নিকটবর্তী আসমানে আল্লাহ পাক

Print Friendly, PDF & Email

ভূমিকা

ইসলাম ধর্মের প্রধান দুইটি হাদিস গ্রন্থ বুখারী এবং মুসলিম শরীফে সহ আরো কয়েকটি হাদিস গ্রন্থে বর্ণিত রয়েছে যে, আল্লাহ পাক প্রতিদিনই রাতের একটি অংশে সাত আসমানের উপরে অবস্থিত তার সিংহাসন আরশ থেকে পৃথিবীর নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করেন বান্দাদের প্রার্থনা ভালভাবে শোনার উদ্দেশ্যে। এ থেকে বোঝা যায়, আল্লাহর আরশ থেকে তিনি বান্দাদের প্রার্থনা ঠিকঠাক শুনতে পান না, বা বান্দাদের প্রার্থনা ঠিকঠাক মত আরশ পর্যন্ত পৌঁঁছায় না। তাই এটি আল্লাহর বিশেষ একটি নেয়ামত যে, তিনি বান্দাদের একদম কাছাকাছি চলে আসেন যেন পরিষ্কারভাবে প্রার্থনা শুনতে পারেন এবং তাৎক্ষণিক প্রার্থনা কবুল করতে পারেন। স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যায়, পৃথিবী থেকে মানুষের প্রার্থনা আল্লাহর আরশ পর্যন্ত পৌঁছাবার পদ্ধতিতে নানা গলদ রয়েছে। প্রার্থনাগুলো সেই পর্যন্ত পৌঁছাতেও অনেক সময় লেগে যায়। এই ত্রুটিগুলো সংশোধনের উদ্দেশ্যে, সেগুলো ঠিক করার জন্য তিনি রাতের বিশেষ সময়ে দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করে নিজেই চলে আসেন, প্রার্থনা ঠিকভাবে শোনার জন্য। আজকে আমাদের আলোচনা এই বিষয়ে। আশাকরি পাঠক মন দিয়ে আমাদের লেখাটি পড়বেন, তথ্যসূত্রগুলো যাচাই করবেন এবং নিজেদের যুক্তিবুদ্ধি ব্যবহার করে সিদ্ধান্ত নেবেন।

নিকটে আসার প্রয়োজন কী?

ধরা যাক, আমি দশতলা একটি বিল্ডিং এর দশতলাতেই থাকি। নিচের তলাতে যিনি থাকেন, তিনি রোজই আমাকে ডাকেন। কিন্তু, আমি শুধুমাত্র সন্ধ্যাবেলাতে দুই তলার বারান্দায় এসে বসে থাকি, তার ডাক শোনার জন্য। ভেবে বলুন তো এই কাজটি আমি কেন করতে যাবো? দশ তলার উপর থেকেই যদি আমি তাৎক্ষণিকভাবে এবং খুব পরিষ্কারভাবে কথাগুলো শুনি, তাহলে আর আমার দুই তলাতে এসে উনার কথা শোনার দরকার হতো না। দশ তলা থেকে পরিষ্কার শোনা যায় না বা বোঝা যায় না, এরকম হলেই আমি শুধুমাত্র দুই তলাতে নেমে তার কথা শোনা শুনবো।

অনেক সময় দেখবেন, অনেকে মোবাইল ফোনটির মাইক্রোফোনটি মুখের কাছে এনে তারপরে কথা বলে। বা হেডফোনে গান শোনে। মাইক্রোফোনটি মুখের কাছে এনে শুনলে ঐপাশ থেকে ভালভাবে কথা শোনা যায়। আবার হেডফোনে শোনার কারণ হচ্ছে, এতে খুব পরিষ্কার সাউন্ড শোনা যায়। এগুলো যেকোন যন্ত্রের সীমাবদ্ধতা। যন্ত্র মানুষের তৈরি এক একটি জিনিস। কিন্তু আল্লাহর কুদরতের তো কোন সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে না। তাহলে, আল্লাহ কেন আরশ থেকেই প্রার্থনা না শুনে, নিকটবর্তী আসমানে এসে শোনেন? পরিষ্কারভাবে শোনার জন্য?

বর্তমান সময়ে সাধারণভাবে বলতে পারি, সবচাইতে বেশি দ্রুতি হচ্ছে আলোর। SI এককের সংজ্ঞা অনুসারে আলোর দ্রুতি প্রতি সেকেন্ডে ২৯৯,৭৯২,৪৫৮ মিটার (বস্তুত এটা মিটারের আধুনিক সংজ্ঞা)। যদিও আলোর চাইতে বেশি গতিতে বিগ ব্যাংয়ের পরে মহাবিশ্বের প্রসারন ঘটেছিল, সেটি বাদ রেখে সাধারণ হিসেবেই যদি হিসেব করি, তাহলে কী হয়?

ধরে নিই, মানুষ পৃথিবীতে বসে প্রার্থনা করছে। যেই মূহুর্তে সে প্রার্থনাটি করছে, প্রায় আট মিনিট পরে সূর্যে অবস্থানকারী (তর্কের খাতিরে ধরে নিচ্ছি) কেউ বিষয়টি জানতে পারবে। কারণ, গড় দূরত্বে সূর্য থেকে আলো পৃথিবীতে আসতে ৮ মিনিট ১৯ সেকেন্ড সময় নেয়। আবার, পৃথিবী থেকে ‘এন্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি’ এর দূরত্ব ২৫ লক্ষ আলোকবর্ষ। এর অর্থ হচ্ছে, আমাদের এখান থেকে সবচাইতে বেশি দ্রুতির আলো এন্ড্রোমিডা গ্যালাক্সির দিকে তাক করে মারলে, এন্ড্রোমিডার কেউ সেটি ২৫ লক্ষ বছর পরে দেখবে। ততদিনে আমরা মরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবো। মহাবিশ্ব তো আরো অনেক বিশাল, আরো অনেক বড়। এই মহাবিশ্বের বাইরে যদি আল্লাহ থাকেন, তার কাছে প্রার্থনা পৌঁছাতে তো আরো অনেক সময় লেগে যাওয়ার কথা। এই কারণেই কী কারো প্রার্থনা কবুল হয় না? দেখা যায়, প্রার্থনা আল্লাহর আরশে পৌঁছাতে পৌঁছাতে সে বংশশুদ্ধ মরে ভুত হয়ে গেছে। তখন আর প্রার্থনা শুনে কী লাভ?

এই কারণেই কী আল্লাহ সময় বাঁচাতে নিকটবর্তী আসমানে চলে আসেন? বিষয়টি গোলমেলে। আসুন, আমরা তথ্যগুলো যাচাই করে দেখি।

আল্লাহ পাক কোথায় থাকেন?

ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে, আল্লাহ পাক সর্বময় নয়। ঈশ্বর সর্বত্র থাকেন এটি পৌত্তলিকদের ধারণা ছিল। তাদের বিশ্বাস ছিল, জগতের সকল বস্তু এবং প্রাণীই আসলে ঈশ্বরের অংশ এবং ঈশ্বর সর্বত্র ছড়িয়ে আছেন। ব্রিটিশ নৃবিজ্ঞানী ই.বি টাইলর সর্বপ্রাণবাদের (Animism) প্রবক্তা। তাঁর মতে আদিম ধর্মবিশ্বাসের এটি হলো প্রথম সোপান। ল্যাটিন ‘এ্যানিমা’ শব্দ থেকে ‘এ্যানিমিজম’ শব্দটি এসেছে। কিন্তু ইসলাম এর সাথে, আরো ভালভাবে বললে আব্রাহামিক ধর্মের সাথে এই ধারণা সরাসরি সাংঘর্ষিক। ইসলামের বিশ্বাস অনুসারে, আল্লাহ সৃষ্ট জগত থেকে আলাদা এবং বাইরে অবস্থান করেন। যেমন, একটি কুকুর বা শুকর আল্লাহর অংশ নয়। বা কোন মানুষও আল্লাহর অংশ নয়। সেগুলো আল্লাহর সৃষ্টি। সেগুলো থাকলেও আল্লাহর কিছু যায় আসে না, না থাকলেও আল্লাহর কিছুই যায় আসে না। এই বিষয়ে অনেকগুলো কোরআনের আয়াত এবং হাদিস রয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, আল্লাহ সৃষ্টি জগতের ওপর নির্ভরশীল নয়। যদি এগুলো আল্লাহ পাকের অংশ হতো, তাহলে আল্লাহ পাক এই কথা কখনোই বলতেন না যে, এগুলোর থাকা না থাকা দিয়ে তার কিছু যায় আসে না। কারণ নিজের অংশ সবসময়ই টিকে থাকতে হবে, নইলে নিজের অস্তিত্বই খণ্ডিত হয়ে যাবে।

ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে, আল্লাহ পাক থাকেন আরশে। কোরআনে বলা হয়েছে [1] [2] [3] [4] [5]

নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক হলেন আল্লাহ যিনি আকাশমন্ডলী আর পৃথিবীকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি আরশে সমুন্নত হয়েছেন।
Taisirul Quran
নিশ্চয়ই আল্লাহই হচ্ছেন তোমাদের রাব্ব, যিনি আসমানসমূহকে এবং যমীনকে সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে, অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হলেন,
Sheikh Mujibur Rahman
নিশ্চয় তোমাদের রব আল্লাহ। যিনি আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে, তারপর আরশে উঠেছেন।
Rawai Al-bayan
তোমাদের রব তো আল্লাহ্‌, যিনি আসমানসমূহ ও যমীন ছয় দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, তারপর তিনি ‘আরশের উপর উঠলেন। তিনি সব বিষয় পরিচালনা করেন।
Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
কুরআন ১০:৩

আল্লাহই স্তম্ভ ছাড়াই আকাশমন্ডলীকে ঊর্ধ্বে তুলে রেখেছেন, যা তোমরা দেখছ, অতঃপর তিনি আরশে সমুন্নত হয়েছেন
Taisirul Quran
আল্লাহই উর্ধ্বদেশে আকাশমন্ডলী স্থাপন করেছেন স্তম্ভ ব্যতীত, তোমরা এটা দেখছ। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হলেন এবং সূর্য ও চাঁদকে নিয়মাধীন করলেন;
Sheikh Mujibur Rahman
আল্লাহ, যিনি খুঁটি ছাড়া আসমানসমূহ উঁচু করেছেন যা তোমরা দেখছ। অতঃপর তিনি আরশে উঠেছেন এবং সূর্য ও চাঁদকে নিয়োজিত করেছেন।
Rawai Al-bayan
আল্লাহ্, যিনি আসমানসমূহ উপরে স্থাপন করেছেন খুঁটি ছাড়া, তোমরা তা দেখছ। তারপর তিনি ‘আরশের উপর উঠেছেন এবং সূর্য ও চাঁদকে নিয়মাধীন করেছেন ;
Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
কুরআন ১৩ঃ২

যারা ‘আরশ বহন করে আছে, আর যারা আছে তার চারপাশে, তারা তাঁর প্রশংসার সাথে তাঁর মাহাত্ম্য ঘোষণা করে …
Taisirul Quran
যারা আরশ ধারণ করে আছে এবং যারা এর চতুস্পার্শ্ব ঘিরে আছে তারা তাদের রবের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে প্রশংসার সাথে …
Sheikh Mujibur Rahman
যারা আরশকে ধারণ করে এবং যারা এর চারপাশে রয়েছে, তারা তাদের রবের প্রশংসাসহ তাসবীহ পাঠ করে এবং তাঁর প্রতি ঈমান রাখে। …
Rawai Al-bayan
যারা ‘আরশ ধারণ করে আছে এবং যারা এর চারপাশে আছে, তারা তাদের রবের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে প্ৰশংসার সাথে এবং তাঁর উপর ঈমান রাখে, …
Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
কুরআন ৪০ঃ৭

তিনি আসমান ও যমীনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর আরশে সমুন্নত হয়েছেন
Taisirul Quran
তিনিই ছয় দিনে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর আরশে সমাসীন হয়েছেন
Sheikh Mujibur Rahman
তিনিই আসমানসমূহ ও যমীন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, তারপর তিনি আরশে উঠেছেন
Rawai Al-bayan
তিনি ছয় দিনে আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন; তারপর তিনি ‘আরশের উপর উঠেছেন
Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
কুরআন ৫৭ঃ৪

সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫০/ আম্বিয়া কিরাম (আঃ)
পরিচ্ছদঃ ২১২২. স্বাদ ইবন মু’আয (রাঃ) এর মর্যাদা
৩৫৩১। মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) … জাবির (রাঃ) বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি সা’দ ইবনু মু’আয (রাঃ) এর মৃত্যুতে আল্লাহ্ ত’আলার আরশ কেঁপে উঠে ছিল। আমাশ (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে, এক ব্যাক্তি জাবির (রাঃ) কে বলল, বারা ইবনু আযিব (রাঃ) তো বলেন, জানাযার খাট নড়েছিল। তদুত্তরে জাবির (রাঃ) বললেন, সা’দ ও বারা (রাঃ) এর গোত্রদ্বয়ের মধ্যে কিছুটা বিরোধ ছিল, (কিন্তু এটা ঠিক নয়) কেননা, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে عَرْشُ الرَّحْمَنِ অর্থাৎ আল্লাহর আরশ সা’দ ইবনু মু’আযের (মৃত্যুতে) কেঁপে উঠল বলতে শুনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

আরশ কী? আরশ কোথায় অবস্থিত?

উপরের আয়াতগুলো থেকে বোঝা গেল যে, আল্লাহ আরশে সমাসীন এবং সেই আরশ আবার রয়েছে পানির ওপরে। আসুন, এবারে প্রখ্যাত ঐতিহাসিক এবং তাফসীরে ইবনে কাসীর গ্রন্থের লেখক আল্লামা ইবনে কাসীরের আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থ থেকে আল্লাহর আরশ সম্পর্কে খানিকটা জ্ঞান আহরণ করি [6]

আল্লাহ 2
আল্লাহ 4
আল্লাহ 6
আল্লাহ 8
আল্লাহ 10
আল্লাহ 12

নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ

বেশ কিছু সহীহ হাদিসেই পাওয়া যায় এই বর্ণনাটি। এটি খুবই প্রসিদ্ধ একটি হাদিস, এবং অসংখ্য হাদিস গবেষক, মুহাদ্দিস, ইসলামের বিখ্যাত সব আলেমই হাদিসটিকে বিশুদ্ধ বলে আখ্যায়িত করেছেন। আসুন হাদিসটি বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে পড়ি [7] [8] [9] [10] [11]

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৯/ তাহাজ্জুদ বা রাতের সালাত
পরিচ্ছেদঃ ৭২৮. রাতের শেষভাগে দু’আ করা ও সালাত আদায় করা। আল্লাহ্পাক ইরশাদ করেছেনঃ রাতের সামান্য পরিমাণ (সময়) তাঁরা নিদ্রারত থাকেন, শেষ রাতে তাঁরা েইসতিগ্ফর করেন। (সূরা আয্-যারিয়াতঃ ১৮)।
১০৭৯। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মহামহিম আল্লাহ্ তা’আলা প্রতি রাতে রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকাকালে নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করে ঘোষণা করতে থাকেনঃ কে আছে এমন, যে আমাকে ডাকবে? আমি তার ডাকে সাড়া দিব। কে আছ এমন যে, আমার কাছে চাইবে? আমি তাকে তা দিব। কে আছ এমনে, আমার কাছে ক্ষমা চাইবে? আমি তাকে ক্ষমা করব।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)

আল-লুলু ওয়াল মারজান
৬/ মুসাফির ব্যক্তির সালাত ও তা ক্বসর করার বর্ণনা
পরিচ্ছেদঃ ৬/২৪. শেষ রাতে দুআ করার প্রতি উৎসাহ প্রদান এবং সে সময় কবূল হওয়া।
৪৩৪. আবূ হুরায়রাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মহামহিম আল্লাহ্ তা‘আলা প্রতি রাতে রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকাকালে পৃথিবীর নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করে ঘোষণা করতে থাকেনঃ কে আছে এমন, যে আমাকে ডাকবে? আমি ডাকে সাড়া দিব। কে আছে এমন যে, আমার নিকট চাইবে? আমি তাকে তা দিব। কে আছে এমন আমার নিকট ক্ষমা চাইবে? আমি তাকে ক্ষমা করব।
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ১৯ ; তাহাজ্জুদ, অধ্যায় ১৪, হাঃ ১১৪৫; মুসলিম, পর্ব ৬; মুসাফির ব্যক্তির সালাত ও তা কসর করার বর্ণনা, অধ্যায় ২৩, হাঃ ৭৫৮
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)

সূনান তিরমিজী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
২/ সালাত (নামায)
পরিচ্ছেদঃ প্রত্যেক রাতেই আল্লাহ্ তা’আলা দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন।
৪৪৬. কুতায়বা (রহঃ) …. আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ রাতের প্রথম এক-তৃতীয়াংশ অতিক্রান্ত হলে প্রত্যেক রাতেই আল্লাহ তা’আলা দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন এবং বলেনঃ আমিই রাজধিরাক, যে আমাকে ডাকে আমি তার ডাককে কবূল করি, যে আমার কাছে যাঞ্ছা করে আমি তাকে দেই, যে আমার কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করে আমি তাকে ক্ষমা করে দেই। ফজরের আলো উদ্ভাসিত না হওয়া পর্যন্ত এভাবেই চলতে থাকে। – ইবনু মাজাহ ১৩৬৬, বুখারি ও মুসলিম, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৪৪৬ (আল মাদানী প্রকাশনী)
এই বিষয়ে আলী ইবনু আবূ তালিব, আবূ সাঈদ, রিফাআ আল-জুহানী, জুবায়র ইবনু মুতঈম, ইবনু মাসঊদ, আবূদ্ দারদা এবং উসমান ইবনু আবিল আস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদীসটি হাসান-সহীহ। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বহু সূত্রে বর্ণিত আছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ রাতের শেষ তৃতীয়াংশ যখন অবশিষ্ট থাকে, তখন আল্লাহ তা’আলা নেমে আসেন এই রিওয়ায়াতটই সবচেয়ে সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)

মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪ঃ সালাত
পরিচ্ছেদঃ ৩৩. প্রথম অনুচ্ছেদ – ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান
১২২৩-(৫) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ প্রতি রাত্রে শেষ তৃতীয়াংশে আমাদের মর্যাদাবান বারাকাতপূর্ণ রব দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, ‘যে আমাকে ডাকবে আমি তার ডাকে সাড়া দেব। যে আমার নিকট কিছু প্রার্থনা করবে আমি তাকে তা দান করব। যে আমার নিকট মাফ চাইবে আমি তাকে মাফ করে দেব।’ (বুখারী, মুসলিম)(1)
মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে, তারপর তিনি হাত বাড়িয়ে দেন এবং বলেন, কে আছে যে এমন লোককে করয দেবে যিনি ফকীর নন, না অত্যাচারী এবং সকাল পর্যন্ত এ কথা বলতে থাকেন।
(1) সহীহ : বুখারী ১১৪৫, মুসলিম ৭৫৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

আল-আদাবুল মুফরাদ
মেহমানদারি
পরিচ্ছেদঃ ৩২০- রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দোয়া করা।
৭৫৮। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমাদের বরকতময় মহামহিম প্রভু রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকতে প্রতি রাতে নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করে ঘোষণা করতে থাকেনঃ কে আছে যে আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দিবো? (কে আছে এমন, যে আমার কাছে দোয়া করবে এবং আমি তার দোয়া কবুল করবো)? কে আছে এমন, যে আমার কাছে কিছু প্রার্থনা করবে এবং আমি তা দান করবো? কে আছে এমন, যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে এবং আমি তাকে ক্ষমা করবো। -(বুখারী, মুসলিম, দারিমী)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

আসুন এই হাদিসটি সম্পর্কে শুরুতেই বিশিষ্ট আলেম মঞ্জুরে ইলাহীর বক্তব্য শুনে নিই,

শেষরাতে আল্লাহর অবতরণ by Asif Mohiuddin

ফেরেশতারাও দিনে এবং রাতে আসেন

শুধু যে আল্লাহর রাতের বেলা একটি বিশেষ সময়ে আসেন তা নয়, ফেরেশতাগণও পালাক্রমে দিনে বা রাতে পৃথিবীতে আসেন। কিন্তু দিন বা রাত পৃথিবী নামক গ্রহটির সাপেক্ষে নির্ধারিত হয়। মহাকাশে দিন বা রাত বলে কিছু নেই। মহাবিশ্বের সাপেক্ষে বা মহাবিশ্বের বাইরে বসবাসকারীর সাপেক্ষে দিন বা রাত কোন অর্থই বহন করে না। আসুন হাদিস থেকে পড়ি [12]

সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৫৯/ সৃষ্টির সূচনা
পরিচ্ছেদঃ ৫৯/৬. ফেরেশতাদের বর্ণনা।
৩২২৩. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ফেরেশতামন্ডলী একদলের পেছনে আর একদল আগমন করেন। একদল ফেরেশতা রাতে আসেন আর একদল ফেরেশতা দিনে আসেন। তাঁরা ফজর ও ‘আসর সালাতে একত্রিত হয়ে থাকেন। অতঃপর যারা তোমাদের নিকট রাত্রি কাটিয়েছিলেন তারা আল্লাহর নিকট ঊর্ধ্বে চলে যান। তখন তিনি তাদেরকে মানুষের অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। অথচ তিনি তাদের চেয়ে এ ব্যাপারে সবচেয়ে অধিক জ্ঞাত আছেন। তিনি বলেন, তোমরা আমার বান্দাদেরকে কী হালতে ছেড়ে এসেছ? উত্তরে তাঁরা বলেন, আমরা তাদেরকে সালাতরত অবস্থায় ছেড়ে এসেছি। আর আমরা তাদের নিকট সালাতরত অবস্থাতেই পৌঁছেছিলাম। (৫৫৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৯৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৯৯৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)

হাদিসসমূহের নির্ভরযোগ্যতা

হাদিসগুলো তো পড়লাম, এবারে এই হাদিসের নির্ভরযোগ্যতাও একটু দেখে নিই, [13]

আল্লাহ 14

এই বিষয়ে খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের লেখা ইমাম আবু হানিফার আল ফিকহুল আকবার’ বঙ্গানুবাদ ও ব্যাখ্যা গ্রন্থে যা বলা হয়েছে সেটিও পড়ে নিই, [14]

আল্লাহ 16
আল্লাহ 18

পৃথিবী সমতল নাকি গোলাকার?

খেয়াল করে আবারো হাদিসগুলো পড়ুন। হাদিস অনুসারে পৃথিবীকে গোলাকৃতি মনে হচ্ছে, নাকি সমতল? পৃথিবী শুধুমাত্র সমতল হলেই এই হাদিসটি সত্য হওয়া সম্ভব। আমরা জানি, পৃথিবী গোলাকৃতি এবং নিজ অক্ষের ওপর তো বটেই, সূর্যের চারিদিকেও প্রদক্ষিণ করছে। নিজ অক্ষের ওপর পৃথিবী ঘুরছে, এই কারণেই দিনরাত্রি ঘটে। এর অর্থ হচ্ছে, যেই স্থানে সূর্যের আলো পড়ে, সেখানেই দিন হয় আর যেই পাশটি সূর্যের বিপরীতদিকে থাকে, সেখানে রাত থাকে। এই হাদিসটি সত্য হবে তখনই, যখন পৃথিবীকে সমতল হিসেবে কল্পনা করা হবে। নিচে সমতল পৃথিবীর চিত্রটি দেখুন। এরকম হলেই শুধুমাত্র আল্লাহর নিকটতম আসমানে চলে আসা সম্ভব।

আল্লাহ 20

এবারে আধুনিক বৈজ্ঞানিক জ্ঞান থেকে প্রাপ্ত দিনরাত্রির ঘটনাটি দেখে নিই। নিচে দেখুন, সূর্য এবং পৃথিবীর চিত্র। পৃথিবীতে ম্যাপ দেখা যাচ্ছে, সেখানে আফ্রিকাতে দিন এবং ভারতে তখন রাত বোঝা যাচ্ছে। পৃথিবী কিন্তু এরকম ভাবেই থেমে নেই। নিজ অক্ষের ওপর সেটি প্রতিনিয়ত ঘুর্ণায়মান। এর ফলে, প্রতি ঘণ্টাতেই পৃথিবীর কোন না কোন স্থানে রাত্রির ঐ বিশেষ সময়টি থাকবে।

আল্লাহ 22

আরো ভালভাবে বোঝার জন্য এই ভিডিওটি দেখি, এই হাদিসটি সত্য হলে আল্লাহর কিন্তু চক্রাকারে ঘুরতেই থাকতে হবে। কারণ প্রতি মূহুর্তেই পৃথিবী ঘুরছে। কোথাও দিন হচ্ছে, কোথাও রাত হচ্ছে। এককভাবে সর্বত্রই রাত্রি, এমন কিন্তু গোলাকার পৃথিবী হওয়ার কারণে সম্ভব নয়।

আল্লাহ

সমতল পৃথিবী সম্পর্কিত অন্য হাদিস

বেশ কয়েকটি হাদিস থেকে জানা যায়, সূর্য রাতের বেলা আল্লাহর আরশের নিচে গিয়ে সারারাত ইবাদত বন্দেগীতে ব্যস্ত থাকে। সকাল বেলা তাকে আবার উদিত হওয়ার অনুমতি দিলে, সে উদিত হয়। গোলাকার পৃথিবীর সম্পর্কে যাদের ধারণা রয়েছে, তারা সহজেই এই হাদিসের সমস্যাটি বুঝতে সক্ষম হবেন। তাই আর এই নিয়ে বেশী কথা বললাম না। আসুন হাদিসগুলো পড়ি [15] [16] [17] [18]

সহীহ হাদিসে কুদসি
১/ বিবিধ হাদিসসমূহ
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর প্রশংসামূলক কতক বাক্যের ফযিলত
১৬১. আবূ যর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি একটি গাধার ওপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলাম। তখন তার উপর একটি পাড়যুক্ত চাদর ছিল। তিনি বলেন: এটা ছিল সূর্যাস্তের সময়, তিনি আমাকে বলেন: “হে আবূ যর তুমি জান এটা কোথায় অস্ত যায়?” তিনি বলেন: আমি বললাম: আল্লাহ এবং তার রাসূল ভাল জানেন। তিনি বলেন: সূর্যাস্ত যায় একটি কর্দমাক্ত ঝর্ণায়, সে চলতে থাকে অবশেষে আরশের নিচে তার রবের জন্য সেজদায় লুটিয়ে পড়ে, যখন বের হওয়ার সময় আল্লাহ তাকে অনুমতি দেন, ফলে সে বের হয় ও উদিত হয়। তিনি যখন তাকে যেখানে অস্ত গিয়েছে সেখান থেকে উদিত করার ইচ্ছা করবেন আটকে দিবেন, সে বলবে: হে আমার রব আমার পথ তো দীর্ঘ, আল্লাহ বলবেন: যেখান থেকে ডুবেছে সেখান থেকেই উদিত হও, এটাই সে সময় যখন ব্যক্তিকে তার ঈমান উপকার করবে না”। (আহমদ) হাদিসটি সহিহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪৯/ সৃষ্টির সূচনা
পরিচ্ছেদঃ ১৯৮৬. চন্দ্র ও সূর্য উভয়ে নির্ধারিত কক্ষপথে আবর্তন করে।…
১৯৮৫. পরিচ্ছেদঃ ১৯৮৫. নক্ষত্ররাজি প্রসঙ্গে।
কাতাদা (রহঃ) বলেন, …
২৯৭২। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় আবূ যার (রাঃ) কে বললেন, তুমি কি জানো, সূর্য কোথায় যায়? আমি বললাম, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেন, তা যেতে যেতে আরশের নীচে গিয়ে সিজদায় পড়ে যায়। এরপর সে পুনঃ উদিত হওয়ার অনুমতি চায় এবং তাকে অনুমতি দেওয়া হয়। আর অচিরেই এমন সময় আসবে যে, সিজদা করবে তা কবূল করা হবে না এবং সে অনুমতি চাইবে কিন্তু অনুমতি দেওয়া হবে না। তাকে বলা হবে যে পথে এসেছ, সে পথে ফিরে যাও। তখন সে পশ্চিম দিক হতে উদিত হবে–এটাই মর্ম হল আল্লাহ তাআলার বাণীঃ আর সূর্য গমন করে তার নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে, এটাই পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞের নিয়ন্ত্রণ। (৩৬ঃ ৩৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ যার আল-গিফারী (রাঃ)

সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ১/ কিতাবুল ঈমান
৭১. যে সময়ে ঈমান কবুল হবে না
২৯৬। ইয়াহইয়া ইবনু আইউব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা কি জানো, এ সূর্য কোথায় যায়? সাহাবীগণ বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ  সূর্য চলতে থাকে এবং (আল্লাহ তা’আলার) আরশের নিচে অবস্থিত তার অবস্থানস্থলে যায়। সেখানে সে সিজদাবনত হয়ে পড়ে থাকে। শেষে যখন তাকে বলা হয়, ওঠ এবং যেখান থেকে এসেছিলে সেখানে ফিরে যাও! অনন্তর সে ফিরে আসে এবং নির্ধারিত উদয়স্থল দিয়েই উদিত হয়। তা আবার চলতে থাকে এবং আরশের নিচে অবস্থিত তার অবস্থানস্থলে যায়। সেখানে সে সিজদাবনত অবস্থায় পড়ে থাকে। শেষে যখন তাকে বলা হয়, ওঠ এবং যেখান থেকে এসেছিলে সেখানে ফিরে যাও। তখন সে ফিরে আসে এবং নির্ধারিত উদয়লে হয়েই উদিত হয়।
সে আবার চলতে থাকে এবং আরশের নিচে অবস্থিত তার অবস্থান স্থলে যায়। সেখানে সে সিজদাবনত অবস্থায় পড়ে থাকে। শেষে যখন তাকে বলা হয়, ওঠ এবং যেখান থেকে এসেছিলে সেখানে ফিরে যাও। তখন সে ফিরে আসে এবং নির্ধারিত উদয়স্থল হয়েই সে উদিত হয়। এমনিভাবে চলতে থাকবে; মানুষ তার থেকে অস্বাভাবিক কিছু হতে দেখবে না। শেষে একদিন সূর্য যথার্রীতি আরশের নিচে তার নিদৃষ্টস্থলে যাবে। তাকে বলা হবে, ওঠ এবং অস্তাচল থেকে উদিত হও। অনন্তর সেদিন সূর্য পশ্চিম গগনে উদিত হবে। 
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ কোন দিন সে অবস্থা হবে তোমরা জানো? সে দিন ঐ ব্যাক্তির ঈমান কোন কাজে আসবে না, যে ব্যাক্তি পুর্বে ঈমান আনে নাই কিংবা যে ব্যাক্তি ঈমানের মাধ্যমে কল্যাণ অর্জন করে নাই।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
১। ঈমান (বিশ্বাস)
পরিচ্ছেদঃ ৭২. যে সময়ে ঈমান কবুল হবে না।
২৮৯-(২৫০/১৫৯) ইয়াহইয়া ইবনু আইয়ুব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (আঃ) ….. আবূ যার (রাযিঃ) বলেন, একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা কি জান, এ সূর্য কোথায় যায়? সাহাবাগণ বললেন, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেন, এ সূর্য চলতে থাকে এবং (আল্লাহ তা’আলার) আরশের নীচে অবস্থিত তার অবস্থান স্থলে যায়। সেখানে সে সাজদাবনত হয়ে পড়ে থাকে। শেষে যখন তাকে বলা হয়, উঠ এবং যেখান থেকে এসেছিলে সেখানে ফিরে যাও! অনন্তর সে ফিরে আসে এবং নির্ধারিত উদয়স্থল দিয়েই উদিত হয়। তা আবার চলতে থাকে এবং আরশের নীচে অবস্থিত তার অবস্থান স্থলে যায়। সেখানে সে সাজদাবনত অবস্থায় পড়ে থাকে। শেষে যখন তাকে বলা হয় উঠ এবং যেখান থেকে এসেছিলে সেখানে ফিরে যাও। তখন সে ফিরে আসে এবং নির্ধারিত উদয়স্থল হয়েই সে উদিত হয়। এমনিভাবে চলতে থাকবে; মানুষ তার থেকে অস্বাভাবিক কিছু হতে দেখবে না। শেষে একদিন সূর্য যথারীতি আরশের নীচে তার অবস্থানে যাবে। তাকে বলা হবে, উঠ এবং অস্তাচল থেকে উদিত হও। অনন্তর সেদিন সূর্য পশ্চিমাকাশে উদিত হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, (কুরআনের বাণী) “কোন দিন সে অবস্থা হবে তোমরা জান? সেদিন ঐ ব্যক্তির ঈমান কোন কাজে আসবে না, যে ব্যক্তি পূর্বে ঈমান আনেনি কিংবা যে ব্যক্তি ঈমানের মাধ্যমে কল্যাণ অর্জন করেনি”- (সূরাহ আল আনআম ৬ঃ ১৫৮)*। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৯৬, ইসলামিক সেন্টারঃ ৩০৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ যার আল-গিফারী (রাঃ)

আলেমদের লুকোচুরি এবং অক্ষমতা

স্বাভাবিকভাবেই, যেকোন যুক্তিবাদী মানুষই এই হাদিসটি পড়লে সর্বপ্রথম যা ভাববে, তা হচ্ছে, আল্লাহ সেই সময়ে নিকটবর্তী আসমানে নেমে আসলে আরশে তখন কে থাকে? আরশ নিশ্চয়ই সেই সময়ে খালি থাকে। কিন্তু পৃথিবী গোলাকার হওয়ায় আল্লাহর তো ফিরে যাওয়ার উপায় নেই। যেকোন সময়ই কোথাও না কোথাও রাত্রির ঐ বিশেষ সময়ইটি উপস্থিত হবে। আল্লাহরও চক্রাকারে ঘুরতে হবে, পৃথিবীর ঘুর্ণনের সাথে পাল্লা দিয়ে। তাহলে, আল্লাহ পাক তো পৃথিবীর নিকটবর্তী আসমানেই আটকে যাবেন। ইসলামের ইতিহাসে মুতাযিলা দার্শনিকগণ, যারা যুক্তি দিয়ে ধরম বিশ্লেষণ করতে চাইতেন, তারা এই নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেন। তারা এই হাদিসের সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। কিন্তু এই হাদিস এতটাই বিশুদ্ধ যে, এই হাদিসকে ভুল বলা হলে একই সাথে অন্যান্য অনেক হাদিসকেই বাতিল করে দিতে হবে একইভাবে। তাই ইতিহাসে ইসলামের অসংখ্য আলেম সরাসরিই এই হাদিস নিয়ে বেশী মাথা না ঘামাতে পরামর্শ দিয়েছে। এই হাদিস নিয়ে বেশী চিন্তা করলে ইমান হারাবার আশঙ্কাও অনেকে ব্যক্ত করেছে। যা তাদের অক্ষমতা এবং অসহায়ত্বেরই প্রমাণ। আসুন দেখে নেয়া যাক, কোন কোন প্রখ্যাত আলেম প্রকারন্তরে এই নিয়ে আলোচনা, যুক্তিতর্ক, চিন্তাভাবনা করতে নিষেধ করেছেন, তাদের বক্তব্যগুলো পড়ি।

ইমাম মালিক ইবনে আনাস

ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাযহাব মালেকী মাযহাবের প্রধান ইমাম, ইমাম মালিকের কাছে আল্লাহর আরশের উপরে ওঠা (ইস্তাওয়া) বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন [19]

ইস্তাওয়া পরিজ্ঞাত, এর পদ্ধতি বা স্বরূপ অজ্ঞাত, এ বিষয়ে প্রশ্ন করা বিদ’আত এবং এ বিষয় বিশ্বাস করা জরুরী

ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল

ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল বলেছেন [20]

 …আমি আবু আব্দুল্লাহকে (আহমাদ বিন হাম্বল(র.)) বললাম, “আল্লাহ কি দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন? তিনি বললেন, “হ্যাঁ”। আমি বললাম, “তাঁর অবতরণ কি ইলম (জ্ঞান) দিয়ে অথবা কী দিয়ে?” তিনি বললেন, “এই বিষয়ে চুপ করো। তোমার কী দরকার এ বিষয়ে? হাদিসে যেভাবে ‘কীভাবে’ বা সীমা ছাড়া বর্ণিত হয়েছে সেভাবে মেনে নাও। তবে কোন আছার বা হাদিস যদি বর্ণিত হয়, তাহলে ভিন্ন কথা। অথবা যদি কিতাবে বর্ণিত হয়। মহান আল্লাহ বলেন, “অতএব, আল্লাহর কোন সদৃশ সাব্যস্ত করো না।” (সুরা নাহল ১৬ : ৭৪) ” এর পরে ইবন রজব হাম্বলী(র.) উল্লেখ করেছেন, “ (আল্লাহর) ‘অবতরণ’ বিষয়ে যা বর্ণিত হয়েছে, তার উপর নড়াচড়া, স্থানান্তর, আরশ থেকে খালি হওয়া, না থাকা এ সকল কিছু সাব্যস্ত করা বিদআত। এ ব্যপারে গভীরে অনুসন্ধান করা কোনো প্রশংসনীয় কাজ নয়। 

দেওবন্দের ফতোয়া

বিভিন্ন দলিল ও ইজমার আলোকে দারুল উলুম দেওবন্দের ইফতা বিভাগের ফতোয়ায় বলা হয়েছে, [21]

اللہ تعالیٰ عرش پر ہے، عرش پر ہوتے ہوئے ہرجگہ ہے یعنی سب چیز اس کی قدرت اور احاطہٴ علم کے اندر ہے اس کے احاطہٴ علم اور احاطہٴ قدرت سے باہر نہیں ہے، تمام مفسرین نے لکھا ہے کہ اللہ تعالیٰ ہی جانتا ہے کہ وہ عرش پر کس طرح ہے جو اس شایانِ شان ہے اسی طرح عرش پر ہے ، ہمیں اس کا علم نہیں، نہ ہمیں اس ٹوہ میں پڑنا چاہیے، بس ایمان رکھنا چاہیے۔

অর্থঃ “আল্লাহ তা’আলা আরশের উপর আছেন। আরশের উপর থেকেই তিনি সর্বত্র বিরাজমান, অর্থাৎ তাঁর জ্ঞান ও কুদরাতের গণ্ডিতেই সব কিছু । কোনো কিছুই তাঁর আয়ত্বের বাহিরে নয়। সকল মুফাসসিরের মতে আল্লাহ তা’আলাই ভালো জানেন, তিনি আরশের উপর কিভাবে আছেন। তিনি তাঁর শান মোতাবেক আছেন। যার আকার বা ধারণা আমাদের অজানা। আমাদের এ ব্যাপারে কোনো ইলম নেই। আর এসব বিষয় নিয়ে ঘাটাঘাটি না করা উচিৎ। ব্যস, ইমান রাখাই যথেষ্ট আমাদের জন্য।”

ফতোয়ায়ে আরকানুল ইসলাম

এই প্রশ্নটি প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলার শায়খ মুহাম্মদ বিন সালেদ আল উসাইমীনকে করা হয়েছিল। আসুন দেখি শায়খ কী উত্তর দিয়েছিলেন [22]

প্রশ্ন: (৪১) আমরা জানি যে, রাত ভূপৃষ্ঠের উপরে ঘুর্ণায়মান। আর আল্লাহ রাতের তিন ভাগের এক ভাগ অবশিষ্ট থাকতে দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন। এ হিসেবে আল্লাহ তা‘আলা রাতভর দুনিয়ার আকাশেই থাকেন -এর উত্তর কী?
উত্তর: আল্লাহ কুরআন মজীদে নিজেকে যেসমস্ত গুণে গুণাম্বিত করেছেন এবং যেসমস্ত নামে নিজেকে নামকরণ করেছেন তাঁর ওপর ঈমান আনয়ন করা আমাদের ওপর ওয়াজিব। এমনিভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর যে সমস্ত নাম ও গুণাবলী বর্ণনা করেছেন কোনো প্রকার পরিবর্তন, পরিবর্ধন অস্বীকৃতি, পরিচয়ের জন্য ধরণ নির্ধারণ করা বা উপমা পেশ করা ব্যতীত তার উপর ঈমান আনা আবশ্যক। পরিবর্তন সাধারণতঃ হয়ে থাকে আয়াত ও হাদীসসমূহে। আর অস্বীকার হয়ে থাকে আকীদার ভিতরে। ধরণ, পদ্ধতি ও উপমা বর্ণনা করা হয় সিফাত তথা গুণের ভিতরে। সুতরাং উপরোক্ত চারটি দোষ হতে আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস পরিস্কার করতে হবে। আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে কেন, কেমন? এ ধরণের প্রশ্ন করা যাবে না। এমনিভাবে আল্লাহর গুণাবলীর ব্যাপারে ধরণ বর্ণনার চিন্তা করা থেকে মানুষ সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে। এ পদ্ধতি অবলম্বন করলে অনেক বিষয় সহজ হয়ে যাবে। এটাই ছিল সালাফে সালেহীনের আদর্শ। ইমাম মালেকের রহ. কাছে এক লোক এসে বলল, হে আবু আবদুর রহমান! আল্লাহ তো ‘আরশের উপরে আছেন, তবে কীভাবে? উত্তরে ইমাম মালেক রহ. বললেন, ‘আরশের উপরে থাকার বিষয়টি জ্ঞাত আছে। কীভাবে আছেন তা আমাদের জানার বাইরে। এ বিষয়ে ঈমান রাখা ওয়াজিব। আর এ বিষয়ে প্রশ্ন করা বিদ‘আত।
যে ব্যক্তি বলে যেহেতু রাত সারা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করে আর আল্লাহ তা‘আলা রাতের এক তৃতীয়াংশ বাকী থাকতে দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন, তাই আল্লাহ সারা রাতই এ আকাশে থাকেন। কারণ, শেষ তৃতীয়াংশ তো এক স্থান হতে অন্য স্থানে প্রতিনিয়ত স্থানান্তরিত হয়ে থাকে।
উত্তরে আমরা বলব যে, এ প্রশ্নটি কোনো সাহাবী করেন নি। যদি প্রশ্নটি কোনো মুসলিমের অন্তরে হওয়ার সম্ভাবনা থাকতো, তাহলে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল অবশ্যই তা বর্ণনা করতেন। আমরা বলব পৃথিবীর কোনো অংশে যতক্ষণ রাতের এক তৃতীয়াংশ থাকবে, ততক্ষণ সেখানে আল্লাহর অবতরণের বিষয়টি নিশ্চিতভাবে বাস্তবায়িত হবে। রাত শেষ হয়ে গেলে তা শেষ হয়ে যাবে। তবে আল্লাহর অবতরণের ধরণ আমরা জানিনা। তার সঠিক জ্ঞানও আমাদের কাছে নেই। আর আমরা জানি আল্লাহর মত আর কেউ নেই।
আমাদের উচিৎ হবে আল্লাহর কিতাবের সামনে আত্মসমর্পণ করা এবং এ কথা বলা যে, আমরা শুনলাম এবং ঈমান আনয়ন করলাম ও অনুসরণ করলাম। এটাই আমাদের করণীয়।

আল্লাহ 25
আল্লাহ 27

উপসংহার

পুরো আলোচনাটি থেকে যে বিষয়টি নিশ্চিতভাবে বোঝা যায়, নবী মুহাম্মদ কোরআন লেখার সময় জানতেন না যে, পৃথিবী গোলাকৃতি। তিনি পৃথিবীকে সমতল ভেবেই এরকম কথা বলেছেন। তিনি যদি বুঝতেন, পৃথিবী গোলাকৃতি, তাহলে এরকম বলবার প্রশ্নই আসে না। সমস্ত তথ্য সূত্র সহকারে লেখাটি আপনাদের চিন্তাভাবনার জন্য দেয়া হলো, বুদ্ধি বিবেক বিবেচনা ব্যবহার করে নিজেই সিদ্ধান্ত নিন, এইসব কথা কতটা যুক্তিযুক্ত।

তথ্যসূত্র

  1. কুরআন ১০:৩ []
  2. কুরআন ১৩ঃ২ []
  3. কুরআন ৪০ঃ৭ []
  4. কুরআন ৫৭ঃ৪ []
  5. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩৫৩১ []
  6. আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, প্রথম খণ্ড, আল্লামা ইবনে কাসীর, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, পৃষ্ঠা ৫৪-৫৯ []
  7. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ১০৭৯ []
  8. আল-লুলু ওয়াল মারজান, হাদিস নম্বরঃ ৪৩৪ []
  9. সূনান তিরমিজী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৪৪৬ []
  10. মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত), হাদিস নম্বরঃ ১২২৩ []
  11. আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নম্বরঃ ৭৫৮ []
  12. সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩২২৩ []
  13. তিরমিযী শরীফ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪০ []
  14. আল ফিকহুল আকবার’ বঙ্গানুবাদ ও ব্যাখ্যা, ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, পৃষ্ঠা ২৬৩, ২৬৪ []
  15. সহীহ হাদিসে কুদসি, হাদিস নম্বরঃ ১৬১ []
  16. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ২৯৭২ []
  17. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ২৯৬ []
  18. সহীহ মুসলিম, হাদীস একাডেমী, হাদিস নম্বরঃ ২৮৯ []
  19. শারহুল ফিকহিল আকবার, মোল্লা আলী কারী, পৃষ্ঠা ৭০ []
  20. ফাতহুল বারী – ইবন রজব হাম্বলী, ৯ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৮০-২৮১ []
  21. Fatwa:113-126/B=2/1439 []
  22. ফতোয়ায়ে আরকানুল ইসলাম, শায়খ মুহাম্মদ বিন সালেদ আল উসাইমীন, পৃষ্ঠা ৮০, ৮১ []
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন

আসিফ মহিউদ্দীন

আসিফ মহিউদ্দীন সম্পাদক সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন [email protected]

11 thoughts on “নিকটবর্তী আসমানে আল্লাহ পাক

  • April 14, 2021 at 8:00 AM
    Permalink

    let’s not forget the time Iraqi astronomer goes on TV to explain why Earth is flat-https://boingboing.net/2008/03/27/iraqi-astronomer-goe.html

    Reply
    • April 15, 2021 at 7:56 AM
      Permalink

      Nice joke Hasibul Ashraf

      Reply
  • April 16, 2021 at 11:05 AM
    Permalink

    আল্লাহকে ঘুরতে কেন হবে বোঝা যাচ্ছে না , পৃথিবীতো ঘুরছেই। আল্লাহ পৃথিবীর কাছাকাছি এসে নির্দিষ্ট দগ্রিমায় স্থির হয়ে বসে থাকলেই তো সম্ভব

    Reply
    • April 16, 2021 at 12:53 PM
      Permalink

      আল্লাহ স্থির হয়ে বসে থাকলে টাইমিং ঠিক থাকবে না। দেখা যাবে, যেখানে পৃথিবীর কোন অংশে দুপুর, সেই স্থানের আকাশে আল্লাহ বসে আছে। রাতের তৃতীয় ভাগের টাইমিং ঠিক রাখতে আল্লাহর পৃথিবীর ঘুর্ণন গতির সাথে মিল রেখে চক্কর দিতে হবে।

      Reply
  • May 13, 2021 at 5:56 AM
    Permalink

    বুক ফেটে কান্না আসছে,নিজেকে নিজেও প্রবোধ দিয়ে রাখতে পারছিনা।

    Reply
  • June 6, 2021 at 12:24 AM
    Permalink

    চমৎকার উপস্থাপন যুক্তি এবং রেফারেন্স এর । অনেক ভালো লাগলো লেখাটি পড়ে ।

    Reply
  • July 20, 2021 at 10:59 AM
    Permalink

    so you are saying earth is flat? haissokor

    Reply
  • August 16, 2021 at 11:59 AM
    Permalink

    Joy juktir joy
    Sotto kotha bolle
    Mollara khepe jay
    Nastikder khun korte
    চায়

    Reply
  • October 2, 2021 at 12:52 PM
    Permalink

    দুই আসমানের দূরত্ব ৫০০ বছর হলে সেটা কিসের গতিতে? আজকের বিজ্ঞান তো আলোর গতিতে হাজার হাজার বছর দূরের তথ্য আনতে পেরেছে। তাহলে আসমান বা আরশের তথ্য না পাওয়ার কারণ কী?

    Reply
  • December 27, 2022 at 9:50 AM
    Permalink

    আল্লাহ পাক কোথায় থাকেন? – অনুচ্ছেদে ৫ম লাইনে (যেমন, একটু কুকুর বা শুকর আল্লাহর অংশ নয়।) -“একটু” এর স্থলে “একটি” দ্বারা প্রতিস্থাপিত হলে উক্ত লাইনের প্রাঞ্জলতা বৃদ্ধি করবে বলে আমার মতামত।

    ধন্যবাদ ।

    Reply
  • January 4, 2024 at 7:49 PM
    Permalink

    ১৭৫২০০০০ কিমি(৫০০বছর*৩৬৫দিন*২৪ঘন্টা*৪কিমি=১৭৫২০০০০কিমি; সাধারণত একজন মানুষ ৪কিমি/ঘন্টায় হাটতে পারে।) আসমান টু আসমান দূরত্ব।সেই হিসেবে আরশের দূরত্ব পৃথিবী থেকে ১২২৬৪০০০০০কিমি। আরশ ও আসমান এগুলো অনুভূতির বিষয়; ধরা, ছোয়া বা দেখার বস্তু নয়। বি:দ্র: আজ থেকে ১৫০০ বছর পূর্বে ঐ এলাকার লোকজন বর্বর, অসভ্য ও অশিক্ষিত ছিলো তাই তারা পায়ে হাঁটার দূরত্বকেই স্ট্যান্ডার্ট ধরে মাপজোখ করতো।

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *