বাচ্চারা অবুঝ, নিষ্পাপ এবং কৌতূহলী। তারা যেখানে যায়, সেখানেই খেলাধুলা করতে, আশেপাশের জিনিসপত্র আবিষ্কার করতে এবং মুক্তভাবে চলাফেরা করতে চায়। এটি মানবিক প্রবৃত্তির একটি সাধারণ দিক, যা প্রত্যেক শিশুর মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই থাকে। তাদের এই স্বাভাবিক আচরণকে দমন করা বা শাস্তি দেওয়া শুধু অবিবেচনাপ্রসূতই নয়, বরং বাচ্চাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত ক্ষতিকর। ইসলামের ইতিহাসে পাওয়া যায় যে, হযরত উমর বাচ্চাদের এই স্বভাবের জন্য তাদের মারধর করতেন। এমন আচরণ অত্যন্ত অমানবিক ও নির্মম, যা শিশুর শৈশব বিকাশের প্রতি এক বড় আঘাত। শিশুদের মনোবিজ্ঞান অনুযায়ী, শৈশবকালে তাদের খেলাধুলা, স্বাধীনভাবে চলাফেরা এবং আনন্দ করার প্রবণতা স্বাভাবিক বিকাশের একটি অংশ। তাদের স্বাভাবিক আচরণের কারণে শাস্তি দেওয়া, এমনকি মারধর করা মানসিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, যা পরবর্তীতে তাদের মধ্যে ভয়, আত্মবিশ্বাসের অভাব এবং একধরনের আতঙ্কের জন্ম দেয়।
একজন রাষ্ট্রনেতার কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ শুধু অমানবিকই নয়, বরং আদর্শগত দিক থেকেও অত্যন্ত নিন্দনীয়। শিশুদের প্রতি এ ধরনের কঠোরতা একটি সুস্থ, মানবিক সমাজ গঠনের পথকে বাধাগ্রস্ত করে এবং শিশুদের স্বাধীনতা ও স্বাভাবিক বিকাশের সুযোগ কেড়ে নেয়। হযরত উমরের কর্মকাণ্ড মুসলিমদের মধ্যে অনুকরণীয় জীবনাদর্শ হিসেবেই পরিগণিত। এই আচরণ থেকে শিক্ষা নিয়ে মাদ্রাসায় আমাদের ছাত্রছাত্রীদের কীরকম মারপিট করা হয়, তা আমরা সকলেই জানি। এধরনের আচরণ সম্পূর্ণরূপে অমানবিক, আধুনিক সভ্য সমাজের সভ্য আইনের সম্পূর্ণ বিরোধী, যা একদমই গ্রহণযোগ্য নয় এবং এর তীব্র সমালোচনা হওয়া প্রয়োজন। আসুন তাফসীরে ইবনে কাসীর থেকে তথ্যটি জেনে নেয়া যাক, [1]
তথ্যসূত্র
- তাফসীরে ইবনে কাসীর, অষ্টম খণ্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, পৃষ্ঠা ১২৫ [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"