ইসলামের এই বমি উদ্রেককারী বিধান শুনে আধুনিক সময়ের অনেক মুসলিমই লজ্জিত চেহারায় বলার চেষ্টা করেন যে, সেই সময়ে আরব দেশে মেয়েরা নয়বছর বয়সেই প্রাপ্তবয়ষ্ক হয়ে যেতো! অথচ এরকম কোন প্রমাণ কোথাও পাওয়া যায় না যে, কোন এক বিশেষ অঞ্চলে মেয়েরা কোন নির্দিষ্ট বয়সে প্রাপ্তবয়ষ্ক হয়ে যেতো। বরঞ্চ বিভিন্ন সংস্কৃতিতে সেই সময়ের মানুষ তাদের কৃষ্টি কালচার অনুসারে মেয়েদের বালেগ হওয়ার কিছু বয়স নির্ধারণ করেছিল, সম্পত্তিতে তাদের অধিকার কখন প্রতিষ্ঠিত হবে, তার প্রয়োজনে। কিন্তু সেরকম কোন বয়স সামাজিক বা আইনগতভাবে নির্ধারিত হওয়ার মানে এই নয় যে, সেই বয়সে পৌঁছালে মেয়েরা আসলেই যৌনকর্মের জন্য উপযুক্ত হয়ে যেতো! এই সম্পর্কে মুমিনরা একটি হাদিসের কিয়দাংশ উল্লেখ করে বলার চেষ্টা করেন যে, একটি হাদিসের শেষাংশে বলা আছে, আয়িশা নাকি বলেছিলেন কোন মেয়ে নয় বছর বয়সে পৌঁছালে সে মহিলা। এই হাদিস দিয়ে তারা শিশু বিবাহের এই কুৎসিত প্রথা জায়েজ করার চেষ্টা করেন। তাই এই হাদিসটি কতটুকু সহিহ, সেটি যাচাই করে দেখা প্রয়োজন। তবে এই হাদিস সহিহ হলেও এটি মেনে নেয়া যায় না যে, নয় বছরে মেয়েরা যৌনকাজের উপযুক্ত হয়! কারণ এটি নিতান্তই অজ্ঞতাপ্রসূত একটি বাজে কথা। কেউ যদি এমন কথা বলেও থাকে, সেটি সে জ্ঞানের অভাবের কারণে ভুল বলেছে। তারপরেও, শুধুমাত্র তর্কের খাতিরে আসুন সেই হাদিসটির সনদ যাচাই করে দেখা যাক। Islamqa.info ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে একটি প্রবন্ধ রয়েছে, আসুন প্রবন্ধটি এবং তার অনুবাদ একসাথে পড়ে দেখি [1] [2] –
خبر عائشة: إذا بلغت الجارية تسع سنين، فهي امرأة.
324575
تاريخ النشر : 11-02-2020
المشاهدات : 11432
السؤال
عن عائشة أنها قالت: “إذا بلغت الجارية تسع سنين فهي امرأة” ورد في سنن الترمذي، فهل هذا القول صحيح؟
ملخص الجواب
هذا الخبر، سواء ثبت عن عائشة، أو لم يثبت : ليسا عاما ، بظاهره ، لجميع من بلغت التاسعة؛ وإنما معناه : أن من بلغتها ، وحاضت، كما قد يحصل في بلاد العرب : فإنها تكون امرأة ، يحكم لها بحكم البالغات .
الجواب
الحمد لله.
هذا الأثر رغم كثرة تداول الفقهاء له؛ إلا أنه ورد في المصنفات الحديثية معلقا من غير إسناد.
حيث قال الترمذي رحمه الله تعالى:
” وَقَدْ قَالَتْ عَائِشَةُ: إِذَا بَلَغَتِ الجَارِيَةُ تِسْعَ سِنِينَ فَهِيَ امْرَأَةٌ ” انتهى من “السنن” (3 / 409).
وقال البيهقي رحمه الله تعالى:
” ورُوِّينا عن عائشةَ أنَّها قالَت: إذا بَلَغَتِ الجاريَةُ تِسعَ سِنينَ فهِىَ امرأَةٌ ” انتهى من “السنن الكبرى” (2 / 433).
وقد تتبعه كثير من الباحثين فلم يقفوا له على إسناد.
قال الشيخ الألباني رحمه الله تعالى:
” رواه الترمذي، والبيهقي تعليقا بدون إسناد…
قلت: وقد روي مرفوعا من حديث ابن عمر كما سيأتي في “النكاح” وبلفظه: ( إذا أتى على الجارية تسع سنين فهي امرأة ).
أخرجه أبو نعيم في “أخبار أصبهان” وعنه الديلمي في “المسند” عن عبيد بن شريك، حدثني سليمان بن شرحبيل، حدثنا عبد الملك بن مهران، حدثنا سهل بن أسلم العدوى، عن معاوية بن قرة قال: سمعت ابن عمر به.
قلت: وهذا سند ضعيف، عبد الملك بن مهران قال ابن عدى: “مجهول”.
وقال العقيلي: ” صاحب مناكير، غلب عليه الوهم، لا يقيم شيئا من الحديث “.
قلت: ومن دونه لم أعرفهم … ” انتهى من “إرواء الغليل” (1 / 199).
فالحاصل؛ أن هذا الخبر لا يعلم له إسناد صحيح.
لكن مع عدم وجود إسناد صحيح له؛ إلا أن معناه له وجه من الصواب؛ وهو أن الجارية في بلاد العرب ربما حاضت في سن التاسعة.
وأشار إلى هذا المعنى البيهقي رحمه الله تعالى؛ حيث قال عقب الخبر المنسوب لعائشة رضي الله عنها:
” تعني والله أعلم: [إذا بلغت تسع سنين] ، فحاضَت : فهِي امرأَةٌ ” انتهى من”السنن الكبرى” (2 / 433).
وأشار إليه أيضا البغوي رحمه الله تعالى؛ حيث قال:
” وذهب أحمد، إلى أن اليتيمة إذا بلغت تسع سنين، جاز لغير الأب والجد تزويجها برضاها، ولا خيار لها.
ولعله قال ذلك، لما عُلم أن كثيرا من نساء العرب يدركن إذا بلغن هذا السن، قالت عائشة: ( وإذا بلغت الجارية تسع سنين، فهي امرأة ) ” انتهى من “شرح السنة” (9 / 37).
والحيض علامة على البلوغ ، وتنتقل به البنت من الطفولة فتصبح امرأة.
قال ابن القطان رحمه الله تعالى:
” واتفق أهل العلم إلا من شذ، ممن لا يعد خلافه: على أن الاحتلام ، والحيض : بلوغ.
وأجمع أهل العلم على أن المرأة إذا حاضت ، وجبت عليها الفرائض ” انتهى من “الإقناع” (1 / 125).
والحاصل:
أن هذا الخبر، سواء ثبت عن عائشة، أو لم يثبت : ليسا عاما ، بظاهره ، لجميع من بلغت التاسعة؛ وإنما معناه : أن من بلغتها ، وحاضت، كما قد يحصل في بلاد العرب : فإنها تكون امرأة ، يحكم لها بحكم البالغات .
والله أعلم.
هل انتفعت بهذه الإجابة؟
আয়িশার বর্ণনাঃ যখন দাসী/বাদী ৯ বছর বয়সে পৌঁছায় তখন সে মহিলা/প্রাপ্তবয়স্ক নারী।
প্রশ্নঃ আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যা সুনানে তিরমিজীতে উল্লেখ আছে যে- তিনি বলেছেনঃ “যখন একজন দাসী/বাদী ৯ বছর বয়সে পৌঁছায় তখন সে মহিলা/প্রাপ্তবয়স্ক নারী।” এই বর্ণনাটি কি সঠিক?
সারসংক্ষেপ উত্তরঃ এই বর্ণনা যে আয়িশার থেকে তা প্রমাণিত হোক বা না হোক এই কথাটি “আম” বা প্রকাশ্য অর্থে সর্বজনবিদিত নয়; অর্থাৎ সমস্ত ৯ বছর বয়সী বাঁদীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। বরং এই বর্ণনার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো সেই মেয়ে যে প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছে, যার মাসিক হয়েছে যেমনটা আরব দেশগুলোতে হয়ে থাকে। তখন তাকে প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা ধরা হবে এবং তার উপর প্রাপ্তবয়স্ক নারীর যে হুকুম তা বর্তাবে।
(বিস্তারিত) উত্তরঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ পাকের জন্য। ফিকহবিদগণ প্রমাণসহ এটা উপস্থাপন করার পরও এই বিষয়টির ওপর বিপুল সংখ্যক মানুষের একটি বিরূপ প্রভাব রয়ে গেছে। এছাড়া নতুন লেখকগণ এটি সনদ উল্লেখ ছাড়াই বর্ণনা করেছেন। যখন তা তিরমিজী (রহ:) থেকেও বর্ণিত।
“যখন দাসী/বাদী ৯ বছর বয়সে পৌঁছায় তখন সে প্রাপ্তবয়স্ক নারী।” (আস-সুনান (৩/৪০৯) এর শেষাংশ থেকে উল্লেখিত)
ইমাম বায়হাকী (রহ:)ও বলেছেনঃ
“আয়িশা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ যখন দাসী/বাঁদী ৯ বছর বয়সে পৌঁছায় তখন সে প্রাপ্তবয়স্ক নারী।” (আস-সুনান আল-কুবরা(2/433)এর শেষাংশ থেকে উল্লেখিত)
অনেক গবেষক ইমাম বায়হাকীকে অনুসরন করেছেন কিন্তু সনদের ব্যাপারে তারা একমত হননি।
শায়েখ আলবানী (রহঃ) বলেছেনঃ “ইমাম তিরমিজী এবং ইমাম বায়হাকী এই হাদিসটি কোন সনদ যুক্ত না করেই বর্ণনা করেছেন।”
(উত্তরদাতা) আমি বলি, হ্যাঁ, ঠিক আছে। এটা মারফু হাদিস হিসেবে ইবনে উমর থেকে বর্ণিত আর “বিবাহ” অধ্যায়ে হুবহু এই শব্দেই বর্ণিত আছে যেঃ “যখন দাসী/বাঁদী ৯ বছর বয়সে পৌঁছায় তখন সে প্রাপ্তবয়স্ক নারী”
প্রাপ্ত সনদঃ
——–
আবু নাঈম থেকে “আখবারে ইস্ফাহানে” বর্ণিত এবং দায়লামী তার “মুসনাদ” গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন উবায়দুল্লাহ ইবনে শারীক থেকে। তিনি বলেছেন আমার কাছে সুলাইমান ইবনে সুরাহবিল এভাবে বর্ণনা করেছেন যে, আমাদেরকে আব্দুল মালিক ইবনে মিহরান বর্ণনা করেছেন। আমাদেরকে সাহল ইবনে আসলাম আদী বর্ণনা করেছে মুয়াবিয়া ইবনে কুররাহ থেকে যিনি বলেছেন যে আমি এটি ইবনে ওমর থেকে শুনেছি।
(উত্তরদাতা) আমি বলিঃ এটি একটি দুর্বল সনদ। কারন, আব্দুল মালিক ইবনে মিহরান ইবনে আদী থেকে বর্ণনা করেছে বিষয়টি “অজানা”।
উকাইলী বলেনঃ যে কারো নিন্দা করেছে বা বিভ্রান্তিতে পড়েছে তার থেকে বর্ণিত জিনিস হাদিসের অন্তর্ভুক্ত নয়।
(উত্তরদাতা) আমি বলি “উকাইলীর মন্তব্য ছাড়াও তারা কোন পরিচিত ব্যক্তি নয়। (কাজেই তাদের থেকে উল্লেখিত সনদ সহিহ নয়।)
মোটকথা, এই হাদিসটির সহিহ সনদ জানা যায়না।”
কিন্তু এটার সহিহ সনদ না থাকলেও কথাটির সঠিক ব্যাখ্যা আছে। আর তা হলোঃ এই হাদিসে বাদীকে আরব অঞ্চলের বাদী হিসাবে বলা হয়েছে যে যাদের ৯ বছর বয়সেই মাসিক (পিরিয়ড) হয়। আর ইমাম বায়হাকী আয়েশার বর্ণনা বলে এই ব্যাখ্যার দিকেই ইশারা করেছেন।
“এই বর্ণনা নিয়ে এটি আমার ব্যাখ্যা। সঠিক ব্যাখ্যা আল্লাহই ভালো জানেন।
অধ্যায়সমূহঃ “যদি বাদীর নয় বছর বয়স হয় এবং তার মাসিক হয়” আল-সুনান আল-কুবরা (2/433)
উপরোক্ত ব্যাখ্যার দিকে আল বাগাওয়ি ও ইঙ্গিত করেছেন। যেমন তিনি বলেছেনঃ
“ইমাম আহমদ ও এই বর্ণনা করেছেন যে, যখন এতিম মেয়ে নয় বছর বয়সে পৌঁছায় তখন তার বাবা, দাদার অনুমতি ছাড়া তার সন্তুস্টিতে বিয়ে দেয়া জায়েজ। “আর এই এই মেয়ের কোন সম্মতি বলে কিছু নেই”
সম্ভবত তিনি এটাও বলেছেন যে, যখন আরবের বেশিরভাগ নারী তাদের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার বয়স বুঝতে পারলো তখন আয়েশা (রাঃ) “নয় বছর বয়সে পোঁছালে সে প্রাপ্তবয়স্কা নারী”একথা বলেছেন। (সরহুস-সুন্নাহ (৯/৩৭) এর শেষাংশে উল্লেখিত)
মাসিক (পিরিয়ড) প্রাপ্তবয়স্কা হওয়ার আলামত। আর শিশু থেকে মাসিকের মাধ্যমেই প্রাপ্তবয়স্ক হয়।
ইবনে কাতরান (রহঃ) বলেছেন-
বিভ্রান্ত আলেমগন ছাড়া বাকী সবাই একমত যে- স্বপ্নদোষ এবং মাসিক হওয়াই প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া।
আর জমহুর আলেমগণ একমত যে যখন কোন মেয়ের মাসিক (পিরিয়ড) হয় তখন তার ওপর শরীয়াহর হুকুমসমূহ ফরজ হয়ে যায়।
মোটকথাঃ এই বর্ণনা যে আয়েশার থেকে তা প্রমাণিত হোক বা না হোক এই কথাটি “আম” বা প্রকাশ্য অর্থে সর্বজনবিদিত নয়; অর্থাৎ সমস্ত ৯ বছর বয়সী বাদীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। বরং এই বর্ণনার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো সেই মেয়ে যে প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছে, যার মাসিক হয়েছে যেমনটা আরবদেশগুলোতে হয়ে থাকে। তখন তাকে প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা ধরা হবে এবং তার উপর প্রাপ্তবয়স্ক নারীর যে হুকুম তা বর্তাবে।
তথ্যসূত্র
- خبر عائشة: إذا بلغت الجارية تسع سنين، فهي امرأة. [↑]
- خبر عائشة: إذا بلغت الجارية تسع سنين، فهي امرأة. ওয়েব আর্কাইভ লিঙ্ক [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"