14.জাতিগত নিধন বা ‘এথনিক ক্লিনজিং’

ধর্মীয় বা জাতিগত কারণে কোনো অঞ্চলে একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী বা জাতি অন্য একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী বা জাতিকে অযাচিত মনে করতে পারে। এক ধর্ম বা জাতির মানুষ মনে করতে পারে, এই ভূমির ওপর শুধুমাত্র এবং কেবলমাত্র তাদেরই অধিকার (প্রায়শই সেই অধিকার ইশ্বরের দেয়া বলে দাবী করা হয়ে থাকে) , এবং বহু বছর ধরে বসবাস করা অন্যান্য ধর্ম বা জাতিগোষ্ঠীকে তারা উচ্ছেদ করতে পারে কিংবা তাদের ওপর নিধনযজ্ঞ চালাতে পারে। ধর্ম বা জাতিগত পার্থক্যের জন্য একটি জনগোষ্ঠী বা গোত্রকে সম্পূর্ণরূপে উচ্ছেদ করাকে জাতিগত নিধন বা ‘এথনিক ক্লিনজিং’ বলা হয়।

Ethnic cleansing is the systematic forced removal of ethnic, racial and/or religious groups from a given territory by a more powerful ethnic group, often with the intent of making it ethnically homogeneous. [1] The forces which may be applied may be various forms of forced migration (deportation, population transfer), intimidation, as well as genocide and genocidal rape.

ধর্মের ভিত্তিতে সংঘটিত একটি বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপর জাতিগত নিধন মানবতার বিরুদ্ধে সবচেয়ে জঘন্য অপরাধগুলোর একটি। এটি একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল বা দেশ থেকে একটি সম্পূর্ণ জাতি বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে অপসারণ বা নির্মূল করার একটি ইচ্ছাকৃত এবং পদ্ধতিগত প্রচেষ্টা। এই ভয়ঙ্করতম অপরাধ শুধুমাত্র মৌলিক মানবাধিকারের লঙ্ঘনই নয়, এটি সভ্যতার মৌলিক নীতি ও মানবিক মর্যাদার বিরুদ্ধেও একটি গুরুতর অপরাধও বটে।

ঐতিহাসিকভাবে বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ওপরই জাতিগত নিধন চালানো হয়েছে। এই কাজগুলি সাধারণত ধর্মীয় মৌলবাদী বা চরমপন্থী গোষ্ঠী দ্বারা সংঘটিত হয়, যারা তাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য সহিংসতা, ত্রাস এবং ভয় ব্যবহার করে। জাতিগত নিধন চালাবার সময় অপরাধী সম্প্রদায় প্রায়শই দাবি করে যে, তারা আত্মরক্ষার স্বার্থে এই অপরাধ করছে কিংবা তাদের ধর্ম বা জাতিগত পরিচয় রক্ষা করছে, নিজেদের অন্যায়কে ন্যায্যতা দেয়ার উদ্দেশ্যেই তারা এগুলো বলে থাকে। একটু পর্যালোচনা করলেই দেখা যায় যে, এই ধরনের দাবিগুলো ভিত্তিহীন এবং শুধুমাত্র তাদের অপরাধমূলক কার্যকলাপকে ন্যায্যতা প্রদানের উদ্দেশ্যেই একটি অজুহাত হিসাবে তারা এইধরণের আত্মরক্ষার দাবিকে ব্যবহার করে, যা আদৌ আত্মরক্ষামূলক নয়।

ধর্মের ভিত্তিতে জাতিগত নিধনের শিকার হওয়া, নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হওয়া শুধুমাত্র আক্রান্ত জনগোষ্ঠীকেই নয়, এতে সামগ্রিকভাবে সমাজের উপর বিধ্বংসী প্রভাব পড়ে। এটি বেঁচে থাকা মানুষদের জন্য শারীরিক এবং মানসিক সমস্যার কারণ হয়। যারা প্রায়শই তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে, তাদের ভিটামাটি বাড়িঘর বিষয় সম্পত্তি রেখে যেতে এবং তাদের বহুদিন ধরে চলে আসা জীবনযাত্রা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়।

এটি সমাজের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী বিভাজনও তৈরি করে, কারণ সম্প্রদায়গুলির মধ্যে বিভাজন এবং নির্যাতন প্রায়শই স্থায়ী হয় এবং সমাজের মানুষেরা একে অপরের প্রতি অবিশ্বাসী হয়ে ওঠে। অধিকন্তু, এটি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের সামাজিক কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, কারণ এটি এলাকার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং বৈচিত্র্যকে ধ্বংস করে।

ধর্মের ভিত্তিতে জাতিগত নিধন প্রতিরোধ করার দায়িত্ব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। জাতিসংঘ স্বীকার করেছে যে জাতিগত নির্মূল মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং এটি আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে শাস্তিযোগ্য। তবে এ ধরনের নৃশংসতা প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক আইনের কার্যকারিতা সত্যিকার অর্থে সীমিত। তাই জাতিগত নির্মূল প্রতিরোধ এবং মানবাধিকার ও মামুষের বৈচিত্র্যের প্রতি সম্মান বৃদ্ধির জন্য জাতিগুলোর একত্রে কাজ করা অপরিহার্য।

ধর্মের ভিত্তিতে জাতিগত নির্মূল প্রতিরোধে প্রতিটি সভ্য সরকারকে সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে সংঘাতের মূল কারণগুলিকে মোকাবেলা করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া, আন্তঃধর্ম এবং আন্তর্জাতিক সংলাপের প্রচার, এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সহনশীলতা ও বোঝাপড়ার প্রচার। যারা এই ধরনের অপরাধ করে তাদের জবাবদিহির ব্যবস্থা করা, এই ধরণের বিভাজনে যেসকল ধর্মগুরু বা ধর্মীয় মতাদর্শ বা ধর্মীয় গ্রন্থ উস্কানীমূলক বক্তব্য প্রচার করে তাদের বিচারের আওতায় আনা এবং তাদের কর্মের জন্য শাস্তি নিশ্চিত করাও এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ধর্মের ভিত্তিতে জাতিগত নির্মূল করা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। এটি সামগ্রিকভাবে ব্যক্তি এবং সমাজের জন্য বিধ্বংসী পরিণতি বহন করে। এই ধরনের নৃশংস ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে হবে এবং সরকারগুলিকে অবশ্যই মানুষের ধর্মীয়, লৈঙ্গিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রতি সম্মান বৃদ্ধি করতে এবং দুর্বল সম্প্রদায়ের সুরক্ষার জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে হবে। শুধুমাত্র একসাথে কাজ করার মাধ্যমে আমরা এমন একটি পৃথিবী তৈরি করতে পারি যেখানে প্রতিটি ব্যক্তি ভয় ও নিপীড়ন থেকে মুক্ত, মানবিক মর্যাদার সাথে বসবাস করতে পারে।

ধর্মের ভিত্তিতে কোন জনগোষ্ঠীকে ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা, বিতাড়িত করা, এগুলো যুগে যুগে অসংখ্যবার হয়েছে। এই বর্তমান সময়েও মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ, ফিলিস্তিনীদের উচ্ছেদ, কাশ্মীরীদের উচ্ছেদ, এই ঘটনাগুলোর কথা আমরা সকলেই জানি, এবং ধর্মের ভিত্তিতে অস্ত্র-সামরিক বাহিনী দিয়ে ভয় দেখিয়ে-জোরপূর্বক কোন জনগোষ্ঠীকে উচ্ছেদ করার এই প্রক্রিয়া মানব ইতিহাসে সবচাইতে হৃদয় বিদারক এবং ভয়াবহ ঘটনা বলেই বিবেচিত হয়। এই বাঙলাদেশ থেকেও ১৯৪৭ সালে এবং ১৯৭১ সালে অসংখ্য হিন্দুদের দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়, এরপরেও অসংখ্য হিন্দুদের এই দেশ থেকে ভারতে চলে যেতে বাধ্য করা হয়। এই সাম্প্রদায়িকতা, এই ধর্মান্ধতা মানব সভ্যতার অন্যতম প্রধান শত্রু। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এগুলো কী নবী মুহাম্মদেরও শিক্ষা?

নবী মুহাম্মদ মক্কায় যখন প্রথম ধর্ম প্রচার শুরু করেন, তখন শুধুমাত্র কয়েকজনকে তার ধর্মে আনতে তিনি সক্ষম হয়েছিলেন। সেই সময়ে তার না ছিল দলবল, না ছিল যুদ্ধ করার সামর্থ্য। মদিনায় হিজরত করেই নবীর ভাগ্যের পরিবর্তন হতে শুরু করলো। তিনি নিয়মিত বানিজ্য কাফেলা আক্রমণ করে বানিজ্য কাফেলার মালামাল লুট করতে শুরু করলেন, যা তার শক্তিসামর্থ্য বৃদ্ধি করছিল। মদিনায় ইহুদিদের কাছে সাহায্য সহযোগিতা পেয়ে নবীও ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়ে উঠছিলেন। এরপরে তিনি ধীরে ধীরে ইহুদি গোত্রগুলোকে আক্রমণ করতে শুরু করেন। তবে তার বৃহৎ পরিকল্পনা এরকমই ছিল যে, তিনি মদিনা থেকে তার অপছন্দের গোত্র ও মানুষগুলোকে ধীরে ধীরে বিতাড়িত করবেন। যার প্রমাণ মেলে হাদিস থেকেই [2] [3]

সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
২৯/ মদীনার ফাযীলাত
পরিচ্ছেদঃ ২৯/২. মদীনার ফযীলত। মদীনাহ (অবাঞ্ছিত) লোকজনকে বহিষ্কার করে দেয়।
১৮৭১. আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমি এমন এক জনপদে হিজরত করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি, যে জনপদ অন্য সকল জনপদের উপর জয়ী হবে। লোকেরা তাকে ইয়াসরিব বলে থাকে। এ হল মদিনা। তা অবাঞ্ছিত লোকদেরকে এমনভাবে বহিষ্কার করে দেয়, যেমনভাবে কামারের অগ্নিচুলা লোহার মরিচা দূর করে দেয়। (মুসলিম ১৫/৮৮, হাঃ ১৩৮২, আহমাদ ৮৯৯৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৭৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৭৪৭ )
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৬/ হাজ্জ (হজ্জ/হজ)
পরিচ্ছেদঃ ৮৫. মদীনা নিজের মধ্য থেকে নিকৃষ্ট জিনিস বের করে দিবে এবং মদীনার অপর নাম ‘তাবা’ ও ‘তায়বা’
৩২২৩। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি এমন একটি জনপদে (হিজরতের) জন্য আদিষ্ট যা সমস্ত জনপদ খেয়ে ফেলবে (আধিপত্য বিস্তার করবে)। লোকেরা তাকে ইয়াসরীব নামে অভিহিত করেছে। আর এটা হল মদিনা। তা লোকদের এমনভাবে বের করবে যেমনিভাবে হাপর লোহার ময়লা বের করে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)

মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতর মুহাম্মদ সেই শেষ সময়েও ওয়াসিয়ত করে গিয়েছেন, অমুসলিমদের বিতাড়িত করতে [4]

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
অধ্যায়ঃ ৪৮/ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ ১৯১৭. প্রতিনিধি দলকে উপঢৌকন প্রদান
১৯১৬. পরিচ্ছেদঃ জিম্মিদের জন্য সুপারিশ করা যাবে কি এবং তাদের সাথে আচার-আচরণ
২৮৩৮। কাবীসা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি (কোন এক সময়) বললেন, বৃহস্পতিবার! হায় বৃহস্পতিবার! এরপর তিনি কাঁদতে শুরু করলেন, এমনকি তাঁর আশ্রুতে (যমিনের) কঙ্করগুলো সিক্ত হয়ে গেল। আর তিনি বলতে লাগলেন, বৃহস্পতিবারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রোগ যাতনা বেড়ে যায়। তখন তিনি বললেন, তোমার আমার জন্য লিখার কোন জিনিস নিয়ে আস, আমি তোমাদের জন্য কিছু লিখিয়ে দিব। যাতে এরপর তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট না হয। এতে সাহাবীগণ পরস্পর মতপার্থক্য করেন। অথচ নাবীর সম্মুখে মতপার্থক্য সমীচীন নয়। তাদের কেউ কেউ বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়া ত্যাগ করেছেন?’
তিনি বললেন, ‘আচ্ছা’ আমাকে আমার অবস্থায় থাকতে দাও। তোমরা আমাকে যে অবস্থার দিকে আহবান করছো তার চেয়ে আমি যে অবস্থায় আছি তা উত্তম। ’ অবশেষে তিনি ইন্তেকালের সময় তিনটি বিষয়ে ওসীয়ত করেন। (১) মুশরিকদেরকে আরব উপদ্বীপ থেকে বিতাড়িত কর, (২) প্রতিনিধি দলকে আমি যেরূপ উপঢৌকন দিয়েছি তোমরাও আনুরূপ দিও (রাবী বলেন) তৃতীয় ওসীয়তটি আমি ভুলে গিয়েছি। আবূ আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) ও ইয়াকুব (রহঃ) বলেন, আমি মুগীরা ইবনু আবদুর রাহমানকে জাযীরাতুল আরব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি বললেন, তাহল মক্কা, মদিনা ইয়ামামা ও ইয়ামান। ইয়াকূব (রহঃ) বলেন, ‘তিহামা আরম্ভ হল ‘আরজ থেকে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ)

আরো খুব দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, ইসলাম ধর্মের নবী মুহাম্মদ খুব পরিষ্কারভাবেই ঘোষণা দিয়েই বলেছিলেন, তিনি ধীরে ধীরে আরবের সমস্ত ইহুদি, খ্রিস্টান, পৌত্তলিক, সবাইকে আরব উপদ্বীপ থেকে বিতাড়িত করবেন। অর্থাৎ তার মূল লক্ষ্যই ছিল, আরব উপদ্বীপের সবাইকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করা, নতুবা তাদের উচ্ছেদ করা। এই বিষয়ে তিনি কখনো কোন রাখঢাকও করেন নি। সহি হাদিসে এই সম্পর্কে অসংখ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। [5] [6]

সুনানে ইবনে মাজাহ
ভূমিকা পর্ব
পরিচ্ছেদঃ ৯. ঈমানের বিবরণ
১৪/৭১। আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি লোকেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি যতক্ষণ না তারা সাক্ষ্য প্রদান করে যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন ইলাহ নাই, নিশ্চয়ই আমি আল্লাহ্‌র রাসূল এবং তারা সালাত কায়িম করে এবং যাকাত দেয়।
তাখরীজ কুতুবুত সিত্তাহ: বুখারী ১৪০০, ২৯৪৬, ৬৯২৪, ৭২৮৫; মুসলিম ২০, ২১/১-৩; তিরমিযী ২৬০৬-৭, নাসায়ী ২৪৪৩, ৩০৯০-৯৩, ৩০৯৫, ৩৯৭০-৭৮; আবূ দাঊদ ২৬৪০, আহমাদ ৬৮, ১১৮, ৩৩৭, ২৭৩৮০, ৮৩৩৯, ৮৬৮৭, ৯১৯০, ২৭২১৪, ৯৮০২, ২৭২৮৪, ১০১৪০, ১০৪৪১, ১০৪৫৯।
তাহক্বীক্ব আলবানী: সহীহ মুতাওয়াত্বির। তাখরীজ আলবানী: সহীহাহ ৪০৭। উক্ত হাদিসের রাবী আবু জা’ফার সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, মুগীরাহ থেকে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেছেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নন। বু হাতিম আর-রাযী ও আলী ইবনুল মাদীনী এবং ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)

সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
১। ঈমান (বিশ্বাস)
পরিচ্ছেদঃ ৮. লোকেদের বিরুদ্ধে জিহাদের নির্দেশ যতক্ষণ না তারা স্বীকার করে যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই, মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল এবং সালাত কায়িম করে, যাকাত দেয়, নাবী যে শারীআতের বিধান এনেছেন তার প্রতি ঈমান আনে, যে ব্যক্তি এসব করবে সে তার জান মালের নিরাপত্তা লাভ করবে; তবে শারীআত সম্মত কারণ ব্যতীত, তার অন্তরের খবর আল্লাহর কাছে; যে ব্যক্তি যাকাত দিতে ও ইসলামের অন্যান্য বিধান পালন করতে অস্বীকার করে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার এবং ইসলামের বৈশিষ্ট্যসমূহ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ইমামের গুরুত্বারোপ করার নির্দেশ।
৩৭-(৩৭/২৩) সুওয়াইদ ইবনু সাঈদ আবূ উমর (রহঃ) ….. আবূ মালিক তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই, এ কথা স্বীকার করে এবং আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য উপাস্যকে অস্বীকার করে, তার জান-মাল নিরাপদ? আর তার হিসাব নিকাশ আল্লাহর নিকট। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৭, ইসলামিক সেন্টারঃ ৩৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ মালিক আল আশ্‘আরী (রাঃ)

উপরের সহিহ হাদিসগুলো থেকে স্পষ্টভাবেই বোঝা যায়, নবী মুহাম্মদ এই পৃথিবীতে জন্মই নিয়েছিলেন কাফেররা যতক্ষণ পর্যন্ত না ইসলাম কবুল করে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে। কাফেররা হয় ইসলাম গ্রহণ করবে, নতুবা অপমানিত অবস্থায় জিজিয়া কর দিবে, এই হচ্ছে ইসলামের সরাসরি বিধান [7] [8]। এবারে আসুন, আরো কয়েকটি হাদিস পড়ি, যেখান থেকে জানা যায়, নবী মুহাম্মদের লক্ষ্যই ছিল ইহুদি নাসারা পৌত্তলিক সকলকে আরব উপদ্বীপ থেকে বিতাড়িত করে সেখানে ইসলামের একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করা। [9] [10] [11]

সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩৩/ জিহাদ ও এর নীতিমালা
পরিচ্ছদঃ ২১. ইয়াহুদী ও নাসারাদের আরব উপ-দ্বীপ থেকে বহিস্কার
৪৪৪২। যুহায়র ইবনু হারব ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমার কাছে উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, নিশ্চয়ই আমি ইয়াহুদী ও খ্রীষ্টান সম্প্রদায়কে আরব উপ-দ্বীপ থেকে বহিস্কার করবো। পরিশেষে মুসলমান ব্যতীত অন্য কাউকে এখানে থাকতে দেবো না।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ৩৩। জিহাদ ও সফর
পরিচ্ছদঃ ২১. ইয়াহুদী ও নাসারাদের আরব উপ-দ্বীপ থেকে বের করে দেয়া
৪৪৮৬-(৬৩/১৭৬৭) যুহায়র ইবনু হারব ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি’ (রহঃ) ….. জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাযিঃ) বলেন, আমার কাছে উমর ইবনু খাত্তাব (রাযিঃ) বর্ণনা করেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, নিশ্চয়ই আমি ইয়াহুদী ও খ্ৰীষ্টান সম্প্রদায়কে আরব উপ-দ্বীপ থেকে বের করে দেবো। তারপর মুসলিম ব্যতীত অন্য কাউকে এখানে থাকতে দেবো না। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪৪৪২, ইসলামিক সেন্টার ৪৪৪৪)
যুহায়র ইবনু হারব ও সালামাহ্ ইবনু শাবীব (রহঃ) ….. উভয়েই আবূ যুবায়র (রহঃ) থেকে এ সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪৪৪২, ইসলামিক সেন্টার ৪৪৪৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
অধ্যায়ঃ ১৯/ যুদ্ধাভিযান
পাবলিশারঃ হুসাইন আল-মাদানী‏
পরিচ্ছদঃ ৪৩. আরব উপদ্বীপ হতে ইয়াহুদী-নাসারাদের বের করে দেওয়া প্রসঙ্গে
১৬০৭। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেনঃ আমি ইহুদী ও নাসারাদের আরব উপদ্বীপ হতে অবশ্যই বহিষ্কার করব। মুসলমান ব্যতীত অন্য কাউকে সেখানে বসবাস করতে দিব না।
সহীহ, সহীহা (১১৩৪), সহীহ আবূ দাউদ, মুসলিম
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

অর্থাৎ, এই কথাটি খুব পরিষ্কারভাবেই বোঝা যায়, আরব উপদ্বীপের ইহুদি খ্রিষ্টান কিংবা পৌত্তলিক যারাই সেই সময়ে ছিলেন, তাদের কোন না কোন সময়ে অবশ্যই উচ্ছেদ করা হতো। যার পরিকল্পনাই থাকবে এমন যে, সেই অঞ্চল থেকে মুসলিম ছাড়া অন্য সবাইকে উচ্ছেদ করবে, তিনি ছলে বলে কৌশলে নানা অজুহাতে এই চেষ্টাই করবেন যে, কোনভাবে তাদের ওপর কোন অভিযোগ আরোপ করে তাদের যেন হত্যা কিংবা উচ্ছেদ করা যায়। কারণ নবী মুহাম্মদের সবসময়ই এই সুপ্ত ইচ্ছাটিই ছিল যে, তিনি মুসলিম ছাড়া অন্য সবাইকেই সেখান থেকে তাড়িয়ে দেবেন। আসুন এই বিষয়ে নবী মুহাম্মদের আরো কয়েকটি হাদিস দেখে নিই। নবী বলেছেন যে, মানুষ যে পর্যন্ত না “আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত আর কোন প্ৰভু নেই” এই কথার স্বীকৃতি দিবে সেই পর্যন্ত আমি(নবী) তাদের বিরুদ্ধে কিতাল বা সশস্ত্র যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি [12] [13]

সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
৩৮/ ঈমান
পরিচ্ছেদঃ ১. যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ না বলবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কিতাল করতে আমি আদেশপ্রাপ্ত হয়েছি
২৬০৭। আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর মৃত্যুর পর আবূ বকর (রাযিঃ) যখন খলীফা নির্বাচিত হন, তখন আরবের কিছু সংখ্যক লোক কাফির হয়ে যায়। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) আবূ বাকর (রাযিঃ)-কে বললেন, আপনি এদের বিরুদ্ধে কিভাবে অস্ত্ৰধারণ করবেন, অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষ যে পর্যন্ত না “আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত আর কোন প্ৰভু নেই” এই কথার স্বীকৃতি দিবে সেই পর্যন্ত আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি। আর যে ব্যক্তি বললো, “আল্লাহ ব্যতীত আর কোন প্ৰভু নেই” সে আমার থেকে তার মাল ও রক্ত (জীবন) নিরাপদ করে নিল। তবে ইসলামের অধিকার সম্পর্কে ভিন্ন কথা। আর তাদের প্রকৃত হিসাব-নিকাশ রয়েছে আল্লাহ তা’আলার দায়িত্বে।
আবূ বকর (রাযিঃ) বললেনঃ আল্লাহর শপথ নামায ও যাকাতের মধ্যে যে ব্যক্তি পার্থক্য করে আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবোই। কেননা যাকাত সম্পদের হাক্ক। কেউ উটের একটি রশি দিতেও যদি অস্বীকার করে, যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে দিত, আল্লাহর কসম! আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবোই। তারপর উমার ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ! আমি দেখতে পেলাম আল্লাহ যেন যুদ্ধের জন্য আবূ বাকরের অন্তর উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। অতঃপর আমি বুঝতে পারলাম যে, তার সিদ্ধান্তই যথার্থ।
সহীহঃ সহীহাহ (৪০৭), সহীহ আবূ দাউদ (১৩৯১-১৩৯৩), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ। শু’আইব ইবনু আবী হামযা (রহঃ) যুহরী হতে, তিনি উবাইদুল্লাহ ইবনু আবদিল্লাহ হতে, তিনি আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ)-এর সূত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন। এই হাদীস মামার-যুহরী হতে, তিনি আনাস (রাযিঃ) হতে, তিনি আবূ বাকর (রাযিঃ) হতে এই সূত্রে ইমরান আল-কাত্তান বর্ণনা করেছেন। এ বর্ণনাটি ভুল। ‘ইমরানের ব্যাপারে মা’মার হতে বর্ণিত বর্ণনাতে বিরোধিতা করা হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)

সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
৩৮/ ঈমান
পরিচ্ছেদঃ ২. আমি লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ বলবে এবং নামায আদায় করবে
২৬০৮। আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত আর কোন প্ৰভু নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহ তা’আলার বান্দা ও তার রাসূল এবং আমাদের কিবলামুখী হয়ে নামায আদায় করবে, আমাদের যবেহকৃত পশুর গোশত খাবে এবং আমাদের মতো নামায আদায় করবে। তারা এগুলো করলে তাদের জান ও মালে হস্তক্ষেপ করা আমাদের জন্য হারাম হয়ে যাবে। কিন্তু ইসলামের অধিকারের বিষয়টি ভিন্ন। মুসলিমদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা তারাও পাবে এবং মুসলিমদের উপর অর্পিত দায়-দায়িত্ব তাদের উপরও বর্তাবে।
সহীহঃ সহীহাহ (৩০৩) ও (১/১৫২), সহীহ আবূ দাউদ (২৩৭৪), বুখারী অনুরূপ।
মুআয ইবনু জাবাল ও আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ এবং উপরোক্ত সূত্রে গারীব। ইয়াহইয়া (রাহঃ) হুমাইদ হতে, তিনি আনাস (রাযিঃ)-এর সূত্রে একই রকম হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করতেন নবী মুহাম্মদ, নইলে ভূমি দখলের হুমকি দেয়া হতো খুব স্পষ্টভাবে। যার অসংখ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। কয়েকটি এখানে উল্লেখ করা হচ্ছে [14] [15]

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৮৫/ কুরআন ও সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে ধারন
পরিচ্ছেদঃ ৩০৯২. মহান আল্লাহর বাণীঃ মানুষ অধিকাংশ ব্যাপারেই বিতর্কপ্রিয় (১৮ঃ ৫৪)। মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমরা কিতাবীদের সাথে বিতর্ক করবে না………. (২৯ঃ ৪৬)
৬৮৪৭। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা মসজিদে নববীতে ছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদ থেকে বের হয়ে আমাদেরকে বললেনঃ তোমরা চলো ইহুদীদের সেখানে যাই। আমরা তাঁর সঙ্গে বেরিয়ে এলাম। অবশেষে আমরা বায়তুল মিদরাসে (তাদের শিক্ষাগারে) পৌছলাম। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে দাঁড়িয়ে তাদেরকে লক্ষ্য করে বললেনঃ হে ইহুদী সম্প্রদায়! তোমরা ইসলাম কবুল কর, এতে তোমরা নিরাপদে থাকবে। ইহুদীরা বলল, হে আবূল কাসিম! আপনার পৌছানোর দায়িত্ব আপনি পালন করেছেন। এরপর তিনি বললেনঃ আমার ইচ্ছা তোমরা ইসলাম কবুল কর এবং শান্তিতে থাক। তারাও আবার বলল, হে আবূল কাসিম! আপনার পৌছানোর দায়িত্ব আপনি পালন করেছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বললেনঃ আমি এরূপই ইচ্ছা রাখি। তৃতীয়বারেও তিনি তাই বললেন। পরিশেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ জেনে রেখো, যমীন একমাত্র আল্লাহ ও তার রাসুলের। আমি তোমাদেরকে এই এলাকা থেকে উচ্ছেদ করে দিতে চাই। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যাদের অস্থাবর সম্পত্তি আছে, তা যেন সে বিক্রি করে দেয়। অন্যথায় জেনে রেখো যমীন আল্লাহ ও তার রাসুলের।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)

সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
আল্লামা আলবানী একাডেমী
অধ্যায়ঃ ১৪/ কর, ফাই ও প্রশাসক
৩০০৩। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আমরা মাসজিদে উপস্থিত ছিলাম, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে বেরিয়ে এসে বললেনঃ ইয়াহুদীদের এলাকায় চলো। ‘আমরা তাঁর সাথে বের য়ে সেখানে গিয়ে পৌঁছলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে তাদেরকে ডেকে বললেনঃ হে ইয়াহুদী সম্প্রদায়! তোমরা ইসলাম কবূল করো শান্তিতে থাকবে। তারা বললো, হে আবুল কাসিম! আপনি পৌঁছে দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে আবার বললেনঃ তোমরা ইসলাম কবূল করো, নিরাপত্তা পাবে। তারা বললো, হে আবুল কাসিম! আপনি পৌঁছে দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বললেনঃ এ দাওয়াত পৌঁছে দেয়াই আমার উদ্দেশ্য ছিলো। তৃতীয় বারও তিনি একই কথার পুনরাবৃত্তি করে বললেনঃ জেনে রাখো! এ ভুখন্ডের মালিকানা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের। আমি তোমাদের এ ভূখন্ড থেকে বিতাড়িত করতে চাই। সুতরাং তোমরা কোনো জিনিস বিক্রি করতে সক্ষম হলে বিক্রি করো। অন্যথায় জেনে রাখো! এ ভূখন্ডের মালিক আল্লাহ ও তাঁর রাসূল।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

জাতি

আসুন তাফসীরে মাযহারী থেকে একটি অংশ পড়ে নিই, [16]

জাতি 1

তথ্যসূত্র

  1. Rubenstein, James M. (2008). The Cultural Landscape: An Introduction to Human Geography. Pearson. ISBN 9780131346819 []
  2. সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, হাদিস নম্বরঃ ১৮৭১[]
  3. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশ, হাদিস নম্বরঃ ৩২২৩ []
  4. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ২৮৩৮ []
  5. সুনানে ইবনে মাজাহ, ১৪/৭১ []
  6. সহীহ মুসলিম, হাদীস একাডেমী, হাদিস নম্বর- ৩৭-(৩৭/২৩) []
  7. অপদস্থতার নিদর্শন জিযিয়া | তাফসীরে মাযহারী []
  8. লাঞ্ছিত অবস্থায় জিযিয়া |তাফসীরে ইবনে কাসীর []
  9. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৪৪৪২ []
  10. সহীহ মুসলিম, (হাদিস একাডেমী, হাদিস নম্বরঃ ৪৪৮৬ []
  11. সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত), হুসাইন আল-মাদানী‏ পাবলিকেশন্স, হাদিস নম্বরঃ ১৬০৭ []
  12. সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত), হাদিস নম্বরঃ ২৬০৭ []
  13. সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত), হাদিস নম্বরঃ ২৬০৮ []
  14. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৬৮৪৭ []
  15. সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত), আল্লামা আলবানী একাডেমী, হাদিসঃ ৩০০৩ []
  16. তাফসীরে মাযহারী, পঞ্চম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৮৯ []


সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"