ইসলামের খুব পরিষ্কার বিধান হচ্ছে, কারো সম্পর্কে যিনা বা অবৈধ যৌনসম্পর্কের অভিযোগ উঠলে চারজন সাক্ষী সহ বিষয়টি বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে হয়, এরপরে সকল সাক্ষ্য প্রমাণ পর্যবেক্ষণের পরে বিচারক বিচারের রায় ঘোষণা করতে পারেন। অথচ, নবী মুহাম্মদের ব্যক্তিগত পারিবারিক জীবনে এই বিচার প্রক্রিয়া ছিল সম্পূর্ণ উল্টো। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি সাক্ষ্য প্রমাণ এসব কিছুরই ধার ধারতেন না। সোজা হুকুম দিতেন কতল করার, বিশেষ করে অভিযোগটি যদি তার স্ত্রী বা যৌন দাসীর সাথে সম্পর্কিত হতো তখন। এর প্রমাণ পাওয়া যায় একটি বিখ্যাত হাদিস থেকে। সেটি হচ্ছে, নবীর দাসী ছিল মারিয়া কিবতিয়া, যিনি গর্ভবতী হয়েছিলেন মুহাম্মদের মাধ্যমে। একলোক এসে অভিযোগ করলো, সেই দাসীর সাথে আরেকজনার অবৈধ সম্পর্ক আছে। নবী সেটি শুনেই হযরত আলীকে পাঠালেন ঐ ব্যক্তিকে খুন করে আসতে, যার সাথে মারিয়া কিবতিয়ার যৌন সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছিল।
এই ক্ষেত্রে নবী কোন সাক্ষী সাবুদ কিংবা প্রমাণের অপেক্ষা করেননি। যা অত্যন্ত বাজে বিচারের উদাহরণ বলে গণ্য হয়। বিচারক যদি তার ব্যক্তিগত রাগ ক্রোধ দ্বারা খুনোখুনীর সিদ্ধান্ত নেন, সেটি তো খুন হয়, বিচার হয় না। যদিও আলীর বুদ্ধিমত্তার কারণে সেই লোকটি খুন হয়নি, কিন্তু নবীর নির্দেশ কিন্তু ছিল হত্যা করার, কোন সাক্ষীসাবুদ ছাড়াই [1] [2] [3] –
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
৫০। তাওবাহ্
পরিচ্ছেদঃ ১১. রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মর্যাদা সন্দেহমুক্ত হওয়া
হাদিস একাডেমি নাম্বারঃ ৬৯১৬, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৭৭১
৬৯১৬-(৫৯/২৭৭১) যুহায়র ইবনু হাব (রহঃ) ….. আনাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মু ওয়ালাদের (দাসীদের) সঙ্গে এক লোকের প্রতি অভিযোগ আসে। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’আলী (রাযিঃ) কে বললেন, যাও, তার শিরশ্ছেদ কর। আলী (রাযিঃ) তার কাছে গিয়ে দেখলেন, সে কূয়ার মধ্যে শরীর ঠাণ্ডা করছে। ’আলী (রাযিঃ) তাকে বললেন, বেরিয়ে এসো। সে আলী (রাযিঃ) এর দিকে হাত এগিয়ে দিলো। তিনি তাকে বের করলেন এবং দেখলেন, তার পুরুষাঙ্গ সম্পূর্ণ কাটা, তার লিঙ্গ নেই। তখন আলী (রাযিঃ) তাকে হত্যা করা হতে বিরত থাকলেন। তারপর তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! সে তো লিঙ্গকাটা, তার যে লিঙ্গ নেই। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৭৬৬, ইসলামিক সেন্টার ৬৮২১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫১/ তাওবা
পরিচ্ছেদঃ ১১. রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর হেরেম সন্দেহমুক্ত হওয়া
৬৭৬৬। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মে ওয়ালাদের সাথে এক ব্যক্তির প্রতি অভিযোগ (অপবাদ) উত্থাপিত হয়। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী (রাঃ) কে বললেন, যাও। তার গর্দান উড়িয়ে দাও। আলী (রাঃ) তার নিকট গিয়ে দেখলেন, সে কুপের মধ্যে শরীর শীতল করছে। আলী (রাঃ) তাকে বললেন, বেরিয়ে আস। সে আলী (রাঃ)এর দিকে হাত বাড়িয়ে দিল। তিনি তাকে বের করলেন এবং দেখলেন, তার পূরুষাঙ্গ কর্তিত, তার লিঙ্গ নেই। তখন আলী (রাঃ) তাকে হত্যা করা থেকে বিরত থাকলেন। তারপর তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সে তো লিঙ্গ কর্তিত তার তো লিঙ্গ নেই।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)

তথ্যসূত্র
- সহিহ মুসলিম, হাদীস একাডেমী, হাদিস নম্বরঃ ৬৯১৬ [↑]
- সহিহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৬৭৬৬ [↑]
- সহিহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ২৮৫, ডাউনলোড লিঙ্ক [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"