সুরা নিসা আয়াত ৩৪
আর যাদের (স্ত্রীদের) মধ্যে কোন অবাধ্যতা খুঁজে পাও তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না।
কোরআনের এই আয়াতের মাধ্যমে স্ত্রী প্রহারের বৈধতা প্রদানের পরও অনেকেই বিষয়টা লুকানোর চেষ্টা করে অথবা ভুল ব্যাখ্যা প্রদানের চেষ্টা করে থাকে। বিষয়টিকে ন্যায্যতা দানের উদ্দেশ্যে অনেক আধুনিক ইসলামিক বক্তা বিভিন্ন কুযুক্তির আশ্রয় নিয়ে থাকে। এটা নাকি প্রতীকী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এখানে নাকি ‘টুথব্রাশ’ বা ‘রুমাল’ ব্যবহার করে মারধোরের কথা বলা হয়েছে। অতি পুরানো কৌশল। বর্বরতা ঢাকতে নিজেদের মনগড়া ব্যাখ্যা দিয়ে জঘন্য মিথ্যাচার অথবা নিজেদের সুবিধামত অর্থ পরিবর্তন। কিন্তু ইসলামের আদেশ পরিবর্তন-পরিবর্ধন বা সংযোজন-বিয়োজনের কোন সুযোগ নেই। বিভিন্ন হাদীসেও স্ত্রী প্রহারের ব্যাপারে পরিষ্কার নির্দেশ রয়েছে। এ বিষয়ে কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করা হল:
হযরত আয়শা হতে বর্ণিত, তিনি (মুহাম্মদ) আমাকে বুকের ওপর আঘাত করলেন যা আমাকে ব্যথা দিল। (সহি মুসলিম, বই -৪, হাদিস -২১২৭)
স্ত্রীকে কেন প্রহার করা হলো সে বিষয়ে শেষ বিচারের দিন তাকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করা হবে না। (আবু দাউদ , বই নং- ১১, হাদিস -২১৪২)
গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫৪/ বিয়ে-শাদী (كتاب النكاح)
হাদিস নম্বরঃ ৪৮২৫২৫১৭. স্ত্রীদের প্রহার করা নিন্দনীয় কাজ এবং আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ (প্রয়োজনে) তাদেরকে মৃদু প্রহার কর
৪৮২৫। মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু যাম’আ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা কেউ নিজ স্ত্রীদেরকে গোলামের মতো প্রহার করো না। কেননা, দিনের শেষে তার সাথে তো মিলিত হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
আল্লামা হাফেজ ইমদাদুদ্দিন ইবন কাসীর ইতিহাসের অন্যতম প্রসিদ্ধ তাফসীরকারক। তার রচিত তাফসীর গ্রন্থ ‘তাফসীর ইবনে কাসীর’ তাফসীর জগতে বহুল পঠিত সর্ববাদী সম্মত নির্ভরযোগ্য এক অনন্য সংযোজন। হাফিজ ইমাদুদ্দীন ইবনে কাসীরের এই প্রামাণ্য তথ্যবহুল, সর্বজন গৃহীত ও বিস্তারিত তাফসীর পৃথিবীর প্রায় সকল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রেফারেন্স পাঠ্যপুস্তক হিসেবে গণ্য।
সূরা নিসার ৩৪ নম্বর আয়াত সম্পর্কে ইবনে কাসীরের তাফসীরে কি লেখা আছে? এটা কি আসলেই প্রতীকী অর্থে বলা হয়েছে? আসলেই কি রুমাল বা টুথব্রাশের মত কিছু দিয়ে মারার নির্দেশ আছে? সাহাবাদের মধ্যে কেউ কি কখনো স্ত্রী প্রহার করেছেন? ইসলামে কি স্ত্রী প্রহারের জন্য পরকালে শাস্তির বিধান আছে? তাফসীর থেকে হুবুহু তুলে ধরা হল। পড়ুন, বুঝুন এবং নিজেদের যুক্তিবুদ্ধি প্রয়োগ করুন। ধন্যবাদ।
Leave a Comment