02.জিহাদীদের জন্য ৭২ হুর

ইসলামিক শাস্ত্রগুলোতে কোন রকম রাখঢাক না করে বেশ খোলামেলা ভাবেই জান্নাতের প্রতিশ্রুতি হিসেবে ৭২ জন হুরের ধারণা মুসলিম সমাজ প্রচলিত রয়েছে। অসংখ্য হাদিসগ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যারা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য জিহাদে অংশগ্রহণ করবে এবং মৃত্যুবরণ করবে, তাদের জন্য জান্নাতে ৭২ জন হুর অপেক্ষা করছে। এই ধর্মীয় বিশ্বাসটি শুধু যে কুৎসিত তাই নয়, এই ধর্মীয় বিশ্বাসটির মাধ্যমে আল্লাহকে মূলত একজন বেশ্যাপল্লীর দালাল হিসেবেই ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে, যেই আল্লাহ তার পক্ষে যুদ্ধ করলে সুন্দরী যুবতি বেশ্যাদের সাথে যৌন সঙ্গমের সুখের প্রতিজ্ঞা করে। প্রাচীনকালে এই কায়দায় ভাড়াটে সৈন্যদের রাজারা নিজের দলে নিতো। ক্ষমতালোভী রাজারা ভালভাবেই জানতো, ডাকাত এবং খুনী স্বভাবের মানুষদের জন্য কোন প্রলোভন সবচাইতে বেশি কাজে দিবে। জিহাদে জয়ী হলে গনিমতের মাল হিসেবে নারী, মৃত্যুবরণ করলেও জান্নাতে ৭২ বেশ্যার প্রতিশ্রুতির মত সুবর্ণ সুযোগ ইসলাম দিয়েছিল। নারী মাংসের লোভ এবং অর্থবিত্ত, এগুলো যেকোন মানুষকে জঙ্গিতে পরিণত করতে পারে, খুনী এবং ডাকাতে পরিণত করতে পারে, মুহাম্মদ বিষয়টি খুব ভালভাবেই বুঝে গিয়েছিলেন।

এই প্রতিশ্রুতি যুবসমাজকে অন্ধবিশ্বাস এবং ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের দিকে প্রলুব্ধ করতে পারে, যেখানে তারা ধর্মীয় আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য সহিংসতার পথ বেছে নিতে পারে। অন্যদিকে, এটি নারীর মর্যাদা এবং ব্যক্তিত্বকে চরমভাবে অবমাননা করে, যেখানে তাদের শুধুমাত্র পুরুষের যৌন ইচ্ছা পূরণের বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। এই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি একটি গভীর লিঙ্গ বৈষম্য এবং নারীর শরীরের প্রতি অবমাননাকর মনোভাবের জন্ম দেয়, যা একটি সভ্য সমাজের জন্য কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

এ ধরনের হাদিসগুলো ধর্মীয় উন্মাদনা বাড়িয়ে তোলে এবং সহজেই মুসলিম সমাজের কিছু অংশকে উগ্রপন্থী কর্মকাণ্ডে প্ররোচিত করে, যেখানে তারা জান্নাতের এই অপূর্ব পুরস্কার পাওয়ার আশা নিয়ে আত্মঘাতী হামলা বা সহিংস কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। ৭২ জন হুরের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যুবসমাজকে ধর্মীয় সহিংসতায় প্ররোচিত করা কেবল তাদের জীবনকেই ধ্বংস করে না, বরং সমাজে অশান্তি, ঘৃণা এবং সংঘাতের পরিবেশ তৈরি করে। এই ধরনের প্রতিশ্রুতির বাস্তবতা, নৈতিকতা এবং মানবিকতা নিয়ে গভীরভাবে প্রশ্ন তোলা উচিত এবং এটি একটি সভ্য সমাজে অগ্রহণযোগ্য এবং বিপজ্জনক বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। [1] [2]

সুনান আত তিরমিজী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
২৫/ জিহাদের ফযীলত
পরিচ্ছেদঃ শহীদের সাওয়াব।
১৬৬৯। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর রহমান (রহঃ) … মিকদাম ইবনু মা’দীকারির রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর কাছে শহীদদের জন্য রয়েছে ছয়টি বৈশিষ্টঃ রক্ত ক্ষরণের প্রথম মূহূর্তেই তাকে মাফ করা হবে। জান্নাতে তার নির্ধারিত স্থান প্রদর্শন করা হবে। কবর আযাব থেকে তাকে নিরাপত্তা দেওয়া হবে। সবচেয়ে মহাভীতির দিনে তাকে নিরাপদে রাখা হবে, তাঁর মাথায় সম্মানের তাজ পরানে হবে, এর একটি ইয়াকুত পাথর দুনিয়া ও এর সব কিছু থেকে উত্তম হবে; বাহাত্তর জন আয়াত লোচন হুরের সঙ্গে তার বিবাহ হবে, তার সত্তর জন নিকট আত্মীয় সম্পর্কে তার সুপারিশ কবুল করা হবে। সহীহ, আহকামুল জানায়িয ৩৫-৩৬, তা’লীকুর রাগীব ২/১৯৪, সহীহাহ ৩২১৩, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১৬৬৩ [আল মাদানী প্রকাশনী]
ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেন, এই হাদীসটি হাসান-সহীহ-গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ মিকদাম (রাঃ)

সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
২০/ জিহাদের ফাযীলাত
পাবলিশারঃ হুসাইন আল-মাদানী
পরিচ্ছদঃ ২৫. শহীদের সাওয়াব
১৬৬৩। মিকদাম ইবনু মা’দীকারিব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শহীদের জন্য আল্লাহ্ তা’আলার নিকট ছয়টি পুরস্কার বা সুযোগ আছে। তার প্রথম রক্তবিন্দু পড়ার সাথে সাথে তাকে ক্ষমা করা হয়, তাকে তার জান্নাতের বাসস্থান দেখানো হয়, কবরের আযাব হতে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়, সে কঠিন ভীতি হতে নিরাপদ থাকবে, তার মাথায় মর্মর পাথর খচিত মর্যাদার টুপি পরিয়ে দেওয়া হবে। এর এক একটি পাথর দুনিয়া ও তার মধ্যকার সবকিছু হতে উত্তম। তার সাথে টানা টানা আয়তলোচনা বাহাত্তরজন জান্নাতী হুরকে বিয়ে দেওয়া হবে এবং তার সত্তরজন নিকটাত্মীয়ের জন্য তার সুপারিশ কুবুল করা হবে।
সহীহ, আহকা-মুল জানায়িজ (৩৫-৩৬), তা’লীকুর রাগীব (২/১৯৪), সহীহা (৩২১৩)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)


এবারে আসুন বাংলাদেশের আলেম ওলামাদের কিছু বক্তব্য শুনে নেয়া যাক,





তথ্যসূত্র

  1. সুনান আত তিরমিজী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ১৬৬৯ []
  2. সুনান আত তিরমিজী(তাহকীককৃত), হাদিসঃ ১৬৬৩ []


সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"