21.মদ্যপানের বিধান বারবার পরিবর্তন

কোরআনের আয়াতের পরিবর্তন, পরিমার্জন এবং সংস্কারের একটি সুস্পষ্ট উদাহরণ হচ্ছে, মদ খাওয়ার বিধান সম্পর্কিত আয়াতগুলো। আয়াতগুলো নাজিলের ক্রমানুসারে পড়লে বুঝতে সমস্যা হয় না যে, আল্লাহ এই নিয়ে বেশ দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে ছিলেন। মদ হালাল রাখবেন নাকি হারাম করবেন! আল্লাহর মন মানসিকতা যে সময়ের সাথে পরিবর্তন হয়, সেটিও এই আয়াতগুলো থেকে স্পষ্ট হয়। আসুন আমরা পড়ি মদ্যপান হালাল এবং হারাম হওয়ার বিধান। এই আয়াতগুলো থেকে আল্লাহ পাকের সিদ্ধান্তহীনতা এবং বারবার নিয়ম পরিবর্তনের স্পষ্ট প্রমাণ মেলে। আসুন আয়াতগুলো দেখি [1]

আর খেজুর ও আঙ্গুর ফল থেকে তোমরা মদ ও উত্তম খাদ্য প্রস্তুত কর, জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য এতে অবশ্যই বহু নিদর্শন রয়েছে।
— Taisirul Quran
আর খেজুর গাছের ফল ও আঙ্গুর হতে তোমরা মাদক ও উত্তম খাদ্য গ্রহণ করে থাক, এতে অবশ্যই বোধশক্তি সম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে নিদর্শন।
— Sheikh Mujibur Rahman
আর তোমরা খেজুর গাছের ফল ও আঙ্গুর থেকে মাদক* ও উত্তম রিয্ক গ্রহণ কর। নিশ্চয় এতে এমন কওমের জন্য নিদর্শন রয়েছে, যারা বুঝে। * ইমাম তাবারী বলেন, আয়াতটি মাদক নিষিদ্দ হওয়ার পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছে।
— Rawai Al-bayan
আর খেজুর গাছের ফল ও আঙ্গুর হতে তোমরা মাদক ও উত্তম খাদ্য গ্রহণ করে থাক [১]; নিশ্চয় এতে বোধশক্তি সম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে নিদর্শন [২]
— Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
And from the fruits of the palm trees and grapevines you take intoxicant and good provision.1 Indeed in that is a sign for a people who reason.
— Saheeh International

এরপরে নাজিল হওয়া আয়াতে বলা হয়, মদে উপকারও আছে, অপকারও আছে [2]

তোমাকে লোকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে। বল, ‘ঐ দু’টোতে আছে ভয়ঙ্কর গুনাহ এবং মানুষের জন্য উপকারও কিন্তু এ দু’টোর পাপ এ দু’টোর উপকার অপেক্ষা অধিক’। তোমাকে জিজ্ঞেস করছে, কী তারা ব্যয় করবে? বল, ‘যা উদ্বৃত্ত’। এভাবে আল্লাহ তোমাদের প্রতি আদেশাবলী বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করছেন, যাতে তোমরা চিন্তা কর ।
— Taisirul Quran
মাদক দ্রব্য ও জুয়া খেলা সম্বন্ধে তারা তোমাকে জিজ্ঞেস করছে। তুমি বলঃ এ দু’টোর মধ্যে গুরুতর পাপ রয়েছে এবং কোন কোন লোকের (কিছু) উপকার আছে, কিন্তু ও দু’টোর লাভ অপেক্ষা পাপই গুরুতর; তারা তোমাকে (আরও) জিজ্ঞেস করছে, তারা কি (পরিমান) ব্যয় করবে? তুমি বলঃ যা তোমাদের উদ্ধৃত্ত; এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য নিদর্শনাবলী ব্যক্ত করেন যেন তোমরা চিন্তা-ভাবনা কর।
— Sheikh Mujibur Rahman
তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বল, এ দু’টোয় রয়েছে বড় পাপ ও মানুষের জন্য উপকার। আর তার পাপ তার উপকারিতার চেয়ে অধিক বড়। আর তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, তারা কী ব্যয় করবে। বল, ‘যা প্রয়োজনের অতিরিক্ত’। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা কর।
— Rawai Al-bayan
লোকেরা আপনাকে মদ [১] ও জুয়া [২] সম্পর্কে জিজ্জেস করে। বলুন, ‘দু’টোর মধ্যেই আছে মহাপাপ এবং মানুষের জন্য উপকারও ; আর এ দু’টোর পাপ উপকারের চেয়ে অনেক বড়’। আর তারা আপনাকে জিজ্জেস করে কি তারা ব্যায় করবে ? বলুন, যা উদ্বৃত্ত [৩]। এভাবে আল্লাহ্‌ তাঁর আয়াতসমূহ তোমাদের জন্য সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন, যাতে তোমরা চিন্তা কর।
— Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
They ask you about wine1 and gambling. Say, “In them is great sin and [yet, some] benefit for people. But their sin is greater than their benefit.” And they ask you what they should spend. Say, “The excess [beyond needs].” Thus Allah makes clear to you the verses [of revelation] that you might give thought
— Saheeh International

পরবর্তী সময়ে হযরত আলী মদ্যপ অবস্থায় ভুল সূরা পড়ে নামাজ পড়াবার কারণে মদ পান করে নামাজ পড়ানো বা পড়া নিষিদ্ধ হয়, যেটি জানা যায় একটি সহিহ হাদিস থেকে [3]

সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
২১/ পানীয় দ্রব্য
পরিচ্ছেদঃ ১. মদ হারাম হওয়ার বর্ণনা
৩৬৭১ আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। একদা আনসার গোত্রের এক লোক তাকে ও আব্দুর রাহমান ইবনু আওফ (রাঃ)-কে দা‘ওয়াত করে উভয়কে মদ পান করালেন তা হারাম হওয়ার পূর্বে। অতঃপর মাগরিবের সালাতে আলী (রাঃ) তাদের ইমামতি করলেন। তিনি সূরা ‘‘কুল ইয়া আয়্যুহাল কাফিরূন’’ পাঠ করতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন। অতঃপর এ আয়াত অবতীর্ণ হলোঃ ‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন মাতাল অবস্থায় থাকো তখন সালাতের কাছেও যেও না। সালাত তখনই পড়বে, যখন তোমরা কি বলছো তা সঠিকরূাপ বুঝতে পারো।’’ (সূরা আন-নিসাঃ ৪৩)[1]
সহীহ।
[1]. তিরযযী। ইমাম তিরমিযী বলেনঃ এই হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আলী ইবনু আবী তালিব (রাঃ)

এই সময়েই নাজিল হয়, মাতাল অবস্থায় যেন মুমিনরা নামাজের কাছাকাছি না যায়। যা থেকে বোঝা যায়, মদ খাওয়াকে পরোক্ষভাবে স্বীকৃতিই দেয়া হয়েছে। এবং এটি তখনও নিষিদ্ধ হয় নি।[4]

হে ঈমানদারগণ! তোমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সলাতের নিকটবর্তী হয়ো না যতক্ষণ না তোমরা যা বল, তা বুঝতে পার এবং অপবিত্র অবস্থায়ও (সলাতের কাছে যেও না) গোসল না করা পর্যন্ত (মসজিদে) পথ অতিক্রম করা ব্যতীত; এবং যদি তোমরা পীড়িত হও কিংবা সফরে থাক; অথবা তোমাদের কেউ শৌচস্থান হতে আসে অথবা তোমরা স্ত্রী সঙ্গম করে থাক, অতঃপর পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম কর, আর তা দিয়ে তোমাদের মুখমন্ডল ও হস্তদ্বয় মাসহ কর; আল্লাহ নিশ্চয়ই পাপ মোচনকারী, ক্ষমাশীল।
— Taisirul Quran
হে মু’মিনগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সালাতের কাছেও যেওনা, যখন নিজের উচ্চারিত বাক্যের অর্থ নিজেই বুঝতে সক্ষম নও – এ অবস্থায় অথবা গোসল যরুরী হলে তা সমাপ্ত না করে সালাতের জন্য দান্ডায়মান হয়োনা। কিন্তু মুসাফির অবস্থার কথা স্বতন্ত্র। যদি তোমরা পীড়িত হও, কিংবা প্রবাসে অবস্থান কর অথবা তোমাদের মধ্যে কেহ পায়খানা হতে প্রত্যাগত হয় কিংবা রমণী স্পর্শ করে এবং পানি না পাওয়া যায় তাহলে বিশুদ্ধ মাটির অম্বেষণ কর, তদ্বারা তোমাদের মুখমন্ডল ও হস্তসমূহ মুছে ফেল; নিশ্চয়ই আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল।
— Sheikh Mujibur Rahman
হে মুমিনগণ, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হয়ো না, যতক্ষণ না তোমরা বুঝতে পার যা তোমরা বল এবং অপবিত্র অবস্থায়ও না, যতক্ষণ না তোমরা গোসল কর, তবে যদি তোমরা পথ অতিক্রমকারী হও*। আর যদি তোমরা অসুস্থ হও বা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা থেকে আসে কিংবা তোমরা স্ত্রী সম্ভোগ কর, তবে যদি পানি না পাও তাহলে পবিত্র মাটিতে তায়াম্মুম কর** । সুতরাং তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত মাসেহ কর। নিশ্চয় আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল। * তাহলে তার কথা ভিন্ন, সে গোসল না করেও শুধু তায়াম্মুম করে নামায পড়তে পারবে। কেউ কেউ বলেছেন, এখানে সালাত অর্থ সালাত আদায়স্থল। তাহলে অর্থ হবে, তোমরা অপবিত্র অবস্থায় সালাত আদায়স্থল তথা মসজিদে যেতে পারবে না। তবে পথ অতিক্রমের উদ্দেশ্যে যাওয়া যাবে। (যুবদাতুত-তাফসীর)।
— Rawai Al-bayan
হে মুমিনগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় [১] তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হয়ো না, যতক্ষণ না তোমরা যা বল তা বুঝতে পার [২] এবং যদি তোমরা মুসাফির না হও তবে অপবিত্র অবস্থাতেও নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা গোসল কর [৩]। আর যদি তোমরা পীড়িত হও অথবা সফরে থাক বা তোমাদের কেউ শৌচস্থান থেকে আসে অথবা তোমরা নারী সম্ভোগ কর এবং পানি না পাও তবে পবিত্র মাটির দ্বারা তায়াম্মুম কর [৪]। সুতরাং মাসেহ কর তোমরা তোমাদের চেহারা ও হাত, নিশ্চয় আল্লাহ পাপ মোচনকারী, ক্ষমাশীল।
— Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
O you who have believed, do not approach prayer while you are intoxicated until you know what you are saying1 or in a state of janābah,2 except those passing through [a place of prayer], until you have washed [your whole body]. And if you are ill or on a journey or one of you comes from the place of relieving himself or you have contacted women [i.e., had sexual intercourse] and find no water, then seek clean earth and wipe over your faces and your hands [with it]. Indeed, Allah is ever Pardoning3 and Forgiving.
— Saheeh International

এরপরে নাজিল হয়, মদ সম্পর্কে পরিপূর্ণ এবং শেষ বিধান। কোরআনের আয়াতে মদকে স্পষ্টভাবে নাপাক বলা হয়। মদকে উল্লেখ করা হয়, শয়তানি কর্ম ও পরস্পর লড়াই বিদ্বেষের উৎস হিসাবে। মূলত এই আয়াতের মাধ্যমে মদকে হারাম ঘোষনা করা হয়। যা সর্বশেষ আয়াত বিধায় এটিই কোরআনের আইন হিসেবে গণ্য হবে [5]

5:90
হে বিশ্বাসীগণ! মদ, জুয়া আর মূর্তী ও ভাগ্য নির্ধারক তীর ঘৃণিত শয়তানী কাজ, তোমরা তা বর্জন কর, যাতে তোমরা সাফল্যমন্ডিত হতে পার।
— Taisirul Quran
হে মু’মিনগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, মূর্তি ইত্যাদি এবং লটারীর তীর, এ সব গর্হিত বিষয়, শাইতানী কাজ ছাড়া আর কিছুই নয়। সুতরাং এ থেকে সম্পূর্ণ রূপে দূরে থাক, যেন তোমাদের কল্যাণ হয়।
— Sheikh Mujibur Rahman
হে মুমিনগণ, নিশ্চয় মদ, জুয়া, প্রতিমা-বেদী ও ভাগ্যনির্ধারক তীরসমূহ তো নাপাক শয়তানের কর্ম। সুতরাং তোমরা তা পরিহার কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।
— Rawai Al-bayan
হে মুমিনগণ! মদ [১], জুয়া, পূর্তিপূজার বেদী ও ভাগ্য নির্ণয় করার শর [২] তো কেবল ঘৃণার বস্তু, শয়তানের কাজ। কাজেই তোমরা সেগুলোকে বর্জন কর –যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার [৩]।
— Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
O you who have believed, indeed, intoxicants, gambling, [sacrificing on] stone altars [to other than Allah], and divining arrows are but defilement from the work of Satan, so avoid1 it that you may be successful.
— Saheeh International
5:91
মদ আর জুয়ার মাধ্যমে শয়তান তো চায় তোমাদের মাঝে শত্রুতা আর বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে, আল্লাহর স্মরণ আর নামায থেকে তোমাদেরকে বাধা দিতে। কাজেই তোমরা কি এসব থেকে বিরত থাকবে?
— Taisirul Quran
শাইতানতো এটাই চায় যে, মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের পরস্পরের মধ্যে শক্রতা ও হিংসা সৃষ্টি হোক এবং আল্লাহর স্মরণ হতে ও সালাত হতে তোমাদেরকে বিরত রাখে। সুতরাং এখনো কি তোমরা নিবৃত্ত হবেনা?
— Sheikh Mujibur Rahman
শয়তান শুধু মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চার করতে চায়। আর (চায়) আল্লাহর স্মরণ ও সালাত থেকে তোমাদের বাধা দিতে। অতএব, তোমরা কি বিরত হবে না?
— Rawai Al-bayan
শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঘটাতে এবং তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণে ও সালাতে বাঁধা দিতে। তবে কি তোমরা বিরত হবে না [১]?
— Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
Satan only wants to cause between you animosity and hatred through intoxicants and gambling and to avert you from the remembrance of Allah and from prayer. So will you not desist?
— Saheeh International

আসুন বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলেম মিজানুর রহমান আজহারীর মুখ থেকে এই পুরো বিষয়টি শুনে নিই,

এরকম আরো বেশ কিছু বিষয়ে আল্লাহ পাক পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন, যার যুক্তি হিসেবে তাফসীর লেখকগণ বলেছেন, একজন ডাক্তার যেমন রোগীর অবস্থা বুঝে ঔষধ পরিবর্তন করতে পারে, তেমনি আল্লাহ পাকও মাঝে মাঝে আদেশ নিষেধ পরিবর্তন করতে পারে [6]

মদ্যপান

একজন ডাক্তারের কাছে সকল তথ্য থাকা সম্ভব নয়। সেই কারণে তিনি এক ঔষধ দিয়ে পরীক্ষা করতে পারে। কারণ আসল রোগটি কী, তিনি হয়তো নিশ্চিতভাবে বোঝেন নি। নানা ধরণের পরীক্ষার পরেও একদম শতভাগ নিশ্চিতভাবে রোগ নির্ণয় ডাক্তারের পক্ষে কখনই সম্ভব নয়। কারণ মানুষের শরীর অত্যন্ত জটিল। আর ডাক্তারের জ্ঞানও সীমাবদ্ধ। কিন্তু আল্লাহর তো সেই সীমাবদ্ধতা নেই। যিনি সব জ্ঞানের অধিকারী, পরে কী হবে সেটাও তো তিনি ভালভাবেই অবগত থাকার কথা। তাহলে তিনি কেন আদেশ নিষেধ পরিবর্তন করবেন?

ধরে নিচ্ছি, আল্লাহ পাক প্রথমে আয়াত নাজিল করলেন, নারীর ইদ্দত হবে একবছর। তিনি তো সব দেখে শুনে বুঝেই এই নির্দেশ জাড়ি করবেন, নাকি? কোথায় কী কী সমস্যা হতে পারে, কোন নারীর কী কী বিষয় ঘটতে পারে, সবই তো তার জানা। তাহলে প্রথমে একবছরের ইদ্দত, পরে আবার তা পরিবর্তন করে চারমাস দশদিনের ইদ্দত পালনের নির্দেশের মানে কী? তার মানে কী, প্রথম নির্দেশটি সঠিক ছিল না? সেই সময়ে আল্লাহর জ্ঞানের অভাব ছিল? সে ঠিকভাবে না বুঝেই, চিন্তাভাবনা না করেই একবছরের ইদ্দতের নির্দেশ দিয়ে ফেলেছিল? পরে যদি সংশোধনেরই দরকার হয়, তাহলে এটি মহান সর্বশক্তিমান সর্বজ্ঞানী আল্লাহর সরাসরি বক্তব্য কীভাবে হয়?

এবারে আসুন এই সম্পর্কিত আয়াতগুলো দেখিঃ [7]

আমি কোন আয়াত রহিত করলে অথবা বিস্মৃত করিয়ে দিলে তদপেক্ষা উত্তম অথবা তার সমপর্যায়ের আয়াত আনয়ন করি। তুমি কি জান না যে, আল্লাহ সব কিছুর উপর শক্তিমান?

এবারে তাফসীরে ইবনে কাসীর থেকে পড়ি [8]

মদ্যপান 1
মদ্যপান 3
মদ্যপান 5
মদ্যপান 7
মদ্যপান 9

এবারে কোরআনের একটি আয়াত পড়ে নিই, [9]

এবং যখন আমি এক আয়াতের স্থলে অন্য আয়াত উপস্থিত করি এবং আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেন তিনিই সে সম্পর্কে ভাল জানেন; তখন তারা বলেঃ আপনি তো মনগড়া উক্তি করেন; বরং তাদের অধিকাংশ লোকই জানে না।

তথ্যসূত্র

  1. কোরআন, সূরা নাহল, আয়াত ৬৭ []
  2. কোরআন, সূরা বাকারা, আয়াত ২১৯ []
  3. সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত), হাদিস নম্বরঃ ৩৬৭১ []
  4. কোরআন, সূরা নিসা, আয়াত ৪৩ []
  5. কোরআন, সূরা মায়িদা, আয়াত ৯০-৯১ []
  6. তাফসীরে জালালাইন, জালালুদ্দিন মহল্লী এবং জালালুদ্দিন সুয়ুতী, ইসলামিয়া কুতুবখানা প্রকাশনী, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৭৯ []
  7. কোরআন, সূরা বাকারা, আয়াত ১০৬ []
  8. তাফসীরে ইবনে কাসীর, আল্লামা ইবনে কাসীর, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৬২৩-৬২৭ []
  9. কোরআন, সূরা আন নাহল, আয়াত ১০১ []


সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"