নবী মুহাম্মদ নিজেই বলেছেন, যে ফাতিমাকে কষ্ট দেয় সে যেন আমাকেই কষ্ট দেয় [1]। মুহাম্মদ এটিও বলেন, ফাতিমা আমারই অঙ্গ।[2] ।এখন আসুন দেখি, ইসলামের প্রথম খলিফা আবু বকর এবং দ্বিতীয় খলিফা উমর, এই দুইজন ফাতিমাকে কষ্ট দিয়েছিল কিনা। উল্লেখ্য, বিভিন্ন শিয়া সূত্র থেকে দাবী করা হয়, নবী মুহাম্মদের জীবদ্দশায় তিনি ইহুদীদের থেকে দখল করা জমি ফাদাক তার কন্যা ফাতিমাকে দিয়েছিলেন [3] [4] [5] [6] [3] [7] –
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৭৩/ উত্তরাধিকার
পরিচ্ছেদঃ ১৭৯২. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকার হবে না, আর যা কিছু আমরা রেখে যাই সবই হবে সদাকাসরূপ
৬২৭০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রেখে যাওয়া সস্পত্তির) উত্তরাধিকারিত্ব চাওয়ার জন্য একদা ফাতিমা ও আব্বাস (রাঃ) আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) এর কাছে আসলেন। তাঁরা ঐ সময় ফাদাক ভূখণ্ডের এবং খায়বারের অংশ দাবি করছিলেন। তখন আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) তাদের উভয়ের প্রতি লক্ষ্য করে বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকারী হবে না, আমরা যা রেখে যাব তা সবই হবে সাদাকা। এ মাল থেকে মুহাম্মাদসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার ভোগ করবেন। আবূ বকর (রাঃ) বলেনঃ, আল্লাহর কসম! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমি এতে যেভাবে করতে দেখেছি, তা সেভাবেই বাস্তবায়িত করব। রাবী বলেন, এরপর থেকে ফাতিমা (রাঃ) তাঁকে পরিহার করেছিলেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত তার সাথে কথা বলেন নাই।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪৮/ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ ১৯৪১. খুমুস (এক-পঞ্চমাংশ) নির্ধারিত হওয়া
২৮৭৪। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … উম্মূল মুমিনীন আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ফাতিমা বিনতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) এর নিকট রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকালের পর তাঁর মিরাস বন্টনের দাবী করেন। যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফায় (বিনা যুদ্ধে লব্ধ সম্পদ) হিসাবে আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক তাঁকে প্রদত্ত সম্পদ থেকে রেখে গেছেন। তখন আবূ বাকর (রাঃ) তাঁকে বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমাদের পরিত্যাক্ত সম্পদ বন্টিত হবে না আমরা যা ছেড়ে যাই, তা সাদকা রূপে গণ্য হয়।’ এতে ফাতিমা বিনতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসন্তুষ্ট হলেন এবং আবূ বকর (রাঃ) সিদ্দীক এর সঙ্গে কথাবার্তা বলা ছেড়ে দিলেন। এ অবস্থা তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত বহাল ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের পর ফাতিমা (রাঃ) ছয় মাস জীবিত ছিলেন।
আয়িশা (রাঃ) বলেন, ফাতিমা (রাঃ) আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)-এর নিকট রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক ত্যাজ্য খায়বার ও ফাদাকের ভূমি এবং মদিনার সাদকাতে তাঁর অংশ দাবী করেছিলেন। আবূ বকর (রাঃ) তাঁকে তা প্রদানে অস্বীকৃতি জানান এবং তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা আমল করতেন, আমি তাই আমল করব। আমি তাঁর কোন কিছুই ছেড়ে দিতে পারি না। কেননা, আমি আশঙ্কা করি যে, তাঁর কোন কথা ছেড়ে দিয়ে আমি পথভ্রষ্ট হয়ে না যাই। অবশ্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মদিনার সাদকাকে উমর (রাঃ) তা আলী ও আব্বাস (রাঃ) কে হস্তান্তর করেন। আর খায়বার ও ফাদাকের ভূমিকে পূর্ববৎ রেখে দেন।
উমর (রাঃ) এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এ সম্পত্তি দু’টিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জরুরী প্রয়োজন পূরণ ও বিপথকালীন সময়ে ব্যায়ের জন্য রেখেছিলেন। সুতরাং এ সম্পত্তি দু’টি তারই দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে, যিনি মুসলমানদের শাসন ক্ষমতার অধিকারী খলিফা হবেন।’ যুহরী (রহঃ) বলেন, এ সম্পত্তি দু’টির ব্যবস্থাপনা অদ্যবধি সেরূপই রয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৭৩/ উত্তরাধিকার
পরিচ্ছেদঃ ১৭৯২. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকার হবে না, আর যা কিছু আমরা রেখে যাই সবই হবে সদাকাসরূপ
৬২৭৪। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের পর তার সহধর্মিণীগণ আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) এর কাছে আপন আপন উত্তরাধিকার চাওয়ার জন্য উসমান (রাঃ) কে পাঠানোর ইচ্ছা করলেন। তখন আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি এরূপ বলেননি, আমাদের কোন উত্তরাধিকারী নেই? আমরা যা রেখে যাব সবই হবে সাদাকাতুল্য।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
৬৪/ মাগাযী (যুদ্ধ)
পরিচ্ছেদঃ ৬৪/১৪. দু’ ব্যক্তির রক্তপণের ব্যাপারে আলোচনা করার জন্য রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বানী নাযীর গোত্রের নিকট গমন এবং তাঁর সঙ্গে তাদের বিশ্বাসঘাতকতা বিষয়ক ঘটনা।
৪০৩৫. ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, ফাতিমাহ এবং ‘আব্বাস (রাঃ) আবূ বাকরের কাছে এসে ফাদাক এবং খাইবারের (ভূমির) অংশ দাবী করেন। (৩০৯২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৭৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৭৩৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৭৩/ উত্তরাধিকার
পরিচ্ছেদঃ ১৭৯২. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকার হবে না, আর যা কিছু আমরা রেখে যাই সবই হবে সদাকাসরূপ
৬২৭০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রেখে যাওয়া সস্পত্তির) উত্তরাধিকারিত্ব চাওয়ার জন্য একদা ফাতিমা ও আব্বাস (রাঃ) আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) এর কাছে আসলেন। তাঁরা ঐ সময় ফাদাক ভূখণ্ডের এবং খায়বারের অংশ দাবি করছিলেন। তখন আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) তাদের উভয়ের প্রতি লক্ষ্য করে বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকারী হবে না, আমরা যা রেখে যাব তা সবই হবে সাদাকা। এ মাল থেকে মুহাম্মাদসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার ভোগ করবেন। আবূ বকর (রাঃ) বলেনঃ, আল্লাহর কসম! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমি এতে যেভাবে করতে দেখেছি, তা সেভাবেই বাস্তবায়িত করব। রাবী বলেন, এরপর থেকে ফাতিমা (রাঃ) তাঁকে পরিহার করেছিলেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত তার সাথে কথা বলেন নাই।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
মুসনাদে আহমাদ
মুসনাদে আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) (আবু বকরের বর্ণিত হাদীস)
পরিচ্ছেদঃ
৫৫। একবার ফাতিমা (রাঃ) আবু বাকর আস সিদ্দিক (রাঃ) এর নিকট দূত পাঠিয়ে তাঁর কাছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সেই সম্পত্তির উত্তরাধিকার চাইলেন, যা তাঁকে আল্লাহ মদীনায় ও ফাদাকে দিয়েছিলেন এবং খায়বারের এক পঞ্চমাংশের অবশিষ্টাংশ। আবু বাকর (রাঃ) জবাব দিলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমরা (নবীরা) উত্তরাধিকার সূত্রে কোন সম্পত্তি হস্তান্তর করিনা। আমরা যে সম্পত্তি রেখে যাই তা সাদাকা। এই সম্পত্তি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় যে অবস্থায় ছিল, আমি তাকে কখনো সেই অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় পরিবর্তিত করবো না এবং সাদাকার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা করেছেন, আমি অবশ্যই ঠিক তাই করবো।
এভাবে আবু বাকর উক্ত সম্পত্তি থেকে ফাতিমাকে কিছুই দিলেন না। এ জন্য ফাতিমা আবু বকরের (রাঃ) ওপর রাগান্বিত হলেন। আবু বাকর (রাঃ) বললেনঃ সেই আল্লাহর কসম যার হাতে আমার জীবন, আমার নিকট রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আপন জনের সাথে সম্পর্ক বহাল রাখা আমার নিজের আপনজন অপেক্ষা অধিক প্রিয়। তবে এই সম্পত্তির ব্যাপারে তোমাদের ও আমাদের মধ্যে যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে, সে ক্ষেত্রে আমি ন্যায়নীতি থেকে বিচ্যুত হইনি এবং এই সম্পত্তির ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যা করতে দেখেছি, আমি তা করা থেকে বিরত হইনি।(১)
(১). বুখারী-৪২৪০, মুসলিম-১৭৫৯, অত্র গ্রন্থের হাদীস নং ৯ দ্রষ্টব্য
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, রাতের অন্ধকারে জনমানবশূণ্য জানাজা হয় নবী কন্যা ফাতিমার। হযরত আলী নিজেই জানাজা পড়িয়ে দাফন করে ফেলেন ফাতিমার লাশ। মৃত্যুর সময় ফাতিমা ওয়াসিয়ত করে যান যে, তার জানাজায় যেন আবু বকর এবং উমরের পক্ষ থেকে কেউ না আসে। আরো উল্লেখ্য, ফাতিমার মৃত্যুর পরে আলী আবু বকরকে একবার আলোচনার জন্য ডাকেন, এবং শর্ত দেন যে, এই আলোচনায় উমর যেন না থাকে। নিচের হাদিসগুলো দেখুন [8] [9] –
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৩৩/ জিহাদ ও এর নীতিমালা
পরিচ্ছেদঃ ১৬. নবী (ﷺ) এর বানীঃ আমাদের (নবীগনের) মীরাস বণ্টন হয় না, আমরা যা কিছু রেখে যাই সবই সদাকা
৪৪২৮। মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, ফাতিমা বিনত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বাকর এর নিকট লোক পাঠালেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সম্পদ থেকে তার প্রাপ্য মীরাস এর দাবী করে, যা আল্লাহ তা’আলা তাকে মদিনা ও ফাদাক এর ফাই এবং খায়বারের অবশিষ্ট এক পঞ্চমাংশ থেকে প্রদান করেছিলেন। তখন আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে গিয়েছেনঃ আমাদের (নবীগণের) (পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে) মীরাস হয় না। আমরা যা রেখে যাই তা হবে সাদাকা। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবারবর্গ তা থেকে জীবিকা গ্রহণ করবেন। আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময়কালে সাদাকার যে অবস্থা চালু ছিল তা আমি পরিবর্তন করব না। আর এতে আমি নিশ্চয়ই সে কাজ করবো, যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করে গিয়েছেন।
অতএব, আবূ বাকর (রাঃ) ফাতিমা (রাঃ) কে তা থেকে কিছু প্রদান করতে অস্বীকার করলেন। সুতরাং ফাতিমা (রাঃ) এতে রাগাম্বিত হয়ে তাঁকে পরিত্যাগ করলেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে (এ ব্যাপারে) আর কোন কথা বলেননি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকালের পর তিনি ছয় মাস জীবিত ছিলেন। এরপর যখন ইন্তিকাল করলেন তখন তাঁর স্বামী আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) তাকে রাতে দাফন করলেন এবং ফাতিমা এর মৃত্যু সংবাদ পর্যন্ত আবূ বাকর(রাঃ) কে দেননি। আলী (রাঃ) তাঁর জানাযার সালাত আদায় করলেন। ফাতিমা (রাঃ) এর জীবিতকাল পর্যন্ত আলী (রাঃ) এর প্রতি জনগণের বিশেষ মর্যাদাবোধ ছিল।
এরপর যখন তাঁর ইন্তেকাল হল তখন তিনি লোকের চেহারায় অন্যভাব দেখতে পেলেন। অতএব, তিনি আবূ বাকর (রাঃ) এর সঙ্গে আপোষ রফা করে, তার বায়আত গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহন করলেন। কয়েক মাস তিনি তার বায়আত করেননি। তারপর আলী (রাঃ), আবূ বাকর (রাঃ) এর নিকট লোক পাঠিয়ে সংবাদ দিলেন যে, আপনি একাকী আমাদের এখানে আসুন। আপনার সাথে অন্য কাউকে আনাবেন না। (কেননা তিনি উমার (রাঃ) এর আগমনকে অপছন্দ করছিলেন।) উমর (রাঃ) আবূ বকরকে বললেন, আল্লাহর কসম! আপনি একাকী তাঁদের কাছে যাবেন না। আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, তারা আমার সাথে কীই বা করবেন। আল্লাহর কসম! আমি একাকীই যাব। পরিশেষে আবূ বাকর (রাঃ) তাঁদের কাছে গেলেন।
এরপর আলী ইবনু আবূ তালেব (রাঃ) তাশাহুদ (তাওহীদ ও রিসালাতের সাক্ষ্য বানী) পাঠ করলেন, তারপর বললেন, হে আবূ বাকর! আপনার মর্যাদা এবং আল্লাহ তা’আলা আপনাকে যে সম্মান প্রদান করেছেন, তা আমরা জানি। আর আল্লাহ তা’আলা আপনাকে যে নিয়ামত প্রদান করেছেন, তাতে আমার কোন ঈর্ষা নেই। কিন্তু আপনি আমাদের উপর শাসন ক্ষমতায় (খিলাফতের) একচ্ছত্রতা দেখিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আত্নীয়তার কারণে আমরা মনে করতাম যে, আমাদেরও অধিকার আছে। আবূ বাকরের সঙ্গে তিনি কথা বলতে থাকলেন।
পরিশেষে আবূ বাকর (রাঃ) এর দু’চোখ থেকে অশ্রু প্রবাহিত হল। এরপর যখন আবূ বাকর (রাঃ) কথা বলতে শুরু করলেন, তখন তিনি বললেনঃ যার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ করে বলছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আত্নীয়তার সৌহার্দ্য-সংযোগ রক্ষা করা আমার আত্নীয়তার প্রতি সংযোগ রক্ষার চাইতে আমার কাছে অধিক প্রিয়। তবে আমার এবং আপনাদের মধ্যে এই সম্পদ নিয়ে যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে তাতে আমি সত্য পরিহার করি নি। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এতে যা করতে দেখেছি তা আমি পরিত্যাগ করি নি।
এরপর আলী (রাঃ), আবূ বাকর (রাঃ) কে বললেন যে, আমি বায়আতের জন্য আপনাকে আজ বিকেল বেলায় কথা দিলাম। যখন আবূ বাকর (রাঃ) যুহরের সালাত শেষ করলেন তখন তিনি মিম্বরে আরোহন করলেন এবং তাশাহুদ পাঠ করলেন। এরপর তিনি আলী (রাঃ) এর ঘটনা বর্ণনা করেন এবং তার বায়আত গ্রহণে বিলম্ব ও এ বিষয়ে তাঁর ওযর বর্ণনা করেন, যা আলী তার কাছে বর্ণনা করেছিল। এরপর তিনি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
তারপর আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) তাশাহুদ পাঠ করলেন এবং আবূ বাকর (রাঃ) এর মহত্ত্ব বর্ণনা করলেন। আর তিনি ব্যক্ত করলেন যে, তিনি যা করেছেন, তার কারণ আবূ বাকর (রাঃ) এর সঙ্গে প্রতিযোগিতা কিংবা আল্লাহ তা’আলা তাকে যে সম্মান দিয়েছেন তার প্রতি অস্বীকৃতি নয়; বরং আমরা মনে করতাম যে, শাসন ক্ষমতায় (খিলাফতের) মধ্যে আমাদেরও অংশ আছে। কিন্তু আবূ বাকর (রাঃ) আমাদের বাদ দিয়ে একচ্ছত্ররূপে দায়িত্বভার গ্রহন করেন। এতে আমরা মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছি।
এ কথা শুনে মুসলিমগণ আনন্দিত হলেন এবং তাঁরা বললেন যে, আপনি ঠিকই করেছেন। যখন তখন তিনি সঙ্গত বিষয়ের দিকে ফিরে এলেন আবূ বাকর (রাঃ) এর বায়আত গ্রহণ করলেন, তখন থেকে মুসলিমগণ আলী (রাঃ) এর সান্নিধ্যে আসতে লাগলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫১/ মাগাযী (যুদ্ধাভিযান)
পরিচ্ছেদঃ ২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৯২০। ইয়াহ্ইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কন্যা ফাতিমা (রাঃ) আবূ বকর (রাঃ) এর নিকট রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ত্যাজ্য সম্পত্তি মদিনা ও ফাদকে অবস্থিত ফাই (বিনা যুদ্ধে প্রাপ্ত সম্পদ) এবং খায়বারের খুমুসের (পঞ্চমাংশ) অবশিষ্টাংশ থেকে মিরাসী স্বত্ব চেয়ে পাঠালেন। তখন আবূ বকর (রাঃ) উত্তরে বললেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে গেছেন, আমাদের (নবীদের) কোন ওয়ারিস হয় না, আমরা যা রেখে যাবো তা সাদকা হিসেবে পরিগণিত হবে। অবশ্য মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বংশধরগণ এ সম্পত্তি কেবল ভোগ করতে পারেন। আল্লাহর কসম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাদকা তাঁর জীবদ্দশায় যে অবস্থায় ছিল আমি সে অবস্থা থেকে সামান্যতমও পরিবর্তন করবো না। এ ব্যাপারে তিনি যে নীতিতে ব্যবহার করে গেছেন আমিও ঠিক সেই নীতিতেই কাজ করবো।
এ কথা বলে আবূ বকর (রাঃ) ফাতিমা (রাঃ)-কে এ সম্পদ থেকে কিছু প্রদান করতে অস্বীকার করলেন। এতে ফাতিমা (রাঃ) (মানবোচিত কারণে) আবূ বকর (রাঃ)-এর উপর নারাজ হয়ে গেলেন এবং তাঁর থেকে নিস্পৃহ হয়ে রইলেন। পরে তাঁর ওফাত পর্যন্ত তিনি (মানসিক সংকোচের দরুন) আবূ বকর (রাঃ)-এর সাথে কথা বলেননি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের পর তিনি ছয় মাস পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। এরপর তিনি ইন্তেকাল করলে তাঁর স্বামী আলী (রাঃ) রাতের বেলা তাঁর দাফন কার্য শেষ করে নেন। আবূ বকর (রাঃ)-কেও এ সংবাদ দেননি। এবং তিনি তার জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নেন।
ফাতিমা (রাঃ) জীবিত থাকা পর্যন্ত লোকজনের মনে আলী (রাঃ) এর বেশ সম্মান ও প্রভাব ছিল। এরপর যখন ফাতিমা (রাঃ) ইন্তেকাল করলেন, তখন আলী (রাঃ) লোকজনের চেহারায় অসন্তুষ্টির চিহৃ দেখতে পেলেন। তাই তিনি আবূ বকর (রাঃ)-এর সাথে সমঝোতা ও তাঁর হাতে বায়আত গ্রহণের ইচ্ছা করলেন। (ফাতিমা (রাঃ)-এর অসুস্থতা ও অন্যান্য) ব্যস্ততার দরুন এ ছয় মাসে তাঁর পক্ষে বায়আত গ্রহণে অবসর হয়নি। তাই তিনি আবূ বকর (রাঃ)-এর কাছে লোক পাঠিয়ে জানালেন যে, আপনি আমার কাছে আসুন। তবে অন্য কেউ যেন আপনার সঙ্গে না আসে। কারণ আবূ বকর (রাঃ)-এর সঙ্গে উমর (রাঃ)-ও উপস্থিত হোক-তিনি তা পছন্দ করেননি। (বিষয়টি শোনার পর) উমর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম, আপনি একা একা তাঁর কাছে যাবেন না। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, তাঁরা আমার সাথে খারাপ আচরণ করবে বলে তোমরা আশংকা করছ? আল্লাহর কসম, আমি তাঁদের কাছে যাব।
তারপর আবূ বকর (রাঃ) তাঁদের কাছে গেলেন। আলী (রাঃ) তাশাহ্হুদ পাঠ করে বললেন, আমরা আপনার মর্যাদা এবং আল্লাহ্ আপনাকে যা কিছু দান করেছেন সে সম্পর্কে অবগত আছি। আর যে কল্যাণ (অর্থাৎ খিলাফত) আল্লাহ্ আপনাকে দান করেছেন সে ব্যাপারেও আমরা আপনার সাথে হিংসা রাখি না। তবে খিলাফতের ব্যাপারে আপনি আমাদের উপর নিজের মতের প্রাধান্য দিয়ে যাচ্ছেন অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটাত্মীয় হিসেবে খিলাফতের কাজে (পরামর্শ দেওয়াতে) আমাদেরও কিছু অধিকার রয়েছে। এ কথায় আবূ বকর (রাঃ)-এর চোখ-যুগল থেকে অশ্রু ঝরতে লাগলো। এরপর তিনি যখন আলোচনা আরম্ভ করলেন কখন বললেন, সেই সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ, আমার কাছে আমার নিকটাত্মীয় অপেক্ষাও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আত্মীয়বর্গ বেশি প্রিয়। আর এ সম্পদগুলোতে আমার এবং আপনাদের মধ্যে যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে সে ব্যাপারেও আমি কল্যাণকর পথ অনুসরণে কোন কসুর করিনি। বরং এ ক্ষেত্রেও আমি কোন কাজ পরিত্যাগ করিনি যা আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে করতে দেখেছি।
তারপর আলী (রাঃ) আবূ বকর (রাঃ) কে বললেনঃ যুহরের পর আপনার হাতে বায়আত গ্রহণের ওয়াদা রইল। যুহরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পর আবূ বকর (রাঃ) মিম্বরে বসে তাশাহ্হুদ পাঠ করলেন, তারপর আলী (রাঃ) এর বর্তমান অবস্থা এবং বায়আত গ্রহণে তার দেরি করার কারণ ও তাঁর (আবূ বকরের) কাছে পেশকৃত আপত্তিগুলো তিনি বর্ণনা করলেন। এরপর আলী (রাঃ) দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তাশাহ্হুদ পাঠ করলেন এবং আবূ বকর (রাঃ)-এর মর্যাদার কথা উল্লেখ করে বললেন, তিনি বিলম্বজনিত যা কিছু করেছেন তা আবূ বকর (রাঃ)-এর প্রতি হিংসা কিংবা আল্লাহ্ প্রদত্ত তাঁর এ সম্মানের অস্বীকার করার মনোবৃত্তি নিয়ে করেননি। (তিনি বলেন) তবে আমরা ভেবেছিলাম যে, এ ব্যাপারে আমাদের পরামর্শও দেওয়ার অধিকার থাকবে। অথচ তিনি ( আবূ বকর ) আমাদের পরামর্শ ত্যাগ করে স্বাধীন মতের উপর রয়ে গেছেন। তাই আমরা মানসিকভাবে ব্যথা পেয়েছিলাম। (উভয়ের এ আলোচনা শুনে) মুসলমানগণ আনন্দিত হয়ে বললেন, আপনি ঠিকই করেছেন। এরপর আলী (রাঃ) আমল বিল মা’রূফ (অর্থাৎ রায়আত গ্রহণ)-এর দিকে ফিরে এসেছেন দেখে সব মুসলমান আবার তাঁর প্রতি ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
আসুন এবারে আরো কয়েকটি হাদিস পড়ে নিই [10] [11] –
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৭৩/ উত্তরাধিকার
পরিচ্ছেদঃ ১৭৯২. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকার হবে না, আর যা কিছু আমরা রেখে যাই সবই হবে সদাকাসরূপ
৬২৭২। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … মালিক ইবনু আউস ইবনু হাদাছান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। মুহাম্মদ ইবনু জুবায়র ইবনু মুতঈম আমাকে (মালিক ইবনু আউস ইবনু হাদাছান) এর পক্ষ থেকে একটি ঘটনা বর্ণনা করলেন। তিনি বলেনঃ আমি মালিক ইবনু আউস (রাঃ) এর কাছে চলে গেলাম এবং ঘটনাটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তখন তিনি বললেন যে, আমি উমর (রাঃ) এর নিকট গিয়েছিলাম। এমন সময় তাঁর দারোয়ান ইয়ারফা সেখানে উপাস্থিত হয়ে বলল, আপনি উসমান, আবদুর রাহমান, যুবায়র ও সা’দ (রাঃ) কে ভিতরে আসার অনুমতি দিবেন কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি তাঁদেরকে ভিতরে প্রবেশ করার অনুমতি দিলেন। এরপর সে উমর (রাঃ) এর নিকট এসে বলল, আপনি আলী ও আব্বাস (রাঃ) কে ভিতরে আসার অনুমতি দিবেন কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ হে আমীরুল মুমিনীন! আমার এবং এর মাঝে মীমাংসা করে দিন।
উমর (রাঃ) বললেনঃ আপনাদেরকে আল্লাহর কসম দিয়ে বলি যার হুকুমে আকাশ ও যমীন প্রতিষ্ঠিত আছে; আপনারা কি জানেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, আমাদের কোন উত্তরাধিকারী থাকবে না, আমরা যা কিছু রেখে যাব সবই হবে সাদাকা স্বরূপ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দ্বারা নিজেকেই উদ্দেশ্য করেছিলেন। দলের লোকেরা বলল, অবশ্যই তিনি তা বলেছেন। এরপর তিনি আলী ও আব্বাস (রাঃ)-এর দিকে মুখ করে বললেনঃ আপনারা কি জানেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলেছিলেন? তারা উভয়ে জবাব দিলেন, অবশ্যই তিনি তা বলেছেন।
উমর (রাঃ) বললেনঃ এখন আমি এ ব্যাপারে আপনাদের কাছে বর্ণনা রাখছি যে, আল্লাহ তায়ালা এ ফায় (বিনা যুদ্ধেপ্রাপ্ত ধন সম্পদ) এর ব্যাপারে তার রাসুলকে বিশেষত্ব প্রদান করেছেন, যা আর অন্য কাউকে করেননি। তিনি (আল্লাহ তা’আলা) বলেনঃ مَا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ থেকেقَدِيرٌ পর্যন্ত তিলাওয়াত করে শোনালেন। এবং বললেনঃ এটা তো ছিল বিশেষ করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য। আল্লাহ তা’আলার কসম! তিনি আপনাদের ব্যতীত অন্য কারও জন্য এ মাল সংরক্ষণ করেননি। আর আপনাদের ব্যতীত অন্য কাউকে এতে প্রাধান্য দেননি। এ মাল তো আপনাদেরই তিনি দিয়ে গিয়েছেন এবং আপনাদের মাঝেই বণ্টন করেছেন। পরিশেষে এ মালটুকু অবশিষ্ট ছিল। তখন তিনি তার পরিবার-পরিজনের বছরের ভরণ-পোষনের জন্য এ থেকে খরচ করতেন। এরপর যা অবশিষ্ট থাকত তা আল্লাহর মাল হিসেবে (তার রাস্তায়) খরচ করতেন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার গোটা জীবদ্দশায়ই এরূপ করে গিয়েছেন। আমি আপনাদের আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, এ কথাগুলো কি আপনারা জানেন? তারা বললেনঃ হ্যাঁ। এরপর তিনি আলী (রাঃ) ও আব্বাস (রাঃ) এর দিকে লক্ষ্য করে বললেনঃ আমি আপনাদের দু’জনকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, আপনারা কি এ কথাগুলো জানেন? তাঁরা উভয়ে বললেনঃ হ্যাঁ। এরপর আল্লাহ তার নবীকে ওফাত দান করলেন তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ আমি আল্লাহর রাসুলের ওলী। এরপর উক্ত মাল হস্তগত করলেন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে তা ব্যবহার করেছিলেন তিনিও তা সেভাবে ব্যবহার করেছেন। এরপর আল্লাহ তাআলা আবূ বকর (রাঃ)-এর ওফাত দান করলেন। তখন আমি বললাম, আমি আল্লাহর রাসুলের ওলীর ওলী। আমি এ মাল হস্তগত করলাম এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ) এ মালের ব্যাপারে যে নীতি অবলম্বন করেছিলেন দু’বছর যাবত আমি এ মালের ব্যাপারে সেই নীতি অবলম্বন করে আসছি।
এরপর আপনারা আমার কাছে আসলেন আর আপনাদের উভয়ের বক্তব্যও এক এবং ব্যাপারটিও অনুরূপ। (হে আব্বাস (রাঃ)) আপনি তো আপনার ভাতিজার থেকে প্রাপ্য অংশ আমার কাছ চাইছেন। আর আলী (রাঃ) আমার কাছে তার স্ত্রীর অংশ যা তার পিতা থেকে প্রাপ্য আমার কাছে তলব করছেন। সুতরাং আমি বলছি, আপনারা যদি এটা চান তাহলে আমি আপনাদেরকে তা দিয়ে দিতে পারি। এরপর কি আপনারা অন্য কোন ফায়সালা আমার কাছে চাইবেন? ঐ আল্লাহর কসম! যার হুকুমে আকাশ ও যমীন প্রতিষ্ঠিত আছে। আমি যে ফায়সালা প্রদান করলাম কিয়ামত পর্যন্ত এ ছাড়া আর অন্য কোন ফায়সালা দিতে পারব না। আপনারা যদি এ ধনসম্পদের শৃংখলা বিধানে অক্ষম হন তবে তা আমার কাছে ফিরিয়ে দিবেন, আমি তার শৃংখলা বিধান করব।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ মালিক ইবনু আওস
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪৮/ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ ১৯৪১. খুমুস (এক-পঞ্চমাংশ) নির্ধারিত হওয়া
২৮৭৫। ইসহাক ইবনু মুহাম্মাদ ফারবী (রহঃ) … মালিক ইবনুু আউস ইবনু হাদাসান (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি আমার পরিবার-পরিজনের সাথে বসা ছিলাম, যখন রোদ প্রখর হল তখন উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এর দূত আমার নিকট এসে বলল, আমীরুল মুমিনীন আপনাকে ডেকে পাঠিয়েছেন। আমি তার সঙ্গে রওয়ানা হয়ে উমর (রাঃ) এর নিকট পৌঁছলাম। দেখতে পেলাম, তিনি একটি চাটাইয়ের উপর বসা ছিলেন। যাতে কোন বিছানা ছিল না। আর তিনি চামড়ার একটি বালিশে হেলান দিয়ে বসা ছিলেন। আমি তাঁকে সালাম করে বসে পড়লাম। তিনি বললেন, হে মালিক! তোমার গোত্রের কতিপয় লোক আমার নিকট এসেছেন। আমি তাদের জন্য স্বল্প পরিমাণ দান সামগ্রী প্রদানের আদেশ দিয়েছি। তুমি তা বুঝে নিয়ে তাদের মধ্যে বণ্টন করে দাও।
আমি বললাম, হে আমিরুল মুমিনীন! এ কাজটির জন্য আমাকে ছাড়া যদি অন্য কাউকে নির্দেশ দিতেন। তিনি বললেন, ওহে তুমি তা গ্রহণ কর। আমি তাঁর কাছেই বসা ছিলাম। এমন সময় তাঁর দারোয়ান ইয়ারফা এসে বলল, উসমান ইবনুু আফফান, আবদুর রাহমান ইবনু আওফ, যুবাইর ইবনু আওয়াম ও সা’দ ইবনু আবূ ওয়াককাস (রাঃ) আপনার কাছে প্রবেশের অনুমতি চাচ্ছেন। উমর (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ, তাঁদের আসতে দাও। তাঁরা এসে সালাম করে বসে পড়লেন। ইয়ারফা ক্ষণিক সময় পরে এসে বলল, আলী ও আব্বাস (রাঃ) আপনার সাক্ষাতের জন্য অনুমতির অপক্ষোয় আছেন। উমর (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ, তাঁদেরকে আসতে দাও। এরূপ তাঁরা উভয়ে প্রবেশ করে সালাম করলেন এবং বসে পড়লেন। আব্বাস (রাঃ) বললেন, হে আমিরুল মুমিনীন! আমার এ ব্যাক্তির মধ্যে মীমাংসা করে দিন।
বানূ নাযীরের সম্পদ থেকে আল্লাহ তা’আলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যা দান করেছিলেন, তা নিয়ে তাঁরা উভয়ে বিরোধ করছিলেন। উসমান (রাঃ) এবং তাঁর সাথীগণ বললেন, হ্যাঁ, আমীরুল মুমিনীন! এদের মধ্যে মীমাংসা করে দিন এবং তাঁদের একজনকে অপরজন থেকে নিরুদ্ধেগ করে দিন। উমর (রাঃ) বললেন, একটু থামুন। আমি আপনাদেরকে সে মহান সত্তার শপথ দিয়ে বলছি, যার আদেশ আসমান ও যমীন স্থির রয়েছে। আপনারা কি জানেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাদের (নবীগণ) মীরাস বন্টিত হয় না। আমরা যা রেখে যাই তা সাদকারূপে গণ্য হয়? এর দ্বারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেকেই উদ্দেশ্য করেছেন। উসমান (রাঃ) ও তাঁর সাথীগণ বললেন, হ্যাঁ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ বলেছেন।
এরপর উমর (রাঃ) আলী এবং আব্বাস (রাঃ) এর প্রতি লক্ষ্য করে বললেন, আমি আপনাদের আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি। আপনারা কি জানেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ বলেছেন? তাঁরা উভয়ে বললেন, হ্যাঁ, তিনি এরূপ বলেছেন। উমর (রাঃ) বললেন, এখন এ বিষয়টি সম্পর্কে আমি আপনাদের বুঝিয়ে বলছি। ব্যাপার হল এই যে, আল্লাহ তা‘আলা ফায় (যুদ্ধ ব্যতীত লব্ধ সম্পদ) এর সম্পদ থেকে স্বীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বিশেষভাবে করেছেন যা তিনি ছাড়া কাউকে দান করেন নি। এরপর উমর (রাঃ) নিম্নোক্ত আয়াতটি তিলাওয়াত করেনঃ
আর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূল কে তাদের অর্থাৎ ইয়াহুদীদের নিকট থেকে যে ফায় (যুদ্ধ ব্যতীত লব্ধ সম্পদ) দিয়েছেন, তজ্জন্য তোমরা ঘোড়া কিংবা উটে আরোহণ করে যুদ্ধ করোনি। আল্লাহ তা‘আলাই তো যাদের উপর ইচ্ছা তাঁর রাসূলগণকে কর্তৃত্ব দান করেন। আল্লাহ তা‘আলা সর্ববষিয়ে সর্বশক্তিমান (৫৯ঃ ৬)।
সুতরাং এ সকল নির্দিষ্টরূপে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য নির্ধারিত ছিল। কিন্তু আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সকল সম্পত্তি নিজের জন্য নির্দিষ্ট করে রাখেন নি এবং আপনাদের বাদ দিয়ে অন্য কাউকে দেননি। বরং আপনাদেরকেও দিয়েছেন এবং আপনাদের কাজেই ব্যয় করেছেন। এ সম্পত্তি থেকে যা উদ্ধৃত্ত রয়েছে, তা থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিজ পরিবার-পরিজনের বাৎসরিক খরচ নির্বাহ করতেন। এরূপ যা অবশিষ্ট থাকতো, তা আল্লাহর সম্পদে (বায়তুল মালে) জমা করে দিতেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আজীবন এরূপ করেছেন। আপনাদেরকে আল্লাহর কসম দিচ্ছি, আপনারা কি তা অবগত আছেন? তাঁরা বললেন, হ্যাঁ, আমরা অবগত আছি।
এরপর উমর (রাঃ) আলী ও আব্বাস (রাঃ) কে লক্ষ্য কবেললেন, আমি আপনাদের উভয়কে আল্লাহর কসম দিচ্ছি, আপনারা কি এ বিষয়ে অবগত আছেন? এরূপ উমর (রাঃ) বললেন, এরপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ওফাত দিলেন তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকে দায়িত্ব প্রাপ্ত একথা বলে তিনি এ সকল সম্পত্তি তিনি নিজ দায়িত্বে নিয়ে নেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সবের আয় উৎপাদন যে সব কাজে ব্যয় করতেন, সে সকল কাজে ব্যয় করেন। আল্লাহ তা‘আলা জানেন যে, তিনি এ ক্ষেত্রে সত্যবাদী, পূণ্যবান, সপথপ্রাপ্ত ও সত্যাশ্রয়ী ছিলেন।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা আবূ বকর (রাঃ) কে ওফাত দেন। এখন আমি আবূ বকর (রাঃ) এর পক্ষ থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত। আমি আমার খিলাফতকালের প্রথম দু’বছর এ সম্পত্তি আমার দায়িত্বে রেখেছি এবং এর দ্বারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ) যা যা করতেন তা করেছি। আল্লাহ তা‘আলাই জানেন যে, আমি এক্ষেত্রে সত্যবাদী, পূণ্যবান, সুপথপ্রাপ্ত ও সত্যাশ্রয়ী রয়েছি। এরপর এখন আপনার উভয়ে আমার নিকট এসেছেন। আর আমার সঙ্গে এ সম্পর্কে আলোচনা করেছেন এবং আপনাদের উভয়ের কথা একই। আর আপনাদের ব্যাপার একই। হে আব্বাস (রাঃ)! আপনি আমার নিকট আপনার ভ্রাতুষ্পুত্রের সম্পত্তির অংশের দাবী নিয়ে এসেছেন আর আলী (রাঃ)-কে উদ্দেশ্য করে বলেছেন যে, ইনি আমার নিকট তাঁর স্ত্রী কর্তৃক পিতার সম্পত্তিতে প্রাপ্য অংশ নিতে এসেছেন। আমি আপনাদের উভয়কেই বলছি যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমারা নবীগণের সম্পদ বন্টিত হয় না আমরা যা ছেড়ে যাই তা সা’দকারূপে গণ্য হয়।’ এরপর আমি সঙ্গত মনে করছি যে, এ সম্পত্তিকে আপনাদের দায়িত্বে অর্পণ করব।
এখন আমি আপনাদের বলছি যে, আপনারা যদি চান, তবে আমি এ সম্পত্তি আপনাদের নিকট সমর্পণ করে দিব। এ শর্তে যে, আপনাদের উপর আল্লাহ তা‘আলার প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার থাকবে, আপনারা এ সম্পত্তি আয় আমদানী সে সকল কাজে ব্যয় করবেন যে সকল কাজেরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আবু বকর (রাঃ) ও আমি আমার খিলাফতকালে এযাবৎ ব্যয় করে এসেছি। তদুত্তরে আপনারা বলেছেন, এ সম্পত্তিকে আমাদের নিকট সমর্পণ করুন। আমি উক্ত শর্তের উপর আপনাদের প্রতি সমর্পণ করেছি।
আপনাদেরকে (উসমান (রাঃ) ও তাঁর সাথীগণ) উদ্দেশ্য করে আমি আল্লাহর কসম দিচ্ছি যে, বলুন তো আমি কি তাদেরকে এ শর্তে এ সম্পত্তি সমর্পণ করেছি? তাঁরা বললেন, হ্যাঁ। এরপর উমর (রাঃ) আলী ও আব্বাস (রাঃ) এর প্রতি লক্ষ্য করে বললেন, আমি আপনাদের উভয়কে আল্লাহর কসম দিচ্ছি, বলুন তো আমি কি এ শর্তে আপনাদের প্রতি এ সম্পত্তি সমর্পণ করেছি? তাঁরা উভয়ে বললেন, হ্যাঁ। এরপর উমর (রাঃ) বললেন, আপনারা কি আমার নিকট এ ছাড়া অন্য কোন মীমাংসা চান? আল্লাহর কসম! যাঁর আদেশে আকাশ ও পৃথিবী আপন স্থানে প্রতিষ্ঠিত আছে, আমি এ ক্ষেত্রে এর বিপরীত কোন মীমাংসা করব না। যদি আপনারা এ শর্ত পালনে অপারগ হন, তবে এ সম্পত্তি আমার দায়িত্বে অর্পণ করুন। আপনাদের উভয়ের পক্ষ থেকে এ সম্পত্তি তত্ত্বাবধানে আমিই যথেষ্ট।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ মালিক ইবনু আওস
এই হাদিসটি বই থেকেই দেখে নিই, কীভাবে আলী এই সম্পত্তি ফেরত চাইতে গেলে উমর শর্ত জুড়ে দেন [12]
তথ্যসূত্র
- সহিহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, অষ্টম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪৯০, ৪৯১ [↑]
- সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৬০৮৮ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৬২৭০ [↑][↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ২৮৭৪ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৬২৭৪ [↑]
- সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, হাদিসঃ ৪০৩৫ [↑]
- মুসনাদে আহমাদ, হাদিসঃ ৫৫ [↑]
- সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৪৪২৮ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৩৯২০ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৬২৭২ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ২৮৭৫ [↑]
- সহিহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, পঞ্চম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৮৭-২৮৯, হাদিসঃ ২৮৭৫ [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"