বর্তমান সময়ে শান্তিপ্রিয় মুসলিমদের অন্যতম একটি বড় দাবী হলো, ইসলাম একটি সহাবস্থান ও সহনশীলতার ধর্ম। কোরআনের সূরা কাফিরুনের একটি বিশেষ আয়াত, “তোমাদের ধর্ম তোমাদের, আমাদের ধর্ম আমাদের,” বেশিরভাগ সময় এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যে, ইসলাম যেন সকল ধর্মের সাথে সম্প্রীতির বন্ধন রচনা করতে চায়! তবে এই দাবিটি ইসলামের প্রকৃত ব্যাখ্যা বা তাফসীর যা সালাফদের যুগ থেকে প্রচলিত তার সাথে এবং ইসলামের ইতিহাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ইসলামের মূল শিক্ষা ও ধর্মীয় নির্দেশনা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সহাবস্থানের পরিবর্তে ইসলাম অন্যান্য ধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বা জিহাদের আহ্বান জানায়, অন্য ধর্মকে উচ্ছেদ এবং সকল প্রকার শিরকের অবসানের কথা বলে, ইসলামকে বাদে বাকি মতাদর্শকে বাতিল ও উৎখাত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। বিশেষ করে ঐতিহাসিকভাবে এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইসলামিস্ট গোষ্ঠীগুলোর কার্যক্রম ও মতাদর্শ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, সহাবস্থান তাদের আসল উদ্দেশ্য নয়। বরং, ইসলামের প্রচার ও প্রসারের জন্য সহিংসতার পথকেই তারা গ্রহণ করে থাকে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদের অন্যতম প্রধান নীতিমালা হলো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্মের স্বাধীনতা, এবং অন্য ধর্মের অনুসারীদের সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। তবে ইসলামের তাফসীরগুলোতে দেখা যায়, এটি মুসলিমদেরকে অন্য ধর্মের প্রতি সহিষ্ণু হওয়ার আহ্বান জানায় না। বরং কোরআনের বিভিন্ন আয়াত ও হাদিসে যুদ্ধ, জিহাদ, এবং ইসলাম প্রচারের জন্য অন্য ধর্মাবলম্বীদের শর্তহীন আত্মসমর্পণ, বেঁচে থাকার জন্য জিজিয়া প্রদান বা দমন করার কথা বলা হয়েছে। ইসলামের ইতিহাসে এবং বহু ইসলামী দেশের বর্তমান আইনি কাঠামোয় দেখা যায়, ধর্মান্তরিত না হলে অমুসলিমদের সামাজিক ও আইনিভাবে বৈষম্যের শিকার হতে হয়। ইসলামে অমুসলিমদের ‘ধিম্মি’ বা জিম্মি বা কর প্রদানের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট শর্তের অধীনে বাস করার অনুমতি দেওয়া হয়, যা মূলত এক ধরনের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকত্ব প্রদান। এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন, যেখানে বলা হয়েছে যে, কোনো ব্যক্তিকে তার ধর্ম, মতাদর্শ, বা বিশ্বাসের কারণে বৈষম্যের শিকার করা যাবে না।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, ইসলামিস্টদের পক্ষ থেকে কথিত সহাবস্থানের উদাহরণ হিসেবে সূরা কাফিরুনের যে আয়াতটি তুলে ধরা হয়, তার প্রকৃত তাফসীর এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ধ্রুপদী ইসলামিক আলেমদের মতে, এই আয়াতটি মক্কার কুরাইশদের একটি অস্থায়ী চুক্তির প্রেক্ষিতে নাজিল হয়েছিল, যেখানে মুহাম্মদ তাদের সাথে ধর্ম নিয়ে আপোষ করতে অস্বীকার করেন। তাফসীর ইবনে কাসিরের মতো জনপ্রিয় তাফসীরগুলোতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, এই আয়াতের প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো অমুসলিমদের সাথে কোনো আপোষ করা নয়, বরং তাদের ধর্মকে প্রত্যাখ্যান করে ইসলামের সত্যতা প্রতিষ্ঠা করা। এটি ছিল শক্তিহীন মুসলমানদের একটি সাময়িক পদক্ষেপ, যার ফলে তারা তাদের অন্য ধর্মের উপাস্যদের গালি দেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহকে পাল্টা গালি দেয়া থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছিল। এটি কোনো ধরনের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বা ধর্মীয় সহিষ্ণুতার উদাহরণ নয়; বরং এটি ভবিষ্যতে শক্তিসামর্থ্য হলে ইসলামের একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য নেয়া একটি পদক্ষেপ।
মানবাধিকারের আলোকে বিচার করলে, ইসলামের এই নির্দেশনাটির কারণগুলো বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, এর পেছনের কারণ আসলে স্পষ্টতই ধর্মীয় সহনশীলতার পরিপন্থী। একজন অমুসলিমের ধর্ম পালনের অধিকারকে সম্মান না করা এবং তার মতাদর্শকে বাতিল ঘোষণা করা মানবাধিকারের মৌলিক নীতির পরিপন্থী। যেহেতু আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদে স্পষ্টভাবে বলা আছে, প্রত্যেক মানুষেরই মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্ম পালনের স্বাধীনতা, এবং তার নিজস্ব বিশ্বাস অনুযায়ী জীবনযাপনের অধিকার রয়েছে, ইসলামের এই নীতিগুলো সেই অধিকারগুলোকে সীমাবদ্ধ বা লঙ্ঘন করে। তাই, ইসলামের মৌলিক শিক্ষা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদের নীতিমালার মধ্যে একটি সুস্পষ্ট বৈপরীত্য রয়েছে। ইসলামের তাফসীরগুলো গভীরভাবে অধ্যয়ন করলে দেখা যায়, সহাবস্থান ও সহিষ্ণুতা ইসলামের অন্তর্নিহিত শিক্ষা নয়, বরং ইসলামকে বাদে অন্য সব মতাদর্শকে দমন ও উৎখাত করাই এর মূল লক্ষ্য। আসুন সেই আয়াতটি এবং তার তাফসীর পড়ে নিই [1] –
তোমাদের পথ ও পন্থা তোমাদের জন্য (সে পথে চলার পরিণতি তোমাদেরকেই ভোগ করতে হবে) আর আমার জন্য আমার পথ (যে সত্য পথে চলার জন্য আল্লাহ আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, এ পথ ছেড়ে আমি অন্য কোন পথ গ্রহণ করতে মোটেই প্রস্তুত নই)।
— Taisirul Quran
তোমাদের জন্য তোমাদের কর্মফল এবং আমার জন্য আমার কর্মফল।
— Sheikh Mujibur Rahman
‘তোমাদের জন্য তোমাদের দীন আর আমার জন্য আমার দীন।’
— Rawai Al-bayan
তোমাদের দীন তোমাদের, আর আমার দ্বীন আমার [১]।’
— Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
এবারে আসুন তাফসীরে জালালাইন থেকে এর তাফসীর পড়ি, [2]
বলার কারণ : অর্থাৎ তোমাদের দীন তোমাদের, আমার দীন আমার । এ আয়াতটির অর্থ অবলোকন করে অনেক লোক বিভ্রান্ত হয়। তারা বলে- তা দ্বারা ইসলাম অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মের স্বীকৃতি দিয়েছে। যদি তাদের ধর্ম সত্যই না হবে তবে কুরআনে কেন এ কথা বলা হলো যে, তোমাদের ধর্ম তোমাদের, আমার ধর্ম আমার। এটা দ্বারা দুই ধর্মকেই পাশাপাশি অবস্থান করার এবং একে অপরের উপর হস্তক্ষেপ না করার স্বীকৃতি পাওয়া যায়। কিন্তু দীন শব্দ দ্বারা এখানে কি বুঝানো হয়েছে; তা চিন্তা না করার ফলেই তাদের মনে এ উদ্ভট চিন্তা গজিয়েছে। এখানে দীন শব্দটি কর্মফল অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন, সূরা আল-ফাতিহায় আল্লাহকে অর্থাৎ কর্মফল দিনের কর্তা বলা হয়েছে। সুতরাং এই অর্থ গ্রহণ করলে আয়াতের মর্ম হবে- তোমাদের কর্মফল তোমরা ভোগ করবে, আমাদের কর্মফল আমরা ভোগ করবো। যেহেতু এ আয়াত ইসলামের প্রথম যুগে মক্কায় অবতীর্ণ হয়, তখন জিহাদের বিধান অবতীর্ণ হয়নি । তাই কতিপয় তাফসীরকার বলেন- এ আয়াতের বিধান দ্বারা কাফেরদেরকে ইসলামের প্রথম যুগে ধর্ম পালনের যেটুকু অবকাশের কথা ভাবা যায়, তা জিহাদের বিধান দ্বারা রহিত করা হয়েছে। মক্কা বিজয়সহ অন্যান্য লড়াইগুলোই এর জ্বলন্ত প্রমাণ। বস্তুত দীনকে ধর্ম অর্থ গ্রহণ করলে আমরা এ কথাও বলতে পারি, এটা ঠিক অনুরূপ কথার ন্যায়, যেমন আমরা ধিক্কার ও ভৎসনাভাবে বলে থাকি তোমার পথে ভূমি, আমার পথে আমি। এ কথা দ্বারা আমরা যেমন তার পথের স্বীকৃতি দেই না এবং সহাবস্থানেরও অবকাশ বুঝাই না; বরং তা দ্বারা পথের ভয়াবহ পরিণতির দিকেই ইঙ্গিত করা হয়। আয়াতেও অনুরূপভাবে ‘তোমার দীন তোমার আমার দীন আমার’ বলে তাদের জীবনাদর্শ ও শিরকি কর্মপন্থার ভয়াবহ পরিণতির দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। তাদের শিরকি জীবনাদর্শ ও মতবাদের স্বীকৃতি বা পাশাপাশি অবস্থানের কথা বলা হয়নি।
এবারে আসুন তাফসীরে মাযহারীতে কী বলা আছে দেখে নেয়া যাক [3] –
শেষোক্ত আয়াতে (৬) বলা হয়েছে— ‘তোমাদের দ্বীন তোমাদের, আমার দ্বীন আমার’। এই আয়াতের দু’টি বাক্যই বিজ্ঞপ্তিমূলক। কিন্তু এমতো ভাবনার কোনো অবকাশ নেই যে, বক্তব্যটির (তোমাদের দ্বীন তোমাদের) দ্বারা এখানে কাফেরদের কুফরীর ব্যাপারে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, অথবা মুসলমানদেরকে জেহাদ করতে নিষেধ করা হয়েছে। বরং বলা যেতে পারে, এই আয়াতে প্রকাশ করা হয়েছে পূর্ববর্তী বক্তব্যের গুরুত্ব ও পরিণতিকে। সুতরাং এই আয়াত দ্বারা জেহাদের আয়াতকে রহিত করা হয়েছে, এরকম ভাবা যেতেই পারে না। কুফরী যেহেতু কল্যাণকর নয়, সেহেতু এরকম চিন্তাও অসমীচীন যে, সমঝোতার মাধ্যমে এখানে ইমানদার ও কাফেরদেরকে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে স্ব স্ব অবস্থানে থাকতে। তাই তো আমরা দেখতে পাই, এর পরেও রসুল স. বার বার কাফের কুরায়েশদেরকে ইমান ও ইসলামের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তারা তাঁকে এবং তাঁর প্রিয় সহচরবর্গকে দিয়েছে নানা প্রকারের যাতনা। সুতরাং আলোচ্য আয়াতের মর্মার্থ এরকম হওয়াই সমীচীন যে— তোমরা প্রতিফল লাভ করবে তোমাদের কৃতকর্মের এবং আমি লাভ করবো আমার কৃতকর্মের প্রতিফল ।
এবারে আসুন দুইটি হাদিস পড়ে নেয়া যাক। নবী বলেছেন যে, মানুষ যে পর্যন্ত না “আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত আর কোন প্ৰভু নেই” এই কথার স্বীকৃতি দিবে সেই পর্যন্ত আমি(নবী) তাদের বিরুদ্ধে কিতাল বা সশস্ত্র যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি [4] [5] –
সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
৩৮/ ঈমান
পরিচ্ছেদঃ ১. যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ না বলবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কিতাল করতে আমি আদেশপ্রাপ্ত হয়েছি
২৬০৭। আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর মৃত্যুর পর আবূ বকর (রাযিঃ) যখন খলীফা নির্বাচিত হন, তখন আরবের কিছু সংখ্যক লোক কাফির হয়ে যায়। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) আবূ বাকর (রাযিঃ)-কে বললেন, আপনি এদের বিরুদ্ধে কিভাবে অস্ত্ৰধারণ করবেন, অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষ যে পর্যন্ত না “আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত আর কোন প্ৰভু নেই” এই কথার স্বীকৃতি দিবে সেই পর্যন্ত আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি। আর যে ব্যক্তি বললো, “আল্লাহ ব্যতীত আর কোন প্ৰভু নেই” সে আমার থেকে তার মাল ও রক্ত (জীবন) নিরাপদ করে নিল। তবে ইসলামের অধিকার সম্পর্কে ভিন্ন কথা। আর তাদের প্রকৃত হিসাব-নিকাশ রয়েছে আল্লাহ তা’আলার দায়িত্বে।
আবূ বকর (রাযিঃ) বললেনঃ আল্লাহর শপথ নামায ও যাকাতের মধ্যে যে ব্যক্তি পার্থক্য করে আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবোই। কেননা যাকাত সম্পদের হাক্ক। কেউ উটের একটি রশি দিতেও যদি অস্বীকার করে, যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে দিত, আল্লাহর কসম! আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবোই। তারপর উমার ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ! আমি দেখতে পেলাম আল্লাহ যেন যুদ্ধের জন্য আবূ বাকরের অন্তর উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। অতঃপর আমি বুঝতে পারলাম যে, তার সিদ্ধান্তই যথার্থ।
সহীহঃ সহীহাহ (৪০৭), সহীহ আবূ দাউদ (১৩৯১-১৩৯৩), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ। শু’আইব ইবনু আবী হামযা (রহঃ) যুহরী হতে, তিনি উবাইদুল্লাহ ইবনু আবদিল্লাহ হতে, তিনি আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ)-এর সূত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন। এই হাদীস মামার-যুহরী হতে, তিনি আনাস (রাযিঃ) হতে, তিনি আবূ বাকর (রাযিঃ) হতে এই সূত্রে ইমরান আল-কাত্তান বর্ণনা করেছেন। এ বর্ণনাটি ভুল। ‘ইমরানের ব্যাপারে মা’মার হতে বর্ণিত বর্ণনাতে বিরোধিতা করা হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
৩৮/ ঈমান
পরিচ্ছেদঃ ২. আমি লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ বলবে এবং নামায আদায় করবে
২৬০৮। আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত আর কোন প্ৰভু নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহ তা’আলার বান্দা ও তার রাসূল এবং আমাদের কিবলামুখী হয়ে নামায আদায় করবে, আমাদের যবেহকৃত পশুর গোশত খাবে এবং আমাদের মতো নামায আদায় করবে। তারা এগুলো করলে তাদের জান ও মালে হস্তক্ষেপ করা আমাদের জন্য হারাম হয়ে যাবে। কিন্তু ইসলামের অধিকারের বিষয়টি ভিন্ন। মুসলিমদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা তারাও পাবে এবং মুসলিমদের উপর অর্পিত দায়-দায়িত্ব তাদের উপরও বর্তাবে।
সহীহঃ সহীহাহ (৩০৩) ও (১/১৫২), সহীহ আবূ দাউদ (২৩৭৪), বুখারী অনুরূপ।
মুআয ইবনু জাবাল ও আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ এবং উপরোক্ত সূত্রে গারীব। ইয়াহইয়া (রাহঃ) হুমাইদ হতে, তিনি আনাস (রাযিঃ)-এর সূত্রে একই রকম হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
আসুন এই বিষয়ে প্রাসঙ্গিক বিধায় isolamqa.info ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি ফতোয়া পড়ে নিই, [6]
মূর্তি ভাঙ্গার আবশ্যকতা
প্রশ্ন
ইসলামে প্রতিকৃতি ভাঙ্গা কি আবশ্যক; এমনকি সেটা যদি মানব ঐতিহ্য ও সভ্যতার ঐতিহ্য হয় তবুও? সাহাবায়ে কেরাম যখন বিভিন্ন দেশ জয় করলেন তখন তারা বিজিত দেশগুলোতে প্রতিকৃতিগুলো দেখা সত্ত্বেও সেগুলো ভাঙ্গেননি কেন?
উত্তর
আলহামদু লিল্লাহ।.
শরিয়তের দলিলগুলো মূর্তি ভাঙ্গা আবশ্যক হওয়ার সপক্ষে প্রমাণ বহন করে। এমন দলিলগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১। আবুল হাইয়্যাজ আল-আসাদি (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, আলী বিন আবু তালেব (রাঃ) আমাকে বললেন: “আমি কি তোমাকে সে কাজে পাঠাব না; যে কাজে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে পাঠিয়েছিলেন? তুমি যত প্রতিকৃতি পাবে সেগুলোকে নষ্ট করবে এবং যত উঁচু কবর পাবে সেগুলোকে সমান করে দিবে।”(সহিহ মুসলিম (৯৬৯))
২। আমর বিন আবাসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলেন: “আপনি কী নিয়ে প্রেরিত হয়েছেন? তিনি বললেন: ‘আমি আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা, মূতি ভাঙ্গা এবং আল্লাহ্র এককত্ব প্রতিষ্ঠা ও তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক না করা নিয়ে’ প্রেরিত হয়েছি।”(সহিহ মুসলিম (৮৩২))
মূর্তি ভাঙ্গার আবশ্যকতা আরও তাগিদপূর্ণ হয় যখন আল্লাহ্র বদলে সে সব মূর্তির পূজা করা হয়।
৩। জারীর বিন আব্দুল্লাহ্ আল-বাজালি (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেন: হে জারীর! তুমি আমাকে যুল খালাসা (এটি খাছআম গোত্রের একটি ঘর যাকে ইয়ামেনী কাবা ডাকা হত) থেকে প্রশান্তি দিতে পার না? তিনি বলেন: তখন আমি দেড়শ অশ্বারোহী নিয়ে অভিযানের প্রস্তুতি নিলাম। আমি আমার ঘোড়ার উপর স্থির থাকতে পারতাম না। এ বিষয়টি আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে উল্লেখ করলাম। তখন তিনি তাঁর হাত দিয়ে আমার বুকের উপর আঘাত করলেন এবং বললেন: اللهم ثبته واجعله هاديا مهديا (হে আল্লাহ্! তাকে স্থির রাখুন এবং পথপ্রদর্শক ও সুপথপ্রাপ্ত বানিয়ে দিন।) বর্ণনাকারী বলেন: জারীর (রাঃ) রওয়ানা হয়ে গেলেন এবং গিয়ে সে কাবাকে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সুসংবাদ দেয়ার জন্য আমাদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তিকে পাঠালেন; যার কুনিয়ত ছিল আবু আরতা। সেই ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললেন: আমরা সেই মন্দিরটিকে এমন অবস্থায় রেখে আপনার কাছে এসেছি যেন সেটি রোগের কারণে আলকাতরা দেয়া (কালো) উট। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আহমাস গোত্রের ঘোড়া ও বীরপুরুষদের জন্য পাঁচবার বরকতের দোয়া করলেন।”(সহিহ বুখারী (৩০২০) ও সহিহ মুসলিম (২৪৭৬))
ইবনে হাজার (রহঃ) বলেন:
এ হাদিসে উদ্ধৃত হয়েছে: যে জিনিস দ্বারা মানুষ ফিতনাগ্রস্ত হয় সেটি দূর করা শরয়ি বিধান; হোক সেটি কোন ভবন বা অন্য কিছু; যেমন- মানুষ, প্রাণী বা ঝড় পদার্থ।(সমাপ্ত)
৪। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) এর নেতৃত্বে উজ্জা নামক মূর্তিকে ধ্বংস করার জন্য অভিযান পাঠিয়েছিলেন।
৫। তিনি সাদ বিন যায়েদ আল-আশহালি (রাঃ) এর নেতৃত্বে মানাত নামক মূর্তিকে ধ্বংস করার জন্য অভিযান পাঠিয়েছেন।
৬। তিনি আমর বিন আ’স (রাঃ) এর নেতৃত্বে সুআ’ নামক মূর্তিটি ধ্বংসের জন্য অভিযান পাঠিয়েছেন। এ সবগুলো অভিযান হয়েছে মক্কা বিজয়ের পর।
(‘আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ (৪/৭১২, ৭৭৬, ৫/৮৩) এবং ড. আলী সাল্লাবীর রচিত ‘আস-সিরাতুন নাবাওয়িয়্যাহ’ (২/১১৮৬))
ইমাম নববী ‘শারহে মুসলিম’ এ تصوير (প্রতিকৃতি তৈরী, ছবি অংকন/নির্মাণ) সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন: “আলেমগণ ইজমা করেছেন যে, যেটার ছায়া আছে এমন ছবি তৈরী করা নিষিদ্ধ এবং এটি বিকৃত করা আবশ্যক।”(সমাপ্ত)
যে ছবিগুলোর ছায়া হয় সেগুলো তো এই মূর্তিগুলোর মত দেহের অবকাঠামোবিশিষ্ট ছবিগুলো।
আর সাহাবায়ে কেরাম বিজিত দেশসমূহে প্রতিমাগুলো না ভাঙ্গার যে কথা বলা হয় সেটি নিছক ভিত্তিহীন ধারণা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীবর্গ মূর্তি ও প্রতিমা রেখে দেয়ার কথা নয়। বিশেষতঃ যেহেতু ঐ যামানায় এগুলোর পূজা করা হত।
যদি বলা হয়: তাহলে এই ফেরাউনদের প্রতিকৃতি, ফিনিকীনদের প্রতিকৃতি কিংবা অন্যান্য প্রতিকৃতিগুলো বিজয়ী সাহাবীগণ কিভাবে রেখে দিলেন?
জবাব হল: এই মূর্তিগুলোর ব্যাপারে তিনটি সম্ভাবনা রয়েছে:
এক. এ মূর্তিগুলো এত দূরবর্তী স্থানে ছিল যে, সাহাবায়ে কেরাম সে সব স্থানে পৌঁছেননি। উদাহরণস্বরূপ সাহাবীদের মিশর জয় করার মানে এটা নয় যে, তারা মিশরের সকল স্থানে পৌঁছেছেন।
দুই. কিংবা সেই মূর্তিগুলো দৃশ্যমান ছিল না। বরং সেগুলো ফেরাউনদের ও অন্যদের বাসাবাড়ীর অভ্যন্তরে ছিল। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ ছিল জালিম ও শাস্তিপ্রাপ্তদের বাসস্থান অতিক্রমকালে দ্রুত গমন করা। বরং ঐ সমস্ত স্থানে প্রবেশের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিমে এসেছে যে, “তোমরা শাস্তিপ্রাপ্তদের এলাকায় প্রবেশ করলে কেবল ক্রন্দনরত অবস্থায় প্রবেশ করবে। যেন তাদেরকে যা পাকড়াও করেছে তোমাদেরকে সেটা পাকড়াও না করে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিজরবাসীদের এলাকা অতিক্রম করাকালে এ কথা বলেছেন। যেটা ছিল হুদ আলাইহিস সালামের কওম ছামুদ সম্প্রদায়ের বাসস্থান।
সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিমের অপর এক রেওয়ায়েতে আছে: “যদি তোমাদের কান্না না আসে তাহলে এদের গৃহে প্রবেশ করো না; যেন তাদেরকে যা পাকড়াও করেছে তোমাদেরকে সেটা পাকড়াও না করে।”
সাহাবায়ে কেরামের ব্যাপারে যে ধারণা রাখা যায় সেটা হল তাঁরা যদি এদের মন্দির বা বাড়ীঘর দেখেও থাকেন তারা সেগুলোতে প্রবেশ করেননি এবং এগুলোর অভ্যন্তরে যা রয়েছে সেসব তারা দেখেননি।
এর মাধ্যমে সাহাবায়ে কেরাম কর্তৃক পিরামিড এবং এর মধ্যে যা কিছু ছিল সেগুলো ধ্বংস না করার যে আপত্তি আসতে পারে সেটার জবাব হয়ে যায়। তবে এর সাথে এ সম্ভাবনা রয়েছে যে, সে যামানায় পিরামিডের প্রবেশপথগুলো বালির স্তুপ দিয়ে ঢাকা ছিল।
তিন. বর্তমানে দৃশ্যমান মূর্তিগুলো তখন বালিতে ঢাকা ছিল, অদৃশ্য ছিল কিংবা এগুলো নব আবিষ্কৃত কিংবা এগুলোকে অনেক দূরবর্তী স্থান থেকে নিয়ে আসা হয়েছে; যে স্থানগুলোতে সাহাবায়ে কেরাম পৌঁছেননি।
ইতিহাসবিদ যিরিকলিকে পিরামিড ও আবুল হুল (একটি মূর্তির নাম) ইত্যাদি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয় যে, যে সকল সাহাবী মিশর প্রবেশ করেছেন তারা কি এগুলোকে দেখেছেন? জবাবে তিনি বলেন: এ মূর্তিগুলোর অধিকাংশই ছিল বালিতে ঢাকা। বিশেষতঃ আবুল হুল।(শিবহু জাযিরাতিল আরব (৪/১১৮৮))
যদি ধরে নেয়া হয় যে, কোন একটি মূর্তি দৃশ্যমান ছিল; বালিতে ঢাকা ছিল না; সেক্ষেত্রেও সাহাবীরা ঐ মূর্তিটিকে দেখেছেন এবং তারা ঐ মূর্তিটি ভাঙ্গতে সক্ষম ছিলেন এটা সাব্যস্ত হওয়া আবশ্যক।
বাস্তবতা হচ্ছে কোন কোন মূর্তি ধ্বংস করতে সাহাবায়ে কেরাম অক্ষম ছিলেন। কেননা এ ধরণের কোন কোন মূর্তি ভাঙ্গতে মেশিনারি, যন্ত্রপাতি, বিস্ফোরক ও লোকবল থাকা সত্ত্বেও বিশদিন সময় লেগেছে; যেগুলো সাহাবীদের যামানায় ছিল না।
সাহাবীরা যে এগুলো ভাঙ্গতে অক্ষম ছিলেন এর প্রমাণ হল যা ইবনে খালদুন তাঁর ‘মুকাদ্দিমা’-তে (পৃষ্ঠা-৩৮৩) উল্লেখ করেছেন যে, একবার খলিফা আর-রশিদ পারস্যের বাদশার প্রাসাদ ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি সেটি ভাঙ্গার কাজ শুরু করে দেন এবং এর লক্ষ্যে লোকবল জমায়েত করেন, কুঠার সংগ্রহ করেন, প্রাসাদটিকে আগুনে উত্তপ্ত করেন, এর উপরে শির্কা ঢালেন। কিন্তু অবশেষে তিনি ব্যর্থ হন। এবং খলিফা মামুন মিশরের পিরামিডগুলো ভাঙ্গার লক্ষ্যে হাতি জড়ো করেন। কিন্তু তিনিও সক্ষম হননি।
আর মূর্তিগুলো না ভাঙ্গার পক্ষে এ কথা বলে কারণ দর্শানো যে, এ মূর্তিগুলো মানব ঐতিহ্য- এমন কথার প্রতি দৃষ্টিপাতের সুযোগ নাই। কেননা লাত, উজ্জা, হুবাল, মানাত ও অন্যান্য মূর্তিগুলোর যারা পূজা করত কুরাইশরা কিংবা আরব উপদ্বীপের অন্যান্য লোকেরা তাদের নিকট এগুলো তো মানব ঐতিহ্যই ছিল।
এগুলো ঐতিহ্য ঠিকই; কিন্তু হারাম ঐতিহ্য যা ধ্বংস করা ওয়াজিব। যখন আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশ এসে যায় তখন একজন মুমিন দেরী না করে সে নির্দেশ পালন করে। এ সমস্ত দুর্বল যুক্তি দিয়ে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের আদেশকে প্রত্যাখ্যান করে না। আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “রাসূল তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবেন, এই উদ্দেশ্য যখন তাদেরকে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের দিকে ডাকা হয় তখন মুমিনদের কথা হয় এটাই: তারা বলে আমরা শুনেছি ও মেনে নিয়েছি। আর তারাই সফলকাম।”(সূরা নূর, আয়াত: ৫১)
আমরা আল্লাহ্র কাছে প্রার্থনা করছি তিনি যেন সকল মুসলিমকে তিনি যা পছন্দ করেন ও যেটার প্রতি তিনি সন্তুষ্ট তা পালন করার তাওফিক দেন।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।
বর্তমান সময়ে সবচাইতে প্রখ্যাত ইসলামের আলেমদের এই বিষয়ে মতামত হচ্ছে, মুসলিমরা যখন ক্ষমতাপ্রাপ্ত হবে, তখন অমুসলিমদের সকল মূর্তি এবং মন্দির ধ্বংস করে ফেলতে হবে। কোরআন হাদিস সব গবেষণা করে ইসলামের প্রখ্যাত আলেমগণ এই সিদ্ধান্তেই পৌঁছেছেন। এই বিষয়ে সরাসরি ফতোয়াও দেয়া আছে। ফতোয়াটি এখানে দেয়া হলো, যেটি প্রখ্যাত ফতোয়ার ওয়েবসাইট Islamweb থেকে নেয়া – [7]
Demolishing idols in a non-Muslim country
Fatwa No: 190575
Fatwa Date:18-11-2012 – Muharram 5, 1434Email Print
Rating:
Question
Assalamu Alaikum, In the Quran, Allah says that Abraham destroyed the idols to teach the people that idols don’t have any power. In another place, Quran asks to follow the religion of Abraham. Is it required for a muslim living in a hindu country to destroy the idols. Will this not cause religious hatred and communal violence? Is it allowed to construct hindu temple in an islamic country?
Answer
All perfect praise be to Allaah, The Lord of the Worlds. I testify that there is none worthy of worship except Allaah, and that Muhammad sallallaahu `alayhi wa sallam ( may Allaah exalt his mention ) is His slave and Messenger.
There is Islamic evidence that it is an obligation to demolish idols and statues, among which is the Hadeeth narrated by ‘Amr ibn ‘Abasah may Allaah be pleased with him that he asked the Prophet sallallaahu `alayhi wa sallam ( may Allaah exalt his mention ): ”What did Allaah send you with?” He sallallaahu `alayhi wa sallam ( may Allaah exalt his mention ) said: “He sent me to keep ties with kinship and demolish idols, and that Allaah Alone should be worshipped without associating anything with Him.” (Muslim)
Also, Abu Al-Hayyaaj Al-Asadi may Allaah be pleased with him said: “ ‘Ali ibn Abi Taalib may Allaah be pleased with him said to me: “Shall I send you for a mission once the Prophet sallallaahu `alayhi wa sallam ( may Allaah exalt his mention ) had sent me for: Do not leave an idol unless it is destroyed, nor you leave an up leveled grave unless you level it down to ground.” (Muslim)
However, this is restricted to the ability of the Muslims in doing so and them being safe from causing a greater harm. Our best example is that of the Prophet sallallaahu `alayhi wa sallam ( may Allaah exalt his mention ) as he used to go to the House of Allaah and perform Tawaaf (circumambulation around the Ka‘bah) while there were 360 idols around it but he did not cause harm to any of them until after the conquest of Makkah and after the Muslims became strong and the polytheists were no longer ruling over Makkah; it was then that the Prophet sallallaahu `alayhi wa sallam ( may Allaah exalt his mention ) destroyed the idols. He sallallaahu `alayhi wa sallam ( may Allaah exalt his mention ) prodded the idols with a bow while saying: “The truth has come and falsehood has vanished.” The story is narrated in Saheeh Al-Bukhari and Saheeh Muslim.
The Prophet sallallaahu `alayhi wa sallam ( may Allaah exalt his mention ) used to take into consideration the prevailing circumstances and leave that which could lead to a greater evil despite the fact that it was permissible in principle. The evidence about this is the Hadeeth of ‘Aa’ishah may Allaah be pleased with her who said: “I asked the Prophet sallallaahu `alayhi wa sallam ( may Allaah exalt his mention ) about Al-Hijr (the area adjacent to the Ka’bah enclosed by a low semi-circular wall), is it from the House (of Allaah)? He sallallaahu `alayhi wa sallam ( may Allaah exalt his mention ) said: ’Yes.’ I said, ‘Why did they not include it in the House?’ He sallallaahu `alayhi wa sallam ( may Allaah exalt his mention ) said: ’Your people did not have enough resources to spend on it.’ I said: ’Why is the level of its door raised high?’ He sallallaahu `alayhi wa sallam ( may Allaah exalt his mention ) said: ’Your people did so, so that they would let whomever they want to enter it and prevent whomever they want from entering it. Your people are close to the Pre-Islamic Period of Ignorance; so I fear that they would reject if I included the Hijr in the House and make its door at a level with the ground.’ ” (Al-Bukhari and Muslim)
Besides, what the Prophet Ibraaheem (Abraham) may Allaah exalt his mention did does not contradict what we have stated, as he did not do that matter until he was capable of doing it and being secure from being harmed. Ibn ‘Aashoor may Allaah have mercy upon him said while interpreting the verse (which means): {And (I swear) by Allaah, I will surely plan against your idols after you have turned and gone away.} (Quran 21:57): “He conditioned that his plan (agaist their idols) be after they depart in order to indicate that he will inflict harm on the idols as soon as he will be able to do so. This proves his strong determination to change evil, because taking the initiative to change evil although it is by hand (physically), is a rank of strong determination, but he would not be able to do so in the presence of idolaters. So, if he were to try to demolish it in their presence, then his act will be in vain. What is meant from changing evil: is to remove it as much as possible, so removing it by hand can only be done with the existence of the ability to do so.”
Finally, it should be noted that it is not permissible for the Muslims to allow non-Muslims to establish one of their temples in a Muslim country, let alone the Muslim country establishing it itself. The conditions that ‘Umar may Allaah be pleased with him put on the non-Muslims living safely in a Muslim country under Muslim rule included: “….that we will not erect in our city any church….”
Allaah Knows best.
উপরের ফতোয়াটির ভাবানুবাদ দেয়া হলো ( অনুবাদক- কোয়েস আলী ) –
প্রশ্নঃ
আসসালামুয়ালাইকুম। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন যে, ইব্রাহিম মুর্তি ভেঙে মানুষকে এটাই বোঝাতে চেয়েছিলেন যে মুর্তির কোন শক্তি নেই। কোরআনের আরেক জায়গায় ইব্রাহিম প্রবর্তিত ধর্মকে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। এখন, হিন্দু দেশে বসবাসকারী মুসলিমদের কি মুর্তি ভাঙা বাধ্যতামূলক? এতে কি ধর্মীয় ঘৃণা ছড়ানো এবং সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস হয়ে যাবে না? ইসলামিক দেশে হিন্দু মন্দির স্থাপন করা কি জায়েজ?
উত্তরঃ
ইসলামে মুর্তি ভাঙার নির্দেশনা বিষয়ে যে তথ্য আমরা পাই, তার মধ্যে একটি হাদীস- আমির ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত,যে তিনি নবীকে জিজ্ঞাসা করলেন,”আল্লাহ আপনাকে কি নির্দেশ প্রেরণ করেছেন?” নবী বললেন,”তিনি আমাকে সংহতি বজায় রাখতে পাঠালেন ও মুর্তি ভাঙতে বলেছেন, যাতে আল্লাহর সমকক্ষ কোনকিছুই না থাকতে পারে।“(মুসলিম)
আবার আবু আলা হায়াজ আল আসাদী বলেন, “আলী ইবনে আবু তালিব বললেন, নবী আমাকে যে কাজে পাঠিয়েছিলেন,তোমাকেও সে কাজে পাঠাতে পারি কি-কোন মুর্তি আস্ত রাখবে না, যতক্ষন পর্যন্ত সেগুলো ধংসস্তুপ হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত না সেই উচু ধ্বংসস্তুপ সমতল ভূমিতে পরিণত হয়।(মুসলিম)
যাইহোক, এখন মুসলিমদের জন্য এটা সীমিত করা হয়েছে, যাতে তারা বড় ধরণের বিপদ থেকে রক্ষা পেতে পারে। সেরা উদাহরণ হচ্ছে, নবী সাঃ আল্লাহর ঘরে নিয়মিত যেতেন ও তাওয়াফ করতেন। সেখানে চারপাশের ৩৬০ ডিগ্রি জুড়ে নানা মুর্তি ছিল, কিন্তু তিনি মক্কা বিজয়ের আগে সেগুলোর কোন ক্ষতি করেন নি এবং এরপর যখন মুসলিমরা শক্তিশালী হল এবং বহু ঈশ্বরবাদীরা দুর্বল হল, তখন নবী সাঃ এক ঝটকায় মুর্তিগুলো ভেঙে দিলেন ও বললেন,”সত্য উন্মোচিত হয়েছে, মিথ্যা দূর হয়েছে।“ ইহা সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত আছে।
নবী চারপাশকে পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নিতেন এবং আদর্শগত দিকের চেয়ে কোন কাজে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনাকে বেশী গুরুত্ব দিতেন। আয়েশা বর্ণিত হাদীস হতে আমরা পাই- ‘আমি নবীকে জিজ্ঞেস করলাম, আল হিজর (কাবা সংলগ্ন অর্ধচন্দ্রাকৃতির দেয়াল ঘেরা স্থান) কি আল্লাহর ঘরের সাথে সংযুক্ত?’ নবী বললেন,’হ্যা’। আমি বললাম, ‘তবে আল্লাহ একে ঘরের সাথে কেন সংযুক্ত করেন নি?’ নবী বললেন,’তোমার লোকেদের যথেষ্ট অর্থ ছিল না”। আমি বললাম, দরজার পাড় এত উচু কেন?’ নবী বললেন,’তোমার লোকেরা এটা করেছে, যাতে তারা কাউকে কাউকে এখানে ঢুকতে দিতে পারে, কাউকে কাউকে না দিতে পারে। তোমার লোকেরা ইসলামপূর্ব সময়ের ন্যায় অজ্ঞ/মূর্খ ছিল। তাই আমি চিন্তিত ছিলাম যে আমি যদি হিজরকে কাবার সাথে যুক্ত করি ও দরজা ভেঙে মাটির সমান করে দিই, তবে তারা আমাকে প্রত্যাখ্যান করতে পারে।
এখন ইব্রাহিম নবী যা করেছেন, তার সাথে আমাদের বক্তব্য সাংঘর্ষিক না। কেননা, তিনি সক্ষমতা অর্জনের পরেই কাজটা করেছিলেন এবং ক্ষতি থেকে দূরে ছিলেন। ইবনে আসুর বর্ণণা করেন-“আল্লাহর কসম, যখন তোমরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে চলে যাবে, তখন আমি তোমাদের মূর্তিগুলোর ব্যাপারে একটা ব্যবস্থা অবলম্বন করব।”
তিনি শর্ত দিলেন যে, মুর্তি ধ্বংসের কাজটা তখনই করতে হবে, যখন সেটার সামর্থ্য আপনার হবে।
এটা দিয়ে প্রমানিত হয় যে, খারাপকে বদলাবার ব্যাপারে নবীর দৃঢ় মনোভাব ছিল কারণ নিজ হাতে মুর্তি ভাঙার উদয়োগ তার দৃঢ় ইচ্ছার বিষয়টি নিশ্চিত করে। কিন্তু মুর্তি পূজারীদের উপস্থিতিতে তিনি সেটা করতে পারতেন না। কারণ, এর ফলে সেই প্রচেষ্টা ব্যার্থ হতে পারে। খারাপকে বদলাবার মানে হল, যতটা সম্ভব কমিয়ে আনা ও নিজ হাতে ধ্বংস করা। সেটা তখনই সম্ভব, যখন আপনার সামর্থ্য হবে।
সবশেষে, মুসলিম দেশে কোন অমুসলিম মন্দির স্থাপন কিংবা কোন মুসলিম দেশকে করতে দেয়া, মুসলমানের পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব না। হযরত উমরের ইসলামিক শাসনের অধীনে অমুসলিমদের নিরাপত্তা দিয়ে শর্ত দিয়েছিলেন, ’ আমরা আমাদের নগরে কোন চার্চ তৈরী করতে দেব না”
তথ্যসূত্র
- সূরা কাফিরুন, আয়াত ৬ [↑]
- তাফসীরে জালালাইন, সপ্তম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫৯৮ [↑]
- তাফসীরে মাযহারী, ১২তম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৬১৩ [↑]
- সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত), হাদিসঃ ২৬০৭ [↑]
- সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত), হাদিসঃ ২৬০৮ [↑]
- মূর্তি ভাঙ্গার আবশ্যকতা [↑]
- Demolishing idols in a non-Muslim country [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"