বৌদ্ধসংশয়বাদ

বৌদ্ধ ধর্মে নরক

যাদের হার্টে সমস্যা তারা দয়া করে এই লেখাটি পড়বেন না।
বৌদ্ধ ধর্মে

বৌদ্ধরা একটি কথা বলতেই থাকে, বুদ্ধ কালাম সূত্রে বলেছেন, এসো, দেখো, ভাল লাগলে গ্রহণ কর, আমি বলেছি বলেই সত্য হবে তা নয়। এই কথা শুনলে কার না ভাল লাগে। কিন্তু তারা এটি বলে না যে, এটি বুদ্ধ ধর্ম প্রচারের প্রথম দিকের সূত্র যা কালামগণের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন। সব ধর্ম প্রবক্তাই প্রথম দিকে এই ধরণের উক্তি করে থাকেন বলে জানতে পারি।

অনেকেই দাবি করে বৌদ্ধ ধর্মে নাকি প্রচুর স্বাধীনতা আছে ধর্ম পালনের ব্যাপারে। কিন্তু বাস্তবতা পুরো ভিন্ন। অন্যান্য অনেক ধর্মের মতো বৌদ্ধ ধর্মেও স্বর্গ, নরক, ইহকাল, পরকাল এবং পূণঃজন্ম বিদ্যমান। বিশেষত নরকের বীভৎস বর্ণনা অনেক সুপ্রচলিত ধর্মকেও হার মানায়। গৌতম বুদ্ধ তাঁর শিষ্যগণকে নরকের দেশণা প্রদান করেন। নরকের নিরয়পালগণ (নরকের অধ্যক্ষ) নরকে পতিত লোকদেরকে নিম্নরূপ শাস্তি দিবেন।

১। প্রতি হাতে-পায়ে একটি করে উত্তপ্ত লৌহ পিন প্রবেশ করানো হবে এবং আরেকটি উত্তপ্ত লৌহ পিন বক্ষের মধ্যে প্রবেশ করানো হবে। কঠিন যন্ত্রণা কিন্তু কুকর্মের বিপাক শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যু হয় না।

বৌদ্ধ ধর্মে 2

২। তারপর তাকে শোয়াইয়া কুঠার দ্বারা ছিন্ন করা হবে। কঠিন যন্ত্রণা কিন্তু কুকর্মের বিপাক শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যু হয় না।

৩। পা উপরের দিকে মাথা নিচের দিকে করিয়া ক্ষুর দ্বারা কাটা হবে। কঠিন যন্ত্রণা কিন্তু কুকর্মের বিপাক শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যু হয় না।

৪। রথে বেঁধে প্রজ্জ্বলিত উত্তপ্ত ভূমিতে উপর নিচে চালিত করা হবে। কঠিন যন্ত্রণা কিন্তু কুকর্মের বিপাক শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যু হয় না।

৫। উত্তপ্ত জ্বলন্ত অঙ্গার পর্বতের উপর হতে নিচে ঠেলে দেয়া হবে। কঠিন যন্ত্রণা কিন্তু কুকর্মের বিপাক শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যু হয় না।

বৌদ্ধ ধর্মে 4

৬। পা উপরের দিকে মাথা নিচের দিকে করে তাকে উত্তপ্ত পিতলের কড়াইয়ে নিক্ষেপ করা হবে। সেখানে সে সিদ্ধ হবে আবার তরলের উপরিভাগে উঠাবে- নামাবে। কঠিন যন্ত্রণা কিন্তু কুকর্মের বিপাক শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যু হয় না।

৭। নরকের পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ উপর নিচে এক প্রাচীর হতে অপর প্রাচীরে তাকে দৌড়ানো করা হবে তখন তার গায়ের চামড়া, মাংস, অস্থি, স্নায়ু দগ্ধ ও ধূমায়িত আবার তাকে উত্তোলন করা হবে। কঠিন যন্ত্রণা কিন্তু কুকর্মের বিপাক শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যু হয় না।

বৌদ্ধ ধর্মে 6

৮। অনেক যন্ত্রণার পরে নরকের পূর্বদিকের দরজা খোলা হবে। তখন নরকবাসী দরজা খোলা দেখে খুশি হয়ে পালাতে চাইবে। কিন্তু বিধিবাম। সেখানে আরো সাংঘাতিক। সেখানে পায়াখানার পুকুরে পতিত হবে। সেখানে সূঁচালো মূখযুক্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাণীরা নরকবাসীর চামড়া, অস্থি, স্নায়ু, অস্থিমজ্জা সেই প্রাণীরা ভক্ষণ করিবে। কঠিন যন্ত্রণা কিন্তু কুকর্মের বিপাক শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যু হয় না।

৯। এর পরে নরকবাসীকে হিংস্রপ্রাণীযুক্ত নরকে নেয়া হবে। হিংস্র প্রাণীরা নরকবাসীদেরকে টুকরো টুকরো করে খাবে। কঠিন যন্ত্রণা কিন্তু কুকর্মের বিপাক শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যু হয় না।

১০। তারপরে নরকবাসীকে সিম্বলীবনে যা আদীপ্ত, সংপ্রজ্জ্বলিত, সজ্যের্তিভূত সেখানে উঠানো নামানো হবে। কঠিন যন্ত্রণা কিন্তু কুকর্মের বিপাক শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যু হয় না।

বৌদ্ধ ধর্মে 8

১১। তারপর তাদেরকে অসিপত্রবনে নেয়া হবে। সেই বনের বৃক্ষের পাতাগুলো সূঁচালো। সেই পাতাগুলো নরকবাসীর হাত, পা, কান, নাক ছিন্ন-ভিন্ন করবে। কঠিন যন্ত্রণা কিন্তু কুকর্মের বিপাক শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যু হয় না।

১২। তারপাশে আছে বৈতরণী নদী যা লবণাক্ত। সেখানে নরকবাসী এদিক সেদিক ভাসতে থাকবে এবং কঠিণ যন্ত্রণা ভোগ করবে। কঠিন যন্ত্রণা কিন্তু কুকর্মের বিপাক শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যু হয় না।

১৩। নিরয়পালগণ সেই নদী হতে বড়শি দিয়ে নরকবাসীদেরকে উত্তোলণ করে তাদেরকে তাদের ইচ্ছার কথা জানতে চাইবে। তখন নরকবাসীরা বলবে তারা ক্ষুধার্ত। তারপর নরকবাসীদের ক্ষুধা নিবারণের জন্য উত্তপ্ত লোহা খাওয়ানো হবে। তারপর নরকবাসীরা পানি চাইবে কিন্তু তাদেরকে পানির বদলে উত্তপ্ত গলিত তামা পান করানো হবে। কঠিন যন্ত্রণা কিন্তু কুকর্মের বিপাক শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যু হয় না।

১৪৷ চারি দরজা বিশিষ্ট মহানরক যা লৌহ প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত ও লৌহাবরণ দ্বারা বিভক্ত। এর ছাঁদ লোহার তৈরি। মেঝেও লোহা নির্মিত অতিশয় তেজযুক্ত ও উত্তপ্ত চর্তুদিকে শতযোজন পর্যন্ত আগুনের শিখা ছড়িয়ে থাকে। চলতেই থাকবে।

গৌতম বুদ্ধ এক্ষেত্রে ভিক্ষুগণকে বলেছেন, উপরোক্ত নরকের বিবরণগুলো কারো থেকে শুনে বলে নাই বরং তিনি স্বয়ং জ্ঞাত এবং তিনি সেগুলো দেখেছেন।
এরকম নরকের বর্ণনা দিয়ে ধর্ম প্রবর্তকরা কোন ধরনের মানবতার ধর্ম প্রচার করতে চায় তা আমার বোধগম্য নয়। ভয় দেখিয়ে কেন ভাল কাজ করতে বলা হবে? কারো বিভৎস, নোংরা, অমানবিক এবং স্বর্গে যাওয়ার আশায় কেন ভাল কাজ করতে হবে তা পাঠকরাই বিচার করবে।

রেফারেন্সঃ
১। পবিত্র ত্রিপিটকের, অঙ্গুত্তর নিকায়(প্রথম খন্ড), তিক নিপাত, দেবদূত বর্গ, অনুবাদঃ অধ্যাপক সুমঙ্গল বড়ুয়া।
২। পবিত্র ত্রিপিটকের, মধ্যম নিকায়(তৃতীয় খন্ড), শূণ্যতা বর্গ, দেবদূত সূত্র, অনুবাদঃ শ্রী বিনয়েন্দ্রনাথ চৌধুরী।

বৌদ্ধ ধর্মে 10
বৌদ্ধ ধর্মে 12
বৌদ্ধ ধর্মে 14

লিখেছেনঃ Sina Ali

9 thoughts on “বৌদ্ধ ধর্মে নরক

  • যুক্তিবাদী জ্যোতিশ্বর

    নরকের অস্তিত্ব?? ???? হাস্যকর।
    ,
    আপনি বুদ্ধের জায়গায় হলে কী করতেন আমি ভাবছি,যদি উনি এগুলো বলে থাকেন, প্রেক্ষাপট বিবেচনায় উনি বেশ করেছেন।
    ,
    হুট করেই যেমন মুসলমানরা নাস্তিক হতে পারে না তেমনি তিনি ও চাচ্ছিলেন হুট করেই না হয়ে আস্তে আস্তে পরিবর্তন আনা,
    ✓✓ এটা আমার মতামত।
    ,
    তাছাড়া আমার প্রশ্ন, গৌতম বুদ্ধই এই কথাগুলো বলেছেন তার প্রমাণ কী?? ত্রিপিটকে থাকলেই হয়ে গেল প্রমাণ??
    ,
    আরে ভাই ২৫০০ বছরের বেশি পুরনো তথ্য কী এতদিন অপরিবর্তিত থাকতে পারে?? যেখানে ত্রিপিটকই বহুবার পরিবর্তন হয়েছে সেখানে ত্রিপিটককে প্রমাণ হিসেবে কীভাবে নিতে পারেন আপনি??জাতকে প্রাণীরা কথা বলে, হাস্যকর।
    ,
    গৌতম বুদ্ধ নিজেও বলেছেন কোনো গ্রন্থকে অযৌক্তিকভাবে স্বতঃপ্রমাণিত স্বীকার না করতে।
    ,
    ত্রিপিটকে লেখা অযৌক্তিক অংশগুলো সংশোধন করা অসম্ভব কিছু নয়। কারণ এটাতো বুদ্ধেরই লেখা নয়।
    ,
    স্পষ্ট কথা, মহামতি গৌতম বুদ্ধ বলেছেন- গুরু বলেছে বলেই বিশ্বাস করতে হবে এমন কোন কথা নেই, জাতি বলেছে বলেই বিশ্বাস করতে হবে তাও নয়, শাস্ত্রে আছে বলেই মেনে নিতে হবে এমন নয়, আগে
    ✓✓✓✓✓বোধগম্য কিনা দেখো, পরীক্ষণ চালাও, ✓✓✓✓✓গ্রহণীয় হলে গ্রহণ করো
    ✓✓✓✓✓যেটা বাস্তবিক কল্যাণকর ও শ্রদ্ধার।
    ,
    আপনি নিশ্চয়ই এ কথাটা এখানে বিস্তারিত দেখেছেন,কেসমুত্তিসুত্ত,অঙ্গুত্তর শিখায়, সূত্র পিটক। আমি হুবুহু তুলে ধরি নি ।
    ,
    এজন্য আমরা ত্রিপিটকের পুরোপুরি তথ্য গ্রহণ করিনা।আমিও যুক্তিতে বিশ্বাস করি।
    ,
    বৌদ্ধ মতবাদ নিয়ে ব্লগে লিখতে কমপক্ষে পঞ্চাশ টা বই পড়ুন এবং আরো গভীর ভাবে গবেষণা করুন। আমার পছন্দের লেখক রাহুল সংকৃত্যায়ন।

    Reply
  • Dr.Sheikh Abdul Hannan

    মহামতি গৌতম বুদ্ধ মহাবিশ্বের একমাত্র সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সম্পর্কে কোন ধারনা দিয়ে যান নি। তার স্থানে কাল মহাকাল উল্লেখ করেছেন। এই কাল মহাকাল কে নিয়ন্ত্রন করেন?
    আর স্বর্গ নরক এবং বিচার কে করবে? মহাকাল নামক জড় বস্তুর কি শক্তি আছে
    দুঃখের সাথে বলতে হছে বৌদ্ধ ধর্ম ভুল, সংশয় আর অন্ধকারে ঢাকা।

    Reply
    • Mohammad Ackreman

      জ্বি ভাই! ইছলামই একমাত্র সত্য ধর্ম! আল্যাফাকই একমাত্র সত্য, বাকিসব ভুয়া! আপনারা যে উর্ধপোঁদ হয়ে দিনে পাঁচবেলা কিসব বুঙ্গাবুঙ্গা রে ডাকেন, কালোপাথর হাজর-এ-আসওয়াদরে গনচুমা দিতে আরবের দিকে দৌঁড়ান, পাথর দিয়া কিসব তিনটা খাম্বার দিকে ঢিলান, এগুলা কি সুসংস্কার?

      হিন্দু বৌদ্ধরা তো খালি ঘরের সাথে মূর্তির পূঁজা করে l আপনারা তো খালি ঘরের পূঁজা করেন ll মাইক লাগাইয়া দিনে ৫ বার হুঁক্কাহুয়া হুঁক্কাহুয়া করেন, উটের মুত ,কালোজিরা ইত্যাদি খান l তো এগুলা কোন সুসংস্কার এর আওতায় পড়ে?

      Reply
  • Mohammad Ackreman

    ২৫০০ বছর আগে গৌতম বুদ্ধের মতো এতো উন্নত চিন্তা কেউ করতে পারতো বলে মনে হয় না l

    এখানে নরকের বর্ণনা সনাতন ধর্মের সাথে হুবুহু মিলে যায় l বুদ্ধ আর মহাদেব শিবের বাণী মানবিক এবং উন্নত হলেও ধর্মগ্রন্থ পড়ে দেখা যায় ত্রিপিটকের বাণী অনেকাংশেই হিন্দুত্ববাদ বা সনাতনীদের সাথে মিলে যায় l ব্রাহ্মণরা যে বৌদ্ধধর্ম কে বিকৃত করে নাই সেটার গ্যারান্টি কি??

    যদি কোনোদিন সনাতন ধর্মের আরো প্রাচীন মনুস্ক্রিপ্ট পাওয়া যায় তাহলে দেখা যাবে ম্যাক্সিমাম অবতারবাদই ভুয়া, সব ব্রাহ্মণদের নিজস্বার্থে বিকৃত করা কাহিনী ছাড়া আর কিছু না l

    সিদ্ধার্থ হিন্দু পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন বলেই তাঁকে বিষ্ণু এর অবতার বানিয়ে দিতে হবে নাকি? কি আশ্চর্য, পুরাই মোহাম্মদদের ভুয়া আল্লাপাক আর ঈসা (Jesus Christ) নবীর যোগসাদৃশ্যের ব্যাপার-স্যাপার!!

    আর বিষ্ণু চরিত্রটিও তো পক্ষপাতদোষে ভীষণরকম দুষ্ট l

    Reply
  • ঞী

    কি মনে করেছিলেন ? অসৎ কর্মের কোনো বিচার হবে না?! দিনের পর দিন খারাপ কাজ করে যাবেন আর পার পেয়ে যাবেন?

    Reply
  • Raju

    ত্রিপিটক অনুযায়ী বুদ্ধ জন্মান্তরবাদ বা স্বর্গ নরক (পরলোক) সম্পর্কে অনেককিছু বললেও এসব বিশ্বাস না করলেও সমস্যা নাই বলেছেন, পরলোক বিশ্বাস না করেও যে সুখ লাভ করা যায় বুদ্ধ সেটা নিশ্চিত করেছেন। তবে এমন মানবিক সুখের জন্য বুদ্ধ সবসময় খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছেন।

    যেমন বুদ্ধ কালাম সূত্রে বলেছেন-
    ১৫. “হে কালামগণ, যখন আর্যশ্রাবক লোভহীন, বিদ্বেষহীন, মোহহীন, জ্ঞানসম্পন্ন আত্ম-সংযত স্মৃতিযুক্ত মৈত্রীচিত্ত, করুণা-চিত্ত, মুদিতাচিত্ত, উপেক্ষাশীল হন তিনি সমগ্র জগৎকে বিপুল অপ্রমাণ মৈত্রীধারায় পৱাবিত করিয়া একদিক পূর্ণ করিয়া অবস্থান করেন, তথা দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ দিকও। তদ্রূপ উর্ধ্ব, অধঃ, তির্যক সর্বত্র সর্ব প্রকার সর্বাবস্থায় জগৎ পূর্ণ করিয়া উপেক্ষা-সহগত চিত্তে বিপুল ও অপ্রমাণ মৈত্রী পোষণ করিয়া বিহার করেন। এইভাবে সেই আর্যশ্রাবক বৈরীশূন্য, বিদ্বেষশূন্য অসংক্লিষ্ট বিশুদ্ধচিত্ত হন, তিনি ইহজীবনেই চারি আশ্বাস লাভ করেন।”

    ১৬. “যদি পরলোক থাকে, সুকর্ম-দুষ্কর্মের ফল থাকে বিপাক থাকে তবে দেহভেদে মৃত্যু হইলে নিশ্চয়ই আমি সুগতি স্বর্গলোকে উৎপন্ন হইব।” ইহা তাঁহার প্রথম আশ্বাস। “যদি পরলোক না থাকে সুকর্ম দুষ্কর্মের ফল না থাকে তাহা হইলেও আমি ইহজীবনেই শত্রুতাশূন্য, দ্বেষশূন্য, উপদ্রবশূন্য সুখময় জীবনযাপন করি।” ইহা তাঁহার দ্বিতীয় আশ্বাস। “যদি পাপ করিলে পাপ হয় আমি পাপ চেতনা মনে স্থান দিই না। সুতরাং যদি আমি পাপ চিন্তা পোষণ না করি তাহা হইলে কিভাবে পাপ আমাকে স্পর্শ করিতে পারে?” ইহা তাঁহার তৃতীয় আশ্বাস। “যদি কর্মের ফলবশত আমি কোনো পাপ কর্ম না করি তাহা হইলে আমি উভয় প্রকারে শুদ্ধ জীবনযাপন করি।” ইহা তাঁহার চতুর্থ সুখ। “এইরূপেই কালামগণ, সেই আর্যশ্রাবক বৈরীশূন্য, দ্বেষশূন্য, উপদ্রবশূন্য, বিশুদ্ধচিত্ত হইয়া ইহজীবনেই এই চারি সুখ লাভ করেন।”

    Reply
  • প্রদীপ বড়ুয়া

    এসব গল্প বুদ্ধ বলেছেন ?? হা হা হা । ত্রিপিটক বুদ্ধ নিজে লিখেছেন ?? সরি , আপনি মিজগাইড করছেন। আপনাদের কারনে অশিক্ষিত লোকরা গৌতম কে নিয়ে বাজে সমালচনা করে। আপনি এনালাইসিস পএন নাই, টেক্সট পরে এই বয়ান ?
    ত্রিপিটকের গজামিল গুলো বুঝতে আপনাকে বুদ্ধের শিক্ষা এবং দর্শন নিয়ে পণ্ডিত দের (বিশেষত পশ্চিমা ) এনালাইসিস পরতে হবে।
    স্বরগ নরক যে টুকু বরনিত হয়েছে তা প্রতীকী এবং দ্বাদশ নিদান বা ভব চক্রের মাঝেই কর্ম ফলের প্রতীকী হিসাবে বরনিত হয়েছে । সেটাও স্থায়ী নয়।
    দয়া করে ভাল করে অধ্যয়ন করে লিখুন ।
    ত্রিপিটকের মাঝে বুদ্ধকে না খুঁজে তাঁর জিবনি পড়ুন । ত্রিপিটক গত ২৫০০ বছরে তার ক্রেডিবিলিটি হারিয়ে ফেলেছে। ওটা কোন ঐশ্বরিক বা নাজেল কৃত “পবিত্র” গ্রন্থ নয় । গৌতমের শিক্ষায় পবিত্র অপবিত্র বলে কিছুই নাই । প্রচলিত ভারতীয় আস্তিক ধর্মের পাপ পুণ্য স্বর্গ নরক অপরাধ শাস্তি এগুল নেই। বুদ্ধ শিষ্যদের বুঝার স্বার্থে এই টার্ম গুলো ইউজ করেছেন। বুদ্ধকে বুঝলে আপনি এই হরর গল্প লিখতেন না ।
    চাইলে বই গুলর নাম বলতে পারি ।
    ধন্যবাদ

    Reply
  • প্রদীপ বড়ুয়া

    ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধ শিক্ষা অনুসারে, একটা স্বর্গীয় জগৎ এবং একটা নরকের জগৎ আছে। আমাদের কর্মের উপর নির্ভর করে – এই জীবনে আমরা যেমন আচরণ করি তার ফলে ভবিষ্যৎ জীবনে যা ঘটে তার উপর নির্ভর করে – আমরা যেকোনো জগতে পুনর্জন্ম (বৌদ্ধদের পুনর্জন্মের সমতুল্য) পেতে পারি। নামগুলি থেকেই বোঝা যায়, স্বর্গ সুন্দর এবং নরক খুবই ভয়ানক। মানব জগৎ, প্রাণী জগৎ বা ‘ক্ষুধার্ত ভূতের জগৎ’ এও পুনর্জন্ম হতে পারে।

    জটিল দিক হল, স্বর্গীয় জগৎ এবং নরকের জগৎগুলি বৌদ্ধরা ‘সংসার’ বলে যা বোঝায় তার অংশ। এর অর্থ হল, যেকোনো জগতে আমরা যত জীবনই কাটাই না কেন, তা সবই সংসার, যার অর্থ হল আমরা দুঃখ পাব – এমনকি যদি আমরা অনেক জীবন স্বর্গীয় জগতে কাটিয়ে থাকি। সংসার থেকে চূড়ান্ত মুক্তি হল আর জন্ম ও মৃত্যু না থাকা এবং তাই আর কোন দুঃখ না থাকা, এমন অবস্থাকে বৌদ্ধরা ‘নির্বাণ’ বলে।

    বৌদ্ধরা স্বর্গ ও নরককে মনোবিজ্ঞানের দিক থেকেও ব্যাখ্যা করে – আমরা এই বর্তমান জীবনে নিজেরাই তা তৈরি করি। উদারতা ইত্যাদি থেকে স্বর্গ আসে, আত্মার্থপরতা থেকে নরক। এই দৃষ্টিভঙ্গি সবসময় বৌদ্ধ শিক্ষায় উপস্থিত ছিল, কিন্তু ‘সমসাময়িক বৌদ্ধদের’ কাছে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, যারা কর্ম সম্পর্কে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রত্যাখ্যান করে।

    আপনি পিটার হার্ভির ‘ইন্ট্রোডাকশন টু বুদ্ধিজম’ চেষ্টা করতে পারেন, চমৎকার এবং বিস্তৃত, ইন্টারনেট আর্কাইভে বিনামূল্যে পাওয়া যায়।

    Reply
  • প্রদীপ বড়ুয়া

    গৌতম বুদ্ধের জীবন ও দর্শন বিষয়ক একটি নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ “ওল্ড পাথ হোয়াইট ক্লাউড” (Old Path White Cloud)। এই বইটি লিখেছেন থিচ ন্যাট হান। যারা গৌতম বুদ্ধের জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত এবং তথ্যপূর্ণ বিবরণ জানতে আগ্রহী, তাদের জন্য এই বইটি একটি চমৎকার উৎস হতে পারে। আমি আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, আমি সম্প্রতি এই বইটির বাংলা অনুবাদ সম্পন্ন করেছি। বইটি তিনটি খণ্ডে বিভক্ত এবং এর বাংলা সংস্করণটির নাম দেওয়া হয়েছে “প্রাচীন পন্থা শুভ্র মেঘদল”। বইটি এখন বাতিঘরের যে কোনও শাখায় পাওয়া যাচ্ছে। তাই, আপনারা যারা বইটি সংগ্রহ করতে চান, তারা নিকটস্থ বাতিঘর লাইব্রেরিতে খোঁজ নিতে পারেন। এছাড়াও, যদি আপনারা অন্য কোনও উপায়ে বইটি পেতে আগ্রহী হন, তবে আমাকে জানাতে পারেন। সেক্ষেত্রে, আমার প্রকাশক কুরিয়ারের মাধ্যমে বিনামূল্যে বাংলাদেশের যেকোনো স্থানে বইটি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। উল্লেখ্য, “ওল্ড পাথ হোয়াইট ক্লাউড” সারা বিশ্বে ৩০টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং এটি একটি বেস্টসেলার হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে। শুধু তাই নয়, বইটির ইংরেজি সংস্করণও বাংলাদেশে পাওয়া যায়। তাই, যারা মূল ইংরেজি ভাষায় বইটি পড়তে চান, তারাও এটি সংগ্রহ করতে পারেন। বৌদ্ধ ধর্ম এবং গৌতম বুদ্ধের জীবনকথা জানার জন্য এটি একটি অসাধারণ গ্রন্থ।

    Reply

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।