04.জর্জ বার্নার্ড শ’ নবীর প্রশংসা করেছিলেন?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং অন্যান্য প্লাটফর্মে প্রায়শই একটি পোস্টার দেখতে পাওয়া যায়, পোস্টারটিতে প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী জর্জ বার্নার্ড শ এর একটি বাণী প্রচার করা হয়ে থাকে। বানীটির নিচে লেখা থাকে জর্জ বার্নার্ড শ এর নাম এবং তার ছবিও পোস্টারগুলোতে দেখা যায়। বক্তব্যটি বার্নার্ড শ নাকি করেছিলেন মুহাম্মদ সম্পর্কে। পোস্টারটিতে দেখা যায়, তিনি নাকি মুহাম্মদের প্রশংসা করতে গিয়ে বলেছিলেন,

“I believe that if a man like him were to assume the dictatorship of the modern world he would succeed in solving its problems in a way that would bring it the much needed peace and happiness: I have prophesied about the faith of Muhammad that it would be acceptable to the Europe of tomorrow as it is beginning to be acceptable to the Europe of today. “
– Sir George Bernard Shaw in ‘The Genuine Islam,’ Vol. 1, No. 8, 1936.

বার্নার্ড

জর্জ বার্নার্ড শ একজন অত্যন্ত বিখ্যাত আইরিশ নাট্যকার, সমালোচক এবং রাজনীতি চিন্তক। ১৮৮০-এর দশক থেকে শুরু করে তার মৃত্যুর পরও আজ পর্যন্ত পশ্চিমা মঞ্চনাটক, সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে তার প্রভাব বিদ্যমান। তিনি ম্যান অ্যান্ড সুপারম্যান (১৯০২), পিগম্যালিয়ন (১৯১২) ও সেন্ট জোন (১৯২৩)-সহ ষাটের অধিক নাটক রচনা করেছেন। সমসাময়িক ব্যঙ্গরচনা থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক রূপক কাহিনি দিয়ে তিনি তার প্রজন্মের অন্যতম নাট্যকার হিসেবে প্রসিদ্ধি অর্জন করেন এবং ১৯২৫ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তার রচনাবলী থেকে জানা যায়, তিনি ছিলেন প্রচণ্ড রকমের ধর্মবিরোধী, বিশেষভাবে ইসলাম ধর্মের অত্যন্ত কঠোর সমালোচক। তার সম্পর্কে এই ধরণের গুজব যে আসলে ডাহা মিথ্যাচার, তা বুঝতে রকেট সায়েন্টিস্ট হওয়ার প্রয়োজন নেই। তারপরেও আমরা এই দাবীটি যাচাই করে দেখবো।

জর্জ বার্নার্ড শ এর নামে একটা সংস্থা আছে, যার নাম ইন্টারন্যাশনাল শ সোসাইটি। যার ট্রেজারারের নাম হচ্ছে Richard F Dietrich, যিনি জর্জ বার্নার্ড শ এর সব লেখা কম্পাইল করেছেন। তিনি বলেছেন, দ্যা জেনুইন ইসলাম নামে শ আসলে কোন বই-ই লেখেন নি। পুরোটাই ভোগাস। বার্নার্ড শ এর নামে যেই বক্তব্যটি প্রচার করা হয়, এরকম কোন লিখিত বই বার্নার্ড শ এর লিখিত বইয়ের তালিকাতেই নেই। শুধু তাই নয়, শ আসলে ইসলাম এবং মুহাম্মদ সম্পর্কে কী ধারণা পোষণ করতেন, তা তার একটা চিঠি থেকেই পরিষ্কার হয়।[1]

Islam is very different, being ferociously intolerant. What I may call Manifold Monotheism becomes in the minds of very simple folk an absurdly polytheistic idolatry, just as European peasants not only worship Saints and the Virgin as Gods, but will fight fanatically for their faith in the ugly little black doll who is the Virgin of their own Church against the black doll of the next village. When the Arabs had run this sort of idolatry to such extremes (that) they did this without black dolls and worshipped any stone that looked funny, Mahomet rose up at the risk of his life and insulted the stones shockingly, declaring that there is only one God, Allah, the glorious, the great… And there was to be no nonsense about toleration. You accepted Allah or you had your throat cut by someone who did accept him, and who went to Paradise for having sent you to Hell.

প্রায় প্রতিদিনই মুমিন মুসলমানরা এরকম নানা টাইপ ছবি বানায়, মিথ্যাচার করে করে মুহাম্মদের চরিত্র ফুলের মত পবিত্র প্রমাণের চেষ্টা করে। এসব অনেক বছর ধরে দেখছি। মুসলমানদের এসব জোচ্চুরি দেখে হাসিও পায়, আবার খারাপও লাগে। কত লক্ষ লক্ষ নির্বোধ বিশ্বাস করে বসে আছে এসব বানানো কথা। এদের কী এতটুকু লজ্জা থাকতে নেই? এরকম লক্ষ লক্ষ মিথ্যাচারের মাধ্যমে যার চরিত্র রক্ষা করতে হয়, তার চরিত্র কেমন তা তো সহজেই অনুমেয়।

তথ্যসূত্র

  1. Letter to the Reverend Ensor Walters (1933), as quoted in “Bernard Shaw : Collected Letters, 1926-1950” (1988) by Dan H. Laurence, p. 305 []


সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"