উম্মে হানী ছিল মুহাম্মদের চাচাতো বোন। ছোটবেলা চাচা আবু তালিবের বাসাতেই মুহাম্মদ আশ্রিত ছিল, সেখানেই তাদের দুইজনার মধ্যে ভালবাসা তৈরি হয়। কিন্তু মুহাম্মদের পক্ষ থেকে বিবাহের প্রস্তাব দেয়ার পরেও উম্মে হানীর পিতা আবু তালিব মুহাম্মদের সাথে উম্মে হানীর বিবাহ দিতে চাননি। সেই নারী ইসলামের বিধান অনুসারে গায়েরে মাহরাম, বা যার সাথে দেখা সাক্ষাৎ এবং মেলামেশা সম্পুর্ণ হারাম। কিন্তু সহিহ হাদিস থেকে জানা যায়, নবী মাঝেমাঝেই উম্মে হানীর বাড়িতে যেতেন। দেখাসাক্ষাৎ, কথাবার্তা বলতেন, খানাপিনা করতেন। [1]
সূনান তিরমিজী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
অধ্যায়ঃ ২৮/ খাদ্য সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ সিরকা।
১৮৪৮। আবূ কুরায়ব (রহঃ) … উম্মে হানী বিনত আবূ তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন আমার কাছে এলেন এবং বললেন, তোমাদের কাছে কিছু আছে কি? আমি বললাম, শুকনো রুটির কয়েকটি টুকরা ও সিরকা ছাড়া আর কিছুই নেই। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তা-ই নিয়ে আস, যে বাড়িতে সিরকা আছে যে বাড়িতে সালনের কোন অভাব আছে বলে বলা যায় না। হাসান, সহীহাহ ২২২০, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১৮৪১ (আল মাদানী প্রকাশনী)
এ হাদীসটি হাসান; এ সূত্রে গারীব। উম্মে হানী রাদিয়াল্লাহু আনহা-এর রিওয়ায়াত হিসাবে এ সূত্র ছাড়া এটি সম্পর্কে আমাদের কিছু জানা নেই। উম্মে হানী রাদিয়াল্লাহু আনহা আলী (রাঃ)-এর অনেক দিন পর ইন্তিকাল করেন।
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ উম্মু হানী বিনতু আবূ তালিব (রাঃ)
আরেকটি হাদিস থেকে জানা যায়, একই পাত্র থেকে নবী মুহাম্মদ এবং উম্মে হানী পানীয় পান করতেন [2] –
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ৮/ সওম (রোযা)
পরিচ্ছেদঃ ৭৩. এ ব্যাপারে অনুমতি প্রসঙ্গে
২৪৫৬। উম্মু হানী (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন ফাতিমাহ (রাযি.) এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাম পাশে বসলেন আর উম্মু হানী (রাযি.) বসলেন তাঁর ডান পাশে। বর্ণনাকারী বলেন, এক দাসী এক পাত্র পানীয় এনে তাঁকে দিলে তিনি তা থেকে কিছু পান করার পর উম্মু হানীর দিকে পাত্রটি এগিয়ে দিলেন এবং তিনি তা থেকে পান করলেন। উম্মু হানী (রাযি.) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি যে এখন ইফতার করলাম, আমি তো সওম রেখেছিলাম! তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কি এগুলো কাযা করতে চাও? তিনি বললেন, না। তিনি বললেনঃ যদি তা নফল (সওম) হয় তাহলে কোনো ক্ষতি নেই।(1)
সহীহ।
(1). তিরমিযী, বায়হাক্বী, দারিমী।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উম্মু হানী বিনতু আবূ তালিব (রাঃ)
আরেকটি হাদিস থেকে জানা যায়, একই পাত্র থেকে থেকে প্রথমে মুহাম্মদ, এরপরে উম্মে হানী শরবত পান করতেন [3] –


আরেকটি হাদিস থেকে জানা যায়, মক্কা বিজয়ের দিনে মুহাম্মদ এবং উম্মে হানী পাশাপাশি বসে পানীয় পান করেছিলেন। অর্থাৎ, ততদিনে পর্দার বিধান নাজিল হয়ে গেছে। পর্দার বিধান নাজিলের পরেও বিবাহ বৈধ এমন নারীর সাথে মুহাম্মদের পাশাপাশি বসে পানীয় পান করা কতটা ইসলাম সম্মত, তা ইসলামের আলেমগণই ভাল বলতে পারবেন [4] –
সূনান আবু দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
অধ্যায়ঃ ৮/ সওম
পরিচ্ছেদঃ ২৬৩. রোযার জন্য নিয়্যাত না করার অনুমতি।
২৪৪৮. উসমান ইবন আবূ শায়বা …. উম্মে হানী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি (রাবী) বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন বিজয়ের পর ফাতিমা (রাঃ) আগমন করেন। এরপর তিনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বামদিকে উপবেশন করেন এবং উম্মে হানী (রাঃ) ডানদিকে। তিনি (রাবী) বলেন, এ সময় জনৈক দাসী একটি পাত্রে কিছু পানীয় দ্রব্য এনে পেশ করলে তিনি তা পান করেন। এরপর তিনি এর অবশিষ্টাংশ উম্মে হানীকে পান করতে দেন। তিনি তা পান করে বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি তো ইফতার করলাম, কিন্তু আমি যে রোযা ছিলাম। তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, তুমি কি কোন কাযা রোযা আদায় করছিলে? তিনি বলেন, না। তিনি বলেন, যদি তা নফল রোযা হয়, তবে এতে তোমার কোন ক্ষতি হবে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উম্মু হানী বিনতু আবূ তালিব (রাঃ)
আরেকটি হাদিস থেকে জানা যায়, মক্কা বিজয়ের দিনে যেন অনেক দিনের প্রতীক্ষার শেষে উম্মে হানীর বাসায় যান নবী মুহাম্মদ। গিয়ে গোছল করেন নবী মুহাম্মদ। প্রশ্ন হচ্ছে, সেই সময়ে উম্মে হানীর স্বামী কোথায় ছিল? তিনি তো নবী মুহাম্মদের ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তাহলে, বাড়িতে আর কে কে ছিল সেইদিন? [5]
সূনান তিরমিজী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
অধ্যায়ঃ ৩/ বিতর
পরিচ্ছেদঃ দ্বিপ্রহরের সালাত।
৪৭৪. আবূ মূসা মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ….. আবদুর রহমান ইবনু আবী লায়লা (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেনঃ উম্মু হানী রাদিয়াল্লাহু আনহা ব্যতীত আমার নিকট আর কেউ একথা বর্ণনা করেন নি যে, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এই সালাত (ç) আদায় করতে দেখেছেন। উম্মু হানী রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন যে, রাসূল ফতহে মক্কার দিন (মক্কা বিজয়ের দিন) তাঁর ঘরে এলেন এবং গোসল করলেন। এরপর আট রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। এর চেয়ে সংক্ষিপ্ত সালাত আদায় করতে আমি তাঁকে আর কখনও দেখিনি। তবে তাঁর এই সালাতে তিনি রুকূ ও সিজদা পূর্ণাঙ্গভাবে আদায় করেছিলেন। – ইবনু মাজাহ ১৩৭৯, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৪৭৪ (আল মাদানী প্রকাশনী)
ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ এই হাদীসটি হাসান-সহীহ। ইমাম আহমদ এই বিষয়ে উম্মু হানী রাদিয়াল্লাহু আনহা-এর রিওয়ায়াতটিকেই সর্বাধিক সহীহ বলে মনে করেন। এই বিষয়ে একটি হাদীসসের রাবী অপর এক সাহাবী নুআয়ম রাদিয়াল্লাহু আনহু (এর পিতার নাম) সম্পর্কে ঐতিহাসিকভাবে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ কেউ বলেনঃ তিনি হচ্ছেন নুআয়ম ইবনু খাম্মার, কারো কারো মত হ’ল, ইবনু আম্মার, কেউ কেউ বলেনঃ ইবনু হাব্বার, কারো কারো মতে ইবনু হাম্মাম। তবে শুদ্ধ হ’ল ইবনু হাম্মার। রাবী আবূ নু’আয়ম রাদিয়াল্লাহু আনহু এই বিষয়ে সন্দেহের শিকার হয়েছেন। তিনি তাকে ভুল করে ইবনু ইবনু খাম্মার বলে উল্লেখ করেছিলেন। পরে অবশ্য তিনি এর উল্লেখ ছেড়ে দেন এবং (পিতার নাম উল্লেখ করা ছাড়াই) নু’আয়ম নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেন। ইমাম তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) আবূ নু’আয়ম (রহঃ) থেকে আমাকে এই সম্পর্কে রিওয়ায়াত করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুর রহমান ইবনু আবূ লাইলা (রহঃ)
রমজান মাসে রোজা নফল না ফরজ?
আমরা সকলেই জানি যে, রমজান মাসে মক্কা বিজয় হয়েছিল। সিরাতে ইবনে হিশাম থেকে জানা যায়, মক্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরুর সময় নবী নিজেই রোজা রেখেছিলেন, পথে ইফতারও করেছিলেন। [6] –

মক্কায় প্রবেশ এবং এরপরের এই ঘটনাবলী সবই ঘটেছিল রমজান মাসে। আমরা ভালভাবেই জানি, রমজান মাসে রোজা রাখা দ্বিতীয় হিজরিতেই মুসলিমদের জন্য ফরজ হয়ে গেছে [7]। এমতাবস্থায় নবী মুহাম্মদ কীভাবে উম্মেহানী আর ফাতিমাকে নিয়ে সবাই মিলেমিশে পানীয় পান করছেন? অদ্ভুত ঘটনাই বটে। মুমিনেরা যদি গোঁজামিল দেয়ার জন্য বলে যে, মুহাম্মদ যেহেতু সফরে ছিল, তাই রোজা তার জন্য ফরজ ছিল না, এই যুক্তি দিলেও এখানে কাজ হবে না। কারণ উম্মে হানী তো সফর করেনি। তার জন্য তো রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ। সদ্য ইসলাম গ্রহণ করা উম্মেহানীকে নবী মুহাম্মদ রমজান মাসে ঠিকমতো রোজা রাখার হুকুম না দিয়ে তার রোজা ভঙ্গ করে দেয়ার ব্যবস্থা কেন করলেন, ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। ডালমে কুছ কালা হে নাকি পুরা ডালই কালা হে, ঠিক বুঝতে পারছি না [4]
সূনান আবু দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
অধ্যায়ঃ ৮/ সওম
পরিচ্ছেদঃ ২৬৩. রোযার জন্য নিয়্যাত না করার অনুমতি।
২৪৪৮. উসমান ইবন আবূ শায়বা …. উম্মে হানী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি (রাবী) বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন বিজয়ের পর ফাতিমা (রাঃ) আগমন করেন। এরপর তিনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বামদিকে উপবেশন করেন এবং উম্মে হানী (রাঃ) ডানদিকে। তিনি (রাবী) বলেন, এ সময় জনৈক দাসী একটি পাত্রে কিছু পানীয় দ্রব্য এনে পেশ করলে তিনি তা পান করেন। এরপর তিনি এর অবশিষ্টাংশ উম্মে হানীকে পান করতে দেন। তিনি তা পান করে বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি তো ইফতার করলাম, কিন্তু আমি যে রোযা ছিলাম। তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, তুমি কি কোন কাযা রোযা আদায় করছিলে? তিনি বলেন, না। তিনি বলেন, যদি তা নফল রোযা হয়, তবে এতে তোমার কোন ক্ষতি হবে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উম্মু হানী বিনতু আবূ তালিব (রাঃ)
গোছলের হিসেবে গড়মিল
এবারে আসুন একটি হিসেব মিলিয়ে দেখি। দৃশ্যপট হচ্ছে মক্কা বিজয়ের দিন (ইংরেজি অনুবাদ দেখুন)। মক্কার কাফেররা তখন মুহাম্মদের আতঙ্কে দিশেহারা। সেইদিনই, উম্মে হানী একজন কাফেরকে আশ্রয় দিয়েছিলেন, যাকে আলী হত্যা করতে চাচ্ছিলেন। উম্মে হানী দ্রুত মুহাম্মদের কাছে আসলেন, সেই কাফেরকে আলীর হাত থেকে রক্ষার জন্য। নবী মুহাম্মদ তখন গোছল করে বের হলেন এবং চাশতের সময় নামাজ আদায় করলেন [8] [9] [10] [11] –



এরপরে মুহাম্মদ গোছল থেকে বের হন, ঐ একই স্থানে বসে ফাতিমা, মুহাম্মদ এবং উম্মে হানী পাশাপাশি বসে এক ধরণের পানীয় পান করেন। উম্মে হানী রোজা ছিলেন, তাই তিনি পানীয় পান করতে আপত্তি করেছিলেন। অর্থাৎ সেইদিন উম্মে হানীর জন্য কোন কিছু খাওয়া বা যৌন সম্পর্ক করা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু, নবী মুহাম্মদ প্রায় জোর করেই উম্মে হানীর রোজা ভাঙ্গিয়ে দেন। রোজা যেহেতু ভেঙ্গে গেছে, তাই এরপরে আর কোন কিছু পান করা, খাওয়া বা যৌন সঙ্গম করায় উম্মে হানির আর কোন বাধা বিপত্তি রইলো না। পাঠক, ঘটনা পরম্পরা খুব ভালভাবে লক্ষ্য করুন [4] –
সূনান আবু দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
অধ্যায়ঃ ৮/ সওম
পরিচ্ছেদঃ ২৬৩. রোযার জন্য নিয়্যাত না করার অনুমতি।
২৪৪৮. উসমান ইবন আবূ শায়বা …. উম্মে হানী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি (রাবী) বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন বিজয়ের পর ফাতিমা (রাঃ) আগমন করেন। এরপর তিনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বামদিকে উপবেশন করেন এবং উম্মে হানী (রাঃ) ডানদিকে। তিনি (রাবী) বলেন, এ সময় জনৈক দাসী একটি পাত্রে কিছু পানীয় দ্রব্য এনে পেশ করলে তিনি তা পান করেন। এরপর তিনি এর অবশিষ্টাংশ উম্মে হানীকে পান করতে দেন। তিনি তা পান করে বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি তো ইফতার করলাম, কিন্তু আমি যে রোযা ছিলাম। তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, তুমি কি কোন কাযা রোযা আদায় করছিলে? তিনি বলেন, না। তিনি বলেন, যদি তা নফল রোযা হয়, তবে এতে তোমার কোন ক্ষতি হবে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উম্মু হানী বিনতু আবূ তালিব (রাঃ)
এরপরে নবী উম্মে হানীর বাড়িতে গেলেন। সেখানে উম্মে হানীর স্বামী বাড়িতে নেই। সেখানে নবী আবারো গোছল করলেন। এরপরে আবারো নামাজ পড়লেন। প্রশ্ন হচ্ছে, একই দিনে একই সময়ে দুইবার গোছলের প্রয়োজন হলো কেন? স্বামী বাসায় নেই যেই বেগানা নারীর, সেই উম্মে হানীর বাসায় নবী কী এমন করলেন, যে কিছুক্ষণ আগে গোছল করা নবীর আরো একবার গোছলের প্রয়োজন হলো?
আসুন, মক্কা বিজয়ের দিনের বিবরণটি ভালভাবে পড়ি। পাঠকগণ লক্ষ্য করুন, নবী একবার মক্কার উচ্চ এলাকাতে অবস্থান করছেন। সেই সময়ে উম্মে হানীর ঘরে পলাতক মানুষেরা লুকিয়ে ছিল। এই সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ফাতিমা এবং নবী এই সময়ে একবার গোছল করেছেন [12] [13]। পরের হাদিসে লক্ষ্য করুন, ঘটনাস্থল উম্মে হানীর ঘরে। নবী মুহাম্মদ মাথার চুলে বেণী করে অর্থাৎ সেজেগুজে উম্মে হানীর বাড়িতে উপস্থিত [14]। সেখানে আরেকবার গোছল করেছেন নবী। প্রশ্ন হচ্ছে, একই সময়ে দুইবার গোছলের প্রয়োজন হল কেন? উম্মে হানীর ঘরে নবী এমন কী করলেন যে, আরও একবার গোছলের দরকার হলো? [15] –
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ
পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ – চুল আঁচড়ানো
৪৪৪৬-[২৮] উম্মু হানী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (মক্কা বিজয়ের দিন) একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে আসলেন, এ সময় তাঁর মাথার চুলে চারটি জুলফি ছিল। (আহমাদ, আবূ দাঊদ, তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ)[1]
[1] সহীহ : আহমাদ ২৬৮৯০, তিরমিযী ১৭৮১, আবূ দাঊদ ৪১৯১, ইবনু মাজাহ ৩৬৩১, মুসান্নাফ ইবনু আবূ শায়বাহ্ ৩৬৯১৭, আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ২০৪৮৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উম্মু হানী বিনতু আবূ তালিব (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৩/ হায়েয
পরিচ্ছেদঃ ১৬. গোসলকারী কাপড় অথবা অনুরূপ কিছু দিয়ে পর্দা করে নিবে
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৬৫৮, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৩৩৬
৬৫৮। মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ ইবনু মুহাজির (রহঃ) … উম্মু হানী বিনতে আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্নিত। মক্কা বিজয়ের বছর তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলেন। তিনি তখন মক্কার উচু এলাকায় অবস্থান করছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোসল করতে গেলে ফাতিমা (রাঃ) তাঁকে আড়াল করে দিল। এরপর তিনি নিজের কাপড় নিয়ে পরিধান করলেন। তারপর আট রাকআত চাশতের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উম্মু হানী বিনতু আবূ তালিব (রাঃ)


উল্লেখ্য, পুরুষের চুলে বেণী একটি পুরনো কালচার। বিশেষ বিশেষ দিনে এই ধরনের সাজসজ্জা করে পুরুষেরা বের হতো। আসুন AI দিয়ে তৈরি একটি ছবি দেখে নিই, যেখানে চুলে বেণী করা একজন আরব পুরুষ তার প্রেমিকার সাথে দেখা করতে যাচ্ছে, ব্যাপারটি কল্পনায় তুলে আনা হয়েছে।

মুমিনেরা যেসমস্ত মিথ্যাচার সাধারণত করে থাকে, তারা হয়তো এই বাঙলা অনুবাদ দেখিয়ে বলতে পারে যে, এখানে মুহাম্মদের বাড়ির কথা বলা হয়েছে! এই কারণে একইসাথে ইংরেজি অনুবাদটিও যুক্ত করে দেয়া হলো [16] –

আসুন বুখারী শরীফ থেকেও হাদিসটি দেখে নিই। লক্ষ্য করুন, এই হাদিসের রাবি একমাত্র উম্মে হানী। অর্থাৎ আর কোন সাহাবী সেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত নেই [17] [18] –
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫১/ মাগাযী (যুদ্ধাভিযান)
পরিচ্ছেদঃ ২২১৪. মক্কা বিজয়ের দিন নাবী (সাঃ) এর অবস্থানস্থল
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৩৯৬২, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৪২৯২
৩৯৬২। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … ইবনু আবী লায়লা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে চাশতের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে দেখেছে এ কথাটি একমাত্র উম্মে হানী (রাঃ) ছাড়া অন্য কেউ আমাদের কাছে বর্ণনা করেননি। তিনি বলেছেন যে, মক্কা বিজয়ের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বাড়িতে গোসল করেছিলেন, এরপর তিনি আট রাকাত সালাত আদায় করেছেন। উম্মে হানী (রাঃ) বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ সালাত অপেক্ষা হালকাভাবে অন্য কোন সালাত আদায় করতে দেখিনি। তবে তিনি রুকূ, সিজ্দা পুরোপুরই আদায় করেছিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ ইবনু আবূ লায়লাহ (রহঃ)

এবারে আসুন বিবরণটি তাফসীরে ইবনে কাসীর থেকে পড়ে নিই, [19] –

এবারে আসুন ইসলাম হাউজ থেকে প্রকাশিত সালাতুল আউওয়াবীন গ্রন্থ থেকে একটি পাতা দেখে নেয়া যাক [20]


উপরের বইটির আরেকটি ভার্শন রয়েছে, সেই বইটির পৃষ্ঠা নম্বর ভিন্ন। সেই ভার্শনও একইসাথে দিয়ে দেয়া হচ্ছে [21]



অর্থাৎ, মক্কা বিজয়ের দিনে যা ঘটেছিলঃ
সময় | স্থান | ঘটনা |
মক্কা বিজয়ের দিন [11] | মক্কার উচ্চ এলাকায় [12] [13] | ফাতিমার উপস্থিতিতে নবীর গোছল, উম্মে হানীর আগমন। [8] [9] উম্মে হানীর বাসায় তখন দরজা বন্ধ, ভেতরে লুকিয়ে আছেন কিছু মানুষ। [13] |
মক্কা বিজয়ের দিন [22] [11] | মক্কার উচ্চ এলাকায় [13] | ফাতিমা-মুহাম্মদ-উম্মে হানী পাশাপাশি বসে পানীয় সেবন। মুহাম্মদের অনুরোধে উম্মে হানীর রোজা ভঙ্গ। [4] |
মক্কা বিজয়ের দিন [14] | মক্কার উচ্চ এলাকা থেকে উম্মে হানির বাড়ির দিকে যাত্রা | নবী মুহাম্মদ সাজগোজ করলেন। চুলে চারটি বেণী করলেন। [14] |
মক্কা বিজয়ের দিন [17] [18] | উম্মে হানীর বাসায় [16] [15] | উম্মে হানীর বাড়িতে নবীর গমন, উম্মে হানীর স্বামী বাড়িতে অনুপস্থিত। সেখানে গিয়ে নবী আবারো গোছল করলেন। [15] [17] [18] |
এবারে আসুন, আরও কয়েকটি হাদিস পড়ি। যেই হাদিসগুলো থেকে বোঝা যায়, একাধিকবার বা একাধিক স্ত্রীর সাথে সঙ্গমের পরে গোছল করা নবীর একটি স্বভাব ছিল। যেই লোক একই দিনে বা রাতে ১১ জনার সাথে সঙ্গমের পরে একবার গোছল করতো, মাঝখানে এক বিবির থেকে আরেক বিবির কাছে যাওয়ার সময় গোছল করে নিতো না, সেই ১১ জনার দীর্ঘ তালিকার মধ্যে স্ত্রী দাসীবাঁদী থাকতো, সেই লোক একই নামাজের ওয়াক্তে এত অল্প সময়ের ব্যবধানে দুই দুইবার গোছল করবে কেন, কোন অত্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়াই, সেটি একটি চিন্তা করার মত বিষয়ই বটে! [23] [24] [25] [25] [26] [27] [28] [29] –
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫/ গোসল
পরিচ্ছেদঃ ১৮৫। একাধিকবার বা একাধিক স্ত্রীর সাথে সংগত হওয়ার পর একবার গোসল করা।
২৬৫। মুহাম্মদ ইবনু বাশ্শার (রহঃ) …. মুহাম্মদ ইবনু মুনতাশির (রহঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি ‘আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে (আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ))-এর উক্তিটি* উল্লেখ করলাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ আবূ ‘আবদুর রহমানকে রহম করুন। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খুশবু লাগাতাম, তারপর তিনি তাঁর স্ত্রীদের সঙ্গে মিলিত হতেন। তারপর ভোরবেলায় এমন অবস্থায় ইহ্রাম বাঁধতেন যে, তাঁর দেহ থেকে খুশবু ছড়িয়ে পড়তো।
(আবদুল্লাহ্ ইবন ‘উমর (রাঃ))-এর উক্তিটি: আমি এমন অবস্থায় ইহরাম বাঁধতে পছন্দ করি না, যাতে সকালে আমার দেহ থেকে খুশবু ছড়িয়ে পড়ে ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ মুহাম্মাদ ইবনু মুনতাশির (রহঃ)
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫/ গোসল
পরিচ্ছেদঃ ১৮৫। একাধিকবার বা একাধিক স্ত্রীর সাথে সংগত হওয়ার পর একবার গোসল করা।
২৬৬। মুহাম্মদ ইবনু বাশ্শার (রহঃ) …. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীগণের কাছে দিনের বা রাতের কোন এক সময় পর্যায়ক্রমে মিলিত হতেন। তাঁরা ছিলেন এগারজন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি আনাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি কি এত শক্তি রাখতেন? তিনি বললেন, আমরা পরস্পর বলাবলি করতাম যে, তাঁকে ত্রিশজনের শক্তি দেওয়া হয়েছে। সা’ঈদ (রহঃ) কাতাদা (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন, আনাস (রাঃ) তাঁদের কাছে হাদীস বর্ণনা প্রসঙ্গে (এগারজনের স্থলে) নয়জন স্ত্রীর কথা বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
৫/ গোসল
পরিচ্ছেদঃ ৫/১২. একাধিকবার বা একাধিক স্ত্রীর সাথে সঙ্গত হবার পর একবার গোসল করা।
২৬৭. মুহাম্মাদ ইবনু মুনতাশির (রহ.) তাঁর পিতা হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি ‘আয়িশাহ (রাযি.)-এর নিকট (‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার (রাযি.))-এর উক্তিটি উল্লেখ করলাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ আবূ ‘আবদুর রহমানকে রহম করুন। আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে সুগন্ধি লাগাতাম, তারপর তিনি তাঁর স্ত্রীদের সঙ্গে মিলিত হতেন। তারপর ভোরবেলায় এমন অবস্থায় ইহরাম বাঁধতেন যে, তাঁর দেহ হতে খুশবু ছড়িয়ে পড়তো। (২৭০; মুসলিম ১৫/৭, হাঃ ১১৯২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৬৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ মুহাম্মাদ ইবনু মুনতাশির (রহঃ)
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
৫/ গোসল
পরিচ্ছেদঃ ৫/১২. একাধিকবার বা একাধিক স্ত্রীর সাথে সঙ্গত হবার পর একবার গোসল করা।
২৬৮. আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীগণের নিকট দিনের বা রাতের কোন এক সময়ে পর্যায়ক্রমে মিলিত হতেন। তাঁরা ছিলেন এগারজন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি আনাস (রাযি.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কি এত শক্তি রাখতেন? তিনি বললেন, আমরা পরস্পর বলাবলি করতাম যে, তাঁকে ত্রিশজনের শক্তি দেয়া হয়েছে। সা‘ঈদ (রহ.) ক্বাতাদাহ (রহ.) হতে বর্ণনা করেন, আনাস (রাযি.) তাঁদের নিকট হাদীস বর্ণনা প্রসঙ্গে (এগারজনের স্থলে) নয়জন স্ত্রীর কথা বলেছেন। (২৮৪, ৫০৬৮, ৫২১৫ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৬৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
সুনানে ইবনে মাজাহ
১/ পবিত্রতা ও তার সুন্নাতসমূহ
পরিচ্ছেদঃ ১/১০১. যে ব্যক্তি সকল স্ত্রীর সাথে সহবাস করার পর একবার গোসল করে।
১/৫৮৮। আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সকল স্ত্রীর সাথে সহবাস শেষে একবার গোসল করতেন।
তাখরীজ কুতুবুত সিত্তাহ: বুখারী ২৬৮, ২৮৪, ৫০৬৮, ৫২১৫; মুসলিম ৩০৯, তিরমিযী ১৪০, নাসায়ী ২৬৩-৬৪, ৩১৯৮; আবূ দাঊদ ২১৮, আহমাদ ১১৫৩৫, ১২২২১, ১২২৯০, ১২৫১৪, ১২৫৫৫, ১২৯৪২, ১৩০৯৩, ১৩২৩৬; দারিমী ৭৫৩-৫৪, ইবনু মাজাহ ৫৮৯।
তাহক্বীক্ব আলবানী: সহীহ। তাখরীজ আলবানী: সহীহ আবূ দাউদ ২১১-২১৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
সুনানে ইবনে মাজাহ
১/ পবিত্রতা ও তার সুন্নাতসমূহ
পরিচ্ছেদঃ ১/১০১. যে ব্যক্তি সকল স্ত্রীর সাথে সহবাস করার পর একবার গোসল করে।
২/৫৮৯। আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর গোসলের পানি প্রস্তুত করে রাখলাম। তিনি একই রাতে তাঁর সকল স্ত্রীর সাথে সহবাসের পর একবার গোসল করেন।
তাখরীজ কুতুবুত সিত্তাহ: বুখারী ২৬৮, ২৮৪, ৫০৬৮, ৫২১৫; মুসলিম ৩০৯, তিরমিযী ১৪০, নাসায়ী ২৬৩-৬৪, ৩১৯৮; আবূ দাঊদ ২১৮, আহমাদ ১১৫৩৫, ১২২২১, ১২২৯০, ১২৫১৪, ১২৫৫৫, ১২৯৪২, ১৩০৯৩, ১৩২৩৬; দারিমী ৭৫৩-৫৪, ইবনু মাজাহ ৫৮৮।
তাহক্বীক্ব আলবানী: সহীহ লিগাইরিহী। তাখরীজ আলবানী: সহীহ আবূ দাউদ ২১৪। উক্ত হাদিস্বে রাবী সালিহ ইবনুল আদখার সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। ইমাম বুখারী তাকে দুর্বল বলেছেন। আবু হাতিম ও আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আল আজালী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
সুনান আদ-দারেমী
১. পবিত্রতা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ৭১. যিনি একাধিক স্ত্রীর নিকট গমণ করে একবার গোসল করেন
৭৭৬. আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একই রাতে পর্যায়ক্রমে স্ত্রীগণের নিকট গমণ করতেন।(1)
(1) তাহক্বীক্ব: এর সনদ সহীহ। হাদীসটি বুখারী মুসলিমের হাদীস।
তাখরীজ: তাহাবী, শারহু মা’আনিল আছার ১/১২৯; আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ করেছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ২৯৪২, ৩১৭৫, ৩১৭৬, ৩২০৩, ৩৭১৮, ৩৭১৯, ৩৮৮৬ ও সহীহ ইবনু হিব্বান নং ১২০৬-১২০৯; এবং পরের টীকাটি দেখুন। (সহীহ বুখারী ২৬৮; সহীহ মুসলিম ৩০৯; আহমাদ ৩/১৮৫; তিরমিযী ১৪০; আবু দাউদ ২১৮; নাসাঈ ১/১৪৩, ১৪৪ ও ৬/৫৩, ৫৪; ইবনু মাজাহ ৫৮৮; বাইহাকী ১/২০৪; সহীহ ইবনু খুযাইমা ২৩১; সহীহ ইবনু হিব্বান , ১১৯৫. ১১৯৬; আব্দুর রাযযাক, আল মুছান্নাফ ১০৬১; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ নং ২৬৯, ২৭০; আবুশ শাইখ, আখলাকুন নাবী সা:, পৃ: ২৩১; আবু আওয়ানাহ ১/২৮০; আবু নুয়াইম, হিলইয়া ৭/২৩২; তাবারানী, আস সগীর ১/২৪৬; অনেকগুলো সূত্রে। – মুহাক্বিক্বের তাহক্বীক্বকৃত মুসনাদুল মাউসিলী নং ২৯৪১, ২৯৪২ এর টীকা অনুসরণে।- অনুবাদক))
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
সুনান আদ-দারেমী
১. পবিত্রতা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ৭১. যিনি একাধিক স্ত্রীর নিকট গমণ করে একবার গোসল করেন
৭৭৭. (অপর সূত্রে) আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একই রাতে পর্যায়ক্রমে স্ত্রীগণের সাথে মিলিত হতেন।(1)
(1) তাহক্বীক্ব: এর সনদ সহীহ।
তাখরীজ: আহমাদ ৩/২৫২; আর পূর্ণ তাখরীজের জন্য আগের টীকাটি দেখুন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
তথ্যসূত্র
- সূনান তিরমিজী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ১৮৪৮ [↑]
- সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত), হাদিসঃ ২৪৫৬ [↑]
- তিরমিযী শরীফ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪৮৮, হাদিসঃ ৩২১৩ [↑]
- সূনান আবু দাউদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ২৪৪৮ [↑][↑][↑][↑]
- সূনান তিরমিজী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৪৭৪ [↑]
- সিরাতে ইবনে হিশাম, অনুবাদঃ আকরাম ফারুক, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, পৃষ্ঠা ২৭১ [↑]
- কখন থেকে রোজা ফরয হয়েছে? [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৩৫০ [↑][↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ২৯৪৭ [↑][↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, পঞ্চম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৩৯ [↑]
- Sahih al-Bukhari, Darussalam Publications, vol. 4, page 251[↑][↑][↑]
- সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৬৫৮ [↑][↑]
- সীরাতুন নবী (সা), চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৬৬ [↑][↑][↑][↑]
- মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত), হাদিসঃ ৪৪৪৬ [↑][↑][↑]
- সহীহ আত তিরমিযী, প্রথম খণ্ড, হাদিসঃ ৪৭৪ [↑][↑][↑]
- Jami at-Tirmidh, Darussalam Publications, vol. 1, Page 476 [↑][↑]
- সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), হাদিসঃ ৩৯৬২ [↑][↑][↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, সপ্তম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৪৮ [↑][↑][↑]
- তাফসীরে ইবনে কাসীর, সপ্তম খণ্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, পৃষ্ঠা ৪৯২ [↑]
- সালাতুল আউওয়াবীন, ইসলাম হাউজ প্রকাশনী, আব্দুল্লাহ আল মামুন আল আজহারী, সম্পাদনাঃ ড. আবু বকর মুহাম্মদ যাকারিয়া, পৃষ্ঠা ১৬, ৬ [↑]
- সালাতুল আউওয়াবীন, ইসলাম হাউজ প্রকাশনী, আব্দুল্লাহ আল মামুন আল আজহারী, সম্পাদনাঃ ড. আবু বকর মুহাম্মদ যাকারিয়া, পৃষ্ঠা ৫৪, ২০ [↑]
- সূনান আবু দাউদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ২৪৪৮ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ২৬৫ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ২৬৬ [↑]
- সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, হাদিসঃ ২৬৭ [↑][↑]
- সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ৫৮৮ [↑]
- সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ৫৮৯ [↑]
- সুনান আদ-দারেমী, হাদিসঃ ৭৭৬ [↑]
- সুনান আদ-দারেমী, হাদিসঃ ৭৭৭ [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"