সূচিপত্র
সাংখ্য (সংস্কৃত: सांख्य, IAST: sāṃkhya) হল ধ্রুপদী ভারতীয় হিন্দু দর্শনের ছয়টি আস্তিক (ও নাস্তিক) শাখার অন্যতম। হিন্দু পৌরাণিক ঋষি কপিলকে এই দর্শন শাখার সমন্বায়ক বা প্রবর্তক মনে করা হয়। সাংখ্য দর্শন ভারতের প্রাচীনতম দর্শন শাখাগুলির একটি। গণনামূলক এ দর্শন কঠোরভাবে দ্বৈতবাদী।এ দর্শনের মতে, জগৎ দু’টি সত্যের দ্বারা গঠিত; পুরুষ (চৈতন্য) ও প্রকৃতি (পার্থিব)। “জীব” হ’ল সেই অবস্থা যে অবস্থায় পুরুষ কামনার শক্তিতে প্রকৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে এবং এই সম্পৃক্ততার অবসানকে বলে মোক্ষ। মোক্ষলাভের পরে কী হয় তা এদের চর্চায় ব্যাখ্যা করা হয় নি। এই দর্শনে ঈশ্বরের কথা উল্লেখ না করার কারণ হিসেবে বলা হয় মোক্ষলাভের পর ব্যক্তি ও পরম পুরুষের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না।
সাংখ্য দর্শনে উচ্চতর সত্ত্বা বা পরিণত সত্ত্বার কথা থাকলেও এই দর্শন ঈশ্বর-ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করে। ধ্রুপদি সাংখ্য দর্শন আধ্যাত্মিক স্তরে ঈশ্বরের অস্তিত্ব অস্বীকার করে। সাংখ্য দর্শন মতে, সদা-পরিবর্তনশীল জগৎ অপরিবর্তনশীল ঈশ্বর দ্বারা সৃষ্ট হতে পারে না। এই ঈশ্বর শুধুমাত্র পরিস্থিতির প্রয়োজনে সৃষ্ট একটি প্রয়োজনীয় অতিন্দ্রীয় সত্ত্বা। সাংখ্য সূত্রগুলিতে পুরুষের থেকে পৃথক কোনো ঈশ্বরের আলাদা ভূমিকার উল্লেখ নেই। এই ধরনের পৃথক ঈশ্বর সাংখ্য দর্শনের মতে অচিন্তনীয় এবং কোনো কোনো ভাষ্যে খুব সাধারণভাবে উল্লিখিত।
সিনহার মতে, চিরন্তন, অনাদি ও স্রষ্টা ঈশ্বরের বিপক্ষে সাংখ্য দার্শনিকেরা নিম্নলিখিত যুক্তিগুলি দিয়েছেন:
সাংখ্যতত্ত্বকৌমুদী গ্রন্থে কারিকা ৫৭ শ্লোকের ভাষ্যে বলা হয়েছে যে, নিঁখুত ঈশ্বর (নিজের জন্য) জগৎ সৃষ্টি করতে পারেন না এবং ঈশ্বরের উদ্দেশ্য (অপরের প্রতি) দয়া হলে সাংখ্য দর্শনের প্রশ্ন হল অস্তিত্বহীনের যেখানে দুঃখ নেই সেখানে অস্তিত্ববানকে ডাকার কী প্রয়োজন? সাংখ্যপ্রবচন সূত্র গ্রন্থের ১।৯২ নং শ্লোকে স্পষ্ট বলা হয়েছে, “ঈশ্বরের অস্তিত্ব অপ্রমাণিত”। তাই সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরের কোনো স্থান এই দর্শনে নেই। এই গ্রন্থের ভাষ্যকারেদের মতে, ঈশ্বরের অস্তিত্ব যেহেতু প্রমাণিত হয় না, তাই তার অস্তিত্ব মানা যায় না।
আধুনিক গবেষকদের অধিকাংশ মনে করেন, “নিরীশ্বর” সাংখ্যের সঙ্গে ঈশ্বরবাদ যুক্ত করে যোগ, পাশুপত ও ভাগবত দর্শনশাখাগুলি। সেই ঈশ্বরবাদী সাংখ্য দর্শনের ব্যাখ্যা পাওয়া যায় মহাভারত, পুরাণ ও ভগবদ্গীতায়। বিজনবিহারী পুরকায়স্থ লিখিত “ভারতীয় দর্শনে নিরীশ্বরবাদ” বইটির “সাংখ্যদর্শনের নিরীশ্বরবাদের মূল্যায়ন” অংশটি পাঠকের জন্য তুলে দেয়া হলো।
সাফিয়া বিনতে হুয়াই ছিলেন বনী নাদির গোত্রের এক সম্ভ্রান্ত নারী, যাঁর স্বামী ও পরিবারের অধিকাংশ…
মাজার ভাঙাটা মাজার কর্তৃপক্ষের প্রোপার্টি রাইটের লঙ্ঘন, আরেকজনকে ক্ষতি না করে নিজের ব্যাখ্যা অনুযায়ী ধর্ম…
পাশ্চাত্য দর্শনের প্রাচীন যুগের, অর্থাৎ খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতকের থেলিস থেকে খ্রিস্টীয় ৬ষ্ঠ শতকের প্রাচীন খ্রিস্টীয়…
"ফিলোসফি অন ট্রায়াল" এর অন্যতম শক্তি হল এর বোধগম্যতা। ফ্রেজার একটি স্পষ্ট এবং আকর্ষক নাটক…
নবী মুহাম্মদ একটি সহিহ হাদিসে ভারত আক্রমণকারীদের জন্য জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছেন। অর্থাৎ নবীর উম্মতদের…
যৌন আক্রমণের ভুক্তভোগী হওয়ার সাথে পোশাকের স্টাইল-এর কোনো সম্পর্ক নেই- হোক সেটা Causal সম্পর্ক অথবা…
View Comments
খুব সুন্দর আলোচনা
Extraordinary philosophical discussion. Thank you
যোগশাস্ত্রে উল্লেখিত এ চৈতন্য অর্থাৎ পুরুষই নির্গুণ ব্রহ্ম যিনি ত্রিগুনাত্মিকা(সত্ত:, রজ: ও তম:) প্রকৃতি সৃষ্টিকরে ঈশ্বর নাম ধারণ করেন ও বিশ্বজগৎ সৃষ্টি ও প্রতিপালন করেন।
এটাই সনাতন ধর্মের অন্যান্য ধর্মের সঙ্গে পার্থক্য।
সনাতন ধর্ম অস্তি নাস্তি দুই দর্শনের সন্মান করে। এই গুলোই ধর্ম তত্ত্ব ও তর্ক চর্চার বিষয়। আগামীতে live আলোচনা করতে আনন্দ হবে।
অদ্বৈত বাদ মতে, জীব এবং ইশ্বর অভিন্ন। অর্থাৎ সৃষ্টি কর্তা বা পালন কর্তা বলে কেউ নেই। চেতনার ভিন্ন ভিন্ন স্তরে এক অদ্বিতীয় সত্ত্বাই, পশু, মানব, দেবতা বা ইশ্বর রূপে প্রকটিত হয়েছে।
tom Cat
এমন একখানা বই যদি আব্রাহামিক দের থাকতো। বা সিউডো আব্রাহামিক ই স লা ম এর কোনোও এক স্কলার লিখতেন তবে কাটুয়া মোল্লাদের সাথে আর পারতেন না 😂😂 ।
সাংখ্য পড়েছি বহু আগেই। ঈশ্বরভাবনার যে স্তরে এটি লেখা হয়েছে তা প্রত্যেকবারেই নতুন করে ভাবায় । জানতে চাওয়ায় এবং অভিভূত করে। জল মাটি ফুলের হিমালয় কোলে অসুরবৃত্তির যে আবির্ভাব হয়েছে তার বিরুদ্ধে আমরা তো নীরব। আপনারা চালিয়ে চান।
প্রথম সংশয় ডটে ঢুকলাম আজ। তবে আপনার কথা শুনছি বছর চারেক নিদেনপক্ষে আসিফ ভাই। সুস্থ থাকুন। সাংখ্যের নিরীশ্বর আপনার জ্ঞানের শ্রীবৃদ্ধি আনুন। প্রার্থনা রইলো।