ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই তার প্রমাণ কি?

ঈশ্বরের অস্তিত্ব

বর্তমানে “সংশয় ডট ইনফো” পৃথিবীর প্রতিটি দেশের বাংলাভাষী আস্তিক নাস্তিকদের প্রশ্নউত্তরে্র একটি বৃহৎ তথ্য ভান্ডারে রুপ নিয়েছে, যার দ্বিতীয়টি খুজে পাওয়া যাবেনা। অনলাইন জগতে এমন তথ্য ভান্ডার ইংরেজী বা অন্যন্য ভাষাতে শত শত থাকলেও বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একমাত্র ওয়েব পোর্টালে পরিনত হয়েছে “সংশয় ডট ইনফো।” একটা সময় পর্যন্ত এখানে শুধুমাত্রা এই সাইটের প্রতিষ্ঠাতা জার্মান প্রবাসী ব্লগার, হিউম্যান রাইটস এক্টিভিস্ট এবং নারীবাদী লেখক ও সোস্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ফেসবুকে বর্তমানে বহুল পরিচিত মুখ “আসিফ মহিউদ্দীন” তার ব্যাক্তিগত লেখালেখি এবং গবেষণার কাজে ব্যবহার করলেও বাংলাভাষী নতুন প্রজন্মের চিন্তা, ভাবনা ধ্যান ধারণা প্রকাশের একটি নির্ভরযোগ্য সাইট হিসাবে সেটা সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় ২০১৭ সালের এই আগস্ট মাসে। আজ সেটা দুই বছর অতিক্রম করলো। এই তথ্য ভান্ডারে কমবেশি সকল তথ্যই বর্তমানে সংরক্ষিত হয়েছে বলা যায়, তারপরেও কিছু কিছু প্রশ্ন আমাদের মাঝে নানাভাবে ঘুরপাক খেতে থাকে। আমার মনে হয় নতুন যারা আস্তিকতা, নাস্তিকতা, সংশয়বাদ, এবং অজ্ঞেয়বাদ সম্পর্কে জানাবোঝা এবং গবেষণা করতে আগ্রহী তাদের চিন্তা চেতনা ও মনোভাব জানার এবং জানানোর জন্য অনেক বড় ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে “সংশয় ডট ইনফো।” আর সবচেয়ে আশার কথা হচ্ছে, একটা সময় একটি শ্রেনীকে দেখতাম উগ্রভাবে বিভিন্ন লেখা এবং লেখককে আক্রমণ করতো, কিন্তু তারাও এখন এই সাইটে বস্তুনিষ্ট এবং যৌক্তিক আলোচনা করছেন। এটা একটি ইতিবাচক দিক যা দেখে ভালো লাগছে বলতেই হয়। আমরা চাই সকলেই এভাবে আলোচনায় অংশগ্রহণ করুক।

একটি প্রশ্ন আমরা প্রায়ই আস্তিক বা ধর্ম বিশ্বাসীদের কাছে শুনে থাকি। বহুবার তাদেরকে সেই প্রশ্নের উত্তর নানাভাবে দেবার পরেও তারা একই প্রশ্নটি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বারাবার করতে থাকে। এই প্রশ্নটির উত্তর “সংশয় ডট ইনফো”-তে বহুবার দেবার চেষ্টা করা হয়েছে। এই বিষয়ে এখানে অসংখ্য গবেষণাধর্মী লেখাও স্টোর করা আছে। তারপরেও একেকজনের লেখার ভাষা এবং থিম আলাদা আলাদা হয়ে থাকে, তাই আমিও আমার মতো করে সেটার একটা ধারণা দেবার চেষ্টা করেছি মাত্র। যারা লেখালেখি করছেন বা নতুন শুরু করেছেন, বা লিখবেন লিখবেন মনে মনে ভাবছেন তাদের উদ্দেশ্যে একটি কথা বলে রাখি, সেটা হচ্ছে আপনি আরেকজন লেখকের লেখার মূল কথাটি কপি করে নিজের মতো করে বিশ্লেষন করবেন ঠিক আছে, তবে আরেকজন ব্লগারের লেখা পড়ে সেটাই হুবহু লেখার মানে হচ্ছে একই বিষয় আমাদের সংগ্রহে নতুন করে আবার আরেকটা যোগ করা। যেমন একটা সময় বাংলাদেশী বংশদ্ভোত আমেরিকান প্রকৌশলী “অভিজিৎ রায়” প্রতিষ্ঠিত “মুক্তমনা” সাইটের অনেক লেখারই নতুন রুপ আবার অনেকেই তাদের মতো করে লিখছে, এতে করে যেটা হচ্ছে আমরা একই বিষয় আবারও একটু অন্যভাবে জানতে পারছি, কিন্তু আদতে নতুন কিছুই শিখতে পারছিনা।

এখন আসবো সেই প্রশ্নটি নিয়ে। প্রশ্নটি হচ্ছে, “আপনি নাস্তিক ঠিক আছে, আপনি কি ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই সেটা প্রামাণ করে দেখাতে পারবেন, তাহলে আমি আজই আস্তিকতা ছেড়ে দিয়ে নাস্তিক হয়ে যাবো।” এই প্রশ্নের উত্তরে আমি সবার আগে যেই কথাটি প্রশ্নকর্তাদের বলে থাকি সেটা হচ্ছে আমি নাস্তিক সেই কথাটি কেউ বলতে পারেনা, তবে আমি নাস্তিক্যবাদের চর্চা করি বা এটা নিয়ে গবেষণা করছি এই কথাটী বলা যেতে পারে। কারণ নাস্তিক হওয়া সহজ কথা নয়,এই বিষয়ে বিখ্যাত সাহিত্যিক “আহমেদ শরিফ” বলেছিলেন “নাস্তিক হওয়া সহজ কথা নয় এ এক অনন্য প্রতিভার ব্যাপার, কারণ আশৈশব লালিত পালিত রীতিনীতি, প্রথা, সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে মুক্তভাবে চিন্তা করতে পারাটা সকলের পক্ষে সম্ভব হয়না। এ এক অনন্য প্রতিভার ব্যাপারই বটে।” তবে আমাদের সমাজে ইদানিং নতুন প্রজন্মের মধ্যে অজ্ঞেয়বাদী, সংশয়বাদী, এবং সর্বোপরি একজন ঈশ্বরে বিশ্বাসী কিন্তু কোন ধর্ম পালন করেন না এরকম অনেকেই তৈরি হয়েছেন। দিনে দিনে ইন্টারনেট এবং অনলাইন মাধ্যমগুলোতে ধর্ম এবং ঈশ্বর সম্পর্কে নানা জনের নানা আলোচনা সমালোচনা থেকে তারা একেজন একেক ভাবে জেনেছেন এবং সেগুলো নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে যাচ্ছেন। আমার কথা হচ্ছে নাস্তিকতা মানেই কারো ধর্মকে ছোট করে দেখা নয়। নাস্তিক্যবাদের চর্চা মানে এই নয় যে, হাজার হাজার বছর ধরে পৃথিবীর বৃহৎ একটি অংশের মানুষের পালন করা প্রতিষ্টিত কোন মতবাদকে একবারেই মিথ্যা বা ভূল প্রামণ করে দেওয়ার চেষ্টা করা।

একজন ধর্ম বিশ্বাসী আস্তিক ব্যক্তির ধর্মটি যেমন সম্পুর্ণ তার নিজশ্ব এবং স্বাধীন ব্যাক্তিগত একটি ব্যাপার, ঠিক তেমনই একজন নাস্তিকের ক্ষেত্রেই সে কাকে মানবে আর কাকে অবিশ্বাস করবে, কার উপরে আস্থা রাখবে আর কার উপরে রাখবেনা, সে পোষাক হিসাবে বোরকা বা হিজাব পরবে নাকি দাড়ি টুপি ব্যবহার করবে সেটাও তার নিজশ্ব এবং সম্পুর্ণ স্বাধীন ব্যাক্তিগত ব্যাপার। ধর্ম বিশ্বাসীদের সাথে নাস্তিকদের কথায় কথায় বেধে যাবার কারণ হচ্ছে ধার্মিকরা জোর করে তাদেরকে ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করার কথা বলে থাকে যাকে আমরা সহজ ভাষায় মৌলবাদ বলে থাকি। যেমন একজন নাস্তিক যদি ইসলাম ধর্ম না মানে তাহলে তার দিনে পাঁচবেলা লাউড স্পিকারে আজানের ধ্বনি শোনার কোন প্রয়োজন নেই, কিন্তু মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট দেশগুলোতে তাদেরকেও আজানের শব্দ মাইক লাগিয়ে শুনতে বাধ্য করা হয়ে থাকে।

উন্নত দেশগুলোতে যেমন ইউরোপ, আমেরিকাতে মুসলমানদের জন্য মসজিদ আছে কিন্তু শেখানে লাউড স্পিকার লাগিয়ে শব্দ দূষন করা আইনত দন্ডণীয়, তাই তারা নিজশ্ব পরিবেশে তাদের মতো করে এগুলো পালন করে থাকে। যাদের নামাজ পড়ার দরকার হয় তারা গোপনে তাদের মসজিদগুলোতে গিয়ে নামাজ আদায় করে। এতে করে কারো সাথে কারো দ্বন্দ বাধেনা, ঠিক একই রকম হিন্দু, খ্রিস্টান সহ পৃথিবীর বাকী ধর্ম অনুসারীদের ক্ষেত্রেও হবার কথা এবং উন্নত দেশ গুলোতে ঘটেও থাকে তাই। যেমন চীনে প্রকাশ্যে ধর্ম পালন করা রাষ্ট্রীয় বিধান অনুযায়ী অন্যায় তাই তারা যারা যার ধর্ম গোপনে পালন করে থাকে প্রকাশ্যে নয়। এখন কথা হচ্ছে প্রশ্ন ছিলো, আপনি কি ঈশ্বরের অস্তিত্ব নাই প্রমাণ করে দেখাতে পারবেন কিনা। তার আরেকটি উত্তর আসে এভাবে যে, নাস্তিকরা কখনই বলে না আমাদের পৃথিবীতে বর্তমানে মানব সভ্যতায় এক বা একাধিক ঈশ্বরের কোন অস্তিত্ব নেই। নাস্তিকরা বলে থাকে হাজার হাজার ঈশ্বরের অস্তিত্ব মানব সভ্যতায় আছে, তবে সেটার বাস্তব কোন তথ্য প্রমাণ নেই । যেটা আছে সেটা শুধুই একশ্রেনীর মানুষের মাথায়, আর তাই আমরা এই ঈশ্বরের প্রয়োজনীয়তা নেই সেটাই প্রমাণ করে দেখাতে চাই, তাছাড়া কিছুই নয়।

আজ থেকে ২০ হাজার বছর আগে পৃথিবীর বরফ যুগ শেষ হবার সাথে সাথেই হোমোস্যাপিয়েন্সদের নেয়ান্ডারথাল গোত্রটির বিলুপ্তি ঘটে এবং টিকে থাকে শুধু আমাদের পুর্বপুরুষেরা। পৃথিবী উষ্ণ হবার সাথে সাথেই তারা তখন থেকে বর্তমান ইউরো এশিয়া অঞ্চলের সুদান এবং মিশরের আসেপাশে স্থায়ী ভাবে বসবাস গড়ে তোলে এবং ধীরে ধীরে তারা পৃথিবীর সর্বোত্র ছড়িয়ে পড়তে থাকে। একটা সময় সভ্যতার সুত্রপাত হয় এবং মানুষ সমাজ সৃষ্টি করে সামাজিক জীব হিসাবে পরিচয় তৈরি করে। আর ঠিক এই সময়ে মানুষের জ্ঞান বৃদ্ধিরা সাথে সাথেই সেসব মানব সভ্যতায় মানুষের মাঝে তৈরি হতে থাকে নানান প্রশ্নের। তারা সব প্রশ্নের উত্তর খুজতে খুজতে যখন হয়রান হয়ে পড়ে তখন সৃষ্টি করতে থাকে বিভিন্ন ধরনের ঈশ্বর, দেব, দেবীদের। তারা যে প্রশ্নের উত্তর খুজে পায়না সেটাকে তারা এই ঈশ্বর সব জানেন বলে নিজেদের মাঝে প্রশান্তি পেতে থাকে। ধীরে ধীরে এই ঈশ্বর এবং দেব দেবীদের নিয়ে আলাদা আলাদা জনগোষ্ঠির মধ্যে আলাদা আলাদা ধর্ম তৈরি হতে থাকে যার ফলশ্রুতিতে আজ আমাদের পৃথিবীতে হাজার হাজার ধর্ম এবং সেসমস্ত ধর্মের আলাদা আলাদা ঈশ্বর।

তাই নাস্তিকরা এসমস্ত ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই সেই কথাটি কখনই বলেনা। তারা বলেন ঈশ্বর আছেন, বাকিটা উপরেই আগে বলে রেখেছি। সেক্ষেত্রে একটি উদাহরণই যথেষ্ট হতে পারে। প্রচলিত প্রতিটি ধর্ম তার নিজ ধর্মের ঈশ্বর বাদে বাকি সকল ধর্মের ঈশরকে এককভাবে ভুল বা মিথ্যা বলে থাকে এবং তাদের ধর্মের ঈশ্বরই একমাত্র সত্য এবং সঠিক বলে থাকে। ঠিক সেই হিসাবে যদি অনেকগুলো সৃষ্টিকর্তা থেকেই থাকে তাহলে নিশ্চয় সেই সৃষ্টিকর্তাদের মধ্যে মারামারি কোন্দল লেগে যাবার কথা। যেমন পৃথিবীতে হিন্দু, মুসলমান, ইহুদীদের মধ্যে দ্বন্দ লাগে, তারা একে অপরকে হত্যা করতে পারলে শান্ত হয় এমন অবস্থা। এই বিষয়টি একটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করলেই বোঝা যায় আসলে ঈশ্বরের অস্তিত্ব সত্যিই প্রশ্নবিদ্ধ কিনা।

পৃথিবীতে কয়েক হাজার সৃষ্টিকর্তা আছে, মুসলমানদের আল্লাহ, হিন্দুদের ভগবান বিষ্ণু, খ্রিটানদের ঈশ্বর, আব্রাহামিক ধর্মের জিহবা, ইনকা সভ্যতার পিচু ধর্মের মান্দালা, প্রাচীন মিশরের আইসিস, অসিরিস, প্যাগানদের হুবাল, সহ ৫২০০ টি ধর্মের মধ্যে ২৫০০ টি প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের কয়েক লক্ষ ঈশ্বর আছে বর্তমানে পৃথিবীতে। এর মধ্যে প্রতিটি ধর্মের অনুসারীরা দাবী করে তাদের ঈশ্বর একমাত্র সত্য আর বাকি সকল ধর্মের ঈশ্বর মিথ্যা এবং ভূয়া। যেমন হিন্দুরা বলে মুসলমানদের আল্লাহ মিথ্যা তাদের ধর্মই সত্য আবার মুসলমানরা বলেন তাদের আল্লাহই একমাত্র সত্য আর বাকি পৃথিবীর ৫২০০ টি ধর্মই মিথ্যা, এদিকে পৃথিবীর বৃহত্তর ধর্ম খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারীরা বলে থাকেন তাদের ধর্মই একমাত্র সত্য বাকি সকল ধর্ম এবং তাদের ঈশ্বর বাদে সকল ঈশ্বরই মিথ্যা এবং বানোয়াট। এই সমস্ত বিষয় বিবেচনা করলে পৃথিবীর প্রতিটি ধর্মের ঈশ্বরই নিজে নিজেই মিথ্যা বা অস্তিত্বহীন হয়ে যায়।

এখন আমি প্রশ্নকর্তাদের উদ্দেশ্য করে বলতে চাই আপনি বলেন আপনার কোন ঈশ্বরের অস্তিত্ব আমাকে অপ্রামানিত করতে হবে বা নাই প্রমাণ করতে হবে ? আমি নাস্তিক্যবাদের চর্চা ছেড়ে দিতে রাজি আছি, কারণ নাস্তিকরা আস্তিকদের থেকে অনেকগুন মানসিকভাবে অসুখি থাকে সেটা আমি তার বাস্তব প্রমাণ এবং আপনাদের কাছে অনেস্টলি প্রকাশ করে গেলাম। আর এই একটি কারণেই আমি আস্তিকদের অনেক হাস্যকর মনোভাব দেখেও হাসতে বা মজা করতে পারিনা। যদিও আজ থেকে বছর ১৫ আগে আমি আস্তিকদের নানা ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে নিজের ভেতরে প্রশান্তি অনুভব করতাম। নাস্তিকরা আস্তিকদের থেকে অসুখি থাকে, কারণ নাস্তিকদের কাছে তাদের সব ধরনের প্রশ্নের উত্তর থাকেনা, কিন্তু পক্ষান্তরে একজন আস্তিকের কাছে তাদের সবধরনের প্রশ্নের উত্তর থাকে, আর সেটা হচ্ছে, কোন প্রশ্নের উত্তর না জানা থাকলে তারা মনে মনে এই ভেবে প্রশান্তি পায় যে ঈশ্বর বা আল্লাহ সবকিছু জানেন আমি জানিনা তাতে কি হয়েছে। এই যে একটা প্রশান্তি এইটা নাস্তিকরা ততক্ষন পায়না যতক্ষন তারা তাদের প্রশ্নের উত্তর খুজে বের করতে পারে। তাই আমিও চাই আস্তিকদের মতো সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে পারার প্রশান্তিটা এবং সেই কারণেই আমি নাস্তিক্যবাদের চর্চা ছেড়ে দিয়ে আস্তিক হতে চাই যদি আমাকে কেউ যথাযথ তথ্য প্রমাণ সহ একজন সৃষ্টিকর্তার সম্মুক্ষিন করতে পারেন।

এবার একটু লেখা বিষয়ক হিউম্যান সাইক্লোজি নিয়ে দুইটা কথা বলেই শেষ করে দিতে চাই। আমিও জানি এবং পাশাপাশি আপনারা যারা পাঠক হিসাবে এই প্রবন্ধটি আপনাদের মূল্যবান সময় ব্যয় করে পড়লেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলছি আপনারও জানেন। এই একই বিষয়ে “সংশয় ডট ইনফো”-তে অনেক অনেক লেখা আছে। অনেকের লেখা আরো বস্তুনিষ্ট এবং সাজানো গোছানো ভাষাতে হয়ে থাকে। আমার লেখা গুলোতে কোন শক্ত ভাষা আমি ব্যবহার করতে পারিনা হয়তো এটা আমার ব্যার্থতা। তবে এখানে একটি ইতিবাচক বিষয় কাজ করে। উদাহরণ স্বরুপ বলতে গেলে, ধরুন আপনার বাসায় একটি শিশু আছে তাকে আপনি নানা ভাবে অনেক কিছুই শেখাবার চেষ্টা করে থাকেন এবং সহজ করে বোঝাবার চেষ্টা করে থাকেন কিন্তু সে কোনভাবেই সেগুলো গ্রহণ করেনা। কিন্তু দেখা যায় বাড়িতে তার সমবয়সী আরেকটি শিশু এসে তার সামনে কিছু একটা বলে গিয়েছে আর সেটাই সে খুব ভালোভাবে গ্রহণ করে মান্য করে চলছে। কারণ অপর শিশুটি সেই শিশুর লেভেলে নেমে এসে তাকে বিষয়টি বুঝিয়েছে। হয়তো অনেকেই আমার থেকে অনেক ভালো ভাষাতে আরো সুন্দর করে আমার এই বিষয়টিই আপনাদের বোঝাবার চেষ্টা করেছে কিন্তু কোন একটি যায়গায় হয়তো আপনার একটি প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে এবং সেটা হয়তো এভাবে সহজ করে লেখার কারণে অনেকের বোধগম্য হতে সুবিধা হতে পারে।

View Comments (2)

  • ১/কে সেই সৃষ্টি কর্তা? উঃ এই মহাবিশ্বের মহান স্রষ্টা। যার আকার নাই।২/কে সেই মহাজ্ঞানী? উঃ যিনি সমস্ত জীব কে উপযুক্ত সময়ের জন্য উপযুক্ত জ্ঞান দিয়েছেন।৩/কে সেই বিচার কর্তা? উঃ যিনি উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত বিচার করবেন।৪/কে সেই অন্নদাতা ? উঃ যিনি ক্ষুদ্র জীবেরো খোরাক জোগান। ৫/ভালোবাসা কি? ভালোবাসা নারী নাকি পুরুষ নাকি উভয় লিঙ্গ? ভালোবাসার আকার আছে কি নাই? ভালোবাসা কি অনুভব করা যায়? আমি কি ভাবে অনুভব করবো তুমি কতো ভালোবাসো? ভালোবাসার স্থান কোথায়? উঃ?

  • এমনকি আপনার নিজেরও হঠাৎ সন্দেহ হতে পারে সৃষ্টিকর্তা আছে কি নাই।

    ???? ইসলামিক যুক্তিঃ

    ???? হযরত ইমাম আবু হানিফার একটা ঘটনা, একদিন বিতর্ক অনুষ্ঠানে আল্লাহর অস্তিত্ব প্রমাণের উদ্দেশ্যে তাকে দাওয়াত করা হয়েছিল তিনি নির্ধারিত সময়ের অনেক বিলম্বে সভাস্থলে উপস্থিত হওয়ায় তাকে প্রশ্ন করা হলো, আপনি এত দেরিতে কেন আসলেন? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন আমার আসার পথে একটা নদী থাকায় ও নদীতে কোনো নৌকা ও মাঝি না থাকায় অনেক অপেক্ষা করার পর দেখলাম হঠাৎ একটা গাছ আপনি-আপনি মাটিতে কয়েক খন্ড হয়ে পড়ে গেল তা আপনি-আপনি তখতাতে পরিণত হয়ে জোড়া লেগে নৌকা হয়ে আমাকে নদী পার করে আমাকে এ পার নামিয়ে দিল এ কারণে আমার আসতে অনাকাঙ্খিত দেরি হয়ে গেছে। এ জবাব শুনার পর সভায় উপস্থিত এক নাস্তিক পন্ডিত প্রশ্ন করেন আপনি তো একজন পাগল ছাড়া আর কিছু নন।
    এরূপ অসম্ভব অবাস্তব কোন কর্মকান্ড কি কোন দিন কোথা ও কোন সুদক্ষ কর্মকার ব্যতীত হতে পারে? নাস্তিক পন্ডিতদের এ কথার জবাবে ইমাম হানিফা (রহঃ) বললেন তাহলে আপনি বলুন সামান্য একখানা নৌকা তৈরি বা সৃষ্টি হতে যদি কোন সুদক্ষ মিস্ত্রি বা কর্মকার ছাড়া সম্ভব না হয় তাহলে এ-বিশাল পৃথিবী ও তার মধ্যস্থিত যাবতীয় বিশাল বিশাল আকারের অগণিত সৃষ্টি কোন সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কিভাবে সম্ভব? ইমাম সাহেবের এমন সুদৃঢ় যুক্তিপূর্ণ বলিষ্ঠ জবাবে নাস্তিক পন্ডিত হতবাক ও নিরুত্তর হতে বাধ্য হলো। এবং আল্লাহর অস্তিত্ব স্বীকার করা ছাড়া গত্যন্তর থাকলো না।

    ???? সমগ্র ইতিহাস জুড়ে প্রত্যেকটি সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে কিছু নিয়ম রয়েছে। প্রত্যেকের রয়েছে ভাল-মন্দের জ্ঞান। খুন করা, মিথ্যা কথা বলা, চুরি করা এবং অনৈতিক কাজ করা- প্রায় সার্বজনীনভাবে বর্জন করা হয়েছে। যদি একজন পবিত্র ঈশ্বর না থাকেন, তাহলে এইরকম ভাল ও মন্দ বুঝবার জ্ঞান কোথা থেকে আসে?

    ???? বৈজ্ঞানিক যুক্তিঃ

    ???? অনেকে বলেন, সৃষ্টিকর্তা নেই ও মহাবিশ্ব নাকি হঠাৎ বিস্ফোরণ (বিগ বেঙ থিউরী) থেকে সৃষ্টি। মহাশূন্য, ছায়াপথ, গ্রহ-নক্ষত্র, ও বিলিয়ন বিলিয়ন প্রজাতি তথা প্রাণীজগত ও উদ্ভিদজগত সহ এই ন্যাচারাল মহাবিশ্ব সবকিছু সুন্দর সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো। বিজ্ঞান বলে, হঠাৎ বিস্ফোরণের ফলে যে কোন পদার্থ বিক্ষিপ্ত অবস্থায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে বাধ্য। এই বিস্ফোরণের থিউরী অনুযায়ী কিভাবে সবকিছু সুন্দর সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো মহাবিশ্ব সৃষ্টি হতে পারে! সূক্ষ্মভাবে চিন্তা করলে বুঝবেন। যাহোক, প্রাণীজগত ও উদ্ভিদজগত সহ এই ন্যাচারাল মহাবিশ্ব যেহেতু আছে সেহেতু তার একজন সৃষ্টিকর্তা থাকতেই হবে। এটি একটি অবজেক্টিভ ও অখণ্ডনীয় যুক্তি।”

    ????আপনি যদি বলেন এক মহাবিস্ফোরণের ফলে এই নিখুঁত সিস্টেমটা তৈরি হয়েছে, সেটা খুব লজিক্যাল কথা হবে না। ব্যাপারটা অনেকটা দুইটা ফেরারি এবং পোরশে গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে একটা বিএমডব্লিউ গাড়ি তৈরি হওয়ার মতো।

    ????কেউ যদি বলেন এই বিস্ফোরণের আগে কি ছিল, তাহলে অনেকে singularity-র কথা বলবে। সেটা কিভাবে হলো? এভাবে আপনি যে পথেই আগান না কেন আপনাকে এক সময় থামতেই হবে। আপনাকে কোনো একটা কিছু বা কোনো পয়েন্টকে constant বা reference ধরতেই হবে। এরপর সেটার ক্ষেত্রে বলতে হবে, ‘এটাকে কেউ সৃষ্টি করে নি। এটা আগে থেকেই ছিল। সুতরাং, এমন কিছুর অস্তিত্ব সবসময় থেকেই যাচ্ছে যাকে আমরা বিলীন করতে পারছি না। তখন আমাদের এই অদৃশ্য সত্ত্বাকে স্রষ্টা বলতে হবে।

    ???? আপনার কাছে ইলেকট্রনিক্স এর কোন জিনিস এর ডিজাইন কেউ চাইলে আপনি বলবেন, ইলেকট্রনিক্স এর ঐ জিনিসের নির্মাতা বা প্রস্তুতকারক কোম্পানির কাছে যেতে। অতএব বুঝতেই পারছেন আমি এখন কি বলতে যাচ্ছি, ঠিকই বুঝেছেন। এই সবকিছু সুন্দর সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো মহাবিশ্বেরও নির্মাতা ছাড়া ডিজাইন অবশ্যই সম্ভব নয়।

    ???? ঈশ্বরের অস্তিত্ব সম্পর্কে আসল বৈজ্ঞানিক যুক্তি হচ্ছে, সৃষ্টিতত্ত্বের যুক্তি। কোন কিছু ঘটলে তার কারণ অবশ্যই থাকে। এই বিশ্ব ব্রহ্মান্ড এবং যা কিছু সৃষ্টি, তা অবশ্যই কোন ঘটনার ফল। অবশ্যই এমন কিছু কারণ ঘটেছে, যার ফলে সবকিছুর অস্তিত্ব প্রকাশ পেয়েছে। চুড়ান্তভাবে, কারণ ছাড়া অবশ্যই এমন কিছু আছে, যার কারণে সবকিছুই অস্তিত্ব প্রাপ্ত হয়েছে। আর এই ‘কারণ ছাড়াই’ কারণ হচ্ছে ঈশ্বর।

    ????একটা মোবাইল ফোনের প্রধান উপাদান হলো বালি। যেটা হলো ভিতরের সেমিকন্ডাক্টর চিপের উপাদান আর উপরের কেসিংটা প্লাস্টিকের তৈরি। এখন একটা প্লাস্টিককে বালিতে মিলিয়ন মিলিয়ন বছর রেখে দিলে একটা প্রোগ্রামেবল মোবাইল তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা (probability) কতটুকু? কোন কিছু অটোমেটিক হয়ে যায় না।

    ???? নিউটনের প্রথম সূত্র: বাইরে থেকে কোন বস্তুর উপর বল প্রয়োগ না করলে, স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকবে এবং গতিশীল বস্তু চিরকাল সমবেগে - - -

    ???? বাকিটা পারমলিঙ্কে ক্লিক করুন।

Leave a Comment