নাস্তিকরা জারজ সন্তান?

Print Friendly, PDF & Email

ভূমিকা

প্রায় প্রতিদিনই অসংখ্য মুমিন মুসলমান আমাদের ইমেইলে, ইনবক্সে, ফেইসবুক পাতাগুলোতে এসে আমাদের একটি বিশেষ গালি দিয়ে দোজাহানের অশেষ নেকী হাসিল করেন! লক্ষ্য করলে দেখা যায়, তাদের মধ্যে সবচাইতে জনপ্রিয় গালিটি হচ্ছে, মতের ভিন্নতা থাকলেই কাউকে জারজ সন্তান বলে গালাগালি করা। এই বিশেষ গালিটিই কেন তাদের এত বেশি পছন্দ? তাদের এই গালাগালির উৎস কোথায়? তারা কী মনে করে, এই গালিটি দিলে নাস্তিকদের খুব পরাজিত করা যায়? যুক্তির বিরুদ্ধে যুক্তি, মতের বিরুদ্ধে মত, তথ্যের বিরুদ্ধে তথ্য না দিয়ে তারা সম্ভব হলে আমাদের চাপাতি আক্রমণ করে, সেটি সম্ভব না হলে বই বা ওয়েবসাইট নিষিদ্ধ করে, সেটিও না পারলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়, সেটি করেও কোন কাজ না হলে জারজ বলে গালাগালি করে। এই গালিটিই যেন যুক্তি তথ্য প্রমাণের বিরুদ্ধে তাদের সকল রাগ ক্ষোভ এবং জ্বালা মেটাবার একমাত্র পদ্ধতি। কিন্তু জারজ গালিটি আসলেই কী গালি হওয়ার উপযুক্ত? সেই সাথে, জারজ শব্দটি ব্যবহারের পেছনে তাদের মনস্তত্ত্ব কী? এই বিষয়েই আমাদের আজকের আলোচনা।

জারজ কাকে বলে?

শুরুতেই বলে নিচ্ছি, আমি জারজ সন্তানদের ততটাই পবিত্র মনে করি যতটা আরেকজন সমাজের চোখে কথাকথিত ‘বৈধ’ শিশুকে মনে করি। জন্ম সব সময়ই বৈধ, মানুষের জন্ম কখনো অবৈধ হতে পারে না। শিশুটির বাবা মায়ের সামাজিক বা ধর্মীয় প্রথা মাফিক বিয়ে হয়েছিল কিনা, তার ওপর ভিত্তি করে শিশুটির বৈধতার মূল্যায়ন আমার কাছে ভয়ঙ্কর নোংরা বিষয় মনে হয়। তাই যারা জারজ বলে গালি দেয়, তাদের আমি বর্বর মনে করি। অসভ্য মনে করি। যেই কাজের পেছনে শিশুটির কোন ভূমিকা নেই, সেই কাজের জন্য শিশুটিকে দায়ী করা, তাকে অপমান করা, অসম্মান করা, অত্যন্ত বর্বর কাজ।

‘জারজ’ শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে, যার পিতৃপরিচয় নেই বা যে সমাজের দৃষ্টিতে অবৈধ সন্তান । মানে কোন নারী পুরুষ বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক করার পরে যদি কোন সন্তান নারীর গর্ভে আসে তাকে আমাদের সমাজে জারজ বলে ডাকা হয়। সামাজিকভাবে এই ধরণের বাচ্চাদের নানাভাবে হেয় করা হয়, প্রতিনিয়ত অপমান এবং তুচ্ছ করা হয়। এটি একটি সামাজিক সমস্যা। এই সমস্যা মোকাবেলায় আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। এই শব্দটিকেই ধীরে ধীরে বিলুপ্ত করে দিতে হবে। কোন শিশুকে যেন তার জন্মের কারণে অপমানিত হতে না হয়, অন্য বাচ্চাদের সামনে ছোট হতে না হয়। মনে রাখতে হবে, শিশুদের আত্মসম্মানবোধ খুব প্রবল থাকে। এই ধরণের তাচ্ছিল্য তাদের মানসিকভাবে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

উল্লেখ্য, মুসলিমদের মধ্যে যারা প্রতিনিয়ত অন্যদের জারজ বলে গালি দেন, তারা হয়তো ভুলেই যান যে, তাদের ঈসা নবী ছিলেন পিতৃপরিচয়হীন, প্রচলিত সামাজিক নিয়ম অনুসারে যাদেরকে জারজ সন্তানই বলা হয়। আজকে ধরুন কোন নারীর স্বামী বিদেশে থাকেন, সেই নারী যদি গর্ভবতী হয়ে দাবী করেন যে, আল্লাহর কুদরতে তিনি গর্ভবতী হয়ে গেছেন, ফেরেশতা বা জ্বীন এসে তাকে গর্ভবতী করে দিয়ে গেছে, এই কথা খুব বোকা লোকও বিশ্বাস করবে না। ঈসা নবীর মা মরিয়মের সময়ও নিশ্চয়ই লোকলজ্জার ভয় ছিল, তাই মরিয়ম বলতে পারে নি কীভাবে ঐ সন্তানটির জন্ম হয়েছিল। আল্লাহর ওপর দোষ চাপিয়ে দেয়া সহজ, কারণ কে আবার বিষয়টি যাচাই করতে যাবে?

কোরআনে জারজ গালাগালি

ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআনে বহু জায়গাতে অমুসলিমদের নানাভাবে গালাগালি করা হয়েছে। সেইসব গালাগালি নিয়ে অন্যত্র আলোচনা করা যাবে, আজকে শুধু এই বিশেষ গালিটি নিয়েই আলোচনা করছি। কোরআনে কাফেরদের সম্পর্কে জারজ বলে একটি জায়গাতে গালি দেয়া হয়েছে। কোরআনের সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য অনুবাদে এই শব্দটিই ব্যবহৃত হয়েছে [1]

কঠোর স্বভাব, তার উপরে আবার কুখ্যাত।
Taisirul Quran
রূঢ় স্বভাব এবং তদুপরি কুখ্যাত।
Sheikh Mujibur Rahman
দুষ্ট প্রকৃতির, তারপর জারজ।
Rawai Al-bayan
রূঢ় স্বভাব (১) এবং তদুপরি কুখ্যাত (২);
Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria

জারজ সন্তান 2

এই বিষয়ে তাফসীরে ইবনে কাসীরে যা বলা হয়েছে, [2]

ইকরামা (রঃ) বলেন যে, জারজ সন্তান উদ্দেশ্য। এটাও বর্ণিত আছে যে, কর্তিত কান বিশিষ্ট বকরী, যে কান তার গলদেশে ঝুলতে থাকে, এরূপ বকরীকে যেমন পালের মধ্যে সহজেই চেনা যায় ঠিক তেমনই মুমিনকে কাফির হতে সহজেই পৃথক করা যায়। এ ধরনের আরো বহু উক্তি রয়েছে। কিন্তু সবগুলোরই সারমর্ম হলো এই যে, (আরবি) হলো ঐ ব্যক্তি যে কুখ্যাত এবং যার সঠিক নসবনামা এবং প্রকৃত পিতার পরিচয় জানা যায় না। এ ধরনের লোকদের উপর শয়তান খুব বেশী জয়যুক্ত হয় এবং তাদের উপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে। যেমন হাদীসে এসেছেঃ “জারজ সন্তান জান্নাতে প্রবেশ করবে না। অন্য এক হাদীসে আছেঃ জারজ সন্তান তিনজন মন্দ লোকের একজন, যদি সেও তার পিতা-মাতার মত আমল করে।”

আসুন সরাসরি এবারে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তাফসীরে ইবনে কাসীর গ্রন্থ থেকে এই আয়াতটির তাফসীরের অংশ বিশেষ পড়ি, [3]

জারজ সন্তান

জারজ সন্তান সম্পত্তি পায় না

ইসলামের বিধানে জারজ সন্তানদের সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। অর্থাৎ, বিবাহ ছাড়া কোন বাচ্চা জন্ম হলে সে আর তার পিতার উত্তারাধিকার হবে না, ইয়দিও এখানে তার কোন অপরাধই নেই! [4]

সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
২৭/ ফারাইয
পরিচ্ছেদঃ ২১. জারজ সন্তান উত্তরাধীকারী নয়
২১১৩। আমর ইবনু শুআইব (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার বাবা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন লোক যদি কোন স্বাধীন স্ত্রীলোক অথবা দাসীর সাথে যিনায় (ব্যভিচারে) লিপ্ত হয় তাহলে (জন্মগ্রহণকারী) সন্তান জারজ সন্তান’ বলে গণ্য হবে। সে কারো উত্তরাধিকারী হবে না এবং তারও কেউ উত্তরাধিকারী হবে না।
সহীহ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৩০৫৪)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি আমর ইবনু শুআইবের সূত্রে ইবনু লাহীআ ছাড়াও অন্য বর্ণনাকারীগণ বর্ণনা করেছেন। বিশেষজ্ঞ আলিমগণ এ হাদীস অনুসারে আমল করেছেন। ব্যভিচারজাত সন্তান তার জন্মদাতা পিতার উত্তরাধিকারী হবে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আমর ইবনু শু‘আয়ব (রহঃ)

সুনান আদ-দারেমী (হাদিসবিডি)
২১. উত্তরাধিকার অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ৪৫. জারয (যিনার) সন্তানের মীরাছ
৩১৫৪. যাইদ ইবনু ওয়াহাব হতে বর্ণিত, যিনার (জারজ) সন্তানের ব্যাপারে আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তার মায়ের ওলী (অভিভাবক)-দেরকে বলেন, তোমরা তোমাদের পুত্রদেরকে গ্রহণ করো, তোমরা তার মীরাছ ও দিয়াতে অংশীদার হবে কিন্তু সে তোমাদের মীরাছে অংশ পাবে না।
তাহক্বীক্ব: এর সনদ সহীহ।
তাখরীজ : ইবনু আবী শাইবা ১১/৩৪৭ নং ১১৪০৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ যায়দ ইবনু ওয়াহব (রহঃ)

জারজ সন্তানদের জানাজা

এবারে আসুন জারজ সন্তানদের জানাজা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক [5]

জারজ সন্তান 5

জারজ সন্তান তিনটি মন্দের অন্যতম

সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
২৪/ দাসত্বমুক্তি
পরিচ্ছেদঃ ১২. জারজ সন্তান মুক্ত করা
৩৯৬৩। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জারজ সন্তান তিনটি মন্দের অন্যতম। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন, আল্লাহর পথে চাবুক দ্বারা উপকৃত হওয়া আমার নিকট জারজ সন্তান আযাদ করার চেয়ে বেশী প্রিয়।
সহীহ।
আহমাদ, বায়হাক্বী, হাকিম।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)

মুহাম্মদের জন্ম রহস্য

মুহাম্মদের জন্মদাতা বলে নানা জায়গাতে বর্ণিত যে নামটি, সেটা হচ্ছে আবদুল্লাহ বিন আবদুল মুত্তালিব। যদিও কিছু সূত্র অনুসারে এই বিষয়টা নিয়ে বড় ধরণের একটা ঘাপলা সবসময়ই আছে। ঘাপলাটি কি সেটা জানার জন্য বেশ কিছু বিষয় জানা থাকতে হবে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, নবী মুহাম্মদ আবদুল্লাহর বৈধ সন্তান, নাকি তিনি আবদুল মুত্তালিবের সন্তান, তা নিয়ে আমাদের বিন্ধুমাত্র মাথাব্যথা নেই। মানুষ তার কাজের মাধ্যমেই পরিচিত হবে, জন্মের মাধ্যমে নয়। আমি শুধুমাত্র ঐতিহাসিক সূত্রগুলো থেকে একটি সমস্যা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।

জাহেলী যুগের নানা বিবাহ

সহিহ হাদিস থেকে জানা যায় যে, তৎকালীন আরব সমাজে অত্যন্ত অসভ্য কিছু বিবাহ প্রথা প্রচলিত ছিল। সেইসব বিবাহের মধ্যে একই মেয়ের সাথে সকলে মিলেমিশে সহবাস থেকে শুরু করে আরো বীভৎস কিছু পৌত্তলিক প্রথা প্রচলিত ছিল। এটিও জানা যায় যে, মুহাম্মদের পরিবারের সকলেই ছিল কাফের এবং পৌত্তলিক। আসুন প্রথমে দেখি, সেই সময়ে কী ধরণের বিবাহ সেই সমাজে প্রচলিত ছিল, তার কিছু নমুনা [6]

সুনান আবূ দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৭/ তালাক
পরিচ্ছেদঃ ১৭৬. জাহিলিয়াতের যুগে বিভিন্ন ধরণের বিবাহ।
২২৬৬. আহমদ ইবন সালিহ্ …. উরওয়া ইবন যুবায়র (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী আয়েশা (রাঃ) তাঁকে বলেছেন, জাহিলিয়াতের যুগে চার বিবাহ চালু ছিল। এর মধ্যে এক ধরণের বিবাহ এরূপ ছিল, যেমন আজকালের বিবাহ। বিবাহ ইচ্ছুক পুরুষ পাত্রীর পুরুষ অভিভাবকের নিকট বিবাহের প্রস্তাব করতো। এপর সে এর মাহর নির্দ্ধারণ করতো এবং পরে তাকে (স্ত্রীলোককে) মাহর দিয়ে বিবাহ করতো।
আর দ্বিতীয় প্রকারের বিবাহ ছিল, যখন কোন পুরুষ তার স্ত্রীকে বলত, যখন তুমি তোমার হায়য হতে পবিত্র হবে, তখন তুমি অমুক ব্যক্তির নিকট গমন করে তার সাথে সহবাস করবে। এ সময় তার স্বামী তার নিকট হতে দূরে সরে থাকত, যতক্ষণ না সে ঐ ব্যক্তির সাথে সহবাসের ফলে সন্তান-সম্ভবা হতো, ততক্ষণ সে তার সাথে সহবাস করতো না। আর যখন সে গর্ভবতী হতো, তখন স্বামী তার সাথে ইচ্ছা হলে সহবাস করতো। আর এরূপ করা হতো সন্তানের বিশেষ বৈশিষ্ট নিরূপনের জন্য। এ বিবাহকে নিকাহে ইস্তিবযা বলা হতো।
আর তৃতীয় প্রকারের বিবাহ ছিল, অনধিক দশজন পুরূষ একজন স্ত্রীলোককে বিবাহ করতো আর তারা সকলেই পর্যায়করমে তার সাথে সহবাস করতো। এরপর সে গর্ভবতী হয়ে সন্তান প্রসবের পর কিছুদিন অতিবাহিত হলে, সে সকলকে তার নিকট আসার জন্য পত্র প্রেরণ করতো, যা প্রাপ্তির পর তারা সকলেই সেখানে আসতে বাধ্য হতো। এরপর তারা সকলে সমবেত হলে, সে নারী বলতো, তোমরা তোমাদের কর্ম সম্পর্কে অবশ্যই অবগত আছ, যার ফলে আমি এ সন্তান প্রসব করেছি। তখন সে তাদের মধ্য হতে তার পছন্দমত একজনের নাম ধরে সম্বোধন করে বলতো, হে অমুক! এ তোমার সন্তান। তখন সে তার সাথে ঐ সন্তানকে সম্পর্কিত করতো।
আর চতুর্থ প্রকারের বিবাহ ছিল, বহু লোক একত্রিত হয়ে পর্যায়করমে একটি মহিলার নিকট গমণ করতো। আর যে কেউ তার নিকট সহবাসের উদ্দেশ্যে গমণ করতো, সে কাউকে বাধা প্রদান করতো না। আর এ ধরণের মহিলারা ছিল বেশ্যা। এরা তাদের স্ব-স্ব গৃহের দরজার উপর নিশান লাগিয়ে রাখত, যা তাদের জন্য নিদর্শন স্বরূপ ছিল। যে কেউ তাদের নিকট গমণ করে তাদের সাথে সহবাসে করতে পারত। এরপর সে গর্ভবতী হওয়ার পর, সন্তান প্রসবের পরে তাদের সকলকে তাদের নিকট একত্রিত করতো এবং তাদের নিকট হতে সাযুজ্যতা দাবি করতো। এরপর সে তার সন্তানকে ঐ ব্যক্তির সাথে সম্পর্কিত করতো, যার সাথে সন্তানের সামঞ্জস্যতা পরিদৃষ্ট হতো। আর তাকে তার সন্তান হিসাবে ডাকা হতো এবং সে ব্যক্তি এতে নিষেধ করতো না। এরপর আল্লাহ্ তা’আলা যখন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রাসূল হিসাবে প্রেরণ করেন, তখন তিনি জাহিলিয়াতের যুগে প্রচলিত ঐসব বিবাহ প্রথাকে বাতিল ঘোষণা করেন। আর বর্তমানে ইসলামের অনুসারীদের জন্য যে বিবাহ পদ্ধতি চালু আছে, তিনি তা বলবৎ করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উরওয়াহ বিন যুবাইর (রহ.)

মুহাম্মদের পৌত্তলিক বংশ

বর্তমান সময়ে বেশীরভাগ মুসলিমই হয়তো জানেন না, অথবা স্বীকার করতে চান না যে, নবী মুহাম্মদের জন্ম হয়েছিল একটি মুশরিক পরিবারে, যেখানে নবী মুহাম্মদ নিজেই তার বাবা মা চাচা সকলকে জাহান্নামী বলে ঘোষণা করে গেছে। আসুন সহিহ হাদিস থেকে বিষয়গুলোর সত্যতা যাচাই করে নিই। নিচের হাদিসগুলো থেকে জানা যায়, চাচা আবু তালিব এবং দাদা আবদুল মুত্তালিব, দুইজনই ছিলেন মুশরিক এবং জাহান্নামী। উপরে বর্ণিত হাদিস অনুসারে তারাও নিশ্চয়ই সেই জাহেলী যুগে একইরকম বিবাহ করতেন। [7] [8] [9]

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
২০/ জানাযা
পরিচ্ছেদঃ ৮৬৩. মুশরিক ব্যক্তি মৃত্যুকালে (কালিমা-ই-তাওহীদ) লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহু উচ্চারণ করলে।
১২৭৭। ইসহাক (রহঃ) … সায়ীদ ইবনু মূসাইয়্যাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ তালিব এর মৃত্যুর সময় উপস্থিত হলে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে আসলেন। তিনি সেখানে আবূ জাহল ইবনু হিশাম ও আবদুল্লাহ ইবনু উমাইয়্যা ইবনু মুগীরাকে উপস্থিত দেখতে পেলেন। (রাবী বলেন) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ তালিবকে লক্ষ্য করে বললেন, চাচাজান! ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ কালিমা পাঠ করুন, তা হলে এর অসীলায় আমি আল্লাহর সমীপে আপনার জন্য সাক্ষ্য দিতে পারব।
আবূ জাহল ও আবদুল্লাহ ইবনু আবূ উমায়্যা বলে উঠল, ওহে আবূ তালিব! তুমি কি আবদুল মুত্তালিবের ধর্ম থেকে বিমুখ হবে? এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে কালিমা পেশ করতে থাকেন, আর তারা দু’জনও তাদের উক্তি পুনরাবৃত্তি করতে থাকে। অবশেষে আবূ তালিব তাদের সামনে শেষ কথাটি যা বলল, তা এই যে, সে আবদুল মুত্তালিবের ধর্মের উপর অবিচল রয়েছে, সে আবদুল মুত্তালিবের ধর্মের উপর অবিচল রয়েছে, সে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলতে অস্বীকার করল।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর কসম! তবুও আমি আপনার জন্য মাগফিরাত কামনা করতে থাকব, যতক্ষণ না আমাকে তা থেকে নিষেধ করা হয়। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক নাযিল করেন, ‏مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ‏ ‏ الآيَةَ নবীর জন্য সঙ্গত নয় … (সূরা তাওবাঃ ১১৩)।
( আত্মীয়-স্বজন হলেও মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নবী ও যারা ঈমান এনেছে তাদের জন্য সংগত নয় যখন এটা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে, নিশ্চিতই তারা প্রজ্বলিত আগুনের অধিবাসী। )
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সাঈদ ইবনু মুসাইয়্যাব (রহঃ)

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১/ কিতাবুল ঈমান
পরিচ্ছেদঃ ৯. মৃত্যু যন্ত্রনা আরম্ভ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ঈমান গ্রহণযোগ্য হওয়ার, মুশরিকদের ব্যাপারে ইসতিগফার (ইস্তিগফার) রহিত হওয়ার ও মুশরিক অবস্থায় মৃত্যুবরনকারীর জাহান্নামী হওয়ার এবং তার কোনমতেই পরিত্রান না পাওয়ার দলীল।
৩৯। হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া আত তূজীবী (রহঃ) … সাঈদ ইবনু মূসায়্যাব (রহঃ)-এর সুত্রে তাঁর পিতা থেকে বর্ননা করেন যে, আবূ তালিবের মৃত্যুর সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে উপস্থিত হলেন। সেখানে আবূ জাহল ও আবদুল্লাহ ইবনু আবূ উমায়্যা ইবনু মুগীরাকে দেখতে পেলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে চাচাজানো! আপনি কালিমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলুন। আমি আল্লাহর কাছে আপনার জন্য (এর উসিলায়) সাক্ষ্য দিব। আবূ জাহল ও আবদুল্লাহ ইবনু আবূ উমায়্যা বলল, হে আবূ তালিব! তুমি কি আবদুল মুত্তালিবের দ্বীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বারবার ঐ কথার পুনরাবৃত্তি করে যাচ্ছিলেন।
আবূ তালিব শেষ কথাটি এ বললেন যে, তিনি আবদুল মুত্তালিবের দ্বীনের উপরই রয়েছেন। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ- বলতে অস্বীকার করলেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর কসম! আমি আপনার জন্য অবশ্যই ইসতিগফার- করতে থাকব, যতক্ষন না আমাকে তা থেকে নিষেধ করা হয়, এ প্রেক্ষাপটে আল্লাহ তায়াআলা নাযিল করেনঃ (অর্থ) আত্মীয়-স্বজন হলেও মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নবী এবং মুমিনদের সঙ্গত নয় যখন সূস্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তারা জাহান্নামী। (সূরা তাওবাঃ ১১৩) আর আল্লাহ তায়ালা বিশেষভাবে আবূ তালিবের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে লক্ষ করে ইরশাদ করেনঃ (অর্থ) (হে রাসুল) আপনি যাকে চাইবেন তাকে পথ দেখাতে পারবেন না কিন্তু আল্লাহ পথ দেখান, যাকে ইচ্ছা করেন। আর তিনই সম্যক জ্ঞাত আছেন কাদের ভাগ্যে হিদায়াত আছে সে সষ্পর্কে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সাঈদ ইবনু মুসাইয়্যাব (রহঃ)

আল-লুলু ওয়াল মারজান
১/ ঈমান
পরিচ্ছেদঃ ১/৯. ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ বলা ঈমানের প্রথম।
১৬. মুসায়্যিব ইবনু হাযন্ বলেন, যখন আবূ তালেবের মৃত্যু ঘণিয়ে আসে তার নিকট রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসলেন এবং তার নিকট আবূ জাহল বিন হিশাম ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ উমাইয়াহ ইবনু মুগীরাকে পেলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ তালিবকে বললেন, হে চাচা! কালিমা লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহ বল, আমি তোমার জন্য কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলার নিকট এর সাক্ষ্য দিবো। আবূ জাহল ও আব্দূল্লাহ ইবনু আবূ উমাইয়াহ বলল, হে আবূ তালিব! তুমি ‘আব্দূল মুত্তালিব এর দ্বীন থেকে বিমুখ হবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ঐ কালিমা বার বার উপস্থাপন করতে থাকেন এবং তারা দু’জন বার বার ঐ কথা পুনরাবৃত্তি করতে থাকে এবং আবূ তালিবের সর্বশেষ কথা ছিল সে আব্দুল মুত্তালিবের ধর্মের উপরে (মৃত্যু বরণ করল) এবং সে লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহ বলতে অস্বীকার করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি অবশ্যই তোমার জন্য ক্ষমা চাইতে থাকবো। যতক্ষণ না আমাকে এ থেকে নিষেধ করা হয়। তখন মহান আল্লাহ তা‘আলা এই আয়াত অবতীর্ণ করেন।
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ২৩: জানাযা, অধ্যায় ৮১, হাঃ ১৩৬০; মুসলিম, পর্ব ১: ঈমান, হাঃ ২৪
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সাঈদ ইবনু মুসাইয়্যাব (রহঃ)

সহিহ হাদিস থেকে এটিও জানা যায়, মুহাম্মদের পিতা এবং মাতা উভয়ই জাহান্নামী।

গ্রন্থের নামঃ সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
হাদিস নম্বরঃ (394)
অধ্যায়ঃ ১/ কিতাবুল ঈমান
পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
পরিচ্ছদঃ ৮২. কাফির অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী জাহান্নামী; সে কোন শাফায়াত পাবে না এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভকারী বান্দার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্কও তার উপকারে আসবে না
৩৯৪। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। জনৈক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার পিতা কোথায় আছেন (জান্নাতে না জাহান্নামে)? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ জাহান্নামে। বর্ণনাকারী বলেন, লোকটি যখন পিছনে ফিরে যাচ্ছিল, তখন তিনি ডাকলেন এবং বললেনঃ আমার পিতা এবং তোমার পিতা জাহান্নামে।”
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

গ্রন্থের নামঃ সুনানে ইবনে মাজাহ
হাদিস নম্বরঃ (1572)
অধ্যায়ঃ ৬/ জানাযা
পাবলিশারঃ তাওহীদ পাবলিকেশন
পরিচ্ছদঃ ৬/৪৮. মুশরিকদের কবর যিয়ারত।
১/১৫৭২। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মায়ের কবর যিয়ারত করেন। তিনি কান্নাকাটি করেন এবং তাঁর সাথের লোকেদেরও কাঁদান। অতঃপর তিনি বলেন : আমি আমার রবের নিকট তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনার অনুমতি চাইলে তিনি আমাকে অনুমতি দেননি। আমি আমার রবের নিকট তার কবর যিয়ারতের অনুমতি চাইলে তিনি আমাকে অনুমতি দেন। অতএব তোমরা কবর যিয়ারত করো। কেননা তা তোমাদের মৃত্যু স্মরণ করিয়ে দেয়।
মুসলিম ৯৭৬ ;নাসায়ী ২০৩৪; আবূ দাউদ ৩২৩৪; আহমাদ ৯৩৯৫ ইরওয়াহ ৭৭২। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

গ্রন্থঃ সূনান নাসাঈ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ২১/ জানাজা
হাদিস নম্বরঃ (2038)
পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
পরিচ্ছদঃ ১০১/ মুশরিকের কবর যিয়ারত করা
২০৩৮। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার মাতার কবর যিয়ারত করার সময় ক্রন্দন করলেন, তার আশ পাশের সবাইও ক্রন্দন করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি আম্মার মাগাফিরাতের অনুমতি চাইলাম কিন্তু আমাকে তার অনুমতি প্রদান করা হল না। অতঃপর তার কবর যিয়ারতের অনুমতি চাইলে তার অনুমতি দেওয়া হয়। তাই তোমরা কবর যিয়ারত কর, কেননা তা তোমাদের মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
(সহীহ। ইবন মাজাহ ১৫৭২, ইরউয়াউল গালীল ৭৭২)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

উপরের হাদিসগুলো থেকে বেশ পরিষ্কারভাবেই বোঝা যায়, নবী মুহাম্মদের জন্ম হয়েছিল একটি কাফের ও মুশরিক অর্থাৎ পৌত্তলিক পরিবারে। সেই হিসেবে নবী মুহাম্মদের বেড়ে ওঠাও হয়েছে পৌত্তলিক পরিবেশে, পৌত্তলিক সংস্কৃতির মধ্যে।

আমিনা ও হালার বিবাহ একই দিনে

প্রথমেই জানা দরকার, মুহাম্মদের জন্মদাতা আবদুল্লাহ এবং আমিনার বিয়ে কীভাবে হয়েছিল। মুহাম্মদের মাতা আমিনা ছিলেন বানু জুহরা গোত্রের। তার বাবার নাম ছিল ওয়াহাব ইবনে আবদমানাফ (মানাফের দাস)। এবং মায়ের নাম ছিল, বারাহ বিনতে আবদুল উজ্জা। আবদ- মানে হচ্ছে দাস। আবদ আল উজ্জা মানে হচ্ছে উজ্জার দাস। উজ্জা কে ছিল তা জেনে নিন। সামান্য পড়ালেখা করলেই জানতে পারবেন।

সে সময়ে মুহাম্মদের দাদা আবদুল মুত্তালিব তার পুত্র আবদুল্লাহকে নিয়ে ওয়াহাবের বাসায় যায় আমিনার সাথে পুত্র আবদুল্লাহর বিয়ে দেয়ার জন্য। সে সময়ে আমিনার ভাইয়ের মেয়ে হালাকে দেখে আবদুল মুত্তালিবেরও বিবাহ করতে ইচ্ছে হয় এবং তিনি নিজে হালাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এরপরে একই দিনে আবদুল মুত্তালিব বিয়ে করেন হালাকে, এবং তার পুত্র আবদুল্লাহ বিয়ে করেন আমিনাকে। দাবী করা হয়, সেইখানেই আবদুল্লাহর সাথে আমিনার বাসর হয় এবং আমিনা গর্ভবতী হয়। মার্টিন লিংগস এর বিখ্যাত গ্রন্থ Muhammad: His Life Based on the Earliest Sources থেকে আসুন সরাসরি দেখে নিই, এই বিষয়টি, [10]

Wahb had been chief of Zuhrah but had died some years previously and
Aminah was now a ward of his brother Wuhayb, who had succeeded him
as chief of the clan. Wuhayb himself also had a daughter of marriageable
age, Halah by name, and when ‘Abd al-Muttalib had arranged that his son
should marry Aminah, he asked that Halah should be given in marriage to
himself. Wuhayb agreed, and all preparations were made for the double
wedding to take place at the same time.
On the appointed day, ‘Abd
al-Muttalib took his son by the hand, and they set off together for the
dwellings of the Bani Zuhrah.’ On the way they had to pass the dwellings
of the Bani Asad; and it so happened that Qutaylah, the sister ofWaraqah,
was standing at the entrance to her house, perhaps deliberately in order to
see what could be seen, for everyone in Mecca knew of the great wedding
which was about to take place. ‘Abd al-Muttalib was now over seventy
years old, but he was still remarkably young for his age in every respect;
and the slow approach of the two bridegrooms, their natural grace
enhanced by the solemnity of the occasion, was indeed an impressive sight.
But as they drew near, Qutaylah had eyes only for the younger man. ‘Abd
Allah was, for beauty, the Joseph of his times. Even the oldest men and

জারজ সন্তান 7

পাঠক, লক্ষ্য করে পড়বেন। আমিনা এবং হালা এই দুইজনার বিবাহ হয়েছিল একই দিনে। পিতা আবদুল মুত্তালিব এবং পুত্র আবদুল্লাহর সাথে। এর অল্প কিছুদিন পরেই পিতা আবদুল মুত্তালিবের নির্দেশে আবদুল্লাহ বিদেশ ভ্রমণে যান এবং সেখানেই অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

অল্প সময় পরেই আবদুল্লাহর মৃত্যু

অনেকগুলো রেফারেন্সেই পাওয়া যায় যে, নবীর জন্মের সময় আবদুল্লাহ মক্কায় ছিলেন না। একই সাথে, আবাবিলের ঘটনার সময়ও আবদুল্লাহ মক্কায় ছিলেন না। [11]

জারজ সন্তান 9

আরো বেশ কিছু তথ্যসূত্র থেকেই বিষয়টি জানা যায় যে, আমিনার সাথে আবদুল্লাহর বিয়ের অল্প কিছুদিন পরেই আবদুল্লাহর মৃত্যু হয়। কোন কোন বর্ণনায় সেটি বিয়ের অল্প কিছুদিনের মাথায়, কেউ কেউ বলেছেন আরেকটু বেশি। তবে সেটি খুবই অল্প সময়েই হয়েছিল সে বিষয়ে সকল আলেমই একমত [12]। অল্প কিছু ঐতিহাসিক দাবী করেছেন, মুহাম্মদ পিতার মৃত্যুর দুইমাস পূর্বে জন্ম নিয়েছেন, তবে সেই দাবীর পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ নেই। মূলত হামযার বয়স হিসেব করেই এই সব ঐতিহাসিক এই কথাটি বলেন।

জারজ সন্তান 11

উপরের রেফারেন্সে দেখা যাচ্ছে, অল্প কিছু ঐতিহাসিকের মতে, নবীর জন্মের দুই মাস পরে আবদুল্লাহর মৃত্যু হয়েছিল। এরকম হয়ে থাকলে আরো বেশী জটিলতা সৃষ্টি হয়। কারণ আমিনার সাথে বিবাহের অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আবদুল্লাহ বিদেশ চলে গেলে, এই দীর্ঘ সময়ে আমিনা গর্ভবতী হয়েই ছিলেন? [13]

জারজ সন্তান 13

হামযা নবীর চেয়ে ৪ বছরের বড়

ঐদিকে হালাও গর্ভবতী হন, আবদুল মুত্তালিব দ্বারা, এবং জন্ম দেন হামজা নামের এক সন্তানকে। এই হামজা পরে মুহাম্মদের অনুসারী হন এবং হামজা তাঁর ৫৯ বছর বছর বয়সে ২২ মার্চ ৬২৫ (৭ শাওয়াল ৩ হিজরি ) উহুদ যুদ্ধে নিহত হন।

মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৫৯ বছর। যা ইবনে সা’দ, আল-ওয়াকিদীর দাবির উপর ভিত্তি করে বলেন। একইসাথে, মুহাম্মদের চাইতে তিনি চার বছরের বড় ছিলেন। তবে ফাত উল বারী গ্রন্থের লেখক বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনে হাজার আসকালানী, ইবনে সাইয়্যিদের হাদিসের শেষে লিখেছেন: “হামজার জন্ম মুহাম্মদের দুই থেকে চার বছর আগে”।

আসুন, তাবাকাত ইবনে সা’দ গ্রন্থ থেকে দেখে নিই, হামযা আসলেই মুহাম্মদের থেকে কত বড় ছিলেন। [14]

জারজ সন্তান 15

আবু তালিবের বিবাহে অস্বীকৃতি

মুহাম্মদ তার দাদা আবদুল মুত্তালিবের মৃত্যুর পরে চাচা আবু তালিবের কাছেই মানুষ হয়। সেই সময়ে চাচাতো বোন উম্মে হানীকে তিনি বিয়ের প্রস্তাব দিলে চাচা আবু তালিব মুহাম্মদকে তার তুলনায় যথেষ্ট সম্মানীয় বলে মনে না করায় সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। কিন্তু আবু তালিব এবং মুহাম্মদের বংশ তো একই, সেখানে মুহাম্মদ কেন সম্মানের দিক দিয়ে আবু তালিবের চেয়ে ছোট বা তুচ্ছ, তা বোধগম্য হচ্ছে না [15]

জারজ সন্তান 17

আবদুল মুত্তালিবের পুত্র?

বহু সংখ্যক সহিহ হাদিস অনুসারে, নবী মুহাম্মদ বিভিন্ন স্থানে নিজেকে আবদুল মুত্তালিবের পুত্র হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। সরাসরি নিজেকে ইবনে আবদুল মুত্তালিবই বলেছেন, মাঝে পিতার নাম উল্লেখ না করে। তবে সেই সময়ে আরবে এভাবে দাদার নামও বলা হতো, এটি কোন মূখ্য প্রমাণ নয়। তারপরেও হাদিসগুলো দেখে নেয়া প্রয়োজন। তার আগে দেখে নিই, আবদুল মুত্তালিব পুত্রবধু আমিনাকে কতটা ভালবাসতেন, এবং মুহাম্মদকেও কতটা ভালবাসতেন [16] [17] [18]

জারজ সন্তান 19

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৩৩/ জিহাদ ও এর নীতিমালা
পরিচ্ছেদঃ ২৮. হুনায়নের যুদ্ধ
৪৪৬৫। আহমাদ ইবনু জানাব মিসসিসী (রহঃ) … আবূ ইসহাক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি বারা (রাঃ) এর নিকট এসে বললো, আপনারা কি হুনায়নের দিনে পলায়ন করেছিলেন? তখন তিনি বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি পলায়ন করেন নি। কিন্তু কিছু সংখ্যক অতি ব্যস্ত ও বর্মহীন লোক হাওয়ায়িন গোত্রের দিকে গিয়েছিল। আর তারা ছিল তীরন্দায সম্প্রদায়। তারা তাদের প্রতি ঝাঁকে ঝাঁকে তীর ছুড়লো, যেন সেগুলো পঙ্গপালের পায়ের মত। তখন তারা পিছন দিকে হটে গেল। আর লোকেরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এগিয়ে এলো। আবূ সুফিয়ান ইবনু হারেস (রাঃ) তাঁর খচ্চর টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি অবতরণ করলেন এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়ে দুআ করলেন এবং তিনি বললেনঃ আমি অবশ্যই আল্লাহর নবী, একথা মিথ্যে নয়। আমি আবদূল মুত্তালিব এর পুত্র। “ইয়া আল্লাহ! আপনার সাহায্য নাযিল করুন”।
বারা (রাঃ) বললেনঃ, আল্লাহর কসম! যুদ্ধের-উত্তেজনা যখন ঘোরতর হয়ে উঠল, তখন আমরা তার মাধ্যমে আত্মরক্ষা করতাম। নিশ্চয়ই আমাদের মাঝে বীরপুরুষ তিনিই যিনি যুদ্ধে তাঁর অর্থাৎ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে দাঁড়াতে সাহসী হত।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ ইসহাক (রহঃ)

সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৫৬/ জিহাদ ও যুদ্ধকালীন আচার ব্যবহার
পরিচ্ছেদঃ ৫৬/৯৭. পরাজয়ের সময় সঙ্গীদের সারিবদ্ধ করা, নিজের সওয়ারী থেকে নামা ও আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা।
২৯৩০. বারা’ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তাকে এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আবূ উমারা! হুনায়নের দিন আপনারা কি পলায়ন করেছিলেন? তিনি বললেন, না, আল্লাহর কসম, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পলায়ন করেননি। বরং তাঁর কিছু সংখ্যক নওজোয়ান সাহাবী হাতিয়ার ছাড়াই অগ্রসর হয়ে গিয়েছিলেন। তারা বানূ হাওয়াযিন ও বানূ নাসর গোত্রের সুদক্ষ তীরন্দাজদের সম্মুখীন হন। তাদের কোন তীরই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়নি। তারা এদের প্রতি এমনভাবে তীর বর্ষণ করল যে, তাদের কোন তীরই ব্যর্থ হয়নি। সেখান থেকে তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে উপস্থিত হলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন তাঁর সাদা খচ্চরটির পিঠে ছিলেন এবং তাঁর চাচাতো ভাই আবূ সুফ্ইয়ান ইবনু হারিস ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব তাঁর লাগাম ধরে ছিলেন। তখন তিনি নামেন এবং আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করেন। অতঃপর তিনি বলেন, আমি নবী, এ কথা মিথ্যা নয়। আমি ‘আবদুল মুত্তালিবের পুত্র। অতঃপর তিনি সাহাবীদের সারিবদ্ধ করেন। (২৮৬৪) (মুসলিম ৩২/২৮ হাঃ ১৭৭৬, আহমাদ ১৮৪৯৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৭১৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৭২৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ বারা’আ ইবনু আযিব (রাঃ)

আলী ফাতিমার চাচাতো ভাই?

আমরা সকলেই এটি জানি যে, হযরত আলী ছিলেন নবী মুহাম্মদের চাচাতো ভাই। নবী ছিলেন আবদুল্লাহর পুত্র, আর আলী ছিলেন তার ভাই আবু তালিবের পুত্র। কিন্তু সহিহ হাদিসে বর্ণিত আছে, নবী ফাতিমাকে জিজ্ঞেস করতেন, তোমার চাচাতো ভাই কোথায়? এর দ্বারা তিনি হযরত আলীকে নির্দেশ করতেন। কিন্তু আলী কীভাবে ফাতিমার চাচাতো ভাই হয়? আলী তো নবী মুহাম্মদের চাচাতো ভাই হওয়ার কথা। আসুন হাদিসগুলো পড়ি, [19] [20]

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৮/ সালাত
পরিচ্ছেদঃ ২৯৯। মসজিদে পুরুষের ঘুমানো।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৪২৮, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৪৪১
৪২৮। কুতায়বা ইবনু সা’ঈদ (রহঃ) …. সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতিমা (রাঃ) এর ঘরে এলেন, কিন্তু আলী (রাঃ)-কে ঘরে পেলেন না। তিনি ফাতিমা (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমার চাচাতো ভাই কোথায়? তিনি বললেনঃ আমার ও তাঁর মধ্যে কিছু ঘটেছে। তিনি আমার সাথে রাগ করে বাইরে চলে গেছেন। আমার কাছে দুপুরের বিশ্রামও করেন নি। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে বললেনঃ দেখ তো সে কোথায়? সে ব্যাক্তি খোঁজে এসে বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি মসজিদে শুয়ে আছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন, তখন আলী (রাঃ) কাত হয়ে শুয়ে ছিলেন। তাঁর শরীরের এক পাশের চাঁদর পড়ে গিয়েছে এবং তাঁর শরীরে মাটি লেগেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর শরীরের মাটি ঝেড়ে দিতে দিতে বললেনঃ উঠ, হে আবূ তুরাব! উঠ, হে আবূ তুরাব!
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সাহল বিন সা’দ (রাঃ)

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৬৬/ অনুমতি চাওয়া
পরিচ্ছেদঃ ২৬০০. মসজিদে কাইলুলা করা
৫৮৪৫। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আলী (রাঃ) এর কাছে আবূ তুরাব এর চাইতে প্রিয়তর কোন নাম ছিল না। এ নামে ডাকা হলে তিনি অতান্ত খুশী হতেন। কারণ একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতিমা (রাঃ) এর ঘরে আসলেন। তখন আলী (রাঃ) কে ঘরে পেলেন না। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমার চাচাতো ভাই কোথায়? তিনি বললেনঃ আমার ও তার মধ্যে কিছু ঘটায় তিনি আমার সঙ্গে রাগারাগি করে বেরিয়ে গেছেন। আমার কাছে কায়লুলা করেননি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে বললেনঃ দেখতো সে কোথায়? সে লোকটি এসে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি তো মসজিদে ঘুমিয়ে আছেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে দেখতে পেলেন যে, তিনি কাত হয়ে শুয়ে আছেন, আর তার চাঁদরখানা পাশ থেকে পড়ে গেছে। ফলে তার সাথে মাটি লেগে গেছে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার গায়ের মাটি ঝাড়তে লাগলেন এবং বলতে লাগলেনঃ ওঠো, আবূ তুরাব (মাটির বাবা) ওঠো, আবূ তুরাব! একথাটা তিনি দু’বার বললেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সাহল বিন সা’দ (রাঃ)

আবদুল মুত্তালিব আবদুল মুত্তালিব
আবদুল্লাহ ========(ভাই)========= আবু তালিব মুহাম্মদ ========(ভাই)==== আবু তালিব
মুহাম্মদ ========(চাচাতো ভাই)======= আলী ফাতিমা =======(চাচাতো ভাইবোন)======= আলী
ফাতিমা ========(চাচা এবং স্বামী)======= আলী
উপরের দুইটি চার্টের কোনটি সঠিক?

মুহাম্মদ ইবনে আবূ কাবশা?

বেশ কয়েকটি হাদিস থেকে জানা যায়, পৌত্তলিক কুরাইশরা নবী মুহাম্মদকে ইবনে আবূ কাবশা বলে ডাকতো। ইবনে আবূ কাবশা অর্থ হচ্ছে আবূ কাবশার ছেলে। কে ছিলেন এই আবূ কাবশা? তিনি ছিলেন মুহাম্মদের দুধমা হালিমার স্বামী। জানা যায়, তিনি মূর্তি পুজা করতেন না। এই কারণে কুরাইশরা মুহাম্মদকে আবূ কাবশার পুত্র বলে সম্বোধন করতো। আসুন সেই হাদিসগুলো দেখে নিই, [21] [22]

সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৫৬/ জিহাদ ও যুদ্ধকালীন আচার ব্যবহার
পরিচ্ছেদঃ ৫৬/১২২. রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্তিঃ এক মাসের পথের দূরত্বে অবস্থিত শত্রুর মনেও আমার সম্পর্কে ভয়-ভীতি জাগরণের দ্বারা আমাকে সাহায্য করা হয়েছে।
২৯৭৮. ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তাঁকে আবূ সুফ্ইয়ান জানিয়েছেন, হিরাক্ল আমাকে ডেকে পাঠান। তখন তিনি ইলিয়া নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন। অতঃপর সম্রাট আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পত্রখানি আনতে আদেশ করেন যখন পত্র পাঠ সমাপ্ত হল, তখন বেশ হৈ চৈ ও শোরগোল পড়ে গেল। অতঃপর আমাদেরকে বাইরে নিয়ে আসা হল। যখন আমাদেরকে বের করে দেয়া হচ্ছিল তখন আমি আমার সঙ্গীদের উদ্দেশ্য করে বললাম, আবূ কাবশার পুত্রের[১] ব্যাপারটার গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেল। রোমের বাদশাহও তাঁকে ভয় করে। (৭) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৭৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৭৬৭)
[১] আবূ কাবশা আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দুধ মা হালীমাহ (রাঃ)-এর স্বামী ছিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ)

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪৮/ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ ১৮৬৩. রাসূলুল্লাহ্‌ (ﷺ)-এর উক্তিঃ এক মাসের পথের দুরত্ব থেকে (শত্রুর মনে) ভীতি সঞ্চারের মাধ্যমে আমাকে সাহায্য করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ আমি কাফিরদের অন্তরে ভীতির সঞ্চার করব। যেহেতু তারা আল্লাহর শরীক করেছে। (৩ঃ ১৫১) (এ প্রসঙ্গে) জাবির (রাঃ) রাসুলুল্লাহ (সাঃ) থেকে হাদীস উদ্ধৃত করেছেন
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ২৭৭০, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৯৭৮
২৭৭০। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তাঁকে আবূ সুফিয়ান জানিয়েছেন, (রোম সম্রাট) হিরাকল (হিরাক্লিয়াস) আমাকে ডেকে পাঠান। তখন তিনি ইলিয়া (বর্তমান ফিলিস্তিন) নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন। তারপর সম্রাট রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পত্রখানি আনতে আদেশ করেন, যখন পত্র পাঠ সমাপ্ত হল, তখন বেশ হৈ চৈ ও শোরগোল পড়ে গেল। এরপর আমাদেরকে (দরবার হতে) বাইরে নিয়ে আসা হল। তখন আমি আমার সঙ্গীদের উদ্দেশ করে বললাম, যখন আমরা বহিষ্কৃত হচ্ছিলাম, আবূ কাবশার পুত্রের* বিষয়ের গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেল। রোমের বাদশাহও তাঁকে ভয় করে।
* আবূ কাবশা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দুধ মা হালীমা (রাঃ) এর স্বামী ছিলেন। আবূ সুফিয়ান (রাঃ) ইসলাম গ্রহণ করার পূর্বেকার ঘটনা হিসাবে তাচ্ছিল্য করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আবূ কাবশার পুত্র বলেছিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ)

তথ্যগুলোর বিশ্লেষণ

উপরে যেই তথ্যসূত্রগুলো দেয়া হলো, তাতে বোঝা যাচ্ছে আমিনা এবং হালা গর্ভবতী হন। কিন্তু সমস্যাটি বাঁধে যখন হিসেব করতে বসি। প্রাপ্ত হিসেব মতে, মুহাম্মদ এবং হামজার বয়স হওয়ার কথা সমান, অথবা মুহাম্মদের চেয়ে হামজার বয়স হওয়ার কথা কম। যেহেতু আমিনাই আগে গর্ভবতী হয়েছিলেন বলে মনে হয়। যদি হালা আগে গর্ভবতী হয়ে থাকে, তাহলে আবদুল্লাহর আরও কিছুদিন মক্কায় থাকার কথা, কমপক্ষে দুই/তিন বছর তার সংসার করার কথা। কিন্তু সমস্ত সূত্র থেকেই জানা যায়, বিয়ের অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আমিনা গর্ভবতী হন এবং আবদুল মুত্তালিবের নির্দেশে আবদুল্লাহ বিদেশ চলে যান। এবং, হামজা ছিলেন মুহাম্মদের চাইতে চার বছরের বড়। এখন আসুন হিসেব মিলাই।

১) আবদুল্লাহ এবং আবদুল মুত্তালিব একই দিনে আমিনা এবং হালাকে বিয়ে করেন।
২) বিয়ের অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আবদুল্লাহ বিদেশ ভ্রমণে যান এবং সেখানে তার মৃত্যু হয়।
৩) হামজা যেহেতু বড় সেহেতু হালা আগে গর্ভবতী হন। হামজার জন্ম হয়। মৃত্যুকালে হামযার বয়স ৫৯ ছিল, সেই হিসেবে হামযার জন্ম ৫৬৬ সালে।
৪) হামজার জন্মের চার বছর পরে মুহাম্মদের জন্ম হয়। কিন্তু আবদুল্লাহ যেহেতু বিয়ের অল্প কিছুদিন পরেই বিদেশ ভ্রমণে চলে যায়, তাই আবদুল্লাহ আমিনার সাথে তিন বা চার বছর সংসার করেছেন, এমন কোন প্রমাণই তো মেলে না। তিন বা চার বছর পরে তাহলে মুহাম্মদের জন্ম হয় কীভাবে?

আসুন চার্টের মাধ্যমে দেখি,

মুহাম্মদের জন্ম রহস্য

মুহাম্মদের পিতামাতা জাহান্নামী

নবী মুহাম্মদ তার পিতামাতা দুইজনকেই জাহান্নামী বলে গেছেন। সহিহ হাদিসে বিষয়গুলো পরিষ্কারভাবেই এসেছে। বিপরীতে এমন কোন সহিহ হাদিস নেই, যেখানে তিনি তার পিতামাতাকে জান্নাতি বলেছেন। [23] [24] [25]

গ্রন্থের নামঃ সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
হাদিস নম্বরঃ (394)
অধ্যায়ঃ ১/ কিতাবুল ঈমান
পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
পরিচ্ছদঃ ৮২. কাফির অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী জাহান্নামী; সে কোন শাফায়াত পাবে না এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভকারী বান্দার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্কও তার উপকারে আসবে না
৩৯৪। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। জনৈক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার পিতা কোথায় আছেন (জান্নাতে না জাহান্নামে)? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ জাহান্নামে। বর্ণনাকারী বলেন, লোকটি যখন পিছনে ফিরে যাচ্ছিল, তখন তিনি ডাকলেন এবং বললেনঃ আমার পিতা এবং তোমার পিতা জাহান্নামে।”
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

গ্রন্থের নামঃ সুনানে ইবনে মাজাহ
হাদিস নম্বরঃ (1572)
অধ্যায়ঃ ৬/ জানাযা
পাবলিশারঃ তাওহীদ পাবলিকেশন
পরিচ্ছদঃ ৬/৪৮. মুশরিকদের কবর যিয়ারত।
১/১৫৭২। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মায়ের কবর যিয়ারত করেন। তিনি কান্নাকাটি করেন এবং তাঁর সাথের লোকেদেরও কাঁদান। অতঃপর তিনি বলেন : আমি আমার রবের নিকট তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনার অনুমতি চাইলে তিনি আমাকে অনুমতি দেননি। আমি আমার রবের নিকট তার কবর যিয়ারতের অনুমতি চাইলে তিনি আমাকে অনুমতি দেন। অতএব তোমরা কবর যিয়ারত করো। কেননা তা তোমাদের মৃত্যু স্মরণ করিয়ে দেয়।
মুসলিম ৯৭৬ ;নাসায়ী ২০৩৪; আবূ দাউদ ৩২৩৪; আহমাদ ৯৩৯৫ ইরওয়াহ ৭৭২। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

গ্রন্থঃ সূনান নাসাঈ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ২১/ জানাজা
হাদিস নম্বরঃ (2038)
পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
পরিচ্ছদঃ ১০১/ মুশরিকের কবর যিয়ারত করা
২০৩৮। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার মাতার কবর যিয়ারত করার সময় ক্রন্দন করলেন, তার আশ পাশের সবাইও ক্রন্দন করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি আম্মার মাগাফিরাতের অনুমতি চাইলাম কিন্তু আমাকে তার অনুমতি প্রদান করা হল না। অতঃপর তার কবর যিয়ারতের অনুমতি চাইলে তার অনুমতি দেওয়া হয়। তাই তোমরা কবর যিয়ারত কর, কেননা তা তোমাদের মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
(সহীহ। ইবন মাজাহ ১৫৭২, ইরউয়াউল গালীল ৭৭২)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

আবদুল মুত্তালিব ছিলেন মুশরিক

মুহাম্মদের দাদা ছিলেন একজন মুশরিক এবং কাফের। এর প্রমাণ পাওয়া যায় চাচা আবু তালিবের মৃত্যুর সময় নবী মুহাম্মদের বারবার ইসলাম কবুল করার আহবান, এবং বিপরীতে আবু তালিবের তা প্রত্যাখ্যানের ঘটনায়। পরিষ্কারভাবেই হাদিসে বর্ণিত আছে, আবু তালিব তার পিতা আবদুল মুত্তালিবের ধর্মেই অবিচল থাকেন। [26]

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
২০/ জানাযা
পরিচ্ছেদঃ ৮৬৩. মুশরিক ব্যক্তি মৃত্যুকালে (কালিমা-ই-তাওহীদ) লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহু উচ্চারণ করলে।
১২৭৭। ইসহাক (রহঃ) … সায়ীদ ইবনু মূসাইয়্যাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ তালিব এর মৃত্যুর সময় উপস্থিত হলে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে আসলেন। তিনি সেখানে আবূ জাহল ইবনু হিশাম ও আবদুল্লাহ ইবনু উমাইয়্যা ইবনু মুগীরাকে উপস্থিত দেখতে পেলেন। (রাবী বলেন) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ তালিবকে লক্ষ্য করে বললেন, চাচাজান! ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ কালিমা পাঠ করুন, তা হলে এর অসীলায় আমি আল্লাহর সমীপে আপনার জন্য সাক্ষ্য দিতে পারব।
আবূ জাহল ও আবদুল্লাহ ইবনু আবূ উমায়্যা বলে উঠল, ওহে আবূ তালিব! তুমি কি আবদুল মুত্তালিবের ধর্ম থেকে বিমুখ হবে? এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে কালিমা পেশ করতে থাকেন, আর তারা দু’জনও তাদের উক্তি পুনরাবৃত্তি করতে থাকে। অবশেষে আবূ তালিব তাদের সামনে শেষ কথাটি যা বলল, তা এই যে, সে আবদুল মুত্তালিবের ধর্মের উপর অবিচল রয়েছে, সে আবদুল মুত্তালিবের ধর্মের উপর অবিচল রয়েছে, সে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলতে অস্বীকার করল।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর কসম! তবুও আমি আপনার জন্য মাগফিরাত কামনা করতে থাকব, যতক্ষণ না আমাকে তা থেকে নিষেধ করা হয়। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক নাযিল করেন, ‏مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ‏ ‏ الآيَةَ নবীর জন্য সঙ্গত নয় … (সূরা তাওবাঃ ১১৩)।
( আত্মীয়-স্বজন হলেও মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নবী ও যারা ঈমান এনেছে তাদের জন্য সংগত নয় যখন এটা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে, নিশ্চিতই তারা প্রজ্বলিত আগুনের অধিবাসী। )
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সাঈদ ইবনু মুসাইয়্যাব (রহঃ)

নবীকে হামযার গোলাম বলে গালি

নবীর চাচা হামযা ইবনে আবদুল মুত্তালিব একবার মদ্যপ অবস্থায় নবীকে তার পিতার গোলাম বলে গালি দিয়েছিল বলে জানা যায়। মদ্যপ অবস্থায় আসলে মানুষের মনের কথা বের হয়ে যায়। কেন হামযা নবী মুহাম্মদকে তার পিতা আবদুল মুত্তালিবের গোলামের মত মনে করতেন, তা জানা যায় না। [27]

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৩৭/ পানীয় দ্রব্য
পরিচ্ছেদঃ ১. মদ হারাম এবং আঙ্গুরের রস থেকে খুরমা ও কাঁচা-পাকা খেজুর এবং কিসমিস (ইত্যাদি) ও অন্যান্য নেশাকারক দ্রব্য হতে তা তৈরি হওয়ার বর্ণনা
৪৯৬৪। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া তামীমী (রহঃ) … আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে বদর দিবসে আমি গনীমত (যুদ্ধলব্ধ মাল) থেকে একটি বয়স্কা উটনী পেয়েছিলাম। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (খুমুস থেকে) আমাকে আর একটি বয়স্কা উটনী দিয়েছিলেন। একদিন আমি জনৈক আনসারী ব্যক্তির দরজার সামনে সে দুটি বসিয়ে রাখলাম। আমার ইচ্ছা ছিল, সে দুটির পিঠে করে কিছু ইযখির (ঘাস) বয়ে আনবো, আর তা বিক্রয় করে ফাতিমা (রাঃ) এর ওলীমায় সাহায্য নিব। আমার সাথে ছিল বনু কায়নুকা গোত্রের জনৈক স্বর্ণকার। হামযা ইবনু আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) সে বাড়িতেই মদ্যপান করছিল। তার সাথে ছিল একজন গায়িকা। সে (তার গানের মধ্যে) বললোঃأَلاَ يَا حَمْزَ لِلشُّرُفِ النِّوَاءِ অর্থাৎ হে হামযা! হৃষ্টপুষ্ট উটনী দুটির কাছে যাও (এবং তোমার মেহমানদের জন্য তা যবেহ কর)।
এরপর হামযা সে দু’টির কাছে তরবারিসহ ছুটে গেল। পরে দুটিরই কুঁজ কেটে ফেললো এবং তাদের পাঁজর (পেট) ফেঁড়ে ফেললো। এরপর সে এ দু’টির কলিজা বের করে নিল। আমি ইবনু শিহাবকে বললাম, (বর্ণনায় কি এ কথা আছে যে,) তিনি কুঁজ (গোশত) থেকেও নিলেন? তিনি বললেন, (এভাবে আছে) কুঁজ দুটি কেটে সাথে নিয়ে গেলেন।
ইবনু শিহাব বলেন, আলী (রাঃ) বলেন, এ মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গেলাম। তাঁর কাছে ছিল যায়দ ইবনু হারিসা। তারপর আমি তাঁকে সমস্ত ঘটনা অবহিত করলাম। তিনি যায়দকে সাথে নিয়ে বের হলেন। আমিও তার সঙ্গে চললাম। হামযার কাছে গিয়ে তাকে কিছু কড়া কথা বললেন। হামযা (মাদকগ্রস্ত অবস্থায়) চোখ তুলে বললো, তোমরা তো আমার বাবার গোলাম বৈ কিছু নও। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পিছু হেঁটে চললেন এবং এভাবে তিনি তাদের কাছ থেকে বেরিয়ে আসলেন।
৪৯৬৫। আবদ ইবন হুমায়দ (রহঃ) …ইবন জুরায়জ (রহঃ) থেকে এ সনদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
বিঃ দ্রঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪৯৬৪ পর পর দুইবার উল্লেখ করেছে। প্রথমটি কুরবানী অধ্যায়ের শেষ হাদিস আর পরেরটি এখানে উল্লেখিতটি। সিরিয়াল ধারাবাহিকতার জন্য আমরা ৪৯৬৫ নাম্বার হাদিসের অধীনে ফাউন্ডেশনের ৪৯৬৪ ও ৪৯৬৫ একসাথে দিয়েছি। এতে পরবর্তী নাম্বারগুলো ফাউন্ডেশনের নাম্বারের সাথে মিল থাকবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আলী ইবনু আবী তালিব (রাঃ)

উপসংহার

জানা যায়, আবদুল মুত্তালিব পরবর্তীতে কিছুদিন মুহাম্মদকে পুত্র স্নেহে লালন করেন। আবদুল মুত্তালিবের এই মহানুভবতার জন্য সে কাফের হওয়া সত্বেও মুহাম্মদ উনার সম্পর্কে সম্মান রেখেই কথা বলতেন তাকে সব সময়ই শ্রদ্ধা করতেন, ভালোবাসতেন, সম্মান করতেন। আবদুল মুত্তালিব কাফের এবং মুশরিক এটি জানা থাকার পরেও, নিজেকে আবদুল মুত্তালিবের পুত্র হিসেবে তিনি পরিচয় দিতে গর্ব করতেন। আমি কোন সিদ্ধান্তে যাচ্ছি না। পাঠকের হাতে ছেড়ে দিচ্ছি পুরো বিষয়টি। আপনারা সাধারণ গণিত করেছেন, কমনসেন্স খাঁটিয়ে ভেবে দেখবেন। ধন্যবাদ।

তথ্যসূত্র

  1. কোরআন ৬৮ঃ১৩ []
  2. তাফসির ইবনে কাছের রহ, ৮-১৬ নং আয়াতের তাফসীর []
  3. তাফসীরে ইবনে কাসীর, খণ্ড ১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, পৃষ্ঠা ২২৫ []
  4. সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত), হাদিস নম্বরঃ ২১১৩ []
  5. ছালাতুর রাসূল (ছাঃ), আসাদুল্লাহ আল-গালিব, পৃষ্ঠা ২১৬ []
  6. সুনান আবূ দাউদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ২২৬৬ []
  7. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ১২৭৭ []
  8. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩৯ []
  9. আল-লুলু ওয়াল মারজান, হাদিস নম্বরঃ ১৬ []
  10. Muhammad: His Life Based on the Earliest Sources, Martin Lings []
  11. Muhammad: His Life Based on the Earliest Sources, Martin Lings, পৃষ্ঠা ২১ []
  12. আর রাহীকুল মাখতুম, আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, পৃষ্ঠা ৭৫ []
  13. আর রাহীকুল মাখতুম, আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, পৃষ্ঠা ৭৬ []
  14. Muhammad ibn Saad. Kitab al-Tabaqat al-Kabair vol. 3. Translated by Bewley, A. পৃষ্ঠা ৪ []
  15. আসহাবে রাসুলের জীবনকথা, মহিলা সাহাবী, মুহাম্মদ আবদুল মাবুদ, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, ষষ্ঠ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৯৮ []
  16. ( আর রাহীকুল মাখতুম, আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, পৃষ্ঠা ৭৯, ৮০ []
  17. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৪৪৬৫ []
  18. সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন, হাদিস নম্বরঃ ২৯৩০ []
  19. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৪২৮ []
  20. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৫৮৪৫ []
  21. সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন, হাদিস নম্বরঃ ২৯৭৮ []
  22. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ২৭৭০ []
  23. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩৯৪ []
  24. সুনানে ইবনে মাজাহ, তাওহীদ পাবলিকেশন, হাদিস নম্বরঃ ১৫৭২ []
  25. সূনান নাসাঈ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ২০৩৮ []
  26. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বর- ১২৭৭ []
  27. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬৪ []
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন

আসিফ মহিউদ্দীন

আসিফ মহিউদ্দীন সম্পাদক সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন [email protected]

One thought on “নাস্তিকরা জারজ সন্তান?

  • September 11, 2020 at 11:02 AM
    Permalink

    দারুণ লেখা! অবশ্য এই লেখকের শক্তিশালী লেখা অনেকের মত আমাকেও অভিভূত করে! উনার মঙ্গল কামনা করি!

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *