারাম (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল। আপনি আল্লাহর কাছে দোয়া করুন, তিনি যেন আমাকে এ দলভুক্ত করে দেন। তিনি বললেনঃ তুমি প্রথম দলভুক্ত।
উম্মে হারাম (রাঃ) মুআবিয়া ইবনু সুফিয়ান (রাঃ) এর আমলে সামুদ্রিক জাহাজে আরোহন করেন এবং সমুদ্র থেকে পেরিয়ে আসার সময় আপন সাওয়ারী থেকে মাটিতে পড়ে গিয়ে মারা যান।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
মাসিকের কাপড়, মরা জীব জন্তু ফেললেও পানি পবিত্র
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ১/ পবিত্রতা অর্জন
৩৪. বুযা‘আহ নামক কূপ প্রসঙ্গে
৬৬। আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘আমরা কি (মদীনার) ‘বুযাআহ’ নামক কূপের পানি দিয়ে অযু করতে পারি? কূপটির মধ্যে মেয়েলোকের হায়িযের নেকড়া, কুকুরের গোশত ও যাবতীয় দুর্গন্ধযুক্ত জিনিস নিক্ষেপ করা হত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ পানি পবিত্র, কোন কিছু একে অপবিত্র করতে পারে না।(1)
সহীহ।
(1) তিরমিযী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ পানিকে কোনো জিনিস অপবিত্র করতে পারে না, হাঃ ৬৬, ইমাম তিরমিযী বলেন, এ হাদীসটি হাসান), নাসায়ী (অধ্যায়ঃ পানি, অনুঃ বুদ‘আহ কূপের বর্ণনা, হাঃ ৩২৫), আহমাদ (৩/১৫, ১৬, ৩১, ৮৬), দারাকুতনী (১/৩০-৩১) আবূ সাঈদ খুদরী সূত্রে। এর সানাদ সহীহ। হাদীস থেকে শিক্ষাঃ অপবিত্রতা পড়ার কারণে পানির কোনো একটি বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন হয়ে গেলে তা পবিত্রতা থেকে বের হয়ে যায়। আলোচ্য হাদীসের ‘উমূম (ব্যাপকতা) অন্য হাদীসাবলী দ্বারা খাস করা হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
মাছি পানিতে ডুবিয়ে খেতেন নবী
পানি বা খাবার পাত্রে মাছি পড়লে সেই মাছিকে ভালভাবে চুবিয়ে সেই পানি বা খাবার খেতেন নবী।
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৭৬/ চিকিৎসা
৫৭৮২. আবূ হুরাইরাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কারও কোন খাবার পাত্রে মাছি পড়ে, তখন তাকে পুরোপুরি ডুবিয়ে দিবে, তারপরে ফেলে দিবে। কারণ, তার এক ডানায় থাকে আরোগ্য, আর আরেক ডানায় থাকে রোগ। (৩৩২০) আধুনিক প্রকাশনী- ৫৩৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৫৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সূনান আবু দাউদ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ২১/ খাদ্যদ্রব্য
৩৮০১. আহমদ ইবন হাম্বল (রহঃ) ……….. আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কোন খাবার পাত্রে মাছি পড়ে, তখন তোমরা তাকে পাত্রের মাঝে সম্পূর্ণরুপে ডুবিয়ে দেবে। কেননা, তার এক ডানায় রোগ এবং অপর ডানায় শিফা থাকে। আর মাছি খাবারে পতিত হওয়ার সময় ঐ ডানা নিক্ষেপ করে, যাতে রোগ-জীবাণু থাকে। কাজেই তোমরা তাকে পাত্রের মধ্যে ডুবিয়ে দেবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৬৩/ চিকিৎসা
৫৩৬৬। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কারও কোন খাবার পাত্রে মাছি পড়ে, তখন তাকে সম্পূর্নভাবে ডুবিয়ে দিবে, তারপরে ফেলে দিবে। কারন, তার এক ডানায় থাকে শিফা, আর অন্য ডানায় থাকে রোগ জীবানু।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
খাবার পরে হাত চাটাতেন নবী
খানাপিনার পরে অন্যদের দিয়ে নিজের হাত এবং আঙ্গুল চাটাতেন নবী।
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩৭/ পানীয় দ্রব্য
পরিচ্ছেদঃ ১৭. আঙ্গুল ও বর্তন চেটে খাওয়া এবং পড়ে যাওয়া খাদ্যে যে ধুলাবালু লেগেছে তা মুছে খাওয়া মুস্তাহাব। আর চেটে খাওয়ার পূর্বে হাত মুছে ফেলা মাকরূহ। কারণ ঐ অবশিষ্ট অংশের মধ্যে খাদ্যের বরকত থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে এবং তিন আঙ্গুলে খাওয়া সুন্নত হওয়া প্রসঙ্গে
৫১৩০। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) … সুফিয়ান (রহঃ) থেকে উল্লেখিত সনদে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন। তাঁদের উভয়ের হাদীসে আছে, সে যেন তার হাত রুমাল দ্বারা মুছে না ফেলে যতক্ষণ না সে নিজে তা চেটে খায় বা অন্যকে দিয়ে চাটায়। এরপরে অবশিষ্ট অংশ বর্ননা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সুফিয়ান (রহঃ)
এক গোছলে সেক্স ম্যারাথন
এক গোছলে ৯ স্ত্রীর সাথে একই দিনে বা রাতে পালাক্রমে লাগাতার যৌন লীলা চালাতেন নবী। অর্থাৎ এর শরীরের ফ্লুয়িড যেতো তার শরীরে, তারটা চলে যেতো আরেকজনার শরীরে।
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৫/ গোসল
৫/১২. একাধিকবার বা একাধিক স্ত্রীর সাথে সঙ্গত হবার পর একবার গোসল করা।
২৬৮. আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীগণের নিকট দিনের বা রাতের কোন এক সময়ে পর্যায়ক্রমে মিলিত হতেন। তাঁরা ছিলেন এগারজন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি আনাস (রাযি.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কি এত শক্তি রাখতেন? তিনি বললেন, আমরা পরস্পর বলাবলি করতাম যে, তাঁকে ত্রিশজনের শক্তি দেয়া হয়েছে। সা‘ঈদ (রহ.) ক্বাতাদাহ (রহ.) হতে বর্ণনা করেন, আনাস (রাযি.) তাঁদের নিকট হাদীস বর্ণনা প্রসঙ্গে (এগারজনের স্থলে) নয়জন স্ত্রীর কথা বলেছেন। (২৮৪, ৫০৬৮, ৫২১৫ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৬৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বাজে বিচারক ছিলেন নবী
সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়াই বিচার
ইসলামের খুব পরিষ্কার বিধান হচ্ছে, কারো সম্পর্কে যিনা বা অবৈধ যৌনসম্পর্কের অভিযোগ উঠলে চারজন সাক্ষী সহ বিষয়টি বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে হয়, এরপরে সকল সাক্ষ্য প্রমাণ পর্যবেক্ষণের পরে বিচারক বিচারের রায় ঘোষণা করতে পারেন। অথচ, নবী মুহাম্মদের ব্যক্তিগত পারিবারিক জীবনে এই বিচার প্রক্রিয়া ছিল সম্পূর্ণ উল্টো। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি সাক্ষ্য প্রমাণ এসব কিছুরই ধার ধারতেন না। সোজা হুকুম দিতেন কতল করার। যার প্রমাণ পাওয়া যায় একটি বিখ্যাত হাদিস থেকে। সেটি হচ্ছে, নবীর দাসী ছিল মারিয়া কিবতিয়া, যিনি গর্ভবতী হয়েছিলেন মুহাম্মদের মাধ্যমে। একলোক এসে অভিযোগ করলো, সেই দাসীর সাথে আরেকজনার অবৈধ সম্পর্ক আছে। নবী সেটি শুনেই হযরত আলীকে পাঠালেন ঐ ব্যক্তিকে খুন করে আসতে, যার সাথে মারিয়া কিবতিয়ার যৌন সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছিল। এই ক্ষেত্রে নবী কোন সাক্ষী সাবুদ কিংবা প্রমাণের অপেক্ষা করেননি। যা অত্যন্ত বাজে বিচারের উদাহরণ বলে গণ্য হয়। বিচারক যদি তার ব্যক্তিগত রাগ ক্রোধ দ্বারা খুনোখুনীর সিদ্ধান্ত নেন, সেটি তো খুন হয়, বিচার হয় না। যদিও আলীর বুদ্ধিমত্তার কারণে সেই লোকটি খুন হয়নি, কিন্তু নবীর নির্দেশ কিন্তু ছিল হত্যা করার, কোন সাক্ষীসাবুদ ছাড়াই [74] [75] [76] –
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
৫০। তাওবাহ্
পরিচ্ছেদঃ ১১. রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মর্যাদা সন্দেহমুক্ত হওয়া
হাদিস একাডেমি নাম্বারঃ ৬৯১৬, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৭৭১
৬৯১৬-(৫৯/২৭৭১) যুহায়র ইবনু হাব (রহঃ) ….. আনাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মু ওয়ালাদের (দাসীদের) সঙ্গে এক লোকের প্রতি অভিযোগ আসে। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’আলী (রাযিঃ) কে বললেন, যাও, তার শিরশ্ছেদ কর। আলী (রাযিঃ) তার কাছে গিয়ে দেখলেন, সে কূয়ার মধ্যে শরীর ঠাণ্ডা করছে। ’আলী (রাযিঃ) তাকে বললেন, বেরিয়ে এসো। সে আলী (রাযিঃ) এর দিকে হাত এগিয়ে দিলো। তিনি তাকে বের করলেন এবং দেখলেন, তার পুরুষাঙ্গ সম্পূর্ণ কাটা, তার লিঙ্গ নেই। তখন আলী (রাযিঃ) তাকে হত্যা করা হতে বিরত থাকলেন। তারপর তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! সে তো লিঙ্গকাটা, তার যে লিঙ্গ নেই। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৭৬৬, ইসলামিক সেন্টার ৬৮২১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫১/ তাওবা
পরিচ্ছেদঃ ১১. রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর হেরেম সন্দেহমুক্ত হওয়া
৬৭৬৬। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মে ওয়ালাদের সাথে এক ব্যক্তির প্রতি অভিযোগ (অপবাদ) উত্থাপিত হয়। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী (রাঃ) কে বললেন, যাও। তার গর্দান উড়িয়ে দাও। আলী (রাঃ) তার নিকট গিয়ে দেখলেন, সে কুপের মধ্যে শরীর শীতল করছে। আলী (রাঃ) তাকে বললেন, বেরিয়ে আস। সে আলী (রাঃ)এর দিকে হাত বাড়িয়ে দিল। তিনি তাকে বের করলেন এবং দেখলেন, তার পূরুষাঙ্গ কর্তিত, তার লিঙ্গ নেই। তখন আলী (রাঃ) তাকে হত্যা করা থেকে বিরত থাকলেন। তারপর তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সে তো লিঙ্গ কর্তিত তার তো লিঙ্গ নেই।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
কাফেরকে খুন করলে ভিন্ন বিচার
নবী মুহাম্মদ ছিলেন একজন সাম্প্রদায়িক এবং বাজে বিচারক। তিনি বলে গেছেন, একজন কাফের কোন মুসলিমকে হত্যা করলে অবশ্যই কাফেরটিকে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে, তবে কোন মুসলিম কোন কাফেরকে হত্যা করলে মুসলিমকে সেই খুনের জন্য মৃত্যুদণ্ড দেয়া যাবে না।
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৮৭/ রক্তপণ
পরিচ্ছদঃ ৮৭/৩১. কাফেরের বদলে মুসলিমকে হত্যা করা যাবে না।
৬৯১৫. আবূ জুহাইফাহ (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ‘আলী (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাদের কাছে এমন কিছু আছে কি যা কুরআনে নেই? তিনি বললেন, দিয়াতের বিধান, বন্দী-মুক্তির বিধান এবং (এ বিধান যে) কাফেরের বদলে কোন মুসলিমকে হত্যা করা যাবে না। (১১১) (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৪৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সুনানে ইবনে মাজাহ
তাওহীদ পাবলিকেশন
অধ্যায়ঃ ১৫/ রক্তপণ
পরিচ্ছদঃ ১৫/২১. কাফের ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে মুসলিম ব্যক্তিকে হত্যা করা যাবে না
১/২৬৫৮। আবূ জুহাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ‘আলী ইবনে আবূ তালিব (রাঃ) কে বললাম, আপনাদের নিকট এমন কোন জ্ঞান আছে কি যা অন্যদের অজ্ঞাত? তিনি বলেন, না, আল্লাহর শপথ! লোকেদের নিকট যে জ্ঞান আছে তা ব্যতীত বিশেষ কোন জ্ঞান আমাদের নিকট নাই। তবে আল্লাহ যদি কাউকে কুরআন বুঝবার জ্ঞান দান করেন এবং এই সহীফার মধ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দিয়াত ইত্যাদি প্রসঙ্গে যা আছে (তাহলে স্বতন্ত্র কথা)। এই সহীফার মধ্যে আরো আছেঃ কোন কাফেরকে হত্যার অপরাধে কোন মুসলমানকে হত্যা করা যাবে না।
সহীহুল বুখারী ১১১, ১৮৭০, ৩০৪৭, ৩০৩৪, ৩১৭২, ৩১৮০, ৬৭৫৫, ৬৯০৩, ৬৯১৫, ৭৩০০, মুসলিম ১৩৭০, তিরমিযী ১৪১২, ২১২৭, নাসায়ী ৪৭৩৪, ৪৭৩৫, ৪৭৪৪, ৪৭৪৫, ৪৭৪৬, ৪৫৩০, আহমাদ ৬০০, ৬১৬, ৪৮৪, ৯৬২, ৯৯৪, ১০৪০, দারেমী ২৩৫৬, ইরওয়া ২২০৯। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
মানসিক রোগীকে হত্যা করতেন নবী
ক্লেপটোম্যানিয়া বা ক্লোপেম্যানিয়া হচ্ছে একধরণের মানসিক ডিজঅর্ডার বা মানসিক সমস্যা, যেই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি নিজের এই সমস্যার কারণেই চুরি করেন। আধুনিক মনোবিজ্ঞানে একে মানসিক ডিজঅর্ডার হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। নিচের হাদিসটি পড়ে বোঝা যায়, একজন ক্লেপটোম্যানিয়া রোগে আক্রান্ত মানুষকে অত্যন্ত বর্বরতার সাথে খুন করেছিলেন মুহাম্মদ। এটি একজন মানসিক রোগীর ওপর অত্যন্ত জঘন্য অবিচার।
সূনান আবু দাউদ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩৩/ শাস্তির বিধান
পরিচ্ছদঃ ২০. যে বার বার চুরি করে, তার শাস্তি সস্পর্কে।
৪৩৫৮. মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ্ (রহঃ) ……. জাবির ইবন আবদুল্লাহ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ জনৈক চোরকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে হাযির করা হলে, তিনি তাকে হত্যার নির্দেশ দেন। তখন সাহাবীগণ বলেনঃ হে আল্লাহ্র রাসুল! এ লোক তো কেবল চুরি করেছে! তখন তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তবে তার হাত কেটে দাও। তখন সে ব্যক্তির ডান হাত কেটে দেওয়া হয়। এরপর সে দ্বিতীয়বার চুরি করলে, তাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত করা হয় এবং তিনি তার হত্যার নির্দেশ দেন। তখনও সাহাবীগণ বলেনঃ হে আল্লাহ্র রাসুল! সে তো কেবল চুরি করেছে। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তার পা কেটে দাও। তখন তার বাম-পা কেটে ফেলা হয়। এরপর সে ব্যক্তিকে তৃতীয় বার নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে পেশ করা হলে, তিনি তাকে হত্যার নির্দেশ দেন। তখন সাহাবীগণ বলেনঃ হে আল্লাহ্র রাসুল! সে তো চুরি করেছে। এরপর তিনি কাটার নির্দেশ দিলে, সে ব্যক্তির বাম-হাত কাটা হয়। পরে সে ব্যক্তিকে চতুর্থবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে পেশ করা হলে, তিনি তাকে হত্যার নির্দেশ দেন। তখনও সাহাবীগণ বলেনঃ হে আল্লাহ্র রাসুল! এ ব্যক্তি তো চুরি করেছে। তখন তিনি কাটার নির্দেশ দিলে তার ডান-পা কেটে ফেলা হয়। এরপর সে ব্যক্তিকে পঞ্চমবারের অপরাধের কারণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে হাযির করা হলে, তিনি তাকে হত্যার নির্দেশ দেন। জাবির (রাঃ) বলেনঃ এরপর আমরা তাকে প্রান্তরে নিয়ে হত্যা করি এবং তার লাশ টেনে কূপের কাছে নিয়ে তাতে নিক্ষেপ করি। পরে তার মৃত দেহের উপর পাথর নিক্ষেপ করি।
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
চোরদের হাত কেটে দিতেন নবী
চোরদের হাত কেটে দিতেন নবী। প্রাচীন কালের এই বর্বর প্রথাকে আইন করে দিয়ে গেছেন নবী। বর্তমান সময়ে এরকম শাসক পাওয়া গেলে তাকে সারা পৃথিবীর মানুষ থুথু দেবে। কারণ এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩০/ অপরাধের শাস্তি
৪২৫৯। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি ঢাল চুরির অপরাধে এক চোরের হাত কর্তন করেন। ঢালটির মূল্য ছিল তিন দিরহাম।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩০/ অপরাধের শাস্তি
৪২৫১। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও ইবনু আবূ উমার (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক দ্বীনারের এক চতুর্থাংশ এবং এর অধিক পরিমাণ মূল্যের মাল চুরির অপরাধে চোরের হাত কর্তন করতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সুনানে ইবনে মাজাহ
তাওহীদ পাবলিকেশন
অধ্যায়ঃ ১৪/ হদ্দ (দন্ড)
১/২৫৮৩। আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ চোরের প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত, ডিম চুরি করার অপরাধে যার হাত কাটা যায় এবং রশি চুরি করার অপরাধে যার হাত কাটা যায়।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩০/ অপরাধের শাস্তি
৪২৬১। আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা অভিসম্পাত করেন সে চোরের ওপর, যে একটি ডিম (বা ডিমের মূল্যের পরিমাণ বস্তু) চুরি করল। এতে তার হাত কাটা যাবে। আর যে ব্যক্তি একটি দড়ি (কিংবা দড়ির সমম্যূল্যর পরিমাণ বস্তু) চুরি করল, তারও হাত কাটা যাবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
নারীলোভী যৌনকাতর কামুক নবী
অনেক মুসলিমই আজকাল লজ্জার মাথা খেয়ে বলে থাকেন, সেই যুগের কাফেররাও নাকি নবী মুহাম্মদের চরিত্র নিয়ে কোনদিন প্রশ্ন তোলেনি! নবীর নারী প্রেম আর এত বিবাহ করার বাতিক, দাসী নেয়ার বাতিক নিয়ে নাকি সেই সময়ও কোন প্রশ্ন ওঠেনি। অথচ এগুলো একেবারেই নির্লজ্জ মিথ্যাচার। সত্য হচ্ছে, সেই যুগেই নবীর এই বহুবিবাহ আর নারীলোভ দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলতেন। তাদেরকে নির্মমভাবে হত্যাও করে নবীর সাহাবীগণ। শুধুমাত্র তাদেরই বাঁচিয়ে রাখা হয়, যারা নবীর অন্ধ অনুসারি ছিল। এই কারণেই পরবর্তী সময়ে নবীর বিরুদ্ধে যারা ছিল বা যারা কাফের ছিল তাদের বই পুস্তক দলিলপত্র ইতিহাস কিছুই পাওয়া যায় না। পাওয়া যায় শুধুই নবীর অন্ধ অনুসারিদের তৈরি ইতিহাস। কিন্তু সেখান থেকেই অনেক কাফেরের বক্তব্যের প্রমাণ মেলে। যাদেরকে মুসলিমরা ঘৃণা ভরে কুৎসা রটনা বলে অভিহিত করতেন। এর প্রমাণ পাওয়া যায় আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থ থেকে- [20] –
নারীর প্রতি নবীর কোন লোভ ছিল না?
অনেক ইসলামিক বক্তাই আজকাল বলেন, তাদের নবীর কোনই নারী লোভ ছিল না। নিতান্তই বাধ্য হয়ে উনি গণ্ডায় গণ্ডায় বিয়ে করতেন এবং দাসী সেক্সও করতেন। উনার ইচ্ছাই ছিল না, শুধুমাত্র আল্লাহর নির্দেশে উনি এসব করতেন প্রবল অনিচ্ছা থাকা স্বত্ত্বেও। কিন্তু খোদ কোরআনেই বলা আছে, নবী মুহাম্মদ নারীদের দেখে লালায়িত হতেন।
এরপর আপনার জন্যে কোন নারী হালাল নয় এবং তাদের পরিবর্তে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করাও হালাল নয় যদিও তাদের রূপলাবণ্য আপনাকে মুগ্ধ করে, তবে দাসীর ব্যাপার ভিন্ন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ের উপর সজাগ নজর রাখেন। সূরা আহজাবঃ ৫২
কোরআনে আরো বলা আছে,
হে নবী! আপনার জন্য আপনার স্ত্রীগণকে হালাল করেছি, যাদেরকে আপনি মোহরানা প্রদান করেন। আর দাসীদেরকে হালাল করেছি, যাদেরকে আল্লাহ আপনার করায়ত্ব করে দেন এবং বিবাহের জন্য বৈধ করেছি আপনার চাচাতো ভগ্নি, ফুফাতো ভগ্নি, মামাতো ভগ্নি, খালাতো ভগ্নিকে যারা আপনার সাথে হিজরত করেছে। কোন মুমিন নারী যদি নিজেকে নবীর কাছে সমর্পন করে, নবী তাকে বিবাহ করতে চাইলে সেও হালাল। এটা বিশেষ করে আপনারই জন্য-অন্য মুমিনদের জন্য নয়। আপনার অসুবিধা দূরীকরণের উদ্দেশে। মুমিনগণের স্ত্রী ও দাসীদের ব্যাপারে যা নির্ধারিত করেছি আমার জানা আছে। আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। কোরআন ৩৩ঃ৫০
উপরের আয়াতের একটি লাইন হচ্ছে, আপনার অসুবিধা দূরীকরণের উদ্দেশে। প্রশ্ন হচ্ছে, নবী মুহাম্মদের কী এমন অসুবিধা হচ্ছিল, যার কারণে আল্লাহ তার জন্য এত এত নারী হালাল করলেন? কী অসুবিধা থাকলে এত নারী কারো জন্য হালাল হয়?
তাফসীরে মাযহারীতে সূরা আহজাবের তাফসীরে আয়িশার একটি বক্তব্য এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হচ্ছে। এই বর্ণনাটিতে আয়িশা বেশ তীর্যক সুরেই বলছেন, আল্লাহ তো দেখছি আপনার কোন বাসনাই অপূর্ণ রাখেন না [77] –
এই প্রসঙ্গে আয়েশার একটি অতি বিখ্যাত হাদিস রয়েছে, যা পড়া সকলের জন্য জরুরি। হাদিসটি পড়লেই বোঝা যায়, নবী মুহাম্মদের চরিত্র কতটা উন্নত ছিল! [78] [79]
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
অধ্যায়ঃ ৫২/ তাফসীর
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ ترجئ من تشاء منهن وتؤوي إليك من تشاء ومن ابتغيت ممن عزلت فلا جناح عليك “তুমি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা তোমার কাছ থেকে দূরে রাখতে পার এবং যাকে ইচ্ছা তোমার কাছে স্থান দিতে পার। আর তুমি যাকে দূরে রেখেছ, তাকে কামনা করলে তোমার কোন অপরাধ নেই। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন ترجئ দূরে রাখতে পার। أرجئه তাকে দূরে সরিয়ে দাও, অবকাশ দাও।
৪৪২৫। যাকারিয়া ইবনু ইয়াহ্ইয়া (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যেসব মহিলা নিজকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে হেবাস্বরূপ ন্যাস্ত করে দেন, তাদের আমি ঘৃণা করতাম। আমি (মনে মনে) বলতাম, মহিলারা কি নিজেকে অর্পণ করতে পারে? এরপর যখন আল্লাহ্ তা’আলা এ আয়াত নাযিল করেনঃ “আপনি তাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা আপনার কাছ থেকে দূরে রাখতে পারেন এবং যাকে ইচ্ছা আপনার নিকট স্থান দিতে পারেন। আর আপনি যাকে দূরে রেখেছেন, তাকে কামনা করলে আপনার কোন অপরাধ নেই।” তখন আমি বললাম, আমি দেখছি যে, আপনার রব আপনি যা ইচ্ছা করেন, তা-ই পূরণ করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
হাদিসেও বর্ণিত আছে, নবী মুহাম্মদের প্রিয় বস্তু ছিল নারীঃ
‘তোমাদের দুনিয়া থেকে আমার কাছে তিনটি জিনিস অধিক প্রিয়। নারী, সুগন্ধি, আর আমার চক্ষু শীতল হয় নামাজের মাধ্যমে।’ (নাসায়ি শরিফ, হাদিস নম্বরঃ ৩৯৩৯)
আরও বর্ণিত আছে, রাস্তাঘাটে নারীদের দেখে প্রবল কামাতুর হয়ে যেতেন কামের নবী মুহাম্মদ। তখন দৌড়ে বাসায় গিয়ে কামের জ্বালা মেটাতে হতো নবীরঃ
সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ১৭। বিবাহ
পরিচ্ছদঃ ২. কোন মহিলাকে দেখে কোন পুরুষের মনে যৌন কামনা জাগ্রত হলে সে যেন তার স্ত্রীর সাথে অথবা ক্রীতদাসীর সাথে গিয়ে মিলিত হয়
৩২৯৮-(৯/১৪০৩) আমর ইবনু আলী (রহঃ) ….. জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মহিলাকে দেখলেন। তখন তিনি তার স্ত্রী যায়নাব এর নিকট আসলেন। তিনি তখন তার একটি চামড়া পাকা করায় ব্যস্ত ছিলেন এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের প্রয়োজন পূরণ করলেন। অতঃপর বের হয়ে সাহাবীগণের নিকট এসে তিনি বললেনঃ স্ত্রীলোক সামনে আসে শয়ত্বানের বেশে এবং ফিরে যায় শায়ত্বানের বেশে। অতএব তোমাদের কেউ কোন স্ত্রীলোক দেখতে পেলে সে যেন তার স্ত্রীর নিকট আসে। কারণ তা তার মনের ভেতর যা রয়েছে তা দূর করে দেয়। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ৩২৭৩, ইসলামীক সেন্টার ৩২৭১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বহুগামী ছিলেন নবী
একই সাথে একাধিক স্ত্রী রাখতেন নবী, এবং তাদের সাথে পালাক্রমে যৌনকর্ম করতেন তিনি। এই সম্পর্কিত হাদিসগুলো উপরে দেয়া হয়েছে।
৯ স্ত্রী থাকার পরেও দাসী সহবত করতেন নবী
সূনান নাসাঈ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩৭/ স্ত্রীর সাথে ব্যবহার
৩৯৬১. ইবরাহীম ইবন ইউনুস ইবন মুহাম্মাদ হারামী (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে একটি বাদি ছিল যার সাথে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহবাস করতেন। এতে আয়েশা (রাঃ) এবং হাফসা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে লেগে থাকলেন। পরিশেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই বদিটিকে নিজের জন্য হারাম করে নিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ্ পাক নাযিল করেনঃ (يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ لِمَ تُحَرِّمُ مَا أَحَلَّ اللَّهُ لَكَ) “হে নবী! আল্লাহ আপনার জন্য যা হালাল করেছেন তা আপনি নিজের জন্য কেন হারাম করে নিয়েছেন (সূরা তাহরীমঃ ১) ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
তাহক্বীকঃ সহীহ।
একই দিনে বা রাতে সেক্স ম্যারাথন
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৫/ গোসল
৫/১২. একাধিকবার বা একাধিক স্ত্রীর সাথে সঙ্গত হবার পর একবার গোসল করা।
২৬৮. আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীগণের নিকট দিনের বা রাতের কোন এক সময়ে পর্যায়ক্রমে মিলিত হতেন। তাঁরা ছিলেন এগারজন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি আনাস (রাযি.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কি এত শক্তি রাখতেন? তিনি বললেন, আমরা পরস্পর বলাবলি করতাম যে, তাঁকে ত্রিশজনের শক্তি দেয়া হয়েছে। সা‘ঈদ (রহ.) ক্বাতাদাহ (রহ.) হতে বর্ণনা করেন, আনাস (রাযি.) তাঁদের নিকট হাদীস বর্ণনা প্রসঙ্গে (এগারজনের স্থলে) নয়জন স্ত্রীর কথা বলেছেন। (২৮৪, ৫০৬৮, ৫২১৫ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৬৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫৪/ বিয়ে-শাদী
পরিচ্ছদঃ ২৪২৯. বহুবিবাহ
৪৬৯৭। ইব্রাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … আতা (রহঃ) বলেন, আমরা ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর সঙ্গে ‘সারিফ’ নামক স্থানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী মায়মূনা (রাঃ) এর জানাযায় উপস্থিত ছিলাম। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, ইনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী। সুতরাং যখন তোমরা তাঁর জানাযা উঠাবে তখন ধাক্কা-ধাক্কি এবং জোরে নাড়া-চাড়া করো না; বরং ধীরে ধীরে নিয়ে চলবে। কেননা, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নয়জন বিবি ছিলেন। তিনি আট জনের সাথে পালাক্রমে রাত্রি যাপন করতেন। কিন্তু একজনের সাথে রাত্রি যাপনের পালা ছিল না।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
রাস্তাঘাটে নারী দেখলে কামাতুর হয়ে যেতেন নবী
সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ১৭। বিবাহ
পরিচ্ছদঃ ২. কোন মহিলাকে দেখে কোন পুরুষের মনে যৌন কামনা জাগ্রত হলে সে যেন তার স্ত্রীর সাথে অথবা ক্রীতদাসীর সাথে গিয়ে মিলিত হয়
৩৩০০-(১০/…) সালামাহ্ ইবনু শাবীব (রহঃ) ….. জাবির (রাযিঃ) বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ তোমাদের কারো যদি কোন স্ত্রীলোক দেখে মনে কিছু উদয় হয় তখন সে যেন তার স্ত্রীর নিকট আসে এবং তার সাথে মিলিত করে। এতে তার মনে যা আছে তা দূর করে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩২৭৫, ইসলামীক সেন্টার ৩২৭৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ১৭। বিবাহ
পরিচ্ছদঃ ২. কোন মহিলাকে দেখে কোন পুরুষের মনে যৌন কামনা জাগ্রত হলে সে যেন তার স্ত্রীর সাথে অথবা ক্রীতদাসীর সাথে গিয়ে মিলিত হয়
৩২৯৮-(৯/১৪০৩) আমর ইবনু আলী (রহঃ) ….. জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মহিলাকে দেখলেন। তখন তিনি তার স্ত্রী যায়নাব এর নিকট আসলেন। তিনি তখন তার একটি চামড়া পাকা করায় ব্যস্ত ছিলেন এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের প্রয়োজন পূরণ করলেন। অতঃপর বের হয়ে সাহাবীগণের নিকট এসে তিনি বললেনঃ স্ত্রীলোক সামনে আসে শয়ত্বানের বেশে এবং ফিরে যায় শায়ত্বানের বেশে। অতএব তোমাদের কেউ কোন স্ত্রীলোক দেখতে পেলে সে যেন তার স্ত্রীর নিকট আসে। কারণ তা তার মনের ভেতর যা রয়েছে তা দূর করে দেয়। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ৩২৭৩, ইসলামীক সেন্টার ৩২৭১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
ঋতুর সময়ও সহবাস করতেন নবী
নবী মুহাম্মদের একইসাথে ৯ জন বিবি এবং দুইজন দাসী ছিল, এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নারীর সাথে তার সম্পর্কের কথা জানা যায়। ৯ জন বিবি এবং দুইজন দাসী থাকা অবস্থাতেও তিনি ঋতুমতী স্ত্রীর সাথে সহবাস করতেন। ঋতুচক্রের সময় সাধারণত সহবাসের বিষয়টি থেকে আমরা বিরত থাকি, নিজেদের কামনা নিয়ন্ত্রণ করি। নবীর যেহেতু এতগুলো বিবি আর দাসী ছিল, তাই স্বাভাবিকভাবেই তিনি অন্য স্ত্রীর কাছে গিয়ে সেই সময় যৌন চাহিদা পূরণ করতে পারতেন। কিন্তু নবী সেই ঋতুর সময়ও স্ত্রীদের ছাড়তেন না। স্ত্রীর গোপনাঙ্গে কাপড় বেঁধে শরীরের অন্যান্য অংশ ব্যবহার করে নিজের যৌন চাহিদা পূরণ করতেন। অর্থাৎ নিশ্চয়ই হাঁটু, বুক, মুখ ইত্যাদির সাথে নিজের গোপনাঙ্গ ঘষাঘষি করতেন। যার প্রমাণ মেলে অনেকগুলো হাদিস থেকে – [80] [81]
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৩/ হায়েয
পরিচ্ছেদঃ ১. ইযারের উপরে ঋতুমতী মহিলার সাথে মেলামেশা করা
৫৭২। আবূ বাক্র ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ), যূহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের কেউ যখন ঋতুমতী হয়ে পড়ত তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশে সে নিম্নাঙ্গে ভাল করে বস্ত্র ভাল করে বেধে নিত। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাথে মেলামেশা করতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
সুনান আন-নাসায়ী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৩/ হায়েজ ও ইস্তিহাজা প্রসঙ্গে
পরিচ্ছেদঃ ১২/ ঋতুমতী স্ত্রীর শরীরে শরীর মিলানো
৩৭৪। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমাদের কেউ ঋতুমতী হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ইযার পরার নির্দেশ দিতেন। তারপর তিনি তার দেহের সাথে দেহ মেলাতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
হেরেমখানা বানিয়েছিলেন নবী
হেরেম শব্দের অর্থ হচ্ছে রক্ষিতাদের আবাসস্থল। স্ত্রীদের হেরেমে রাখা হয় না। শুধুমাত্র রক্ষিতাদের হেরেমে রাখা হয়। নবীর রক্ষিতাদের জন্য হেরেমখানা ছিল।
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫১/ তাওবা
পরিচ্ছদঃ ১১. রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর হেরেম সন্দেহমুক্ত হওয়া
৬৭৬৬। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মে ওয়ালাদের সাথে এক ব্যক্তির প্রতি অভিযোগ (অপবাদ) উত্থাপিত হয়। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী (রাঃ) কে বললেন, যাও। তার গর্দান উড়িয়ে দাও। আলী (রাঃ) তার নিকট গিয়ে দেখলেন, সে কুপের মধ্যে শরীর শীতল করছে। আলী (রাঃ) তাকে বললেন, বেরিয়ে আস। সে আলী (রাঃ)এর দিকে হাত বাড়িয়ে দিল। তিনি তাকে বের করলেন এবং দেখলেন, তার পূরুষাঙ্গ কর্তিত, তার লিঙ্গ নেই। তখন আলী (রাঃ) তাকে হত্যা করা থেকে বিরত থাকলেন। তারপর তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সে তো লিঙ্গ কর্তিত তার তো লিঙ্গ নেই।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
আয়িশা জানতেন নবীর লাম্পট্যের কথা
জুওয়াইরিয়া বিনতে হাছির ছিলেন বনু মুস্তালিক গোত্রের সঙ্গে দাঙ্গার ফলে আটক হওয়া যুদ্ধবন্দী নারী, যিনি ঐ গোত্রের সর্দারের কন্যা ছিলেন। তার স্বামী, মুস্তফা বিন সাফাওয়ান, উক্ত আক্রমণে খুন হয়। জুয়াইরিয়া প্রাথমিকভাবে সাহাবী সাবিত বিন কায়েস বিন আল শাম্মাসের গনিমতের (যুদ্ধলব্ধ সম্পদ) ভাগে পড়েন। তখন জুওয়াইরিয়া মুহাম্মাদ এর কাছে গিয়ে অনুরোধ করেন যে, গোত্রপ্রধানের কন্যা হিসাবে তাকে যেন মুক্তি দেয়া হয়। কিন্তু মুহাম্মাদ এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বিয়ের প্রস্তাব দেন। গুরুত্বপুর্ণ বিষয় হচ্ছে, জুওয়াইরিয়া ছিলেন অসামান্য সুন্দরী। আয়িশা তাই আগেই বুঝেছিলেন, এই মেয়েকে দেখলে তার স্বামী কামাতুর হয়ে উঠবে [82]
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
২৪/ দাসত্বমুক্তি
পরিচ্ছেদঃ ২. মুকাতাবা (চুক্তিব্ধ গোলাম)-এর চুক্তি ভঙ্গ হলে তাকে বিক্রি করা
৩৯৩১। আয়িশাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, বনী মুস্তালিক যুদ্ধে জুয়ায়রিয়াহ বিনতুল হারিস ইবনুল মুতসতালিক বন্দিনী হয়ে সাবিত ইবনু কায়িস ইবনু শাম্মাস (রাঃ) বা তার চাচাত ভাইয়ের ভাগে পড়েন। অতঃপর তিনি নিজেকে আযাদ করার চুক্তি করেন। তিনি খুবই সুন্দরী নারী ছিলেন, নজর কাড়া রূপ ছিলো তার। আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, তিনি চুক্তির অর্থ চাইতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এলেন। তিনি দরজায় এসে দাঁড়াতেই আমি তাকে দেখে অসন্তুষ্ট হলাম। আমি ভাবলাম, যে রূপ-লাবন্য তাকে দেখেছি, শিঘ্রই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে এভাবে দেখবেন।
অতঃপর তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি জুয়ায়রিয়াহ বিনতুল হারিস, আমার সামাজিক অবস্থান অবশ্যই আপনার নিকট স্পষ্ট। আমি সাবিত ইবনু কায়িস ইবনু শাম্মাসের ভাগে পড়েছি। আমি মুক্ত হওয়ার চুক্তিপত্র করেছি, চুক্তির নির্ধারিত অর্থ আদায়ে সাহায্য চাইতে আপনার কাছে এসেছি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এর চেয়ে ভালো প্রস্তাবে তুমি রাজি আছো কি? তিনি বললেন, কি প্রস্তাব, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেনঃ আমি চুক্তির সমস্ত পাওনা শোধ করে তোমাকে বিয়ে করতে চাই। তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমি আপনার প্রস্তাবে রাজি আছি।
আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুয়ায়রিয়াহকে বিয়ে করেছেন, একথা সবার মাঝে জানাজানি হয়ে গেলো। তারা তাদের আওতাধীন সমস্ত বন্দীকে আযাদ করে ছাড়তে লাগলেন আর বলতে লাগলেন, এরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শ্বশুর বংশের লোক। আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, নিজের গোত্রের কল্যাণের জন্য তার চাইতে বরকতময়ী মহিলা আমি আর কাউকে দেখিনি। শুধু তার মাধ্যমে বনী মুস্তালিকের একশো পরিবার আযাদ হয়েছে। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, মুসলিম শাসক সরাসরি বিয়ে করতে পারেন।[1]
হাসান।
[1]. আহমাদ।
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
সীরাত গ্রন্থেও এই বিবরণ পাওয়া যায় [83]।
নবীর সিরাত গ্রন্থ থেকে জানা যায়, মৃত্যুশয্যাতেও আয়িশা নবীকে বলছেন, নবীর আগে যদি আয়িশার মৃত্যু হতো, তাহলে নবী আয়িশাকে দাফন করেই আরেক বিবি নিয়ে আয়িশার ঘরেই আরেক বিবি তুলতেন। অর্থাৎ, নবীর চরিত্র আয়িশা খুব ভালভাবেই জানতেন এবং বুঝতেন [84] ।
বিবরণটি সহিহ বুখারীতেও এসেছে আরও স্পষ্টভাবে -[85]
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৬২/ রোগীদের বর্ণনা
পরিচ্ছেদঃ ২২৬৫. রোগীর উক্তি “আমি যাতনা গ্রস্থ” কিংবা আমার মাথা গেল, কিংবা আমার যন্ত্রণা প্রচন্ড আকার ধারণ করেছে এর বর্ণনা। আর আইয়ুব (আঃ) এর উক্তিঃ হে আমার রব। আমাকে কষ্ট-যাতনা স্পর্শ করেছে অথচ তুমি তো পরম দয়ালু
৫২৬৪। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আবূ যাকারিয়্যা (রহঃ) … কাসিম ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশা (রাঃ) বলেছিলেন হায় যন্ত্রনায় আমার মাথা গেল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি এমনটি হয় আর আমি জীবিত থাকি তাহলে আমি তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবো, তোমার জন্য দু’আ করবো। আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ হায় আফসুস, আল্লাহর কসম। আমার মনে হয় আপনি আমার মৃত্যুকে পছন্দ করেন। আর এমনটি হচ্ছে আপনি পরের দিনই আপনার অন্যান্য সহধর্মিনাদের সঙ্গে রাত যাপন করতে পারবেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ বরং আমি আমার মাথা গেল বলার বেশি যোগ্য। আমি তো ইচ্ছা করেছিলাম কিংবা বলেছেন, আমি ঠিক করেছিলাম আবূ বকর (রাঃ) ও তার ছেলের নিকট সংবাদ পাঠাবো এবং অসীয়ত করে যাবো, যেন লোকদের কিছু বলার অবকাশ না থাকে কিংবা আকাঙ্ক্ষাকারীদের কোন আকাঙ্ক্ষা করার অবকাশ না থাকে। তারপর শুনলাম আল্লাহ (আবূ বকর ব্যতীত অন্য কেউ খিলাফতের আকাঙ্ক্ষা করুক) তা অপছন্দ করবেন, মুমিনগণ তা পরিহার করবেন। কিংবা তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ তা পরিহার করবেন এবং মুমিনগণ তা অপছন্দ করবেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ কাসিম বিন মুহাম্মাদ (রহঃ)
ইচ্ছেমত ভোগের আগে মারা যাননি নবী
আয়িশার বর্ণনা অনুসারে, নবী যতক্ষণ পর্যন্ত না তার ইচ্ছে অনুসারে নারীদের গ্রহণ করে ভোগ করেছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত নবীর মৃত্যু হয় নি। অর্থাৎ নবীর ভোগের ইচ্ছে সম্পূর্ণ পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ পাক তাকে মৃত্যু দেননি।
সুনান আন-নাসায়ী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
২৬/ নিকাহ (বিবাহ)
পরিচ্ছেদঃ ২. আল্লাহ তা’আলা তাঁর রাসূলের উপর যা ফরয করেছেন এবং অন্যদের জন্য যা হারাম করেছেন- আল্লাহর নৈকট্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে
৩২০৭. মুহাম্মদ ইন মানসূর (রহঃ) … আতা (রহঃ) বলেন, আয়েশা (রাঃ) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইনতিকাল করেন নি, যে পর্যন্ত না তার জন্য হালাল করা হয়েছে মহিলাদের মধ্যে যাকে তিনি ইচ্ছা করেন তাকে গ্রহণ করার।
তাহক্বীকঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আতা ইবনু আবী রাবাহ (রহঃ)
মুত’আ বিবাহ করেছিলেন নবী
সুন্নীদের মধ্যে বড় অংশের আকীদা অনুসারে মুত’আ বিবাহ নিষিদ্ধ হয়ে গেছে, যদিও শিয়াদের মধ্যে বড় অংশ এখনো মুত’আ বিবাহকে বৈধ মনে করে। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের সংকলিত হাদিস গ্রন্থ থেকে সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, নবী মুহাম্মদ নিজেও মুতা বিবাহ করেছিলেন। এমনকি, এটি রীতিমত নবীর সুন্নত।
মুসনাদে আহমাদ
মুসনাদে উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) (উমারের বর্ণিত হাদীস)
৩৫১। আবু মূসার ছেলে ইবরাহীম বর্ণনা করেন, আবু মূসা (রাঃ) মুত’আ (অস্থায়ী) বিয়ের পক্ষে ফতোয়া দিতেন। এক ব্যক্তি আবু মূসাকে বললেন, আপনার কিছু কিছু ফতোয়া নিয়ে একটু ধীরে চলুন। কারণ আপনার পরে আমীরুল মু’মিনীন হজ্জের ব্যাপারে কী নতুন ধারা প্রবর্তন করেছেন তা আপনি জানেন না। অবশেষে আবু মূসা উমার (রাঃ) এর সাথে দেখা করে জিজ্ঞাসা করলেন। উমার (রাঃ) তাকে বললেনঃ আমি অবহিত হয়েছি যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবীগণ এটা করেছেন। তবে আমার কাছে এটা অপছন্দনীয় যে, লোকেরা তাদের (মুত’আ বিয়ের) স্ত্রীদের সাথে বাসর করতে থাকবে, আর হজ্জে যাবে এমন অবস্থায় যে, তখনো তাদের মাথার চুল গড়িয়ে ফোটা ফোটা পানি টপকাচ্ছে।
(মুসলিম-১২২২)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
মুসনাদে আহমাদ
মুসনাদে উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) (উমারের বর্ণিত হাদীস)
৩৪২। আবু মূসা (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, উমার (রাঃ) বলেছেনঃ ওটা অর্থাৎ মুত’আ (অস্থায়ী বিয়ে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত। তবে আমার আশঙ্কা হয় যে, লোকেরা এই সব স্ত্রীকে নিয়ে বাবলা গাছের নিছে বাসর করবে, তারপর তাদেরকে নিয়ে হজ্জে যাবে।
(হাদীস নং ৩৫১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
আসুন সরাসরি মুসনাদে আহমাদ গ্রন্থ থেকেও সরাসরি হাদিস দুইটি দেখে নিই, [86]
উপরের হাদিস দুইটি থেকে জানা যায়, মুতা বিবাহ ছিল স্বয়ং নবী মুহাম্মদের সুন্নত। নবী নিজেই সেই কাজটি করেছেন।
ধর্ষণকারী ছিলেন নবী
শুরুতেই জেনে নেয়া প্রয়োজন, ধর্ষন শব্দটি দ্বারা আসলে কী বোঝায়। এবং ধর্ষনের সঙ্গা কী। ধর্ষণ হচ্ছে, শারীরিক বলপ্রয়োগ, অন্য যেকোনভাবে চাপ প্রদান, ব্ল্যাকমেইল কিংবা কর্তৃত্বের অপব্যবহারের মাধ্যমে কারোর সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা। অনুমতি প্রদানে অক্ষম (যেমন- কোনো অজ্ঞান, বিকলাঙ্গ, মানসিক প্রতিবন্ধী কিংবা অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ) এরকম কোনো ব্যক্তির সঙ্গে যেকোন ভাবেই হোক, যৌনমিলনে লিপ্ত হওয়াও ধর্ষণের আওতাভুক্ত। অর্থাৎ, একজন প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষ স্বেচ্ছায় সজ্ঞানে সম্মতি না দিলে, তার সাথে যেকোন ধরণের যৌনমিলনই ধর্ষনের আওতাভুক্ত। এখন আসুন, নবী ধর্ষক ছিলেন কিনা দেখা যাক।
নারীর অনিচ্ছায় তার গায়ে হাত দেয়া
বুখারী শরীফে বর্ণিত রয়েছে, যৌনকর্ম করার জন্য একজন রাজকুমারীকে রীতিমত চাপ দেন নবী, এবং তার গায়েও হাত দেন। সেই মেয়েটি ঘৃণা ভরে নবীকে প্রত্যাখ্যান করে, বাজারি লোক বলে গালমন্দও করে। পরে আল্লাহর দোহাই দেয়ার পরে নবী তাকে ছেড়ে দেয়।এই মেয়েটি ছিল একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েশিশু, যাকে নবী জোর করেই বিয়ে করেছিলেন। এই প্রসঙ্গে অন্য কোন লেখাতে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আপাতত এইখানে যেইদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, সেটি দেখুন [87]
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
৬৮/ ত্বলাক
পরিচ্ছেদঃ ৬৮/৩. ত্বলাক্ব দেয়ার সময় স্বামী কি তার স্ত্রীর সম্মুখে ত্বলাক্ব দেবে?
৫২৫৫. আবূ উসায়দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে বের হয়ে শাওত নামক বাগানের নিকট দিয়ে চলতে চলতে দু’টি বাগান পর্যন্ত পৌছলাম এবং এ দু’টির মাঝে বসলাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা এখানে বসে থাক। তিনি ভিতরে) প্রবেশ করলেন। তখন নু’মান ইব্ন শারাহীলের কন্যা উমাইমার খেজুর বাগানস্থিত ঘরে জাওনিয়াকে আনা হয়। আর তাঁর খিদমতের জন্য ধাত্রীও ছিল। নাবী যখন তার কাছে গিয়ে বললেন, তুমি নিজেকে আমার কাছে সমর্পণ কর। তখন সে বললঃ কোন রাজকুমারী কি কোন বাজারিয়া ব্যক্তির কাছে নিজেকে সমর্পণ করে? রাবী বলেনঃ এরপর তিনি তাঁর হাত প্রসারিত করলেন তার শরীরে রাখার জন্য, যাতে সে শান্ত হয়। সে বললঃ আমি আপনার থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাই। তিনি বললেনঃ তুমি উপযুক্ত সত্তারই আশ্রয় নিয়েছ। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের নিকট বেরিয়ে আসলেন এবং বললেনঃ হে আবূ উসায়দ! তাকেদু’খানা কাতান কাপড় পরিয়ে দাও এবং তাকে তার পরিবারের নিকট পৌঁছিয়ে দাও।(৫২৫৭) আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ উসাইদ (রাঃ)
এখানে বাজারিয়া লোক বলতে কী বোঝানো হয়েছে, সেই সময়ে বাজারিয়া লোক বলতে আসলে ঠিক কেমন মানুষকে নির্দেশ করা হতো, সেটি আসুন আরেকটি সহিহ হাদিস থেকে বোঝার চেষ্টা করি, [88]
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪৬/ সাহাবী (রাঃ) গণের ফযীলত
পরিচ্ছেদঃ ১৬. উম্মুল মউ’মিনীন উম্মু সালামাহ (রাঃ) এর ফযীলত
৬০৯৩। আবদুল আলা ইবনু হাম্মাদ ও মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল আ’লা কায়সী (রহঃ) … সালমান (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, যদি তোমার পক্ষে সম্ভব হয় তবে বাজারে প্রবেশকারীদের মধ্যে তুমি প্রথম হয়ো না এবং তথা হতে বহির্গমণকারীদের মধ্যে তুমি শেষ ব্যক্তি হয়ো না। বাজার হলো শয়তানের আড্ডাখানা। আর তথায়ই সে তার ঝান্ডা উত্তোলন করে রাখে। সালমান (রাঃ) বলেন, আমাকে এ খবরও দেওয়া হয়েছে যে, জিবরীল (আলাইহিস সালাম) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলেন। তখন তাঁর পাশে উম্মু সালামা (রাঃ) ছিলেন। রাবী বলেন, অতঃপর জিবরীল (আলাইহিস সালাম) কথা বলতে লাগলেন এবং পরে চলে গেলেন।
অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মে সালামাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইনি কে ছিলেন? বা এরূপ কথা বললেন। উম্মে সালামা (রাঃ) উত্তর দিলেন, দাহইয়া কালবী। তিনি বলেন, উম্মু সালামা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! আমি তো তাকে দাহইয়া কালবী বলেই ধারণা করেছিলাম। যতক্ষন না রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভাষণ শুনলাম। তিনি আমাদের কথা বলছিলেন অথবা এরূপ বলেছিলেন। অর্থাৎ জিবরীলের আগমনের বর্ণনা দিচ্ছিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি রাবী আবূ উসমানকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, আপনি এ হাদীস কার মাধ্যমে শুনেছেন? তিনি বললেন, উসামা ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সালমান ফারসী (রাঃ)
এবারে আসুন এরপরের হাদিসটি পড়ে নিই, [89]
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৬৮/ ত্বলাক
পরিচ্ছেদঃ ৬৮/৩. ত্বলাক্ব দেয়ার সময় স্বামী কি তার স্ত্রীর সম্মুখে ত্বলাক্ব দেবে?
৫২৫৬-৫২৫৭. (ভিন্ন সনদে) সাহল ইবন সা’দ ও আবূ উসায়দ (রাঃ) বর্ণনা করেন। তাঁরা বলেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমাইমা বিনতু শারাহীলকে বিবাহ করেন। পরে তাকে তাঁর কাছে আনা হলে তিনি তার দিকে হাত বাড়ালেন। সে এটি অপছন্দ করল। তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ উসাইদকে তার জিনিসপত্র গুটিয়ে এবং দুখানা কাতান বস্ত্র প্রদান করে তার পরিবারের নিকট পৌঁছে দেবার নির্দেশ দিলেন।[৫২৫৫] আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৭১ শেষাংশ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৫)
আবূ উসায়দ ও সাহল ইবন সা’দ (রাঃ) থেকে একই রকম বর্ণিত আছে।[৫২৩৭] আধুনিক প্রকাশনী- নাই, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সাহল বিন সা’দ (রাঃ)
অনেক ইসলামিক দাইয়ীরাই এই হাদিসগুলোকে নিয়ে নানা ধরণের মিথ্যাচারে লিপ্ত আছে। সেই কারণে এই হাদিস দুইটি খুব ভালভাবে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি। একটু মন দিয়ে নামগুলো পড়বেন। ছবিগুলো নেয়া হয়েছে সরাসরি বই থেকে [90] –
এবারে আসুন পরের হাদিসটি পড়ি [90] – লক্ষ্য করুন, নু’মান ইবনে শারাহীলের কন্যা উমাইমা এবং জাওনের কন্যা জাওনিয়া কিন্তু দুইজন আলাদা ব্যক্তি। এদের মধ্যে উমাইমাকে নবী বিয়ে করেছিল বলে জানা যায়, কিন্তু জাওনিয়াকে বিয়ে করার কোন সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় না। বরঞ্চ ঘটনা পরম্পরা দেখে বলা যায়, ঐ বাগানবাড়িতে তাকে আনা হয়েছিল ভোগ করার উদ্দেশ্যে, মেয়েটির বিরক্তিভাব থেকেই তা অনেকটা পরিষ্কার। নবীর ইজ্জত রক্ষা করার জন্য অনেক মুমিনই লাজলজ্জার মাথা খেয়ে দুইজনকে একই মানুষ বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতে পারে। তাই খুব স্পষ্টভাবে আলাদা করে দিচ্ছি। একটু মন দিয়ে পড়ুন [91] –
পরপর দুইজন মেয়েদের দিকে লোলুপ দৃষ্টি দিয়েও কাজ সম্পন্ন করতে না পারায় নবী নিশ্চয়ই খুবই মর্মাহত হয়েছিল। আসুন দেখি এরপরে নবী আসলে কী করেছিল। তার এক সাহাবী নবীর এরকম অপমানজনক অবস্থায় নবীকে দেখে নবীকে কি বলেছিল, তা জানতে আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থটি দেখতে হবে [92] – পাঠক লক্ষ্য করুন, কামের জ্বালায় নবী তখন উত্তেজিত, কিন্তু মেয়ে পাচ্ছে না যৌনকর্ম মত। দুই মেয়ের দিকে হাত বাড়িয়ে লাভ হল না। দুই দুইজন নারী পর পর তার সাথে যৌনকর্ম করতে অসম্মতি জানিয়েছে। বেচারা নবীকে তখন তার এক চ্যালা স্বান্তনা দিয়ে বলছে, তার এক সুন্দরী বোন আছে। নবী চাইলে তাকে এনে দিবে! রীতিমত নিজের বোনের সৌন্দর্য্যের কথা বলে লোভ দেখায়, বোন কাতীলাকে এনেও দেয়। যেন কামের নবী মুহাম্মদের কামের জ্বালা তাতে মেটে। কী মহান ব্যক্তিবর্গ ছিলেন নবীর উম্মতেরা, ভাবতেই অবাক লাগে! একটা না পাইলে আরেকটা, সেইটাও না পাইলে আর একটা, ছিদ্র হইলেই চলে আর কি!
প্রখ্যাত ইসলামের ইতিহাস গ্রন্থ “আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া”-এর পঞ্চম খণ্ড থেকে এই পুরো ঘটনাটি আবারো জানা যায়। নবী একজন নারীর সাথে যৌনকর্ম করাড় উদ্দেশ্য নিয়ে তাকে নিজের কাছে সমর্পন করতে বলেছিল। কিন্তু ঐ মহিলা রীতিমত হযরত মুহাম্মদকে এই বলে গালি দেন যে, নবী মুহাম্মদ একজন নিম্নমানের বাজারী লোক। তার সাথে সেই মহিলা যৌনকর্ম করতে ইচ্ছুক নন। নবী মুহাম্মদ তখন তার গায়ে হাত দিয়েছিলেন, কিন্তু সেই নারী আল্লাহর দোহাই দিয়ে নবীকে থামতে বলেন। আল্লাহর দোহাই দেয়ার পরে নবী আর তাকে যৌনকাজে বাধ্য করেন নি।
দাসী ধর্ষণ করেছেন নবী
সুন্দরী নারীদের উপহার হিসেবে গ্রহণ করতেন নবী মুহাম্মদ। মারিয়া কিবতিয়া নামক একজন অত্যন্ত সুন্দরী এবং যুবতী নারীকে তিনি উপহার হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন, এবং বিবাহ ছাড়াই তার গর্ভে ইব্রাহিম নামিক সন্তান জন্ম দিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, মারিয়া কিবতিয়াকে দাসী হিসেবে পাঠানো হয়েছিল। দাসীর কখনো কনসেন্ট বা সম্মতি বলে কিছু থাকে না। মারিয়া কিবতিয়া স্বেচ্ছায় নবীকে পছন্দ করে তার সাথে যৌনকর্ম করলে কারো কোন আপত্তি ছিল না, কিন্তু উপহার হিসেবে পাঠানো একজন দাসী তার ভালবাসার মানুষ পছন্দ করার মত অধিকার প্রাপ্ত নন। তাকে যার কাছে উপহার হিসেবে পাঠানো হয়েছে, তার সাথেই তার যৌনকর্ম করতে হবে, অর্থাৎ সে যৌনকর্ম করতে বাধ্য। এটিও ধর্ষনের আওতাভুক্ত।
শিশু ধর্ষণ করেছেন নবী
একজন শিশুর কখনো সম্মতি বলে কিছু থাকে না। একজন শিশু যতদিন প্রাপ্তবয়ষ্ক হয়, যৌনতা সম্পর্কে বুঝতে এবং জ্ঞান লাভ করতে পারে, ভালমন্দ বিচার বিবেচনা করতে পারে, সেইসবের পুর্বে তাকে কোন অবস্থাতেই যৌনকাজে সম্পৃক্ত করা যায় না। কিন্তু নবী মুহাম্মদ ৯ বছর বয়সেই আয়িশার সাথে যৌনকর্ম করেছিল। এটিও পরিষ্কারভাবেই ধর্ষণের আওতাভুক্ত।
যুদ্ধবন্দী নারী ধর্ষণ করেছেন নবী
নবী মুহাম্মদ নিজে কাফেরদের হত্যা করে তাদের যুদ্ধবন্দী নারীদের মালামালের মতই ভাগাভাগি করে নিতেন, সাহাবীদেরও ভাগ করে দিতেন। তাদের সাথে যৌনকর্ম করতে উৎসাহ দিতেন। যুদ্ধবন্দী নারী কখনো স্বেচ্ছায় তার পিতা, স্বামী, ভাইয়ের হত্যাকারী বাহিনীর যোদ্ধাদের সাথে যৌনকর্ম করবে না। এটিও ধর্ষনের আওতার মধ্যে পড়ে।
বৈবাহিক ধর্ষণের বৈধতা দিয়েছেন নবী
একটি বিষয়ে স্মরণ রাখা জরুরি যে, বিবাহিত হওয়ার পরেও একজন মানুষ তার বৈবাহিক সঙ্গি দ্বারা ধর্ষণের শিকার হতে পারে। এই ধারণাটি আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের মধ্যে নেই। কিন্তু উন্নত ও সভ্য দেশগুলোতে স্বামী বা স্ত্রীও যদি ধর্ষণের অভিযোগ করেন, অর্থাৎ তার অসম্মতিতে জোরপুর্বক যৌনকর্মের অভিযোগ করেন, তাহলে সে বিষয়ে আইন ব্যবস্থা নেয়। একে বলা হয় বৈবাহিক ধর্ষণ। নবী মুহাম্মদ এই বিষয়টি পুরুষের জন্য বৈধ করে গেছেন। অর্থাৎ, একজন স্বামী চাহিদাই মূখ্য, স্ত্রীর চাহিদা কোন গুরুত্ব পাবে না।
নারীবিদ্বেষী ছিলেন নবী
কামুক স্বভাবের মুহাম্মদ ছিলেন প্রচণ্ড মাত্রায় একজন নারী বিদ্বেষী মানুষ। নারী সম্পর্কে অত্যন্ত নোংরা এবং বাজে মন মানসিকতা পোষণ করতেন নবী। সেই বিষয়গুলো এখানে উল্লেখ করা হচ্ছে।
খুন হওয়া শিশুরা কোথায় যাবে?
অনেক ইসলামিক আলেমের মুখেই আমরা শুনি, আইয়্যামে জাহিলিয়াতের যুগে মেয়েদের জীবন্ত কবর দেয়া হতো, দয়াল নবী, নারীপ্রেমি নবী এসে এই প্রথা নাকি বন্ধ করেন। অথচ, সেরকম কোন তথ্যসূত্র জানা যায় না। বরঞ্চ খাদিজা সহ অন্যান্য নারীদের ইতিহাস পড়লে মনে হয়, সেই সময়ে নারীরা আসলে ক্ষমতার অধিকারীই ছিল। কিন্তু নবী কী আসলেই জীবন্ত কবর দেয়া মেয়েদের প্রতি ভালবাসা অনুভব করতেন? তাদের জন্য দুঃখ পেতেন? নবী মুহাম্মদ বলেছেন, মুশরিকদের মধ্যে যেসকল মানুষ তাদের কন্যা সন্তানদের জীবন্ত কবর দিয়েছে, তারা জাহান্নামে যাবে, সেই সব শিশুরা, যাদের জীবন্ত কবর দেয়া হয়েছে, যাদের কোন পাপ পূন্য কিছুই ছিল না, তারাও জাহান্নামে যাবে।
সূনান আবু দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৩৫/ সুন্নাহ
পরিচ্ছেদঃ ১৮. মুশরিকদের সন্তান-সন্ততি সম্পর্কে।
৪৬৪২. ইব্রাহীম ইবন মূসা (রহঃ) ….. আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জীবন্ত প্রথিত কন্যা এবং তার মা- উভয়ই জাহান্নামী।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ শা‘বী (রহঃ)
নারীকে ভোগ্যপণ্য বলেছেন নবী
নবী মুহাম্মদ বলেছেন, নারী হচ্ছে একটি উপভোগ্য উপকরণ বা ভোগ্য পণ্য। নারীর সৃষ্টি যদি পুরুষের মনোরঞ্জনের জন্য হয়ে থাকে, তা অবশ্যই নারীকে একটি স্বাধীন এবং স্বাভাবিক সত্ত্বা হিসেবে চিহ্নিত করে না, বরঞ্চ পুরুষের জন্য একটি উপভোগ্য বস্তু হিসেবে নির্দেশ করে, একটি যৌনযন্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করে। একইসাথে পড়ুন নিচের হাদিসটি –
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ১৮/ দুধপান
পরিচ্ছদঃ ৯. মহিলাদের সম্পর্কে ওসিয়ত
৩৫১২। মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবন নুমায়র আল-হামদানী (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দুনিয়া উপভোগের উপকরণ (ভোগ্যপণ্য) এবং দুনিয়ার উত্তম উপভোগ্য উপকরণ পুণ্যবতী নারী।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
নারীই মানুষের সমস্ত দুর্দশার কারণ
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৬০/ আম্বিয়া কিরাম (‘আঃ)
পরিচ্ছদঃ ৬০/১ক. আল্লাহ তা‘আলার বাণী।
৩৩৩০. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে একইভাবে বর্ণিত আছে। অর্থাৎ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বনী ইসরাঈল যদি না হত তবে গোশত দুর্গন্ধময় হতো না। আর যদি হাওয়া (আঃ) না হতেন তাহলে কোন নারীই স্বামীর খিয়ানত করত না।
* (৫১৮৪, ৫১৮৬) (মুসলিম ১৭/১৯ হাঃ ১৪৭০, আহমাদ ৮০৩৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩০৮৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩০৯২)
* বনী ইসরাঈল আল্লাহ তা’আলার নিকট থেকে সালওয়া নামক পাখীর গোশত খাওয়ার জন্য অবারিতভাবে পেত। তা সত্ত্বেও তা জমা করে রাখার ফলে গোশত পচনের সূচনা হয়। আর মাতা হাওয়া নিষিদ্ধ ফল ভক্ষণে আদম (‘আঃ)-কে প্রভাবিত করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
নারীদের বাঁকা বলেছেন নবী
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ১৮/ দুধপান
পরিচ্ছদঃ ৯. মহিলাদের সম্পর্কে ওসিয়ত
৩৫১৩। হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নারী পাজরের হাড়ের ন্যায় (বাঁকা)। যখন তুমি তাকে সোজা করতে যাবে তখন তা ভেঙ্গে ফেলবে আর তার মাঝে বক্রতা রেখে দিয়েই তা দিয়ে তুমি উপকার হাসিল করবে।
যুহায়র ইবনু হারব ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) … (যুহরীর ভ্রাতুষ্পুত্র তার চাচা যুহরীর সুত্রে) (উপরোক্ত সনদের ন্যায়) ইবনু শিহাব (রহঃ) সুত্রে অবিকল অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
নারী অশুভ বা নারীতে অমঙ্গল রয়েছে
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৭৬/ চিকিৎসা
পরিচ্ছেদঃ ৭৬/৪৩. পশু-পাখি তাড়িয়ে শুভ-অশুভ নির্ণয়।
৫৭৫৩. ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ছোঁয়াচে ও শুভ-অশুভ বলতে কিছু নেই। অমঙ্গল তিন বস্তুর মধ্যে স্ত্রীলোক, গৃহ ও পশুতে।[1] [২০৯৯; মুসলিম ৩৯/৩৪, হাঃ ২২২৫, আহমাদ ৪৫৪৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৩৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২২৯)
[1] কোন কোন স্ত্রীলোক স্বামীর অবাধ্য হয়। আবার কেউ হয় সন্তানহীনা। কোন গৃহে দুষ্ট জ্বিনের উপদ্রব দেখা যা, আবার কোন গৃহ প্রতিবেশীর অত্যাচারের কারণে অশান্তিময় হয়ে উঠে। গৃহে সালাত আদায় ও যিকর-আযকারের মাধ্যমে জ্বিনের অমঙ্গল থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। কোন কোন পশু অবাধ্য বেয়াড়া হয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৪০/ সালাম
পরিচ্ছদঃ ৩৩. কুলক্ষণ, সুলক্ষণ, ফাল ও সম্ভাব্য অপয়া বিষয়বস্তুর বিবরণ
৫৬১৩। আহমদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু হাকাম (রহঃ) … ইবনু উমার (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেছেনঃ কোন কিছুতে অশুভ কিছু যদি থাকে, তবে তা হবে ঘোড়া, বাড়ি ও নারীতে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
নারী হচ্ছে বিপর্যয়কর
সুনানে ইবনে মাজাহ
তাওহীদ পাবলিকেশন
অধ্যায়ঃ ৩০/ কলহ-বিপর্যয়
পরিচ্ছদঃ ৩০/১৯. নারীদের সৃষ্ট বিপর্যয়
১/৩৯৯৮। উসামা ইবনে যায়েদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি আমার পরে পুরুষদের জন্য নারীদের চেয়ে অধিক বিপর্যয়কর আর কিছু রেখে যাবো না।
সহীহুল বুখারী ৫০৯৬, মুসলিম ২৮৪০, ২৮৪১, তিরমিযী ২৮৮০, আহমাদ ২১২৩৯, ২১৩২২, সহীহাহ ২৭০১। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
নারী, গাধা এবং কালো কুকুর
বুলুগুল মারাম
তাওহীদ পাবলিকেশন
অধ্যায়ঃ পর্ব – ২ঃ সালাত
পরিচ্ছদঃ ৪. সালাত আদায়কারী ব্যক্তির সুতরা বা আড় – সালাত বিনষ্টকারী বিষয়সমূহের বর্ণনা
২৩১. আবূ যার গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সালাত আদায় করার সময় যদি উটের পালানের শেষাংশের কাঠির পরিমাণ একটা সুতরাহ দেয়া না হয় আর উক্ত মুসল্লীর সম্মুখ দিয়ে (প্রাপ্ত বয়স্কা) স্ত্রীলোক, গাধা ও কালো কুকুর অতিক্রম করলে সালাত (এর-একাগ্রতা) নষ্ট হয়ে যাবে। এটা একটা দীর্ঘ হাদীসের খণ্ডাংশ’। তাতে একস্থানে আছেঃ কাল কুকুর হচ্ছে শয়তান।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সুনানে ইবনে মাজাহ
তাওহীদ পাবলিকেশন
অধ্যায়ঃ ৫/ সলাত কায়িম করা ও নিয়ম-কানুন
পরিচ্ছদঃ ৫/৩৮. যা সলাত নষ্ট করে।
৬/৯৫২। আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসাল্লাম বলেন: সালাতীর সামনে শিবিকার খুঁটির ন্যায় কোন জিনিস না থাকলে নারী, গাধা ও কালো বর্ণের কুকুর তার সালাত নষ্ট করে। অধস্তন রাবী বলেন, আমি বললাম, লাল বর্ণের কুকুর থেকে কালো বর্ণের কুকুরের পার্থক্য কি? তিনি বলেন, তুমি আমাকে যেরূপ জিজ্ঞেস করলে আমিও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তদ্রূপ জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বলেনঃ কালো কুকুর হল শয়তান।
তাখরীজ কুতুবুত সিত্তাহ: মুসলিম ৫১০, তিরমিযী ৩৩৮, নাসায়ী ৭৫০, আবূ দাঊদ ৭০২, আহমাদ ২০৮১৬, ২০৮৩৫, ২০৮৭০, ২০৯১৪, ২০৯২০; দারিমী ১৪১৪। তাহক্বীক্ব আলবানী: সহীহ। তাখরীজ আলবানী: সহীহ আবী দাউদ ৬৯৯।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সূনান নাসাঈ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৯/ কিবলা
পরিচ্ছদঃ ৭/ নামাযের সামনে সুতরাহ না থাকলে, যাতে নামায নষ্ট হয় আর যাতে নষ্ট হয় না।
৭৫১। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন সালাত আদায় করার জন্য দাঁড়ায়, তখন সে নিজেকে আড়াল করে নেবে যদি তার সামনে হাওদার হেলান কাঠের মত কিছু থাকে। যদি তার সামনে হাওদার হেলান কাঠের মত কিছু না থাকে, তাহলে তার সালাত নষ্ট করবে নারী- গাধা এবং কাল কুকুর। আমি বললাম, লাল ও হলুদে কুকুরের তুলনায় কালো কুকুরের অবস্থা কি?। তিনি বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রশ্ন করেছিলাম, যেমন তুমি আমাকে প্রশ্ন করেছ। তখন তিনি বললেনঃ কালো কুকুর শয়তান।
সহিহ, ইবনু মাজাহ হাঃ ৯৫২, মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হাঃ ১০২৯
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুরুষের থেকে নারীর বুদ্ধি কম হয়
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ১/ কিতাবুল ঈমান
পরিচ্ছদঃ ৩৪. ইবাদতের ত্রুটিতে ঈমান হ্রাস পাওয়া এবং কুফর শব্দটি আল্লাহর সাথে কুফুরী ছাড়া নিয়ামত ও হুকুম অস্বীকার করার বেলায়ও প্রযোজ্য
১৪৫। মুহাম্মাদ ইবনু রুম্হ ইবনু মুহাজির আল মিসরি (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ হে রমনীগন! তোমরা দান-খয়রাত করতে থাক এবং বেশি করে ইস্তিগফার কর। কেননা আমি দেখেছি যে, জাহান্নামের অধিবাসীদের অধিকাংশই নারী। জনৈকা বুদ্ধিমতী মহিলা প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসুল! জাহান্নামে আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণ কি? বললেন, তোমরা বেশি বেশি অভিসম্পাত করে থাকো এবং স্বামীর প্রতি (অকৃতজ্ঞতা) প্রকাশ করে থাকো। আর দ্বীন ও জ্ঞান-বুদ্ধিতে ক্রটিপূর্ণ কোন সম্প্রদায়, জ্ঞানীদের উপর তোমাদের চেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী আর কাউকে আমি দেখিনি।
প্রশ্নকারিনী জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল! জ্ঞান-বুদ্ধি ও দ্বীনে আমাদের কমতি কিসে? তিনি বললেনঃ তোমাদের জ্ঞান-বুদ্ধির ক্রটি হলো দু-জন স্ত্রীলোকের সাক্ষ্য একজন পুরুষের সাক্ষ্যের সমান; এটাই তোমাদের বুদ্ধির ক্রটির প্রমাণ। স্ত্রীলোক (প্রতিমাসে) কয়েকদিন সালাত (নামায/নামাজ) থেকে বিরত থাকে আর রমযান মাসে রোযা ভঙ্গ করে; (ঋতুমতী হওয়ার কারণে) এটাই দ্বীনের ক্রটি।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ২৪/ যাকাত
পরিচ্ছদঃ ২৪/৪৪. নিকটাত্মীয়দেরকে যাকাত দেয়া।
১৪৬২. আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ঈদুল আযহা বা ঈদুল ফিত্রের দিনে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদগাহে গেলেন এবং সালাত শেষ করলেন। পরে লোকদের উপদেশ দিলেন এবং তাদের সদাকাহ দেয়ার নির্দেশ দিলেন আর বললেনঃ লোক সকল! তোমরা সদাকাহ দিবে। অতঃপর মহিলাগণের নিকট গিয়ে বললেনঃ মহিলাগণ! তোমরা সদাকাহ দাও। আমাকে জাহান্নামে তোমাদেরকে অধিক সংখ্যক দেখানো হয়েছে। তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এর কারণ কী? তিনি বললেনঃ তোমরা বেশি অভিশাপ দিয়ে থাক এবং স্বামীর অকৃতজ্ঞ হয়ে থাক। হে মহিলাগণ! জ্ঞান ও দ্বীনে অপরিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও দৃঢ়চেতা পুরুষের বুদ্ধি হরণকারিণী তোমাদের মত কাউকে দেখিনি। যখন তিনি ফিরে এসে ঘরে পৌঁছলেন, তখন ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ)-এর স্ত্রী যায়নাব (রাযি.) তাঁর কাছে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। বলা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! যায়নাব এসেছেন। তিনি বললেন, কোন্ যায়নাব? বলা হলো, ইবনু মাস‘ঊদের স্ত্রী। তিনি বললেনঃ হাঁ, তাকে আসতে দাও। তাকে অনুমতি দেয়া হলো। তিনি বললেন, হে আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আজ আপনি সদাকাহ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আমার অলংকার আছে। আমি তা সদাকাহ করার ইচ্ছা করেছি। ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) মনে করেন, আমার এ সদাকায় তাঁর এবং তাঁর সন্তানদেরই হক বেশি। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) ঠিক বলেছে। তোমার স্বামী ও সন্তানই তোমার এ সদাকাহর অধিক হাক্দার। (৩০৪, মুসলিম ১২/২, হাঃ ৯৮২, আহমাদ ৭২৯৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৩৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৩৭৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
নারীরা অধিক জাহান্নামী
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ২/ ঈমান
পরিচ্ছদঃ ২১/ স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞতা
২৮। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ আমাকে জাহান্নাম দেখানো হয়। (আমি দেখি), তার অধিবাসীদের অধিকাংশই স্ত্রীলোক; (কারন) তারা কুফরী করে। জিজ্ঞাসা করা হল, ‘তারা কি আল্লাহর সঙ্গে কুফরী করে?’ তিনি বললেনঃ ‘তারা স্বামীর অবাধ্য হয় এবং ইহসান অস্বীকার করে। ’ তুমি যদি দীর্ঘকাল তাদের কারো প্রতি ইহসান করতে থাক, এরপর সে তোমার সামান্য অবহেলা দেখলেই বলে, ‘আমি কখনো তোমার কাছ থেকে ভালো ব্যবহার পাইনি। ’
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
তিনজন ছাড়া সকল নারী অপূর্ণাঙ্গ
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৬০/ আম্বিয়া কিরাম (‘আঃ)
পরিচ্ছদঃ ৬০/৪৬. মহান আল্লাহর বাণীঃ
৩৪৩৩. আবূ মূসা আল-আশ‘আরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সকল নারীর উপর ‘আয়িশাহর মর্যাদা এমন, যেমন সকল খাদ্যের উপর সারীদের মর্যাদা। পুরুষদের মধ্যে অনেকেই পূর্ণাঙ্গতা অর্জন করেছেন। কিন্তু নারীদের মধ্যে ইমরানের কন্যা মারইয়াম এবং ফির‘আউনের স্ত্রী আছিয়া ছাড়া কেউ পূর্ণাঙ্গতা অর্জন করতে পারেনি। (৩৪১১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩১৮০ প্রথমাংশ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩১৮৯ প্রথমাংশ)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
নারীদের রাস্তার মাঝ দিয়ে চলা যাবে না
সূনান আবু দাউদ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩৮/ সালাম
৫১৮২. আবদুল্লাহ ইবন মাসলামা (রহঃ) ………. আবূ উসায়দ আনসারী (রাঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বর্ণনা কবতে শুনেছেন; যখন তিন মসজিদ থেকে বেরিয়ে দেখতে পান যে, পুরুষেরা রাস্তার মাঝে মহিলাদের সাথে মিশে যাচ্ছে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদের বলেনঃ তোমরা অপেক্ষা কর! তোমাদের রাস্তার মাঝখান দিয়ে চলাচল করা উচিত নয়, বরং তোমরা রাস্তার এক পাশ দিয়ে যাবে। এরপর মহিলারা দেয়াল ঘেষে চলাচল করার ফলে অধিকাংশ সময় তাদের কাপড় দেয়ালের সাথে আটকে যেত।
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
অসুস্থতার কারণে বিবি তালাক দিয়েছিলেন নবী
কুষ্ঠ হওয়ায় নিজের স্ত্রী বনূ আমর ইবন কিলাব-এর এক স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন নবী, যিনি কিনা অলৌকিক মোজেজার অধিকারী ছিলেন। যিনি স্পর্শ করলেই অলৌকিক কুদরতে কুষ্ঠ রোগী ভাল হয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল, যাকে আল্লাহ পাক সবচেয়ে বেশি সম্মান দিয়েছেন, তিনি রোগাক্রান্ত স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন, [93] [94] –
অপ্রাপ্তবয়ষ্ক মেয়ে বিয়ে এবং সহবাস
বয়ষ্ক পুরুষ অপ্রাপ্তবয়সী কন্যাকেও বিয়ে করতে পারবে, যা নবী হালাল করে গেছেন। মুহাম্মদ নিজেও ৫৩ বছর বয়সে ৬ বছরের আয়শাকে বিয়ে করেন এবং ৯ বছর বয়সে মাসিক শুরু হওয়ার আগেই যৌনসঙ্গম করেন।
বন্ধ্যা নারীদের বিয়ে করা যাবে না
ইসলামের দৃষ্টিতে নারী হচ্ছে সন্তান জন্মদানের একটি মেশিন। বন্ধ্যা নারীরা যেহেতু সন্তান জন্ম দিতে পারে না, তাই তাদের মূল্য ছিল মুহাম্মদের কাছে কম। সেই কারণে নবী মুহাম্মদ বন্ধ্যা নারীদের বিবাহ করতে নিষেধ করতে গেছেন। নারীর জন্য যা অত্যন্ত অবমাননাকর।
সূনান নাসাঈ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
২৬/ নিকাহ (বিবাহ)
পরিচ্ছেদঃ ১১. বন্ধ্যা নারীকে বিবাহ করা অনুচিত
৩২৩০. আব্দুর রহমান ইবন খালিদ (রহঃ) … মা’কাল ইবন ইয়াসার (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে আরয করলোঃ আমি এমন এক মহিলার সন্ধান পেয়েছি, যে বংশ গৌরবের অধিকারিণী ও মর্যাদাবান, কিন্তু সে বন্ধ্যা, আমি কি তাকে বিবাহ করবো? তিনি তাকে নিষেধ করলেন। দ্বিতীয় দিন তাঁর নিকট আসলে তিনি নিষেধ করলেন। এরপর তৃতীয় দিন তাঁর খেদমতে আসলে তিনি তাকে নিষেধ করলেন এবং বললেনঃ তোমরা অধিক সন্তান প্রসবা নারীকে বিবাহ করবে, যে তোমাদেরকে ভালবাসবে। কেননা, আমি তোমাদের দ্বারা সংখ্যাধিক্য লাভ করবো।
তাহক্বীকঃ হাসান। ইরওয়া ১৭৮৪, আদাবুয যিফাফ ১৬, সহীহ আবু দাউদ ১৭৮৯।
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ মা‘ক্বিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ)
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
৬/ বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ৪. যে মহিলা সন্তান দিতে অক্ষম তাকে বিয়ে করা নিষেধ সম্পর্কে
২০৫০। মা‘কিল ইবনু ইয়াসার (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাতে উপস্থিত হয়ে বললো, আমি এক সুন্দরী ও মর্যাদা সম্পন্ন নারীর সন্ধান পেয়েছি। কিন্তু সে বন্ধ্যা। আমি কি তাকে বিয়ে করবো? তিনি বললেনঃ না। অতঃপর লোকটি দ্বিতীয়বার এসেও তাঁকে জিজ্ঞেস করলে তিনি তাকে নিষেধ করলেন। লোকটি তৃতীয়বার তাঁর নিকট এলে তিনি তাকে বললেনঃ এমন নারীকে বিয়ে করে যে, প্রেমময়ী এবং অধিক সন্তান প্রসবকারী। কেননা আমি অন্যান্য উম্মাতের কাছে তোমাদের সংখ্যাঘিধক্যের কারণে গর্ব করবো।(1)
হাসান সহীহ।
(1). নাসায়ী।
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ মা‘ক্বিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ)
অল্পবয়সী কুমারী মেয়েদের বিয়ে করার পরামর্শ
নবী মুহাম্মদ তার সাহাবীদের অল্পবয়সী কুমারী মেয়ে বিয়ে করতে অনুপ্রাণিত করতেন। এই বিষয়ে বেশ কিছু হাদিস রয়েছে। [95] [96]
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
৬৭/ বিয়ে
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/১০. ত্বলাক্বপ্রাপ্তা অথবা বিধবামেয়েকে বিয়ে করা।
৫০৮০. জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বিয়ে করলে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কেমন মেয়ে বিয়ে করেছ? আমি বললাম, পূর্ব বিবাহিতা মেয়েকে বিয়ে করেছি। তিনি বললেন, কুমারী মেয়ে এবং তাদের কৌতুক তুমি চাও না? (রাবী মুহাজির বলেন) আমি এ ঘটনা ‘আমর ইবনু দ্বীনার (রাঃ)-কে জানালে তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেন, তুমি কেন কুমারী মেয়েকে বিয়ে করলে না, যার সাথে তুমি খেলা-কৌতুক করতে এবং সে তোমার সাথে খেলা-কৌতুক করত? (৪৪৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৭০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ)
সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
৯/ বিবাহ
পরিচ্ছেদঃ ১৩. কুমারী মেয়েকে বিয়ে করা
১১০০। জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, এক মহিলাকে বিয়ে করে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটে গেলাম। তিনি বললেনঃ হে জাবির! তুমি কি বিয়ে করেছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ কুমারী মেয়ে না বিধবা মেয়ে?
আমি বললাম, না, বরং বিধবা। তিনি বললেনঃ কুমারী মেয়েকে বিয়ে করলে না কেন? তাহলে তার সাথে তুমিও আনন্দ করতে পারতে এবং তোমার সাথে সেও আমোদ-প্রমোদ করতে পারত। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! মৃত্যুর সময় আবদুল্লাহ (আমার পিতা) সাতটি অথবা নয়টি মেয়ে রেখে গেছেন। এজন্য এমন মহিলাকে এনেছি যেন সে তাদের দেখাশোনা করতে পারে। আমার জন্য তখন তিনি দু’আ করলেন।
— সহীহ, ইরওয়া (১৭৮), বুখারী, মুসলিম
উবাই ইবনু কাব ও কাব ইবনু উজরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। জাবির (রাঃ)-এর হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ)
সরাসরি ইবনে মাজাহ গ্রন্থ থেকেও হাদিসগুলো দেখি [97]
কুমারী মেয়েদের প্রতি আসক্তি
নবী মুহাম্মদের কুমারী মেয়েদের প্রতি আসক্তি ছিল। যেই কারণে তিনি অকুমারী স্ত্রীদের স্ত্রীদের সাথে তিনরাত থাকলে কুমারী স্ত্রীর সাথে থাকতেন সাতরাত। [98]
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
৬৭/ বিয়ে
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/১০১. যখন কেউসাইয়্যেবা স্ত্রী থাকা অবস্থায় কুমারী মেয়ে বিয়ে করে।
৬৭/১০০. অধ্যায়ঃ আপন স্ত্রীদের মধ্যে ইনসাফ করা।
আল্লাহ্ বলেন, ‘‘তোমরা কক্ষনো স্ত্রীদের মধ্যে সমতা রক্ষা করতে পারবে না যদিও প্রবল ইচ্ছে কর….আল্লাহ প্রশস্ততার অধিকারী, মহাকুশলী।’’ (সূরাহ আন্-নিসা ৪/১২৯-১৩০)
৫২১৩. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নত এই যে, যদি কেউ কুমারী মেয়ে বিয়ে করে, তবে তার সঙ্গে সাত দিন-রাত্রি যাপন করতে হবে আর যদি কেউ কোন বিধবা মহিলাকে বিয়ে করে, তাহলে তার সঙ্গে তিন দিন যাপন করতে হবে। (৫২১৪; মুসলিম ১৭/১২, হাঃ ১৪৬১, আহমাদ ১২৯৭০) (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
কুমারীদের যোনীপথ উষ্ণ
নবী মুহাম্মদ বলেছেন, কুমারী মেয়েদের যোনীপথ অপেক্ষাকৃত উষ্ণ হয়। তাই তিনি কুমারী বিয়ে করার পরামর্শ দিয়েছেন।
হাদীস সম্ভার
অধ্যায়ঃ ২৪/ বিবাহ ও দাম্পত্য
পরিচ্ছেদঃ স্ত্রী নির্বাচন
(২৫৫৮) একাধিক সাহাবী কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা কুমারী বিবাহ কর। কারণ কুমারীদের মুখ অধিক মিষ্টি, তাদের গর্ভাশয় অধিক সন্তানধারী, তাদের যোনীপথ অধিক উষ্ণ, তারা ছলনায় কম হয় এবং স্বল্পে অধিক সমত্মুষ্ট থাকে।
(ইবনে মাজাহ ১৮৬১, ইবনুস সুন্নী, ত্বাবারানী, সিঃ সহীহাহ ৬২৩, সহীহুল জামে’ হা/ ৪০৫৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
স্বামী সিজদার উপযুক্ত
সুনান আদ-দারেমী
পাবলিশারঃ বাংলা হাদিস
অধ্যায়ঃ ২. সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছদঃ ১৫৯. (আল্লাহ ব্যতীত) কারো উদ্দেশ্যে সাজদা করা নিষেধ
১৫০১. কাইস ইবনু সা’দ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা যখন (পারস্যের) হীরা নামক শহরে গমণ করলাম, সেখানে দেখলাম, তারা তাদের নেতা/ রাজাকে সিজদা করছে। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমরা কি আপনাকে সাজদা করবো না?তিনি বললেন: “আমি যদি কোনো ব্যক্তিকে (অন্য কারো উদ্দেশ্যে) সিজদা করার নির্দেশ দিতাম, তবে অবশ্যই আমি নারীদেরকে তাদের স্বামীদের উদ্দেশ্যে সাজদা করার নির্দেশ দিতাম। কারণ, আল্লাহ তাদের (স্ত্রীলোকদের) উপর তাদের (স্বামীদের) (অনেক বেশি) হাক্ব (অধিকার) নির্ধারণ করেছেন।”(1)
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
স্বামীর যৌন চাহিদা মেটাতে বাধ্য
সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ১৭। বিবাহ
পরিচ্ছদঃ ২০. স্বামীর বিছানা পরিহার করা স্ত্রীর জন্য নিষিদ্ধ
৩৪৩৩-(১২২/…) আবূ বাকর ইবনু শায়বাহ, আবূ কুরায়ব, আবূ সাঈদ আল আশাজ্জ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহিমাহুমুল্লাহ) ….. আবূ হুরায়রাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ স্বামী যখন স্ত্রীকে বিছানায় আহবান করে এবং সে না আসায় তার স্বামী তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে রাত্রি যাপন করে, সে স্ত্রীর প্রতি ফেরেশতাগণ ভোর হওয়া পর্যন্ত লা’নাত করতে থাকে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৪০৬, ইসলামীক সেন্টার ৩৪০৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
স্বামীর চাহিবা মাত্র সহবত করতে হবে
সুনানে ইবনে মাজাহ
তাওহীদ পাবলিকেশন
অধ্যায়ঃ ৯/ বিবাহ
২/১৮৫৩। ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুআয (রাঃ) সিরিয়া থেকে ফিরে এসে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে সাজদাহ করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ হে মু‘আয! এ কী? তিনি বলেন, আমি সিরিয়ায় গিয়ে দেখতে পাই যে, তথাকার লোকেরা তাদের ধর্মীয় নেতা ও শাসকদেরকে সাজদাহ করে। তাই আমি মনে মনে আশা পোষণ করলাম যে, আমি আপনার সামনে তাই করবো। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমরা তা করো না। কেননা আমি যদি কোন ব্যক্তিকে আল্লাহ্ ছাড়া অপর কাউকে সাজদাহ করার নির্দেশ দিতাম, তাহলে স্ত্রীকে নির্দেশ দিতাম তার স্বামীকে সাজদাহ করতে। সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! স্ত্রী তার স্বামীর প্রাপ্য অধিকার আদায় না করা পর্যন্ত তার প্রভুর প্রাপ্য অধিকার আদায় করতে সক্ষম হবে না। স্ত্রী শিবিকার মধ্যে থাকা অবস্থায় স্বামী তার সাথে জৈবিক চাহিদা পূরণ করতে চাইলে স্ত্রীর তা প্রত্যাখ্যান করা অনুচিত।
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
It was narrated that: Abdullah bin Abu Awfa said “When Muadh bin Jabal came from Sham, he prostrated to the Prophet who said: ‘What is this, O Muadh?’ He said: ‘I went to Sham and saw them prostrating to their bishops and patricians and I wanted to do that for you.’ The messenger of Allah said: ‘Do not do that. If I were to command anyone to prostrate to anyone other than Allah, I would have commanded women to prostrate to their husbands. By the One in Whose Hand is the soul of Muhammad! No woman can fulfill her duty towards Allah until she fulfills her duty towards her husband. If he asks her (for intimacy) even if she is on her camel saddle, she should not refuse.’ ”
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পাবলিশারঃ হাদিস একাডেমি
অধ্যায়ঃ পর্ব-১৩ঃ বিবাহ
পরিচ্ছদঃ ১০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ – স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহার এবং তাদের প্রত্যেকের (স্বামী-স্ত্রীর) পারস্পরিক হক ও অধিকার সংক্রান্ত
৩২৫৫-(১৮) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি যদি কোনো মানবকে সিজদা করার নির্দেশ দিতাম, তবে স্ত্রীকে তার স্বামীর জন্য সিজদা করার নির্দেশ দিতাম। (তিরমিযী)
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)।
স্ত্রী নির্যাতন করতেন নবী
হযরত আয়শা হতে বর্ণিত, তিনি (মুহাম্মদ) আমাকে বুকের ওপর আঘাত করলেন যা আমাকে ব্যথা দিল। [99]
স্ত্রীকে কেন প্রহার করা হলো সে বিষয়ে শেষ বিচারের দিন তাকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করা হবে না। (আবু দাউদ , বই নং- ১১, হাদিস -২১৪২)
হাদিসের মান বিষয়ক নোটঃ কিছু কিছু প্রখ্যাত স্কলার, যেমন আলবানী এই হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন, অন্যদিকে সৌদি আববের বিখ্যাত ইসলামি প্রকাশনা দারুস সালাম থেকে প্রকাশিত ইংরেজি অনুবাদে হাদিসের মান “হাসান” হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে । নিচে দারুস সালাম থেকে প্রকাশিত হওয়া গ্রন্থের ডাউনলোড লিঙ্ক এবং রেফারেন্স দেয়া হলো [100]
তবে নবী মুহাম্মদ স্ত্রীদেরকে গোলামের মত প্রহার করতে নিষেধ করেছেন, কারণ হিসেবে উনি এটিও উল্লেখ করে দিয়েছেন যে, রাতে সে সেই স্ত্রীর সাথে সহবাস করতে হবে। তাই তাদেরকে গোলামের মত না পেটাতে, যেন রাতের সহবাসে আবার কোন সমস্যা না হয়। [101]
পরপুরুষের সাথে স্ত্রীকে দেখলে কতল
নবী মুহাম্মদের একজন সাহাবীর নাম সা’দ ইবনু উবাদাহ্। উনি বলেছিলেন, উনার স্ত্রীকে উনি পরপুরুষের সাথে দেখলে ” তাকে আমার তরবারীর ধারালো দিক দিয়ে তার উপর আঘাত হানব”। এই বক্তব্য নবী মুহাম্মদের কাছে পৌঁছালে, তিনি সাহাবীর এই কথা শুনে প্রশংসা করেন এবং তাকে আত্মমর্যাদাবান বলে অভিহিত করেন। এই হাদিসটি গভীরভাবে চিন্তা করলে বোঝা যায় যে, এটি নারীর অধিকার, মর্যাদা এবং নিরাপত্তার প্রতি চরম অবমাননাকর। একটি সভ্য সমাজে নারীর প্রতি এ ধরনের মনোভাব এবং সহিংসতা যে কতটা ভয়াবহ এবং অমানবিক হতে পারে, তা কল্পনাতীত!
এই হাদিসে, সাহাবী সা’দ ইবনু উবাদাহ স্পষ্টভাবে বলেছিলেন যে, তিনি তার স্ত্রীকে পরপুরুষের সাথে দেখলে তাকে হত্যা করবেন। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, জিনা বা এই ধরণের অপরাধের প্রমাণের জন্য কমপক্ষে চারজন সাক্ষী থাকা আবশ্যক। কিন্তু সা’দ ইবনু উবাদাহ এই আইন মেনে চলার পরিবর্তে তার নিজের হাতে স্ত্রীর প্রতি সহিংসতা প্রদর্শনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। নবী মুহাম্মদএই বক্তব্য শোনার পর সেই সাহাবীর প্রশংসা করেন এবং বলেন যে, সা’দ একজন আত্মমর্যাদাবান ব্যক্তি। এই ধরনের মনোভাব নারীর অধিকার এবং তার মর্যাদার প্রতি একধরনের চরম অসম্মান প্রদর্শন।
প্রথমত, এই হাদিস নারীর নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। এতে নারীর প্রতি সহিংসতা এবং তার জীবনহানির বিষয়টিকে স্বাভাবিক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। একজন স্ত্রী যদি তার স্বামীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করে বা স্বামী যদি সন্দেহ করেন, তবে তাকে হত্যা করার এই ইচ্ছা সরাসরি নারীর মৌলিক অধিকারকে অস্বীকার করে এবং তাকে পুরুষের অধীনস্থ করে তোলে।
এই হাদিসে মূলত পুরুষের মর্যাদা এবং আত্মমর্যাদার একটি ভ্রান্ত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। একজন পুরুষের আত্মমর্যাদা শুধুমাত্র তার স্ত্রীকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতার উপর নির্ভর করে না। এটি একটি বিকৃত এবং পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার প্রতিফলন, যা নারীকে সম্পত্তির মতো দেখায় এবং তার জীবনকে মূল্যহীন করে স্বামীর ইচ্ছা যে স্ত্রীর জীবনের চাইতেও দামী, এরকম একটি বার্তা দেয়। একটি সমাজে যদি নারীর জীবন এবং তার ব্যক্তিগত অধিকারকে পুরুষের ইচ্ছার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয়, তবে সেই সমাজ কখনোই নারীর জন্য নিরাপদ হতে পারে না। এর মাধ্যমে নারীর প্রতি যে নিপীড়ন এবং সহিংসতা সৃষ্টি হতে পারে, তা একটি সভ্য সমাজের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। নারীর অধিকার এবং মর্যাদাকে অগ্রাহ্য করে সহিংসতাকে আত্মমর্যাদার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা শুধু নারীদের জন্য নয়, সমাজের সার্বিক উন্নয়নের জন্যও অত্যন্ত ক্ষতিকর। আসুন হাদিসগুলো পড়ে দেখা যাক,
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
২০। লি’আন
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ নাই
৩৬৫৫-(১৬/…) আবূ বাকর ইবনু আবূ শাইবাহ (রহঃ) ….. আবূ হুরাইরাহ্ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ সা’দ ইবনু উবাদাহ্ (রাযিঃ) বললেনঃ হে আল্লাহর রসূল! যদি আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে কোন পুরুষকে দেখতে পাই তবে চারজন সাক্ষী উপস্থিত না করা পর্যন্ত আমি কি তাকে ধরব না? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ, পারবে না। তিনি (সা’দ) বললেনঃ এমনটি কিছুতেই হতে পারে না, সে মহান সত্তার কসম! যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, আবশ্য আমি তার (চারজন সাক্ষী উপস্থিত করার) আগেই কাল বিলম্ব না করে তার প্রতি তলোয়ার হানব। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা শোন, তোমাদের নেতা কী বলছেন। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় আত্মমর্যাদার অধিকারী। আর আমি তার চাইতেও অধিকতর আত্মমর্যাদাশীল এবং আল্লাহ আমার চাইতেও অধিক মর্যাদাবান। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৬২১, ইসলামিক সেন্টার ৩৬২১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
২০। লি’আন
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ নাই
৩৬৫৬-(১৭/১৪৯৯) উবাইদুল্লাহ ইবনু উমার কাওয়ারীরী ও আবূ কামিল ফুযায়ল ইবনু হুসায়ন জাহদারী (রহঃ) ….. মুগীরাহ শুবাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ সা’দ ইবনু উবাদাহ্ (রাযিঃ) বললেনঃ আমি যদি আমার স্ত্রীর সাথে অন্য কোন পুরুষকে দেখতে পাই তবে নিশ্চয়ই আমি তাকে আমার তরবারীর ধারালো দিক দিয়ে তার উপর আঘাত হানব- পার্শ্ব দিয়ে নয়। এ কথা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পৌছল। তিনি বললেনঃ তোমরা কি সাদের আত্মমর্যাদাবোধ সম্পর্কে আশ্চর্য হয়েছ? আল্লাহর কসম! আমি তার চাইতে অধিকতর আত্মমর্যাদাবান। আর আল্লাহ আমার তুলনায় অধিকতর মর্যাদাবান। আল্লাহ তাঁর আত্মমর্যাদার কারণে প্রকাশ্য ও গোপন যাবতীয় অশ্লীল কর্ম হারাম করে দিয়েছেন। আর আল্লাহর তুলনায় অধিক আত্মমর্যাদাসম্পন্ন কেউ নেই এবং আল্লাহর চাইতে অধিকতর ওযর (স্থাপন) পছন্দকারী কেউ নেই।* এ কারণেই আল্লাহ তার নাবী-রসূলদের সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারীরূপে পাঠিয়েছেন। আল্লাহর চাইতে অধিকতর প্রশংসা পছন্দকারী কেউ নেই। এ কারণে তিনি জান্নাতের ওয়াদা করেছেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ৩৬২২, ইসলামিক সেন্টার ৩৬২২)
* আল্লাহর চেয়ে ওযর পছন্দকারী কেউ নেই। এখানে ‘ওযর’ ক্ষমা করা ও সতর্ক করা অর্থে এসেছে। শাস্তির জন্য পাকড়াও করার পূর্বে আল্লাহ তা’আলা রসূলদেরকে সতর্ক করার জন্য প্রেরণ করেছেন। (তাহকীক। সহীহ মুসলিম, ফুআদ আবদুল বাকী’, ২য় খণ্ড, ৫৭৪ পৃঃ)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ শু’বা (রহঃ)
এই হাদিসের মাধ্যমে নারীর জীবনের প্রতি সহিংস মনোভাব এবং তাকে হত্যার বৈধতা দেওয়ার যে দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশিত হয়েছে, তা নারীর জন্য সামাজিকভাবে অত্যন্ত বিপজ্জনক। একটি সমাজে যদি নারীর জীবন এবং নিরাপত্তাকে এইভাবে উপেক্ষা করা হয়, তবে সেই সমাজে নারীর মর্যাদা ও অধিকার রক্ষিত হওয়া অসম্ভব। এই ধরনের হাদিস নারীর প্রতি সহিংসতার প্রবণতা বাড়িয়ে দেয় এবং পুরুষদের তাদের স্ত্রী বা নারীদের ওপর একধরনের ক্ষমতার অধিকারী করে তোলে, যা পুরোপুরি অসভ্য, মধ্যযুগীয় এবং অগ্রহণযোগ্য।
ইসলামের এই হাদিস নারীর জীবন, মর্যাদা এবং অধিকারকে চরমভাবে ক্ষুণ্ণ করে। এতে পুরুষদের নারী হত্যার বৈধতা প্রদান করা হয়েছে এবং সহিংসতাকে আত্মমর্যাদার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এটি নারীর মৌলিক অধিকার এবং নিরাপত্তাকে অগ্রাহ্য করে এবং তাকে পুরুষের সন্দেহ ও ক্রোধের শিকার হতে বাধ্য করে। মানবাধিকার এবং নারী অধিকারের দৃষ্টিতে, এই হাদিসের বার্তা অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং এর সমালোচনা করা অত্যন্ত প্রয়োজন। নারীর মর্যাদা এবং নিরাপত্তা রক্ষার জন্য এ ধরনের হাদিসকে বাতিল করা এবং নারীর অধিকারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। নারীর প্রতি সহিংসতা কখনোই আত্মমর্যাদার প্রতীক হতে পারে না, বরং এটি একটি বর্বর এবং অমানবিক মনোভাবের প্রতিফলন।
তালাক দেয়ার অধিকার স্বামীর
ইসলামের হুকুমত হচ্ছে, স্বামীই শুধু তালাক দিতে পারে। কিন্তু স্ত্রী তালাক দেয়ার মত অধিকার প্রাপ্ত নন।
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পাবলিশারঃ হাদিস একাডেমি
অধ্যায়ঃ পর্ব-১৩ঃ বিবাহ
পরিচ্ছদঃ ১১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ – খুল্‘ই (খুলা‘ তালাক) ও তালাক প্রসঙ্গে
৩২৭৯-(৬) সাওবান (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে রমণী বিনা কারণে স্বামীর নিকট তালাক চায়, সে জান্নাতের গন্ধও পাবে না। (আহমাদ, তিরমিযী, আবূ দাঊদ, ইবনু মাজাহ, দারিমী)(1)
(1) সহীহ : আবূ দাঊদ ২২২৬, তিরমিযী ১১৮৭, ইবনু মাজাহ ২৫০০, দারিমী ১৩১৬, আহমাদ ২২৪৪০, ইরওয়া ২০৩৫, সহীহ আল জামি‘ ২৭০৬, সহীহ আত্ তারগীব ২০১৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
ব্যাখ্যাঃ
ব্যাখ্যা: তালাক স্বামীর অধিকার, স্ত্রীর নয়। স্ত্রীর সঙ্গত কারণ থাকলে খুলা‘র মাধ্যমে সে স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হবে। কোনো মহিলা একান্ত কারণ ছাড়া স্বামীর কাছ থেকে তালাক প্রার্থনা করবে না। কোনো কোনো বর্ণনায় এ কথাও এসেছে, কোনো মহিলা নিজের জন্য অথবা অন্যের জন্য তালাক প্রার্থনা করবে না।
যে নারী বিনা কারণে তার স্বামীর কাছে তালাক প্রার্থনা করবে তার জন্য জান্নাতের ঘ্রাণ হারাম অর্থাৎ জান্নাতে প্রবেশ নিষিদ্ধ। এটা ভীতি ও ধমকিমূলক বাক্য। মুহসিন বা নেককারগণ যেমন প্রথম ধাপেই জান্নাতের সুঘ্রাণ পাবেন তারা সেই সুঘ্রাণ পাবে না। ‘আল্লামা কাযী ‘ইয়ায বলেনঃ এটাও হতে পারে যে, যদি সে জান্নাতে প্রবেশ করে তবে সুঘ্রাণ থেকে বঞ্চিত থাকবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
তালাকপ্রাপ্তা নারী খোরপোষ পাবে না
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৬৮/ ত্বলাক
পরিচ্ছদঃ ৬৮/৪১. ফাতিমাহ বিন্ত কায়সের ঘটনা
৫৩২৩-৫৩২৪. ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ফাতিমার কী হল? সে কেন আল্লাহকে ভয় করছে না অর্থাৎ তার এ কথায় যে, তালাকপ্রাপ্তা নারী (তার স্বামীর থেকে) খাদ্য ও বাসস্থান কিছুই পাবে না। (৫৩২১, ৫৩২২) আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ১৯। ত্বলাক্ব (তালাক)
পরিচ্ছদঃ ৬. বায়িন ত্বলাকপ্রাপ্তা* স্ত্রীর জন্য খোরপোষ নেই
৩৬০০-(৪৪/…) মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না ও ইবনু বাশশার (রহিমাহুমাল্লাহ) ….. ফাত্বিমাহ বিনতু কায়স (রাযিঃ) এর সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে তিন ত্বলাক (তালাক) প্রাপ্ত মহিলা সম্পর্কে বর্ণিত। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তার জন্য বাসস্থান ও খোরপোষ কোনটাই নেই। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৫৭০, ইসলামীক সেন্টার ৩৫৭০)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
ধর্ষণ করার পরে মোহরানা দিয়ে ফয়সালা করা
মুয়াত্তা মালিক
পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
অধ্যায়ঃ ৩৬. বিচার সম্পর্কিত অধ্যায়
পরিচ্ছদঃ ১৬. কোন স্ত্রীলোকের সাথে জবরদস্তি যিনা করিলে তাহার ফয়সালা
রেওয়ায়ত ১৪. ইবন যুহরী (রহঃ) হইতে বর্ণিত, আবদুল মালিক ইবন মারওয়ান জবরদস্তিভাবে যিনা করান হইয়াছে এমন স্ত্রীলোকের ফয়সালা এই দিয়াছেন: ব্যভিচার যে করিয়াছে ঐ স্ত্রীলোকটিকে মোহর দান করিবে।
মালিক (রহঃ) বলেনঃ আমাদের নিকট এই ফয়সালা যে, যদি কেহ কোন স্ত্রীলোকের উপর জবরদস্তি করে, চাই সে কুমারী হউক অথবা অকুমারী, যদি সে স্বাধীন হয় তবে তাহাকে মাহরে মিসাল দেওয়া আবশ্যক।
আর যদি যে দাসী হয় তবে যিনার দ্বারা যে মূল্য কম হইয়াছে তাহা আদায় করিতে হইবে এবং ব্যভিচারীর শাস্তিও সঙ্গে সঙ্গে হইবে এবং উক্ত স্ত্রীলোকের উপর কোন শাস্তিও হইবে না। আর যদি ব্যভিচারী গোলাম হয় তবে মনিবের জরিমানা দিতে হইবে। কিন্তু যদি গোলামকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে দিয়া দেয় তবে ভিন্ন কথা।
নারীর খৎনা করা
নারীর খৎনার সময় বেশী গভীর করে কাটতে নিষেধ করেছেন নবী, কারণ বেশি গভীর করে কেটে ফেললে স্বামীরা আর সেক্স করে আনন্দ পাবে না।
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
পাবলিশারঃ আল্লামা আলবানী একাডেমী
অধ্যায়ঃ ৩৬/ শিষ্টাচার
পরিচ্ছদঃ ১৮০. খাতনা করা সম্পর্কে
৫২৭১। উম্মু ‘আতিয়্যাহ আল-আনসারী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। মদীনাতে এক মহিলা খাতনা করতো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি গভীর করে কাটবে না। কারণ তা মেয়েলোকের জন্য অধিকতর আরামদায়ক এবং স্বামীর জন্য অতি পছন্দনীয়। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, ‘উবাইদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রহঃ) থেকে আব্দুল মালিক (রহঃ) সূত্রে একই অর্থে ও সনদে এটি বর্ণিত হয়েছে। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, হাদীসটির সনদ দুর্বল।(1)
সহীহ।
(1). বায়হাক্বী।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
নারী নেতৃত্ব দিতে পারবে না
নবী মুহাম্মদ বলে গেছেন, কোন নারীই দেশ বা রাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেয়ার মত যোগ্য হতে পারে না। মানে, নারীরা আসলে অযোগ্য।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৮১/ ফিতনা
পরিচ্ছদঃ ২৯৯৪. পরিচ্ছেদ নাই
৬৬১৮। উসমান ইবনু হায়সাম (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একটি কথা দ্বারা আল্লাহ তা’আলা জঙ্গে জামাল (উষ্ট্রের যুদ্ধ) এর সময় আমাকে বড়ই উপকৃত করেছেন। (সে কথাটি হল) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট যখন এ সংবাদ পৌছলে যে, পারস্যের লোকেরা কিসরার কন্যাকে তাদের শাসক নিযুক্ত করেছে তখন তিনি বললেনঃ সে জাতি কখনই সফলকাম হবে না যারা তাদের শাসনভার কোন রমনীর হাতে অর্পণ করে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৯২/ ফিতনা
পরিচ্ছদঃ ৯২/১৮. পরিচ্ছেদ নাই।
৭০৯৯. আবূ বকরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একটি কথা দিয়ে আল্লাহ্ জঙ্গে জামাল (উষ্ট্রের যুদ্ধ) এর সময় আমাকে বড়ই উপকৃত করেছেন। (তা হল) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট যখন এ খবর পৌঁছল যে, পারস্যের লোকেরা কিসরার মেয়েকে তাদের শাসক নিযুক্ত করেছে, তখন তিনি বললেনঃ সে জাতি কক্ষনো সফলকাম হবে না, যারা তাদের শাসনভার কোন স্ত্রীলোকের হাতে অর্পণ করে।(1) (৪৪২৫) (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৬০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬১৮)
(1) মুসলমানরা যদি সফলতা পেতে চায় তবে তাদেরকে অবশ্যই নারী নেতৃত্ব পরিহার করতে হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৬৪/ মাগাযী (যুদ্ধ)
পরিচ্ছদঃ ৬৪/৮৩. পারস্যের কিসরা ও রোমের অধিপতি কায়সারের কাছে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পত্র প্রেরণ।
৪৪২৫. আবূ বাকরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শ্রুত একটি বাণীর দ্বারা আল্লাহ জঙ্গে জামালের (উষ্ট্রের যুদ্ধ) দিন আমার মহা উপকার করেছেন, যে সময় আমি সাহাবায়ে কিরামের সঙ্গে মিলিত হয়ে জামাল যুদ্ধে শারীক হতে প্রায় প্রস্তুত হয়েছিলাম। আবূ বাকরাহ (রাঃ) বলেন, সে বাণীটি হল, যখন নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এ খবর পৌঁছল যে, পারস্যবাসী কিসরা কন্যাকে তাদের বাদশাহ মনোনীত করেছেন, তখন তিনি বললেন, সে জাতি কক্ষণো সফল হবে না স্ত্রীলোক যাদের প্রশাসক হয়। (৭০৯৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০৭৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪০৮০)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সুগন্ধী ব্যবহারকারীরা ব্যভিচারিণী
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পাবলিশারঃ হাদিস একাডেমি
অধ্যায়ঃ পর্ব-৪ঃ সলাত
পরিচ্ছদঃ ২৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ – জামা‘আত ও তার ফাযীলাত সম্পর্কে
১০৬৫-(১৪) আবূ মূসা আল আশ্‘আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ প্রতিটি চক্ষুই ব্যভিচারী। আর যে মহিলা সুগন্ধি দিয়ে পুরুষদের সভায় যায় সে এমন এমন অর্থাৎ ব্যভিচারকারিণী। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী)(1) (1) হাসান : আত্ তিরমিযী ২৭৮৬, আবূ দাঊদ ৪১৭৩, সহীহ আত্ তারগীব ২০১৯, সুনান আল কুবরা ৯৪২২, ইবনু খুযায়মাহ্ ১৬৪১, ইবনু হিব্বান ৪৪২৪।
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
সাজসজ্জা/সৌন্দর্য্যবৃদ্ধি হারাম
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩৮/ পোশাক ও সাজসজ্জা
পরিচ্ছদঃ ২৮. পরচুলা সংযোজনকারিণী ও সংযোজন প্রার্থিনী, মানবদেহে চিত্র অংকনকারিনী ও অংকন প্রার্থিনী, ভ্রুর পশম উৎপাটনকারিণী ও উৎপাটনপ্রার্থিনী, দাঁতের মাঝে দর্শনীয় ফাঁক সুষমা তৈরিকারিণী এবং আল্লাহর সৃজনে বিকৃতি সাধনকারিণীদের ক্রিয়াকলাপ হারাম
৫৩৮৮। ইসহাক ইবন ইবরাহীম ও উসমান ইবন আবু শায়বা (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ মানবদেহে চিত্র অঙ্কনকারিণী ও অঙ্কনপ্রার্থিণী নারী, (বড় দেখাবার জন্য) কপাল ভ্রুর চুল উৎপাটনকারিণী ও উৎপাটনকামী নারী এবং (সৌন্দর্য সুষমা বৃদ্ধির মানসে) দাঁতের মাঝে (সুষম) ফাঁক সৃষ্টিকারিনী, যারা আল্লাহর সৃষ্টিতে বিকৃতি সাধনকারিণী, এদের আল্লাহ তা’আলা লানত করেন।
রাবী বলেন, আসাদ গোত্রের উম্মু ইয়াকুব নাম্নী এক মহিলার কাছে (আবদুল্লাহ (রাঃ) এর) এ হাদীসের বর্ণনা পৌছল। তিনি কুরআন পাঠে অভ্যস্ত ছিলেন। তিনি তার কাছে কাছে এসে বললেন, সে হাদীসখানি কিরূপ, যা আপনার পক্ষ থেকে আমার কাছে পৌছেছে যে, আপনি মানবদেহে চিত্র অঙ্কনকারিণী ও অঙ্কনকামী নারী ও কপাল ভ্রুর লোম উৎপাটনকারিণী ও উৎপাটনকামী নারী এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধির প্রয়াসে দাতের মাঝে ফাক তৈরিকারিণীদের, যারা আল্লাহর সৃষ্টিতে পরিবর্তন সাধনকারিণী, এদের লানত করেছেন?
আব্দুল্লাহ (রাঃ) বললেন, আমার কি যুক্তি থাকতে পারে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাদের অভিসম্পাত দিয়েছেন, আমি সে লোকদের অতিসস্পাত দিব না? অথচ তা আল্লাহর কিতাবে রয়েছে। মহিলা বললেন, পবিত্র গ্রন্থের (আল-কুরআন এর) বাঁধাই কাগজের মধ্যবর্তী (আগাগোড়া) সবটুকু আমি পড়েছি, কিন্তু তা তো কোথাও পাইনি? তিনি বললেন, তুমি যদি (গভীর অভিনিবেশসহকারে) পড়তে, তাহলে অবশ্যই তা পেতে। মহান আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا
আর রাসুল তোমাদের কাছে যা উপস্থাপন করেন তা ধরে রাখ, আর তিনি যা থেকে তোমাদের নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক।
মহিলা বললেন, আমি (প্রায় নিশ্চিত যে), এর কোন কিছু এখন গিয়ে আপনার স্ত্রীর মাঝে দেখতে পাব। তিনি বললেন, যাও, তা দেখ গিয়ে। রাবী বলেন, মহিলা আবদুল্লাহ (রাঃ) এর স্ত্রীর কাছে গেলেন, কিন্তু (সে সবের) কিছুই তিনি দেখতে পেলেন না। তখন তিনি ফরে এসে বললেন, দেখতে পেলাম না। তিনি বললেন, শোন! তেমন কিছু থাকলে আমরা একত্রে বসবাস করতাম না।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
হিজড়া/ট্রান্সজেন্ডারদের ঘৃণা করতেন নবী
হিজড়াদের ঘর থেকে বের করে দিতে হবে
নবী মুহাম্মদ হিজড়াদের ঘৃণা করতেন। হিজড়াদের ঘর থেকে বের করে দেয়ার কথা বলেছেন নবী মুহাম্মদ।
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৮৬/ দন্ডবিধি
পরিচ্ছদঃ ৮৬/৩৩. গুনাহ্গার ও নপুংসকদের নির্বাসিত করা।
৬৮৩৪. ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লা‘নত করেছেন নারীরূপী পুরুষ ও পুরুষরূপী নারীদের উপর এবং বলেছেনঃ তাদেরকে বের করে দাও তোমাদের ঘর হতে এবং তিনি অমুক অমুককে বের করে দিয়েছেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৭৫/ কাফের ও ধর্মত্যাগী বিদ্রোহীদের বিবরণ
পরিচ্ছদঃ ২৮৫২. গুনাহগার ও হিজড়াদের নির্বাসিত করা
৬৩৭৩। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লা’নত করেছেন নারীরূপী পুরুষ ও পুরুষরূপী নারীদের উপর এবং বলেছেনঃ তাদেরকে বের করে দাও তোমাদের ঘর হতে এবং তিনি অমুক অমুককে বের করে দিয়েছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
হিজরাদের প্রতি অভিশাপ
১। আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) সেই পুরুষের ওপর অভিশাপ করেছেন যে, মহিলার পোষাক পরিধান করে এবং সে মহিলার উপর অভিশাপ করেছেন যে পুরুষের পোষাক পরিধান করে (আবূদাঊদ, মিশকাত হা/৪৪৬৯, বাংলা ৮ম খন্ড, হা/৪২৭০, হাদীছ ছহীহ)।
২। ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, নবী (ছাঃ) হিজড়ার বেশ ধারণকারী পুরুষের উপর অভিশাপ করেছেন এবং পুরুষের বেশ ধারণকারী নারীর উপর অভিশাপ করেছেন (বুখারী, মিশকাত হা/৪৪২৮)।
৩। ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন- রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘তিন শ্রেণীর লোক জান্নাতে যাবে না- (১) পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান (২) বাড়ীতে বেহায়াপনার সুযোগ প্রদানকারী (৩) পুরুষের বেশ ধারণকারী নারী’ (নাসাঈ, হাদীছ ছহীহ্, ছহীহ তারগীব হা/২০৭০)।
৪। আবূ মুলায়কা (রাঃ) বলেন, একদা আয়েশা (রাযিঃ)-কে বলা হল- একটি মেয়ে পুরুষের জুতা পরে। তখন আয়েশা (রাঃ) বললেন, রাসূল (ছাঃ) পুরুষের বেশধারী নারীর প্রতি অভিশাপ করেছেন (আবূদাঊদ, মিশকাত হা/৪৪৭০, হাদীছ ছহীহ)।
হোমোফোবিক বা সমকামী বিদ্বেষী
নবী মুহাম্মদ সমকামীদেরকেও ঘৃণা করতেন।
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ৩৩/ অপরাধ ও তার শাস্তি
২৯. কেউ কওমে লূতের অনুরূপ অপকর্ম করলে
৪৪৬২। ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কাউকে যদি লূত গোত্রের মতই কুর্কমে লিপ্ত দেখতে পাও তাহলে কর্তা ও যার সঙ্গে করা হয়েছে তাদের উভয়কে হত্যা করো।(1)
হাসান সহীহ।
(1). তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, আহমাদ, হাকিম। ইমাম হাকিম ও যাহাবী বলেনঃ হাদীস সহীহ।
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ৩৩/ অপরাধ ও তার শাস্তি
২৯. কেউ কওমে লূতের অনুরূপ অপকর্ম করলে
৪৪৬৩। ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, অবিবাহিতদের লাওয়াতাতে (পায়ুকামে) লিপ্ত পাওয়া গেলে রজম করা হবে। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, ‘আসিম (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত হাদীস আমর ইবনু আবূ আমরের হাদীসকে দুর্বল প্রমাণিত করে।(1)
সনদ সহীহ মাওকুফ।
(1). বায়হাক্বী।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায়ঃ ১৪/ হদ্দ (দন্ড)
১৪/১২. যে ব্যক্তি লূত জাতির অনুরূপ অপকর্মে লিপ্ত হয়
১/২৫৬১। ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমরা কাউকে লূত জাতির অনুরূপ অপকর্মে লিপ্ত পেলে তাকে এবং যার সাথে তা করা হয় তাকে হত্যা করো।
তিরমিযী ১৪৫৬, আবূ দাউদ ৪৪৬২, বায়হাকী ফিস সুনান ৮/২৩২, ইরওয়া ২৩৫০, মিশকাত ৩৫৭৫। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী আবদুল আযীয বিন মুহাম্মাদ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সা’দ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। ইবনু হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। মালিক বিন আনাস তাকে সিকাহ বলেছেন। আহমাদ বিন শু’আয়ব আন নাসায়ী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে নিজ কিতাব ছাড়া অন্যত্র থেকে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪৭০, ১৮/১৮৭ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
প্রচণ্ড সাম্প্রদায়িক ছিলেন নবী
ইহুদি বিদ্বেষী ছিলেন নবী
রিয়াযুস স্বা-লিহীন (রিয়াদুস সালেহীন)
১৮/ বিবিধ চিত্তকর্ষী হাদিসসমূহ
পরিচ্ছেদঃ ৩৭০ : দাজ্জাল ও কিয়ামতের নিদর্শনাবলী সম্পর্কে
তাওহীদ পাবলিকেশন নাম্বারঃ ১৮২৯, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৮২০
১৩/১৮২৯। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ’’কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যে পর্যন্ত মুসলিমরা ইহুদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করবে। এমনকি ইহুদী পাথর ও গাছের আড়ালে আত্মগোপন করলে পাথর ও গাছ বলবে ’হে মুসলিম! আমার পিছনে ইহুদী রয়েছে। এসো, ওকে হত্যা কর।’ কিন্তু গারক্বাদ গাছ [এরূপ বলবে] না। কেননা এটা ইহুদীদের গাছ।’’ (বুখারী-মুসলিম) [1]
[1] সহীহুল বুখারী ২৯২৬, মুসলিম ১৫৭, ২৯২২, আহমাদ ৮৯২১, ১০৪৭৬, ২০৫০২
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ করতেন নবী
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩৩/ জিহাদ ও এর নীতিমালা
পরিচ্ছদঃ ২১. ইয়াহুদী ও নাসারাদের আরব উপ-দ্বীপ থেকে বহিস্কার
৪৪৪২। যুহায়র ইবনু হারব ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমার কাছে উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, নিশ্চয়ই আমি ইয়াহুদী ও খ্রীষ্টান সম্প্রদায়কে আরব উপ-দ্বীপ থেকে বহিস্কার করবো। পরিশেষে মুসলমান ব্যতীত অন্য কাউকে এখানে থাকতে দেবো না।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ৩৩। জিহাদ ও সফর
পরিচ্ছদঃ ২১. ইয়াহুদী ও নাসারাদের আরব উপ-দ্বীপ থেকে বের করে দেয়া
৪৪৮৬-(৬৩/১৭৬৭) যুহায়র ইবনু হারব ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি’ (রহঃ) ….. জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাযিঃ) বলেন, আমার কাছে উমর ইবনু খাত্তাব (রাযিঃ) বর্ণনা করেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, নিশ্চয়ই আমি ইয়াহুদী ও খ্ৰীষ্টান সম্প্রদায়কে আরব উপ-দ্বীপ থেকে বের করে দেবো। তারপর মুসলিম ব্যতীত অন্য কাউকে এখানে থাকতে দেবো না। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪৪৪২, ইসলামিক সেন্টার ৪৪৪৪)
যুহায়র ইবনু হারব ও সালামাহ্ ইবনু শাবীব (রহঃ) ….. উভয়েই আবূ যুবায়র (রহঃ) থেকে এ সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪৪৪২, ইসলামিক সেন্টার ৪৪৪৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
পাবলিশারঃ হুসাইন আল-মাদানী
অধ্যায়ঃ ১৯/ যুদ্ধাভিযান
পরিচ্ছদঃ ৪৩. আরব উপদ্বীপ হতে ইয়াহুদী-নাসারাদের বের করে দেওয়া প্রসঙ্গে
১৬০৭। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেনঃ আমি ইহুদী ও নাসারাদের আরব উপদ্বীপ হতে অবশ্যই বহিষ্কার করব। মুসলমান ব্যতীত অন্য কাউকে সেখানে বসবাস করতে দিব না।
সহীহ, সহীহা (১১৩৪), সহীহ আবূ দাউদ, মুসলিম
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
রাস্তার কিনারায় ঠেলে দিতে হবে
সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
পাবলিশারঃ হুসাইন আল-মাদানী
অধ্যায়ঃ ১৯/ যুদ্ধাভিযান
পরিচ্ছদঃ ৪১. আহলে কিতাবদের সালাম প্রদান প্রসঙ্গে
১৬০২। আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ইয়াহুদী-নাসারাদের প্রথমে সালাম প্রদান করো না। তোমরা রাস্তায় চলাচলের সময় তাদের কারো সাথে দেখা হলে তাকে রাস্তার কিনারায় ঠেলে দিও।
সহীহ, সহীহা (৭০৪), ইরওয়া (১২৭১), মুসলিম, বুখারী আদাবুল মুফরাদ, ২৮৫৫ নং হাদীসটির আলোচনা আসবে।
ইবনু উমার, আনাস ও আবূ বাসরা আল-গিফারী (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
অমুসলিমদের খাবার দিতেও নিষেধ করেছেন নবী
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ৩৬/ শিষ্টাচার
১৯. যার সংস্পর্শে বসা উচিত
৪৮৩২। আবূ সাঈদ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তুমি মু‘মিন ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কারো সঙ্গী হবে না এবং তোমার খাদ্য যেন পরহেযগার লোকে খায়।(1)
হাসান।
(1). তিরমিযী, আহমাদ।
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
অমুসলিমদের সাথে বসবাস করা নিষেধ
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ৯/ জিহাদ
১৮২. মুশরিকদের এলাকায় অবস্থান সম্পর্কে
২৭৮৭। সামুরাহ ইবনু জুনদুব (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ কেউ কোনো মুশরিকের সাহচর্যে থাকলে এবং তাদের সাথে বসবাস করলে সে তাদেরই মতো।(1)
(1). সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বিধর্মীদের মুর্তি ধ্বংস করতেন নবী
মুহাম্মদ বিধর্মীদের মূর্তি ধ্বংস করতেন, যার অসংখ্য রেফারেন্স পাওয়া যায়। এখানে শুধুমাত্র যুল-খালাসা বিষয়ক হাদিসগুলো দেয়া হচ্ছে।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫০/ আম্বিয়া কিরাম (আঃ)
পরিচ্ছদঃ ২১৩১. জারীর ইবন আবদুল্লাহ বাজালী (রাঃ) এর আলোচনা
৩৫৪৯। ইসহাক আল ওয়াসিতী (রহঃ) … জারীর ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ইসলাম গ্রহণ করার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর গৃহে প্রবেশ করতে কোনদিন আমাকে বাঁধা প্রদান করেন নি এবং যখনই আমাকে দেখেছেন মুচকি হাসি দিয়েছেন। জারীর (রাঃ) আরো বলেন, জাহিলী যুগে (খাস’আম গোত্রের একটি প্রতীমা রক্ষিত মন্দির) যুল-খালাসা নামে একটি ঘর ছিল। যাকে কা’বায়ে ইয়ামানী ও কা’বায়ে শামী বলা হত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, তুমি কি যুল-খালাসার ব্যাপারে আমাকে শান্তি দিতে পার? জারীর (রাঃ) বলেন, আমি আহমাস গোত্রের একশ পঞ্চাশ জন অশ্বারোহী সৈন্য নিয়ে যাত্রা করলাম এবং (প্রতীমা ঘরটি) বিধ্বস্ত করে দিলাম। সেখানে যাদেরকে পেলাম হত্যা করে ফেললাম। ফিরে এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সংবাদ শোনালাম। তিনি (অত্যন্ত খুশী হয়ে) আমাদের জন্য এবং আহমাস গোত্রের জন্য দু’আ করলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫১/ মাগাযী (যুদ্ধাভিযান)
পরিচ্ছদঃ ২২২৬. যুল খালাসার যুদ্ধ
৪০১৮। ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) … জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি কি আমাকে যুল-খালাসার পেরেশানী থেকে স্বস্থি দেবেনা? আমি বললাম: অবশ্যই। এরপর আমি (আমাদের) আহমাস গোত্র থেকে একশত পঞ্চাশ জন অশ্বারোহী সৈনিক নিয়ে চললাম। তাদের সবাই ছিলো অশ্ব পরিচালনায় অভিজ্ঞ। কিন্তু আমি তখনো ঘোড়ার উপর স্থির হয়ে বসতে পারতাম না। তাই ব্যাপারটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানালাম। তিনি তাঁর হাত দিয়ে আমার বুকের উপর আঘাত করলেন।
এমনকি আমি আমার বুকে তাঁর হাতের চিহ্ন পর্যন্ত দেখতে পেলাম। তিনি দোয়া করলেন, ‘হে আল্লাহ্! একে স্থির হয়ে বসে থাকতে দিন এবং তাকে হেদায়েত দানকারী ও হেদায়েত লাভকারী বানিয়ে দিন’। জারীর (রাঃ) বলেন, এরপরে আর কখনো আমি আমার ঘোড়া থেকে পড়ে যাইনি। তিনি আরো বলেছেন যে, যুল-খালাসা ছিলো ইয়ামানের অন্তর্গত খাসআম ও বাজীলা গোত্রের একটি (তীর্থ) ঘর। সেখানে কতগুলো মূর্তি স্থাপিত ছিলো। লোকেরা এগুলোর পূজা করত এবং এ ঘরটিকে বলা হতো কা’বা।
রাবী বলেন, এরপর তিনি সেখানে গেলেন এবং ঘরটি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিলেন আর এর ভিটামাটিও চুরমার করে দিলেন। রাবী আরো বলেন, আর যখন জারীর (রাঃ) ইয়ামানে গিয়ে উঠলেন তখন সেখানে এক লোক থাকত, সে তীরের সাহায্যে ভাগ্য নির্নয় করত, তাকে বলা হল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতিনিধি এখানে আছেন, তিনি যদি তোমাকে পাকড়াও করার সুযোগ পান তাহলে তোমার গর্দান উড়িয়ে দেবেন।
রাবী বলেন, এরপর একদা সে ভাগ্য নির্নয়ের কাজে লিপ্ত ছিল, সেই মূহুর্তে জারীর (রাঃ) সেখানে পৌঁছে গেলেন। তিনি বললেন, তীরগুলো ভেঙ্গে ফেল এবং আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই- এ কথার সাক্ষ্য দাও, অন্যথায় তোমার গর্দান উড়িয়ে দেব। লোকটি তখন তীরগুলো ভেঙ্গে ফেলল এবং (আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, এ কথার) সাক্ষ্য দিল। এরপর জারীর (রাঃ) আবূ আরতাত নামক আহমাস গোত্রের এক ব্যাক্তিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে পাঠালেন খোশখবরী শোনানোর জন্য। লোকটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, ‘‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে সত্তার (আল্লাহর) কসম করে বলছি, যিনি আপনাকে সত্য বাণী দিয়ে পাঠিয়েছেন, ঘরটিকে ঠিক খুজলি-পাঁচড়া আক্রান্ত উটের মতো কালো করে রেখে আমি এসেছি। বর্ণনাকারী বলেন, এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহমাস গোত্রের অশ্বারোহী এবং পদাতিক সৈনিকদের সার্বিক কল্যাণ ও বরকতের জন্য পাঁচবার দোয়া করলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সেই সাথে, বিভিন্ন অঞ্চলে প্রেরণ করে নবী অমুসলিমদের অসংখ্য উপাসনালয় এবং পুজনীয় মূর্তি ধ্বংসের নির্দেশ দিয়েছেন [102] –
মৃত্যুর আগেও শেষ ওয়াসিয়তেও সাম্প্রদায়িকতা
মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতর মুহাম্মদ সেই শেষ সময়েও ওয়াসিয়ত করে গিয়েছেন, অমুসলিমদের বিতাড়িত করতে।
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
অধ্যায়ঃ ৪৮/ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ ১৯১৭. প্রতিনিধি দলকে উপঢৌকন প্রদান
১৯১৬. পরিচ্ছেদঃ জিম্মিদের জন্য সুপারিশ করা যাবে কি এবং তাদের সাথে আচার-আচরণ
২৮৩৮। কাবীসা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি (কোন এক সময়) বললেন, বৃহস্পতিবার! হায় বৃহস্পতিবার! এরপর তিনি কাঁদতে শুরু করলেন, এমনকি তাঁর আশ্রুতে (যমিনের) কঙ্করগুলো সিক্ত হয়ে গেল। আর তিনি বলতে লাগলেন, বৃহস্পতিবারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রোগ যাতনা বেড়ে যায়। তখন তিনি বললেন, তোমার আমার জন্য লিখার কোন জিনিস নিয়ে আস, আমি তোমাদের জন্য কিছু লিখিয়ে দিব। যাতে এরপর তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট না হয। এতে সাহাবীগণ পরস্পর মতপার্থক্য করেন। অথচ নাবীর সম্মুখে মতপার্থক্য সমীচীন নয়। তাদের কেউ কেউ বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়া ত্যাগ করেছেন?’
তিনি বললেন, ‘আচ্ছা’ আমাকে আমার অবস্থায় থাকতে দাও। তোমরা আমাকে যে অবস্থার দিকে আহবান করছো তার চেয়ে আমি যে অবস্থায় আছি তা উত্তম। ’ অবশেষে তিনি ইন্তেকালের সময় তিনটি বিষয়ে ওসীয়ত করেন। (১) মুশরিকদেরকে আরব উপদ্বীপ থেকে বিতাড়িত কর, (২) প্রতিনিধি দলকে আমি যেরূপ উপঢৌকন দিয়েছি তোমরাও আনুরূপ দিও (রাবী বলেন) তৃতীয় ওসীয়তটি আমি ভুলে গিয়েছি। আবূ আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) ও ইয়াকুব (রহঃ) বলেন, আমি মুগীরা ইবনু আবদুর রাহমানকে জাযীরাতুল আরব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি বললেন, তাহল মক্কা, মদিনা ইয়ামামা ও ইয়ামান। ইয়াকূব (রহঃ) বলেন, ‘তিহামা আরম্ভ হল ‘আরজ থেকে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ)
সন্ত্রাসী, বর্বর, লুটেরা ছিলেন নবী
যুদ্ধে ধোঁকাবাজী করতেন নবী
নবী মুহাম্মদ বলেছেন, যুদ্ধ হচ্ছে ধোঁকার জায়গা। তাই যুদ্ধে ধোঁকাবাজী এবং প্রতারণার মাধ্যমে কাফেরদের পরাজিত করতে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। প্রতারণা কিংবা ধোঁকাবাজির মাধ্যমে শত্রুকে যুদ্ধে পরাজিত করা অত্যন্ত নোংরা কাজ।
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
৩৩। জিহাদ ও সফর
পরিচ্ছেদঃ ৫. যুদ্ধের মধ্যে শক্রকে ধোঁকা দেয়ার বৈধতা
হাদিস একাডেমি নাম্বারঃ ৪৪৩১, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৭৩৯
৪৪৩১-(১৭/১৭৩৯) আলী ইবনু হুজুর সাদী, আমর আন্ নাকিদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ….. জাবির (রাযিঃ) হতে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যুদ্ধ কৌশল ও ছলনারই নাম। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪৩৮৯, ইসলামিক সেন্টার ৪৩৮৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
৩৩। জিহাদ ও সফর
পরিচ্ছেদঃ ৫. যুদ্ধের মধ্যে শক্রকে ধোঁকা দেয়ার বৈধতা
হাদিস একাডেমি নাম্বারঃ ৪৪৩২, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৭৪০
৪৪৩২-(১৮/১৭৪০) মুহাম্মাদ ইবনু আবদুর রহমান ইবনু সাহম (রহঃ) ….. আবূ হুরাইরাহ্ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যুদ্ধ কুটকৌশলেরই নাম। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪৩৯০, ইসলামিক সেন্টার ৪৩৯০)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
এই হাদিসের ব্যাখ্যা আসুন নসরুল বারী থেকে পড়ে নিই, [103]
সন্ত্রাসের মাধ্যমে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতেন নবী
সূনান নাসাঈ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩৮/ হত্যা অবৈধ হওয়া
পরিচ্ছদঃ ১. মুসলিমকে হত্যা করার অবৈধতা
৩৯৭৯. ইসহাক ইবন ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ না বলা পর্যন্ত আমি লোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি। যদি তারা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ বলে, তবে আমার পক্ষ হতে তাদের জানমাল রক্ষা করে নেবে কিন্তু এর হক ব্যতীত। আর তাদের হিসাব আল্লাহর যিম্মায়।
তাহক্বীকঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ১। ঈমান (বিশ্বাস)
পরিচ্ছদঃ ৮.লোকেদের বিরুদ্ধে জিহাদের নির্দেশ যতক্ষণ না তারা স্বীকার করে যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই, মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল এবং সালাত কায়িম করে, যাকাত দেয়, নাবী যে শারীআতের বিধান এনেছেন তার প্রতি ঈমান আনে, যে ব্যক্তি এসব করবে সে তার জান মালের নিরাপত্তা লাভ করবে; তবে শারীআত সম্মত কারণ ব্যতীত, তার অন্তরের খবর আল্লাহর কাছে; যে ব্যক্তি যাকাত দিতে ও ইসলামের অন্যান্য বিধান পালন করতে অস্বীকার করে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার এবং ইসলামের বৈশিষ্ট্যসমূহ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ইমামের গুরুত্বারোপ করার নির্দেশ।
৩৫-(৩৫/…) আবূ বকর ইবনু আবূ শাইবাহ (রহঃ) ….. জাবির (রাযিঃ), আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) ও আবূ সালিহ থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, লোকদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি। বাকী অংশ আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) থেকে ইবনুল মুসাইয়্যাব-এর বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ।
আবূ বাকর ইবনু শাইবাহ ও মুহাম্মাদ ইবনু আল মুসান্না (রহঃ) ….. জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই” এ কথার স্বীকৃতি না দেয়া পর্যন্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি। “আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই” এ কথা স্বীকার করলে তারা আমার থেকে তাদের জান মালের নিরাপত্তা লাভ করবে; তবে শারী’আত সম্মত কারণ ছাড়া। তাদের হিসাব-নিকাশ আল্লাহর কাছে। তারপর তিনি আয়াতটি তিলাওয়াত করেনঃ “আপনি তো একজন উপদেশদাতা। আপনি এদের উপর কর্মনিয়ন্ত্রক নন”- (সূরাহ আল গা-শিয়াহ্ ৮৮ঃ ২১-২২)। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৫, ইসলামিক সেন্টারঃ ৩৫-৩৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সুনানে ইবনে মাজাহ
পাবলিশারঃ তাওহীদ পাবলিকেশন
অধ্যায়ঃ ৩০/ কলহ-বিপর্যয়
পরিচ্ছদঃ ৩০/১. যে ব্যক্তি ‘‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ’’ বলে, তার উপর হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকা
৩/৩৯২৯। আওস (রাঃ) বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। তিনি আমাদেরকে (অতীতের) ঘটনাবলী উল্লেখপূর্বক উপদেশ দিচ্ছিলেন। ইত্যবসরে এক ব্যক্তি তাঁর নিকট এসে তাঁর সাথে একান্তে কিছু বললো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা তাকে নিয়ে গিয়ে হত্যা করো। লোকটি ফিরে গেলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে, ‘‘আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই’’? সে বললো, হাঁ। তিনি বলেনঃ যাও, তোমরা তাকে তার পথে ছেড়ে দাও। কারণ লোকেরা ‘‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’’ না বলা পর্যন্ত আমাকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা তাই করলে তাদের জান-মালে হস্তক্ষেপ আমার জন্য হারাম হয়ে গেলো।
নাসায়ী ৩৯৭৯, ৩৯৮২, ৩৯৮৩, আহমাদ ১৫৭২৭, দারেমী ২৪৪৬। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
মুহাম্মদ হচ্ছেন ত্রাস ও ভীতি সৃষ্টিকারী
নবী মুহাম্মদ বলেছেন, উনি হচ্ছেন একজন ত্রাস এবং ভীতি সৃষ্টিকারী চরিত্র। নিচের হাদিসটি পড়ি-
সূনান নাসাঈ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৪/ গোসল ও তায়াম্মুম
পরিচ্ছদঃ ২৬/ মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করা
৪৩২। হাসান ইবনু ইসমাঈল ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাকে এমন পাঁচটি বস্তু দান করা হয়েছে যা আমার পূর্বে কাউকে দেয়া হয়নি। এক মাস পথ চলার দূরত্ব থেকে শত্রুর মাঝে ভীতি সঞ্চার করার ক্ষমতা প্রদান করে আমাকে সাহায্য করা হয়েছে। আমার জন্য মাটিকে মসজিদ ও পবিত্রতা অবলম্বনের উপকরণ করা হয়েছে। অতএব আমার উম্মতের কোন ব্যাক্তির সামনে যেখানেই সালাতের সময় উপস্থিত হয়, সে সেখানে সালাত আদায় করতে পারে। আর আমাকে শাফাআত দান করা হয়েছে, যা আমার পূর্বে কোন নাবীকে দান করা হয়নি, আর আমাকে সমগ্র মানব জাতির জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। আমার পূর্বের প্রত্যেক নাবী কোন বিশেষ সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরিত হতেন।
সহিহ, ইরউয়াউল গালীল ১/৩১৫-৩১৬, বুখারি হাঃ ৩৩৫, ৪৩৮, মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হাঃ ১০৫৪
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
It was narrated that Jabir bin ‘Abdullah said: “The Messenger of Allah (ﷺ) said: ‘I have been given five things that were not given to anyone before me:I have been supported with fear being struck into the hearts of my enemy for a distance of one month’s travel; the earth has been made a place of prostration and a means of purification for me, so wherever a man of my Ummah is when the time for prayer comes, let him pray; I have been given the intercession which was not given to any Prophet before me; and I have been sent to all of mankind whereas the Prophets before me were sent to their own people.” (৪)
এই বিষয়ে নসরুল বারী [105] অর্থাৎ সহিহ বুখারী হাদিসের ব্যাখ্যা গ্রন্থে বলা রয়েছে,
একইসাথে, নবী মুহাম্মদ বলেছেন, তরবারির ছায়া তলে জান্নাত।
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৫৬/ জিহাদ ও যুদ্ধকালীন আচার ব্যবহার
পরিচ্ছদঃ ৫৬/২২. জান্নাত হল তলোয়ারের ঝলকানির তলে।
মুগীরাহ ইবনু শু‘বা (রাঃ) বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের জানিয়েছেন, আমাদেও প্রতিপালকের পয়গাম। আমাদের মধ্যে যে শহীদ হলো সে জান্নাতে পৌঁছে গেল।
‘উমার (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলেন, আমাদের শহীদগণ জান্নাতবাসী আর তাদের নিহতরা কি জাহান্নামবাসী নয়? আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, হ্যাঁ।
২৮১৮. ‘উমার ইবনু ‘উবায়দুল্লাহ্ (রহ.)-এর আযাদকৃত গোলাম ও তার কাতিব সালিম আবূন নাযর (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) তাঁকে লিখেছিলেন যে, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমরা জেনে রাখ, তরবারির ছায়া-তলেই জান্নাত।
উয়াইসী (রহ.) ইবনু আবূ যিনাদ (রহ.)-এর মাধ্যমে মূসা ইবনু ‘উকবাহ (রহ.) থেকে হাদীস বর্ণনার ব্যাপারে মু‘আবিয়াহ ইবনু ‘আমর (রহ.) আবূ ইসহাক (রহ.)-এর মাধ্যমে মূসা ইবনু ‘উকবাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসের অনুসরণ করেছেন। (২৮৩৩, ২৯৬৬, ৩০২৪, ৭২৩৭) (মুসলিম ৩২/৬ হাঃ ১৭৪২, আহমাদ ১৯১৩৬) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৬০৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৬২০)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
নবীর পেশা কি ছিল?
নবী মুহাম্মদ কোন রাখঢাক না করে খুব সরাসরিই বলে দিয়েছেন, নবীর জীবিকা ছিল বর্শার ছায়াতলে। অর্থাৎ তিনি ব্যাবসা বাণিজ্য, শিক্ষাদীক্ষার প্রচার প্রসার, চাকরিবাকরি করে নিজের জীবন অতিবাহিত করতেন না। তিনি যুদ্ধ এবং যুদ্ধের মাধ্যমে প্রাপ্ত গনিমতের মাল থেকেই জীবিকা নির্বাহ করতেন। তার পেশাই ছিল যুদ্ধ করা এবং কাফেরদের মালামাল লুট করা। [106] –
হাদীস সম্ভার
২০/ (আল্লাহর পথে) জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ জিহাদ ওয়াজেব এবং তাতে সকাল-সন্ধ্যার মাহাত্ম্য
(১৯০০) ইবনে উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি (কিয়ামতের পূর্বে) তরবারি-সহ প্রেরিত হয়েছি, যাতে শরীকবিহীনভাবে আল্লাহর ইবাদত হয়। আমার জীবিকা রাখা হয়েছে আমার বর্শার ছায়াতলে। অপমান ও লাঞ্ছনা রাখা হয়েছে আমার আদেশের বিরোধীদের জন্য। আর যে ব্যক্তি যে জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, সে তাদেরই দলভুক্ত।
(আহমাদ ৫১১৪-৫১১৫, ৫৬৬৭, শুআবুল ঈমান ৯৮, সহীহুল জামে’ ২৮৩১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ)
লুটপাটের মাধ্যমে ধনী হয়েছিলেন নবী
নবী মুহাম্মদ ছিলেন নিঃস্ব, যিনি ভেড়া আর উট চড়াতেন। তার কোন পেশাও ছিল না। ১১ জন বিবি লালন পালন এবং একটি হেরেমখানা ভর্তি দাসী বাঁদীর খরচা চালাবার মত ব্যবসা বাণিজ্য কিংবা কোন আয় উপার্জনের বন্দোবস্তোও নবীর ছিল না। নবীর আয়ের প্রধান উৎস ছিল কাফেরদের আক্রমণ করে তাদের মালামাল লুট করে তার থেকে ভাগ নেয়া। অনেক মুমিনই আজকাল বলার চেষ্টা করেন, নবী খুবই দরিদ্র ছিল, এমনকি দুই বেলা খেতেও পেতেন না। প্রশ্ন হচ্ছে, এত দরিদ্র নবী তাহলে গণ্ডায় গণ্ডায় বিয়ে করতেন, দাসীও রাখতেন, হেরেমে রক্ষিতা ভর্তি করতেন, এত নারীর চালাবার জন্য অর্থ কী আসমান থেকে নাজিল হতো, নাকি কাফেরদের কতল করে তাদের বিষয় সম্পত্তি লুটের মাল থেকে? কোরআনেই বলা আছে, [107] –
তিনি আপনাকে পেয়েছেন নিঃস্ব, অতঃপর অভাবমুক্ত করেছেন।
আপনারা নিশ্চয়ই অনেকেই মদিনা জীবনের প্রথম দিকের ঘটনাবলী সীরাত গ্রন্থগুলো থেকে পড়েছেন। সেসব বিবরণ থেকে জানা যায়, নবীর ঘরে কোন খাবার ছিল না, এমনকি খাদ্যের অভাবে কয়েকদিন চুলায় আগুনই জ্বালাবার মত পরিস্থিতি আসেনি। এগুলো জানার সাথে আরও যা জানা প্রয়োজন তা হচ্ছে, আক্রমণাত্মক জিহাদ পরিচালনা করার পর থেকে নবী কী পরিমাণ লুটপাট করতেন, গনিমতের মাল কাফেরদের থেকে নিয়ে নিতেন। গনিমতের মাল হিসেবে নবী মুহাম্মদ কাফেরদের থেকে কী পরিমাণ লুটপাট করতেন, তার একটি নমুনা হিসেবে একটি হিসেব উল্লেখ করছি। পাঠক লক্ষ্য করুন, একটি যুদ্ধে প্রাপ্ত গনিমতের মালের পরিমাণ কী হতে পারে। উল্লেখ্য, এরকম যুদ্ধ নবী অনেকগুলো চালিয়েছেন [108]
লুটের মালের ২০% ভাগ নিতেন নবী
সূরা আনফাল অর্থ হচ্ছে, যুদ্ধে লুট করা মাল। এই লুটের মাল নামক সূরাতে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, লুটের মালের এক পঞ্চমাংশ নেবে নবী মুহাম্মদ। [109] –
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৫৭/ খুমুস (এক পঞ্চমাংশ)
পরিচ্ছেদঃ ৫৭/৭. আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ ‘‘নিশ্চয় এক পঞ্চমাংশ আল্লাহর ও রসূলের’’ (আনফাল ৪১)। তা বণ্টনের অধিকার রসূলেরই। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি বণ্টনকারী ও সংরক্ষণকারী আর আল্লাহ তা‘আলাই প্রদান করেন।
৩১১৭. আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমি তোমাদের দানও করি না এবং তোমাদের বঞ্চিতও করি না। আমি তো মাত্র বণ্টনকারী, যেভাবে নির্দেশিত হই, সেভাবে ব্যয় করি।’ (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৮৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৮৯৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
জোরপূর্বক ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করতেন নবী
ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করতেন নবী মুহাম্মদ। যার অসংখ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। কয়েকটি এখানে উল্লেখ করা হচ্ছে।
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৮৫/ কুরআন ও সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে ধারন
পরিচ্ছেদঃ ৩০৯২. মহান আল্লাহর বাণীঃ মানুষ অধিকাংশ ব্যাপারেই বিতর্কপ্রিয় (১৮ঃ ৫৪)। মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমরা কিতাবীদের সাথে বিতর্ক করবে না………. (২৯ঃ ৪৬)
৬৮৪৭। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা মসজিদে নববীতে ছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদ থেকে বের হয়ে আমাদেরকে বললেনঃ তোমরা চলো ইহুদীদের সেখানে যাই। আমরা তাঁর সঙ্গে বেরিয়ে এলাম। অবশেষে আমরা বায়তুল মিদরাসে (তাদের শিক্ষাগারে) পৌছলাম। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে দাঁড়িয়ে তাদেরকে লক্ষ্য করে বললেনঃ হে ইহুদী সম্প্রদায়! তোমরা ইসলাম কবুল কর, এতে তোমরা নিরাপদে থাকবে। ইহুদীরা বলল, হে আবূল কাসিম! আপনার পৌছানোর দায়িত্ব আপনি পালন করেছেন। এরপর তিনি বললেনঃ আমার ইচ্ছা তোমরা ইসলাম কবুল কর এবং শান্তিতে থাক। তারাও আবার বলল, হে আবূল কাসিম! আপনার পৌছানোর দায়িত্ব আপনি পালন করেছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বললেনঃ আমি এরূপই ইচ্ছা রাখি। তৃতীয়বারেও তিনি তাই বললেন। পরিশেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ জেনে রেখো, যমীন একমাত্র আল্লাহ ও তার রাসুলের। আমি তোমাদেরকে এই এলাকা থেকে উচ্ছেদ করে দিতে চাই। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যাদের অস্থাবর সম্পত্তি আছে, তা যেন সে বিক্রি করে দেয়। অন্যথায় জেনে রেখো যমীন আল্লাহ ও তার রাসুলের।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
আল্লামা আলবানী একাডেমী
অধ্যায়ঃ ১৪/ কর, ফাই ও প্রশাসক
হাদিস নাম্বার: 3003
৩০০৩। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আমরা মাসজিদে উপস্থিত ছিলাম, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে বেরিয়ে এসে বললেনঃ ইয়াহুদীদের এলাকায় চলো। ‘আমরা তাঁর সাথে বের য়ে সেখানে গিয়ে পৌঁছলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে তাদেরকে ডেকে বললেনঃ হে ইয়াহুদী সম্প্রদায়! তোমরা ইসলাম কবূল করো শান্তিতে থাকবে। তারা বললো, হে আবুল কাসিম! আপনি পৌঁছে দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে আবার বললেনঃ তোমরা ইসলাম কবূল করো, নিরাপত্তা পাবে। তারা বললো, হে আবুল কাসিম! আপনি পৌঁছে দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বললেনঃ এ দাওয়াত পৌঁছে দেয়াই আমার উদ্দেশ্য ছিলো। তৃতীয় বারও তিনি একই কথার পুনরাবৃত্তি করে বললেনঃ জেনে রাখো! এ ভুখন্ডের মালিকানা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের। আমি তোমাদের এ ভূখন্ড থেকে বিতাড়িত করতে চাই। সুতরাং তোমরা কোনো জিনিস বিক্রি করতে সক্ষম হলে বিক্রি করো। অন্যথায় জেনে রাখো! এ ভূখন্ডের মালিক আল্লাহ ও তাঁর রাসূল।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
নিষ্ঠুর এবং শারীরিক নির্যাতনকারী
সভ্য সমাজে যে কোনো ধরনের অপরাধের শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে নৈতিকতা ও মানবাধিকারের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়, এমনকি অপরাধী যত বড় অপরাধীই হোক না কেন। শারীরিক নির্যাতনকে নৈতিক বা গ্রহণযোগ্য শাস্তি হিসেবে গণ্য করা হয় না, বরং অপরাধীর অপরাধের মাত্রার ওপর ভিত্তি করে তাকে জেল প্রদান, জরিমানা, বা সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হয়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো অপরাধীকে কঠোর শাস্তি প্রদান নয়, বরং তার পুনর্বাসনের মাধ্যমে সংশোধন করে সমাজে পুনরায় সঠিকভাবে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। কিন্তু নবী মুহাম্মদ এর সময়ে শাস্তির ধরন ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন, যেখানে অপরাধীদের শারীরিক নির্যাতন, এমনকি নির্মমভাবে হত্যা করাও শাস্তির অংশ ছিল। বর্ণনামতে, তিনি চোখ উপড়ে ফেলা, উত্তপ্ত লোহার শলাকা দিয়ে তাদের চোখে আঘাত করা এবং মৃত্যুর সময় পানি না দেওয়ার মতো বর্বর শাস্তির আদেশও দিতেন। যদিও প্রাচীন যুগে অনেক শাসকই এরকম নির্মমতা প্রদর্শন করেছেন, তারা কখনোই সর্বকালের আদর্শ মহামানব হিসেবে বিবেচিত হননি। কিন্তু ইসলামে নবী মুহাম্মদকে সর্বোচ্চ নৈতিক আদর্শ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা তার বর্বরতা ও অত্যাচারের ইতিহাসের সাথে সাংঘর্ষিক। এজন্য, এই ধরনের শাস্তি প্রথা ও নির্যাতনকে আধুনিক সমাজে নৈতিকতার মানদণ্ডে বিচার করলে তা এক ধরনের বর্বরতার উদাহরণ হিসেবেই প্রতীয়মান হয় [110] [111] [112] [113] –
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৭৬/ চিকিৎসা
পরিচ্ছেদঃ ৭৬/৫. উটের দুধের সাহায্যে চিকিৎসা।
৫৬৮৫. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। কতক লোক রোগে আক্রান্ত হয়েছিল, তারা বললঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের আশ্রয় দিন এবং আমাদের খাদ্য দিন। অতঃপর যখন তারা সুস্থ হল, তখন তারা বললঃ মদিনা’র বায়ু ও আবহাওয়া অনুকূল নয়। তখন তিনি তাদেরকে তাঁর কতগুলো উট নিয়ে ’হাররা’ নামক জায়গায় থাকতে দিলেন। এরপর তিনি বললেনঃ তোমরা এগুলোর দুধ পান কর। যখন তারা আরোগ্য হল তখন তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর রাখালকে হত্যা করে ফেলল এবং তাঁর উটগুলোকে হাঁকিয়ে নিয়ে চলল। তিনি তাদের পশ্চাতে ধাওয়াকারীদের পাঠালেন। এরপর তিনি তাদের হাত পা কেটে দেন এবং তাদের চক্ষুগুলোকে ফুঁড়ে দেন। বর্ণনাকারী বলেনঃ আমি তাদের এক ব্যক্তিকে দেখেছি। সে নিজের জিভ দিয়ে মাটি কামড়াতে থাকে, অবশেষে মারা যায়। [২৩৩]
বর্ণনাকারী সাল্লাম বলেনঃ আমার নিকট সংবাদ পৌঁছেছে যে, হাজ্জাজ ইবনু ইউসুফ আনাস (রাঃ)-কে বলেছিলেন, আপনি আমাকে সবচেয়ে কঠোর শাস্তি সম্পর্কে বলুন, যেটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দিয়েছিলেন। তখন তিনি এ হাদীসটি বর্ণনা করেন। এ খবর হাসান বসরীর কাছে পৌঁছলে তিনি বলেছিলেনঃ যদি তিনি এ হাদীস বর্ণনা না করতেন তবে আমার মতে সেটাই ভাল ছিল। (আধুনিক প্রকাশনী- ৫২৭৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৭০)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬ঃ কিসাস (প্রতিশোধ)
পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ – মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৩৯-(৭) আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ‘উকল সম্প্রদায়ের কিছু লোক উপস্থিত হলো। অতঃপর তারা ইসলাম গ্রহণ করল। কিন্তু মাদীনার আবহাওয়া তাদের জন্য অনুপযোগী হলো। অতএব তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে সাদাকার উটনীর নিকট গিয়ে তার দুধ ও প্রস্রাব পানের নির্দেশ দিলেন। ফলে তারা নির্দেশ পালনার্থে সুস্থ হয়ে উঠল। কিন্তু তারা সুস্থ হয়ে মুরতাদ হয়ে গেল এবং তারা রাখালদেরকে হত্যা করে উটগুলো হাঁকিয়ে নিল। তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এ সংবাদ শুনে) তাদের পেছনে লোক পাঠালেন। অতঃপর তাদেরকে ধরে আনা হলে তাদের দু’ হাত ও দু’ পা কেটে ফেললেন এবং তাদের চোখ ফুঁড়ে দিলেন, তারপর তাদের রক্তক্ষরণস্থলে দাগালেন না, যাতে তারা মৃত্যুবরণ করে।
অপর বর্ণনাতে রয়েছে, লোকেরা তাদের চোখে লৌহ শলাকা দিয়ে মুছে দিল। অন্য বর্ণনাতে আছে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) লৌহ শলাকা আনার হুকুম করলেন, যাকে গরম করা হলো এবং তাদের চোখের উপর মুছে দেয়া হলো। অতঃপর তাদেরকে উত্তপ্ত মাটিতে ফেলে রাখলেন। তারা পানি চাইল কিন্তু তাদেরকে পানি পান করানো হয়নি। পরিশেষে তারা এ করুণ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করল। (বুখারী ও মুসলিম)(1)
(1) সহীহ : বুখারী ৩০১৮, ৬৮০২, মুসলিম ১৬৭১, আবূ দাঊদ ৪৩৬৪, নাসায়ী ৪০২৫, ইবনু মাজাহ ২৫৭৮, আহমাদ ১২৬৩৯।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ২৯/ ‘কাসামা’-(খুনের ব্যাপারে বিশেষ ধরনের হলফ করা), ‘মুহারিবীন’ (শত্রু সৈন্য), ‘কিসাস’ (খুনের বদলা) এবং ‘দিয়াত’ (খুনের শাস্তি স্বরূপ অর্থদন্ড)
পরিচ্ছেদঃ ২. শত্রু সৈন্য এবং মুরতাদের বিচার
৪২০৭। আবূ জাফর মুহাম্মাদ ইবনু সাব্বাহ ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, “উকল” গোত্রের আট জনের একটি দল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আগমন করল। অতঃপর তারা ইসলামের ওপর বাইআত গ্রহণ করল। কিন্তু সেখানকার আবহাওয়া তাদের অনুকুলে না হওয়ায় তাদের শরীর অসুস্থ হায় গেল। তখন তারা এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আভিযোগ করল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা কি আমাদের রাখালের সাথে-গমন করে উটের মূত্র ব্যবহার এবং দুধ পান করতে পারবে? তখন তারা বলল, জী হ্যাঁ। এরপর বের হয়ে গেল এবং তার মূত্র ব্যবহার ও দুধ পান করল। এতে তারা সুস্থ হয়ে গেল।
অতঃপর তারা রাখালকে হত্যা করল এবং উটগুলো তাড়িয়ে নিয়ে গেল। এই সংবাদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পৌঁছল। তিনি তাদের পিছনে লোক পাঠালেন। তাঁরা ধরা পড়ল এবং তাদেরকে নিয়ে আসা হল। তাদের প্রতি আদেশ জারি করা হল এবং তাদের হাত-পা কর্তন করা হল এবং তপ্ত লৌহ শলাকা চোখে প্রবেশ করানো হলো। এরপর তাদেরকে রৌদ্রে নিক্ষেপ করা হলো। অবশেষে তারা মারা গেল।
ইবন সাব্বাহ (রহঃ) … এর বর্ণনা وَطَرَدُوا الإِبِل এর স্থলে وَاطَّرَدُوا النَّعَمَ উল্লেখ রয়েছে এবং তার বর্ণনায় وَسُمِّرَتْ أَعْيُنُهُمْ রয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ২৯। কাসামাহ্ (খুন অস্বীকার করলে হলফ নেয়া), মুহারিবীন (লড়াই), কিসাস (খুনের বদলা) এবং দিয়াত (খুনের শাস্তি স্বরূপ জরিমানা)
৪২৪৬-(১০/…) আবূ জাফার মুহাম্মাদ ইবনু সাব্বাহ ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শাইবাহ (রহঃ) ….. আনাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত যে, “উকল” গোত্রের আটজনের একটি দল রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলো। তারা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ইসলামের উপর বাই’আত করল। অতঃপর মাদীনার আবহাওয়া তাদের প্রতিকূল হওয়ায় তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে এ ব্যাপারে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট অভিযোগ করল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা কি আমাদের রাখালের সাথে গমন করে উটের মূত্র এবং দুগ্ধ পান করতে পারবে? তখন তারা বলল, জী- হ্যাঁ। এরপর তারা বের হয়ে গেলে এবং এর (উটের) মূত্র ও দুগ্ধ পান করল। এতে তারা সুস্থ হয়ে গেল্ অতঃপর তারা রাখালকে হত্যা করে উটগুলো হাঁকিয়ে নিয়ে গেলে। এ সংবাদ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পৌছল। তিনি তাদের পিছনে লোক পাঠালেন। তারা তাদেরকে পাকড়াও করে নিয়ে এল। তাদের প্রতি নির্দেশ জারি করা হল। তখন তাদের হাত-পা কৰ্তন করা হল এবং তপ্ত লৌহ শলাকা চোখে প্রবেশ করানো হলা। এরপর তাদেরকে রৌদ্রে নিক্ষেপ করা হলো। অবশেষে তারা মারা গেল।
ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) … বর্ণনা وَطَرَدُوا الإِبِلَ এর স্থলে وَاطَّرَدُوا النَّعَمَ উল্লেখ রয়েছে। রাবী বলেন, অতঃপর তাদের চোখগুলো উপড়ে ফেলা হল। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪২০৭, ইসলামিক সেন্টার ৪২০৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
এবারে আসুন আল্লামা ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রচিত মুখতাসার যাদুল মা’আদ গ্রন্থ থেকে এই বিষয়ক ইসলামিক বিধানটি জেনে নেয়া যাক [114] –
এবারে আসুন তাদেরকে কেন হত্যা করা হয়েছিল, তার সুনির্দিষ্ট কারণটি জেনে নিই, [115]
সুনান আন-নাসায়ী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১/ পবিত্রতা
পরিচ্ছেদঃ ১৯১/ হালাল পশুর প্রস্রাব প্রসঙ্গে
৩০৭। মুহাম্মদ ইবনু ওহাব (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উরায়নাহ গোত্রের কয়েকজন বেদুঈন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত হয়ে ইসলাম কবুল করল। মদিনায় বসবাস তাঁদের জন্য উপযোগী হল না। এমনকি তাঁদের রঙ ফ্যাকাসে হয়ে গেল এবং পেট ফুলে গেল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের স্বীয় দুগ্ধবতী উটের পালের দিকে পালিয়ে দিলেন। আর তাঁদেরকে উহা (দুধ ও প্রস্রাব) পান করার আদেশ দিলেন। এতে তারা সুস্থ হয়ে পড়ল এবং উটের রাখালকে মেরে উটগুলো হাঁকিয়ে নিয়ে গেল। এর পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের খুঁজে আনার জন্য লোক পাঠালেন। তাঁদের ধরে আনা হল তাঁদের হাত পা কেটে দেয়া হল এবং তাঁদের চোখে গরম শলকা ঢুকিয়ে দেয়া হল।
আমিরুল মু’মিনীন আব্দুল মালিক আনাস (রাঃ) এর কাছে এ হাদিস শুনে তার কাছে প্রশ্ন করলেন, এ শাস্তি কি কুফুরের জন্য না পাপের জন্য? তিনি বললেন কুফুরের জন্য। আবূ আবদুর রহমান (ইমাম নাসারী) বলেন, তালহাহ ব্যতীত অন্য কেউ এ হাদিসের সানাদে ইয়াহিয়া আনাস হতে এ কথা উল্লেখ করেছে বলে আমাদের জানা নেই। সঠিক কথা হল, আল্লাহই ভাল জানেন- ইয়াহইয়া সা’ইদ ইবনুল মুসাইয়্যাব হতে মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
গালিদাতাকে নির্মমভাবে হত্যা
আমাদের সমাজে এমন অনেক নারী বা পুরুষকে পাওয়া যায় যারা আমাদের দৃষ্টিতে একটু খারাপ ভাষা ব্যবহার করে। ছোটবেলা আমাদের বাসাতেও একজন কাজের মহিলা ছিলেন, যার মুখের ভাষা ছিল অত্যন্ত বাজে। আসলে এই বিষয়গুলো বেশিরভাগ সময়ই নির্ভর করে একজন মানুষের বেড়ে ওঠা, পারিবারিক শিক্ষা এবং পরিবেশের ওপর। একজন বস্তিবাসী মানুষের কাছ থেকে সভ্য এবং সুন্দর ভাষা আমরা কেউই আশা করি না। আমরা বুঝি যে, উনার পরিবেশ পরিস্থিতি হয়তো এমন ছিল না যে, উনি ভালো ভাষায় কথা বলতে ছোটবেলা থেকেই শিখবেন। কিন্তু আমরা কখনই এরকম অতি সামান্য বিষয়ের কারণে কাউকে শাস্তি দিই না। আমরা গালি পছন্দ করি না, কিন্তু গালি দিলে কাউকে মেরে ফেলি না।
নিচের হাদিসটি লক্ষ্য করুন। হাদিসটিতে একজন অন্ধ ব্যক্তির ক্রীতদাসী, যার পেতে সেই অন্ধ সাহাবী বাচ্চা জন্ম দিয়েছে, তাকে সে খুব নির্মমভাবে হত্যা করে, শুধুমাত্র নবী-কে গালি দেওয়ার কারণে। নবী মুহাম্মদ পরবর্তীতে এই কথা জানতে পেরে খুশী হন, এবং এই হত্যাকাণ্ডকে বৃথা বলে উল্লেখ করেন। নবী মুহাম্মদ যে তাকে গালি দেয়া কিংবা তার সমালোচনা করা সকলের প্রতি সীমাহীন পাষণ্ড এবং বর্বর ছিলেন, এই হাদিসটি তার জলন্ত প্রমাণ [116] [117] [118] [119] [120] –
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
পাবলিশারঃ আল্লামা আলবানী একাডেমী
অধ্যায়ঃ ৩৩/ অপরাধ ও তার শাস্তি
পরিচ্ছদঃ ২. যে নবী (ﷺ)-কে গালি দেয় তার সম্পর্কিত বিধান
৪৩৬১। ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। জনৈক অন্ধ লোকের একটি উম্মু ওয়ালাদ’ ক্রীতদাসী ছিলো। সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে গালি দিতো এবং তাঁর সম্পর্কে মন্দ কথা বলতো। অন্ধ লোকটি তাকে নিষেধ করা সত্ত্বেও সে বিরত হতো না। সে তাকে ভৎর্সনা করতো; কিন্তু তাতেও সে বিরত হতো না। এক রাতে সে যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে গালি দিতে শুরু করলো এবং তাঁর সম্পর্কে মন্দ কথা বলতে লাগলো, সে একটি একটি ধারালো ছোরা নিয়ে তার পেটে ঢুকিয়ে তাতে চাপ দিয়ে তাকে হত্যা করলো। তার দু’ পায়ের মাঝখানে একটি শিশু পতিত হয়ে রক্তে রঞ্জিত হলো। ভোরবেলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘটনাটি অবহিত হয়ে লোকজনকে সমবেত করে বলেনঃ আমি আল্লাহর কসম করে বলছিঃ যে ব্যক্তি একাজ করেছে, সে যদি না দাঁড়ায় তবে তার উপর আমার অধিকার আছে।
একথা শুনে অন্ধ লোকটি মানুষের ভিড় ঠেলে কাঁপতে কাঁপতে সামনে অগ্রসর হয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে এসে বসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমি সেই নিহত দাসীর মনিব। সে আপনাকে গালাগালি করতো এবং আপনার সম্পর্কে অপমানজনক কথা বলতো। আমি নিষেধ করতাম; কিন্তু সে বিরত হতো না। আমি তাকে ধমক দিতাম; কিন্তু সে তাতেও বিরত হতো না। তার গর্ভজাত মুক্তার মতো আমার দু’টি ছেলে আছে, আর সে আমার খুব প্রিয়পাত্রী ছিলো। গত রাতে সে আপনাকে গালাগালি শুরু করে এবং আপনার সম্পর্কে অপমানজনক কথা বললে, আমি তখন একটি ধারালো ছুরি নিয়ে তার পেটে স্থাপন করে তাতে চাপ দিয়ে তাকে হত্যা করে ফেলি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমরা সাক্ষী থাকো, তার রক্ত বৃথা গেলো।(1)
সহীহ।
(1). নাসায়ী।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সুনান আবূ দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৩৩/ শাস্তির বিধান
পরিচ্ছেদঃ ২. নবী (ﷺ) এর মর্যাদাহানিকারী ব্যক্তির শাস্তি সম্পর্কে।
৪৩১০. আব্বাদ ইব্ন মূসা (রহঃ) …. ইব্ন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কোন এক অন্ধ ব্যক্তির একটি দাসী ছিল। সে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শানে বেয়াদবিসূচক কথাবার্তা বলতো। সে অন্ধ ব্যক্তি তাকে এরূপ করতে নিষেধ করতো, কিন্তু সে তা মানতো না। সে ব্যক্তি তাকে ধমকাতো, তবু সে তা থেকে বিরত হতো না। এমতাবস্থায় এক রাতে যখন সে দাসী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শানে অমর্যাদাকর কথাবার্তা বলতে থাকে, তখন ঐ অন্ধ ব্যক্তি একটি ছোরা নিয়ে তার পেটে প্রচন্ড আঘাত করে, যার ফলে সে দাসী মারা যায়। এ সময় তার এক ছেলে তার পায়ের উপর এসে পড়ে, আর সে যেখানে বসে ছিল, সে স্থানটি রক্তাপ্লুত হয়ে যায়।
পরদিন সকালে এ ব্যাপারে যখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আলোচনা হয়, তখন তিনি সকলকে একত্রিত করে বলেনঃ আমি আল্লাহ্র নামে শপথ করে এ ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে জানতে চাই এবং ইহা তার জন্য আমার হক স্বরূপ। তাই, যে ব্যক্তি তাকে হত্যা করেছে, সে যেন দাঁড়িয়ে যায়। সে সময় অন্ধ লোকটি লোকদের সারি ভেদ করে প্রকম্পিত অবস্থায় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে গিয়ে বসে পড়ে এবং বলেঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি তার হন্তা।
সে আপনার সম্পর্কে কটুক্তি ও গালি-গালাজ করতো। আমি তাকে এরূপ করতে নিষেধ করতাম ও ধমকাতাম। কিন্তু সে তার প্রতি কর্ণপাত করতো না। ঐ দাসী থেকে আমার দু’টি সন্তান আছে, যারা মনি-মুক্তা সদৃশ এবং সেও আমার প্রিয় ছিল। কিন্তু গত রাতে সে যখন পুনরায় আপনার সম্পর্কে কটুক্তি গাল-মন্দ করতে থাকে, তখন আমি আমার উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি এবং ছোরা দিয়ে তার পেটে প্রচন্ড আঘাত করে তাকে হত্যা করি। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমরা সাক্ষী থাক যে, ঐ দাসীর রক্ত ক্ষতিপূরণের অযোগ্য বা মূল্যহীন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ)
বুলুগুল মারাম
পর্ব – ৯ঃ অপরাধ প্রসঙ্গ
পরিচ্ছেদঃ ৪. সম্পদ রক্ষার্থে নিহত হওয়া ব্যক্তি প্রসঙ্গে – নাবী (ﷺ) এর নিন্দাকারীদেরকে হত্যা করা আবশ্যক
১২০৪। ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত; কোন এক অন্ধ সাহাবীর একটা সন্তানের মাতা দাসী ছিল, সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে গালি দিত এবং তাঁর প্রসঙ্গে অশোভনীয় মন্তব্য করত। সাহাবী তাকে নিষেধ করতেন কিন্তু সে বিরত হত না। এক রাত্রে অন্ধ সাহাবী (তার এরূপ দুব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে) কুড়ালি জাতীয় এক অস্ত্র দিয়ে ঐ দাসীর পেটে বাসিয়ে দেন ও তার উপর বসে যান ও তাকে হত্যা করে ফেললেন। এ সংবাদ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে পৌছালে তিনি বলেন: তোমরা সাক্ষী থাক, এ খুন বাতিল এ জন্য কোন খেসারত দিতে হবে না।[1]
[1] আবূ দাউদ ৪৩৬১, নাসায়ী ৪০৭০।
ইকরিমাহ (রহঃ) হতে। তিনি বলেন, ‘আলী (রাঃ)-এর কাছে একদল ফিন্দীককে (নাস্তিক ও ধর্মত্যাগীকে) আনা হল। তিনি তাদেরকে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিলেন। এ ঘটনা ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে পৌছলে তিনি বললেন, আমি কিন্তু তাদেরকে পুড়িয়ে ফেলতাম না। কেননা, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিষেধাজ্ঞা আছে যে, তোমরা আল্লাহর শাস্তি দ্বারা শাস্তি দিও না। বরং আমি তাদেরকে হত্যা করতাম। কারণ, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নির্দেশ আছে ……………. অতঃপর উপরোক্ত হাদীসটি বর্ণনা করলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ)
সুনান আন-নাসায়ী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৩৮/ হত্যা অবৈধ হওয়া
পরিচ্ছেদঃ ১৬. রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে মন্দ বলার শাস্তি
৪০৭১. উসমান ইবন আবদুল্লাহ (রহঃ) … উসমান শাহহাম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এক অন্ধ লোকের চালক ছিলাম। একদা তাকে নিয়ে ইকরিমার কাছে গেলাম। তিনি আমাদের কাছে বর্ণনা করলেন যে, ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় এক অন্ধ লোক ছিল। তার এক দাসী ছিল, যার গর্ভে তার দুই ছেলে জন্মে। সে দাসী সর্বদাই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা উল্লেখ করে তাঁকে মন্দ বলতো। অন্ধ ব্যক্তিটি তাকে এজন্য তিরস্কার করতো, কিন্তু সে তাতে কর্ণপাত করত না। তাকে নিষেধ করত, কিন্তু তবুও বিরত হত না। অন্ধ লোকটি বলেন, একরাত্রে আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা উল্লেখ করলে সে তার নিন্দা করতে শুরু করল। আমার তা সহ্য না হওয়ায় আমি একটি হাতিয়ার নিয়ে তার পেটে বিদ্ধ করলাম। তাতে সে মারা গেল।
ভোরে লোক তাকে মৃতাবস্থায় দেখে ব্যাপারটি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে জানাল। তিনি সকল লোককে একত্র করে বললেনঃ আমি আল্লাহর কসম দিয়ে ঐ ব্যক্তিকে বলছি, যে এমন কাজ করেছে সে আসুক। একথা শুনে ঐ অন্ধ ব্যক্তি ভয়ে উঠে এসে হাযির হলেন এবং বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি এই কাজ করেছি। সে আমার বাদী ছিল, আমার অত্যন্ত স্নেহশীলা ছিল, সঙ্গিণী ছিল। তার গর্ভের আমার দুটি ছেলে রয়েছে, যারা মুক্তাসদৃশ। কিন্তু সে প্রায় আপনাকে মন্দ বলতো, গালি দিত। আমি নিষেধ করলেও সে কর্ণপাত করতো না। তিরস্কার করলেও সে নিবৃত্ত হতো না। অবশেষে গত রাতে আমি আপনার উল্লেখ করলে সে আপনাকে মন্দ বলতে আরম্ভ করল। আমি একটি অস্ত্র উঠিয়ে তার পেটে রেখে চেপে ধরি, তাতে সে মারা যায়। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা সাক্ষী থাক, ঐ দাসীর রক্তের কোন বিনিময় নেই।
তাহক্বীকঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উসমান শাহহাম (রহঃ)
লাশের সাথেও বর্বরতা
একজন মানুষের যখন মৃত্যু হয় এবং সে লাশে পরিণত হয়, তখন তার সাথে কোন ধরণের অমানবিক বা বর্বর আচরণ করা খুবই নিকৃষ্ট মন মানসিকতার কাজ। পৃথিবীর বড় বড় যুদ্ধে বড় বড় বীর যোদ্ধাদের ইতিহাস থেকে জানা যায়, চরমতম শত্রুর সাথে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরেও, শত্রুকে হত্যা করার পরেও যথাযোগ্য মর্যাদায় যোদ্ধারা বিপক্ষের নিহত যোদ্ধাদের লাশ ফেরত দিতেন, অথবা সম্মানের সাথে দাফন করতেন। কারণ লাশের সাথে কারো কোন শত্রুতা থাকে না। বদরের যুদ্ধের পরে নিহত কাফেরদের লাশগুলো নবী মুহাম্মদ এবং তার সঙ্গীরা নোংরা, দুর্গন্ধযুক্ত কূপে নিক্ষেপ করেছিল। তার কারণ হিসেবে বলেছিল, এই কাফেররা মুসলিমদের শত্রু, অপবিত্র এবং ঘৃণিত। এমনকি তাদের লাশের সাথেও হিংস্র আচরণের শিক্ষা দিয়ে গেছেন নবী- [121] [122]
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫১/ মাগাযী (যুদ্ধাভিযান)
পরিচ্ছেদঃ ২১৭০. আবূ জাহলের নিহত হওয়ার ঘটনা
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৩৬৮৯, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৩৯৭৬
৩৬৮৯। ’আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ তালহা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, বদর যুদ্ধের দিন আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশে চব্বিশজন কুরাইশ সর্দারের লাশ বদর প্রান্তরের একটি কদর্য আবর্জনপূর্ণ কূপে নিক্ষেপ করা হল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করলে সে স্থানের উপকন্ঠে তিনদিন অবস্থান করতেন। সে মতে বদর প্রান্তরে অবস্থানের পর তৃতীয় দিন তিনি তাঁর সাওয়ারী প্রস্তুত করার আদেশ দিলেন, সাওয়ারী জ্বীন কষে বাঁধা হল। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পদব্রজে (কিছু দূর) এগিয়ে গেলেন। সাহাবাগণও তাঁর পেছনে পেছনে চলেছেন।
তারা বলেন, আমরা মনে করেছিলাম, কোন প্রয়োজনে (হয়ত) তিনি কোথাও যাচ্ছেন। অবশেষে তিনি ঐ কূপের কিনারে গিয়ে দাঁড়ালেন এবং কূঁপে নিক্ষিপ্ত ঐ নিহত ব্যাক্তিদের নাম ও তাদের পিতার নাম ধরে এভাবে ডাকতে শুরু করলেন, হে অমুকের পুত্র অমুক, হে অমুকের পুত্র অমুক! তোমরা কি এখন অনুভব করতে পারছ যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য তোমাদের জন্য পরম খুশীর বস্তু ছিল? আমাদের প্রতিপালক আমাদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আমরা তো তা সত্য পেয়েছি, তোমাদের প্রতিপালক তোমাদেরকে যা বলেছিলেন তোমরাও তা সত্য পেয়েছ কি? বর্ণনাকারী বলেন, (এ কথা শুনে) ’উমর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি আত্মাহীন দেহগুলোকে সম্বোধন করে কি কথা বলছেন?
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ঐ মহান সত্তার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মদের প্রাণ, আমি যা বলছি তা তাদের তুলনায় তোমরা অধিক শ্রবণ করছ না। কাতাদা বলেন, আল্লাহ তাঁর (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা শোনাতে) তাদের ধমকি, লাঞ্ছনা, দুঃখ-কষ্ট, আফসোস এবং লজ্জা দেওয়ার জন্য (সাময়িকভাবে) দেহে প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ ত্বলহা (রাঃ)
একই বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে সীরাতুল মুস্তফা গ্রন্থেও [123]। বিবরণটির উপরের অংশটিও পড়ুন, সেখানে আবূ হুযায়ফার পিতার লাশ দেখে তার মুখে দুঃখের ভাবের দিকেও লক্ষ্য করুন। জন্মদাতা প্রিয় পিতার লাশটিও কাফের হওয়ার জন্য সম্মানের যোগ্য নয়।
দাস প্রথার সমর্থক ছিলেন নবী
দাসদের মনিবের গোলামি করতে বলেছেন নবী
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৪১/ গোলাম আযাদ করা
পরিচ্ছেদঃ ১৬০০. গোলাম আপন মনিবের সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণকারী। নবী (ﷺ) সম্পদকে মনিবের সাথে সম্পর্কিত করেছেন।
২৩৮৯। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের প্রত্যেকে দায়িত্বশীল এবং নিজ অধীনস্থদের বিষয়ে সে জিজ্ঞাসিত হবে। ইমাম (শাসক) একজন দায়িত্বশীল। কাজেই আপন অধীনস্থদের বিষয়ে সে জিজ্ঞাসিত হবে। একজন পুরুষ তার পরিবারের দায়িত্বশীল। কাজেই সে তার অধীনস্থদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী তার স্বামীর ঘরের দায়িত্বশীল। কাজেই সে তার অধীনস্থদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে, আর খাদিম তার মনিবের সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণকারী, কাজেই সে তার দায়িত্বাধীন বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে।
আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এদের সম্পর্কে (নিশ্চিতভাবেই) শুনেছি। তবে আমার ধারণা; নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন, আর সন্তান তার পিতার সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণকারী। কাজেই তার দায়িত্বাধীন বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। মোটকথা তোমাদের প্রত্যেকে দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই তার অধীনস্থদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইব্ন উমর (রাঃ)
দাসদের পালানো নিষিদ্ধ
নবী মুহাম্মদ দাসদের পালিয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ করেছেন। ইমাম আবু বাক্র আহমাদ ইবনুল হুসাইন ইবনু আলী বাইহাকীর শু’আবুল ঈমান গ্রন্থে সহিহ হাদিসের রেফারেন্সে বলা হয়েছে, [124]
দাসকে প্রহার করায় হেসেছিলেন নবী
ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র মুহাম্মদের পরে ইসলামি সাম্রাজ্যের খলিফা আবু বকরের একজন দাস একটি উট হারিয়ে ফেলায় আবু বকর তাকে প্রহার করছিলেন, সেই দৃশ্য দেখে নবী মুহাম্মদ হাসছিলেন বলে হাদিস গ্রন্থ থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় [125]
সূনান আবু দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫/ হাজ্জ
পরিচ্ছেদঃ ২৮. ইহরা্ম অবস্থায় কোনো ব্যক্তি নিজ গোলামকে প্রহার করলে।
১৮১৮. আহমাদ ইবন হাম্বল (রহঃ) …… আসমা বিনত আবূ বাকর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা (বিদায় হজ্জের সময়) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে হজ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। আমরা আরাজ নামক স্থানে উপনীত হলে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বাহন থেকে অবতরণ করলেন এবং আমরাও অবতরণ করলাম। আয়েশা (রাঃ) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পার্শ্বে উপবেশন করেন এবং আমি আমার পিতা (আবূ বাকর) এর পার্শ্বে উপবেশন করি। আবূ বাকর (রাঃ) ও রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খাদ্য পানীয় ও সফরের সরঞ্জাম একই সংগে আবূ বাকরের একটি গোলামের নিকট (একটি উষ্ট্রের পৃষ্ঠে) রক্ষিত ছিল।
আবূ বাকর (রাঃ) গোলামের অপেক্ষায় ছিলেন (যেন খাদ্য-পানীয় গ্রহণ করা যায়)। কিন্তু সে এমন অবস্থায় উপস্থিত হল যে, সে উট তার সাথে ছিল না। তিনি (আবূ বাকর) জিজ্ঞাসা করেন, তোমার সে উটটি কোথায়? জবাবে সে বলল, আমি গতকাল তাকে হারিয়ে ফেলেছি। আবূ বাকর (রাঃ) বলেন, মাত্র একটি উট, তুমি তাও হারিয়ে ফেললে? রাবী বলেন, তখন তিনি তাকে মারধর করেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুচকি হেসে বলেনঃ তোমরা এ মুহরিম ব্যক্তির দিকে দেখ, কী করছে। রাবী ইবন আবূ রিয্মা বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ উক্তির চাইতে অধিক কিছু বলেননি যে, ‘তোমরা এ মুহরিম ব্যক্তির দিকে দেখ কী কাজ করছে, আর তিনি মুচকি হাসছিলেন।
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ আসমা বিনতু আবূ বাকর (রাঃ)
হাদিয়া হিসেবে দাস নিতেন নবী
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৮৩/ শপথ ও মানত
পরিচ্ছেদঃ ৮৩/৩৩. কসম ও মানতের মধ্যে ভূমি, বক্রী, কৃষি ও আসবাবপত্র শামিল হয় কি?
এবং ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর হাদীস। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে একবার উমর (রাঃ) আরয করলেন যে, আমি এমন এক টুকরো জমি পেয়েছি যার চেয়ে উৎকৃষ্ট কোন মাল কক্ষনো পাইনি। তিনি বললেনঃ তুমি যদি চাও তবে তার মূল স্বত্ব রেখে তার (উৎপাদন) দান করে দিতে পার। আবু ত্বলহা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আরয করেছিলেন, আমার কাছে বায়রুহা নামক আমার বাগানটি সর্বাধিক প্রিয়, যার দেয়ালটি মসজিদে নববীর সম্মুখে অবস্থিত।
৬৭০৭. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে খায়বারের যুদ্ধের দিন বের হলাম। আমরা মাল, আসবাবপত্র ও কাপড়-চোপড় ছাড়া সোনা বা রুপা গণীমত হিসাবে পাইনি। যুবায়র গোত্রের রিফাআ ইবনু যায়দ নামক এক লোক রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একটি গোলাম হাদিয়া দিলেন, যার নাম ছিল মিদ‘আম। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়াদি উল কুরার দিকে রওয়ানা হলেন। তিনি যখন ওয়াদিউল কুরায় পৌঁছলেন, তখন মিদ‘আম রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সওয়ারীর হাওদা থেকে মালপত্র নামাচ্ছিলেন। তখন হঠাৎ একটি তীর এসে তার গায়ে বিঁধল এবং তাতে সে মারা গেল।
লোকেরা বলল, সে জান্নাত লাভ করুক। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন কক্ষনো না, কসম ঐ সত্তার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! খায়বারের যুদ্ধের দিন গনীমতের মাল থেকে বণ্টনের পূর্বে যে চাদরটি সে নিয়ে গিয়েছিল তার গায়ে তা আগুনের শিখা হয়ে জ্বলবে। যখন লোকেরা এটা শুনল, তখন এক লোক একটি বা দু’টি ফিতা নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে হাযির হল। তখন তিনি বললেনঃ এ হচ্ছে জাহান্নামের একটি ফিতা বা জাহান্নামের দু’টি ফিতা।(1) (৪২৩৪) (আধুনিক প্রকাশনী- ৬২৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৫০)
(1) সম্পদ আত্মসাৎকারীর ভাগ্যে আছে জাহান্নামের আগুন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
মুক্ত দাসকে পুনরায় দাস বানানো
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
অধ্যায়ঃ ৪১/ গোলাম আযাদ করা
পরিচ্ছেদঃ ১৫৯০. মুদাববার বিক্রি করা।
২৩৬৭। আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাদের একজন তার এক গোলামকে মুদাব্বাররূপে আযাদ ঘোষণা করল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই গোলামকে ডেকে নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দিলেন। জাবির (রাঃ) বলেন, গোলামটি সে বছরই মারা গিয়েছিলো।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ)
Narrated Jabir bin `Abdullah:
A man amongst us declared that his slave would be freed after his death. The Prophet (ﷺ) called for that slave and sold him. The slave died the same year.
সূনান আবু দাউদ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ২৪/ দাস মুক্তি
পরিচ্ছেদঃ ১০. যে ব্যক্তি এক-তৃতীয়াংশের কমে গোলাম আযাদ করে- তার সম্পর্কে।
৩৯২০. মুসাদ্দা (রহঃ) … ইমরান ইবন হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈক ব্যক্তি মৃত্যুকালে তার ছয়টি গোলাম আযাদ করে দেয় এবং এ ছয়টি গোলাম ব্যতীত তার আর কোন সম্পদ ছিল না। এ খবর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পৌঁছলে তিনি গোলামদের মধ্যে লটারীর ব্যবস্থা করেন এবং দু’জনকে আযাদ করেন এবং বাকী চারজনকে গোলামীতে বহাল রাখেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ)
দাস মুক্ত করার চাইতে দান করায় বেশি নেকী
নবী মুহাম্মদ বলেছেন, দাসকে মুক্ত করে দেয়ার চাইতে আত্মীয়স্বজনদেরকে সেই দাসটি দান করে দেয়াতে বেশি নেকী পাওয়া যায়। অর্থাৎ দাসকে মুক্ত করাকে পরোক্ষভাবে নিরুৎসাহিত করেছেন নবী।
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৫১/ হিবা ও এর ফযীলত
পরিচ্ছেদঃ ৫১/১৫. স্বামী আছে এমন নারীর স্বামী ব্যতীত অন্যের জন্য হিবা করা বা দাস মুক্ত করা। নির্বোধ না হলে বৈধ, নির্বোধ হলে অবৈধ।
২৫৯২. মায়মূনাহ বিনতে হারিস (রাঃ) হতে বর্ণিত। নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অনুমতি ব্যতীত তিনি আপন বাঁদীকে মুক্ত করে দিলেন। অতঃপর তার ঘরে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অবস্থানের দিন তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি জানেন না আমি আমার বাঁদী মুক্ত করে দিয়েছি? তিনি বললেন, তুমি কি তা করেছ? মায়মূনাহ (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, শুন! তুমি যদি তোমার মামাদেরকে এটা দান করতে তাহলে তোমার জন্য বেশি নেকির কাজ হত। (২৫৯৪)
অন্য সনদে বাকর ইবনু মুযার (রহ.) —- কুরায়ব (রহ.) হতে বর্ণিত যে, মায়মূনাহ (রাঃ) গোলাম মুক্ত করেছেন। (মুসলিম ১২/১৪, হাঃ ৯৯৯, আহমাদ ২৬৮৮৬) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৪০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৪২১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ মাইমূনাহ (রাঃ)
দাস মুক্তিতেও সাম্প্রদায়িকতা
দাসদের মুক্তির ব্যাপারেও সাম্প্রদায়িক ছিলেন নবী। তিনি বলে গেছেন, ইমানদার মুসলিম দাসদের মুক্তি দিলে সওয়াব রয়েছে।
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
অধ্যায়ঃ ২১/ দাসমুক্তি
পরিচ্ছেদঃ ৪. দাসমুক্তির ফযীলত
৩৬৫৫। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি কোন ঈমানদার ক্রীতদাস মুক্ত করবে আল্লাহ তার (শরীরের) অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিনিময়ে তার (শরীরের) অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবেন- এমনকি তিনি তার (মুক্তদাসের) গুপ্তস্থানের পরিবর্তে তার (মুক্তিকারীর) গুপ্তস্থানও রক্ষা করবেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
দাসের পালিয়ে যাওয়া কুফরি
সহিহ হাদিসের বর্ণনা অনুসারে, কোন ক্রীতদাস যদি মনিবের থেকে পালিয়ে যায়, তাহলে সেটিকে কুফরি হিসেবে গণ্য করা হবে। এর অর্থ হচ্ছে, আল্লাহর সাথে শরীক করা যেমন কুফরি, মনিবের থেকে পালিয়ে যাওয়াও কুফরি, যা ইসলামের দৃষ্টিকে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। দাসপ্রথা যখন প্রচলিত ছিল, তখন অনেক দাসই দাসত্বের এই জীবন সহ্য করতে না পেরে পালিয়ে যেতো বা অন্তত পালাবার চেষ্টা করতো। কিন্তু দাসদের এই পালিয়ে যাওয়াকে সর্বোচ্চ অপরাধ হিসেবেই চিহ্নিত করেছে ইসলাম, এবং তার মাধ্যমে দাস মালিকদের স্বার্থে দাসদের দাসত্বের শেকলে আবদ্ধ রাখার বন্দোবস্তও করে গেছে।
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১/ কিতাবুল ঈমান
পরিচ্ছেদঃ ৩১. পলাতক দাসকে ‘কাফির’ আখ্যায়িত করা
১৩২। আলী ইবনু হুজর আস সা’দী (রহঃ) … শা’বী (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি জারীর (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, যে দাস তার মনিবের কাছ থেকে পালিয়ে গেল, সে কুফরী করল, যতক্ষন না সে তার প্রভুর কাছে ফিরে আসে। মানসূর বলেন, আল্লাহর কসম! এ হাদীস নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত হয়েছে, কিন্তু এখানে বসরায় আমার থেকে এ হাদীস বর্ণিত হোক তা আমি অপছন্দ করি।*
* কারণ এখানে খারিজী ও মুতাযিলা সম্প্রদায়ের লোক বেশী, যারা এটিকে সত্যিকার অর্থেই কুফরী মনে করে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ শা‘বী (রহঃ)
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১/ কিতাবুল ঈমান
পরিচ্ছেদঃ ৩১. পলাতক দাসকে ‘কাফির’ আখ্যায়িত করা
১৩৩। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে দাস পালিয়ে যায়, তার থেকে (আল্লাহ ও রাসুলের) যিম্মাদারী শেষ হয়ে যায়।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জারীর ইবনু আবদুল্লাহ আল বাজলী (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১/ কিতাবুল ঈমান
পরিচ্ছেদঃ ৩১. পলাতক দাসকে ‘কাফির’ আখ্যায়িত করা
১৩৪। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … জারীর ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন দাস পালিয়ে যায়, তখন তার সালাত (নামায/নামাজ) কবুল হয় না।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জারীর ইবনু আবদুল্লাহ আল বাজলী (রাঃ)
হাদীস সম্ভার
২১/ ক্রীতদাস
পরিচ্ছেদঃ মনিবের ঘর ছেড়ে ক্রীতদাসের পলায়ন নিষিদ্ধ
(২০২৮) উক্ত রাবী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন গোলাম পলায়ন করবে, তখন তার নামায কবুল হবে না।
(মুসলিম ২৩৯) অন্য বর্ণনা মতে, ‘সে কুফরী করবে।’ (ঐ ২৩৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জারীর ইবনু আবদুল্লাহ আল বাজলী (রাঃ)
মানুষ খুন করতেন নবী
নবী মুহাম্মদের গুপ্তহত্যা
ধর্মীয় আদর্শে বা বিশ্বাসের ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তিকে হত্যার আদেশ দেওয়া, সেই আদেশ পালনের মাধ্যমে মানুষকে হত্যা করা, গুপ্তঘাতক পাঠিয়ে রাতের অন্ধকারে খুন করানো —এইরকম ঘটনা শুধু ইতিহাসের ঘনকালো অধ্যায়ই নয়, বরং মানবাধিকার লঙ্ঘনের চরম উদাহরণও। এটি একটি জাতির সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। একটি জাতিসত্তার নৈতিক ভিত্তি কেমন হবে, তার দিকনির্দেশনা দেয়। সমালোচনা বা কটূক্তি বা বিরোধিতা করার জন্য এরকম ঘটনা, বিশেষ করে বিরুদ্ধ মতের মানুষের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা যখন কোনো ধর্মীয় নেতার দ্বারা সংঘটিত হয়, তখন সেটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, কারণ এ ধরনের নেতারা সাধারণত একটি সম্প্রদায় বা জাতির পথপ্রদর্শক, অনুসরণীয় বা অনুকরণীয় জীবনাদর্শ হিসেবে বিবেচিত হন। এই প্রসঙ্গে আরেকটি লেখা পড়া থাকাও আপনাদের জন্য জরুরি, যেখান থেকে জানা যায়, এক অন্ধ সাহাবীর ক্রীতদাসীকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল, যাতে মুহাম্মদের পরিবর্তীতে সন্তুষ্টি এবং সম্মতি ছিল[126]।
গুপ্তহত্যার আদেশঃ ইহুদী সমালোচক কাব ইনবু আশরাফ
সহিহ হাদিস থেকে জানা যায় যে, নবী মুহাম্মদ কা’ব ইবনু আশরাফ নামের একজন ব্যক্তিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন, কারণ তিনি আল্লাহ এবং মুহাম্মদকে কষ্ট দিয়েছিলেন মুহাম্মদের বিরুদ্ধে বিদ্রুপাত্মক কবিতা রচনা করে এবং মুসলিম নারীদের সম্পর্কে কটূক্তি করে। রাষ্ট্রের দৃষ্টিতে বিদ্রুপ বা কটূক্তির জন্য হয়তো কোন সাধারণ শাস্তি হতে পারে, কিন্তু বিচার বহির্ভূতভাবে কাউকে গুপ্তঘাতক পাঠিয়ে খুন করানো ভয়াবহ অমানবিক আচরণ। কারণ, অপরাধের শাস্তি দিতে হলে সেটি আদালতের মাধ্যমে হতে হবে, সঠিক তদন্ত এবং অপরাধীর আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ রেখে সেটি করতে হবে। এই গুপ্তহত্যার আদেশ ধর্মীয় শাস্তি হিসেবে কার্যকর করে সত্যিকার অর্থে ইসলামী শরীয়তে শাতিমে রাসুলের বিধানের ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছে। কারণ ইসলামিক বিচার ব্যবস্থা অনুযায়ী, নবী মুহাম্মদের সামান্য সমালোচনা কেউ করলেই, সাথে সাথে কতল করে দেয়ার মত অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়েছে এই হাদিসগুলোর মাধ্যমেই। যার ফলাফল হিসেবে বচার বহির্ভূত হত্যা বা মব জাস্টিসের মত ঘটনার প্রাদূর্ভাব মুসলিম বিশ্বে অহরহ। দেখা গেছে, কেউ একজন বলল যে, অমুকে নবীকে নিয়ে কটূক্তি করেছে, এমনকি একদল তৌহীদী জনতা এসে সেই ব্যক্তিকে পিটিয়ে মেরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে চলে যাচ্ছে। এরকম উদাহরণ পাকিস্তান ও বাংলাদেশে অসংখ্য, গুনে শেষ করার মত নয়।
আসুন সেই হাদিসগুলো দেখে নেয়া যাক। নিচের হাদিসগুলো থেকে পরিষ্কার যে, সমালোচকদের গুপ্তঘাতক পাঠিয়ে মানুষ হত্যা করাতেন নবী।
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৫৬/ জিহাদ ও যুদ্ধকালীন আচার ব্যবহার
পরিচ্ছদঃ ৫৬/১৫৯. হারবীকে গোপনে হত্যা করা।
৩০৩২. জাবির (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কা’ব ইবনু আশরাফকে হত্যা করার দায়িত্ব কে নিবে?’ তখন মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) বললেন, ‘আপনি কি পছন্দ করেন যে, আমি তাকে হত্যা করি?’ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ। মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) বললেন, ‘তবে আমাকে অনুমতি দিন, আমি যেন তাকে কিছু বলি।’ তিনি বললেন, ‘আমি অনুমতি দিলাম।’ (২৫১০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৮০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৮১৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৬৪/ মাগাযী (যুদ্ধ)
পরিচ্ছদঃ ৬৪/১৫. কা‘ব ইব্নু আশরাফ-এর হত্যা
(কা‘ব ইবনু আশরাফ বনী কুরায়যা গোত্রের একজন কবি ও নেতা ছিল যে বিভিন্ন সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নামে বিদ্রুপাত্মক কথা প্রচার করতো। এমনকি সম্ভ্রান্ত মুসলিমদের স্ত্রী কন্যাদের সম্পর্কেও কুৎসিত অশালীন উদ্ভট কথা রচনা করতো। এসকল কর্মকাণ্ডে ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে অবশেষে তৃতীয় হিজরী সনের রবীউল আওয়াল মাসে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মুহামমাদ ইবনু মাসলামাহকে নির্দেশ দেন তাকে যেন হত্যা করা হয়। এবং সে আদেশ মতে তাকে হত্যা করা হয়।)
৪০৩৭. জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কা‘ব ইবনু আশরাফের হত্যা করার জন্য কে প্রস্তুত আছ? কেননা সে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দিয়েছে। মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) দাঁড়ালেন, এবং বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি চান যে, আমি তাকে হত্যা করি? তিনি বললেন, হাঁ। তখন মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) বললেন, তাহলে আমাকে কিছু প্রতারণাময় কথা বলার অনুমতি দিন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হাঁ বল। এরপর মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) কা‘ব ইবনু আশরাফের নিকট গিয়ে বললেন, এ লোকটি (রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সদাকাহ চায় এবং সে আমাদেরকে বহু কষ্টে ফেলেছে। তাই আমি আপনার নিকট কিছু ঋণের জন্য এসেছি। কা‘ব ইবনু আশরাফ বলল, আল্লাহর কসম পরে সে তোমাদেরকে আরো বিরক্ত করবে এবং আরো অতিষ্ঠ করে তুলবে। মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) বললেন, আমরা তাঁর অনুসরণ করছি। পরিণাম কী দাঁড়ায় তা না দেখে এখনই তাঁর সঙ্গ ত্যাগ করা ভাল মনে করছি না। এখন আমি আপনার কাছে এক ওসাক বা দুই ওসাক খাদ্য ধার চাই।
বর্ণনাকারী সুফ্ইয়ান বলেন, ‘আমর (রহ.) আমার নিকট হাদীসটি কয়েকবার বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি এক ওসাক বা দুই ওসাকের কথা উল্লেখ করেননি। আমি তাকে বললাম, এ হাদীসে তো এক ওসাক বা দুই ওসাকের কথাটি বর্ণিত আছে, তিনি বললেন, মনে হয় হাদীসে এক ওসাক বা দুই ওসাকের কথাটি বর্ণিত আছে। কা‘ব ইবনু আশরাফ বলল, ধার তো পাবে তবে কিছু বন্ধক রাখ। মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) বললেন, কী জিনিস আপনি বন্ধক চান। সে বলল, তোমাদের স্ত্রীদেরকে বন্ধক রাখ। মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) বললেন, আপনি আরবের একজন সুশ্রী ব্যক্তি, আপনার নিকট কীভাবে, আমাদের স্ত্রীদেরকে বন্ধক রাখব? তখন সে বলল, তাহলে তোমাদের ছেলে সন্তানদেরকে বন্ধক রাখ। তিনি বললেন, আমাদের পুত্র সন্তানদেরকে আপনার নিকট কী করে বন্ধক রাখি? তাদেরকে এ বলে সমালোচনা করা হবে যে, মাত্র এক ওসাক বা দুই ওসাকের বিনিময়ে বন্ধক রাখা হয়েছে। এটা তো আমাদের জন্য খুব লজ্জাজনক বিষয়। তবে আমরা আপনার নিকট অস্ত্রশস্ত্র বন্ধক রাখতে পারি। রাবী সুফ্ইয়ান বলেন, লামা শব্দের মানে হচ্ছে অস্ত্রশস্ত্র। শেষে তিনি (মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ) তার কাছে আবার যাওয়ার ওয়াদা করে চলে আসলেন। এরপর তিনি কা’ব ইবনু আশরাফের দুধ ভাই আবূ নাইলাকে সঙ্গে করে রাতের বেলা তার নিকট গেলেন। কা’ব তাদেরকে দূর্গের মধ্যে ডেকে নিল এবং সে নিজে উপর তলা থেকে নিচে নেমে আসার জন্য প্রস্তুত হল। তখন তার স্ত্রী বলল, এ সময় তুমি কোথায় যাচ্ছ? সে বলল, এই তো মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ এবং আমার ভাই আবূ নাইলা এসেছে। ‘আমর ব্যতীত বর্ণনাকারীগণ বলেন যে, কা’বের স্ত্রী বলল, আমি তো এমনই একটি ডাক শুনতে পাচ্ছি যার থেকে রক্তের ফোঁটা ঝরছে বলে আমার মনে হচ্ছে। কা’ব ইবনু আশরাফ বলল, মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ এবং দুধ ভাই আবূ নাইলা, (অপরিচিত কোন লোক তো নয়) ভদ্র মানুষকে রাতের বেলা বর্শা বিদ্ধ করার জন্য ডাকলে তার যাওয়া উচিত। (বর্ণনাকারী বলেন) মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) সঙ্গে আরো দুই ব্যক্তিকে নিয়ে সেখানে গেলেন। সুফ্ইয়ানকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, ‘আমর কি তাদের দু’জনের নাম উল্লেখ করেছিলেন? উত্তরে সুফ্ইয়ান বললেন, একজনের নাম উল্লেখ করেছিলেন। ‘আমর বর্ণনা করেন যে, তিনি আরো দু’জন মানুষ সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং তিনি বলেছিলেন, যখন সে (কা’ব ইবনু আশরাফ) আসবে। ‘আমর ব্যতীত অন্যান্য রাবীগণ (মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামার সাথীদের সম্পর্কে) বলেছেন যে (তারা হলেন) আবূ আবস্ ইবনু জাব্র হারিস ইবনু আওস এবং আববাদ ইবনু বিশ্র। ‘আমর বলেছেন, তিনি অপর দুই লোককে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন এবং তাদেরকে বলেছিলেন, যখন সে আসবে তখন আমি তার মাথার চুল ধরে শুঁকতে থাকব। যখন তোমরা আমাকে দেখবে যে, খুব শক্তভাবে আমি তার মাথা আঁকড়িয়ে ধরেছি, তখন তোমরা তরবারি দ্বারা তাকে আঘাত করবে। তিনি (মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ) একবার বলেছিলেন যে, আমি তোমাদেরকেও শুঁকাব। সে (কা‘ব) চাদর নিয়ে নিচে নেমে আসলে তার শরীর থেকে সুঘ্রাণ বের হচ্ছিল। তখন মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) বললেন, আজকের মত এতো উত্তম সুগন্ধি আমি আর কখনো দেখিনি। ‘আমর ব্যতীত অন্যান্য রাবীগণ বর্ণনা করেছেন যে, কা‘ব বলল, আমার নিকট আরবের সম্ভ্রান্ত ও মর্যাদাসম্পন্ন সুগন্ধী ব্যবহারকারী মহিলা আছে। ‘আমর বলেন, মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) বললেন, আমাকে আপনার মাথা শুঁকতে অনুমতি দেবেন কি? সে বলল, হাঁ। এরপর তিনি তার মাথা শুঁকলেন এবং এরপর তার সাথীদেরকে শুঁকালেন। তারপর তিনি আবার বললেন, আমাকে আবার শুকবার অনুমতি দেবেন কি? সে বলল, হাঁ। এরপর তিনি তাকে কাবু করে ধরে সাথীদেরকে বললেন, তোমরা তাকে হত্যা কর। তাঁরা তাকে হত্যা করলেন। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে এ খবর দিলেন। (২৫১০; মুসলিম ৩২/৪৩, হাঃ ১৮০১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৭৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৭৩৯)
হাদিসটির আর্কাইভ লিংক
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৪৮/ জিহাদ
পরিচ্ছদঃ ১৯০০. হারবীকে গোপনে হত্যা করা
২৮২০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … জাবির (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কাব’ ইবনু আশরাফকে হত্যা করার দায়িত্ব কে নিবে? তখন মুহাম্মদ ইবনু মাসলামা (রাঃ) বললেন, ‘আপনি কি এ পছন্দ করেন যে, আমি তাকে হত্যা করি?’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ। মুহাম্মদ ইবনু মাসলামা (রাঃ) বললেন, ‘তবে আমাকে অনুমতি দিন, আমি যেন তাকে কিছু বলি।’ তিনি বললেন, ‘আমি অনুমতি প্রদান করলাম।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
এই গুপ্ত হত্যা সম্পর্কে সহজ নসরুল বারীতে কী লেখা রয়েছে তা দেখে নিই, [127]
ঘুমন্ত মুশরিককে হত্যাঃ আবু রাফে
সভ্য পৃথিবীতে একজন ঘুমন্ত মানুষকে কেউ হত্যার কথা কল্পনাও করতে পারে না। ঘুমন্ত অবস্থায় কাউকে হত্যা করা চরমভাবে কাপুরুষতা এবং নির্লজ্জ কাজ। কারণ একজন ঘুমন্ত মানুষ সেই অবস্থায় কারোর কোন ক্ষতি করতে পারছে না, তাকে কেন হত্যা করা হচ্ছে জানতে পারছে না কিংবা আত্মপক্ষ সমর্থনও করতে পারছে না। নবী সেই ঘুমন্ত মানুষকেও হত্যা করতে গুপ্তঘাতক পাঠাতেন।
আবু রাফের মূল নাম আব্দুল্লাহ ইবনে আবিল হুকাইক। তাকে সাল্লাম ইবনে আবিল হুকাইক নামেও ডাকা হতো। তার উপনাম ছিলো আবু রাফে’। সে ছিলো হিজাযের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ছিলেন। খায়বারের পাশেই হিজাযের একটি সুরক্ষিত দূর্গে সে বসবাস করত। নবী মুহাম্মদ এই ব্যক্তিকেই ঘুমন্ত অবস্থায় খুন করার জন্য তার এক সাহাবীকে পাঠিয়েছিলেন।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৪৮/ জিহাদ
পরিচ্ছদঃ ১৮৯৬. ঘুমন্ত মুশরিককে হত্যা করা
২৮১৩। আলী ইবনু মুসলিম (রহঃ) … বারা ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারীগণের একটি দল আবূ রাফে ইয়াহুদীদের হত্যা করার জন্য প্রেরণ করেন। তাদের মধ্যে থেকে একজন এগিয়ে গিয়ে ইয়াহুদীদের দূর্গে ঢুকে পড়ল। তিনি বললেন, তারপর আমি তাদের পশুর আস্তাবলে প্রবেশ করলাম। এরপর তারা দূর্গের দরজা বন্ধ করে দিল। তারা তাদের একটি গাধা হারিয়ে ফেলেছিল এবং তার খোঁজে তারা বেরিয়ে পড়ে। আমিও তাদের সঙ্গে বেরিয়ে পড়লাম। তাদেরকে আমি বুঝাতে চেয়েছিলাম যে, আমি তাদের সঙ্গে গাধাঁর খোজ করছি। অবশেষে তারা গাধাটি পেল। তখন তারা দূর্গে প্রবেশ করে এবং আমিও প্রবেশ করলাম। রাতে তারা দূর্গের দরজা বন্ধ করে দিল। আর তারা চাবিগুলি একটি কুলুঙ্গির মধ্যে রেখে দিল। আমি তা দেখতে পাচ্ছিলাম। যখন তারা ঘুমিয়ে পড়ল, আমি চাবিগুলি নিয়ে নিলাম এবং দূর্গের দরজা খুললাম। তারপর আমি আবূ রাফের নিকট পৌঁছলাম এবং বললাম, হে আবূ রাফে! সে আমার ডাকে সাড়া দিল। তখন আমি আওয়াজের প্রতি লক্ষ্য করে তরবারির আঘাত হানলাম, অমনি সে চিৎকার দিয়ে উঠল।
আমি বেরিয়ে এলাম। আমি পুনরায় প্রবেশ করলাম, যেন আমি তার সাহাযার্থে এগিয়ে এসেছি। আর আমি আমার গলার স্বর পরিবর্তন করে বললাম, হে আবূ রাফে! সে বলল, তোমার কি হল, তোমার ধ্বংস হোক। আমি বললাম, তোমার কি অবস্থা? সে বলল, আমি জানিনা, কে বা কারা আমার এখানে এসেছিল এবং আমাকে আঘাত করেছে। রাবী বলেন, তারপর আমি আমার তরবারী তার পেটের উপর রেখে সবশক্তি দিয়ে চেপে ধরলাম, ফলে তাঁর হাড় পর্যন্ত পৌঁছে কট করে উঠল। এরপর আমি ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় বের হয়ে এলাম। আমি অবতরণের উদ্দেশ্যে তাদের সিড়ির কাছে এলাম। যখন আমি পড়ে গেলাম, তখন এতে আমার পায়ে আঘাত লাগল। আমি আমার সাথীগণের সাথে এসে মিলিত হলাম। আমি তাদেরকে বললাম, আমি এখান হতে ততক্ষন পর্যন্ত যাব না, যাবত না আমি মৃত্যুর সংবাদ প্রচারকারীনীর আওয়াজ শুনতে পাই। হিযাজবাসীদের বণিক আবূ রাফের মৃত্যুর সংবাদ ঘোষণা না শোনা পর্যন্ত আমি সে স্থান ত্যাগ করলাম না। তিনি বলেন, তখন আমি উঠে পড়লাম এবং আমার তখন কোনরূপ ব্যথা বেদনাই অনুভব হচ্ছিল না। অবশেষে আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট পৌঁছে এ বিষয়ে তাঁকে সংবাদ দিলাম।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৫৬/ জিহাদ ও যুদ্ধকালীন আচার ব্যবহার
পরিচ্ছদঃ ৫৬/১৫৫. নিদ্রিত মুশরিককে হত্যা করা।
৩০২২. বারআ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের একটি দল আবূ রাফি‘ ইয়াহূদীকে হত্যা করার জন্য প্রেরণ করেন। তাঁদের মধ্য থেকে একজন এগিয়ে গিয়ে ইয়াহূদীদের দূর্গে প্রবেশ করল। তিনি বলেন, অতঃপর আমি তাদের পশুর আস্তাবলে প্রবেশ করলাম। অতঃপর তারা দূর্গের দরজা বন্ধ করে দিল। তারা তাদের একটি গাধা হারিয়ে ফেলেছিল এবং তার খোঁজে তারা বেরিয়ে পড়ে। আমিও তাদের সঙ্গে বেরিয়ে গেলাম। তাদেরকে আমি জানাতে চেয়েছিলাম যে, আমি তাদের সঙ্গে গাধার খোঁজ করছি। অবশেষে তারা গাধাটি পেল। তখন তারা দূর্গে প্রবেশ করে এবং আমিও প্রবেশ করলাম। রাতে তারা দুর্গের দরজা বন্ধ করে দিল। আর তারা চাবিগুলো একটি কুলুঙ্গীর মধ্যে রাখল। আমি তা দেখতে পেলাম। যখন তারা ঘুমিয়ে পড়ল, আমি চাবিগুলো নিয়ে নিলাম এবং দূর্গের দরজা খুললাম। অতঃপর আমি আবূ রাফি‘র নিকট পৌঁছলাম এবং বললাম, হে আবূ রাফে! সে আমার ডাকে সাড়া দিল। তখন আমি আওয়াজের প্রতি লক্ষ্য করে তরবারীর আঘাত হানলাম, অমনি সে চিৎকার দিয়ে উঠল। আমি বেরিয়ে এলাম। আমি আবার প্রবেশ করলাম, যেন আমি তার সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছি। আর আমি আমার গলার স্বর পরিবর্তন করে বললাম, হে আবূ রাফি‘! সে বলল, তোমার কী হল, তোমার মা ধ্বংস হোক। আমি বললাম, তোমার কী অবস্থা? সে বলল, আমি জানি না, কে বা কারা আমার এখানে এসেছিল এবং আমাকে আঘাত করেছে। রাবী বলেন, অতঃপর আমি আমার তরবারী তার পেটের উপর রেখে সব শক্তি দিয়ে চেপে ধরলাম, ফলে তার হাড় পর্যন্ত ঠেকার আওয়াজ হল। অতঃপর আমি ভীত-শংকিত অবস্থায় বের হয়ে এলাম। আমি অবতরণের উদ্দেশ্যে তাদের সিঁড়ির নিকট এলাম। যখন আমি পড়ে গেলাম, তখন এতে আমার পায়ে আঘাত লাগল। আমি আমার সাথীদের সঙ্গে এসে মিলিত হলাম। আমি তাদেরকে বললাম, আমি এখান হতে ততক্ষণ পর্যন্ত যাব না, যতক্ষণ না আমি মৃত্যুর সংবাদ প্রচারকারিণীর আওয়াজ শুনতে পাই। হিজাযবাসী বণিক আবূ রাফি‘র মৃত্যুর ঘোষণা না শোনা পর্যন্ত আমি সে স্থান ত্যাগ করলাম না। তিনি বললেন, তখন আমি দাঁড়িয়ে গেলাম এবং আমার তখন কোন ব্যথাই ছিল না। অবশেষে আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট পৌঁছে তাঁকে খবর জানালাম। (৩০২৩, ৪০৩৮, ৪০৩৯, ৪০৪০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৮০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৮১০)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
এই হাদিসের ব্যাখ্যা আসুন পড়ে নিই, [128] –
ইহুদী মহিলা কবি হত্যাঃ আসমা বিনতে মারওয়ান
আল্লামা ইদরিস কান্ধলভী লিখিত সীরাতুল মুস্তফা উর্দু ভাষায় রচিত, একটি অত্যন্ত তথ্যবহুল সিরাত গ্রন্থ। এই গ্রন্থটিকে সিরাত গ্রন্থগুলোর মধ্যে বিশেষ সম্মানে সম্মানিত করা হয়। এই গ্রন্থে যা বলা হয়েছে [129] –
আসমাকে হত্যা (২৬ রমযানুল মুবারক, দ্বিতীয় হি.)
আসমা ছিল এক ইয়াহূদী স্ত্রীলােক, যে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর বিরুদ্ধে কুৎসামূলক কবিতা রচনা করত এবং তাঁকে নানাভাবে কষ্ট দিত। মানুষকে নবী (সা) এবং ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী করে তুলত। নবী (সা) বদর থেকে তখনাে ফেরেননি, পুনরায় সে এ ধরনের কবিতা বলল। এতে হযরত উমায়র ইবন আদী (রা)-এর জিদ চেপে গেল। তিনি মান্নত করলেন যে, আল্লাহর অনুগ্রহে যদি রাসূলুল্লাহ (সা) নিরাপদে বদর থেকে ফিরে আসেন, তা হলে আমি একে হত্যা করব।
রাসূলুল্লাহ (সা) যখন বদর থেকে আল্লাহর অনুগ্রহে সুস্থভাবে ও নিরাপদে ফিরে এলেন, তখন উমায়র (রা) রাত্রিকালে তরবারি নিয়ে রওয়ানা হলেন এবং তার ঘরে প্রবেশ করলেন। যেহেতু তিনি অন্ধ ছিলেন, সেহেতু হাতড়িয়ে আসমার আশেপাশে থাকা শিশুদের সরিয়ে দিলেন এবং তার বুকের উপর তরবারি রেখে এত জোরে চাপ দিলেন যে, তা পিঠ দিয়ে বেরিয়ে গেল।
মান্নত পূর্ণ করে তিনি ফিরে আসেন এবং রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সাথে ফজরের নামায আদায় করেন। এরপর তিনি তাঁকে সমুদয় ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ (সা), এ জন্যে আমার কোন জরিমানা তাে হবে না? তিনি বললেন, না। “এ ব্যাপারে দু’টি মেযও মাথা দিয়ে গুঁতােগুতি করবে না।” অর্থাৎ এটা এমন কোন কাজই নয়, যে ব্যাপারে কেউ মতপার্থক্য বা প্রতিবাদ করতে পারে।।
সত্যিকারের পয়গম্বরগণের মর্যাদা পরিপন্থী কোন অপরাধকারীকে হত্যা করা কোথায় প্রতিশােধ গ্রহণের যােগ্য বিবেচিত হয়, বরং তা সর্বোচ্চ নৈকট্যলাভ ও উত্তম ইবাদতের মধ্যে গণ্য। কেউ এর প্রতিবাদ করতে পারে না, পশুও একে বৈধ মনে করে।
মুসান্নাফে হাম্মাদ ইবন সালমায় বর্ণিত আছে যে, এ স্ত্রীলােকটি মহিলাদের ঋতুস্রাব মাখা কাপড় এনে মসজিদে রাখত।
মােটকথা, হযরত উমায়র (রা)-এর এ কাজে রাসূলুল্লাহ (সা) খুবই খুশি হন এবং সাহাবায়ে কিরাম (রা)-কে উদ্দেশ্য করে বলেনঃ “যদি কেউ এমন ব্যক্তিকে দেখতে চায়, যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে গােপনে সাহায্য করে, তা হলে যেন উমায়র ইবন আদীকে দেখে।”
হযরত উমর (রা) বলেন, ঐ অন্ধকে দেখ, সে কেমন গােপনে আল্লাহর আনুগত্যের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, ওকে তােমরা অন্ধ বলাে না, ও তাে চক্ষুস্মান। অর্থাৎ দৃশ্যত যদিও সে অন্ধ, কিন্তু অন্তরের দিক থেকে সে চক্ষম্মান। পবিত্র রমযানের পাঁচটি রাত বাকী থাকতে এ মহিলাকে হত্যা করা হয়। বিস্তারিত জানার জন্য যুরকানী, ১খ. পৃ. ৪৫৩ এবং হাফিয ইবন তায়মিয়া প্রণীত গ্রন্থ দেখুন। (তাবাকাতে ইবন সা’দ, ২খ, পৃ. ১৮ ও উয়ূনুল আসার, ২খ. পৃ. ২৯৩ দ্র)।
হযরত জাবির (রা) থেকে বর্ণিত আছে, যে একবার হযরত উমায়র (রা) অসুস্থ হয়ে পড়লে রাসূলুল্লাহ (সা) বলেনঃ “আমাদেরকে ঐ চক্ষুষ্মনের কাছে নিয়ে চল, যে বনী ওয়াকিফে বাস করে। আমরা তার সেবা করব।”
এবারে আসুন মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব লিখিত সীরাতুল রাসুল সাঃ গ্রন্থ থেকে দেখে নেয়া যাক, [130] –
এবারে আসুন সর্বাধিক বিখ্যাত সীরাত গ্রন্থ সিরাতে রাসুলাল্লাহ থেকে এই বিষয়ে কী বলা আছে তা দেখে নেয়া যাক, [131]
এবারে আসুন এই তথ্যটি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ A Biography Of The Prophet Of Islam, In The Light Of The Original Sources An Analytical Study, Volume 1 & 2 By Dr Mahdi Rizqullah Ahmad থেকে এই বিষয়ে বিবরণগুলো দেখে নেয়া যাক, [132]
It was also documented by Abu Dawud in his Sunan (4/528-29/The Book of Hudud, rulings on those who insulted the Prophet. He follows a chain other than that of Ibn Ishaq through a chain that is Connected and its transmitters reliable as ruled by Ibn Hajar in Bulugh Al-Maram (2/241). Nasa’i has also collected this report in his Sunan (7/107-108) as well as Tabarani in his Kabir.
শত্রুর কাটা মাথা দেখে খুশি হতেন নবী
মানবতার ত্রাণকর্তা এবং মহাবিশ্বের সবচাইতে মানবিক মানুষ বলে দাবী করা মানুষ মুহাম্মদের জন্য তার অনুসারীগণ শত্রুর মাথা কেটে নিয়ে এসে মুহাম্মদকে উপহার দিতেন। মুহাম্মদও খুশি হয়ে সেই উপহার গ্রহণ করতেন।
وَفِي رِوَايَةِ بن سَعْدٍ فَلَمَّا بَلَغُوا بَقِيعَ الْغَرْقَدِ كَبَّرُوا وَقَدْ قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تِلْكَ اللَّيْلَةَ يُصَلِّي فَلَمَّا سَمِعَ تَكْبِيرَهُمْ كَبَّرَ وَعَرَفَ أَنْ قَدْ قَتَلُوهُ ثُمَّ انْتَهَوْا إِلَيْهِ فَقَالَ أَفْلَحَتِ الْوُجُوهُ فَقَالُوا وَوَجْهُكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَرَمُوا رَأْسَهُ بَيْنَ يَدَيْهِ فَحَمِدَ اللَّهَ عَلَى قَتْلِهِ
‘ইবনে সাদের বর্ণনায় এসেছে, সাহাবায়ে কিরাম (ইসলামের দুশমন পাপিষ্ঠ কাব বিন আশরাফকে হত্যা করে) যখন বাকিউল গারকাদে পৌঁছলেন, তখন সবাই “আল্লাহু আকবার” বলে ধ্বনি দিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সে রাতে নামাজে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি যখন তাঁদের তাকবির-ধ্বনি শুনতে পেলেন, তিনিও তাকবির-ধ্বনি দিলেন এবং বুঝতে পারলেন যে, তাঁরা তাকে হত্যা করে ফেলেছে। অতঃপর সাহাবায়ে কিরাম তাঁর নিকট পৌঁছলে তিনি বললেন, সফল হোক (তোমাদের) চেহারাগুলো। তাঁরা প্রতিউত্তরে বললেন, এবং আপনার চেহারাও (সফল হোক), হে আল্লাহর রাসুল। তাঁরা তার (কর্তিত) মাথা তাঁর সামনে ফেললে তিনি তার নিহত হওয়ায় আল্লাহর প্রশংসা করলেন।’
(ফাতহুল বারি : ৭/৩৪০, প্রকাশনী : দারুল মারিফা, বৈরুত)
এটিই একমাত্র উদাহরণ নয়। উদাহরণ আরো আছে [133] –
গুপ্তঘাতক পাঠিয়ে হত্যাঃ মানবিকতার চরম বিপর্যয়
উপরে উল্লেখিত হাদিসগুলোতে নবী মুহাম্মদ কা’ব ইবনু আশরাফকে হত্যার জন্য মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন এবং অনুমতি দিয়েছিলেন যে, তিনি তাকে প্রতারণা করে হত্যা করতে পারেন। এখানে প্রতারণার মাধ্যমে একজন ব্যক্তিকে হত্যার আদেশ দেওয়া এবং সেটি বাস্তবায়ন করা একটি গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন। প্রতারণা করে হত্যা বা গোপনে হত্যা করার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তিকে তার আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয় না। এটি নৈতিকতা এবং মানবাধিকারের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন এবং মানবিকতার চরম বিপর্যয়।
একটি সুসংহত সমাজে প্রত্যেক ব্যক্তিরই বিচার পাওয়ার অধিকার আছে, এবং সেই বিচারের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করা উচিত। গোপনে কাউকে হত্যা করার মাধ্যমে তার জীবনের অধিকার হরণ করা, বিচার ছাড়াই শাস্তি প্রদান করা এবং তাকে আত্মরক্ষার সুযোগ না দিয়ে প্রতারণা করে খুন করা হয়, যা মানবাধিকারের মৌলিক লঙ্ঘন। এই ধরনের হত্যাকাণ্ডকে কোনোভাবেই একটি ন্যায়সঙ্গত ব্যবস্থা হিসেবে ব্যাখ্যা করা যায় না। এটি শুধু একটি নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ওপর আঘাত নয়, বরং সমাজের শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে বিঘ্নিত করে।
গণহত্যাকারী ছিলেন নবী
বেশ কয়েকটি গোত্রের ওপর রীতিমত গণহত্যা চালিয়েছিলেন ইসলামের নবী। এই বিষয়টি অনেক বড় হওয়ায় আলাদাভাবে এই নিয়ে লেখা হয়েছে। আগ্রহী পাঠকগণ এই লেখাগুলো পড়বেন অনুগ্রহ করে। [134] [135]
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ১৪/ কর, ফাই ও প্রশাসক
পরিচ্ছেদঃ ২৩. বনূ নাযীরের ঘটনা প্রসঙ্গে
৩০০৫। ইবনু ‘উমার (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। বনূ কুরাইযা ও বনূ নাযীর ইয়াহুদী গোত্রদ্বয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনূ নাযীরকে উচ্ছেদ করলেন এবং বনূ কুরাইযার প্রতি অনুগ্রহ করে তাদেরকে উচ্ছেদ করেননি। অতঃপর বনূ কুরাইযা সংঘর্ষে অবতীর্ণ হলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে হত্যা করলেন এবং তাদের স্ত্রী লোক, সন্তানাদি ও সম্পদ মুসলিমদের মাঝে বণ্টন করলেন। কিন্তু তাদের কিছু লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে মিলিত হলে তিনি তাদেরকে নিরাপত্তা দিলেন এবং তারা ইসলাম কবূল করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় বসবাসকারী সমস্ত ইয়াহুদী গোত্রকে উচ্ছেদ করলেন। যেমন মদীনায় বসবাসকারী অন্যান্য ইয়াহুদীদেরকে তিনি মদীনাহ্ থেকে বিতাড়িত করেন।(1)
(1). সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইব্ন উমর (রাঃ)
ধর্মত্যাগীদের হত্যা করতেন নবী
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৫৬/ জিহাদ ও যুদ্ধকালীন আচার ব্যবহার
৫৬/১৪৯. আল্লাহ্ তা‘আলার শাস্তি দিয়ে কাউকে শাস্তি দেয়া যাবে না।
৩০১৭. ইকরামাহ (রহ.) হতে বর্ণিত। ‘আলী (রাঃ) এক সম্প্রদায়কে আগুনে পুড়িয়ে ফেলেন। এ সংবাদ ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আববাস (রাঃ)-এর নিকট পৌঁছলে তিনি বলেন, ‘যদি আমি হতাম, তবে আমি তাদেরকে জ্বালিয়ে ফেলতাম না। কেননা, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা আল্লাহর আযাব দ্বারা কাউকে আযাব দিবে না। বরং আমি তাদেরকে হত্যা করতাম। যেমন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে লোক তার দ্বীন বদলে ফেলে, তাকে হত্যা করে ফেল।’ (৬৯২২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৭৯৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৮০৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ২৯। কাসামাহ্ (খুন অস্বীকার করলে হলফ নেয়া), মুহারিবীন (লড়াই), কিসাস (খুনের বদলা) এবং দিয়াত (খুনের শাস্তি স্বরূপ জরিমানা)
৬. মুসলিম ব্যক্তির হত্যা কি অবস্থায় বৈধ
৪২৬৭-(২৫/১৬৭৬) আবূ বাকর ইবনু আবূ শাইবাহ্ (রহঃ) ….. ‘আবদুল্লাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এমন মুসলিমকে হত্যা করা বৈধ নয়, যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নেই এবং আমি আল্লাহর রসূল। কিন্তু তিনটি কাজের যে কোন একটি করলে (তা বৈধ)।
১. বিবাহিত ব্যক্তি ব্যভিচারে লিপ্ত হলে; ২. জীবনের বিনিময়ে জীবন, অর্থাৎ কাউকে হত্যা করলে; ৩. এবং স্বীয় ধর্ম পরিত্যাগকারী, যে (মুসলিমদের) দল থেকে বিচ্ছিন্ন (মুরতাদ) হয়ে যায়। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪২২৮, ইসলামিক সেন্টার ৪২২৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সূনান আবু দাউদ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩৩/ শাস্তির বিধান
৪৩০০. আহমদ ইব্ন মুহাম্মদ (রহঃ) — ইকরাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আলী (রাঃ) ঐ সব লোকদের আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন, যারা মুরতাদ হয়েছিল। এ সংবাদ ইব্ন আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট পৌছলে, তিনি বলেনঃ যদি আমি তখন সেখানে উপস্থিত থাকতাম, তবে আমি তাদের আগুনে জ্বালাতে দিতাম না। কেননা, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোময়া আল্লাহ্ প্রদত্ত শাস্তির (বস্তু) দ্বারা কাউকে শাস্তি দেবে না। অবশ্য আমি তাদেরকে আল্লাহ্র রাসূলের নির্দেশ মত হত্যা করতাম। কেননা, তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কেউ দীন পরিত্যাগ করে মুরতাদ হয়ে যায়, তবে তোমরা তাকে হত্যা করবে। আলী (রাঃ) ইব্ন আব্বাস (রাঃ)-এর এ নির্দেশ শুনে বলেনঃ ওয়াহ্! ওয়াহ্! ইব্ন আব্বাস (রাঃ) সত্য বলেহছেন। আর ইহাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নির্দেশ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সূনান আবু দাউদ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩৩/ শাস্তির বিধান
৪৩০১. আমর ইব্ন আওন (রহঃ) —- আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঐ মুসলমানের রক্ত হালাল নয়, যে এরূপ সাক্ষ্য দেয় যে, “আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহ্র রাসূল”। তবে তিনটি কারণের কোন মুসলমানের রক্ত প্রবাহিত করা হালালঃ (১) যদি কোন বিবাহিত ব্যক্তি যিনা করে; (২) যদি কেউ কাউকে হত্যা করে, তবে এর বিনিময়ে হত্যা এবং (৩) যে ব্যক্তি দীন ত্যাগ করে মুরতাদ হয়ে মুসলমানের জামায়াত থেকে বেরিয়ে যায়।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সূনান আবু দাউদ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩৩/ শাস্তির বিধান
৪৩০২. মুহাম্মাদ ইব্ন সিনান (রহঃ) —- আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলমানের রক্ত হালাল নয়, যে এরূপ সাক্ষ্য প্রদান করে যে, “আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ্র রাসূল, তবে তিনটি মধ্যে যে কোন একটি কারণে তার রক্ত প্রবাহিত করা হালালঃ (১) যদি কেউ বিবাহ করার পর যিনা করে, তবে তাকে পাথর মেরে হত্যা করা হবে; (২) যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য বের হবে, তাকে হত্যা করা হবে, অথবা শুলী দণ্ড দেওয়া হবে, অথবা দেশ থেকে বের করা হবে এবং (৩) যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করবে, তার জীবনের বিনিময়ে তাকে হত্যা করা হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায়ঃ ১৪/ হদ্দ (দন্ড)
১৪/২. যে ব্যক্তি নিজের দীন ত্যাগ করে মুরতাদ হয়
১/২৫৩৫। ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে (মুসলমান) ব্যক্তি নিজের দীন পরিবর্তন করে, তাকে তোমরা হত্যা করো।
সহীহুল বুখারী ৩০১৭, ৬৯২২, তিরমিযী ১৪৫৮, নাসায়ী ৪০৫৯, ৪০৪৬, ৪০৬১, ৪০৬২, ৪০৬৪, ৪০৬৫, আবূ দাউদ ৪৩৫১, আহমাদ ১৮৭৪, ২৫৪৭, ২৯৬০, বায়হাকী ফিস সুনান ৫/৬৭, ২০২, ৮/১৯৫, ইবনু হিব্বান ৪৪৭৬, ৫৬০৬, আল-হুমায়দী ৫৩৩, আল-হাকিম ফিল মুসতাদরাক ৩/৫৩৮, ইরওয়া ২৪৭১, ইবনুস সালাম এর তাখরীজুল ঈমান ৮৬। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
মুহাম্মদের জীবদ্দশাতে মুরতাদ হত্যা
বুখারী মুসলিম হাদিসে বেশ কয়েকটি হাদিসেই বর্ণিত আছে, নবী মুহাম্মদের জীবদ্দশাতে ধর্মত্যাগীদের বন্দী করে রাখা রাখা হতো এবং শৃঙ্খলাবদ্ধ সেই মুরতাদকে হত্যা করা হতো। মুহাম্মদের সরাসরি নির্দেশনা না থাকলে তিনি অবশ্যই এই কাজে বাধা দিতেন।
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ
পরিচ্ছেদঃ ২৮৯৯. ধর্মত্যাগী পুরুষ ও নারীর হুকুম।
৬৪৫৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলাম। আমার সাথে আশআরী গোত্রের দু’ব্যাক্তি ছিল। একজন আমার ডানদিকে, অপরজন আমার বামদিকে। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন মিসওয়াক করছিলেন। উভয়েই তাঁর কাছে আবদার জানাল। তখন তিনি বললেনঃ হে আবূ মূসা! অথবা বললেন, হে আবদুল্লাহ ইবনু কায়স! রাবী বলেন, আমি বললাম, ঐ সত্তার কসম! যিনি আপনাকে সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন তারা তাদের অন্তরে কি আছে তা আমাকে জানায়নি এবং তারা যে চাকরি প্রার্থনা করবে তা আমি বুঝতে পারিনি। আমি যেন তখন তাঁর ঠোটের নিচে মিসওয়াকের প্রতি লক্ষ্য করছিলাম যে তা এক কোণে সরে গেছে। তখন তিনি বললেন, আমরা আমাদের কাজে এমন কাউকে নিয়োগ দিব না বা দেই না যে নিজেই তা চায়। বরং হে আবূ মূসা! অথবা বললেন, হে আবদুল্লাহ ইবনু কায়স! তুমি ইয়াম