01.ইসলামে আদমকে বানাবার গপ্পো

আসুন তাফসীরে ইবনে কাসীর থেকে জেনে নিই, হযরত আদমকে আল্লাহ কীভাবে তৈরি করেছিল [1]

অতঃপর তিনি আদম সৃষ্টির জন্য মাটি আনিতে বলিলেন। আল্লাহ তা’আলা আদমকে “লাযিব” মাটি দ্বারা সৃষ্টি করিলেন। লাযিব বলা হয় পবিত্র ছানা মাটিকে। মাটিকে ছানিয়া খামীরার মত আঁটালো ও শক্ত করাকে হামাইম মাসনূন বলা হয়। আল্লাহ তা’আলা সেই মাটি দ্বারা নিজ হাতে আদমকে সৃষ্টি করিলেন। মাটির দেহ সৃষ্টি করিয়া চল্লিশ দিন রাখিয়া দিলেন। তখন ইবলীস আসিয়া তাহাকে লাথি মারিয়া ওলট-পালট করিয়া দেখিত যে, কোথাও ফাঁপা রহিয়াছে কিনা। যেহেতু উহা দোআঁশ মাটির গড়া পাত্রবৎ ছিল, তাই উহা আঘাত পাইয়া আওয়াজ করিত। তখন ইবলীস উহার মুখ দিয়া ঢুকিয়া মলদ্বার দিয়া বাহির হইত এবং মলদ্বার দিয়া ঢুকিয়া মুখ দিয়া বাহির হইত। অতঃপর বলিত, তুমি কোন বস্তুই নহ। কারণ, তোমাকে নগণ্য এঁটেল মাটি দ্বারা সৃষ্টি করা হইয়াছে। আমি যদি তোমার উপর কর্তৃত্ব পাই, তাহা হইলে অবশ্যই আমি তোমাকে অমান্য করিব।
অতঃপর যখন আল্লাহ তাহার ভিতর প্রাণ প্রবিষ্ট করাইলেন, উহা যেহেতু মাথার দিক হইতে প্রবিষ্ট হইয়াছে, তাই পূর্ণ দেহ তখনও সক্রিয় হয় নাই। শুধু সর্বাঙ্গে গোশত ও রক্ত সৃষ্টি হইতেছিল। যখন প্রাণ নাভি পর্যন্ত পৌঁছিল, তখন আদম (আ) নিজ দেহের দিকে তাকাইয়া অবাক হইলেন এবং তখনই উঠার জন্য চেষ্টা করিলেন, কিন্তু তাহা পারিলেন না। তাই আল্লাহ তা’আলা বলেন: মানুষ বড়ই তাড়াহুড়া প্রিয় সৃষ্টি।(১৭:১১) অর্থাৎ ভাল-মন্দ কোন ক্ষেত্রেই তাহার ধৈর্য থাকে না।
অবশেষে যখন সর্বাঙ্গে প্রাণ সঞ্চারিত হইল, তখন তিনি হাঁচি দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ পাকের ইঙ্গিতে আলহামদু লিল্লাহি রব্বিল আলামীন বলিলেন। জবাবে আল্লাহ পাক বলিলেন, ইয়্যারহামুকাল্লাহু য়্যা আদম।
অতঃপর আল্লাহ তা’আলা ইবলীস ও তাহার সঙ্গী ফেরেশতাগণকে (আকাশে অবস্থানকারী ফেরেশতাগণকে নহে) হুকুম দিলেন- আদমকে সিজদা কর। তখন ইবলীস ছাড়া সকল ফেরেশতাই সিজদা করিলেন, শুধু ইবলীস দম্ভভরে উহা অস্বীকার করিল।

আদম

তথ্যসূত্র

  1. তাফসীরে ইবনে কাসীর, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৯০ []


সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"