নবী মুহাম্মদ সম্পর্কে সেই সময়ের পৌত্তলিক এবং ইহুদি খ্রিস্টানগণ কোরআনের আয়াত কপি করার নানা রকম অভিযোগ আরোপ করেছিলেন। এই অভিযোগগুলো এখানে বর্ণিত হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে ঠিক কোন কোন আয়াত মুহাম্মদ বাইবেল ও অন্যান্য ধর্ম থেকে কপি করেছিলেন, তা আলোচনা করা হবে। এই প্রবন্ধে শুধুমাত্র অভিযোগসমূহ উল্লেখ করা হচ্ছে।
১। বাইবেল বিশেষজ্ঞ ওয়ারাকা বিন নওফেলের কাছ থেকে
ওয়ারাকা ইবনে নওফল ইবনে আসাদ ইবনে আবদ-আল-উজ্জা ইবনে কুসাই আল-কুরাইশ ছিলেন একজন আরব ধর্মযাজক। তিনি ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন এবং আরবি ভাষায় খ্রীস্টানদের ইনজীল কিতাব অনুবাদ করতেন তবে তিনি সম্পূর্ণ অনুবাদ সম্পন্ন করতে পারেন নি। তিনি ইহুদী ও খ্রীস্টধর্ম বিষয়ে পণ্ডিত ছিলেন এবং আব্রাহামিক ধর্মের গল্পগুলো যেমন নুহের গল্প, আদম হাওয়া কিংবা ইব্রাহিমের গল্প, সোলায়মান বা দাউদের গল্প, এগুলো সম্পর্কে ভালভাবে জানতেন। তিনি ছিলেন খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদের (মুহাম্মাদে প্রথম স্ত্রী) চাচাতো ভাই। হেরা পাহারের গুহায় গিয়ে প্রার্থনা করার সময় মুহাম্মদ একবার ভয় পেলে খাজিদা তাকে ওয়ারাকা বিন নওফলের কাছে নিয়ে আসেন এবং নওফল মুহাম্মদকে আশ্বস্ত করেন এই বলে যে, মুহাম্মদ নবী হয়ে গেছেন। একইসাথে ভবিষ্যতবানী করেন যে, মক্কার কুরাইশরা তাকে বহিষ্কার করবে। কারণ ইতিপূর্বে তার খুবই ঘনিষ্ট সহচর যায়দ ইবনে আমরের সাথেও একই ঘটনা ঘটেছিল। তার সম্পর্কে একটি জইফ হাদিসে বর্ণিত আছে, তিনি জান্নাতী [1], হাদিসটি জইফ হওয়ায় এখানে উল্লেখ করা হলো না। তবে বুখারীতে তার সম্পর্কে পরিষ্কার বিবরণ পাওয়া যায় [2] –
২। ইয়ামামার রাহমানের কাছ থেকে
“ইয়ামামার রাহমান” বা মুসাইলিমা বিন হাবিব ছিলেন বনু হানিফা গোত্রের একজন প্রভাবশালী নেতা এবং নবুওয়াতের দাবিদার। তার জন্ম ইয়ামামা অঞ্চলে হয়েছিল এবং তার গোত্র ছিল খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। মুসাইলিমার পৈতৃক নাম ছিল ইবনে হাবিব আল-হানিফি। তার অনুসারীদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন “রাহমানের রাসুল” নামে। মুসাইলিমা সেসময় পূর্ব আরবের একটি বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণ করতো। নবী মুহাম্মাদের থেকেও অধিক বৃহৎ অঞ্চল তার নিয়ন্ত্রণে ছিল। মুহাম্মদের জন্ম হয়েছিল একটি পৌত্তলিক পরিবারে, কিন্তু মুসাইলিমার জন্ম হয়েছিল পূর্ববর্তী নবী হযরত ইসা এর প্রবর্তিত ধর্ম খ্রিস্টান পরিবারে। এই কারণে তার অনুসারীগণ মনে করতেন, মুহাম্মদের চাইতে বংশের দিক দিয়ে এই ইয়ামামার রহমানই ইব্রাহিমের নিকটবর্তী। ঐতিহাসিক তথ্যানুযায়ী, মুসাইলিমা ৯ম হিজরিতে মদিনায় একটি প্রতিনিধিদলের সাথে উপস্থিত হন। যদিও প্রতিনিধিদল ইসলাম গ্রহণ করেছিল, মুসাইলিমা ইসলাম গ্রহণ না করে নিজের নবুওয়াতের দাবি করেছিলেন।
তার দেয়া শিক্ষা বর্তমানে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে তবে দাবেস্তান-এ-মাজাহেব নামক গ্রন্থে [3] সেগুলোর নিরপেক্ষ বর্ণনার উল্লেখ পাওয়া যায়। সে মদ ও শুঁকরের মাংস খেতে নিষেধ করতো, যে কোন দিকে মুখ করে দৈনিক তিনবার ঈশ্বরের উপাসনা করার নির্দেশ দিতো, রমজানের রাতে রোজা রাখার নির্দেশ দিতো এবং খাতনা করাকে অনাবশ্যক বলতো। সেই আল্লাহর বানী মানুষের মধ্যে প্রচার করতো, তার একটি বানীর উদাহরণ হচ্ছে,
“আল্লাহ গর্ভবতী মহিলাদের ওপর অনুগ্রহ করেছেন কেননা তিনি তাদের পেট থেকে চলাচল করতে সক্ষম মানুষ বের করেছেন – নাড়ীভুঁড়ি ও তরল পদার্থের মধ্য থেকে।”
ইসলামের প্রাথমিক ইতিহাসে ইয়ামামার যুদ্ধ একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই যুদ্ধে মুসলিম বাহিনী এবং মুসাইলিমার অনুসারীদের মধ্যে লড়াই হয়, যা ইসলামের প্রথম খলিফা আবু বকর (রা.)-এর নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছিল। এই যুদ্ধে মুসাইলিমা নিহত হন এবং মুসলিম বাহিনী বিজয় অর্জন করে। ইসলামের ইতিহাসে মুসাইলিমাকে “মুসাইলিমা আল-কাজ্জাব” (মিথ্যাবাদী মুসাইলিমা) বলা হয়, যা তার মিথ্যা নবুওয়াতের দাবির প্রতি একটি ইঙ্গিত। [4]
এই ইয়ামামার রাহমানের সম্পর্কে আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। আসুন তথ্যটি জেনে নেয়া যাক, [5] –
০৩। খ্রিস্টান গোলাম জাবরের কাছ থেকে
সীরাত গ্রন্থ থেকে এটিও জানা যায় যে, নবী মুহাম্মদ এক যুবক খ্রিস্টানের দোকানে বসে থাকতেন। যেই ক্রীতদাসের সাথে নবীর সুসম্পর্ক ছিল। আরবের পৌত্তলিকদের দাবী ছিল, এই খ্রিস্টান যুবকের কাছ থেকে নবী ইহুদি খ্রিস্টানদের বিভিন্ন গল্পকাহিনী শুনতেন। এমন হওয়া অস্বাভাবিক নয় যে, মুহাম্মদ এই গোলামের কাছ থেকে প্রাচীনকালে লোকমুখে প্রচলিত নবীদের গল্প শুনতো [6] [7] –
এবারে আসুন তাফসীরে মাযহারী থেকে সূরা নাহলের তাফসীরের একটি অংশ পড়ে নেয়া যাক, [8] –
০৪। খ্রিস্টান ওহী লেখকের অভিযোগ
সহিহ হাদিস থেকে জানা যায়, একজন শিক্ষিত খ্রিস্টান ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করলে মুহাম্মদ তাকে ওহী লেখার দায়িত্ব দেন। কিন্তু অল্প কিছুদিন পরেই সে ইসলাম ত্যাগ করে চলে যায়। তার বক্তব্য ছিল, সে মুহাম্মদকে যা লিখে দিতো তার চাইতে বেশি মুহাম্মদ জানতো না। আসুন সেই হাদিসগুলো পড়ি, যেখানে একজন শিক্ষিত খ্রিস্টান থেকে মুসলিম হওয়া ওহী লেখক ইসলাম ত্যাগ করে নবীর সম্পর্কে বলেছিলেন, তিনি যা লিখে দিতেন তার চেয়ে বেশি কিছু নবী জানতেন না [9]
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৬১/ মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
পরিচ্ছেদঃ ৬১/২৫. ইসলামে নুবুওয়াতের নিদর্শনাবলী।
৩৬১৭. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক খ্রিস্টান ব্যক্তি মুসলিম হল এবং সূরা বাকারাহ ও সূরা আলে-ইমরান শিখে নিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য সে ওহী লিখত। অতঃপর সে আবার খ্রিস্টান হয়ে গেল। সে বলতে লাগল, আমি মুহাম্মাদ -কে যা লিখে দিতাম তার চেয়ে বেশি কিছু তিনি জানেন না। (নাউজুবিল্লাহ) কিছুদিন পর আল্লাহ্ তাকে মৃত্যু দিলেন। খ্রিস্টানরা তাকে দাফন করল। কিন্তু পরদিন সকালে দেখা গেল, কবরের মাটি তাকে বাইরে নিক্ষেপ করে দিয়েছে। এটা দেখে খ্রিস্টানরা বলতে লাগল- এটা মুহাম্মাদ এবং তাঁর সাহাবীদেরই কাজ। যেহেতু আমাদের এ সাথী তাদের হতে পালিয়ে এসেছিল। এ জন্যই তারা আমাদের সাথীকে কবর হতে উঠিয়ে বাইরে ফেলে দিয়েছে। তাই যতদূর পারা যায় গভীর করে কবর খুঁড়ে তাকে আবার দাফন করল। কিন্তু পরদিন সকালে দেখা গেল, কবরের মাটি তাকে আবার বাইরে ফেলে দিয়েছে। এবারও তারা বলল, এটা মুহাম্মাদ ও তাঁর সাহাবীদের কান্ড। তাদের নিকট হতে পালিয়ে আসার কারণে তারা আমাদের সাথীকে কবর হতে উঠিয়ে বাইরে ফেলে দিয়েছে। এবার আরো গভীর করে কবর খনন করে দাফন করল। পরদিন ভোরে দেখা গেল কবরের মাটি এবারও তাকে বাইরে নিক্ষেপ করেছে। তখন তারাও বুঝল, এটা মানুষের কাজ নয়। কাজেই তারা লাশটি ফেলে রাখল। (মুসলিম ৫০/৫০ হাঃ ২৭৮১, আহমাদ ১৩৩২৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৩৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৩৫৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
আল-লুলু ওয়াল মারজান
৫০/ মুনাফিক ও তাদের হুকুম
পরিচ্ছেদঃ (মুনাফিক ও তাদের হুকুম)
১৭৭২. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক খ্রিস্টান ব্যক্তি মুসলিম হল এবং সূরাহ বাকারাহ ও সূরাহ আলে-ইমরান শিখে নিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য সে ওহী লিখত। অতঃপর সে আবার খ্রিস্টান হয়ে গেল। সে বলতে লাগল, আমি মুহাম্মাদ-কে যা লিখে দিতাম তার চেয়ে বেশি কিছু তিনি জানেন না। (নাউজুবিল্লাহ) কিছুদিন পর আল্লাহ্ তাকে মৃত্যু দিলেন। খ্রিস্টানরা তাকে দাফন করল। কিন্তু পরদিন সকালে দেখা গেল, কবরের মাটি তাকে বাইরে নিক্ষেপ করে দিয়েছে। এটা দেখে খ্রিস্টানরা বলতে লাগল- এটা মুহাম্মাদ এবং তার সাহাবীদেরই কাজ। যেহেতু আমাদের এ সাথী তাদের হতে পালিয়ে এসেছিল। এ জন্যই তারা আমাদের সাথীকে কবর হতে উঠিয়ে বাইরে ফেলে দিয়েছে। তাই যতদূর পারা যায় গভীর করে কবর খুঁড়ে তাকে আবার দাফন করল। কিন্তু পরদিন সকালে দেখা গেল, কবরের মাটি তাকে আবার বাইরে ফেলে দিয়েছে। এবারও তারা বলল, এটা মুহাম্মাদ ও তাঁর সাহাবীদের কাণ্ড। তাদের নিকট হতে পালিয়ে আসার কারণে তারা আমাদের সাথীকে কবর হতে উঠিয়ে বাইরে ফেলে দিয়েছে। এবার আরো গভীর করে কবর খনন করে দাফন করল। পরদিন ভােরে দেখা গেল কবরের মাটি এবারও তাকে বাইরে নিক্ষেপ করেছে। তখন তারাও বুঝল, এটা মানুষের কাজ নয়। কাজেই তারা লাশটি ফেলে রাখল।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ৬১ : মর্যাদা ও গুণাবলী, অধ্যায় ২৫, হাঃ ৩৬১৭; মুসলিম, পর্ব ৫০ : মুনাফিক ও তাদের হুকুম, অধ্যায়, হাঃ ২৭৮১
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
০৫। ওহী লেখক আবদুল্লাহ ইবনে সাদের অভিযোগ
প্রথমেই বলে নেয়া দরকার, মক্কা বিজয়ের সময় হযরত মুহাম্মদ উসমানের দুধভাই প্রখ্যাত ওহী লেখক আবু ইয়াহইয়া আবদুল্লাহ ইবন সাদ ইবন সারাহ আল আমিরি আল কুরাইশীকে হত্যার নির্দেশ দেন। তিনি আগে মুসলিম ছিলেন, পরে ইসলাম ত্যাগ করে মক্কায় পালিয়ে আসেন। তাকে নিয়ে মুহাম্মদের খুবই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পরতে হয়েছিল। কারণ সেই সময় উসমান সুপারিশ করেন যে, তাকে যেন ক্ষমা করা হয়। মুহাম্মদ না পারছিলেন তাকে হত্যা করতে, না পারছিলেন জীবিত রাখতে। এক অস্বস্তিকর উভয় সঙ্কট উপস্থিত হয়েছিল। মনে মনে চাচ্ছিলেন, কেউ তাকে হত্যা করুক, কিন্তু চক্ষুলজ্জার খাতিরে তা করতেও পারছিলেন না। এর পরিষ্কার বিবরণ পাওয়া যায় আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থে [10]
কিন্তু কী এমন ঘটেছিল, কে ছিল এই লোক? যাকে মুহাম্মদ এত তীব্রভাবে ঘৃণা করতো যে, তাকে হত্যার হুকুম দিয়েছিল এবং উসমানের সুপারিশের পরেও মনে মনে তাকে হত্যা করতে চেয়েছিল? এর বিবরণ পাওয়া যায় তাফসীরে মাযহারীতে [11] –
সহিহ হাদিস থেকেও জানা যায়, মুহাম্মদের মক্কা বিজয়ের পরে সে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য হয়, কিন্তু মুহাম্মদ তাকে হত্যার ইচ্ছাই করেছিলেন [12] –
সুনান আবূ দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৯/ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ ২১. ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার আগে, কোন বিধর্মী বন্দীকে হত্যা করা।
২৬৭৪. ’উসমান ইবন আবূ শায়বা (রহঃ) …. সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চারজন ও দুইজন মহিলা ব্যতীত অন্যান্য সকলকে নিরাপত্তা প্রদান করেন এবং তিনি তাদের নামও ঘোষণা করেন। আর ইবন আবূ সারাহ্ … এরপর হাদীস বর্ণিত হয়েছে। রাবী সা’দ বলেনঃ ইবন রাবী সারাহ্ ’উছমান (রাঃ) এর নিকট আত্মগোপন করে থাকেন। এরপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বায়াত গ্রহণের জন্য সকলকে আহ্বান জানান, তখন উছমান (রাঃ) তাকে সঙ্গে নিয়ে আসেন এবং তাকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে দাঁড় করে দেন এবং বলেনঃ হে আল্লাহর নবী! আপনি ’আবদুল্লাহকে বায়াত করান। তিনি তাঁর মাথা উঠান এবং তিনবার তার দিকে তাকান এবং প্রত্যক বারই বায়াত করাতে অস্বীকার করেন।
তৃতীয় বারের পর তিনি তাকে বায়াত করান, পরে তিনি তাঁর সাহাবীদেরকে বলেনঃ তোমাদের মাঝে এমন কোন চালাক লোক কি ছিল না, যখন সে আমাকে দেখল যে, আমি তাকে বায়াত করাচ্ছি না, তখন কেন সে তাকে হত্যা করল না? তাঁরা (সাহাবীরা) বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমরা তো আপনার অন্তরের কথা বুঝতে পারিনি। আপনি (এ ব্যাপারে) চোখ দিয়ে কেন আমাদেরকে ইশারা করলেন না? তিনি বললেনঃ কোন নবীর জন্য এ উচিত নয় যে, সে চোরা দৃষ্টিতে তাকাবে।
আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেনঃ আবদুল্লাহ্ ছিলেন ’উছমান (রাঃ) এর দুধ ভাই এবং ওয়ালীদ ইবন ’উকবা ছিলেন ’উছমান (রাঃ) এর বৈমাত্রেয় ভাই। উছমান (রাঃ) তাঁর শাসনামলে মদ্যপানের অভিযোগে তাকে শাস্তি দেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সা’দ বিন আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ)
আসুন কোরআনের সেই আয়াতটি পড়ে নিই, পড়ে দেখুন আয়াতটির বাক্যের গঠনের সমস্যা [13]
Then We made the sperm-drop into a clinging clot, and We made the clot into a lump [of flesh], and We made [from] the lump, bones, and We covered the bones with flesh; then We developed him into another creation. So blessed is Allāh, the best of creators.
— Saheeh International
পরে আমি শুক্রবিন্দুকে পরিণত করি জমাট বাঁধা রক্তে, অতঃপর মাংসপিন্ডকে পরিণত করি হাড্ডিতে, অতঃপর হাড্ডিকে আবৃত করি মাংস দিয়ে, অতঃপর তাকে এক নতুন সৃষ্টিতে উন্নীত করি। কাজেই সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ কতই না মহান!
— Taisirul Quran
পরে আমি শুক্রবিন্দুকে পরিণত করি রক্তপিন্ডে, অতঃপর রক্তপিন্ডকে পরিণত করি মাংসপিন্ডে এবং মাংসপিন্ডকে পরিণত করি অস্থিপঞ্জরে; অতঃপর অস্থিপঞ্জরকে ঢেকে দিই মাংস দ্বারা; অবশেষে ওকে গড়ে তুলি অন্য এক সৃষ্টি রূপে; অতএব নিপুণতম স্রষ্টা আল্লাহ কত কল্যাণময়!
— Sheikh Mujibur Rahman
তারপর শুক্রকে আমি ‘আলাকায় পরিণত করি। তারপর ‘আলাকাকে গোশতপিন্ডে পরিণত করি। তারপর গোশতপিন্ডকে হাড়ে পরিণত করি। তারপর হাড়কে গোশ্ত দিয়ে আবৃত করি। অতঃপর তাকে অন্য এক সৃষ্টিরূপে গড়ে তুলি। অতএব সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ কত বরকতময়!
— Rawai Al-bayan
তথ্যসূত্র
- সূনান তিরমিজী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ২২৯১ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৪৫৯০ [↑]
- “The DABISTÁN, or SCHOOL OF MANNERS”। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০১৫ [↑]
- Ibn Hisham, Sirat Rasul Allah, Vol. 2, p. 546 [↑]
- আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, তৃতীয় খণ্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, পৃষ্ঠা ৯৯ [↑]
- সীরাতুন নবী (সা), দ্বিতীয় খণ্ড, ইবনে হিশাম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, পৃষ্ঠা ৯৯ [↑]
- সীরাতে রাসুলাল্লাহ , ইবনে ইসহাক, অনুবাদঃ শহীদ আখন্দ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, পৃষ্ঠা ২১৪ [↑]
- তাফসীরে মাযহারী, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫৮৬, ৫৮৭ [↑]
- সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন, হাদিসঃ ৩৬১৭ [↑]
- আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, আল্লামা ইবনে কাসীর, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫১১ [↑]
- তাফসীরে মাযহারী, আল্লামা কাজী মুহাম্মদ ছানাউল্লাহ পানিপথী, হাকিমাবাদ খানকায়ে মোজাদ্দেদিয়া প্রকাশনী, চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৬০-২৬১ [↑]
- সুনান আবূ দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), হাদিসঃ ২৬৭৪ [↑]
- সূরা আল-মুমিনুন , আয়াত ১৪ [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"