সম্পাদকীয়সংশয়বাদ

অন্ধকারের ঈশ্বর

প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের অনুসন্ধিৎসু মন বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়িয়েছে। ছোট ছোট অনেক উদাহরন দেয়া যায়, যেমন ধরুন বৃষ্টি কেন হয়, মানুষ জন্মে কিভাবে ইত্যাদি ইত্যাদি। কিছু বিষয় মানুষ পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে জানতে পেরেছে, ধীরে ধীরে মানুষ আরও জ্ঞান অর্জন করেছে, আরও বেশি জেনেছে। আর যেগুলো সম্পর্কে মানুষ জানতে পারেনি, সে সময়ের জ্ঞান যে পর্যন্ত পৌছেনি, সেগুলো সম্পর্কে মানুষ ধারনা করেছে, কল্পনা করেছে। অজ্ঞানতা, জানতে না পারার হতাশা, অজ্ঞতা একধরনে হীনমন্যতায় রুপ নিয়েছে এবং ধীরে ধীরে অজ্ঞানতার অন্ধকার একপর্যায়ে ঈশ্বর নামক একটা কল্পনা দিয়ে তারা ভরাট করে দিয়েছে।

শুনতে খুব কঠিন শুনালেও এটাই সত্য যে অজ্ঞানতার অন্ধকারের অপর নাম ঈশ্বর।

মানুষ যা জানে না, মানুষ যেখানে অসহায় বোধ করে, যেখানে আশ্রয় খোঁজে, একাকীত্বে ভোগে, সে সময়ে ঈশ্বরের সৃষ্টি হয় মানুষের মনে। লক্ষ্য করে দেখবেন মানুষ অজ্ঞানতাকেই ঈশ্বর নামে অভিহিত করে। একবার একজনার সাথে তর্ক হচ্ছিল। সে অনবরত আমাকে প্রশ্ন করে যাচ্ছিল, আটকানোর চেষ্টা করছিল। সে জিজ্ঞেস করেছিল ইশ্বর না থাকলে মানুষ কোথা থেকে এলো, আমি উত্তর দিলাম, আবার পাল্টা প্রশ্ন ছুটে আসলো, এমিবা কোথা থেকে এলো, আমি উত্তর দিলাম। এরপরে আবার প্রশ্ন আসলো, পানি কোথা থেকে আসলো, আমি একে একে সব উত্তর দিলাম, শেষে সে একদম গোড়াতে চলে গেল প্রশ্ন করতে করতে- বিগ ব্যাং কেন হল? আমি বললাম এখন পর্যন্ত যতটুকু জানা সম্ভব তা বিগ ব্যাং এর পরের কথা, আগের কিছুই জানা সম্ভব নয়, কারন আগে স্থান কাল কিছুই ছিল না। পদার্থ বিজ্ঞানের সকল সুত্র বিগ ব্যাং-এর পুর্বে অচল। তখন সে বিজ্ঞের হাসি হেসে বলে বসলো, সেখানেই তো ঈশ্বর!

মুচকি হাসি দেয়া ছাড়া আর কি বা করার থাকে? কারন এই বক্তা প্রশ্ন করতে করতে মানুষকে অজ্ঞানতা পর্যন্ত নিয়ে গেল, শেষমেশ বলে ফেলল যে সেই অজ্ঞানতার মধ্যের ঈশ্বরের বাস। খুব চমৎকার ভাবেই সে নিজেই স্বীকার করে ফেলল যে তার ঈশ্বরের অপর নামই অজ্ঞানতা।

অর্থাৎ মুর্খতা, অজ্ঞানতা আর অন্ধকারের প্রতিশব্দ হয়ে গিয়েছে ঈশ্বর।

প্রাচীন কাল থেকেই এই ঈশ্বর মানুষকে এই ধরনের ঘোর ঘোরালো হাবিজাবি শুনিয়ে মুগ্ধ করেছে, সাধারনের ভেতরে অজ্ঞানতার অন্ধকার আরও ভাল ভাবে ঢুকিয়েছে। মানুষের জানার আগ্রহকে ধ্বংস করেছে, জ্ঞান বিজ্ঞানকে স্থবির করে ফেলেছে। এ পর্যন্ত অনেকেই দাবী করেছে তারা ঈশ্বর প্রেরিত পুরুষ, অনেকে দাবী করেছে সে নিজেই ঈশ্বর, কিন্তু তারা সকলেই তাদের দাবী প্রমান করতে ব্যর্থ হয়েছে। পৃথিবীর সকল ধর্মগ্রন্থগুলো এত বিপুল পরিমানে বাঁজে বকেছে আর মুর্খ মানুষকে গাঁজা খাইয়েছে যে ওগুলো জ্ঞানগর্ভ আলোচনাতে আসার যোগ্যতাই হারিয়েছে।

ধরে নিলাম আমরা অনেক কিছুই জানি না। আমাদের জ্ঞান সীমিত। আমরা যেসমস্ত বিষয়ে জানিনা, সেগুলোকে ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য ঈশ্বর খুব সহজ সস্তা একটা উপায়। ব্যাখ্যা করে বুঝাচ্ছি।

ধরুন আমি জানিনা সুর্য কেন পুব দিকে উদয় হয়। আমার এই অজ্ঞানতাকে আমি জ্ঞানীজ্ঞানী ভাব ধরে খুব সস্তা উপায়ে ব্যাখ্যা করতে পারি। আমি বলতে পারি ঈশ্বর চান সুর্য পুব দিকে উদয় হোক, ঈশ্বর সর্ব ক্ষমতা মালিক, সর্বশক্তিমান, তাই তার ইচ্ছাই আইন। সুতরাং সুর্য পুব দিকে উদয় হয়।

কিন্তু ধরুন আমি বিজ্ঞান পড়ে জানতে পারলাম আসলে কেন সুর্য পুব দিকে উদয় হয়, কিন্তু আমি আমার পুরোন মতবাদ ঝেড়ে ফেলে দিতে চাই না। তাই নতুন ব্যাখ্যা দাড় করাতে পারি, জ্ঞানের সাথে অজ্ঞানতার সময়ের ব্যাখ্যাকে একধরনের মিশ্রণ ঘটাতে পারি। বলতে পারি, ঈশ্বরই আহ্নিক গতি বার্ষিক গতি সৃষ্টি করেছেন, তিনিই সকল বিজ্ঞান সৃষ্টি করেছেন, তাই সুর্য পুব দিকে উদয় হয়। অর্থাৎ আবারো আমরা অজ্ঞানতাতেই ফিরে গেলাম।

আবার ধরুন আমরা জানিনা মৃত মানুষের কি হয়। আমরা কল্পনা করতে পারি মৃত মানুষ ঈশ্বরের কাছে ফিরে যায়, বা তার জন্মান্তর ঘটে। কিন্তু আমরা সামান্য জ্ঞান অর্জন করলেও বুঝি যে এগুলো আসলে অজ্ঞানতা এবং মুর্খতা। কিন্তু তারপরেও অজ্ঞানতা থেকে সরে আসতে পারি না। আমরা ভাবতে ভালবাসি যে মৃত্যুর পরেও সব শেষ না। আরও আছে!

ঈশ্বর ধারনাটা দর্শনের জগতে বহু আগেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। নিটশে তার “ঈশ্বর মৃত” তত্ব দিয়ে একসময় ইউরোপে আলোড়ন তুলেছিলেন, তারও বহু আগে থেকেই বিভিন্ন দার্শনিক ঈশ্বর ধারনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বর্জন করেছেন। কিন্তু আমজনতা জ্ঞানের উঁচু বিষয়গুলো সম্পর্কে সব সময়ই অসচেতন। তারা প্রথমিক শিক্ষাই লাভ করতে পারে না, দর্শন কি বুঝবে?

কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে

  • ধর্ম কি মানুষের জন্য ভাল নাকি মন্দ?
  • ধর্ম আমাদের কি শিক্ষা দেয়?
  • ধর্ম আমাদের জন্য একটা উপকরন, নাকি কালে কালে আমরা ধর্মের জন্য একটা উপকরনে পরিনত হয়েছি?

সে আলোচনায় যাবার আগে আর একটা আলোচনা সেরে নিই।

আপনারা এরিস্টোটলের কথা জানেন। বলা হয় প্রাচীন পৃথিবীতে তার মত জ্ঞানী আর কেউ ছিলেন না। একসময় এও বলা হত এরিস্টোটল সর্বজ্ঞানী, যা এরিস্টোটলে নেই, তা মানুষের প্রয়োজন নেই। আসলে প্রাচীন পৃথিবীতে এরিস্টোটলের মত বড় দার্শনিক, বিজ্ঞানী, সমাজতত্ববিদ, সকল জ্ঞানের আধার আর জন্মেনি। এরিস্টোটল ছিলেন সকল বিষয়ে পন্ডিত। তার মত আর কেউ ছিলেন না। এরিস্টোটল অনেক বিশাল পন্ডিত ছিলেন, যার তুলনা তিনি নিজেই। কিন্তু এতবড় পন্ডিত আসলে পৃথিবীকে সামনের দিকে অগ্রসর না করে অনেক পিছিয়েই দিয়েছে। পৃথিবীতে যে যত বড়, তার মতবাদ এবং চিন্তা তারচাইতে বড় হতে না পারলে সবকিছুই আগ্রাসী এবং ক্ষতিকর হতে বাধ্য।

একজন মানুষ যখনি তার মতবাদ বা তার বক্তব্যের চাইতে উপরে উঠে যাবে, বড় হয়ে যাবে, তখনি সেই মতবাদ এবং সেই ব্যাক্তি নিজেও মানুষের বিপক্ষে চলে যাবে, প্রগতির বিপক্ষে চলে যাবে। ইতিহাসে এই উদাহরন প্রচুর। এরিস্টোটলের পরবর্তী সময়কে বলা হয় জ্ঞানের জন্য অন্ধকার যুগ। এরিস্টোটল এতই বড় হয়ে উঠেছিলেন, যে তার সমালোচনা বা তার চাইতে অধিক জ্ঞান অর্জনকে ধর্ম বিরোধী বা বিজ্ঞান বিরোধী বলা শুরু হয়ে গেল। যার ফলে পৃথিবী আর আগালো না, থমকে গেল জ্ঞান বিজ্ঞান। এরিস্টোটলকে এবং এরিস্টোটলের তত্ব নিয়েই সকল জ্ঞানীরা ভাবতে লাগল বছরের পর বছর ধরে, নতুন কোন জ্ঞান আসলো না, নতুন কোন চিন্তা আসলো না। যখনি নতুন কোন চিন্তা আসলো, সবাই এরিস্টোটলের তত্বের সাথে তা মেলে কিনা হিসেব করতে বসে গেল। মিলে গেলে ভাল কথা, কিন্তু যখনি এরিস্টোটলের তত্বের সাথে কোন তত্ব বিন্দুমাত্র দ্বিমত পোষন করলো, তার আর রক্ষা নাই, তাকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে দেয়া হল বা পুড়িয়ে মারা হল। উদাহরন দিতে চাচ্ছি না, খুঁজে দেখতে পারেন।

এভাবে প্রায় দেড়হাজার বছর এরিস্টোটলের ভুত মানুষের মাথায় ভর করে ছিল। যার জন্য মানব সভ্যতার দেড় হাজার বছর জ্ঞান বিজ্ঞানে কোন উন্নতি হয়নি। মানুষের অমিত সম্ভাবনা নষ্ট হল শুধু একজন বিশাল মাপের পন্ডিতে জন্য, যে আসলে নিজেও জ্ঞানের পূজারী ছিলেন। কি নির্মম পরিহাস, একজন সত্যানুসন্ধানীর তত্ব বলবত রাখতে লক্ষ লক্ষ সত্যানুসন্ধানীর মৃত্যু! যার জন্য মনে হতেই পারে যে এরিস্টোটল না জন্মালেই হয়ত ভাল ছিল।

আমাদের বর্তমান বিশ্বের ধর্মগুলোর প্রচারকদেরকেও একই ভাবে দেখতে হয়। এক একজন ধর্ম প্রচারক নতুন ধর্ম নিয়ে এসে পৃথিবীকে বদলে দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তার মুর্খ অনুসারীরা তার বক্তব্য, তার জ্ঞান, তার চিন্তা অটুট এবং বলবত রাখতে পরবর্তীতে অন্য সকল মানবতাবাদীকেই হত্যা করছে, যে সকল মানবতাবাদী আরও ভাল কিছু জ্ঞান, বক্তব্য, চিন্তা দিতে চেয়েছিল- সভ্যতাকে এগিয়ে নিতে চেয়েছিল। কিন্তু ধর্মপ্রচারকদের অনুসারীদের কাছে সেই ধর্মটির চাইতেও বা মানবতার চাইতেও সেই ধর্মপ্রচারকটি এতটাই বড় হয়ে উঠেছিল, যে তারা সকল জ্ঞানকে, সত্যানুসন্ধান এবং চিন্তাকেই তাদের ধর্মপ্রচারকের বিরুদ্ধাচারন ধরে নিল এবং হত্যা শুরু করে দিল। যার প্রচুর উদাহরন দেয়া যাবে। যার কারনে সভ্যতা স্থবির হয়ে গেল, জ্ঞান বিজ্ঞান আর আগালো না, অন্ধকার যুগের সচনা হল।

বিশেষত মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে এই ধরনের বৈশিষ্ঠ্য খুব ব্যাপক পরিমানে দেখা যায়, আজকে জ্ঞান বিজ্ঞানে তাদের অবস্থানটাও তাই সবার নিচে। কুরআনে বর্তমান বিজ্ঞানের যুগে বাস করেও গাদা গাদা ভুলভ্রান্তি দেখেও না দেখার ভান করা এবং কুরআনে কোন ভুল নাই, সব বিজ্ঞানই কুরআনে আছে, যে বিজ্ঞানের সাথে কুরআনের বিরোধ আছে তা বর্জন করতে হবে, তা মিথ্যা- এমন ধারনা পোষন করা যার অন্যতম প্রধান কারন।

মহাবিশ্বের সৃষ্টি নিয়ে আমাদের যেই অজ্ঞতা, জ্ঞানের অভাব, আমাদের অসহয়ত্ব আমরা চাপা দেই ঈশ্বর নামক অলীক এক বস্তু দিয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টার মাধ্যমে। কিন্তু দেখা যায় যে ব্যাখ্যাটা দেবার চেষ্টা করি সেটা মোটেও যুক্তির মানদন্ডে ধোপে টেকে না। তারপরেও আমরা নতুন ভাবে ব্যাপারটা বিচার বিবেচনা এবং পর্যবেক্ষন, অনুসন্ধান বাদ দিয়ে সেই মতে গোয়ারের মত আটকে রই এবং একটা বদ্ধ ও জ্ঞানহীন সমাজের সৃষ্টি করি।

একটা সময় মানুষ যখন জানতে পারলো পৃথিবীটা মহাবিশ্বে স্রেফ ঝুলে আছে, সাধারন চিন্তাভাবনার মানুষের তা মেনে নিতে কষ্ট হল। কারন পৃথিবীতে আমরা যারা থাকি, তারা সব সময়ই দেখি প্রতিটা জিনিষই নিচের দিকে পতনশীল। পৃথিবীটা স্রেফ মহাবিশ্বে ঝুলে আছে এটা সাধারন মানুষের পক্ষে মেনে নেয়া এবং হজম করা মোটেও সহজ বিষয় ছিল না, পদার্থ বিজ্ঞানের একটা সাধারন সুত্র মেনে নিতে এবং হজম করতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে।

একইভাবে আমরা যারা পৃথিবীতে থাকি, যারা নিজেদের সেরা বলে দাবী করি, তারা জ্ঞানচক্ষু খোলার পরেই দেখি ঘরবাড়ি রাস্তা ঘাট থেকে শুরু করে সব কিছুই আমরা তৈরি করেছি, আমরা সব কিছুই এলোমেলো থেকে একটা গুছানো অবস্থানে নিয়ে এসেছি। যার ফলে আমাদের ধারনা হয়, এই মহাবিশ্বও কেউ না কেউ বানিয়েছে, না বানালে এটা আসলো কোথা থেকে?

আমাদের সভ্যতা যদি এখন গুহা যুগে থাকত, তবে এই ধারনা আমাদের মনে আসত না, আমরা মনেই হত না যে কোন কিছুকে বানানোর প্রয়োজন আদৌ আছে। কিন্তু নিজেদের তৈরি করা বিশ্বে বসবাস করার কারনে তৈরি বা সৃষ্টিতত্ব আমাদের মানসিকতায় প্রবলভাবে বিরাজমান এবং পৃথিবীর মহাবিশের ঝুলে থাকার মত আমরা এটাও ভাবতে পারি না যে সৃষ্টি না করলেও কিছুর অস্তিত্ব থাকা সম্ভব। এই ধারনা এক সময়ে সুপ্রতিষ্ঠিত হবে, কিন্তু তার আগে এই ধারনা প্রতিষ্ঠিত করানোর জন্য হয়ত আরও অনেক সক্রেটিস, গ্যালিলিও, ব্রুনোকে প্রচলিত ধারনার সাথে যুদ্ধ করতে হবে এবং প্রান হারাতে হবে। এখন পর্যন্ত অন্ধতা বা অজ্ঞানতা বা ধর্ম আমাদের জ্ঞান, দর্শন এবং বিজ্ঞানের সাথে পেরে ওঠেনি, সামনেও পারবে না- সামান্য সময়ের জন্য অস্ত্র হাতে দমিয়ে রাখতে পেরেছে। কিন্তু যারা এই সময়ের সক্রেটিস, গ্যালিলিও, ব্রুনো- যারা এই ধারনা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এবং মানুষকে জাগানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছে, এই অচলায়তন ভাঙ্গার চেষ্টায় আছে, জ্ঞান বিজ্ঞানের এই স্থবিরতাকে ধ্বংস করে প্রগতির পথে মানুষকে এগিয়ে নিতে চাইছে, তারা চির নমস্য। আজকে তারা আক্রান্ত হলেও একদিন তারাই জয়ী হবে।

আসিফ মহিউদ্দীন

আসিফ মহিউদ্দীন সম্পাদক সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন [email protected]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *