11.প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী মিথ্যুক নবী

হযরত মুহাম্মদ ছিলেন প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী মিথ্যুক। কিন্তু খুব কৌশলে তিনি তার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের দায় আল্লাহর ওপর চাপিয়ে দিয়ে নিজের অপরাধকে আল্লাহর নির্দেশ বলে চালিয়ে দিয়েছিলেন। যার একদম সরাসরি প্রমাণ পাওয়া যায় সহি বুখারী হাদিসেই। নিচের হাদিসটি পড়ুন, এখানে বলা হচ্ছে, কোন বিষয়ে কেউ যদি প্রতিশ্রুতি দেয়, কিন্তু পরে যদি তার বিপরীতটি তার কাছে উত্তম মনে হয়, তাহলে প্রতিশ্রুতির কাফফারা দিয়ে বিপরীত কাজটিই করা যাবে। এতো সরাসরি মিথ্যাচার, এবং প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা। কাফফারা দিলেই কি সব মাফ হয়ে যায়?[1]

সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
৯৩/ আহ্‌কাম
পরিচ্ছেদঃ ৯৩/৬. যে ব্যক্তি নেতৃত্ব চায়, তা তার উপরই ন্যস্ত করা হয়।
৭১৪৭. ‘আবদুর রহমান ইবনু সামুরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেনঃ হে ‘আবদুর রহমান ইবনু সামুরাহ! নেতৃত্ব চেয়ে নিও না। কেননা, যদি চাওয়ার পর তোমাকে তা দেয়া হয়, তাহলে তার সকল দায়িত্বভার তোমার উপরই অর্পিত হবে। আর যদি না চাওয়া সত্ত্বেও তোমাকে তা দেয়া হয়, তাহলে এ ক্ষেত্রে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) সহযোগিতা করা হবে। আর কোন বিষয়ে কসম করার পর তার বিপরীত দিকটিকে যদি উত্তম বলে মনে কর, তাহলে উত্তম কাজটিই করবে আর তোমার কসমের কাফ্‌ফারা আদায় করে দিবে। (৬৬২২) (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৬৪৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৬২)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আব্দুর রহমান ইবন সামুরা (রাঃ)

শুধু তাই নয়, নবী নিজেও এই কাজটি করতেন। কাউকে কোন প্রতিশ্রুতি দিলে, তিনি পরে যদি মনে করতেন প্রতিশ্রুতির বিপরীত কাজটিই উত্তম বা লাভজনক, তিনি কিছু কাফফারা দিয়ে বিপরীত কাজটি, অর্থাৎ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করতেন [2] [3]

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫৯/ যবাহ করা, শিকার করা
পরিচ্ছেদঃ ২১৯২. মুরগীর গোশত
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৫১২১, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৫৫১৭ – ৫৫১৮
৫১২১। ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ মূসা আশ-আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মুরগীর গোশত খেতে দেখেছি।
আবূ মা’মার (রহঃ) … যাহদাম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) এর কাছে ছিলাম। জারমের এ গোত্র ও আমাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ছিল। আমাদের কাছে খাবার আনা ছিল। তাতে ছিল মোরগের গোশত। দলের মধ্যে লালচে রংয়ের এক ব্যাক্তি বসা ছিল। সে খাবারের দিকে অগ্রসর হল। আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) তখন বলেনঃ এগিয়ে এসো, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মোরগের গোশত খেতে দেখেছি। সে বললঃ আমি এটিকে এমন কিছু খেতে দেখেছি, যে কারণে তা খেতে আমি অপছন্দ করি। তখন আমি কসম করেছি যে, আমি তা খাব না। তিনি বললেনঃ এগিয়ে এসো, আমি তোমাকে জানাবো। কিংবা তিনি বলেছেন, আমি তোমাদের কাছে হাদীস বর্ননা করবো।
আমি আশআরীদের এক দল সহ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম। এরপর আমি তার সামনে এসে উপস্থিত হই যখন তিনি ছিলেন রাগান্বিত। তখন তিনি বণ্টন করছিলেন সাদাকার কিছু জানোয়ার। আমরা তার কাছে সাওয়ারী চাইলাম। তখন তিনি কসম করে বললেনঃ আমাদের কোন সাওসারী দিবেন না এবং বললেনঃ তোমাদের সাওয়ারীর জন্য দিতে পারি এমন কোন জন্তু আমার কাছে নেই। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গনীমতের কিছু উট আনা হল। তিনি বললেনঃ আশআরীগণ কোথায়? আশআরীগণ কোথায়?
আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) বলেনঃ এরপর তিনি আমাদের সাদাচুল বিশিষ্ট বলিষ্ট পাঁচটি উট দিলেন। আমরা কিছু দুরে গিয়ে অবস্থান করলাম। তখন আমি আমার সঙ্গীদের বললাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কসমের কথা ভুলে গিয়েছিলেন। আল্লাহর কসম যদি আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তার কসমের ব্যাপারে গাফিল রাখি, তাহলে আমরা কোনদিন সফলকাম হবো না। কাজেই আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ফিরে গিয়ে তাকে বলা হলঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা আপনার নিকট সাওয়ায়ী চেয়েছিলাম তখন আপনি আমাদের সাওসারী দেবেন না বলে কসম করেছিলেন। আমাদের মনে হয় আপনি আপনার কসমের কথা ভুলে গিয়েছেন।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ নিজেই তো আমাদের সাওয়ারীর জানোয়ার দিয়েছেন। আল্লাহর কসম, আমি যখন কোন ব্যাপারে কসম করি এরপর কসমের বিপরীত কাজ তার চাইতে মঙ্গলজনক মনে করি, তখন আমি মঙ্গলজনক কাজটিই করি এবং কাফফারা দিয়ে হালাল হয়ে যাই।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ মূসা আল- আশ’আরী (রাঃ)

তথ্যসূত্র

  1. সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, হাদিসঃ ৭১৪৭ []
  2. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৫১২১ []
  3. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, খণ্ড ৯, পৃষ্ঠা ১৮১, ১৮২ []


সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"