স্যাটায়ার

আসিফ মহিউদ্দীন?

ঐযে, আসিফ মহিউদ্দীন লোকটা আছে না? লোকটাকে আমি একদম পাত্তাই দিই না। কি সব লেখে আগামাথা- বোঝা যায় না, তাকে নিয়ে এত আলোচনার কী আছে বলুন তো? তার মত দুই পয়সার ব্লগারকে পাত্তা দেয়ার সময় আছে আমার? কী যে বলেন! না না, তাকে পাত্তা দেয়ার মত কিছু নেই। শুধু তার বিরুদ্ধে দিনে তিনটে স্ট্যাটাস লিখি, তার সবগুলো স্ট্যাটাস মন দিয়ে পড়ি, দাঁড়িকমা সহ, তারপরে তার স্ট্যাটাসের নিচে তাকে বাপ মা তুলে দিনে ৬০/৭০ টা গালি দিই। এরকম লোককে আমার মত মানুষ একদম গোনাতেই ধরে না, বুঝলেন? বিশ্বাস করছেন না? আরে, হাসেন কেন? হাসির কী বললাম? আপনি তো বেয়াদব খুব!

লোকটাকে আমি ব্লক করেছিলাম। কিন্তু ব্লক করেও, অন্য আরেকটা আইডি খুললাম সে কি লেখে পড়ার জন্য। সেটা দিয়ে প্রতিদিনই তার লেখা পড়তাম। একদমই ছাইপাশ লেখে। ওটা লেখকের জাতও না। কেন যে লোকজন ওটার লেখা পড়ে সেটাই বুঝি না। কোন মানে হয় বলুন? লোকজনকে এত করে বলি, ওটার লেখা পড়বি না পড়বি না, কেউ কথাই শুনতে চায় না। ঐসব মূর্খ লোকজনদের নিয়ে কী যে করি!

আমাদের যেই গ্রুপটা আছে না? সেই গ্রুপে দেড় হাজার একটিভ সদস্য। সেই পুরো দেড় হাজার লোক ডেইলি নিয়ম করে আসিফের প্রফাইলে গালাগালি করে আসে। মা বাপ তুলে। আসিফের নামে গল্প লেখে, কবিতা বানায়, ছবি বানায়, বানিয়ে বানিয়ে কুত্সা রটায়। কিন্তু এতকিছুর পরেও, সে আমাদের কারো বিরুদ্ধে একটা কথাও বলে না। একটা পালটা গালিও দেয় না। হারামজাদা নিজেকে খুব বড় মনে করে তো, তাই। এটাও শালার চালাকি।

এই যে আমরা ওর নামে দিনের পর দিন হাজার হাজার স্ট্যাটাস লিখি, কমেন্টে গালাগালির তুবড়ি ছোটাই, কোন লাভই হয় না। মেয়েদের ফেইক আইডি বানিয়ে ওকে সেক্স চ্যাটের আহবান জানাই, কত্ত সুন্দর সুন্দর তামিল নায়িকার ছবিওয়ালা প্রোফাইল বানিয়ে ইনবক্সে নগ্ন ছবি পাঠাই। কিন্তু শালা এতই নপুংশক যে, পাত্তাই দেয় না। একবার যদি পাত্তা দিতো, স্ক্রিনশট বানিয়ে সারা ফেইসবুকে ঢোল পেটানো যেত। হারামি একটা। পিছলা শয়তান।

কিন্তু তারপরেও, শালা আমাদের জন্য কমেন্ট বক্স ওপেন রাখে। আমাদের গালিগুলো দেখিয়ে পেমেন্ট পায় তো তাই। কী বললেন? তাহলে আমরা এত বুঝি, গালাগালি করি কেন? আরে করি কী সাধে মশাই? গালাগালির কাজ করলে গালি দেবো না? নিজেকে সামলাতে পারি না তো! পাছায় ব্যাথা শুরু হয় ওর লেখা পড়লেই। প্রতিটা শব্দই যেন পাছায় একটা জ্বলন্ত কয়লা ছেকে দেয়ার মত! গালি দেবো না তো দেবো কী?

আরে মশাই হাসেন কেন? জানেন সে কী করেছে? আমাদের নবী অবতার আর নেতার বিরুদ্ধে সে স্ট্যাটাস লিখেছে! কত্তবড় সাহস! কী বললেন? আমরাও তো তার নামে লিখেছি? সারাদিন গালাগালি করেছি? আরে আমাদের লেখা আর ওর লেখা সমান হলো? আমরা দেড় হাজার জন মাসের পর মাস লিখলে যা হয়, ঐ শালার একটা স্ট্যাটাসে তো তার চেয়ে বেশি হয়। আমরা সবাই মিলে ওর সম্মানহানি করতে পারি না, ও এক স্ট্যাটাসে আমাদের নবী অবতার নেতাদের ধুয়ে পানি করে দেয়। আমাদের দেড় হাজার লোকের গালাগালি আর ওর লেখা সমান হলো?

কী বললেন? না না, ছিঃ। ওকে আমরা একটুও গোণায় ধরি না। একদম পাত্তাই দিই না। খালি দিনে ওর বিরুদ্ধে তিনটে স্ট্যাটাস দিই, ওর স্ট্যাটাসের নিচে ৬০/৭০ টা গালি। আমরা দেড় হাজারজন মিলে করলে সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। কী বলেন?

আসিফ মহিউদ্দীন

আসিফ মহিউদ্দীন সম্পাদক সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন [email protected]

One thought on “আসিফ মহিউদ্দীন?

  • মুজতবা আলি

    আসিফ ভাই সত্যিই মহান। নাস্তিক ও বিজ্ঞান/যুক্তিবাদীদের একটা আইকন

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *