একটি বিবরণ থেকে জানা যায়, হযরত ইয়াহিয়া আছেন দ্বিতীয় আসমানে [1] –
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪৯/ সৃষ্টির সূচনা
পরিচ্ছেদঃ ১৯৮৮. ফিরিশ্তার বিবরণ। আনাস ইবন মালিক (রাঃ) বলেন, আবদুল্লাহ ইবন সালাম (রাঃ) নবী (সাঃ) এর নিকট বললেন, ফিরিশতাকূলের মধ্যে জিবরীল (আঃ) ইয়াহুদীদের শত্রু। আর ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেছেন لَنَحْنُ الصَّافُّونَ এই উক্তি ফিরিশ্তাদের।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ২৯৮০, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৩২০৭
২৯৮০। হুদবা ইবনু খালিদ ও খলিফা (ইবনু খাইয়াত) (রহঃ) … মালিক ইবনু সা’সা’আ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি কাবা ঘরের নিকট নিদ্রা ও জাগরণ-এ দু’ অবস্থার মাঝামাঝি অবস্থায় ছিলাম। এরপর তিনি দু’ ব্যাক্তির মাঝে অপর এক ব্যাক্তি অর্থাৎ নিজের অবস্থা উল্লেখ করে বললেন, আমার নিকট স্বর্ণের একটি তশতরী নিয়ে আসা হল-যা হিকমত ও ঈমানে পরিপূর্ণ ছিল। তাপর আমার বুক থেকে পেটের নীচ পর্যন্ত বিদীর্ণ করা হল। এরপর আমার পেটে যমযমের পানি দ্বারা ধুয়ে ফেলা হল।
তারপর হিকমত ও ঈমান পরিপূর্ণ করা হল এবং আমার নিকট সাদা চতুষ্পদ জন্তু আনা হল, যা খচ্চর হতে ছোট আর গাধা থেকে বড় অর্থাৎ বুরাক। এরপর তাতে আরোহণ করে আমি জিবরীল (আলাইহিস সালাম) সহ চলতে চলতে পৃথিবীর নিকটতম আসমানে গিয়ে পৌঁছলাম। জিজ্ঞাসা হল, এ কে? উত্তরে বলা হল, জিবরীল। জিজ্ঞাসা করা হল, আপনার সঙ্গে আর কে? উত্তর দেওয়া হল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। প্রশ্ন করা হল তাঁকে আনার জন্য কি পাঠানো হয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। বলা হল, তাঁকে ধন্যবাদ, তাঁর শুভাগমন কতই না উত্তম।
তারপর আদম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে গেলাম। তাঁকে সালাম দিলাম। তিনি বললেন, পুত্র ও নবী! তোমার প্রতি ধন্যবাদ। এরপর আমরা দ্বিতীয় আসমানে গেলাম। জিজ্ঞাসা করা হল, এ কে? তিনি বললেন, আমি জিবরীল। জিজ্ঞাসা করা হল, আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। প্রশ্ন করা হল তাঁকে আনার জন্য কি পাঠানো হয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। বলা হল তাঁকে ধন্যবাদ আর তাঁর শুভাগমন কতই না উত্তম। তারপর আমি ঈসা ও ইয়াহইয়া (আলাইহিমুস সালাম) এর নিকট আসলাম। তাঁরা উভয়ে বললেন, ভাই ও নবী! আপনার প্রতি ধন্যবাদ।
তারপর আমরা তৃতীয় আসমানে পৌঁছলাম। জিজ্ঞাসা করা হল, এ কে? তিনি বললেন, আমি জিবরীল। জিজ্ঞাসা করা হল, আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। প্রশ্ন করা হল তাঁকে আনার জন্য কি পাঠানো হয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। বলা হল তাঁকে ধন্যবাদ আর তাঁর শুভাগমন কতই না উত্তম। তারপর আমি ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এর নিকট গেলাম। তাঁকো আমি সালাম দিলাম। তিনি বললেন, ভাই ও নবী! আপনাকে ধন্যবাদ।
এরপর আমরা চতুর্থ আসমানে পৌঁছলাম। জিজ্ঞাসা করা হল, এ কে? তিনি বললেন, আমি জিবরীল। জিজ্ঞাসা করা হল, আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। প্রশ্ন করা হল তাঁকে আনার জন্য কি পাঠানো হয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। বলা হল তাঁকে ধন্যবাদ আর তাঁর শুভাগমন কতই না উত্তম। তারপর আমি ইদ্রিস (আলাইহিস সালাম) এর নিকট গেলাম। আমি তাঁকে সালাম দিলাম। তিনি বললেন, ভাই ও নবী! আপনাকে ধন্যবাদ।
এরপর আমরা পঞ্চম আসমানে পৌঁছলাম। জিজ্ঞাসা করা হল, এ কে? তিনি বললেন, আমি জিবরীল। জিজ্ঞাসা করা হল, আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। প্রশ্ন করা হল তাঁকে আনার জন্য কি পাঠানো হয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। বলা হল তাঁকে ধন্যবাদ আর তাঁর শুভাগমন কতই না উত্তম। তারপর আমরা হারুন (আলাইহিস সালাম) এর কাছে গেলাম। আমি তাঁকে সালাম দিলাম। তিনি বললেন, ভাই ও নবী! আপনাকে ধন্যবাদ।
তারপর ষষ্ঠ আসমানে পৌঁছলাম। জিজ্ঞাসা করা হল, এ কে? তিনি বললেন, আমি জিবরীল। জিজ্ঞাসা করা হল, আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। প্রশ্ন করা হল তাঁকে আনার জন্য কি পাঠানো হয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। বলা হল তাঁকে ধন্যবাদ আর তাঁর শুভাগমন কতই না উত্তম। তারপর আমি মূসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে গেলাম। আমি তাঁকে সালাম দিলাম। তিনি বললেন, ভাই ও নবী আপনাকে ধন্যবাদ।
তারপর আমি যখন তাঁর কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিলাম, তখন তিনি কেঁদে ফেললেন। তাঁকে বলা হল, আপনি কাঁদছেন কেন? তিনি বলেছেন, হে রব! এ ব্যাক্তি যে আমার পর প্রেরিত, তাঁর উম্মাত আমার উম্মাতের চেয়ে অধিক পরিমাণে বেহেশতে যাবে। এরপর আমরা সপ্তম আকাশে পৌঁছলাম। জিজ্ঞাসা করা হল, এ কে? তিনি বললেন, আমি জিবরীল। জিজ্ঞাসা করা হল, আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। প্রশ্ন করা হল তাঁকে আনার জন্য কি পাঠানো হয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। বলা হল তাঁকে ধন্যবাদ আর তাঁর শুভাগমন কতই না উত্তম। তারপর আমি ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে গেলাম। আমি তাঁকে সালাম দিলাম। তিনি বললেন, হে পুত্র ও নবী! আপনাকে ধন্যবাদ।
এরপর বায়তুল মা’মুরকে আমার সামনে প্রকাশ করা হল। আমি জিবরীল (আলাইহিস সালাম) কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, এটি বায়তুল মামুর। প্রতিদিন এখানে সত্তর হাজার ফিরিশতা সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। এরা এখান থেকে একবার বের হলে দ্বিতীয় বার ফিরে আসে না। এটাই তাদের শেষ প্রবেশ। তারপর আমাকে সিদরাতুল মুনতাহা দেখানো হল। দেখলাম, এর ফল যেন, হাজার নামক স্থানের মটকার ন্যায়। আর তার পাতা যেন হাতীর কান। তার মূল দেশে চারটি ঝরনা প্রবাহিত।’ দু’টি অভ্যন্তরে আর দু’টি বাইরে। এ সম্পর্কে আমি জিবরীলকে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, অভ্যন্তরে দু’টি জান্নাতে অবস্থিত। আর বাইরের দু’টির একটি হল (ইরাকের) ফুরাত আর অপরটি হল (মিশরের) নীল নদ।
তারপর আমি প্রতি পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত (নামায/নামাজ) ফরয করা হয়। আমি তা গ্রহণ করে মূসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে ফিরে এলাম। তিনি বললেন, কি করে এলেন? আমি বললাম, আমার প্রতি পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত (নামায/নামাজ) ফরয করা হয়েছে। তিনি বললেন, আমি আপনার চেয়ে মানুষ সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত আছি। আমি বনী ইসরাঈলের চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করেছি আর আপনার উম্মাত এত (সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ে) সমর্থ হবে না। অতএব আপনার রবের নিকট ফিরে যান এবং তা কমানোর অনুরোধ করুন।
আমি ফিরে গেলাম এবং তাঁর নিকট আবেদন করলাম। তিনি সালাত (নামায/নামাজ) চল্লিশ ওয়াক্ত করে দিলেন। পুনরায় অনুরূপ ঘটল। আর সালাত (নামায/নামাজ)ও ত্রিশ ওয়াক্ত করে দেওয়া হল। পুনরায় অনুরূপ ঘটলে তিনি সালাত (নামায/নামাজ) বিশ ওয়াক্ত করে দিলেন। আবার অনুরূপ হল। তিনি সালাত (নামায/নামাজ) কে দশ ওয়াক্ত করে দিলেন। এরপর আমি মূসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে আসলাম। তিনি পূর্বের ন্যায় বললেন, এবার আল্লাহ সালাত (নামায/নামাজ) কে পাঁচ ওয়াক্ত ফরয করে দিলেন। আমি মূসার নিকট আসলাম। তিনি বললেন, কি করে আসলেন? আমি বললাম, আল্লাহ পাঁচ ওয়াক্ত ফরয করে দিয়েছেন।
এবারও তিনি পূর্বের ন্যায় বললেন, আমি বললাম, আমি তা মেনে নিয়েছে। তখন আওয়াজ এল, আমি আমার ফরয জারি করে দিয়েছি। আর আমার বান্দাদের থেকে হালকা করে দিয়েছে। আর আমি প্রতিটি পূণ্যের জন্য দশ গুন সওয়াব দিব।
আর বায়তুল মামুর সম্পর্কে হাম্মাম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ মালিক ইবনু সা‘সা‘আ (রাঃ)
আরেকটি হাদিস থেকে জানা যায়, ইয়াহিয়া ছিলেন তৃতীয় আসমানে। এই হাদিসটির বাঙলা অনুবাদে একটু বাটপারি করা হয়েছে, এই কারণে ইংরেজি অনুবাদ দিচ্ছি, [2] –
Reference : Sahih Muslim 164a
In-book reference : Book 1, Hadith 321
USC-MSA web (English) reference : Book 1, Hadith 314
(deprecated numbering scheme)
(74)Chapter: The night journey on which the messenger of Allah (saws) was taken up into the heavens and the prayers were enjoined(74)باب الإِسْرَاءِ بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى السَّمَوَاتِ وَفَرْضِ الصَّلَوَاتِ
Anas b. Malik reported on the authority of Malik b. Sa sa’, perhaps a person of his tribe, that the Prophet of Allah (ﷺ) said:
I was near the House (i. e. Ka’bah) in a state between sleep and wakefulness when I heard someone say: He is the third among the two persons. Then he came to me and took me with him. Then a golden basin containing the water of Zamzam was brought to me and my heart was opened up to such and such (part). Qatada said: I asked him who was with me (i e. the narrator) and what he meant by such and such (part). He replied: (It means that it was opened) up to the lower part of his abdomen (Then the hadith continues): My heart was extracted and it was washed with the water of Zamzam and then it was restored in its original position, after which it was filled with faith and wisdom. I was then brought a white beast which is called al-Buraq, bigger than a donkey and smaller than a mule. Its stride was as long as the eye could reach. I was mounted on it, and then we went forth till we reached the lowest heaven. Gabriel asked for the (gate) to be opened, and it was said: Who is he? He replied: Gabriel. It was again said: Who is with thee? He replied: Muhammad (ﷺ). It was said: Has he been sent for? He (Gabriel) said: Yes. He (the Prophet) said: Then (the gate) was opened for us (and it was said): Welcome unto him! His is a blessed arrival. Then we came to Adam (peace be upon him). And he (the narrator) narrated the whole account of the hadith. (The Holy Prophet) observed that he met Jesus in the second heaven, Yahya (peace be on both of them) in the third heaven, Yusuf in the third, Idris in the fourth, Harun in the fifth (peace and blessings of Allah be upon them). Then we travelled on till we reached the sixth heaven and came to Moses (peace be upon him) and I greeted him and he said: Welcome unto righteous brother and righteous prophet. And when I passed (by him) he wept, and a voice was heard saying: What makes thee weep? He said: My Lord, he is a young man whom Thou hast sent after me (as a prophet) and his followers will enter Paradise in greater numbers than my followers. Then we travelled on till we reached the seventh heaven and I came to Ibrahim. He (the narrator) narrat- ed in this hadith that the Prophet of Allah (ﷺ) told that he saw four rivers which flowed from (the root of the lote-tree of the farthest limits): two manifest rivers and two hidden rivers. I said: ‘ Gabriel! what are these rivers? He replied: The two hidden rivers are the rivers of Paradise, and as regards the two manifest ones, they are the Nile and the Euphrates. Then the Bait-ul-Ma’mur was raised up to me. I said: O Gabriel! what is this? He replied: It is the Bait-ul-Ma’mur. Seventy thousand angels enter into it daily and, after they come out, they never return again. Two vessels were then brought to me. The first one contained wine and the second one contained milk, and both of them were placed before me. I chose milk. It was said: You did right. Allah will guide rightly through you your Ummah on the natural course. Then fifty prayers daily were made obligatory for me. And then he narrated the rest of the hadith to the end.
তথ্যসূত্র
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ২৯৮০ [↑]
- Sahih Muslim 164a, In-book reference : Book 1, Hadith 321, USC-MSA web (English) reference : Book 1, Hadith 314 [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"