ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস গ্রন্থ আল বিদায়া ওয়ান নিহায়াতে ইমাম হাসান সম্পর্কে বলা আছে, [1]
ঐতিহাসিকগণ উল্লেখ করেছেন যে, হযরত হাসান (বা) বহু বিবাহকারী লোক ছিলেন ৷ সবসময় চারজন স্বাধীন মহিলা তার স্ত্রী হিসেবে থাকতেনই ৷ তিনি বহু স্ত্রীকে তালাক প্রদান করেছেন ৷ কথিত আছে যে, তিনি সর্বমোট ৭০ জন মহিলাকে বিবাহ করেছিলেন ৷ তারা আরো বলেছেন যে, একদিন তিনি তার দু ’জন স্ত্রীকে তালাক প্রদান করেছিলেন ৷ একজন ছিল বানূ আসাদ গোত্রের অন্যজন বানূ ফাযারা গোত্রের ৷ তারপর তিনি ওদের প্রত্যেককে ১০ হাজার দিরহাম ও কয়েক বোতল মধু প্রদান করেছিলেন ৷ তিনি তার সেবককে বলেছিলেন, ওরা কি মন্তব্য করে তা তুমি মনোযোগ দিয়ে শুনবে ৷ বস্তুত বানূ ফাযাৱা গোত্রের মহিলাটি উপহার পেয়ে বলেছিল, আল্লাহ্ তা জানা হযরত হাসান (রা) কে উত্তম প্রতিদান প্রদান করুন ৷’ সে হযরত হাসান (বা) এর জন্যে আরো দু অ৷ ও কল্যাণ কামনা করেছিল ৷ অন্যদিকে বানূ আসাদ গোত্রের মহিলাটি বলেছিল, “একজন ভালবাসার মানুষের সাথে বিচ্ছেদের মোকাবেলায় নিতাস্তই তুচ্ছ।” তার সেবক ফিরে এসে উভয়ের বত্তল্য জানাল ৷ পরবর্তীতে হযরত হাসান (রা) বানু আসাদ গোত্রের মহিলাটিকে দাম্পত্য জীবনে ফিরিয়ে নিলেন এবং বানূ ফাযারা গোত্রের মহিলাটিকে ত্যাগ করলেন ৷ হযরত আলী (রা) কুফার অধিবাসী লোকদেরকে বলতেন, তোমাদের মহিলাদেরকে হযরত হাসান (রা) এর নিকট বিয়ে দিও না ৷ কারণ সে একজন অতিশয় তালাক দানকারী পুরুষ ৷’ উত্তরে তারা বলত, আমীরুল মুমিনীন ! আল্লাহর কসম ! হযরত হাসান (রা) যদি প্রতিদিন আমাদের মহিলাদেরকে বিয়ে করতে চাইতেন তবে তাদের সকলকে আমরা তার নিকট বিয়ে দিয়ে দিব আর তা শুধু এই উদ্দেশ্যে যে, রাসুলুল্লাহ (সা) এর পরিবারের সাথে যেন আমরা বিবাহ সূত্রে আত্মীয় হতে পারি ৷
সেই সাথে, কিছু বর্ণনায় পাওয়া যায় যে, স্বয়ং হযরত আলীও হাসানের এই বিয়ে করার বাতিক নিয়ে বিরক্ত ছিলেন [2] –
আবু জাফর (র) বলেছেন যে, হযরত আলী (রা) বলেছেন, হে কুফার অধিৰাসীবৃন্দ! তোমরা তোমাদের কোন মহিলাকে হাসান (রা) এর নিকট বিয়ে দিও না ৷ কারণ সে অধিকহারে স্ত্রীদেকে তালাক দেয় ৷’ তখন হামাযান গোত্রের এক লোক বলল, আল্লাহর কসম ! আমরা অবশ্যই তার নিকট আমাদের মেয়েদেরকে বিয়ে দিব ৷ তারপর যাকে তার রাখতে মন চায়,- রাখবেন আর যাকে ইচ্ছা তালাক দিবেন’ ৷
উপরের বিবরণে দেখা যায়, ইমাম হাসান সেই ১৪০০ বছর আগেই এক একজন নারী ভোগ করে দশ হাজার দিরহাম দিয়ে বিদায় করে দিতেন। আবার অনেককে দিতেন আরো বেশি। আমরা প্রায়শই শুনতে পাই, নবী মুহাম্মদ এবং তার পরিবার নাকি খুব আর্থিক কষ্টে থাকতেন। তাদের নাকি খাবার মত টাকাপয়সাও ছিল না। অথচ, ইসলামিক সূত্রগুলো থেকে জানা যায়, নবীর দৌহিত্র খুবই বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন। মেয়েদের পেছনে প্রচুর টাকা ব্যয় করতেন। বিষয়গুলো অদ্ভুত না?
তথ্যসূত্র
- আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, অষ্টম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৮২ [↑]
- আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, অষ্টম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৮৩ [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"