নারীবাদইসলামে নারীস্টিকি

বাল্যবিবাহ এবং ইসলামিক ডিফেন্স

বাল্যবিবাহ যে একটি সামাজিক ব্যাধি সেটা আমরা বইপত্র পড়ে নাটক সিনেমা দেখে সেই ছোটবেলা থেকেই জানি। বাল্যবিবাহ যে একটি ব্যাধি সেটা নিয়ে কোনো বিবেকবান মানুষের সন্দেহ থাকার কথা নয়, কেননা সামান্যতম বিবেকবোধ থাকলেই আমরা বুঝতে পারি যে, একটা বাচ্চা মেয়ের জন্য যৌনসংগম, গর্ভধারণ, সন্তান জন্মদান কতোটা ভয়াবহ ব্যাপার। এমন একটি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি তথাকথিত শান্তির ধর্ম ইসলাম সমর্থন করে। ইসলাম নারীকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দিয়েছে বলে মুসলিমরা দাবি করলেও ইসলামে বাল্যবিবাহ এবং পিডোফিলিয়া সমর্থনযোগ্য। ইসলামে বাল্যবিবাহ নিয়ে আবার একেক রকম মুসলিমের একেকরকম অবস্থান। পরিবার ও পরিবেশের প্রভাবে কিছুটা উদার এবং কোরআন নিয়ে পরিষ্কার জ্ঞান রাখেন না আবার, ইসলামের প্রশংসায় পঞ্চমুখ এমন মোডারেট মুসলিমদের মধ্যে বেশিরভাগই জানেনা যে তাদের তথাকথিত শান্তির ধর্ম বাল্যবিবাহ সমর্থন করে। ইসলামের অ্যাপোলজিস্ট সাহেবরা যারা নয়কে ছয় বানিয়ে ইসলামের ভুল এবং অমানবিক দিকসমূহ আড়াল করার কাজে নিয়োজিত তাদের অনেকেই কমবয়সী মেয়েদের বিয়ে করা সমর্থন করেন তবে পিডোফিলিয়ার দিকটা অস্বীকার করেন। আর যারা মাদ্রাসায় পড়েছেন দ্বীনি পরিবেশে বড় হয়েছেন তাদের কাছে পাঁচ ছয় বছর বয়সের নারীও বিবাহযোগ্য। যাইহোক, ইসলাম আসলেই বাল্যবিবাহ সমর্থন করে কিনা এবং এবিষয়ে অ্যাপোলজিস্টদের ব্যাখ্যা আদৌ গ্রহণযোগ্য কিনা সেসব আলোচনা নিয়েই এই লেখা।

কোরআনের আয়াত ৬৫:৪ এ কোরআনের বক্তা বলেছেন, মুসলিমদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের বার্ধক্যের কারণে মাসিক বন্ধ হয়ে গেছে তাদের ইদ্দতকাল হবে তিন মাস এবং যাদের বয়স এখনো পর্যন্ত ঋতুবর্তী হওয়ার বয়সে পৌঁছে নি তাদেরও ইদ্দতকাল হবে তিন মাস। ইদ্দতকাল বলতে তালাক হওয়ার পর নারীর জন্য তালাক এবং পুনর্বিবাহের মধ্যে নির্ধারিত বিরতিকে বুঝায়। মুসলিম নারীদের জন্য এই ইদ্দতকালে পুনর্বিবাহ করা নিষিদ্ধ, তাদের ওপর নির্ধারিত সময় পূর্ণ হলেই তারা নতুন বিবাহ করতে পারবে। আয়াত ৬৫:৪ থেকে আমরা পরিষ্কার ভাবেই জানতে পারি, ঋতুবর্তী হয়নি এমন বাচ্চা মেয়েও একজন মুসলিম পুরুষের স্ত্রী হতে পারে বা একজন মুসলিম পুরুষের জন্য ঋতুবর্তী হয়নি এমন বাচ্চা মেয়েও বিয়ে করা বৈধ! এ আয়াত অনুযায়ী, একজন মুসলিম পুরুষ একটা অবুঝ বাচ্চাকেও বিয়ে করতে পারে, কেননা “এখনো ঋতুর বয়সে পৌঁছে নি” কথাটা একটা অবুঝ বাচ্চার জন্যও প্রযোজ্য। অবুঝ বয়সের বাচ্চাদের বিয়ে করা বৈধ মানে অবুঝ বয়সের বাচ্চাদের সাথে সেক্স করাও বৈধ। হ্যা মুসলিমরা যে ধর্মকে শান্তির ধর্ম বলে দাবি করেন যে ধর্মকে শ্রেষ্ঠ জীবন বিধান বলে দাবি করেন সেই তথাকথিত শান্তির ধর্ম এবং শ্রেষ্ঠ জীবন বিধান অনুযায়ী একজন মুসলিম পুরুষ যিনি যেই বয়সেরই হোক না কেন একটা তিন চার বছর বয়সী বাচ্চাকেও বিয়ে করে সেক্স করতে পারেন। এমন জঘন্যতম অনৈতিক কাজের বৈধতাই সেই তথাকথিত শ্রেষ্ঠ জীবন বিধান দেয়।

65:4
وَالَّٰـٓئِى يَئِسْنَ مِنَ الْمَحِيضِ مِن نِّسَآئِكُمْ إِنِ ارْتَبْتُمْ فَعِدَّتُهُنَّ ثَلٰثَةُ أَشْهُرٍ وَالَّٰـٓئِى لَمْ يَحِضْنَ ۚ وَأُولٰتُ الْأَحْمَالِ أَجَلُهُنَّ أَن يَضَعْنَ حَمْلَهُنَّ ۚ وَمَن يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَل لَّهُۥ مِنْ أَمْرِهِۦ يُسْرًا
তোমাদের যে সব স্ত্রী আর ঋতুবর্তী হওয়ার আশা নেই তাদের ইদ্দত সম্পর্কে তোমরা সন্দেহ করলে তাদের ইদ্দতকাল হবে তিন মাস এবং যারা এখনো ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি তাদেরও; আর গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। আর যে আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ্‌ তার জন্য তার কাজকে সহজ করে দেন।

ইসলাম যে কেবল বাল্যবিবাহ সমর্থন করে না বরং একেবারে বাচ্চা মেয়ের সাথেও সেক্স করা সমর্থন করে তার প্রমাণ কোরআন থেকেই পাওয়া যায়। কোরআনের আয়াত ৩৩:৪৯ এ বলা হয়েছে, পুরুষ নারীদেরকে বিয়ে করে সহবাস করার পূর্বেই যদি তালাক দিয়ে দেয় তাহলে তাদের সেইসব স্ত্রীদের ওপর কোনো ইদ্দতকাল প্রযোজ্য হবে না। অর্থাৎ, বিয়ের পর স্বামীর সাথে কখনো সেক্স হয়নি এমন নারী স্বামীর কাছ থেকে তালাক পেলে সাথে সাথে পুনর্বিবাহ করতে পারবে, তাদের জন্য তালাক এবং পুনর্বিবাহের মধ্যে কোনো বিরতি নেই। যার অর্থ দাঁড়ায়, স্বামী তালাক দিলে সেইসব নারীদের জন্যই ইদ্দতকাল প্রযোজ্য যাদের স্বামীর সাথে সেক্স করা হয়েছে। অপরদিকে আয়াত ৬৫:৪ থেকে আমরা জানতে পারি, একজন মুসলিম পুরুষের স্ত্রীদের মধ্যে যারা এখনো ঋতুর বয়সে পৌঁছে নি তাদের ওপরও ইদ্দতকাল প্রযোজ্য। অর্থাৎ ঋতুর বয়সে পৌঁছে নি এমন নারীদেরকে তাদের স্বামী তালাক দিলে তাদের বেলায়ও তালাক এবং পুনর্বিবাহের মধ্যে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত বিরতি প্রযোজ্য হবে। যেহেতু স্বামীর সাথে সেক্স করলেই তালাকের পর নারীর জন্য ইদ্দত কাল প্রযোজ্য হয় সেহেতু, এখনো ঋতুবর্তী হয় নি এমন বাচ্চা মেয়ের জন্যও তিন মাস ইদ্দতকাল প্রযোজ্য হওয়া প্রমাণ করে, ইসলাম ছোট্ট বাচ্চা মেয়েদের সাথেও সেক্স করা সমর্থন করে।

33:49
يٰٓأَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُوٓا إِذَا نَكَحْتُمُ الْمُؤْمِنٰتِ ثُمَّ طَلَّقْتُمُوهُنَّ مِن قَبْلِ أَن تَمَسُّوهُنَّ فَمَا لَكُمْ عَلَيْهِنَّ مِنْ عِدَّةٍ تَعْتَدُّونَهَا ۖ فَمَتِّعُوهُنَّ وَسَرِّحُوهُنَّ سَرَاحًا جَمِيلًا
হে মুমিনগণ, যখন তোমরা মুমিন নারীদেরকে বিবাহ করবে অতঃপর তাদের সাথে সহবাসের পূর্বেই তালাক দিয়ে দেবে তবে তোমাদের জন্য তাদের কোন ইদ্দত নেই যা তোমরা গণনা করবে। সুতরাং তাদেরকে কিছু উপহার সামগ্রী প্রদান কর এবং সুন্দরভাবে তাদেরকে বিদায় দাও।

তাফসীরের প্রমাণ

কোরআনের আয়াত ৬৫:৪ সম্পর্কে তাফসীরকারীরা কি বলেন তাও দেখে নেওয়া যাক। তাফসীরকারীরা কি কিভাবে ব্যাখ্যা করেছেন সেও দেখে নেওয়া প্রয়োজন।

শায়খ আবু বকর মুহাম্মদ যাকারিয়া

(১) এ আয়াতে তালাকে ইদ্দতের আরও কিছু অবস্থা ও তার হুকুম আহকাম বর্ণিত হচ্ছে, সাধারণ অবস্থায় তালাকের ইদ্দত পূর্ণ তিন হায়েয। কিন্তু যেসব মহিলার বয়োঃবৃদ্ধি অথবা কোন রোগ ইত্যাদির কারণে হায়েয আসা (রজঃস্রাব/ঋতুস্রাব) বন্ধ হয়ে গেছে, এমনিভাবে যেসব মহিলার বয়স না হওয়ার কারণে এখনও হায়েয আসা শুরু হয়নি তাদের ইদ্দত আলোচ্য আয়াতে তিন হায়েযের পরিবর্তে তিন মাস নির্দিষ্ট করা হয়েছে এবং গর্ভবতীর্ণ স্ত্রীদের ইদ্দত সন্তানপ্রসব সাব্যস্ত করা হয়েছে, তা যতদিনেই হােক। (ফাতহুল কাদীর)

কোরআন ৬৫:৪
তাফসীর আবু বকর যাকারিয়া

আহসানুল বায়ান

(১) এ হল সেই মহিলাদের ইদ্দত, যাদের বার্ধক্যের কারণে মাসিক বন্ধ হয়ে গেছে অথবা যাদের এখনোও মাসিক আরম্ভ হয়নি। জ্ঞাতব্য যে, বিরল হলেও এমনও হয় যে, মেয়ে সাবালিকা হয়ে যায়, অথচ তার মাসিক আসে না।
(২) তালাকপ্রাপ্তা মহিলা যদি গর্ভবতী হয়, তবে তার ইদ্দত হল সন্তান প্রসব করা সময় পর্যন্ত, যদিও সে তালাকের দ্বিতীয় দিনে প্রসব করে তবুও। এ ছাড়া আয়াতের বাহ্যিক অর্থ থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, প্রত্যেক গর্ভবতীর ইদ্দত এটাই; তাতে সে তালাকপ্রাপ্তা হোক অথবা তার স্বামীর মৃত্যু হয়ে থাকুক। বহু হাদীস থেকেও এর সমর্থন হয়। (আরো জানার জন্য দ্রষ্টব্য: বুখারী ও মুসলিম সহ অন্যান্য সুনান গ্রন্থসমূহের তালাক অধ্যায়) গর্ভবতী ছাড়া অন্যান্য যে মহিলাদের স্বামী মৃত্যু বরণ করবে, তাদের ইদ্দত হল ৪ মাস ১০ দিন। (সূরা বাক্বারাহ ২:২৩৪ নং আয়াত)

কোরআন ৬৫:৪
তাফসীর আহসানুল বায়ান

অ্যাপোলোজেটিক দাবিসমূহ

কোরআন বাচ্চা মেয়ে বিয়ে করা নিষিদ্ধ করেছে

বাল্যবিবাহ কিংবা পিডোফিলিয়া যে এক জঘন্য কাজ সেটা আজকের আধুনিক যুগের অ্যাপোলজিস্টরা ভালোভাবেই উপলব্ধি করতে পারেন, তবে ধর্মান্ধতার কারণে তারা মানতে নারাজ যে, কোরআন এমন একটি জঘন্য কাজ সমর্থন করে। সেইজন্যই তারা হাদিস তাফসীরের সকল প্রমাণ প্রত্যাখ্যান করেন এবং বোঝাতে চান যুগ যুগ ধরে তাদের নিজেদের ইসলামিক স্কলারদের দ্বারাই কোরআনের আয়াত ৬৫:৪ ভুলভাবে অনুবাদ করা হয়েছে বা ভুল অর্থ প্রয়োগ করা হয়েছে। তারা ৬৫:৪ আয়াতের পুনর্ব্যাখ্যা প্রদান করেন এবং অন্যান্য আয়াত তুলে ধরে বোঝাতে চান, ইসলাম বাচ্চা মেয়েদের বিয়ে করা সমর্থন করে না। কোরআনের আয়াত ৪:৬ অ্যাপোলজিস্টদের একটু বেশি পছন্দের। এই আয়াতে ইয়াতিমদেরকে পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে যে পর্যন্ত না তারা বিবাহের বয়সে পৌঁছে এবং তাদের মধ্যে বিবেকের পরিপক্বতা দেখা গেলে তাদেরকে তাদের সম্পদ দিয়ে দিতে নির্দেশ করা হয়েছে। অ্যাপোলজিস্টদের দাবি, এ আয়াত প্রমাণ করে যে ইসলাম অনুযায়ী বিয়ের বয়স তখনি হয় যখন একজন মানুষ প্রাপ্তবয়স্ক হয়, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই বিয়ে ইসলাম সমর্থন করেনা।

4:6
وَابْتَلُوا الْيَتٰمٰى حَتّٰىٓ إِذَا بَلَغُوا النِّكَاحَ فَإِنْ ءَانَسْتُم مِّنْهُمْ رُشْدًا فَادْفَعُوٓا إِلَيْهِمْ أَمْوٰلَهُمْ ۖ وَلَا تَأْكُلُوهَآ إِسْرَافًا وَبِدَارًا أَن يَكْبَرُوا ۚ وَمَن كَانَ غَنِيًّا فَلْيَسْتَعْفِفْ ۖ وَمَমن كَانَ فَقِيرًا فَلْيَأْكُلْ بِالْمَعْرُوفِ ۚ فَإِذَا دَفَعْتُمْ إِلَيْهِمْ أَمْوٰلَهُمْ فَأَشْهِدُوا عَلَيْهِمْ ۚ وَكَفٰى بِاللَّهِ حَسِيبًا
আর তোমরা ইয়াতীমদেরকে পরীক্ষা কর যতক্ষণ না তারা বিবাহের বয়সে পৌঁছে। সুতরাং যদি তোমরা তাদের মধ্যে বিবেকের পরিপক্কতা দেখতে পাও, তবে তাদের ধন-সম্পদ তাদেরকে দিয়ে দাও। আর তোমরা তাদের সম্পদ খেয়ো না অপচয় করে এবং তারা বড় হওয়ার আগে তাড়াহুড়া করে। আর যে ধনী সে যেন সংযত থাকে, আর যে দরিদ্র সে যেন ন্যায়সঙ্গতভাবে খায়। অতঃপর যখন তোমরা তাদের ধন-সম্পদ তাদের নিকট সোপর্দ করবে তখন তাদের উপর তোমরা সাক্ষী রাখবে। আর হিসাব গ্রহণকারী হিসেবে আল্লাহ যথেষ্ট।

প্রথমে আমাদের আগে বুঝতে হবে আয়াত ৪:৬ কি বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে। আর এটা বুঝা কঠিন কিছু নয় যে আয়াতটি বিয়ের বয়স নিয়ে আলোচনা করছেনা অথবা বিয়ের বয়স নির্ধারন করছেনা। আয়াতটি তাদের ব্যাপারে বলছে যাদের ওপর ইয়াতিমদের অভিভাবকত্ব আছে, তারা যেন ইয়াতিমদের ধন-দৌলত ইয়াতিমদেরকে দিয়ে দেয়, যখন ইয়াতিমদেরকে মানসিকভাবে পরিপক্ব মনে হবে। “বিয়ের বয়সে পৌঁছানো” বলতে কেবল বোধবুদ্ধির  বিকাশ হওয়াকেই নির্দেশ করা হয়েছে। বোধবুদ্ধির বিকাশ হলেই বিয়ে বৈধ হবে বা তার আগে হবে না এমন কিছুই আয়াতটি নির্ধারন করছে না। আমরা যদি ধরেও নেই অ্যাপোলজিস্টদের এই দাবি সঠিক তাহলেও তা আয়াত ৬৫:৪ এর সাথে বৈপরীত্য তৈরি করে।

৬৫:৪ কেবল ইদ্দতের ব্যাপারে বলে, যৌন সঙ্গমের ব্যাপারে নয়

অনেকেই দাবি করেন, আয়াত ৬৫:৪ এ কেবল তালাক প্রাপ্ত নারীর ওপর প্রযোজ্য ইদ্দতকাল নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং আয়াতে আলোচিত কোনো নারীদের সাথেই যৌন সঙ্গমের কথা বলা হয় নি। অ্যাপোলজিস্টদের এমন দাবি যে একেবারেই ভিত্তিহীন তার প্রমাণ আয়াত ৩৩:৪৯ যা উপরেও আলোচনা করা হয়েছে।

আয়াত ৩৩:৪৯ এর তাফসীর তুলে ধরা হলো যেন বিষয়টা আরও সহজবোধ্য হয় সবার কাছে।

(১) বিবাহের পর যে নারীর তার স্বামীর সাথে সঙ্গম হয়েছে ও সে যুবতী আছে, এই অবস্থায় সে তালাকপ্রাপ্তা হলে তার ইদ্দত তিন মাসিক। (সূরা বাক্বারাহ ২:২২৮ আয়াত) এখানে ঐ সকল নারীদের বিধান বর্ণনা করা হচ্ছে যাদের বিয়ে হয়েছে কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গম হয়নি। এমতাবস্থায় যদি তালাক হয়ে যায়, তবে কোন ইদ্দত নেই। অর্থাৎ এই রকম সঙ্গমের পূর্বেই তালাকপ্রাপ্তা নারী কোন ইদ্দত পালন করা ছাড়াই যদি অন্য পুরুষকে বিবাহ করতে চায়, তাহলে সাথে সাথে বিবাহ করতে পারবে। তবে যদি সঙ্গমের পূর্বে স্বামীর মৃত্যু হয়, তবে তাকে চার মাস দশ দিন ইদ্দত পালন করতেই হবে। (ফাতহুল ক্বাদীর, ইবনে কাসীর) ‘স্পর্শ করা বা হাত লাগানো’ বলে সঙ্গমের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। نكاح শব্দটি বিশেষ করে সঙ্গম এবং বিবাহ বন্ধন দুই অর্থেই ব্যবহার হয়। এখানে বিবাহ বন্ধনের অর্থে ব্যবহার হয়েছে। উক্ত আয়াত থেকে দলীল নিয়ে বলা হয়েছে যে, বিবাহের পূর্বে তালাক হয় না। কারণ এখানে তালাকের বর্ণনা বিবাহের বর্ণনার পর এসেছে। সুতরাং যে সকল ফকীহগণ এই কথা বলেন যে, যদি কোন ব্যক্তি বলে যে, ‘যদি আমি অমুক নারীকে বিয়ে করি, তবে সে তালাক’ তবে তাদের নিকট সেই নারীর সাথে বিয়ে হওয়া মাত্র তালাক হয়ে যাবে। অনুরূপ অনেকে বলেন যে, যদি সে বলে যে, ‘আমি যে নারীকেই বিয়ে করব তাকে তালাক’ তবে সে যে কোন নারীকেই বিয়ে করবে তালাক হয়ে যাবে। উক্ত মত দুটি সহীহ নয়। যেহেতু হাদীসে পরিষ্কার ভাষায় বলা হয়েছে, “বিবাহের পূর্বে তালাক নেই।” (ইবনে মাজাহ) “আদম সন্তান যার মালিক নয়, তার তালাক হয় না।” (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, আহমাদ ২১৮৯) এতে পরিষ্কার হয়ে গেল যে, বিয়ের পূর্বে তালাক দেওয়া একটা ফালতু কাজ, শরীয়তে যার কোন স্থান নেই।
(২) এই সামগ্রী হল, যদি মোহর ধার্য হয়ে থাকে, তবে তার অর্ধেক মোহর। আর ধার্য্য হয়ে না থাকলে সামর্থ্য অনুযায়ী কিছু প্রদান করা হবে।
(৩) অর্থাৎ, কোন প্রকার কষ্ট না দিয়ে, ইজ্জত ও সম্মানের সাথে তাকে বিদায় করে দাও।

কোরআন ৩৩:৪৯
তাফসীর আহসানুল বায়ান

আয়াতটি বিধবা নারীদের নির্দেশ করেছে

৬৫:৪ আয়াতটি নিয়ে অ্যাপোলজিস্টরা এরকম দাবিও করেন যে, আয়াতটি নিশ্চিত ভাবে প্রকাশ করে না যে, একজন মুসলিম পুরুষ বাচ্চা মেয়েদের সাথে যৌনসংগম করতে পারে। কেননা, স্বামীর সাথে যৌনসংগম না হলেও বিধবাদের জন্য ইদ্দত প্রযোজ্য আর এমন ঘটনা ঘটতেই পারে যেখানে একজন পুরুষ কোনো বাচ্চা মেয়েকে বিয়ে করে সেই মেয়ের বয়ঃসন্ধি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে থাকা অবস্থায় মারা গেলো।

এই দাবিটি একেবারেই অকার্যকর কেননা, কোরআন সকল বিধবাদের জন্য চারমাস দশদিন ইদ্দত নির্ধারন করেছে।

2:234
وَالَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوٰجًا يَتَرَبَّصْنَ بِأَنفُسِهِنَّ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا ۖ فَإِذَا بَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا فَعَلْنَ فِىٓ أَنفُسِهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ ۗ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
আর তোমাদের মধ্য থেকে যারা মারা যাবে এবং স্ত্রীদেরকে রেখে যাবে, তাদের স্ত্রীগণ চার মাস দশ দিন অপেক্ষায় থাকবে। অতঃপর যখন তারা ইদ্দতকাল পূর্ণ করবে, তখন তারা নিজদের ব্যাপারে বিধি মোতাবেক যা করবে, সে ব্যাপারে তোমাদের কোন পাপ নেই। আর তোমরা যা কর, সে ব্যাপারে আল্লাহ সম্যক অবগত।

বাল্যবিবাহ কেন সমর্থনযোগ্য নয়?

শারীরিক নির্যাতন

বাল্যবিবাহ একটি অমানবিক এবং অসভ্য প্রথা বলে বিবেচিত অনেক কারণেই। তার মধ্যে অন্যতম প্রধান কারণ হলো বাল্যবিবাহ একটি বাচ্চা মেয়ের ওপর শারীরিক নির্যাতনের বৈধতা দেয়। একজন পুরুষকে একটা বাচ্চা মেয়ে বিয়ে করার বৈধতা দেওয়ার অর্থ প্রকৃতপক্ষে সেই মেয়ের ওপর শারীরিক নির্যাতন করার বৈধতা দেওয়া। না, এখানে শারীরিক নির্যাতন বলতে ‘মারধোর করা’ বোঝানো হচ্ছে না। বাচ্চা মেয়েদের সাথে সঙ্গম করা মারধোর করার চেয়েও অনেক ভয়াবহ এক শারীরিক নির্যাতন। মারধোরের চেয়েও সঙ্গমের কারণে একটি অল্পবয়স্ক কিশোরীর মারা যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক অনেক বেশি। ইসলাম এখনো অব্ধি ঋতুস্রাব হওয়ার বয়সে পৌঁছে নি এমন বাচ্চা মেয়েদের বিয়ে করার বৈধতা দেয়, তাদের সাথে সেক্স করার বৈধতা দেয় যা প্রকৃতপক্ষে শারীরিক নির্যাতন করার বৈধতা ছাড়া কিছুই নয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ যখন যৌন চাহিদা মেটাতে তার বড়সড় শিশ্নটি ঋতুর বয়সে পৌঁছে নি এমন একটি বাচ্চা মেয়ের ছোট্ট যোনিপথে প্রবেশ করান তখন তিনি অপার যৌন সুখ উপভোগ করলেও তারচেয়ে অনেক অনেক বেশি যন্ত্রণা ভোগ করতে হয় সেই বাচ্চা মেয়েটিকে। কোনো প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ যখন কোনো বাচ্চা মেয়ের সাথে যৌন সঙ্গম করেন তখন বাচ্চা মেয়েটা কিন্তু কোনো যৌন সুখ উপভোগ করেনা, তার কারণ বাচ্চা মেয়েটার কোনো যৌন চাহিদা না থাকা। এখনো অব্ধি বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছেনি এমন অল্পবয়স্ক নারীর না থাকে যৌন অনুভূতি, না তাদের শরীর যৌনসংগমের জন্য উপযুক্ত, না তাদের শরীর যৌনসংগমের আঘাত সহ্য করতে সক্ষম। অর্থাৎ, বাচ্চা মেয়েদের সাথে যৌনসংগমের অর্থ দাঁড়ায় নিজের যৌন চাহিদা মেটাতে একটি মেয়ের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো। ইসলাম নারীকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দিয়েছে বলে যারা স্বস্তি খুঁজে বেড়ান তাদেরকে মনে রাখতে হবে যে, ইসলাম একটা বাচ্চা মেয়ের ওপর যৌনসংগমের নামে এধরনের শারীরিক নির্যাতনের বৈধতা দেয়। আপনার কি আসলেই মনে হয় বাল্যবিবাহ তথা ‘বাচ্চা মেয়েদের ওপর শারীরিক নির্যাতন’ কোনো মহান এবং পরম দয়ালু ঈশ্বর সমর্থন করতে পারেন?

স্বাস্থ্যগত প্রভাব

বাল্যবিবাহের সবচেয়ে ভয়াবহ দিকের কথা যদি বলতে হয় তাহলে বলতে হবে বাল্যবিবাহের স্বাস্থ্যগত প্রভাব। বাল্যবিবাহের কারণে পৃথিবীর ইতিহাসে অসংখ্য কিশোরী মারা গেছে, যাচ্ছে এবং যেতে থাকবে যতদিন না ধর্ম ও কুশিক্ষার প্রভাবে এমন ভয়াবহ ব্যাধি সমাজে টিকে থাকবে। গর্ভধারণ এবং প্রসবাবস্থার জটিলতা কমবয়সী নারীর মৃত্যুর অন্যতম কারণ। ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সী গর্ভবতী নারীদের প্রসবাবস্থায় মৃত্যুর সম্ভাবনা ২০ বছর বয়সী নারীদের তুলনায় দ্বিগুণ। ১৫ বছরের কম বয়সী গর্ভবতী নারীদের প্রসবাবস্থায় মৃত্যুর সম্ভাবনা ৫ থেকে ৭ গুণ (1)। ১৫ বছর বয়সের পূর্বে সন্তান জন্মদান করে এমন নারীদের ফিস্টুলা বিকশিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৮৮% (1)। ফিস্টুলা জীবনব্যাপী ইনফেকশন ও ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় (1)। বাল্যবিবাহ যে কেবল মায়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভয়ংকর তা নয়, একইভাবে গর্ভের বাচ্চার জন্যও ভয়ংকর। প্রাপ্তবয়স্ক এবং সন্তান জন্মদানে উপযোগী নারীর শরীর যেমন গর্ভের বাচ্চার জন্য সহায়ক তেমনি অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং সন্তান জন্মদানে অনুপযোগী নারীর শরীর গর্ভের বাচ্চার জন্য ভয়াবহ। ১৮ বছর বয়সের কম বয়সী নারীদের অপরিণত সন্তান জন্মদান বা কম ওজনের সন্তান জন্মদানের সম্ভাবনা ৩৫-৫৫%। আবার, শিশু মৃত্যুর হার ৬০% যখন মায়ের বয়স ১৮ বছরেরও কম। কিশোরী বয়সের মা থেকে জন্ম নেওয়া বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক দূর্বল হয় এবং অপুষ্টিতে ভোগার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে (1)।

মানসিক প্রভাব

আমরা প্রত্যেকেই নিজের বাবা মাকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসি। আমাদের যাদের মা বাবা আছেন তারা সবসময় মা বাবার সাথেই থাকতে ভালোবাসি। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর আমরা প্রয়োজনে বাবা মায়ের কাছ থেকে দূরে থাকতে পারি, দূরে থাকাটা সহ্য করে নিতে পারি। তবে এটি আমরা সবাই বুঝি, বাচ্চা ছেলেমেয়েদের জন্য মা বাবা ছেড়ে দূরে থাকাটা অত্যন্ত কঠিন একটি ব্যাপার। বাল্যবিবাহের কারণে অল্পবয়স্ক একটা মেয়েকে তার মা বাবা পরিবার স্বজন ছেড়ে অন্যকোন পুরুষের ঘরে চলে যেতে হয় সারাজীবনের জন্য। অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের নিজের মা বাবা পরিবার ছেড়ে দূরে থাকা সহ্য করার মতো মানসিক পরিপক্বতা থাকেনা। অন্তত যে মানুষটি গর্ভে ধারণ করেছে সেই মাকে ছেড়ে দূরে থাকার মানসিক প্রস্তুতি কিশোরী বয়সের মেয়েদের মধ্যে থাকেনা। সেজন্যই মানসিকভাবে পরিপক্ব হওয়ার আগেই বিয়ে কিশোরীর ওপর একপ্রকার মানসিক নির্যাতন বলেই গণ্য হবে।

ছেলেদের কিন্তু অপ্রাপ্তবয়সে মা বাবার ঘর সারাজীবনের জন্য ছেড়ে অন্যের ঘরে যেতে হয় না। যে মানসিক চাপ একটি অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলের ওপর দিয়ে যায় না সেই মানসিক চাপ কেন একটি অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের ওপর দিয়ে যাবে? এটা অবশ্যই একজন কিশোরীর ওপর অবিচার বলে গণ্য হবে। ছেলেরা তার ছোটবেলা তার কৈশোর জীবন তার নিজের মা বাবার সাথে কাটাতে পারলে মেয়েরা কেন পারবে না? মেয়েরাও তার ছোটবেলা তার কৈশোর জীবন তার নিজের মা বাবার সাথে কাটাবে এবং প্রাপ্তবয়স্ক হলেই সিদ্ধান্ত নিবে বিয়ে করবে কি করবে না, বিয়ের পর বাবা মা ছেড়ে স্বামীর বাড়ি যাবে কি যাবে না।

বিয়ে একজন মানুষের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত জীবনের অংশ, সারাজীবন একসাথে থাকবে এমন উদ্দেশ্য থেকেই মানুষ বিয়ে করে। অর্থাৎ, বিয়ের সিদ্ধান্ত মানে সারাজীবনের জন্য ব্যক্তিগতজীবনের একটি সিদ্ধান্ত আর এমন একটি সিদ্ধান্ত নিতে অবশ্যই প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া প্রয়োজন। একটা মেয়ে সারাজীবনের জন্য কোন পুরুষের সাথে থাকবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার তার আছে আর সেই সিদ্ধান্ত সে তখনি নিতে পারে যখন সে প্রাপ্তবয়স্ক এবং মানসিকভাবে পরিপক্ব। অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের বিয়ের পিড়িতে বসতে বাধ্য করার অর্থ দাঁড়ায়, তাদের ব্যক্তিগতজীবনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার কেড়ে নেওয়া।

আশাকরি উপরের আলোচনায় পরিষ্কারভাবেই প্রকাশ পেয়েছে যে, বাল্যবিবাহ কেন গ্রহণযোগ্য নয়। হ্যা জানি তারপরও অনেকেই বাল্যবিবাহ সমর্থন করবেন এবং আরও জানি, তারা কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের লোক নন। তাদের ভেতরে থাকা শিশুকামিতা তাদের বিবেকবোধ ও নৈতিকতাকে বাক্সবন্দি করে রেখেছে। নিজেদের যৌন চাহিদা মেটাতে তারা একটা বাচ্চা মেয়েকেও মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারেন।


তথ্যসূত্র

Marufur Rahman Khan

Marufur Rahman Khan is an Atheist Blogger from Bangladesh.

8 thoughts on “বাল্যবিবাহ এবং ইসলামিক ডিফেন্স

  • Sanvi Salehin

    খুব ভালো লিখেছেন! তথ্যবহুল লেখা, পড়ে ভালো লাগলো

    Reply
    • Marufur Rahman Khan

      ধন্যবাদ ভাই।

      Reply
    • মুনজির

      তোর ইসলামিক সালেহীন নাম পরিবর্তন করা উচিত ছিলো

      Reply
  • বাল্য টা নিয়ে আপনার সমস্যা না, আপনার সমস্যাটা বিবাহ নিয়ে, বিবাহ ব্যতীত যদি বাল্য সঙ্গম হয় তাহলে নিশ্চয় আপনাদের সমস্যা হতো না তাই বুঝলাম ( নিচে বিবাহ ব্যতীত কত বাল্য সঙ্গম হয় দিয়ে গেলাম)

    এই আয়াত নাযিল হয় প্রায় ৭ম শতাব্দীতে, যখন বিশ্বজুড়ে কন্যা শিশুকে জীবন পুতে ফেলা হতো, অমানবিক নির্যাতন করতো, সেই নারীদের ইসলাম বিবাহ করার জন্য স্ব মতামত প্রদানের সুযোগ দিয়েছিল। পুরুষের তুলনায় তাদের মর্যাদা (মা হিসেবে) বেশি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে তাদের মতামত দেওয়ার সুযোগ করেছিল।

    বাল্যবিবাহ বাংলাদেশে হয় না এটা বলা মিথ্যাচার, কিন্তু কি কি কারণে বাল্যবিবাহ হচ্ছে তা নিয়ে কথা বলা তো খুনীকে না থামিয়ে নিহত বা আহত মানুষকে নিয়ে চিৎকার করা। বর্তমানে বাংলাদেশের বেশির ভাগ তথাকথিত বাল্যবিবাহ হয় এর কারণগুলো আপনার সমাজে আপনার পথঅনুসারী সমাজবাসীর দ্বারা মেয়েগুলো ইভটিজিং এর শিকার হচ্ছে, যৌনাঙ্গ চিড়ে সঙ্গমের ঘটনা ঘটছে, ইতিম বা অসহায়দের অন্ন বা বাসস্থানের অভাবের জন্য ঋতু শুরু না হওয়ার পূর্বে তাকে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে নাহলে তাকে শিশুশ্রম বা পতিতার কাজ করে জীবন নির্বাহ করতে হবে, নিরাপত্তা যেখানে বিঘ্ন সেখানে বাল্যবিবাহ নিয়ে কথা বলা (কুরআন সমর্থন করলো বা না করলো) বিলাসিতা । ইসলামি আইন নিয়ে যাদের এত গা-জ্বালা এই সেকুলার দেশে সেকুলার সংবিধান থাকা দেশে এই মৌলিক(অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান) সমস্যাগুলো সমাধান করাটা কি তাদের করা দায়িত্ব নয়?

    বর্তমানে দেশে ঋতুবতী না হওয়া তথাকথিত বাল্য থাকা কতনারী তথাকথিত প্রেম নামে যৌন সঙ্গম করছে তার ইয়াত্তা নাই। নিচের প্রতিবেদন পড়ুন,manusherjonno.org এ বলা হয়➤ ঢাকা, ০৯ জানুয়ারি, ২০২১: করোনাকালে সারাদেশে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ ও শিশুদের জনসমাগমের অনুপস্থিতি সত্ত্বেও ২০২০ সালের জানুয়ারী থেকে ডিসেম্বর সময়কালে ৬২৬ শিশু ধর্ষণের শিকার এবং বাল্যবিবাহ ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশের শিশুদের সার্বিক পরিস্থিতি সার্বিকভাবে উদ্বেগজনক বলে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের এক পর্যালোচনায় উঠে এসেছে।

    ৫টি জাতীয় বাংলা দৈনিক- প্রথম আলো, যুগান্তর, সমকাল, ইত্তেফাক, কালের কণ্ঠ এবং তিনটি জাতীয় ইংরেজি দৈনিক ষ্টার, নিউ এজ এবং ঢাকা ট্রিবিউনে প্রকাশিত শিশু অধিকার বিষয়ক সংবাদ পর্যালোচনা অনুযায়ী এই সময়ে ৭১৬ শিশু ধর্ষণের শিকার এবং বাল্যবিবাহ ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় বছরজুড়ে করোনা পরিস্থিতি সত্ত্বেও করোনাকালে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৬২৬ জন শিশু এবং এই সময়ে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ৩৭ জন শিশুকে। অন্যদিকে বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে ১০১ শিশু।

    http://www.manusherjonno.org/latest_stories/%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%81-%E0%A6%A7%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%A3-%E0%A6%93-%E0%A6%AC%E0%A6%BE/

    Reply
    • SPORTS LOVER

      ২ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।তাই বলে আপনি ২ বছরের শিশুকে বিয়ে করতে বলবেন?

      Reply
  • Nayem

    Tusar vai er shate amio shomot. Kintu apnader ar akta kotha mone rakte hoi quran er onk ayat nazil hoto nabi s.a.w k johkon kew kono prosno korto oi prosno korto . Tader kono somossa oitar somadan hisabe quran er ayat nazil hoto.
    Ar oi time child marriage sara bisshe hoito. Jeita amra history deklei jante pari. So oi tar prekha pote ei aytat gulo nazil hoice. Eikane Islam child marriage support kore nh. Islam biyer kono exact age bola hoi nai. Recommend kora hoice early marriage because of sins we commit like zina. But eikane force kora jabe nh maye k neither chele k. Amra akn dekhi 14-19 onekei relationship ache and tader maje saririk somporko o ache toh oita ki nari nirjaton? 10 bosor er meye o akn saririk somporko kore. Tar somoboisi chele er shate kew kew abr boro der shete 20-23 bosor er cheleder shate eita ki child abuse nh? Eita nh karon eita meye nijer icchai korche, same thing jodi 2 jon ekshete biye kore saririk somporko kore oita te apnader problem. Quran bolche tar manei je support kore eita apnr banano kotha. Apnake jante hbe quran ki karone bolche kon somoi bolche. Akn jodi child marriage nh age hoto oi somoi manus kivabe divorce nibe ei jonnoi oi aytat najil hoice

    Reply
  • লিলিথ

    দুনিয়াব্যপী চাইল্ড ম্যারেজ হইতো বলে একজন নবীকেও সেই জঘণ্য সিস্টেমটা মেনে নিতে হবে কেন? একজন নবী তো আর দশটা সাধারণ মানুষের চেয়ে বেশি সমঝদার হবার কথা, উনারা বুঝেন না এটা একটা সিরিয়াস সমস্যা!?

    ⚠️মদ হারাম করতে পারলে বাল্যবিবাহ হারাম করতে পারল না কেন?????

    Reply
  • লিলিথ

    @Tusar আপনাকে কে বলল অপ্রাপ্তবয়স্কদের সেক্স করা নিয়ে কারো আপত্তি নাই? সব সভ্য দেশেই P3d0philia ভীষণভাবে ঘৃণিত। তবে উভয়পক্ষ অপ্রাপ্তবয়স্ক হলে আর পরস্পরের সম্মতিতে সঙ্গম করে থাকলে তাদের কাউকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া যায় না। তার মানে এই না, যে এটা সামাজিকভাবে স্বীকৃতি। হ্যাঁ, এটা বলতে পারেন, আমাদের সাউথ এশিয়ানদের মত বাপ মা তাদের সন্তানদের সেক্স করা থেকে বিরত রাখতে হুমকি, শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন করে না৷ (কারণ এতে পরবর্তীতে সুস্থ যৌন আচরণে সমস্যা তৈরি হয়) কিন্তু তারাও তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করে টনএজারদের বোঝাতে, কমবয়সী কেউ যৌন সম্পর্কে জড়ালে তার কি কি ক্ষতি হতে পারে৷ তবে যদি এমন সম্পর্কে জড়িয়েই পড়ে তাহলে তাদের নিরাপদ থাকার পরামর্শ ও ব্যবস্থা অন্তত করে দেয়৷
    উন্নত দেশের সবাই সচেতন বা সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল বা যত্নশীল তা বলা যাবে না। কনজারভেটিভ খ্রিস্টানদের কারণে অনেক স্কুলেই “সেক্স এডুকেশন” কোর্সটা চালু করা সম্ভব হচ্ছে না কিন্তু তারা অন্তত চেষ্টা করছে। আর আমরা “সেক্স একটা disgusting topic” ভাবা জাতি অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপে পিষ্ট হয়ে যাচ্ছি।

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *