ইসলামের বিধান অনুসারে, উম্মে ওয়ালাদ হচ্ছে যে দাসীর গর্ভে মনিবের সন্তান জন্ম নেবে তারা। অর্থাৎ দাসীর সাথে মলিবের সহবাসের ফলাফল হিসেবে যদি দাসীটি গর্ভবতী হয়ে যায়, তারাই উম্মে ওয়ালাদ বা সন্তানের মাতা। মালিকের মৃত্যুর পরে তারা স্বাধীনতা পায়। তবে সহিহ হাদিস থেকেই জানা যায়, নবীর যুগে উম্মে ওয়ালাদ বিক্রয় করা বৈধ ছিল। সাহাবীগণ সেটি করেছেন। কিন্তু উমর ক্ষমতায় এসে সেটি নিষিদ্ধ করেন।কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যেই বিষয়টি নবী নিষিদ্ধ করেননি, সেটি হযরত উমর কীভাবে নিষিদ্ধ করেন? আসুন হাদিস থেকে সরাসরি বিষয়টি দেখে নিই [1] –
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
২৪/ দাসত্বমুক্তি
পরিচ্ছেদঃ ৮. উম্মু ওয়ালাদ আযাদ হওয়া
৩৯৫৪। জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বাকরের যুগে উম্মু ওয়ালাদ বাঁদীদেরকে বিক্রি করেছি। পরবর্তীতে উমার (রাঃ)-এর যুগে তিনি আমাদের বারণ করায় আমরা বিরত হই।[1]
সহীহ।
[1]. বায়হাক্বী, হাকিম। ইমাম হাকিম বলেনঃ এই হাদীসটি মুসলিমের শর্ত মোতাবেক।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ)
সুনান ইবনু মাজাহ
১৩/ বিচার ও বিধান
পরিচ্ছেদঃ ১৩/৯৫. উম্মু ওয়ালাদ সম্পর্কে
৩/২৫১৭। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মাঝে জীবিত থাকা অবস্থায় আমরা আমাদের যুদ্ধবন্দিনী ক্রীতদাসী ও উম্মু ওয়ালাদ বিক্রয় করতাম। আমরা এটিকে দূষণীয় মনে করতাম না।
আবূ দাউদ ৩৯৫৪। সহীহাহ ২৪১৭।
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ)
বুলুগুল মারাম
পর্ব – ৭ঃ ক্ৰয়-বিক্রয়ের বিধান
পরিচ্ছেদঃ ১. ক্রয় বিক্রয়ের শর্তাবলী ও তার নিষিদ্ধ বিষয় – উম্মুল আলাদ (যে দাসীর গর্ভে মনিবের সন্তান জন্মগ্রহন করেছে তার) বিক্রয়ের বিধান
৭৯১. ইবনু ’উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উমার (রাঃ) জননী দাসী বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন, তিনি বলেছেন, বিক্রি করা যাবে না, হেবা (দান) করা যাবে না, ওয়ারিস হিসেবেও কেউ তাকে অধিগ্রহণ করতে পারবে না। তার মালিক যতদিন চাইবে ততদিন তার দ্বারা ফায়দা উঠাবে। মালিকের মৃত্যুর পর সে স্বাধীন হয়ে যাবে। —বাইহাকী বলেছেন- এ হাদীসের কিছু বর্ণনাকারী, অহম বা অনিশ্চয়তার ভিত্তিতে ’মারফূ’ বৰ্ণনা করেছেন।[1]
[1] ইবনু মাজাহ ২৫১৭, আবূ দাউদ ৩৯৫৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ)
উমরের বিধান অনুসারে, এরকম দাসী মনিবের মৃত্যুর পরে মুক্ত হয়ে যাবে, তবে মনিব জীবিত থাকা অবস্থায় সে সেই উম্মে ওয়ালাদকে দাসীর মতই ভোগ করতে পারবে, তাকে দিয়ে অর্থ উপার্জনও করতে পারবে। আসুন ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী থেকে এই বিষয়ক একটি মাসআলা দেখে নিই- [2]
কিন্তু উমরের এই বিধানের বিরুদ্ধে মত দিয়েছিলেন আরেক খলিফা হযরত আলী। আসুন সেটিও জেনে নেয়া যাক, [3] –
তথ্যসূত্র
- সুনানু ইবনে মাজাহ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৪৩৫ [↑]
- ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৩৭ [↑]
- তাহাবী শরীফ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫০৮ [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"