রামায়ণ, মহাভারত হল হিন্দুদের দুই বিখ্যাত মহাকাব্য। হিন্দু ঐতিহ্যে এদের ইতিহাসও বলা হয়ে থাকে। এর মধ্যে মহাভারতের এমনই মহিমা যে একে পঞ্চম বেদও বলা হয়ে থাকে। পঞ্চম বেদ খ্যাত এই মহাভারতে বর্তমান হিন্দু সমাজের অবধ্য গরু সম্বন্ধে খুব চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায়। জানা যায়, আজকের হিন্দুসমাজের মত গোহত্যা ও গোমাংস ভক্ষণ প্রাচীন হিন্দুদের কাছে গর্হিত বলে বিবেচিত হত না।
সূচিপত্র
রন্তিদেবের রান্নাঘর
রন্তিদেব নামে এক ধার্মিক রাজার কথা বারবার মহাভারতে উক্ত হয়েছে। তিনি প্রচুর পশু হত্যা করে মানুষদের খাওয়াতেন। আশ্চর্যজনকভাবে সেই পশুগুলোর মধ্যে প্রচুর গরুও ছিল। আর সেই গোমাংস খাওয়ার জন্য মানুষের লাইন পড়ে যেত। পাচকেরা তখন বাধ্য হয়ে বলতেন বেশি করে ঝোল নিতে, কারণ খুব বেশি মাংস নেই।
কালিপ্রসন্নে সিংহ কর্তৃক অনূদিত মহাভারতের বন পর্বের ২০৭ তম অধ্যায়ে বলা হয়েছে-
“পূর্বে মহারাজ রন্তিদেবের মহানসে প্রত্যহ দুই সহস্র পশু হত্যা করিয়া প্রতিদিন অতিথি ও অন্যান্য জনগণকে সমাংস অন্নদান পূর্বক লোকে অতুল কীর্তি লাভ করিয়াছেন।“
কালিপ্রসন্নের মহাভারতের দ্রোণ পর্বের ৬৭ তম অধ্যায়ে বলা হয়েছে-
“ নারদ কহিলেন, হে সৃঞ্জয়! সংস্কৃতিনন্দন মহাত্মা রন্তিদেবকেও শমনসদনে গমন করিতে হইয়াছে। ঐ মাহাত্মার ভবনে দুইলক্ষ পাচক সমাগত অতিথি ব্রাহ্মণগণকে দিবারাত্র পক্ক ও অপক্ক খাদ্যদ্রব্য পরিবেশন করিত। মহাত্মা রন্তিদেব ন্যায়োপার্জিত অপর্য্যাপ্ত ধন ব্রাহ্মণগণকে প্রদান করিয়াছিলেন। তিনি বেদাধ্যয়ণ করিয়া ধর্মানুসারে শত্রুগণকে বশীভূত করেন। ঐ মহাত্মার যজ্ঞসময়ে পশুগণ স্বর্গলাভেচ্ছায় স্বয়ং যজ্ঞস্থলে আগমন করিত। তাহার অগ্নিহোত্র যজ্ঞে এত পশু বিনষ্ট হইয়াছিল যে, তাহাদের চর্মরস মহানস হইতে বিনির্গত হইয়া এক মহানদী প্রস্তুত হইল। ঐ নদী চর্মণবতী নামে অদ্যপি বিখ্যাত রহিয়াছে।“
এর পরে বলা হয়েছে –
“সংস্কৃতিনন্দনের (রন্তিদেবের) ভবনে এত অধিক অতিথি সমাগত হইত যে মণিকুণ্ডলধারী সূদগণ একবিংশতিসহস্র বলীবর্দের মাংস পাক করিয়াও অতিথিগণকে কহিত, অদ্য তোমরা অধিক পরিমাণে সূপ ভক্ষণ কর, আজি অন্যদিনের ন্যায় অপর্য্যাপ্ত মাংস নাই। “ (দ্রোণ পর্ব/ ৬৭)
তবে হিন্দুরা একটা সময় গোমাংস খাওয়া ত্যাগ করেছিল। মহাভারতেও এর উল্লেখ আছে-
“পূর্বকালে মহাত্মা রন্তিদেব স্বীয় যজ্ঞে গোসমুদায়কে পশু রূপে কল্পিত করিয়া ছেদন করাতে উহাদিগের চর্মরসে চর্মণবতী নদী প্রবর্তিত হইয়াছে। এক্ষণে উহারা আর যজ্ঞীয় পশুত্বে কল্পিত হয় না। উহারা এক্ষণে দানের বিষয় হইয়াছে।” (অনুশাসন/৬৬)
গোমেধ যজ্ঞ
মহাভারতের অনেকস্থলেই গোমেধ যজ্ঞের কথা বলা আছে-
- “এই পৃথিবীতে যে সমস্ত তীর্থ আছে , নৈমিষেও সেই সকল তীর্থ বিদ্যমান রহিয়াছে। তথায় সংযত ও নিয়তাসন হইয়া স্নান করিলে গোমেধ যজ্ঞের ফলপ্রাপ্তি ও সপ্তম কুল পর্যন্ত পবিত্র হয়।“ (বন/৮৪)
- “ মনুষ্যের বহুপুত্র কামনা করা কর্তব্য; কারণ তাহাঁদিগের মধ্যে কেহ যদি গয়ায় গমন , অশ্বমেধ যজ্ঞানুষ্ঠান অথবা নীলকায় বৃষ উৎসর্গ করে , তাহা হইলে বাঞ্ছিত ফল লাভ হয়। (বন/ ৮৪)
- “তৎপরে তত্রস্থ শ্রান্তিশোক বিনাশন মহর্ষি মতঙ্গের আশ্রমে প্রবেশ করিলে গোমেধযজ্ঞের ফল লাভ হয়।” (বন/৮৪)
শ্রাদ্ধে গোমাংস
মহাভারতে শ্রাদ্ধে গোমাংস দেওয়ার কথা বলা আছে-
” শ্রাদ্ধকালে যে সমস্ত ভোজ্য প্রদান করা যায় তন্মধ্যে তিলই সর্বপ্রধান। শ্রাদ্ধে মৎস্য প্রদান করিলে পিতৃগণের দুই মাস, মেষমাংস প্রদান করিলে তিন মাস, ও শশ মাংস প্রদান করিলে চারি মাস, অজমাংস প্রদান করিলে পাঁচ মাস, বরাহ মাংস প্রদান করিলে ছয় মাস, পক্ষীর মাংস প্রদান করিলে সাত মাস, পৃষৎ নামক মৃগের মাংস প্রদান করিলে আট মাস, রুরু মৃগের মাংস প্রদান করিলে নয় মাস, গবয়ের মাংস প্রদান করিলে দশমাস, মহিষ মাংস প্রদান করিলে একাদশ মাস এবং গোমাংস প্রদান করিলে এক বৎসর তৃপ্তি লাভ হইয়া থাকে। ঘৃত পায়স গোমাংসের ন্যায় পিতৃগণের প্রীতিকর ; অতএব শ্রাদ্ধে ঘৃতপায়েস প্রদান করা অবশ্য কর্তব্য। … ” ( অনুশাসন/ ৮৮ )
বিশুদ্ধচিত্তে গোহত্যা
মহাভারত অনুসারে, যোগবলে যারা বিশুদ্ধচিত্ত লাভ করেছেন তারা গোহত্যা করলে কোনো পাপ হয় না-
“যাহারা যোগবলে এইরূপ বিশুদ্ধচিত্ত হইয়াছেন , তাহারা যোগবলে গোহত্যা করিলেও করিতে পারেন। কারণ তাহাদিগকে গোবধ জনিত পাপে লিপ্ত হইতে হয় না।” (শান্তি / ২৬৩)
নহুষের গোবধ
“রাজপুরোহিত ,স্নাতক ব্রাহ্মণ, গুরু ও শ্বশুর এক বৎসর গৃহে বাস করিলেও মধুপর্ক দ্বারা তাহাঁদিগের পূজা করা কর্তব্য”। ( অনুশাসন/ ৯৭)
প্রাচীনকালে অতিথিদের মধুপর্ক দ্বারা আপ্যায়ণ করার বিধান ছিল। মধুপর্কে গোমাংসের প্রয়োজন হত।মহাভারতে মধুপর্কের জন্য নহুষের গোবধ করার কথা পাওয়া যায়। তবে নহুষের সময়ের ঋষিরা নহুষের এই কর্মের বিরোধীতা করেন-
” পূর্বে মহারাজ নহুষ মধুপর্ক দান সময়ে গোবধ করাতে মহাত্মা তত্ত্বদর্শী ঋষিগণ তাহারে কহিয়াছিলেন, মহারাজ তুমি মাতৃতুল্য গাভী ও প্রজাপতিতুল্য বৃষকে নষ্ট করিয়া যাহার পর নাই গর্হিত কার্যের অনুষ্ঠান করিয়াছ ; অতএব তোমার যজ্ঞে হোম করিতে আমাদের প্রবৃত্তি নাই , তোমার নিমিত্ত আমরা অতিশয় ব্যথিত হইলাম।” ( শান্তি/ ২৬২)
শান্তি পর্বের ২৬৮ তম অধ্যায়েও নহুষের গোবধের কথা পাওয়া যায়। এখানে নহুষ গোহত্যা করতে গেলে কপিল ঋষি তার বিরোধ করেন। তা নিয়ে স্যূমরশ্মি ঋষি ও কপিল ঋষির মধ্যে এক দীর্ঘ তর্কের সূচনা হয়-
“একদা মহর্ষি ত্বষ্টা নরপতি নহুষের গৃহে আতিথ্য স্বীকার করিলে তিনি শাশ্বত বেদ বিধানানুসারে তাহারে মধুপর্ক প্রদানার্থ গোবধ করিতে উদ্যত হইয়াছেন, এমন সময়ে জ্ঞানবান সংযমী মহাত্মা কপিল যদৃচ্ছাক্রমে তথায় সমাগত হইয়া নহুষকে গোবধে উদ্যত দেখিয়া স্বীয় শুভকরি নৈষ্ঠিক বুদ্ধিপ্রভাবে , “হা বেদ!” এই শব্দ উচ্চারণ করিলেন। ঐ সময় স্যূমরশ্মি নামে এক মহর্ষি স্বীয় যোগবলে সেই গোদেহে প্রবিষ্ট হইয়া কপিলকে সম্বোধনপূর্বক কহিলেন, মহর্ষে! আপনি বেদবিহিত হিংসা অবলোকন করিয়া বেদে অবজ্ঞা প্রদর্শন করিলেন, কিন্তু আপনি যে হিংসাশূণ্য ধর্ম অবলম্বন করিয়া রহিয়াছেন, উহা কি বেদবিহিত নহে? ধৈর্যশালী বিজ্ঞানসম্পন্ন তপস্বীরা সমুদায় বেদকেই পরমেশ্বরের বাক্য বলিয়া কীর্তন করিয়াছেন। পরমেশ্বরের কোন বিষয়েই অনুরাগ , বিরাগ বা স্পৃহা নাই। সুতরাং কি কর্মকাণ্ড, কি জ্ঞানকাণ্ড তাহার নিকট উভয়ই তুল্য। অতএব কোন বেদই অপ্রমাণ হইতে পারে না।“
স্যূমরশ্মির কথার প্রত্যুত্তরে কপিল বলেন,
“আমি বেদের নিন্দা করিতেছি না এবং কর্মকাণ্ড ও জ্ঞানকাণ্ড এই উভয়বিধ বেদের তারতম্য নির্দেশ করাও আমার অভিপ্রেত নহে। কি সন্ন্যাস, কি বানপ্রস্থ, কি গার্হস্থ , কি ব্রহ্মচর্য লোকে যে ধর্ম অনুসারে কার্য করুন না কেন, পরিণামে অবশ্যই তাহার গতিলাভ হইয়া থাকে।সন্ন্যাসাদি চারিপ্রকার আশ্রমবাসীদিগের চারি প্রকার গতি নির্দিষ্ট আছে। তন্মধ্যে সন্ন্যাসী মোক্ষ, বানপ্রস্থ ব্রহ্মলোক, গৃহস্থ স্বর্গলোক এবং ব্রহ্মচারী ঋষিলোক লাভ করিয়া থাকেন। বেদে কার্য আরম্ভ করা ও না করা উভয়েরই বিধি আছে। ঐ বিধি দ্বারা কার্যের আরম্ভ ও অনারম্ভ উভয়ই দোষাবহ বলিয়া প্রতিপন্ন হইতেছে। সুতরাং বেদানুসারে কার্যের বলাবল নির্ণয় করা নিতান্ত দুঃসাধ্য। অতএব যদি তুমি বেদশাস্ত্র ভিন্ন যুক্তি বা অনুমান দ্বারা অহিংসা অপেক্ষা কোন উৎকৃষ্ট ধর্ম স্থির করিয়া থাক, তাহা কীর্তন কর।…“
গোবধের পরিপ্রেক্ষিতে দুই ঋষির মধ্যে দীর্ঘ তর্ক চলতে থাকে।
বিচুখ্যের গল্প
মহাভারতে বিচুখ্য নামক এক রাজার কথা বলা হয়েছে। গোমেধ যজ্ঞে গোহত্যা দেখে সেই রাজা অত্যন্ত দুঃখিত হয়েছিলেন। শান্তি পর্বে ভীষ্ম যুধিষ্ঠিরকে বিচুখ্যের কাহিনী বলেন-
” হে ধর্মরাজ! মহারাজ বিচুখ্য প্রাণীগণের প্রতি সদয় হইয়া যাহা বলিয়া গিয়াছেন এক্ষণে সেই পুরাতন ইতিহাস কীর্তন করিতেছি,শ্রবণ কর। পূর্বে ঐ নরপতি গোমেধ যজ্ঞে যজ্ঞভূমিস্থ নির্দয় ব্রাহ্মণগণ ও ক্ষতদেহ বৃষকে দর্শন এবং গোসমূহের আর্তনাদ শ্রবণ পূর্বক দয়ার্দ্র হইয়া কহিয়াছিলেন , আহা! গোসমূদায় কি কষ্টভোগ করিতেছে। অতঃপর সমুদায় লোকে গোসমূহের মঙ্গল লাভ হউক।… ” ( শান্তি/ ২৬৫)
এই কাহিনী হতে জানা যায় একসময় গোমেধ যজ্ঞে ব্রাহ্মণেরা গোহত্যা করতেন। কিন্তু গরুর প্রতি করুণা ও গোহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদও এখানে লক্ষ্য করা যায়।
গোহত্যায় নিষেধাজ্ঞা
যজ্ঞে পশুহত্যা একসময় বহুলপ্রচলিত ছিল। ‘যজ্ঞে নিহত পশু স্বর্গে যায়’ (শান্তি/২৬৯) এমন ধারণা তখন জনমানসে সুপ্রচলিত ছিল। কিন্তু একসময় পশুহত্যার বিপরীতে মানুষের আওয়াজ ওঠে। প্রাচীনকালের গোহত্যার স্মৃতি যেমন মহাভারতে রয়েছে, তেমনি পরবর্তীকালের পশুহত্যা ও গোহত্যায় নিষেধাজ্ঞা সম্বন্ধেও মহাভারত হতে জানা যায় –
- ” শাস্ত্রানুসারে ছাগ পশুরেই অজ বলিয়া নির্দেশ করা যায় । মহর্ষি গণ কহিলেন, বেদে নির্দিষ্ট আছে , বীজ দ্বারাই যজ্ঞানুষ্ঠান করিবে। বীজের নামই অজ। অতএব যজ্ঞে ছাগপশু ছেদন করা কদাপি কর্তব্য নহে। যে ধর্মে পশুচ্ছেদন করিতে হয় , তাহা সাধুলোকের ধর্ম বলিয়া কখনোই স্বীকার করা যায় না। বিশেষত ইহা সর্বশ্রেষ্ঠ সত্যযুগ । এই যুগে পশু হিংসা করা কিরূপে কর্তব্য বলিয়া পরিগণিত হইতে পারে।” (শান্তি/ ৩৩৮)
- “যে ব্যক্তি গোমাংস ভক্ষণ এবং যে ব্যক্তি ঘাতককে গোবধে অনুমতি প্রদান করে তাহাদের সকলকেই সেই নিহত ধেনুর লোম পরিমিত বৎসর নরকে নিমগ্ন থাকিতে হয়।” (অনুশাসন/৭৪)
- “ছাগ, গো ও ময়ূরের মাংস , শুষ্ক মাংস এবং পর্য্যুষিতান্ন ভোজন করা নিতান্ত গর্হিত।“ ( অনুশাসন/১০৪)
- “যে ব্যক্তি অতিথির সমাদর না করে তাহারে স্ত্রীহত্যা, গোহত্যা, ব্রহ্মহত্যা, গুরুপত্নীহরণ ও কৃতঘ্নতাজনিত পাপে লিপ্ত হইতে হয়।” ( অনুশাসন/ ১২৬)
- “যাহারা ব্রাহ্মণঘাতি, গোঘ্ন, পরদারনিরত, বেদে শ্রদ্ধাশূণ্য ও জায়া জীবি সেইসমস্ত পাপাচার নিরত পামরদিগের সহিত কথোপকথন করাও অনুচিত।“ (অনুশাসন/১৩০)
মহাভারতের সময়কালে গোমাংসভোজনকে ভালো চোখে দেখা হত না। মদ্রক (কর্ণ/৪১) ও বাহিকদের (কর্ণ/৪৫) গোমাংস ভক্ষণের কথা মহাভারত হতে জানা যায়। তবে এর ফলে তাদের নিন্দার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
গোপূজা
প্রাচীন ভারতের কৃষিজীবি সমাজে প্রাণী হিসাবে গরু সর্বদাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। একে পবিত্র বলে বিবেচনা করা হত। মহাভারতে গরু পূজা করার কথা বলা আছে-
” গাভী সমুদায় জীবগণের প্রসূতিস্বরূপ এবং নানা প্রকার সুখের নিদান । মঙ্গলাভিলাষী ব্যক্তিদিগের নিত্য গো প্রদক্ষিণ করা অবশ্য কর্তব্য। গো শরীরে পদাঘাত এবং গোকূলের মধ্যস্থল দিয়ে গমন করা কদাপি কর্তব্য নহে। গাভী সকল সমুদায় মঙ্গলের আয়তন স্বরূপ । অতএব ভক্তি পূর্বক উহাদিগের পূজা করা অবশ্য কর্তব্য।” (অনুশাসন/ ৬৯)
গোবর ও গোমূত্র
এমনকি গোবর এবং গোমূত্র খাওয়ার কথাও মহাভারত হতে পাওয়া যায়। (অনুশাসন/৭১; অনুশাসন/৭৩) গরুর গোবর ও গোমূত্রে মানুষের স্নান করার কারণ হিসাবে খুব হাস্যকর কথা বলা হয়েছে। গরুরা কোনকালে নাকি তপস্যা করেছিল, যাতে মানুষেরা তাদের মল ও মূত্র দ্বারা স্নান করে! আরও মজার কথা অনুশাসন পর্বের ৮২ তম অধ্যায়ে বলা হয়েছে- ‘গোবরে লক্ষ্মী বাস করেন’।
মহাভারত ভারতের দীর্ঘকালের ইতিহাসকে ধরে রেখেছে। এর ফলেই এতে প্রাচীনকালের গোহত্যার কথা যেমন মেলে, তেমনি গোহত্যার সমাপ্তি, গোপূজা এবং গোবর-গোমূত্রের পবিত্রতার কথাও এতে পাওয়া যায়।
সহায়ক গ্রন্থ
এই লেখাটিতে কালিপ্রসন্ন সিংহ কর্তৃক অনুবাদিত মহাভারত ব্যবহার করা হয়েছে। কালিপ্রসন্ন সিংহ কর্তৃক অনূদিত মহাভারত নাস্তিক্য ডট কমের গ্রন্থাগারে পাওয়া যাবে। বাংলা ইবুক থেকেও কালিপ্রসন্নের মহাভারত ডাউনলোড করতে পারেন- লিংক
বিশেষ দ্রষ্টব্য
অনুশাসন,শান্তি, দ্রোন, বন , কর্ণ বলতে অনুশাসন পর্ব, শান্তি পর্ব, দ্রোণ পর্ব, বন পর্ব ও কর্ণ পর্ব বোঝানো হয়েছে। এর পাশের সংখ্যাগুলো দ্বারা অধ্যায় সংখ্যা বোঝানো হয়েছে।
Leave a Comment