ধর্মহিন্দুধর্ম

বেদে অজাচার

হিন্দুদের আদিমতম ধর্মগ্রন্থ হল ঋগ্বেদ। এই ঋগ্বেদের অনেক স্থানেই অজাচারী দেবতাদের উল্লেখ পাওয়া যায়।

ঋগ্বেদের দশম মণ্ডলের দশম সুক্তে যম ও যমী  নামক দুই যমজ ভাইবোনের মধ্যে অজাচারমূলক কথোপকথন দেখা যায়। এখানে ভগিনী  যমী বারংবার যমকে যৌনমিলনের জন্য আহ্বান করতে থাকেন, যদিও যমের দৃষ্টিতে অজাচার গর্হিত ছিল এবং এতে তিনি সম্মত হননি।

পুরো কথোপকথনটি নিচে উদ্ধৃত করা হল-

১। (যমী ও যম যমজ ভ্রাতৃভগিনী, তন্মধ্যে যমী যমকে কহিতেছেন)–বিস্তীর্ণ সমুদ্রমধ্যবর্তী এই দ্বীপে আসিয়া এই নির্জন প্রদেশে তোমার সহবাসের জন্য আমি অভিলাষিণী, কারণ গর্ভাবস্থা অবধি তুমি আমার সহচর। বিধাতা মনে মনে চিন্তা করিয়া রাখিয়াছেন, যে তোমার ঔরসে আমার গর্ভে আমাদিগের পিতার এক সুন্দর নপ্তা (নাতি) জন্মিবে।

২। ( যমের উত্তর )–তোমার গর্ভসহচর তোমার সহিত এপ্রকার সম্পর্ক কামনা করেন না। যেহেতু তুমি সহোদর ভগিনী অগম্যা। আর এস্থান নির্জন নহে, যেহেতু সেই মহান অসুরের স্বর্গধারণকারী বীরপুত্রগণ পৃথিবীর সর্বভাগ দেখিতেছেন ।

৩। ( যমীর উক্তি )—যদিচ কেবল মনুষ্যের পক্ষে এপ্রকার সংসর্গ নিষিদ্ধ, তথাপি দেবতারা এরূপ সংসর্গ ইচ্ছাপূৰ্ব্বক করিয়া থাকেন। অতএব আমার যেরূপ ইচ্ছা হইতেছে,তুমিও তদ্রূপ ইচ্ছা কর। তুমি পুত্ৰজন্মদাতা পতির ন্যায় আমার শরীরে প্রবেশ কর।

৪। (যমের উত্তর)-এ কাৰ্য পূর্বে কখন আমরা করি নাই। আমরা সত্যবাদী, কখন মিথ্যা কহি নাই। গন্ধর্ব আমাদিগের পিতা, আর আপ্যা ঘোষা আমাদিগের উভয়ের মাতা ; সুতরাং আমাদিগের উভয়ের অতি নিকট সম্পর্ক।

৫। (যমীর উক্তি)–নির্মাণকর্তা ও প্রসবিতা ও বিশ্বরূপ দেবত্বষ্টা , আমাদিগকে গর্ভাবস্থাতেই বিবাহিত স্ত্রীপুরুষবৎ করিয়াছেন। তাহার অভিপ্রায় অন্যথা করিতে কাহারও সাধ্য নাই। আমাদিগের এই সম্পর্ক পৃথিবী ও আকাশ উভয়েই জানেন।

৬। (যমের উক্তি)—এই প্রথম দিন কে জানে? কে বা দেখিয়াছে? কেই বা প্রকাশ করিয়াছে? মিত্র ও বরুণের আবাসভূত এই বিশ্বজগৎ অতি প্রকাণ্ড। অতএব হে আহন ! তুমি নরদিগকে ইহার কি বল?

৭। (যমীর উক্তি) তুমি যম, আমি যমী, তুমি আমার প্রতি অভিলাষযুক্ত হও, এস এক স্থানে উভয়ে শয়ন করি। পত্নী যেমন পতির নিকট, তদ্রূপ আমি তোমার নিকট নিজ দেহ সমৰ্পণ করিয়া দিই। রথ ধারণকারী চক্রদ্বয়ের ন্যায় এস, আমরা এক কাৰ্য্যে প্রবৃত্ত হই।

৮। (যমের উত্তর)–এই যে সকল দেবতাদিগের গুপ্তচর, ইহাদের সর্বত্র গতিবিধি, ইহারা চক্ষুঃ নিমীলন করে না। হে ব্যথাদায়িনি  যাও, শীঘ্র অন্যের নিকট গমন কর; রথধারণকারী চক্রদ্বয়ের ন্যায় তাহার সহিত এক কাৰ্য্য কর।

৯। (যমীর উক্তি)–কি দিবসে, কি রাত্রিতে, যজ্ঞের ভাগ যেন যমকে দান করা হয়, সূর্যের তেজঃ যেন পুনঃ পুনঃ আবির্ভূত হয়। দ্যুলোক ও ভূলোক স্ত্রীপুরুষবৎ সম্বন্ধ। যমী যাইয়া ভ্রাতা যমের আশ্রয় গ্রহণ করুক ।

১০। (যমের উক্তি)–ভবিষ্যতে এমন যুগ হইবে, যখন ভ্রাতা ভগ্নীর সহিত সহবাস করিবে। হে সুন্দরি! এক্ষণে আমা ভিন্ন অন্য পুরুষকে পতিত্বে বরণ কর। তিনি যখন তোমাকে গ্রহণ করিবেন, তখন তাকে বাহুদ্বারা আলিঙ্গন কর।

১১। (যমীর উক্তি)–সে কিসের ভ্রাতা, যদি সে থাকিতেও ভগিনী অনাথ হয়? সে কিসের ভগিনী, যদি সেই ভগিনী সত্ত্বেও ভ্রাতার দুঃখ দূর না হয়? আমি অভিলাষে মূর্ছিতা হইয়া এই করিয়া বলিতেছি; তোমার শরীরে আমার শরীরে মিলাইয়া দাও।

১২। (যমের উত্তর)—তোমার শরীরের সহিত আমার শরীর মিলাইতে ইচ্ছা নাই। ভগিনীতে যে ব্যক্তি উপগত হয়, তাহাকে পাপী কহে। আমি ভিন্ন অন্য পুরুষের সহিত সুখ সম্ভোগের চেষ্টা দেখ। হে সুন্দরি! তোমার ভ্রাতার তাদৃশ অভিলাষ নাই।

১৩। (যমীর উক্তি)–হায়! যম! তুমি নিতান্ত দুর্বল পুরুষ দেখিতেছি। এ তোমার কি প্রকার মন, কি প্রকার অন্তঃকরণ, আমি কিছুই বুঝিতে পারিতেছি না। রজ্জু যেরূপ ঘোটককে বেষ্টন করে, কিংবা যেরূপ লতা বৃক্ষকে আলিঙ্গন করে, তদ্রূপ অন্য নারী অনায়াসেই তোমাকে আলিঙ্গন করে, অথচ তুমি আমার প্রতি বিমুখ!

১৪। (যমের উত্তর )–হে যমি! তুমি ও অন্য পুরুষকে আলিঙ্গন কর। যেরূপ লতা বৃক্ষকে, তদ্রূপ অন্য পুরুষই তোমাকে আলিঙ্গন করুক। তাহারই মন তুমি হরণ কর, সেও তোমার মন হরণ করুক। তাহারই সহবাসের ব্যবস্থা স্থির কর, তাহাতেই মঙ্গল হইবে। (১)

ঋগবেদের ষষ্ঠ মণ্ডলের ৫৫ সুক্ত থেকে জানা যায় পূষা নামক দেবতাও অজাচারী ছিলেন-

पूषणं नवजाश्वमुप सतोषाम वाजिनम |
सवसुर्यो जार उच्यते || ৬/৫৫/৪

—  ( অর্থাৎ)  অদ্য আমরা ছাগবাহন, অন্নসম্পন্ন সে পূষার স্তব করছি, যাকে লোকে তার ভগিনী অর্থাৎ ঊষার জার বা প্রণয়ী বলে থাকে।

मातुर्दिधिषुमब्रवं सवसुर्जारः शर्णोतु नः |
भरातेन्द्रस्य सखा मम || ৬/৫৫/৫

— (অর্থাৎ) রাত্রিরূপ মাতার পতিদেব পূষার স্তব করছি। তার  ভগিনীর জার, (প্রণয়ী বা উপপতি) পূষা আমাদের স্তোত্র শুনুন। ইন্দ্রের সহোদর পূষা যেন আমাদের মিত্র হন। (২)

ঋগবেদের দশম মণ্ডলের ৬১ সুক্তেও পিতা ও কন্যার মধ্যে অজাচারের  উল্লেখ পাওয়া যায়-

परथिष्ट यस्य वीरकर्ममिष्णदनुष्ठितं नु नर्योपौहत |
पुनस्तदा वर्हति यत कनाया दुहितुरानुभ्र्तमनर्वा || ১০/৬১/৫

— ( অর্থাৎ)  যে রস বীরপুত্র উৎপাদন করিতে সমর্থ , তাহা বৃদ্ধি পাইয়া নির্গত হইল। তিনি তখন মনুষ্য বর্গের হিতার্থে তাহা নিষেক করিলেন। আপনার সুশ্রী কন্যার  শরীরে সেই রস সেক করিলেন।

मध्या यत कर्त्वमभवदभीके कामं कर्ण्वाणेपितरि युवत्याम |
मनानग रेतो जहतुर्वियन्ता सानौनिषिक्तं सुक्र्तस्य योनौ || ১০/৬১/৬

— ( অর্থাৎ)  যখন পিতা যুবতী কন্যার উপর  পূর্বোক্তরূপ রতিকামনা পরবশ হইলেন এবং উভয়ের সঙ্গমন হইল , তখন উভয়ে পরস্পর সঙ্গমে প্রচুর রস সেক করিলেন। সুকৃতের আধার স্বরূপ এক উন্নত স্থানে সেই রস সেক হইল।

पिता यत सवां दुहितरमधिष्कन कष्मया रेतःसंजग्मानो नि षिञ्चत |
सवाध्यो.अजनयन बरह्म देवावास्तोष पतिं वरतपां निरतक्षन || ১০/৬১/৭

— ( অর্থাৎ)  যখন পিতা নিজ কন্যাকে সম্ভোগ করিলেন , তখন তিনি পৃথিবীর সহিত সঙ্গত হইয়া রস সেক করিলেন। সুচারু ধীশক্তি সম্পন্ন দেবতারা তাহা হইতে ব্রহ্ম সৃষ্টি করিলেন এবং ব্রতরক্ষাকারী বাস্তোস্পতিকে নির্মাণ করিলেন। (৩)

বেদের প্রখ্যাত ভাষ্যকার সায়ন বলেন , এখানে পিতা হলেন রুদ্র এবং কন্যা হলেন ঊষা।

টীকা-

লেখাটিতে রমেশচন্দ্র দত্তের ঋগ্বেদের বাংলা অনুবাদ ব্যবহার করা হয়েছে।

(১)

মূল সংস্কৃতঃ

ओ चित सखायं सख्या वव्र्त्यां तिरः पुरू चिदर्णवंजगन्वन |
पितुर्नपातमा दधीत वेधा अधि कषमिप्रतरं दिध्यानः ||
न ते सखा सख्यं वष्ट्येतत सलक्ष्मा यद विषुरूपाभवाति |
महस पुत्रसो असुरस्य वीरा दिवो धर्तारौर्विया परि खयन ||
उशन्ति घा ते अम्र्तास एतदेकस्य चित तयजसं मर्त्यस्य |
नि ते मनो मनसि धाय्यस्मे जन्युः पतिस्तन्वमाविविश्याः ||
न यत पुरा चक्र्मा कद ध नूनं रता वदन्तो अन्र्तंरपेम |
गन्धर्वो अप्स्वप्या च योषा सा नो नाभिःपरमं जामि तन नौ ||
गर्भे नु नौ जनिता दम्पती कर्देवास्त्वष्टा सविताविश्वरूपः |
नाकिरस्य पर मिनन्ति वरतानि वेद नावस्यप्र्थिवि उत दयौः ||
को अस्य वेद परथमस्याह्नः क ईं ददर्श क इह परवोचत |
बर्हन मित्रस्य वरुणस्य धाम कदु बरव आहनोवीच्या नॄन ||
यमस्य मा यम्यं काम आगन समाने योनौ सहशेय्याय |
जायेव पत्ये तन्वं रिरिच्यां वि चिद वर्हेव रथ्येव चक्रा ||
न तिष्ठन्ति न नि मिषन्त्येते देवानां सपश इह येचरन्ति |
अन्येन मदाहनो याहि तुयं तेन वि वर्ह रथ्येवचक्रा ||
रात्रीभिरस्मा अहभिर्दशस्येत सूर्यस्य चक्षुर्मुहुरुन्मिमीयात |
दिवा पर्थिव्या मिथुना सबन्धू यमीर्यमस्यबिभ्र्यादजामि ||
आ घा ता गछानुत्तरा युगानि यत्र जामयः कर्णवन्नजामि |
उप बर्ब्र्हि वर्षभाय बाहुमन्यमिछस्व सुभगेपतिं मत ||
किं भरतासद यदनाथं भवाति किमु सवसा यन निरतिर्निगछत |
काममूता बह्वेतद रपामि तन्वा मे तन्वं सम्पिप्र्ग्धि ||
न वा उ ते तन्वा तन्वं सं पप्र्च्यां पापमाहुर्यःस्वसारं निगछात |
अन्येन मत परमुदः कल्पयस्व न तेभ्रात सुभगे वष्ट्येतत ||
बतो बतसि यम नैव ते मनो हर्दयं चाविदाम |
अन्या किलत्वां कक्ष्येव युक्तं परि षवजाते लिबुजेव वर्क्षम ||
अन्यमू षु तवं यम्यन्य उ तवां परि षवजाते लिबुजेवव्र्क्षम |
तस्य वा तवं मन इछा स वा तवाधा कर्णुष्वसंविदं सुभद्राम ||

translation of Ralph T.H. Griffith:

1. FAIN would I win my friend to kindly friendship. So may the Sage, come through the air’s wide ocean,
Remembering the earth and days to follow, obtain a son, the issue of his father.
2 Thy friend loves not the friendship which considers her who is near in kindred as stranger.
Sons of the mighty Asura, the Heroes, supporters of the heavens, see far around them.
3 Yea, this the Immortals seek of thee with longing, progeny of the sole existing mortal.
Then let thy soul and mine be knit together, and as a loving husband take thy consort.
4 Shall we do now what we ne’er did aforetime? we who spake righteously now talk impurely?
Gandharva in the floods, the Dame of Waters-such is our bond, such our most lofty kinship.
5 Even in the womb God Tvaṣṭar, Vivifier, shaping all forms, Creator, made us consorts.
None violates his holy ordinances: that we are his the heavens and earth acknowledge.
6 Who knows that earliest day whereof thou speakest? Who hatb beheld it? Who can here declare it?
Great is the Law of Varuṇa and Mitra. What, wanton! wilt thou say to men to tempt them?
7 I, Yami, am possessed by love of Yama, that I may rest on the same couch beside him.
I as a wife would yield me to my husband. Like car-wheels let us speed to meet each other.
8 They stand not still, they never close their eyelids, those sentinels of Gods who wander round us.
Not me-go quickly, wanton, with another, and hasten like a chariot wheel to meet him.
9 May Sūrya’s eye with days and nights endow him, and ever may his light spread out before him.
In heaven and earth the kindred Pair commingle. On Yam! be the unbrotherly act of Yama.
10 Sure there will come succeeding times when brothers and sisters will do acts unmeet for kinsfolk.
Not me, O fair one,—seek another husband, and make thine arm a pillow for thy consort.
11 Is he a brother when no lord is left her? Is she a sister when Destruction cometh?
Forced by my love these many words I utter. Come near, and hold me in thy close embraces.
12 I will not fold mine arms about thy body: they call it sin when one comes near his sister.
Not me,—prepare thy pleasures with another: thy brother seeks not this from thee, O fair one.
13 Alas! thou art indeed a weakling, Yama we find in thee no trace of heart or spirit.
As round the tree the woodbine clings, another will cling albout thee girt as with a girdle.
14 Embrace another, Yami; let another, even as the woodbine rings the tree, enfold thee.
Win thou his heart and let him win thy fancy, and he shall form with thee a blest alliance. ( source) 

রামগোবিন্দ ত্রিবেদীর হিন্দি অনুবাদঃ

বেদে অজাচার 1
বেদে অজাচার 3
বেদে অজাচার 5

(Download link)

রামশর্মার হিন্দি অনুবাদঃ

বেদে অজাচার 7
বেদে অজাচার 9
বেদে অজাচার 11

(Download link) 

Sripad Damodar satwalekar এর হিন্দি অনুবাদঃ

বেদে অজাচার 13
বেদে অজাচার 15
বেদে অজাচার 17
বেদে অজাচার 19




(২)

English Translation of Ralph T.H. Griffith:

4 Pūṣan, who driveth goats for steeds, the strong and Mighty, who is called
His Sister’s lover, will we laud.

5 His Mother’s suitor I address. May he who loves his Sister hear,
Brother of Indra, and my Friend.

রামগোবিন্দ ত্রিবেদীর হিন্দি অনুবাদঃ

বেদে অজাচার 21

(৩)

English Translation of H.H. Wilson:

বেদে অজাচার 23
বেদে অজাচার 25

রামগোবিন্দ ত্রিবেদীর অনুবাদে দেখা যায় এখানে অজাচারী পিতা হলেন ব্রহ্মা বা প্রজাপতিঃ

বেদে অজাচার 27

অজিত কেশকম্বলী II

"মানুষ ছাড়া ক্ষ্যাপারে তুই মূল হারাবি, মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি।"

2 thoughts on “বেদে অজাচার

  • Bijoy

    বেদের মন্ত্রগুলো শাব্দিক অর্থ দিয়ে বিচার করাটা মূর্খামি। এগুলোর ভাবার্থ থাকে।
    এখানে যম যমী বলতে দিন-রাত্রিকে বোঝানো হয়েছে। যম-দিন, যমী-রাত্রি।
    দিনরাত্রির গমনাগমনে রাত্রি কখনোই দিনের সাথে মিলতে পারে না এটাই তুলে ধরা হয়েছে এখানে।

    Reply
    • অজিত কেশকম্বলী II

      বটে! এবার আপনি নিজেকে দিন এবং আপনার বোনকে রাত্রি ধরে অজাচারের কবিতা লিখুন। চিন্তার কিছু নেই, আমরা একে দিন রাত্রির রূপক হিসাবেই দেখবো। 🥴

      Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *