বিবর্তনের প্রমাণ: 30 বছরের সাধনা, অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে বিবর্তন ও এককোষী থেকে বহুকোষী বিবর্তন
সূচিপত্র
প্রাক কথন
বিবর্তনের প্রমাণ অসংখ্য। এতো প্রমাণ আছে বিবর্তনের স্বপক্ষে যে গোঁড়া বিবর্তন বিরোধীরাও স্বীকার করে নেন যে বিবর্তন হয়েছে। আবার কিছু কিছু মানুষ আছেন যারা বলেন, microevolution বা ক্ষুদ্র বিবর্তন সত্য, কিন্তু বিবর্তনের ফলে বাঘ তো আর হাতি হয়ে যায় না, বাঘের কিছু কিছু বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন হলেও বাঘকে বাঘ বলেই চেনা যায়। অর্থাৎ তাদের বক্তব্য হোল speciation বা নতুন প্রজাতির জন্ম কখনই হয় না। অর্থাৎ প্রতিটি প্রজাতি আলাদা আলদাভাবে সৃষ্টি হয়েছে এবং সময়ের সাথে সাথে তাদের কিছু পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু সময়ের দিকে পিছনে ফিরে গেলে প্রত্যেক প্রজাতির যে একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ ছিল সে কথা তারা মানতে চান না।
সত্যিই কি এমন কোন ঘটনা আমরা প্রত্যক্ষ করতে পেরেছি, যেখানে নতুন কোন প্রজাতির উৎপত্তি হয়েছে? এক জীব থেকে সম্পূর্ণ নতুন কোন জীবের উৎপত্তি হয়েছে? সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনটি বিবর্তনের প্রমাণ দাখিল করাই এই প্রবন্ধের মূল উপজীব্য।
বিবর্তন কাকে বলে?
বিবর্তনের স্বপক্ষে প্রমাণ দাখিল করার আগে একটা বিষয় একটু পরিষ্কার হয়ে নেওয়া দরকার যে বিবর্তন বলতে আমরা কি বুঝি। খুব সহজ ভাষায় বললে বিবর্তন হোল, একটি জিবগোষ্ঠীর সম্পূর্ণ জিনপুলের মধ্যে বিভিন্ন জিনের allele বা অ্যালিল অনুপাতের পরিবর্তন।
DNA-এর একটি নির্দিষ্ট সজ্যা যা কোন প্রোটিন বা জীবের কোন বৈশিষ্ট্যের সঙ্কেত বহন করে তানে জিন বলে। একটি জীব গোষ্ঠীর প্রতিটি জীবের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের জন্য যে একটি মাত্র জিন থাকবে এমন নয়। মিউটেশনের কারণে জিনের মধ্যে DNA ক্রম পরিবর্তন হতে পারে। তখন ঐ বৈশিষ্ট্যের মধ্যেই বিভিন্ন বৈচিত্র্য বা গুণাবলীর ভিন্নতা দেখা যায়। যেমন মানুষের চুলের রং, চোখের রং, ত্বকের রং আলাদা হতে পারে। একই বৈশিষ্ট্যের বিভিন্ন বৈচিত্র্যময় জিনগুলিকে একে অপরের allele বা অ্যালিল বলে। এই allele এর অনুপাতের পরিবর্তন হলেই আমরা বলতে পারি যে সেই জিবগোষ্ঠী বিবর্তিত হয়েছে।
এই বিবর্তনের খুব ভালো একটি উদাহরন হোল lactose intolerance বা ল্যাকটজ হজমে ব্যর্থতা। জন্মের কিছুদিন পরে ল্যাকটেজ নামের একটি উৎসেচকের উৎপাদন ধীরে ধীরে বন্ধ হতে থাকে। তখন দুধ বা দুগ্ধজাত দ্রব্য আর হজম করতে পারে না। আর এটাই ছিল প্রাথমিক প্রকরন। পরে জিন মিউটেশনের ফলে এই ল্যাকটেজের উৎপাদন অব্যাহত থাকতে শুরু করে। যখন মানুষ ধীরে ধীরে পশুপালন ও দুগ্ধজাত দ্রব্য বেশী পরিমাণে খাওয়া শুরু করে, তখন এই মিউটেশন হওয়া allele গুলি বহন যারা বহন করছিলো, তারা জীবন যুদ্ধে বেশী সুবিধা পায় ও তাদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এখন যাদের lactose intolerance থাকে তারাই ডাক্তার দেখাতে ছোটে।
কিন্তু দেখুন মানুষ তো এখানে মানুষই রইলো। মানুষ তো আর গোরু হয়ে গেলো না। তাহলে কি বিবর্তন হোল? উত্তর হোল, হ্যাঁ। অবশ্যই হোল। বিবর্তনের সংজ্ঞা অনুযায়ী এটাও বিবর্তন।
কিন্তু তাঁর মানে কি, যারা বলেন বিবর্তনের মাধ্যমে নতুন প্রজাতি তৈরি হওয়া সম্ভব না, বা নতুন গুণ বা বৈশিষ্ট্য তৈরি হওয়া সম্ভব না তাদের কথা কি ঠিক? অন্যভাবে বলতে গেলে নতুন প্রজাতিকরণ তথা macroevolution কি হয় না? এই প্রশ্নের উত্তর হোল, হয়। বিবর্তনের মাধ্যমে প্রজাতিকরণ হয়, নতুন নতুন বৈশিষ্ট্যেরও উদ্ভব হয়। কেবল নীচের কথাটি মনে রাখবেন।
(mutation+ gene flow+ genetic drift + natural selection ) + 3.8 billion years = Macroevolution
এই প্রত্যেকটি কথা অন্য কোন প্রবন্ধে আলোচনা করা যাবে। প্রজাতিকরণ বা speciation বলতে আমরা সত্যিই কি বুঝি সেই বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা করবো। কিন্তু আজ কেবল কতকগুলি উদাহরণ তুলে ধরবো।
দুর্ভেদ্য অ্যান্টিবায়োটিকের জাল ভেদ করে ব্যাক্টেরিয়ার বিবর্তন
খালি কাঠখোট্টা বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ প্রকাশ করলে তা সাধারণ মানুষের কাছে খুব একটা গ্রহণযোগ্যতা পায় না। তাই Harvard Medical School and Technion-Israel Institute of Technology থেকে কয়েকজন বিজ্ঞানী খুব সাধারণভাবে অ্যান্টিবায়োটিক এর বিরুদ্ধে ব্যাকটেরিয়ার বিবর্তন কিভাবে হয় তা পর্যবেক্ষণ করার জন্য একটি অসাধারণ পরীক্ষা করলেন।[1]
2016 সালের 9 সেপ্টেম্বর Science ম্যাগাজিনে একটি পরীক্ষা বর্ণিত হয়। এটাই হয়তো সর্বপ্রথম এত বড় আকারের পরীক্ষা যেখানে ব্যাকটেরিয়া যখন ক্রমবর্ধমান উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিকের সম্মুখীন হয়, তখন তারা কিভাবে বিবর্তিত হয়, তথা বেঁচে থাকার জন্য পরিবেশের সাথে নিজেদের খাপ খাইয়ে নেয় এবং বংশ বিস্তার করে, সেই কৌশল ধরা পড়েছে। আর তারা একটি time laps ভিডিও তৈরি করেন এই ঘটনার মুহূর্তগুলি ক্যামেরাবন্দি করার জন্য।
কিভাবে করা হয় পরীক্ষাটি?
ঠিক কীভাবে এই কাজটা করা হয়েছে সেটা জানতে হলে উপরে যে ভিডিওটা দেখা আছে সেটা দেখবেন। তবু এখানে একটুখানি ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করা যাক। প্রথমেই কি করলেন তাঁরা? একটা 2 ফুট বাই 4 ফুটের (120x60cm) পেট্রি ডিশ (petri dish) নিলেন। বিশাল বিট্রিশ ভর্তি করা হোল 14 লিটার আগার (Agar) দিয়ে। আগার কি জিনিস? একটি সামুদ্রিক শৈবাল থেকে উদ্ভূত জেলি জাতীয় পদার্থ। সাধারণত ল্যাবরেটরীতে এগুলি ব্যবহার করা হয় ধাত্র হিসেবে, যেখানে এই ধাত্র বিভিন্ন জীবের পুষ্টি উপাদান দিয়ে সমৃদ্ধ থাকে।
প্রথমেই এই পেট্রি ডিশ কে কতগুলি ভাগে ভাগ করা হলো। প্রতিটি ভাগে বিভিন্ন ঘনত্বের অ্যান্টিবায়োটিক সমৃদ্ধ এবং ব্যাকটেরিয়ার পুষ্টির জন্য উপযুক্ত উপাদান সমৃদ্ধ আগার দিয়ে ভর্তি করা হোল। কেবল, একদম প্রান্তীয় অংশ, যে অংশ পেট্রি ডিশের খুব কাছে সেই অংশের আগারে কোনরকম অ্যান্টিবায়োটিক যুক্ত করা হলো না। উদ্দেশ্য একটাই। ই কোলাই (Escherichia coli) ব্যাকটেরিয়া কিভাবে অ্যান্টিবায়োটিকের ঘনত্বের বৃদ্ধির সাথে সাথে নিজেরা পরিবেশের সাথে প্রয়োজন মত খাপ খাইয়ে নিয়ে বিবর্তিত হতে পারে সেটাই পর্যবেক্ষণ করা।
পেট্রিডিস এর এন্টিবায়োটিক বিহীন অংশের ঠিক পরবর্তী অংশে অ্যান্টিবায়োটিক-এর ঘনত্ব ন্যূনতম, ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য যেটুকু না হলেই নয় (Minimum Inhibitory Concentration, MIC)। প্রতিটি পরবর্তী ভাগে ঘনত্ব দশগুণ করে বৃদ্ধি করা হয় এবং এভাবে চলতে চলতে পেট্রি ডিশের কেন্দ্রে অ্যান্টিবায়োটিক এর ঘনত্ব সবথেকে বেশি, প্রায় হাজার গুণ। সাথে একটি ক্যামেরাও লাগানো হয় যাতে এই দৃশ্য নিয়মিত ক্যামেরা বন্দী করা যায়।
উপকরনের নাম দেওয়া হোল Microbial Evolution, and Growth Arena (MEGA) plate বা মেগা প্লেট।
ফলাফল
ব্যাকটেরিয়া খালি চোখে দেখা যায় না। কিন্তু যখন তারা বিভাজিত হয়ে একটা কলোনি তৈরি করে তখন তাদের দেখা যায়। একদম উপরের ছবিতে দেখুন, এক লালচে রঙের আগারের উপর জমা হয়েছে সাদা ব্যাকটেরিয়ার কলোনি। আর ঠিক এই ভাবেই এই পরীক্ষাতেও ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হোল।
সে এক অদ্ভুত ঘটনা। এক অকপট সত্যি ধরা পড়লো কামেরায়। এ যেন কোন সিনেমার চেয়ে কম নয়। ব্যাকটেরিয়ার জীবন যুদ্ধ, তাদের আন্দোলন,সংগ্রাম, টিকে থাকার লড়াই, মৃত্যু, আর টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যেতে বিবর্তন।
কি জানলাম আমরা এখান থেকে?
আমরা এই পরীক্ষা থেকে কতকগুলি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেলাম:
- ব্যাকটেরিয়া যুক্ত করা হয় পাত্রের একদম কিনারায় সে অঞ্চলে অ্যান্টিবায়োটিক ছিল না, সেই অংশ। আগার থেকে প্রয়োজনীয় উপাদান নিয়ে ব্যাকটেরিয়া বিভাজিত হয়, সংখ্যায় বৃদ্ধি পেতে থাকে। সাথে সাথে যেহেতু আগারের মধ্যে পৌষ্টিক উপাদান শেষ হতে থাকে তাই তারা ধীরে ধীরে পৌষ্টিক সমৃদ্ধ অঞ্চলের দিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
- কিন্তু বেশী দূর যেতে পারে না। খানিক দূর গিয়েই ন্যূনতম ঘনত্ব বিশিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিকের রাজ্য। অধিকাংশ ব্যাকটেরিয়া এই অ্যান্টিবায়োটিক এর সংস্পর্শে এসে মারা পড়ে। কিন্তু খুব সামান্য পরিমাণ কতকগুলি ব্যাকটেরিয়া, যারা নিজেদেরকে এই অ্যান্টিবায়োটিক ঘনত্বের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়, তারা বেঁচে থাকে এবং তারা বিভাজিত হতে থাকে। আবার তারা ছড়িয়ে পড়তে থাকে আশেপাশের পৌষ্টিক উপাদান সমৃদ্ধ আগার অঞ্চলে।
- প্রতিটি ধাপে অ্যান্টিবায়োটিক এর ঘনত্ব যত বৃদ্ধি পেতে থাকে কিছু নতুন ব্যাকটেরিয়া জেনেটিক মিউটেশন নিয়ে উদ্ভব হয়, যারা এই ক্রমবর্ধমান অ্যান্টিবায়োটিকের ঘনত্বের সাথে খাপ খাইয়ে নেয় এবং বেঁচে থাকে।
- অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি প্রতিরোধ গড়ে ওঠে জিনগত পরিবর্তনের মাধ্যমে। যখনই একটি নতুন ব্যাকটেরিয়া প্রজাতির উদ্ভব হয় যারা অ্যান্টিবায়োটিক কে প্রতিহত করতে পারে, তাদের পরবর্তী প্রজন্ম সেই অ্যান্টিবায়োটিক ঘনত্বের মধ্যে বেঁচে থাকতে পারে এবং বিভাজিত হতে পারে।
- শুধুমাত্র একটি মাত্র বংশধারা যে তৈরি হয় তা নয়। এরকম অনেকগুলি মিউটেশন হওয়া লিনিয়েজ বা বংশধারা তৈরি হতে পারে। যেহেতু পৌষ্টিক উপাদান সীমিত, তারা একে অপরের সাথে বেঁচে থাকার জন্য প্রতিযোগিতা করে। যারা জয়ী হয়, তারা সেই অঞ্চলের পৌষ্টিক উপাদানগুলো থেকে শক্তি সংগ্রহ করে বিভাজিত হয় এবং নিজেদের বংশগতিকে অব্যাহত রাখে এবং তারাই সংখ্যায় বৃদ্ধি পায়।
- অ্যান্টিবায়োটিকের ঘনত্ব যত বাড়তে থাকে নিম্ন প্রতিরোধী গুণসম্পন্ন ব্যাকটেরিয়া প্রজাতি থেকে মধ্যম প্রতিরোধী গুণসম্পন্ন ব্যাকটেরিয়া প্রজাতি এবং এইভাবে সর্বোচ্চ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাকটেরিয়া প্রজাতি উৎপন্ন হয়।
- এইভাবে দেখা যায় 10 দিনের মধ্যেই ব্যাকটেরিয়া গুলি এমন কতগুলি প্রজাতির জন্ম দিয়েছে যারা হাজার গুণ বেশি ঘনত্ব সম্পন্ন অ্যান্টিবায়োটিক কে প্রতিহত করতে পারে। এই অভূতপূর্ব প্রতিরোধী গুণসম্পন্ন ব্যাকটেরিয়াগুলি সেই ব্যাকটেরিয়াগুলি বংশধর যারা একসময় হাজার ভাগ কম ঘনত্বের অ্যান্টিবায়োটিক যুক্ত পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারেনি।
এখন প্রশ্ন হলো ব্যাকটেরিয়াগুলি অ্যান্টিবায়োটিকের সংস্পর্শে আসা মাত্রই সর্বোচ্চ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রদর্শন কেন করল না? তার কারণ এই মিউটেশন তাদের বৃদ্ধির হার কমিয়ে দেয়। এরকম হয়েই থাকতে পারে যে, কিছু কিছু প্রজাতির জন্ম হয়েছিল যাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা ছিল সর্বোচ্চ, কিন্তু বৃদ্ধির হাড় যেহেতু কম, তাই তারা অন্যান্য ব্যাকটেরিয়া প্রজাতির সাথে টিকে থাকতে পারেনি।
অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ গড়ে ওঠার কারণ
যে সমস্ত ব্যাকটেরিয়া প্রজাতিগুলির মধ্যে মিউটেশনের হার সবথেকে বেশি ছিল তাদের মধ্যে dnaQ মিউটেশন দেখতে পাওয়া যায়। এই জিন DNA polymerase III তৈরির সংকেত বহন করে। DNA polymerase III, DNA প্রতিলিপি গঠনের পরে, ভুলভ্রান্তির সংশোধক হিসেবে ভূমিকা পালন করে।
এছাড়া যে জিনের মিউটেশন সবথেকে বেশি চোখে পড়ে সেটি হল folA, যা dihydrofolate reductase (DHFR) তৈরির সংকেত বহন করে। যে অ্যান্টিবায়োটিক এই পরীক্ষায় ব্যবহার করা হয় তার নাম হলো trimethoprim, আর এই অ্যান্টিবায়োটিক dihydrofolate reductase-এর কার্যকারিতা ব্যাহত করে, dihydrofolate থেকে tetrahydrofolate-এ বিজারণ ব্যাহত করে।
এই একই পরীক্ষায় যখন সিপ্রফ্লক্সেসিন ব্যবহার করা হয় তখন প্রাথমিক মাত্রা থেকে এক লক্ষ গুণ বেশি মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ করার ক্ষমতা চোখে পড়ে।
ত্রিশ বছরের সাধনা
মিশিগান রাজ্যের মাইক্রোবায়াল ইকোলজির অধ্যাপক Richard Lenski, তিনি সবথেকে দীর্ঘমেয়াদী বিবর্তন পরীক্ষাটি সংঘটিত করার জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত। 1988 সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পটি ক্রমবিবর্তনের এক হাতেনাতে করা একটি পরীক্ষা। তিনি এবং তার ল্যাব সদস্যরা ই কোলাই ব্যাকটেরিয়ার 12 আলাদা আলাদা নমুনা ক্রমাগত 65,000 প্রজন্ম পরীক্ষা করছেন। এই 12 টি পৃথক নমুনার (strain)-এর ক্রমবিবরতন ধারা পর্যবেক্ষণ করছেন খুবই সূক্ষ্মভাবে।[2] মানুষের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করলে তা প্রায় 1.5 million বছরের ইতিহাসের সমান।
12 টি ভিন্ন ভিন্ন ব্যাকটেরিয়া নমুনা পরীক্ষা করতে গিয়ে তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অদ্ভুত ঘটনা আবিষ্কার করেছেন। যেমন, একটি ঘটনা হলো 2003 সালে লেন্সকি এবং তার সরকারিরা লক্ষ্য করেন এমন একটি নতুন ইকোলাই প্রজন্মের উদ্ভব হয়েছে যারা শক্তির উৎস হিসেবে সাইট্রেট ব্যবহার করতে পারে। এই বৈশিষ্ট্য এর আগে কোন E. coli প্রজন্মের মধ্যে ছিল না।
বিস্তারিত জানতে নীচের ভিডিওটি দেখুন।
পরীক্ষার একদম শুরুতে একটি পেট্রি ডিশে কতগুলি ব্যাকটেরিয়ার ভিন্ন ভিন্ন কলোনি তৈরি করা হয়। এবং সেই আলাদা আলাদা কলোনি থেকে আলাদা আলাদাভাবে কিছু ব্যাকটেরিয়া এর নমুনা একটি ফ্লাস্কে সংগ্রহ করা হয়। যেহেতু এই আলাদা আলাদা নমুনাগুলি আলাদা আলাদা কলোনি থেকে নেওয়া হয়েছিল, তাই তাদের মধ্যে জেনেটিক কিছু বৈচিত্র্য থাকাই স্বাভাবিক। অর্থাৎ তারা একই পূর্বসূরির প্রতিলিপি নয়।
এইভাবে প্রতিদিন একটি পুরনো ফ্লাস্ক থেকে নতুন ফ্লাস্কে শতকরা এক ভাগ পরিমাণ ব্যাক্টেরিয়া স্থানান্তরিত করা হয়। আর বাকি ব্যাকটেরিয়া নষ্ট করে দেওয়া হয়। প্রতি 75 দিন অন্তর কিছু ব্যাকটেরিয়ার নমুনা ঠাণ্ডা করে জমিয়ে রেখে দেওয়া হয় যাতে তারা দীর্ঘদিন জীবিত থাকে।
ফ্লাস্কে যে দ্রবন থাকে, তার উপাদান মূলত গ্লুকোজ আর সাথে পটাসিয়াম ফসফেট, সাইট্রেট এবং কিছু অন্যান্য উপাদান যা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এই মিশ্রনে কার্বনের একমাত্র উৎস গ্লুকোজ, আর তার পরিমাণ কিন্তু সীমিত। সেই গ্লুকোজ পরিপাক করা, সেখান থেকে শক্তি উৎপাদন করা এবং বংশবৃদ্ধি করার মত কাজ গুলি করতে গেলে যে নির্বাচনী সঙ্কট এসে পড়ে তা হোল, যত দ্রুত সম্ভব প্রতিলিপি করা।
প্রতিদিন প্রতিটি ফ্লাস্কে ব্যাকটেরিয়া ছয় বা সাত বার বিভক্ত হয়। এইভাবে তাদের সংখ্যা একশ গুণ বৃদ্ধি পায়। এই ব্যাকটেরিয়াগুলির প্রজনন হার সীমাবদ্ধ হয় তাদের জন্য উপলব্ধ সম্পদ দ্বারা। যদি প্রয়োজনীয় উপাদান দশ থেকে একশগুণ হয়ে যায়, তাদের সংখ্যা সেই হারে বৃদ্ধি পাবে।
মাঝে মাঝেই জমিয়ে রাখা পুরানো প্রজন্মের সাথে নতুন প্রজন্মের তুলনা করা হয়। এই পরীক্ষায় দেখা যায় 1% বা 0.1% ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে মিউটেশন হয়। তুলনামূলক ভাবে মানুষের ক্ষেত্রে প্রতি প্রজন্মে মিউটেশনের সংখ্যা অনেক বেশী। কিন্তু ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে জনসংখ্যা অনেক বেশী। তাই তাদের মধ্যে অনেক বেশী বৈচিত্র্য দেখা যায়, যা প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হতে পারে। বেশ কিছু মিউটেশনের কোন প্রভাব থাকে না, বেশ কিছু মিউটেশন হানিকারক, আর কিছু মিউটেশন কিছু সুবিধা প্রদান করে।
এই পরীক্ষার মধ্যে একটি বিশেষ প্রাপ্তি ছিল সাইট্রেট ব্যবহারকারী ব্যাকটেরিয়ার উদ্ভব। অনেকগুলি মিউটেশন ধীরে ধীরে হতে হতে এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছায় যেখানে ব্যাকটেরিয়া সাইট্রেটকে শক্তির উৎস হিসাবে ব্যবহার করতে পারে। কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়া আবার আকারেও বর হতে শুরু করে।
কিন্তু ব্যাকটেরিয়া তো ব্যাকটেরিয়াই থেকে যায়
এই দুটি পরীক্ষাতে মিউটেশন এবং নতুন বৈশিষ্ট্যের উদ্ভবের অনেক নমুনা দেখা গেলেও, এমন কোন উদাহরন দেখা যায় না যেখানে ব্যাকটেরিয়া পরিবর্তিত হয় কোন বহুকোষী জীবের রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ ব্যাকটেরিয়া বিবর্তিত হয়ে বাঘ হয়ে যায় না। তাহলে প্রশ্ন হতেই পারে তাহলে কি এক প্রজাতি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রজাতির উদ্ভব সম্ভব? নাকি সে গল্প কথা?
তার উত্তর জানবো পরবর্তী উদাহরণে। কিন্তু তার আগে একটি কথা জানা দরকার যে, এই দুটি পরীক্ষায় নির্বাচনী সঙ্কট কি ছিল? প্রথম পরীক্ষায় নির্বাচনী সংকট ছিল এন্টিবায়োটিক। বেঁচে থাকার জন্য ব্যাকটেরিয়াকে এই একটি নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিকের ক্রমবর্ধমান ঘনত্বের সম্মুখীন হতে হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী তাদেরকে পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে হয়েছে এবং বংশবৃদ্ধি করতে হয়েছে।
পরবর্তী পরীক্ষায় সেরকম কোনো নির্বাচনী সংকট না থাকলেও, সেখানে মূল লক্ষ্য ছিল বেঁচে থাকা। উপলব্ধ পৌষ্টিক উপাদান গুলি কে যথাসম্ভব ভালোভাবে ব্যবহার করা। এখানে এমন কোন নির্বাচনী সংকট ছিল না যেখানে ব্যাকটেরিয়াকে এককোষী থেকে বহুকোষী জীবে রূপান্তরিত হলে বেশী সুবিধা পাওয়া যাবে, কারণ এককোষী থেকে বহুকোষী জীবে রূপান্তরিত হলে তাদের বৃদ্ধির হার এতো কমে যাবে যে তারা বাকি ব্যাকটেরিয়াদের সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে পারবে না। তারা বিভাজন করতে করতে উপাদান শেষ হয়ে যাবে।
এককোষী থেকে বহুকোষী জীবের বিবর্তন
পৃথিবীতে জীবনের ইতিহাসে কয়েকটি প্রধান ঘটনা গুলির মধ্যে একটি হলো এককোষী জীব থেকে বহুকোষী জীবের বিবর্তন। এই বহুকোষী জটিল একটি জৈবিক অবস্থা বিবর্তনের নতুন সুযোগ এনে দেয়। কিন্তু হঠাৎ এককোষী জীব থেকে বহুকোষী জীবের বিবর্তন হলো কেন? এবং এই জটিল জৈবিক অবস্থার উদ্ভবের ফলে কি মূল্য চোকাতে হয়েছিল?
এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কতগুলি প্রকল্পের প্রস্তাব করা হয়। তাদের মধ্যে একটি হলো predation বা শিকার। অপর একটি জীবের খাদ্য বা শিকার হওয়া থেকে বাঁচতে হলে একটি জীবকে তার আকার বা আয়তন বৃদ্ধি করে নিতে হবে। এই প্রকল্প অনুযায়ী, অপর জীবের খাদ্য বা শিকারে পরিণত হওয়া থেকে বাঁচাই ছিল সেই নির্বাচনী সংকট বা selection pressure, যা এককোষী জীব থেকে বহুকোষী জীবে বিবর্তনের পথে মূল চালিকাশক্তি হিসাবে কাজ করেছিল।
একটি জীব ইচ্ছে করলেই যত খুশি বড় আর একটি জীবকে নিজের শিকারে পরিণত করতে পারেনা। একটি জীবের শিকারের আকার একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে আবদ্ধ থাকে। তাই শিকারির হাত থেকে বাঁচার জন্য নিজের আকার বৃদ্ধি করে নেওয়া প্রয়োজন আকার বৃদ্ধি করে নেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু একটি কোষ কি যত খুশি বড় হতে পারে? না পারেনা। কারণ ‘স্কয়ার কিউব’ সুত্র (square cube law) অনুযায়ী আকার বৃদ্ধি পেলে, আয়তন কিউবের ঘাতে বাড়ে, কিন্তু দেহের বাইরের ক্ষেত্রফল স্কোয়ারের ঘাতে বাড়ে। তাই কোষের অভ্যন্তরে উত্তপন্ন রেচন পদার্থগুলি প্রয়োজন মত সরিয়ে ফেলা যেমন দুরূহ হয়ে যায় তেমনি প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান সংগ্রহ করাও দুরূহ হয়ে ওঠে। তাই সব থেকে সহজ উপায় হোল, পাশাপাশি কোষগুলির সাথে মিথোজীবিতার মাধ্যমে একটি বহুকোষী গঠন তৈরি করা।
প্রকৃতপক্ষে এই গ্রহে জীবনের ইতিহাসে বহুকোষী গঠনের জন্য কমপক্ষে 25 টি আলাদা আলাদা উৎস সনাক্ত করা যায়, যার মধ্যে ছত্রাক, স্লাইম মোল্ড, শৈবালের বেশ কয়েকটি প্রজাতি, সায়ানোব্যাকটেরিয়া এবং মাইক্সোব্যাকটেরিয়ার মত জীব রয়েছে। এককোষী থেকে বহুকোষী জীবের বিবর্তনের পেছনে মূল চালিকাশক্তি কি ছিল, সেই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আমরা বহুকোষী জীবের জীবাশ্ম অধ্যয়ন করতে পারি। কিন্তু একদম প্রাথমিক পর্যায়ের বহুকোষী জীবের জীবাশ্ম পাওয়া যেমন দুষ্কর, তেমনি যে কয়টি জীবাশ্ম পাওয়া গেছে, তা বহুকোষী বিবর্তনের প্রাথমিক ধাপ কাছাকাছি হলেও, এইগুলি দুষ্প্রাপ্য জীবাশ্মগুলি শত শত মিলিয়ন বা বিলিয়ন বছর পুরানো। তাই এতো আগে ঠিক কি ঘটেছিল সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া সত্যিই দুষ্কর। তাহলে এখন উপায় হোল পরীক্ষাগারে বহুকোষী জীবের অধ্যয়ন করা।
একটু আগেই আলোচনা করছিলাম যে, এককোষী থকে বহুকোষী জীবের বিবর্তনের পিছনে প্রধান চালিকাশক্তি ছিল, অপর জীবের শিকার হওয়ার হাত থেকে বাঁচা। আর এই প্রকল্পটির উপর ভিত্তি করেই একটি পরীক্ষা করা হয়।[3] এই পরীক্ষায় বিবর্তন যোগ্য জীব হিসাবে এককোষী, স্বাধীনভাবে গমনে সক্ষম, সবুজ শৈবাল ক্ল্যামিডোমোনাস রিনহার্ডিটি (Chlamydomonas reinhardtii) ব্যবহার করা হয়। আর শিকারী হিসাবে ব্যবহার করা হয় ফিল্টার-ফিডিং সিলিয়েটস (Paramecium tetraurelia)। এই পরীক্ষাটি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য এইখানে পাওয়া যাবে।
এককোষী হওয়া সত্ত্বেও, এই সিলিয়েটগুলি আকারে বড়। তারা ছোট শেত্তলাগুলিকে, তাদের সূক্ষ্ম চুলের মতো কাঠামো সিলিয়া দিয়ে মুখের মধ্যে চালনা করে। শিকারিদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়াই বহুকোষী বিবর্তনের এক অন্যতম চালকাশক্তি কি না নিশ্চিত হবার জন্য, কিছু শৈবালের কলোনি শিকারি মুক্ত রাখা হয়।
এককোষী শৈবালগুলি সাধারণত মাল্টিপল ফিশন (multiple fission) নামক প্রক্রিয়ায় বংশ বৃদ্ধি করে। একটি কোষ থেকে তিনটি পর পর তিনটি বিভাজনের মাধ্যমে প্রথমে দুটি, পরে চারটি ও শেষে আটটি অপত্য কোষ উৎপন্ন হয়। এই অপত্য কোষগুলি প্রাথমিক কোষটির প্রাচীর ভেদ করে বেরিয়ে আসে, তারপর খানিক বর হবার পরে সেই একই পদ্ধতি শুরু করে।
এই পরীক্ষা শেষে, শিকারী সিলিয়েটগুলির সাথে বেড়ে ওঠা কিছু শৈবাল, তাদের কোষের জীবন চক্র পরিবর্তন করে বহুকোষী হয়ে উঠেছিল। এই বিকশিত বহুকোষী শৈবালগুলিতে, যখন কোষ চক্র সম্পূর্ণ হয়ে যেত তখন তারা আর প্রাথমিক কোষের কোষ প্রাচীর ভেদ করে বেরিয়ে আসতো না। এই বহুকোষী জীবনচক্র সাময়িক ছিল না। বরং এই বৈশিষ্ট্যটি জিন দ্বারা এক প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে স্থানান্তরিত হতে শুরু করে। যখন তারা শিকারীর কোন ভয় ছাড়াই স্বাভাবিক বৃদ্ধি পেত, সেই সময়ও এই বহুকোষী জীবনচক্র অব্যাহত থাকে।
কিন্তু এখানে একটি সমস্যার সম্মুখীন হয় এই কোষগুলি। প্রকৃতিতে, এককোষী শৈবাল ফ্ল্যাজেলা নামক পাতলা তন্তুর মতো কাঠামো ব্যবহার করে সালোকসংশ্লেষণের জন্য প্রয়োজনীয় সূর্যালোকের দিকে গমন করে। কিন্তু এই বিকশিত বহুকোষী শৈবালগুলিতে প্রতিটি কোষের ফ্ল্যাজেলা সক্রিয় হলেও, তারা কোষ প্রাচীরের মধ্যে আবদ্ধ থাকে।
উপসংহার
বিবর্তনের ক্ষেত্নহা মূল ধাপ গুলি হল মিউটেশন, জিন ফ্লো, জেনেটিক ড্রিফট এবং প্রাকৃতিক নির্বাচন। মিউটেশন প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে হতেই থাকে। এই মিউটেশনগুলি কখনো নিরপেক্ষ, কখনও বা জীবের ক্ষতিসাধন করে, আবার কখনো কিছু বাড়তি সুবিধা দেয়। যদি নতুন প্রজন্ম কোনো নির্বাচনী সংকটের (selection pressure) সম্মুখীন হয়, তখন যে সমস্ত জীব এই সংকটের সাথে খাপ খাইয়ে নেয় তারাই জীবন যুদ্ধে টিকে যায়। আর যদি নির্বাচনী সংকটের সম্মুখীন না হয়, তাহলে তাদের মধ্যে একটি সাম্যাবস্থা তৈরি হয়, আর এটাই Hardy-Weinberg Principle-এর মূল উপজীব্য।
উপরের এই তিনটি পরীক্ষা থেকে এই ঘটনাগুলো আমরা পর্যবেক্ষণ করলাম। যদি এরকম কখনো দেখা যায় যে, কোন পরীক্ষায় ব্যাকটেরিয়া ব্যাকটেরিয়াই থেকে যাচ্ছে, এবং তারা কোন বহুকোষী জীবে বিবর্তিত হচ্ছে না, তার কারণ সেখানে এমন কোন নির্বাচনী সংকটের সম্মুখীন হয়নি যেখানে তাদের বহুকোষী গঠন গড়ে তোলা প্রয়োজন। কারণ, প্রতিটি পরিবর্তনের সাথে কিছু মূল্য তাদেরকে হয় চোকাতে হয়।
তথ্যসূত্র
- Baym, Michael et al. “Spatiotemporal microbial evolution on antibiotic landscapes.” Science (New York, N.Y.) vol. 353,6304 (2016): 1147-51. doi:10.1126/science.aag0822[↑]
- Lenski, R. Experimental evolution and the dynamics of adaptation and genome evolution in microbial populations. ISME J 11, 2181–2194 (2017). https://doi.org/10.1038/ismej.2017.69[↑]
- Herron, M.D., Borin, J.M., Boswell, J.C. et al. De novo origins of multicellularity in response to predation. Sci Rep 9, 2328 (2019). https://doi.org/10.1038/s41598-019-39558-8[↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"
অসাধারন বিশ্লেষন
খুব সুন্দর লিখেছেন। বিজ্ঞান খুব একটা বুঝি না তারপরও পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম।