5.1.মুয়াবিয়ার দরবারে নগ্ন দাসী

হযরত আমির মুয়াবিয়া বা‎‎ মুয়াবিয়া ইবনে আবি সুফিয়ান ছিলেন উমাইয়া সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ও ৬৬১ থেকে তার মৃত্যু পর্যন্ত তিনি ইসলামি সাম্রাজ্যের খলিফা ছিলেন। তিনি শুধু ইসলামের খুবই গুরুত্বপূর্ণ খলিফাই ছিলেন না, নবী মুহাম্মদের আপন শ্যালকও ছিলেন। তার আপন বোন উম্মে হাবিবা ছিলেন নবী মুহাম্মদের স্ত্রী। তার সম্পর্কে বেশ কিছু হাদিস বর্ণিত আছে, একটি হাদিসে বলা আছে, নবী মু’আবিয়ার জন্য প্রার্থণা করেন, হে আল্লাহ! তুমি তাকে পথপ্রদর্শক ও হেদায়াতপ্রাপ্ত বানাও এবং তার মাধ্যমে (মানুষকে) সৎপথ দেখাও।

সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
৪৬/ রাসূলুল্লাহ ﷺ ও তার সাহাবীগণের মর্যাদা
পরিচ্ছেদঃ ৪৮. মু’আবিয়াহ ইবনু আবী সুফইয়ান (রাযিঃ)-এর মর্যাদা
৩৮৪২। আবদুর রহমান ইবনু আবী উমাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবী ছিলেন; নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু’আবিয়া (রাযিঃ)-এর জন্য দু’আ করেনঃ “হে আল্লাহ! তুমি তাকে পথপ্রদর্শক ও হেদায়াতপ্রাপ্ত বানাও এবং তার মাধ্যমে (মানুষকে) সৎপথ দেখাও।
সহীহঃ মিশকাত (৬২৪৪), সহীহাহ (১৯৬৯)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুর রহমান ইবনু আবূ ‘আমীরাহ্ (রাঃ)

সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
৪৬/ রাসূলুল্লাহ ﷺ ও তার সাহাবীগণের মর্যাদা
পরিচ্ছেদঃ ৪৮. মু’আবিয়াহ ইবনু আবী সুফইয়ান (রাযিঃ)-এর মর্যাদা
৩৮৪৩। আবূ ইদরীস আল-খাওলানী (রহঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, “উমর ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) যখন উমাইর ইবনু সা’দ (রাযিঃ)-কে পদচ্যুত করে সে পদে মু’আবিয়াহ (রাযিঃ)-কে হিমসের গভর্নর নিযুক্ত করলেন তখন লোকেরা বলল, তিনি উমাইরকে পদচ্যুত করে সেই পদে মু’আবিয়াহকে শাসক নিযুক্ত করেছেন। উমাইর (রাযিঃ) বলেন, তোমরা মু’আবিয়াহকে ভালভাবে স্মরণ কর। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমি বলতে শুনেছিঃ হে আল্লাহ! তুমি তার মাধ্যমে (লোকদের) পথ দেখাও।
পূর্বের হাদীসের সহায়তায় সহীহ।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি গারীব। আমর ইবনু ওয়াকিদকে দুর্বল মনে করা হয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবু ইদরিস খাওলানী (রাঃ)

হাদীস সম্ভার
২৬/ ফাযায়েল
পরিচ্ছেদঃ মুআবিয়া (রাঃ) এর মাহাত্ম্য
(২৮৯২) ইরবায বিন সারিয়াহ সুলামী (রাঃ) বলেন, আমি শুনেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হে আল্লাহ! তুমি মুআবিয়াকে কিতাব ও হিসাব শিক্ষা দাও এবং আযাব থেকে রক্ষা কর।
(আহমাদ ১৭১৫২, ত্বাবারানীর কাবীর ৬২৮, সিঃ সহীহাহ ৩২২৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ ইরবায ইবনু সারিয়াহ্ (রাঃ)

একইসাথে জানা যায়, মু‘আবিয়াহ ছিলেন উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন সাহাবী এবং ফকীহ।

সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৬২/ সাহাবীগণ [রাযিয়াল্লাহ ‘আনহুম]-এর মর্যাদা
পরিচ্ছেদঃ ৬২/২৮. মু‘আবিয়াহ (রাঃ)-এর উল্লেখ।
৩৭৬৫. ইবনু আবূ মুলায়কাহ (রহ.) হতে বর্ণিত। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বলা হল, আপনি আমীরুল মু’মিনীন মু‘আবিয়াহ (রাঃ)-এর সঙ্গে এ বিষয় আলাপ করবেন কি? যেহেতু তিনি বিতর সালাত এক রাক‘আত আদায় করেছেন। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, তিনি ঠিকই করেছেন, কারণ তিনি নিজেই একজন ফকীহ্। (৩৭৬৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৯০)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ ইবন আবূ মুলায়কা (রহঃ)

ইসলামের ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব এই মু’আবিয়ার দরবারে দাসীদেরকে নগ্ন অবস্থায় উপস্থাপন করা হতো বলে আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থ থেকে জানা যায়। মু’আবিয়া দণ্ড দিয়ে সেই সব দাসীদের গোপনাঙ্গ নির্দেশ করে বলতেন, এই সম্ভোগ অঙ্গ যদি আমার হতো!

ইবনে আসাকির হযরত মু’আবিয়ায় আযাদকৃত গোলাম খোঁঁজা খাদীজের জীবনী আলোচনা প্রসঙ্গে তার উদ্ধৃতিতে উল্লেখ করেছেন,
(একবার) মু আবিরা (বা) একটি সুন্দরী ও ফর্সা বঁদী খরিদ করলেন, এরপর আমি তাকে বিবস্ত্র অবস্থায় তার সামনে পেশ করলাম, এ সময় তার হাতে একটি দণ্ড ছিল৷ তিনি তা দ্বারা তার বিশেষ অঙ্গের প্রতি নির্দেশ করে বলেন, এই সম্ভোগ অঙ্গ যদি আমার হত! তুমি তাকে ইয়াযীদ বিন মু’আবিয়ার কাছে নিয়ে যাও৷
… রাবী যখন তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করলেন, তখন তিনি তাকে বলেন, এই বাদীকে বিবস্ত্র অবস্থায় আমার সামনে আনা হয়েছে এবং আমি তার বিশেষ বিশেষ অঙ্গ দেখেছি, এখন আমি তাকে ইয়াযীদের কাছে পাঠাতে চাই৷ তিনি বললেন, না৷ আমীরুল মু’মিনীন ! আপনি তা করবেন না৷ কেননা, সে তার জন্য আর হালাল হবে না ৷ তিনি বলেন, তুমি অতি উত্তম রায় প্রদান করেছ৷
রাবী বলেন, এরপর তিনি হযরত ফতিমা (রা)-এর আযাদকৃত গোলাম আবদুল্লাহ বিন মাসআদা আল ফাযারীকে বাঁদীটি দান করেন৷ আর সে ছিল কৃষ্ণাঙ্গ, তইি তিনি তাকে বলেন, এর মাধ্যমে তোমার সন্তানাদিকে ফর্সা করে নাও৷ এ ঘটনা হযরত মুআবিয়ার ধর্মীয় বিচক্ষণতা ও অনুসন্ধিৎসার পরিচায়ক৷ যেহেতু তিনি কামভাবের সাথে বীদীটির দিকে তাকিয়ে ছিলেন৷ কিন্তু তাব ব্যাপারে নিজেকে দুর্বল গণ্য করেন (এবং তাকে গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন) তাই তিনি নিম্নের আয়াতের কারণে বাঁদীটি তার পুত্র ইয়াযীদকে দান করা থেকে বিরত থেকেছেন।

আসুন সরাসরি বই থেকেই এই অংশটুকু দেখে নিই, [1]

1

তথ্যসূত্র

  1. আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ইবনে কাসীর, খণ্ড ৮, পৃষ্ঠা ২৬৬ []


সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"