বিভিন্ন হাদিস থেকে নবী মুহাম্মদের বক্তব্য থেকে জানা যায়, কিয়ামত খুবই সন্নিকটে। নবী মুহাম্মদ বলেছিলেন, কিয়ামত খুবই কাছে [1] –
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫৫/ ফিতনা সমূহ ও কিয়ামতের নিদর্শনাবলী
পরিচ্ছদঃ ২৩. কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়া
৭১৪০। আবূ গাসসান মিসমাঈ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমি এবং কিয়ামত প্রেরিত হয়েছি এ দুটির মত। রাবী বলেন (এ সময়) তিনি তার শাহাদাত ও মধ্যমা আঙ্গুলিকে একত্রিত করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
আবার, নবী মুহাম্মদই একবার সূর্যগ্রহণ দেখে এমন ভয় পেয়েছিল যে, সে ভেবেছিল কেয়ামত বুঝি হয়েই যাচ্ছে। আজকালকার বাচ্চা ছেলেপেলেরাও সূর্যগ্রহণ কী তা জানে এবং বোঝে। তারা সূর্যগ্রহণের সময় কোন ভয় পায় না। সূর্যগ্রহণ দেখে তাকে কেয়ামত ভেবে নবীর এরকম আতঙ্কে অস্থির হয়ে যাওয়া প্রমাণ করে, সেই তার জীবদ্দশাতেই কেয়ামত হয়ে যাবে এরকম ভয় করছিলেন। কেন, সেই সময়ে জিবরাইল কোথায় ছিল? তার তো এসে বলা উচিত ছিল, হে নবী, এটি একটি সাধারণ প্রাকৃতিক ঘটনা, ভয়ের কিছু নেই। আসুন হাদিসটি পড়ি, [2] [3]
মুখতাসার সহীহ আল-বুখারী
১৬. কিতাবুল কুসুফ (সূর্যগ্রহণের বর্ণনা)
পরিচ্ছেদঃ সূর্যগ্রহণের সময় যিকির করা
আলোকিত প্রকাশনী নাম্বারঃ ৫৬০, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১০৫৯
৫৬০: আবু মুসা আশআরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একদা সূর্যগ্রহণ হল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে দন্ডায়মান হলেন। তিনি কিয়ামত সংঘটিত হয়ে যাওয়ার ভয় করছিলেন। তিনি মসজিদে আগমণ করলেন। তিনি এত লম্বা কিয়াম, রুকূ এবং সিজদা করলেন যা আমি তাঁকে আর কখনও এরূপ করতে দেখিনি। তিনি বললেনঃ এ সমস্ত নিদর্শন কারো জন্ম গ্রহণ বা মৃত্যু বরণ করার কারণে প্রেরিত হয় না; বরং আল্লাহ তাআলা এগুলোর মাধ্যমে তাঁর বান্দাদেরকে ভয় দেখিয়ে থাকেন। তোমরা যখন কোন নিদর্শন দেখতে পাবে তখন তোমরা আল্লাহর যিকির, তাঁর নিকট দু’আ করা এবং তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনার দিকে ধাবিত হও।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ মূসা আল- আশ’আরী (রাঃ)

এবারে আসুন দেখি সেই হাদিসটি, যেখানে নবীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল কেয়ামত কবে হবে। উত্তরে একজন বালককে দেখিয়ে নবী বলেছিলেন, এই বালকের বৃদ্ধ হওয়ার পূর্বেই কিয়ামত হবে। কিন্তু সেই বালক মরে ভুত হয়ে গেল, এখনো কিয়ামত হলো না [4] [5] [6] [7]
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫৫/ ফিতনা সমূহ ও কিয়ামতের নিদর্শনাবলী
পরিচ্ছেদঃ ২৩. কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়া
৭১৪২। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলেন, কিয়ামত কবে হবে? তখন তাঁর নিকট মুহাম্মাদ নামক এক আনসারী বালক উপিস্থিত ছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ বালক যদি বেঁচে থাকে তবে সে বৃদ্ধ হওয়ার পূর্বেই কিয়ামত সংগঠিত হয়ে যাবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫৫/ ফিতনা সমূহ ও কিয়ামতের নিদর্শনাবলী
পরিচ্ছেদঃ ২৩. কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়া
৭১৪৩। হাজ্জাজ ইবনু শাঈর (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা জনৈক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলেন যে, কিয়ামত কবে হবে? এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছুক্ষণ পর্যন্ত চুপ করে থাকেন। অতঃপর তিনি সম্মুখস্থ আয্দ-শানু’আ গোত্রের এক বালকের প্রতি তাকালেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ এ বালক যদি দীর্ঘ হায়াত পায় তবে তার বার্ধক্যে পদার্পণ করার পূর্বেই কিয়ামত সংগঠিত হয়ে যাবে। আনাস (রাঃ) বলেন, তখন এ বালক আমার সমবয়স্ক ছিল।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫৫/ ফিতনা সমূহ ও কিয়ামতের নিদর্শনাবলী
পরিচ্ছেদঃ ২৩. কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়া
৭১৪৪। হারুন ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) এর এক গোলাম একদা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল, সে ছিল আমার সমবয়স্কা। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি তার হায়াত দীর্ঘায়িত হয় তবে সে বার্ধক্যে পৌছার পূর্বেই কিয়ামত কায়িম সংগঠিত হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)

তথ্যসূত্র
- সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৭১৪০ [↑]
- মুখতাসার সহীহ আল-বুখারী, হাদিসঃ ৫৬০ [↑]
- মুখতাসার সহীহ আল-বুখারী, ইসলামী দাওয়া সেন্টার উম্মুল হামাম রিয়াদ সৌদি আরব, পৃষ্ঠা ২৩১ [↑]
- সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৭১৪২ [↑]
- সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৭১৪৩ [↑]
- সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৭১৪৪ [↑]
- সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠাঃ ৪৩৫ [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"