নবী মুহাম্মদের ছবি সংগ্রহশালা

মুহাম্মদ

মুসলিমদের মধ্যে একটি প্রচলিত ভুল ধারণা হচ্ছে, ইসলামের ইতিহাসে মুহাম্মদের ছবি কখনই আঁকা হয় নি, এবং এই বিষয়ে সবসময়ই কঠিন নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু সত্য হচ্ছে, সবসময় এই নিষেধাজ্ঞা এত কঠিন ছিল না। ইসলামের নানান শাখাপ্রশাখার মানুষ যুগে যুগে মুহাম্মদের প্রতিকৃতি অঙ্কন করেছেন। মধ্যযুগের অসংখ্য মুসলিম শিল্পী প্রায়শই মুহাম্মদকে চিত্রিত করে অসংখ্য ছবি আঁকেন এবং পাণ্ডুলিপি তৈরি করেন। তার বেশ কয়েকটি উদাহরণ এখানে উপস্থাপন করা হচ্ছে। যেসকল দেশে ইসলাম প্রবেশ করেছিল, সেই দেশগুলোর সেই যুগের শিল্পীরা নানা জনার মুখ থেকে বিবরণ শুনে, কখনো নিজের মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরি করেন অসংখ্য অমূল্য ছবি। তবে কিছু কিছু ছবিতে মুহাম্মদের মুখকে শিল্পীগণ ফাঁকা রেখেছিলেন যাতে জনগণ নবীকে নিজের মনের মাধুরী মিশিয়ে কল্পনা করে নিতে পারে, সেই সাথে মুহাম্মদের চিত্র আঁকার বিষয়ে ইসলামি নিষেধাজ্ঞাটিও মেনে চলে যায়। সেই নিয়েই আমাদের আজকের লেখাটি। পাঠকগণ মধ্যযুগের শিল্পকলা এবং চিত্রকলার ইতিহাস হিসেবে লেখাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন, পড়বেন, এবং সংগ্রহে রাখবেন, তাহলেই আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে।

ভবিষ্যতে হযরত মুহাম্মদের আরো কিছু ছবি যুক্ত হবে। যারা এই বিষয়ে আগ্রহী, তারা লেখাটিকে বুকমার্ক করে রাখতে পারেন।


মুহাম্মাদ (ডানদিকে) মক্কার নিকটবর্তী আরাফাতের ময়দানে দিচ্ছেন সেই বিখ্যাত বিদায়ী হজ্বের ভাষণ।
সংগ্রহ করা হয়েছে পারশ্যের প্রখ্যাত স্কলার আল বিরুনির মধ্যযুগীয় জ্যোতির্বিদ্যা বিষয়ক পাণ্ডুলিপি  The Remaining Signs of Past Centuries থেকে। বর্তমানে এটি রয়েছে প্যারিসের বিবলিওথেক ন্যাশিওনালে মিউজিয়ামে।
আগের ছবিটিরই আরেকটি সংস্করণ (প্রায় একই রকম, তবে ছোটখাটো পার্থক্য পাওয়া যায়),
এটিকে ত্রয়োদশ শতাব্দীর একটি পারশ্যের পাণ্ডুলিপি থেকে সংগ্রহ করা।
খুব সম্ভবত আল-বিরুনির বইটিরই একটি ভিন্ন সংস্করণ থেকে নেওয়া
এটি বর্তমানে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরী, স্কটল্যান্ড এ রয়েছে
এটি আলজেরিয়ার একটি রঙ্গিন পোস্টকার্ড। ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের সময় মুহাম্মাদকে কল্পনা করে তৈরি করা।
ভারতের উত্তরপ্রদেশ, লক্ষ্ণৌ থেকে প্রকাশ হওয়া একটি ছবি, যা বর্তমানে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার একটি আর্ট গ্যালারিতে সংরক্ষিত রয়েছে। ধারণা করা হয়, লক্ষ্ণৌতে যেসময়ে শিয়া মুসলিমদের প্রাধান্য ছিল, সেই সময়ে ছবিটি আঁকা হয়। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, মুহাম্মদ বুরাকে চড়ে আছে, এবং ছবিটির পোশাকে মুঘল আমলের ছাপ বেশ স্পষ্ট।

১৩০৭ সালে পারশ্য সাম্রাজ্যে রশিদ আল-দিন রচিত ‘জমি আল-তাওয়ারিখ’ গ্রন্থ থেকে সংগ্রহ করা। বর্তমানে ছবিটি স্কটল্যান্ডের
এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত রয়েছে। ছবিটিতে হেরা পাহাড়ের গুহাতে মুহাম্মদের কাছে প্রথমবার জিব্রাইল ওহী নিয়ে এসেছে, সেটি দেখা যাচ্ছে।

১৩০৭ সালে পারশ্য সাম্রাজ্যে রশিদ আল-দিন রচিত ‘জমি আল-তাওয়ারিখ’ গ্রন্থ থেকে সংগ্রহ করা। কিশোর মুহাম্মদকে ধর্মযাজক বাহিরা নবী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল, তার ছবি।

১৩০৭ সালে পারশ্য সাম্রাজ্যে রশিদ আল-দিন রচিত ‘জমি আল-তাওয়ারিখ’ গ্রন্থ থেকে সংগ্রহ করা। কিশোর মুহাম্মদ হাজরে আসওয়াদ পাথর নিয়ে মক্কায় যেই গণ্ডগোল হয়েছিল, তার সমাধান করে সবার মনযোগ আকর্ষণ করেছিলেন।

১৩০৭ সালে পারশ্য সাম্রাজ্যে রশিদ আল-দিন রচিত ‘জমি আল-তাওয়ারিখ’ গ্রন্থ থেকে সংগ্রহ করা। বর্তমানে ছবিটি স্কটল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত রয়েছে। ছবিটিতে মুহাম্মদের জন্ম দেখানো হচ্ছে।

ছবিটিতে মেরাজের ঘটনা চিত্রিত করা হয়েছে।
১৩০৭ সালে পারশ্য সাম্রাজ্যে রশিদ আল-দিন রচিত ‘জমি আল-তাওয়ারিখ’ গ্রন্থ থেকে সংগ্রহ করা। বর্তমানে ছবিটি স্কটল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত রয়েছে।

মুহাম্মদ (ডানদিকে) এবং আবু বকর মদিনা হিজরতের সময় একজন মহিলা ছাগলদের দুধ দোয়াচ্ছেন।
১৩০৭ সালে পারশ্য সাম্রাজ্যে রশিদ আল-দিন রচিত ‘জমি আল-তাওয়ারিখ’ গ্রন্থ থেকে সংগ্রহ করা। বর্তমানে ছবিটি স্কটল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত রয়েছে।
মুহাম্মদ, বোরক এবং জিব্রাইল জাহান্নাম পরিদর্শন করেন। জাহান্নামে অধিক সংখ্যক নারীদের দেখেন এবং লজ্জাহীন নারীদের শাস্তি দেয়া পরিদর্শোন করেন। ১৫ শতাব্দীর একটি পারশিয়ান গ্রন্থ থেকে ছবিটি পাওয়া গেছে।
কিয়ামতের দিন। ১৯ শতকের শেষের দিকে ছবিটি সম্ভবত আঁকা হয়েছিল।
১৫১৪ সালের উজবেকিস্তানের বুখারা নগরীতে আঁকা একটি ছবি।
Majmac al-tawarikh গ্রন্থ থেকে ।
সম্ভবত ১৪২৫ খ্রিস্টাব্দের পাওয়া গেছে আফগানিস্তানের হেরাত নগরী থেকে।

Majmac al-tawarikh গ্রন্থ থেকে ।
সম্ভবত ১৪২৫ খ্রিস্টাব্দের পাওয়া গেছে আফগানিস্তানের হেরাত নগরী থেকে।
মুহাম্মদের শেষ নামাজ। মধ্যযুগের শেষ দিকে আঁকা। পারশ্য সাম্রাজ্যের।
এই ছবিটির সময়কাল জানা যায় নি।
মুহাম্মদের সেনাদের কাছে ইহুদী গোত্র বানু নাদিরের আত্মসমর্পন। ১৩১৪ বা ১৩১৫ সালে প্রকাশিত জমি আল-তাওয়ারীখ গ্রন্থ থেকে।

মুহাম্মদের সেনারা বানু কুনাইকা গোত্র আক্রমণ করতে যাচ্ছে। ১৩১৪ বা ১৩১৫ সালে প্রকাশিত জমি আল-তাওয়ারীখ গ্রন্থ থেকে।
ইরানে আধুনিক সময়ে শিয়া মুসলমানদের আঁকা মুহাম্মদ অথবা আলীর প্রতিকৃতি
তুরষ্কের আলেভি সম্প্রদায়ের আঁকা একটি মুহাম্মদের প্রতিকৃতি

View Comments (5)

    • সত্য কে প্রকাশ করুন! আমরা পাশে আছি!

    • বিজ্ঞান, ইতিহাস, সংস্কৃতি, সভ্যতা নিয়ে আপনার ধারণা নেই, তাই না বুঝে এই মন্তব্যটা করেছেন। নবি মুহাম্মদের জন্মের হাজার বছর পূর্বের মেসোপটেমিয়া সভ্যতা, সিন্ধু সভ্যতা, মিশরীয় সভ্যতা, চৈনিক সভ্যতা ইত্যাদি সভ্যতা সম্পর্কে একটু জানুন, তারপর আপনার মতামত প্রকাশ করুন।

    • কেন রঙ্গীন হওয়ার কথা না? সে সময় রঙ তুলি আবিষ্কার হয়নি? সবাই শুধু পেন্সিল দিয়ে সাদাকালো ছবি আকতো?
      এর চেয়েও হাজার হাজার বছর আগের রঙ্গীন ছবি বিভিন্ন গুহায় আছে।

Leave a Comment