কোরআনের সূরা সাবা, আয়াত ১৪-তে সোলায়মানের মৃত্যুর এই যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, তা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে সম্পূর্ণরূপে অবিশ্বাস্য এবং অবাস্তব। এই আয়াতে বলা হয়েছে, নবী সোলায়মান এক বছর ধরে লাঠির ওপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন, এমনকি তার মৃত্যুর পরও তিনি একইভাবে স্থির ছিলেন। তার লাঠি ঘুণে পোকার দ্বারা খাওয়ার ফলে তিনি পড়ে যান এবং তখনই জ্বিনরা বুঝতে পারে যে, সোলায়মান মারা গেছেন। এই বর্ণনা বৈজ্ঞানিকভাবে অসম্ভব, কারণ একটি মৃতদেহ এক বছর ধরে লাঠির ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। মানুষের দেহ মৃত্যুর পর বিভিন্ন রাসায়নিক ও জৈবিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পচনশীল হয়ে ওঠে। রিগর মর্টিস (Rigor Mortis) নামে একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মৃত্যুর পরপরই দেহের পেশীগুলো কঠিন হয়ে যায়, যা কিছু সময়ের মধ্যে আবার শিথিল হয়ে পচন শুরু করে। ফলে, একটি মৃতদেহ কিছুদিন পরেই লাঠির ওপর ভারসাম্য বজায় রাখতে অক্ষম হয়ে পড়ে এবং অবশেষে দেহ মাটিতে পড়ে যাবে। তাই, এই ধারণা যে একজন মানুষ বছরের পর বছর মৃত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারে, এটি শুধুমাত্র একটি পুরানো কুসংস্কার এবং বৈজ্ঞানিকভাবে একেবারেই অসম্ভব। আসুন একটি ওয়াজ শুনে নিই,
এবারে আসুন কোরআনের আয়াতটি পড়ে নিই,
অতঃপর আমি যখন সুলাইমানের মৃত্যু ঘটালাম, তখন ঘুণে পোকাই জ্বিনদেরকে তার মৃত্যু সম্পর্কে অবহিত করল, তারা (ধীরে ধীরে) সুলাইমানের লাঠি খেয়ে যাচ্ছিল। যখন সে পড়ে গেল তখন জ্বিনেরা বুঝতে পারল যে, তারা (নিজেরা) যদি অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে অবগত থাকত তাহলে তাদেরকে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তির মধ্যে পড়ে থাকতে হত না।
— Taisirul Quran
যখন আমি সুলাইমানের মৃত্যু ঘটালাম তখন জিনদেরকে তার মৃত্যু বিষয় জানালো শুধু মাটির পোকা যা সুলাইমানের লাঠি খাচ্ছিল। যখন সুলাইমান পড়ে গেল তখন জিনেরা বুঝতে পারল যে, তারা যদি অদৃশ্য বিষয় অবগত থাকত তাহলে তারা লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তিতে আবদ্ধ থাকতনা।
— Sheikh Mujibur Rahman
তারপর যখন আমি সুলাইমানের মৃত্যুর ফয়সালা করলাম তখন মাটির পোকা জিনদেরকে তার মৃত্যু সম্পর্কে অবহিত করল, যা তার লাঠি খাচ্ছিল। অতঃপর যখন সে পড়ে গেল তখন জিনরা বুঝতে পারল যে, তারা যদি গায়েব জানত তাহলে তারা লাঞ্ছনাদায়ক আযাবে থাকত না।
— Rawai Al-bayan
অতঃপর যখন আমরা সুলাইমানের মৃত্যু ঘটালাম, তখন জিনদেরকে তার মৃত্যুর খবর জানাল শুধু মাটির পোকা, যা তার লাঠি খাচ্ছিল। অতঃপর যখন তিনি পড়ে গেলেন তখন জিনরা -বুঝতে পারল যে, যদি তারা গায়েব জানত, তাহলে তারা লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তিতে আবদ্ধ থাকত না [১]।
— Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
– সূরা সাবা, আয়াত ১৪
আসুন এই আয়াতের তাফসীর পড়ে নিই তাফসীরে মাযহারী থেকে, [1] –
তথ্যসূত্র
- তাফসীরে মাযহারী, নবম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৬০৪, ৬০৫ [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"