ইসলাম ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নবীর নাম হচ্ছে ইব্রাহীম। তিনি জন্ম নিয়েছিলেন একটি পৌত্তলিক পরিবারে। তার পিতা ছিল মূর্তি পুজারী। তিনি সেই ছোটবেলা থেকেই লুকিয়ে পৌত্তলিকদের মূর্তি ভেঙ্গে আসতেন। পৌত্তলিকদের মূর্তি ভাঙ্গার অনেকগুলো গল্প ইসলামের নানা গ্রন্থে খুব মহান এবং বীরত্বের কাজ হিসেবে বর্ণিত আছে। ইব্রাহীম কীভাবে মূর্তিপুজারীদের মূর্তি ভেঙ্গে তা নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করতেন, অন্য ধর্মের মানুষকে অপমান অপদস্থ করতেন, অন্য ধর্মের অবমাননা করতেন, সেগুলো কোরআন হাদিসের নানা জায়গায় পাওয়া যায়। ইসলামিক সূত্রগুলো থেকে জানা যায়, ইব্রাহীমের সম্প্রদায় দেবদেবীর পুজা করতো। একদিন তিনি কেন্দ্রীয় দেবমন্দিরে গিয়ে মূর্তিগুলো ভেঙ্গে ফেলার সংকল্প করলেন। আসুন শুরুতে একটি অ্যাজ শুনে নিই,
ইবরাহীমের সম্প্রদায় বছরের একটা দিনে উৎসব পালন করত। নবী ইব্রাহীম খুব কৌশলে অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে সেখানে যেতে অপারগতা প্রকাশ করলেন। তার পরিকল্পনা ছিল, এই সুযোগে দেবমন্দিরে প্রবেশ করে মূর্তিগুলোকে ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়া। সবাই চলে গেলে তিনি মন্দিরে ঢুকলেন এবং দেব-দেবীদের কুড়াল দিয়ে ভীষণ জোরে আঘাত করে সবগুলোকে গুঁড়িয়ে দিলেন। তবে বড় মূর্তিটাকে পূর্বাবস্থায় রেখে দিলেন। মেলা শেষে লোকজন ফিরে আসলো এবং মন্দিরে গিয়ে প্রতিমাগুলির অবস্থা দেখে হতবাক হয়ে গেল। তারা বুঝে গেল, এগুলো ইব্রাহীমেরই কাজ। ইব্রাহীম তখন বলতে লাগলো, ঐ বড় মূর্তিটিই এই কাজ করেছে। সেই সাথে এটিও বললো, মূর্তিগুলোর ক্ষমতা থাকলে নিজেদের রক্ষা করলো না কেন? যেসব মূর্তির নিজেদের রক্ষা করার ক্ষমতা নেই, তারা কীভাবে মানুষকে রক্ষা করবে? কথাগুলো যৌক্তিক হলেও, ধর্ম অবমাননা নিঃসন্দেহে। একই যুক্তি কিন্তু মসজিদ ভাঙ্গা কিংবা কোরআন পোড়াবার ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা যায়।
আসুন, আল্লামা ইবনে কাসীরের বিখ্যাত গ্রন্থ আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া থেকে ঘটনাটি পড়ি [1] –
অর্থাৎ, ইসলাম ধর্মের অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ একজন নবী, উনি নিজেই বাপদাদার ধর্ম, তার গোত্রের সংস্কৃতি ও বিশ্বাস নিয়ে চরমভাবে ঠাট্টা তামাশা, কটাক্ষ, অবমাননা এগুলো সবই করতেন। তবে ইসলাম ধর্মকে নিয়ে ঠিক একইভাবে কটাক্ষ, কটূক্তি, সমালোচনা কী করা সম্ভব?
তথ্যসূত্র
- আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩২৮, ৩৩০, ৩৩১, ৩৩২, ৩৩৩, ৩৩৪, ৩৩৫ [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"