ইসলামখ্রিস্টানপ্রোপাগান্ডা

মিথ্যার বেসাতি – বাইবেলে নবী মুহাম্মদ প্রসঙ্গে

ভূমিকা

ইন্টারনেটের কল্যাণে আমাদের সামনে পুরো পৃথিবীর তথ্যভাণ্ডার খুলে গেছে এটি যেমন সত্যি, বিভিন্ন বই এবং অন্যান্য তথ্য যেমন সহজলভ্য হয়েছে, কিন্তু একইসাথে অপ্রিয় একটি সত্যি হচ্ছে ইন্টারনেটের কল্যাণে আপনি অসংখ্য তথ্য পাবেন যেগুলো আদৌ সত্য নয়। কোথাও শোনা যায় সাইদীকে চাঁদে দেখা গিয়েছে, আবার কোথাও শোনা যায় নীল আর্মস্ট্রং নাকি চাঁদে গিয়ে আজান শুনে ইসলাম গ্রহণ করেছে! এরকম হাজার হাজার মিথ্যা তথ্যের ভিড়ে সঠিক তথ্য খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে যায়। ইন্টারনেটে যেহেতু যে কেউ যা ইচ্ছা লিখতে পারে, এবং পাঠক সেসব লেখায় ক্লিক করলেই গুগল সার্চে সেগুলো প্রথম দিকে চলে আসে, তাই সেগুলোই মানুষের মধ্যে বেশি বেশি ছড়িয়ে পড়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ধর্মের সমর্থক মানুষেরা ইচ্ছেকৃতভাবে তাদের ধর্মের পক্ষে মিথ্যা প্রচারণা চালায়, এগুলো করে তারা এক ধরণের আত্মতৃপ্তি লাভ করে। অনেক শিক্ষিত পাঠক আছেন যারা ভালভাবেই বোঝেন যে এগুলো মিথ্যাচার, কিন্তু তারপরেও তারা এগুলোর প্রতিবাদ করেন না। কারণ তারাও মনে মনে চান, মিথ্যা বলে হলেও তার ধর্মের লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাক বা মানুষের মধ্যে ধর্মের প্রভাব বৃদ্ধি পাক। বেশিরভাগ মানুষই এগুলো করেন ধর্ম সম্পর্কে নিজের ইন্সিকিউরিটি এবং আত্মবিশ্বাসহীনতার কারণে। তারা নিজেরাও বোঝেন যে, তাদের ধর্মগুলো আসলে অন্ধবিশ্বাস, তাই তারা নানাভাবে নিজেদের প্রবোধ দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু যেকোনো শিক্ষিত মানুষেরই উচিত, এই তথ্যগুলো যাচাই করে দেখা। মিথ্যা তথ্যের মধ্য থেকে সত্য তথ্য বের করে আনা।

বেশ কয়েকবছর আগেই জাকির নায়েকের একটি ভিডিওতে দেখা গেল, জাকির নায়েক দাবী করছেন যে, খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেলে নাকি খুব পরিষ্কারভাবে নবী মুহাম্মদের আগমনের ভবিষ্যবাণী করা আছে। এরপরে দেখা গেল, প্রায় সময়ই ওয়াজ মাহফিলগুলোতে, নামাজের খুতবা কিংবা অন্যান্য ইসলামিক আলোচনাতে এই বিষয়গুলো বারবার চলে আসে। একই মিথ্যার পুনরাবৃত্তি ঘটে। এই প্রসঙ্গে আগে দুইটি লেখা সংশয় ডট কমে দেয়া হয়েছে, আজ লেখাটির তৃতীয় ভাগটি নিয়ে লিখছি। [1] [2]

জাকির নায়েকের দাবী

জাকির নায়েকের এই মিথ্যাচারটি থেকে শুনে শুনে অনেকগুলো ইসলামিক ওয়েবসাইটেই এই দাবীগুলো যুক্তি হিসেবে উপস্থাপন করে ইসলামের পক্ষে দাওয়াত দিচ্ছেন অনেক ইসলাম প্রচারক। ইসলামিক দাইয়ী মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমান মিনারের একটি ওয়েবসাইট রয়েছে। সাইটটির কাজ হচ্ছে নাস্তিকদের সমালোচনার জবাব দেয়া, ইসলামকে সত্য হিসেবে প্রচার করা এবং ইসলামের দাওয়াত দেয়া। সেটি অবশ্যই তারা করতে পারেন। তথ্য প্রমাণ দিয়ে যৌক্তিক আলোচনা করতে চাইলে সর্বদাই তাদের স্বাগতম। কিন্তু বরাবরই তারা তাদের বিভিন্ন লেখাতে ইসলামকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্য নিয়ে নানা রকম ভুল এবং ইচ্ছাকৃত মিথ্যাচার করে থাকেন। আজকে প্রাসঙ্গিকভাবে তাদের একটি লেখা নিয়ে আলোচনা করবো। তাদের এক একটি লেখাতে অনেকগুলো মিথ্যাচার রয়েছে। কিন্তু অনেকগুলো মিথ্যাচারের ভীড়ে একটি হাস্যকর মিথ্যাচার সেই লেখার অন্যসব মিথ্যাচারকে ছাপিয়ে গেছে, তা হলো বাইবেলের শলোমনের পরমগীত বা সং অব সলোমন এর পঞ্চম অধ্যায়ের ষোল নম্বর ভার্সে নবী মুহাম্মদের ভবিষ্যদ্বাণী সম্পর্কিত মিথ্যাচার। এই লেখায় মূলত শলোমনের পরমগীত বা সং অব সলোমনে নবী মুহাম্মদের ভবিষ্যদ্বাণী সংক্রান্ত মিথ্যাচারের জবাব দেওয়া হবে, পাশাপাশি অন্যান্য মিথ্যাচারের জবাব দিতে চেষ্টা করবো।

ইসলামিক দাইয়ীদের দাবী

শুরুতে দেখে নেয়া যাক, এই ইসলামিক দাইয়ীগণ তাদের ওয়েবসাইটে আসলে কী লিখেছেন। এখানে একটি ওয়েবসাইটের ছবি দেয়া হচ্ছে, অন্যান্য অনেক ওয়েবসাইটেই একই রকম দাবী করা হয়েছে। আসুন আমরা তাদের দাবীগুলো সরাসরি দেখে নিই,

বাইবেল 1

তাদের দেওয়া কিছু তথ্যসূত্র দেখে নেওয়া যাক।

বাইবেল 3

শলোমনের পরমগীত কী

শলোমনের পরমগীত বা “সলোমনের গান” ওল্ড টেস্টামেন্টের অন্তর্গত একটি ক্যানোনিকাল বই, এটি একজন মহিলা এবং একজন পুরুষের মধ্যে বিশুদ্ধ প্রেম এবং যৌন সম্পর্কের সাথে সম্পর্কিত।

এটি একটি বাইবেলের বই যার মধ্যে সেই আমলের শিল্পকলা এবং কাব্যিক ধারা দেখা যায় । সলোমন এই কবিতাগুলোতে প্রেমিকার দৈহিক সৌন্দর্য্য এবং তার কামনার কথা তুলে ধরেন। পরবর্তী সময়ে অনেক খ্রিস্টান পাদ্রী একে ঈশ্বর এবং তাঁর গির্জার সম্পর্কের সাথে তুলনা করেছেন। এই বইয়ের মূল ধারণা স্বামী (যিনি রাজা সলোমনের প্রতিনিধিত্ব করবেন) এবং তার স্ত্রীর মধ্যে প্রেমের গল্প। তার উদ্দেশ্য হল বিবাহের পবিত্রতাকে পুনঃনিশ্চিত করা এবং তার লোকেদের এবং গির্জার প্রতি ঈশ্বরের ভালবাসার সাথে তুলনা করা। আসুন শলোমনের পরমগীত থেকে কিছু অংশ পড়ে নিই এটি বোঝার জন্য যে, আসলে এই সঙ্গীতের বিষয়বস্তু কী।

১ শলোমনের অনন্য সাধারণ গীত।
চুম্বনে চুম্বনে আমায় ভরিয়ে দাও। কারণ তোমার ভালোবাসা দ্রাক্ষারসের চেয়েও ভাল।
৩ তোমার সুগন্ধি তেল দারুণ সৌরভময় । তোমার নাম শ্রেষ্ঠতম সুগন্ধির মত। তাই যুবতী নারীরা তোমাকে ভালোবাসে।
৪ আমাকে তোমার সঙ্গে নিয়ে চল! চল, তোমাতে আমাতে কোথাও পালিয়ে যাই! রাজা আমাকে তাঁর কক্ষে নিয়ে গেলেন।আমরা তোমাতে উল্লসিত এবং আনন্দিত। আমরা তোমার প্রেমাচরণের প্রশংসা করব- যা দ্রাক্ষারসের চেয়েও ভাল। যুবতী নারীরা যে তোমায় ভালোবাসে তা আর আশ্চর্য্য কি?
৫ হে জেরুজালেমের কন্যারা, আমি কৃষ্ণবর্ণা এবং সুন্দরী, আমি কেদরের তাঁবুর মতো কালো এবং শলোমনের পর্দার মতো সুন্দর।
৬ আমি কি কালো! সে দিকে তোমরা দেখো না কারণ সূর্য আমাকে কালো করেই দেখায়। আমার ভাইরা আমার প্রতি রাগে জ্বলছে। তারা আমাকে তাদের দ্রাক্ষা ক্ষেতের দেখাশোনা করতে বাধ্য করেছে। তাই আমি আমার নিজের দ্রাক্ষা ক্ষেতের যত্ন নিতে পারি নি।
৭ আমি আমার সকল অন্তঃকরণ দিয়ে তোমাকে ভালোবাসি! আমায় বল, কোথায় তুমি তোমার মেষ চরাও? দুপুরে কোথায় তুমি ওদের বিশ্রাম করাও? যদি না হয়, তোমাকে খুঁজতে গিয়ে আমাকে তোমার সঙ্গী বন্ধুদের চার পাশে ভ্রাম্যময়ী বেশ্যার মত দেখাবে!
৮ আমাকে কোথায় খুঁজতে হবে যদি তুমি না জানো, তবে হে সুন্দরী নারী, তুমি মেষের পালগুলিকে অনুসরণ কর এবং তোমার ছাগল ছানাগুলিকে মেষপালকদের তাঁবুর কাছে চরাও।
৯ হে আমার প্রিয়তমা, আমার কাছে তুমি ফরৌণের রথ টেনে নিয়ে যাওয়া যৌনাঙ্গ ছেদ না করা যে কোন ঘোড়ীর চেয়ে বেশী উদ্দীপক। ঐ ঘোড়াগুলোর মুখের পাশে এবং গলার চারপাশে অপূর্ব নক্শা করা আছে।
১০ তোমার কপোল গহনার দ্বারা সুন্দরভাবে সজ্জিত। তোমার কণ্ঠদেশ একটি কণ্ঠহার দ্বারা সজ্জিত।
১১ চল আমরা তোমার জন্য রৌপ্য খচিত সোনার গহনা তৈরী করি।
১২ রাজা যখন আমার পাশে তাঁর কেদারায় শুয়েছিলেন তখন আমার সুগন্ধির ঘ্রাণ তাঁর কাছে গিয়ে পৌঁছেছিল।
১৩ আমার প্রিয়তম আমার কাছে ভেষজ সুগন্ধির সৌরভের মত, আমার স্তনযুগলের মধ্যে সারাটা রাত্রি ধরে বিরাজিত থাকে
১৪ আমার প্রিয়তম আমার কাছে, ঐন্-গদীয় দ্রাক্ষা ক্ষেতের মেহেন্দি ফুলের মত সুন্দর।
১৫ হে আমার প্রিয়তমা, তুমি সত্যিই সুন্দর! আহা! কি সুন্দর! তোমার চোখ দুটি পারাবতের মতই কোমল।
১৬ হে মম প্রিয়তম, তুমি অনুপমা! এবং তুমি প্রচণ্ড আকর্ষণীয়! আমাদের শয্যা সবুজ ঘাসের বাগানের মতোই মনোরম!
১৭ আমাদের ঘরের কড়িকাঠগুলি এরস কাঠের এবং বরগাগুলি দেবদারু কাঠে নির্মিত।

মুহাম্মদ কি তাহলে সলোমনের নববধু?

যারা সলোমনের পরমগীত পড়েছেন তারা বুঝতে পারবেন, এটি নবী মুহাম্মদের ভবিষ্যদ্বাণী প্রমাণ করার জন্য অত্যন্ত হাস্যকর দাবী! সলোমনের পরমগীত সলোমন এবং তার নববধূর মধ্যে প্রেমময়, শারীরিক বা যৌন সম্পর্ক বিষয়ে একটি ছোট কাব্যগ্রন্থ। কিছু মুসলমান দাবি করে যে এই বইটি ঈশ্বরের বাণী হতে পারে না, কারণ সলোমন এবং তার স্ত্রী একে অপরের দেহ সম্পর্কে যৌন আবেদনময়ী ভাষায় বর্ণনা দিচ্ছে । উদাহরণস্বরূপ, সলোমনের পরমগীত অধ্যায় ৭, ভার্স ১-৩ সলোমন তার স্ত্রীকে বলেছেন:

রাজকন্যে, তোমার জুতো পরা পা দুখানি কত সুন্দর!
তোমার বক্র রেখায়িত দুটি ঊরু শিল্পীর তৈরী অলঙ্কারের মত।
তোমার নাভি গোলাকার পাত্রের মত,
তা যেন সব সময় দ্রাক্ষারসে পূর্ণ থাকে।
তোমার উদর দেশ পদ্ম দিয়ে ঘেরা স্তূপীকৃত গমের মত।
তোমার স্তন দুটি গজলা হরিণের যমজ শাবকের মত।

খুবই উদ্ভট এবং হাস্যকর কথা হচ্ছে, শলোমনের পরমগীতের মধ্যে রাজা সলোমন তার সুন্দরী স্ত্রীর দৈহিক সৌন্দর্য যৌন আবেদনময়ী ভাষায় বর্ণনা করছে, তার প্রতি তার কামনা বাসনার প্রকাশ করছে, আর ইসলামিস্টগণ এই বইয়ে মুহাম্মদ সম্পর্কে ভবিষ্যতবাণী খুঁজে বেড়াচ্ছে!

আসুন নবী মুহাম্মদের তথাকথিত ভবিষ্যদ্বাণী প্রসঙ্গে আলোকপাত করি। অধ্যায় ৫ ভার্স ৮ এ, সলোমনের স্ত্রী তার বান্ধবীদের বলে,

হে জেরুজালেমের কন্যাগণ, তোমাদের বলে রাখছি, যদি আমার প্রিয়তমকে খুঁজে পাও তাকে বলো, আমি তার প্রতি ভালবাসায় কাতর

তার বন্ধুরা ৯ নং ভার্সে তাকে জিজ্ঞাসা করে উত্তর দেয়,

সকল নারীদের মধ্যে হে সুন্দরী শ্রেষ্ঠা, কোন্ দিক থেকে তোমার প্রিয়তম অন্যান্য প্রেমিকদের চেয়ে ভাল? অন্যান্য প্রেমিকদের চেয়ে সে কি ভাবে ভাল যে তুমি আমাদের এমন প্রতিশ্রুতি করতে বলছো?

অতঃপর সলোমনের স্ত্রী ১০ থেকে ১৬ নং ভার্সে তাদের উত্তর দিয়েছেন। ভার্সগুলো পড়ুন এবং দেখুন আমরা নবী মুহাম্মদ সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী খুঁজে পেতে পারি কিনা।

সলোমনের স্ত্রী বলেছেন:

আমার প্রিয়তম উজ্জ্বল এবং তামাটে বর্ণ।
সে তার মাথা খাঁটি সোনার মতোই উন্নত।
তার কোঁকড়ানো চুল দাঁড়কাকের রঙের মতই মিশ্কালো।
তার দুটি চোখ ঝর্ণার ধারের কপোতের মত।
দুধের সাগরে কপোতের মত, অলঙ্কারের মত।
তার গালদুটি একটি মসলার বাগানের মত, যা সুগন্ধ দেয়।
পদ্মফুলের পাপড়ির মত তার ওষ্ঠাধর থেকে তরল সুগন্ধি গড়িযে পড়ে।
তার বাহু রত্নখচিত সোনার দণ্ডের মত।
তার উদর হাতির দাঁতের তৈরী এবং নীল মরকতে ঢাকা।
তার পা দুটি সোনার পায়ার ওপরে মর্মর স্তম্ভের মত।
তার চেহারা লিবানোনের শ্রেষ্ঠতম গাছের মত !
জেরুশালেমের যুবতী রমণীরা,
তাঁর মুখ বড়ই মিষ্টি,
সে বড়ই প্রেমময়।
হে জেরুজালেমের কন্যারা!
এই আমার প্রেমিক, এই আমার প্রিয়।

এই শেষ ভার্সটিতে মুসলিমরা তাদের নবী মুহাম্মদকে খুঁজে পেয়েছে। কেন আমরা ভার্সটি মুহাম্মদ সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী হিসাবে ব্যাখ্যা করব? ইসলামিস্টরা যুক্তি দেয় যে, যেহেতু এখানে হিব্রু machamadim শব্দটি হুবুহু একই না রেখে সেটার অনুবাদ এখানে “বড়ই প্রেমময়” করা হয়েছে , এবং machamadim শব্দটি “মুহাম্মদ” নামের সাথে কিছুটা মিল রয়েছে, তাই machamadim দ্বারা আসলে মুহাম্মদকে নির্দেশ করছে। তাই সলোমনের পরমগীত 5:16 আয়াতের অনুবাদ করা উচিত:

জেরুশালেমের যুবতী রমণীরা, তাঁর মুখ বড়ই মিষ্টি,  তিনি মুহাম্মদ। হে জেরুজালেমের কন্যারা! এই আমার প্রেমিক, এই আমার প্রিয়।

পাঠকদের সুবিধার্থে বাইবেলের এই অংশটির বাঙলা অনুবাদের পিডিএফ দেয়া হলো [3]

এবার সলোমনের পরমগীত অধ্যায় ৫ ভার্স ১৬ এর ট্রান্সলিটারেশন দেখা যাক। 

chiko mamtakim vekhulo machamadim ze dodi veze rei benot yerushalaim

বাইবেল 5

এখানে কয়েকটি পয়েন্ট লক্ষ্য করুন। প্রথমত, এখানে সোলায়মানের স্ত্রী একজন পুরুষের দৈহিক সৌন্দর্য বর্ণনা করছে। যদি বলা হয় তিনি তার স্বামীর কথা বলছে তাহলে এটি নিখুঁত বোধগম্য হয়। কিন্তু আমাদের মুসলিম বন্ধুরা জোর দিয়ে বলেন যে সলোমনের স্ত্রী নবী মুহাম্মদ সম্পর্কে কথা বলছেন, সুতরাং এই কথা বলার দ্বারা তারা সলোমনের স্ত্রীকে অন্য পুরুষের জন্য লালায়িত হবার অভিযোগে অভিযুক্ত করছেন।

দ্বিতীয়ত, যদি 5:16 নবী মুহাম্মদ সম্পর্কে হয়, তাহলে সলোমনের স্ত্রী নবী মুহাম্মদকে তার “প্রিয়” বলে ডেকেছেন। কিন্তু অধ্যায় ৭ ভার্স ১০, তিনি বলেছেন, 

আমি আমার প্রেমিকের এবং সে আমাকে চায়! 

তাহলে তিনি এ ঘোষণা করেন যে তিনি মুহাম্মদের এবং মুহাম্মদ তাকে চান। কিভাবে সোলায়মানের বধূ নবী মুহাম্মদকে কামনা করেন? কেন নবী মুহাম্মদ এমন একজন মহিলাকে কামনা করবেন যিনি তারও পনের শতকেরও পূর্বেকার সময়ের একজন ব্যক্তি? হয় সলোমনের পরমগীত বইটি সলোমনের স্ত্রী এবং  নবী মুহাম্মদের মধ্যে একটি সময়-ভ্রমণকারী ব্যভিচারী প্রেমের সম্পর্কে একটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক গল্প, অথবা বইটির সাথে মুহাম্মদের কোন সম্পর্ক নেই।

ওল্ড টেস্টামেন্টের অনেক জায়গায় machmad শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। যদি machmad প্রকৃতপক্ষে মুহাম্মদের নাম হয়, তাহলে আমাদের বলতে হবে যে যেখানেই machmad শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, এটি মুহাম্মদকে নির্দেশ করছে। আসুন আরো দুটি ভার্স বিবেচনা করি যেখানে machmad শব্দটি রয়েছে এবং দেখুন কি হবে যদি আমরা শব্দটিকে “মুহাম্মদ” হিসাবে অনুবাদ করি।

ইজেকিয়েল 24:16-এ, ইজেকিয়েলের স্ত্রীকে “machmad” বলা হয়েছে, [4]

ben-adam hineni lokeyach mimekha et-machmad enekha bemagefa velo tispod velo tivke velo tavo dimatekha

ভার্সটির অর্থ জেনে নিই। 

“মনুষ্যসনতুমি তোমার স্ত্রীকে খুবই ভালবাস, কিন্তু আমি তোমার কাছ থেকে তাকে নিয়ে নেব। তোমার স্ত্রী হঠাৎ মারা যাবে কিন্তু তুমি তোমার দুঃখ প্রকাশ করবে না, জোরে জোরে কেঁদো না।”

যদি machmad মানে “মুহাম্মদ” হয়, তাহলে মুহাম্মদ অবশ্যই ইজেকিয়েলের স্ত্রী হতেন! এটা কি কোন মুসলমান বিশ্বাস করে?

বাইবেল 7

এজেকিয়েল 24:21 দিকে আলোকপাত করা যাক।

“ইস্রায়েলের পরিবারগুলিকে এই কথা বলো। প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: ‘দেখ, আমি আমার পবিত্র স্থান ধ্বংস করব। তুমি এই স্থান সম্বন্ধে গর্বিত ও এর সম্বন্ধে প্রশস্তি গীত গেয়ে থাক। তোমরা সেই স্থান দেখতে ভালবাস ও সত্যই তাকে ভালোবাস। কিন্তু আমি সেই স্থান ধ্বংস করব আর যুদ্ধে যে শিশুদের তোমরা ছেড়ে এসেছিলে, তারা হত হবে। “

ভার্সটির ট্রান্সলিটারেশন দেখে নিই।

emor levet yisrael ko-amar adonai ELOHIM hineni mechalel et-mikdashi geon uzekhem machmad enekhem umachmal nafshekhem uvnekhem uvnotekhem asher azavtem bacherev yipolu

এখানে machmad অর্থ “মুহাম্মদ” ধরে নিলে এর অর্থ হবে আল্লাহ মুহাম্মদকে ধ্বংস করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন!  এটি কী মুসলিমগণ বা খোদ জাকির নায়েক মেনে নেবেন?

সৌদির সর্বোচ্চ আলেমের ফতোয়া

জাঁকির নায়েকের মত অসংখ্য ইসলামিক দাইয়ী যখন অনলাইন প্লাটফর্মগুলোতে এসব মিথ্যা দাবী প্রচার করতে ব্যস্ত, সেখানে সৌদির সর্বোচ্চ আলেমগণ এই বিষয়ে সরাসরি মতামত দিয়েছেন, এবং পুরো দাবীটিকে তারাই নাকচ করে দিয়েছেন। আসুন আমরা শায়েখ সালিহ আল মুনাজ্জিদের পরিচালিত ইসলামইনফো ওয়েবসাইট থেকে এই বিষয়ক একটি ফতোয়া পড়ে নিই। উল্লেখ্য, এই ওয়েবসাইটে ঐ বিশেষ দাবীটি নাকচ করে ভিন্ন আরেকটি দাবী করা হয়েছে বটে, সেটি নিয়ে আমরা অন্য কোথাও আলোচনা করবো [5]

He is asking about the meaning of the word “Mahammadim” in the Song of Solomon in the Old Testament
Question
Iam from India,My dobut is on bible verse i.e,song of solomon 5:16
In Hebrew Bible here muhammadim word is there.But my freind who knows hebrew he says that this muhammad is not a complete word.It is a combination of two hebrew words i.e,Ma+Amad, Here Ma is a Quetion Tag, Amad is a root word, Ma means How much,more(Altogether),what Amad means Lovely.
It is a Question Verb,Nobody can put as a name this Qestion Verb(How much Love),Question verbs (Eg:How much,what,why,when,how)are not put as a names.If anybody asks your name are you say my name is howmuch love?,no In any where in the world Nouns only put as a names.And the 2nd reason is Song of solomon was written in BC900,But Muhammad came in 600C.E.
Perhaps,muhammad copied this name from song of solomon. So he says that this song of solomon5:16 is not talking about Prophet Muhammad.
So please give me a elaborate explanation and Mention Do you know Hebrew.
Answer
Praise be to Allah.
The Hebrew text referred to is Song of Solomon 5:16, which is as follows:
חִכּוֹ מַמְתַקִּים וְכֻלּוֹ מַחֲמַדִּים זֶה דוֹדִי וְזֶה רֵעִי בְּנוֹת יְרוּשָׁלִָם׃
The transliteration of this text is as follows:
Hik.ko ma m.taq.qim we.kul.low ma.ha.mad.dim zeh do.w.di we.zeh re.‘i be.no.wt ye.ru.sha.lim
[English transliteration based on the Interlineal Bible]
The English translation of this text is as follows:
“His mouth is most sweet: yea, he is altogether lovely. This is my beloved, and this is my friend, O daughters of Jerusalem”
[King James Version].
We have referred to a number of translations of the Old Testament, and we have not come across any translation which renders the word מַחֲמַדִּים (ma.ha.mad.dim) as Muhammad.
1.
The King James Version (first published in 1611 CE and still used today) renders it as follows:
“His mouth is most sweet: yea, he is altogether lovely. This is my beloved, and this is my friend, O daughters of Jerusalem.”
2.
The Douay-Rheims Bible (a Roman Catholic translation of the Bible) renders it as follows:
“His throat most sweet, and he is all lovely: such is my beloved, and he is my friend, O ye daughters of Jerusalem.”
3.
The American Standard Version (completed in 1901) renders it as follows:
“His mouth is most sweet; Yea, he is altogether lovely. This is my beloved, and this is my friend, O daughters of Jerusalem.”
4.
The New International Version (NIV – a modern translation first published in the 1970s) renders it as follows:
“His mouth is sweetness itself; he is altogether lovely. This is my beloved, this is my friend, daughters of Jerusalem”
5.
The Jewish Publication Society (JPS) translation (1917 CE) renders it as follows:
“His mouth is most sweet; Yea, he is altogether lovely. This is my beloved, and this is my friend, O daughters of Jerusalem.”
We also referred to some experts in the Hebrew language, who confirmed the soundness of these translations, and confirmed that the word mahammadim is not a proper noun or name; rather it signifies beauty and desire, and it is mentioned in many places in the Old Testament with such meanings.
Furthermore,
the context here rules out any interpretation of the word as referring to Muhammad. The entire book of the Song of Solomon is a love poem between a man and a woman, with erotic phrases. The context is far removed from referring to the Prophet who would come at the end of time, namely Muhammad (blessings and peace of Allah be upon him).
As for the English translation of this word (mahammadim), they mentioned words such as loveliness, charm, desire and delight, which do not even come close to the meaning of names such as Ahmad or Muhammad.
Nevertheless, the fact that there is the foretelling of Muhammad (blessings and peace of Allah be upon him) in the earlier books is something that is proven and established, as Allah, may He be glorified and exalted, says (interpretation of the meaning):
“Those who follow the Messenger, the Prophet who can neither read nor write (i.e. Muhammad (blessings and peace of Allah be upon him)) whom they find written with them in the Taurat (Torah) (Deut, xviii, 15) and the Injeel (Gospel) (John xiv, 16)”
[al-A ‘raaf 7:157].
Proving that does not require twisting the meaning of some words in a manner contrary to their meaning in Hebrew and contrary to the context in which they appear. The scholars have written books dealing with this topic, compiling the prophecies mentioned in the Old Testament and the New Testament, and even in the books of other religions, which you may see in the following books:
1. Al-Bashaarah bi Nabi al-Islam fi’t-Tawraat wa’l-Injeel by Dr Ahmad Hijaazi as-Saqa
2. Diraasaat fi’l-Yahoodiyyah wa’l-Maseehiyyah wa Adyaan al-Hind by Dr Muhammad Diya’ ar-Rahmaan al-A‘zami
And Allah knows best.

আসুন এই ফতোয়াটির অনুবাদ পড়ি, অনুবাদটি করে দিয়েছেন সংশয় পরিবারের আবুল ফজল ভাই।

সলোমনের গান অংশে মোহাম্মাদের উল্লেখ কি আসলেই আছে? ইসলামি বিশেষজ্ঞদের ফতোয়া।
প্রশ্নঃ
আমি ভারত থেকে লিখছি। আমার সন্দেহ বাইবেলের সলোমনের গান অংশের ৫:১৬ নিয়ে। হিব্রু বাইবেলে এই জায়গায় “মোহাম্মাদিম” শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু হিব্রু ভাষা জানে, এমন এক বন্ধু আমাকে বলেছে যে এই মোহাম্মাদিম শব্দটি কোন একক বা সম্পূর্ণ শব্দ নয়, বরং দুটি হিব্রু শব্দ ‘মা’ আর ‘আমাদ’ এর মিশ্রণ। এখানে ‘মা’ শব্দটি প্রশ্নার্থক একটি দ্যোতনা বোঝাতে ব্যবহার হয়, আর ‘আমাদ’ হচ্ছে মূল শব্দ। ‘মা’ শব্দের অর্থ কত বেশি আর ‘আমাদ’ শব্দের অর্থ সুন্দর।
এটি যেহেতু একটি প্রশ্নবোধক ক্রিয়াপদ, তাই কেউ এই শব্দটিকে নাম হিসাবে ব্যবহার করার কথা নয় (কত বেশি ভালবাসা বা সুন্দর), প্রশ্নবোধক ক্রিয়াপদগুলো (যেমন কত বেশি, কী, কেন, কখন, কিভাবে) নাম হিসাবে ব্যবহার হয় না। ধরুন, কেউ আপনাকে জিজ্ঞেস করল, আপনার নাম কী? আপনি তো নিশ্চয়ই “কত বেশি ভালবাসা?” এরকম কোন নাম বলবেন না। সারা পৃথিবীতে বিশেষ্য পদ্গুলোই কেবল নাম হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, বাইবেলের সলোমনের গান লেখা হয়েছিল ৯০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে, কিন্তু মোহাম্মাদ এসেছিলেন ৬০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে। হয়ত, মোহাম্মাদ নিজেই এই নামটি সলোমনের গান থেকে জোগাড় করেছেন। আমার হিব্রু জানা বন্ধুর ভাষ্যমতে সলোমনের গানের ৫:১৬ অংশটিতে মোহাম্মাদকে নিয়ে আদৌ কথাই হচ্ছে না।
দয়া করে যদি একটু বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতেন, এবং বলতেন যে আপনি নিজে হিব্রু ভাষা জানেন কিনা।
উত্তরঃ
বাইবেলের সলোমনের গানের ৫:১৬ এর হিব্রু ভাষ্য নিম্নরূপ
חִכּוֹ מַמְתַקִּים וְכֻלּוֹ מַחֲמַדִּים זֶה דוֹדִי וְזֶה רֵעִי בְּנוֹת יְרוּשָׁלִָם׃
বাংলা উচ্চারণ অনেকটা এরকম
হিক কো মামতাককিম উইকুল্লো মাহামাদ্দিম যেহ দৌদি ওয়ে যেহ রে ইবেনওত ইয়েরু শালিম
(ইন্টারলিনিয়াল বাইবেল সূত্রে উচ্চারণটি পাওয়া গেছে)
এর ইংরেজি অনুবাদ রাজা জেইমস সংস্করণ অনুযায়ী
“His mouth is most sweet: yea, he is altogether lovely. This is my beloved, and this is my friend, O daughters of Jerusalem”
যার বঙ্গানুবাদ করলে দাঁড়ায়
“জেরুজালেমের যুবতী রমণীরা, তার মুখই মিষ্টস্বাদস্বরূপ। সে সবকিছু নিয়েই মনোরম। এই আমার প্রেমিক। এই আমার প্রিয়”।
(বাংলা অনুবাদ ebanglalibrary.com থেকে প্রাপ্ত, পরম গীত ০৫:১৬)
আমরা ওল্ড টেস্টামেন্ট বা আদি পুস্তকের একাধিক অনুবাদ খুঁজেও কোথাও পাই নি যে ‘মাহামাদ্দিম’ শব্দটি দিয়ে রাসুল মোহাম্মাদকে বোঝানো হয়েছে।
১. রাজা জেইমস সংস্করণ, যেটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৬১১ সালে এবং এখনো ব্যবহার হয়, এই ৫:১৬ অংশটিকে নিম্নরূপে উপস্থাপন করছে-
“His mouth is most sweet: yea, he is altogether lovely. This is my beloved, and this is my friend, O daughters of Jerusalem.”
২. ডুয়েই-রাইমস বাইবেল (একটি রোমান ক্যাথলিক অনুবাদ)
“His throat most sweet, and he is all lovely: such is my beloved, and he is my friend, O ye daughters of Jerusalem.”
৩. আমেরিকান প্রমিত সংস্করণ (১৯০১)
“His mouth is most sweet; Yea, he is altogether lovely. This is my beloved, and this is my friend, O daughters of Jerusalem.”
৪. নতুন আন্তর্জাতিক সংস্করণ (এন.আই.ভি – একটি আধুনিক অনুবাদ, প্রথম প্রকাশ ১৯৭০ এর দিকে)
“His mouth is sweetness itself; he is altogether lovely. This is my beloved, this is my friend, daughters of Jerusalem”
৫. ইহুদি প্রকাশনা সমিতি (জেপিএস) অনুবাদ (১৯১৭)
“His mouth is most sweet; Yea, he is altogether lovely. This is my beloved, and this is my friend, O daughters of Jerusalem.”
আমরা হিব্রু ভাষার কয়েকজন বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হয়েছিলাম, যারা আমাদেরকে নিশ্চিত করেছেন অনুবাদের শুদ্ধতা বিষয়ে, এবং আরো জানিয়েছেন যে মাহাম্মাদিম শব্দটি কোন নামবাচক বিশেষ্য পদ বা নাম নয়, বরং এ শব্দটি সৌন্দর্য ও কামনা বুঝাতে ব্যবহৃত হয়, এবং এ শব্দটি আদি পুস্তকের অন্যান্য আরো অনেক জায়গায় এই সৌন্দর্য ও কামনাবোধক অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে।
তাছাড়াও, প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিলে এই অংশে উল্লেখিত শব্দটি দ্বারা রাসুল মোহাম্মাদকে নির্দেশ করা হয়েছে, এরকম সম্ভাবনা বাতিল হয়ে যায়। “সলোমনের গান” শীর্ষক এই পুরো বইটি একজন নারী ও একজন পুরুষের মধ্যেকার একটি প্রেমের কবিতা, যাতে আদিরসাত্মক শব্দাবলীও রয়েছে। এই প্রেক্ষাপট রাসুল মোহাম্মাদ সংক্রান্ত বিষয় থেকে বহু দূরের, যিনি সময়ের হিসেবে উল্লেখিত ঘটনার বহু পরে পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন।
এই ‘মাহাম্মাদিম’ শব্দের অনুবাদে সৌন্দর্য, চমক, চটক, ঝলক, কামনা, তৃপ্তি প্রভৃতি শব্দ ব্যবহৃত হয়ে থাকে, যা কিনা মোহাম্মাদ বা আহমেদ শব্দের প্রকৃত অর্থের ধারে কাছেও আসে না।

তারপরও, সত্য হচ্ছে এই যে মোহাম্মাদের ব্যাপারে বাইবেলের অন্যান্য পূর্ববর্তী অংশগুলোতে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে, যা কিনা প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত। আল্লাহ কোরআনের সুরা আরাফের (৭) ১৫৭ নাম্বার আয়াতে বলেছেন
“যারা অনুসরণ করে রাসূলের, যে উম্মী নবী; যার গুণাবলী তারা নিজদের কাছে তাওরাত (ডিউটেরোনমি, ১৮, ১৫) ও ইঞ্জিলে (গসপেল) (জন বা যোহন ১৪, ১৬) লিখিত পায়… ”
এ আয়াতের মাধ্যমে কোন শব্দের মূল হিব্রু অর্থ বিকৃত না করে, মূল প্রেক্ষাপটের সাথে সাংঘর্ষিক ব্যাখ্যা না করেও আল্লাহ প্রমাণ করেছেন যে বাইবেলের পূর্ববর্তী অংশে রাসুল মোহাম্মাদের কথা উল্লেখ আছে। বিশেষজ্ঞরা বাইবেলের আদি পুস্তক ও নববিধানসহ অন্য ধর্মের পুস্তকসমূহ হতেও রাসুল মোহাম্মাদ সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণীসমূহ সংগ্রহ করেছেন, এবং সেগুলো একত্রে সংকলন করে একাধিক পুস্তক রচনা করেছেন। সেরকম কয়েকটি পুস্তকের নাম নিচে দেয়া হলঃ
১. আল বাশারাহ বি নাবি আল-ইসলাম ফি’ত তাওরাত ওয়াল ইনজিল – লেখক ড. আহমেদ হিজাজি আস-সাকা
২. দিরাসাত ফি’ল ইয়াহুদিয়া ওয়াল মাসিহাইয়া ওয়া আদিয়ান আল হিন্দ – লেখক ড. মোহাম্মাদ জিয়াউর রহমান আল আজমি।

উপসংহার

অসংখ্য মিথ্যা আর প্রতারণার মাধ্যমে ইসলাম প্রচারের এই ভয়ঙ্কর প্রচেষ্টা লক্ষ্য করলে এইটুকু অন্তত বোঝা যায়, ধর্মগুলো মৌলিকভাবে কতখানি সস্তা আর হালকা, যে এগুলোকে মিথ্যা বলে প্রচার করার প্রয়োজন হয়। এমন হতেই পারে না যে, জাকির নায়েক না বুঝে কথাগুলো বলেছে। এটি খুব পরিষ্কার যে, জাকির নায়েক খুব ভালভাবেই জানে সে মিথ্যা বলছে, এরপরেও ইসলাম প্রচারের জন্য সে বলে যাচ্ছে। একজন প্রেমিকা তার প্রেমিকের সাথে যৌন আনন্দ ও প্রেম উপভোগের জন্য যেই গান গেয়েছে, ইসলামিস্টরা এর মধ্য থেকেও মুহাম্মদকে খুঁজে বের করেছে। এইসব মিথ্যাচার ধরিয়ে দিলেও এইসব মিথ্যুকের বিন্দুমাত্র কোন লজ্জা নেই। বেহায়ার মত একই কথা এরা বলে যাবে। খুবই জঘন্য এবং নিম্নমানের এইসব অপকর্ম। পাঠকদের কাছে অনুরোধ, এই প্রোপাগাণ্ডাগুলো যাচাই করুন এবং যুক্তি তথ্য প্রমাণ দিয়ে বিচার বিবেচনা করুন।

মূল লেখাটির সাথে বিভিন্ন তথ্যসূত্র সংযুক্তি ও পরিমার্জনাঃ সম্পাদক, সংশয় ডট কম

তথ্যসূত্র

  1. মুহাম্মদই কি কল্কি অবতার? []
  2. ভবিষ্য পুরাণে ইসলামের প্রবর্তক মুহাম্মদ! []
  3. বাইবেল শলোমনের পরমগীত []
  4. এজেকিয়েল []
  5. He is asking about the meaning of the word “Mahammadim” in the Song of Solomon in the Old Testament []


সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *